- সিজন ১
- পর্ব – ০১
- পর্ব – ০২
- পর্ব – ০৩
- পর্ব – ০৪
- পর্ব – ০৫
- পর্ব – ৬
- পর্ব – ০৭
- পর্ব – ০৯
- পর্ব – ১০
- পর্ব – ১১
- পর্ব – ১২
- পর্ব – ১৩
- পর্ব – ১৪
- পর্ব – ১৫
- পর্ব – ১৬
- পর্ব – ১৭ (শেষ)
- সিজন ২
- পর্ব ০১
- পর্ব ০২
- পর্ব ০৩
- পর্ব ০৪
- পর্ব ০৫
- পর্ব ০৬
- পর্ব ০৭
- পর্ব ০৮
- পর্ব ০৯
- পর্ব ১০
- পর্ব ১১
- পর্ব ১২
- পর্ব ১৩
- পর্ব ১৪
- পর্ব ১৫
- পর্ব ১৬
- পর্ব ১৭
- পর্ব ১৮
- সমাপ্তি পর্ব ১৯
- সিজন ৩
- part : 1
- part : 2
- part : 3
- Part : 4
- part : 5
- part : 6
- part : 7
- part : 8
- part : 9
- part : 10
- part : 11
- part : 12
- part : 13
- part : 15
- part : 16
- part : 17
- part : 18
- part : 19
- part : 20
- part : 21
- part : 22
- part : 23
- part : 24
- part : 25
- part : 26
- সিজন ৪
- part : 1
- part : 2
- part : 3
- part : 4
- part : 5
- part : 6
- part : 7
- part : 8
- part : 9
- part : 10
- part : 11
- part : 12
- part : 13
- part : 14
- part : 15
- part : 15
- part : 16
- part : 17
- part : 18
- part : 19
- part : 20
- part : 21
- part : 22
- part : 23
- part : 24
- part : 25
- part : 26
- part : 27
- part : 28
- part : 29
- part : 30
- part : 31
- part : 32
- part : 33
- part : 34 (last)
সিজন ১
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০১
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
☆ভালোবাসি…..
☆কি??!!
☆বললাম যে ভালোবাসি….
☆ভালোবাসি মানে??
☆ভালোবাসি মানে ভালোলাসি। আমি আপনাকে ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি ॥
☆ এই মেয়ে তুমি কি out of mind …. তুমি কি আমাকে চেনো? জানো? আমাকে আগে কখনো দেখেছো? আমি কি? আমি কে? বিবাহিত না অবিবাহিত? ধনী নাকি গরীব? ভালো নাকি খারাপ? পরিবার কেমন? পরিবার আছে কিনা? even নাম কি সেটাও কি জানো?
☆নাম ছাড়া মানুষ হয় কিনা আমি জানি না¿¿ কিন্তু তবুও যদি আপনার নাম না থাকে আমি নাম দিবো। অর্থ না থাকলে অর্থ দিবো। Fame না থাকলে fame দিবো। পরিবার না থাকলে পরিবার দিবো। gf থাকলে break up করিয়ে দেবো। বিবাহিত হলে divorce করিয়ে দিবো। আমাকে ভালোনাবাসলেও ভালোবাসবো…. আপনার নাম ধাম কিছুই matter করেনা। মেরিন বন্যা খানের আপনাকে ভালো লেগেছে। তো লেগেছে। আর তাই মেরিন বন্যা খান আপনাকে ভালোবাসে মানে বাসে…….
.
এতোক্ষন যারা কথা বলছিলো তারা কে সেটা বুঝেই গেছে। সবার ভালোবাসার মেরিন বন্যা খান & নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন।
হয়েছে কি…..
মেরিন আকাশে মুখ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো তখন নীড়ের সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে নিচ্ছিলো। নীড় মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরলো যেন মেরিন পরে যায়। মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরার জন্য মেরিন ক্ষেপে গেলো। ঠাস করে থাপ্পর মারতে নিলে নীড় খপ করে হাতটা ধরে ফেলল। মেরিন impress হয়ে গেলো। কারন কোনো ছেলে ওকে প্রতিরোধ করেছে। 😌😌😌
.
নীড় মেরিনের কথা শুনে অবাক হলো। এতোটুকু ১টা মেয়ে…. কারন এর আগে কখনো মেরিনকে দেখেনি। আর মেরিনও ওকে দেখেনি। কেউ কারো নামও জানেনা। ১ম দেখাতেই ১টা মেয়ে কিভাবে বলছে যে ভালোবাসি? নীড় মেরিনের গলায় id card, হাতে apron, stethoscope দেখে বুঝতে পারলো যে মেরিন student…
নীড়: কোন year??
মেরিন: 2020….😎😎.. oy my ALLAH…. brain এ সমস্যা আছে নাকী? নাকি brain ই নেই?? যে কোন চলছে year সেটাও জানেন না?😱😱। heart এর মতো brainও implant করা যায় কিনা জানিনা । কিন্তু যদি brain implant করা যায় তবে আমি কথা দিচ্ছি বাংলাদেশের সেরা বুদ্ধিমান ব্যাক্তির brain আমি আপনার মাথায় implant করাবো।😎😎।
নীড়: shut up… ১টা থাপ্পর দিবো। যার নামটা পর্যন্ত জানোনা , যাকে প্রথম দেখলে তাকে ভালোবেসে ফেললে?😤😤।
মেরিন: হ্যা। বেসেছি। কার বাপের কি?
নীড়: shut up… তুমি 1st year এর student আর আমি doctor… practice করছি। তোমার লজ্জা করলো না এভাবে আমার সাথে কথা বলতে? i m like ur teacher …
মেরিন: তো আমার বাপের কি?
নীড়: ভুলেও কখনো আর আমার সামনে আসবে না। TC দেয়ার ব্যাবস্থা করাবো। বেয়াদব ।
মেরিন: সে যাই বলেন। আপনার বউ কিন্তু আমিই হচ্ছি। আর হ্যা 1st year এর final exam আজই শেষ হলো।। so i m now 2nd year … teacher হলে আপনি আমার classroom এ হবেন। আর তাছারাও এখনো কোনো class করানও নি। so… যাই হোক আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমাদের বিয়ে হচ্ছে thats final….
নীড়: তুমি কি পাগল???
মেরিন: correction please মেয়েরা পাগল না। পাগলি হয়। আমি পাগলি আপনার প্রেমে…. my dear জানু।
নীড়: stupid girl…
নীড় রেগে চলে গেলো।
বডিগার্ড (জন): mam…..
মেরিন: আমি ৫মিনিট সময় দিলাম আমার জানুর নিখুজি গুষ্ঠি জানতে চাই…..
.
৫ মিনিটপর……
জন: ম্যাম.. ওনার ন….
মেরিন ঠাস করে জনকে থাপ্পর মারলো। জন বুঝলো না এর কারন।
মেরিন:give him honor … call him sir…. উনাকে উনি কেবল আমি ডাকবো।
জন: sorry mam…. স্যারের নাম নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। বাবার নাম নিহাল আহমেদ চৌধুরী। কবির স্যারের rival company এর কর্নধার। sir doctor । practice করছে ২বছর ধরে। USA & singapore থেকে ২টা course degree নিয়ে এসেছেন। এখানেই patient দেখে। অন্যকোথাও আর chamber নেই। তবে এখন ছুটিতে আছে।
মেরিন: ছুটিতে থাকার কারন?
জন: ……
মেরিন: কারন?
জন:……
মেরিন আবার ঠাস করে থাপ্পর মারলো।
জন:ম্যাম স্যারের next ১৭তারিখ বিয়ে। আজকে বন্ধুদের invite করতে এসেছিলো।
মেরিন আবার জনকে থাপ্পর দিলো।
মেরিন: এতো তারাতারি বিয়ে করতে হবে আমাকে?? 20ও তো হলোনা…..😕😕…
জন:🤔🤔।
মেরিন: আমার না হওয়া স্বতীনের নামটা কি??
জন:…..
মেরিন: তোমার কি মনে হয়না তুমি ইদানীং থাপ্পর বেশি খাচ্ছো……😤😤😤।
জন: নাম শুনলে আবার মারবে।
মেরিন: না বললে বেশি মারবো।
জন:কনের নাম নিরা রহমান…
মেরিন:কি? 😠😠।
জন: নববিরা রহমান।
মেরিন নামটা শুনে উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো।
মেরিন: বিয়েতে তো বউ লাল জোরা পরে……
তাই না জনি জনি yes papa…..
জন: জী ম্যাম…..
মেরিন: কখনো তো ভুলেও কোন দেশে কোনো ধর্মে বিয়েতে কালো জোরা পরেনা… তাইনা??
জন: জী ম্যাম।
মেরিন: 🤣🤣🤣।
.
১৭তারিখ…..
নীড়ের বিয়ের দিন….
press media ,, দেশের সব বড় বড় মানুষ এমনকি politicianরাও অনেকে আছে। বিয়ের জন্য কাজী চলে এলো। just বিয়ে পরাবে তখন ১দল কালো স্যুট পরা পিস্তলওয়ালা লোক বিয়েতে উপস্থিত সকল মেহমানের মাথায় বন্দুক ঠেকালো। ওদের মধ্যে থেকে
১জন লিডার type ব্যাক্তি (রুদ্র)বলে
উঠলো: এই বিয়ে পরানো এই মুহুর্তে বন্ধ করো।
নিহাল: কি হচ্ছে কি এসব?
রুদ্র: এইযে নিহাল স্যার নরবেন না। আর কোনো কথাও বলবেন না।
সবার মাথায় বন্দুক ঠেকানো থাকলেও নীড়ের মাথা়য় না। তবে পরিবার পরিজন এবং তারথেকেও বড় কথা হলো নীড়ের কলিজা নিরার মাথায় বন্দুক ঠেকানো।
নীড়: তোমরা কারা? কি চাও? টাকা পয়সা?just tell me the amount …..
রুদ্র: আমরা আপনাদের টাকা চাইনা। এখনই ম্যাম চলে আসবেন। আর স্যার আপনিও নিজের জায়গা থেকে নরবেনা please ….
নীড়: যদি আমার জানের কিছু হয়…. mind it…..
.
তখনই বাদ্য বাজনা বাজিয়ে ১দল band party এলো। এরপর ১টা কালো BMW এসে হলে থামলো। গাড়ি চালিয়ে এসেছে ১টা গর্জিয়াস কালোপরী। কালোপরীটার নাম মেরিন। মেরিন গাড়ি থেকে নামলো।কালো রঙের লেহেঙ্গা। পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো ডায়মন্ডের গহনায় মোরানো। সেই সাথে কালো চশমাও চোখে। ঠোটে লাল লিপস্টিক। দেখতে অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে। যে কারো
কবির: মেরিন…….
মেরিন: whats up…. ladies & gentleman ….
নীড়: তুমি…..
মেরিন: oh hi জানু….
কবির: এসবের মানে কি?
মেরিন: drama মিস্টার খান। drama.. wait & watch ….. জন…. নিরা রহমানের বিয়ের সই না করা কাবিন নামাটা & registry paper টা দাও।
জন এনে দিলো। মেরিন সেটা টুকরো টুকরো করে ছিরে আগুনে পুরিয়ে ফেলল।
মেরিন:আচ্ছা সবার মনে তো ১টাই প্রশ্ন যে কি হচ্ছে আপনাদের সাথে? তাইতো?? আমি সোজা কথা সহজভাবেই বলতে জানি। আমি এই বিয়ে ভাঙতে চাই… বিয়ে মানে নীড়-নীরার বিয়ে ভাঙতে চাই। আমি চাই এখানে আজকে কেবল আর কেবল নীড়-মেরিনের বিয়ে হবে।
নীড়: এই বেয়াদব মেয়ে কি আবোল তাবোল কথা বলছো কি?
নিহাল: তুমি ওকে চেনো??
নীড়: she is a mad girl….. let me handle this…..
নীড় মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: what is all this….. এসবের মানে কি?
মেরিন হাতের gunটা দিয়ে নীড়ের মুখে আকিবুকি করতে করতে
বলল: আমি কালরাতেও ভালোভাবে বলেছিলাম আমাকে বিয়ে করবেন কি না? আপনি না করলেন আর তাই এই রাস্তা অবলম্বন করতে হলো। drama করতে হলো….
নীড়: আমি তোমাকে বিয়ে করবো না।
মেরিন: ok.. as ur wish…… boys shoot them….
কবির:এই মেয়ে পাগল হয়ে গেছো? যাও রুমে যাও।
নিহাল: রুম মানে? আপনি চেনেন?
কবির: না মানে…..
শাহজাহান খান: থেমে গেলি কেন? বল ও কে?
মেরিন: বাদ দাও দাদুভাই।
নিহাল: দাদুভাই মানে?
মেরিন: শশুর বাবা আমি শাহজাহান খানের একমাত্র নাতনী খান empire এর একচ্ছত্র মালকিন… যাকে বলে the empress….
যাই হোক , জানু আপনি বিয়ে করবেন কি না?
নীড়: no….
মেরিন: সবার মৃত্যুর জন্য আপনি দায়ী ফাকবেন….
নীড়: i don’t care…
মেরিন: আপনার জানের জীবন গেলেও না।
নীড়: এই…..
নীড় মেরিনের দিতে আঙ্গুল তুলতেই ৫-৭জন নীড়ের মাথায় gun ধরলো।
মেরিন: জন….
জন: আরে গান নামাও সবাই… বলেছিনা স্যারকে touch ও না করতে।
ওরা নামিয়ে ফেলল।
মেরিন পাগলের মতো নীড়ের গাল ধরে
বলল: আআপনার কোথাও লাগেনিতো….
নীড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
মেরিন: 🤣🤣🤣। জন…. উনার জানকে আমার সামনে নিয়ে আসো তো……
জন নিরাকে এনে মেরিনের পায়ে ফেলল।
নীড়: জান…..
জন: আগে বারবেন স্যার না হলে নীরাকে shoot করে দিবো……
নীড় দারিয়ে গেলো। মেরিন নীরা চুল ধরে মাথাটা তুলল।
নীড়: নিরা… 🥺🥺🥺।
কনিকা: নিরামা….
মেরিন:🤣🤣🤣
নিরা: দেখ মেরিন ভালো করছিস না কিন্তু…..
মেরিন: তোমাকে জিজ্ঞেস করিনি। তুমি এখন হুকুমের টেক্কা।
বাহ তোমার লাল টিপটা তো বেশ সুন্দর।
মেরিন এরপর বন্দুকটা নীরার কপালের ঠিক মাঝখানে ধরলো।
মেরিন: bullet দিয়ে বানানো টিপ বেশি ভালো হবে। life time i mean death time থাকবে। তোমার শরীরের মাংস পচে গেলেও তোমার করোটিতে থেকে যাবে। অনেকদিন… কি বলো….
নীড়:নননা। ছছেরে দাও ওকে।
মেরিন: আমাকে বিয়ে করবেন?
নীড়: impossible …..
মেরিন: নিরাকে মেরে ফেললেও না।
নীড়:ননননা।
নিরা: রাজী হয়ে যাও নীড়। তুমি ওকে চেনোনা। ও dangerous … আমাকে সত্যি সত্যি মেরে দিবে। plis রাজী হও।
মেরিন মনে মনে: এদের প্রেম তো মহা মহান… 🤣🤣🤣।
নীড়: ভয় পেওনা নিরা। এই মেয়ে কিছু করবেনা। empty vessel sound much….
মেরিন নিরার হাত ঘেষে ১টা shoot করে দিলো। এতে নিরার হাত থেকে রক্ত ঝরতে লাগলো।
নীড়:জান…..
মেরিন:বিয়ে করবেন আমায়??
নীড়:ননা। never…
মেরিন:জন। শশুর বাবার মাথায় বন্দুক ঠেকাও তো। আর উপস্থিত সবার মাথায়ও ঠেকানো হোক। তবে আগে যেন শশুর বাবাকে shoot করা হয়।
জন গান লোড করে ফেলল। just shoot করবে।
নীড়:না….. don’t shoot ….. আমি এই মেয়েকে বিয়ে করবো।
নিহাল: না নীড়। তুমি এই পাগল মেয়েকে বিয়ে করবেনা।
মেরিন:🤓🤓। আপনারা তারাতারি decision টা বলেন।
নীড়: বললাম তো বিয়ে করবো।
মেরিন: সত্যি??😍😍।
নীড়: হামম। সত্যি। তবে ১টা কথা আমি
ও বলে দিলাম….. সকল মেহমান… family & আমার জানকে gun point এ রেখে তুমি বিয়ে হয়তো করছো আমায়। officially wife হবে তুমি কিন্তু মন মস্তিষ্ক থেকে আমার স্ত্রী সবসময় নিরাই থাকবে। কখনোই তুমি আমার ভালোবাসা হবেনা। ঘৃণা হবে। তোমার নাম এমন কি তোমার ছায়াকেও আমি ঘৃণা করবো। তুমি ভালোবাসার মেরিন না ঘৃণারমেরিন ……
মেরিন: তাতে আমার বাপের কি?😎😎😎 সেটা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আপনার অর্ধাঙ্গিনী হবো…. আপনার বউ হবো…. আর কিছু লাগবেনা। কাজী সাহেব।
কনিকা:এই কবির ওই মেয়েকে থামাও…. ওর জন্য যদি আমার নিরার….
কবির:মেরিন….
মেরিন: বলুন …. mr. khan…
কবির: যদি তুমি এই বিয়ে করো আমি তোমাকে তেজ্য করবো।
কথাটা শুনে মেরিন উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো। সে হাসির কারন সবার অজানা হলেও দাদুভাইয়ের কাছে না। এই হাসির মাঝে যে কতোটা দুঃখ কতোটা কষ্ট কতোটা হৃদয় ভাঙা চিৎকার লুকিয়ে আছে তা কেউ দেখতে পাচ্ছে।
মেরিন;😂😂। তো mr. khan…. আপনার আর আপনার স্ত্রীর সাথে আমার কি সম্পর্ক কি? যে আপনি আমাকে তেজ্য করবেন? আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আমি চাইলে আপনাদের তেজ্য করতে পারি। খান বাড়ির সম্রাজ্ঞী আমি। মেরিন বন্যা খান। আমার জীবনকে কি হবে আমি decide করবো। আপনি না।
কবির: মেরিন…
মেরিন: চুপ….. আর ১টা শব্দ করলে আপনাকে আর আপনার বউকে এখন এই মুহুর্তে জানে মেরে দিবো। তখন এই সাধের নিরা রহমানের কী হবে? so চুপ…. not a single word….
কাজী সাহেব।
.
তখন মেরিনের ঠিক কাজ করা কাজী এলো। ওদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হলো। এরপর নীড়কে আরো ১টা কাগজে সই করতে হলো যেটাতে লেখাছিলো যে মেরিনের মৃত্যুর আগে নীড় ২য় বিয়ে করতে পারবেনা এবং কোনো পরিস্থিতিতেই মেরিনকে divorce দিতে পারবেন না। নিরা রহমানের সাথে দেখাও করতে পারবেনা।
এরপর মেরিন নীড়কে নিয়ে দাদুভাইকে সালাম করলো এরপর নিহালকে।
নীড়: এখন কি আমি শেষবারের মতো নিরার কাছে যেতে পারি…
নীড়ের চোখে টলমল পানি। তা দেখে মেরিন অস্থির হয়ে গেলো।
মেরিন: একি জামাই আআপনি কাদছেন কেন? দদদাদুভাই উউনি কাদছে। এএকদম কাদবেন না।
মেরিন নীড়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিলো।
মেরিন:আপনার চোখে আবারো পানি কেন?
নীড়:……
মেরিন:আপনার চোখে এখন আআবার পপপানি এলে আমি আমি আমি নিরাকে মমমেরে দিবো…. কান্না থামান।
নীড়: এই না। ওকে কিছু করোনা। ও আমার জাব। কিন্তু ১টা বার ওর কাছে যেতে দাও। কতোটা রক্ত পরছে দেখো।
মেরিন:যান। শেষবারের মতো।
নীড় ছুটে নিরার কাছে গেলো। ব্যান্ডেজ করে দিলো।
নীড়: i m sorry জান…
নিরা: i understand জান….
নীড় নিরাকে জরিয়ে ধরলো।
যা দেখে মেরিন devil smile দিলো।
.
মেরিন: আমার বিয়ের সাক্ষী সবাই হলেন তো তাইনা? তো my dear press & media & politician আপনারা খুব ভালোভাবে ভয় পাওয়ার অভিনয় করেছেন। তারজন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ। আমাদের বিয়ে। আর mr. আজম (politician ) আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। এই special trained black cat force আমাকে আজকের জন্য দেবার জন্য। আর my dear মেহমানরা কারো গায়ে কোন আচরও লাগবেনা। ভয় পেয়েছেন তাই sorry ….. ভয়ের বিনিময়ে আপনারা perfect gift পাবেন। যার যেটা দরকার। like কারো bank loan…. কারো bill pass… কারো tender pass…. blah blah… তো সবাই আমাদের দোয়া, আশীর্বাদ করে যাবেন। আর বাকী মেহমানগন… ভয় পাবার কারন নেই। বিবাহ সম্পন্ন হইলো।
…..
……..
[চলবে……]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০২
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
চৌধুরী বাড়িতে…..
নতুন বউ নিয়ে নীড় ফিরলো। দোরের কাছে নীলিমা বরনডালা নিয়ে দারিয়ে আছে। গাড়ি থামতেই নীড় মেরিনকে ফেলেই হনহন করে ভেতরে যেতে নিলে নীলিমা বাধা দিলো।
নীলিমা: ভেতরে ঢুকছো কেন?
মেরিন: সেটাই তো…. বউ রেখে কেউ একা একা বাড়িতে ঢোকে…..
নীড়: মামনি ও আমার নিরা না… ও ….
নীলিমা: মেরিন…..
নিহাল:তুমি কি করে জানলে?
নীলিমা:ভুলে গেছো নাকি যে বাসায় TV আছে..??
নীড়: দেখি মামনি সরো…. ভেতরে যেতে দাও।
নীলিমা:না…. যেভাবেই হোক বিয়েটা হয়েছে। আর চৌধুরী বাড়ির বউ হিসেবে আমার কিছু দায়িত্ব আছে। তাই আমি তোমাকে এভাবে ঢুকতে দিতে পারিনা।
নিহাল: নীলিমা..
নীলিমা: ঘরের কর্ত্রী আমি….তাই আমার সংসার আমাকে সামলাতে দাও। ওদের ২জনকে বরন করতে দাও।
নীড়: মামনি আমি ওকে বউ বলে মানিনা….
নীলিমা: তাতে কিছু করার নেই…. সারাদেশের লোক দেখেছে যে তোমাদের বিয়ে হয়েছে। ৩কবুল বলে বিয়ে হয়েছে।
নিহাল: এটা…..
নীলিমা: চুপ।
নীলিমা ২জনকে বরন করলো।
নীলিমা: নীড় এবার মেরিনকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ঢোকো ।
নীড়: impossible … কখনোই না……..
মেরিন: আমি যদি উনার কাধে করে ঢুকি হবে?
বলেই মেরিন লাফ দিয়ে নীড়ের পিছনে গলা ধরে ঝুলে পরলো। নীড় মেরিনকে নামিয়ে দিলো।
নীলিমা: বিয়ের পর বউকে ১ম কোলে তুলে বাড়িতে ঢুকতে হয়। এটাই চৌধুরী বাড়ির নিয়ম।
নীড়: মামনি….. তুমিকি পাগল হয়ে গেছো???
নীলিমা নীড়কে একটু আলাদা ডেকে নিলো।
নীড়: মামনি তুমি……
নীলিমা: ঠিক করছি… কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়। এই মেয়েকে আমাকে আমার মতো সামলাতে দাও। ওই মেয়েকে তোমার ঘার থেকে আমি নামিয়েই ছারবো। ওর জীবন যদি ছারখার না করেছি তো আমিও…… উল্টা পায়ে দৌড়ে পালাবে….. দেখিস….
নীড়: মানে??
নীলিমা: দেখে যাও….. আমি মলমও লাগাবো আবার ক্ষত গভীরও করবো। তোমার অমঙ্গল হোক সেটা আমি কখনোই চাইবো না। তোমার ভালোর জন্য আমি সব করতে পারি বাবা….
নীলিমার কথায় নীড় মেরিনকে কোলে তুলে বাড়িতে ঢুকলো।
.
১ঘন্টাপর…..
মেরিনকে নীড়ের কাজিন ভাবিরা রুমে রেখে গেলো। সারা রুম ফুলের বাগান হয়ে আছে। খুবই সুন্দর করে। কিন্তু খাটে N❤N দেখে মেরিনের মাথা খারাপ হয়ে গেলো। ও ছুরি দিয়ে পরের N টাকে নষ্ট করে নতুন করে N❤M লিখলো।
মেরিন: নীড়ের পাশে কেবল আর কেবল মেরিন থাকবে।
এরপর মেরিন দারিয়ে গেলো। রুমের চারপাশটা দেখতে লাগলো। সব জায়গায় নিরার ছবি আর নিরার ছবি…..
মেরিন হাতের ছুরিটার দিকে তাকিয়ে devil smile দিলো। তখনই নীলিমা রুমে এলো।
নীলিমা: মামনি… কিছু তো মনে হয় খাওয়া হয়নি তোমার। এখন কিছু খেয়ে নাও। আমি নিজে খাইয়ে দিচ্ছি তোমায়। এসো।
মেরিন নীলিমাকে টেনে সোফায় বসিয়ে। হাত থাকা ছুরিটা দিয়ে নীলিমার গাল ছুইয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে আকিবুকি করতে করতে
বলল: পেছন দিয়ে সাধারন কাটার আঘাতের থেকে সামনাসামনি গুলি করা আমার বেশি পছন্দ।
নীলিমা: মমমানে?
মেরিন:কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়। এই মেয়েকে আমাকে আমার মতো সামলাতে দাও। ওই মেয়েকে তোমার ঘার থেকে আমি নামিয়েই ছারবো। ওর জীবন যদি ছারখা না করেছি তো আমিও….. ও উল্টা পায়ে দৌড়ে পালাবে…. কি তাইতো???
নীলিমার চোখ চরকগাছ।
মেরিন: কি নিখুত অভিনয়…. যে neurologist নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন চৌধুরী পর্যন্ত তোমার অভিনয় ধরতে পারলোনা।😁😁😁
নীলিমা: ধরবে কি করে… পরিচালনাতে যে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী ছিলো।😏😏😏।
বলেই ২জন হা হা করে হাসতে লাগলো। মেরিন নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: মামনি… what an acting …. u r too good….
নীলিমা: যার এমন ১টা কুটুপুটু বউমা আছে তাকে তো too good হতেই হবে। তবে তোমার লেখা এই dialogue টার জন্য আমি কিভাবে যে practice করেছি তা কেবল আমি জানি।
মেরিন:🤣🤣🤣। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা: এখনই দিচ্ছি।
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে আর মেরিন অদ্ভুদ দৃষ্টিতে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে।
নীলিমা: কি দেখছো?
মেরিন: মমতা।
নীলিমা: মানে?
মেরিন: মানে কিছুনা। আর শোনো পরশু তোমাকে কি করতে হবে?
.
২ ঘন্টাপর….
নীড় রুমে ঢুকলো। ঢুকে অবাক হয়ে গেলো। কারন রুমে আগুন জ্বলছে।
নীড়: এ কি??
মেরিন: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ধরিয়েছি । কিছু আবর্জনা পুরাচ্ছি।
নীড় দেখে বুঝতে পারলো যে কোনো ছবি পুড়ানো হচ্ছে। ১টা ছবি side এ পরলো। ছবিটা দেখে নীড় বুঝলো যে সেটা নিরার ছবি। কিন্তু মুখটা বিকৃত। নীড় রুমে চোখ বুলিয়ে দেখলো যে রুমে নিরার কোনো ছবিই নেই।
নীড়: এই এই …. তোমার সাহস কি করে হয় নিরার….
মেরিন: আমার সাহসের প্রমান ৪ঘন্টা আগেই পেয়েছেন।
নীড়: এই ছবি পুরিয়ে কোনো লাভ নেই মেরিন….. নিরার ছবি আমার বুকের মধ্যিখানে আকা আছে। আমার মন থেকে নিরাকে তুমি কখনোই নিরাকে সরাতে পারবে না।
মেরিন:আমি চাইলে নিরাকে দুনিয়া থেকে সরাতে পারি। আর আপনার মন থেকে পারবোনা?…..
আমি যদি চাইতাম তবে আপনার নিরাকে ছলে বলে কৌশলে আপনার সামনে জঘন্য প্রমান করতে পারতাম। এরপর কল্প লোকের কোনো কল্প লতা হয়ে আপনার সামনে নিজেকে উপস্থাপন করে আপনার মনে আমার জন্য ভালোবাসার ফুল ফোটাতে পারতাম। কিন্তু আমি তা করিনি। আমি , আমি হয়েই আপনার সামনে নিজেকে তুলে ধরেছি। কারন মেরিন ছলনা করতে জানেনা।
নীড়: হামম। ছলনা করতে জানেনা। ধংব্স করতে জানে….. কেরে নিতে জানে……
মেরিন: হামম। but u know what? i love you..
নীড়: & i hate you….
মেরিন: ভালো…. মিথ্যা ভালোবাসার থেকে সত্যিকারের ঘৃণা অনেক ভালো।
বলেই মেরিন নীড়কে সালাম করতে গেলো। নীড় পিছে সরে গেলো।
নীড়: আমি তোমাকে বউ হিসেবে মানিনা। so এই বউগিরি করবানা……
বলেই নীড় চলে যেতে নিলে মেরিন ধাক্কা দিয়ে নীড়রে সোফায় ফেলে নীড়ের পা ধরে সালাম করলো।
মেরিন: আপনার মানাতে কিছু যায় আসেনা। আমি আপনার বউ। সেটা আমি মানি । দুনিয়া মানে। আমি মানি আমি আপনার বউ। so thats it…. আপনার জীবনের যদি কোনো সত্য থাকে তবে সেটা হলো এই যে আমি আপনার বউ।
নীড়ের চোখে আগুন। মেরিনের গলা চেপে ধরে
বলল: আর তোমার জীবনের বড় সত্য হলো তুমি আমার চোখের কাটা। আজ থেকে আমার সকল অভিশাপে তুমি….
গলা চেপে ধরাতে মেরিনের দম আটকে যাবার অবস্থা। মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে। কিন্তু তবুও মেরিন নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করছেনা। উল্টো ওর ঠোটের কোনে হাসি। মেরিনের অবস্থা দেখে নীড় নিজেই মেরিনকে ছেরে দিলো। মেরিন কাশি দিতে লাগলো।
স্বাভাবিক হবার পর মেরিন
বলল: আপনার সকল অভিশাপে আমি হলেও আমার সকল আমলে আপনি…. আমার সকল দুআয় আপনি…..
.
নীড় চলে যেতে নিলো। মেরিন নীড়ের হাত টেনে নিয়ে ১টা স্বর্নের bracelet পরিয়ে দিয়ে
বলল: এটা সবসময় হাতে রাখবেন। এটা আমি কাবা শরীফের ওখান থেকে স্বর্নের গিনি কিনে এনে বানিয়েছি। যে গিনিটা কাবা শরীফে স্পর্শ করানো হয়েছে। এই bracelet টা আপনাকে সকল বিপদ আপদ থেকে দুরে রাখবে। ইনশাল্লাহ। আর এটা সেদিনই খুলবেন যেদিন আমি মরে যাবো……
নীড় তখনই ওটা হাত থেকে খুলে ছুরে bed এ ফেলল।
নীড়: তুমি এখনই আমার কাছে মৃত। আজীবন থাকবে। যদি তোমার বদৌলতে আল্লাহর তরফ থেকে আমার ওপর কোনো সোভাগ্য, রহমত নাযিল হয় তবে তার বদলে আমি আল্লাহর অভিশাপ নিতে চাইবো। তোমার বদৌলতে জান্নাতের থেকে জাহান্নাম কে আমি প্রাধান্য দিবো।
নীড়ের কথার জবাবে মেরিন শুধু ১টা হাসি দিলো। এরপর আবার bracelet টা এনে নীড়ের হাতে পরিয়ে দিলো।
মেরিন: ভালোভাবে কোনো কথাই বোঝেন না। পরিয়ে দিলাম। এরপরও যদি এটা কব্জি থেকে খুলে ফেলেন আপনার জানের শরীর থেকেও কব্জিটা কেটে ফেলা হবে। আর আপনি জানেন যে আমি এটা করতে পারবো।
.
নীড় কথা না বারিয়ে fresh হয়ে শুয়ে পরলো। মেরিনও fresh হয়ে change করে খাটে এসে নীড়ের বুকে just মাথা রেখে শুতেই নীড় ১টা ধাক্কা দিয়ে মেরিনকে ফেলে দিলো। bed এর কোনায় লেগে মেরিনের কপাল কোনা কেটে গেলো। মেরিন হাত দিয়ে দেখলো রক্ত পরছে।
নীড়: আগেই বলেছি আমি তোমাকে বউ বলে মানিনা। আমাকে touch করারও সাহস ২য় বার করবা না….. না হলে এর থেকেও বেশি আঘাত পাবে……
মেরিন: shahrukh khan এর দেবদাস ছবিটা দেখেছেন??? সেখানে পার্বতীর নিজের ওপর অনেক গর্ব ছিলো। কারন চাদের গায়ে কলঙ্ক আছে কিন্তু ওর গায়ে নেই। তাই দেবদাস ওর কপালে আঘাত করে। এরপর ১টা গান দেয়। গানে ১টা লাইন আছে।
” যো দাগ তুমনে মুঝকো দিয়া
উস দাগসে মেরা চেহরা খিলা
রাখুঙ্গি ইসকো নিশানি বানাকার
রাখুঙ্গি ইসকো হামিশা সাজাকার”
শরৎচন্দ্র চট্যোপাধ্যায়ের গল্পে দেবদাসের আঘাতে পার্বতীর রুপ সত্যি সত্যি বেরেছিলো কিনা জানিনা কিন্তু আজকে নীড়ের আঘাতে মেরিনের কপালে যে দাগ হলো তাতে অবশ্যই মেরিনের রুপ অবশ্যই বেরে গেলো।
নীড়: যার মন সুন্দরনা তার রুপও সুন্দরনা। তুমি খাটে ঘুমাও আমি সোফায় ঘুমাবো।
মেরিন: এইযে আমি আপনার কাছে কিছু চাইনা।like স্ত্রী মর্যাদা or what… তবে রোজ রাতে আপনার বুকে মাথা রেখে একটু শান্তির ঘুম ঘুমাতে চাই।
নীড়: ভাবলে কি করে যে তোমাকে আমার বুকে মাথা রাখতে দিবো……?
মেরিন: request করছি নীড়।
নীড়: না।
মেরিন: ভালো হবেনা।
নীড়: আর কি খারাপ করবে??
মেরিন:হাহাহাহা….. এই রিমোট টা দেখতে পাচ্ছেন?? এটা normal remote না। এটা press করলে bomb blast হবে……
নীড়: ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
মেরিন: আপনার কি মনে হয় মেরিন ভয় দেখায়?? ভয় তারা দেখায় যারা নিজেরা ভয় পায়।
আপনার ফোনে তো bomb tracker আছে। check করে দেখুন।
নীড় check করে দেখলো যে সত্যি আছে।
নীড়: তুমি এতোটা জঘন্য……..
মেরিন: যতোটা দেখছেন বা ভাবছেন তারথেকেও বেশি জঘন্য আমি।
বাধ্য হয়েই নীড় মেরিনকে বুকে জরিয়ে শুয়ে পরলো। মেরিন ১টা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
মনে মনে: জানিনা কতো বছরপর এমন শান্তি পেলাম…… আমার যে মাথা গোজার কোনো জায়গা নেই নীড়…. আজ থেকে পেলাম।
.
ওদিকে……
নিহাল: এসবের মানে কি?
নীলিমা: কোন সবের?
নিহাল: তুমি ভালো করেই জানো কিসের কথা বলছি? তুমি ওই মেয়েকে বউ বলে কিভাবে মেনে নিতে পারো? ওই অসভ্য বেয়াদব বেলাগাম মেয়েকে বউ হিসেবে কিভাবে মেনে নিতে পারো? এখন বলোনা যে নীড়কে বলা কথা আমি বিশ্বাস করবো। ওই মেয়েটা কতোটা খারাপ তুমি জানো? কি করেছে আজকে? তুমি কিছু বলছোনা কেনো?
নীলিমা: তুমি তোমার মনের ভাব প্রকাশ করো। কারন আজকের পর থেকে আমি আমার মামনির নামে কোনো বাজে কথা শুনবো না।
নিহাল: মামনি? তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?
নীলিমা: না। আমি একদম ঠিক আছি। তোমাদের বাবা ছেলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কারন আমার ছেলের পাশে কেবল মেরিনকেই মানায়। নিরা নয় মেরিনই আমার ছেলেকে সত্যিকারের ভালোবাসে। অকারনে ভালোবাসে। মেরিন নীড়ের জন্য perfect … রুপে, গুনে, যোগ্যতায়, বংশ পরিচয়, সবটায় ।
নিহাল: কি আবোল তাবোল বলছো? কোন জমানার মতো করে কথা বলছো?
নীলিমা: ঠিকই বলছি। আর শুরু থেকেই নিরাকে আমার পছন্দ ছিলোনা। কারোন যার বাবার ৩বিয়ে করা মা ২-৩ বিয়ে করা সে মেয়ে আর কতো ভালো হতে পারে?
নিহাল: নীলা….
নীলিমা: চিল্লাইও না। ঠিকই বলেছি। ওই মেয়েরও চরিত্র শুরু থেকেই আমার ভালোলাগেনি। যতোই ভালো হবার নাটক করুক না কেন… শুধু খান বাড়িতে থাকলেই খান বাড়ির শিক্ষা পেলেই সে খান বাড়ির মেয়ে হয়ে যায়না। খান বাড়ির রক্ত হয়ে যায়না। বিষবৃক্ষ কখনো আম গাছ হয়না
নিহাল: আর ওই মেয়েটা বুঝি ভালো?
নীলিমা: ওই মেয়েটার নাম আছে। আর সে তোমার মেয়ের মতো। সম্মান দাও।
নিহাল: তো? এই মেয়েটা সবার সাথে সবসময় খারাপ ব্যাবহার করে, মারামারি করে, ছেলেদের পোশাক পরে,…. এই মেয়ে এতোটাই খারাপ যে নিজের আপন মা-বাবা তাকে মেয়ে হিসাবে মানেনা…..
নীলিমা: এটা মা-বাবার কলঙ্ক। সন্তান খুনি, জঘন্য খারাপ হলেও মা-বাবা সন্তানকে ফেলে দেয়না। এনারা ফেলেছে।
নিহাল: তুমি যাই বলোনা কেন……
নীলিমা: আগে থেকেই মেরিনকেই আমার পছন্দ ছিলো।
নিহাল: তুমি ওকে কবে দেখলে?
নীলিমা: গতবছর। যখন আমি নিরাকে ঈদের জামা দিতে যাই। মেরিন বাড়িতে ঢুকলো। হাত থেকে অনেক রক্ত ঝরছিলো। তবুও কনিকা উঠে গেলোনা। সে নিরাকে কোন পোশাকে দেখতে ভালো লাগবে সেটা দেখতে ব্যাস্ত। পরে মেরিনের দাদু দৌড়ে এসে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো। মেরিন ১বার আমার দিকে তাকালো। কি অদ্ভুদ সেই চাহনী। কি মায়া সেই চোখে মুখে। কোনো কাজল কোনো লিপস্টিক ছিলোনা তার মুখে। কুদরতের সাজে সজ্জিত সে। যখন জানতে পারলাম যে কনিকা ওর মা। তাও আপন মা তখনই ভেবে নিয়েছিলাম যে কোনো ঘাপলা আছে। ভাবছিলাম যদি মেরিনই নীড়ের বউ হতো। কিন্তু নীড় তো নিরা নিরা বলে অজ্ঞান। কিন্তু ভাবতেও পারিনি যে মেরিন নীড়কে ভালোবেসে ফেলবে…. আর এতে আমার থেকে খুশি কেউ না।। কারন মেরিন নীড়কে সত্যিকারের ভালোবাসে ।
নিহাল: ঘাপলা টা কি??
নীলিমা: দারাও…. সবে তো গল্পের শুরু….
নিহাল: যাই হোকনা কেন….. নীড় মেরিনকে সারাজীবন ঘৃণা করবে। কোনোদিন ভালোবাসবেনা।
নীলিমা: বাসবে।
নিহাল: impossible …
নীলিমা: বাজী….
নিহাল: what???
নীলিমা: হামম। বাজী। চলো বাজী লাগি নীড়ের কাছে কি কখন মেরিন ঘৃণারমেরিন থেকে ভালোবাসার মেরিন হতে পারবে কিনা?
নিহাল: ok… লাগলাম বাজী….. আমি বললাম কখনোই নীড়ের কাছে মেরিন ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিন হতে পারবে না।
নীলিমা: আমি লাগলাম। হতে পারবে। আজকে মেরিন নীড়কে যতোটা ভালোবাসে তার থেকে হাজারগুন বেশি নীড় মেরিনকে ভালোবাসবে। তখন মেরিন নীড়কে ছারলেও নীড় মেরিনকে ছারবেনা।
.
সকালে…….
মেরিনের আগে ঘুম ভাঙলো। দেখলো যে ও এখনো নীড়ের বুকেই ঘুমিয়ে আছে। নীড়ের বুকে ১টা চুমু একে দিলো। এরপর নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। ঘুমের মধ্যে নীড়ের মনে হলো দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। চোখ খুলে দেখে কাহিনি কি…. মেরিন ছেরে দিলো।
নীড়: এসবের মানে জানতে পারি???
মেরিন:good morning kiss….
সন্ধ্যায় রিসিশনের পর নীড়-মেরিন খান বাড়িতে গেলো। দাদুভাই নিজেই বরন করে নিলো । নীড়কে দেখেই নিরা দৌড়ে এলো জরিয়ে ধরতে। কিন্তু পারলোনা। মেরিন সামনে দারালো।
মেরিন: নিরা আপপু….. অন্যের বরকে এভাবে জরিয়ে ধরতে এসোনা। মানুষ বলবে তোমার নজর খারাপ। খাটি বাংলায় কি বলে জানো….
নিরা আঙ্গুল তুলে বলল মেরিন….
সাথে সাথে মেরিন নিরার আঙ্গুল এমনভাবে মোচর দিলে যে নিরার আঙ্গুল ভেঙে যায়যায়।
মেরিন: সাহস কিভাবে হয় আমাকে আঙ্গুল দেখানোর?😤😤😤।
নীড়: আরে ছারো ওকে……
মেরিন ছেরে দিলো।
মেরিন: আপনার না হওয়া বউকে বলে দিন যেন ভুলেও আমার আপনার সামনে না আসে তবে এই দুনিয়া থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আর হ্যা… খান বাড়িতে শেষ ১০ সেকেন্ড গুনে নাও।
নিরা: মানে??
মেরিন: মানে get out from my house .. নিজের ভিখারী বাপের বাড়িতে যাও। get out..
কবির: তুমি ওকে বাড়ি থেকে বের করার কে??
মেরিন: বাড়ির মালিক….. কেন ভুলে যান mr. khan…. এখন নিরা বানু আপনি চলে যান এখান থেকে।
নীড়: ত….
মেরিন: বাড়ি থেকে বের করছি। দুনিয়া থেকে না।
নিরা: খালামনি….
কনিকা: চিন্তা করিসনা মা। তুই তো আমার সোনামা। লক্ষি মা। তোর জন্য তো সবার মনের দুয়ার খোলা। এর মতো অপয়া না।
মেরিন: হয়ে গেছে..? শেষ? আরো কিছু বলার আছে। নিরা… don’t waste my time… তোমার খালামনি হাজার চেষ্টা করলেও তোমাকে এই বাড়িতে রাখতে পারবেনা। so out.
.
নিরা চলে গেলো। মেরিন fresh হতে গেলো। নীড় বাগানে দারিয়ে আছে। কনিকা নীড়কে কফি দিলো।
নীড়: আরে খালামনি।
কনিকা: no worry। তুমি কালই ওই মেয়ের থেকে মুক্তি পাবে। কথা দিলাম।
.
সকালে…..
নীড় এখনো ঘুমাচ্ছে। মেরিনকে তমা(servant) এসে বলল যে নিচে office maneger এসেছে। মেরিন নিচে গেলো।
ম্যানেজার: hello mam… good morning …
মেরিন: good না bad সেটা তোমার এখানে আসার কারন শোনার পর decide করবো। বলে ফেলো।
ম্যানেজার: ম্যাম এই কাগজগুলোতে আপনার signature লাগবে?
মেরিন: কেন? কার বিয়ে লাগসে?
ম্যানেজার: না মানে ম্যাম এগুলো…
মেরিন: yeah… whatever . give me….
মেরিন ১বস্তা বিরক্তি নিয়ে পেপারগুলা পড়ছে। আর sign করছে। হঠাৎ মনে হলো কাগজটার মাঝে কিছু গন্ডগোল আছে। হামম। মাঝখান থেকে লুকানো divorce paper বের করলো।
মেরিন: কনিকা খান….. মিসেস কনিকা খান।
মেরিনের আত্মা কাপানো কন্ঠে নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো। সবাই দৌড়ে নিচে এলো। মেরিনের রাগান্বিত কন্ঠে আজকে পুরা খান বাড়ি কেপে উঠলো।
.
মেরিন: এসবের মানে কি?? বলবেন….
কনিকা: যেটা দেখছে সেটাই….. divorce paper.. তোমার আর নীড়ের….
এটা শুনেই মেরিন টেবিলে পরে থাকা ছুরি নিয়ে কনিকাকে দেয়ালে ঠেকিয়ে ছুরিটা গলায় ধরলো।
মেরিন: কি বললেন আরেকবার বলেন… বলেন..
কবির-নীড় মিলেও সরাতে পারলোনা। পরে দাদুভাই এসে সরালো।
নীড়: তুমি কি পাগল? নিজের মায়ের গলায় কেউ ছুরি ধরে.?
মেরিন: আমি ধরি….. আর unfortunately এই মহিলা আমাকে জন্ম দিয়েছে। আর তাই সে এখনো জীবিত আছে। না হলে আমার আর উনার divorce এর কথা উচ্চারন করার জন্য এতোক্ষনে উনার গলাটা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যেতো।
বলেই মেরিন হাতে থাকা ছুরিটা ছুরে মারলো। যার handle টা গিয়ে লাগলো দাদুভাইয়ের পায়ে দাদুভাই আহ বলে উঠলো। মেরিন দৌড়ে দাদুভাইয়ের কাছে গেলো। তেমন ব্যাথা পায়নি তবুও মেরিন অস্থির হয়ে গেলো।
নীড় মনে মনে: এই মেয়ে এমন কেন?? নিজের মায়ের গলায় ছুরি ধরে…. অথচ দাদুভাইয়ের সামান্য ব্যাথায় অস্থির ……
বিকালে ওরা ২জন চৌধুরী বাড়ি পৌছালো।
…..
……..
চলবে…
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৩
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
রাতে……
মেরিন কাপড় চোপর ভাজ করে cupboard এ রাখছে। নীড় কিছু কাজ করছে।
মেরিন: বউ আমি আপনার সরাসরি দেখতে পারেন আমাকে…….
নীড়: তোমার ঠিক পিছেই যে ১টা ঘড়ি আছে সেটা দেখো। তোমার দিকে তাকানোর আগে যেন আমি অন্ধ হয়ে যাই।
.
পরদিন…….
নাস্তার টেবিলে।
নিহাল: কি ব্যাপার….. আজকে সকাল সকাল এতো item…. কলিজা ভুনা… আলু পরাটা, মাংস ভুনা, সবজি, পাস্তা, সুজির হালুয়া। ঘ্রাণ এবং রং-রুপই বলে দিচ্ছে যে খাবার কতো মজা হয়েছে।
সবাই মন ভরে তৃপ্তির সাথে খেলো। শুধু তাই নয় দুপুরে আর রাতেও সবাই জমিয়ে খেলো । রাতের খাওয়ার পর সবাই বসে পিঠা খাচ্ছে। পাটিসাপটা, পুলি, মালপোয়া।
নিহাল: নীলিমা বিয়ের চক্করে তো ১২দিন ধরে তুমি রান্না বান্না করছোনা। এই ১২দিনে তোমার হাতের মতো রান্না আমার মা-দাদীমার মতো রান্না কিভাবে শিখে গেলে?
নীলিমা: আজকে সকাল থেকে কোনো রান্নাই আমি করিনি। এমনকি রান্নাঘরে পা পর্যন্ত রাখিনি।
নিহাল: তাহলে??
নীলিমা: সব রান্না আজকে মামনি করেছে।
নিহাল: what???
নীড় মাঝপথে খাওয়া থামিয়ে হাত থেকে পিঠা ফেলে
বলল: এখনি hospital এ চলো।
নিহাল: মানে?
নীড়: এই মেয়ে খাবার বানিয়েছে । damn sure… আমাদের মেরে ফেলার জন্য বিষ টিষ মিশিয়েছে।
মেরিন: যদি আপনাদের মেরে ফেলতে হয় তবে এখন এই মুুহুর্তে bomb blast করিয়ে মারতে পারি….. গুলি করে মারতে পারি…. মেরিন ছলনা করে কাজ করেনা । মেরিন ভীতদের মতো পেছনো ছুরি চালায় না…
নীড় উঠে চলে গেলো। নিহালও চলে যেতে নিলো।
মেরিন: দারাও বাবা…..
নিহাল: খবরদার আমাকে বাবা ডাকবেনা। আমি তোমাকে সেই অধিকার দেইনি।
মেরিন: মেরিনকে অধিকার দেয়ার অধিকার তোমাদের কারো নেই। আমি বাবা ডাকবো তো ডাকবো। তোমাকে জিজ্ঞেস করে ডাকবোনা । সে যাই হোক। মামনি বলল যে চৌধুরী পরিবারে নাকি নতুন বউকে বিয়ের পরপরই কিছু রান্না করে বাড়ির সবাইকে খাওয়াতে হয়। রান্না যখন করতে হবে তাই আজই করলাম। এরপর কবে করবো তা আমি নিজেও জানিনা। চৌধুরীরা নাকি নতুন বউয়ের রান্না খেয়ে তাকে কিছু gift করো।
নিহাল: তোমাকে আমি ছেলের বউ হিসেবে মানিনা।
মেরিন: সেটা তোমার ব্যাপার। তবে আজকে দেখি সত্যি চৌধুরীদের খান্দানি নিয়মের জোর আছে কিনা?
নিহাল: মানে?
মেরিন: খুব সহজ। আমি রান্না করেছি। তাই আমি কোনো gift চাইবো সেটা দিতে হবে।
নিহাল:…..
মেরিন: ভয় নেই। টাকা পয়সা চাইবোনা। ওগুলো তো আমারই অভাব নেই। তুমি আর কি দিবে….
নিহাল: তুমি কি আমাকে নিচু দেখাচ্ছো।
মেরিন: মোটেও না। আমি কেবল তোমাকে ভয় পেতে না করছি।
নিহাল: কি চাই?
মেরিন: বিয়ের দিন তোমাকে সালাম করেছিলাম। কিন্তু তুমি শুধু নীড়ের মাথায় হাত দিয়েছিলে। আমার মাথায় দাওনি। আজকে আমি আবার তোমাকে সালাম করবো। তুমি আমার মাথায় হাত রাখবে।
নিহাল: কেউ সালাম করলে তার মাথায় শুধু হাত রাখাই হয়না সাথে কিছু আশীর্বাদও করতে হয়। তোমাকে আমি কখনো আশীর্বাদ করতে পারবোনা।
মেরিন: না না আশীর্বাদ করতে হবেনা। সেটা আমায় কেউ করেনা। শুধু মাথায় হাত রাখবে। মাথায় হাত রেখে অভিশাপই করো। কিন্তু তবুও হাত রাখো।
নিহাল অবাক হয়ে গেলো মেরিনের কথায়।
মেরিন সালাম করলো। নিহাল মাথায় হাত রাখলো।
মনে মনে: সুখী হও…..
.
মেরিন রুমে গেলো। গিয়ে দেখে নীড় সোফায় হেলান দিয়ে কপালে হাত দিয়ে বসে আছে। মেরিন গিয়ে ধাপ করে নীড়ের কোলে বসলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো।
নীড়: এই মেয়ে আমার কোলে বসলে কেন, নামো। নামো বলছি।
মেরিন: আমার লাগে নাম নেই???? এই মেয়ে এই মেয়ে বলে ডাকেন কেন??
নীড়:তো??
মেরিন: বুঝেছি আপনি আমাকে ভালোবেসে এই মেয়ে বলে ডাকেন। যাই হোক। আজকে আমার রান্না খেলেন। বিনিময়ে আমাকে কিছু উপহার দিবেন না???
নীড় মেরিনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।
নীড়: তোমার রান্না আমার জন্য বিষ বরাবর। আর উপহার । যদি চাও তবে উপহারে তালাক দিতে পারি।
মেরিন:🤣🤣। এতো বড় gift আমি নিতে পারবোনা।
মেরিন উঠে আমার আবার নীড়ের কোলে বসলো।
মেরিন: আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনি চান আর না চান আপনাকে আমার সাথে থাকতেই হবে।
.
পরদিন……
নীড় মেডিকেল যাবে। গাড়িতে গিয়ে বসেই দেখলো পাশের সিটে মেরিন বসে আছে।
নীড়: তুমি???
মেরিন: any doubt ??,
নীড়-মেরিন মেডিকেল পৌছালো। গিয়ে নীড় জানতে পারলো যে নীড় রোগী দেখার পাশাপাশি আর কোনো ক্লাস করাতে পারবেনা। শুধু 2nd year এর A section এর ক্লাস নিতে পারবে।
নীড় কাহিনি বুঝতে পারলো। নীড় আজকে রোগী না দেখে রুমে বসে আছে। তখন ওর ১টা কলিগ ওর রুমে এলো।
নীড়: আরে এলা। তুমি?
এলা: হামম।
নীড়: বসো ।
এলা: তোমার মুখটা এমন লাগছে কেন?
নীড়: হাহ্… আর কতো ভালো থাকবো? মেরিনের বর হয়ে বেচে আছি তাই বেশি।
এলা: আমি বুঝি তোমার কষ্টটা।
এলা নীড়ের হাতের ওপর হাত রাখলো।
এলা: কিন্তু তোমার তো এভাবে থাকলে হবেনা…. তো….
তখনই কোথায় থেকে মেরিন এসে এলার চুলের মুঠি ধরে দার করালো।
নীড়: তুমি?
মেরিন: তোর সাহস কি করে হয় আমার নীড়ের হাত ধরার। আজকে আমি তোর এমন অবস্থা করবো যে তুই আমার নীড়ের দিকে ভুল করেও আর কখনো হাত বারানোর কথা কল্পনাও করতে পারবিনা…..
মেরিন এলার চুল ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।
নীড়: মেরিন ছারো ওকে….. ছারো বলছি।
মেরিন টেনেই নিয়ে যাচ্ছে। মেরিন এলার চুল টেনে নিচে নিয়ে মাঠের ওখানে নিয়ে সবার সামনে নিচে ফেলল। এরপর এলার ডান হাতের ওপর পারা দিয়ে দারালো। চিকন পেন্সিল হিলের যাতা খেয়ে এলার জান বেরিয়ে যাচ্ছে। মেরিন আবার এলার চুলের মুঠি ধরে
বলল: খুব শখ না আমার নীড়ের হাত ধরার… হ্যা? আর যদি কখনো নীড়ের দিকে চোখ তুলে তাকাস তবে জানে মেরে দিবো।
এরপর এলাকে ছেরে দিলো।
মেরিন: সবাই নিজের কানে ১টা কথা ভালোভাবে ঢুকিয়ে রাখো। নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর স্বামী। কেউ উনার দিকে চোখ তুলে তাকালেও আমি তার চোখ উঠিয়ে ফেলবো। এরপরও যদি কেউ কলিজা দেখায় তবে আমি তার কলিজাটাই বের করে ফেলবো।
.
২দিনপর……
২জন বাড়ি ফিরছে। সামনে ১টা গাড়ি এমনভাবে break মারলো যে accident এরানোর জন্য নীড়কেও খুব জোরে break চাপ দিতে হলো। যার কারনে স্টিয়ারিং এ লেগে নীড় কপাল সামান্য একটু খানি কেটে গেছে। একদম সামান্য।
মেরিন : নীড় আপনি ঠিক আছেন?
মেরিন একদম অস্থির হয়ে গেলো। পাগলের মতো করতে লাগলো। one time ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলো।
নীড়: আরে ঠিক আছি…..
মেরিন দেখলো সামনের গাড়িটা start দিয়ে চলে যাচ্ছে।
মেরিন নীড়কে
বলল: নীড় আপনি পিছে গিয়ে বসুন।
নীড়: মানে?
মেরিন: পিছে যান…..
নীড়কে বাধ্য হয়ে পিছের সিটে গেলো। মেরিন driving sitএ বসলো। এরপর এমন speed এ গাড়ি চালাতে লাগলো যে ভয়ে নীড়ের আত্মা যায়যায়।
মেরিন গাড়ি একদম ওই গাড়ির সামনে নিয়ে থামালো । এরপর গাড়ি থেকে নেমে ওই গাড়ির driverএর কলার ধরে টেনে বের করলো । এরপর ইচ্ছা মতো পিটানো শুরু করলো।
মেরিন: তোর জন্য আমার নীড়ের কপাল কেটে গেছে। তোকে তো আমি…..
মেরিন মারতেই আছে মারতেই আছে। ততোক্ষনে জনও চলে এসেছে। অনেক কষ্টে নীড় মেরিনকে সরিয়ে আনলো।
নীড়: পাগল হয়ে গেছো। মরে যাবে লোকটা।
মেরিন:যাক। ওর জন্যেই আপনি ব্যাথা পেয়েছেন।
নীড়: আরে এটা সামান্য একটু ব্যাথা।
মেরিন: আপনার জন্য সেটা সামান্য। আমার জন্য নয়। জন….
জন: জী ম্যাম…..
মেরিন: এর এমন অবস্থা করো যেন আর কোনোদিন গাড়ি না চালাতে পারে।
জন: ম্যাম আপনার হাত তো কেটে গেছে। রক্ত বের হচ্ছে।
নীড়ও দেখলো।
মেরিন: ওহ হ্যা। এমনভাবে বলছো যেন এই ১ম কেটেছে। আসছি।
নীড় driving sit এ বসতে নিলেই
মেরিন বলল: আরে আরে আপনি drive করবেন নাকি?
নীড়: হ্যা।
মেরিন: মোটেও না আপনি ব্যাথা পেয়েছেন না…. তো কিভাবে drive করবেন?
নীড়: আরে এ…..
মেরিন: কোনো কথানা।
মেরিন কাটা হাত নিয়েই drive করে বাড়িতে পৌছালো। মানবতার খাতিরেও নীড় মেরিনের কাটা হাতের কথা জিজ্ঞেস করলোনা। কারন ঘৃণা। এভাবেই চলছিলো দিনকাল। মেরিনকে দেখে নীড় অবাক হলেও ঘৃণা ১বিন্দুও কমেনি। কিন্তু মেরিনের ভালোবাসা বেরে গেছে। সবসময় নীড়ের সামনে ঢাল হয়ে দারিয়ে থাকে। ১টা আচরও লাগতে দেয়না নীড়ের গায়ে। রোজ রাতে নীড়ের বুকে ঘুমায়। আর সকালে good morning kiss…
.
১মাসপর……
নীড়-মেরিন কোথাও যাচ্ছে। তখন দেখলো। যে ১টা মেয়ে taxiএর জন্য দারিয়ে আছে। আঙ্গুলে ব্যান্ডেজ করা। আর মেয়েটা নিরা। নীড় গাড়ি থেকে নামতে নিলে মেরিন হাত ধরে বাধা দিলো। নীড় ঝারা দিয়ে মেরিনের হাত সরিয়ে দিলো। নীড় বেরিয়ে গেলো
নীড় নিরার হাত ধরে
বলল: তততোমার হাতে কি হয়েছে? তুমি এখানে কি করছো?
নিরা: কি আর করবো বলো। গরীব মানুষ। তাই taxi এর জন্য দারিয়ে আছি ।
নীড়: কিন্তু তোমার কাছে তো গাড়ি ছিলো।
নিরা: ছিলো। কেরে নিয়েছে।
মেরিন: একটু ভুল হলো। কেরে নেইনি। আমার জিনিস আমি ফেরত নিয়ে নিয়েছি মাত্র। আমার সম্পত্তি আমি তো আর কোনো ছোটলোক পথের ভিখারীর সাথে share করবোনা।
নিরা: মেরিন…
মেরিন: চুপ ভিখারীর ঘরে ভিখারী, ছোটলোকের ঘরে ছোটলোক, চোরের ঘরে চোর।
নীড়: mind ur language ….
মেরিন: চুপচাপ গাড়িতে উঠুন।
নীড়:না।
মেরিন: contract এর কথা ভুলে গিয়েছেন???
নীড়: go to hell with that contract……
মেরিন: আপনি সত্যি ভালো কথা ভালোভাবে বোঝেন না…..
মেরিন gun টা বের করলো। সেটা দেখে ভয়ে নিরা নীড়কে চেপে ধরলো।
মেরিন: ছার নীড়কে….l না হলে আমি তোকে গুলি করে দিবো।
নীড় নিরার সামনে দারালো।
নীড়: করো গুলি…… নিরার কাছে যেতে হলে আগে নীড়কে জানে মারতে হবে……. নীড়ের বুক থেকে কখনো নিরাকে সরাতে পারবেনা……
মেরিন: নীড় ওকে ছেরে দিন…….
নীড়: না….. দেখো এখন আমি তোমার চোখের সামনে কি করি……
বলেই নীড় নিরার কোমড় জরিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। এরপর কেবল kiss করবে তখনই কেউ ওদের chloroform দিয়ে দিলো। ২জন অজ্ঞান হয়ে গেলো।
.
৩ঘন্টাপর…….
২জনের জ্ঞান ফিরলো। নীড় চোখ মেলে দেখলো যে ওকে চেয়ারের সাথে লোহার শেকল দিয়ে বাধা হয়েছে। কিন্তু লোহার শেকলের ওপর ১টা কিছুর আবরন লাগানো হয়েছে যেন লোহার শেকলটা দিয়ে নীড়ের গায়ে ব্যাথা না লাগে। আর ওর চোখ বরাবর আছে মেরিন।
মেরিন: hello honey…….
নীড়: আমাকে এখানে কেন এনেছো??
মেরিন: ছবি দেখাতে…..
নীড়: মানে?
মেরিন: মানে আপনার ডান দিকে দেখুন……
নীড় ডানদিকে ঘুরলো। দেখলো সেখানে নিরাকে দারা করানো। ওকে কস্টেপ দিয়ে পেচিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নীড়: নিরা…. ছেরে দাও ওকে।
মেরিন: ছেরেদিলে ছবি কিভাবে দেখবেন?
নিরা: please মেরিন আমাকে ছেরে দে। আমি কখনো তোর ছায়াও মারাবোনা…..
মেরিন: সেটা আজকে আমার ছায়া মারানোর আগে ভাবা দরকার ছিলো……..
বলেই টেবিলে থাকা ৪-৫টা ছুরি থেকে সবথেকে ভয়ংকর আর ধার ছুরিটা হাতে নিলো।
মেরিন: আমার এই ছুরি গুলো অনেকের রক্ত ঝরিয়েছে। কিন্তু আজকে প্রথম জান নিবে……
নীড়: না মেরিন তুমি এমন কিছু করবেনা…
মেরিন: আমি এমনটাই করবো ॥
খুব শখনা তোর মিথ্যা আঙ্গুল কাটা নিয়ে সমবেদনা নেয়ার। এখন সত্যি সত্যি কাটার যন্ত্রনা উপভোগ কর।
মেরিন নিরার কাছে গেলো।
মেরিন: তুই এই হাতে নকল ব্যান্ডেজ করেছিলিনা…..
বলেই ছুরি দিয়ে নকল ব্যান্ডেজটা ছুরি দিয়ে কেটে ফেলল।
মেরিন:এই হাত দিয়েই নীড়কে চেপে ধরেছিলিনা…..
বলেই নিরার হাতে ছুরি দিয়ে পোচ মারলো……
নীড়: নিরা…..
মেরিন নিরার অন্য হাতে পোচ দিলো।
নীড়: মেরিন ওকে ছেরে দাও… আমি আর কখনো ওকে touch করবোনা। এমনকি তাকাবোও না ওর দিকে…. ওকে ছেরে দাও…….
মেরিন নীড়ের কথা কানে না নিয়ে নিরাকে একের পর একের আঘাত করেই যাচ্ছে…. শেষে ছুরি নিরার গলা বরাবর চালাতে নিলে
নীড় বলে
উঠলো: তোমাকে আমার কসম লাগে থেমে যাও মেরিন….
.
মেরিন থেমে গেলো। ছুরিটা just নিরার গলায় touch করেছে। নীড়ের কসমে থেমে গেলো।
নীড়: আমি কথা দিলাম যে কখনো নিরার কাছে যাবোনা…. তবু ওকে মেরে ফেলোনা please …..
মেরিন থেমে গেলো। নিরার থেকে ৪কদম সরে এসে হাতের ছুরিটা দিয়ে নিজেরই অন্যহাতে চালাতে লাগলো। নিজের হাতে একের পর এক পোচ দিতে লাগলো। আর সাপের মতো কুমাতে লাগলো।
জন: ম্যাম… ম্যাম… কি করছেন কি?
জবাবে মেরিন এমনভাবে জনের দিকে তাকালো যে জন কেপে উঠলো। পিছে চলে গেলো। নীড় অবাক চোখে দেখছে।
মেরিনের চোখ অসম্ভব লাল।
মেরিন: জন….. নিরার মাথার তুল সব ফেলে ন্যারা করে। মুখে কালি মাখিয়ে….. ছবি তুলে facebook এ newspaper এ খবরে সব জায়গায় দিয়ে দাও যে এই ভিখারীর বাচ্চাটা চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। এরপর ব্যান্ডেজ করো।
নিরা : না মেরিন না….. এর থেকে তুই আমাকে জানে মেরে ফেল তাও ভালো। কিন্তু এমন করিস না। আমি কথা দিচ্ছি যে কোনোদিন তোদের সামনে আসবোনা। তবুও আমার সাথে এমন করিসনা।
মেরিন:জন…. ৫মিনিট সময় দিলাম……
জন: জী ম্যাম…. এই সানা…..
সানা নামের মেয়েটা এসে মেরিনের কথা মতো কাজ করতে লাগলো।
জন: ম্যাম এবার তো ব্যান্ডেজ করান। এখন তো নিরা যথেষ্ট শাস্তি পাচ্ছে।
মেরিন: আমি নিরার জন্য আমার হাত কাটিনি….. আমি তোমাকে ২টা injection এর নাম লিখে দিচ্ছি। সেগুলো এখন গিয়ে নিয়ে আসবে।
জন: ok.. mam…..
.
১০মিনিটপর…..
মেরিন নীড় ডান হাতে ১টা injection push করলো। এরপর লোহার খুব সরু ধারালো কাঠির মাথা আগুনে পুরিয়ে নীড়ের হাতে মেরিন লিখতে লাগলো। injection এর কারনে নীড় হাতে একটুও ব্যাথা পাচ্ছেনা। নীড়ের হাত থেকে রক্ত ঝরছে। তা দেখে মেরিনের জানটা বেরিয়ে যাচ্ছে।
মেরিন: iii m sssorry…. কতো রক্ত বের হচ্ছে আপনার….. তততাইতো আআমি আপনার থেকে চচচারগুন রক্ত বের করছি। আপনার ব্যাথা লাগছেনা তো?? আপনার এই ক্ষতটা তারাতারি শুকিয়ে যযযাবে। কিন্তু এই মমমেরিন নননামটা সবসময় সারাজীবন আআপনার হহহাতে থাকবে….. আপনার হাতে লেখা এই মেরিন নামটা আপনাকে সসসবসময় আমার নাম স্মরন করিয়ে দদেবে। আপনি চাইলেও কককখনো ভুলতে পপপারবেন না যে…. মমমেরিন আপনার বউ। আপনার life partner ….. আপনি না চাইলেও এই লেখার মতো আমিও সারাজীবন আপনার জজীবনে থাকবোহ।
মেরিন নীড়ের হাতে নিজের নামটা লিখে medicine লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো। এরপর নীড়ের বাধন খুলে দিলো। মেরিনের মাথাটা ঝিমঝিম করতে লাগলো।
জন: ম্যাম….. এবার তো হাতে ব্যান্ডেজ করিয়ে নিন….
মেরিন: হু… হামম। দাও।
জন: দিন ম্যাম হাত….
মেরিন: আমারটা আমিইহ…. ককরতে পারবো…….
জন: একি স্যার কি করছেন কি??
মেরিন ঘুরে দেখলো যে নীড় সেই লোহার কাঠিটা দিয়ে যেন কি ১টা লিখলো। মেরিন দৌড়ে গিয়ে নীড়ের হাত থেকে ওইটা ফেলে দিলো।
মেরিন: আআপনার হাত থেকে তো রররক্ত পর……
মেরিন দেখলো যে নীড় মেরিনের আগে ঘৃণার শব্দটা লিখেছে।
নীড়: তুমি আমার হাতে মেরিন লিখেছো। আমি তার আগে ঘৃণার কথাটা লিখলাম। আমার হাতের মতো আমার মনেও এবং আমার জীবনেও তুমি আজীবন ঘৃণারমেরিন ই হয়ে থাকবে…….. কখনো ভালোবাসার মেরিন হতে পারবেনা…….
মেরিন নীড়ের হাত নিয়ে ব্যান্ডেজ করতে করতে
বলল: যেভাবেই হোক আপনার মনে আমার নামতো থাকবে। সেটা ভালোবাসার নাই বা হলো…. হোক না সে নামটা ঘৃণার। ঘৃণার উছিলায় আমি সারাজীবন আপনার বুকের গভীরে তো থাকতে পারবো……
কারন যাকে আমরা ভালোবাসি তাকে বুকের মাঝে রাখি। আর যাকে ঘৃণা করি তাকে রাখি বুকের গভীরে….
ভালোবাসা ভোলা গেলেও ঘৃণা কখনো ভোলা যায়না।
আপনার ঘৃণা কখনোই আপনাকে মেরিনের নাম ভুলতে দেবেনা……
মেরিন মরে গেলেও না। আর এটাই ঘৃণার মেরিনের বড় পাওয়া।
নীড়: মেরিনের মৃত্যুই এখন নীড়ের সকল দোআয়……
.
১৫দিনপর…..
মেরিন পরীক্ষা দিচ্ছে। তখন হঠাৎ ১টা message পেয়ে পরীক্ষা মাধপথে রেখেই মেরিন ছুটলো। নীড় balcony তে দারিয়ে ফোনে কথা বলছিলো দেখলো মেরিন দৌড়ে কোথাও যাচ্ছে।
নীড়: এরনা exam চলছে…. exam রেখে কোথায় যাচ্ছে ?? জাহান্নামে যাক….. কিন্ত এ তো এর study নিয়ে অনেক serious….
তখনই নীড়ের mobile এ নীলিমার ফোন এলো। জানতে পারলো মেরিনের দাদুভাইয়ের accident হয়েছে। নীড়ও hospital এ গেলো।
.
হাসপাতালে…..
doctor : uncle এর রক্ত লাগবে….
মেরিন:doctor uncle …. আমার রক্তও তো O+….. আমারটা নিন….
doctor : না মামনি… তোমার এমনিতেই রক্তশূন্যতা… তারমধ্যে BP একদম low….. তোমার শরীর থেকে রক্ত নিতে পারবোনা…
মেরিন:আমার বাচা মরা matter করেনা….. আমার দাদুভাইকে বাচান……
নীলিমা: মামনি… মামনি… আমি দেখছি কোথায় রক্ত পাওয়া যায়??
নার্স: sir… blood bank এ blood নেই।
মেরিন: দেখেছেন uncle .. আপনি আমার রক্ত নিন।
doctor : কিন্তু ১জনের জীবন বাচাতে গিয়ে আমি অন্যজনের জীবন নিতে পারবোনা।
মেরিন doctor এর কলার ধরে
বলল: এই doctor এই.. আমার জীবনের বিনিময় হলেও আমার দাদুভাইয়ের জীবন বাচান….. এই পৃথিবীতে আমার বাচার দরকার নেই কিন্তু আমার দাদুভাইয়ের বাচার দরকার আছে। তাই আমার চিন্তা বাদ দিয়ে আমার দাদুভাইয়ের জীবন বাচান। না হলে আপনাকে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবেনা….
doctor : ok.. fine.. cool … চলো।।।
মেরিন কেবল যাবে ভেতরে তখনই
কবির: দারাও রানা(doctor )… কনিকার blood group ও O+… তাই কনিকাই বাবাকে রক্ত দেবে।
( কবির-কনিকা দেশের বাইরে ছিলো। দাদুভাইয়ের খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছে)
রানা: thats better ….
কনিকা: চলুন ভাই।
মেরিন: uncle …. আমার দাদুভাই…. আমিই রক্ত দিবো।
কবির: তুমি ভাবলে কি করে যে তোমার বিষাক্ত রক্ত আমি আমার বাবাকে দিতে দেবো…
মেরিন: এই mr. khan….. সাপের বিষ কেবল মারতে নয় বাচাতেও লাগে।
আমি যখন বলেছি তখন রক্ত আমিই দিবো…..
রানা: মামনি…… দেখো তোমার শরীর থেকে speed এ রক্ত নিতে পারবোনা। রক্ত কম থাকায় ঝামেলা হবে… late হবে….. uncle এর জন্য ভালো হবেনা। তাই কনিকা ভাবির রক্তটা নিবো। its about ur দাদুভাই……..
মেরিন বাধ্য হয়ে রাজী হলো। operation চলছে। সবাই একসাথে বসে আছে। কবির কনিকা কে শ্বান্তনা দিচ্ছে। আর মেরিন একা একা এক কোনে। ওকে শ্বান্তনা দেয়ার কেউ নেই…….
.
operation successful হলো।
কিছুদিনপর দাদুভাই সুস্থ হলো। নীড় কিছুতেই অংক মিলাতে পারছেনা।
নীড় মনে মনে: মেয়েটা অনেক খারাপ। কিন্তু তবুও ওর নিজের বাবা কিভাবে ওর রক্তকে বিষাক্ত বলতে পারে…… strange ……
…..
……..
চলবে…
গল্প ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৪
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
২দিনপর……
খাবার টেবিলে…..
নীলিমা:এখন তো মামনির exam শেষ। আর বিয়ের প্রায় ২মাস হয়েও গিয়েছে তোমাদের ।
নীড়: তো??
নীলিমা: তাই আমি ঠিক করেছি যে তোমরা ২জন next week হানিমুনে যাচ্ছো।
নীড়: what??? impossible ….
মেরিন: কিন্তু মাম…..
দাদুভাই: কোনো কিন্তু না…..
সবাই ঘুরে দেখলো যে দাদুভাই দারিয়ে আছে। দাদুভাইকে দেখে মেরিন দাদুভাই বলে দৌড়ে গেলো।
মেরিন: তুমি এলে যে? আমাকে বলতে আমি চলে যেতাম…. কষ্ট করে তুমি আসতে গেলে কেন?
দাদুভাই: তোর শশুড় বাড়িতে কি আমি আসতে পারিনা দিদিভাই?
মেরিন: কি যে বলো না।
নীড় এসে দাদুভাইকে সালাম করলো।
নীড়: whats up young man???
দাদুভাই: একদম বিন্দাস।
নীড়: চলো breakfast করবে চলো।
দাদুভাই: breakfast করবো বলেই তো সকাল সকাল চলে এলাম। কিন্তু তারআগে…. এই তোমরা ভেতরে আসো।
তখনই ২০জন হাতে করে ২০ধরনের ডালা নিয়ে ভেতরে ঢুকলো।
নিহাল: এগুলোর কি দরকার ছিলো কাকা??
দাদুভাই: অনেক দরকার…. ১ম নাতনীর শশুড় বাড়িতে এলাম। খালি হাতে কি আসা যায় নাকি? নীলিমা মা…. এগুলো রাখার ব্যাবস্থা করো।
.
একটুপর…..
দাদুভাই: দেখো দাদুভাই… তোমাদের বিয়েতে তো আমি কোনো gift দিতে পারিনি । তাই এই হানিমুন প্যাকেজটা আমার তরফ থেকে তোমাদের জন্য wedding gift…..
বয়স্ক লোকটার কথা কেউ ফেলতে পারলোনা।
.
দাদুভাই চলে যাবার আগে……
দাদুভাই: নীড় দাদু…. একটু এসো তো…
নীড়: হ্যা দাদুভাই….
দাদুভাই: তোমাদের রুমে নিয়ে চলো……..
নীড়: চলো।
২জন নীড়ের রুমে গেলো।
দাদুভাই: দরজাটা লাগাও।
নীড়: ok…..
নীড় তাই করলো।
দাদুভাই: globe আছে রুমে?
নীড়:হ্যা?
দাদুভাই: globe আর মোমবাতি নিয়ে আসো।
নীড় নিয়ে এলো। দাদুভাই মোমবাতি জালিয়ে বলল লাইট বন্ধ করে দিতে। নীড় তাই করলো। এবার দাদুভাই মোমবাতির সামনে গ্লোবটা ধরলো। নীড় দাদুভাইয়ের বিপরীতে বসে আছে।
দাদুভাই: তোমার দিকে গ্লোবটা আলোকিত না অন্ধকার???
নীড়: ঘুটঘুটে অন্ধকার….. 😎😎😎….
দাদুভাই: কিন্তু আমার দিকে এটা ঝলমলে আলোকিতো।
নীড়: তাতো হবেই দাদুভাই। কারন গ্লোবটার আলোকিতো দিক। মানে মোমবাতির আলোতো তোমার দিকটাতে……
দাদুভাই:হামম। এই গ্লোবটার মতো রক্তে মাংসে গরা ১টা চাদের কনাও আছে। যার আলোকিত দিকটা আমার দিকে আর ঘুটঘুটে অন্ধকার দিকটা তোমার দিকে……. এ..
তখনই দরজায় করা নরলো।
মেরিন: দাদুভাই….. দাদুভাই….. ও দাদুভাই….
দাদুভাই: লাইট on করে দরজা খোলো।
দরজা খুলতেই মেরিন ভরভর করে রুমে ঢুকলো।
মেরিন: দাদুভাই চলো….. চলো ….cake ready…..
দাদুভাই: চলো…..
.
পরদিন……
২জন মেডিকেল থেকে ফিরছে। jam এ বসে নীড় দেখতে পেলো যে ২টা ছেলে ১টা মেয়েকে tease করছে। নীড় সাথে সাথে গাড়ি থেকে বের হয়ে ছেলে ২টাকে পিটালো। ২জন কোনোরকমে দৌড়ে পালালো। মেরিন নীড়কে টেনে গাড়িতে নিয়ে বসালো। নীড়ের হাত পা দেখতে লাগলো যে কোথাও ব্যাথা পেয়েছে কিনা??
নীড়: what the hell are u doing ???
মেরিন: আপনি ব্যাথা পাননি তো??? কি দরকার ছিলো মারামারি করার?
নীড়: আমি তোমার মতো selfish নই যে কেবল নিজেকে নিয়ে খুশি থাকবো।
মেরিন: তাই বলে কে না কে বিপদে পরলো বলে বের হয়ে মারামারি করবেন? সবসময় দেখি… বের হয়ে যান…
নীড়: মারামারি আর করতে দাও কোথায় বের হলেই তো fire করা শুরু করো। আর গুন্ডারা পালায়।
মেরিন: যাই হোক…. এতো বাহুবলি গিরি দেখাতে হবেনা…..
নীড়: চোখের সামনে কারো বিপদ দেখলে বসে থাকতে আমি পারিনা। কারন তোমার মতো আমি কেবল নিজেকে নিয়ে busy থাকিনা…… তুমি এতো টা খারাপ কেন???
আজও জবাবে মেরিন ১টা হাসি দিলো।
.
৩দিনপর…….
২জন shopping করে ফিরছে। হঠাৎ গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলো।
মেরিন: কি হলো??
নীড়: আমার বাপের মাথা।
মেরিন:😒😒😒।
২জন নামলো। তখনই জন হাজির।
জন: কি হয়েছে ম্যাম?
মেরিন: উনার বাবার মাথা….
জন: মানে ম্যাম???
মেরিন: জানিনা…..
জন: ম্যাম …. গাড়িটা মনে হয় খারাপ হয়ে গেছে। আপনারা আমার গাড়ি নিয়ে জান।
মেরিন:না। আজকে আমরা আজকে রিকশা দিয়ে যাবো।
জন: কিন্তু ম্যাম….
মেরিন: বলেছি মানে বলেছি……. চলুন নীড়…..
নীড়: তুমি কি absolutely পাগল…..
মেরিন: হামম। আপনার প্রেমে।
.
বলেই মেরিন নীড়ের হাত ধরে হাটতে লাগলো সুনসান সড়ক দিয়ে হাটছে ২জন।
মেরিন: জানেন নীড়…. আমাদের ছেলে হলে কি নাম রাখবো? নির্বন…… (নীড়বন) আপনার পুরো নাম মানে নীড় আর আমার বন্যা নামের বন…..
নীড়+বন=নির্বন। নির্বন আহমেদ চৌধুরী।☺️☺️☺️।
নীড়: সেটা কখনো ভেবোও না। বুঝেছো? i hate you।।
মেরিন: & i love you….. সে যাই হোক….. আমি কি বলেছি যে আজই আপনার ছেলের মা হবো?? ১বছর পর কি ১০ বছর পর তো হবোই আমি নির্বনের মা….. দেখে নিবেন….
নীড়: impossible …. তোমার এই কুৎসিত চেহারাটাই আমার দেখতে মন চায়না…..
বলেই নীড় মেরিনের হাতটা ঝারা দিয়ে সরিয়ে দিলো। এরপর হাটতে লাগলো।
মেরিন: কেন? আমার চেহারা কুৎসিত কেন? আমার চেহারা কি সুন্দর না? কোন দিক দিয়ে খারাপ আমি?? দেখুন আমাকে। দেখে বলুন।
ওখানে ৪-৫জন বখাটে ছেলে ছিলো। তাদের মধ্যে থেকে
১জন বলে
উঠলো: তুমি দেখতে খারাপ হবে কেনো সুন্দরি? তুমি তো একদম পটাকা….. তোমার ফিগার মডেলের মতো….. ঠোট ললিপপের মতো।
নীড়-মেরিন ২জনই কথাটা শুনলো। কেউ react করলোনা।
নীড় হেটেই যাচ্ছে। আর মেরিন নীড়কে নানা ধরনের কথা বলছে। ছেলেগুলোও ওদের পিছে হাটছে। ১টা পর্যায়ে ছেলেগুলো খুব বাজে বাজে কথা বলতে লাগলো। মেরিন ১টা বার মেরিনের দিকে তাকালো। মেরিনের তাকানোতে নীড় মুখ ঘুরিয়ে নিলো। এরপর আবার হাটতে লাগলো। কিন্তু মেরিন ঠিক করলো যে এদেরকে উচিত শিক্ষা এখন দিতেই হবে। তাই মেরিন ছেলে গুলোর দিকে হাটতে লাগলো।
নীড় ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো। এরপর আবার নিজের মতো হাটতে লাগলো। সামনে ১টা রিকশা পেয়ে ওটাতে বসে চলে গেলো। মেরিন তখন ছেলে গুলোকে পিটাতে ব্যাস্ত।
মেরিন নীড়ের চলে যাওয়া দেখে অবাক হলো। আর সেই সুযোগে ১জন পেছন থেকে ওর মাথায় বাড়ি মারলো। মেরিন চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলো। ছেলেগুলো মেরিনকে তুলে নিয়ে গেলো। জন সময় মতো এসে মেরিনকে বাচালো।
জন: ম্যাম আমি আপনাকে বাসায় পৌছে দিচ্ছি চলুন।
মেরিন: গাড়ির চাবি দাও।
জন: কিন্তু ম্যাম…..
মেরিন: give me the key…..
জন মেরিনকে চাবি দিলে মেরিন এমন speed এ গাড়ি চালিয়ে চলে গেলো যে জন ওর পিছে যাওয়ার সুযোগই পেলোনা।
.
ওদিকে……
নীড় একা বাসায় ফিরলে
নীলিমা বলল: তুমি একা?? মামনি কোথায়??
নীড়: i don’t know ….
নিহাল: মানে কি??? এতো রাতে ….
নীড়: তো? ও একা চলে আসতে পারবে?
নিহাল: একা ফিরতে পারবে বলে এতো রাতে ১টা মেয়েকে একা ফেলে আসবে??
নীড়: ওকে নিয়ে হঠাৎ তোমার এতো চিন্তা কেন হচ্ছে বাবা?
নিহাল: কারন ও ১টা মেয়ে।
নীড়: so what??
বলেই নীড় রুমে চলে গেলো।
.
২ঘন্টাপর…..
নীড় মনের সুখে ঘুমাচ্ছে। জনের ফোনে ঘুম ভাঙলো।
জন: hello sir… নীড়: কি হয়েছে?
জন: স্যার, ম্যাম কি বাসায় ফিরেছে?
নীড়: আমি কি জানি??😴😴😴 ।
জন: না মানে ম্যাম গাড়ি নিয়ে কোথায় যেন গেলো। পাচ্ছিই না। বৃষ্টিও হচ্ছে প্রচুর।
নীড়: whatever … জাহান্নামে যাক। bye.. let me sleep …
জন এবার নিজেকে আটকে রাখতে পারলোনা।
জন: আপনি কি মানুষ? এতো রাতে বৃষ্টির মধ্যে ১টা মেয়ে বাইরে । আর আপনি আরামে ঘুমাচ্ছেন? তাও মেয়েটা আপনার বিয়ে করা বউ….. লজ্জা করেনা আপনার ??? shame on u….
বলেই জন ফোন রেখে দিলো। জনের কথায় নীড়ের বোধ হলো ও কি করেছে।
আর দেরি না করে নীড় গাড়ি নিয়ে বের হলো। অনেক বৃষ্টি পরছে।
.
এদিকে…..
মেরিন ১কেস বিয়ার কিনে ১টা শ্মশানের মধ্যে গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে বসে বিয়ারের ক্যান শেষ করছে। সেই সাথে নিজের জীবনের অংক মিলাচ্ছে।
কারন আজকে নীড়ের কাজে মেরিন খুব কষ্ট পেয়েছে। খুব। কারন যে ব্যাক্তি অন্যের বিপদে ঝাপিয়ে পরে, অচেনা অজানা ১টা মেয়ের সম্মান বাচাতে ২বার ভাবেনা সে নিজের স্ত্রীর জন্য stand নিলোনা। উল্টা একা ফেলে চলে গেলো।
.
আর অন্যদিকে নীড় মেরিনকে পাগলের মতো খুজছে। হঠাৎ শ্মশানের ওদিকটাতে কিছু দেখতে পেয়ে ওখানে গেলো। গি়য়ে দেখলো ওখানেই মেরিন। মেরিন বসে বসে বিয়ার খাচ্ছে।
নীড়: এটাই বুঝি দেখা বাকী ছিলো…. তুমি এখানে বসে এসব ছাইপাশ গিলছো আর ওদিকে তোমার দালাল আমাকে যাতা শোনাচ্ছে…….
মেরিন নীড়ের দিকে ঘুরলো।
মেরিন: আরে আপনি?
মেরিন উঠে দারালো…… ঠিক মতো দারাতে পারছেনা। টলছে।
নীড়: বাজে মেয়ে ১টা….
মেরিন:🤣🤣🤣। হামম। এহকেবারে ঠিক। আমি বাজে… অপয়া… খুনী… অলক্ষি…. 🤣🤣🤣।
নীড় বুঝতে পারছে যে মেরিন full মাতাল……
নীড়: বাসায় চলো। বলেই নীড় মেরিনের হাত ধরলো।
মেরিন: একি….. আপনি নিজের থেকে আমার হাত ধরছেন!!!😱😱😱। ভাবা যায়??? 🤣🤣🤣। আপনি না আমাকে ঘৃণা করেন??? 🤣🤣🤣। আপনাকে আমি ১টা কথা বলি? কাউকে বলবেন না কিন্তু..🤫🤫🤫….. আমাকে না আমি নিজেও ঘৃণা করি। 🤣🤣🤣।
পাগলের মতো হাসতে হাসতে মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো । নীড় বুকের ওপর পরলো। নীড় মেরিনকে বাসায় নিয়ে গেলো। ওকে শুইয়ে দিলো। আর ভাবতে লাগলো কি আছে এই বন্যার গভীরে।
নীড়: জানিনা কেন আজকে তোমার কথার আরালে হাসির আরালে হৃদয় ভাঙা চিৎকার শুনতে পেলাম। কি আছে তোমার মাঝে…….
ভাবতে ভাবতে নীড় ঘুমিয়ে পরলো।
.
চলুন আমরা ঘুরে আসি অতীত থেকে।
.
{{{ নিরা মেরিনের খালাতো বোন। নিরার বাবা আলতাব রহমান , মা রচনা। রচনা সবার বড় বোন। তাই নিরাকে নানুবাড়ির সবাই ভীষন আদর করতো। নানাভাই, নানুমনি… মামা, কনিকা। কনিকার তো জান ছিলো নিরা। কিন্তু মেরিন হবার পর সবাই নিরার থেকে বেশি মেরিনকে আদর করতো। কারন মেরিন ছোট। নিরা সবার টা মেনে নিলেও মামা আর কনিকার মেরিনের প্রতি ভালোবাসা সহ্য করতে পারতোনা। এখন মেরিন তো কনিকার নিজের মেয়ে তাই স্বাভাবিক ভাবেই নিরার থেকে বেশি মেরিনকেই আদর করবে। মেরিন কনিকা-কবিরের কলিজা ছিলো। আর ছোট & গুলুমুলু বলে মামাও নিরার থেকে বেশি মেরিনকেই আদর করতো। বেশি বলতে ছোটদের প্রতি সবারই care টা বেশি থাকে। মামা-খালামনির আচরনে নিরার ইচ্ছে হতো মেরিনরে মেরে ফেলতে। নিরা মেরিনের থেকে ৭বছরের বড়। (নিরা বয়সে নীড়ের থেকেও বড়।)
১দিন দেড় বছরের মেরিনকে নিরা swimming pool এ ইচ্ছা করে ফেলে দিয়েছিলো। যেটা মামা দেখতে পেলো। নিরা just ফেলেছে তখন মামা ছুটে এসে মেরিনকে তুলল। আর ঠাস করে নিরাকে থাপ্পর মারলো। সবাই নিরাকে ভীষন বকলো।
কনিকা তো প্রায় কথা বলাই বন্ধ করে দেয় নিরার সাথে।
সেই থেকে নিরার রাগ আরো বেরে যায়। ধীরে ধীরে মেরিনের বয়স ৫বছর হয়।
মেরিন রোজ মায়ের কোলে ঘুমাতো। মাথা থাকতো মায়ের কোলে আর পা থাকতো বাবার কোলে। মেরিন বলতে মামা অজ্ঞান আর মামা বলতে মেরিন। মামার বাধক হয়ে যায়।
.
১দিন সবাই cox’s bazar বেরাতে যায়। মামা ২ভাগনিকে নিয়ে 2step speed boat এ করে সাগর ভ্রমনে বের হয়। মেরিন মামার কোলে। মামা ১হাতে নিরার হাত ধরে রেখেছে অন্যহাতে মেরিনকে কোলে রেখেছে। চালক নিচে বসা। মামা মেরিন আর নিরাকে দুরের জিনিষ গুলো দেখাচ্ছে। সেই সুযোগে নিরা ওর ব্যাগে রাখা পাথরটার সাথে speed boat এ থাকা দরিটার সাথে খুব সাবধানে বেধে দিলো। এরপর দরির আরেকপ্রান্ত খুব সাবধানে মামার পায়ে বেধে দিলো। আনন্দে বিমোহিত মামাকে হঠাৎ করে পেছন থেকে নিরা মারলো ১টা ধাক্কা । মামা তাল সামলানোর চেষ্টা করছে। ঠিক তখনই নিরা পাথরটাও নিচে ফেলে দিলো। উদ্দেশ্য মামা আর মেরিনকে একসাথে পানিতে ফেলা। আর বাকীদের মেরিনকে হারানোর শাস্তি দেয়া। পাথরের টানে মামা কোনোভাবেই আর নিজেকে সামলাতে পারলোনা। পরে যেতে নিলো মেরিনকে নিয়েই। কিন্তু মামা মেরিনকে ধপ করে কোল থেকে boat এ ফেলে দিলো। যেন মেরিনের কিছু না হয়। এমন ভাবে ফেলল যে ধাক্কা লেগে নিরাও বসে পরলো। নিরা উঠে মেরিনকে আবার ধাক্কা মারবে তখন চালক চলে এলো। ছোট মেরিন সাগরের অতলে মামাকে তলিয়ে যেতে দেখলো। মেরিন ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলো।
তীরে যাবারপর নিরা সবাইকে বলল যে মেরিনের জন্য মামা পানিতে পরেছে। বাড়িতে শোকের ছায়া পরে গেলো। রচনা মেরিনকে অপয়া শয়তান টয়তান বলতে লাগলো। ছোট্ট মেরিন এতো বড় ঘটনাটা মেনে নিতে পারেনি। মেরিন কেমন যেন হয়ে গেলো।
.
কোনো ১ভাবে নিরার বাবা জানতে পারলো যে মামার মৃত্যুর জন্য নিরাই দায়ী। তাই সে নিজের মেয়েকে বাচানোর জন্য মেরিনকে দোষী বানাতে busy হয়ে গেলো। কিন্তু ছোট মেরিনকে কেউ কিছু বলতে নারাজ। তারমধ্যে ১দিন নানাভাই-নানুমনি মামার ১দিনের বলার কথাকে শেষ ইচ্ছা মনে করে সেটা পূরন করার জন্য মামার নামের সব সম্পত্তি মেরিনের নামে করার সিদ্ধান্ত নেয়।
যেটা আলতাব রহমান মেনে নিতে পারেনা। সে plan বানাতে থাকে। সে ঠিক করে যে সে নানাভাই-নানুমনি কে জানেই মেরে দিবে। কিন্তু এমন কিছু করতে হবে যেন সাপও মরে আর লাঠিও না ভাঙে।
তখন ওর মাথায় আসে মেরিন।
.
লোকটা মেরিনের কানে নানাভাই-নানুমনির নামে বিষ ঢালতে থাকে। এটা বলে যে মামাকে নানাভাই-নানুমনিই লুকিয়ে রেখেছে। ওদের জন্যেই মেরিন মামার কোলে উঠতে পারেনা। আরো অনেক কিছু। যা মেরিনের ছোট মস্তিষ্ককে এমনভাবে বিকৃত করে যে মেরিন ওর নানাভাই-নানুমনিকে সহ্যই করতে পারেনা। নানাভাই বা নানুমনি আদর করতে আসলে ধাক্কা দেয়, কামড় দেয়, খামছি মারে আরো কতো কি….. যার জন্য কনিকা মেরিনকে প্রথমে আদর করে বোঝায়। কিন্তু তারথেকে হাজারগুন বেশি আলতাব কুমন্ত্রনা দেয়।আর তাই মেরিন দুর্ব্যাবহার করে। তাই কনিকা শাসন করে। কনিকার কথাও যখন মেরিন মানেনা তখন কবির চেষ্টা করে। মেরিনের মধ্যে aggressive ভাব বারতেই থাকে। ধীরে ধীরে মেরিন কবির-কনিকার থেকে দুরে সরতে থাকে।
১দিন lawyer এর কাছে আলতাব জানতে পারে যে মেরিনের নামের প্রায় will ready। ২-১দিনের মধ্যে ready হয়ে যাবে।
আলতাব:যা করার কালই করতে হবে।
.
পরদিন সবাইকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বেরাতে বের হলো। তবে গাড়ির petrol বের করে রেখেছে যে উনার plan করা যায়গাতেই গাড়ি থেমে যায়। গাড়ি থামলো। তখন রচনার ব্যাগ নিয়ে কেউ দৌড় মারলো। রচনা, কবির,কনিকা সেটা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরলো। তখন আলতাব মেরিনকে
বলল: মামনি ওই দেখো ice cream …. চলো খাবে চলো। যাও…..
মেরিন দৌড়ে পার হতে লাগলো। তখন ১টা ট্রাক ছুটে আসতে লাগলো। যেটা দেখে নানাভাই-নানুমনি অস্থির হয়ে ওকে বাচাতে দৌড় লাগালো। আর ট্রাকটা নানাভাইয়ের ওপর উঠে গেলো। আলতাব নানুমনিকেও ধাক্কা মেরে দিলো। নানুমনিও …..
আসলে এই মৃত্যু ফাদটা ছিলো ওনাদেরকে মারার জন্যেই আলতাব পেতেছিলো। নানাভাই-নানুমনি মারা গেলো।
.
আলতাব কনিকা-কবিরকে বলল যে মেরিন ট্রাকের সামনে ওনাদেরকে ধাক্কা দিয়েছে। আর তাই……. তখন মেরিন বলে
উঠলো :মিথ্যা কথা…. আমি তো ধাক্কা মালিনি… আমিতো…. iic..
আলতাব:ভয় পেয়ে মিথ্যা বলেনা মামনি….
মেরিন: আমি মিথ্যা বলছিনা….. আমি তো ওই পালে ice cream খেতে যাচ্ছিলাম। তু…
আলতাব গিয়ে মেরিনের কাছে গিয়ে কোলে নিয়ে
বলল: না মা এমনটা বলেনা।
তখন মেরিন আলতাবকে জোরে কামড় বসিয়ে দিলো। দৌড়ে কবিরের কাছে গেলো। কবির ঠাস করে ছোট মেরিনকে থাপ্পর মারলো। কনিকা ভেঙে পরলো। মা-বাবা-ভাই কে হারিয়ে কনিকা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পরলো। কবিরও এমনটা মেনে পারছেনা। ওদেরকে নিরা সামলানোর চেষ্টা করলো। যেটা নিরাকে আলতাব শিখিয়ে দেয়। ধীরে ধীরে নিরা কবির-কনিকার চোখের মনি হয়ে উঠতে থাকে। মেরিন সেটা মানতে পারেনা। কারন তার মায়ের কোলে এখন নিরা ঘুমায়। বাবা এসে নিরাকেই কোলে নেয়। তাই মেরিন ১দিন নিরার সাথে ঝগরা করে। ঝগরা করতে করতে মেরিনের হাত লেগে নিরা সিরি থেকে পরে যায়। ব্যাস মেরিন কবির-কনিকার মন থেকে আরো বেরিয়ে যায়। কবির-কনিকা নিরাকে আরো আদর করে। মাঝে ১দিন কবির মেরিনকে বোঝাতে গেলে মেরিন flower vase দিয়ে কবিরের মাথা ফাটিয়ে দেয়। মেরিন হারিয়ে ফেলে ওর মা-বাবাকে।
.
মেরিনের দাদুভাই গ্রাম থেকে doctor দেখাতে আসে। মেরিনের প্রতি অবহেলা দেখে সে কবির-কনিকাকে বকা দেয়। কনিকা সবটা বলে।
দাদুভাই: shut up…. তাইজন্য এতোটুকু বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন ব্যাবহার কেউ করে??
তখন মেরিন বায়না ধরে: দাদুভাই…. আমি তোমাল সাথে যাবো…. আমি ওদেল সাথে থাকবোনা….. ওলা পচা। অনেক পচা।
দাদুভাই তখন মেরিনকে নিয়ে কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে যায়। ততোদিনে আলতাব মেরিনের নানাবাড়ির আর মেরিনের মামার সব সম্পত্তি নিজের নামে করিয়ে নেয়।
.
১৫দিনপর মেরিন দাদুভাইয়ের সাথে ঢাকায় আসে। কনিকা কোলে নিতে গেলে অভিমানী মেরিন দৌড়ে রুমে চলে যায়। যার সুযোগ টা নেয় নিরা। নিরা হয়ে ওঠে চোখের মনি। মেরিনের খবরও মা-বাবা নেয়না। খালি নিরা আর নিরা। শুরুর দিকে নিরাকে ওরা বেশি আদর করতো যেন মেরিন ওদের কাছে নিজে থেকে আসে। কিন্তু মেরিন আসেনা। মেরিন অনেকটাই চোখের আরালে থাকে মা-বাবার। চোখের আরাল থেকে মনের আরালও হয়ে যায়। মেরিনের খবরও মা-বাবা নেয়না। মায়ের কোল ছারা মেরিনের ঘুম হয়না। দাদুভাই কতো গল্প শোনায়
তবুও ঘুম আসেনা। মেরিনের জ্বর টর এলেও ওরা কেউ দেখেনা । কনিকা খবর নেয়না। নিরা নিরা বলতে অজ্ঞান।
.
তাই দাদুভাই ঠিক করে মেরিনকে নিয়ে কবির-কনিকার থেকে যথেষ্ট দুরে চলে যাবে। এতে যদি ওরা মেয়ের কদর বোঝে। দাদুভাই মেরিনকে নিয়ে কোলকাতা চলে গেলো।
.
১২বছর পর ফেরে বাংলাদেশে। এই ১২বছরে আলতাব রহমান নিজের সব সম্পত্তি হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। পথের ভিখারী হয়ে গেছে। নিরা কবির-কনিকার সাথেই ছিলো। emotional attachment টা অনেক গভীর হয়ে গেছে। এই ১২বছরের শুরুর দিকে যাও তারা একটু আধটু মেরিনের খোজ নিতো পরে তারা ১বারো মেরিনের খবর নেয়নি। এই ১২ বছরে মেরিন কান্না করতে করতে কান্না ভুলে গেছে। রাগ বেরে গেছে ১২গুন। হয়ে গেছে মূর্তী। মারামারি, ঝগরা করা, নিজের জিনিষ কেবল নিজের করে রাখা সবটা করে। কারো ভালো মন্দে ওর কিচ্ছু যায় আসেনা। ওর জীবন কেবল ওর দাদুভাইয়ে আটকে যায়। দেশে ফিরে মা-বাবাকে আম্মু বাবা না ডেকে mr. khan & mrs. khan ডাকে। কবির-কনিকাও আর চেষ্টা করেনি।
১৭বছরের মেরিনের উগ্র ব্যাবহার কবির-কনিকাকে আরো ক্ষেপিয়ে দেয়।
ছোটবেলার সব নিয়ে ভাবতে ভাবতে ১দিন সব ঘটনা অনুধাবন করে। আলতাব আর নিরার করা সব কাজের অংক মিলায়। কিন্তু দাদুভাই ছারা কাউকে সেটা বলেনা। কারন যে আম্মু বাবা তার সাথে এমন করেছে যে তাদেরকে মেরিন নিজের নির্দোষ হওয়ার প্রমান দিতেও চায়না। কিন্তু আলতাব রহমানকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়। ১মে হাতের আঙ্গুল ১টা ১টা করে কাটে। পরে পায়ের ১টা ১টা করে আঙ্গুল কাটে। এরপর ১পা আর ১হাত কেটে দেয়। যদিও মেরিন নিজে কাটেনি। লোক দিয়ে করিয়েছে। নিরাকেও উপযুক্ত শাস্তি দিতো। দেয়নি কারন……… বলবো বলবো। সেটাও বলবো অন্যদিন। ব্যাস এভাবেই মেরিন হয়ে উঠলো ঘৃণারমেরিন । }}}
.
বর্তমান…….
সকালে মেরিনের ঘুম ভাঙলো। প্রচুর মাথা ব্যাথা করছে। উঠে দেখে নীড় বসে বসে ঘুমাচ্ছে।
নীড়ের গায়ে চাদর দিয়ে দিলো।
মেরিন: আমি বাসায় কি করে এলাম।
.
আজকে friday …. তাই মেরিনের রান্না করতে ইচ্ছা হলো। shower নিয়ে শাড়ি পরলো আজকে। খয়েরি রঙের। সবার জন্য নাস্তা বানালো। চা করলো । নীড়ের জন্য কফি করলো। নীলিমা-নিহালকে রুমে চা দিতে গেলো।
নীলিমা:আরে আমার মামনিটাকে তো আজকে একেবারে পাক্কা গিন্নি লাগছে।
মেরিন ১টা হাসি দিলো। এরপর নীড়ের জন্য কফি নিয়ে এলো।
মেরিন নীড়ের কপালে চুমু একে দিলো।
মেরিন: নীড়….. নীড়….. উঠুন। দেখুন কয়টা বেজে গেছে। সাড়ে ১০টা বাজে।
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। বাইরের সূর্যের আলো ঠিক মেরিনের মুখের ওপর পরছে। ডান নাকের nosepin টা ঝিকিমিকি করছে। গাঢ়ো খয়েরি রঙের শাড়ি পরা, কাজল ছাড়া কালো হরিণী ২টা চোখ, গোলাপী ঠোটের মালিককে দেখতে প্রস্তুত ছিলোনা নীড়। কতোটা সুন্দর কতোটা পবিত্র লাগছে মেরিনকে……. নীড় অবাক চোখে দেখছে। কারন এর আগে নীড় কখনোই মেরিনের মুখ সেভাবে দেখেনি। মেরিন যথেষ্ট সুন্দরী।
মেরিন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে বলল: good morning honey ….
নীড়ের কেন যেন সেই হাসিটা ফুলের থেকেও সুন্দর লাগলো।
পরক্ষনেই মনে পরলো যে এটা মেরিন। কফির মগটা ছুরে ফেলে washroom এ চলে গেলো।
মেরিন: পাগল….
.
পরদিন….
ব্যাংককের phuket যাবার জন্য নীড়-মেরিন flight এ উঠলো।
…..
……..
চলবে…
গল্প ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৫
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
মেরিনের phuket যাবার কোনো ইচ্ছাই ছিলোনা। কারন মেরিনের একমাত্র দুর্বলতা হলো পানি। যা দেখলে মেরিন ভয় পায়। কারন মামাকে এই পানিরে মধ্যে তলিয়ে যেতে দেখেছিলো। মেরিন phuket এর কথা না করেছে বলে নীড় ইচ্ছা করেই আরো phuket গেলো।
.
২জন phuket পৌছালো। rest নিলো।
.
পরদিন…..
মেরিন: একি আপনি এতো সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছেন?
নীড়: তো কি করবো?? ব্যাংককে এসে কি ঘরে বসে থাকবো?? ঘুরবো… বেরাবো।
মেরিন: তো কোয়ার্টার পরে যাচ্ছেন কেন??
নীড়: ওয়….. ব্যাংকক মানেই sea beach … jeep নিয়ে সাগরের কিনার দিয়ে ঘোরা। এগুলো কি আর formal dressএ হয়??
মেরিন: sssea beach….. sea beach কেন?? sea beach এ যাবোনা।
নীড়: oh hello…. তোমাকে যেতে বলিনি। আর তোমাকে নিবোও না। আমি একাই যাবো।
মেরিন: নননা না। আমিও যাবোনা। আর আপনিও যযযাবেন না। পপানি, সসাগর ভভভালোনা। যযযাবেন না ওখানে। অন্য কোথাও যাবো।
নীড়: listen …. সব কিছুই কি তোমার মতো চলবে? আমি কি আমার মতো কিছুই করতে পারবো না? আমি কি তোমার হাতের পুতুল? যে আমাকে যেভাবে নাচাবে সেভাবেই নাচবো??? life টা hell করে দিয়েছো।
মেরিন: আচ্ছা ঠিকাছে চচলুন।
নীড়: যাবোনা কোথাও। সরো চোখের সামনে থেকে।
মেরিন: না না চলুন।
নীড়: গিয়ে বা কি হবে? কোন মেয়ে আমার দিকে তাকালে তার জানের পিছে পরবে। তোমার জন্য কি কোথাও আমার শান্তি আছে??
মেরিন: না না আমি এমন কিছু করবোনা।
নীড়:যাবো না আমি। such a selfish girl……
মেরিন:চলুন না চলুন। আপনার এমন মুখ দেখতে পারবোনা। আমি কথা দিচ্ছি আমি উল্টা পাল্টা কিছু করবোনা ।
নীড়: মনে থাকবে??
মেরিন: হামম। আপনি বসুন আমি ready হয়ে আসছি।
নীড়: নাও ৮০ঘন্টা wait করো।
মেরিন: মোটেও না। আমি ready হতে অতো সময় নেইনা…. ৫মিনিটে ready হবো।
নীড় জানে ওর বউ ready হতে বেশি সময় নেয়না।
.
৫মিনিটপর….
মেরিন জিন্স আর লং টপস পরে এলো। টপসের সামনে নীড়ের ছবি আকা। কালো পোশাক আর ঠোটে লাল লিপস্টিকে মেরিনকে দারুন মানিয়েছে। মেরিনকে সুন্দর লাগছে।
নীড়: ওরনা কোথায়??
মেরিন: কিসের ওরনা?
নীড়: ওরনা চেনোনা ওরনা? ওরনা গায়ে দাও।
মেরিন: সে কি কেন?? টপসের সাথে আমি ওরনা পরিনা।
নীড়: ১টা থাপ্পর মারবো। যাও ওরনা পরো।
মেরিন নীড়ের ঝাড়িতে খুশি হলো।
নীড়: হাসো কেন?? কি হয়েছে?
মেরিন: কিছুনা।
নীড়: তো দাত দেখাও কেন??
মেরিন: i love u….
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোটে চুমু দিয়ে বসলো। এরপর ১টা ওরনা পরে নিলো।
.
২জন jeep নিয়ে বের হলো।
২জনকে এক্কেবারে FAV জুটি লাগছে। নীড়ের phuket জায়গাটা ভীষন ভালো লাগে। আর jeep চালাতে ওর ভীষন ভালো লাগে। এভাবে drive করে ওর মনটা ভীষন ভালো হয়ে গেলো । অনেক enjoy করছে নীড়। মেরিন নীড়কে এতোখুশি কখনো দেখেনি…. মেরিন মুগ্ধ হয়ে নীড়কে দেখছে।
নীড়: ice cream খাবে??
মেরিন:…..
নীড়: ice cream খাবে??
মেরিন:……
নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো যে মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় তখন জোরে জোরে horn বাজাতে লাগলো। মেরিনের ধ্যান ভেঙে গেলো।
মেরিন:কিছু বললেন???
নীড়: বলছিলাম কি ice cream খাবে?
মেরিন: হামম।
নীড় ২টা ice cream নিয়ে এলো। chocolate flavor ……
.
নীড়: বলোতো আমরা এখন কোথাও যাচ্ছি?
মেরিন: জানিনা।
নীড়: beach এ…..
মেরিন চমকে উঠলো।
মেরিন: bbbeach….. চচচলুন না অন্য কোথাও যাই। বা এমন করে গাড়ি নিয়ে রাস্তায়ই ঘুরি।
নীড়: not at all…..
.
ওরা সাগর তীরে পৌছালো। দুরে সাগর দেখতে পেয়ে মেরিন আগেই ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। নীড় সাগরের ঠিক পার ঘেসে jeep চালাতে লাগলো। খুব জোরে। নীড় তাকিয়ে দেখলো মেরিন চোখ বন্ধ করে আছে। ও ভাবলো গাড়ির speed এর জন্য ভয়ে মেরিন চোখ বন্ধ করে আছে। তাই নীড় আরো speed এ চালাতে লাগলো। তখন চাকায় লেগে পানি ওপরে আসতে লাগলো। মেরিনের মুখের ওপর পানি ছিটে এলো। সাথেসাথে মেরিন চমকে গিয়ে চোখ খুলল। যা দেখে নীড় হেসে কুটিকুটি। নীড়ের হাসি দেখে মেরিন নিজের সকল ভয় ভুলে গেলো। মেরিন মুগ্ধ চোখে নীড়ের হাসি দেখতে ব্যাস্ত। ওর কাছে সবথেকে সুন্দর নীড়ের এই হাসি। মেরিনের তাকানো দেখে নীড় হাসি বন্ধ করে দিলো।
নীড়: সামনে তাকাও… মেরিন: উহু…….
বলেই মেরিন নীড়ের কাধে মাথা রাখলো।
নীড়: কিছু খাবে?
মেরিন: উহু।
নীড়: কিন্তু আমি খাবো। ক্ষুধা লেগেছে। চলো তোমাকে আমার প্রিয় best thai restaurant এ নিয়ে যাই……
২জন গেলো খাওয়া দাওয়া করে হোটেল পৌছালো।
.
রাতে……
মেরিন নীড়ের বুকে শুয়ে আছে। নীড়ের বুকে আঙ্গুল দিয়ে আকিবুকি করছে। আর নীড় mobile দেখছে। আসলে mobile এ নিরা আর ওর ছবি দেখছে। আজকে কেন যেন নিরার কথা পরছে ভীষন।
মেরিন:নীড়….
নীড় চমকে উঠলো। মোবাইলটা রেখে দিলো।
মেরিন: নিরার ছবি দেখছিলেন বুঝি…….
নীড়: কোই নননাতো……..
মেরিন: আমি আপনাকে শিরায় শিরায় চিনি নীড়…….
নীড়: তো? দেখেছি তো দেখেছি…… এখন কি নিরাকে মেরে ফেলবে???
মেরিন: নিরার মৃত্যু হয়তো আমার হাতে নেই। এখন আপনার জন্য মারতে পারবো আর এর আগে…..
আচ্ছা নীড়….. ১টা কথা বলুন তো….
নীড়:কি….
মেরিন: আপনি তো সেদিন বলেছিলেন মেরিনের মৃত্যু আপনার সকল দোআয়……
নীড়:……
মেরিন: আমি মরে গেলে আপনি খুব খুশি হবেন। তাইনা??
নীড়:হ…..
নীড় কেন যেন হ্যা বলতে গিয়ে বলতে পারলোনা।
নীড়: কখন থেকে আমার বুকের মধ্যে কি সব আকিবুকি করছো…. ঘুমাবো আমি। এমনিতেই তোমার জন্য আমার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বুকের ওপর উঠে শুয়ে থাকো।
মেরিন: sorry…..
বলেই মেরিন নীড়ের বুক থেকে নেমে বারান্দায় চলে গেলো। নীড় এতে বেশ অবাক হলো। তবুও ঘুমানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু কেন যেন ঘুম আসছে না। অথচ একটু আগেও ভীষন ঘুম পাচ্ছিলো। ১ঘন্টা নীড় এপাশ ওপাশ করলো। তবুও ঘুম এলোনা। ভাবলো মেয়েটা কি করছে দেখা দরকার। যেই উঠতে নেবে।
.
তখনই ঝরের বেগে মেরিন দৌড়ে এসে নীড়কে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।
নীড়: oh my goodness…… কি তুমি??
মেরিন: আপনার বউ। শুনুন…..
নীড়: আবার কি???
মেরিন: আমি মরে গেলেও আপনি নিরাকে বিয়ে করতে পারবেন না। অন্য যাকে মন চায় করবেন। বুঝেছেন??? না হলে কিন্তু ভূত হয়ে ঘাড় মটকাবো….. আর তাছারাও….. আমি তো আর আপনাকে বিয়ে না করতে বলিনি। তাইনা??? কারন আপনি তো আর আমাকে ভালোটালো বাসেন না যে আমার শোকে ২য় বিবাহ করবেননা। তাই বলছি বিয়ে করবেন কিন্তু নিরাকে না…..
নীড় জানেনা এর জবাবে কি বলবে!!
নীড়: good night ….
.
২জন ঘুমিয়ে গেলো। পরদিন ২জন ঘুরতে বের হলো কিন্তু beach আর সেদিন গেলোনা।
সারাদিন ঘুরে টুরে মেরিন গাড়িতেই ঘুমিয়ে গেলো। কেন যেন আজকে মেরিনকে জাগাতে ইচ্ছা হলোনা নীড়ের। মেরিনকে কোলে করে রুমে নিয়ে গেলো। যা অনেকে টুকুর টুকুর দেখলো।
.
পরদিন সকালে মেরিনের ঘুম ভাঙলো। দেখলো নীড় আশেপাশে কোথাও নেই।
মেরিন:নীড়….. নীড়…. নীড়…..
তখন washroom থেকে নীড়
বলল: কি হইসে চেচাচ্ছো কেনো??? shower ও কি নিতে দেবেনা…..
মেরিন: sorry…….
২জন fresh হয়ে breakfast করে ঘুরতে বের হলো। তবে আজকে নীড় গাড়ি নিলোনা। পায়ে হেটে বের হলো। হাটতে হাটতে আর কথা বলতে বলতে মেরিন খেয়াল করেনি যে ওরা beach এ চলে এসেছে।
মেরিন: নননীড় আআমরা এএখানে কেন?
নীড়: মানে কি??? এখানেই তো আমার আসার ছিলো। আচ্ছা তুমি কি সাগর দেখলে ভয় পাও???। মেরিন বন্যা খানও ভয় পায়। ভাবা যায়।
মেরিন: মোটেও না। মেরিন কিছুতেই ভয় পায়না। আর আমি মেরিন বন্যা খান না। আমি এখন ইহকাল পরকাবের জন্য মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী।
নীড়:সে যাই হোক। ভয় তো তুমি পাও।
মেরিন: জী না।
মেরিন নীড়ের হাত খুব জোরে ধরে রেখেছে। আর হাটছে।
নীড় মনে মনে: ভয় তো তোমার আছেই। পানির না অন্যকিছুর তা জানিনা।
.
নীড় মেরিনকে নিয়ে হাটতে হাটতে beach ছেরে অনেকদুরে অনেকটা উচুর দিকে চলে গেলো। সেখানে মানুষ নেই বললেই চলে।
মেরিন:আমরা কোথায় যাচ্ছি???
নীড়: তোমাকে মেরে গুম করতে……
মেরিন:🙄
নীড়: সামনে তাকাও ।
মেরিন তাকিয়ে দেখলো যে সামনে সমুদ্র। আর এক কদম আগে বারলেই ও সোজা সমুদ্রে পরবে। ভয়ে নীড়কে খিচে ধরলো। পিছে চলে এলো।
নীড়: কি হলো সুন্দর না??
মেরিন: হামম। খুব সুন্দর। এখন চলুন আমরা যাই এখান থেকে।
নীড়: ইশ এতো সুন্দর জায়গা থেকে এতো তারাতারিই চলে যাবো?? দেখো কি সুন্দর চারদিকটা…….
বলেই নীড় সামনে বারলো।
মেরিন: নীড় আপনি পরে যাবেন। পেছনে আসুন।
নীড়: shut up……
বলেই নীড় নিজের ২বাহু প্রসারিত করে
বলল: just feel this moment …..
বলতে বলতে নীড় পা ফসকে নিচে পরে গেলো।
মেরিন: নীড়…….
নীড়: বা….হ….চা…ও । মেরিন…… বাচাও।
মেরিনের চোখে ছোটবেলার সেই সময় মনে পরে গেলো। যখন মামা পানিতে পরে গিয়েছিলো। তলিয়ে গিয়েছিলো অতল সমুদ্রে।
মেরিন: নীড়… কককে আআছো….. আমার নীড়…. পপপপানিতে…..
নীড়: বা…..চা….ও।
মেরিন: আহমি তো সসসাতার জজজানিনা…..
নীড়: বা…..চা……ও……।
মেরিন আর কিছু না ভেবে পানিতে ঝাপ মারলো। আর হাবুডুবু খেতে লাগলো। যা দেখে নীড় হেসে কুটিকুটি। কারন নীড় নাটক করছিলো। ইচ্ছা করেই পানিতে পরেছে। সাতার জেনেও ডুবে যাওয়ার অভিনয় করছিলো।
নীড়: মেরিন আমি এখানে???
নীড় তো আর জানেনা যে মেরিন সাতার কাটতে পারেনা। যখন বুঝতে পারলো তখন অনেকটা দেরি হয়ে গেলো।
.
মেরিন অনেকটা পানি খেয়ে নিয়েছে। নীড় মেরিনকে পানি থেকে তুলে তীরে আনলো।
নীড়: মেরিন…. মেরিন…
নীড় মেরিনের পেট থেকে পানি বের করলো। হাত পায়ে massage করতে লাগলো। নীড় মেরিনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। doctor check up করে বলল যে মেরিনের পানিতে phobia আছে। সেই সাথে ভীষন depression এ আছে। মানসিকভাবে বেশ দুর্বল। মানসিক রোগও আছে। আর তাছারাও ডুবে গিয়ে ফুসফুসের মধ্যেও অনেকটা পানি ঢুকে গেছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে মেরিন কোমায় চলে যেতে পারে।
নীড় চিন্তায় পরে গেলে। অনুশোচনায় পুরতে লাগলো।
নীড়: যদি ওর কিছু হয়ে যায় তবে ওর দাদুভাইকে কি জবাব দিবো…… আল্লাহ ওকে সুস্থ করে দাও।
নীড় প্রহর গুনতে লাগলো। পরশু রাতের মেরিনের বলা সেই কথা ভাবতে লাগলো।
“আমি মরে গেলে আপনি খুব খুশি হবেন। তাইনা?”
নীড়ের কানে বারবার একই কথা বাজতে লাগলো।
যে নীড়ের দোআয় মেরিনের মৃত্যু ছিলো আজকে সে নীড়ের দোআয় মেরিনের সুস্থতা।
.
১৩ঘন্টাপর মেরিনের জ্ঞান ফিরলো।
নার্স বেরিয়ে এলো।
বলল: আপনিই কি নীড়??
নীড়: হামম।
নার্স: patient আপনাকে ডাকছেন…..
নীড়:মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে???
নার্স:হামম।
নীড় দৌড়ে ভেতরে ঢুকলো। নীড়ের আভাস পেয়ে মেরিন চোখ মেলল।
মেরিন: নীড়……
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
মেরিন: আহপনি ঠঠঠিক আছেন তো??? আপনার কককিছু হহয়নি তোহ…….
নীড় অবাক চোখে মেরিনকে দেখছে। নিজের এই অবস্থাতেও ও নীড়ের কথা ভাবছে । এতোটা ভালোবাসে মেয়েটা ওকে?? এও সম্ভব?
মেরিন: কি হলো?? বববলুন….. কককষ্ট হচ্ছে কককথা ববলতেহ…
নীড়: চুপ একদম চুপ….. ১টা থাপ্পর দিবো। যখন সাতার জানোনা তখন কে বলেছিলো পানিতে ঝাপ দিতে???
মেরিন:তো কককি করতাম….. চচচচোখের সামনে আপনাকেহ ডুবে যেতে দেখতাম???
নীড়:এতো কিছু জানো আমার ব্যাপারে আর এটা জানোনা যে আমি সাতার জানি……
মেরিন: জানতাহম। কককিন্তু আমি মনে ককরেছিলাম যেহ অতো উউচু থেকে পরার জন্য পপপানির pressure সসসামলাতেহ পপপারেননি।
নীড় মনে মনে: এতো কেন ভালোবাসো আমায়…….
মেরিন: আপনাকে ছারা নিজেকে ভাবতেও পারেনা মেরিন…….
পরদিন মেরিনকে release দেয়া হলো।
.
৩দিনপর……
নীড় ঘুম ভেঙে গেলো। কারো কোরআন শরীফ পড়ার সুরে। খুব মিষ্টি কন্ঠে কেউ কোরআন শরীফ পরছে। নীড় ঘার ঘুরিয়ে কারো পেছনটা দেখতে পেলো। কেউ সাদা কাপড় পরে জায়নামাজে বসে কোরআন পাঠ করছে। নীড় খাট থেকে নিচে নেমে বসলো। চোখ বন্ধ করে কোরআন পাঠ শুনতে লাগলো।
মেরিন পড়া শেষ করে পেছনে ঘুরতেই দেখে নীড় বসে আছে।
মেরিন: একি আপনি???
নীড়:হামম।
নীড় চোখ খুলল। মেরিনকে দেখে নীড় মুগ্ধ হয়ে গেলো। মুখে যেন অন্যকম ১টা নূর চলে এসেছে। পর্দাশীল ধার্মিক নারী মনে হচ্ছে।
মেরিন: sorry…. আপনার ঘুম ভাঙার জন্য। ভালোই হয়েছে। নীড় আজকে আমাকে একটু একা ছারতে হবে।
.
একটুপর মেরিন বের হয়ে গেলো। আসলে আজকে মামার মৃত্যু বার্ষিকি। এই দিনে মেরিন রোজা রাখে। নামায পরে। কোরআন শরীফ পড়ে। আর গরীবদেরকে ২হাত ভরে দান করে। কিন্তু সেটা কেই জানেনা। কিন্তু মেরিন জানেনা যে আজকে সারাদিন নীড় ওকে follow করেছে। আজকের মেরিনকে দেখে নীড় অনেক অবাক। রাতে মেরিন হোটেলে যাবার আগেই নীড় চলে গেলো। নীড় কোনো প্রশ্ন করলোনা। নীড়ের মনে মেরিনকে জানার আগ্রহ সৃষ্টি হলো। নীড় মনের বরফ ধীরে ধীরে গলতে লাগলো। ওরা আরো ৯দিন phuket ছিলো। এই ৯টা দিন সব মিলিয়ে ভালোই কেটেছে ২জনের। মেরিনের মনে হলো এটাই ওর জন্য অনেক। নীড় ওর সাথে কথা বলে তাই বেশি।
৯দিনপর ওরা দেশে ফিরলো।
…..
……..
চলবে..
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ৬
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
নীড়-মেরিন দেশে ফিরলো। সবার জন্য মেরিন এত্তো এত্তো gift এনেছে। দিন কাটতে লাগলো। মেরিনের পাগলামো ভালোবাসায় নীড় অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
.
১দিন নীড় জানতে পারলো যে নিরার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। যেটা শুনে নীড়ের রাগ উঠলো। নীড় মেরিনকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। নীড় চুপচাপ drive করছে। ভীষন রেগে আছে।
মেরিন: নীড়…..
নীড়:…..
মেরিন: নীড়…..
নীড়:….
মেরিন: এই যে শুনছেন আমি আপনার বাচ্চার মা হতে চলেছি…
কথাটা শুনে নীড় এতোই অবাক হলো যে অবাকের চোটে গাড়ি বেসামাল হয়ে গেলো।
কোনো রকমে গাড়ি থামালো।
নীড়: what???!!
মেরিন:🤣
নীড়:😠
মেরিন: মনটা খুব খারাপ তাইনা??
নীড়: জানিনা……
মেরিন: নিরার বিয়ে…… তাইনা???
নীড়: জানিনা……
মেরিন: এই কারনেই তো মন খারাপ আপনার ………
নীড়: তুমি কি অন্তর্জামি??? সব কিভাবে জানো???
মেরিন: its magic ……
মনে মনে: আমি জানবোনা??? আমিই তো নাটের গুরু। আমিই তো নিরার বিয়ে টা করাচ্ছি….. লোভ দেখিয়ে। বলেছি যে ছেলেরা অসম্ভব ধনী। আমেরিকায় থাকে। ওখানেই settle ….. আর তাই লোভী নিরা ড্যাং ড্যাং করে বিয়েতে রাজী হয়ে গেলো। such a greerdy lady……
মেরিন: আচ্ছা আপনি এতো upset কেন??
নীড়: আমার ভালোবাসার বিয়ে আর আমি upset হবোনা তো ড্যাং ড্যাং করে নাচবো??
মেরিন: ভালোবাসা?? আচ্ছা আপনার কি মনে হয়না যে নিরা আপনাকে কখনো ভালোইবাসেনি….. আপনার টাকাকে ভালোবেসেছে….. তা না হলে কি এতো তারাতারি অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজী হতো???
কথাটা শুনতেই নীড় রেগে মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন:রেগে লাভ নেই। আমার তো মনে হয় আপনিও নিরাকে তেমন ভাবে ভালোবাসেননা। যদি ওকে মনের গভীর থেকে ভালোবাসতেন তবে বিয়ের দিন ওর গলায় ছুরি ধরতেই বিয়েতে রাজী হয়ে যেতেন। তাই আমার মনে হয়না যে আপনিও নিরাকে ভালোবাসেন……
কথাটা শুনেই নীড় মেরিনকে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড়: তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার ভালোবাসাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার??
মেরিন:ভালোবাসা??
নীড়: হ্যা হ্যা ভালোবাসা। নিরা আমার ভালোবাসা। আমি নিরাকে ভালোবাসি।
মেরিন: না। কখনো না। তাও মানলাম যে আপনি নিরাকে ভালোবাসেন। কিন্তু নিরা?? নিরা কি আপনাকে সত্যি ভালোবাসে?? ভালোবাসলে কি এতো তারাতারি বিয়ের পিড়িতে বসতে পারতো???
নীড়: তো কি করবে? আমার জন্য সারা জীবন অবিবাহিত থাকবে?? তুমি কি কখনো আমাকে ছারবে???
মেরিন: আপনি কি কখনো নিরাকে ভুলে আমাকে ভালোবাসতে পারবেন?
নীড়:…..
মেরিন:জানি আমাকে কখনো ভালোবাসবেন মা। যদি আপনি নিরার জন্য আমাকে মেনে না নিতে পারেন তবে নিরা কিভাবে অন্যকাউকে মনে জায়গা দিচ্ছে?
নীড়: তো কি করবে?? তোমার মতো ভালোবাসা ছিনিয়ে নেবে??
মেরিন: আপনি কথা কাটাচ্ছেন নীড়।
নীড়: shut up….
মেরিন: সত্যি তো এটাই যে নিরা কখনো আপনাকে ভালোইবাসেনি। ভালোবেসেছে আপনার টাকা পয়সাকে।
নীড়: get out……
মেরিন: what???
নীড়: get out from my car???
মেরিন:😒
নীড়:নামতে বলছি কিন্তু……
মেরিন: নাহ…..
মেরিন নামছেনা বলে নীড় নিজে মেরিনকে টেনে গাড়ি থেকে বের করলো। এরপর গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
মেরিন:যাহ বাবা। এটা কি হলো??? বুঝেছি……
আগুন লাগাইলোরে টিংকু আগুন লাগাইলো।
.
রাত১টা……
নীড় বাসায় ফিরলো।
বাসায় ফিরে রুমে ঢুকে নীড় অবাক। কারন সারা রুম মোমবাতি আর ফুল দিয়ে সাজানো। দেখতে ভীষন সুন্দর লাগছে। মেঝেতে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে sorry লেখা। তখন মেরিন এসে পেছন থেকে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: i love u…..।
নীড়: দেখি ছারো…..
মেরিন:উহু।
নীড়: সরতে বলছি না??? সবসময় ভালো লাগেনা…..
মেরিন: তাতে কি….. sorry বললাম তো।
নীড়:হ্যাহ…. sorry…. আমার জীবনটা শেষ করে দিয়ে sorry বলতে আসছো???
মেরিন নীড়কে ছেরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে
বলল: আমি ওগুলোর জন্য sorry বলিনি….. আমি sorry বলেছি কারন তখন আমার বলার কথার জন্য আপনাকে এতোক্ষন বাইরে থাকতে হয়েছে, না খেয়ে থাকতে হয়েছে তাই।
নীড়:…..
মেরিন: যান fresh হয়ে আসুন॥আমি খাবার বেরে দিচ্ছি।
নীড়: খাবোনা। ক্ষুধা নেই।
মেরিন: বললেই হলো?? রাতেরবেলা না খেয়ে শুতে নেই…..
নীড়: তোমার কি মনে হয়ে এইসব stupid decoration করে , romantic পরিবেশ তৈরি করে তুমি তোমার নোংরা উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারবে??
মেরিন:উদ্দ্যেশ্য??? আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো আপনার বউ হওয়ার। হয়েছি। আর আজকের এই decoration কেবল আপনাকে sorry বলার জন্য ছিলো। কোনো নোংরা উদ্দেশ্য না। আর তাছারাও আপনি যেটা mean করছেন সেই উদ্দেশ্য হলেও সেটাও কিন্তু নোংরা উদ্দেশ্য হতোনা….
যাই হোক। আপনি fresh হয়ে আসুন ততোক্ষনে আমি রুমটা normal করে দিচ্ছি।
.
নীড় fresh হয়ে এসে দেখলো যে রুমে ফুল মোমবাতি কিছুই নেই। নীড় না খেয়েই শুতে গেলে ।
মেরিন বলল: না খেয়ে ঘুমানোর সাহস করবেন না…..
নীড়: কি করবা কি তুমি??
মেরিন:bomb ফাটাবো।
নীড়: তুমি কি আমাকে একটুও শান্তি দিবানা??
মেরিন: না…… আসুন খেয়ে নিবেন।
নীড় জানে না খেয়ে উপায় নেই। তাই খেতে বসলো। কিন্তু আজকে মেরিন নীড়ের সাথে ওর প্লেটেই খেতে বসলো না। নীড় অবাক হলেও ১টা বার জিজ্ঞেসও করলো না মেরিন খেয়েছে কিনা?? নীড় দেখলো যে মেরিন ওর দিকে তাকিয়েই আছে।
নীড়: ওই তোমার খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই??? যখন দেখি তখনই আমার চেহারার দিকে পরে ধরে তাকায় থাকো??? কি লাভ পাও আমার চেহারা দেখে?? ভালো তো আর তুমি একা বাসোনা। আমিও তো বেসেছি। কই আমি তো জনমে কোনোদিন এমন করে পরে ধরে নিরার চেহারার দিকে তাকায় থাকিনি। কি দেখো আমার খোমাতে?
মেরিন: আমার স্বর্গ……
.
বলেই মেরিন ১গাল হাসি দিয়ে নীড়ের কোলে গিয়ে ধাপ করে বসে
বলল: নিন আমাকে খাইয়ে দিন…..
নীড়: what!!!
মেরিন: হামম। এটা আপনার শাস্তি। কারন ১টা বারও আমাকে খেতে বলেন নি… নিন খাইয়ে দিন……
নীড় মনে মনে: দারাও দেখাচ্ছি মজা…..
বলেই নীড় ভাতের লোকমার মধ্যে মরিচ ঢুকিয়ে দিলো। কারন এই কদিনে দেখেছে যে মেরিন ঝাল খেতে পারেনা। মেরিন মরিচ খেয়েও react করলো না। নীড় অবাক হয়ে আরো ১বার মরিচ দিলো। মেরিন তাও react করলো না। এরপর থেকে নীড় আর মরিচ দিলোনা।
নীড় মনে মনে: alien … খাওয়া just শেষ হতেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
নীড় মনে মনে:😔
নীড়কে ভীষন জোরে ১টা কামড় দিয়ে মেরিন ছেরে দিলো।
নীড়: মা গো…. vampire ….
মেরিন: আপনাকে ভালোবাসি বলে কি আপনার ভুলের শাস্তি দিবোনা?
নীড়: এখন কষ্ট করে আমার কোল থেকে ওঠো। ঘুমাবো।
মেরিন:উহু…. আগে আমাকে romantic ভাবে request করে বলুন।
নীড়: what!!!
মেরিন: আপনি না কোনো কথা ১বারে বোঝেন না….. না বললে কিন্তু আমি উঠবো না।
নীড়:😡
বলছিলাম কি জা……ন একটু ওঠোনা। please ….. একটু কাজ ছিলো তো….
মেরিন: awwwee…. এতো cute করে বললে না উঠে পারি?? love you এত্তোগুলা…….
.
২ঘন্টাপর……
নীড় আরামে ঘুমাচ্ছে। মেরিন ঘুমন্ত নীড়কে দেখছে।
মেরিন: ভালোবাসার বিরহ কখনো আমাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয়না। আর আজকে আপনি নিরার বিয়ের কথা শুনেও পরম নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। কারন আপনি নিরাকে ভালোবাসেন না….. এটা আপনার ভুল ধারনা মাত্র। ভালোলাগা কে ভালোবাসা মনে করেছেন আপনি। তাছারা কিছুই না। তবে আপনার এই ভুল ধারনা আমি ভাঙবোই….
.
মেরিন নীড়ের গিটার নিয়ে ছাদে গিয়ে গান গাইতে লাগলো।
🎶🎵🎶
ম্যা দেখু তুঝে
দিন মে স’মার তাবা
ইয়ে আগার ইশক হ্যা
তো হ্যা বে ইনতেহা….
তু মাঙ্গলে আগার
জান দে দু তুঝে
তু আগার বোলদে
তো কারদু খুদকো ফানা
আ তুঝমে খাতাম কারদু ইয়ে শ্বাসে মেরি ….
ইস ইশকে মে মারজাওয়া
তু যো কাহে বো কারজাওয়া …. (2)
ইয়ে রাজ হ্যা দিলকা মেরে
কারু কেয়া বায়া
ম্যাহফুজ হ্যা আব ইয়ে মুঝমে
সুনলে যারা
বেখোয়াব সা আব তু রেহনা ইয়াহা
বানকে রাহু ছায়া তেরা….
ইস ইশকে মে মারজাওয়া তু যো কাহে বো কারজাওয়া …(2)
🎶🎵🎶
.
গান শেষে মেরিন পিছে ঘুরে দেখে নীড় দারিয়ে আছে।
নীড়:🤨
মেরিন: what???
নীড়: এতো রাতে গান গাওয়ার কারন???
মেরিন: কিছুনা।
নীড়: তুমি গানও গাইতে পারো???
মেরিন: any doubt???
নীড়: কোন জিনিসটা পারোনা??
মেরিন: কি মনে হয়???
নীড়: ভালো মানুষ হতে……
.
কিছুদিনপর…….
মেরিন আজকে বাঙালিভাবে শাড়ি পরেছে। navy blue রঙের। ভীষন সুন্দর লাগছে। নীড়ের ঘুম ভাঙলো পানির ছিটাতে। চোখ মেলে দেখলো নীলান্জনা দারিয়ে। যদিও মেরিনেপ চুল অতো বড়না। মিচমিচে কালোও না। তবুও ভেজা চুলে খুব সুন্দর লাগছে।
মেরিন: আজকে বুঝি আমাকে খুবই সুন্দর লাগছে???
নীড় মনে মনে: হামম। আবার জিগায়। crush খেয়েছি।
নীড়: just জঘন্য লাগছে।
মেরিন: হুহ। শালা বুইরা ব্যাডা।
নীড়: তোমার একেক দিন একেক রুপের কারন আমি বুঝিনা। fancy dress competition ….. তো আজকে পেট বের নায়িকা সেজে মেডিকেল যাবার কারন কি???
মেরিন:আপনি ঘুষ দিয়ে ডাক্তার হয়েছেন??
নীড়: মানে??
মেরিন: ডাক্তার হয়ে কি করে ভুলে গেছেন যে আজকে friday ….
নীড়:সে যাই হোক। এভাবে শাড়ি পরে রুমের বাইরে যাবেনা।
মেরিন: কেন??
নীড়: না মানে না। ব্যাস।
মেরিন: আরে আজব তো। কারনটা তো বলবেন??
নীড়: এভাবে পেট-কোমড় বের করে রুম থেকে বের হওয়া আমার সহ্য হবেনা।
মেরিন: সত্যি?
নীড়: oh hello …. এতো খুশি হওয়ার কিছু নেই। বাসায় আমার বাবা আছে। সেই সাথে অনেকগুলো servant। তোমার লজ্জা না থাকতে পারে। কিন্তু আমার আছে।
মেরিন:😒
নীড়: কোমড় ঢেকে বের হবা। বাবার সামনে এভাবে বের হয়ে বাবাকে লজ্জা দিওনা।
বলেই নীড় washroom এ চলে গেলো। মেরিন পিন মেরে কোমড় ঢেকে নিচে গেলো।
.
মেরিন মনে মনে: শালা বুইরা বেরসিক। একটু ভালোতো বাসবেই না। আবার তারিফও করবেনা…. লাগে ওর নিরা আমার থেকেও সুন্দর।যেই না বাইট্টা বাউম্বিরি…. ফকিন্নি মার্কা।
মেরিন নীড়ের ১৪ গুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে নিচে নামছে। নিহালকে খেয়ালই করেনি। নিহালের সাথে ধাক্কা লাগলো। নিহাল দুম করে পরে গেলো।
নিহাল: আল্লাহ গো…
মেরিন: oh no… বাবা। দেখি দেখি হাত দাও। উঠে আসো।
নিহাল: তুমি মেয়ে কোনদিন যে আমাকে দুনিয়া থেকে উঠায় দি…
বলেই নিহাল মেরিনের দিকে তাকালো। আর তাকিয়েই থমকে গেলো। চোখে পানি এসে পরলো মেরিনকে দেখে। কারন মেরিন যে শাড়িটা পরেছে সেটা নিহালের মায়ের।
মেরিন: কি হলো? উঠে আসো…..
নিহাল উঠে এলো।
মেরিন: কি দেখছো??? লাগছে না আমাকে তোমার মায়ের মতো???
নিহাল জবাব না দিয়েই চলে যেতে নিলো।
মেরিন: আজকে কি খাবে??
নিহাল:…..
মেরিন: বলো তারাতারি। তুমিই তো জানোই মাঝে মাঝে রান্না করতে আমার দারুন লাগে। এখন বলো কি খাবে??
নিহাল:……
মেরিন: বলবেনা??? ok….
নিহাল: চিত পিঠা দিয়ে হাসের মাংসা সাথে রুটি পিঠা।
মেরিন ১গাল হেসে
বলল: আর মিষ্টিতে???
নিহাল: বুটের হালুয়া।
মেরিন: yes sir…..
বলেই মেরিন রান্নাঘরে চলে গেল। নিহাল মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। গাঢ়ো করে আলতা দেয়া মেরিনের পায়ে। সাথে নুপুরও আছে।
নীলিমা: কি??? মেরিনের মায়ায় পরে গেলেনা..
নিহাল: হ্যা মানে না। তুমি ওকে মায়ের শাড়ি দিলে কেন???
নীলিমা: কারন ও তোমার মা বলে… actually তোমার মার থেকে সুন্দর।
নিহাল: 😒
মনে মনে: সত্যি মায়ের মতো লাগছে।
দুপুরে সবাই কব্জি ডুবিয়ে খেলো।
.
বিকালে….
নীড় হলরুমে বসে TV দেখছে। তখন ওর বন্ধুরা এলো।
নীড়: আরে guys তোরা?? কতোদিন পর।
সুর্য: হামম। তোর কি খবর???
আকাশ : আরে বিন্দাসই হবে…. অমন হট ১টা বউ থাকলে আর কি লাগে জীবনে???
নীড়ের রাগ লাগলেও control করলো।
নীড়: আয় বোস।
সবাই বসলো।
রাব্বি: কি রে তোর সুপার হট বউটা কোথায়রে??
ইমান: থামবি তোরা??
সুর্য: কেন থামবো রে….. ওই মামমা বললো তোমার বউটা কই???
নীড়: তোরা এতোদিন পর আমার সাথে দেখা করতে এসেছিস না কি আমার বউকে দেখতে এসেছিস??
আকাশ : তোর বউকে দেখতে। জ্বলজন্ত পটাকাটাকে দেখতে…. সেই বিয়ের দিন দেখেছিলাম। একটু ডাক দেনারে……
নীড়: পারবোনা।
রাব্বি: এটাকি বউ এর ওপর রেগে বললি না আমাদের ওপর রেগে??
সূর্য: আরে বউয়ের ওপর রাগবে কেন? এতো সুন্দরী বউয়ের ওপর কি আর রাগ করা যায়???
আকাশ : মামমা ভুলে যেয়ো না যে নিরাকে নীড় বাবু মন থেকে ভালোবাসে। যাকে বলে true love…..
ইমান: এই তোর সব চুপ করবি? নাকি আমি চলে যাবো??
সূর্য: তুই চলে যা।
ইমান: ok…
ইমান চলে যেতে নিলো।
নীড়: আরে আরে আরে… কোথায় যাচ্ছি?? বস।
নীড় ইমানকে যেতে দিলোনা। জোর করে বসিয়ে দিলো। তখনই মেরিন mobile এ কথা বলতে বলতে সিড়ি দিয়ে নামছে। ও নীড়ের বন্ধুদেরকে খেয়াল করেনি।
.
নীড় মনে মনে: এর এখনই আসার ছিলো??
ইমান ছারা সবগুলা চোখ ফাটিয়ে মেরিনকে দেখছে। মেরিন ওদেরকে দেখে ফোনটা কেটে ওদের সামনে গেলো।
মেরিন:hello ভাইয়ারা….
ইমান:hi… আপুনি…
বাকীরা: hay…
সবগুলোর তাকানো দেখে মেরিনের ইচ্ছা করছে ওদের চোখ তুলে নিতে।
রাব্বি: তুমি অমায়িক সুন্দর….
মেরিন: thank you ভাইইইয়া… আপনারা বসুন আমি আপনাদের নাস্তার ব্যাবস্থা করছি।
বলেই মেরিন রান্নাঘরে গেলো। গিয়েই জনকে ফোন করলো।
মেরিন: hello জন…. নীড়ের বন্ধুদের চেনো তো???
জন:জী ম্যাম। এখন আপনাদের বাসায়।
মেরিন: হামম। আমাদের বাসায় থেকে বেরিয়ে যেতেই ইমান ভাইয়া ছারা বাকীদের এমন অবস্থা করবে যেন ৬মাসের আগে হাসাপাতালের বেডে থাকে।
বলেই মেরিন ফোন রেখে দিলো।
.
ওদিকে….
আকাশ : কি ফিগার রে….
রাব্বি:হামম রে।
ইমান: ভুলে যাসনা ও নীড়ের বিয়ে করা বউ।
রাব্বি: চুপ থাকতো। নীড় ওকে বউ বলে মানেনা। মানলে যে নীড় কোনো মেয়ের অপমান সহ্য করেনা তার সামনে তার বউয়ের নামে এমন কথা বললে আমরা এখনও জিন্দা থাকতাম নাকি???
সুর্য: তাইলে আবার……
আকাশ : ওই তোর বউকে তালাক দিলে আমি বিয়ে করবো।
নীড় কিছু বলতে নিবে তখনই মেরিন হাজির। সবাইকে চা-নাস্তা পরিবেশন করতে লাগলো। তখন হুট করে ওর শাড়ির পেছনের পিনটা খুলে গেলো। যার জন্য ওর পিঠ আর কোমড় দেখা যেতে লাগলো। আর বাঙালভাবে শাড়ি পরলে কোমড় আর পিঠ দেখাই যায়। মেরিন খেয়াল করলোনা। নীড়ের তো দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। মেরিন ওর দিকে তারাচ্ছেও না যে বলবে। নীড় উঠে মেরিন কাছে যেতে লাগলো। কিন্তু মেরিন তখন আকাশ চা দিয়ে ওকে just cross করে রাব্বিকে চা দিচ্ছিলো। তখন অসভ্য আকাশ মেরিনের খোলা কোমড়ে হাত দিলো। মেরিন ঘুরে থাপ্পর দেবে তার আগেই নীড় এসে আকাশকে বেরোধক পেটানো শুরু করলো। ইমান ছারা বাকি বন্ধুরা এসে আটকালো।
.
আকাশ : তুই ওই মেয়েটার জন্য তোর ১৭ বছরের বন্ধুর গায়ে হাত ওঠালি?? কে হয় ও তোর?? বল কে হয় এই বাজে মেয়েটা তোর।
নীড়: ওকে সম্মান দিয়ে কথা বল। ও আমার বউ।
এটা শুনে মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে ঘুরলো।
রাব্বি: বউ.. এই মেয়ে কারো ঘরের বউ হওয়ার উপযোগ্য না এই মেয়েতো …
আর বলতে পারলোনা। নীড় রাব্বিকেও পিটাতে লাগলো। নীড় সবগুলাকে পিটাতে লাগলো। ইমান দর্শক হয়ে দেখছে।
আর মেরিন….
ওর সময় তো তখনই থেমে গেছে যখন নীড় বলেছে
“ও আমার বউ”।
.
মারামারির শব্দ পেয়ে নিহাল-নীলিমা ছুটে এলো। ততোক্ষনে নীড় সবকটাকে সাবান ছারাই ধোলাই করে ফেলেছে। বহু কষ্টে নিহাল নীড়কে থামালো। মারাত্মকভাবে আহত বন্ধুরা চলে যাবার
আগে বলে
গেল: আজ থেকে তোর দুশমনদের নামের তালিকায় আমাদের নাম যোগ করে নিস……
.
ওরা যেতেই নীড় মেরিনকে কাধে করে রুমে নিয়ে গেলো।
নিহাল: কি হলো?
নীলিমা: তোমার বাজীতে হারার ১ম ধাপ….
নিহাল: মানে??
নীলিমা: মানে ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিন হয়ে ওঠার সূচনা। রুমে…..
.
নীড় মেরিনকে রুমে নিয়ে দারকরিয়ে ১টানে শাড়িটা খুলে ফেলল। এরপর আগুন দিয়ে শাড়িটা পুরিয়ে ফেলল।
নীড়: নিজের শরীর দেখানোর খুব শখ থাকলে আমাকে তালাক দিয়ে কোনো পতিতালয় গিয়ে দেখাবা।
তোমার সবটা তে কেবল আমার অধিকার। বুঝছো?
আর যদি কখনো শাড়ি পরতে দেখেছি তো এই শাড়ির জায়গায় তোমারে পুরিয়ে ফেলে তারপর নিজেকেও শেষ করে দিবো….. mind it……
বলেই নীড় গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো। আজকে নীড়ের কথায় মেরিনের চোখে পানি চলে এলো। না কষ্টের না। আনন্দের। মহা আনন্দের। নীড় ওকে বউ বলে মেনেছে। ওর জন্য নিজের ১৭বছরের বন্ধুদের মেরেছে….. এর থেকে সুখের মেরিনের জন্য কিছুই নেই। মেরিনের সুখের আজকে কোনো সীমা নেই। খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। স্থির হয়ে গেছে।
.
রাত১১টা……
নীড় ফিরে এলো। দেখতে পেলো…
মেরিন এখনো সেভাবেই দারিয়ে আছে যেভাবে ওকে রেখে গিয়েছিলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো। ধীর পায়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: মেরিন…..
ব্যাস নীড়ের এই ডাক দেয়ার দেরি আছে। মেরিনের নীড়ের বুকে ঝাপিয়ে পরতে দেরি নেই। মেরিন নীড়কে জোরে জরিয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো করে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো। নীড়ও মেরিনকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। কাদতে কাদতে মেরিন নীড়ের বুকেই অজ্ঞান হয়ে গেলো।
…..
……..
চলবে..
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৭
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
কাদতে কাদতে মেরিন নীড়ের বুকেই অজ্ঞান হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে খাটে শুইয়ে দিলো। এরপর নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
.
পরদিন…..
বিকালে……
আকাশ , সূর্য, রাব্বি ৩জনের নাজেহাল অবস্থা। ৩জনকে ফুটন্ত গরম পানির ২ফুট ওপরে উল্টা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ৩জন ক্ষমা করে দাও ক্ষমা করে দাও বলছে।।
মেরিন: চুপ। তোদের সাহস কি করে হয় আমার নীড়কে হুমকি দেয়ার??? বল??
সূর্য: ভুল হয়ে গেছে।
মেরিন: ভুল….. তোদের আমি এমন হাল করবো যে তোরা আর কখনো নিজের পায়ে চলতে পারবিনা….
.
কিছুদিনপর……..
নীড় এখন মেরিনের পাগলামো ভালোবাসা enjoy করে। একা বসে থাকলে অজান্তেই মেরিনের কথা ভেবে হাসে। ভালোই চলছে ওদের জীবন।
১দিন…..
নীড় মেরিনদের class নিচ্ছে। মেরিনও মনোযোগ দিয়ে class করছে। তখন ১টা sms পেয়ে মেরিন ১ সেকেন্ডও দেরিনা করে বেরিয়ে গেলো। নীড় কতো ডাকলো তবুও দারালোনা।
.
হাসপাতালে…….
কনিকার ২টা কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গেছে। কেউ যদি ওকে ১টা কিডনি দেয় তবেই সে বাচতে পারবে। কিন্তু আফসোস কোথাও O+ রক্তের গ্রুপধারী ব্যাক্তির কিডনি পাওয়া যাচ্ছেনা। কবিরের মাথা নষ্ট। doctor রনি কেভিনে বসে ভাবছেন। তখনই ঝড়ের বেগে মেরিন রুমে ঢুকলো।
রনি: আরে মেরিন তুমি??
মেরিন: ডাক্তার আমার আম্মুকে বাচান..
রনি: শান্ত হও। আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু কিডনি কোথায় পাবো? কে দিবে কিডনি???
মেরিন: আমি দিবো কিডনি। হ্যা দিবো কিডনি।
রনি: তুমি দিবে কিডনি???
মেরিম:হ্যা আমার আম্মু তাই আমিই দিবো কিডনি……
রনি: অসম্ভব। তা কোনোদিনই হয়না।
মেরিন: কেন হয়না doctor ??? আমি তার মেয়ে। blood group ও এক। তাহলে কেন অসম্ভব।
রনি: কারন এই surgery করলে উনার বাচার সম্ভাবনা ১০০% থাকলেও তোমার বাচার সম্ভাবনা ০০%। কারন তোমার bp একদমই লো। সেই সাথে রক্তস্বল্পতা। আর ১টা mbbs student হয়ে তুমি জানো যে কারো surgery করতে হলে তার pressure normal করে নিতে হয়। তোমার bp তো কখনোই normal হয়না। আর তোমার immune system ও একদম দুর্বল। ১জনকে বাচাতে গিয়ে আমি অন্যজনকে মারতে পারিনা।
মেরিন:আমি মরলে মরবো। কিন্তু আমার আম্মুকে বাচাও।
রনি: না। আর তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছো যে তুমি কাকে বাচাতে চাইছো।
মেরিন: না রনিদা আমি ভুলিনি। আমি জানি আমি আমারকে মা কে বাচাতে চাইছি।
আমি জানিনা কোনো মা-বাবা তাদের সন্তানের সকল ভুল মাফ করতে পারে কিনা……
আমি জানিনা কোনো সন্তান মা-বাবার সকল ভুল মাফ করতে পারে কি না???
আমি কেবল এটা জানি যে মা-বাবা মা-বাবাই হয়। ভালো-মন্দ হয়না……
রনি:তুমি একথা বলছো??
মেরিন: হামম। কারন আম্মুর কিছু হয়ে গেলে আমি কেবল আমার আম্মুকেই না আমার বাবাকেও হারাবো। কারন আমার বাবা আম্মুকে অসম্ভব ভালোবাসে। হ্যা তাদের হয়তো মা-বাবা ডাকিনা। কিন্তু তাই বলে কি তারা আমার মা-বাবা না? তাদেরকে নাই বা মা-বাবা বলে ডাকতে পারলাম… তাদেরকে চোখে দেখতে তো পারবো……
please বাচান…..
রনি: i m sorry…..
মেরিন: যদি আপনি না করেন তবে কাউকে না কাউকে দিয়ে তো আমি এই surgery অবশ্যই করাবো। আমার আম্মুর তো কিছু হতে দিবোনা। কিন্তু তখন আপনার কি হবে???? আমি আপনাকে ধংব্স করে দিবো।
রনি জানে মেরিন যেটা বলে সেটাই করে।
রনি: বেশ আমি করবো।
মেরিন: thank you… আর ১টা কাজ করবে।
রনি: কি??
মেরিন: বাবাকে বলবে যে কিডনি ১টা মৃত ব্যাক্তির।
রনি: what??
মেরিন: হামম। কারন আমার কিডনি জানলে আম্মু কখনোই রাজী হবেনা। আর তাছারাও আমি তাদের কাছে মৃত…..
রনি মেরিনের পা ধরে সালাম করতে গেলে মেরিন সরে গেলো।
মেরিন: একি করছো রনিদা…..
রনি: কোনো সন্তান যে তার মা-বাবাকে এতোটা ভালোবাসতে পারে সেটা তোমাকে না দেখলে জানতামনা। তোমার মতো সন্তান পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ যদি সহায় থাকে তবে আমি কনিকা আন্টি আর তোমাকে ২জনকেই OTথেকে বাচিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।
surgery শুরু হলো। রনি মেরিনের বলে দেয়া কথা গুলোই বলল। কেউ জানেনা সত্যটা কি ১জন ছারা। আর সে হলো দাদুভাই।
.
[ হ্যা মেরিন কবির-কনিকাকে অনেক ভালোবাসে। কনিকা-কবির মেরিনকে যতোটা ঘৃণা করে মেরিন তার থেকে হাজারগুন বেশি ওদের ভালোবাসে। মেরিন কখনোই ওদের ঘৃণা করেনি। নিজের সুস্থতার আগে ওদের কথা ভেবেছে। ৪জন বডিগার্ড ঠিক করেছে। যারা কবির-কনিকার চোখের আড়ালে ওদের সাথে ছায়ার মতো লেগে থাকে। নিরাপত্তা দেয়। যেন ১টা মাছিও ওদের ক্ষতি না করতে পারে।শুধু তাই নয়। কবির-কনিকার কথা ভেবেই মেরিন নিরাকে জানে মারেনি। নিরার জঘন্য কাজের জন্য মেরিন নিরাকে জানে মারতে গিয়ে দেখে যে নিরার সাধারন ১টা accident এ কবির-কনিকার জান যায়যায়। যদি নিরাকে মেরিন মেরে ফেলে তবে যে ওদেরকেও বাচানো যাবেনা সেটা মেরিন ঠিকই বুঝেছিলো। তাই এতো power থাকতেও মেরিন নিরার কোনো ক্ষতি করেনি। কারন মেরিন কবির-কনিকাকে কোনোভাবেই হারাতে পারবেনা…… কিন্তু যখন নীড়ের কথা এলো তখন কেন যেন নিরাকে….]
.
অপারেশন চলছে……
নীড় খবর পেয়ে ছুটে এসেছে। ওর মা-বাবাও। নীড় খবরটা পেয়ে মনে করেছিলো মেরিন হয়তো কনিকাকে দেখতে এসেছে। কিন্তু হাসপাতালে এসেও মেরিনকে দেখতে না পেয়ে হতাশ হলো। অপারেশন শেষ হলো। কনিকা আসংকামুক্ত। কিন্তু ventilation এ রাখা হয়েছে। দাদুভাইয়ের ভীষন চিন্তা হচ্ছে। তবুও কাউকে কিছু বলতে পারছেনা।
এদিকে নীড়েরও যেন কেমন ১টা feel হচ্ছে। তবে আল্লাহর রহমত এবং ডাক্তারের পারদর্শিতার জন্য মেরিন সুস্থ হলো।
.
১০দিনপর…….
নীড়ের চোখে ঘুম নেই। কোথায় গেল মেরিন?? খোজ নেয়ার চেষ্টা করেছে। যদিও জন নিজেই ফোন করে বলেছে যে মেরিন কোনো ১টা কাজে ঢাকার বাইরে গেছে। কিন্তু তবুও কেন যেন ওর মন মানছেনা। খুব চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু কেন??? আজকে ১০দিনপর মেরিন ফিরলো। নীড় বারান্দায় দারিয়েছিলো। মেরিনকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে দৌড়ে নিচে গেল।
মেরিন ভেতরে ঢুকতেই জরিয়ে ধরে
বলল: তুমি ঠিক আছো তো??
মেরিন: হামম।
বলেই নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নীলিমা: কিরে মামনি কোথায় গিয়েছিলি?
মেরিন: ১টা কাজে।
বলেই মেরিন রুমে গেলো।
নীড়ও গেলো।
নীড়: তুমি কোথায় গিয়েছিলে???
মেরিন:……..
নীড়: বলো কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন:…..
নীড়: কিছু জিজ্ঞেস করেছি……. জবাব দাও।
মেরিন: মেরিন কখনো কাউকে কোনো জবাব দেয়না। দিতে বাধ্য নয়।
নীড়: হাজারবার বাধ্য। কারন আমি “কেউ” নই। আমি তোমারে স্বামী।
মেরিন: স্বামী!!!🤣🤣🤣।
বলেই মেরিন washroom এ চলে গেলো।
মেরিন: i m sorry নীড়। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে পারবোনা। কারন দুর্বল মেরিনকে আমি আপনার সামনেও তুলে ধরতে পারবোনা।
মেরিন washroom থেকে বেরিয়ে চাদর গায়ে দিয়ে শুয়ে পরলো। নীড় অনেক অবাক হলো। মেরিনের চোখে মুখে অসুস্থতার ছাপ। কিছু তো ১টা হয়েছে।
.
৩দিনপর….
মেরিন নিজের gun টা পরিষ্কার করছে। এই ৩দিন মেরিন class করতেও যায়নি।
নীড় মেরিনের হাত ধরে বলল: মেরিন……
মেরিন: হামম।
নীড়: সত্যি করে বলো তো কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন: আগেই বলেছি যে মেরিন কাউকে জবাব দিতে বাধ্য না। মেরিন কাউকেই কখনো কারো কাছে জবাবদিহি করেনা।
নীড়: আমার কাছেও না…….
মেরিন: কারো কাছে না।
নীড়: তারমানে তুমি আমাকে ভালোবাসোনা……
মেরিন: নিজের জীবনের থেকেও বেশি।
নীড়: মিথ্যা। একদম মিথ্যা। আমি তোমার জন্য কেবল নেশা। তোমার জেদ। নিরাকে কষ্ট দেয়ার বাহানা……
মেরিন: যেটা আপনি মনে করেন……
নীড়: তবে ছেরে দাও আমাকে……
মেরিন: এই জীবনে সম্ভবনা। এমনকি যদি আবার কখনো জন্ম হয় তখনও ছারতে পারবোনা।
নীড়: তাহলে বলছোনা কেন যে কোথায় ছিলে???
মেরিন: বলতে বাধ্য নই তাই।
নীড় মনে মনে: জানতে আমাকে হবেই যে কোথায় গিয়েছিলে তুমি?? কেন যেন আমার ভয় হচ্ছে……. মন হচ্ছে খুব এহেম জিনিষ তুমি লুকাচ্ছো……
নীড়: কার সাথে ছিলে তুমি??
মেরিন: মানে??
নীড়: মানে স্পষ্ট……. কার সাথে ছিলে? কোন ছেলের সাথে ছিলে?
মেরিন: নীড় আপনি জানেন আপনি কি বলছেন? কাকে বলছেন?
নীড়: জানি…. আমি তোমাকে বলছি……
মেরিন:আপনার কি মনে হয় আমি কোনো ছেলের সাথে…..
নীড়: না মনে হওয়ার কোন কারন নেই….. তোমার মতো মেয়ে সবই পারে।
.
মনে মনে: sorry মেরিন। কিন্তু আমাকে জানতেই হবে যে তুমি কোথায় ছিলে। তাই এটা ছারা আমার আর কোন পথ নেই…….
মেরিন: কি বললেন আপনি?? আমার মতো মেয়ে সব পারে…..
.
নীড়: হামম।
মেরিন: ভালো…..
নীড়: কি ভালো হ্যা কি ভালো…… তোমার ওপর কি আমার কোনো অধিকারই নেই……
মেরিন: অধিকারের কথা কেন আসবে নীড়…… মেরিনতো পুরোটাই নীড়ের।
নীড়:oh really ?? মেরিন কখনোই নীড়ের না। নীড় কেবল মেরিনের খেলার পুতুল। যা দিয়ে খেলতে মন চাইছে তাই খেলছে…..
যেদিন মন ভরে যাবে সেদিন ছুরে ফেলে দিবে……
মেরিন: না নীড় এমন করে বলবেন না….. আপনি আমার সব নীড়….. আপনি আমার জীবন। আপনি চাইলে আমি জীবনও দিয়ে দিতে পারি……
নীড়: জীবন…… সে তো অনেক বড় কিছু। শুধু ১টা ছোট্ট জবাব চেয়েছি তাই দিচ্ছোনা। আর তো জীবন…. সত্যিটা কি জানো? তুমি আমাকে বলেছিলেনা যে আমি নিরাকে কখনো ভালোবাসিনি……
আজকে আমি তোমাকে বলছি যে তুমি মেরিন কখনো আমাকে ভালোবাসোনি…… তুমি কাউকেই কখনো ভালোবাসতে পারোনা।
মেরিন: ভুল নীড়……. আমি আপনাকে ভালোবাসি।
নীড়:মানিনা….. বিশ্বাস করিনা…… ভালোবাসলে তুমি জ….
মেরিন: আপনি বিশ্বাস করুন নীড়….. ১টা বার বিশ্বাস করুন। বললাম তো আপনি চাইলে আমি জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি…..
২টা জিনিষ ছারা। এক এই জবাব আর দুই আপনাকে divorce ….
নীড়: জানা হয়ে গেছে….. জীবন দিয়ে দিবো…. হ্যাহ….
মেরিন: আপনার মনে হয়না আমি আপনার জন্য জীবনও দিতে পারি……
নীড়:আমার মনে হয়না যে তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি আমার প্রমান পেয়ে গেছি…… জীবন..😂
মেরিন: ওহ……. আচ্ছা আমি যদি আমার জান দিয়ে দেই আপনাকে উৎস্বর্গ করে তবে মানবেন তো যে আমি আপনাকে ভালোবাসি……
আমার ভালোবাসার প্রমান হিসেবে কি আপনি আমার জীবন চান……….
নীড়:……
মেরিন: নীরবতা সম্মতির লক্ষন।
নীড়: তুমি ভালোবাসার মানেই বোঝোনা….. তুমি আর কি জীবন দিবে…. জীবন তো দেয়া দরকার আমার। কারন তোমার মতো কারো কাছে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো…..
.
বলেই নীড় রুম থেকে বের নিলো। ঘুরতেই গুলির আওয়াজ শুনতে পেলো। নীড় পিছে ঘুরলো। ঘুরেই মেরিন বলে চিৎকার করে দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: এটা কি করলে তুমি…..
গুলির শব্দ শুনে নিহাল-নীলিমাও ছুটে এলো।
মেরিন: আপনি আমার কাছে থেকে মমমুক্তি চেয়েছিলেন….. আমি বাতলে সেটা কখনোই সম্ভব না। তাই….
এখন আর কখনো আপনাকে জ্বালাবেনা মেরিন……
আপনার সুখের চিতা জ্বালাবে না মেরিন…… চলে যাচ্ছে আপনার ঘৃণারমেরিন ।
আর কেউ বলবেনা যে ভালোবাসতে জানেনা মেরিন….. আমি প্রপ্রপ্রমান করে দিয়েছি যে আপনি চাইলে আমি সব করতে পারি… আমি জানি আমার স্থান নরকেই হবে। কিন্তু হাজার জান্নাত ত্যাগ করে আপনার বুকে মরে যাওয়ার সুখ আমার কাছে অনেক দামী…….
.
নীড় কোলে কোরে মেরিনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। OT তে ঢোকানো হলো।
নীড়: তুমি কেন বুঝলেনা মেরিন যে আমার উদ্দেশ্যটা কি ছিলো…… কেন আমি তোমাকে বুঝতে পারিনা……
তখন ডাক্তার বেরিয়ে এলো।
ডাক্তার: patient এর গুলি কিভাবে লাগলো?? বলুন….
নীড়: আমার মেরিনকে বাচান ডাক্তার…..
ডাক্তার: বাচাবো…..!! লজ্জা করছেনা এটা বলতে?? কি হন আপনি রোগীর? স্বামী….. কেমন স্বামী আপনি…. যে স্ত্রীর ১২-১৫ দিন হলো কিডনির অপারেশন হয়েছে…. নিজের কিডনি দান করেছে তাকে কিভাবে গুলি খেতে দিলেন….. বলুন….
নীড়: what??? kidney ……
ডাক্তার: এ…..
নার্স: sir…. মির্জা স্যার ডাকছেন…..
ডাক্তার চলে গেলো। নীড় অংক মিলাতে লাগলো। তারমানে ওর সন্দেহই ঠিক যে কনিকারে মেরিনই কিডনি দিয়েছে। মেরিন ঘৃণার মেরিন নয়।
নিহাল: নীড়…. কিডনি…..
নীড়: হ্যা বাবা…. কনিকা খানকে মেরিনই কিডনি দিয়েছে।
.
ওদিকে…..
খান বাড়িতে……
নিরা কুমিরের মতো কাদতে কাদতে খালামনি করতে করতে খান বাড়িতে ঢুকলো।
নিরা: খালামনি তুমি ঠিক আছো তো?? কেন তোমার সাথে এমনটা হলো….. তোমার বদলে আমার সাথে এমনটা কেন হলোনা……😂
দাদুভাই: এই মেয়ে তুমি এই বাড়িতে কেন??
নিরা: আমার খালামনির এই অবস্থা আমি দেখতে আসবোনা….. আজকে এখানে আসার অপরাধে যদি মেরিন আমাকে মেরেও ফেলে তবুও আমি শান্তি পাবো….. কারন মরে যাওয়ার আগে আমার খালামনিকে দেখতে তো পেলাম…..
দাদুভাই: তুমি তোমার নাটক দিয়ে এদের বোকা বানাতে পারো। কিন্তু আমাকে না…….
কনিকা: কিছু মনে করোনা বাবা…. কিন্তু এটা বলবে কি এখানে নিরামা কি নাটকটা করেছে….?
দাদুভাই: সবটাই…..
কারন এতোই যখন ভালোবাসে তোমায় তখন ১৫দিন আগে এলোনা কেন??? যদি কিডনি দিতে হয় সে ভয়ে…..
কবির: ওর এখন ঘর আছে সংসার আছে…. হয়তো ব্যাস্ত ছিলো…..
দাদুভাই:মোটেও না…… ওর কোনো কাজই ছিলোনা।
কবির:তুমি তো নিরার পিছে লেগেই থাকো। আচ্ছা তোমার কথাই মানলাম। কিন্তু তোমার গুনধর নাতনী। সে হাসপাতালে তো দূরের কথা। বাসায়ও এলোনা।
ওর তো নিজের মা। তবে ও কেন এলোনা….. বলো?
দাদুভাই:……
কবির: এর জবাব তোমার কাছে নেই বাবা। আমার মনে হয় যে ও আমাদের মেয়েই না। হয়তো হাসপাতালে বদলে গেছিলো। কারন ওর মতো বিষধর সাপ আম…..
আর বলতে পারলোনা। দাদুভাই ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই : তুইই ১টা বিষধর সাপ….. ইবলিসের উপাসক। তানা হলে কি নিজের সন্তানের সম্পর্কে কেউ এমনটা বলতে পারে???? তেজ্য করবো আমি তোকে। তবে তোর সব জবাব দিয়ে। সব বলবো আজকে তোকে।
এইযে বউমা তুমি যে আজকে বেচে আছো কেন জানো? সেই বিষধর সাপটার জন্য। কারন সেই বিষধর সাপটাই নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে তোমাকে নিজের ১টা কিডনি দিয়েছে।
.
কনিকা বসা থেকে উঠে দারালো।
দাদুভাই: নিজের জীবন ঝুকিতে নিয়ে কথাটা কেন বললাম জানো? না তোমরা সেটা জানবে কি করে??? তোমরা তো সেই নিকৃষ্ট প্রানী যারা সন্তান জন্ম দেবার পরই সন্তানকে একা ফেলে অন্যত্র চলে যায়। ওর bp একদম লো। তার সাথে রক্তস্বল্পতা তো আছেই। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে সেই বিষধর সাপটা নিজের জীবন বাজী রেখে কিডনি দিয়ে কনিকাকে বাচিয়েছে। শুধু তাই নয়। কবির তোর মনে আছে যে তোকে ১বার ১টা সন্ত্রাস অপহরন করেছিলো…. আর ১টা অচেনা ব্যাক্তি তোকে উদ্ধার করেছিলো। এমনকি তোকে বাচাতে গিয়ে সে হাতে গুলিও খেয়েছিলো…… সেই অচেনা ব্যাক্তিও এই বিষধর সাপটাই ছিলো। ওর বাম হাতে আজও সেই ক্ষতটা আছে। শুধু তাইই না…. যেন তোদের গায়ে ১টাও আচর না লাগে তাইজন্য তোদের আড়ালে তোদের জন্যেই বডিগার্ড ঠিক করে রেখেছিলো।
কবির-কনিকা অবাক। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে।
দাদুভাই: তোরা যেই বিষধর সাপকে প্রতিনিয়ত অভিশাপ দিতি সেই বিষধপ সাপ তোদের জন্য প্রতিনিয়ত দোআ করেছে। তোদের অভিশাপ আশীর্বাদ বলে মেনে নিতো…..
নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতোনা। তোদের ভালোবাসা না পেয়ে কতো রাত যে মেয়েটা নির্ঘুম কাটিয়েছে তা কেবল আমি জানি.। কেদে কেদে ওর চোখ পাথর হয়ে গেছে। চাতক পাখির মতো তোদের ভালোবাসার আশা করতো। কিন্তু তোরা….. ও বেচে আছে না মরে গেছে তারও খবর নিতিনা…..
যে সন্তান তার মা-বাবাকে দেবতার মতো করে পূজা করেছে সে মা-বাবা তাকে বিষধর সাপ বলে আখ্যায়িত করেছে।
কি নিদারুন বরদান….
বিষধর সাপটা জানতোনা যে, সে যাদের দেবতা ভেবেছে তারা তো নিম্নস্তরের প্রানী হবারও যোগ্যতা রাখেনা। এমনকি পাথরের মূর্তীর থেকে নিষ্প্রান……
যে বিষধর সাপ তার মা-বাবাকে নিঃসার্থভাবে ভালোবেসেছে তার মা-বাবাই তাকে ভালোবাসার না ঘৃণারসন্তান….. ঘৃণারমেরিন বানিয়ে দিয়েছে।
কবির-কনিকা:😢
দাদুভাই: তাে আরো কিছু শুনবি তোরা…. চল আরো কিছু শোনাই তোদের। শোন ত……
দাদুভাই আরো কিছু বলতে নিবে তখন জন দৌড়ে এলো।
জন: স্যার……
দাদুভাই: কি হয়েছে জন?? তোমাকে এমন লাগছে কেন??? কি হয়েছে।
জন: স্যার… মেরিন ম্যাম…..
দাদুভাই: ককি হয়েছে দিদিভাইয়ের???
জন: ম্যামের গগগগুলি ললেগেছে……
.
১মাসপর……
মেরিন ১মাস ধরে কোমায় আছে। নীড় এই ১মাসে মেরিনকে ছেরে ১বারের জন্যেও বাড়ীতে যায়নি। এই হাসপাতালকে বাড়ি ভেবে আর মেরিনের কেভিনকে রুম ভেবে এখানেই পরে আছে। দেখলো মেরিনের হাত নরছে। বুঝতে পারলো যে মেরিন কোমা থেকে বেরিয়ে এসেছে….. নীড় খুশিতে আত্মহারা হয়ে সবাইকে ডাক দিলো। মেরিনের সুবিধার জন্যেই ওকে ওই মুহুর্তেই আবার ঘুমের injection দেয়া হলো।
৪ঘন্টাপর মেরিন দাদুভাই বলে চিৎকার করে জেগে গিয়ে উঠে বসলো। আর দেখলো…..
.
দেখলো যে ওর সামনে সবাই বসে আছে। এমনকি কবির-কনিকাও…… ওর হাত নীড়ের হাতের মুঠোয়। মেরিন অবাক হলো। তবুও মেরিন অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস
করলো: আমার দদাদুভাইটা কোথায়???
সবাই:……
নীড়: মেরিন এখন ততততোমার কেমন লাগছে?? খারাপ টারাপ লাগছেনাতো……
মেরিন: আরে রাখুন ভালো খারাপ। আগে বলুন আমার দাদুভাই কোথায়?
নীলিমা: মমামনি… তুমি কেবল কোমা থেকে ভালো হলে। তোমার একটু relax থাকার দরকার…..
মেরিন: ও মামনি আগে বলোনা আমার দাদুভাইটা কোথায়…….
সবাই:……
মেরিন:কি হলো? ববলো…..
সবাই:…..
মেরিন: বলো দাদুভাই কোথায়?
সবাই:…..
কনিকা: মা….
মেরিন: hey don’t touch ……
নীড় বলুন না দাদুভাই কোথায়??
সবাই:…..
মেরিন: তোমরা কেউ কিছু বলছোনা কেন?? জন….. জন…… জন…. কোথায় মরেছে…..
জন দরজার বাইরেই দারিয়ে কাদছে।
মেরিন: জন…..জন…… যদি আমাকে উঠে তোমার কাছে যেতে হয় তবে i swear ….. জন….
জন চোখের পানি মুছে ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন: কোথায় মরেছিলে……
জন:…..
মেরিন: দাদুভাই কোথায়?
জন:…..
মেরিন: কি হলো? বলো…..
জন:……
মেরিন: জন … বলছোনা কেন দাদুভাই কোথায়?
জন:…..
মেরিন: জন যদি খুন না হতে চাও আমার হাতে বলো কোথায় দাদুভাই?
জন:…..
মেরিন: আমি কিন্তু প্রলয় শুরু করবো জন। ভালোমতো বলো কোথায় দাদুভাই???
জন: সসসস্যার আর ননননেই মমম্যাম। তততিনি মমমারা গেছেন…….
(জন যখন এসে বলল যে মেরিনের গুলি লেগেছে তখন ওই মুহুর্তেই দাদুভাইয়ের heart attack হয়েছে। কারন যে মেয়ের ১৫দিন আগেই major operation হয়েছে সে মেয়ের গুলি লাগা মানে মৃত্যু…… তাই দাদুভাই এই খবরটা মেনে নিতে পারেনি। তখনই মারা যায়। )
…..
……..
চলবে…
গল্প ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৮
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
জন: সসস্যার আর ননননেই। মমমারা গেছেন।
.
কথাটা শুনতেই মেরিন জনকে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
মেরিন: তোমার সাহস কিভাবে হয় এই সব ফালতু
কথা বলার। বলো? সাহস খুব বেরে গেছে….. না?
নীড়: মেরিন…
মেরিন: আরে দেখুন না নীড়…. পাগল জন কি বলেছে! আমার দাদুভাই মারা গেছে। পাগল! এই তুমি সরো তো সরো। তুমি এখন আমার চোখের সামনে থাকলে নির্ঘাত আমি তোমাকে জানে মেরে দিবো। সরো তো সরো….. সরো সরো….এই নীড় ওকে সরতে বলেন তো। আমার ওকে সহ্য হচ্ছেনা। এই জন… তুই যা। যাহ যা।
কবির মেরিনের মাথায় হাত দিতেই
মেরিন বলল: hey don’t touch me….. নীড়, এরা এখানে কেন? চলে যেতে বলুন তো…. জন এদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করোতো….. এদের দেখলে আমার ঘৃণা করে।
জন মাথা নিচু করে কেদেই যাচ্ছে।
মেরিন: আজব তো…. এই তুমি কি আজকে বাসায় থেকে ঠিক করে এসেছো যে আমার হাতে মরবে……. ১টা কথাও শুনছো না…… আবার পাগলের প্রলাপ বলছো…..
নীড়: মেরিন তুমি আগে শান্ত হও তো….. শান্ত হও…..
মেরিন: কিসের শান্ত হবো। এই জন এতো ঘাটিয়া কথা বলল আর আমি শান্ত থাকবো। বেবুনিয়াদ কথা বলে….. মিথ্যাকথা বলে।
নীড়: মিথ্যা নয় মেরিন….. সত্যি। দাদুভাই আর নেই ।
.
কথাটা বলতেই মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
মেরিন: নীড়…… একদম ফালতু কথা বলবেন না…….
নীড়: মেরিন…. accept this…. দাদুভাই আর নেই… মারা গেছেন।
মেরিন: অসম্ভব। কোনোদিনও না…. কোনোদিনও না…… কোনোদিনও না…..
বলেই পাগলের মতো হাত থেকে ক্যানোলা খুলে পাগলের মতো দৌড়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেল। কেউ থামাতে পারলোনা। ১টা taxi করে খান বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে গেলো। বাকিরাও গেলো। গিয়ে দেখলো দীদার কবরের পাশে ১টা নতুন কবর। name plate এ শাহজাহান খান লেখা। এরপর মেরিন পাগলের মতো হাসতে লাগলো।
মেরিন: স্বার্থপর….. স্বার্থপর…… স্বার্থপর….. স্বার্থপর….. সবাই স্বার্থপর…… তুমিও স্বার্থপর….. কারন তুমিও তো কবির খানেরই বাবা। তাই তুমিও স্বার্থপর। কথা বলবোনা। আরিইই, খুব চালাক না……. ভালোমতোই জানো যে তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারবোনা……
আর ঠিকই ভাবছো…….
বলেই মেরিন দাদুভাইয়ের কবরের ওপর সমান্তরালভাবে শুয়ে পরলো।
নীড়: মেরিন ওঠো…..
মেরিন: কি চাই?
নীড়: ওঠো….. কবরের ওপর শুয়ে থাকলে দাদুভাইয়ের আত্মা যে কষ্ট পাবে…..
মেরিন: শাট আপ! আমাকে ঘুমাতে দিন…… আমার ঘুম পাচ্ছে।
নীড় মেরিনকে টেনে তুলল।
মেরিন: আজব তো…..
নীড়: মেরিন….. বাস্তব টা মেনে নাও….. সত্যি এটাই যে দাদুভাই আর আমাদের মাঝে নেই….. মারা গেছেন মারা গেছেন…… মারা গেছেন…..
নীড় মেরিনকে ঝাকিয়ে কথাটা বলল। কথাটা শুনে মেরিন স্তব্ধ হয়ে গেলো। চোখ ২টা স্থির হয়ে গেলো।
নীড়: দেখো কেউ চিরদিন বেচে থাকেনা। আমার দাদুভাই-দীদাও চলে গেছে……
নীড় কি বলছে মেরিন কিছুই শুনছেনা……. মেরিন আসতে করে নিজের কাধ থেকে নীড়ের হাতটা সরিয়ে সোজা সামনে হেটে গেলো।
.
আড়াইমাসপর……
এই আড়াই মাসে মেরিন নিজের রুম থেকেই বের হয়নি। কারো সাথে কোনো কথাই বলেনি। কাদেও নি… হাসেওনি….. জীবন্ত লাশ হয়ে গেছে। নীড় খাইয়ে দিলে খায়। তেমন ভাবে ঘুম আসেনা। পলকই যেন ফেলতে ভুলে গেছে মেরিন।
নীড় এখন কেবল সেই রাগী ভয়ংকারী মেরিনকে miss করে। যে অপলক ওর দিকে তাকিয়ে থাকতো। রোজ রাতে জোর করে ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমানো….. সকালবেলা good morning kiss….যখন তখন ওর কোলে বসা…. ওর প্লেট থেকেই খাবার খাওয়া সবটা। যা এখন শুধু নীড়ের কল্পনায়।
.
নিহাল: রুমা….. নীড়কে নিচে আসতে বলো।
রুমা: জী স্যার।
রুমা গিয়ে নীড়কে ডাক দিলো। রুমার ডাকে মেরিন কল্পনা থেকে বেরিয়ে এলো। নীড় নিচে গিয়ে দেখলো যে নিহাল-নীলিমা, কবির-কনিকা , নিরা বসে আছে।
নীড় কবির-কনিকাকে বলল: mr. & mrs. khan…. আপনারা এখানে?
নিহাল: নীড়… এনারা তোমার শশুড়-শাশুড়ি হয়।মেরিনের মা-বাবা…..
নীড়: মেরিনের মা-বাবা?? like really ?? কোন দিক দিয়ে? কোন বাবা তার মেয়েকে বলতে পারে যে তার রক্তে বিষ আছে…. কোন মা ভাগনির জন্য মেয়ের তালাক করাতে চায়….. সন্তান যতোই খারাপ হোকনা কেন …. সন্তান সন্তানই হয়……. কিন্তু এনারা নিজের মেয়ে রেখে অন্য মেয়ে নিয়ে মাতামাতি করেছে।
নিরা: তুমি কি আমাকে অপমান করছো?
নীড়: অপমান কেন করবো? আমি কেবল সত্যিটা বললাম…… যাই হোক…. এনারা তো মা-বাবা নামে কলঙ্ক।
নিরা: just shut up নীড়। তুমি খালামনি আর বাবাইকে অপমান করছো….
নীড়: you shut up…. পারিবারিক কথা হচ্ছে এর মাঝে তুমি টকটক কেনো করছো?
নিরা: পারিবারিক মানে? আমি কি পরিবারের বাইরে??
নীড়: অবশ্যই। কারন এখানে আমার বউকে নিয়ে কথা হচ্ছে। মামনি-বাবা আর এনারাই পরিবার।
নিরা: আর আমি?
নীলিমা: পরগাছা…..
নিরা: এতো বড় অপমান??? বেশ আমি এখনি চলে যাবো।
নীলিমা: তো যাওনা।
নিরা রেগে মেগে চলে গেলো।
.
কবির: বাবা… আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে তোলো please …….
নীড়: মেয়ে? লজ্জা করেনা ওকে মেয়ে বলতে?? তোমরা জানো ও ১টা মানসিক রোগী? a psycho….. আমি damn sure যে এর জন্য তোমরাই দায়ী। তোমরা ২জনই মেরিনের অপরাধী । এমনকি আমি নিজেও।
কনিকা: দেখো…. আমরা মানছি যে ভুল করেছি…… কিন্তু এখন আমি হাত জোর করে বলছি যে যেভাবেই হোক তুমি আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে তোলো….. তুমি তো ১জন ডাক্তার। সেই সাথে ওর স্বামীও। যাকে ও অসম্ভব ভালোবাসে। দেখোনা যদি পারো………
নীড়: দেখছি….. সেটা নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবেনা। আমার বউ আমি ঠিক বুঝে নেবো।
বলেই নীড় রুমে চলে গেলো।
কবির-কনিকাও বাসায় চলে গেলো।
নীলিমা: কি হলো নিহাল? তুমি হাসছো কেন?
নিহাল: তার আগে বলো তুমি কেন হাসছো?
নীলিমা: ওই শাকচুন্নিটা permanently আমার ছেলের মাথা থেকে নেমেছে তাই। আপ তুমি?
নিহাল: তোমার সাথে বাজিতে হেরে আজ আমি মহাখুশি…….
.
পরদিন থেকে নীড় মেরিনের সাথে কথা বলতে শুরু করলো। psychologically ভাবে মেরিনকে handle করতে লাগলো। কিন্তু মেরিন একটুও স্বাভাবিক হলোনা।
.
৭দিনপর……
মেরিন নীড়ের রুমের mini terrace এ দারিয়ে আছে। ঝরো ঝরো বাতাস বইছে। যেকোনো সময়ে বৃষ্টি পরবে। নীড় ধীরে পায়ে হেটে গিয়ে মেরিনের পাশে দারালো।
নীড় মেরিনকে নিজের দিকে ঘোরালো। মেরিনের কাধে হাত রেখলো।
নীড়: মেরিন… মৃত্যু মানুষের জীবনের সবথেকে বড় সত্য….. সবকিছুরই শুরু আছে….. আবার শেষও হয়ে যায়। তাই কোনো কিছুকে মোকাবেলা করা দরকার। কোরআন শরীফে ১টা আয়াত আছে। “আর সকল প্রানীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে।” মৃত্যু সবথেকে বড় সত্য।
মেরিন:…..
নীড়: মেরিন কান্না করো…. কারন তোমার দাদুভাই মারা গেছে। সে আর কোনোদিন ফিরে আসবেনা…… তোমাকে কখনো আর দিদিভাই বলে ডাকবেনা…… মনে করো দাদুভাই তোমাকে কতোটা ভালোবেসেছে। ছায়ার মতো তোমাকে আগলে রেখেছে, তোমার ভালো চেয়েছে, তোমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবেসেছে সে চলে গেছে মেরিন…..
চলে গেছে। মারা গেছে ॥
শুনতে পাচ্ছো তুমি… শুনতে পাচ্ছো তুমি??? তোমার দাদুভাই মারা গেছে। আর কখনো সে ফিরবেনা । তুমি তাকে দেখতে পারবেনা…. ছুতে পারবেনা…… বুঝেছো তুমি….. শুনতে পাচ্ছো তুমি…… দাদুভাই মারা গেছে। কান্না করো মেরিন….. মেরিন…
মেরিনের চোখের সামনে দাদুভাই এর স্মৃতি ভেসে উঠলো। দাদুভাইয়ের সাথে কাটানো সব স্মৃতি চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে উঠলো। চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। মেরিন ধাপ করে বসে পরলো।
মেরিন: দদদাদুভাই মমমারা গগগেছে….. ককককিন্তু কককেন? এখন কককে আমাকে ভভভভালোবাসবে??? ককককার কোলে মমমমাথা রররাখবো…… কককে গগগল্প শোনাবে…… আমি যে এএকদম একা……. আআমার যে আর আপন কেউ রইলো না…….
দাদুভাই……. কেন চলে গেলে……. তুমিও কি আমার ওপর বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলে…… এখন আমি কককাকে দাদুভাই বববলে ডাকবো….. আমার যে কেউ নেই …… ও নীড়…. ও নীড় আমি কথা দিচ্ছি আমি আপনাকে divorce দিয়ে দিবো….. আপনি আমার দাদুভাইকে এনে দিন…… আমি সত্যি সত্যি কথা দিলাম আমি আপনাকে divorce দিয়ে দিবো….. আপনি আমার দদদাুভাইকে এনে দিননা…… আমার দাদুভাই ছারা যে আমার কেউ নেই।
দাদুভাই……
দাদুভাই……
মেরিনের কান্না দেখে নীড়ও কাদছে।
নীড় মনে মনে: কান্না করো মেরিন…….. কান্না করো…. মনটা হালকা হবে।
কাদতে কাদতে মেরিন বেহুশ হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে কোলে করে রুমে নিয়ে শুইয়ে দিলো। এরপর বুকের মধ্যে জরিয়ে নিয়ে মাথায় আলতো ভাবে হাত বুলাতে লাগলো…….
নীড়:তোমার আপন বলতে এখন আমি আছি মেরিন…… মেরিনের নীড় আছে….. আমি তোমার সকল দুঃখের অবসান ঘটাবো….. সেইসাথে মেরিনের ঘৃণারমেরিন হওয়ার পেছনের কারন অনুধাবন করবো……. তোমাকে নিজের করে নিবো….ভালোবাসবো…….
.
২দিনপর…..
২দিনধরে মেরিন বেশিরভাগ সময়েই কেদেছে। পাগলামি করেছে। যার জন্য বাধ্য হয়ে নীড় ওকে ঘুমের injection দিয়েছে। নীড় বাগানে মাথায় হাত দিয়ে বসে বসে ভাবছে কি করা যায়। তখন নীড়ের কাধে নিহাল হাত রাখলো।
নীড়: আরে বাবা তুমি…… বসো।
নিহাল বসলো। নিহাল: কি ভাবছো?
নীড়: ভাবছি মেরিনকে normal কিভাবে করা যায়। এই শোকের ছায়া থেকে কিভাবে বের করা যায়……..
নিহাল: ভালোবেসে……
নীড়: মানে……
নিহাল: কোন প্রক্রিয়াই মেরিনকে স্বাভাবিক করতে পারবেনা তো তোমার ভালোবাসা ছারা। ওকে নিজের সবটা উজার করে ভালোবাসো।
ভালোবেসে ওর মাথায় স্নেহের হাত রাখো…..
ভালোবেসে ওর কাধে ভরসার হাত রাখো…..
ভালোবেসে ওর হাতে ভালোবাসার হাত রাখো……
ভালোবেসে আপন করে নাও…… দেখবে মেরিন মাটি হয়ে গেছে।
নীড়:……
নিহাল: আমি জানি আমার ছেলে বুদ্ধিমান……
নিহাল চলে গেলো। নিহালের কথাটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করে নীড়ও রুমে গেলো। গিয়ে দেখলো মেরিন রুমে নেই।
নীড়: মেরিন কোথায় গেলো…..
washroom এ দেখলো। সেখানেও নেই। বারান্দায়ও নেই।
নীড়: কোথায় গেলো……. মামনি মামনি……
নীলিমা দৌড়ে এলো।
বলল: কি হয়েছে??
নীড়: মেরিনকে দেখেছো?
নীলিমা: না। আমিতো রান্না ঘরে ছিলাম…….
নীড় দেরি না করে বেরিয়ে গেলো। সেদিন মেরিনকে যে শ্মশানের সামনে পেয়েছিলো সেখানে গেলো। কিন্তু ওখানে পেলোনা। নীড় জনকে ফোন করলো। জনও জানেনা।
নীড়: কোথায় যেতে পারে? কো……
নীড় কিছু ১টা ভেবে কবরস্থানে গেলো। দেখলো যে ওখানে মেরিনের গাড়ি দার করানো। নীড় ভেতরে ঢুকলো। ঢুকে অবাক হয়ে গেলো। দেখলো যে দাদুভাইয়ের পাশে মেরিন আরো ১টা মাটি খুরছে।
.
নীড়: তুমি এখানে??
মেরিন নীড় কথায় কান না দিয়ে নিজের কাজই করছে।
নীড়: কি করছো কি??
মেরিন: কবর খুরছি কবর।
নীড়: কবর?? কিসের কবর??
মেরিন: মেরিনের কবর…..
নীড়: what?? পাগল হয়ে গেছো। রাখো এটা।
বলেই নীড় মেরিনের হাত থেকে নিতে গেলে মেরিন সরে গেলো।
মেরিন: সরেন সামনে থেকে। জীবন প্রথম কোনো ভালোকাজ করছি…. মেরিন সৎকার। একদম বাধা দিতে আসবেন না……
নীড়: পাগলামি করেনা মেরিন…
মেরিন মাটি খুরছে আর
বলছে: পাগলামি? কিসের পাগলামি? আমি ঠিকই আছে। আমি জানি আমার কবরও কেউ খুরতে আসবে না আর জানাজাও কেউ দিতে আসবেনা। কারন আমি ঘৃণার মেরিন।
আর তাই আমার নিজের কবর আমি নিজেই খুরবো। এরপর কবরে ঢুকেে যাবো….. ঢুকে নিজেকে shoot করে দিবো……
নীড় মেরিনের হাত থেকে কোদাল কেরে নিয়ে ফেলে দিলো।
মেরিন: আপনার সাহস কি করে হয় আমার হাত থেকে ওটা কেরে নেয়ার?
নীড়: আমার অনেক সাহস। চলো বাসায় চলো।
মেরিন: বাসা? কার বাসা?
নীড়: আমাদের বাসায়।
মেরিন: (হাসতে হাসতে) ওটা তো আমার ঠিকানা না…. কোনোটাই তো আমার ঠিকানা না….. আমার তো কোনো ঠিকানা নেই…. তবে আজ থেকে হবে…. এই কবরস্থান । name plate এ লেখা থাকবে মেরিন বন্যা…… মরহুমা মেরিন বন্যা।The Late marin bonna….
নীড় : মেরিন আমি জানি তোমার কষ্ট লাগছে….
মেরিন: কষ্ট কিসের কষ্ট…. আহমার কোনো কষ্ট ছিলোনা। আর না আছে। আজকের পর থেকে থাকবেও না….. সব কষ্ট মাটির নিচে চাপা পরে যাবে…….
নীড় মেরিনের ২ গালে হাত রেখে
বলল: মেরিন…… দাদুভাই হয়তো স্বশরীরে আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আমাদের মনে সবসময় থাকবে। তাকে বাচিয়ে রাখতে হবে।
মেরিন: আপনার নীতি কথা বন্ধ করেন। যান এখান থেকে। আমিও চলে যাবো আমার দাদুভাইয়ের কাছে। আর জ্বালাবোনা আপনাদের। মেরিন নামের আগুন আজকে চিরতরে নিভে যাবে……
নীড়: কিন্তু আমি যে জ্বলতে চাই মেরিন নামের আগুনে। জ্বলে ছাই হতে চাই।
মেরিন: ভালোগিরি দেখাচ্ছেন….. মনুষত্ব দেখাতে এসেছেন…… লাভ নেই। আপনাকে আমি ভালোবাসি। আমি শুধুই আপনার । কিন্তু আপনি আমারনা।
যে আমার ছিলো সে আজকে চলে গেছে।
নীড়: মেরিন বুঝার চেষ্টা করো।
মেরিন: আমাকে আমার কাজ করতে দিন নীড়।
নীড়:না। দিবোনা। তোমাকে বাচতে হবে…..
মেরিন: বাচতে হবে? কারজন্য বাচবো? যার জন্য বেচে ছিলাম সে নেই। চলে গেছে। আমাকে ছেরে। তাই বাচার কারন নেই।
নীড়: বাচার কারন নেই??
মেরিন:না….
নীড়: তবে আমি কে? আমাকে না ভালোবাসো…… আমি কি বাচার কারন নই…..
মেরিন: নাহ…. আপনি আমার বাচার কারন না….. আপনি আমার ভালো থাকার কারন…… আপনি আমার নিঃশ্বাস নেয়ার কারন……
আমার প্রয়োজন…..
আমারে চোখের নেশা….
আমার মনের খোরাক…..
এর আগে আমি দুর্বল হয়ে যাই আপনি চলে যান।
নীড়: কোথাও যাবোনা আমি। তুমি সাথে যাবে আমার।
মেরিন: কেন যাবো? কেন যাবো আমি? আমার দাদুভাই নেই….. যার কোলে পরম নিশ্চিন্তে মাথা রেখে ঘুমাতাম….. দিতে পারবেন সে কোল?? আপনার বুকেতো জোর করে মাথা রেখে ঘুমাতে হয়।
ঘুম না এলে দাদুভাই গল্প বলতো…..মাথায় হাত বুলিয়ে দিতো। পারবেন সেই ভরসার সেই স্নেহের হাত ফিরিয়ে দিতে….. আপনার কাছে আমি আবর্জা॥ আমাকে স্পর্শ করতেও আপনার ঘৃণা করে……
সারা পৃথিবীতে কেবলমাত্র আমার দাদুভাই আমাকে ভালোবাসতো….. পারবেন কখনো ভালোবাসতে?? পারবেন না। আপনি কেন কেউ পারবেনা মেরিনকে কখনো ভালোবাসতে। কারন মেরিন হলো ঘৃণারমেরিন…. ঘৃণার মেরিন মরে গেলে কারো কিছু যাবে আসবেনা…….. কারো গলার কাটা, কারো চোখের কাটা, কারো পথের কাটা দুর হবে…..
যান যান যান চলে যান চলে যান…… যান তো যান। যান যান…
নীড়:…..
মেরিন: যাবেন না তো…… বেশ।
মেরিন নিজের gunটা বের করে নিজের মাথায় ঠেকালো…..
নীড়: মেরিন….
মেরিন:আপনি না গেলে আমি এখনই নিজেকে shoot করে দিবো।
নীড়:এই না…. নামাও gun….
মেরিন: না….. আপনি যান।
নীড়: আচ্ছা বেশ আমি চলে যাবো। কিন্তু এরপরও তো তুমি নিজেকে শেষ করে দিবে….. তবে…
মেরিন: হ্যা দিবোই তো। নীড়: তাহলে আমার
চলে যাওয়ার কি লাভ হবে……
ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে বলতে নীড় খপ করে মেরিনের হাত ধরে ফেলল। gunটা এখন ২জনের হাতের মধ্যে।
মেরিন: ছেরে দিন নীড়…. ছারুন। আমি বাচতে চাইনা নীড়……
.
নীড় কোনো রকমে মেরিনের কাছ থেকে gun টা নিয়ে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড়: অনেক হইসে। আরনা। মরার খুব শখ তাইনা? কখনো কনিকা খানের জীবন বাচানোর জন্য জান দিতে বসছিলা…. কখনো আমাকে ভালোবাসার প্রমান দেয়ার জন্য জান দাও, কখনো দাদুভাইয়ের জন্য…… কেন এতো জান দেয়ার শখ কেন? যেই আমাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসো সেই আমার ১টা কথা কখনো শুনেছো। আমার কোনো কথার মুল্য আছে তোমার কাছে? নেই…. do you know that i m fed up with you….
জান দিবো জান দিবো। জান দেয়া মোবারক হোক। তবে আজকে জান দেয়ার আগে তুমি আমার জান দিতে দেখবা।
বলেই নীড় সেই gun টা তুলে নিজের মাথায় ঠেকালো।
নীড়:suicide মোবারক হোক।
বলেই নীড় just trigger টা press করবে তখনই মেরিন gunটা নিয়ে ছুরে মারলো। এরপর গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। কিছুক্ষন পর নীড় রুমে গিয়ে দেখলো মেরিন মেঝেতে বিছানা করে শুয়ে আছে।
নীড় মনে মনে: পাগলি।
নীড় মেরিনকে কোলে করে খাটে তুলে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
.
২দিনপর……
রাত ১টা……
মেরিন mini terrace এ দারিয়ে আছে। আজও ঝড়ো বাতাস বইছে। বাতাসে মেরিনের চুল উরছে। মেরিন চোখ বন্ধ করে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। তখন কেউ ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো। মেরিন কেপে উঠলো। সেই সাথে অবাক হলো। কারন এটা যে নীড়। আর এই প্রথম নীড় নিজে থেকে ওকে জরিয়ে ধরলো। তবুও মেরিন কোনো react করলোনা। নীড় মেরিনের ঘাড়ে মাথাটা রাখলো। এরপর মেরিনের হাত জরিয়ে আকাশমুখী করে
বলল: চোখ মেলে তাকাও। দেখো এই মেঘলা আকাশেও শুকতারাটার পাশে ১টা ঝলমলে তারা দেখা যাচ্ছে।
মেরিন দেখলো।
নীড়: জানো এটা কে???
মেরিন:……
নীড়: এটা দাদুভাই। এই ঘনকালো মেঘটাও শাহজাহান খানকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। যে কালো মেঘ সকল তারাকে ঢেকে দিয়েছে সে মেঘকে ছাপিয়ে গেছে দাদুভাই। কেন এমনটা হলো জানো??? কারন সে মেরিনের দাদুভাই।
মেরিন:……
নীড়: কি হলো । কথা বলো।
মেরিন:….
নীড়:its too much yaar.. ৩মাস হয়ে গেলো তুমি কথাই বলোনা আমার সাথে। not done…. যেই ২দিন বললা তাও কি বলার মতো…..
মেরিন:…..
নীড়:বুঝেছি….. থাপ্পর মেরেছি বলে আমার বউয়ের রাগ হয়েছে….. এই গালটাতে মেরেছি তাইনা….
দারাও আদর করে দিচ্ছি।
বলেই নীড় মেরিনের গালে kiss করে দিলো।
মেরিন:……
নীড়: কি হলো? বুঝেছি….. থাপ্পরটা খুব জোরে ছিলো…… ok.. তাহলে আরো এত্তোগুলা আদর দিতে হবে।
বলেই নীড় মেরিনের গালে একেরপর এক kiss দিয়েই যাচ্ছে। মেরিন বিরক্ত হয়ে নিজেকে নীড় থেকে ছারিয়ে চলে যেতে নিলেই নীড় টেনে মেরিনকে নিজের সাথে মিশিয়ে দিলো। আবার মেরিনের ঘাড়ে মাথা রাখলো।
.
নীড়: বিরক্ত হলে বুঝি…. oh my god…. তুমিও বুঝি আমার ওপর বিরক্ত হতে পারো??!!!😱😱😱। ভাবা যায়…… নাকি অন্য কিছু……
মেরিন:…….
নীড়: পালাতে চাইছো নিজের থেকে? দেখোনা কি সুন্দর ঝড়ো বাতাস বইছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। যেকোনো সময়ে বৃষ্টি পরবে। কি রোমান্টিক ১টা মুহুর্ত…. এটা কি অভিমান করার সময় ???
মেরিন:……
নীড়:সবাই তো জোছনা বিলাস করেই। কেউ কি অন্ধকার বিলাস করে…..
বৃষ্টিতে ভিজে? চলোনা আজকে আমরা করি……
বলেই নীড় মেরিনের ঘারে kiss করলো। মেরিন কেপে উঠলে। মেরিন নীড়ের হাতটা খামছে ধরলো। নীড় একেরপর এক kiss করেই যাচ্ছে। যা ধীরে ধীরে গভীর হচ্ছে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিও শুরু হলো।
মেরিন বহু কষ্টে নিজেকে ছারিয়ে নিলো। নীড় অবাক হলো। অবাক চোখে মেরিনকে দেখছে। জোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।
মেরিন: আমাকে একদম করুনা দেখাতে আসবেন না। আপনার ঘৃণা স্বাদরে গ্রহন করেছি…… আপনার ঘৃণা আমি মাথায় করে রেখেছি। কিন্তু আপনার করুনা আমার জান নিয়ে নেবে। প্রতি পলকে পলকে আমাকে মেরে ফেলবে……
নীড়:…..
মেরিন:আপনার কাছে যেমনি আমার ভালোবাসার থেকে মৃত্যু যন্ত্রনা শান্তিময় তেমনি আমার কাছেও আপনার করুনার চেয়ে মৃত্যু যন্ত্রনা শান্তিদায়ক……
নীড়:……
মেরিন: আমি আপনার ঘৃণা নিয়ে সারাজীবন বাচতে পারবো…. করুনা নিয়ে ২দন্ডও বাচতে পারবোনা।
নীড়: …….
মেরিন: রুমে যান। বৃষ্টি পরছে। বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার ঠান্ডা লেগে যাবে। জ্বর আসবে।
নীড় উল্টা পায়ে ধীরে ধীরে রুমে চলে গেলো। মেরিন railing ধরে কাদতে লাগলো।
.
৫মিনিটপর…….
নীড় ঝড়ের বেগে মেরিনের কাছে গিয়ে মেরিনকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। মেরিন চাইলেও নীড়ের ভালোবাসার এই অদৃশ্য ডাক উপেক্ষা করতে পারলো না। কারন মেরিন যে ভালোবাসার কাঙ্গাল। মেরিন ১টা নতুন জীবন পেলো। এতোদিন মেরিন নীড়ের ছিলো আজকে মেরিনও নীড়ের হয়ে গেলো। নীড়-মেরিন এক হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে নিজের করে নিলো।
.
.
চলবে….
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ০৯
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
সকালে…..
মেরিন নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে। পরম শান্তিতে। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মেরিনের ঘুম ভাঙলো।
নীড়: good morning honey ……
মেরিন মুচকি হেসে
বলল: morning …।
নীড় : আমার good morning kiss??
মেরিন: নিরার কাছে যান….
নীড় মেরিনের চুল হালকা করে ধরে মাথাটা তুলে
বলল: ভেবে বলছো?
মেরিন:হামম।
নীড়: সত্যি সত্যি যাবো কিন্তু..
মেরিন:যান।
নীড়: হ্যা যাবোই তো..
নীড় মেরিনকে নামিয়ে উঠতে গেলে মেরিন নীড়কে টান দিয়ে ফেলে নীড় ওপর উঠে নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
.
একটুপর…..
নীড়: ঠিক না ঠিক না……
মেরিন: আমি জানি……
নীড়: huh….
মেরিন: ১টা ছেলেমানুষ এতো dramabaaz হতে পারে আপনাকে না দেখলে জানতামই না।
নীড়: দেখতে হবেনা জামাইটা কার???
ভালোভাবেই চলতে লাগলো ওদের জীবন। নীড় মুখে ভালোবাসি না বললেও নীড়ের কাজে মেরিন ঠিকই ভালোবাসা খুজে পায়। মেরিনও normal হতে শুরু করেছে। রাগ টা নিয়ন্ত্রনে আসছে। সবটাই হয়েছে নীড়ের ভালোবাসা আর treatment এর জন্য।
.
১মাসপর……
রাত ৩টা।
মেরিন নীড়ের সাদা রঙের শার্টটা পরে বারান্দায় গিয়ে দারালো। আকাশপানে মুখ করে চোখ বন্ধ করে বাতাসটাকে feel করছে। নীড় ঘুমাচ্ছে।
.
কিছুক্ষনপর……
নীড় গিয়ে মেরিনকে পেছন থেকে ১হাত দিয়ে জরিয়ে ধরলো। অন্য হাতে কফির মগ।
নীড়: কফি???
মেরিন: ঘুমাননি…..
নীড়: কি মনে হয়???
মেরিন মিষ্টি ১টা হাসি দিলো।
২জনে মিলে কফিটা শেষ করলো। নীড় rocking chare এ মেরিনকে কোলে নিয়ে বসে আছে। মেরিন নীড়ের বুকে আকিবুকি করছে।
নীড়: কিছু কি বলার ছিলো??
মেরিন: হামম।
নীড়: বলো।
মেরিন: আমাকে ভালোবাসি কবে বলবেন??
নীড়: ভালোবাসলে তো বলবো…
মেরিন: মানে?
নীড়:তোমাকে কেন ভালোবাসি বলবে বলো তো? তোমাকে কি আমি ভালোবাসি নাকি??? আমি তো নি…..রা কে ভালোবাসি…
মেরিন নীড়ের বুকে জোরে ১টা কামড় বসিয়ে দিলো।
নীড়: oh মা। vampire বউ। এতো কামরাও কেন?
মেরিন: আমার জামাই আমি কামড় মারছি তোর বাপের কিরে???
নীড়:🙊
মেরিন: আর কিছুদিনপর তো আমাদের anniversary …. কি gift দিবেন???
নীড়: কিসের anniversary ?? তুমি কি ভুলে গেছো যে আমি এই বিয়েটা মানিনা।
মেরিন:তোর বাপ মানে। শালা।
নীড়: আচ্ছা শোনো বিয়ের দিন i mean anniversary এর দিন আমি তোমাকে gift দিতে পারি তবে তার আগে তোমাকে ১টা কথা দিতে হবে।
মেরিন: আমার কোনো gift চাইনা। আমার শুধু আপনাকেই চাই……
নীড়: ওহ তবে আমাকে আমার পছন্দের কোনো কিছু দিবেনা….
মেরিন: divorce ছারা যা চাইবেন সব দিবো।
নীড়: কথা দিচ্ছো যে সেদিন যা চাইবো তাই দিবে??
মেরিন: কথা দিলাম সেদিন যা চাইবেন তাই দিবো।
নীড়: আমাকে ছুয়ে কথা দাও।
মেরিন: এই আপনাকে ছুয়ে কথা দিলাম।
নীড়: thank u……
মনে মনে: তুমি কল্পনাও করতে পারবেনা যে সেদিন তোমাকে কি gift দিবো। হামম আমি আমাদের ওই বিয়েটা মানিনা। তাই তো সেদিন আবার তোমাকে বিয়ে করবো। ৭দিন ধরে জমকালো অনুষ্ঠান হবে। ১বছর আগে সারা দেশ তোমার ভালোবাসা দেখেছিলো…… এবার সারা দেশ আমার ভালোবাসা দেখবে। আমিও বলবো যে তোমাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। । খুব বেশি ভালোবাসি।
আর সেদিন আমি তোমার কাছে চাইবো যে… তুমি যেন সকল অভিমান ভুলে তোমার মা-বাবাকে মেনে নাও। আমি জানি তুমি ওদের অনেক ভালোবাসো। প্রকাশ করোনা।
সেদিন আরো ১টা উপহার তুমি পাবে। তোমার জীবন থেকে সব অন্ধকার মিটিয়ে দেবো। কেন জানিনা আমার মনে হচ্ছে তোমার সাথে যা যা হয়েছে তার পেছনে নিরার হাত আছে……. ভাগ্য কি অদ্ভদ। যাকে ভালোবেসেছিলাম সেই ভুল। আর যাকে ভুল ভেবেছিলাম সেই ফুল হলো।
তুমি ঠিকই বলেছো যে আমি নিরাকে কখনোই ভালোবাসিনি…..
কারন নিরার বিরহ কখনো আমার চোখে অশ্রু আনেনি। কিন্তু তোমার জন্য আমি কেদেছি। তুমি তো সেই মায়া যে মায়াতে সবাই বাধা পরে যায়। তোমার সকল কষ্ট আমি দূর করবো। কথা দিলাম।
.
আরো দেড়মাসপর…….
নীড় ৪-৫দিন ঘরে মেরিনকে কিছু বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু বলতে পারছেনা। কারন মেরিন কেমন যেন খিটখিটে হয়ে গেছে। কারো কোনো কথা শুনতে মন চায়না। কিছু খেতে পারেনা। সবকিছুর গন্ধ লাগে। তার সাথে মাথা ঘুরানি তো আছেই। অকারনেই কান্না করে। রাত ৩টা ৪টা বাজে নীড়কে ঘুম থেকে টেনে তুলে বলে এটা খাবো ওটা খাবো। বেচারা নীড় ঘুমের বলিদান দিয়ে সেগুলো নিয়ে আসে। তখন মেরিন excited হয়ে ১ম বার মুখে তো দেয়। কিন্তু পর মুহুর্তেই মুখ থেকে ফেলে দেয়। বলে খাবোনা। সেই সাথে নীড় জোর করে ধমক দিয়ে খাওয়াতে গেলে কামড়, কিল, ঘুষি এমনকি লাথিও খেতে হয়। সব মিলিয়ে ১৫দিন ধরে নীড়ের অবস্থা কেরোসিন। তাই মেরিনের এমন অবস্থাতে ওকে আর সেই জরুরী কথাটা কথাটা বলা হয়ে ওঠেনি।
.
মেরিন ওর কি হয়েছে জানার জন্য কিছু test করায়। আর যখন test reportটা হাতে পায় তখন দেখে যে ও pregnant …. খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। ওর মনে হয় যে ও স্বর্গ সুখ পেয়ে গেছে। পাগলের মতো সারা হাসপাতালে নাচতে শুরু করে। কি রেখে কি করবে দিশা পায়না। নীড়কে ফোন করে। নীড় ধরলোনা। মেরিন বারবার call দিলো। নীড় বারবার কেটে দিলো। মেরিন তো রেগে আগুন। আবার ফোন করলো অবশেষে নীড় ধরলো।
মেরিন: hello নীড়……
নীড়: সবসময় ফোন করে জালাও কেন বলো তো? কখনো তো তোমার ফোন কাটিনা। যখন কেটে দিচ্ছি তখন কোনো না কোনো কারন তো আছে….. why don’t you understand .. surgery করছি পরে ফোন করবা।
বলেই নীড় ফোনটা কেটে দিলো।
মেরিন: শালা… আমাকে রাগ দেখায়…. একে তো…. উফফ মেরিন…. নীড় surgery করছে। রাগ তো করবেই। আমিও না। ১টা কাজ করি ১টা surprise plan করি। যার মাধ্যমে আমি নীড়কে বলবো যে we r pregnant . খুব তো সেদিন বলেছিলো যে আমি নাকি কখনো উনার বাচ্চার মা হতে পারবোনা। এখন চৌধুরী বাবু কি বলবেন???
.
মেরিন গাড়ি দিয়ে বাসায় যাচ্ছে। তখন দেখলো যে ১টা পার্কের বাইরে নীড়ের গাড়ি দার করানো।
মেরিন: আরে নীড়ের গাড়ি? উনি যে বলল surgery করছে!! এমা ছিঃ ছিঃ আমি উনার ওপর সন্দেহ করছি? হয়তো অন্য কোনো জরুরী কাজ। তাই। যাই হোক উনার গাড়ি দেখে তো wait করা আর possible না। এখনই গিয়ে বলে দেই। কিন্তু যদি কোনো দরকারী কাজ হয়??? হোক। আমার আর নির্বনের থেকে তো অন্য কোনো কিছুই বেশি দরকারী নেই।
মেরিন গাড়ি park করে ভেতরে গেলো। আর গিয়ে যা দেখলো তা দেখে মেরিনের পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো। কারন নীড়-নিরা ২জন ২জনকে জরিয়ে ধরে আছে।
নীড়: love u … love u a lot জান……
নিরা:& i love u too জান।
নিরা সরে দারালো।
নিরা: আচ্ছা যদি মেরিন জানতে পারে যে তুমি OT তে নয় আমার সাথে আছো…. তখন কি হবে???
নীড়: come on…. গত ৭দিন ধরেই তো তোমার সাথে meet করছি। ওই সাইকো কি কিছু বুঝতে পেরেছে?? পারেনি। আর পারবেও না। কারন আমি ওর চোখে ভালোবাসার কালো কাপড়ে বেধে দিয়েছি। জান।
নিরা: সেদিন তোমার ব্যাবহারে তো আমি মনে করেছিলাম যে তুমি সত্যি সত্যি ওকে ভালোবেসে ফেলেছো।
নীড়: ওই মেয়েকে ভালোবাসবো আমি??? দাদুভাইয়ের শোকে আহত the মেরিন বন্যা। তাকে support দেয়ার জন্য ১টা ভরসার হাতের দরকার ছিলো। তাই তার কাধে সেই ভরসার হাতটা রাখলাম। ১জন neuroligist হিসেবে ওর brain নিয়ে খেলা আমার কাছে কোনো ব্যাপারই না। মেরিন এখন অন্ধের মতো আমাকে বিশ্বাস করে।
নিরা: এখন ওর তো ১টা ব্যাবস্থা করতে হবে। তোমারই দোষ। ও suicide করতে নিয়েছিলো সেদিন ওকে বাচালে কেন?
নীড়:জান….. ওকে এভাবে কিভাবে মেরে ফেলি তোমাকে খান empire এর মালকিন না বানিয়ে।
নিরা: তু্মি আমাকে এতো ভালোবাসো???😍।
নীড়: any doubt ??
নিরা: না জান……
নীড়: ১বার সবটা তোমার নামে করিয়ে নিলেই মেরিনের কাম তামাম।
শেষ করে দিবো ঘৃণারমেরিন কে…. চিরতরে।
নিরা: কিন্তু কিভাবে?
নীড়: সেটা তখনই দেখতে পাবে…
নিরা: বললে কি হয়?
নীড়: তোমার surprised হওয়া cute face টা দেখবো কি করে???
নিরা: ওকে মারবে কিভাবে ওর ওই জন না নামের লেজটা আছে যে।
নীড়: আর জন। মেরিন নিজে জানলেও কিচ্ছু করতে পারবেনা। আমি এমন plan বানিয়েছি। আমার ভালোবাসার জীবনে আধার নামিয়ে আনার শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে। আমাদের বিবাহ বার্ষিকীর দিনই সব হিসাব-নিকাশ হয়ে যাবে। যে যেখানে থাকার সে সেখানেই থাকবে। আমার ভালোবাসার জীবনটাকে আমি আলোয় ভরিয়ে দিবো।
নিরা নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নিরা: তুমি আমাকে এতোটা ভালোবাসো জান???
নীড়: হামম। জান।
এর থেকে বেশি দেখা আর মেরিনের পক্ষে সম্ভব না। কাদতে কাদতে চলে গেলো।
নীড়তো মেরিনকে দেখলো না।
নীড় মনে মনে: কালনাগিনী….. তোর জন্য আজ আমার ভালোবাসা…. আমার মেরিনের এই অবস্থা। তোর জন্য আমার মেরিন অন্ধকারে ডুবে গেছে। ভালোবাসার মেরিনকে তুই ঘৃণার মেরিন বানিয়ে দিয়েছিস। তোর আর তোর বাবার তো আমি এমন হাল করবো যে ২য় বার আর কেউ এমন ১টা জঘন্য কাজ করতে হাজারবার ভাববে। তোরা বাপ-বেটি কেবল খুনই করিসনি সেই সাথে ১টা ফুলের মতো জীবনকে তোরা শেষ করে দিয়েছিস। ১টা সন্তানকে তার মা-বাবার থেকে দুরে করে দিয়েছিস। সারা দুনিয়া দেখবে তোদের কি অবস্থা হয়। আর এটাই হবে আমার বউয়ের জন্য সেরা anniversary & wedding gift… সেদিন সারা দুনিয়ার সামনে আমি আমার মেরিনকে আবার ভালোবাসা মেরিন বানাবো। সেই সাথে আবার মেরিনকে বিয়ে করবো। আর তুই….. তুই না বাচতে পারবি না মরতে….. মরার ভিক্ষা চাইবি কিন্তু মৃত্যু তুই পাবিনা…….
.
[হ্যা নীড় নিরার সত্য এবং মেরিনের অতীত জানতে পেরেছে। টানা ২ মাস অনুধাবন করে নীড় সবটা জানতে পেরেছে। আর জেনে মেরিনকে আরো ভালোবেসেছে। কিন্তু তার থেকে হাজারগুন বেশি নিরাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। যেদিন নীড় সত্যিটা জানতে পারে সেদিনই চেয়েছিলো নিরা আর ওর বাবাকে জানে মেরে দিতে। পরে ভাবলো কেবল জানে মেরে দিলে ওদের শাস্তি কম হবে ভেবে নীড় plan বানায় যে সব নিরার সাথে অভিনয় করে সব নিরার মুখ দিয়ে স্বীকার করাবে। এরপর ওর এমন হাল করবে যে …… মেরিনের প্রতিটা কষ্টের হিসাব নেবে ওদের কাছ থেকে।
কিন্তু নীড় জানেনা যে আরো ১বার ভাগ্য মেরিনকে নিয়ে পরিহাস করবে। ]
.
রাতে…..
রাতে নীড় বাড়িতে পৌছালো। আজকে ঠিক করেছে যে ও মেরিনকে গিয়ে সব সত্যটা বলে দিবো। যে ও নিরার সত্যটা জেনে গেছে। গতকিছুদিন ধরেই বলতে চেষ্টা করেছে কিন্তু মেরিনের মুড সুইং এর জন্য বলতে চেষ্টা করেও বলতে পারেনি। কিন্তু আজকে নীড় বলবেই। নীড় রুমে গিয়ে অবাক হয়ে গেলো। কারন সারা ঘর এমনভাবে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে যে মনে হচ্ছে এটা ফুলের বাগান। খাটটাকেও খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। খাটের মাঝখানটাতে লাল টুকটুকে শাড়ি পরে ঘোমটা টেনে মেরিন বসে আছে। নীড় মুচকি হাসি দিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে মেরিনের পাশে গিয়ে বসলো। মেরিনের ঘোমটা টা তুলে মুগ্ধ হয়ে গেলো। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে মেরিনকে। নীড় মেরিনের কপালে চুমু একে দিয়ে মাতাল কন্ঠে
বলল: আজকে এভাবে ঘায়েল করার কারন??? এই কদিন কামড়,কিল, ঘুষি , লাথি দেয়ার পর কি আজ এভাবে মারবে……
মেরিন আজও জবাবে কেবল ১টা হাসি দিলো। যে হাসিটা ও আগে দিতো। ওদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক হওয়ার আগে।
নীড়:আজ প্রায় ৬মাস পর তোমার এই রহস্যময় হাসি দেখলাম। কারনটা জানতে পারি এই হাসির??
মেরিন: সব হাসির কারন এবং সব ভালোবাসার মানে খুজতে নেই…..
নীড় মেরিনের নাকে নাকটা ঘষে
বলল: পাগলি…. এর আগে আমি তোমাতে হারিয়ে যাই ১টা অনেক জরুরী কথা তোমাকে জানাতে চাই….. বলতে চাই।
মেরিন নীড়ের ঠোটের ওপর আঙ্গুল রেখে
বলল: shush….. আজকে আমি কিছু জানতে চাইনা….. কিছু শুনতে চাইনা….. আজকে কেবল আপনাকে ভালোবাসতে চাই….. কেবল আপনার ভালোবাসায় হারাতে চাই…ভালোবাসবেন আমায়…
.
সকালে..
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। কিন্তু আজকে বুকের ওপর মেরিনকে পেলোনা। অবাক হলো। নীড় উঠে বসলো। সাইডে ১টা চিঠি পেলো। তাতে লেখা…
” fresh হয়ে ঠিক ১১টায় নিচে আসুন। না ১মিনিট আগে না ১মিনিট পরে। “
হাতের লেখাটা যে মেরিনের তা বুঝতে একটুও দেরি হলোনা নীড়ের।
নীড়: আরে আমার বউটারে…… কি জানি আজকে আবার কোন পাগলামি করবে… জানটা আমার……..
নীড় মেরিনের কথা মতোই ঠিক ১১টায় নিচে গেলো। গিয়ে দেখলো যে সেখানে কবির-কনিকা, নিহাল-নীলিমা, নিরা আর জন দারিয়ে আছে।
নীড়: কি ব্যাপার সবাই ১সাথে জরো হয়ে? সবাই তো আছে কিন্তু মেরিন কোথায়?
নিহাল: জানিনা রে। খালি কালরাতে বলল ১১টা বাজে যেন এখানে থাকি।
কবির: হ্যা… আমাদেরও কাল রাতে বলেছে ১১টায় এখানে থাকার জন্য। আর তারথেকেও বড় কথা
১৫টা বছরপর মেয়ের মুখে বাবা ডাকটা শুনে মনে হয়েছে স্বর্গ পেয়েছি…..
জন: হয়েছে আপনাদের ঘাটিয়া মনের ভাব প্রকাশ করা?
নীড়: কি হলো জন?? তোমার কথায় আজ যুদ্ধের আভাস পাচ্ছি। কাহিনি কি বলো তো??
জন: আমি আল্লাহর বান্দা , রাসূলের উম্মত। আর মেরিন বন্যার বডিগার্ড। ম্যামের order ছারা আমি অন্য কারো order follow করিনা। করতে বাধ্যও নই। এমনকি আপনারও না। সে যাই হোক। আমার দায়িত্বটা আমি শেষ করি। mr. & mrs. khan এটা আপনাদের চিঠি আপনারাই কেবল এটা পড়ুন…. mr. & mrs. chowdhuri…. এটা আপনাদের চিঠি….. স্যার এটা আপনার চিঠি… mrs. নিরা এটা আপনার চিঠি। সবাই নিজেদের চিঠিটা পড়ে ফেলুন।
.
কবির-কনিকার চিঠি……
” প্রিয় আম্মু-বাবা,
জানি আমি তোমাদের প্রিয় না। কিন্তু তোমার আমার খুব প্রিয়। আমি জানি আমি তোমাদের মেয়ে হওয়ার যোগ্য নই। কখনোই তোমাদের মেয়ে হতে পারিনি আর কখনো পারবোও না। কিন্তু তোমরা আমার আম্মু-বাবা ছিলে আছো আর সারাজীবন থাকবে। এই চিঠিটার পাশেই ১টা will আছে। property paper… আমি খান empire এর একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী হয়ে এই খান empire ওই নিরার নামে করতে পারবোনা। কারন ওই নিরা….. থাক কারন টা না হয় তোমরা নাই জানলে। মেনে নিতে পারবেনা। যাই হোক। পুরো খান empire আমি তোমাদের নামে করে দিয়েছি। তোমরা এর যা খুশি করতে পারো। ভালো থেকো।
ইতি তোমাদের
খুনি মেরিন…… “
.
নিহাল-নীলিমার চিঠি……..
“প্রিয় মামনি-বাবা,
তোমাদের জন্যই আমি নতুন করে মা-বাবা ফিরে পেয়েছিলাম। বাবা হয়তো কখনো মেয়ে বলে ডাকোনি….. কিন্তু তোমার ব্যাবহারে আমি বাবার স্নেহ পেয়েছি। তুমি যেদিন আমার মাথায় হাত রেখেছিলে সেটা আমার জন্য খুব special ছিলো। আমি জানি তুমি আর্শীবাদও করে ছিলে। আর যেদিন আমার হাতের মাংস
পিঠা খেতে চেয়েছিলে সেদিন সত্যিকারের অর্থে আমি বাবা পেয়েছিলাম। আর মামনি… তোমার কথা কি বলবো? তুমি আমাকে ছেলের বউ না মেয়ে বানিয়ে রেখেছিলে। ১৫টা বছর মায়ের যে কোলের জন্য ছটফট করেছি সে কোল তুমি আমাকে দিয়েছো। ৠণি করে দিলে। এখন নিরা নীড়ের বউ হবে। নীড় খুশি থাকবে। এর থেকে আনন্দের আমার আর কিছু নেই। কিন্তু যে সত্যটা তুমি আমি জানি সেটার জন্য বলছি নীড়কে save রাখার দায়িত্বটা তোমার হাতে দিয়ে গেলাম। ভালো থেকো তোমরা।
ইতি তোমাদের
বউমা।”
নিরার চিঠি…..
“প্রিয় খুনি,
কি রে অবাক হলি? কি ভেবেছিস আমি কোনোদিন কিছু জানতে পারবোনা? তুই আমার মামাকে মেরেছিস সেটা কেউ কোনোদিন জানবে না? তুই এখনও কেন বেচে আছিস জানিস??? আমার আম্মু-বাবার জন্য। কারন তোর গায়ে ১টা ফুলের টোকাও ওরা মেনে নিতে পারেনা। তোকে জানে মেরে দিলে তো তাদেরও পাওয়া যাবেনা। তুই এবার নীড়কে পেয়ে যাবি….. কিন্তু যদি কখনো কোনোদিন নীড়ের দিকে তোর খুনী হাত বারাস তবে মনে রাখিস ওই মুহুর্তে তুই নিজের কাল দেখতে পারবি।
ইতি তোর
কাল মেরিন।”
নীড়ের চিঠি…….
“প্রিয় নীড়,
যেদিন প্রথম আপনি আমার কাছে এসেছিলেন সেদিন আমি আপনাকে ১টা কথা বলেছিলাম যে আপনার ঘৃণা মেনে নিতে পারবো কিন্তু করুনা না। কিন্তু আপনিতো আমাকে ছলনা করলেন। যাই হোক। আপনি চেয়েছিলেন না আপনার নিরা যেন খান empire এর মালকিন হয়। হয়ে যাবে। আমি mr. & mrs. khan এর নামে সব সম্পত্তি transfer করে দিয়েছি। এটাই তো ছিলো আমাকে বাচিয়ে রাখার কারন….. আসলেই আপনি খুবই ভালো neurologist…… আমি তো আপনার ভালোবাসা কখনোই চাইনি। কারন আপনাকে ভালোবাসার আগে আমি এই শর্ত দিয়ে নেইনি যে আপনিও আমাকে ভালোবাসবেন……. তবে কেন এই ছলনা টা করলেন? যদি স্বামীর অধিকার নিয়ে divorce এমনকি নিরাকে ২য় বিয়ে করতেও চাইতেন তবুও দিয়ে দিতাম। কিন্তু আপনি তো ছলনায় বিশ্বাসী। তবুও আপনার ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারন এতে আপনার দোষ নেই। আমার ভাগ্যে হয়তো আমার আল্লাহ সুখই কিছু লিখেননি। mr. & mrs. khan কে একটু দেখে রাখবেন please ….. আমার মা-বাবা হিসেবে নাই দেখলেন অন্তত নিরার খালামনি-খালু হিসেবে দেখে রাখবেন। এই চিঠিটার সাথে divorce paper আছে। নীড়-মেরিনের। আমি sign করে দিয়ে গেলাম। এটা আপনার জন্য উপহার । আমার তরফ থেকে। কারন ছলনার ছলেই আপনি আমাকে যে মিথ্যা ভালোবাসার মুহুর্ত দিয়েছেন সে মুহুর্তগুলোকে সত্যি করে সাজিয়ে রাখবো। যা আমার বাকীটা জীবন চালানোর জন্য যথেষ্ট। আপনার ভালোবাসা হয়তো সত্যি ছিলোনা কিন্তু আপনার হাতের প্রতিটা ছোয়া তো সত্য ছিলো। সেটুকুই আমার জন্য অনেক। আপনার দেয়া ভালোবাসার চিহ্ন হবে আমার বেচে থাকার অবলম্বন। আপনার জীবন থেকে সকল ঘৃণার অবসান ঘটিয়ে চিরতরে চলে গেলো ঘৃণার মেরিন। সে কখনো আপনার সুখের পথের বাধা হবেনা। না সে মরবেনা কারন আপনি তাকে নতুন করে বাচার কারন দিয়েছেন। তারজন্য অসীম ধন্যবাদ। সুখে থাকবেন। & for the last time…
i love u…
ইতি আপনার
ঘৃণারমেরিন।
চিঠিটা পড়ে নিরা ছারা সবার চোখে পানি। নীড় ধাপ করে বসে পরলো।
জন: আশা করি এখন সবাই শান্তি। কারন সবার ঘৃণার অবসান ঘটিয়ে সকলের ঘৃণারমেরিন আজকে চলে গেলো। কেউ কখনো আর মেরিন বন্যাকে খুজে পাবেননা। সে কোথাও নেই। ঘৃণারমেরিনের কাহিনি এই পর্যন্তই ছিলো। জানিনা সে কোথায় আছে? কোথায় যাবে? সকলকে শান্তি দিয়ে নিজেকে শাস্তি দিয়ে চলে গেছে সে। তবে এতোদিন যে জন অশান্তির মেরিনের সাথে থেকেছে সে সবাইকে কি করে এতোটা শান্তি দিতে পারে। মেরিন এখন আমার boss না। তাই তার কথা শুনতে আমি বাধ্য নই। আর তাই সকলের চিঠিটা পড়েছি। আর সব সত্যটা সবাইকে জানাতে এসেছি। যেটার নিষেধাজ্ঞা ছিলো আমার ওপর। নিরা তুই তোর চিঠিটা পড় তো ১বার জোরে জোরে।
নিরা: জন তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে তুই করে বলার?
জন নিজের gunটা বের করে
বলল: সাহসের দেখেছিস কি? তুই চিঠিটা পড়বি এবং সেই সাথে সব সত্য বলবি …. এখনই। না হলে যে কটা বুলেট আছে সবগুলো ঠিক তোর heart বরাবর লাগাবো।
নিরা ভয়ের চোটে সব ভরভর করে বলে দিলো। সব শুনে সবাই স্তব্ধ।
জন: আমার আর কিছুই বলার নেই। নীলিমা ম্যাম…. এই নিন recorder ……. mr. khan…. এই নিন gun…. এটা আপনাদের টাকার ছিলো।
জন চলে গেলো।
নিরা মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে। কনিকা কবিরের হাত থেকে gunটা নিয়ে দুমদুম করে নিরার দিকে গুলি করতে লাগলো। কিন্তু কনিকা shoot করতে না পারায় আর ১টা shocked এ থাকার কারনে এবং সেই সাথে নিরা সরে যাওয়ায় নিরার কেবল হাতে আর shoulder এ গুলি লাগলো। নিহাল নিরাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলো। নীড় এখনও একইভাবে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। নীলিমা নীড়ের কাধে হাত রাখলো। নীড় বলে ধাক্কা দিলো। আর সাথে সাথে নীড় কান্নায় ভেঙে পরলো।
নীড়: ও মামনি… ও মামনি..আমার মেরিন চলে গেলো কেন?? ওকে বলোনা ফিরে আসতে। ও তোমার কথা ঠিকই শুনবে। বলোনা মামনি। ও মামনি ওকে বলোনা আমার ভালোবাসাও ছলনা ছিলোনা। ওকে যে আমি সত্যি সত্যি ভালোবেসেছিলাম। আমি তো ওর সকল দুঃখ দুর করার জন্য, কেবল নিরাকে ধংব্স করার জন্য ওসব করছিলাম। ততুমি তো জজানো মামনি। ওকে বলোনা মামনি ও আমার ঘৃণারমেরিন না.ভালোবাসার মেরিন.. খুব ভালোবাসি ওকে। খুব। ওকে ছারা বাচতে পারবোনা..
সেদিন নীড়ের আর্তনাদ সকলের দুঃখকে ছাপিয়ে যায়। কিন্তু তার সেই হৃদয়ভাঙা চিৎকার শোনার জন্য তার ভালোবাসার মেরিন ছিলোনা। কারন সে চলে গেছে অজানার পথে। হায়রে অভাগী যদি সবটা জানতে পারতো। তাহলে হয়তো গল্পটা আজকে এখানেই শেষ হয়ে যেতো। কিন্তু কিছু করার নেই। সব মা ই চায় তার সন্তানের সুরক্ষা। তাই মেরিনও চেয়েছিলো তার অনাগত সন্তানের সুস্থতা, সুরক্ষা। যদি anniversary এর দিন নীড় মেরিনের জীবন টা চায় মেরিনযে দিতে বাধ্য। কারন সে যে নীড়কে ছুয়ে কথা দিয়েছে। সেদিন নীড় যা চাইবে সেটাই দিবে। অন্য সময় হলে হাসতে হাসতে জীবন দিতে পারতো। কিন্তু এখন যে ওর ভেতর আরো ১টা জীবন আছে। ও নিজেকে শেষ করতে পারবে না। কিন্তু অভাগী তো জানেনা যে নীড়ের ভালোবাসা অভিনয় ছিলোনা। ওর উদ্দেশ্য যে অন্যকিছু ছিলো। ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন। তাই মেরিন ফুলকে ভুল ভেবে নিজের সুখের জীবন ভাসিয়ে দিলো। আসলে মেয়েটা হারাতে হারাতে এতোটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে ওর কাছে আর হারানোর শক্তি নেই। নিজের সন্তানকে ও হারাতে পারবেনা। তাই সন্তানকে নিয়ে নিজেই সকলের থেকে হারিয়ে গেল।
…..
……..
[চলবে……]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১০
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
৮ বছর পর……
কোলকাতায়…
south point school ….
মনি:নির্বন ….. নির্বন….. এই দীপু নির্বনকে দেখেছো??
দিপু: না আপু।
মনি:গেলো কোথায় ছেলেটা। নির্বন…….
.
ওদিকে…….
রনি, মেঘ, চন্দন নামের ৩টা ছেলে রোহান নামের ১টা ছেলেকে ধরে রেখেছে। আর নির্বন ওকে পিটাচ্ছে।
নির্বন:আর কোনোদিন এমন কথা বলবি তুই?? এমন কাজ করবি? হ্যা… বল?
রোহান:দেখ নির্বন আমি মিসকে বলে দিবো যে তুই আমাকে মেরেছিস…..
নির্বন: মিসকে বলে দিবি?? তো কি বলবি? যে আমি তোকে মেরেছি?? কেউ বিশ্বাস করবে? কেউ করবেনা। কারন আমি best student …. best well mannered student … award ও পাই। আর সেটা সবাই জানে। কিন্তু আমি যদি বলি যে তুই কি করেছিস তবে না তোকে এই school থেকেই বের করে দিবে। বাসায় গিয়ে বিচার দিবি তাও আমার কিছু হবেনা। তোর মা-বাবা তোকেই বকবে। তোর কথা শুনবেই না। আর তাছারাও এই স্কুলের principal কে জানিস?? আমার মামিমনি….. আমার মামা কে জানিস? শহরের সেরা ধনীদের মধ্যে ১জন। কেউ আমার কিচ্ছু করতে পারবেনা। বুঝেছিস?
রিদি: এই নির্বন মনি আপু এদিকেই আসছে।
নির্বন: oh fish….. guys guys guys…. change all of this …. আর রোহানের বাচ্চা আপুর সামনে আমার হ্যা তে হ্যা আর না তে না বলবি না হলে এমন মার মারবো যে…..
.
মনি: নির্বন…
বলেই …. মনি দরজা খুলল। খুলে দেখে যে নির্বন, মেঘ, রনি, রোহাদ, চন্দন,রিদি, মিলি, দিনা বসে বসে পরছে। group study করছে। মনির কেন যেন খটকা লাগলো।
তবুও মনি হাসির রেখা টেনে
বলল: একি তোমরা এখানে??
নির্বন: আরে আপু তুমি?? আসো ভেতরে আসো।
মনি: পড়াশুনা হচ্ছে বুঝি???
রিদি: হামম আপু।
মনি: তোমরা আসলেই খুব ভালো। তাই জন্য তো টিফিন time এও পড়ছো।
নির্বন: পড়তে হবেই আপু…. সামনে half yearly exam না।।।
মনি: good… সবাই কি টিফিন করেছো??
সবাই:…..
মনি: তারমানে করোনি। ১কাজ করো সবাই টিফিন করে নাও।
সবাই: ok… আপু।
সবাই বেরিয়ে গেলো।
.
নির্বন: চলো আপু আমরাও টিফিন করে নেই।
মনি চুপচাপ নির্বনের সামনে গিয়ে নির্বনের কানটা মলে দিলো।
নির্বন: আরে আরে আপু…. কি করছো কি?? লাগছে তো আমার।
মনি: লাগার জন্যেই তো ধরেছি। আবার মারামারি করছিলি কেন???
নির্বন: মারামারি ?? আমি?? কি যে বলো?? কার সাথে মারামারি করবো??? they r all my কলিজা।
মনি: কলিজা না….. রোহান তোর কলিজা কবে থেকে হলো বল দেখি??? ওকে মারার জন্যেই তুই এখানে এনেছিলি। তাইনা?
নির্বন: কি যে বলো আপু। আমি কি কখনো কাউকে মারতে পারি?? আমিতো sweet boy… আমিতো মারামারির “ম” ও জানিনা।
মনি: ওরে আমার sweet boy রে….. আমার সামনে একদম drama করবিনা। আমি মা-বাবা, টিচার & ফুপ্পি নই যে তোর এই cute face এর আড়ালে রাগী নির্বন কে চিনবোনা। তোকে আমি হারে হারে চিনি। এখন বল ওকে মারছিলি কেন??
নির্বন: তো কি করবো? ও রিদিকে ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়ে ফেলেদিয়েছিলো কেন??? তারপর sorry বলতে বলেছি সেটাতো বলেইনি উল্টা আর ফালতু কথা বলতে লাগলো। এমনকি মামনিকে নিয়েও পচা কথা বলতে লাগলো। এতো সাহস আমার মামনিকে পচা কথা বলা, আর আমি রাগ control করতে পারলাম না। লাগালাম।
মনি: এতো রাগ কেন তোর?? তুই কি সত্যি আড়াল ফুপ্পির ছেলে? ফুপ্পি কতো ভালো, কতো polite, কতো sweet…. আর তুই? বিশ্ব বদমাশ।
নির্বন: কে যে বলো আপু? আমি তো সব থেকে ভালো বাবু। দেখোনা টিচাররা সবাই বলে।
মনি: ওরে আমার ভালো বাবুরে…… কেউ তো আর তোমাকে চেনেনা। একি.. তোর হাতে রক্ত কেন??
নির্বন: কিছুনা। just একটুখানি।
মনি: একটুখানি? তোর কাছে হতে পারে একটুখানি। ফুপ্পির কাছেনা। ফুপ্পির heart attack করানোর জন্য এটাই যথেষ্ট। দেখি বস তো। bandage করে দিচ্ছি। নিশ্চয়ই মারামারি করতে গিয়ে পেয়েছিস ব্যাথাটা। কেন যে মারামারি করতে যাস।
নির্বন: আমি কি খামোখা কাউকে মারি নাকি? যদি কেউ ভুল করে তখন তাকে শাস্তি দেই।
মনি: চুপ থাক। যেদিন ফুপ্পি এগুলো জানবে তখন কি হবে? ফুপ্পি কতো কষ্ট পাবে??
নির্বন: মোটেও না। আমার মামনি কে কখনো আমি কষ্ট পেতে দিবোনা। আর তাছাড়াও মামনি জানবে কি করে?? তুমি আছোনা। আমার world best আপু…..
মনি: হইসে হইসে আর তেল দিতে হবেনা। কোনোদিন ফুপ্পিকে বলিনি আর বলবোও না। কারন আমি জানি যে আমার world best ভাইটু কোনো ভুল করেনা।
নির্বন: love you আপু।
মনি: love u too ভাইটু……
নির্বন। ছেলেটার পুরো নাম নির্বন আড়াল। ওর মায়ের নাম আড়াল। সে ১জন ডাক্তার। নির্বন class ২তে পড়ে। স্কুলের সব টিচার & কর্মচারীদের চোখের তারা। ওর মতো ভালো বাচ্চা ২য়টা নেই। play class থেকে best well mannered student এর award পেয়ে আসছে। কিন্তু কেউ জানেনা যে এই innocent নির্বনের আড়ালে ১টা রাগী, জেদী ছেলে লুকিয়ে আছে।
.
অন্যদিকে…..
১টা bike হঠাৎ করে সামনে চলে আসাতে ১টা microbus খুব জোরে break মারলো। গাড়িটা থামতেই পেছনের গাড়ির break করা গাড়ির সবাই নিচে নেমে এলো। আর জিজ্ঞেস করতে লাগলো যে সবাই ঠিক আছে কিনা।
doctor নিপা: আরে … সবাই তো এখানে। আড়াল ম্যাম কোথায়?
doctor দীপ্ত: oh no doctor আড়াল তো মনে হয় গাড়ির ভেতরেই।
নিপা: আমরাই ভয় পেয়ে গেছি । তাহলে আড়াল ম্যাম তো মনে হয়ে কাপছে।
দীপ্ত: ভয়ে heart attack না করে ফেলে। lets go to her……
doctor সুমন: চলো চলো।
সবাই গাড়ির ভেতরে গিয়ে দেখলো যে পেছনের সিটে বসে আড়াল ভয়ে চোখ বন্ধ করে কাপছে। আর কি যেন বিড়বিড় করে বলছে। নিপা দৌড়ে আড়ালের কাছে গেল। আড়ালের কাধে হাত রাখতেই আড়াল ভয় পেয়ে চমকে উঠলো।
নিপা: ম্যাম ভয় পাবেন না। its me… নিপা। আপনার P.A.।
ডাক্তার আড়াল চোখ খুলল। মায়াবি তার চোখে চাহনি। কিন্তু কালো ফ্রেমের চশমার আড়ালে থাকে সেই অসম্ভব সুন্দর চোখ ২টা। অনেক সুন্দর চেহারা তার। সবসময় ফুল হাতার dress পরে। কোমড় পর্যন্ত চুল সবসময় খোপা করে রাখে। নিজের সব কথাই সে আড়ালে রাখে। “আড়াল” নামটা তাকেই শুধু মানায়। অনেকটা ভীতু। খুব শান্ত স্বভাবের। নম্র, ভদ্র। কখনো উচ্চ স্বরে কথা বলেনা। খুবই ভালো ব্যাবহার। রাগ কি জিনিস তা সে জানেই না। ভালো হওয়ার সব গুন তার মধ্যে আছে। মেডিসিন ডাক্তার। খুবই ভালো ডাক্তার। রক্ত সহ্য করতে পারেনা বলে সার্জেন হয়নি। মেডিসিন ডাক্তার হয়েছে। তাকে সবাই ভালোবাসে। সে হলো সবার ভালোবাসারআড়াল। ১জন single mother।
.
আড়াল: ককককি হয়েছে?? সসসব ঠিক আআছে ? এএমন হলো কককেন?
নিপা: জীম ম্যাম। এখন সব ঠিক আছে। আপনি ঠিক আছেন তো ম্যাম?
আড়াল: হহহামম। এএকটু পপপানি খাবো।
নিপা: এই নিন ম্যাম।
আড়াল পানি খেলো।
আড়াল: আমরা কি পৌছে গেছি?
সুমন: না dr. আড়াল। ৪-৫ মিনিটের মধ্যে পৌছে যাবো।
আড়াল: ওহ। তাহলে আআপনারা গাড়ি দিয়ে যযান আমি রিকশা দদিয়ে চলে যাবো।
সুমন: no worry dr. আড়াল এবার আর অমনভাবে গাড়ি চলবে না। ভয় পাবেন না।
আড়াল: হামম।
ডাক্তাররা সবাই গাড়ি করে ১টা গ্রামে গেলো ফ্রি চিকিৎসা দিতে।
এই শান্তশিষ্ট , ভীত ডাক্তার আড়ালের ছেলেই সেই নির্বন। তুফান নির্বন। নির্বন ৭বছরের ১টা ছেলে। class 2 তে পড়ে। ভীষন জেদী, রাগী। নাকের মাথায় সবসময় রাগ থাকেই। চোখের সামনে অন্যায় দেখলে সহ্য করতে পারেনা। কিন্তু আড়ালের কাছে, সব টিচারের কাছে, মামা-মামির কাছে নির্বন হলো মায়ের মতো শান্তশিষ্ট ১টা ছেলে। কিন্তু নির্বনের ৬টা বন্ধু আর মামাতো বোন মনি জানে যে নির্বন কতোটা রাগী-পাজী। আর যারা নির্বনের হাতে মাইর খেয়েছে তারা চেনে নির্বনকে। মনি হলো নির্বনের মামাতো বোন। class ৬ এ পড়ে। নির্বনকে খুব আদর করে।
.
নির্বনের ছুটিরপর……
নির্বন: মনি আপু….
মনি: বলতে থাক।
নির্বন: বলো তো আজকে কে নিতে আসবে আমাদের? মামা নাকি মামনি?
মনি: তোর মামা মানে আমার বাবা নিতে আসবে।
নির্বন: উহু। আজকে আমার মামনি নিতে আসবে। মানে তোমার ফুপ্পি।
মনি: জী না ।
নির্বন: জী হ্যা। ওই দেখো মামনির গাড়ি চলে এসেছে ।
আড়ালের গাড়ি থামলো আড়াল গাড়ি থেকে নামলো। নির্বন আর মনি দৌড়ে এলো। আড়াল ২জনকে জরিয়ে নিলো।
আড়াল: আমার ২টা কলিজার টুকরা।
মনি: ফুপ্পি….
নির্বন: মামনি।
আড়াল: class কেমন হলো ২জনের?
২জন: ভালো।
আড়াল: ওলে আমার কলিজা ২টা। কিন্তু দৌড়ে এলে কেন?? পরে টরে গেলে???
নির্বন: মামনি অল্প জোরেই দৌড় দিয়েছি। আর দৌড়াবোনা।
আড়াল: good boy… এখন চলো সবাই।
আড়াল ২জন কে নিয়ে বাসায় গেলো।
মনি: ফুপ্পি আমরা কোন বাসায় যাচ্ছি।
আড়াল:ফুপ্পির বাসায়।
মনি: সত্যি?? yeappy……
নির্বন: আপু আজকে অনেক মজা করবো। মামনি আজকে বাসায় গিয়ে কি surprise পাবো?
আড়াল: বাসায় গেলেই পাবে।
নির্বন: কি রান্না করেছো সেটাতো বলবে!!!
আড়াল: বলো তো দেখি কে guess করতে পারে??
মনি: ফুপ্পি ফুপ্পি…. আমি বলি???
আড়াল: বলো তো।
মনি: চিকেন ললিপপ, fried noodlse, পাস্তা, আর আর আর চকোলেট ফাজ।
নির্বন: মামনি সত্যি!!!
আড়াল: হামম।
নির্বন: কিন্তু…..
আড়াল: কিন্তু কি বাবাই???
নির্বন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে
বলল: কিছুনা মামনি। আপু আর আমি তো একই।
আড়ালের কাছে নির্বনের হাসিটাই ওর দুনিয়া।
আড়াল: ওলে আমার সোনামনি। তোমার প্রিয় রান্নাও করেছি। বিরিয়ানি। আর চকোলেট পুডিং।
নির্বন: লাভ ইউ এত্তোগুলো মামনি…
.
in bangladesh…..
নিহাল: রাত ৩টা বাজে। নীড় যে এখনো ফিরলোনা নীলা….
নীলিমা: এই ৮ বছরে তোমার ছেলে কদিন বাড়ি ফিরেছে বলোতো……. বাড়িতে থাকে কদিন…. দেশেই থাকে কতোদিন……. খালি খুজে বেরায় মেরিনকে……
নিহাল: ছেলেটাকে হারিয়ে ফেলেছি।
নীলিমা: হামম।
নিহাল: তুমি সেদিন ঠিকই বলেছিলে যে ১টা সময়ে মেরিন নীড়কে ছারলেও নীড় মেরিনকে ছারবেনা…….
নীলিমা: ভাবতেও পারিনি কথাটা এমনভাবে প্রতিফলিত হবে…..।
.
নীড় । নীড় নামটা এখন সকলের অপছন্দের। উগ্র মেজাজ, দুর্ব্যাবহার, রাগ সবকিছুর জন্য নীড়ই এখন ঘৃণার নীড় হয়ে গেছে। মেরিনের যতো রং ছিলো সব রং এখন নীড় ধারন করেছে। যখন যেখানে , বাংলাদেশের, দেশের বাইরে যেখানেই মেরিন নামের কোনো কারো খোজ পেলেই সেখানে চলে যায়। নীড় হাতে লেখা “ঘৃণার কথাটা” মিশিয়ে তার আগে “ভালোবাসার” লিখেছে। ৮টা বছর নীড় সাইকো হয়ে গেছে। নীড়ের সব পোশাকে মেরিনের নাম লেখা। নীড়ের সব দোআয় এখন মেরিন। কবির-কনিকা কাদতে কাদতে অন্ধ প্রায়। বিভিন্ন মাজারে মাজারে ঘুরেছে। হজ্জ করেছে মেরিনকে পাওয়ার আশায়। কিন্তু মেরিন হারিয়ে গেছে। যেমন করে বয়ে যাওয়া বায়ুকে আর ফিরে পাওয়া যায়না তেমনি মেরিনকেও পাওয়া যাবেনা।
.
ভোর ৪টা….
নীড় বাসায় ফিরলো। মাতাল হয়ে।
নীড়:
‘ম্যা দেখু ততুঝে দদিন মেহ
স’মার ততাবাহ
ইয়ে আআগার ইইশক হ্যা
তততো হ্যা বেইনতেহা……
তততু মাঙ্গলে আআগার
জজজান দদদেদু তুঝে।
তু আগার ববোলদে
খুদকোহ কককারদু ফানাহ
আ তুঝমেহ খাতম ককারদু
ইয়ে সসসাসে মেরি….
ইস ইশকে মে মমমারজাওয়াহ……
তু যযো ককাহে ববো কককার জজাওয়াহ….’
নীড়:একি মামনি ততুমি ঘুমাওনি।
নীলিমা: যখন কোনো মায়ের ছেলে বাড়ির বাইরে থাকে তখন কোনো মায়েরই ঘুম আসেনা।এসব ছাইপাস কবে বাদ দিবিরে??
নীড়: যেদিন আহমার জীবন ফিরে পপপাবোহ।
.
পরদিন……
সকালে…..
নীড়ের ঘুম ভাঙলো।
নীড়: এই বাবর…. বাবর….
বাবর দৌড়ে এলো। বাবর: জী স্যার।
নীড়: কয়টা ডাক দিতে হয়েছে ?
বাবর: দদদদুইবার…..
নীড়: u r fired …..
বাবর: sorry sir. ১টা সুযোগ দিন। please …..
নীড়: নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কাউকে ২য় বার সুযোগ দেয়না। out।
তখন নীড়ের ফোনে মেডিকেল বোর্ড থেকে ১টা ফোন এলো।
নীড়: hello ….
author : hello mr. chowdhuri…
কোলকাতার CT hospital এ ১টা বাচ্চার brain tumor হয়েছে। খুবই critical অবস্থা। সেখানকার ১জন senior doctor আপনার নাম prefer করেছে বাচ্চাটার surgery টা করার জন্য।
নীড়: so sad!!! তো আমি কি করতে পারি??
author : mr. chowdhuri আপনাকে সেখানে যেতে হবে surgery টা করার জন্য।
নীড়: আমি পারবোনা।
author : you have to go….
নীড়: এই যে hello…. এটা সবাই জানে যে নীড় নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করেনা। আমার এখন কোলকাতা যাবার কোনো ইচ্ছা নেই। তাই আমি যাবোনা।
author :তাহলে আমরা আপনার practice বন্ধ করে দিবো। licence বাতিল করে দিবো।
নীড়: so what??? i don’t care…..
author : mr. chowdhuri….. আপনি কি জানেন যে আপনার নাম ওই hospital থেকে
prefer কে করেছে?
নীড়: না। জানিনা। আর জানতেও চাইনা।
author : mr. chowdhuri আপনার নাম prefer করেছে doctor জাফর ইকবাল।
নীড়: so wh…. স্যার করেছেন??
author : yes… এখন কি আপনি যাবেন?
নীড়: of course…. আমি যাবো।
author : ধন্যবাদ।
নীড় ফোন রেখে দিলো।
.
নীড়: বাবর…. বাবর…. এই বাবর।
নীলিমা: কি হলো?
নীড়: তোমার নাম কি বাবর? ও কোথায়?
নীলিমা: তুই নাকি ওকে fire করেছিস। তাই চলে গেছে।
নীড়: oh yes…. whatever ….. কালকে আমি কোলকাতা যাচ্ছি।
নীলিমা: কেন?
নীড়: নীড় কখনো কাউকে জবাব দেয়না।
নীলিমা: আমি কি জানতে পারিনা???
নীড়: yes… পারো। আমি তো নিজে থেকেই বলছিলাম। তুমি প্রশ্ন
করলে কেন??
নীলিমা: এই কারনে বলবিনা?
নীড়: হামম।
নীলিমা: আবার কোন মেরিনের খোজ পেলি???
নীড় বাঘের মতো নীলিমার দিকে তাকালো। নীড়ের চোখ দেখে নীলিমা ভয় পেয়ে গেলো।
নীড়: মেরিন শুধু একজনই। আর কোনো মেরিন নেই। আর কেউ মেরিন হতে পারেনা। got it???
.
নীলিমা বড় ১টা ঢোক গিলো
বলল: হামম। বববাবা।
নীড়: now what ??
নীলিমা: তুমি কি কোলকাতাতেও এমন হনুমান সেজে যাবে??? i mean একটু সেভিং টেভিং করে যাও।
নীড়: আমি কি ওখানে বিয়ে করতে যাচ্ছি নাকি??
নীলিমা: না তা না।।। airport i mean visa পেতে ঝামেলা হবে।
নীড়: তুমি মনে হয় ভুলে গেছো যে আমি নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। আমি আমার নিয়মে চলি।
বলেই নীড় washroom এ চলে গেলো।
.
নীলিমা: কি ছিলো আমার ছেলেটা আর কি হয়ে গেছে??? আমি জানিনা কবে পাবো আমি আমার ছেলেকে কবে ফেরত পাবো? পাবো কিনা? আমার নীড়কে ফেরাতে পারে একমাত্র নীড়ের মেরিন। মেরিন মামনিরে….. কোথায় রে তুই?? তোকে যে খুব দরকার আমাদের। বিশেষ করে তোর নীড়ের।
তোর নীড়যে নষ্ট হয়ে গেছে। কবে ফিরবি রে তুই?? তোর খান empire …. তোর চৌধুরী empire যে তোকে ছাড়া শূন্য। ফিরে আয়রে। দেখে যা তোর নীড় আর তোর সেই ভালোবাসার নীড় নেই। এখন যে সে নিজেই
ঘৃণার নীড় হয়ে গেছে।
…..
……..
[চলবে……]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১১
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
কোলকাতায়,
রাত ১টা.
আড়াল বারান্দায় দারিয়ে আছে। আকাশপানে মুখ করে তাকিয়ে আছে। মেঘের সাথে তারার খেলা দেখছে। সেই সাথে মেঘ-তারার খেলা দেখে মাতোয়ারা চাঁদের হাসিও দেখছে। তখন কেউ আড়ালকে পেছন থেকে ১হাত দিয়ে জরিয়ে ধরলো আড়াল জানে এটা কার শরীরের ঘ্রাণ।
আড়াল: আরে ! তুমি? এখনও ঘুমাওনি দুষ্টু?
নির্বন: উহু। আগে বলো তুমি কেনো ঘুমাও নি।
আড়াল রকিং চেয়ারে নির্বনকে কোলে তুলে নিয়ে
বলল,মামনির ঘুমটা ভেঙে গেছে। তুমি কেন উঠলে? হামম?
নির্বন: আমি washroom যাওয়ার জন্য উঠেছি। দেখি আমার মামনিটা নেই। বুঝলাম আমার মামনি আজকেও মেঘ-তারা-চাদের খেলা দেখছে।
আড়াল: ওলে আমার সোনা বাচ্চাটারে।
আড়াল নির্বনের কপালে চুমু একে দিলো।
আড়াল : হাতে কফি কেন? এতো কষ্ট করে কফি বানাতে গেলে কেন এতো রাতে?
নির্বন: আমি তো জানি যে আমার মামনি হালকা শীতের মধ্যে কফি খেতে এত্তোগুলা ভালোবাসে।।
আড়াল: আমার বাবাইটা বুঝি ভালোবাসেনা?
নির্বন: তোমার বাবাইটা তার মামনিকে বেশি ভালোবাসে। তাই তে সে মামনির কথা শুনে week এ ১দিন কফি খায়। রোজ খেলে অসুখ হয় যে।
আড়াল ছেলেকে বুকের সাথে জরিয়ে নিলো।
নির্বন: কি হলো মামনি?
আড়াল:কিছুনা মামনি।
নির্বন: তাহলে কফিটা খাও।
আড়াল খেলো।
আড়াল: বাহ! এটি আমার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে টেস্টি কফি।
নির্বন: সত্যি??
আড়াল: হামম। এখন
এতো বেস্ট ১টা কফি বানিয়ে খাওয়ানোর জন্য তো আমার বাবুই পাখিটাকে ১টা গিফ্ট দিতে হবে। তো আমার বাবুই পাখিটার কি গিফ্ট লাগবে হামম?
নির্বন: আমার কিছুই লাগবেনা মামনি। আমার তো সবই আছে। আমি কেবল তোমার বুকের মধ্যে ঘুমাতে চাই।
আড়াল: তাই? সেটাতো রোজই ঘুমাও। কিন্তু মামনি যে তার বাবুই পাখিটাকে ১টা গিফ্ট দিবোই। কাল মামা-মামিমনি, মনি আপু, বাবুই পাখি আর মামনি মিলে আমিউজমেন্ট পার্ক এ যাবো। এতো এতো খেল না কিনবো। এতো এতো রাইডে চরবো। মজার মজার খাবার খাবো। খুব মজা করবো।
নির্বন: সত্যি মামনি?
আড়াল: হামম।
নির্বন: ধন্যবাদ মামনি। ভালোবাসি। বলেই নির্বন মায়ের গালে চুমু দিলো।
নির্বন: আচ্ছা মামনি তুমি মেঘ-তারা-চাদের খেলা কেন দেখো?
আড়াল: আমার ভালো লাগে বাবা। তাই। আর বেশি ভালো লাগে ওই শুকতারার পাশের ঝলমল করা তারাটাকে।
নির্বন: কেন?
আড়াল: কারন ওইটা তোমার বড়বাবা বলে….
নির্বন:আমার বড়বাবা মানে??
আড়াল: তোমার বড়বাবা মানে মামনির দাদুভাই।
নির্বন: তাই?
আড়াল: হামম। সবসময় সবার থেকে উজ্জ্বল। যে তোমার মামনিকে পথ দেখায়।
.
.
.
২দিনপর,
নীড় কোলকাতা পৌছালো। বাচ্চাটাকে দেখলো। ট্রিটমেন্ট করলো। পরদিন নীড় বিকালে হাটতে বের হলো। ১টা পার্কের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছে। হাতে থাকা ছোট টুনি ট্যাক হুইস্কি এর বোতল টা কেবল বের করলো। তখন কোথায় থেকে যেন ১টা ফুটবল এসে ওর হাতে লাগলো। আর ঠাস করে নীড়ের হাত থেকে বোতলটা পরে গেল।নীড় ভীষন রেগে গেলো। নীড় পেছনে ঘুরলো। দেখলো ৪-৫ টা বাচ্চা বাচ্চা ছেলে দৌড়ে আসছে।
নীড়: এই বলটা কে ছুরে মেরেছে?
ওদের মধ্যে থেকে নির্বন এগিয়ে এসে মাথা নিচু করে
বলল: আংকেল, আমি মেরেছি।
নির্বনের মুখটা কেমন যেন মায়াভরা।
তবুও নীড় রেগেই,
বলল: খেলার জন্য এতো বড় পার্ক তারপরও মানুষের গায়ে বল ছুরে মারো কেন???
নির্বন: সরি আংকেল।
নীড়: সরি বলাতেই কি সব ঠিক হয়ে যাবে? খুন করে এসে বলবে যে সরি তাহলে কি সব ঠিক হয়ে যাবে??
নির্বন: সরি আংকেল।
চন্দন: এই তুই শুধু শুধু লোকটাকে সরি বলছিস কেনরে? তারওপর লোকটার ঝাড়িও খাচ্ছিস??
নির্বন: আহ চন্দন। আমাদেরই তো ভুল ছিলো। খেয়াল রাখার দরকার ছিলো। আর তাছারাও আংকেল আমাদের গুরুজন। শ্বাসন করতেই পারেন। গুরুজনদের শ্বাসনের মধ্যেও ভালোবাসা থাকে। শিক্ষা থাকে। আমাদের ভুল ধারনাগুলো না ধরিয়ে দিলে আমরা সেগুলো ঠিক করবো কিভাবে? ক্ষমা করে দিবেন আংকেল।
নীড় নির্বনের কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলো। বলটা দিয়ে দিলো।
নির্বন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে
বলল: থ্যাংকিউ আংকেল।
নির্বনের হাসির মধ্যে নীড় কি যেন ১টা খুজে পেলো।
.
নির্বনের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই নীড় পেছনের দিকে হাটতে লাগলো। তখন আবার ১টা বাচ্চা ছেলের সাথে ধাক্কা লাগলো। আর সেই ছেলেটার হাতে থাকা ৪-৫টা আইস্ক্রিম নীড়ের গায়ে পরে গেল।
নীড়: হেই ইউ, চোখে দেখোনা? আকাশের দিকে তাকিয়ে হাটো নাকি?
মেঘ: আমি না হয় আকাশে চোখ দিয়ে হাটি। কিন্তু আপনি তো চোখ কান সব আকাশে দিয়ে হাটেন। কখন থেকে সরতে বলছি সরেন তো নাই। তারমধ্যে চোখেও দেখেন না।
নীড়: এই ছেলে ১টা থাপ্পর দিবো। একে তো ভুল করেছো। তারমধ্যে মুখে মুখে তর্ক করছো।
মেঘ: তর্ক কোথায়? আমি জাস্ট সত্যটা বললাম। আর আপনি শুধু আমাকে থাপ্পর মারবেন কেন? আমি কি করেছি? একে তো ছোটদের সাথে কিভাবে বলতে হয় সেটা জানেন তারমধ্যে পচা পচা কথা বলে। আপনার মতো মানুষের তো এই পার্কে ঢোকাই ঠিক হয়নি।
মেঘের কথা শুনে নীড় ঠাস করে থাপ্পর মারতে নিলো। কিন্তু ঠিক যখনই থাপ্পরটা মারবেই তখনই নির্বন মেঘকে সরিয়ে নিজে থাপ্পর টা খেলো। নীড় অবাক হয়ে গেল। সেই সাথে ওর বুকটাও কেপে উঠলো।
নীড়: তু….
তখন নির্বন তখন হাতে দিয়ে ইশারা করে
বলল: চুপ থাকো আংকেল।প্লিজ।মেঘ বল তো কি হয়েছে?
নীড় অবাক হয়ে গেলো এতোটুকু বাচ্চার এটিটিউড দেখে। মেঘ নির্বনকে সবটা বলল।
.
নির্বন: আপনি কেন বিনাদোষে আমার বন্ধুকে কেন মারতে যাচ্ছিলেন?
নীড়: বিনা দোষ মানে? হি ইজ এ ম্যানারলেস! বেয়াদব। ভদ্রভাবে কথা বলতেই শেখেনি।
নির্বন: আমার বন্ধু যেটা বলেছে সেটাই সত্যি। আর আপনি বুঝি খুব শিখেছেন। আপনি নিজেই তো আদব-কায়দাহীব রেলগাড়ি। নিজে আদব শিখে তারপর অন্যদের শেখাতে আসবেন।
নীড় নির্বনকে থাপ্পর মারতে গেলে নির্বন খপ করে হাতটা ধরে ফেলল। নির্বনের চোখ রাগে লাল হয়ে গেলো। নীড় আরো অবাক হলো। এই রাগী চোখ ২টা মেরিনের রাগী চোখের সাথে কতো মিল। যখন মেরিন রেগে যেতো তখন ওর চোখ ২টাও ঠিক এমনটাই লাগতো।
নীড় নিজেকে সামলে
বলল: এতোটুকু ছেলের এতো সাহস। আমার হাত ধরো তুমি। তুমি জানো আমি কে?
নির্বন: জানিনা । আর জানতেও চাইনা। আর সাহস দেখাতে বড় ছোটো লাগেনা। প্রতিবাদ করতে বয়স লাগেনা। আমি অপরাধ করলে আমাকে ১০টা থাপ্পর মারলেও আমি কিছু বলবোনা।
নির্বন নীড়ের হাতটা ছেড়ে দিয়ে
বলল: কিন্তু বিনা অপরাধে চোখ রাঙানোও সহ্য করেনা নির্বন।
.
“নির্বন”…. এই নামটা শুনেই নীড় স্তব্ধ হয়ে গেলো। ওর মনে পরলো মেরিনের বলা সেই কথাটা নীড় এর সাথে বন্যার বন জুরে দিলে হয় “নির্বন”। আর বলেছিলো যে আমাদের ছেলের নাম রাখবো “নির্বন”। নীড় নির্বনের সামনে হাটু গেরে নির্বনের গাল ধরে অস্থির হয়ে
বলল: তততোমার নননাম কি বললে বববাবাহ?
নির্বন: নির্বন। নির্বন আড়াল।
নীড়: তততোমার মায়ের নাম কি???
নির্বন: ডাক্তার আড়াল।
নির্বনের মায়ের নাম শুনে নীড়ের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। নীড়ের চোখে পানি চলে এলো।
নির্বন: একি আংকেল তুমি কাদছো কেন? তুমি কি আমার কথায় খুব বেশি কষ্ট পেয়েছো?? সরি গো সরি!
নির্বন নীড়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে
বলল: সরি আংকেল। আমি তোমাকে hurt করতে চাইনি। কিন্তু আসলে রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকেনা। তাই ভুলভাল বলে ফেলি। এই এত্তোগুলা sorry…. তুমি চাইলে আমাকে আরেকটা থাপ্পর মারতে পারো। তবু তুমি কান্না করোনা।
নীড় নির্বনকে জরিয়ে ধরলো। এতে ২জনেরই কেমন যেন ১টা ফিল হলো।
নীড়: না বাবা তোমাকে আমি আর মারতে পারবোনা।
নির্বন: কেন??
নীড়: কারন তোমার নাম নির্বন।
নির্বন: কেন? আমার নাম নির্বন বলে আমাকে মারবেনা কেন??
নীড়: কারন আমার ছেলের নামও নির্বন।
নির্বন: তাই বুঝি?
নীড়: হামম।
নির্বন: thats great …. উইই…..
নীড়: কি হলো?
নির্বন: এখন তো আর আমার কখনো বিয়ে হবেনা।
নীড়: মানে? কেন?
নির্বন: কারন তুমি তো আমাকে আর থাপ্পর মারবেনা।
নীড়: থাপ্পরের সাথে বিয়ের কি সম্পর্ক?
নির্বন: আরে বুদ্ধু….. ১গালে থাপ্পর দিলে তো আর বিয়ে হয়না। আর তুমি তো আমাকে আর আরেকটা থাপ্পর দিবেনা। তাই আর আমার বিয়েও হবেনা।
নির্বনের এমন মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে নীড় হো হো করে হেসে উঠলো। আজকে ৮টা বছর পর নীড় এমন মন খুলে হাসলো। নীড়ের এই হাসি দেখতে নির্বনের বেশ লাগছে। ও নীড়ের দিকে তাকিয়েই রইলো।
.
নীড় দেখলো যে নির্বন ওর দিকে তাকিয়েই আছে।
নীড় হাসি থামিয়ে
বলল: কি দেখছো?
নির্বন: আমার স্বর্গ।
বলেই নির্বন নিজেই থতমত খেয়ে গেল।
নির্বন: না মানে সরি। আসলে আমার মামনি আমাকে কে এটা বলিতো। তাই তোমাকেও বললাম। রাগ করোনা প্লীজ।
নীড়: হামম।
নির্বন: আমি এখন আসি।
নীড়: হামম।
.
নির্বন ওর দলবল নিয়ে চলে গেল। নীড় ডুবে গেল অতীতে। নির্বন যেভাবে ওর দিকে আজকে তাকিয়ে ছিলো মেরিনও অমন করেই তাকিয়ে থাকতো। নীড় যদি জিজ্ঞেস করতো যে পরে ধরে কি দেখো? তখন মেরিন জবাবে
বলতো: আমার স্বর্গ।
আসলে নির্বন যখন খিলখিল করে হাসে তখন ওকে ওর বাবা নীড়ের মতোই লাগে। আর তাই তখন মেরিন(আড়াল) মুগ্ধ চোখে নির্বনের দিকে তাকিয়ে থাকে। নির্বন যদি জিজ্ঞেস করে যে মামনি কি দেখছো? তখন মেরিন জবাব দেয় যে আমার স্বর্গ। মায়ের মতো করে নির্বনও মায়ের মুখের দিকে, হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে। আর মেরিন জিজ্ঞেস করলে নির্বনও বলে যে আমার স্বর্গ।
.
{{ অনেকেই বুঝে গেছে যে আড়াল মেরিন। আবার অনেকে confused …. সকল confused এখনই clear করে দিচ্ছি। মেরিনই আড়াল। ৮বছর আগে সেদিন সকালে যখন মেরিন সব ছেরে ছুরে চলে এসেছিলো। তখন তার সাথে নিজের নামও পরিবর্তন করে আড়াল রেখেছিলো। কারন মেরিন নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে নিতে যাচ্ছিলো। পাওয়ার ছিলো। তাই সহজেই কাজটা তারাতারি করতে পেরেছিলো। মেরিন দাদুভাইয়ের সাথে ১২বছর কোলকাতা ছিলো। সেখানে ওদের ছোট্ট ১টা বাড়িও আছে। তাই মেরিন সব ছেরে ছুরে সেখানেই চলে আসে। খান পরিবারের ১টা টাকাও মেরিন নিয়ে আসেনি। কোনো টাকা পয়সা আনেনি। শুধু মেরিন হওয়ার পরই মামা আর দাদুভাই যে পলিসি করেছিলো সে টাকা আর ছোটবেলার বৃত্তির টাকা ব্যাংকে রেখে যে টাকা হয়েছিলো সেগুলো নিয়ে মেরিন কোলকাতা গিয়েছিলো।
[ ব্যাংক ট্যাংক, business সম্পর্কে আমার কোনো ধারনা নেই। তাই কিভাবে কি বীমা না কি বলে জানিনা ভালোভাবে। কষ্ট করে বুঝে নেবেন। ]
যাই হোক কোলকাতা গিয়ে মেরিন নতুন করে জীবন শুরু করে। মেরিন মরে গিয়ে আড়াল জন্ম নেয়। এখন আসি নির্বনের মামা মানে মেরিনের ভাই। মেরিনের ভাই আর কেউনা, জন। হ্যা জনই মেরিনের ভাই। বডিগার্ড…… এই বডিগার্ড শব্দের অর্থ হলো দেহরক্ষী। জন মেরিনের সত্যিকারের অর্থে বডিগার্ড। যে জীবন দিয়ে হলেও নিজের ম্যাডামকে সুরক্ষিত রাখে। মেরিন চলে যাওয়ার আগে জনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে যায়। কারন জনের কাছে মেরিন অনেক ৠণি। তাই জন যেন জীবনে কিছু করতে পারে তাই জন্য মেরিন জনকে টাকা দিয়ে এসেছিলো। মেরিন কতো থাপ্পর মেরেছে , কতো খারাপ ব্যবহার করেছে। কিন্তু জন সবসময় মেরিনকে নিজের ছোট বোনের মতোই ভালোবেসেছে। তাই তো নিজের বডিগার্ড হওয়ার দায়িত্ব শেষ করে নিজের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করতে কোলকাতা চলে যায়। মনি জনেরই মেয়ে। মেরিনের দেয়া সেই টাকা দিয়ে জন ব্যবসা শুরু করে। সফল হয়। তাই সে সেরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন। নির্বন ৬মাস হওয়া পর্যন্ত মেরিন জনের বাড়িতেই ছিলো। কিন্তু এরপর নিজের বাড়িতে চলে আসে। মেরিনও এখন জনকে নিজের ভাই ই মনে করে। জনের স্ত্রীও ভীষন ভালো।
জন নিজের সাথেই মেরিনকে রাখতে চেয়েছিলো কিন্তু মেরিন রাজী হয়নি। মেরিন নিজেকে বিলীন করে আড়াল কে তৈরী করে। মেরিন যেমন ছিলো তার সম্পুর্ন বিপরীত হলো আড়াল। মেরিন আর আড়ালের মধ্যে কোনো মিল নেই। শুধু ১টা জিনিস ছারা। সেটা হলো নীড়ের প্রতি ভালোবাসা। মেরিন যতোটা নীড়কে ভালোবাসতো আড়ালও ঠিক ততোটাই ভালোবাসে। বলতে গেলে মেরিনের থেকে আড়াল নীড়কে বেশি ভালোবাসে। কারন নীড় আড়ালকে নির্বন দিয়েছে। যা আড়ালের বাচার একমাত্র অবলম্বন। }}
.
পরদিন……
নীড় আজও নির্বনের সাথে দেখা করতে সেই পার্কে এসেছে। নির্বন বন্ধুদের জন্য ice cream কিনে রাস্তা পার হচ্ছে। তখন দেখলো যে ছোট্ট ১টা ৩পায়ের খরগোশ রাস্তায় পরে আছে। আর ১টা গাড়ি ছুটে আসছে। নির্বন সব ice cream ফেলে দৌড়ে খরগোশ টাকে বাচাতে ছুটলো। খরগোশটাকে কোলেও তুলে নিলো। তবে দুর্ভাগ্যবসত একটুর জন্য গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগলো। নির্বন গিয়ে ছিটকে পড়লো। মাথার মধ্যে প্রচুর ব্যাথা পেল। আর সব ঘটলো নীড়ের চোখের সামনে। ওর মনে হলো যে মেরিনেরই accident টা হলো। নীড় জোরে মেরিন বলে চিৎকার করে উঠলো। এরপর নির্বনকে নিয়ে হাসপাতালে গেলো। এমনকি নিজে রক্তও দিলো। এরপর নির্বনের ব্যান্ডেজ করা চেহারাটা ১বার দেখলো। এরপর ছুটলো সেই driver এর কিয়ামত আনতে।
.
এদিকে…….
ছেলের খবর পেয়ে সবকিছু ছেরে ছুরে পাগলের মতো ছুটে এলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। তেমনভাবে কোনো ক্ষতি হয়নি বলে পরদিন সকালেই নির্বনকে রিলিজ দেয়া হলো।
ছেলের জন্য ১৫দিনের ছুটি নিলো মেরিন।
.
১৫দিনপর……
নীড় নিজের কাজ করে দেশে ফিরবে আজকে। airport যাচ্ছে……. পথের মধ্যে ১টা ট্রাকের সাথে খুব বাজেভাবে accident হলো। নীড়কে hospital এ নেয়া হলো।
.
in the hospital …….
১৫দিনপর মেরিন হাসপাতালে এলো। রোগী টোগী দেখে বাসায় ফিরছে। তখন দেখলো যে ট্রলিতে করে ১টা রক্তাত্ব রোগীকে নিয়ে আসছে। যা দেখে মেরিনের হাত পা ভয়ে ঠান্ডা হয়ে গেলো। কারন মেরিন এখন একদম রক্ত দেখতে পারেনা। মেরিন চোখ মুখ খিচে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে সামনে বাড়তে লাগলো। আসলে এটা নীড়ই। নীড়ের খুব সামান্য জ্ঞান ছিলো। তাই ও মেরিনের মুখটা দেখতে পেলো। তাই মুখে হাসি ফুটে উঠলো। মেরিনের মুখ দেখতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। মেরিন এগিয়ে যাচ্ছে তখন ওর আঙ্গুলের সাথে কারো আঙ্গুল বেজে গেলো। আর সাথে সাথেই মেরিন থেমে গেলো। কারন এই স্পর্শ ওর চিরচেনা। ঘুরলো। আর ঘুরে যা দেখলো তা দেখার জন্য মেরিন মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা। নীড়ের রক্তাত্ব শরীর। মুহুুর্তেই মেরিনের দুনিয়া ঘুরে গেলো। ৮বছরপর এই মুখটা এভাবে দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা।
নীড়ের ট্রলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নীড়ের হাত মেরিনের হাত থেকে ছুটে যাচ্ছে। মেরিনের মনে হচ্ছে কেউ ওর জীবনটা নিয়ে যাচ্ছে। মেরিন শক্ত করে নীড়ের হাতটা ধরলো। এরপর নীড়ের সামনে গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে শুরু করলো। নিজের হাতে নীড়ের surgery করলো। যা দেখে সবাই অবাক। কারন ডাক্তার আড়াল কখনো surgery করেনা।এরপর হাসপাতাল থেকে resign নিয়ে দৌড়ে বাসায় চলে গেলো।
.
বাসায় গিয়ে মেরিন ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে কান্না করছে। এদিকে জনের কাছে খবর চলে গেলো মেরিনের রিজাইনের। তারমধ্যে তখনই নির্বন ফোন করে
বলল: মামা আমার মামনি না রুমের মধ্যে দরজা বন্ধ করে বসে আছে। কতো ডাকছি খুল়ছেইনা।
জন: দারাও বাবা মামা এখনি আসছি।
জন সব কাজ ফেলে মেরিনদের বাসায় চলে গেলো। গিয়ে দেখলো নির্বন রুমের দরজার
বাইরে দারিয়ে কাদছে আর
বলছে: ও মামনি….. মামনি… দরজা খোলোনা।
জন যেতেই নির্বন দৌড়ে ওর কাছে গিয়ে কাদতে কাদতে
বলল: ও মামা দেখোনা আমার মামনি দরজা খুলছেনা।
জন: কাদেনা সোনা। এই মুসকান (জনের স্ত্রী) নির্বনকে নিয়ে আমাদের বাসায় যাও।
নির্বন: না মামা আমি যাবোনা। আমার মামনিকে ফেলে আমি যাবোনা।
জন: মামা আমি তোমার মামনিকে নিয়ে এখনি আসছি।
নির্বন: না আমি যাবোনা।
জন: নির্বন না good boy। মামার কথা শুনবেনা?
নির্বন গেলো।
জন: আড়াল….. আড়াল। বোন আমার দরজা খোল।
মেরিন দরজাটা খুলছেনা বলে জন দরজা ভেঙে ফেলল। ঢুকে দেখলো যে মেরিন দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে কাদছে। আর সেই সাথে দেয়ালের মধ্যে মাথায় ঠোকা মারছে। জন দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
জন: আড়াল…. এই আড়াল। তুই কাদছিস কেন বোন?? তুই তো জানিস যে তোর চোখের পানি আমার সহ্য হয়না। বলনা বোন আমার।
মেরিন জনকে জরিয়ে ধরে
বলল: ভাইয়া …. উউনি ফফিরে এএসেছে।
জন: কে?
মেরিন: নির্বনের বাবা।
জন: কি?
মেরিন: হামম।
মেরিন সবটা বলল। জন একটু চিন্তিত হলেও মেরিনকে বোঝালো।
জন: আরে বোকা । পাগল নাকি? তিনি ১জন ডাক্তার। কতো জায়গাতেই সে যেতে পারে। হয়তো তাই কোলকাতাতে এসেছিলে।
মেরিন: যযযদি উউনি আমার নির্বনকে কেরে নেয়। বাবা হওয়ার দাবিতে…..
জন: ধ্যাত বোকা। নীড় চৌধুরী নির্বনের কেউনা। বাবাও না। নির্বনের বাবাও ডাক্তার আড়াল। আর মাও ডাক্তার আড়াল। আর তারথেকেও বড় কথা নীড় চৌধুরী নির্বনের কথা তো জানবেই না।
মেরিন: কিন্তু….
জন: কোনো কিন্তুনা। কেন ভুলে যাও যে তুমি মেরিন নও। তুমি আড়াল। যতোদিন জন আছে ততোদিন কেউ আড়ালের নির্বনকে কেরে নিতে পারবেনা। যে অন্যায়গুলো মেরিনের সাথে হয়েছে তার ছিটেফোটাও আমি আমার বোন আড়ালের সাথে হতে দিবোনা। কথা দিলাম।
মেরিন একটু শান্ত হলো। জন মেরিনকে নির্বনের কাছে নিয়ে গেলো।
.
ওদিকে ….
নীড়ের accident এর কথা শুনে নিহাল-নীলিমা, কবির-কনিকা দৌড়ে কোলকাতা এলো। নীড়ের জ্ঞান ফিরতেই মেরিন বলে চিৎকার করে উঠলো।
নীলিমা: কি হলো বাবা?
নীড়: আআহমার মমমেরিন। আহমার মেরিন….. আমি দদেখেছি।
কনিকা: ককোথায়? ককোথায় দেখেছো??
নীড়: জজজানিনা। তবে দদেখেছি। ও হাত দিয়ে মুখ ঢেকে অন্যদিকে ঘুরে ছিলো। কককিন্তু ওর সেই কালো তিলটা যে বেরিয়ে ছিলো। যার চমক আমার দৃষ্টি কেরেছিলো। ওর সেই চিরকোমল হাত।
বাকীরা বুঝতে পারলো যে এটা কেবলই নীড়ের কল্পনা। কিন্তু নীড় জানে, নীড়ের মন জানে যে এটা কল্পনা না।
নিহাল: বাবা তুমি আরাম করো।
নীড়: আরাম?আরাম তো সেদিনই করবো যেদিন আমার জীবন পাবো। আর আমি জানি আমি ওকে এখানেই পাবো…
…..
……..
[চলবে……]
গল্প ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১২
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
১৫দিনপর,
নীড় সুস্থ হলো। কেন যেন সুস্থ হয়ে নির্বনকে দেখার জন্য মন চাইছে। নীড় তৈরি হয়ে বের হচ্ছে।
নীলিমা: কিরে কোখায় যাচ্ছিস?
নীড়: কাউকে জবাব দেয়না।
কবির: চলো তবে আমরাও তোমার সাথে যাই।
নীড়: কেন? আমি কি ছোট বাচ্চা?
কবির: না তা কেন হবে? আসলে বাড়িতে বসে বসে বোর হয়ে গেছি তাই। তুমি যখন নিতে চাইছোনা তখন যাবোনা।
নীড় কবির-কনিকার কথা ফেলতে পারেনা। কারন মেরিন বলেছিলো আমার আম্মু-বাবাকে দেখবেন।
নীড়: আমি কি বলেছি যে নেবোনা? চলো।
নীড়,নিহাল আর কবির হাটতে বের হলো। সেই পার্কে।
.
নীড় গিয়ে দেখলো যে নির্বন বন্ধুদের সাথে মিলে কি যেন করছে।
নীড়: নির্বন……
নির্বন ঘুরলো।
নির্বন: আরে আংকেল!
নির্বন নীড়,নিহাল,কবিরকে সালাম দিলো।
নীড়: এখন তোমার শরীর কেমন আছে?
নির্বন : এই তো ভালো। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমাকে সেদিন বাচানোর জন্য।
নীড়: মোস্ট ওয়েল্কাম। নির্বন এরা হলো আমার বাবা। মানে আমার ছেলের নানাভাই আর দাদুভাই।
নির্বন: দাদুভাই! জানো আংকেল? আমার মামনিরও দাদুভাই আছে। উইই!
নীড়: কি হলো?
নির্বন: ভুল হলো।
বলেই নির্বন নিহাল আর কবিরের পা ধরে সালাম করে বলল, জানো আমার মামনি বলে যে বড়দেরকে সবসময় এভাবে সালাম করতে হয়। আর জানো তোমরা না দেখতে এত্তোগুলা সুইট।
কবির নির্বনের মধ্যে ছোট্ট মেরিন আর নিহাল ছোট্ট নীড়কে খুজে পেলো। বাচ্চাদের নিয়ে ওরা আড্ডা দিতে লাগলো।
.
১ঘন্টাপর….
নির্বন: উইই….
নিহাল: কি হয়েছে??
নির্বন : আর বলোনা। কালকে আমার স্কুলে কালচারাল প্রোগ্ৰাম। তো আমি ১ মিনিট কম্পিটিশনে অংশ নেই। সবসময় প্রথম হই। এখানে এসেছিলাম প্র্যাকটিস করতে। ভুলেই গেছি।
কবির:তুমি কালকে ১ মিনিট কম্পিটিশনে অংশ নিবে?
নির্বন: হামম।
কবির: যদি দেখতে পারতাম!
নির্বন: ওমা দেখতে পারবেনা কেন? তোমরা ২জন কালকে আমার স্কুলে এসো। ‘সাউথ পয়েন্ট স্কুল’ [ছদ্মনাম] ।
নিহাল: সত্যি?
নির্বন: হামম।
নীড়: নির্বন.. আমাকে ইনভাইট করবেনা?
নির্বন: তুমি কি করে আসবে?
নীড়: কেন?
নির্বন: তোর দাড়ি গোফ তো ডাকাতদের মতো জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। টিচাররা তো ঢুকতেই দেবেনা।
নীড়: এই কথা…. আমার নির্বন আড়ালের ১ মিনিট কম্পিটিশন দেখতে হলে আমি এই দাড়ি গোফ কেন আমি তো আমার গলাটাও কেটে ফেলতে পারি…
নির্বন নীড়ের মুখে হাত দিয়ে
বলল, ছিঃ ছিঃ এমন কথা বলতে নেই।
.
পরদিন,
নির্বনের প্রোগ্ৰাম শুরু হলো। মেরিন এক সারিতে বসা। আর নীড়,নিহাল, কবির অন্যসারিতে। সবাই সামনের সিটে। নীড় দাড়ি গোফ কেটে মানুষ হয়েই এসেছে। নির্বনের নাম এনাউন্স করতেই সবাই অনেক এক্সাইটেড হয়ে গেল। নির্বন কাগজটা তুলল। নির্বন কাগজটা খুলে পড়েই স্তব্ধ হয়ে গেলো। থমকে গেলো। কারন তাতে “বাবা” শব্দটা লিখা ছিলো। বাবা কেমন হয় সেটাতে নির্বন জানেইনা।কি বলবে?
শিক্ষক: ‘And your time start now’ !
সময় শুরু হয়ে গেলো। কিন্তু নির্বন চুপ। মেরিন ইশারা করে বলছে বলতে। টিচাররাও বলছে বলতে। কিন্তু নির্বন চুপ। চোখে পানি টলমল। তবুও নির্বন সেগুলো ধরে রেখেছে । কারন নির্বন জানে যে ওর মামনি ওর চোখের পানি দেখলে পাগল হয়ে যাবে।
নির্বন: আমি দুঃখিত।
টিচার: আমি নির্বনের মা ডাক্তার আড়ালকে অনুরোধ করছি নির্বনের তরফ থেকে complete করতে।
নির্বনের মনটা খারাপ দেখে মেরিনের মনটাও খারাপ হয়ে গেলো। মেরিন স্টেজে এ গেলো।
.
মেরিনকে দেখে নীড়-নিহাল-কবির অবাক হয়ে গেলো। মেরিন নির্বনের দিকে তাকিয়ে stage এ ওঠায় ওদেরকে দেখলোনা। মেরিন stage এ গিয়ে আগে নির্বনের কপালে ১টা চুুমু একে দিলো।
মেরিন:থাক কেঁদোনা। মা এসে গেছি না?
বলেই মেরিন নির্বনের হাতের কাগজটা হাতে নিলো। আর যে শব্দটা লেখা দেখলো তা দেখে মেরিনও স্তব্ধ হয়ে গেলো। কারন শব্দটা ছিলো বাবা। আর মেরিনও জানেনা বাবার ভালোবাসা কেমন। ওর বাবাতো ছিলো। কিন্তু বাবার ভালোবাসানা।
টিচার: বলুন।
মেরিন: বাবাহ!
সামনে মাইক্রোফোন থাকায় মেরিনের আসতে করে বলা শব্দটাও সবাই শুনতে পেলো।
টিচার: বলুন?
মেরিন: বববাবাহ…. ববববাবাহ…. হহলো….
‘ii m aalso sssorrry”
কবির আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলোনা। দারিয়ে গেলো। দৌড়ে স্টেজে গেলো ।
কবির: বাবা মানে মাথার ওপর ভরসার হাত…. বাবা মানে সকল আবদারের ভান্ডার…. বাবা মানে সকল আশার আলো….. বাবা মানে ………
কবিরের গলার আওয়াজ পেয়ে মেরিন কবিরের দিকে তাকালো।
তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো। মেরিনের চাহনি দেখে কবির আর বলতে পারলোনা।
.
তখন নিহাল বলে
উঠলো: বাবা মানে মনের কথা বলার বন্ধু।বাবা মানে সবথেকে বড় সাপোর্ট সিস্টেম। বাবা মানে না বলা ভালোবাসা।
মেরিন নিহালের দিকে তাকালো। নিহালের মুখ দিয়েও আর কথা বের হলোনা।
.
তখন নীড় আগে stage এর দিকে বারতে লাগলো আর বলতে
লাগলো: বাবা মানে best friend …. বাবা মানে দিন শেষে স্নেহের ভান্ডার।
বাবা মানের দিন শেষে উপহারের সমাহার, বাবা মানে অনুপ্রেরনা, বাবা মানে বট গাছের ছায়া, বাবা মানে অদ্ভুদ মায়া, বাবা মানে সকল বিপদের জম, বাবা মানে জীবন,বাবা মানে দুনিয়া।
বলতে বলতে নীড় একদম মেরিন-নির্বনের সামনে চলে গেলো। মেরিন অবাক চোখে নীড়কে দেখছে। জনও সবাইকে দেখে অবাক। নীড় নির্বনের সামনে হাটু গেরে বসলো। বসে নির্বনের কপালে মুখে চোখে অসংখ্য চুমু দিলো। এরপর দারিয়ে মেরিনের চোখে চোখ রাখলো। মেরিন ১পলকও দেরি না করে নির্বনকে কোলে নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। মেরিন বাসায় গিয়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে নির্বনকে কোলে নিয়ে শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরে বসে রইলো। যেন একটু ছারলেই কেউ নির্বনকে নিয়ে যাবে। নির্বন তার মাকে কোনো প্রশ্ন না করে চুপচাপ মায়ের বুকের সাথে লেগে রইলো।
.
২ঘন্টাপর…..
নির্বন ঘুমিয়ে পরেছে। তবুও মেরিন ওকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। তখন দরজার করা নরলো। মেরিন নির্বনকে আরো শক্ত করে ধরলো। ওর মনে হচ্ছে ভাগ্য ওর জীবন থেকে হয়তো নির্বনকেও কেরে নিবে। কেউ দরজায় করা নেরেই যাচ্ছে।
মেরিন: না আমি খুলবোনা। কককে আছো চলে যযযাও। যযযেই হহহওনা কককেন চচচলে যযযাও।
জন: its me… বোন। দরজা খোল।
মেরিন: ননননা খখখুলবোনা। তততুমি চচচলে যযযাও ভভাইয়া।
জন: তোর এই ভাইয়ের জন্যেও দরজা বন্ধ….. প্লিজ খোল।
মেরিন নির্বনকে কোলে নিয়েই দরজা খুলল। জন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে নির্বনের মাথায় হাত বুলিয়ে
বলল: ঘুমিয়ে পরেছে?
মেরিন: হামম।
জন: তাহলে শুইয়ে দে।
মেরিন: ননা আমি কককাউকে দদদিবোনা….
জন: আরে বোকারে তোর কাছে থেকে কেউ নির্বনকে কেরে নিতে পারবেনা।
মেরিন:ওওওরা।
জন: কেউ পারবেনা….. আমি আছিনা…..
এরপর জন কিছু পেপার বের করে
বলল:এখন এই পেপারগুলোতে signature করে দেতো।
মেরিন: কককিসের পপপেপার এগুলো……
জন: তোর কাছে থেকে যেন কেউ কখনো নির্বনকে কেরে নিতে না পারে তার ব্যাবস্থা।
মেরিন: মমানে?
জন: মানে তোর নির্বন আজীবন তোর বুকেই থাকবে।
মেরিন: সসসত্যি?
জন: তোর ভাইয়ের ওপর বিশ্বাস নেই তোর??
মেরিন: নননা ননা তততা না। দদাও আমি এএখনই কককরে দদদিচ্ছি।
মেরিন না পড়েই কাগজে সিগনেচার করে দিলো।
জন মনে মনে: ক্ষমা করে দিস আমায়। তোর সুখের জন্যেই আমাকে এই প্রথম তোকে ধোকা দিতে হলো। জানি সত্যিটা জানলে আমাকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবিনা। তবুও তোর ভালোর জন্য, শান্তির জন্য আমাকে এটা করতেই হলো।
জন পেপরাগুলো নিয়ে চলে গেলো।
.
১ঘন্টাপর…..
মেরিন নির্বনকে খাটে শুইয়ে দিয়ে যাস্ট ঘুরলো। আর তখনই কেউ ওকে জরিয়ে ধরলো। একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। পারলে সে মেরিনকে নিজের বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলে। মেরিন ১টা নিষ্প্রাণ মূর্তির মতো দারিয়ে আছে। কারন মেরিন জানে যে এটা নীড়। নীড়যে অঝরে মেরিনকে জরিয়ে কাদছে সেটাও মেরিন বুঝতে পারছে।
নীড় মেরিনের চোখে মুখে ঠোটে কপালে গালে পাগলের মতো চুমু দিতে লাগলো।
নীড়: ককককেন ফেলে এসেছিলিরে আমাকে?? কেহনো? মেরিন নিজেকে সামলে নীড়কে সরিয়ে দিলো।
মেরিন: ককে আপনি? আপনি আমার বববাসায় ঢঢুকলেন ককিভাবে?
নীড়: মেরিন তুমি,
মেরিন: মেরিন! কে মেরিন? এখানে কোনো মেরিন থাকেনা। আমি আড়াল। doctor araal।
নীড়: মেরিন আমি, i love you! i just love you! i love you a lot! আমি তোমাকে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
মেরিন: excuse me… আপনার লজ্জা করেনা অজানা মহিলাকে ভালোবাসি বলতে? ঘরে কি মা-বোন নেই? যান এখনই বববেরিয়ে যান। নননা হলে আমি পপপুলিশ ডাকবো।
নীড়: মেরিন…. তুমি ….
মেরিন: কি আশ্চর্য…. আমি মমেরিন নই আমি আরাল। আআপনার ককোথাও ভভুল হচ্ছে। দদদেখুন আআমি এএকা এএকা থাকি। আমার ছেলেকে নিয়ে। যযদি কেউ আআপনাকে আআমার বাসায় দদেখে ফেলে ততবে খামোখা ববদনাম হবে। ppplease চচলে যান।
নীড় অবাক চোখে ওর মেরিনকে দেখছে। কতোটা পরিবর্তন….. যেই চোখে এক সময়ে আগুন ছিলো সে চোখে আজকে হাজারো সংশয়। যে চেহারায় সূর্যের তেজ ছিলো সে চেহারায় আজকে লোকভয়। যে মেরিন এক সময় ভয়ের অন্য নাম ছিলো সে আজকে ভীতের অন্য নাম। যে মেরিন pant-shirt পরতো সে মেরিন আজকে high neck, full হাতার dress পরে। যার চুল কখনো নীড় বাধতে দেখেনি তার চুল আজকে খোপার আরালে।
মেরিন: pppplease চচচলে যযযান।
নীড় মেরিনকে আর কথা বলতে না দিয়ে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
.
১০মিনিটপর নীড় মেরিনকে ছারতেই মেরিন ঠাস করে নীড়কে ১টা থাপ্পর দিলো। নীড় অবাক হয়ে গেলো।
মেরিন: আআপনার সাহস কককিভাবে হহহয়?
নীড়: মেরিন তুমি যাই বলোনা কেন? নিজের নাম যাই বলোনা কেন আড়াল or what….. আমি জানি যে তুমিই আমার মেরিন। এই চোখ, এই ঠোট, এই নাক, এই মুখ আমার চিরচেনা।
মেরিনের কপালে সেই কাটা দাগটা ছুয়ে নীড়
বলল: এই দাগ….. আমার দেয়া।
মেরিন দুরে সরে গেলো।
মেরিন: চচচলে যান।
নীড়: মেরিন ৮টা বছর আমিহ…..
যাই হোক। সব বাদ। চলো আমার সাথে। তুমি আমি আর আমাদের নির্বন…. আমরা ৩জন মিলে নতুন করে জীবন সাজাবো।
মেরিন: নির্বন কেবল আমার। দেখুন আমি হাত জোর করে অনুরোধ করছি। please আপনি চলে যান। কেউ দেখলে উল্টা পাল্টা কথা বলবে।
নীড়: মেরিন…. আমিও তোমার হাত ধরে বলছি।
মেরিন সাথে সাথে নিজের হাত ছারিয়ে নিলো।
নীড়: রাগ ওঠাচ্ছো কিন্তু এবার।
মেরিন: আআমি ককিন্তু সসসত্যি পপুলিশ ডাকবো।
নীড়: আমি আন্দাজ করেছিলাম এমন কিছুই হবে। তবুও শেষ বারের মতো তোমাকে জিজ্ঞেস করছি যে তুমি….
মেরিন mobile হাতে নিলো পুলিশকে ফোন করার জন্য। তখন নীড় chloroform দিয়ে মেরিনকে অজ্ঞান করে দিলো। মেরিন ঢলে নীড়ের বুকের ওপর পরলো।
নীড়: তুমি আমার জান মেরিন….. ৮টা বছর পর আমি তোমাকে ফিরে পেয়েছি। কোনোভাবেই আমি তোমাকে হারাতে পারবোনা। তোমার ঘৃণার পাত্র হলেও তোমাকে আমি আমার থেকে আলাদা করতে পারবোনা। নাহয় এবার আমিই হবো তোমার ঘৃণারনীড় …..
তবুও তোমাকে আর আমার ছেলেকে নিজের থেকে আলাদা করতে পারবোনা। জীবন গেলেওনা।
.
২দিনপর……
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ খুলেই নীড় অবাক হয়ে গেলো। কারন ও নীড়ের বাহুতে শুয়ে আছে। আর নির্বন নীড়ের বুকের ওপর ঘুমিয়ে আছে। আর নীড়? নীড় তাকিয়ে আছে মেরিনের দিকে। নীড়কে তাকিয়ে থাকতে দেখে মেরিন চমকে গেলো। টান দিয়ে নির্বনকে নিজের কোলে নিলো। দারিয়ে গেলো।
মেরিন: আপনার সাহস কি করে হয় আমার ছছছেলেকে বুকে জরানোর।
নীড়: খুব বেশি সাহস হয়ে গেছে আমার….. তাইনা ??
মেরিন: দদদেখুন….
নীড়: দেখছিই তো তোমাকে। সারারাত দেখেছি।
মেরিন চারদিকটা খেয়াল করে দেখলো যে এটা নীড়-মেরিনের রুম। সব furniture আগের মতোই আছে। শুধু দেয়ালটার গল্প পাল্টে গেছে। সবগুলো দেয়ালের রং ঢেকে গেছে মেরিন আর নির্বনের ছবি দিয়ে। চোখ ঘুরিয়েই দেখলো নীড় ওর একে বারে সামনে। মেরিন কোনো কথা না বলে নির্বনকে নিয়ে সোজা নিচে নেমে এলো। সেখানে কবির-কনিকা, নিহাল-নীলিমা বসে আছে।
.
মেরিনের চোখে মুখে সে কি ভয়….. সবাইকে ignore করে মেরিন বেরিয়ে যেতে নিলে কনিকা সামনে এসে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
কনিকা: কেন জানালিনারে সব? কেন আড়ালে রয়ে গেলি?
কনিকার কথা মেরিন কিছুই বুঝতে পারছেনা। নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
মেরিন: sssorry আন্টি। আআপনি কককি ববলছেন? বববুঝতে পপপারছিনা। দদদেখি সরুন। আআআমাকে যযযেত দিন।
বলেই মেরিন দরজার সামনে গেলো। দরজা খুলতে নিলো। কিন্তু খুলতে পারলোনা।
মেরিন: এএটা খখুলছেনা কেন?? খখুলে দিন না।
নীড়: ওটা খুলবেনা। কারন password দেয়া। যা কেবল আআমি জানি। কোনো মানুষ আমার মর্জি ছারা বাইরে যাওয়া অসম্ভব।
মেরিন: আপনি আমার সসসাথে এমন করছেন কেন?? আর আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন?
নীড়: তোমাকে তোমার রাজত্বে নিয়ে এসেছি।
মেরিন: ককি? বল….
তখনই নির্বনের ঘুম ভেঙে গেলো।। নির্বন নিজেকে মায়ের কোলে দেখে মাকে জরিয়ে ধরে
বলল: মামনি…… gooody gooody morning ….
মেরিন: good morning বাবুই পাখি।
নির্বন: মামনি তুমি উঠেছো? তুমি এতোক্ষন কেন ঘুমিয়ে ছিলে? তোমার মুখ এমন লাগছে কেন? তুমি কি অসুস্থ।
মেরিন: না বাবাই।
নির্বন: ওহ।
নির্বন তখন নীড়কে দেখলো।
নির্বন: মামনি মামনি… ওই uncle টা বলে কি জানো??? বলেকি যে তিনি নাকি আমার বাবা। আর তারা সবাই আমা দাদুভাই-দীদা…. নানাভাই-নানুমনি….. আমি বিশ্বাস করিনি। জানো মামনি মামাও বলছিলো। তবুও আমি বিশ্বাস করিনি। কারন যতোক্ষন না তুমি আমাকে বলবে ততোক্ষন আমি কিচ্ছু বিশ্বাস করবোনা।
মেরিন জন এর কথা শুনে অনেক অবাক হলো। জন কিভাবে এমনটা করতে পারে??
নির্বন: ও মামনি…. বলোনা……
মেরিন:……
নির্বন: ও মামনি বলোনা….. তুমিনা বলেছিলে যে তোমার মধ্যেই আমার বাবা বিদ্যমান…… তাই তুমিই আমার মা আর তুমিই আমার বাবা……. তাহলে???
মেরিন নির্বনের চাহনী দেখে বুঝতে পারলো যে ও মুখে যাই বলুক কিন্তু ও ঠিকই বাবাকে চায়। মেরিন আর এই অবস্থা মেনে নিতে পারলোনা। অজ্ঞান হয়ে গেলো।
.
এখন আসি কাহিনিতে…
{{ মেরিন যখন নির্বনকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। তখন নীড়ও আসতে নিয়েছিলো। কিন্তু জন নীড়কে বাধা দিলো।
জন: আর ১পাও বারাবেন না mr. chowdhuri….. এখানেই দারান।
নীড় দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে
বলল: আমি হাত জোর করে বলছি please আমাকে যেতে দাও।
জন বাধা দিলো। নীড় সব বাধা উপেক্ষা করে বাইরে এলো।
কিন্তু সেখানে ১০-১২ জন লোক দারিয়ে আছে।
নীড়: দেখো ভাই আমি চাইনা তোমাদের সাথে মারামারি করতে। যেতে দাও।
জন: যেতে চাইলেই কি যাওয়া যায়?? আমার বোনের কাছে যাওয়ার ভুলেও চেষ্টা করোনা। ও মেরিন না। ও হলো আড়াল। আর আড়াল কখনো নীড়ের না।
তখন নীড় নিজের কাছে থাকা gunটা জনের মাথায় ঠেকালো।
নীড়: আমি নীড়। মেরিনের স্বামী। তাই আমার সাথে মেপে কথা বলবে। & boys … পথ ছারো। না হলে তোমাদের boss… শেষ।
.
১ঘন্টাপর…..
জনের হাত পা বাধা। সামনে gun হাতে নীড় বসে আছে।
নীড়: তুমি আমার মেরিনের জন্য যা করেছো তা হয়তো কোনো আপন ভাইও করেনা। কিন্তু আমি আমার মেরিনকে আর হারাতে পারবোনা।
জন: হারাবেন তখন যখন পাবেন। কখনো পাবেননা।
নীড়: good… আমার বউয়ের জেদ থাকবেনা তো কার থাকবে? চলো তোমাকে ১টা কাহিনি শোনাই। ১টা সন্তানের ওপর অবশ্যই মায়ের হক বেশি থাকে। কিন্তু বাবার অধিকারও ফেলনা না। তাই আমাকে না জানিয়ে আমার অনাগত সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে আসা। নিজের নাম পরিবর্তন করে সবাইকে ধোকা দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি সব বলে যদি case file করা হয়। তবে ১মিনিটও লাগবেনা মেরিনকে জেলে পাঠিয়ে নির্বনকে নিজের কাছে নিতে। আর নীড়ের পাওয়ার যে তোমার থেকে বেশি তা তো জানোই……
জন: আর কতো কেরে নিবেন মেয়েটার কাছে থেকে?
নীড়: কিছুই কেরে নিবোনা। ওর সবটা ওকে ফিরিয়ে দেবো।
জন: ফিরিয়ে দেবেন? কি ফেরাবেন? সবটাই তো ওই নিরা ছিনিয়ে নিয়েছে।
নীড়: নিরা মেরিনের যা কেরে নিয়েছিলো তা নীড় মেরিনের জীবনে আসার আগে নিয়েছিলো। কিন্তু নীড় থাকতে মেরিনের কোনো কিছুতেই কেউ ভাগ বসাতে পারবেনা।
জন: সব কিছু নিরাকে,
নীড়: না।
নীড় জনকে সবটা বলল। সব শুনে জন অবাক।
.
জন: তাহলে….
নীড়: হামম। নীড়-মেরিন ২জন জনের। ওদের মাঝে আর কেউ কখনো আসতে পারবেনা। শুধু ১টা ভুল বোঝাবোঝির জন্য আমাদের জীবনের চিরসুখের ৮টা বছর চির দুঃখের ৮টা বছরে পরিনিতে হয়েছে।
{সব সত্যটা জেনে জন রাজী হলো নীড়ের support করতে। আর সেই পেপারে কি আছে তা না হয় পরে জানবেন। }
…..
……..
চলবে।
গল্প ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১৩
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলে দেখে সবাই দারিয়ে আছে। জনও।
নির্বন: মামনি ও মামনি! তুমি ঠিক আছো? মামনি আমি তোমাকে আর কোনো প্রশ্ন করবোনা মামনি। সরি মামনি।
মেরিন: সবাই প্লিজ একটু বাইরে যাবেন? আমি ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলবো। বাবুই পাখি তুমিও যাও।
সবাই বাইরে গেলো।
মেরিন: ততততুমিও ননননির্বনকে বলেছো যে ‘Mr. Chowdhuri’ ওর বাবা?
জন:
মেরিন: কককিছু জিজ্ঞেস ককককরেছি ভভভাইয়া ততততোমাকে?
জন:হামমম।
মেরিন: ততততুমি কিভাবে পপপারলে ববববলতে?
জন: ক্ষমা করে দে রে বোন আমার।
মেরিন: তোমার ওপর তততো আমার কককোনো রাগই নননেই ভভভাইয়া। তুমি তো আমার ভভভাইয়া। আমমি কককেবল ততততোমাকে জজজিজ্ঞেস কককরলাম। যাই হোক এখন আমি নির্বনকে নিয়ে কোলকাতা চলে যেতে চাই। তুমি যযযেভাবেই হোক ব্যবস্থা করো।
নীড় : পারবেনা তো।
মেরিন: আপনি!
নীড়: কোনো সন্দেহ?
মেরিন ভয়ে জনের হাতটা শক্ত করে ধরলো।
.
নীড়: তোমার ভাইয়া কেন কেউ পারবেনা এখন তোমাকে আমার থেকে আলাদা করতে। এরপরও যদি তুমি আলাদা হতে চাও তবে,আরে আমি মুখে বলছি কেন?
নীড় কতোগুলো পেপার মেরিনের হাতে দিলো। মেরিন দেখলো যে এগুলো সেই পেপার যেগুলোর মধ্যে জন ওর সিগনেচার নিয়েছিলো। মেরিন ওগুলো পড়লো। আর পড়ার সাথে সাথেই ওর হাত থেকে পেপারগুলো পরে গেলো। কারন পেপারগুলোর মধ্যে প্রথম টাতে আছে যে ও আবার আড়াল থেকে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী হলো। কবির ফয়সাল খান & কনিকা খানের মেয়ে। নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের স্ত্রী। পরের পেপারে আছে যে মেরিন কখনোই নীড়কে ডিভোর্স দিতে পারবেনা। বা আলাদা হতে পারবেনা। তবুও যদি আলাদা হতে চায় তবে নির্বনকে ওর বাবা নীড়ের কাছে দিয়ে নির্বনের ওপর থেকে সব অধিরার ছেরে দিয়ে চলে যেতে হবে। মেরিন কাগজগুলো পড়ে ১বার জনের দিকে তাকালো। জন মাথা নামিয়ে ফেলল।
নীড়: ৯ বছর আগে এমন ধরনের কনটেক্ট এ আমার সিগনেচার নিয়ে তুমি আমাকে তোমার করেছিলে। আমার স্ত্রী হয়েছিলে। আর আজকে ৯ বছর পর আমি এই পেপারে তোমার সিগনেচার নিয়ে তোমাকে আমার করে নিলাম। তোমার স্বামী হলাম। নিজের সাথে বেধে নিলাম।
মেরিন: আপনি বববোধহয় ভুলে গগেছেন যে নীড়-মেরিনের ডিভোর্স হয়ে গেছে ৮ বছর আগে।
নীড়: আমি কিছুই ভুলিনি। তুমি ভুলে গেছো যে ১ জনের সিগনেচার এ কিছুই হয়না। ২জন সিগনেচার করলে তবেই ডিভোর্স হয়।
মেরিন: পেছন থেকে ছুরি মারার স্বভাব আপনার কখনোই যাবেনা।
নীড়: যেটা তুমি মনে করো।কিন্তু শুধু এটা মনে রেখো যে তুমি আমার। শুধুই আমার। তুমি আর নির্বন আমার। আমার পরিচয় এটা নয়যে আমি নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। আমার পরিচয় হলো আমি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর স্বামী আর নির্বন আহমেদ খান চৌধুরীর বাবা। তোমার স্বামীতো তাই তোমার মতো করেই তোমাকে আমার করে নিলাম।
মেরিন: আমি কাউকে ছলনা করে নিজের করিনি। আমি যা করি সামনা সামনি করি।
নীড়: তবে সেদিন ছলনা করে কেন আমার জীবনের সুখ নিয়ে চলে গিয়েছিলে? জীবনের রং নিয়ে গিয়েছিলে?
মেরিন: আমি কারো কখনোই নেইনা। ১ জনকে নিজের ভেবে নিয়েছিলাম। কিন্তু সেও অন্যেরই প্রমান হলো। তাই যার জিনিস তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আর কেবল মাত্র নিজের জীবন নিয়ে চলে গিয়েছিলাম।
নীড়: না। নির্বন শুধু তোমার না। আমারও। নির্বন আমাদের আর তুমি শুধুই আমার। আজীবন আমরা একসাথে থাকবো।
মেরিন:আপনি নির্বনের বাবা হতে পারবেন কিন্তু কখনোই নির্বনের মায়ের স্বামী হতে পারবেন না।
নীড়: নির্বনের মায়ের ভালোবাসা আমি।
মেরিন: ছিলেন। এখন আপনি তার অতীতে করা ভুল।
নীড়: ভুল নাকি ফুল সেটা সময়ই বলবে। ভুলকে ফুলের মালা করে আবার গলায় জরাবে । নির্বনের মা আবার নির্বনের বাবাকে ভালোবেসে মেনে নিবে।
যাই হোক এখন আমার ছেলেকে বলো যে আমি ওর বাবা।যদি তুমি আপসে না মানো contract তবে আমি আদালতে যাবো। নির্বনকে আমার সাথে share না করলে নির্বনকেও হারাবে।
.
মেরিনের মধ্যে আর কোনো কিছু হারানোর শক্তি নেই। আর ও জানে যে ওর ভাগ্য ওর প্রতি এতোটাই নির্মম যে হয়তো নির্বনকেও কেরে নিবে। আর ও এখন সেই মেরিন নেই যে নির্বনকে নিজের করে রাখতে পারবে। যখন power ছিলো তখনই তো নিজের ভালোবাসাকে মনের খাচায় বন্দী করে রাখতে পারেনি। আর এখন তো নিঃস্ব। তাই মেরিন দরজা খুলে নিচে গেলো। নির্বন ছুটে এলো।
নির্বন: মামনি।তুমি ঠিক আছো?
মেরিন: হামম। বাবাই মামনি তোমাকে ১টা কথা বলতে চাই।
নির্বন: কি কথা?
মেরিন: এই কথাই যে তোমার মামা সত্যি কথাই বলছিলো যে ওই uncle টাই তোমার বাবা….
নির্বন: সত্যি মামনি?
মেরিন: হামম।
নির্বন: আমি আমার বাবার কাছে যাই?
মেরিন: যাও।
.
নির্বন বাবা বলে দৌড়ে নীড়ের কাছে গেলো। নীড়ও ছেলেকে বুকে জরিয়ে নিলো। কেদে দিলো নীড়।
নির্বন: বাবা তুমি কি কাদছো?
নীড়: নারে বাবাই।এটা তো খুশির কান্না। তুমি আবার আমাকে বাবা বলে ডাক দাওনা সোনা।
নির্বন: বাবা।
নীড়: আবার?
নির্বন: বাবা।
নীড়: আবার বলো।
নির্বন: বাবা বাবা বাবা।
নীড়:বারবার বাবা বলতেই থাকো বাবাই।
নির্বন: বাবা বাবা বাবা আমার বাবা।
নীড় নির্বনকে কোলে নিয়ে সারা বাড়ি ঘুরতে লাগলো।
নীড়: বাবা!আমিও বাবা হয়েছি বাবা। আমিও বাবা হয়েছি। আমারও সন্তান আছে বাবা। আমারও support আছে বাবা। আমারও ছায়া আছে বাবা।
নীড়ের আনন্দ দেখে সবার চোখে পানি চলে এলো। নীড় এমনভাবে নির্বনকে নিয়ে আনন্দ করছে যে নির্বন খিলখিল করে হাসছে। ছেলের হাসি দেখে বাবাও খিলখিল করে হাসছে। বাবা-ছেলের হাসি সারা চৌধুরী বাড়িতে বাজছে। ৮ টা বছর পর এই বাড়িতে হাসির শব্দ পাওয়া গেলো।
.
রাতে……
সবাই নিচে বসে একসাথে নির্বনকে আড্ডা দিচ্ছে। কিন্তু মেরিন একা একা বারান্দায় দারিয়ে তারা দেখছে। সারাটাদিন কিছুই খায়নি মেয়েটা।
নীলিমা: দেখেছো কথা বলতে বলতে ১০ টা বেজে গেলো। রাতে কিছু খাওয়ার ইচ্ছা নেই নাকি??
নীড়: যা ক্ষুধা লেগেছে না মামনি। তুমি টেবিল সাজাও আমি আর নির্বন মিলে মেরিনকে ডেকে নিয়ে আসছি। চলো বাবাই।
নির্বন: চলো বাবা।
নীড় নির্বনকে কোলে নিয়ে সিরি দিয়ে উঠছে।
নির্বন: জানো বাবাই আমি damn sure যে মামনি এখন বারান্দায় দারিয়ে শুকতারার পাশে ঝলমলে তারাটা দেখছে।
নীড়: তাই বুঝি? কিভাবে বুঝলে?
নির্বন: কারন যখন আমি ঘুম থাকি তখন মামনি সেটাই দেখে। কেন বলো তো??
নীড়: কেন?
নির্বন: কারন ওই তারাটা হলো বড়বাবা। মানে মামনির দাদুভাই।
নীড়ের মনে পরলো সেইদিনের কথা। যেদিন ও মেরিনকে এই কথাটা বলেছিলো। নীড় মুচকি হাসলো।
নির্বন: হাসছো যে বাবা?
নীড়: কিছুনা। আচ্ছা বাবাই শোনো আমরা গিয়ে মামনিকে যদি বলি যে আসো খেয়ে নাও তাহলে মামনি খাবেনা। কারন মামনি কোলকাতাকে ভীষন miss করছে। না করবে। তারমধ্যে দুপুরেও কিছু খায়নি মামনি।
নির্বন: তাহলে?
নীড়: শোনো তোমাকে কি করতে হবে?
.
বাপ-বেটা গিয়ে দেখলো যে সত্যি মেরিন আকাশের তারা দেখছে। নির্বন দৌড়ে গিয়ে মামনি বলে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো। মেরিন চোখের পানি মুছে ছেলের দিকে ঘুরলো। মেরিন নির্বনকে কোলে নিয়ে কপালে ১ টা চুমু দিলো। নীড় মেরিনের চোখ ঠিকই বুঝতে পারলো যে মেরিন কাদছিলো।
নির্বন: চলো মামনি ডিনার করি নেই।
মেরিন: এখনো করোনি?
নির্বন: উহু। তুমি রাতে না খাইয়ে দিলে কখনো কি আমি খাই?
মেরিন: আচ্ছা চলো তোমাকে খাইয়ে দিবো।
নির্বন: তুমি খাবেনা?
মেরিন: না বাবাই মামনির ক্ষুধা লাগেনি।
নির্বন: মানে কি? তুমি খাবেনা কেন?
মেরিন: এমনিতেই বাবাই।
নির্বন: তুমি না খেলে আমিও খাবোনা।
নীড়: বাবাই চলো বাবা তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি।
নির্বন: না। আমি রাতে শুধু মামনির হাতে খাই। আর দুপুরে তো তোমার হাতে খেলামই। এখন থেকে রাতে মামনির হাতে আর দুপুরে তোমার হাতে। আর তার থেকেও বড় কথা মামনি না খেলে আমি খাবোনা খাবোনা খাবোনা।
নীড়: আহ বাবাই মামনি না খেলে পরে খেয়ে নিবে। চলো আমরা খেয়েনি।
নির্বন : না না না। মামনি না খেলে আমি খাবোনা।
মেরিন বেশ বুঝতে পারছে যে এসব নীড়ের কার্সাযি।
আর ও নির্বনকেও চেনে। ও না খেলে নির্বন ১ফোটা পানিও খাবেনা। অনেক জেদী। মেরিন আর নীড়েরই তো ছেলে। ওর জেদ হবেনা তো কার জেদ হবে? নীড় মিটিমিটি হাসছে।
নীড়: তোমার না ক্ষুধা লেগেছে বাবা?
নির্বন: লাগুক। তবুও আমি খাবোনা।
মেরিন: আচ্ছা ঠিকাছে চলো তোমাকে খাইয়ে দিয়ে আমি খাবো। চলো।
নীড়-নির্বন-মেরিন একসাথে সিরি দিয়ে নামছে। একদম perfect পরিবার লাগছে। বাকিরা তাকিয়ে আছে।
.
টেবিলে,
মেরিন নির্বনকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নির্বন: মামনি তুমি খাও।
মেরিন: এই তো তোমাকে খাইয়ে তারপর খাবো।
নির্বন: না এখনই খাবে। না হলে আমি খাবোনা।
মেরিন: আহা নির্বন,জেদ করে না। এখন তো আমি তোমাকে খাওয়াচ্ছি। তো আমি কিভাবে খাবো বলো তো?
নির্বন: কেন ? বাবা খাইয়ে দেবে তোমাকে।
মেরিন: নির্বন। চুপচাপ খাও বলছি।
নির্বন: না আমি খাবোনা।
নীড়: নিজের জেদের জন্য বাচ্চা ছেলের খাওয়া বন্ধ করার কোনো মানে হয়না।
অনেক জোরাজোরি করার পর মেরিন রাজী হলো। মেরিন নির্বনকে খাইয়ে দিচ্ছে আর নীড় মেরিনকে। নিহাল চুপিসারে দৃশ্যটা বন্দী করে নিলো।
.
২ঘন্টাপর,
মেরিন নির্বনকে বুকে নিয়ে ঘুম পারাচ্ছে। সারাদিন অনেক আনন্দ করায় সাথে সাথেই নির্বন ঘুমিয়ে গেলো। সেই তখন থেকে নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। মেরিন খেয়াল করলেও ইগ্নোর করলো। মেরিন নির্বনকে খাটে শুইয়ে দিয়ে নিচে বিছানা করে শুয়ে পরলো। সাথে সাথেই নীড় ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পরলো।
নীড়: হামম বুদ্ধি টা ভালোই। নির্বন ওপরে ঘুমাবে আর আমরা এখানে রোমান্স করবো। এতোক্ষন তো ছেলেকে ঘুম পারালেই। এখন ছেলের বাবাকে ঘুম পারাও। সে যে ৮ টা বছর ধরে ঘুমায়না।
মেরিন বিরক্ত হয়ে উঠে বারান্দায় চলে গেলো।
.
নীড় গিয়ে পেছন থেকে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো। ঘারে মাথা রাখতেই মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
মেরিন: stay in your limit….. আমি আমার ছেলেকে ছারা থাকতে পারবোনা। আর শুধুমাত্র তাইজন্যেই বাধ্য হয়েই আমি এখানে আছি। তার সসুযোগ নননেয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনি নির্বনের বাবা। ভালো কথা। কিন্তু আমার স্বামী হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানিনা। আর না আপনার সাথে বিয়েটা মানি।
নীড়: same dialogue same situation আমরা আগেও face করেছি। তবে মানুষ ঘুরে গেছে। ৯ বছরআগে এই কথা গুলোই আমি তোমাকে বলেছিলাম। আর আজকে তুমি বলছো। না ৮ বছর আগে এই কথার মানে ছিলো আর না আজকে আছে। আমাদের বিয়েকে অস্বীকার করার ক্ষমতা আল্লাহ ছারা কারো নেই। তোমার আমারও নেই। তুমি চাইলেও তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে। আর না চাইলেও। তুমি মানো আর না মানো তুমি আমার বউ। এটাই সত্য।
মেরিন: বউ?
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলো। নীড় মেরিনের হাত ধরে ফেলল। ওকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে
বলল: হ্যা বউ। সব গল্পেরই এপিঠ ওপিঠ থাকে। তেমনি আমাদের গল্পেরও এপিঠ ওপিঠ আছে। আমার দিকের পিঠের সত্য তুমি জানোনা। আমি আজকে তোমাকে সেই সত্যটা জানাবো। ৮বছর আগে…. সেদিন তুমি যা দেখ……
মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
মেরিন: আমি কোনো সত্য জানতে চাইনা। আমার জীবনের একমাত্র সত্য আমার ছেলে। আর কোনো কিছু আমার জানার নেই।
নীড়: কিন্তু আমি তো তোমাকে জানাবোই।
মেরিন: আমি শুনবোনা। নির্বনের ওপর কোথাও না কোথাও আপনার অধিকার আছে। কারন ছলনার হলেও সে মুহুর্ত গুলো সত্য ছিলো। তাই biologically আপনি নির্বনের বাবা। তাই আপনি ওর সাথে থাকতে পারবেন। আপনার বাড়িতে ও থাকবে। কিন্তু ওর যাবতীয় সব খরচ আমি দিবো। এগুলো শুধুই আমার অধিকার।
নীড়: কিন্তু ও আমাদের ছেলে।
মেরিন: আমি আর আপনি কখনোই আমরা হতে পারবোনা।
নীড়: মেরিন তুমি,
মেরিন: যে মেরিনকে আমি ৮টা বছর আগে জীবীত কবর দিয়েছি সেই মেরিন নামের প্রলয়কে আর জীবনদান করবেন না।
মেরিন গিয়ে শুয়ে পরলো।
নীড়: আমি তো আমার সেই ভয়ংকর মেরিনকেই চাই। যাকে ভালোবেসেছিলাম। আমি কোনো অসহায় মেরিনকে ভালোবাসিনি।
নীড় ভেতরে গিয়ে মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুইয়ে বুকের একপাশে নির্বন আর অন্যপাশে মেরিনকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো। মেরিন ছোটার হাজার চেষ্টা করেও পারলোনা।
.
পরদিন, সকালে।
নীড় ঘুম থেকে উঠে মেরিনকে ওর আগের style এ good morning kiss করে নিলো।
.
একটুপর….
মেরিন নির্বনকে ready করিয়ে নিজেও ready হয়ে নিলো।
নীড়: ওকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
মেরিন: স্কুলে ভর্তি করাতে।
নীড়: ওর ভর্তি হয়ে গেছে।
মেরিন: মানে?
নীড়: ভর্তি মানে ভর্তি। আমার ছেলেকে best school এ admit করিয়েছি। যেদিন এখানে এসেছি সেদিনই। after all , খান & চৌধুরী empire এর আপাদত একমাত্র সম্রাট বলে কথা।
নির্বন: বাবা আপাদত একমাত্র সম্রাট মানে কি?
নীড়: সম্রাট মানে কি?
নির্বন: Emperor.
নীড়: good boy…. আপাদত একমাত্র মানে হলো খুব তারাতারি মামনি আর বাবা মিলে নির্বনের জন্য ১টা cute ছোট আপুমনি যার নাম কিনা নিরাম তাকে আনতে চলেছি। যে নির্বনকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকবে।
নির্বন: সত্যি?
নীড়: হামম। তিন সত্যি।
নির্বন: আচ্ছা বাবা আপুমনির নাম নিরাম কেন?
নীড়: তোমার মামনির নাম কি?
নির্বন: আড়াল।
নীড়: না বাবা মামনির আরো ১টা নাম আছে। সেটা হলো মেরিন। Marin…. আর এই ইংরেজীতে Marin নামটাকে উল্টে দিলে কিহয়।
নির্বন: N I R A M…..
নীড়: বানান করো।
নির্বন: নিরাম।
নীড়: good … তো নিরাম মানে হলো তোমার মামনির নামের উল্টোটা। যেখানে তোমার মামনি আর আমি ২জনই আছি।
নির্বন: মজার তো।
নীড়: now give me a high five…..
নির্বন দিলো।
নীড় :good boy…. now go… দাদুভাই আর নানাভাই তোমার জন্য wait করছে। নির্বন দৌড়ে চলে গেলো।
.
মেরিন জানে নীড়ের কথায় এখন react করলে নীড় আরো পেয়ে বসবে। তাই react না করে নিজের সকল certificate , আর অন্যসব কাগজপত্র গোছগাছ করছে। তখন ধাম করে নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন: আরে কি করছেন কি?? নামান…..
নীড়: বারে আমি মেয়ের বাবা হবোনা??
মেরিন: কল্পনাও করবেন না।
নীড়: আরে আমি এখনের কথাই বলেছি নাকি? তবে ১দিন না ১দিন তো হবোই।
মেরিন: আপনার নিরার কাছে যান।
নীড়: ok… but আত্মাদের কি baby হয়?
মেরিন: আত্মা মানে?
নীড়: মানে অনেক কিছু। সময় নিয়ে বলবো। যেদিন তুমি শুনতে চাইবে। তখন নির্বনের আসার আভাস পেয়ে নীড় মেরিনকে নামিয়ে দিলো।
.
নির্বন: মামনি,
মেরিন: হ্যা বাবাই।
নির্বন: আজকে নাকি আমরা নানুৄবাসায় যাবো। নানাভাই বলল।
মেরিন: না সোনা,তোমার না তো নানাভাই আছে। আর না নানুবাসা । তাই তুমি যাবেনা। মামনি এখন বের হচ্ছি। একটুপরই চলে আসবো। ততোক্ষন good boy হয়ে থাকবে।
নীড়-নির্বন: কোথায় যাবে?
মেরিন: মামনি এখন জবের জন্য যাচ্ছি।
নির্বন: কিসের জব?
মেরিন: মামনি আগে কিসের জব করতাম? ডাক্তারের তাইনা।
নির্বন: তুমি কোলকাতা যাবে?
মেরিন মুচকি হেসে বলল: না রে বোকা । ঢাকারই কোনো hospital এ। now give me a আপ্পা।
নীড়: অন্য হসপিটালে কেন জব করবে? ২ বাবা মিলে তোমার নামের ১ টা হসপিটাল করেছে তুমি সেখানের MD হবে।
মেরিন: আপনার বাবাদের হসপিটালে আমি কেন MD হবো? তারা আপনার বাবা। আমার না। আমি এতিম। অনাথ।
নীড়: মেরিন ১ টা ছোট বাচ্চার সামনে।
মেরিন: ও আমার ছেলে। আমি ওকে সেই বাস্তব পৃথিবীর সাথে পরিচিত করতে চাই। সবাইকে সম্মান করতে শিখিয়েছি, ঘৃণার বদলেও ভালোবাসতে শিখিয়েছি কিন্তু সাদা কে সাদা আর কালো কে কালো হিসেবেই দেখতে বলেছি। আমি চাইনা আমার ছেলে আমার মতো ভুল করুক। ভুলকে ফুল ভাবুক। কিন্তু সবটাই যেন ভালোবাসা দিয়ে করে।
নীড়: মেরিন তুমি,নির্বন বাবা একটু নানাভাইয়ের সাথে খেলা করো।
নির্বন চলে গেলো।
.
নীড়: তুমি,
মেরিন: নীড় আমাকে আমার মতো থাকতে দিন।
নীড়: যাই হোক। তুমি MD নাই বা হলে জবই করো। but আমাদের হসপিটালেই করো।
মেরিন: না। আমি গরীব হলেও ভিখারী নই। আমি কারো ভিক্ষা নেই না। নিজের দক্ষতায় চাকরি করবো।
নীড়: আমার ১টা ফোন তোমার জন্য সব দরজা বন্ধ করে দেবে।
মেরিন: আমার তো সকল দুয়ার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। যাও নতুন ১টা দরজা খুলেছিলো তাও বন্ধ করে দিয়েছে। ঘৃণারমেরিন থেকে ভালোবাসার আড়াল হয়েছিলাম। তাও কেরে নিলেন।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
নীড়: আমার মনে তোমার জন্য কোনো ভালোবাসাই ছিলোনা। ঘৃণা ছিলো। তবুও তোমার ভালোবাসার কাছে হার মেনেছিলাম। এখন আমার ভালোবাসার কাছে তোমারে হারতে হবে। আর তোমার মনে তো আমার জন্য আগে থেকেই ভালোবাসা আছে। তাই আমি পারবো ইনশাল্লাহ। তোমাকে আমি গত ৮বছরের দুঃখের কথা শুনিয়ে তোমার ভালোবাসা আদায় করবো না। আমি ভালোবেসে তোমার ভালোবাসা আদায় করবো । তুমি তোমার অতীত আড়াল করেছিলে আমার কাছে। তেমনি আমিও এই ৮বছর আড়াল করবো। অভিমান কে হারিয়ে ভালোবাসাকে জিতাবো। নিজেকে কথা দিলাম।
নীড় কাউকে ফোন করলো।
.
ওদিকে…..
মেরিন ঢাকা মেডিকেলে apply করলে সেখান থেকে ওকে সোহরাওয়্যার্দীতে পাঠালো। ও সেখানেই practice করতে পারবে। পরে মন মতো chamber এ বসতে পারবে। মেরিন খুশি হলো। সেই সাথে অবাকও।
মেরিন: এতো সহজেই হয়ে গেলো? mr. chowduri কিছু করেনিতো? না উনি কিছু করলে তো জবটাই হতোনা।
আসলে নীড়ের জন্যেই মেরিন জবটা পেলো। কারন মেরিন ওদের কাহিনি আবার নতুন করে শুরু করতে চায়। ঘটনা যেখানে শুরু হয়েছিলে সেখানেই ফিরতে চায়।
…..
……..
[চলবে..]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১৪
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
মেরিন জবটা পেয়ে খুশিই হলো। ওদিকে নীড়…..
নীড়: আমি তোমার সেই রাগ আবার ফিরিয়ে আনবো। তোমার চোখের সেই আগুন ফিরিয়ে আনবো। আড়ালকে মেরিন বানাবো। আর এরপর মেরিনকে মিষ্টি।
.
রাতে……
মেরিন কাপড় চোপর গোছাচ্ছে। নীড় ওদের ৩জনের জন্য খাবার ঘরে নিয়ে এলো। কারন মেরিন যতোই বলুক যে দুপুরে খেয়েছে কিন্তু নীড় জানে যে মেরিন আসলে খায়নি। তাই নীড়ও কিছু খায়নি।
নীড়: নির্বন….. খাবার নিয়ে এসেছি। মামনিকে নিয়ে আসো। আমরা ৩জন মিলে খাই।
নির্বন: মামনি চলো।
মেরিন: বাবাই…..
নির্বন: আজকেও কি বলবে ক্ষুধা লাগেনি?
মেরিন: না বলবোনা। তবে আসো আগে তোমাকে খাইয়ে দেই।
নির্বন: কিন্তু মামনি জানো বাবা না সকাল থেকে কিছু খায়নি।
মেরিন: হামম।
নির্বন: বাবা না বিকালবেলা খেলার সময় হাতে ব্যাথা পেয়েছে। এত্তোগুলা রক্ত বের হয়েছে।
মেরিন: হামম।
নির্বন: বলছিলাম কি মামনি….. বাবা কাটা হাত দিয়ে কিভাবে খাবে?
মেরিন:…..
নির্বন: মামনি বলছিলাম কি তুমি আমার সাথে বাবাকেও খাইয়ে দিবে?
মেরিন: what?
নির্বন: বাবাকেও খাইয়ে দাওনা…. please ….
মেরিন: না… দেখি হা করো।
নির্বন: তুমি না আমার মিষ্টি আম্মু। আমার সব কথা সবসময় রাখো। তাহলে বাবাকেও খাইয়ে দাওনা। প্লিজ।
মেরিন: না বাবা….
নির্বন:কেন? দাও না দাও না।
মেরিন: নির্বন…..
নির্বন: বাবাকে না খাইয়ে দিলে আমিও খাবোনা।
মেরিন: নির্বন তুমি কিন্তু জেদ করছো। গুড বয় রা জেদ করেনা। দেখি হা করো।
নির্বন: আমি খাবোনা।
মেরিন: নি…. তুমি না খেলে কিন্তু মামনিও খাবোনা।
.
নির্বন পরে গেল বিপদে। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। একদিকে মামনি আরেক দিকে বাবা। মহা confused হয়ে গেলো। আর confused হয়ে গেলে নির্বন কান্না করে দেয়। তাই এখনও কান্না করে দিলো। যা দেখে নীড়-মেরিন অস্থির হয়ে গেলো।
নীড়-মেরিন: কাদেনা বাবা…..
নির্বন ভ্যা ভ্যা করে কেদেই যাচ্ছে। মেরিন জানে নির্বন confused হয়েই কান্না করছে। মেরিন নির্বনকে কোলে নিয়ে
বলল: কাদেনা কলিজা.. মামনির লক্ষি বাচ্চানা তুমি। তুমি কান্না করলে কিন্তু মামনিও কেদে দিবে।
মেরিন অনেক কষ্টে নির্বনকে থামালো। সেই সাথে নীড়কেও খাইয়ে দিতে রাজী হলো। মেরিন আগে নির্বনের মুখে দিলো। এরপর নীড়ের মুখে দিতে গেলো। নীড়ও মুখে নিলো। মেরিন ২বাবা ছেলেকে দেখতে লাগলো। একই ভাবে ২জন হা করে। একইভাবে খায়।
২জন একই সাথে বলল: yummy….
মেরিন অজান্তেই হেসে দিলো। মেরিন ২জনকে খাইয়ে দিলো। কিন্তু নীড় খাবার কম মেরিনের হাত বেশি খাচ্ছিলো।
নির্বন: মামনি এখন তুমি খেয়ে নাও।
মেরিন: হামম।
.
কিছুক্ষনপর…..
মেরিন বাসনপত্র রান্নাঘরে রেখে রুমে এসে দেখে বাবা ছেলে একসাথে খেলছে। আর হো হো করে হাসছে। মেরিন কিছুক্ষন ২জনকে দেখলো। মেরিন ওদেরকে একা ছেরে দিয়ে বাগানে চলে গেলো।
মেরিন মনে মনে: উপরওয়ালা যা করে হয়তো ভালোর জন্যেই করে। বাবা-মায়ের ভালোবাসার জন্য সারাটা জীবন চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করেছি কিন্তু পাইনি। আমি চাইনা আমার ছেলের সাথেও এমন কিছু হোক। আমি নির্বনকে অনেক ভালোবেসেছি। কিন্তু বাবার ভালোবাসা দেয়া সম্ভব ছিলোনা। বাবার হাহাকার ছিলো ওর মধ্যে। তাই আমি চাই আমার ছেলেটা তার মা-বাবা ২জনেরই ভালোবাসা পাক।
তখন কেউ ওর কাধে হাত রাখলো। তবে স্পর্শটা মেরিনের অচেনা মেরিন ঘুরে দেখে কবির। সাথে সাথে পিছিয়ে গেলো।
কবির: মামনি….
মেরিন আর দেরি না করে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।
.
মেরিন রুমে ঢুকতেই
নির্বন: ওই তো মামনি চলে এসেছে।
মেরিন: কি হয়েছে?
নির্বন: মামনি আসো আসো…. আমরা ৩জন আজকে একসাথে ঘুমাবো। কালকে তো আমি ভুল করে ঘুমিয়েই পরেছিলাম। তাই তো ৩জন একসঙ্গে শুয়ে ছবি তুলতে পারিনি। সেলফি নিতে পারিনি।
মেরিন: সেলফি?
নির্বন: হামম সেলফি।
মেরিন: সেলফি কেন?
নির্বন: বারে সেলফি তুলে আমার বন্ধুদের আর প্রাণকে দিবোনা?
মেরিন: বন্ধুরা তো ঠিক আছে। কিন্তু প্রাণ কে কেন?
নির্বন: ওকে তো সবার আগে দেখাবো। কারন ও রোজ আমায় শোনাতে যে ওর বাবার সাথে হেন করেছে ত্যান করেছে। রাতে বাবা এই গল্প বলেছে। আরো কতো কি। আর বলতো আমি নাকি এমন moment কখনো পাবোনা। কারন আমার বাবা নেই। তাই ওকে দেখাবোনা… ও এমন করতো বলেই তো আমি ওকে….
মেরিন: ওকে?!
নির্বন মনে মনে : ওকে পিটিয়েছি।
নির্বন: আমি ওকে জবাব দিবো। আমাদের ছবি দেখিয়ে।
মেরিন: ছিঃ বাবা….. এমন করে বলতে নেই। প্রতিহিংসা ভীষন খারাপ জিনিস। এমনটা করলে আল্লাহ নারাজ হয়। কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তাকে ভালোবেসে বোঝাতে হয়। ও তোমার অপছন্দ ভালো কথা। সেটা মনের মধ্যে রাখো। সেটা প্রকাশ করে প্রতিহিংসা বারানো ঠিকনা। তুমি কিছু করবে এর প্রতিশোধে ও কিছু করবে পরে আবার তুমি কিছু করবে। এমনভাবে চলতে থাকলে তো তোমরা কখনো বন্ধু হবেনা। সবার সাথে ভালো ব্যাবহা করবে।
নীড়: no baby…. কেউ বিনা দোষে তোমাকে ১টা ঘুষি দিলে তুমি তাকে ১০টা দিবে।
নির্বন: কিন্তু মামনি যে বলে মারামারি করা ভালোনা।
নীড়: আরে শুধু শুধু মারবে নাকি? তোমাকে কেউ বিনা কারনে মারলে তাকে ছারবে কেনো? তাকে দে দানা দান মারতেই থাকবে। কেউ যদি কিছু বলে তো তুমিও বলে দেবে জানো আমি কে? আমি নির্বন আহমেদ খান চৌধুরী। আমার মামনি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । আমার বাবার নাম নীড় মেরিন আহমেদ খান চৌধুরী বর্ষন। দেখবে কেউ তোমার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই সাহস পাবেনা।
.
মেরিন বেশ বুঝতে পারছে যে নীড় ওকে রাগানোর চেষ্টা করছে।
নির্বন: আচ্ছা বাবা মামনির নামে তোমার নাম নীড় আছে। আবার তোমার নামেও মামনির নাম মেরিন আছে। কেন?
নীড় মুচকি ১টা হাসি দিয়ে
বলল: কারন আমরা এক মন এক প্রাণ। তাই।
মেরিন: নির্বন brush করেছো?
নির্বন: উইই ভুলে গেছি। আচ্ছা মামনি আগে সেলফিটা তুলে নেই তারপর করবো।
মেরিন: না বাবাই আগে brush করে আসো।
নির্বন: ok মামনি।
নির্বন washroom এ যেতেই মেরিন কোনো কথা না বলে bag থেকে ৩০হাজার টাকা দিয়ে
বলল: এটা আমার আর আমার ছেলের থাকা খাওয়ার খরচ। প্রতি মাসে আপনি শুরুতেই টাকাটা পেয়ে যাবেন। নির্বন যদি কিছু চায় তবে সেটা আমিই দেবো। আর এমনিতেও নির্বন তেমন আবদার করেনা।
নীড় অবাক চোখে দেখছে। নীড় টেনে মেরিনকে বারান্দায় নিয়ে গেলো।
নীড়: এসবের মানে কি?
মেরিন: কালই বলেছিলাম যে আমার ছেলের যাবতীয় খরচ আমিই দিবো।
নীড়: মেরিন…. অভিমানে এমন কিছু করোনা যার জন্য আমাকে তোমার ওপর রাগ করতে হয়। আমার ছেলেকে খাওয়ানোর খরচ নেবো আমি।
নীড়ের চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে। মেরিন নীড়ের চোখ দেখে ভয় পেলো।
মেরিন চোখ নামিয়ে
বলল: নননির্বন আমার ছছছেলে। তততাই ওর ভভভভরন পপপোষনের দায়িত্ব আমার।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলে নীড় মেরিনকে টেনে নিয়ে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। শেষে ১টা কামড় দিলো। মোটামোটি জোরেই।
নীড়: এটা তোমার শাস্তি। ধরো তোমার টাকা। আমাকে টাকা দেখাতে আসবেনা। আর কখনো আমার সাথে চোখ নামিয়ে কথা বলবেনা….. got it?চোখ নামিয়ে কথা বলা তোমাকে মানায়না।
নির্বন : মামনি বাবা তোমরা কোথায়?
নীড়: এই তো। চলো সেলফি তুলি।
নীড় নির্বনকে বুকের ওপর শুইয়ে মেরিনের পাশে আধশোয়া হয়ে সেলফি তুলল।
নির্বন: মামনি…
মেরিন: হামম।
নির্বন: আজকে আমি বাবার বুকে ঘুমাই ?
মেরিন:….. হামম।
নির্বন: yeappy….. বাবা তুমিও কিন্তু মামনির মতো গল্প শোনাবে।
নীড় জবাব দিবে কি? ও তো এটাই চেয়েছিলো। সেদিন রাতে নির্বন ঘুমানোর পর বুকে নিয়েছিলো। আর আজকে ওর বুকেই ঘুমাবে। নীড় নির্বনের কপালে চুমু দিলো। নীড় নির্বনকে বুকে জরিয়ে নিয়ে গল্প শোনাতে লাগলো। নির্বন ঘুমিয়ে পরলো। নীড়ের চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। নির্বন ঘুমিয়ে গেলে মেরিন খাট থেকে উঠতে নিলে নীড় টেনে নিজের কাছে নিয়ে নিলো।
নীড় মেরিনের কপালে কপাল ঠেকিয়ে
বলল: এতো সুন্দর ১টা উপহারের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করবোনা তোমায়। বাবা হওয়ার মধ্যে যে এতো সুখ আছে তা জানতাম না।
মেরিন: দেখি ছছছারুন ঘুমাবো…..
নীড়: ঘুমাও। আমার বাহুতে।
মেরিন:ওটা আআমার জজজায়গা না।
মেরিন সরে যেতে নিলে নীড় মেরিনকে শক্ত করে ধরে রাখলো। বউ ছেলেকে জরিয়ে ধরে নীড় ঘুমিয়ে গেলো।
.
সকালে…..
আজকে মেরিনের আগে ঘুম ভাঙলো। দেখলো রাতে যেভাবে ঘুমিয়েছিলো এখনো নীড় ঠিক সেভাবেই জরিয়ে ধরে রেখেছে। রাতে মেরিন ভেবেছিলো নীড় ঘুমিয়ে গেলে ও উঠে যাবে। কিন্তু নীড়ের বাহুডোরে অতি সহজে মেরিনই আগে ঘুমিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে মেরিন নিজেকে ছারালো। দেখলো নির্বন বাবার বুকে চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে। আর নীড়ও পরম যত্নে জরিয়ে রেখেছে।
মেরিন মনে মনে: আমার ছেলেটা বাবার জন্য হাহাকার আর থাকবেনা। এতোদিন তো কষ্ট করেই এসেছি। বাকীটা জীবন না হয় তোর জন্য কষ্ট করে এদের ভীরে বাস করবো। তবু তুই সুখে থাক সোনা।
.
মেরিন হসপিটালে গেলো। আর যেতেই ধিরিম করে ১জনের সাথে ধাক্কা লাগলো। পড়ে যেতে নিলে সে তাকে ধরে নিলো। চোখ মেলে দেখলো নীড়। মেরিন সরে দারাতে চাইলো। কিন্তু পারলোনা।
নীড় ওভাবে দারিয়েই
বলল: ভালোবাসি।
মেরিন: what?
নীড়: ভালোবাসি।
মেরিন: মানে?
নীড়: ভালোবাসি মানে ভালোবাসি।
মেরিন: পাগল হলেন নাকি?
নীড়: হামম তোমার প্রেমে।
মেরিন: দেখি ছারুন সবাই দেখছে।
নীড়: দেখুক তাতে আমার বাপের কি? তখন ১টা লোক এগিয়ে এলো।
বলল: আপনার সাহস তো খুব বেশি এতো গুলো মানুষের সামনে ১টা মেয়ের সাথে বেয়াদবি করছেন?
নীড়: ডন… ডন…..
মেরিন: ডন?
নীড়: my new assistant ….
ডন: yes sir……
নীড়: handle that person …..
ডন: yes sir…..
মেরিন সেই দিনের কথা কল্পনা করলো যেদিন নীড়ের সাথে প্রথম ওর দেখা হয়েছিলো। সব এমনই হয়েছিলো। শুধু আজকে যেই ভালোবাসি নীড় বলছে সেদিন মেরিন বলেছিলো। মেরিন অনেক কষ্টে নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নীড়: hey jaan….. see you soon….
.
মেরিন রোগী দেখতে লাগলো। তখন অন্য ১টা doctor হাত বারিয়ে
বলল: hello i m doctor নোমান। আপনি তখন কিছু বললেন না কেন? এই সমস্ত লোককে সায় দিবেন না। আমাকে বলতে পারেন।
বলেই লোকটা মেরিনের ঘারে অন্য হাত রাখতে নিলো। আর তখনই নীড় দুম করে এসে নোমানের সাথে হাত মিলিয়ে
বলল: & i m নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। & she is my wife……
বলেই নোমানের হাতে এমন জোরে চাপ দিলো যে নোমানের জান যায়যায়। এরপর নোমানকে নিচে ফেলে ২হাত মোচর দিয়ে
বলল: আমার বউয়ের দিকে হাত…. আমি তোর এমন হাল করবো যে …..
নীড় নোমানকে মারতে মারতে নিচে সবার সামনে নিয়ে গেলো। এরপর মেরিনের হাত ধরে
বলল: যে যে উপস্থিত আছো সবাই শুনে রাখো যে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী হলো নীড়ের বউ। কেউ চোখ তুলে তাকানোর আগেও ১০ ভেবে নিবে।
বলেই মেরিনের হাত ধরে নিজের কেবিনে নিয়ে গেলো।
মেরিন: ছারুন আমার হাত। অনেকে লাইনে দারিয়ে আছে। উনাদেরকে দেখতে হবে।
নীড়: ৮বছরে রাগ করতে যেমন করে ভুলে গেছো তেমন করে কি ঘড়ি দেখতেও ভুলে গেছো। look at the clock ….. its lunch time… lunch break চলছে। & we have 1 hour to romance ….. & to do lunch …. ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। সকাল থেকে কিছু খাইনি।
মেরিন কোনো কথা না বলে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে নীড় ওকে কোলে নিয়ে বসলো।
নীড়: বললাম না ক্ষুধা লেগেছে। সকালবেলা না খেয়ে চলে এসেছো কেন? হামম? আর তার থেকেও বড় কথা আমার good morning kiss টা বাকি রেখে আসলে কেন? no problem …. এখনই নিয়ে নিচ্ছি।
তখনই দরজায় করা নরলো।
নীড়: হায়রে…. আমার রাজপুত্র চলে এসেছে। romance এর মাথায় বাড়ি।
মেরিন আগামাথা কিছুই বুঝলোনা। নীড় গিয়ে দরজা খুলল। আর নির্বন ঢুকে এলো। মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
নির্বন: মামনি…..
নির্বন ঝাপিয়ে গিয়ে মেরিনের কোলে গেলো।
মেরিন: ওলে আমার কলিজাটা।
নির্বন: love you এত্তোগুলা মামনি…..
নীড়: নিয়ে এলো বাবা আর love you মামনি? যাও কথা নেই।
নির্বন: আরে বাবা…. আমি তো তোমাকেও ভালোবাসি।
নীড়:ওলে আমার prince টারে……
মেরিন: তুমি এখানে?
নীড়: আমি আনিয়েছি। স্কুল তো এখনো start হয়নি পরশু থেকে হবে। আর আমি আমার champ কে promise করেছিলাম যে possible হলে দুপুরে রোজ আমি ওকে খাইয়ে দিবো। তাই আমি আমার champ কে নিয়ে এসেছি। ৩জন একসাথে খাবো বলে।
নির্বন: বাবা বাবা….
নীড়: হ্যা সোনা…. তুমি আমার সাথে সাথে মামনিকেও খাইয়ে দিবে। ok?
নীড়: of course …
মেরিন: না। আমি হাত দিয়েই খাবো।
নির্বন: কিন্তু মামনি….
মেরিন: নির্বন তুমি কিন্তু এখন অযথাই জেদ করো। মামনি কিন্তু ভীষন রাগ করবো।
নির্বন: sorry …..
৩জন খাওয়া দাওয়া করলো। বিকালবেলা ৩জন একসাথেই বাসায় গেলো।
.
দিন কাটতে লাগলো। নীড় মেরিনের সাথে তেমনটাই করে যেমনটা মেরিন আগে ওর সাথে করতো। মেরিনের মনে হচ্ছে ঘড়ির কাটা উল্টো ঘুরছে। নীড় মনে প্রানে চেষ্টা করছে মেরিনের রাগ ফিরিয়ে আনার। কিন্তু কোনোভাবেই কোন কাজ হচ্ছেনা। পরে ওর মাথায় ১টা plan এলো।
নীড়: আমি যদি নিজেকে বিপদে ফেলি তবে বুঝে যাবে যে নাটক করছি। কারন তুমি আমায় সবটা চেনো। কিন্তু …….
.
পরদিন…..
মেরিন নির্বনকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। নীড় ২দিন ধরে ব্যাস্ত। তাই ২দিনধরে মেরিনই আসে। গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ break মারলো।
মেরিন: কি হলো driver ভাই?
driver : জানিনা ম্যাডাম কে যেন রাস্তার মাঝে পরে আছে। রক্তাত্ব অবস্থায়।
মেরিন: আল্লাহ বলে কি? চলুন তো দেখি…..
driver: না না। আমি যাবোনা। পরে গুন্ডা বদমাশ হলে।
মেরিন: আর যদি সত্যি আহত হয়ে থাকে।
মেরিন নির্বনকে গাড়িতে রেখেই বের হলো। কিন্তু সামনে যেতেই বুঝলো যে লোকটা নাটক করছে। ৮-১০জন লোক বেরিয়ে এলো। ওদের ঘিরে ফেলল। driver তো ভয়ে দৌড়। মেরিন তো ভয়ে কাপছে।
মেরিন: আআপনারা ককারা?? ককি চচচান?
১জন বলে উঠলো: চাইতো চৌধুরীর নাতিটা। সালা আমাদের বস কে ফাসির শাস্তি দিয়ে দিলো। এই তুলে নিয়ে আয় তো।
মেরিন: নননা এএমন করবেন না।
ওরা নির্বনকে নিয়ে যেতে নিলো।
মেরিন: নননা নননা এমন কককরবেন না। ও কককি কককরেছে?ও ততো ছোট মমমানুষ। ওর তততো দদোষ নেই। আর দাদুরও তো দদদোষ ননেই। সসসে তততো ১জন জজ। তততিনি তো নিজের কাজ কককরবেনই। গুন্ডারা মেরিনের কোনো কথা না শুনে নির্বনকে তুলে নিয়ে গেলো।
মেরিন ভুল করে আজকে mobile টাও আনেনি। আর রাস্তাটা এতোই নির্জন যে ধারে কাছে কেউ নেই। কি করবে মেরিন? এদিকে নির্বন কাদছে আর মামনি মামনি বলে ডাকছে।ওদের গাড়ি অনেকটা দুরে চলে গেছে। আবছা দেখা যাচ্ছে। না মেরিন কোনো মতেই নিজের ছেলেকে হারাতে পারবেনা। দৌড়ে গিয়ে গাড়ির driving sit এ বসলো। গাড়ি start দিলো। ভীষন speed এ গাড়ি ছুটালো। ৮বছর পর মেরিন গাড়ি চালাচ্ছে। তাও এতো জোরে। ওদের গাড়ি প্রায় ধরে ফেলেছে। ওদের গাড়ি ১টা গোডাউন type জায়গায় গিয়ে থামলো। ওরা নির্বনকে ভেতরে নিয়ে গেলো। মেরিনও দৌড়ে ভেতরে ঢুকলো।
.
মেরিনকে দেখেই লিডারটা বলল: এই মাইয়াটা এদিকে কেন?
মেরিন: আআআমার ছছেলেকে ছছছেরে দিন না। আমি হহহাত জজজোর করে বববলছি আআআমার নির্বনকে ছেরে দিন।
লিডার: ছেরে দিবে? এখন তোর সামনে তোর ছেলেকে টুকরো টুকরো করবো। এই ওর হাত ২টো ধরে রাখ।
তখন ২টা মেয়ে ওকে আটকে রাখলো। লিডার ১টা ছুরি নিয়ে নির্বনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মেরিন অনেক আকুতি মিনতি করছে। কিন্তু লিডার দানবের মতো হাসতে হাসতে নির্বনের দিকে যাচ্ছে।
নির্বন: মামনি বাচাও মামনি। বাচাও মামনি। বাচাও আমাকে…….
লিডার নির্বনের কাছে চলে গেলো। আর মেরিন নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। নিজেকে ছারিয়ে একেক টাকে ডিটারজেন্ট ছারাই ধুয়ে দিতে লাগলো। সবার শেষে ধরলো লিডারটাকে। ছো মেরে ওর হাত থেকে ছুরি টা নিয়ে নিলো।
মেরিন: তুই আমার ছেলেকে কেটে টুকরো টুকরো করবি? আমার ছেলেকে? তুই জানিস আমি কে?? জানিস? মেরিন বন্যা খান। এখন তোর এই ছুরি দিয়ে তোকেই কেটে টুকরো টুকরো করবো।
মেরিন রাগে কুমাচ্ছে। হাতের ছুরি নিয়ে লিডারের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলে। লাথি মেরে লিডারকে নিচে ফেলে ওর পেটে পারা দিয়ে ধরলো। আজকে মেরিনের হাত থেকে লিডারকে কেউ বাচাতে পারবেনা। just ছুরি দিয়ে আঘাত করবে তখন নির্বন মামনি বলে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন ছুরিটা ফেলে নির্বনকে কোলে নিয়ে
বলল: বাবাই তুমি ঠিক আছো?
নির্বন:হামম।
মেরিন:তো…
তখনই কারো হাত তালির শব্দ পাওয়া গেলো। মেরিন সামনে তাকিয়ে দেখলো যে নীড়। মেরিন অবাক হলো। নীড় নির্বনের কাছে গিয়ে দারালে বাবা-ছেলে ২জন high five দিলো।
নীড়: ডন….ডন….
ডন: yes sir…..
নীড়: নির্বনকে বাসায় নিয়ে যাও। আর ওদেরকে হসপিটালে পাঠাও। এদেরকে বাকী payment করে দাও। যা কথা ছিলো তার ২গুন দিও। সবাই চলে গেলো।
.
মেরিনের কাছে সবটা স্পষ্ট। এসব নীড়ের plan ছিলো। মেরিন ঠাস করে নীড়কে থাপ্পর মারলো। থাপ্পর খেয়ে নীড় অন্য গাল বারিয়ে দিলো।
নীড়:মারো।
মেরিন নিচে পরে থাকা
ছুরিটা হাতে নিয়ে নীড়কে ঘুরিয়ে ওর চুল ধরে ওর গলায় ছুরি ঠেকালো।
মেরিন: কেন করলেন এমন নী..mr. chowdhuri? কেন?
নীড়: তোমাকে পাওয়ার জন্য। আসল তোমাকে পাওয়ার জন্য। রাগী , ভয়ংকারী মেরিনকে।
মেরিন: আপনার কোনো আন্দাজ নেই আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আপনি এমন কেন? যদি আমার ছেলের কিছু হয়ে যেতো?
নীড়: আমাদের ছেলে…… আর হ্যা নির্বনের গায়ে ফুলের টোকাও লাগেনি। আর ওরাও কেউ professional গুন্ডানা। Actor …ওরা আদর করেই এনেছিলো নির্বনকে।
মেরিন: খুব শখ ছিলোনা আপনার মেরিন বন্যাকে ফেরানোর? এখন দেখুন এই মেরিন কি কি করে…..
বলেই মেরিন হাতের ছুরি টা খুব জোরে আছার মেরে বেরিয়ে গেলো।
.
নীড়: আমার রাগী মেরিনতো ফিরে এলো….. বাকীটা সামলে নিবো। আর তোমার next step কি হবে সেটাও আমি জানি…. এবার জমবে মজা। যখন বাঘ-বাঘিনী no no…. সিংহ-সিংহী মুখোমুখি হবে। নীড়-মেরিন এবার প্রেম খেলায় মজবে।
…..
……..
[চলবে……]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১৫
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
মেরিন হনহন করে চৌধুরী বাড়িতে ঢুকলো। নির্বন নিচে বসেছিলো। মেরিন বাড়িতে ঢুকেই নির্বনকে নিয়ে ওপরে গেলো। মেরিন রেগে আছে। তাই নির্বন কোন কথা বলছেনা। মেরিন ওদের ২জনের ব্যাগ গুছাচ্ছে।
নির্বন: মামনি আমরা কোথায় যাচ্ছি?
মেরিন:…..
নির্বন: ও মামনি আমরা কোথায় যাচ্ছি?
মেরিন: কোলকাতা।
নির্বন: কেন? বাবা যাবেনা?
মেরিন: তুমি কি যাবেনা? বাবার কাছে থাকবে?
নির্বন: আমি কি বলেছি….
মেরিন: না তোমার তো আবার এখন বাবাই প্রিয় হয়ে গেছে। থাকো বাবার কাছে। আমি চলে যাচ্ছি।
নির্বন: না মামনি। আমি তোমাকে ছারা থাকতে পারবোনা।
মেরিন: মোটেও না। তুমি বাবার কাছেই থাকো।
নির্বন: না মামনি।
মেরিন: ইউ হার্ট মি টুডেই। তোমার বাবার প্ল্যান মতো কাজ করেছো। জানো কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম?
নির্বন: সরি আর কখনো এমন হবেনা। আমি তোমার সাথেই যাবো। তোমার সাথেই থাকবো।
মেরিন: ভেবে বলছো?
নির্বন: হামম।
মেরিন: চলো তবে।
নির্বন: তুমি রাগ করে নেই তো আমার ওপর?
মেরিন: জানিনা। চলো এখন।
.
মেরিন নির্বনকে কোলে নিয়ে নিচে নেমে এলো। দেখলো নীড় পায়ের ওপর পা তুলে বসে বসে কফি খাচ্ছে। একদম রিলেক্স মুডে এ আছে। আর বাকীরা আতংকে আছে। মেরিন ওর দিকে খেয়াল না করে দরজার দিকে পা বারালো। কিন্তু দরজা খুলতে গেলে বাজলো বিপত্তি। খুলছেনা। পাসওয়ার্ড দেয়া।
মেরিন: দরজার পাসওয়ার্ড টা বলুন মিঃ চৌধুরি।
নীড় জবাব না দিয়ে কফিই খেয়ে যাচ্ছে। যেন এটার থেকে জরুরী কোনো কাজই নেই পৃথিবীতে। মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে কফির মগটা নিয়ে ধপাস করে আছার মারলো।
মেরিন: দরজাটা খুলে দিন।
নীড়: কেন?
মেরিন: দরজা খুলতে বলেছি…..
নীড়: পাসওয়ার্ড না ভুলে গিয়েছি……. কাল সকালে মনে করে বলবো।
বলেই নীড় চলে যেতে নিলো। মেরিন নীড়ের কলার টেনে সামনে আনলো।
বলল: ভালোভাবে বলছি দরজা খুলে দিন। না হলে …..
নীড়: না হলে?
মেরিন: আমি….
নীড়: আমিও ভালোয় ভালোয় বলছি রুমে যাও। তুমি আমি যুদ্ধ করবো। খুব ভালো কথা। কিন্তু যা করবো যেভাবে করবো এই বাড়িতে থেকে। একসাথে থেকে।
মেরিন: মেরিন বন্যা সমানে সমানে লড়াই এ বিশ্বাসী।
নীড়: খান আর চৌধুরী সমান সমান ই।
মেরিন: কিন্তু না আমি খান আর না আমি চৌধুরী। আমি কেবল আর কেবল মেরিন বন্যা। নির্বনের মা। মেরিন কাল কেউটে সাপ। আপনার মতো দুই মুখো সাপ না। যে পেছন থেকে আঘাত করে। তাই আপনার সাথে আমার লড়াই কখনো হতেই পারেনা। আমার ছেলেকে নিয়ে আমি চলে যাবোই।
নীড়: নির্বন আমাদের ছেলে।
মেরিন: না। নির্বন শুধুই আমার ছেলে। যাই হোক দরজা খুলুন।
নীড়: পারলে খুলে নাও।
বলেই নীড় সিরি দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো। তখন কিছু ১টার আওয়াজ পেলো। নীড় ঘুরে দেখলো যে মেরিন ফুলের টবটা দিয়ে কাচের জানালাটা ভেঙে ফেলেছে।
.
মেরিন: মেরিনের রাস্তা আটকানোর ক্ষমতা আল্লাহ ছারা কারো নেই।
বলেই মেরিন নির্বনকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। বাইরে গার্ডরা আটকালো।
গার্ড: ম্যাম আপনি বাইরে যেতে পারবেন না।
মেরিন: নিউ গার্ডস ? তাইজন্য আমাকে চেনোনা….এম আই রাইট অর এম আই রাইট? ভালোভাবে বলছি পথ ছারো। না হলে যে কলিজা ভরা সাহস দেখাচ্ছো সেই কলিজাটাই বের করে ফেলবো।
গার্ড: সরি ম্যাম… আপনাকে যেতে দিতে পারবোনা।
মেরিন গার্ডের কাছ থেকে বন্দুক বের করে মাথায় ঠেকিয়ে
বলল: পথ ছারো। না হলে গুলি করে খুলি উরিয়ে দেবো।
তখনই নীড় পেছন থেকে এসে মেরিনকে কাধে তুলে গাড়িতে বসিয়ে কোথাও নিয়ে এলো।
.
মেরিন: আপনার সাহস কিভাবে হয়? আপনাকে তো আমি…..
নীড়: গুলি করে মারবে? এই নাও পিস্তল এন্ড শুট মি….. ঘৃণার অবসান হয়ে যাবে।
মেরিন:……
নীড়: পারবেনা আমি জানি। কারন আমি যদি তোমাকে কেটে টুকরো টুকরো করেও দেই তবু তুমি এটা করতে পারবে না। তুমি কখনোই আমাকে আঘাত করতে পারবেনা।
মেরিন:..
নীড়: আর সাহস….. সাহস তোমার থেকে আমার একটু হলেও বেশি। কারন আমার মধ্যে খুন করার যোগ্যতা আছে। যা তোমার মাঝে নেই। আমি তোমার থেকেও বিষাক্ত।
মেরিন নীড়ের কথার মানে বুঝলোনা।
মেরিন: হয়ে গেছে আপনার বলা? নিজের কল্পনার রাজ্য থেকে বেরিয়ে আসুন। আর মনে করার চেষ্টা করুন আমি আপনাকে কতো কতো আঘাত করেছি। আপনাকে আপনার ভালোবাসা থেকে দুরে করেছি…… আপনার লাইফ টাকে হেল করে দিয়েছিলাম। আর…..
বলেই মেরিন নীড়ের হাত ধরে
বলল: আপনার এই হাতে লিখেদিয়েছিলা মে……
মেরিন নীড়ের হাতে তাকিয়ে দেখলো যে সেখানে ঘৃণারমেরিনের জায়গায় ভালোবাসারমেরিন লেখা।
মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
নীড়: তুমি আমার ভালোবাসা ছিলে আছো থাকবে। মানুষ মাত্রই ভুল। তাই আমিও ভুল করেছি। আমার শ্রেষ্ঠ ভুল কি ছিলো জানো? আমি সেদিন রাতে তোমার সেই হাসির মানে বুঝিনি। যদি বুঝতাম….. যাই হোক। শেষ বারের মতো বলছি। চলো নতুন করে জীবন শুরু করি। আমরা ৩জন মিলে।
মেরিন: জীবন? আপনি তো ভালোমতোই জানেন যে মেরিন যা বলে তাই করে। আমি যখন বলেছি আমি চলে যাবো তখন যাবোই।
নীড়: ওকে গো। নির্বন রেখে।
মেরিন: অমন ফালতু কাগজের টুকরা মেরিনের পথের বাধা হতে পারেনা। আমার ছেলেকে আমি তো নিয়ে যাবোই।
নীড়: পারবেনা। এই দেশ থেকে বের হতে গেলে তোমাকে আমার অনুমতি নিতে হবে।। আমার চোখের আড়াল হতে হলে তোমাকে আমার অনুমতি নিতে হবে। ভুলে যেওনা পাওয়ার ইজ পাওয়ার …… মানি ইজ মানি…. তুমি এখন যত পাওয়ার ই দেখাও আমার সাথে পারবেনা। কারন তুমি কাল কেউটে হলেও আমি দু মুখো সাপ। তুমি একবারে ১জনকেই ছোবল মারতে পারবে। আর আমি ২জনকে।
মেরিন: পানিকে হাতের মুঠোয় বন্দী করতে চাইছেন? পারবেন?
নীড়: জ্বলকে জ্বল নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। পদ্মা আর বহ্মপুত্রের জ্বল একসাথে মিশে গেলে যেমন আলাদা করা যায় না তেমনি বর্ষন আর বন্যা ক্ষেত্রেও। তুমি বন্যা but আমি বর্ষন। আমি নিজেকে তোমার রঙে রাঙিয়েছি। আমাকে হারাতে পারবেনা।
মেরিন: আপনি নিজে আমাকে আপনার পাতা ফাদ থেকে মুক্ত করবেন।
নীড়: গুড জোকস্!
মেরিন: এটা মজা নয় মিঃ চৌধুরি….. এটা আমার চ্যালেজ্ঞ …..
নীড়: ওকে এক্সেপটেড। বাট ইউ হেভ অনলি ওয়ান মান্থ।
মেরিন: গুড। আমার জন্য এতেই যথেষ্ট।
নীড় মেরিনের সামনে গেলো। গিয়ে কোমড় টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে আঙ্গুল দিয়ে ওর মুখে আকিবুকি করতে করতে
বলল: হারার জন্য প্রস্তুত হও জান।
মেরিন নীড়ের হাটু বরাবর লাথি দিলো। এতে নীড় পিছে সরে গেলো।
মেরিন: আমাকে ভুলেও ছুঁবেন না। না হলে এই হাতটা আর…..
মেরিন আর বলতে পারলোনা। নীড় মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
.
নীড় ছারতেই মেরিন নীড়কে থাপ্পর মারতে নিলো। কিন্তু নীড় হাতটা ধরে নিয়ে kiss করে দিলো।
নীড়: এই হাত কেবল আমাকে আদর করার জন্য।
বলেই নীড় মেরিনকে চোখ মারলো। পরে ২জন বাসায় ফিরলো। মেরিন যেতেই নির্বন মেরিনের কাছে ছুটে গেলো।
নির্বন: মামনি তুমি ঠিক আছে?
মেরিন: হামম। dinner করেছো?
নির্বন: না।
মেরিন: চলো dinner করে আমি আর তুমি।
নির্বন:আমরা কোলকাতা যাবোনা?
মেরিন: হ্যা যাবো তো। কিন্তু ১মাস পর। ভিসা problem হয়ে গেছে।
নির্বন: ওফ।
মেরিন: চলো বাবুই পাখি।
মেরিন নির্বনকে নিয়ে restaurant এ গেলো। নীড় না খেয়েই রইলো।
.
ঘুমানোর সময়…..
মেরিন নিচে বিছানা করছে। নীড় শুধু আর চোখে দেখছে। নির্বন brush করে এসে মায়ের বিছানায় গিয়ে বসলে।
নীড়: নির্বন….. ওখানে কেন? bed এ এসো।
নির্বন:……
নীড়: কি হলো আসো।
নির্বন: আমি আমার মামনির সাথে ঘুমাবো। আমার মামনির বুকে।
নীড়: কিন্তু আজকে তো বাবার বুকে ঘুমানোর পালা। কালকে মামনির বুকে… তাইনা?
নির্বন: আমি কেবল মামনির বুকেই ঘুমাবো। মামনি আমার না ভীষন ঘুম পাচ্ছে।
মেরিন: come baby…..
মেরিন নির্বনকে ঘুম পারালো। নির্বন ঘুমিয়ে গেলো।
.
নীড়: আমাদের ২জনের লড়াইয়ে বাচ্চাটাকে কেন টানছো? আমি তো ওকে তোমার থেকে আলাদা করার চেষ্টা করিনি।
মেরিন: না জেনে কথা বলবেন না। আমি আপনার মতো পেছন থেকে ছুরি মারিনা। আমি ওকে কিছুই বলিনি। আমি আপনার মতো না। আপনি তো ধোকা দিয়ে ওই contract paper এ sign নিয়েছেন।
নীড়:আরে আমিতো…..
মেরিন: পেছন থেকে ছুরি মারেন। আমি বিষাক্ত হতে পারি। কিন্তু আমি আমার ছেলের জীবনে বিষের ছিটে ফোটাও পরতে দেইনি। আর দিবোও না। আমি ওর জীবনে কোনো আক্রোশ রাখতে চাইনা। আমি চাই ও মন থেকে হাসুক। whatever …. i m sleepy…. তো আমি এখন ঘুমাবো। & আমি মনে করি যে আপনারও তারাতারি ঘুমানোর দরকার। tomorrow is a long day for you…….
নীড় আন্দাজ করতে পারছে যে কালকে কিছু ১টা হবে।
কিন্তু কি তা বুঝতে পারছেনা।
মেরিন: লাইট টা কি off হবে?
নীড় লাইট নিভিয়ে দিলো। তবে নীড়-মেরিন কারোর চোখেই ঘুম নেই। মেরিনের ঘুম না আসার কারন হলো গত ২মাস না চাইতেও ওকে নীড়ের বুকেই ঘুমাতে হয়েছে। আর তাই আজকে ঘুম আসছেনা। নীড়েরও ঠিক একই কারনে।
নীড় মনে মনে: অসম্ভব। এভাবে থাকতে পারবোনা।
নীড় দুম করে উঠে মেরিনকে কোলে তুলে নিলো। আর মেরিনের বুকে থাকা নির্বনকে সহ।
মেরিন: আরে আরে আপনি কি করছেন? ছারুন আমাকে। নামান আমাকে।
নীড় কোনো জবাব না দিয়ে ওদেরকে বুকে নিয়ে শুয়ে পরলো। আর এমনভাবে মেরিনকে ধরে রাখলো যে মেরিন নরতে চরতে পারছেনা।
মেরিন: দেখুন ভালো হচ্ছেনা কিন্তু। ছারুন।
নীড়: দেখো আমি চাইনা প্রথাগত ভাবে তোমার মুখটা বন্ধ করতে। by at any chance নির্বন উঠে গেলে কি ভাববে বলো তো? আর কাল সকালে যা হবার তা দেখা যাবে। but now…. let me sleep ……
মেরিন: ছারুন নীড়। আমি কিন্তু আপনাকে……
নীড়: নাহ তুমি থামবে না।
নীড় মেরিনের মুখের দিকটা ওর বুকের সাথে ভীষন শক্ত করে চেপে ধরলো। যার জন্য মেরিন আর কথা বলতে পারলোনা। ১টা সময় ঘুমিয়ে পরলো।
.
সকালে……
মেরিনের ঘুম ভাঙলো দেখলো যে নীড় ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
নীড়: good morning honey ……
বলেই নীড় good morning kiss টা সেরে নিলো। তখন বাইরে চেচামেচির আওয়াজ পেলো।
নীড়: কিসের আওয়াজ?
মেরিন: a gift for you….. on behalf of me….
নীড় উঠে বাইরে গেলো।
মেরিন: আপনি আমার রাগ ফিরিয়ে অনেক ভুল করেছেন মিঃ চৌধুরি আপনার মান সম্মান আমি ধুলোয় মিটিয়ে দিবো আমি। ঘৃণার মেরিনের ঘৃণা সবার জন্য দেখলেও আপনার জন্য দেখেননি। এখন আপনার জন্যও দেখবেন। হ্যা এটাও সত্য যে আমি আপনাকে ভালোবাসি কিন্তু আমি কোনো কিছুর বিনিময়েই আমার নির্বনকে হারাতে পারবোনা।
.
নীড় বাইরে গিয়ে অবাক হয়ে গেলো। কারন মহিলা কল্যান সংস্থার মহিলার স্লোগান করতে করতে
এসেছে: নীড় চৌধুরী নীড় চৌধুরী হায় হায় হায় হায়….
তারা হাতে করে কালিও নিয়ে এসেছে। সেই সাথে press media free তে।
নীড়: আপনারা এখানে।
লিডার: আসতেই হয়। কোনো অসহায় মেয়ের সাথে , অসহায় মায়ের সাথে জুলুম হলে, ওঠাতেই হয়।
নীড়: অসহায় মেয়ে কে? আর অসহায় মা?
লিডার: মেরিন বন্যা। আমরা কোনো মায়ের সাথে এমন ধরনের অন্যায় হতে দিবোনা।
নীড় :কেমন ধরনের অন্যায়?
লিডার: মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে মিথ্যা আরোপ দিয়ে কেরে নেয়ার অন্যায়।
নীড়:তাই? ভালো। এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আপনারা আসতে পারেন।
লিডার: ওই মেয়েটার পক্ষে কেউ নেই বলে এমনটা করতে সাহস পাচ্ছেন তো?
নীড়: যে টা মনে করেন। but now get out….
লিডার: না আমরা যাবোনা। আপনাদের মতো চরিত্রহীন লম্পটদের জন্যেই অসংখ্য মেয়েদের জীবন নষ্ট হয়ে যায়।
নিহাল: excuse me…. আমার ছেলেকে চরিত্রহীন লম্পট বলার সাহস কি করে হয়?
লিডার: যেভাবে আপনার ছেলের সাহস হয় ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়েদের সাথে ফুর্তি করতে….
নীড়: mind your language ……
লিডার: কষ্ট লাগলো শুনতে? বিয়ে বিয়ে খেলা আপনাদের কাছে স্বাভাবিক হলেও সব মেয়েদের কাছে নয়। এতোই যখন প্রেমলীলা…. তখন বিয়ে করেছিলেন কেন? পরে যখন মেয়েটা নিজের ছেলেটাকে নিয়ে বাচতে চাইলো তাও সহ্য হলোনা।
নীড়: আমি শেষ বারের মতো বলছি। আপনারা যাবেন কিনা?
লিডার: না যাবো না। মেরিন বন্যা কোথায় তাকে সবার সামনে আনুন। নাকি তাকে মেরে গুম করে দিয়েছেন?
মেরিন সকলের সামনে এলো।
লিডার: তুমি কোনো ভয় পাবেনা বোন। আমরা আছি।
এরপর লিডার এসে নীড়ের গালে কালি মাখিয়ে দিলো। press media নিয়ে চলে যেতে নিলো।
তখন নীড় বলল : স্টপ….
আর সবাই থেমে গেলো। ওর দিকে ঘুরলো।
নীড়: আমি চরিত্রহীন লম্পট। বেশ ভালো কথা। লম্পট যখন সবার সামনেই একটু লম্পট গিরি করি…..
বলেই নিজের গাল দিয়ে মেরিনের গালটা ঘষে দিলো।
নীড়: নীড়-মেরিনের লাইফ এবং লাভ স্টোরি ১টা ওপপেন সিক্রেট। শুরু থেকেই প্রেস মিডিয়া ছিলো।সব ছিলো। ভবিষৎেও থাকবে। ইনশাল্লাহ। কিন্তু কেউ যদি ভুলেও নীড়-মেরিনের সম্পর্কে নাক গলায়…..
নীড় নিজের পিস্তল টা বের করে
বলল: সে নীড় বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হবে।
.
.
বিকালে……
সেই মহিলা লিডার: আমাকে ক্ষমা করে দিন ম্যাডাম, ছেরে দিন। ভুল হয়ে গেছে।
মেরিন: ভুল? তোর সাহস কিভাবে হয় আমার জামাইকে চরিত্রহীন লম্পট বলার?
লিডার: আপনিই তো এসব করতে বলেছিলেন।
মেরিন: হ্যা বলেছিলাম। কিন্তু চরিত্রহীন লম্পট বলতে বলিনি। এতো বড় কথা বলিস উনাকে তুই? তোকে তো…
.
৫দিনপর……
এই ৫দিনে মেরিন নীড়কে অনেক হেনস্তা করেছে। তার বিনিময়ে নীড় কেবল রোমান্টিক শাস্তি দিয়েছে।
.
রাত ৩টা। হঠাৎ মেরিনের ঘুম ভেঙে গেলো। মেরিন ও অবাক হয়ে গেলো। কারন ও নীড়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলো কিন্তু এখানে তো নীড় নেই। সেই সাথে ওর বুকের ওপর নির্বন ঘুমাচ্ছিলো। কিন্তু নির্বনও নেই। মেরিন মনে করলো নীড় নির্বনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। মেরিন গাড়ির চাবি নিতে গিয়ে দেখে যে বারান্দায় কাউকে দেখা যাচ্ছে। মেরিন বারান্দায় গেলো। গিয়ে দেখলো নীড় নির্বনকে বুকে নিয়ে রকিং চেয়ারে বসে আছে। আর অঝরে কান্না করছে। যা দেখে মেরিনের বুকটে মোচর দিয়ে উঠলো। মেরিনের পক্ষে নীড়ের কান্না দেখা সম্ভব না। তাই চলে আসতে নিলো। তখন নীড় ওকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
নীড়: আই এম সরি। আমি জানি তুমি আমার কান্না সহ্য করতে পারোনা। তবুও আজকে কান্না আটকাতে পারিনি। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমার কারনে কান্না করছিলাম না। আমি নির্বনের জন্য কাদছিলাম। জানো ও না আমার কাছে আসেনা….. আগের মতো বাবা বাবা বলে ডাকেনা…… খুব কম কথা বলে…… আমি জানি তুমি ওকে এমনটা করতে বলোনি। কিন্তু ওকে একটু বলেদিও না যেন আমার সাথে আগের মতো কথা বলে।
মেরিনও দেখেছে বিষয়টা। আর এ কারনে যে নির্বনের মনও খারাপ তাও দেখেছে।
.
পরদিন…..
নির্বন মায়ের সাথে স্কুল থেকে বাসায় ফিরছে।
মেরিন: নির্বন…..
নির্বন: হ্যা মামনি……
মেরিন: মন খারাপ?
নির্বন: না মামনি।
মেরিন: মামনিকে কি মিথ্যা বলা যায়?
নির্বন: ……..
মেরিন: বাবার সাথে আগের মতো মিশোনা কেন?
নির্বন:…..
মেরিন: কি হলো? বলো। বাবা কি বকা দিয়েছে?
নির্বন: না না মামনি।
মেরিন: তাহলে?
নির্বন:……..
মেরিন:বলো……
নির্বন: আসলে মামনি আমি বাবাকে আমি অনেক ভালোবাসি। কিন্তু তার থেকেও বেশি আমি তোমাকে ভালোবাসি। বাবাকে পেয়ে আমি ওভার এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম এবং তোমাকে হার্ট করেছি….. তাই…..
মেরিন: তাই বাবার সাথে আগের তো কথা হয়না। তাইতো?
নির্বন: হামম।
মেরিন: আর এই কারনেই মন খারাপা?
নির্বন:মামনি আমি তোমার মন খারাপ দেখতে পারবোনা। আর তোমাকে হ্যাপি করার জন্যেই আমি বাবাকে সাপোর্ট করছিলাম।
মেরিন নির্বনের কপালে চুমু দিয়ে
বলল: you are my happiness ….. আমি জানি আমার বাবাটা মামনিকে অনেক ভালোবাসে। এখন মামনি ১টা কথা বলতে চাই তোমাকে। যার সত্যি সত্যি জবাব তুমি আমাকে দিবে। ok?
নির্বন: হামম।
মেরিন: তুমি কি বাবার সাথে থাকতে চাও নাকি মামনির সাথে?
নির্বন: মানে মামনি?
মেরিন: দেখো বাবাই মামনি next month কোলকাতা back করবো। তো তুমি কি বাবার সাথে থাকবে নাকি মামনির সাথে যাবে?
নির্বন: তোমার সাথে যাবো।
মেরিন: মন থেকে বলো। আমি তোমাকে জোর করছিনা।
নির্বন: না মামনি। আমি মন থেকেই বলছি। i swear ….
মেরিন: ok…. তো আমরা এখানে যে কদিন আছি বাবার সাথে , সবার সাথে অনেক অনেক সময় কাটিয়ে যাও। মজা করে নাও। কারন কোলকাতা গেলে তো আর সবসময় ওদের সবাইকে পাবোনা। just vacation এ দেখা করতে পারবে।
নির্বন:…..
মেরিন: তোমার বাবা তোমাকে ভীষন ভালোবাসে…… কালকে রাতে তোমার জন্য কান্নাও করছিলো। আজকে বাসায় গিয়েই দৌড়ে বাবার কোলে উঠবে । হামম?
নির্বন: হামম।
মেরিন: good boy…. এখন বলো তুমি বাবার জন্য কি gift নিবে?
নির্বন: gift?
মেরিন: হামম sorry gift নিতে হবেনা?
নির্বন: হামম।
নির্বন বাবার জন্য ১টা মেডেল নিলো যাতে লেখা world best father …… বাসায় গিয়ে নির্বন দৌড়ে বাবার কোলে গেলো। বাবা-ছেলের খুশি দেখে মেরিন খুশি হলো।
মেরিন মনে মনে: আমি আমার ছেলেকে কোনো সুখ থেকে বঞ্চিত করবো না। আর না আমার ছেলেকে থাকতে পারবো। সময় কাটিয়ে নিন mr. chowdhuri ছেলের সাথে। আমার জন্য ভালোবাসা মিথ্যা হলেও ছেলের জন্য আশা করি সত্যিই হবে। আপনার চোখের পানি কখনো মেনে নিতে পারিনি……. আর পারবোও না। কারন আপনার জন্যেই আমি আমার নির্বনকে পেয়েছি।
…..
……..
[চলবে……
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১৬
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
২দিনপর….
আজকে শুক্রবার। তাই সবাই বাসায়। নির্বন কবির-নিহালের সাথে ঘোড়া ঘোড়া খেলছে। ১বার নিহালের পিঠে চরছে ১বার কবিরের পিঠে। দাদা-নানাও ভীষন মজা করছে নাতি কে নিয়ে। মেরিন ওপর থেকে দেখলো। দেখে বুঝতে পারছে যে কবিরের কষ্ট হচ্ছে তবুও খেলেই যাচ্ছে। মেরিন দৌড়ে নিচে গেলো।
মেরিন: নির্বন….
নির্বন: হ্যা মামনি……
মেরিন: মনি আপু ফোন করেছে। যাও কথা বলে এসো।
নির্বন: মনি আপু?
নির্বন দৌড়ে রুমে গেলো।
কবির: মামনি…..
মেরিন: don’t you dare to call me মামনি। আপনি আমার কেউনা। আমি অনাথ।
কনিকা: মারে ক্ষমার অযোগ্য আমরা তা জানি। কিন্তু সবথেকে বড় সত্যি তো এটাই যে তুই ছারা যে আমাদের আর কিছুই নেই…….
মেরিন: কেন আপনাদের প্রানপ্রিয় কলিজার টুকরা…. না না কলিজার টুকরা না পুরো কলিজা নি…..রা কোথায়? মরছে নাকি? wait wait … এমনটা নয় তো সে mr. chowdhuri কে বিয়ে করে খান empire নিজের নামে করিয়ে পালিয়েছে তাই তাকে এখানে দেখা যাচ্ছেনা। যার জন্য mr. chowdhuriএর মেরিনের কথা মনে পরেছে। so called ভালোবাসা। আর তার থেকেও বড় কথা আপনারা খান বাড়ি ছেরে এই চৌধুরী বাড়িতেই পরে আছেন কেন? ভিখারীর মতো?
নীড়: মেরিন…….
মেরিন: চিল্লাবেন না….. আপনি একাই চিল্লাতে পারেন না…….
নীড়: আম্মু-বাবার সাথে এভাবে কথা বলার মানে কি?
মেরিন: আমার মুখ আমি যেকোনো কথা বলতে পারি। আর তাছারাও যে যার উপযোগ্য।
নীড়: তারা ভুল করলেও তারা তোমার মা-বাবা……
মেরিন: না। আমার মা-বাবা নেই। আমি এতিম, অনাথ। এনারা আমার কেউনা……
নীড়: তুমি বোঝার চেষ্টা করো….
মেরিন: আমাকে বোঝাতে আসবেন না। আপনি নিজের কথা ভাবুন। দেখুন আজকে আপনার জন্য কি অপেক্ষা করছে।
নীড়: হ্যাহ….. গত ১০দিন ধরেই তো কিছু না কিছু gift পাচ্ছি তোমার তরফ থেকে। যা মন চায় করো….. কিন্তু বাজীতে আমিই জিতবো। আর আজকের দিনটা special ….. আমার জন্য…… কেন তা হয়তো তোমার জানা নেই……
মেরিন: আজকের দিন কি আর ভোলার নী… mr. chowdhuri…. আজকে যে ছিলো আমার সর্বনাশের ১ম ধাপ….
.
রাতে…….
মেরিন ছাদে দারিয়ে আছে।
মেরিন মনে মনে: আজকের দিনটা যে আমার কাছে খুব special …… আজকের দিনেই আপনি আমাকে ভালোবেসেছিলেন। আপনার জন্য যা খেলার শুরু ছিলো। কিন্তু আমার জন্য তো তা ভালোবাসাই ছিলো……
মেরিন রুমে গেলো। রুমে গিয়ে অবাক হয়ে গেলো। কারন রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো। মোমবাতি-ফুল দিয়ে। তখন নীড় পেছন থেকে ওকে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: i m sorry…. তখন তোমার সাথে ওভাবে কথা বলা আমার ঠিক হয়নি।
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
মেরিন: আপনার কথা affect করেনা। you are nothing to me…. একি নির্বন কোথায়?
নীড়: আজকে ও মামনি বাবার সাথে ঘুমাবে। গল্প শুনবে।
মেরিন: কেন?
নীড়: কারন আজকে আমি তোমাকে চাই….
মেরিন: shut up…..
নীড়: দেখো আমার ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। চলো ২জন মিলে dinner করেনেই। আমি জানি তুমি কিছু খাওনি…. আর আমিও।
নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে সোফায় বসলো।
নীড়: দেখো আমি নিজের হাতে বিরিয়ানি রান্না করেছি। তোমার না আমার হাতের বিরিয়ানি খুব পছন্দের। নাও হা করো……
মেরিন নীড়ের হাত ঝাকি মেরে সরিয়ে দিয়ে উঠে দারালো।
মেরিন: আপনি ভাবলেন কি করে আপনার হাতে বিরিয়ানি আমি খাবো? এর থেকে বিষ খাওয়া আমি বেশি পছন্দ করবো। আর কে জানে যে এই খাবারে বিষ আছে কিনা…..
কথাগুলো নীড়ের বুকে তীরের মতো বিধলো।
.
নীড় খাবার একবার মুখে দিলো।
নীড়: এখন তো আমি আগে মুখে দিলাম। বুঝলে তো এতে বিষ নেই…….
মেরিন:…..
নীড়: আসো খেয়ে নাও।
মেরিন: না আমি খাবোনা।
নীড়: দেখো আজকে নির্বন এখানে নেই। তো আমি যা মন চায় তাই করতে পারি। তুমি যদি না চাও ৮ বছর আগের style এ তোমাকে খাইয়ে দেই তবে তুমি ভালো মতো লক্ষি মেয়ের মতো খাও।
মেরিন নীড়ের কথা কানে না দিয়ে bed থেকে ফুল টুল ফেলে দিয়ে। রুমের মোমবাতি সব নিভিয়ে শুয়ে পরলো।
নীড়: নাহ এই মাইয়া তো জীবনেও শুধরাবে না।
নীড় গিয়ে মেরিনকে টেনে তুলল। এরপর কোলে বসিয়ে গাল চেপে ধরে মুখে খাবার ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে দিলো। এরপর মুখের ওপর হাত রেখে
বলল: চুপ চাপ খাবারটা চিবিয়ে গিলে ফেলো।
মেরিন না তো নরতে চরতে পারছে আর না তো কিছু বলতে পারছে। মেরিন খাবার মুখে নিয়ে বসে আছে। গিলছে না।
নীড়: হায়রে।
নীড় মেরিনের নাক চেপে ধরলো। তাই বাধ্য হয়ে মেরিন মুখের খাবার টা গিলে ফেললো। নীড় এভাবেই মেরিনকে খাওয়াতে লাগলো। সাথে সাথে নিজেও খেলো।
.
একটুপর…..
নীড় ১টা ব্যাগ দিয়ে
বলল: এর ভেতর ১টা শাড়ি আছে। যাও পরে আসো। আর হ্যা এই খোপা টোপা খুলে চুল ছেরে আসবে।
মেরিন নীড়ের হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে আগুনে জালিয়ে দিলো।
মেরিন: বেশি বারাবারি করলে এই ব্যাগটার জায়গায় আপনি জ্বলবেন।
নীড়: আমি তো এখনও জ্বলছি…. আর কতো জ্বলবো?
মেরিন: আপনার bakwas শোনার মতো ফালতু সময় আমার নেই।
নীড়: তুমি যেই ম্যাচ বক্স থেকে আগুন জ্বালিয়েছিলে তাতে আর কয়টা কাঠি আছে দেখো তো….
মেরিন: shut up…..
নীড়: দেখোনা….
মেরিন:
নীড়: ok… না করলে তুমি check ……. আমিই করছি।
নীড় ম্যাচ বক্সটা খুলে
বলল: its empty now…. এখন তুমি আর আগুন জ্বালাতে পারবেনা বউ।
নীড় ১টা লাল রঙের শাড়ি বের করে
বলল: আমি জানতাম যে তুমি অমনটাই করবে। তাই খালি ব্যাগটা তোমাকে দিয়েছিলাম baby…..
মেরিন: কাঠি নেই তবে কাচি তো আছে….
নীড়: আগে আমার হাত থেকে তো মুক্তি পাও।
মেরিন জানে যে ও হাজার চেষ্টা করলেও নিজেকে ছারাতে পারবেনা।
নীড়: যাও এই শাড়িটা পরে আসো।
মেরিন:ভাবলেন কি করে আমি ওটা পরবো। ওটার থেকে আমি কাফন পরতে পারলে বেশি খুশি হবো।
নীড়:তাই বুঝি। তাহলে তো তোমাকে এটাই পরতে হবে। যাও পরে আসো।
মেরিন: না।
নীড়: পরো।
মেরিন: না।
নীড়: তুমি পরবে না আমি পরাবো?
মেরিন: ভয় দেখাচ্ছেন? তাও আমাকে?
নীড়:না। সত্যি বলছি। যাও পরে আসো।
মেরিন: না…..
নীড়: আর কোনো উপায় নেই….. বলেই নীড় নিজেই মেরিনকে শাড়ি পরিয়ে দিলো। এরপর চুলের খোপা খুলে দিলো। মেরিনের খোলা চুল দেখে নীড় অবাক হয়ে গেলো। কারন মেরিনের চুল এখন আগের brown & layer cut নেই। এখন মেরিনের চুল কালো মিচমিচে। কোমড় ছারিয়ে গেছে।
নীড় : crush খেলাম….
মেরিন তো ছোটার চেষ্টা করেই যাচ্ছে। পারছেনা। মেরিনের চুল আচরে দিয়ে নীড় মেরিনকে কোলে তুলে বারান্দায় নিয়ে গেলো rocking chare এ বসলো। মেরিনকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে রাখলো।
.
নীড়: আজকে অন্ধকার বিলাস করবো। আমার চাদের সাথে।
মেরিন: দেখুন ভালো হচ্ছেনা। ছারুন..
নীড়:আহা চুপ থাকো তো। let me feel this moment …
মেরিন: আ….
নীড়: আর ১টা কথা বললে কিন্তু তোমার যেটা করতে চাইছিনা সেটা করবো। তুমি এই ৮বছর কিভাবে থাকতে পারলে আমাকে ছেরে…… তুমি তো ১টা দিনও আমাকে ছারা থাকতে পারতে না। তোমার তো কোনো সকালই আমার মুখ না দেখে শুরু হতোনা। না কোনো দিন শেষ হতো আমাকে না দেখে। আমার হাত ছারা তো ১টা বেলাও খেতে না….. আমার বুকে না মাথা রাখলে তোমার ঘুম আসতোনা। তোমার অষ্ট প্রহরে তো অষ্ট নীড় আর নীড় ছিলো। সেই আমাকে ছেরে এই ৮টা বছর কিভাবে কাটালে…. আমার কথা কি ১টা বারও মনে পরেনি? তোমার মনে আছে ৮বছর আগেও আমি এই দিনে অন্ধকার বিলাস করতে চেয়েছিলাম।
আচ্ছা মেরিন তোমার তো সেই আড়াইমাস নাটক মনে হয়। তোমার মনে হয় যে আমি ওই আড়াইমাস কেবল তোমার সাথে নাটক করেছি। ভালোবাসিনি….. ১টা বার আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো তো…… কি দেখতে পাও…..
নীড় মেরিনের মাথাটা তুলে চোখে চোখ রাখলো।
মেরিনের ক্ষমতা নেই নীড়ের চোখ থেকে চোখ সরানোর। কারন এটা ওর দুর্বলতা। তাই মেরিন চোখ বন্ধ করে ফেলল। নীড় আবার মেরিনের মাথা বুকে ঠেকালো।
.
নীড়:এই ৮ বছর আমার জন্য কিয়ামত ছিলো.. তোমাকে সারা পৃথিবীতে খুজেছি।। মন খারাপ হলে তুমি যে শ্মশানে গিয়ে drinks করতে সেখানে কতো রাত কাটিয়েছি তুমি জানোনা…..
নানাধরনের কথা বলতে বলতে নীড় ঘুমিয়ে গেলো। নীড়ের কথাগুলো মেরিনকে অনেক অবাক করলো। নীড় ঘুমিয়ে পরলে মেরিন উঠে আসতে নেয়। নীড়ের শার্টের ওপরের ২টা বাটন খোলা। মেরিন ওঠার সময় নীড়ের বুকের দিকে নজর যায়। সেখানে কিছু লেখা আছে। শার্টটা সরিয়ে অবাক হয়ে গেলো। কারন সেখানে “Marin” লেখা। মেরিনের মাথার ওপর দিয়ে গেলো।
.
সকালে……..
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। দেখলো মেরিন নেই। নিচে গেলো। তবুও মেরিনকে পেলোনা। নীড় ভয় পেয়ে গেলো। মেরিন আবার ওকে ফেলে চলে যায়নি তো???
ওদিকে….. মেরিন তলোয়ারবাজী করছে। না কারো সাথে না। নিজের সাথেই। কারন o confused ….. কারন গত রাতে নীড়ের বলা সব কথার মধ্যে ভালোবাসা পেয়েছে।। নীড়ের বুকে ওর নাম লেখা। এসবও কি নাটক? নাকি ভালোবাসা। তাহলে কি সত্যি ওর আড়ালে কিছু আছে?
মেরিন: কোনটা সত্য? সেদিন আমি যা দেখেছিলাম সেটা না কি তারআগের আড়াইমাস? আচ্ছা নিরা কোথায়? ও কি সত্যি পালিয়ে গেছে। কিছুই মাথায় আসছেনা।
নীড়:মাথার দোষ দিয়ে কি লাভ?
মেরিন তাকিয়ে দেখলো যে নীড় তলোয়ার হাতে দারিয়ে আছে।
নীড় এগিয়ে আসতে আসতে
বলল: খেলা দাবার হোক আর তলোয়ারের….. দক্ষ partner এর ভীষন দরকার। না হলে খেলাটা boring হয়ে যায়।
মেরিন নীড়কে cross করে চলে যেতে নিলে নীড় মেরিনের ঘারে তলোয়ার রাখলো।
নীড়: হেরে যাওয়ার ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছো।
মেরিন: হেরে যাওয়া আমার ফিদরতে নেই…..
.
শুরু হয়ে গেলো ২জনের তলোয়ার বাজী।
নীড়: কিসের এতো confusion ……
মেরিন: কোনো confusion নেই।
নীড়: আমাদের সবসময় মনের কথা শোনার দরকার।
মেরিন: মোটেও না। আমাদের মস্তিষ্কের অনুযায়ী চলার দরকার।
নীড়: ভুল। মস্তিষ্ক সফল করতে পারে। কিন্তু সুখী না। মন মানুষকে বাচার কারন দেয়।
মেরিন: নাহ। মন মানুষকে মেরে ফেলে।
নীড়: ভুল। মনের দাবি না মানলে আত্মা মরে যায়।
মেরিন: মনের দাবি পূরন করতে গিয়ে আমি মরে গিয়েছিলাম।
.
২দিনপর……
মেরিন:এতো কিছু করছি তবুও উনি রাগ করছেনা কেন? এখন কিসের নাটক? নিরাকে কোথায় পাবো? পেতেই হবে ওকে। ওই এখন আমার তুরুপের তাস। ওরা কি সবাই আমায় মিলে আমাকে নিয়ে খেলছে ? কিন্তু কেনো খেলবে? আমি তো এদের দাবি মিটিয়ে দিয়েছিলাম। তবে? আর কি চাওয়া থাকতে পারে? এমনটা নয়তো যে নিরা কখনো মা টা হতে পারবেনা। আর তাই ওরা নির্বনকে নিয়ে নিতে চায়। কিন্তু mr. chowdhuri এর বলা কথা। উনার চোখ…. যদি ওদের উদ্দেশ্য আমাকে নিয়ে খেলা হয় তবে আমি ওদের একেকটাকে ধরে ধরে কুপাবো। কিন্তু সবার আগে নিরাকে খুজতে হবে। নিরার গলায় ছুরি ধরলে সবগুলা তোতাপাখির মতো সব বলতে শুরু করবে। তুই যেখানেই থাকিস না কেন নিরা…… আমি তোকে খুজে বের করবোই।
নীড়: পারবেনা……
মেরিন: মানে?
নীড়: খুব সহজ। নিরাকে খুজে পাবেনা।
মেরিন: না শব্দটার সাথে মেরিন পরিচিত নয়।
নীড়:তাহলে পরিচিত হয়ে নাও।
মেরিন: ওই…. তখন নির্বন রুমে এলো।
নির্বন: মামনি বলেই মেরিনের কোলে এলো। মেরিন বুঝতে পারলো নির্বনের বেশ জ্বর।
মেরিন: একি বাবাই তোমার তো দেখি ধুম জ্বর।
নীড়: দেখি দেখি। oh my god….. এতো অনেক জ্বর।
মেরিন: চলো সোনা মাথায় পানি দিয়ে দিচ্ছি।
রাতভরে নীড়-মেরিন ছেলের জন্য জেগে রইলো।
.
৩দিনপর……
নির্বন সুস্থ হলো। বিকালবেলা সবাই নাস্তা করছে। তখন কেউ একজন নীড় বলে বাড়িতে ঢুকলো। সবাই পেছনে ঘুরে দেখে অবাক। শুধু মেরিন ছারা। কারন এটা নিরা। আসলেই নিরা? নাকি মেরিনের চাল? সবাই দেখে অবাক হয়ে দারিয়ে গেলো । নিরা নীড় বলে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো। এরপর
মেরিনকে দেখে ভয় পেয়ে
বলল: মমমেরিন……. নীড় ও কেন…..
মেরিন: no worry…. তোমার সুখের ঘরে আগুন দিতে আসিনি।
নিহাল: এই মেয়ে কে তুমি।
নিরা: আমি নিরা বাবা।
নিহাল: ১ টা থাপ্পর দিবো। তুমি কিভাবে নিরা হতে পারো? নিরা তো ম……
নীড়: বাবা….. ও নিরাই। চোখ মুখ চুল বলে দিচ্ছে যে ও নিরা।
মেরিন মনে মনে: হায়রে আমার পাগল অন্ধ প্রেমি…. চিরকাল চেহারাকেই ভালোবেসে গেলেন। ভালো তো ভালোনা। এখন নিরা আমাকে আসল নিরার কাছে পৌছে দেবে। এরপর নিজের হাতে ওকে সকলের সামনে খুন করবো।
নীড় মনে মনে: আমি জানি না এটা কে জান…… কিন্তু তুমি নিজের মুখেই ২দিনের মধ্যে বলবে ও কে? তোমার চালেই আমি তোমাকে মাত করবো। তবে তুমিও ছলনা করতে পারে দেখে অবাক হলাম।
মেরিন মনে মনে: কখনো কখনো কোনো চোর ধরতে হলে চোরের মতো করে ভাবতে হয়। আবার কখনো নিজেকেই চোর হতেই হয়। আপনাদের সকলের মুখোশটা খোলার জন্য আমি আজকে ছলনার আশ্রয় নিলাম। ছোট ছোট ধামাকা তো অনেক হলো। এবার আসল খেলায় আসি। ২০দিন তো হয়ে আসছে।
…..
……..
[চলবে……]
গল্প – ঘৃণার মেরিন
পর্ব – ১৭ (শেষ)
লেখিকা – মোহনা চৌধুরী
রাতে…….
নীড় রুমে গেলো। গিয়েই অবাক হয়ে গেলো। কারন সারা ঘর ফুল দিয়ে সাজানো। bed টাতো ফুলের দোকান। আর খাটের মাঝখানে কেউ ১জন লাল টুকটুকে বউ সেজে বসে আছে।
নীড় মনে মনে: তোমার মায়া তুমিই জানো মেরিন …… তোমার মন বোঝা বড় দায়।
.
নীড় ধীর পায়ে খাটের কাছে গেলো।
নীড়: তো তুমি নিরা…….
নিরা: হামম। তোমার ভালোবাসা।
নীড়: তো তোমাকে নিশ্চয়ই মেরিন সাজিয়েছে।
নিরা: হামম। মেরিন এই ৮ বছরে পাল্টে গেছে। আমাকে নিজের হাতে সাজালো। এই রুমটাও সাজালো। এগুলো ওর কোনো চাল নয়তো।
নীড়: who care…… just feel & enjoy the moment ….. let me love you….
নিরা:…..
নীড়: কি হলো? ঘাবড়ে আছো কেন?
নিরা: কিছু একটু tension হচ্ছিলো মেরিনকে নিয়ে।
নীড়: বাদ দাও তো ওই সাইকো টাকে……. মেরিন এতো সুন্দর করে সাজালো…. এর সদগতি করা যাক।
নিরা: বলছিলাম কি আমার না ভীষন ঘুম পাচ্ছে।
নীড়: shh…. আজকে কোনো ঘুম না। আজকে ২জনের চোখ জেগে থাকবে। তবে কোন ২জন তা জানিনা…..
নিরা: মানে….
নীড়:আরে কতোদিন পর তোমাকে পেলাম বলো তো। তবে তার আগে তুমি যে গহনার দোকান সেজে বসে আছো সেগুলো তো সরাই।
বলেই নীড় নিরার হাতের আংটি টা টান দিয়ে খুলে নিলো। এরপর আংটি টাতে kiss করলো। তখন নীড় , নিরা i mean নকল নিরার মুখে কস্টেপ লাগিয়ে নিজের gun টা বের করলো। যা দেখে নিরা ভয়ে কেপে উঠলো। এরপর নীড় ১টা কাগজে কিছু ১টা লিখে নিরার চোখের সামনে ধরলো।
.
তাতে লেখা
আছে: যদি নিজের জান বাচাতে চাও তবে চুপচাপ নিজের হাতে, ঘাড়ে নিজেই আচর কাটো। আর আমি যেই ক্লিপটা দিবো সেটা দিয়ে নিজের ঠোটে আর ঘাড়ে আঘাত করো। মনে হবে love bite….. এরপর চুপচাপ ঘুমিয়ে পরো। আর হ্যা তোমার mobile টা আমাকে দাও। then কিছু romantic romantic sound করে ওই recorder টা তে। ততোক্ষন আমি বারান্দা থেকে আসছি। যদি কিছু উল্টা পাল্টা হয় তো ৬ ৬টা বুলেট ঠিক মাথায় ঢুকিয়ে দিবো। ভয় নেই মেরিন যতো টাকা দিয়েছে তার ৩গুন দিবো।
নিরা নীড়ের কথা মতোই কাজ করলো। নীড় নিরাকে রুমে রেখে গেস্টরুমের বারান্দার কার্নিশে গিয়ে দারালো। ওর আন্দাজ মতো সত্যি মেরিন বারান্দায় বসে আছে। আর রাগে কুমাচ্ছে।
নীড় মনে মনে: তোমাকে আমি হারে হারে চিনি জানেমান। আংটির মধ্যে যে sound chip ছিলো সেটা আমি ঠিকই বুঝেছিলাম….. তুমি যে এখানে বসে সব শুনবে তাও বুঝে গেছি। তুমি যে রাগ ফেটে যাচ্ছো তাও জানি। কারন তুমি মুখে যাই বলোনা কেন আমি জানি, তুমি যে আমার সাথে অন্যকাউকে সহ্য করতে পারোনা। সারারাত জেগে তুমি নীড়-নিরার কাহিনি শুনবে আর রাগে কুমাবে। আর আমি সারা রাত তোমায় দেখবো।
ভোরের দিকে মেরিন গিয়ে শুয়ে পরলো।
.
সকালে……
মেরিন সোফায় বসে আছে। কফি খাচ্ছে। তখন দেখলো নীড়-নিরা একসাথে নিচে নামছে। নিরার মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব। ঠোটে কামড়ে চিহ্ন। ঘাড় থেকে ওরনা পরে গেলো। যার কারনে নিরার ঘাড়ের দাগটাও মেরিন দেখতে পেলো। মেরিনের মাথায় রাগ উঠে গেলো। দৌড়ে নিজের রুমে গেলো। সব কিছু ভাঙচুর করলো।
মেরিন: চরিত্রহীন লম্পট….. সব মিথ্যা সব….
মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
বিকালে……
মেরিনের শাস্তি মহলে…..
নিরা: আসবো ম্যাম?
নিরা আসতেই মেরিন নিরার গলা চেপে ধরলো। নিরা দম নিতে পারছেনা।
মেরিন: তুই কে তুই জানিস না? তোর সাহস কিভাবে হয় ন… mr. chowdhuri এর সাথে …. তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
নিরা: আআমার কোনো দোষ নেই। আপনি ভভুল ভভভাবছেন।
মেরিন: ভুল? তোর শরীর যে …. i will kill you….
নীড়: নিরা…… মেরিন ছারো ছারো ওকে। মরে যাবে।
মেরিন: যাক।
অনেক কষ্টে নীড় মেরিনকে সরালো। এরপর মেরিন নীড়ের গলা চেপে ধরলো।
.
মেরিন: চরিত্রহীন লম্পট…..তোর মতো মানুষ কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারেনা। তুই আমাকে কেন নিরাকেও কখনো ভালোবাসিসনি। ভালোবাসলে ঠিকই বুঝতে পারতি যে ও নিরা না অন্য কেউ। কিন্তু তুই …. বুঝতে তো পারিসই নি উল্টো রাতভর…. তুই কেবল মেয়েদের শরীরকে ভালোবাসিস। আমি আজকে তোকে……
নীড় দম ছারতে পারছেনা। চোখ লাল হয়ে গেছে। তবুও নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করছেনা। উল্টা ওর ঠোটের কোনে হাসি। নীড়ের অবস্থা দেখে মেরিন ছেরে দিলো। নীড় কাশি দিতে লাগলো। যা দেখে মেরিনেরই কষ্ট হচ্ছে। এরপর নীড় উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো। মেরিন কিছু বুঝতে পারছেনা।
নীড়: কেন কাল রাতের ঘটনা তোমাকে effect করছে?
মেরিন: কারন ওইটা অবৈধ তাই।
নীড়:তাও মানবে না যে আজও আমাকে ভালোবাসো।
মেরিন: বাসিনা বাসিনা বাসিনা। কাউকে ভালোবাসিনা।
নীড় :তাহলে কেন এতো react করছো? বলো? আমি যার সাথে যা মন চায় করতে পারি।
মেরিন: তাহলে কেন মিথ্যা বলেন যে আমাকে ভালোবাসেন? সব তো আপনাদেরকে দিয়েই গিয়েছিলাম তবে কেন আবার এতো নাটক।
নীড়: সব দিয়ে না সব কেরে নিয়ে গিয়েছিলে…..
১টা বার নিজের বুকের ওপর হাত রেখে বলো তো যে সবটাই নাটক মনে হয় কিনা?
মেরিন: হ্যা মনে হয়। আর আপনাকে আমি divorce দিয়েই ছারবো।
নীড়: আমি কখনোই signature করবোনা।
মেরিন: ভুলে গেছেন নাকি আমরা যে মুসলিম….. তাই মুখে মুখেও divorce দেয়া যায়। ৩ বার তালাক বলে।
নীড়:…….
মেরিন: ১ তালাক…. ২ ত……
মেরিন আর বলতে পারলোনা। নীড় ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
.
নীড় মেরিনের হাত চেপে ধরল।
নীড়: তোমার কোনো ক্ষমতা নেই আমাকে divorce দেয়ার।
মেরিন: ধরবেন না আমায়। আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে।
নীড়: নোংরা হাত মানে?
মেরিন: আপনি ভালো করেই জানেন আমি কিসের কথা বলছি।
নীড় : তাহলে আমিও তোমাকে কথা বলছি কাল রাতে সবটাই নাটক ছিলো। আর এইগুলো তার প্রমান। নীড় তার ২হাত দিয়ে শুধু তোমাকেই ভালোবেসেছে। আর কাউকে না।
মেরিন:মিথ্যা মিথ্যা সব মিথ্যা। আপনি আমাকে না মেয়েদের শরীর কে ভালোবাসেন। আপনি আসলে ১টা চরিত্রহীন।
নীড়: মেরিন থেমে যাও…..
মেরিন: না থামবো না….. আপনি ১টা মেয়ে বাজ। দুশ্চরিত্রবান।
নীড় আবার মেরিনকে থাপ্পর মারলো। নীড় মেরিনের চুল টেনে দার করালো।
.
নীড়: কি দেখেছিস মেয়ে বাজের বল…. কি দেখেছিস… বল। ১বছর তো ছিলি আমার সাথে কখনো তোর দিকে কুনজর দিয়েছি? বল? নাকি অন্য মেয়ের সাথে ফুর্তি করতে দেখেছিস? বল? কতোবার বলবো যে তোকে ভালোবাসি… বল…. ঠিকাছে মানলাম আমি তোকে ভালোটালো বাসিনা। তোকে চিনিনা… তোকে বুঝিনা। কিন্তু তুই তো আমাকে ভালোবাসিস। আমাকে চিনিস, বুঝিস তাহলে তুই কেন আমার ভালোবাসা চিনিস না বুঝিস না। ভাসোবাসলে বিশ্বাস করতে হয়। কিন্তু তুই আমাকে বিশ্বাসই করিসনি। আসলে তুমিই আমাকে কখনো ভালোবাসোনি। তুমি আমাকে কেরে নিতে চেয়েছিলে নিরার কাছ থেকে। যেমন করে নিরা তোমার সবটা কেরে নিয়েছিলো। আমি তোমার প্রতিশোধ ছিলাম মাত্র। তুমি ভালোবাসতেই জানোনা।
বলতে বলতে নীড় কেদে দিলো। নীড় মেরিনকে ছেরে দিলো।
মেরিন:……
নীড়: ভালোবাসি তোমাকে। এই নাও সেই contract paper…. যেখানে ছলনা করে তোমার signature নিয়েছিলাম। এগুলো নির্বনকে তোমার কাছে থেকে কেরে নেয়ার জন্য ছিলোনা। এগুলো ছিলো। তোমাকে আমার জীবনে ফিরিয়ে আনার। আর সেই challenge …. যাও তুমি আমাদের ছেলেকে নিয়ে। তোমাকে আর আটকাবো না। তুমি বললে তোমার যাওয়ার ব্যাবস্থা আমি করে দিবো। তাও তুমি শান্তিতে থাকো। আমার আর কিছু চাইনা। কিন্তু আমার ভালোবাসাকে নাটক মনে করোনা। আমি সত্যি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি। অসম্ভব ভালোবাসি। শুধু এটা বিশ্বাস করো। আর কিছু চাইনা।
মেরিন:……
নীড়: যাওয়ার আগে শুধু একটাবর বলে যাও যে তুমি বিশ্বাস করো যে আমি তোমাকে ভালোবাসি……
মেরিন:…..
নীড়: বলো……
মেরিন: না। আমি বিশ্বাস করিনা।
.
নীড়: কি করলে বিশ্বাস করবে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি? জীবন দিলে?
মেরিন: মেরিনের মতো dialogue মারলেই মেরিন হওয়া যায়না। আর যে কেউ মেরিনের মতো জীবন দিতে পারেনা। uffs….. আমিই তো কখনো ভালোবাসিনি। নাটক তো আপনি না আমিই করেছিলাম ভালোবাসার। এখন সরেন আমি যাবো।
নীড়: তুমি বিশ্বাস করোনা যে আমি তোমাকে ভালোবাসি…..
মেরিন:না…..
নীড়: জীবন দিলে বিশ্বাস করবে তো আমি তোমাকে ভালোবাসি……
মেরিন:…..
নীড়: দেখতে পারবে আমার মৃতদেহ……?
মেরিন: সরুন।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলো। ৪কদম সামনে যেতেই মেরিন গুলির আওয়াজ পেলো। মেরিন দুম করে নীড়ের দিকে ঘুরলো। আর দেখলো যে নীড়ের বুক থেকে গলগল করে রক্ত ঝরছে। পলকেই মেরিনের দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেলো….. মেরিন চিৎকার করে
বলল: নীড়………..
মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো
মেরিন:এএএটা কককি ককরলেন নীড়…… কি করলেন….. আমি এটা চাইনি নীড়…… আমি যে আপনাকে অনেক ভালোবাসি….. অনেক….. আপনি বলেছিলেন না কিভাবে আমি এই ৮বছর ঘুমিয়েছি, কিভাবে খেয়েছি, কিভাবে থেকেছি….. আমি বলছি। আমি এটা ভেবে ঘুমিয়েছি যে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। আপনি আপনার ভালোবাসাকে নিয়ে সুখে আছেন। এটা ভেবেই ৮বছর কাটিয়েছি। তবে কেন আজকে এমনটা করলেন…….
নীড় মুচকি হেসে
বলল: যযদি আগে জানতাম যে ননিজেকে গগুলি করলে তততোমার মুখ থেকে নননিজের নাম শুনতে পারবো….. আমাকে ভালোবাসো সেটা শুনতে পারবো….. আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটা বিশ্বাস করাতে পারবো…. তবে আরো আগেই এমনটা করে নিতাম।
.
হসপিটালে……
নীড়ের অপারেশন চলছে। মেরিন দরজার মধ্যে মাথা ঠেকিয়ে দারিয়ে আছে। কান্না করছে। আর নীড়ের বলা শেষ কথা গুলো মনে করছে…… তখন বাড়ির সবাই চলে এলো। জন মেরিনের কাধে হাত রাখলো। মেরিন জনকে জরিয়ে ধরলো। কাদতে লাগলো।
মেরিন: আমি তো এমনটা চাইনি ভাইয়া….. তবে কেন এমনটা হলো? আমি তো উনার ভালোই চেয়েছিলাম। উনার সুখ চেয়েছিলাম। নীড়ের কাছ থেকে নীড়ের ভালোবাসা কেরে নিয়েছিলাম। তাই তো তাকে তার ভালোবাসা ফিরিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলাম। তবে উনি কেন নিজেকে আবার দুর্ভাগ্যের সাথে জোরা লাগাতে আসলেন।
নীলিমা: আমার ছেলের ভালোবাসা আর কেউনা। কেবল তুমি…… তোমাকেই আমার ছেলে সত্যি কারের ভালোবেসেছে। আর কাউকে না।
মেরিন: না মামনি এটা তোমার ধারনা। উনি নিরাকে….
কনিকা: না নিরাকে না তোমাকে ভালোবাসে।
মেরিন: মামনি…. ওই মহিলাকে কথা বলতে নিষেধ করো।
কনিকা: তবুও আজকে আমি বলবো।
মেরিন: আপনার কোনো কথা শুনতে আমি বাধ্য নই।
নিহাল: আমার কথা তো শুনবে??
মেরিন:……
নিহাল: তুমি কালকে ওই নিরাকে এনেছিলে কারন তুমি ওর মাধ্যমে আসল নিরার খোজ জানতে চেয়েছিলে….
মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
নিহাল: অবাক হলে। তাইতো? আমি জানতাম না….. নীড় জানতো।
মেরিন:…..
নিহাল: চলো তোমাকে নিরার কাছে নিয়ে যাই…….
.
নিহাল মেরিনকে নিয়ে সেই শ্মশানে গেলো।
মেরিন অবাক হলো…..
নিহাল: এখানেরই মাটির সাথে মিশে আছে পুরে ছাই হয়ে যাওয়া নিরা……
মেরিন:মানে…….
নিহাল: তুমি জনকে যে কাজটা দিয়েছিলে তার বাইরেও জন ১টা কাজ করেছিলো। জন নিরার সত্যটা আমাদের সবার সামনে তুলে ধরে। এরপর পুলিশ ওকে arrest করে নিয়ে যায়। তার ৩দিনপর রাতেরবেলা নিরা আর ওর বাবাকে নীড় বের করিয়ে আনে।
( আমার যতদূর মনে পরে আমি বলেছিলাম নিরার বাবার হাত-পা কাটিয়েছিলো মেরিন। জানে মারেনি।)
তুমি সবাইকে যেখানে শাস্তি দিতে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলো। সেখানে নিয়ে নিরার বাবার সামনে প্রথমে নিরার একটা একটা করে আঙ্গুল কাটে এরপর হাত-পা। জিহ্বা , কান পর্যন্ত কেটো দেয়। যা দেখে নিরার বাবা অনেক আকুতি মিনতি করে। কিন্তু নীড় ….. বাবা মেয়ের কান্না দেখে ওর মনে আনন্দ হয়। অবশেষে বাবা-মেয়েকে এখানে এনে জীবীত পুরিয়ে দেয়। এর থেকে ভয়ংকর মৃত্যু মনে হয় কখনো কেউ কাউকে দেয়নি। তোমার সাথে হওয়া অন্যায়ের চরম প্রতিশোধ নেয় নীড়।
মেরিন:……..
নিহাল: আর কেন নিয়েছিলো জানো? কারন ও তোমাকে ভালোবাসে। সেদিন তুমি পার্কে যেগুলো দেখেছে নিঃসন্দেহে সব সত্যি। কিন্তু সব সত্যিরই ২টা দিক থাকে। নীড় নিরার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছিলো। যেনো ওর ভরসা অর্জন করে ওর মুখ দিয়ে সব সত্য স্বীকার করিয়ে ওকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে পারে। আর ওদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দিতে পারে। তবে সবটাই আইনী মাধ্যমে। কারন তুমি তো জানোই ও কেমন ছিলো….. কখনো কারো ক্ষতি চাইতো না। সবটা তোমাকে আগেই বলতে চেয়েছিলো। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস দেখো…. নির্বনের কারনে তোমার মুড সুইং হচ্ছিলো। আর তাই নীড় চেয়েও তোমাকে কিছু বলতে পারেনি….. শুধু তাই নয়। তোমাদের বিবাহ বার্ষিকিতে ও তোমাকে কি উপহার দিতে চেয়েছিলো জানো? ও তোমাকে আবার বিয়ে করতে চেয়েছিলো……. কিন্তু একটু ভুল বোঝার জন্য তোমাদের সুখের ৮টা বছর শেষ হয়ে গেলো। ও তোমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেনি মেরিন…. ও তোমাকেই ভালোবেসেছে। এই ৮বছরে ও যে কি হয়ে গিয়েছিলো তা কেবল আমরা জানি।
সব শুনে মেরিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। ও কি করেছে…….
.
২দিনপর…..
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। নীড় দেখলো ওকে ঘিরে সবাই দারিয়ে আছে। কিন্তু মেরিন নেই।
নীড় মনে মনে:আমার বউটা কোথায়? আমি suicide attempt করতে করেছি বলে রাগ করে চলে যায়নি তো……
নীড়ের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সবাই নানা ধরনের কথা বলল। নীড় হামম বলেই সব জবাব দিলো। পরে ডাক্তারের বলাতে সবাই বেরিয়ে গেলো। সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর নীড় বাম দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো যে মেরিন বসে আছে। বসে বসে নীড়ের report গুলো পড়ছে। নীড় মুচকি হাসলো।
নীড় মনে মনে: পাগলি…..
নীড়: সিস্টার….. সিস্টার।
নার্স দৌড়ে এলো।
নার্স: জী বলুন।
নীড়: আমার বউটাকে দেখেছেন?
নার্স মেরিনকে দেখিয়ে
বলল: ওই তো…..
নীড় নার্সকে চোখ মেরে
বলল: না না ওই ম্যাডাম না। ওই যে আছেনা slim…. hooooot figure …. দেখতে পেন্সিলের মতো । কি যেনো নাম? হ্যা নিরা। নিরা। ওকে ডেকে দিননা। বউ ছারা কেন যেন এতিম এতিম লাগছে।
নার্স মুচকি হেসে
বলল: তিনি তো আসেননি। তিনি আসার আগ পর্যন্ত মেরিন ম্যামকে….
নীড়: ওরে বাবারে….. আগুনে ঝাপ দিবো…. দেখুন কিভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ভষ্ম করে দিবে। বলছিলাম কি আপনি free আছেন?
নার্স: sorry sir… i m married ….
বলেই নার্স চলে গেলো। মেরিন জানে নীড় ওকে রাগানোর জন্য বলছে। মেরিন মনে মনে ভীষন হাসছে। ৫দিনপর নীড়কে বাসায় নেয়া হলে মেরিন নীড়ের সেবায় জুরে গেলো। হসপিটালেও all time মেরিনই ছিলো নীড়ের সাথে। তবে ১টা কথাও নীড়ের সাথে বলেনি। নীড় মেরিনকে অনেক জালিয়েছে। কিন্তু মেরিন react করেনি। তবে অনেক enjoy করেছে।
.
১০দিনপর…..
রাতে…..
বাবা ছেলে ঘুমিয়ে আছে। একই ভাবে। মেরিন ২জনের কপালে চুমু দিলো।
মেরিন: ভালোবাসার জন্য ১টা নীড় কম ছিলো যে নীড়ের কার্বন কপিও আল্লাহ আমাকে দিয়ে দিলো। বাবাকে না দেখে না জেনেও ছোটবেলা থেকে বাবার মতোই হয়েছে। নজর না লাগুক বাবা ছেলের। থু থু থু……
.
মেরিন বারান্দায় দারিয়ে আছে। হঠাৎ কারো গরম নিঃশ্বাস ঘারে পরলো। কেউ তাকে জরিয়ে ধরলো। মেরিন মুচকি ১টা হাসি দিলো। এরপর মুখে রাগী ভাব ফুটিয়ে নিজেকে ছারিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলো। তবে ব্যার্থ হলো।
নীড়: নীড়ের বাধন থেকে মেরিন কখনো ছুটতে পারবেনা।
মেরিন:…..
নীড়: ভালোবাসার প্রমান দেয়া কি এখনো বাকি?হামম বুঝেছি আরো ১টা গুলি খেতে হবে ….
মেরিন ঘুরেই নীড়কে ঠাস করে ১টা থাপ্পর দিলো।
মেরিন: suicide করতে চাইলেনা i will kill you….
নীড়: থাপ্পর মারার কি দরকার ছিলো? ভালোভাবে বলা যেতো না…
মেরিন:না। সরেন ঘুমাবো। এই কয়দিন অসুস্থতার সুযোগে অনেক জ্বালিয়েছেন।
নীড়: তা এখনও কি কোলকাতা যাওয়ার plan আছে? গেলে ভালোই হবে। নতুন ১টা বিয়ে করবো। brand new বউ পাবো।
মেরিন:খুব শখ না বিয়ে করার না….. কারো দিকে চোখে তুলে তাকালেও না জানে মেরে দিবো। শালা…… ৩টা মাস ধরে বকবক করে কানের মাথা খেয়ে ফেলেছে অথচ নিরার যে টায়টায় ফিস করছে তা বলে নাই…. আবার ঢং দেখাইতে আসছেন। সরেন ঘুমাবো।
মেরিন নীড়কে আরো ১টা থাপ্পর দিয়ে idiot বলে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রুমে চলে গেলো।
.
নীড় আকাশের দিকে মুখ করে বলতে
লাগলো: ৮বছর আগে তো গালে kiss দিতো। আর এখন থাপ্পর। আল্লাহ তোমাকে আমি ধন্যবাদ দেই যে আমার বউ typical না। but why she is too much difficult !!
তখন মেরিন দৌড়ে এসে ঝাপিয়ে পরলো নীড়ের বুকে। ২জনই পরে যেতে নিলো। নীড় কোনোরকমে balance করলো। মেরিন কাদতে লাগলো।
নীড়: কান্না করছো কেন? আমি তো বেচে আছি।
তখন মেরিন নীড়ের বুকে কিল মারলো।
নীড়: ouch…..
মেরিন: i m sorry……. i m sorry…..
নীড়: its ok… অতোটাও ব্যাথা পাইনি।
মেরিন: হারামিটা…..
আমার জন্য আমাদের জীবনটা শে…..
নীড়: shh…. কে বলেছে জীবন শেষ। হ্যা সুখের ৮টা বছর delete হয়ে গেছে। but you know what……. স্বর্নটা যতো পুড়ে ততোই খাটি হয়। আমাদের ভালোবাসাও তেমনটাই।
মেরিন: কিভাবে আমি আপনাকে অবিশ্বাস করলাম? কিভাবে কিভাবে কিভাবে…..
নীড়: এটা কেবল situation এর demand ছিলো। nothing else……
মেরিন: না নীড়। আমি অপরাধী। সত্যি আমি ভালোবাসতে পারিনা।
নীড়: থাপ্পর মারবো।
মেরিন: u should punish me….
নীড়: করবো তো punish… romance এর ৮টা বছর কেটে গেলো। ভাবতে পারো এই ৮বছরে at least আমাদের আরো ৪টা baby হতো।
মেরিন: what??
নীড়: হামম। ওদিক থেকে ১জন বাবা সেদিক থেকে ১জন বাবা। ভাবা যায়…..
মেরিন: পাগলটা। কিন্তু নীড় শাস্তি না পেলে যে আমি শান্তি পাবোনা।
নীড়: যদি শাস্তি পেতে চাও তবে আমাকে ১টা promise করতে হবে।
মেরিন: হামম। বলুন।
নীড়: promise করো যে আমি যখন তোমার কাছে কিছু ১টা চাইবো তুমি সেটা মন থেকে দেবে……
মেরিন: এটা কি সেই ৮বছর আগের আবদার….
নীড়:হামমম।
মেরিন: mr. & mrs. khan কে আবার আম্মু বাবা বানাতে হবে । এইতো…..
নীড়: হামম। কিন্তু জোর করে না মন থেকে। আমি আর তোমার মুখে হাহাকার দেখতে পারবোনা। আমি মেরিনকে সত্যি ভালো থাকতে দেখতে চাই। আমি চাইনা আমার মেরিনের…. ভালোবাসারমেরিনের জীবনে কোনো কালো মেঘের ছায়াও আর দেখতে চাইনা। আমি সত্যিকারের হাসি দেখতে চাই। মা-বাবার সাথে rudely কথা বলে পরে মনে মনে কষ্ট পাওয়া , নিজেকে আঘাত করা মেরিনকে আর চাইনা। আমি আমার মেরিনের জীবনটা আলোয় আলোয় ভরিয়ে দিতে চাই।
.
খুশিতে মেরিনের চোখে পানি চলে এলো। নীড় ঠোট দিয়ে শুষে নিলো।
নীড়: আজ থেকে তোমার সকল দুঃখ আমার। তুমি যেমন আমার চোখের পানি সহ্য করতে পারোনা তেমনি আমিও পারিনা।
মেরিন: এতো ভালো কবে বাসলেন আমাকে….
নীড়: জানিনা……
বলেই নীড় ১টা লকেট বের করে মেরিনকে পরিয়ে দিলো….. যেটাতে নীড়-মেরিনের ছবি আছে।
নীড়: আজকে এই অন্ধকারকে সাক্ষী রেখে আমি নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ওয়াদা করছি কখনো কোনো কথা তোমার কাছে লুকাবোনা….. নিঃশ্বাস নেয়ার আগেও তোমাকে বলবো….. চোখেক পলক ফেলার আগেও তোমাকে বলবো। সকল ঘৃণা শেষ করে দিবো।
মেরিন: আমিও কথা দিলাম জীবনের সব পর্যায়ে সকল অবস্থাতেই মেরিন নীড়ের সাথে থাকবে। মৃত্যুর সময়েও মেরিনের হাতে কেবল নীড়ের হাত থাকবে।
.
মেরিনের জীবন থেকে সব ঘৃণার অবসান ঘটলো। ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিনে পরিনত হলো। মেরিন সুখী হলো। ওদের marriage anniversary তে নীড় আবার মেরিনকে বিয়ে করলো। মহাধুম ধাম করে। মা-বাবা…. শশুড়-শাশুড়ি, স্বামী-সন্তান সবাইকে নিয়ে মেরিনের সুখের জীবন শুরু হলো। নীড় মেরিনের জীবনকে সুখ দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ন করে দিয়েছে।
—(সমাপ্ত)—
সিজন ২
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০১
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
.
.
.
চট্টগ্রাম….
☆:১১২কোটি ১,, ১১২ কোটি ..
☆:১৫কোটি…
☆:১১৫ কোটি ১,,
☆: ১২০কোটি ….
☆:১২০কোটি… the amount is increasing… ১২০কোটি ১…. ১২০ ক….
☆ : ১২৫ কোটি…
☆:১২৫কোটি ১,, ১২৫ কোটি ২,,,
☆: ১৪০ কোটি…। ।
☆: oh my god…. the নিহাল আহমেদ চৌধুরী বললেন ১৪০ কোটি। হয়তো উপস্থিত আর কেউ এটাকে আর বারাতে চাইবেনা। so… ১৪০কোটি ১,, ১৪০কোটি ২,, ১৪০কোট….
■: ১৯৫কোটি টাকা,,,
১৯৫কোটি কথাটা শুনেই সবাই পিছে ঘুরলো। ১জন ছারা। যে ঘোরেনি সে হলো নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। যে ১সপ্তাহ আগে london থেকে ফিরলো। লেখা পড়া complete করে। সে সাইডে দারিয়ে তার জান নীরার সাথে কথা বলছিলো। আর যে ১৯৫কোটি টাকা বলল তাকে দেখে কারো ঘাম ছুটতে লাগলো আবার কারো চোখ বেরিয়ে আসতে লাগলো। আবার কারো কাপাকাপি শুরু হলো। আবার তার দিকে তাকিয়ে কারো চোখ ঝলসাতে লাগলো। কারন সে হলো none other than the মেরিন বন্যা খান। যে কালো রঙের লেডিস ব্লেজার পরেছে। হাতে কালো ঘড়ি। ঠোটে গাঢ়ো লাল লিপস্টিক। স্মোকি আইস। 4 layer করে কাটা চুলগুলো উচু করে ঝুটি করা। ২পাশে চুল বের করা।
☆: মমমেরিন ববববন্যা খখখান। ১৯৫কোটি টাকা এএএক,,, ১৯৫,,,
মেরিন : stop… এখানে উপস্থিত কেউ এই dealটার জন্য ১৯৫কোটি টাকার বেশি দাম চরাবে না। so don’t waste my time ….
আসলেই এখানে উপস্থিত কেউ এটাকে আর বারাবেনা। টাকার বিষয় তো আছেই তবে তারথেকে বড় কারন হলো মেরিন। মেরিন যখন এখানে এসেছে তখন এই ডিলটা ও ই নিবে। যেভাবেই হোক না কেন।
☆: tttthis dddeal goes ttto tttthe মমমমেরিন বববন্যা খান।
মেরিন style মেরে স্টেজে উঠলো। deal paper নিলো। তখন চোখ গেলো নীড়ের দিকে। নীড়ের পেছন দেখা যাচ্ছে। কালো ব্লেজার। কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। হাতটা দেখা যাচ্ছে। সেই সাথে হাতের ঘড়ি আর আংটি।
মেরিন মনে মনে: কে এই ব্যাক্তি যে মেরিন বন্যা খানের উপস্থিতিতে অন্য কাজ করছে। strange …
সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেরিনের ধ্যান ভাঙলো।
মেরিন : yes…
সাংবাদিক : ম্যাম… এই ডিলটা নেয়ার কারন?
মেরিন: মেরিন বন্যা খান কখনো কাউকে কোনো জবাব দেয়না।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো। নীড় কেবল মেরিনের পেছনটা দেখলো।
১ঘন্টাপর…
মেরিন : জন…
জন: yes mam…
মেরিন : নিহাল আহমেদ চৌধুরীর সাথে আজকে তার ম্যানেজারের ছারাও আর কে এসেছিলো?
জন : ম্যাম উনার একমাত্র ছেলে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন।
মেরিন : ওহ। আচ্ছা শোনো…
জন: জী ম্যাম…
মেরিন: পরশু তুমি officeএ একটু তারাতারি যেও। আমার একটু লেট হবে।
জন: ok ম্যাম।
মেরিন : ok bye… পরশু দেখা হবে।
জন: পরশু?
মেরিন : হামম। কারন এখনই আমি ঢাকা রওনা হচ্ছি।
জন : এই রাতে?
মেরিন : হামম।
জন: ok mam… আমি তাহলে সব গুছিয়ে নিচ্ছি।
মেরিন: দারাও….
জন : জী ম্যাম।
মেরিন: আমি কি বলেছি তুমিও আজকে যাবে?
জন: কিন্তু ম্যাম…
মেরিন : আমি একা যাবো। & i don’t want any argument ….
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
২ঘন্টাপর…
মেরিন full volume এ গান ছেরে গাড়ি চালাচ্ছে। ” আয় খুকু আয়”। গান শুনতে শুনতে হুইসকির বোতলটার মুখ দাঁত দিয়ে খুলল। এর ঢোক মুখে দিলো। এরইমধ্যে হঠাৎ করে ওর গাড়ির কিছুটা সামনে থাকা গাড়িটা break মারায় ওকেই খুব জোরে break চাপতে হলো। যার কারনে ওর কপালটা স্টিয়ারিং এ লেগে সামান্য কেটে গেলো।
মেরিন : what the hell…
মেরিন রেগে মেগে হুইসকির বোতলটা হাতে নিয়েই বের হলো। তেরে গাড়িটার দিকে এগিয়ে গেলো ।
মেরিন: hey you dumb… stu….
তখন গাড়ি থেকে এক সুদর্শন যুবক বেরিয়ে এলো। formal get up… black suit পরা চুল গুলো হালকা ডার্ক করা। ভীষন ফর্সা। পাকা রং যাকে বলে। কাচা হলুদের মতো। লম্বা ৬.২। ঠোট ২টা লাল। crush খাওয়ার মতো। সে ১বার হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে এরপর ২কান ধরে sorry sorry বলতে বলতে এগিয়ে এলো। ভীষন cute লাগছে দেখতে। ছেলেটার পরনে থাকা suit সেই সাথে ডান হাতে থাকা ঘড়ি আর অনামিকা আঙ্গুলের সেই স্বর্নের আংটিটা দেখে মেরিন বুঝতে পারলো এটা সেই নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। মেরিন নীড়ের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে।
নীড় কানে হাত দিয়ে cute করে
বলল : i m really very sorry miss… আসলে আমি ইচ্ছা করে করিনি।
মেরিন : oh really? আপনার ভুল বসত করা কাজের জন্য আমার গাড়িটা নষ্ট হতে পারতো। জানেন এটার দাম কতো? u idiot….
নীড় অবাক হলো। কোনো মেয়ে এমনভাবে কথা বলতে পারে। তার কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে তবুও সে ওটার কথা না বলে গাড়ির কথা বলছে। তাও এতোটুকু ১টা মেয়ে। অতিরিক্ত হলে বয়স ২১ কি ২২ হবে। লম্বায় ৫.৩। হরিনের মতো চোখ। কালো লেডিস ব্লেজার পরা। ঠোটে dark red lipstick…. স্মোকি আইস। উচু করে ঝুটি করা। ডান হাতে ঘড়ি সেই সাথে ১টা হুইসকির বোতল।
মেরিন : এই যে hello…. why don’t answering?
নীড় : আসলে মিস গাড়িটা disturbed দিচ্ছিলো কিছুক্ষন যাবত থেমে গেলো। এখন হঠাৎ করে থেমেই গেলো। তাই….
মেরিন : shut up just shut up…. ছোটোলোক। এমন খাটারা গাড়ি নিয়ে বের হন কেন? ভালো গাড়ি কেনার টাকা না থাকলে কিনবেন না। third class & cheap ।
নীড় : excuse me… আপনার সাথে আমি ভালোভাবে কথা বলছি আর আপনি….
ভুল করেছি তাই আমি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন আপনার মতো ১টা মেয়েকে sorry বলছি। তাও আপনার মতো ১টা বেয়াদব মেয়েকে। যে কিনা মদ খেয়ে টাল হয়ে একটুপর এমনিতেই accident করে মরবে। যার একহাতে ওই মদের বোতল। যত্তোসব ফালতু মেয়ে।
মেরিন : you….
বলেই হাত ওঠালো নীড়কে থাপ্পর মারার জন্য । আর সাথে সাথে নীড় হাতটা ধরে ফেলল।
নীড় : আল্লাহ কেবল আপনাকেই হাত দেয়নি। আমাকেও দিয়েছ। ভুল করেছি বলে এই হাতটা ঠিক আছে। না হলে ভেঙে গুরিয়ে দিতাম। মেয়ে মানুষও মানতাম না। got it….
মেরিন অবাক চোখে দেখছে নীড়কে। এই প্রথম কেউ সাহস করে ওর সাথে কথা বলছে। তাও চোখে চোখ রেখে। নীড় মেরিনের হাত ছারলো । নীষ চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে এলো।
নীড় : দেখি আসুন আপনার মাথায় ব্যান্ডেজ করে দেই। অনেক রক্ত পরছে।
মেরিন:….
ও নীড়কে দেখতে ব্যাস্ত। নীড় মেরিনকে টেনে গাড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে first aid box বের করে মেরিনের মাথায় রক্ত মুছে পরম যত্নে ব্যান্ডেজ করছে। মলম লাগাচ্ছে আর মুখ দিয়ে ফু দিচ্ছে। মেরিন মুগ্ধ নয়নে নীড়কে দেখছে।
নীড় : কতোখানি কপাল কেটে গেছে সেটা না বলে উনি গাড়ির কথা বলছেন। কি ভাব….
মেরিনের কাছে দারিয়ে নীড়ের কেমন যেন ১টা অনুভূতি হচ্ছে। যেটা ৫বছরের ভালোবাসা নীরার কাছে থাকলে কখনোই হয়না। heart beat অনেকগুন বেরে গেছে।
নীড় কথা বলছে যার জন্য ওর ঠোট ২টা নরছে। সেই সাথে আছে নীড়ের অসম্ভব সুন্দর চোখজোরা।।
মেরিন : i love you…
নীরের হাত থেমে গেলো। অবাক চোখে মেরিনের দিকে তাকালো। নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। নীড় তো just shocked…. রাগ লাগছে ভীষন। কিন্তু কোথাও কোনো অন্যরকম ভালোলাগাও কাজ করছে। তবুও নীড় রাগটাকে প্রাধান্য দিলো। মেরিনকে ছারিয়ে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : অসভ্য মেয়ে। বেয়াদব। নোংরা মেয়ে। মা-বাবা কিছু শেখায়নি? নাকি পতিতালয়ে বড় হয়েছো? অসভ্য …. যে আমি আমার ৫বছরের ভালোবাসা আমার হবু বউকে…. idiot…. বাজে মেয়ে।
বলেই নীড় সোজা হাটা ধরলো।
মেরিন গালে হাত দিয়েই
বলল : আপনার গাড়িটা কি আর চলবে? আসুন আমার গাড়িতে বসুন। একসাথে ঢাকা যাবো। গল্প করতে করতে।
নীড়ের মাথা রাগের চোটে ফেটে যাচ্ছে। নীড় কোনো রকমে গাড়িটা start দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো। মেরিন ওখানে দারিয়েই হাহা করে হাসতে লাগলো। হুইসকির বোতলে চুমুক দিলো।
মেরিন : পালিয়ে কোথায় যাবেন নীড়…. মেরিনের নজর পরেছে আপনার ওপর। এখন থেকে আপনি আমার দৃষ্টিবন্দী নীড়। আপনি যে আমার নীড়। বন্যার বর্ষন।
৩দিনপর.. শাহজাহান খান স্বয়ং চৌধুরীদের office এ গেলো।
শাহজাহান খান : আসতে পারি?
নিহাল : আরে স্যার আপনি? আসুন বসুন বসুন….
শাহজাহান খান : ধন্যবাদ। আমি ১টা জরুরী কাজে এখানে এসেছি।
নিহাল: জী স্যার বলুন। স্যার আমাকে ডেকে পাঠাতেন।
শাহজাহান খান: আমার নাতনি মেরিন বন্যা খান student … তবুও সে আমার থেকে ভালোই business বোঝে। তবে মাঝে মাঝে sentimentএরও দরকার হয়। যেটা ওর জানার অগোচরে। তাই ও তোমার দেয়া offer টা reject করে দিয়েছে। আক সেটা আমি final করতে এসেছি। খান & চৌধুরীরা একসাথে কাজ করবে।
নিহাল: oh my god… i can’t believe sir.
thank u…
শাহজাহান : হামম। এই নাও ডিল পেপার । ঠান্ডা মাথায় এটা পড়ো। পড়ে ২দিন পর আমাকে ফোন কোরে। যে এই ডিলটা করবে কি করবেনা।
নিহাল: স্যার যেখানে আপনি এসেছেন সেখানে কোনা ভাবাভাবির দরকার নেই।
শাহজাহান : না। তুমি পড়ো।
নিহাল : আপনি যখন বললেন তখন এখনই পড়বো।
নিহাল ড্ল পেপারটা পড়লো। আর পড়ে তো ওর চোখ কপালে।
কারন যেই project টা ওরা jointএ করতে চায় সেটা সম্পুর্ন হবে minimum ৮০০ কোটি টাকা লাভ হবে। যার থেকে খান গ্রুপ ১টা টাকাও নিবেনা। খান গ্রুপ কেবল চৌধুরী গ্রুপের সাথে কাজ করবে। তবে,,, এই ডিলটা সম্পুর্ন করতে হলে চৌধুরী গ্রুপ & company এর
70% share মেরিনের নামে করতে হবে। মেরিনের নামে 70% share দিলেও মেরিন এই company এর কোনো টাকাতে কখনো কোনো ভাগ নেবেনা। ও just share নিবে 70%। এমন এ্যাগরিমেন্ট কখনো নিহাল দেখেনি।
নিহাল : uncle এটা কোন ধরনে ডিল?
মেরিন : আমি বলছি।
নিহাল : তুমি এখানে?
মেরিন: কেন আসা নিষেধ? যাই হোক uncle …. এই পেপারে sign করবেন কি করবেন না সেটা আপনি সময় নিয়ে ভাবুন ঠান্ডা মাথায়। যদি চৌধুরী গ্রুপ খান গ্রুপের সাথে মিলে যায় তবে চৌধুরী গ্রুপ কতোটা ওপরে চলে যাবে সেটা আপনি অবশ্যই আন্দাজ করতে পারছেন। তবে মনে রাখবেন যদি 70% মেরিনের নামে না হয় তবে 100% হয়ে যাবে ।
নিহাল ভালো মতো বুঝতে পারলো যে মেরিন কি বোঝাতে চাইছে। যদি ও পেপারে sign না করে তবে মেরিন ওর company খেয়ে ফেলবে। সব ডিলার দের , investor দের কিনে নেবে। তাই বাধ্য হয়েই নিহাল sign করলো।
মেরিন : thank you uncle.
নিহাল : welcome .
মেরিন : আমি সপ্তাহে ৩দিন এই officeএ বসবো। কাল থেকে। আর পরশু থেকেই project টা শুরু হবে। আসছি। চলো দাদুভাই।
মেরিন চলে গেলো।
পরদিন…
নীড় officeএ এলো। ওর রুমে গেলো। দেখলো ওর চেয়ারের পাশেই ১টা চেয়ার । যেখানে কেউ বসে আছে। পেছন ঘুরে।
নীড় : who’s that..?
মেরিন : its me. মেরিম বন্যা খান।
নীড় : মেরিন বন্যা খান? ঠিক চিনলাম না।
মেরিন ঘুরলো।
মেরিন : এখন চিনেছেন?
নীড় : you?
চলবে..
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০২
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় : you.?.
মেরিন : any doubt ?
নীড় : তোমার সাহস কি করে হয় আমার অফিসে এ ঢোকার ? আমার কেবিনে ঢোকার?
মেরিন: মেরিন বন্যা খানের সাহস পরিমাপ করা যায় বা করতে পারে এমন কোনো যন্ত্র বা ব্যাক্তি কিছুই নেই। আমার স্রষ্টাই একমাত্র আমার নিয়ন্ত্রক। বাই দ্যা ওয়ে … এখন তো কেবল আপনার অফিসে কেবিনে ঢুকেছি।
বলেই মেরিন নীড়ের সামনে এসে দারালো।
মেরিন : খুব শীঘ্রই এখানো ঢুকবো।
নীড়ের বুকে আঙ্গুল রেখে।
নীড় ঝারা দিয়ে মেরিনের হাত সরিয়ে দিলো। এতে মেরিনের হাত টেবিলের সাথে লেগে কেটে গেলো।
মেরিন : ও মা.এতো রাগ?জায়েজ আছে। মেরিন বন্যা খানের ভালোবাসার রাগ থাকবে না সেটা কি হয়?
একে তো মেরিন সামনে আসাতে নীড় হার্ট লাফাতে লাফাতে বেরিয়ে আসার উপক্রম। তার ওপর মেরিনের এমন তরো কথা। নীড়ের মেজাজ গরম হতে আর কি লাগে?
নীড় : shut up just shut up… get out from my cabin & office …
কথাটা শুনে মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন : জান..আপনি আপনার বাবার কাছে যান। সব বুঝতে পারবেন। তো মিস্টার জান… যান।
নীড় রেগে নিহালের কাছে গেলো। সব জানতে পারলো।
নীড় : what? এটা মেয়ে মানুষ না অন্যকিছু? একে তো আমি..
নিহাল : নীড়..দারাও.
নীড় : তুমি আমাকে আটকাচ্ছো বাবা?
নিহাল: হ্যা। আটকাচ্ছি। তুমি ছোটো ছোটো বাচ্চা বাচ্চা বিষাক্ত সাপ দেখেছো?
নীড়: বাবা…
নিহাল: বড় সাপের বিষ নামানো গেলেও সেই বাচ্চা সাপের বিষ নামানো অসম্ভব। মেরিন হলো সেই ছোটো বাচ্চা সাপ। যার ওপর না কোনো ওঝা প্রভাব ফেলে আর না বাজপাখি… ১৯ বছর বয়সে বিজনেস এ যোগ দিয়েছে। স্টুডেন্ট . বাট এই ৩বছরে ও খান empire এর প্রোপার্টি ৫গুন বারিয়েছে। ওর তেজ সূর্যের থেকেও যেন বেশি। চোখ বাজপাখির মতো। যেটায় চোখ পরে সেটাতে পরেই। খুবই ভয়ংকর ১টা মেয়ে। হার্টলেস…. রাগী পাজি জেদী। বদমেজাজী।ড্রিংক -স্মোক , মারামারি… এমন কোনো বাজে স্বভাব নেই যা ওর মাঝে নেই। যদি ওর নামে 70% শেয়ার না দিতাম তবে পুরো চৌধুরী গ্রুপটাকে ও মাটির সাথে মিশিয়ে দিতো।
নীড় : বাবা ওইটুকু ১টা মেয়েকে এতো ভয়…
নিহাল : হামম ভয়? ভয় না ঘৃণা। যারাই সংস্পর্শে এসেছে তারা সবাই ওকে ঘৃণা করতে বাধ্য ভয়। কেউ ভয় পেতেও বাধ্য হয় ওইটুকু মেয়েকে ভয়। because she is a psycho… সকলের অপ্রিয় যে সে হলো ঘৃণারমেরিন ।
নীড় : কিন্তু বাবা…. ওকে ভয় পেয়ে এখন ওর সাথে থাকবো? ওই ফালতু মেয়ের…
নিহাল : নীড়… ভাষা ঠিক করো। ও খারাপ হতে পার তুমি তো না।
নীড় : sorry … কিন্তু বাবা কি করবো?
নিহাল : ওর কাছে লাইফটা গেম। সব কিছুতেই হার অথবা জিত খোজে। ওর মন চেয়েছে এই অফিস এর শেয়ার নেয়ার নিয়েছে….
নীড় মনে মনে : ওর মন অফিস এ না আমার ওপর..
নিহাল : কি ভাবছো?
নীড় : তুমি মেনে নিতে পারো বাট আমি না।
মেরিন : তো কি করবেন?
নীড় : তুমি?
মেরিন : হামম। আমি। 70%শেয়ার নিয়ে আমি নিশ্চয়ই এই অফিস এর যেখানে ইচ্ছা যেতে পারি।
নীড় : disgusting…..
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
মেরিন মনে মনে : পালান জান পালান তবুও পরিশেষে আপনি আমার….
মেরিন নিজের জায়গায় গিয়ে বসলো।
পরদিন…
নীড় অফিস এ এলো। নীরার সাথে কথা বলতে বলতে লিফ্টে উঠলো। তাই খেয়াল করেনি যে মেরিনও লিফ্টে। নীড়তো নীরার সাথে হাসতে হাসতে কথা বলছে। আর মেরিন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম মেরিন নীড়ের হাসিটা দেখলো। ভীষন সুন্দর। মেরিন কেবল নীড়ের হাসিটাই দেখে যাচ্ছে। আর কিছু দেখার সময় নেই ওর। এমন কি নীড় কি পোশাক পরেছে তাও দেখেনি মেরিন। নীড়ের চোখ মেরিনের ওপর পরলো। চোখ পরতো না। কিন্তু হার্টবিট ফাস্ট হওয়ার কারন খোজার জন্য সাইডে তাকাতেই মেরিনকে দেখলো। সাদা লেডিস জিন্স। নেভি ব্লু রঙের লেডিস শার্ট।হাতা ফোল্ড করা। চুলগুলো খোলা। ঠোটে লাল লিপস্টিক। ব্রাউন চশমা। মেরিনকে দেখে নীড়ের হাসি উধাও হয়ে গেলো।
নীড় : পরে ফোন করছি জান।
নীরা : ok baby…
নীড় ফোন রেখে দিলো।
মেরিন : আপনার হাসিটা ভয়ংকর সুন্দর… keep smiling…
নীড় কিছু বলতে যাবে তখনই ওদের ফ্লোর এসে গেলো। নীড় হনহন করে ওর নতুন কেবিনে গেলো। নীড় রাতারাতি নিজের জন্য আলাদা কেবিনের ব্যাবস্থা করেছে। কিন্তু গিয়ে অবাক। কারন ওর চেয়ারের পাশে আরেকটা চেয়ার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরিন এসে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : ভালোবাসি জান….
বলেই নীড়ের পিঠে চুুমু দিলো।
নীড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো মেরিনকে।
নীড় : একদম আমাকে টাচ করবেনা বলে দিলাম।
বলেই নীড় গিয়ে চেয়ারে বসলো। বসে চোখ বন্ধ করলো। কিছুক্ষনপর বুঝতে পারলো যে কেউ ওর কোলে ধপ করে বসে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। তারাতারি মেরিনকে সরিয়ে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : নোংরা মেয়ে। বেহায়া। লজ্জা করেনা এমন কাজ করতে?
মেরিন : না…. কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনি আমার। ২দিনপর আপনার সাথে আমার বিয়ে। তাই লজ্জা পাওয়ার প্রশ্নেই ওঠেনা।
নীড় : ভালোবাসো? তোমার মতো বাজে মেয়ে ভালোবাসতে জানেনা। আর বিয়ে?
নীড় নিজের হাতের আংটিটা দেখিয়ে
বলল : দেখছো এটা? এটা আমার এংগেজমেন্ট রিং…
মেরিন : রিং টা মোটেও সুন্দরনা। চিপ… আর এনগেজমেন্ট হয়েছে বিয়ে না। আপনার বিয়েতাে আমার সাথেই হবে।
নীড় : in your dreams… তোমার সাথে আমার বিয়ে কখনোই হবেনা। যাকে ভালোবাসি সেই নীরা কেই আমি বিয়ে করবো।
মেরিন : দেখা যাবে।
বলেই মেরিন নীড়ের পাশের চেয়ারে বসলো। সারাদিন মেরিন কোনো কাজ টাজ না করে নীড়কেই কেবল দেখলো। বিকালে ওরা project siteএ গেলো। মেরিন তো কিছুই দেখছেনা নীড়কে ছারা। নীড় just বিরক্ত হচ্ছে।
২দিনপর….
সাইটে কাজ চলেছে জোর দমে । নীড় আসার আগেই মেরিন চলে এসেছে। নীড় এসে দেখে কাজ চলছে। আর perfectly চলছে।
নীড় : এর ধারে কাছে যাওয়া যাবেনা। দূরে থাকতে হবে…
নীড় খানিকটা দূরে গিয়ে দারালো। এখানের পরিবেশটা ভীষন সুন্দর।
নীড় : really very beautiful ….
মেরিন : yes… too much beautiful …
নীড় : আবার তুমি?
মেরিন : হামম।
নীড় চলে যেতে নিলো।
মেরিন : নীড়…
এমন ভালোবাসা মিশ্রিত ভাবে কেউ কখনো নীড়কে ডাকেনি। মেরিনের “নীড়” ডাকটাই বলে দিচ্ছে যে মেরিন নীড়কে কতোটা ভালোবাসে। তাই না চাইতেও নীড় দারালো। মেরিনের দিকে ঘুরলো। মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো। ২হাতে নীড়ের গলা জরিয়ে ধরে
বলল : ভালোবাসি…
নীড় মেরিনের হাত সরাতে সরাতে
বলল : are you totally mad…?
তখনই কোনো সোরগোল পাওয়া গেলো। নীড়-মেরিন সেখানে গেলো।
গিয়ে দেখলো ৫-৬জন গুন্ডা টাইপ লোক ম্যানেজারকে ধমকাচ্ছে। কারন ওদেরকে চাঁদা দেয়া হয়নি। আর এখানে নাকি কোনো কাজ করতে হলে ওদেরকে আগে চাঁদা দিতে হয়। ১জনের হাতে গান। যেটা দিয়ে দিয়ে ম্যানেজারকে ধমকাচ্ছে।
নীড় : what the…
বলেই নীড় রেগে যেতে লাগলো। ঠিক তখনই গুলির শব্দ পেলো। শব্দ পেয়ে নীড় পেছনে ঘুরলো। দেখলো মেরিনের হাতে গান। নীড় তো যাস্ট অবাক। আসলে যে গান হাতে নিয়ে ম্যানেজারকে ধমকাচ্ছিলো তার হাত বরাবর মেরিন shoot করেছে। বসের হাতে গুলে করেছে দেখে তার চ্যালাপেলারা ক্ষেপে গিয়ে মেরিনের দিকে তেরে আসতে নিলো। মেরিন ওদের পায়ের ওদিকে ফাকা গুলি করলো। ভয়ে ওরা ওখানেই থেমে গেলো। মেরিন ওদের সামনে গেলো।
মেরিন : এতোটুকু সাহস নিয়ে গুন্ডাগিরি…. whatever … মেরিন বন্যা খান কখনো কারো অনুমতি নিয়ে কাজ করেনা। তোরা তো কোন ছার। আর যদি কখনো তোদের চেহারাটা আমার চোখের সামনে পরে তাহলে কাজ করার জন্য হাত থাকবেনা,,, চলার জন্য পা থাকবেনা। now out….
নীড় তো এখনো হা করে দেখেই যাচ্ছে।
নীড় : এতোটুকুর জন্য লোকটাকে গুলি মারলে?
মেরিন : কপাল ভালো যে আমি রাগী অবস্থায় নেই। তাহলে বুলেটটা ওর মাথায় লাগতো।
জন : ম্যাম…. ম্যাম…
মেরিন : চেচাচ্ছো কেন?
জন : ম্যাম এখানে না…
মেরিন : চিন্তার কোনো কারন নেই… ২টা কফি…
জন : জী ম্যাম…
জন চলে গেলো।
নীড় : মেয়ে হয়ে সাথে ১টা গান নিয়ে ঘুরতে লজ্জা করেনা?
মেরিন : না.আর ১টা না ২টো গান নিয়ে ঘুরি।
নীড় : .
মেরিন : শুনুন না… একটু হাসুন না… হাসলে আপনাকে অনেক ভালোলাগে।
নীড় : তুমি ভাবলে কি করে যে তোমার ভালোলাগার কোনো কাজ আমি করবো…
মেরিন : না করলেন… কিন্তু মনে রাখবেন আজ আমার পছন্দের কাজ যেমন করছেন না একদিন এমনও দিন আসবে যে আমার অপছন্দের কাজ করবেন না।
নীড় : এমন দিন কখনো আসবেনা….
বলেই নীড় যেতে নিলো।
মেরিন পেছন থেকে
বলল : i love you…
নীড় : & i hate you….
কিছুদিন পর…
নীড় ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ ওর মনে হলো কেউ ওর হাত পা বেধে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি মুখও বাধা। নীড় তারাতারি চোখ মেলল। দেখলো ওকে খুব যত্ন সহকারে শূন্যে তুলে গাড়িতে ওঠানো হলো। এরপর কোথাও নিয়ে যাওয়া হলো। ১টা বিশাল বড় ঘরের মতো কিছু। ঘুটঘুট অন্ধকার। তাই কিচ্ছু দেখা যাচ্ছেনা। ওকে ১টা চেয়ারে বসিয়ে লোকগুলো চলে গেলো। তবে ওর heartbeat fast…
নীড় মনে মনে : আবার কেন heartbeat fast?
তখন লাইট জ্বলে উঠলো। সামনে তাকিয়ে দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে। মেরিন ১টা রিমোট প্রেস করে রুমটার roofসরিয়ে দিলো। চাঁদের আলোতে রুমটা ভরে গেলো। মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে এসে ওর কোলে বসলো। এরপর নীড়ের মুখের বাধন খুলে দিলো।
নীড় : what is all this? আমাকে এভাবে এখানে কেন আনিয়েছো?
মেরিন নীড়ের ঠোটে হাত বুলাতে বুলাতে
বলল: আপনাকে ভীষন দেখতে ইচ্ছা করছিলো তাই।
নীড়ের তো হাত বাধা। তাই নিজের হাত দিয়ে মেরিনের হাতটা সরাতে পারছেনা। তাই মাথা নারাচ্ছে।
নীড় : কি হচ্ছেটা কি? হাত সরাও ঠোট থেকে। আর সারাদিন কি আমাকে দেখোনি? রোজই তো দেখো।
মেরিন : হামম দেখি তো। কিন্তু রাতে চাঁদের আলোতে তো কখনো দেখিনি। তাই আপনাকে চাঁদের আলোতে ভীষন দেখতে ইচ্ছে হলো। দেখতে ইচ্ছে হলো চাঁদ বেশি সুন্দর না আপনি? নিঃস্বন্দেহে আপনি বেশি সুন্দর। i love you..
নীড় : & i hate you.. তুমি কি বোঝোনা যে আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি। তোমাকে আমি ভালোবাসিনা। ঘৃণা করি।
মেরিন : করুন… আপনাকে ভালোবাসার আগে তো এই শর্ত দিয়ে ভালোবাসিনি যে আপনিও আমাকে ভালোবাসবেন। আমি আপনাকে ভালোবাসি সেটাই বড়.
নীড় : তোমার problem টা কি? তুমি কি মনে করো তুমি আমাকে পাবে? আমি নীরাকে ভা…
আর বলতে পারলো না। মেরিন ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। একটুপর নীড় গালে গরম তরল কিছু অনুভব করলো। একটুপর মেরিন নীড়কে ছারলো। এরপর পাগলের মতো নীড়ের সারা মুখে kiss করলো। এরপর নীড়ের কোল থেকে উঠলো। then লোকগুলোকে ডাকলো। ওরা আবার নীড়কে একইভাবে বাসায় পৌছে দিলো।
৩দিনপর…
নীড় বসে বসে মেরিনের কথা ভাবছে।
নীড় : মেয়েটা এমন কেন? কেন বোঝেনা যে আমি নীরাকে ভালোবাসি। নীরা এসব কথা জানলে কতোটা কষ্ট পাবে। তারমধ্যে আগামী রবিবার নীরা আসছে। জানি না কি হবে? মেরিন যে dangerous …. ও যদি উল্টা পাল্টা কিছু করে ফেলে…
নীড়… কি সব ভাবছিস তুই? তোর এটা ভাবা উচিত যে যদি নীরা তোকে ছেরে যায় তাহলে কি হবে…. কিচ্ছু ভাবতে পারছিনা। মেয়েটা আমাকে পাগল করে ফেলেছে।
নীলিমা : কে পাগল করলো আমার ছেলেটাকে…
নীড় : আরে মামনি…
নীলিমা : আমার ছেলেটা যে এখনো বেড ছারেনি? অসুস্থ?
নীড় : না মামনি … এমনিতেই।
নীলিমা : তাহলেই ভালো। নিচে আসো। বাবা বসে আছে তোমার জন্য। নাস্তা করবে না?
নীড় : হামম তুমি যাও আমি আসছি।
নীলিমা: come soon…
বলেই নীলিমা চলে গেলো।
নীড় : thanks god যে আজকে শুক্রবার। সাইকোটার সাথে দেখা হবেনা। ১মিনিট ১মিনিট… যদি আমি বাইরে না যাই তাহলে তো ওকে আর সহ্য করতে হবেনা। হামম। good idea… কিন্তু রাতে যদি তুলে নিয়ে যায়? সেটারও ১টা ব্যাবস্থা করবো। at least ৩-৪দিন শান্তি পাবো।
৩দিনপর…
এই ৩দিন নীড় বাসা থেকেই বের হয়নি। নিহাল-নীলিমা-নীড় বসে আড্ডা মারছে। তখন বাইরে থেকে কানে তালা লাগানো শব্দ ভেসে এলো। আর যে শব্দটা হচ্ছিলো তাতে “নীড়” শোনা যাচ্ছিলো। ৩জন দৌড়ে বের হলো।
চলবে…..
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৩
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
.
বেরিয়ে দেখলো যে বাসার বাইরে ভীর জমে গেছে। আর ১টা গাড়ির ওপর দারিয়ে আছে। যেটা ধীরে ধীরে ওদের বাড়ির সামনে আছে মেরিন মাইক্রোফোন নিয়ে বলছে:
নীড় নীড় নীড়… where you… i love you….
মাইক্রোফোন টা বড় সরো ১টা স্পিকারে সাথে জইন করা। স্পিকারটাতে মেরিনের কথা বাজছে। যা শুনে কানে তালা লাগার উপক্রম…
নীড় : 😱।
নিহাল : এই মেয়ে এখানে এভাবে নীড়ের নাম নিচ্ছে কেন?
নীলিমা মনে মনে: মেরিন….
মেরিন নীড়কে দেখ খুশি হলো। নীড় রেগে মেরিনের দিকে গেলো। মেরিন লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন : ৩দিনধরে অফিস না আসার মানে কি?
নীড় : অসহ্য….. তুমি কি পাগল?
মেরিন : হামম। আপনার জন্য….. বিকজ আই লাভ ইউ….
নিহাল-নীলিমা: 😱।
নীড় : এন্ড আই হেইট ইউ…. আমার চোখের সামনে থেকে দুর হও তো।
মেরিন : সেটা আপনাকে বলতে হবেনা। এমনিতেও চলে যাবো। আপনাকে দেখা হয়ে গেছে । আমার কাজ শেষ। আসছি। আর হ্যা আজকে থেকে না হলেও কালকে থেকে অফিস এ চলে আসবেন।বাই…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নিহাল : ওহ মাই গুডনেস…. এটা আমার মাথাতেই আসেনি। আসলে মেরিনের উদ্দেশ্য তুমি?
নীড় কোনোকিছু না বলে রেড়ি হয়ে অফিস এ গেলো। এদিকে সকালে মেরিন যে কান্ড ঘটিয়েছে সে কান্ডের জন্য প্রেস মিডিয়ায় ঝড় উঠে গেছে।
২দিনপর….
নীড় ফোনে কথা বলছে। আর মেরিন কফি খেতে নীড়কে দেখছে। ঠিক তখনই কোথায় থেকে নীরা দৌড়ের এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নীরা :মিস ইউ জান…
নীড় : জান…
নীড় ফোন রেখে নীরাকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় :আই অল সো মিস ইউ… বাট তুমি আসবে আমাকে বলোনি কেন?
নীরা : বললে সারপ্রাইজ দিতাম কিভাবে?
নীড় : হামম তাও ঠিক।ইউ নো হুয়াট?
নীরা : হুয়াট?
নীড় : i love you…..
নীরা : i love you 2…
বলেই নীরা নীড়ের বুকে মুখ লুকালো। তখন নীড়ের চোখ মেরিনের দিকে পরলো। চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে আর হাত দিয়ে রক্ত।
নীড় মনে মনে : আমি তো এই ডাকাতের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আল্লাহই জানে এখন কি করবে?
নীড়কে অবাক করে মেরিন ওখান থেকে চলে গেলো। গিয়ে গাড়িতে বসলো ।
জন : ম্যাম… আপনার হাত দিয়ে তো অনেক রক্ত পরছে। দেখি ব্যান্ডেজ করে দেই…
মেরিন রেগে জনের দিকে তাকালো।
জন : ম্যাম… সেপটিক হয়ে যাবে…
মেরিন : ….
জন : ম্যাম আপনি যদি বলেন ওই নীরাকে এখনই… ২মিনিটও লাগবেনা নীড় স্যারের কাছে থেকে ওকে সরাতে।
মেরিন : আপাদত নীড়ের ওপর মেরিনের কোন অধিকার নেই। তাই নীড়ের বুকে ও এখনো সেফ আছে….
বলেই মেরিন চলে গেলো।
খান বাড়িতে…
মেরিন বাসায় ঢুকছে। তখন কবিরের সাথে মেরিনের চোখাচোখি হলো। যতোযাইই হোক সন্তানের আঘাতে তো বাবাদের হৃদয় ঠিকই পুরে। তাই কবিরেরও বুকটা মোচর দিলো। কিন্তু মেরিনকে ইগ্নোর করে চলে গেলো। এতে মেরিনের কিছুই যায় আসেনা… মেরিন রক্তাত্ব হাত নিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠছে। তখন ওর ফুপ্পি সেতু
বলল: কিরে অনামুখী কাকে খুন করে এলি?
মেরিন : আপনার অকর্মা বরটাকে….
বলেই মেরিন সোজা দাদুভাইয়ের রুমে গিয়ে দাদুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। দাদুভাইও ফাস্ট এড বক্স নিয়ে রেড়ি ছিলো। কারন জন আগেই ফোন করে সব বলেছে।
দাদুভাই: দেখি দিদিভাই… হাতটা দেখি….
দাদুভাই পরম যত্নে মেরিনের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
মেরিন : আমি নীড়কে বিয়ে করবো।
দাদুভাই : হামম করবে। কবে করবে তারিখ ঠিক করেছো?
তখনই ২জন শুনতে
পেলো : নানু…
২জন সামনে তাকালো । দেখলো নীরা দারিয়ে আছে।
নীরা: নানু নানু নানু….
মেরিন : ওখানেই দারাও… আর এক পাও যেন আগে না বারে …
নীরা : তোকে বলে আগে বারবো…
নীরা তাও আগে আসতে নিলে দাদুভাই থামিয়ে দিলো।
দাদুভাই: যা বলার ওখান থেকেই বলো।
নীরা : নানু আমি এতোদিন পরে এসেছি তাও তুমি..
দাদুভাই : তুমি কোনো জাতীয় সম্মাননা পাওয়ার মতো কাজ করে আসোনি। নিজের দোষ ঢেকে এসেছো।
নীরা : তোমার এই নাতনি বুঝি পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ করে?
দাদুভাই : তোমার মতো ছলনা করে না। নাও আউট…
নীরা : মাম্মি … মাম্মি…
মাকে ডাকতে ডাকতে আর ন্যাকা কান্না কাদতে কাদতে নীরা বেরিয়ে গেলো।
রাতে…
নীড় : মেরিন ওভাবে চলে গেলো কেন? কিছুই বললনা। নীড়… তুই কি চাস যে মেরিন react করুক…?
পরদিন….
নীড় অফিস এ গেলো। দেখলো মেরিনের গাড়ি নেই।
নীড় : আজকে এখনো আসেনি… কখনো তো লেট করেনা….
তখনই মেরিনের গাড়ি এসে হাজির। মেরিন আজকে নেভি ব্লু লেডিস কোট পরেছে। ডান হাতে ব্যান্ডেজ। মেরিনকে দেখে কেন যেন নীড়ের মনে হলো যে মেরিনের শরীরটা ভালোনা। তবুও নীড় মেরিনকে ইগ্নোর করে চলে গেলো। গিয়ে নিজের চেয়ারে বসলো।
৫মিনিটপর… মেরিন কেবিনে ঢুকলো। ঢুকে চুপচাপ নিজের চেয়ারে বসলো। নীড় আরো অবাক হলো।
নীড় মনে মনে : কেন যেন এর নীরবতা ঝড়ের পূর্বাভাসের মতো লাগছে।
মেরিন ল্যাপটপ খুলে কাজ করতে বসলো।
মেরিন: বিয়ে করবেন আমাকে?
কথাটা শুনে অবাক হয়ে তাকালো মেরিনের দিকে । যাকে ভালোইবাসেনা তাকে বিয়ে?
মেরিন ল্যাপটপে কাজ করতে করতে
বলল : কি হলো বলুন….
নীড় : আমি নীরাকে ভালোবাসি…. আর ওকেই বিয়ে করবো। বুঝেছো?
মেরিন : ভালোমতো জিজ্ঞেস করছি তাই ভালোমতো বলুন যে বিয়ে করবেন কি না?
নীড় : না….
মেরিন : হামম। ভালোমতো বললাম ভালো লাগলো না। এরপর কি হবে বা হতে পারে সেটা আমি নিজেও জানিনা ।
নীড় : যা মন চায় করো।…
২জন ২জনের কাজ করছে। হঠাৎ মেরিনের হাতের সাথে নীড়ের হাত ছোয়া লাগলো। মেরিন সাথে সাথে হাতটা সরিয়ে নিলো। কিন্তু নীড় বুঝতে পারলো যে পারলো মেরিনের শরীর অনেক গরম। মানে ভীষন জ্বর। এখন নীড় বুঝতে পারলো মেরিন কেন এসেই আজকে ওকে জরিয়ে ধরেনি। তখনই নীরা রুমে ঢুকলো।
নীরা : জান… একি তুই?
মেরিন জবাব দিলোনা।
নীরা : কি রে তুই এখানে কেন?
বলতে বলতে নীরা আগে বারতে লাগলো। মেরিন গানটা বের করে নীরার পা বরাবর ফাকা গুলি করলো ১টা। এরপর হাত দিয়েই ইশারা করলো চলে যেতে।
নীরা : তোর কি মনে হয় যে আমি ভয়ে চলে যাবো?
নীড় : জান চলো… আমরা অন্য কোথাও যাই।
নীড় নীরাকে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো।
নীরা : আরে তুমি কি ওকে ভয় পাও নাকি? ওই বেয়াদবটার ভয়ে …
নীড় : তুমি ওকে চেনো?
নীরা : চিনবো না কেন ? ও তো মেরিন। মেরিন বন্যা খান। মামার মেয়ে।
নীড় : what? ও তোমার মামাতো বোন?
নীরা : হ্যা। ও এখানে কেন ? তাও তোমার কেবিনে? তোমার পাশে। তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : শান্ত হও জান… আমি তোমাকে সব বলছি….
নীড় নীরাকে সব বলল।
নীরা : what? এতোকিছু তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : তুমি কষ্ট পাবে বলে…
নীরা : তুমি জানোনা ও কতো ডেঞ্জারাস … এখনি চলো।
নীড় : কোথায়?
নীরা : marriage registry office …
নীড় : what? কি বলছো কি?
নীরা : তা না হলে তুমি জানোনা ও যখন বলেছে যে তোমাকে বিয়ে করবে তখন করবেই।
নীড় : কিন্তু এখন কিভাবে সম্ভব।
নীরা : এখন না হলে কখনোই না… তুমি আংকেল-আন্টি কে ডেকে আসতে বলো। আর আমি মাম্মি-পাপা আর মামাকে আসতে বলি।
নীড় : কিন্তু এখনই কিভাবে সম্ভব?
নীরা : তারমানে তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাওনা?
নীড় : আরে কি বলো কি?
নীরা : তাহলে চলো?
নীড় : ওকে চলো।
ওরা মেরিজ রেজিস্ট্রি অফিস এ রওনা হলো।
মাঝপথে….
নীড় বাধ্য হয়ে গাড়িতে ব্রেক মারলো। কারন মেরিন পথ আটকে দারিয়ে আছে। নীড়-নীরা গাড়ি থেকে নামলো।
নীরা : তুই? সামনে থেকে সর…
মেরিন : মেরিন নিজের অনুযায়ী চলে। অন্যকারো না । তোমার মতো কোনো কীটপতঙ্গ তো আমার পায়ের ধুলা।
নীরা : 😤।
মেরিন গানটা আঙ্গুলে ঘোরাতে ঘোরাতে নীড়ের সামনে এলো।
গানটা নীড়ের গালে আলতো করে ধরে
বলল : জীবনে শেষবারের মতো আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। বিয়ে করবেন আমাকে?
নীড় : না….
মেরিন : ভেবে বলছেন?
নীড় : হামম।
জবাবে মেরিন ১টা রহস্যময়ী হাসি দিলো। নীরার ভয় লাগলো মেরিনের হাসিটা দেখে ভয় লাগলো।
মেরিন : জীবনে আর ভালোভাবে ভালোবাসা পাওয়া হলোনা। আর না মনের আশা পূরন হলো। এটাই হয়তো “মেরিন বন্যা খানের” সাথে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের শেষ দেখা।
“শেষ দেখা” কথাটা শুনেই নীড়ের বুক কেপে উঠলো।
তবে নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোটে হালকা ১টা কিস করে চলে গেলো। নীড় অবাক চোখে মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীরা : তারাতারি চলো…
নীড় : এখন বিয়ে না করলেই না… মনে তো হয়না যে ও আর ফিরবে…
নীরা : ও ফিরবে কি ফিরবে জানিনা… কিন্তু নানু আর ওর চামচা জন কি না কি বাগরা দেয় তার ঠিক নেই।
নীড় : কিন্তু…
নীরা : ও তো তুমিও ওর রূপের জ্বালে আটকে গেলে…
নীড় : কি যা তা বলছো?
নীরা : তাহলে চলো। রেজিস্ট্রি ম্যারিড টা করে নেই। বিয়েটা ১বার হয়ে গেলে আর কেউ কিছুই করতে পারবেনা। পরে না হয় ধুমধাম করে প্রোগ্রাম হবে। চলোনা…
নীড় : হামম।
মনে মনে : মেয়েটা না কিছু করে ফেলে….
নীড়-নীরার বিয়েটা সম্পুর্ন হলো।
রেজিস্ট্রি অফিস থেকে বেরিয়েই নীরার ১টা ফোন এলো। ১টা বড় মডেলিং এর। নীরা তো খুশিতে আত্মহারা। লাফাতে লাফাতে চলে গেলো।
আর নীড় ডুবে গেলো ভাবনার জগতে।
নীড় মনে মনে : সত্যিই কি তবে এটা শেষ দেখা ছিলো? ও কি নিজেকে কিছু করে ফেলবে? যা মন চায় করুক। আমার কি….
২মাসপর….
কালকে নীড়ের গায়ে হলুদ।
নীড় চাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ১৫-২০দিনের মতো মেরিনের সংস্পর্শে ছিলো। তবুও কেন যেন রোজ ভীষন ভাবে ওকে মনে পরে। ওর কথা , ওর কাজ। মেরিন নীড়কে ২দিন না দেখলে কেমন করতো সেই মেরিন….
নীড় : আমার জন্য কি তবে মেরিন কিছু উল্টা পাল্টা করলো? যদি সত্যি এমনটা হয় তবে এই পাপ আমি কোথায় রাখবো? কিচ্ছু জানিনা…
পরদিন…
সন্ধ্যায়…
আজকে নীড়-নীরার গায়ে হলুদ…
নীড় নিজেই রেড়ি হচ্ছে। হলুদ রঙের পাঞ্জাবি আর কালো রঙের ধুতি পরেছে নীড়। সিল্কি চুলগুলোতে আজকে জেল দেয়নি। আজও নীড় না চাইতেও মেরিনকে ভাবছে। হঠাৎ ই কারেন্ট চলে গেলো। তখন কেউ ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : আহ নী…
পরক্ষনেই নীড়ের বোধ হলো যে এটা নীরার ছোয়ানা। মেরিনের। নীড় ঝড়ের বেগে পিছে ঘুরলো। লাইট নেই। চাদও অনেকটা মেঘে ঢাকা। তবুও নীড় মেরিনকে স্পষ্ট দেখলো। দেখলো মেরিন হলুদ রঙের ১টা শাড়ি পরে আছে। যার মধ্যে কালো পাথর বসানো। খুবই সাধারন কিন্তু দারুন ১টা শাড়ি। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে মেরিনকে। না চাইতেও মেরিনকে দেখে নীড় টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।
নীড় : ত…
মেরিন নীড়কে কথা বলতে না দিয়ে ওর ঠোটে মাঝে আঙ্গুল রাখলো।
এরপর নীড়কে বসিয়ে ওর কোলে চরে বসলো। এরপর নীড়ের ২ গালে হলুদ লাগিয়ে দিলো। এরপর নীড়ের গালের সাথে নিজের গাল ঘষে নিজেও হলুদ রাঙা হলো। এরপর নীড়ের ঠোটে ১টা হালকা কিস করে চলে গেলো। আর লাইট জ্বলে উঠলো। নীড় সাথে সাথে মেরিনকে খুজতে বের হলো। কিন্তু কোথাও পেলোনা।
নীড় : তুমি স্বপ্ন নাকি সত্যি …
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৪
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
.
নীড় : তুমি স্বপ্ন নাকি সত্যি…. নাকি দুঃস্বপ্ন…..
নীড়কে নিচে নিয়ে যাওয়া হলো…. হলুদ সন্ধ্যা শুরু হলো। অনেক আনন্দ উৎসব হলো কিন্তু নীড় সত্যি নামক স্বপ্নটার রহস্য ভেদ করতে ব্যাস্ত। ও বুঝতে পারছেনা যে ওটা সত্যি সত্যি কি মেরিন ছিলো?
পরদিন….
আজকে নীড়ের বিয়ে।
নীড় : স্বপ্ন কিভাবে হতে পারে? মেরিন তো সত্যিই ছিলো। আমি তো ফিল করেছি। ফিল করেছি…. নীড় তুই কি করছিস? কি ভাবছিস ? তুই মেরিনকে কিভাবে মেরিনকে ফিল করতে পারিস…. তুই নীরাকে ভালোবাসিস…. নীরা তোকে ভালোবাসে। নীরা তোর বিয়ে করা বউ। তোর মনের মালিক কেবল আর কেবল নীরা। মেরিন কেবল ভেসে আসা কালো মেঘ। আজকের পর থেকে আর ওকে নিজের কল্পনায় আনবোনা……
আমার
ভালোবাসার সাথে অন্যায় করতে পারবোনা আমি।
রাতে….
চারদিকে মানুষ ভরপুর। রমরম করছে। প্রেস-মিডিয়া সবাই উপস্থিত। কাজী সাহেব এলো। কারন রেজিস্ট্রি ম্যারিজ করা হলেও কবুল পরিয়ে তো আর বিয়ে হয়নি….. ঠিক তখনই সাইরেন বাজাতে বাজাতে ১ডজন পুলিশের গাড়ি হাজির হলো। সবাই তো অবাক। আইজি, ডিআইজি… কমিশনার সব এসে হাজির। সবাই তো মহা অবাক। কবির-নিহাল দৌড়ে গেলো।
কবির : কি ব্যাপার আপনারা এখানে?
নিহাল : কোনো সমস্যা? আপনারা হঠাৎ এখানে?
কমিশনার : হাজার শুকরিয়া করুন যে হোমমিনিস্টার আসেনি। আচ্ছা আপনারা এতো বড় এবং উচ্চশিক্ষিত মানুষ হয়ে এমন বেআইনি কাজ করতে আপনাদের লজ্জা করছেনা?
কবির : বেআইনি কাজ? কি বেআইনি কাজ করছি?
ডিআইজি: বিবাহিত ছেলের আবার বিয়ে দিচ্ছেন তাও ডির্বোস না করিয়ে…. তাও জোর করে…. আবার বলছেন কি বেআইনি কাজ।
নিহাল: হুয়াট? বিবাহিত ছেলে মানে?
কমিশনার : বিবাহিত ছেলে মানে বোঝেন না? নাকি নাটক করছেন? সবার কোমড়ে দরি বেধে নিয়ে যাবো থানায়।
নীড় আর বসে থাকতে পারলোনা। কি হয়েছে জানার জন্য উঠে এলো।
নীড় : কি হয়েছে?
কমিশনার : এই যে আপনি…. ২মাস আগে বিয়ে করা বউ রেখে নতুন করে বিয়ে করতে লজ্জা করছেনা?
নীড় : কি আবোল তাবোল কথা বলছেন? বউ রেখে নতুন বিয়ে করবো কেন?আমার ওয়াইফ নীরা। আর নীরাকেই ২মাস আগে বিয়ে করেছি। তখন রেজিস্ট্রি ম্যারিজ ছিলো। আর এখন ইসলামিক ভাবে….
আইজি : শাট আপ…. লজ্জা করছেনা মিথ্যা বলতে। সবাই কে ধরে নিয়ে যাবো থানায়। থার্ড ডিগ্রি দিলে মজা বুঝবেন। আমাদেরকে মিথ্যা বলছেন? আপনার ওয়াইফ আপনাদের ম্যারিজ রেজিস্ট্রি পেপার আমাদেরকে দেখিয়েছে। আমরা সেটা ভালোভাবে চেক করে দেখেছি। সবটা সত্যি ছিলো।
নীড় : ওহ রিয়েলি ? তো কোথায় , কে আমার ওয়াইফ ..
মেরিন : আমি…..
সবাই দরজার দিকে তাকালো। দেখলো সাদা লেহেঙ্গা আর গা ভরতি গহনা পরে দারিয়ে আছে মেরিন।
দেখে মনে হচ্ছে স্বর্গ থেকে কোনো অপ্সরী। সটাইল মেরে হেটে আসলো।
নীড়: তুমি?
মেরিন : ইয়েস হানি ….
কমিশনার : চিনলেন তাহলে…..
নীড় : চিনবোনা কেন?দ্যা মেরিন বন্যা খান।
মেরিন : উহু… একটু ভুল হলো। মেরিন বন্যা খান নয়…. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী…
নীড় :শাট আফ… অফিসার সি ইস নট মাই ওয়াইফ….
আইজি: তাই?
তখন আইজি নীড়-মেরিনের ম্যারিজ রেজিস্ট্রি পেপার টা বের করে
বলল : তাহলে এটা কি?
নীড় কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো তাতে বরের নাম বরের মা-বাবার নাম তো ঠিকই আছে চৌধুরী চৌধুরী…. কিন্তু কনের নামের জায়গায় সব খান খান…. মেরিন বন্যা খান , কনিকা খান , কবির ফয়সাল খান…
নীড় : এগুলো সব ফালতু… ভুয়া….
বলেই নীড় কাগজটা ছিরতে গেলো। কিন্তু পারলোনা। কমিশনার নিয়ে নিলো।
কমিশনার : মিস্টার নীড়….
আপনার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি…. আপনি আমাদের সামনে…
নীড় : দেখুন….
নিহাল : দারাও নীড়… অফিসার..এই পেপার কি না কি জানিনা…. তবে আমাদের কাছেও ১টা পেপার আছে। দারান। দেখাচ্ছি….
বলেই নিহাল আরেকটা পেপার নিয়ে এলো…. সেটা আইজির হাতে দিলো।
নিহাল : পড়ে দেখুন।
আইজি পড়তে লাগলো।
নিহাল : এটাই আসল। এই কারনেই কপি। মেজিস্ট্রেট বলেছিলো এখন নাকি নতুন রুলস… তাই সাথে সাথে আসল পেপারটা পাওয়া যাবেনা। আর এই মেয়েটা আসল পেপার নিয়ে এসেছে। তাহলেই বুঝুন….
আইজি : এমন নিউ রুলস এর কথা কখনো শুনিনি মিস্টার চৌধুরী….
বলেই আইজি সাহেব পেপারটা নিহালের চোখের সামনে তুলে ধরলো।
বলল: আই থিং আপনার এটা পড়ে দেখা দরকার আমার না।
নিহাল পেপারটা হাতে নিলো । পড়লো। আর পড়ে আরেক দফা ঝটকা খেলো। কারন এটাতো মেরিনের কাগজেরই কপি। মানে নীড়-মেরিনের ম্যারিজ রেজিস্ট্রি এর। নীড় হাতে নিলো। নীড়ও অবাক।
নীড় : এটা কি করে সম্ভব…সিগনিচার করার সময় তো ঠিক দেখেছিলাম। তা….
তখন নীড়ের মনে পরলো যে সেদিন নীরা সাইন করার পর হঠাৎ বাইরে শোরগোল হয়েছিলো। হঠাৎ করে এমন হওয়াতে সবাই বেশ চমকে গিয়ে পেছনে ঘুরেছিলো…. আর বিয়ের ১০মিনিট পরেই নীরা সকল বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে মডেলিং করতে চলে যায়। আর আকস্মিকভাবে বিয়েটা হওয়াতে পেপারটা আর পড়াই হয়নি।
নীড় : ওহ গড…. অফিসার ইস এ চিটিং…. বিশ্বাস করুন…
আইজি :শাট আফ..
নীড় : ওকে ফাইন … বিয়ে যখন আছে তখন ডির্বোসও আছে। এই ম….
আইজি: জানতাম… আপনি এই কন্ট্রাক্ট পেপারটাও হয়তো ভুলে গেছেন।
বলেই তিনি আরো ১টা পেপার বের করে দিলো। যেটাতে লেখা মেরিনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মেরিনই নীড়ের বউ থাকবে । নীড়ের তো কথা বলার ভাষাই নেই।
নিহাল: এসব আমরা মানিনা….
ডিআইজি: কিছু করার নেই…. না মানলে আপনাদের সবাইকে জেলে পচে মরতে হবে….
উনারা অনেক অপমান করলো সবাইকে।
নীরা : এটা কোন ধরনের কথা? আপনারা নিশ্চয়ই ঘুষ খেয়েছেন….
মেরিন :অফিসার… আপনাদের ঘুষখোর বলছে… আর তারথেকেও বড় কথা,,, আসল কালপ্রিট তো এই মেয়েটা…. ওই নিজে সব প্লান করেছে। আমার স্বামীকে ফাসিয়েছে…. অ্যারেস্ট হার…
কমিশনার : এমন মেয়েকে তো আসলেই …. অ্যারেস্ট করা উচিত..
কবির : ১মিনিট…. নীরার মামা কবির ফয়সাল খান এখনো জীবীত। আমি কবির ফয়সাল খান বলছি যে আপনারা চলে যান। আর আমার ভাগনীর দিকে ভুলেও পা বারাবেন না। আমার পাওয়ার তো জানেন….
তখন দাদুভাই পেছন থেকে
বলল :আর মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর পাওয়ারটাও তো জানেন। মেরিন বন্যা মানেই শাহজাহান খান…. সো অ্যারেস্ট হার….
নীড় : ১মিনিট… সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো মেয়েকে অ্যারেস্ট করা যায়না। নিশ্চয়ই ভুলে যাননি….
আইজি : না যাইনি…. তবে এনাকে আপনি বাচাতে পারবেন না…
বলেই ওনারা চলে গেলো।
.
আর তখন ধাধা করে গুলি চলতে লাগলো। না না কারো ওপরে না। শূন্যে…
কারন এটা মেরিন বন্যার বিয়ে । এখানে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ না , গুলির শব্দ পাওয়া যাবে। বাদ্যযন্ত্রতো সব বিয়েতেই বাজে। তাই মেরিন ওর বিয়েতে ২১ ধরনের গান এর গুলি আওয়াজ দিয়ে মিউজিক বাজাচ্ছে।
কবির : তোমাকে তো মেয়ে আমি….
মেরিন : জন…. এই লোকটাকে ১মিনিটের মধ্যে আমার চোখের সামনে থেকে সরাও….
জন নিয়ে গেলো।
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে
বলল: ভালোভাবে সেদিন বলেছিলাম না বিয়ে করতে…. করলেন না…. তাইজন্যেই তো এতোকিছু করতে হলো । এই বাদরমুখীকে অতো বড় মডেলিং এর অফার দিতে হলো। সেদিন বলেছিলামনা … ” মেরিন বন্যা খানের সাথে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের এটাই শেষ দেখা। ”
এখন আপনার সামনে মেরিন বন্যা খান না, মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী দারিয়ে আছে। চলুন ইসলামিক নিয়মে কবুল বলে বিয়ে করি।
নীড় ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো। জন আর মেরিনের বাকি লোকজন তেরে আসতে নিলে মেরিন থামিয়ে দিলো। মেরিন ২হাত দিয়ে নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কেন খামােখা ঝামেলা করছেন? আপনি কি চাইছেন উপস্থিত সবার মাথার ঘিলু উরে যাক…. আর সবার আগে উরুক আপনার বাবার মাথা।
নীড়:সাহস থাকলে করে দেখাও….
মেরিন : কেন খামোখা বয়স্ক বাবার রক্ত ঝরাতে চাইছেন? তবুও…. আপনি যখন চাইছেন তখন….
ওরনার নিচে থাকা গানটা মেরিন নিহালের দিকে তাক করলো।যাস্ট শুট করবে তখন নীড় মেরিনের হাত ওপরে উঠিয়ে দিলো।
নীড়: ঠিক করছো না…
মেরিন গানটা হাতে নিয়েই আবার নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
বলল : আমি কখনোই কারো জন্য কিছু ঠিক করতে পারিনা ….
বলেই নীড়ের গালে কিস করলো। আর আবারও হাওয়ায় গুলি বর্ষিত হলো। বুলেটগুলো মিউজিকের মতো করেই যেন বাজতে লাগলো।
চৌধুরী বাড়িতে….
নীলিমা নতুন বউ বরন করবে বলে বরন ডালা নিয়ে দারিয়ে আছে। নিহাল, নীড়-মেরিন গাড়ি থেকে নামলো। নীড় হনহন করে ঘরে ঢুকতে নিলে নীলিমা বাধা দিলো।
নীলিমা : আমার বউমাকে ফেলে তুমি একা ভেতরে ঢুকতে পারোনা।
নিহাল: এটা নীরা মা না.. এটা….
নীলিমা: মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী। আমার বউমা… উহু…. আমার মেয়ে ।
নিহাল: তোমার কন্ঠ বলছো তুমি খুশি….
নীলিমা: অবশ্যই…
নিহাল: ও…. তাহলে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড এর মেয়ের জন্য খুশিতে আত্মহারা…?
নীলিমা: হামম।
নিহাল: এমন মেয়েকে বউমা হিসেবে পেয়ে তোমার আনন্দ দেখে আমি শিহরিত… অবশ্য আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই মেয়ে এমন কেন। দেখতে হবে না কার মেয়ে? চরিত্রহীন মায়ের অসভ্য মেয়ে।
“চরিত্রহীন মা”- কথাটা শুনে মেরিন চোখ গরম করে নিহালের দিকে তাকালো।
নিহাল : আমাকে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই। সারা দুনিয়ে জানে যে কনিকা কবির খান উফস নট কনিকা কবির খান জানিনা কি সারনেইম হতে পারে তার। হুয়াট এভার … সবাই জানে যে কনিকা চরিত্রহীনা….
মেরিন আর ১মিনিটও দেরি না করে দরজার পাশে জ্বলতে থাকা লাইটের সারি থেকে ১টা লাইন ১টানে ছিরে নিয়ে মেরিন ওটা দিয়ে নিহালের গলায় পেচিয়ে দাতে দাত চেপে
বলল : যদি তুমি নীড়ের বাবা না হতে তবে তোমার এই জিহ্বাটা টেনে ছিরে কুকুরদের খাওয়াতাম।
নিহালের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। ঘটনা টা এতো তারাতারি ঘটলো যে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে গেলো। নীড় তারাতারি মেরিনকে সরিয়ে নিলো।
নীড় : বাবা তুমি ঠিক আছো? এই মেয়ে তোমাকে…
নিহাল : ছারো তো নীড়।
রাত ১টা….
নীড় রুমে ঢুকলো। দেখলো সারাঘর ফুলে সাজানো। আর দেয়ালে ওর আর মেরিনের ছবি দিয়ে ভরা। নীড় বেডের সামনে গেলো। ১টানে ফুলগুলো ছিরে ফেলল।
নীড়: বিয়ে হয়েছে বলেই তুমি আমার ভালোবাসা হয়ে যাওনি। আমি তোমাকে ঘৃণা করি এবং ঘৃণা করবো। বুঝেছো,,, ঘৃণা।
মেরিন বসা থেকে উঠতে উঠতে
বলল : আপনার ঘৃণাই আমার জন্য অনেক কিছু। আপনার ঘৃণাই আমার বেচে থাকার জন্য যথেষ্ট।
আর হ্যা,,, ভালোবাসার চেয়ে ঘৃণা অনেক দামী… ভালোবাসা তবুও ভোলা যায় কিন্তু ঘৃণা কখনো ভোলা যায়না। কারন ভালোবাসা থাকে হৃদয়ে আর ঘৃণা থাকে হৃদয়ের গভীরে। মেরিন তো নীড়েরই। ভালোবাসার নাই বা হোক,,, হোক না সে
ঘৃণারমেরিন …
বলেই মেরিন নীড়ের পা ধরে সালাম করতে গেলো। কিন্তু নীড় সরে গেলো।
নীড় : আমিও দেখবো তুমি আমার ঘৃণা নিয়ে কতোদিন টিকতে পারো…..
বলেই নীড় ওয়াসরুমে এ চলে গেলো। বেরিয়ে এসে দেখে মেরিন লেহেঙ্গাটা পাল্টে ১টা শাড়ি পরে আছে। নীড় কোনোকথা না বলে কপালে হাত দিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। মেরিনকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে সেই সাথে কোথাও কোনো বাধাও অনুভব করছে। তাই শুয়ে পরলো। পরমুহুর্তেই বুঝতে পারলো যে মেরিন ওর বুুকের ওপর মাথা রেখে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড় মেরিনকে ১টা ঝারা দিয়ে ফেলে দিলো।মেরিন পরে গেলো। যথেষ্ট ব্যাথা পেলো।
নীড় : খবরদার আমাকে ছোবেনা। কোনো অধিকার নেই তোমার । বুঝেছো? তোমাকে কখনোই আমি নিজের বউ বলে মেনে নিবোনা। আর না বউয়ের অধিকার … ছুতে আসলে জানে মেরে দিবো।
মেরিন : মানেন না মানেন বউ তো আপনারই কাাছে বউয়ের অধিকার চাইওনি। শুধু একটু ঘুমাতে চাই আপনার বুকে ..
নীড় : কল্পনাও করবে না …
মেরিন : আপনি কি কোনো কথাই ভালোভাবে শুনতে পারেন না?
নীড় কোনো কথা না বলে শুয়ে পরলো।
মেরিন : ভালোমতো জিজ্ঞেস করছি..আপনার বুকে আজকে আর আগামী প্রতিদিন আপনার বুকে ঘুমাতে দিবেন কি না?
নীড়: …
মেরিন : কি হলো..বলুন..
নীড় : …
মেরিন : নীড়….
নীড় : না…. শুনেছো?
মেরিন : হামমম।
৫মিনিটপর….
মেরিনের কোনো সারাশব্দ না পেয়ে নীড় পেছনে ঘুরলো । দেখলো মেরিন নেই । নীড় উঠে বসলো।
নীড় : গেলো কোথায়?
মেরিন : আমি এখানে…
নীড় বারান্দার দরজার দিকে তাকালো। দেখলো মেরিন ১টা বড় সরো মদের বোতল হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে দরজায় হেলান দিয়ে।
নীড় : তুমি আসলেই ১টা বাজে মেয়ে।
মেরিন বরাবরের মতো সেই রহস্যময় মুচকি হাসি দিলো। এরপর বোতলে ১বার চুমুক দিলো। মেরিন বারান্দার দরজাটা লক করে বোতল টা হাতে নিয়ে বেডে গিয়ে বসলো।
মেরিন : বুকে নিয়ে ঘুমাবেন?
নীড় : ….
মেরিন বেডের চারদিকে মদটা ছিটিয়ে দিলো। এরপর বাকী মদটুকু চুমুক দিয়ে শেষ করলো।
মেরিন : শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করছি….
নীড় :নো…
মেরিন আর কিছু না বলে চোখের পলকে আগুন লাগিয়ে দিলো। দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো।
.
চলবে…..
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৫
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
দাউদাউ করে আগুন
জ্বলতে লাগলো। নীড় তো অবাক।
নীড় : এই মেয়ে কি করছো কি?
মেরিন : বসে আছি নিজের চিতায়….
দেখতে পারছেন না…
নীড় : দেখি হাত দাও…
মেরিন বসে রইলো। নীড় বেডে যেতে নিলো। কিন্তু পারলোনা।
নীড় দরজা খুলতে গেলে পারছেনা..সব লকড। এমনকি ওয়াসরুম এরও..
নীড় : মেরিন বেরিয়ে আসো..আগুন কিন্তু ছরিয়ে যাবে হাত দাও…
মেরিনের কোন হেলদোল নেই। নীড় ১টানে ১টা পর্দা নিলো। এরপর সেটা নিয়ে ঝাপ দিলো বেডে….
মেরিন : আমার সাথে আগুনে পুরতে চান?
নীড় : দেখি এটা গায়ে পেচিয়ে নাও।
মেরিন : আগে বলুন আপনার বুকে ঘুমাতে দিবেন?
নীড় : তুমি কি পাগল?
মেরিন : হামমম। অনলি ফর ইউ….
নীড় : দেখো তোমার শাড়িতেও কিন্তু অ্যালকুহল….
আগুনে ধরে যাবে….
মেরিন :যাক…
নীড় : আগুনে পুরে যাবে যে….
মেরিন : বন্যা কখনো আগুনে পুরেনা…
নীড় মেরিনকে ওঠানোর চেষ্টা করলো।
নীড় : এতো শক্ত হয়ে ১টা মেয়ে মানুষ কিভাবে বসে থাকতে পারে….
মেরিন : যেভাবে আমি আছি….
নীড় : ওঠো….
মেরিন : আগে বলুন তবে বুকে নিয়ে ঘুমাবেন.. আজকে আর আগামী সবরাতে….
নীড় : ..
মেরিন : বলুন…
নীড় : ওকে…
মেরিন :প্রমিস?
নীড় :প্রমিস..
মেরিন :গড প্রমিস ?
নীড়: গড প্রমিস ….
সাথে সাথে মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: দেখি বের হতে হবে এখান থেকে…
কোনো রকমে আগুন নেভানো হলো। মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমালো।
পরদিন…
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। মেরিন নীড়ের ঠোটে ১টা ডিপ কিস করে উঠে গেলো। নিহাল বাগানে বসে আছে। কপালে হাত দিয়ে। তখন দেখলো ওর সামনে ১টা কাপ এলো। চায়ের না। তবে কিছু ১টা আছে। নিহাল তাকিয়ে দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে।
মেরিন : এটা খেয়ে নাও বাবা.
নিহাল : খবরদার আমাকে বাবা ডাকবেনা। তোমার অধিকার নেই আমাকে বাবা ডাকার…
মেরিন: মেরিনকে অধিকার দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। এখন এটা খেয়ে নাও। গলার ব্যাথাটা কমবে….
নিহাল : shut up…
বলেই নিহাল চলে যেতে নিলো।
মেরিন : আমি যখন বলেছি যে তুমি এটা খাবে তখন যদি এটা আমার তোমাকে খাওয়াতে হয় তাহলে
কিন্তু ব্যাপারটা ভালো হবেনা…. আর আমি জানি তোমার গলায় যথেষ্ট ব্যাথা আছে।
নিহাল : তোমার হুমকি তে ভয় পাইনা…
মেরিন : শেষ বারের মতো বলছি খাবে কি খাবেনা?
নিহাল জানে এই মেয়ে কে দিয়ে বিশ্বাস নেই। তাই খেয়ে নিলো।
বিকালে…
নীরা : তুই এটা ঠিক করিসনি…. তুই আমার শিকার কেরে নিয়েছিস…..
মেরিন : শিকার? যদি নীড় তোর এই রূপটা দেখতে পারবে সেদিন আমাকে আর কষ্ট করে তোর সর্বনাশ করতে হবেনা…. নীড়ই করবে। শুধু ১টা প্রমান …. এরপর তোর কপালে কি আছে তুই কল্পনাও করতে পারবিনা….
নীরা : তুই খুজেও কোনো প্রমান পাবিনা । আর প্রমান পেলেও নীড় তোর কথা বিশ্বাস করবেনা। আর রইলো আমার কথা…. আমাকে তো তুই ছুতেও পারবিনা…. আমার চতুর্দিকে কবির ফয়সাল খান নামের প্রটেকশন দেয়াল আছে। আমার মামা….
মেরিন : তোর মামা নামের দেয়ালকে আমি তোয়াক্কা করি নাকি? দেয়ালটাকে ধুলো বানাতে আমার মুহুর্তও লাগবেনা।
নীরা : এই জেলে আমাকে কতোদিন বন্ধ করে রাখবি?
মেরিন :কসম আল্লাহর আমি চাইনা তোকে এই জেলে বন্দী রাখতে। আমি তো চাই তোকে আমার বানানো জেলে রাখতে। যেখানে জেইলার আমি, জজ আমি, ব্যারিস্টার আমি, জল্লাদ আমি, আইনও আমি….
তবে আমি তোকে আমার জেলে নিলে তোর ক্যারয়ার তোর ফিউচার কিছুই ধংব্স করতে পারবোনা। তোকে জানে মারতে পারবো। কষ্ট দিতে পারবো। কিন্তু সেটা আমি করবোনা…. তোকে যাস্ট জানে মারলে আমার কলিজা জুরাবে না….
কদিন জেলের হাওয়া খা। জেলে থেকে তাও ৩বেলা খাবার পাবি। বের হলে god knows….
জেলে থেকে বের হওয়ার সময় জেইলারকে বলে গেলো নীরার জীবন অতিষ্ট করে দিতে।
মেরিন বাসায় ফিরে দেখে নিহাল-নীড় কি যেন বলাবলি করছে। ওকে দেখে থেমে গেলো।
মেরিন : planning plotting চলছিলো বুঝি?
নীড় : তোমার জন্য কি কথা বলাও যাবেনা। ?
রাতে….
নীড় বারান্দায় বসে আছে। তখন ওর সামনে ১টা খাবারের প্লেট এলো।
নীড় : now what? মেরিন আমাকে খাইয়ে দিননা…. সকাল থেকে না কিছু খাইনি….
নীড় : তো আমি কি করবো?
মেরিন: ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে।
নীড়: তোমার হাত কি নষ্ট হয়ে গেছে নাকি?
মেরিন : উহু… আপনার হাতে খাবো।
নীড় : পারবোনা।
মেরিন :না খেলে মরে গেলে আপনাকে ভালোবাসবে কে?
নীড় : যত্তোসব…. তুমি মরে গেলে আমি শান্তি পাবো।
মেরিন : আপনি কোনো কথাই ঠিক মতো শোনেন না…. খালি আমাকে রাগান…. আজকে এখন আমার সারাবাড়িতে আগুন লাগানোর ইচ্ছ নেই।
নীড় আর কোনো কথা না বারিয়ে মেরিনকে চুপচাপ খাইয়ে দিলো।
পরদিন….
নীড়-মেরিন খান বাড়িতে গেলো। কেবল দরজা দিয়ে ঢুকবে তখন কবির
বলল : ওখানেই দারাও… এই খান বাড়িতে ঢোকার কোনো অধিকার নেই… বের হও এখান থেকে।
কথাটা শুনে মেরিন বাকা হাসি দিলো। এরপর নীড়ের হাত ধরে ভেতরে ঢুকলো।
দাদুভাই : দিদিভাই চ….
মেরিন হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো। এরপর কবিরের সামনে গেলো।
মেরিন :১দিন বাড়িতে নেই এতো দেখি টিকটিকি ১লাফে সিংহ uffs ডাইনোসর হয়ে গেছে। তো কি বলছিলেন আপনি? আপনি আমাকে এ বাড়িতে ঢুকতে না করছিলেন…. আমার এ বাড়িতে ঢোকার অধিকার নেই?
কবির : না….
মেরিন : আপনার আছে?
কবির : আমার কথা বলছো? আমি কবির ফয়সাল খান।
মেরিন : তো আমি কি অন্য কেউ? আর অন্যকেউ হলেও এই বাড়িতে না ঢুকতে পারার কারন ?
কবির : কারন এই খান বাড়িটার আমি শুদ্ধিকরন করেছি। যেটা কনিকার পা পরে অপবিত্র হয়েছিলো। তুমি যাওয়ার পর পবিত্র করেছি। আর তুমি খান নও। তুমি কারো পাপের ফসল….
বলতে না বলতেই দাদুভাই কবিরকে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই: দিদিভাইয়ের খবর জানিনা…. তবে তুই নিশ্চয়ই আমার সন্তান হতে পারিস না। আর দিদিভাইয়ের এ বাসায় ঢোকার অধিকার আছে কিনা জানিনা তোমার অধিকার নিয়ে সন্দেহ আছে। এই খান সম্রাজ্ঞের একচ্ছত্র অধিকারীনি…. আর তুমি কেবল ওর servant…. got it? চলো দিদিভাই আর দাদুভাই….
কবির : বাবা…. আমাকে থাপ্পর মারলে সত্যিটা মিথ্যা হয়ে যাবেনা। ওই মেয়েটার জন্য আমার বাবুই পাখিটা আজকে….
দাদুভাই তাচ্ছিল্যের সুরে
বলল: তুমি আসলেই শ্রেষ্ঠ বাবা কবির…. চলো।
মেরিন : দারাও দাদুভাই… এই কবির ফয়সাল খান তো আমার servant… তাইনা… তাহলে এর শরীরে এমন দামী পোশাক কি করে মানায়? আর রাজার হালেই বা চলে কিভাবে। সব তো আমার টাকার ফুটানি। আমি আবার অপচয় পছন্দ করিনা। বসে বসে অনেক অন্নধংব্স করেছেন মিস্টার কবির…. কালকে থেকে একটু খেটে খাবেন। এখন কি কাজ করবেন সেটা আপনি decide করুন। রান্নার কাজ, মালির কাজ, driver এর কাজ, নাকি ঝাড়ুদারের কাজ।
কবির : তুমি ভাবলে কি করে যে আমি তোমার order follow করবো?
মেরিন : আপনি follow করবেন না আমি করাবো। চলো দাদুভাই…. i am too much tired….
রাতে…
নীড় বিরক্ত হচ্ছে। কারন মেরিন ওকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে রেখেছে। কিন্তু গত ২দিনের মতো আজকে কোনো কথা বলল না।
নীড় : আচ্ছা এভাবে ঘুমানো যায়? নরতে পর্যন্ত কষ্ট হয়….
মেরিন কিছু না বলে চুপচাপ নীড়ের ওপর থেকে নেমে বেডে শুয়ে নীড়ের বুকে কেবল মাথাটা রাখলো। নীড় খানিকটা অবাক হলো। কিন্তু কিছু বললনা।
.
সকালে….
খাবার টেবিলে….
মেরিন এসে বসলো । তখন দেখলো।। সেতু খাবার বেরে দিচ্ছে। আর মেরিনের প্লেটেও খাবার বারছে।
মেরিন : এতো দেখি অরন্যে রোদন… very impressive ….
সেতু : impress হওয়ার কিছু নেই । আমি সব মানতে পারি কিন্তু আমার ভাইয়ার কষ্ট না।
মেরিন : আহারে আমার চোখে পানি চলে এলো। আপনি কতোটা মহান….
সেতু মেরিনকে চা দিলো।
মেরিন কিছুনা বলে সেই গরম চায়ে সেতুর আঙ্গুল চুবিয়ে দিলো।
সেতু : আহ…
নীড় : তুমি কি পাগল?
মেরিন : not now… only for you….
বলেই সেতুর চুলের মুঠি ধরে টেবিলের সাথে চেপে ধরলো।
মেরিন : আমাকে কি তোর ভাইয়ের মতো অন্ধ মনে করিস? হ্যা? ঘাষে মুখ দিয়ে চলি আমি? তুই আমার খাবারে drugs মিশিয়ে আমাকে নিথর পাথর বানানোর plan করবি আর আমি জানবোও না…. এখন এগুলো তুই গিলবি…. তাও কুকুরের মতো।
.
নীড় : মেরিন কি করছো কি ? ছারো আন্টিকে….
মেরিন কোন জবাব না দিয়ে খাবার গুলো সেতুর মুখে ঢোকাতে লাগলো। কোন রকমে নীড় আর কবির মেরিনকে থামালো।
সেতু ছারা পেয়ে washroom এ গিয়ে ইচ্ছা করে বমি করলো। কারন ওগুলো ওর পেটে গেলে ওর brain কাজ করা বন্ধ করে দিবে। যার ফলে ওর বডিও আর balanced রাখতে পারবেনা। প্যারালাইজড হয়ে যাবে।
বিকালে নীড়-মেরিন আবার চৌধুরী বাড়িতে পৌছালো।
.
২দিনপর…
নীড় ready হয়ে গাড়ির কাছে গেলো। দেখলো মেরিন আগে থেকেই গাড়িতে বসে আছে। সাদা রঙের ১টা টপস। চোখে চশমা, চুলগুলো খোলা। মেরিনের প্রতিটা get upই perfect office going ladyএর মতো।
নীড় : আমার গাড়িতে বসার কারন?
মেরিন : আপনি নিজেই আমার তাই আপনার সব কিছুই আমার। so…
নীড় : 😠।
মেরিন : বসুন। লেট হয়ে যাচ্ছে।
নীড় বিরক্তি নিয়ে বসলো । ২জন office পৌছালো।
.
কিছুদিন পর…
এই কদিনে মেরিনের পাগলামো ভালোবাসায় নীড় just অতিষ্ট হয়ে গেছে। ২জন office থেকে বাসায় ফিরছে । নীড় drive করছে। আর মেরিন তো নীড়কে দেখায় ব্যাস্ত। হঠাৎ নীড় break মারলো। মেরিনের ধ্যান ভাঙলো।
মেরিন : কি হলো?
নীড় : ফুচকা.
মেরিন : ফুচকা? আপনি এগুলো খাবেন? its tacky….
নীড় : shut up….
বলেই নীড় দৌড়ে ফুচকার দোকানে গেলো। মেরিনও নীড়ের পিছে গেলো। নীড় বাচ্চাদের মতো করে ফুচকা খেতে লাগলো। আর মেরিন দেখতে লাগলো। নীড়কে খেতে দেখে মেরিনেরও খেতে ইচ্ছা করলো। নীড় আরেকটা ফুচকা মুখে দিতে নিলে মেরিন ওর হাত নিয়ে নিজের মুখে ফুচকা টা ঢুকিয়ে নিলো।
নীড় : এটা কি করলা?
মেরিন: yummy….
নীড় : খুব তো বলেছিলে যে its taccy … yuck….
মেরিন: আমি কি জানতাম নাকি এমন হবে?
নীড় : এখন তো জানলে।
২জন মন ভরে ফুচকা খেয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন হঠাৎ ১টা ক্রিকেট বল এসে নীড়ের কপালে লাগলো।
নীড় কপালে হাত দিয়ে
বলল : ouch…
নীড়ের কপাল লাল হয়ে গেলো।
মেরিন : নীড়….
মেরিন দৌড়ে গিয়ে পানি এনে নীড়ের মাথায় পানি দিয়ে দিলো।
.
নীড়ের মাথায় পানি দিতে দিতে ১টা ছেলে এসে
বলল : এই যে মিস বলটা দিন…
মেরিন চোখটা লাল করে ওর দিকে তাকালো।
ছেলেটা: ওহ বাবা… এর তো দেখি রুপে না চোখেও আগুন….
নীড় : ১টা থাপ্পর দিবো। মেয়েদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে শিখোনি?
ছেলেটা: না গো uncle …. uncle হয়ে বেশি react করবেন না। না হলে পুরো মাথাই ফাট…
আর বলতে পারলোনা। মেরিন বলটা এমন জোরে ছেলেটার মুখ বরাবর মারলো যে ছেলেটা ধপাস করে পরে গেলো। আর মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পরতে লাগলো।
মেরিন বলটা হাতে নিয়ে মাঠে গেলো।
বলল :বলটা তখন কে হিট করেছিলো?
চলবে………………….
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৬
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
মেরিন : বলটা কে হিট করেছে…? আমি কি়ছু জিজ্ঞেস করছি….
১জন বলে
উঠলো: কেন জানলে কি খেলবেন নাকি তার সাথে? ।
মেরিন ওই ছেলেটার মুখ বরাবরও বল মারলো। আর এমনভাবে মারলো যে ছেলেটার মুখে হিট করে বলটা আবার ওর হাতেই চলে এলো।
মেরিন : যেটা জিজ্ঞেস করেছি সেটা বলো।
নীড় : মেরিন হয়ে গেছে চলো। দেখি বলটা দাও….তারপর চলো…. মেরিন : আরে কেন যাবো কেন? আমি তো এদেরকে…. এদের জন্য আপনি কতোটা ব্যাথা পেয়েছেন…
নীড় : কিচ্ছুনা… চলো এখান থেকে।
নীড় জোর করে নিয়ে মেরিনকে গাড়িতে বসালো।
নীড় : তুমি বসো আমি ওদের বলটা দিয়ে আসছি…. একদম উঠবেনা।
মেরিনকে বসিয়ে নীড় ওদের বলটা দিতে গেলো।
নীড় : টেক ইউর বল…. দেখে খেলা করো….
নীড় চলে যেতে নিলো। তখন পেছন থেকে
১জন বলে
উঠলো: ভাইয়া উনি আপনার কি হয়?
নীড় : ….. কেন?
অন্যজন: না মানে…. আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনার এই ছেলে পোশাকের আড়ালে ১টা মেয়ে লুকিয়ে আছে।
বলেই ওরা হাসতে লাগলো।
নীড় : এমন মনে হওয়ার কারন?
১জন: আপনার ভীতু গিরি দেখে আমরা শিহরিত। ১টা মেয়ে রাগ করতে পারে। আর আপনি পারেন না….
অন্যজন: পারে পারে উনিও পারে…. সরিয়ে নিয়ে যেতে।
নীড় ১টা বাকা হাসি দিয়ে ওদের কাছে গেলো।
বলল: এরজন্যেই বলে কারো ভালো করতে নেই।
একে তো বল মেরে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের মাথা ফাটিয়েছো। ভীষন রাগ উঠেছিলো। কিন্তু সাথে ছিলো মেরিন বন্যা…
যদি তখন ওকে না নিয়ে যেতাম তবে গুলি খেয়ে মরতে হতো। কিন্তু তোরা ভালো বুঝলি না….
বলেই নীড় ধরে একেকটাকে পিটানো ধরলো। হঠাৎ নীড় গুলির শব্দ পেলো। পেয়ে পিছে ঘুরে দেখো ১দল রক্তাত্ব অবস্থায় পরে আছে। আর সামনে তাকিয়ে দেখে মেরিন। আসলে ওই ছেলেটা পেছন থেকে নীড় আঘাত করতে আসছিলো। তখন মেরিন এসে হাত বরাবর গুলি মারলো।
রাতে…
নীড় রকিং চেয়ারে বসে আছে। তখন ও কপালে ঠান্ডা কিছু অনুভব করলো। তাকিয়ে দেখে মেরিন ওর কপালে আইস ব্যাগ ধরে রেখেছে। নীড় কোনো রিয়েক্ট না করে চোখ বন্ধ করে রইলো। জানে রিয়েক্ট করে লাভ নেই।
মেরিন : উঠুন খেয়ে নিন….
নীড়:….
মেরিন: উঠুন না। ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে আমার। উঠুন না।
নীড় : তুমি কি একটুও আমাকে শান্তি দিতে পারোনা।
মেরিন: কি এমন করলাম এখন?
নীড়: তুমি কিছুই করোনা। তোমাকে দেখলেই আমার সব শান্তি চলে যায়। বিরক্তি কর।
মেরিন: জানি। আসুন খেয়ে।
নীড়: খাবোনা।
মেরিন : আমার ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে।
নীড় : যাও গিয়ে গেলো।
মেরিন কিছু না বলে খাবার এনে নীড়ের মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
মেরিন: চুপচাপ খেয়ে নিন।
প্রতিদিনের মতো আজও নীড় জিজ্ঞেস করলোনা মেরিনকে যে ও খেয়েছে কি না….
পরদিন…
অফিস এ….
মেরিন দারিয়ে কোনো ১টা file ঘাটছে তখন কেউ ওর পিছে এসে দারালো। আর তার উপস্থিতি বুঝতে পেরে ভয়ে মেরিন ঘামতে লাগলো। মেরিন চুপচাপ নিজের গানটা হাতে নিতে লাগলো। কিন্তু ততোক্ষনে লোকটা মেরিনের কোমরে হাত দিয়ে ফেলল। মেরিন ঘুরে দুম করে গানটা দিয়ে লোকটার মাথায় আঘাত করতে নিলে লোকটা মেরিনের হাত মোচর দিয়ে ধরে ফেলল। তার নাম নিলয়। নিলয় শাহরিয়ার।
নিলয়: তোর এই ভিলেন রূপ সবার জন্য হতে পারে। কিন্তু আমার জন্যনা। কারন তুই আমার কাছে ধরা। তোর কোনো জারিজুরি আমার ওপর চলবে না। বুঝেছিস? তোর ভিলেন রুপ বাকীদের জন্য আর তোর হট রূপ আমার জন্য।
মেরিন হাত ছোটানোর জন্য চেষ্টা করছে।
মেরিন : যদি তুই আমার হাত না ছারিস তবে তোকে….
নিলয়: কি করবি? মেরে ফেলবি? আমাকে মেরে ফেলবি? আমাকে মারলে তাকে পাবি কোথায়?
মেরিন : নীড়… নীড়…
নিলয়: তোর বরকে ডাকছিস? ওকে কি আমি ভয় পাই নাকি? আর তোর ডাকেই কি সে আসবে? তোর কি মনে হয় তার সাথে তোর কি সম্পর্ক আমি জানিনা? সে তো তোকে ঘৃণা করে… ঘৃণা …. নীড় আমার বোন নীরাকে ভালোবাসে… সে তোকে ছুয়েও দেখেনি।…
তখন নীড় রুমে এলো। আর ওদেরকে এভাবে দেখে খানিকটা অবাক হলো।
নীড়কে দেখেও নিলয় মেরিনকে ছারলো না। । নীড়ের কেন যেন খারাপও লাগলো।
নিলয়: আরে নীড় এসো।।
নীড় : ভালো আছেন ভাইয়া…
নিলয় : হামম। ভালো আছি। এমন ১টা চলন্ত আইটেম গান চোখের সামনে থাকলে কি খারাপ থাকা যায়…. কি বলিস রে মেরিন….
নীড় : ভাইয়া একটু কাজ আছে। আসছি।
মেরিন যে কতোটা কষ্ট পেলো নীড়ের এমন ব্যাবহারে তা বলার মতো না…. তবুও নিলয়ের হাতে কামড় দিলো। নিলয় আহ বলে মেরিনের হাত ছেরে দিলো । মেরিন দৌড় দিয়ে নীড়ের কাছে গেলো।
নিলয় : কি রে আমার আদর-ভালোবাসায় কি মন ভরে গেছে? দেখে রাখো নীড় ওকে…. আমাকে ছেরে কি করে তোমার কাছে গেলো।
নীড় : ….
মেরিন : ….
তখন জন ঢুকলো।
জন: ম্যাম… একি তুই…
নিলয় : ওরে বাবা…. জন বাবু যে…. কি খবর…
জন : তোকে তো…
মেরিন : জন… চলো চৌধুরী কম্পানি তে…. ১টা কাজ আছে।
নিলয় : বাবা… এখন আবার জনের সাথেও কাজ আছে….
মেরিন কোনো জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন সোজা বাসায় চলে এলো। দৌড়ে ওয়াশরুমে এ গেলো। সাওয়ার অন করে ভিজতে লাগলো। আর সারা শরীরে বিশেষ করে কোমড়ে আর হাতে ইচ্ছা মতো সাবান ঘষতে লাগলো।
আর কল্পনা করতে লাগলো সেই সময়টার কথা। মেরিন দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে বসে ভিজতে লাগলো আর মাথা দেয়ালে বারি দিতে লাগলো।
.
৫ঘন্টাপর….
নীড় নাসায় এলো। এসে ফ্রেস হতে গিয়ে দেখে মেরিনকে। সাদা হয়ে গেছে ভিজতে ভিজতে।
নীড় খেয়াল করে দেখলো মেরিন দেয়ালে মাথা বারি দিচ্ছে আর কি যেন বিরবির করে বলছে। নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড় : মেরিন…. মেরিন….
মেরিন : আমম…
নীড় : দেখি ওঠো… ঠান্ডা লেগে যাবে…
মেরিন নীড়ের দিকে ঘুরলো।
নীড় : ঠান্ডা হয়ে গেছো….
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন : নীড়…
নীড় : কি?
মেরিন : ভালোবাসি….. অনেক বেশি ভালোবাসি…..
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।
কিছুক্ষনপর….
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। বুঝতে পারলো কেউ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মেরিন চোখটা মেললনা। কেবল চোখ দিয়ে ২ফোটা পানি গরিয়ে পরলো।
নীলিমা : শোনামা…. উঠে কিছু খেয়েনে।
মেরিন : একটু এভাবে থাকি প্লিজ ….
নীলিমা : হামম।
মেরিন : মামনি ১টা গল্প শোনাবে? রাজকুমার-রাজকন্যার…। পরী,,, রাজা-রানী, ঘুম পারানী গান শোনাবে ….
নীলিমা মেরিনের কপালে চুমু দিলো।
বলল : শোনাবো… তবে কিছু খেয়ে নে…
তখন নীড় রুমে ঢুকলো।
নীড়কে ঢুকতে দেখে মেরিন তারাতারি চোখের পানি মুছে উঠে বসলো।
নীলিমা: কি রে তুই?
নীড় : হ্যা ওই তো… ঘুম পাচ্ছিলো,,, তাহলে তুমি এখানে থাকো আমি গেস্টরুমে যাচ্ছি।
নীলিমা: নানা… তুই বোস। মামনি আমি তোমার খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন : হামম।
নীলিমা চলে গেলো
.
মেরিন বেড থেকে নেমে বেডটা গুছিয়ে দিলো।
মেরিন : নিন শুয়ে পরুন…
নীড় মনে মনে: কিভাবে জিজ্ঞেস করি?
নীড় : শোনো….
মেরিন : হামম।
নীড় : তো…
তখনই সার্ভেন্ট এসে খাবার দিয়ে গেলো। নীড়ের আর জিজ্ঞেস করা হলো না।
নীড় : যাও খেয়ে নাও।
মেরিন : হামম। আপনি খেয়েছেন?
নীড় : হামম।
তখন মেরিনের চোখ পরলো নীড়ের হাতের দিকে। নীড়ের হাতটা লাল হয়ে আছে। মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : আপনার হাত লাল হয়ে আছে কেন? কি হয়েছে?
নীড় : না কিছুনা।
মেরিন : বললেই হবে? বসুন দেখি।
মেরিন তারাতারি নীড়ের হাতে ঔষধ দিয়ে দিলো। নীড় মাঝে মাঝে সত্যি অনেক অবাক হয়।
মেরিন : অনেক বেশি ব্যাথা করছে? শুয়ে পরুন শুয়ে পরুন।
নীড় : আরে আ…
মেরিন : কোনো কথা না।
মেরিনের ঝারি খেয়ে নীড় বাধ্য হলো শুতে। মেরিন লাইট নিভিয়ে দিলো।
নীড় : লাইট নেভালে কেন?
মেরিন : লাইট জ্বললে তো আপনার ঘুম আসেনা।
নীড় : তুমি অন্ধকারে খাবে কি করে?
মেরিন : আমি পারবো। অাপনি ঘুমান।
নীড় কপাল হাত দিয়ে
ভাবছে: মেয়েটা সত্যি আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। এমন পাগলামো ভালোবাসাই তো আমি চেয়েছিলাম। নীরার মধ্যে কখনো আমি এমনটা দেখিনি…. আচ্ছা মেরিন এমন কেন? এতো রাগী এতো জেদী….. তবুও আমার সাথে কখনো রুড বিহেব করেনা…. কিন্তু ওর এতো ভালোবাসাও যে আমি মেনে নিতে পারছিনা। আমি যে নীরাকে ভালোবাসি।
এসব ভাবতে ভাবতে নীড়ের বোধ হলো মেরিনের কথা। উঠে বসে। দেখে মেরিন সোফায় শুয়ে আছে। নীড় অবাক হলো। কারন আজকে মেরিন সোফায় ঘুমালো।
নীড় মনে মনে : ও কি আমার ওপর অভিমান করেছে? করলে করুক। আমার কি?
একটুপর…
নীড়ের খেয়াল হলো সেদিনের কথা।
নীড় : ওহ নো… ওর জ্বর আসেনি তো….
নীড় তারাতারি সোফার ওখানে গেলো। মেরিনের কপালে হাতে দিয়ে দেখলো ধুম জ্বর।
নীড় : oh my goodness….
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে বেডে নিয়ে শুইয়ে দিলো। এরপর মাথায় পানি পট্টি দিতে লাগলো। আর মেরিনকে দেখতে লাগলো।
এই প্রথম নীড় মেরিনকে এভাবে পর্যবেক্ষন করছে। জ্বরের জন্য মেরিনের মুখটা লাল হয়ে আছে। পাপড়ি গুলো ভেজা। নিশ্চয়ই কাদছিলো। ঠোট ২টা কাপছে। কপালটা ভাজ পরে আছে। নীড় বুঝতে পারলো যে মেরিনের প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে। তাই মেরিনের মাথা টিপে দিলো। মেরিনের শরীরের তাপ এতোটাই বেশি যে নীড় পাশে বসেই টিকতে পারছেনা। তাও নীড় মাথায় পট্টি দিয়ে মেরিনকে বুকে জরিয়ে শুয়ে পরলো। ভোরের দিকে মেরিনের জ্বর ছারলো।
সকাল ৯টা….
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। দেখলো ও এলোমেলো হয়ে নীড়ের বুকে শুয়ে আছে।
মেরিন : আমি তো সোফায় ছিলাম…. এখানে?
মেরিনের মুখে হাসি ফুটলো। মেরিন নীড়ের কপালে চুমু দিলো।
মেরিন: যতোটা কষ্ট কালকে পেয়েছিলাম তার হাজারগুন আনন্দ আজকে পেলাম। আপনি আমার কথা ভেবেছেন সেটাই যে আমার পরম পাওয়া। কিন্তু আমার জন্য আপনার কতো কষ্ট হয়েছে…..
মেরিন উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিস এ গেলো।
বেলা ১১টা…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। উঠে মেরিনকে না পেয়ে অবাক হয়ে গেলো।
নীড় : গেলো কোথায় মেয়েটা। রুম, ওয়াশরুম খুজে দৌড়ে নিচে নামলো।
নীড় : মামনি … মামনি… মেরিন কোথায়?
নীলিমা: ও তো অফিস চলে গিয়েছে।
নীড়:হুয়াট? এই শরীর নিয়ে অফিস ?
রাগের চোটে নীড়ের গা জ্বলে যাচ্ছে। দ্রুত রেডি হয়ে অফিস এ গেলো। আর গিয়ে দেখে মেরিন ১টা লোককে বেল্ট দিয়ে মারতে মারতে সিরি দিয়ে নামাচ্ছে। আর সবাই চুপচাপ দেখছে। লোকটার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে।
নীড়: তুমি ওকে মারছো কেন? ছারো ওকে…
মেরিনকে থামাতে গিয়ে নীড় হাতে ১টা বাড়ি খেলো।
মেরিন: দেখি দেখি… অনেক জোরে লেগেছে? দেখি।
নীড় হাত ছারিয়ে নিলো।
মেরিন লোকটাকে বলল : তোরজন্য কেবল তোর জন্য আমার হাত দিয়ে নীড় বারি খেয়েছে। আজকে তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
মেরিন ১টা গ্লাস নিয়ে ধপ করে ওটা ভেঙে লোকটার পেটে ঢোকাতে নিবে তখন নীড় আবার এসে থামাতে নিলো। নীড় কিছুতেই মেরিনকে থামাতে না পেরে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : আমার ব্যাথার কারন ও না তুমি….
বলেই নীড় নিজের রুমে চলে গেল। কেবিনে গিয়ে বসলো। একটুপর জানতে পারলো যে, যে লোকটাকে মেরিন মারছিলো সে রাইবাল কম্পানি এর গুপ্তচর। সে নীড়ের ড্রিম প্রোজেক্ট এর ইনফর্মেশন চুরি করতে এসেছিলো। আর এ কারনেই মেরিন ওকে মারছিলো।
নীড় : উফফ বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছি…. আসলে সরি বলতে হবে।
কিন্তু অনেকক্ষন হয়ে গেলো তবুও মেরিন এলোনা। নীড় ম্যানেজারকে ডেকে পাঠালো।
ম্যানেজার : স্যার ডাকছিলেন?
নীড় : হামম। আপনাদের ম্যাম কোথায়?
ম্যানেজার : স্যার, ম্যাম তো সেই তখনই বেরিয়ে গিয়েছে।
নীড় : হুয়াট?
ম্যানেজার: জী স্যার।
নীড়: ওকে আপনি আসুন।
ম্যানেজার চলে গেলো।
নীড় : কোথায় গে… ওহ নো…
নীড় কিছু ১টা ভেবেই ছুটে বেরিয়ে গেলো।
চলবে..
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৭
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় ছুটে বেরিয়ে গেলো। নীড় যেতে যেতে জনকে ফোন করলো।
জন : hello sir…
নীড়: তোমার ম্যাম কোথায় জানো?
জন: ম্যাম তো এই অমানুষটাকে আমার হাতে দিয়েই যেন কোথায় বেরিয়ে গেলো?
নীড় : আচ্ছা রাখছি….
জন: জী স্যার।
নীড় : আমার সন্দেহ যদি ঠিক হয় , এইকদিনে ওকে যতোটুকু বুঝেছি তখন মনে হচ্ছে আমার ধারনাই ঠিক…
দুপুর গরিয়ে রাত হলো। মেরিন এখনো এলোনা।
নীড় : না জানি কি করেছে? কখন আসবে?
তখন মেরিনের গাড়ির আওয়াজ পেলো। মেরিন বাড়িতে ঢুকলো। মেরিনকে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও এর পেছনে গভীর কিছু আছে যা কেবল নীড় বুঝতে পারলো।
নীলিমা : একি তোর হাত কাটলো কি করে?
মেরিন : একটু কেটে গেছে।
নীলিমা: ব্যান্ডেজ দেখে মনে হচ্ছেনা একটু কেটেছে।
নিহাল: আবার কার সাথে ঝামেলা করেছে দেখো।
মেরিন ওপরে গেলো। নীড়ও পিছে পিছে গেলো।
নীড় : যখন office এ ছিলে তখনতো short হাতার dress পরেছিলে। তো এখন full হাতা কেন?
মেরিন : আমার ইচ্ছা।
নীড় আর কিছু না বলে first aid box নিয়ে মেরিনকে ১টানে বেডে বসালো। এরপর মেরিনের জামার হাতা ১টা ছিরে ফেলল। যা ভেবেছিলো তাই। মেরিনের হাত ক্ষতবিক্ষত। আঘাতের চিহ্ন। নীড় আন্দাজ করেছিলো যে মেরিন নিজেকে আঘাত করতেই গেছে। কারন তখন নীড় ওকে বলেছিলো যে তোমার জন্য আমি ব্যাথা পেয়েছি। নীড় মেরিনের হাতে ঔষধ দিয়ে দিচ্ছে। আর মেরিন নীড়কে দিয়ে দেখছে। হাতে ঔষধ দেয়ার পর
নীড় : সারা শরীরেরও কি এই একই অবস্থা?
মেরিন:….
নীড় মেরিনের স্যালোয়ার হাটু পর্যন্ত পটপট করে ছিরে দিলো। এরপর সেখানেও ঔষধ দিয়ে দিলো। then মেরিনকে ঘুরিয়ে ওর পিঠে হাত দিতে গেলে মেরিন হাত ধরে ফেলল।
মেরিন : আমি লাগিয়ে নেবো।
নীড় থেমে গেলো।
রাতে নীড় নিজের হাতে মেরিনকে খাইয়ে দিলো।
২দিনপর….
আজকে শুক্রবার। তাই সবাই বাসায়।
নিহাল: এই মেয়ে এই তুমি আমার মায়ের শাড়ি পরেছে কেন?
মেরিন : কারন আমি তোমার মা লাগি।
নিহাল : আমার মা? আমার মা হওয়ার তোমার কোনো যোগ্যতা নেই।
মেরিন : আছে আছে। ১ডজন যোগ্যতা আছে।
নিহাল: মোটেও না। আমার মা অতো খারাপ ছিলোনা তোমার মতো। বুঝেছো?
মেরিন: ইশ, যে না ১টা কালোকুলো মা….
নিহাল: ওই তোমাকে না বলেছি আমার সাথে কথা বলবেনা… বেয়াদব মেয়ে….
মেরিন : এখানে সবাই সাক্ষী যে তুমি আগে কথা বলেছো?
নিহাল : huh….
নীড় মনে মনে হাসছে। সুন্দর ১টা সময় কাটছে। ঠিক তখনই নীড় ৫-৬টা বন্ধু এসে হাজির হলো। তাদের মধ্যে ২জন মেয়েও আছে। ১জন এসে নীড়কে জরিয়ে ধরে গালে কিস করলো। যার নাম লিমা।
লিমা : missed you ইয়ার….
নীড় এমনিতেই এগুলো পছন্দ করেনা। তারওপর মেরিন। নীড় তারাতারি নিজেকে ছারিয়ে মেরিনের দিকে তাকালো। দেখলো মেরিন শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে। যা দেখে নীড় বেশি ভয় লাগলো।
কারন এই কয় মাসে নীড় মেরিনকে দেখে যা বুঝেছে তা হলো এই যে মেরিন শান্ত থাকা মানেই ১০ নম্বর বিপদ সংকেত। তাই বন্ধুরা যাওয়ার আগে নীড় লিমাকে বলল সাবধানে থাকতে। আর এখান থেকে সরাসরি বাসায় যেতে। আর মিনিমাম ১সপ্তাহের মধ্যে যেন বাড়ি থেকে বের না হয়। লিমা এটাকে মজা মনে করলো।
রাতে….
নীড় : মেরিন….
মেরিন : হামম।
নীড় : লিমা একটু free minded….
মেরিন : হামম।
নীড় : তাই বলছিলাম কি….
মেরিন : no worry ওকে জানে মারবো না। বাচিয়ে রাখবো।
নীড় : দেখো ….
মেরিন : দেখছিই তো…. আপনাকে।
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। পরদিন মেরিন নিজে লিমা কে গাড়ি দিয়ে accident করালো। এরপর নিজেই হসপিটালে নিয়ে গেলো। লিমার জ্ঞান ফেরার পর।
মেরিন : আর যেন কোনোদিন এই চোখ তুলে নীড়ের দিকে না তাকাতে দেখি। আর যেন কোনো দিন এই হাত দিয়ে নীড়কে ছুতে না দেখি….
কিছুদিনপর…
নীড়-মেরিন office এ কাজ করছে। নীড় ফাইল ঘাটছে আর মেরিন ল্যাপটপে কাজ করছে। তখন কেবিনে নিলয় এলো। নিলয়কে ১পলক দেখেই মেরিন চোখ নামিয়ে নিলো। ভয়ে আজও মেরিনের হাত পা ঘামতে লাগলো।
নীড় ১বার মেরিনের দিকে তাকালো ১বার নিলয়ের দিকে।
নীড় : hello নিলয় ভাইয়া…
নিলয় : hello…
নীড় : বসুন….
নিলয় বসলো।
নীড় : ভাইয়া বসুন আমি একটু আসছি।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
নিলয় : বাহ তোর জামাই তো দেখি বেশ বুদ্ধিমান… আমাদের সময় দিয়ে গেলো….
বলেই নিলয় চেয়ার থেকে উঠতে নিলো।
মেরিন : যেখানে আছিস ওখান থেকে আমার দিকে ১পাও বারালে…
নিলয় : তুই আমার কিছুই করতে পারবিনা। কারন তোর উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়া পর্যন্ত তুই আমার কিছুই করবিনা। আর আমিও আমার উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়া পর্যন্ত তোকে তার খবর দিবোনা। তোকে নিজের করবো…. এরপর…. তোকে ১বার ছুতে পারলে তোর হাতে মরলেও আফসোস থাকবেনা।
মেরিন : সাবধানে থাকিসরে…. এমন না হয় যে তোর পাপের ঘরা ভরে যায়। আর তোকে আমি আগেই মেরে ফেলি।
নিলয় :পারবি না রে। চিনি তোকে।
মেরিন : যদি তুই আগে ভাগেই বলে দিসে তবে তোকে একটু কম যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যু দিবো। কথা দিলাম। কিন্তু তুই যদি আরো নিচে নামিস তোর মৃত্যু যে কতোটা ভয়ংকর হবে তুই কল্পনাও করতে পারবিনা।
নিলয় মেরিনের কাছে গিয়ে ওর ঘাড়ে আঙ্গুল বুলিয়ে
বলল : তাই বুঝি?
মেরিন আর দেরি না করে হাত থাকা কলম টা দিয়ে নিলয়ের হাতে পার দিলো।
নিলয় : আহ।
মেরিন : আমাকে ছোয়ার অধিকার কেবল আমার নীড়ের আছে। আরেকবার যদি আমার দিকে হাত বারাস তাহলে আমি সব ভুলে যাবো। আর তোর হাত আমি কেটে দিবো।
নিলয় : তোর নীড় তো তো ছুতেও ঘৃণা করে। তোকে তো আমিই কেবল ছোবো।
বলেই নিলয় চলে গেলো।
রাতে…
মেরিন ছাদের রেলিং এ বাইরের দিকে পা ঝুলিয়ে বসে drinks করছে। নীড় মেরিনকে খুজতে খুজতে ছাদে গেলো।
নীড় : একি ? তুমি এখানে?
মেরিন ১বার নীড়ের দিকে তাকিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নিলো।
নীড়: কিছু বলছি তো….
মেরিন : শুনছি… বলুন…
নীড় : এখানে কি করছো…
মেরিন: দেখছেন না বুঝি…. oh আপনি তো আবার আমাকে চোখেই দেখেন না।
নীড় : চোখে দেখার মতো কি তুমি কেউ?
মেরিন সেই চির রহস্যময়ী হাসি দিলো।
নীড় : মাতলামো বন্ধ করো।
মেরিন এবার হাহা করে হেসে উঠলো। এরপর উঠে এলো।
নীড়ের ২কাধে হাত রেখে
বলল: আমি মাতাল…. কিন্তু আপনি তো সেই জুয়ারিহ…. যে কখনো নিজের বউকেও বন্ধক রাখতে, বাজী ধরতে দ্বিধা বোধ করবেন না…
নীড় মেরিনের হাত সরিয়ে দিলো।
বলল : কি যা তা বলছো?
মেরিন : আচ্ছা আমাকে নিজের বউ নাই ভাবেন… কিন্তু আমি তো ১টা মেয়ে তাইনা…. তাহলে কককিভাবে ওই নিলয়ের সাথে একা রেখে বেরিয়ে এলেন…
নীড় : ….
মেরিন : কি হলো বলুন….
নীড় : নিলয় ভাইয়া তোমার কাজিন … আর তাছারাও….
মেরিন : তাছারাও ???
নীড় :ওর সাথে তোমার একসময় সম্পর্ক ছিলো। হয়তো এখনো আছে…
মেরিন : আপনার কি সত্যি ওই বাজে লোকটার কথা বিঃশ্বাস করেছেন?
নীড় : না করার কি কোনো কারন আছে? আর ওই নিলয় ভাইয়াকে বাজে বলার আগে নিজের কথা বিচার করে নাও। তোমারও তেমন কোনো ভালো record নেই।
মেরিন : আমার কি খারাপ
নীড় : সবটাই…
কাজ,, স্বভাব background … origin …..
মেরিন: আমার origin , background খারাপ? আর নীরার বুঝি ভালো?
নীড় : ও তোমার মতো না। তুমি তো জেদের বসে আমার সাথে এমন করেছো। কিন্তু ও তো আমাকে ভালোবাসে।
মেরিন : হ্যা ভীষন ভালোবাসে আপনাকে তাই অন্যের বাচ্চার মা হয়…
কথাটা বলতে না বলতেই নীড় মেরিনকে থাপ্পর মারলো।
নীড় : একদম আমার নীরার নামে বাজে কথা বলবেনা তোমার ওই মুখ দিয়ে?
মেরিন : আমি নোংরা?
নীড় : হ্যা অবশ্যই। বাজে মেয়ে। তাইতো নিলয় ভাইয়ার সাথে এতোদিনের relation থাকা সত্তেও কেবল নীরাকে কষ্ট দেয়ার জন্য আমাকে বিয়ে করেছো।
মেরিন : হা হা হা।
নীড় : আসলে যার origin এমন, গোরাই এমন তখন তাকে তো অমন হতেই হবে?
মেরিন: মানে?
নীড় : মানে ভীষন সহজ। মা যেমন তার মেয়েও অমন।
মেরিন : নীড়….
নীড় : আমাকে ঝারি মারলেই কি সত্যটা পাল্টো যাবে না। সারা শহর জানে তোমার চরিত্রহীনা মায়ের কথা….
মেরিন : নীড়…
বলেই মেরিন নীড়কে থাপ্পর মারার জন্য হাত ওঠায়। কিন্তু নীড়ের গালের সামনে নিয়ে বহুকষ্টে হাতটা থামিয়ে নিলো।
মেরিন : i hope যদি আপনাকে ভালোনাবাসতাম…. আমি খারাপ আমার origin খারাপ,,, কিন্তু আপনি তো ভালো। বউ হিসেবে নাই বা respect করুন। মেয়ে হিসেবে তো করুন। লজ্জা করেনা এই কথা বলতে। কি এমন দেখেছেন যে এতো বড় কথাটা বললেন? হ্যা বলুন? ওই পশুটার কথা শুনে আমাকে এগুলো বললেন তো? আরে আপনার বাবা যে আমাকে dislike করে তাকে গিয়ে বলুন আজকে যে কাজটা সকালে করেছেন , আর যে কাজটা এখন করলেন সেটা ঠিক করেছেন কিনা? এর থেকে যদি আমাকে কোনো পতিতালয়ে বিক্রি করে দিতেন কসম আল্লাহর কম কষ্ট লাগতো। এতো ঘৃণা আমার জন্য?
বলেই মেরিন নিচে চলে গেলো। গিয়ে blanket মুরি দিয়ে শুয়ে পরলো। কিছুক্ষন পর নীড়ও রুমে গেলো। blanket টা নরতে দেখে বুঝতে পারলো যে মেরিন কান্না করছে।
নীড় মনে মনে : আসলেই আজকে বেশি করে ফেলেছি… ঠিক হয়নি।
পরদিন…
নীড় : দেখুন নিলয় ভাইয়া অতীতে মেরিনের সাথে যা যা হয়েছে তা হয়েছে। এখন আর অতীত ঘাটার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। আপনি এখন মেরিনের অতীত। তাই আপনি আপনার মতো থাকুন আর মেরিনকে মেরিনের মতো থাকতে দিন।
নিলয়: হঠাৎ মেরিনের জন্য এতো কথা? তুমি না নীরাকে ভালোবাসো?
নীড় : হ্যা বাসি। কিন্তু মেরিন এখন চৌধুরী বাড়ির সম্মান। যাই হোক যেভাবেই হোক ও আমার বিয়ে করা বউ….
নিলয় : আর আমার বিয়ে না করা বউ।
নীড় : মানে?
নিলয়: তুমি অতোটাও অবুঝ নও যে তুমি বুঝবে না। ও কতোটা খারাপ তুমি ভাবতেও পারবেনা। তুমি তো ওর স্বামী তুমি নিশ্চয়ই জানো ওর শরীরের ঠিক কোথায় কোথায় তীল আছে? আমিও জানি। পিঠের বাম দিকে, কাধে, ব…
নীড় : stop ভাইয়া।
নিলয় : ok… stop…. but আমি চুপ করলেই তো আর সত্য পাল্টে যাবেনা। তাইনা।
নীড় আর কিছু না বলে চলে গেলো।
নিলয় : যাও নীড় বাবু যাও… আজকে গিয়ে মেরিনকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনো।
নীড়ের মাথায় আগুন লেগে গেলো। জানেনা কেন এতো রাগ লাগছে। মেরিনকে নিয়ে এমন feeling হওয়ার কোনো কারনই নীড় খুজে পাচ্ছেনা। কিন্তু রাগের চোটে নীড়ের মাথা ফেটে যাচ্ছে। রাত ১১টায় নীড় বাসায় ফিরলো। এখনও রাগ কমেনি। বরং বেরেছে। তারমধ্যে এসে দেখে মেরিন শাড়ি পরে আছে। সুন্দর লাগছে। নিজের চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে গলার টাই খুলতে লাগলো।
মেরিন নীড়কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: i am sorry…. জান….. কালকে অমন করার জন্য…
নীড় মেরিনকে সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মেরিন আরো জোর করে ধরে রেখেছে।
মেরিন : বললাম তো sorry ….
নীড় নিজেকে ছারিয়ে ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো।
নীড় : ফালতু মেয়ে কোথাকার….
মেরিন : মানে?
নীড় : মানে….
বলেই নীড় ১টানে মেরিনের শাড়িটা খুলে ফেলল। মেরিন উল্টা দিকে ঘুরে গেলো। নীড় মেরিনের পিঠের তীলটা দেখলো। যা দেখে নীড়ের মাথা আরো গরম হয়ে গেলো। ও মেরিনকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।
নীড় : এই কারনে তোমাকে ফালতু বলেছি এই তীল গুলোর জন্য। লজ্জা করেনা ১জনের মন ভেঙে আমার কাছে আসতে….
মেরিন : নিলয় বলেছে….
নীড় : সত্যিই বলেছে….
মেরিন : আপনার কাছে সবাই সত্যবাদী আমি ছারা। ওই নিলয়ের কথা আপনি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারেন আর আমার না…
নীড় : তোমার মধ্যে সত্যের কি আছে? তুমি পুরোটাই মিথ্যা। কারন যদি নিলয় মিথ্যা হতো তবে এই তীল গুলো গুলো সত্যি হতোনা… আর তোমাকে যতোদূর চিনি,,, নিলয় তোমার সাথে এমব behave করে তবুও তুমি ওকে জীবীত রেখেছো…. কারন নিলয় সত্যি বলছে।
মেরিন : আমি যদি বলি নিলয় মিথ্যা বলছে…
নীড় : বিশ্বাস করবো না। তাহলে নিলয় ওগুলো জানলো কি করে? আর নিলয়কে কিছু বলোনি কেন?
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : আমার তীল নিলয় কিভাবে দেখলো? নিলয় কেন বেচে আছে জানতে চান?
নীড় : ….
মেরিন : জানাবো না। যেদিন ভালোবেসে জানতে চাইবেন সেদিন জানাবো….
ভালো তো আপনি আমাকে বাসবেনই। কিন্তু হয়তো সেই ভালোবাসা আমি দেখতে পারবোনা।
বলেই মেরিন ১টা জামা নিয়ে washroom এ গেলো। এরপর বেরিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
পরদিন…
নিলয়: করছো কি নীড়? ছারো আমাকে…
কে শোনে কার কথা…. নীড় দে দানা দান পিটাতেই লাগলো নিলয়কে। ইচ্ছা মতো মারলো নীড় নিলয়কে।
নীড় : আর কখনো যেন তোর ওই নোংরা মুখে আমার বউর নাম শুনি…. আর কখনো যেন ওই নোংরা চোখ দিয়ে আমার বউর দিকে তাকাতে না দেখি…. জানে মেরে দিবো।
বলেই নীড় চলে গেলো।
রাতে….
নীড় বাসায় গেলো। রুমে ঢুকে দেখে মেরিন বারান্দায়। একটু এগিয়ে যেতেই নীড় শুনতে পেলো…
🎶🎵🎶
মা….
আমার সাধ না মিটিলো
আশা না পুরিলো
সকলে ফুরায়ে যায় মা… 2
জনমের শোধ ডাকি গো মা তোরে
কোলে তুলে নিতে আয় মা…
আমার সাধ না মিটিলো
আশা না পুরিলো
সকলি ফুরায়ে যায় মা….
🎶🎵🎶..
নীড় উপস্থিতি টের পেয়ে মেরিন থেমে গেলো। চোখের পানি গুলো মুছে নিলো। নীড় চুপচাপ মেরিনের পিছে গিয়ে দারালো।
নীড় : sorry….
বলে নীড় washroom এ চলে গেলো। বেরিয়ে দেখে ছোট টেবিলটাতে খাবার সাজানো। আর সোফায় মেরিন শুয়ে আছে।
নীড় কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস
করলো: খেয়েছো….
অন্য ১টা সময় হলে মেরিন অনেক খুশি হতো…. কিন্তু এখন চাইলেও খুশি হতে পারবেনা মেরিন। তাই চুপ রইলো। নীড়ও কিছু না খেয়ে আধশোয়া হয়ে হেলান দিয়ে বসে রইলো। লাইট নিভিয়ে দিলো।
নীড় কপালে হাত দিয়ে বসে আছে। তখন বুঝতে পারলো কেউ ওর কেটে যাওয়া বাম হাতটার ব্যান্ডেজটা খুলে নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে। আসলে নিলয়ের সাথে মারামারি করতে গিয়ে হাত কেটে গিয়েছিলো। মেরিন নীড়ের হাতে ব্যান্ডেজ করে প্লেটে খাবার এনে চুপচাপ নীড়ের মুখে ঢোকাতে লাগলো। নীড়ের চোখের দিকে তাকাচ্ছেনা।
নীড় : তুমি খেয়েছো?
মেরিন : ….
নীড়কে খাইয়ে মেরিন চুপচাপ অল্প একটু খেয়ে নিয়ে বাকি গুলো নিচে রেখে আসলো। এরপর এসে নীড়কে জরিয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। কেন যেন নীড়ের ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো।
পরদিন…
নীড় রেডি হয়ে নিচে গেলো। গাড়ির ওখানে যেতেই দেখলো মেরিন driving sitএ বসে আছে। যার মানে নীড়কে কাটা হাত নিয়ে drive করতে দিবেনা। নীড় গিয়ে গাড়িতে বসলো। মেরিন গাড়ির start দিলো। একটুপর মেরিনের ফোন এলো। মেরিনের কানে bluetooth লাগানো।
মেরিন : hello..
জন: ম্যাম… নীড় স্যারের গাড়িতে টাইম বোম্ব লাগানো আর সেই সাথে ব্রেক ফেইল।
কথাটা শুনে মেরিনের মাথায় আগুন জ্বলে গেলো।
মেরিন: find out…
বলেই মেরিন কেটে দিলো।
মেরিন দরজা খুলে দিলো।
মেরিনঃসিট বেল্ট খুলুন।
নীড় : কেন?
মেরিন: বলেছি খুলতে খুলুন….
বাধ্য হয়ে নীড় খুলল।
মেরিন: কোনো কথা না বলে গাড়ি থেকে লাফান…..
নীড় : হুয়াট? হুয়াই?
মেরিন : অতো কথার সময় নেই যা বলছি করুন…
নীড় : চলন্ত গাড়ি থেকে ?
মেরিন নীড়কে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে ওকে ধাক্কা মারলো। নীড় ছিটকে বাইরে পরলো। খানিকটা ব্যাথাও পেলো…. নিজের ব্যালেন্স ঠিক করতে করতেই কিছু ব্লাস্ট হওয়ার শব্দ পেলো। সামনে তাকিয়ে দেখে গাড়ি ব্লাস্ট…
নীড়: মেরিন…
নীড় দৌড়ে গেলো। দেখলো গাড়ি থেকে খানিকটা দূরে মেরিন পরে আছে। মেরিন গাড়ি থেকে ঝাপ দিয়েছিলো। নীড় দৌড়ে গিয়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড় : তুমি ঠিক আছো?
বিনিময়ে মেরিন রহস্যঘেরা হাসি দিলো। নীড় মেরিনকে হসপিটালে নিয়ে গেলো।
২দিনপর…
নীড় ফোনে কথা বলতে গেলো। কথা বলে এসে দেখে মেরিন নেই। পাগলের মতো খুজতে লাগলো।
ওদিকে.
নিলয়কে বেধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ওর সামনে দারিয়ে আছে ওর কাল। মেরিনের হিংস্র রূপটা দেখে নিলয় আতকে উঠলো।
নিলয়: তুই এবারও আমার কিছু করবি নারে..আমি জানি..কা….
আর বলতে পারলোনা..
মেরিন ওর জিহ্বা বরাবর ছুরি মারলো।
এরপর হাতে আরেকটু বড় ধরনের ছুরি নিয়ে নিলয়ের সামনে গেলো।
মেরিন : আজকে তোকে বাচাতে পারে এমন কোনো শক্তি নেই আল্লাহ ছারা…বিশ্বাস কর… আল্লাহ মনে হয় না তোকে বাচাবেন। হয়তো তোর মৃত্যুর উছিলা আমি….
বলেই নিলয়ের বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করলো।
মেরিন : যখন ১৩ বছরের বাচ্চা ছিলাম তখন তুই তোর এই হাত দিয়ে আমার ইজ্জত লুটতে গিয়েছিলি….
বলেই নিলয়ের ১হাত কেটে ফেলল।
নিলয় ব্যাথায় আহ করে উঠলো । কথা তো আর বলতে পারবেনা।
ছটফট করতে লাগলো।
মেরিন : চেচা নিলয় চেচা… রোজ চেচাবি…. কারন আজকে তো তোকে মারবো না….
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো….
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৮
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
মেরিন আর হসপিটালে না গিয়ে বাসায় চলে এলো। মেরিন বাসায় ফিরেছে শুনে নীড়ও দৌড়ে বাসায় ফিরলো। হাপাতে হাপাতে রুমে ঢুকলো। দেখলো মেরিন বারান্দায় রকিং চেয়ারে বসে আছে। কপালে হাত দিয়ে। নীড় ১টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।
নীড় : তুমি এখানে?
মেরিন : কেন?
নীড় : হসপিটাল থেকে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলে…
মেরিন : আপনাকে বলতে বাধ্য নই । মেরিন বন্যা কাউকে কোনো কৈফিয়ত দেয়না।
নীড়: আমাকেও বলতে বাধ্য নও?
মেরিন: না। তবে যেদিন আমার স্বামী হয়ে,,, অধিকারের সাথে কোনো কিছু জানতে চাইবেন সেদিন বলবো।
পরদিন…
মেরিন রেডি হয়ে office যাচ্ছে।
নীলিমা : এই শরীর নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : কেন আমার কি হয়েছে?
নীলিমা : কিচ্ছু হয়নি…. but চুপচাপ রুমে যা। rest কর।
মেরিন : rest? ২দিন rest করে পিঠ ব্যাথা করছে। আর office এ কতো কাজ পরে আছে যানো?
নিহাল : কাজের tension না নিয়ে কেউ নিজের খেয়াল রাখলেই বেশি ভালো হবে।
মেরিন : কাজ না করলে মেরিন বন্যাকে খাওয়াবে কে?
নিহাল : নীলা কাউকে বলে দাও যে চৌধুরী empire খান empire এর মতো বড় না হলেও কাউকে ২বেলা ২মুঠো খাওয়ানোর তৌফিক ঠিকই আছো।
মেরিন : আমি কি বলেছি যে তা নেই? আমি তো বলেছি কার ঠ্যাকা পরেছে আমাকে খাওয়ানোর ? আজকে কারোটা খাবো ২দিনপর কথা শুনবো… বসে বসে অন্ন ধমব্স করতে মেরিন শেখেনি।
আর হ্যা মামনি “কেউ” এর শশুড়কে “কেউ” এর তরফ থেকে thank you দিয়ে দিয়ো।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
২দিনপর….
মেরিন: hello my ফুপাতো ভাই…. জ্বালা পোরাটা কমেছে? একটু মনে হয় কমেছে। তাই তো আবার জ্বালাতে এসেছি । জন,,, একে পেট ভরে খাইয়েছো তো?
জন: জ্বী ম্যাম।
মেরিন : good… আমার ছুরিটা দাও।
জন দিলো।
মেরিন : আচ্ছা জন সেদিন এই হাতটা যেন কেন কেটেছিলাম?
জন: ম্যাম ইয়ে মানে….
মেরিন : আমতা আমতা আমার ভালো লাগেনা।
জন: ম্যাম যখন আপনি ছোটো ছিলেন তখন….
মেরিন: তখন ….?
জন: আপনাকে molest করেছিলো।
মেরিন: right …molest করেছিলো। সেদিনের পর থেকে সেই ছোট্ট ভীতু মেরিন পুরোপুরি মরে গিয়েছিলো। সেদিন কবির ফয়সাল খান আমাকে বলেছিলো আমি নাকি আমার মায়ের মতো হয়েছি। characterless…
আমি নাকি তোকে provoke করেছি অমন টা করার জন্য… কি হাস্যকর… সেদিন তোর ওপর আমার ১টা ভয় লাগা কাজ করে। সেই ভয় কাটানোর জন্যেই….
যাই হোক…
কাজটা complete করি।
বলেই মেরিন অন্যহাত টা কেটে ফেলল।
মেরিন: আমার মা যে চরিত্রহীনা নয় সেটা কেবল ১জনই জানে। আর সে আছে তোর কব্জায়। আর সে হলো আমার দীদা। তাকে তুই লুকিয়ে রেখেছিস । ১টা বয়স্ক মানুষকে লুকিয়ে রেখে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছিস। সে তো তোরও কিছু লাগে। তোরই নানিমা । অবশ্য তোর দোষ দিয়ে কি লাভ বলতো? তোর মা ই তো নিজের মায়ের মুখ বন্ধ করিয়ে দেয়ার জন্য কতো কি করেছে।
যাই হোক এখন দেখ কেমন লাগে।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড়ের কিছুই ভালো লাগছেনা। কারন এখন মেরিন আগের মতো ওর সাথে আগের মতো কথা বলেনা। আর না আগের মতো পাগলের মতো জরিয়ে ধরে, কিস করে। আগে তো নীড় জবাব দিতো আর না দিতো মেরিন আপন মনে বকবক করতো। এখন অমন করেনা। কেবল চুপচাপ নীড়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমায়। নীড় বেশ বুঝতে পারছে যে সেদিনের আচরনে মেরিন যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছে।
পরদিন….
ভোরের দিকে নীড়ের ঘুমটা ভেঙে গেলো। দেখলো মেরিন নেই। তারাতারি উঠে বসলো। খুজতে লাগলো। দেখলো মেরিনের গাড়ির চাবিটা জায়গা মতোই আছে। রুম থেকে বেরোলো। নামাযের রুমের ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় নীড় খুব মিষ্টি সুরে কোরআন শরীফ পড়ার শব্দ পেলো। ভেতরে তাকিয়ে দেখে মেরিন পড়ছে। সাদা রঙের ১টা থ্রীপিছ পরে আছে।
নীড় মনে মনে: মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর করে পড়ে তো।
মেরিনের পড়া শেষ করে ঘুরতেই দেখে নীড় দারিয়ে আছে।
মেরিন : আপনি?
নীড় : হামম। ঘুমটা ভেঙে গেলো।
মেরিন : কিছু লাগবে?
নীড়: না।
মেরিন : হামম। আচ্ছা শুনুন।
নীড় : বলো।
মেরিন : না মানে আমি না আজকে office যেতে পারবোনা।
নীড় : হামম। কিন্তু কেন?
মেরিন : একটু কাজ আছে।
নীড় : কি কাজ?
মেরিন : আছে কোনো কাজ।
বলেই মেরিন রুমে গেলো।
নীড় fresh হয়ে এসে দেখে যে মেরিন চুল গুলো ছেরে দিয়েছে। সেই সাদা থ্রীপিছটাই পরে আছে। ওরনাটা অন্যদিনের মতো গলায় না পেচিয়ে সুন্দরভাবেই নিয়েছে। অন্যরকম সুন্দর লাগছে।
নীড়: আমিই কি সাথে যেতে পারি?
মেরিন : ….
নীড় : নাকি এর জন্যেও স্বামি হয়ে অধিকার নিয়ে বলতে হবে?
মেরিন: …..
হ্যা না কিছু না বলে মেরিন নিচে নেমে এলো। নীড় এর মানেটা বুঝলো । তাই নীড়ও সাথে সাথে নিচে নামলো। ২জন মিলে বের হলো। একটু সামনে থেকে দাদুভাই pick করে নিলো। নীড় আর দাদুভাই কথা বলতে লাগলো। হঠাৎ মেরিন গাড়িতে break মারলো।
দাদুভাই: কি হলো দিদিভাই…
মেরিন সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় আর দাদুভাইও তাকালো। দেখলো কবিরের গাড়ি।
নীড় : আরে বাবা… ভালো আছো?
কবির: হামম।
নীড়: ভালোই হলো। চল আমাদের সাথে।
কবির: কোথায় যাবো?
দাদুভাই: তুই কি জানিস না আজকে কি? আজ যে কনা মায়ের জন্মদিন…. চল আমাদের সাথে।
কবির হা হা করে হেসে উঠলো।
কবির : জন্মদিন? like really… যার জন্মের ঠিক নেই তার আবার জন্মদিন।
দাদুভাই: মুখ সামলে কথা বল।
কবির : আচ্ছা বাবা ওই নষ্টা মেয়েটাকে নিয়ে কোনো কথা তুমি কেন মানতে পারোনা বলোতো?
দাদুভাই: কবির…. বরাবরের মতো আজও ১টা কথাই বলবো পরে আফসোস করোনা।
কবির: আফসোস করার মতো কিছু বলিনি। ওই মেয়েটাকে গাড়ি সরাতে বলো। আমার পথের সামনে থেকে।
কথাটা শুনে মেরিন ১টা devil smile দিয়ে গাড়ি start দিলো। এরপর গাড়ি পিছে নিয়ে প্রচন্ড speed এ এসে কবিরের গাড়িটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। এরপর গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : এটা কি করলা?
মেরিন : মিস্টার খান বললেন না গাড়িটা সরাতে। তাই সরালাম।
কবির : আমি তোমার গাড়ির কথা বলেছি।
মেরিন : correction … আপনার বাক্যে কোথাও “তোমার” কথাটা উল্ল্যেখ ছিলোনা।
কবির : বেশি বার বেরো না ঝড়ে পরে যাবে।
মেরিন : wrong …. ঝরে পরে যাবোনা… বরং আরো প্রসারিত হবো।
বলেই মেরিন গাড়িতে উঠলো।
গাড়িটা থামলো ১টা এতিমখানায়। সেখানে যেতেই বাচ্চারা এসে মেরিনকে ঝেকে ধরলো।
নীড়: দাদুভাই …
দাদুভাই : আজকে কনিকার জন্মদিন। আসলে আজকের দিনেই কনিকা কে কবিরের মা এখান থেকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলো। তাই এই দিনটাতেই কনিকার জন্মদিন পালন করা হয়। কনিকা যখন ছিলো তখন এই দিনটা এখানেই পালন করতো। এখন দিদিভাই করে। ও মনে করে এখানেই ১দিন ও কনিকা পাবে।
কিছুক্ষনপর….
নীড় ফোনে কথা বলতে বলতে হাটছে। তখন কারো সাথে ধাক্কা লাগলো। তাকিয়ে দেখে ১টা মহিলা। একদম ঢেকে রেখেছে নিজেকে। মহিলাটির চোখ পানি ভাসছে।
নীড় : sorry আন্টি…
মহিলাটি ৫সেকেন্ডের মতো মায়া ভরা দৃষ্টিতে নীড়ের দিকে তাকিয়ে দৌড় দিলো। দৌড়ে যাওয়ার সময় তার ১পায়ের থেকে নুপুর খুলে গেলো। নীড় দৌড়ে গিয়ে নুপুরটা হাতে নিয়ে মহিলাটাকে ডাকতে লাগলো।
নীড় : এইযে আন্টি আপনার নুপুর…
মহিলাটা ১টা বার পিছে তাকেয়ে আবার দৌড় দিলো।
নীড়কে দৌড়াতে দেখে মেরিন ছুটে এলো।
মেরিন : কি হয়েছে আপনার ?আ….
তখন মেরিন নীড়ের হাতের নুুপুরটা দেখলো। ১টানে নিয়ে নিলো।
অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস
করলো: এএএটা ককককোথায় পপপেলেন?
নীড় : ১টা মহিলার…
মেরিন : কককোথায় সে?
নীড় : দৌড়ে ওই বাইরের দিকটাতে গেলো।
মেরিন আর ১সেকেন্ডও দেরি না করে দৌড় লাগালো। দেখলো দূরে ১জন কালো চাদর পেচিয়ে দৌড়াচ্ছে।
মেরিন : আম্মু….
কিন্তু ডাক দিতে না দিতেই সে চোখের পলকে গায়েব হয়ে গেলো।
মেরিন ওখানেই হাটু গেরে বসে পরলো। দাদুভাই এলো।
দাদুভাই : দিদিভাই….ও দিদিভাই…. কি হয়েছে?
মেরিন দাদুভাইকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।
কাদতে কাদতে মেরিনের হিচকি উঠে গেলো। এমন ১টা মেরিনকে প্রথমবার নীড় দেখলো।
মেরিন : দদদাদুভভভাই আআআমার আআআম্মু…. ও দদদাদুভাই আআমার আম্মু…. এএএই দদদেখো আআআম্মুর নননুপুর।
দাদুভাই : কোথায় দেখেছো?
মেরিন : ওও ও….
বলতে বলতে মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো।
আসলে নুপুর জোরা কবির কনিকাকে তখন দিয়েছিলো যখন মেরিন হয়েছিলো। আর বলেছিলো এটা সেদিনই পা থেকে খুলবে।
মেরিনকে খান বাড়িতে আনা হয়েছে। কারন এতিমখানাটা থেকে খান বাড়ি কাছে।
ডক্টর চেক আপ করে বের হলো।
দাদুভাই : তপু… আমার দিদিভাই?
তপু: ভালোনা দাদুভাই । কতোবার বলেছি ওর bp normal রাখার জন্য? bpএর ঔষধ কি regular খায়না? এই বয়সেই এমন high pressure থাকলে ভবিষৎে কি হবে বলো তো? ভবিষৎ? এই conditionএ কদিন বাচে সেটা দেখো। ওর যে bp… যে কোনোদিন stroke করবে । ওর মেন্টাল প্রেসার , ব্লাড প্রেসার সব control এ রাখার চেষ্টা করো। না হলো অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে। আর হ্যা ও কি একেবারেই ঘুম আসেনা? ঘুম না আসলে শরীর কখনোই ঠিক হবেনা। at least ১মাস ওকে পুরো বেডরেস্টে রাখুন। পারলে ওর mental treatmentটাও করান।
দাদুভাই : ওর জ্ঞান কখন ফিরবে?
তপু: কিছুক্ষনের মধ্যেই । ওকে আপাদত disturb করবেন না।
বলেই ডক্টর তপু চলে গেলো।
দাদুভাই : জানিনা ওর কোন গতি হবে।
একটুপর…
দাদুভাই সোফায় বসে আছে। পাশে নীড় বসা।
তখন মেরিন ফোনে কথা বলতে বলতে সিড়ি দিয়ে নামছে।
মেরিন : হ্যা আমি এখনি আসছি।
মেরিন : না না আমিই আসছি।
দাদুভাই :একি দিদিভাই কোথায় যাচ্ছো তুমি?
মেরিনঃফ্যাক্টরি তে। worker আর ম্যানজারের সাথে ঝামেলা হয়েছে।
দাদুভাই : হোক। কোথাও যাবেনা তুমি।
মেরিন : আরে দাদুভাই…
দাদুভাই : কোথাও যাবেনা মানে যাবেনা। যাও গিয়ে রেস্ট করো। এই শরীর নিয়ে সে বের হচ্ছে।
সেতু : অভিনয় অভিনয় সব অভিনয় মায়ের মতো তো।সব মায়ের মতো।
দাদুভাই : সেতু.
সেতু : কি মিথ্যা বললাম বাবা? আজকে ১টা অশুভ দিন। আজকের দিনেই তো এই খান বাড়িতে ওই মহিলার পা পরেছিলো। সারাবাড়ি অপবিত্র হয়ে গিয়েছিলো।
দাদুভাই: সে….
মেরিন : দাদুভাই. বলতে দাও। দেখি আজকে কতো বলতে পারে। মনেরভাব প্রকাশ করার স্বাধীনতা থাকা দরকার। বল বল সেতু আজকে তো আর না আমি গান হাতে নিবো আর না ছুরি আর না চাবুক. আজকে বলে ফেল। তবে মনে রাখিস আমি কান কিন্তু অন্যকোথাও রেখে আসিনি।
সেতু : কি করবি? মেরে ফেলবি? তোর অতো সাহস নেই। তাহলে তো এতোদিনে মেরেই দিতি।
মেরিন : তুই তোরটা ভাব। আর নিজের উল্টা গোনা শুরু কর।
সেতু : আচ্ছা তাই? কি এমন হলো? তোর ওই চরিত্রহ….
আর বলতে পারলোনা। ওপর থেকে ঝুমুরটা ঠাস করে সেতুর মাথায় পরলো।
মেরিন হাতে তালি দিতে লাগলো।
মেরিন : কিছু শাস্তি অলৌকিকও হয়।
কিছুদিনপর…
নীড় : কেমন আছো তুমি?
নীরা : বিন্দাস। দেখোনা সিডনি শহরে আছি আর বিন্দাস থাকবোনা?
নীড় : এভাবে বলছো কেন?
নীরা : তো কিভাবে বলবো? এই জেলখানাতে কেমন থাকবো?
নীড় : …
নীরা : আমার কি মনে হয় জানো তুমি আমাকে কখনোই ভালোবাসোনি। মেরিনের রূপে, অর্থে হারিয়ে গেছো।
নীড় : নীরা… কি বলছো? তুমি এটা বলতে পারলে?
নীরা : তো কি বলবো? কিসের শাস্তি আমি পাচ্ছি বলো তো? তোমাকে ভালোবাসার? তুমি যদি আমাকে মনে রাখতে তাহলে কি এই কয় মাসে ১বারও আমার সাথে দেখা না করে থাকতে পারতে? আজও আসতে না। কেবল ডেকে পাঠিয়েছি বলে এসেছো।
নীড়: ….
নীরা : নীড় … i love you….
নীড় : …
নীরা : যদি আমাকে সত্যি ভালোবেসে থাকো তবে ১টা কাজ করবে?
রাতে…
নীড় বাসায় ফিরলো।
মেরিন নীড়ের টি-শার্ট আর ট্রাউজার বের করে দিয়ে। নীড়ের টাই খুলতে লাগলো। এরপর মেরিন নিচে নামতে নিলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : হামম।
নীড় : আমি আজকে নীরার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। জেলে….
চলবে.
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ০৯
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় : আমি আজকে নীরার সাথে করতে গিয়েছিলাম।
মেরিন : তো কি কথা হলো? আমাদের divorce নিয়ে?
নীড় : ….
মেরিন : কালতো শুক্রবার… পরশুই আপনার নীরা মুক্তি পাবে।
বলেই মেরিন চলে গেলো। নীড় অনেকবেশি অবাক হলো।
পরদিন….
জন: ম্যাম নীরাকে কি বের করা ঠিক হবে?
মেরিন : এটাই তো নীরাকে বের করার সঠিক সময়।
জন : কিন্তু ম্যাম….
মেরিন : নীড়ের প্রতি নীরার প্রতিশোধ নেয়ার সময় যে চলে এসেছে।
জন : স্যারের কোনো ক্ষতি হবে না তো?
মেরিন : যতোক্ষন মেরিনের শরীরের ১ফোটা রক্ত আছে ততোক্ষন নীড়ের কিছু হতে দিবোনা।
জন : নীরা কি plan করবে সেটা তো আমরা জানি না।
মেরিন : not needed…
জন : ম্যাম আপনার কিছু হয়ে গেলে?
মেরিন ওর সেই হাসিটা দিলো।
মেরিন : সকল ঘৃণার অবশান ঘটবে। এখন চলো। নিলয়ের আত্মাটাকে শান্তি দিয়ে আসি।
আজকে নিলয়ের চোখ ২টা মেরিন তুলে নিলো।
মেরিন : তুই আমার ইজ্জতে হাত দিয়েছিস কিছু বলিনি, দীদাকে আটকে রেখেছিস তাও কিছু করিনি…. আমার সংসারে আগুন লাগাতে চেয়েছিস কিছু করিনি…. কিন্তু এখন তুই আমার কলিজার দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছিস, কলিজাতে হাত দিয়েছিস…. আজকে তো তোর চোখ ২টা তুলে নিলাম। ২দিনপর তোর কলিজাটা বের করবো।
২দিনপর….
নীরা জেল থেকে বের হলো। নীড়, কবির, সেতু ওকে নিতে এসেছে।
সেতু : আহারে আমার বাচ্চাটা….
কবির: মামনি তুমি ঠিক আ….
তখন সবাই ধুম ধারাক্কা বাদ্য বাজনার শব্দ পেলো। সবাই পিছে তাকালো। দেখলো বাদ্যবাজনা নিয়ে মেরিন নাচতে নাচতে আসছে। হাতে গাঁদা ফুলের মালা। যেমনটা কোরবানির গরুর গলায় পরানো হয়।
মেরিন : jail সে আয়া মেরা দোস্ত কো সালাম কারো … ওহ হাই নীরা আপু…..
বলেই নীরাকে জরিয়ে ধরলো। এরপর নীরার গলায় মালাটা পরিয়ে দিলো। কেউ কিছু বুঝতে পারলোনা।
নীরা : তুই এখানে?
মেরিন : কেন আপু আমার কি এখানে আসতে নেই?
নীরা : shut up….
মেরিন : ok…..
২দিনপর….
নীড় : i am sorry নীরা but আমি এটা করতে পারবোনা। তোমাকে ভালোবাসি এর মানে এই না যে আমি কারো মন নিয়ে খেলবো। তাও মেরিনের।
নীরা : কেন মেরিনের মন নিয়ে খেলা যাবেনা কেন?
নীড় : আরে ও আমার বিয়ে করা বউ। আর তাছারাও….
নীরা : তাছারাও?
নীড় : তাছারাও ও আমাকে ভালোবাসে। ভীষন ভালোবাসে….
নীরা : ওওও…. ও তোমাকে ভীষন ভালোবাসে। আর আমি বুঝি বাসিনা…..
নীড় : কিসের মধ্যে কি বলছো নীরা?
নীরা : হ্যা তা নয়তো কি? তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসোনা।
নীড় : তোমাকে ভালোবাসি এর মানে এই না যে আমি ওই অসহায় মেয়েটার মন ভাঙবো….
নীরা : অসহায় মেয়ে?
তোমার মাথা ঠিক আছে? তুমি যদি আমাকেই ভালোবাসো তবে কি আজীবন ওর সাথেই থাকবে না কি?
নীড়: দেখো আমি চাইলেও ওকে divorce দিতে পারবোনা ।
নীরা : সে কারনেই তো বলছি…. এই কাজটা করতে। ওকে তো আর মেরে ফেলতে বলছিনা… তাইনা?
তুমি আমার কথা মতো কাজ করে যাও দেখে নিও divorce ও তোমাকে দিবেই।
নীড় : ও তাও divorce দিবেনা। ও মরে গেলেও আমাকে divorce দিবেনা।
নীরা : আরে এই planটা success করতে হবে। মেরিন ভালোবাসার কাঙাল…. তাই তুমি একটু ভালোবাসার অভিনয় করবে….
নীড় : মেরিন ভালোবাসার কাঙাল হতে পারে but বোকা না। হঠাৎ করে যদি ওকে ভালোবাসতে শুরু করি ও ঠিকই বুঝে যাবে।
নীরা : এতো তারাতারি করবে কেন? প্রথমে ওর সাথে বন্ধুত্ব করবে। পরে ধীরে ধীরে ভালোবাসা দেখাবে।
নীড় : i am sorry নীরা আমি এটা পারবোনা।
নীরা: ok… তাহলে আমাকে ভুলে যাও।
নীড় : যাবো…. তবুও আমি এই কাজ করতে পারবোনা।
নীরা মনে মনে: কিছু কর নীরা কিছু কর…. ১ঢিলে ২ পাখি মারার এটাই সুযোগ। কি করি? কি করি….পেয়েছি।
নীরা: ভালো। যে জীবনে তুমি নেই সে জীবন রেখে কি লাভ?
বলেই নীরা ছুরি দিয়ে হাত কেটে ফেলল।
নীড় : পাগল হলে তুমি নীরা? ছেলেমানুষি বন্ধ কর।
নীরা : আমি শেষ করে দিবো নিজেকে…. একে বারে…
নীড় : আরে নীরা….
নীরা: একদম আগে বারবেনা…. আগে বারলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো বলে দিচ্ছি…
নীড় : নীরা… অনেক রক্ত ঝরছে।
নীরা: ঝরুক…. মরে যাবো আমি…..
এটা দিয়ে আমি আমার বুক চিরে তোমাকে আমার হৃদয়টা দেখাবো…
বলেই নীরা ছুরি নিজের বুকের দিকে নেয়।
নীড় : please থামো। তুমি যা বলবে আমি তাই করবো… তবুও থামো।
নীরা: আমাকে ছুয়ে কথা দাও।
নীড় : ….
নীরা : কি হলো?আমাকে ছুয়ে কথা দাও….
নীড় : এই তোমাকে ছুয়ে কথা দিলাম। এখন তো থামো।
নীরা নীড়কে জরিয়ে ধরলো। কেন যেন নীরার জরিয়ে ধরাটা নীড়ের মোটেও ভালো লাগলোনা। নীরার হাতে ব্যান্ডেজ করিয়ে নীড় চলে গেলো।
নীরা : আর মাত্র কিছুদিন নীড়…. তোমার জীবনের সীমা শেষ। তোমাকে জানে মেরে দিবো। আর তুমি মরে গেলে মেরিন এমনিতেই শেষ।
নীড় নীরা কে কথা তো দিলো। কিন্তু কোনো কিছুই ভালো লাগছেনা। ওর মন কিছুতেই সায় দিচ্ছেনা মেরিনের মন ভাঙার।
রাতে….
নীড় বাসায় গেলো। ঢুকতে যাবে তখনই মিষ্টি কন্ঠে গান শুনতে পেলো। একটু দরজা ফাক করে দেখলো মেরিন ওর শার্ট গায়ে জরিয়ে নাচছে আর গান গাইছে।
মেরিন :
🎶🎵🎶
তু আতা হ্যা সিনেমে
যাব যাব সাসে ভারতি হু
তেরে দিলকি গালিও সে
ম্যা হার রোজ গুজারতি হু
হাওয়া কে জ্যাসে চালতা হ্যা তু
ম্যা রেত জ্যাসি উরতি হু
কন তুঝে ইউ পেয়ার কারেগা
জ্যাস ম্যা… কারতি হু….
🎶🎵🎶
নীড়ের শার্ট গায়ে জরিয়ে চোখ বন্ধ করে নাচতে নাচতে মেরিন খেয়ালই করেনি যে নীড় চলে এসেছে। নাচতে নাচতে কার্পেটে বেজে পরে যেতে নিলো তখন নীড় ওকে ধরে ফেলল। মেরিন চোখ বন্ধ রেখেই মুচকি হাসি দিলো। এরপর চোখ বন্ধ রেখেই নীড়ের ঠোটে হালকা করে কিস করলো। এরপর চোখ মেলল ।
মেরিন : i love you…
নীড় মুচকি হাসি দিলো।
নীড় : এভাবে বেসামাল হয়ে কতোক্ষন থাকবেন ম্যাডাম?
মেরিন : যতোক্ষন আপনি এভাবে আগলে রাখবেন….
নীড় মেরিনকে সোজা করে দার করালো।
মেরিন : জান… যান গিয়ে fresh হয়ে নিন। আজকে আপনার favorite dishes রান্না হয়েছে।
নীড় একটু অবাক হলো । কারন নিলয়কে নিয়ে ঝামেলা হওয়ার পর মেরিন ওর সাথে তেমন কোনো কথা বলেনি।
কিন্তু আজকে আবার অমন করে কথা বলছে। নীড়ের মনটা আনন্দে ভরে গেলো।
নীড় : হামম।
বলেই নীড় washroom এ গেলো।
মেরিন মনে মনে: নিখুত অভিনয়ের পালা হয়তো শুরু হয়ে গিয়েছে। আমিও দেখি আপনি কতো সুন্দর অভিনয় করতে পারেন…. আমার মন ভাঙার process তো শুরু হয়ে গেলো। কিন্তু আমার মন ভাঙবেন কি করে? আমি তো heartless…. তাই আমার মন তো ভাঙবেনা…. তবে খুব শীঘ্রই আপনার কোমল মনটা ভাঙতে চলেছে… নীরার হাতে। যেটা আমার মেনে নিতে ভীষন কষ্ট হবে। যার জন্য নীরা কে শাস্তি পেতে হবে। আপনার অভিনয় আমি মাথার তাজ বানিয়ে রাখবো। আর divorce …. এ জীবনে পাবেন না…. কথা দিলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর…
মেরিন নীড়ের কোলে ধপ করে বসলো।
মেরিন : আজকে রান্না কেমন লাগলো।
নীড় : পচা.
মেরিন :। huh…
বলেই কোল থেকে উঠে গেলো।
নীড় : আরে বাবা মজা করছিলাম। অনেক ভালোহয়েছে।
মেরিন : সত্যি?
নীড় : হামম।
মেরিন : তাহলে ছোট্ট ১টা প্রশ্ন করবো ঠিক ঠিক উত্তর দিবেন….
নীড়:…
মেরিন : ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অমন কিছু ask করবোনা….
নীড় : করো…
মেরিন: আপনি আমাকে ভালোবাসেন না ঘৃণা করেন?
নীড় : ….
মেরিন: কি হলো বলুন…
নীড় : …..
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো। নীড় এই হাসির মানে জানেনা।
মেরিন : আমিও বোকার মতো প্রশ্ন করি…. তাইনা? মেরিন কে কি কখনো ভালোবাসা যায়? মেরিন কি কখনো ভালোবাসার হতে পারে? মেরিন তো ঘৃণার…. যাই হোক কফি খাবেন?
নীড় : ….
মেরিন : এটার উত্তর তো দিন…
নীড়: হামম।
মেরিন : দারান এখনই নিয়ে আসছি।
মেরিন কফি নিয়ে এলো। নীড় খেলো।
কিছুক্ষনপর…
নীড়ের মনে হচ্ছে যে ও হাত-পা , সারা শরীরে কোনো বোধ পাচ্ছেনা। মুখটাও যেন খুলতে পারছেনা।
মেরিন : নীড়… হাত-পা নারাতে পারছেন না? পারবেন কি করে? আমি যে আপনার কফি তে drugs দিয়েছি। কয়েক ঘন্টার জন্য আপনাকে ফ্রিজ করার জন্য। বাট আপনি sense হারাবেন না। কেন এমনটা করলাম জানেন? আপনার গায়ে আমার stamp মারার জন্য।
বলেই মেরিন খুব ছোট আর সরু ১টা লোহার কাঠি নিয়ে এলো। সেই সাথে মোমবাতি। এরপর নীড়ের হাতটা হাতে নিলো।
এরপর সেই লোহার কাঠিটা আগুনে পুরিয়ে নীড় হাতে লিখতে লাগলো।
মেরিন : জানেন নীড় আপনার হাত পা অবশ কেন করেছি? যেন আপনি ব্যাথা না পান…. কিন্তু কতো রক্ত ঝরছে… খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। কিন্তু কিছু করার নেই… চিন্তা করবেন না আমি ক্ষত শুকানোর জন্য ১টা মেডিসিন নিয়ে এসেছি। ২ দিনোর মধ্যে আপনার এই ক্ষতটা ঠিক হয়ে যাবে…
ভালোই হয়েছে আমাকে ঘৃণা করেন। যদি আমাকে ভালোবাসতেন তবে এখানে লিখতে হতো ভালোবাসার মেরিন… কতোগুলো অক্ষর হয় ভালোবাসা শব্দটায়। কিন্তু ঘৃণা শব্দটা যথেষ্ট ছোট। আপনার কম রক্ত ঝরবে। সাধে কি বলি যে ভালোবাসার থেকে ঘৃণা অনেক ভালো।
মেরিন কান্না করছে আর কথা গুলো বলছে। কিন্তু ঠোটে ছোট্ট হাসি।
নীড় মনে মনে : বড়ই অদ্ভুদ তুমি। ১দিকে মুখে প্রশান্তির হাসি আর অন্যদিকে কষ্টের কান্না। তোমাকে বোঝা বড় দায়। যেমন আমার রক্ত ঝরায় তোমার অনেকবেশি কষ্ট হচ্ছে তেমনি আবার আমারই হাতে নিজের নাম লিখে শান্তি লাগছে… তোমাকে বোঝে কার সাধ্য? জানিনা আমার হাত থেকে রক্ত ঝরানোর জন্য নিজেকে আবার কি শাস্তি দিবে?
একটুপর…
মেরিন : হয়ে গিয়েছে। দেখুন…
নীড় নিজের হাতের দিকে তাকালো। দেখলো ওর হাতে লেখা
ঘৃণার মেরিন ।
নীড় জানেনা ও ঠিক কেমন react করা উচিত। মেরিন নীড়ের হাতে ১টা চুমু দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো। এরপর অসংখ্য চুমু দিলো ব্যান্ডেজের ওপর দিয়ে।
মেরিন : আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি । ঘুমিয়ে পরুন।
নীড় বেশ বুঝতে পারছে যে ও ঘুমালেই মেরিন কিছু না কিছু করবেই নিজের সাথে।
মেরিন : কি হলো ঘুমান….
কিছুক্ষনের মধ্যেই নীড় ঘুমিয়ে গেলো।
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। বরাবরের মতো মেরিনকে নিজের বুকের মধ্যই পেলো। ১টা মুচকি হাসি দিলো। পরক্ষনেই রাতের কথা মনে পরলো। নীড় তারাতারি উঠে বসলো। মেরিনের হাত-পা চেক করতে লাগলো। যা ভেবেছি তাই… মেরিনের ২হাতেই ব্যান্ডেজ। যা দেখে নীড়ের বুকটা কেপে উঠলো।
নীড় : মেয়েটা আসলেই পাগল।
নীড় মেরিনকে ঠিক মতো শুয়াতে গিয়ে মেরিনের ঘাড়ের দিকে নজর গেলো। দেখলো সেখানে ছোট ১টা love আঁকা। তারমধ্যে নীড় লেখা।
নীড় : আর কতো ভালোবাসবে আমায়….
মেরিন : যার থেকে বেশি আর ভালোবাসা যায় না…
নীড় : তুমি জেগে আছো?
মেরিন নীড়কে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে
বলল : হামম।
নীড় : ছারো উঠবো। 😜।
মেরিন নীড়ের বুকের ওপর উঠে বসলো। এরপর গালে ১টা ঠুকনা দিয়ে
বলল: ওই ব্যাটা ওই… তোর সমস্যাটা কি হ্যা? তোর আর কতো ভালোবাসা লাগবে বল? তোর ওই নীরা কি তোকে এতোটাই ভালোবাসা দিয়েছে যে ওর ভালোবাসা তোর মাথা থেকেই নামছে না? যেদিন তুই আমাকে ভালোবাসবিনা…সেদিন তোরে বোঝাবো কতো ধানে কতো চাল…
খালি নীরা নীরা নীরা… কেন রে নীরা নারী আর আমি কি পুরুষ? নাকি নীরা চলন্ত আইটেম গান হয়ে ঘুরে বেরায় বলে… নাকী ছোটো ছোটো পোশাক পরে বলে ওকে ভালো লাগে? আমি তো শার্ট-প্যান্ট পরি ওর মতো ছিরাভিরা পোশাক পরিনা বলে আমাকে ভালো লাগেনা? ১টা কথা মাথায় রাখবি… আমি চাইলেই নীরা হতে পারি কিন্তু নীরা জনমেও আমি হতে পারবে না। নীরা কি আমার থেকে খুব বেশি সুন্দরি? শালা পুরুষ মানুষই এক…
নীড়ের মেজাজ গেলো খারাপ হয়ে।
এবার নীড় মেরিনের ওপর চরে বসলো।মেরিনের হাত চেপে ধর
বলল : ওই সব পুরুষ মানুষ এক মানে কি হ্যা? আমি মোটেও অমন না। বুঝেছো।
কিছুক্ষন পর নীড় বুঝতে পারলো ওর হাত ভিজে যাচ্ছে। তাকিয়ে দেখে ওর হাত মেরিনের রক্তে ভিজে যাচ্ছে।
নীড়: ওহ নো….
নীড় তারাতারি উঠে বসলো। মেরিনর হাতে নতুন করে ব্যান্ডেজ করতে লাগলো।
নীড় : ইডিয়ট… ব্যাথা লাগলে বলতে তো হয় নাকি….
মেরিন : আপনার দেয়া ব্যাথায় আমার প্রশান্তি।
বলেই নীড়ের কপালে চুমু দিলো।
পরদিন..
আজকে ১টা ফরেইন কম্পানি এর সাথে মিটিং আছে। নীড় ওয়াশরুমে থেকে বেরিয়ে দেখে ….
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১০
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় washroom থেকে বের হলো। দেখলো মেরিন আয়নার সামনে দারিয়ে রেডি হচ্ছে। মেরিনকে দেখেই নীড়ের মেজাজ সেই লেভেলের খারাপ হয়ে গেলো। কারন মেরিন আজকে শাড়ি পরেছে। শাড়ির ব্লাউজ আর শাড়ি পরার ধরন দেখে নীড়ের রক্তেই আগুন লেগে গেছে। ব্লাউজটা sleeveless,, শাড়িটা এমনভাবে পরেছে যে মেরিনের পেট-পিঠ অনেকটাই দেখা যাচ্ছে। চুল গুলো ১পাশে এনে রেখেছে। পিঠে থাকা নীড় নামটা দেখা যাচ্ছে। নীড় মেরিনের পেটের দিকে তাকিয়ে দেখলো যে ওখানেও নীড় লেখা। সেজেছেও আজকে চরম ভাবে। মেরিন নীড়ের দিকে ঘুরলো।
নীড়ের গলা ধরে
বলল : কেমন লাগছে আমাকে?
নীড় দাঁতে দাঁত চেপে
বলল: কি করেছো?
মেরিন : মেয়ে সেজেছি…
নীড় : চুপচাপ শাড়ি পাল্টে হয় থ্রীপিছ পরো না হয় as usual ছেলেদের মতো shirt-pant বা coat পরো।
মেরিন : উহু…. আমি তো মেয়েই সাজবো।
নীড় : যদি মেয়ে সাজার শখ হয় তো ভালোমতো শাড়ি পরো।
মেরিন :উহু… আমি এভাবেই পরবো।
নীড় : কারন?
মেরিন : যদি আপনার নজর পরে আমার দিকে …
নীড়: মানে কি? এভাবে শাড়ি পরলে আমার নজর পরে মানে?
মেরিন : এভাবে শাড়ি পরে বলেই তো আপনি নীরাকে ভালোবাসেন।
নীড় : রাগ না ওঠাতে চাইলে change করে আসো। তুমি হয়তো জানোনা আমি তোমার থেকেও ভয়ংকর।
মেরিন : তাই বুঝি?
নীড় : change করো।
মেরিন: উহু…. নীরাকে তো change করতে বলেন না।
নীড় : নীরা মডেল আর তুমি বাড়ির বউ।
মেরিন : বউ?আপনি তো বিয়ে মানেন না।
নীড় : কথা না বারিয়ে change করো।
মেরিন : না না না না না….
নীড় আর কোনো কথা না বলে ১টানে মেরিনের শাড়ি খুলে পটপট করে শাড়ি ছিরে তাতে আগুন লাগিয়ে দিলো।
নীড় :১০মিনিট সময় দিলাম । রেডি হয়ে আসো।
বলেই নীড় বেরিয়ে যেতে নিলো।
মেরিন :
আয় হায় মিরচি
উহ উহ মিরচি
উফ উফ মিরচি..
নীড় : shut up….
বলেই নীড় চলে গেলো।
১০মিনিটপর মেরিন রেডি হয়ে নিচে গেলো। ১টা লং টপস, জিন্স , লং সুজ, চোখে কালো চশমা, চুল গুলো খোলা। নীড় ১বার দেখে সামনে তাকালো। নীড়ের মুখ দেখে মেরিন বুঝতে পারলো নীড় রেগে আছে। মেরিন নানা ভাবে নীড়কে জালাতে লাগলো। নীড় react করলো না। তবে react না করে পারলো না। চশমা টা মাথায় তুলে
বলল : drive করছি তো….
মেরিন: হায়…
আখিও সে গোলি মারে….
আপনে দিওয়ানে কা
কারদে বুরা হাল রে
কে আখিও সে গোলি মারে।
নীড় ফিক করে হেসে দিলো।
ওরা office পৌছালে।
২দিনপর…
নীড়-মেরিন বান্দরবান পৌছালো। ১টা official কাজে।
মিটিং শেষ করে নীড়-মেরিন হোটেলে ফিরছে। গাড়ি রেখে পায়ে হেটে। হাটতে হাটতে নীড়-মেরিন ১টা পাহাড়ের চূড়ায় গেলো।
মেরিন : নীড় … i love you….
মেরিনের আওয়াজ প্রতিধ্বনিতো হতে লাগলো। যেটা দেখে মেরিন বেজায় খুশি।
নীড় : তোমার মুখে কি love you নীড় ছারা কোনো কথাই আসে না?
মেরিন : উহু। এখন আপনি বলুন?
নীড় : 😒
মেরিন : আরে love you বলতে বলিনি । hate you বলতেই বলেছি।
নীড় : পারবোনা।
মেরিন : এখন কিন্তু ইয়ারাম গানের রানী মুখার্জীর মতো blackmail করবো পাহাড় থেকে লাফাবার। so তারাতারি বলুন । মেরিন… i hate you…
নীড় : what? তুমি কি actually পাগল?
মেরিন : হামম। only for you… এখন বলুন।
নীড় : জনমে কাউকে দেখিনি hate you শোনার জন্য কেউ এমন করে।
মেরিন :মিথ্যা ভালোবাসার থেকে সত্যি ঘৃণা অনেক ভালো। আপনার ঘৃণাকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। বলুন।
নীড় : মেরিন….
i lo..
i hate you…
মেরিন : 🤨।
নীড় : ভুলে বেরিয়ে গিয়েছিলো।
মেরিন : একটু ভালোবাসলে কি হয়?
নীড়: কিছু না …
বলেই হাটতে লাগলো।
মেরিনে দৌড়ে গিয়ে নীড়ের কাধে উঠলো।
নীড়: what?
মেরিন : এভাবে নিয়েই হাটুন। কোলে তো আর নিবেন না কখনো।
নীড় : আল্লাহ…. নামো কোলে নিচ্ছি।
মেরিন : সত্যি?
নীড় : হামম।
মেরিন নামলো। নীড় মেরিনকে কোলে নিলো। আর মেরিন একটু পর পর নীড়
মাথা তুলে নীড়ের গালে-ঠোটে কিস করতে লাগলো।
নীড় : কি করছো কি?
মেরিন : ভালোবাসছি।
নীড় : উফ অসহ্য।
মেরিন :😁
১টা গান শুনবেন?।
নীড় : …
মেরিন : গাই হামম।
🎶🎵🎶
মেরি তারাহ তুম ভি কাভি…
পেয়ার কারকে দেখোনা…..
চাহাদকা .. মুঝপে সানাম…
ইকরার কারকে দেখোনা….
কিতনা মাজা হ্যা ক্যাসা নেশা হ্যা
পেয়ার কারকে দেখো না….
🎶🎵🎶…
পরদিন…
আরেকটা মিটিং এর জন্য কক্সবাজার গেলো।
নীড়-মেরিন মিটিংএ গেলো। সেখানে ১টা মেয়ে বারবার নীড়ের সাথে আজিরা পারতে যাচ্ছে। আর লেগে লেগে বসছে। আসলে মেয়েটা জানেনা নীড় বিবাহিত।
নীড় মনে মনে : এই মেয়ের কি মরার ভয় নাই? যে মেরিন বন্যার সামনে আমার সাথে চিপকাতে আসছে..
মেরিন কিছু না বলে দারিয়ে গেলো। সবাই ভয়ে কেপে উঠলো। মেরিন খুব শান্ত ভাবে গিয়ে ধপ করে নীড় কোলে গিয়ে বসলো।
এরপর খুব ঠান্ডা মাথায়
বলল: আমি এভাবেই আমার জামাইর কোলে বসে মিটিং করবো। কারো সমস্যা? সমস্যা থাকলে হাত তুলুন।
কার ঘাড়ে কটা মাথা যে হাত তুলবে।
নীড় মনে মনে: আবার শান্ত গলায় কথা…. ওই মেয়েটার কপালে দুঃখই আছে।
মেরিন নীড়ের কানে ফিসফিস করে
বলল: ভয় নেই জানে মারবো না।
রাতে….
নীড় বসে বসে
ভাবছে: আচ্ছা…. কোনো মেয়ে আমার দিকে তাকালেও মেরিন ওদের অবস্থা খারাপ করে। তাহলে নীরাকে কিছুই বলছেনা কেন?
মেরিন : কারন নীরা কে আমি কিছু বললে আপনার মনটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাবে।
নীড় অবাক হয়ে গেলো। মেয়েটা ওর মনের কথা কিভাবে বুঝলো?
মেরিন : মাথায় অতো জোর দিতে হবেনা। ফেটে যাবে। চলুন আমার ভীষন ঘুম পাচ্ছে। ঘুমাবো।
নীড়: তো ঘুমাও না। কে না করেছে?
মেরিন : 🤨
নীড় : তুমি তো আমার কলিজার ওপর চরে ঠিকই আরামসে ঘুমাও। কষ্ট তো হয় আমার।
মেরিন: হ্যা তা তো হবেই। আমি তো আর নীরা না। নীরা হলে কেবল কলিজা কেন brain , liver , kidney , heart সব কিছুর ওপরেই ঘুমাতে দিতেন।
নীড় : হ্যা দিতামই তো।
মেরিন : হুহ। দিন দিন। যেদিন ওই নীরা আপনার হৃদয়ের তা থৈ তা তা থে নৃত্য করবে সেদিন বুঝবেন।
নীড় : হামম।
মেরিন : আচ্ছা আপনি নীরার ওপর এতো দুর্বল কেন বলুন তো?
নীড় : তোমাকে বলা জরুরী মনে করছি না।
মেরিন : বুঝেছি অতীব শীঘ্রই নীরার বাচ্চার বাবা হবেন। সেই good news টাই হয়তো পেয়েছেন।
নীড় : ১টা থাপ্পর দিবো। কি আবোল তাবোল ব….
তখনই নীড়ের ফোনে নীরা call করলো।
মেরিন : ধরো বেবি ধরো নীরা জানু ফোন করেছে। huh…
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো।
নীড় : hello …
নীরা: কি হলো? plan কতোদূর?
নীড় : উফ এতো plan plan করো না তো। ঘুমাবো।
নীড় কথা বলে রুমে গেলো।
দেখলো মেরিন নিচে শুয়ে আছে। না বিছানা করে না। এমনিতেই। নীড়ের খটকা লাগলো।
নীড় : মেরিন…. মেরিন… মেরিন উঠলোনা।
নীড়:মেরিন… এই মেরিন… oh no… এর তো জ্ঞান হারিয়েছে।
নীড় তারাতারি মেরিনকে কোলে তুলে নিলো। হেটে বেডের কাছে যেতেই মেরিন দামাদুম করে নীড়ের গালে কিস দিতে লাগলো।
নীড় : 😡
মেরিন : 🤣।
নীড় মেরিনকে ধপাস করে বেডে ফেলে
বলল: সব কিছুর ১টা লিমিট থাকে।
মেরিন : কিন্তু আমি লিমিট ছারা।
২দিনপর…
নীড় মনের সুখে ফুচকা খাচ্ছে। আর মেরিন নীড়কে দেখছে।
নীড় : আচ্ছা তুমি আমার মধ্যে কি দেখো?
মেরিন : আমার স্বর্গ।
নীড় : 😒।
দেখতে দেখতে মেরিনের চোখ কিছুটা সামনে গেলো। দেখলো ১টা ৬-৭ বছরের বাচ্চা মেয়ে মা-বাবার সাথে পার্কে ঘুরতে এসেছে। বাচ্চাটা মা-বাবার সাথে বল খেলছে। মেরিন আরেকটু কাছে গিয়ে দারালো। আর দেখতে লাগলো। আর ডুব দিলো সুন্দর অতীতে।
প্রতি শুক্রবারেই কবির-কনিকার সাথে মেরিন ঘুরতে বের হতো। এভাবে খেলতো। আনন্দ করতো। কনিকা কিছু বললেই কবিরের পেছনে লুকাতো। princess বলে ডাকতো কবির সবসময়।
নীড়: এ আবার কোথায় গেলো?
নীড় তাকিয়ে দেখলো মেরিন একটু সামনে গাছের সাথে মাথা ঠেকিয়ে দারিয়ে এক ধ্যানে কি যেন দেখছে । নীড় মেরিনের সামনে গেলো। দেখলো মেরিন ছোট্ট সেই পরিবারটকে দেখছে। আজও চোখে পানি মুখে হাসি। নীড় মেরিনের ঘাড়ে হাত রাখলো।
নীড় : মেরিন …
মেরিন চমকে উঠলো। আর চোখের সামনে থেকে সেই সুমধুর সময় চলে গেলো। মেরিন সাথে সাথে চোখের পানি মুছে নিলো।
মেরিন : বাবাহ আপনার খাওয়া অবশেষে হলো। pregnant woman দের মতো টক খাচ্ছিলেন।
নীড় অবাক চোখে দেখছে।
মেরিন নীড়ের গলায় হাত রেখে
বলল: আমাকে বুঝি এতোটাই hot & beautiful লাগছে? হামম হামম?
নীড় : তোমার চোখের পানি আগেও দেখিছি…. তাই এই মিথ্যা হাসির পেছনের সত্যি কান্নাটা আড়াল করার কি দরকার?
মেরিন হা হা করে হেসে উঠলো।
মেরিন : মেরিনের মায়ায় জরাবেন না । হারিয়ে যাবেন… চলুন যাই…
রাত ১টা…
নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো। দেখলো মেরিন নেই সারা বাড়ি খুজেও মেরিনকে পেলেনা। নীড় মেরিনকে খুজতে বের হলো। গার্ডের কাছে শুনে ওই অনুযায়ী গেলো। যেতে অনেকটা দূরে সাগর পারে নীড় মেরিনকে দেখতে পেলো। ছুটে গেলো। দেখলো ১টা হুইসকির বোতল পরে আছে । আর মেরিন গিটার বাজিয়ে গান গাইছে।
🎶🎵🎶
আমার সকল দুঃখের
প্রদীপ জ্বেলে দিবস গেলে
করবো নিবেদন…
আমার ব্যাথার পূজা
হয়নি সমাপন.. 2
যখন বেলা শেষের ছায়ায়
পাখিরা যায় আপন কুলায় মাঝে
সন্ধ্যা পূজার ঘন্টা যখন বাজে 2
তখন আপন শেষ শিখাটি
জ্বালবে এ জীবন…
আমার ব্যাথার পূজা হবে সমাপন।
আমার সকল দুঃখের
প্রদীপ জ্বেলে দিবস গেলে
করবো নিবেদন…
অনেক দিনের অনেক কথা ব্যাকুলতা
বাধা বেদন ডোরে
মনের মাঝে উঠেছে আজ ভরে 2 ।
যখন পূজার হোমানলে
উঠবে জ্বলে একে একে তারা
আকাশপানে ছুটবে বাধন হারা… 2
অস্তরবির ছবির সাথে
মিলবে আয়োজন
আমার ব্যাথার পূজা হবে সমাপন ।
আমার সকল দুঃখের
প্রদীপ জ্বেলে দিবস গেলে
করবো নিবেদন।
আমার ব্যাথার পূজা হয়নি সমাপন…
🎶🎵🎶।
কেন যেন মেরিনের কন্ঠে গানটা শুনে নীড়ের চোখে পানি চলে এলো।
মেরিন : এতো রাতে আপনি এখানে? ঘুমান নি? শরীর খারাপ করবে যান গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন।
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : স্বামী হয়ে অধিকার নিয়ে জিজ্ঞেস না করে বা কিছু না বলে যদি বন্ধু হয়ে অধিকার নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলে না বললে শুনবে বা বলবে?
মেরিন কিছু না বলে নীড়ের কোলে বসে নীড়ের গলা জরিয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে
বলল : যদি বলি আমাকে ভালোবাসতে বাসতে পারবেন? সারাজীবন বাদ দিলাম…. যদি বলি আজকে রাতটাতেই আমাকে একটু ভালোবাসতে ? বাসবেন? পারবেন ভালোবাসতে?
নীড় : …
মেরিন হা হা করে হেসে উঠলো। এরপর নীড়ে বুকে মাথা রাখলো।
মেরিন : সব কিছুর লিমিট থাকে। কিন্তু আমার নেই। আমার কোনো সীমা নেই। লাগাম নেই। খুব ঘৃণা করেন আমাকে তাইনা? আপনার দোষ নেই। মেরিনকে সবববাই ঘৃণা করে। এমনকি মেরিন নিজেও মেরিনকে ঘৃণা করে।
জানেন নীড় ….
অনেকবার ভেবেছি নিজেকে শেষ করে দিবো। কিন্তু করিনি। কেন জানেন? আমি যদি মরে যাই আমার দাদুভাইর কি হবে? দীদাকে , আম্মুকে কে খুজে বের করবে?
আমার মায়ের চরিত্রের দাগ মুছবে কে? আমি যে কবির ফয়সাল খানেরই মেয়ে সেটা প্রমান হবে কি করে? DNA test করলে প্রমান হবে যে আমি কবির ফয়সাল খানের সন্তান । কিন্তু এতে আমার আম্মুকে অপমান করা হবে। নীড় আমার আম্মুকে খুজে দেবেন? বলুন না । দেবেন? কথা দিচ্ছি যেদিন আপনি আমার আম্মুকে খুজে দেবেন সেদিন আমি আপনাকে মুক্তি দিয়ে দেবো। divorce দিয়ে দিবো। আপনি সকল বাধা নিষেধ থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন। এই আপনাকে ছুয়ে কথা দিলাম। আমি দাদুভাই, দীদা, আম্মুকে নিয়ে অনেক অনেক অনেক দূরে চলে যাবো । ১টা ছোট সুন্দর ভালোবাসার পৃথিবী সাজাবো । যেখানে কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না। এমনকি মেরিনকেও না। মেরিনও হবে ভালোবাসার মেরিন। চারিদিকে ফুল, পাখি, চাঁদ, সূর্য , তারাদের মেলা থাকবে। যেখানে মেঘেদের সাথে খেলা করা যাবে, পাখি-ফুলদের সাথে কথা বলা যাবে। ওদেরকে বন্ধু বানানো যাবে…. আম্মু ঘুম পারানির গান শোনাবে, বাবা চকোলে… না না উনাকে তো নেয়া যাবেনা। উনি গেলে পিছে পিছে নীরা, সেতু, নিলয় সবাই যাবে। কাউকে নিবোনা । শুধু আমরা ৪জন।
মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে বেখেয়ালি ভাবে কথাগুলো বলছে। সেই সুযোগে নীড় মেরিনকে কোলে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।
মেরিন : ও নীড়… যদি আমি মরে যাই আমার আম্মুকে খুজে বের করে সকল অপবাদ দূর করে দিবেন। কথা দিন না….
আচ্ছা আমার জন্য কিছু করতে হবেনা । আমার আম্মুর নামের সাথে যে চরিত্রহীনা tag টা লেগে আছে সেটা দূর করবেন… কথা দিন… আমার আম্মু হিসেবে না করবেন আপনার মামনির best friend হিসেবে করবেন। কেমন?
ও নীড় কথা দিন না… কথা দিন আমি মরে গেলেও এভাবে আমাকে ঘৃণা করবেন। বলুন না…. আপনার ঘৃণা আমার সব হয়ে গেছে । আপনি যদি কখনো আমাকে ঘৃণা না করে ভালোবাসতে শুরু করেন তাহলে আমি মরে যাবো। আপনার ঘৃণাতেই আমার কতো সুখ….. না জানি আপনার ভালোবাসায় তততার থেকে কতো বববেশি সুখ হবে। সেই খুশি হয়তো আমি নিতে পারবোনা। খুশিতেই heart attack করে মরে যাবো। তাই কথা দিন যে আমাকে always ঘৃণা করবেন।
কেমন?
আচ্ছা নীড় অন্য স্বামীদের বউ মরলে তো তারা লোক দেখানোর জন্যে হলেও কান্না করে… কিন্তু আপনি তো করবেন না। আপনি তো খুশি হবেন। যাক ভালো হবে আমি মরে গিয়ে অন্তত আপনার মুখে হাসি ফোটাতে পারবো। তবে ভালোই হবে আমি ম….
আর বলতে পারলোনা। নীড় মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১১
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় মেরিনের ঠোঁট জোরা দখল করে নিলো। মেরিন অবাক হলেও আর কিছু না ভেবে নীড়ের সাথে তাল মেলাতে লাগলো।
.
একটুপর…
নীড় মেরিনকে ছারলো। মেরিন এখনও চোখ বন্ধ করে আছে। চোখ দিয়ে পানি পরছে। নাকটা লাল হয়ে গেছে। পাপড়ি গুলোও ভিজে আছে। ঠোঁট ২টাও কাপছে। খুব কষ্ট হচ্ছে মেরিনের চোখে পানি দেখে।
নীড় হাত দিয়ে মেরিনের চোখের পানি মুছে দিলো।
নীড় : মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি ঘুমিয়ে পরো।
মেরিন চোখ মেলল। হাত দিয়ে পানি মোছাটা মেরিনের পছন্দ হয়নি।
মেরিন উঠে বসলো।
নীড় : কি হলো?
মেরিন : না কিছুনা। আপনি ঘুমান।
বলেই মেরিন ওয়াশরুম এ গেলো। ফ্রেশ হয়ে চেঞ্জ করে এলো।
.
নীড় : চেঞ্জ করলে যে?
মেরিন: হ্যা একটু কাজ আছে।
বলেই গাড়ির চাবিটা হাতে নিলো।
নীড় : এতো রাতে কিসের কাজ? চাবি রাখো। আর চুপচাপ ঘুমাও।
মেরিন : আরে ঘুমালে হবেনা। আমার যেতে হবে ।
নীড় : না। কোথাও যাবোনা। না মানে না।
মেরিন : আজব তো…
দেখি সরুন তো…
নীড় :মেজাজ খারাপ কোরো না তো।
মেরিন নীড়ের গলা জরিয়ে বলল: কেন গো জান ? যেতে দিতে চান না কেন হামম? মতলব টা কি? 😏।
নীড় : অনেক কিছু। চাবি রাখো। কিছু হলেই চাবি নিয়ে বের হও কেন?
মেরিন: ভাগ্য পরীক্ষা করতে।
নীড়: মানে?
মেরিন: কিছুনা। সরুন।
নীড়: না মানে না।
মেরিন : আমি যখন বলেছি যে আমি যাবো তখন তো যাবোই ।
নীড় : আমিও যখন বলেছি যে যেতে দিবো না তখন দিবোনা।
মেরিন : আচ্ছা আপনার কি আমার কোনো কথাই ভালো লাগেনা?
নীড় : না।
বলেই নীড় মেরিনের হাত থেকে চাবিটা নিয়ে ছুরে মারলো।
এরপর কোলে তুলে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলো।
নীড় : দেখো ওই সাগরটা কে ঢেউয়ের পর ঢেউ আসতেই থাকে সাগরের বুকে। কিন্তু ১বার না ১বার তাকেও স্থির হতে হয়… মানুষের জীবনটাও এমন উথাল পাতাল যতোই থাকুক না কেন স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করেই। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তুমি আমি আমরা কেউই প্রকৃতির বাইরে না।
মেরিন ওর সেই হাসি দিয়েই
বলল: কখনো কি দেখেছেন যে বন্যা হয়েছে অথচ কোনো ক্ষতিই হয়নি? চুল পরিমান ক্ষতি হলেও হয়। আমি বন্যা। স্থিরতা আমার বৈশিষ্ট্য না। ধংব্স করাই আমার বৈশিষ্ট্য। নোংরা আবর্জনায় আমি ভরপুর। যদি লাগাতার মাত্র ২টা বন্যাতেই কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় তবে ৩য় বছরেই বন্যা আর আতংক থাকবেনা। কিন্তু কথাটা সেটা না…
মেরিন বন্যার আতংকটা কমে গেলে খান সম্রাজ্ঞ হেলে পরবে।
তবে কথাটা হলো এই যে আপনি আমাকে এই উপদেশ বানী শোনাচ্ছেন কেন?
নীড় : বাস্তবতাকে এরিয়ে যেতে চাইছো?
মেরিন : বাস্তবতাকে এরিয়ে চললে এই পর্যন্ত আসতে পারতাম না….
বলুন তো, যদি দুর্বল হতাম আপনাকে পেতাম? কতোবার ভালোমতো বলেছি ভালোবাসতে? বেসেছেন? রিকুয়েষ্ট করেছি …. এক্সেপ্ট করেছেন?
নীড় : দেখো তুমি যে সময় আমাকে প্রোপজ করেছো তখন তোমাকে এক্সেপ্ট কিভাবে করতাম বলো তো? আমি অন্যকারো ছিলাম। ভালোবাসতাম নীরাকে। ভীষন…
মেরিন: আর আমাকে ঘৃণা….
আচ্ছা নীড় বুকে হাত রেখে ১টা কথা বলবেন?
নীড় : পারবোনা।
মেরিন নীড়ের হাত নীড়ের বুকে রেখে
বলল : সত্যি করে বলুন তো যদি আমি মরে যাই আপনি আমাকে কাধে করে গোরস্থানে নিয়ে যাবেন তো? আমাকে আপনার হাতের মাটি দিবেন তো? কান্না করে নাই দিলেন…. হাসতে হাসতে দিবেন তো?
কথাটা শুনে নীড়ের বুক কেপে উঠলো। নীড় মেরিনকে বসিয়ে উঠে গেলো।
.
নীড় : তোমার ফালতু কথা গুলো শুনলে না আমার গা জ্বলে যায়। রাত দুপুরে ঢং করতে আসছে।
মেরিন পেছন থেকে নীড়ের কলার ধরে সামনে এনে
বলল : আমি বলেছিলাম আমার ঢং দেখতে আসুন? গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন। আর নীরার স্বপ্ন দেখুন।।বলেই নীড়ের কানে ১টা কামড় দিলো। এরপর ঘাড়ে ১টা কিস করে ছেরে দিলো।
মেরিন : জান…. যান গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন… আর আমার কথা ভাবতে হবেনা। আমি আমার খেয়াল রাখতে পারি। আর ঘুম? ১দিন না ঘুমালে আমি মরবো না। কৈ মাছের জান আমার।জান…
নীড় চোখ ছোটো ছোটো করে তাকিয়ে আছে।
মেরিন : দেখুন বাইরেও যেতে দিলেন না আবার বারান্দায়ও থাকতে দিবেন না। কাহিনি কি বলুন তো?
নীড় : কাহিনি হলো এই যে আমি দুর্বল মেরিনকে দেখতে চাই… মেরিনের কান্না দেখতে চাই… হ্যাপি ? 😒…
মেরিন হা হা করে হেসে উঠলো।
মেরিন : সরি গো। আপনার এই উইশ টা পূরন করতে পারলাম না। বাই….
মেরিন নীড়কে ঠেলেঠুলে রুমে পাঠালো।
.
মেরিন : যখন কল্পনা আর বাস্তবতার দেয়াল ভেঙে যায় তখন সেটাই হয় নিখুত অভিনয় না হয় প্রকৃত ভালোবাসা। আপনার কোনটা?
রবি ঠাকুর মানবের মাঝে বাচিতে চান। আর আমি? 😏।
মরিতে চাইনা আমি সুন্দর ভুবনে …
ঘৃণার মাঝে আমি বাচিবার চাই…
কবিতাটার ২লাইন বলেই মেরিন হা হা করে হাসতে লাগলো।
ওর অট্ট হাসির আড়ালে থাকা হৃদয় ভাঙা চিৎকার নীড় ঠিকই শুনতে পেলো। নীড় এসে ওর কাধে হাত রাখলো। মেরিন ঘুড়ে নীড়কে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
ধরে কাদতে লাগলো।
মেরিন : নীড় আমাকে কখনো ছেরে যাবেন না প্লিজ ….
আমি পারবোনা আপনাকে ছারতে। কখনো পারবোনা।
বলেই নীড়ের সারা মুখে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো। এরপর আবার নীড়কে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো। নীড় মেরিনের মাথাটা তুলে কপালে চুমু দিলো। মেরিন নীড়ের চোখের দিকে তাকালো। মেরিনের চোখ-নাক লাল হয়ে আছে। মুখ বুজে নিরবে কান্না করছে। যার জন্য ঠোটটাও কাপছে। মেরিনের চোখ ২টা অস্বাভাবিক সুন্দর। গভীর। ওই চোখে নীড়ের জন্য যেমন অঢেল ভালোবাসা আছে তেমনি আছে হাহাকার। যেমন মায়া ভরা তেমন আছে কষ্ট।
এই প্রথম নীড় মেরিনকে এতো গভীরভাবে দেখছে। মেরিন আসলেই অনেক সুন্দরি।
মেরিন : ছছছারুন…
বলেই মেরিন নীড়কে ছেরে দিলো। কিন্তু মেরিন খেয়াল করলো যে নীড় ওকে ধরে রেখেছে । নীড় মেরিনের চোখের পানি ঠোট দিয়ে শুষে নিলো। মেরিন তো মহাঅবাক। নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন সাংঘাতিক অবাক হলো।
মেরিন : নননীড়, ন…
নীড় মেরিনকে কথা বলতে না দিয়ে নীড় মেরিনের ঠোট দখল করে নিলো।
.
সকালে….
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। ঘুম ভাঙতেই নীড় মেরিনকে পেলো। মেরিনের গালে, চোখের কোনে পানির নিশান রয়ে গেছে। নীড় মেরিনের কপালে কিস করলো। তখনই ওর রাতের কথা মনে পরলো। কি করে ফেলেছে ও? মেরিনকে বুক থেকে নামিয়ে লাফ দিয়ে উঠে বসলো। মেরিনের ঘুম ভেঙে গেলো। নীড় খেয়াল করলো না।
নীড় : ছিঃ ছিঃ ,,, নিজের ভালোবাসার সাথে এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা কিভাবে করলাম?
মেরিন নীড়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বেশ বুঝতে পারলো যে নীড়ের মধ্যে অনুতাপ-অপরাধবোধ কাজ করছে। মেরিন জানতো এমনই কিছু হবে। তাই ও নীড়কে বাধা দিচ্ছিলো ।
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে নীড়কে টেনে ওর বুকে আবার শুয়ে পরলো। নীড়ের নিজের ওপর রাগ হচ্ছে।
নীড় : কি করছো টা কি?
মেরিন : ঘুমাচ্ছি। আজকে ১টা জিনিসের প্রমান পেলাম।
নীড়: …
মেরিন : মেয়েদের চোখের পানিতে ছেলেরা দুর্বল হয়।
নীড় : মানে?
মেরিন : একটু চোখের জ্বল আর কথা ইমোশনাল … ব্যাস নীড় পেয়ে গেলাম…
নীড় : !!!!
মেরিন কিছু না বলে ওয়াশরুমএ গেলো । নীড় কিছুই বুঝলোনা।
.
একটুপর…
মেরিন বের হলো। নীড় মেরিনের দিকে তাকালো । ভীষন সুন্দর লাগছে।
মেরিন : এই যে হ্যালো…. আমায় নিয়ে অতো গবেষনা না করে যান fresh হয়ে নিন। আমি ব্রেকফাস্ট বানিয়ে নিচ্ছি।
নীড় : তুমি তখন কি বললে?
মেরিন: ভীষন ক্ষুধা লেগেছে খেয়ে তারপর বলবো ।
নীড় ফ্রেশ হতে গেলো।
.
মেরিন: এই মুহুর্তে আমার আপনার ঘৃণার ভীষন প্রয়োজন। কারন এখন আপনি আমাকে ঘৃণা না করলে নীরাকে ভালোবাসতে পারবেননা। আর আপনি নীরাকে ভালোনাবাসলে নীরার প্লান সফল হবে কি করে? আমি নীরার গেইম প্লান জানবো কি করে….
তাই আপাদত আমার ঘৃণাটাই আমি চাই…..
.
নাস্তা করার পর….
নীড় : এখন তো বলবা?
মেরিন : কি?
নীড় : তখন ওই কথাটা বললা কেন?
মেরিন: ও…. ওই কথা? আসলে আপনি ভীষন ভালো মানুষ। এতো ভালো মানুষ বলেই বারবার ঠকে যান। নীরা ঠকায়, সবাই ঠকায় । তাই এবার আমিও ঠকালাম। ইউ আর সাচ এন ইমোশনাল ফুল…
নীড়: মানে?
মেরিন গিয়ে নীড়ের কোলে বসলো। নীড়ের চুল ঠিক করতে করতে
বলল : তারআগে বলুন কালকে যখন ভালোভাবে ভালোবাসতে বললাম বাসলেন না কেন? হামম?
নীড় : তোমার কথা কিছু বুঝিনা।
মেরিন : হাহাহাহাহা…. কালকে যদি একবার বলাতেই রাজী হতেন তাহলে আমার আর এতো কষ্ট করে অশ্রুবিসর্জন দিতে হতো না। আপনাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করতে হতো না।
নীড় : ক্লিয়ারলি বলবা?
মেরিন : মানে খুব সহজ…. আপনার ভালোগিরির একটু সুযোগ আমিও নিলাম।
ইমো্র্শন টা কমান। মেরিন বন্যার নীড় এতো দুর্বল হৃদয়ের হলে চলে?
নীড় : তুমি কি পাগল? কি বলো কি?
মেরিন : হামম। ওনলি ফর ইউ…
মেরিন নীড়ের কোল থেকে উঠে কাজ করতে করতে
বলল: একটু অশ্রুবিসর্জন যদি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন অর্জন হয় আর ক…..
মেরিন কথা শেষ করার আগেই নীড় ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলে।
নীড় : তুমি আসলেই ঘৃণার যোগ্য। তোমাকে ভালোবাসা যায়না।
বলেই নীড় চলে গেলো। গেলো।
.
নীড় : ফাজিল মেয়ে…. কি মনে করে নিজেকে? আমি আসল নকল বুঝিনা? মনে করে সবার সামনে যেমন নিজের ইমোশন লুকিয়ে রাখে মনে করে আমার কাছেও তেমনি পারবে… ১টা থাপ্পর দেয়া ঠিক হয়নি। ১০-১২টা দিলে ভালো হতো। বেয়াদব। মেজাজটাই খারাপ করে দিলো।
.
রাতে…
নীড় বাসায় ফিরলো। দেখলো বাসা অন্ধকার।
নীড় : মেরিন…. মেরিন…
কোনো সারা পেলোনা। লাইট অন করলো। দেখলো মেরিনকে যখন থাপ্পর মেরেছিলো তখন যেভাবে যেই পসিশনে ছিলো এখনও ওই একইভাবে আছে। নীড় অনেক অবাক হলো।
নীড় আগে বারতে লাগলো। তখন দেখলো মেঝেতে রক্ত ভরা। নীড়ের বুকটা কেপে উঠলো।
নীড় ধীর পায়ে মেরিনের কাছে এগিয়ে গেলো। মেরিনকে ছুতে ওর সাহস হচ্ছেনা। কাপা কাপা হাতে মেরিনের গায়ে হাত দিলো। ঠান্ডা হয়ে গেছে।
নীড় : মমমেরিন…. মমমমেরিন.. এই মমমেরিন… ঘোরো…
নীড় মেরিনকে নিজের দিকে ঘোরালো।
দেখলো কপাল কেটে রক্ত বের হতে হতে থেমে গেছে।
নীড় ; মমমেরিন… মেরিন…. মেরিন…
.
হসপিটালে…
নীড় মেরিনের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে। ওর শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। ডক্টর বলেছে যদি ১২ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফেরে তাহলে মেরিন কোমায় চলে যাবে।
নীড়ের চোখ দিয়ে পানি পরছে। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করছে মেরিনের জন্য। নীড় কখনো ভাবেনি যে ও মেরিনের জন্য দোয়া করবে। কিছুক্ষন পরে মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। আর জ্ঞান ফেরার পরই মেরিন নীড়ের নাম নিলো। নীড় কিছুতেই ভেবে পায়না যে মেয়েটা ওকে এতো ভালোবাসে কেন?
.
২দিনপর…
নীড় ফোনে কথা বলে ভেতরে এসে দেখে মেরিন রেডি হচ্ছে। নীড় অবাক হলো।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো?
মেরিন : ব্যাংকক….
নীড় : হুয়াট? এই শরীরে?
মেরিন : হামম। আপনার সমস্যা?
চলবে…………………
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১২
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
মেরিন: হামম। আপনার সমস্যা?
নীড় : হ্যা সমস্যা। তুমি এখন কোথাও যাবেনা।
মেরিন: দেখুন আপনার সাথে ফালতু বকবক করার সময় আমার নেই। আমি যাবোই।
নীড় : ১টা থাপ্পর দিবো । চুপচাপ বেডে শুয়ে পরো।
মেরিন : এখানে কোনো কাচের কোনা নেই যার ওপর আপনি আমাকে থাপ্পর মেরে ফেলবেন। কপাল কাটবেন…
নীড় : দেখে মেরিন … বসো…
মেরিন : don’t touch …
নীড় খানিকটা অবাক হলো।
.
নীড়: দেখি বসো …
মেরিন: বসার সময় নেই। i have to go right now…
নীড় মেরিনের হাত ধরে টেনে বসালো।
এরপর গালে হাত দিয়ে
বলল: কোথাও যাবেনা তুমি… আমি যেতে দিবোনা।
মেরিন নীড়ের কপালে কিস করে
বলল: আমিও আপনার কথা শুনতে বাধ্য নই।
নীড় : ১০০বার বাধ্য । কারন আমি তোমার স্বামী।
মেরিন: স্বামী? 🤣🤣। আগেই বলেছি আমাকে সেদিনই বাধা দেবেন যেদিন অধিকার নিয়ে বলবেন…
নীড় : আলাদা করে অধিকারবোধের দরকার নেই…. তুমি আমার বিয়ে করার বউ। ১বার যখন আমি না করেছি তখন যাবে না।
মেরিন নীড়ের কোলে বসে ওর মুখে আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে
বলল: মেরিনকে আটকাতে পারে একমাত্র নীড়… কিন্তু যদি চোখে ভালোবাসা আর কন্ঠে অধিকার থাকে…. আমি যখন বলেছি যে আমি যাবো তখন তো যাবোই।
নীড় : পারলে যাও….
মেরিন : আপনি আমাকে আটকাতে চান? মন থেকে? আপনি কি আটকাবেন? আমি তো এমনিতেই নীড়ে আটকে গেছি… নয়কি….
বলেই নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। নীড় অবাক হলো। তবুও মেরিনকে বাহুডোরে আটকে নিলো।
মেরিন খুব সাবধানে নীড়ের ঘাড়ে ১টা injection দিয়ে দিলো। নীড় বুঝতেও পারলোনা। নীড় মনের অজান্তেই মেরিনের ঠোট ছেরে ধীরে ধীরো গলায় মুখ গুজে দিলো। মেরিনের গলায় কিস করতে করতে নীড় অজ্ঞান হয় গেলো। মেরিন নীড়কে বেডে শুইয়ে দিলো।
মেরিন : এখন আমার যেতেই হবে নীড় sorry… আপনার ভালোবাসা আমি এখন নিতে পারলাম না….
.
৪ঘন্টাপর…
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। দেখলো ও ওর রুমে। মানে ঢাকায়। তারাহুরা করে উঠে বসলো।
নীড় : আমি এখান?
তখন দেখলো ওর হাতের মুঠোয় ১টা চিঠি।
চিঠিতে লেখা : আপনার বাধা মানতে পারলাম না আর না আপনার আবেগে ভাসা ভালোবাসা নিতে পারলাম….
কারন আমি ঘৃণার মেরিন ।
যে ভালোবাসার অযোগ্য।
নীড় : এই মেয়েকে কখনোই আমি বুঝতে পারবোনা। তুমি কেন এতো অজানা….
.
তপু : আমাকে এখানে তুলে নিয়ে এলে?
মেরিন : শুনলাম কবির ফয়সাল খানের লিভার ড্যামেজ হয়ে গেছে। আর কোথাও তার ম্যাচিং ব্লাডের লিভার পাওয়া যাচ্ছেনা ।
তপু : কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা সেটা না… সেতু আন্টি আর নীরার মিলেছে।
মেরিন : কিন্তু ওরা দিবেনা।
তপু: হামম। এখন তো তোমার নজর পরেছে তার ওপর। তার বাচা এখন অসম্ভব। আর এটা বলতেই তুমি আমাকে এনেছো?
মেরিন ওর হাসিটা দিয়ে
বলল : ভুল… কবির ফয়সাল খানের এখনো মরার সময় হয়নি। এখন আমি উনাকে মরতে দিতে পারিনা । আল্লাহ যেন উনাকে এখন না নেয়। এখন যদি কবির ফয়সাল খান মরে যায় তবে আমার আম্মুর সত্য না জেনেই সে মরবে। তাকে আমার আম্মুর সত্য জেনে মরতে হবে।
তপু: বুঝলাম না।
মেরিন : আমি কবির ফয়সাল খানকে আমার অর্ধেক লিভার দিবো।
তপু: what?
মেরিন : হামম।
তপু: তুমি দিবে?
মেরিন : হ্যা…
তপু : সত্যি ভালোলাগলো। যে তুমি ….
মেরিন : ঘৃণা করি… আমি কবির ফয়সাল খান কে এখন বাচতে হবে।
তপু: মানে?
মেরিন : মানে তোমাকে বুঝতে হবে না। তোমার কাজ just surgery করা তো করো। আর মুখ বন্ধ রাখবে যে আমি দিয়েছি। বিনিময়ে ৫০লাখ পাবে। চাইলে আরো বেশি দিবো।
তপু: না কোনো লাগবেনা। তবে তুমি কি নিজের ভালো দিক লুকাতে চাইছো?
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো।
বলল : তপুদা…. বন্যার পানি দেখেছো? সেখানে নোংরা ভরা থাকে। সেই পানি থেকে পবি….ত্র পানি বের করা যেমন বেকার তেমনি মেরিনের মধ্যেও ভালো কিছু খোজা বেকার। মেরিনের মাঝে ভালো কিছু নেই। সময় এলে কবির ফয়সাল খানকে আমি নিজে জানাবো। ওনাকে জীবন ভিক্ষা দিয়েছি সেটা তার জানতে হবেতো। উনি যে আমার ভিক্ষার জীবন নিয়ে বেচে আছেন সেটা জানাবো না?
যখন জানতে পারবেন তখন না বাচতে পারবে না মরতে পারবে। তার সকল দাম্ভিকতা মাটির সাথে মিশে যাবে। আর হ্যা ভুলেও যেন কেউ টের না পায় যে আমি লিভার দিয়েছি।
তপু : হামম।
মেরিন : জন…
জন: ম্যাম…
মেরিন : তপুদা কে পৌছে দিয়ে আসো।
জন: জী ম্যাম….
ওরা চলে গেলো।
.
পরদিন…
হসপিটালে….
কবির ঘুমিয়ে আছে। মেরিন ওর রুমে ঢুকলো।
মেরিন : কবির কবির কবির….
সে আমার ছোট বোন বড় আদড়ের ছোট বোন…
কিন্তু সে আমাকে লিভার দিলোনা…. so sad….
আদরের ভাগনিও দিলোনা। আহারে…. কি দুঃখ নিঃসঙ্গ জীবন….. so sad… কেউ নেই জীবনে। এমন জীবনের থেকে মরে যাওয়া ভালো। কিন্তু তার অনাদরের মেয়ে তো তাকে যে মরতে দেবেনা…. কারন তার মেয়ে সবার জন্য শাস্তি নির্ধারন করেছে কিন্তু আপনার জন্য তো করেনি। আমার মায়ের প্রতি ঘৃণা নিয়ে আমি আপনাকে মরতে দিবোনা। আপনি যখন মরবেন তখন আপনার বুক ভরা আমার মায়ের জন্য ভালোবাসা থাকবে। সেই সাথে হৃদয় জুরে থাকবে অনুতাপ। মৃত্যুর সময় আমার আম্মুর মুখটা দেখার জন্য থাকবে আহাজারি। ছটফট করবেন আম্মুকে দেখার জন্য। কিন্তু পাবেন না। কতো কি plan আছে আমার।
এতো সব planning fullfill না করে এতো সহজে আপনাকে মরতে দেই কি করে বলুন তো? তারমধ্যে আপনাকে তো আপনার আদরের বোন ভাগনির লাশও কাধে করে গোরস্থানো নিতে হবে। তাই না?
কলেমা শাহাদাত বলতে বলতে ওদোর গোরস্থানে নেবেন না?
আপনি এতো জ্বলদি মরলে হবে।
আপ…
তখন এদিকটা তে কাউকে আসতে দেখলো। মেরিন তারাতারি লুকিয়ে পরলো। আর তখন নীড় আর নার্স রুমে ঢুকলো।
.
নীড় : বাবা দেখি ঘুম… নার্স : ১৫মিনিটি wait করুন উনি উঠে যাবেন। উনার ঘুম ভাঙার সময় প্রায় হয়ে গেছে।
নীড় বসলো।
মেরিন মনে মনে : নীড় এখানে কেন? damn it….
নীড় চারিদিক দেখতে লাগলো।
মনে মনে : এমন কেন মনে হচ্ছে যে মেরিন এখানে আছে? মেরিন তো ব্যাংকক।
তখন দেখলো যে কবির নরাচরা দিচ্ছে। নীড় গিয়ে কবিরের কাছে গিয়ে বসলো। ধীরে ধীরে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। কবির চোখ মেলে দেখে নীড় বসে আছে ওর পাশে।
কবির : আরে নীড়…
কবির উঠতে নিলো।
নীড় : আরে আরে করছো কি? উঠতে হবেনা।
কবির : না বসবো। সারাদিন তো শুয়েই থাকি।
নীড় কবিরকে বসিয়ে দিলো।
কবির : কেমন আছো তুমি বাবা?
নীড় : ভালো বাবা।
কবির : যদি কোনো ভুল করে থাকি মাফ ক…
নীড় : ছিঃ বাবা করছো বাবা? তুমি বড় তুমি কেন ক্ষমা চাইবে?
কবির : জীবনের শেষ সম….
নীড় : বাবা… তোমার কিছু হবেনা। & i am really very sorry… এতোদিন আসতে পারিনি বলে…. আসলে এই কদিন ঢাকার বাইরে ছিলাম।
কবির : আর বাবা… তুমি কেন sorry বলছো? আমি তো ১টা ঝড়া পাতা। কেউ নেই আমার…. বয়স্ক বাবাটা ছারা… এই শরীর নিয়েও ছোটাছোটি করছে। আসলে বাবা বাবাই হয়…
নীড় : নীরা, সেতু আন্টি… ওরা আসেনি…?
তখন দাদুভাই ভেতরে ঢুকলো।
দাদুভাই : ওরা আসবে কেন? আসলে যে লিভার দিতে হবে।
নীড় : মানে?
কবির : আহ বাবা। এমন করে বলছো কেন? ওদের হয়তো কোনো কাজ আছে…
দাদুভাই : ১বার অন্তত ওদের দোষটা দে। জানো নীড় দাদু,,, যেই শুনেছে যে ওর লিভার লাগবে আর এই মুখী হয়নি। যদি লিভার দিতে হয়? কারন ওদের সাথে কবিরের blood group matched.. তাও ওই ২জনকে নিয়েই মরছে। আর তোমাকেই বা কেন বলছি? তুমিও তো ওই একই…
কবির : আহ বাবা… তুমি ওদের সাথে এতো বাজাবাজি করো কেন? আর তুমি যাকে আমার মেয়ে বলে দাবি করো সে কয়বার এসেছে?
দাদুভাই : কেন সে আসবে কেন? কি দায় তার?
নীড় : ১মিনিট… আমার কিছু বলার আছে বাবা।
কবির : কি?
নীড়: আসলে বাবা মেরিনই আমাকে পাঠিয়েছে…
কবির : what?
নীড় : আসলে ও আসতে একটু দ্বিধা করছিলো। চক্ষুলজ্জা । তাই আমাকে…
কবির : মিথ্যা কথা। আমি মানি না? তুমি মিথ্যা বলছো। ওকে ভালো সাজানোর জন্য।
নীড় : বলেকি… ওই মেয়েকে আমি ভালো সাজাবো কেন? i just hate her…
মেরিন মনে মনে : এই লোকটা বলে কি? আমি কখন বললাম? উনি কি পাগল না মাথা খারাপ?
নীড় :whatever ,,, দাদুভাই তোমার আর দৌড়াদৌড়ি করতে হবেনা। যা করার আমি করবো। ডোনারও খুজে আনবো।
তপু: ডোনার পাওয়া গেছে।
নীড় : সত্যি?
কবির : কে সে?
তপু: ১জন মৃত ব্যাক্তির।
.
১০দিনপর….
মেরিন বাসায় ফিরলো
নীলিমা: মামনি….
মেরিন : মামনি….
নীলিমা : মিটিং শেষ হলো তবে ।
মেরিন : হামম।
নীলিমা : যা fresh হয়েনে । আমি খাবার বারছি…
মেরিন : এই না না… আমি কিছু খাবোনা… একটু ঘুমাবো।
নীলিমা : কিন্তু..
মেরিন : please …
নীলিমা : আচ্ছা।
মেরিন রুমে গেলো। দেখলো নীড় বসে আছে।
.
মেরিন নীড়কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : missed you জান…
বলেই নীড়ের ঘাড়ে কিস করলো। নীড় মেরিনের হাত সরিয়ে উঠে দারালো।
নীড় : কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন : আপনি বুঝি জানেন না?
নীড় : না… কারন এমন কোনো মিটিং ছিলোনা। বলো কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন কিছু না বলে কাবার্ডের দিকে পা বারালো। কেবল খুলল। নীড় ধিরিম করে লাগিয়ে দিয়ে মেরিনকে কাবার্ডের সাথে চেপে ধরলো।
নীড় : কিছু বলতে বলেছি…
মেরিন : কি….
নীড় দাতে দাত চেপে
বলল : কোথায় গিয়েছিলে? আমি জানি কোনো মিটিং ছিলোনা। so বলো কোথায় গিয়েছিলে আর কেন গিয়েছিলে?🤬
মেরিন : আপনাকে বলতে বাধ্য নই….
নীড় মেরিনের গাল চেপে ধরে
বলল : ফাজলামো করো?
বলতে বাধ্য নই বলতে বাধ্য নই… স্বামী হয়ে অধিকার নিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলবেন…
মানে কি এসবের? হ্যা মানে কি?
যখন অধিকার দিবেনা তখন বিয়ে করেছো কেন? জেদ দেখিয়ে বিয়ে করেছো ,,, জেদ মিটে গেছে। তাহলে এখন divorce দিয়ে দাও… মুক্তি করো আমায়।
ব্যাথায় মেরিনের চোখে পানি চলে এলো। তাও নীড়কে ১বিন্দু বাধা দিলোনা। মেরিনের চোখের পানি দেখে নীড় ছেরে দিলো।
মেরিন: মেরিনের থেকে মুক্তি ভুলে যান। যতোদিন বেচে আছি আপনাকে এভাবেই থাকতে হবে।
নীড় : then মরে যাও তুমি মুক্তি পাই আমি।
মেরিন : sorry not possible …. আমি মরলে আপনাকে ভালোবাসবে কে?
বলেই নীড়ের ঠোটে ছোট ১টা কিস করে washroom এ চলে গেলো।
.
রাতে…
মেরিন ধপ করে নীড়ের বুকে শুয়ে পরলো । নীড় মেরিনকে সরিয়ে দিলো।
নীড় : don’t you dare to touch me…
মেরিন : কেন কেন?
নীড় : তোমাকে আর তোমার স্পর্শকে আমার just সহ্য হয়না। বুঝেছো?
মেরিন : পুরোনো dialogue … দেখি ঘুমাতে দিন। ঘুম পাচ্ছে…
নীড় : তোমাকে ধরে রাখিনি। ঘুমাও… আরেকবার আমাকে ছুতে আসলে আমি এখন উঠে চলে যাবো … so নিজেও ঘুমাও আমাকেও ঘুমাতে দাও।
মেরিন ১টা হাসি দিয়ে
বলল : আপনি ঘুমান…
বলেই মেরিন ১টা বালিশ নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো।
এদিকে মেরিনের সাথে এমন ব্যাবহার করে নীড়ের ভালো লাগছেনা। আর না মেরিনকে ছারা ঘুম আসতে পারছে । আর না ওই কয়দিন ঘুমাতে পেরেছে। আর যখন শুনেছে কোনো মিটিং নেই তখন নীড় ক্ষেপে গেছে। মেরিনের ফোন বাজছে। আওয়াজ পেয়ে মেরিন দৌড়ে এলো।
মেরিন : hello…
…
মেরিন : what?
…
মেরিন : আমি এখনি আসছি…
মেরিন ফোন রেখে। গান,টাকা, চেক বই ব্যাগে ঢুকিয়ে চাবি হাতে নিয়ে বের হতে লাগলো।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো?
মেরিন : জনের মারাত্মক accident হয়েছে।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো। নীড়ও পিছু পিছু গেলো।
.
হসপিটালে…
জনের বউ রিতা হাউমাউ করে কাদছে। মেরিন তার মাথায় হাত রাখলো। রিতা মেরিনকে দেখেই ক্ষেপে গেলো।
রিতা : আপনি এখানে কেন এসেছেন? হ্যা? আপনার জন্যেই আমার স্বামীর এই অবস্থা… আপনার হয়ে কাজ করে বলেই ওর এতো শত্রু…
মেরিন : হয়ে গেছে তোমার বকবক। এই নাও ধরো টাকা…
রিতা সেগুলো নিয়ে মেরিনের ওপর ছুরে মারলো।
রিতা : লাগবেনা আপনার টাকা….
মেরিন : তোমার কপাল ভালো যে তুমি জনের বউ …. না হলে যে কাজটা করলে তার জন্য তোমাকে চওরা মূল্য দিতে হতো।
মেরিন জনকে দেখলো। এরপর ডক্টরদের সাথে কথা বলে বেরিয়ে এলো।
.
মেরিন : hello…
…
মেরিন : ২৪ঘন্টার মধ্যে আমি তার লাশ চাই যে জনের এই অবস্থা করেছে…
…
মেরিন : কোনো কথানা… চাই মানে চাই… got it…
মেরিন ফোন কাটলো। এরপর গাড়ির কাছে যেতে নিলো। তখন মেরিনের মাথা চক্কর দিলো দিলো। পরে যেতে নিলে নীড় এসে ধরে ফেলল। কোনো কথা না বলে মেরিনকে কোলে তুলে গাড়িতে বসিয়ে বাসায় নিয়ে এলো। এরপর নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে শুয়ে পরলো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে
বলল: মেয়েসুলভ আচরন করতে শেখো… এখন তুমি মেরিন বন্যা খান নও। এখন তুমি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী… আর আমাকে জানিয়ে কোনো কাজ করলে আমি বাধা দিবোনা। আমি চাইনা আমার বউয়ের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলুক অথবা আমার বউর গায়ে কোনো ফুলের টোকাও লাগুগ। আমার অনুমতি ছারা কোথাও ১পাও বারাবেনা। got it?
চলবে………………
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৩
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় : বুঝেছো?
মেরিন : না… আর বুঝতে চাইও না। কিছু জিনিস না বোঝাই ভালো।
বলেই মেরিন উঠতে চাইলো। কিন্তু নীড় আরও শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : দেখি ছারুন আমাকে। ঘুমাবো।
নীড় : তোমার exactly কোথায় problem বলবে? always আমার সাথে চিপকে থাকো but আমি নিজে থেকে তোমার কাছে আসলে আবার দূরে পালাও। তোমার কাহিনিটা কি বলবে?
মেরিন : আর চিপকাবো না। ছারুন আমাকে ঘুমাবো।
নীড় : ছারবোনা। সমস্যা?
মেরিন : আপনার সমস্যা হচ্ছে…
নীড় : আমার কথা তোমাকে ভাবতে হবেনা। ঘুমাও।
মেরিন : এভাবে আমার ঘুম হবে না।
নীড় : আচ্ছা…. আমি বুক থেকে সরালে লাগে আপনার ঘুম হবে?
মেরিন : হ্যা…
নীড় : ভালো দেখি কিভাবে ঘুমান…
বলেই নীড় মেরিনকে নামিয়ে দিলো।
.
নামানো ২সেকেন্ডের মাথায় মেরিন ধপ করে নীড়ের বুকের ওপর উঠে শুয়ে পরলো।
নীড় : মানে কি?
মেরিন : আমি আমার মতো করে আপনাকে জরিয়ে ধরবো।
বুঝেছেন?
বলেই মেরিন নীড়ের শার্টের বুকের কাছের ২টা বোতাম খুলে বুকে ২টা কিস করলো। নীড় মুচকি হাসলো।
নীড় : তোমাকে কি কখনোই আমি বুঝতে পারবোনা?
মেরিন : সেটা আপনার ওপর নির্ভর করে।
.
কিছুদিনপর…
জন : ম্যাম আমি কি করেছি যে আপনি আমার সাথে এমন করছেন? কি ভুল করেছি আমি? আমি তো জবটা ছারতে চাইনা।
মেরিন : কিন্তু আমি তো তোমাকে কাজটা আর করতে দিবোনা। infact কাউকেই না।
জন : ম্যাম কি এমন হয়েছে যে এমন কথা বলছেন? আর এমন ১টা সময়ে…? নীরার প্রতিশোধের যে সময় হয়ে এলো।
মেরিন : মেরিন নিজের কাজ নিজেই করতে পারে। তোমাকে মাথা ঘামাতে হবেনা।
জন: ম্যাম আমার অপরাধটা কি?
মেরিন : আমি কি বলেছি তোমার অপরাধ ?
জন: তাহলে? ম্যাম রিতা কি কিছু বলেছে?
মেরিন : বেশি কথা বলা আমি পছন্দ করিনা জন। এই নাও টাকা । তুমি এখন আসতে পারো।
জন : ম্যাম আমি এই টাকা নিতে পারবোনা।
মেরিন : টাকা নিবেনা তো খাবে কি? এই টাকা দিয়ে ছোটোখাটো ব্যাবসা করো।
জন : sorry ম্যাম… আপনি আমাকে কাজে রাখতেন তবে এর ১০গুন টাকা নিতেও আমার আপত্তি থাকতোনা।
মেরিন : তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার ওপর কথা বলার?
জন: ক্ষমা করবেন ম্যাম। আপনি জীবন দিতে বললে হাসতে হাসতে দিয়ে দিবো। কিন্তু এটা নিতে পারবোনা।
মেরিন : ভালো। এখন চোখের সামনে থেকে দূর হও।
জন : জী ম্যাম। কিন্তু ম্যাম এই জন আপনার জন্য সবসময় প্রস্তুত। আমি আপনার ছায়া হয়েই থাকবো।
বলেই জন বেরিয়ে গেলো ।
মেরিন : sorry জন… কিন্তু তোমাকে আমি আর এভাবে আমার অভিশপ্ত জীবনের অংশীদার হতে দিবোনা। তোমার কিছু হয়ে গেলে তোমার পরিবারকে কি জবাব দিবো?
.
৩দিনপর…
মেরিন: আজকে ৩তারিখ। তার মানে আর ২দিন পর রবিবার,,, নীরা ওর plan আন্জাম দিবে। সেদিন নীড়কে কিছুতেই বাসা থেকে বের হতে দেয়া যাবেনা।
ভেবেই মেরিন বড় বড় সকল gangদের, shooteদের, killerদের সাথে মেরিন contact করলো। নীরা ওদের hire করেছে কিনা জানার জন্য। কিন্তু না। নীরা করেনি। এরপর মেরিন সকল ধরনের poison এর খবর নিলো । নীরা সেগুলোও কিনেনি….
মেরিন : plan টা কি নীরার? ও তো নিজে shoot করতে পারবেনা। ওর planটা কি?
.
নীড় : hello…
নীরা : hello baby.
নীড় : বলো..🙄…
নীরা : plan কেমন এগোচ্ছে?
নীড় : দারুনভাবে। aeroplane এর গতিতে…
মনে মনে : always আজিরা প্যাচাল…
নীরা : oh good… আচ্ছা বেবি শোনো।
নীড় : বলো…
নীরা: রবিবার একটু লেকে আসতে পারবে?
নীড় : কেন?
নীরা : বলো না…
নীড় : একটু কাজ আছে।
নীরা : প্লিজ একটু আসবে? খুব জরুরী কাজ আছে।
নীড় : আরে আমার কিছু কাজ আছে।
নীরা : আরে বাবা… its urgent … about মেরিন… please …
নীড় : ok… i’ll try to come…
কথাটা বলতে বলতে নীড় রুমে ঢুকলো। মেরিন নীড়ের দিকে ঘুরলো। নীড় ফোনটা রাখলো।
মেরিন : কোথায় যাবেন? কেন যাবেন? কবে যাবেন?
নীড় : আরে কিছুনা…
মেরিন : না বলুন না…
নীড় : আরে তেমন কিছুনা….
মেরিন : নীরার ফোন ছিলো?
নীড় : ….
মেরিন : বববলুন না…
নীড় : ….
মেরিন : কি হলো? বলুন…
নীড় : হামম।
মেরিন : ও কি বলল?
নীড় : ২জন প্রেমিক যুগলের কথা জেনে তুমি কি করবে হামম…😁..
মেরিন : বলুন না…
নীড় : আমমম…. বলা যাবেনা…
মেরিন : ববববলুন না… ও কি আপনাকে রবিবার যেতে বলেছে?
নীড় :তুমি কি করে জানলে?
মেরিন : সেটা আপনার জানতে হবে না। আপনি আজকে থেকে আগামী ৭দিন বাসা থেকে বের হবেন না।
নীড় : মানে? কেন?
মেরিন: না মানে না।
আমি যখন বলেছি না তখন না…
বলেই মেরিন রান্নাঘরে চলে গেলো।
নীড় : তুমি আসলেই অদ্ভুদ…
মেরিন বাসার security ১০গুন বারিয়ে দিলো।
.
২দিনপর…
আজকে রবিবার…
মেরিন ঘুম থেকে উঠে দেখলো নীড় রেডি হচ্ছে। মেরিন ধরফরিয়ে উঠে বসলো।
মেরিন : আআপনি কোথায় যাচ্ছেন?
নীড়: কাজ আছে।
মেরিন : নীরার কাছে?
নীড় : হামম।
মেরিন : আপনি যাবেন না।
নীড় : মেরিন… সবকিছুতে বাধা ভালো লাগেনা।
মনে মনে : আমি তো যাবোনা হুদ্দাই একটু মজা নিচ্ছি… যেন তুমি এসে romance করো… 😜..
মেরিন : দেখুন নীড় আপনি কোথাও যাবেন না…
নীড় : কেন যাবোন কেন?
মেরিন : না বলেছি তো ।
নীড় : কারন টা বলো। কারন বললে যাবোনা।
মেরিন : কারনটা আমি আপনাকে বলতে পারবোনা। কিন্তু please যাবেন না…
নীড় : কারন বলো…
মেরিন : গেলে আজকে নীরা আপনাকে মেরে ফেলবে…
নীড় : মেরিন… 🤬… সবকিছুর লিমিট থাকে।
মেরিন : আমি সত্যি বলছি নীড়… বিশ্বাস করুন…
নীড় : shut up… just shut up… লজ্জা করেনা কারো নামে এমন মিথ্যা বলতে?
মেরিন : আমি সত্যি বলছি….
নীড় : ভেবেছিলাম যাবোনা। কিন্তু এখন যাবোই…. নিজে খুনী বলে তুমি অন্যদেরও খুনী বলবে বা ভাববে তা কিন্তু ঠিক না….
মেরিন : নীড় আমি সত্যি বলছি।
নীড় : রাখো তোমার সত্য… সরো যেতে দাও…
মেরিন : কোথাও যেতে দিবোনা আমি আপনাকে…
নীড় : সরতে বলেছি।
মেরিন : না…
নীড় ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো।
মেরিন : আমাকে মেরে ফেললেও আপনাকে যেতে দিবোনা।
নীড় : আমিও যাবো….
মেরিন নিজের গান নিয়ে নীড়ের দিকে ধরলো।
মেরিন : যাবেন না আপনি…
নীড় : দেখিয়ে দিলে নিজের আসল রূপ…
.
মেরিন : …
নীড় : মারো আমাকে…
মেরিন গানটা নামিয়ে নিলো । নীড় বেরিয়ে যেতে নিলো ।
মেরিন : দারান নীড়…
নীড় : আবার কি?
মেরিন বুলেট প্রুফ জ্যাকেট টা নীড়কে দিলো।
মেরিন : এটা পরে নিন…
নীড় : have you lost it…
মেরিন : হ্যা…. পরলে তো অসুবিধা নেই। আপনি যাবেন। যেতে না করবো না। কিন্তু এটা পরুন… আর এই গানটাও রাখুন…
নীড় : বারাবারি করছো …
মেরিন : করছি… এতোটুকুই না। অনেক গার্ডও থাকবে আপনাকে দূর থেকে protect করার জন্য…
নীড় : আচ্ছা সব কথা মানলাম… যদি তোমার কথা মিথ্যা হয় ? তবে?
মেরিন : যেই শাস্তি দেবেন মাথা পেতে নিবো।
নীড় : মনে থাকবে? পরে আবার না করবে না তো?
মেরিন : না…
নীড় : ok প্রস্তুত থেকো…
.
লেকে…
নীড় : নীরা…
নীরা : বেবি….
বলেই নীরা নীড়কে জরিয়ে ধরলো। সকল গার্ড আর মেরিন লুকিয়ে আছে। নীড় নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নীড় : কেমন আছো?
নীরা : এখন তো সেদিনই ভীলো থাকবো যেদিন আমার উদ্দেশ্য হাসিল হবে…. তোমাকে পাওয়ার….
নীরা কোনো কিছুই করলো না… কথা টথা বলে নীড় চলে গেলো। মেরিন তো অবাক।
.
বাসায়….
মেরিন মাথা নিচু করে বসে আছে । সামনে নীড় বসে আছে। মেরিন জানে যে নীড় শাস্তি স্বরূপ divorce এর কথাই বলবে… তাই ১দিকে মেরিনের হাতপা জ্বমে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে ঘামের ওপর ঘাম দিচ্ছে।
জীবনে এই প্রথম মেরিন এমন situationএ। তাই situationটা মেনে নেয়ার জন্য ওরনার নিচে হাতের মুঠোয় ১টা ছুরি নিয়ে রেখেছে। যেটা চেপে ধরে রেখেছে। যারজন্যে মেরিনের হাতকেটে রক্ত বের হচ্ছে।
নীড় : কিছু বলবে….
মেরিন : ….
নীড় : তুমি আমাকে স্পর্শ করবে না…. আমার সামনেও আসবেনা…
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো। মেরিন কথাটা শুনে চোখ বন্ধ করে নিলো।
.
একটুপর…
মেরিনের মোবাইলে ১টা call এলো। unknown number …
মেরিন বুঝতে পারলো যে এটা নীরা।
মেরিন ধরলো।
মেরিন: ফোন করার কারন?
নীরা : কি ভেবেছিলি…?নীড়কে আজকে মেরে দিবো?
মেরিন : …
নীরা : plan change রে…. নীড়ের charmএ আটকে গেছিরে। তাই নীড়কে মারা cancel … ওকে তোর কাছে থেকে ছিনিয়ে নেবো।
মেরিন কোনো জবাব না দিয়ে কেটে দিলো।
.
রাতে…
নীড় বাসায় ফিরলো। রুমে ঢুকলো
ঢুকে দেখে রুমে কোথাও মেরিন নেই। fresh হতে ঢুকলো। বেরিয়ে দেখে ওর জুস রাখা। যেটা রোজ ও বাইরে থেকে এলে খায়। নীড় খানিকটা অবাক হলো। রাতে খাওয়ার সময়ও নীড় মেরিনকে দেখলো না। নীড় কিছু বুঝলোনা।
.
রাত ১১টা…
নীড় : কি ব্যাপার?
মেরিন কোথায় গেলো। তখন ১টা servant এলো। কফি নিয়ে। নীড় ঘুমানোর আগে কফি খায়।
servant: স্যার আপনার কফি…
নীড় নিলো।
নীড় : তোমাদের ম্যাডাম কোথায়?
servant : না মানে ম্যাম গেস্টরুমে।
নীড় : what?
servant : জী স্যার।
নীড় : আচ্ছা তুমি আসো…
servant চলে গেলো।
নীড় : পাগল নাকি? গেস্টর… oh no… তখন তো আমিই বললাম… ধ্যাত… কি যে করি….
মেরিন আর নীড়ের সামনে এলোনা। নীড় ছটফট করতে লাগলো। কিছুতেই ঘুমাতে পারছেনা। মেরিন ঘরে বসে cctv তে নীড়কে দেখছে।
মেরিন: আমি জানিনা নীরার কি উদ্দেশ্য ? কিন্তু ও যে ওর plan change করেনি সেটা জানি… ওর plan বের তো আমি করবোই…
আর নীড় আপনি…. মানুন না মানুন মেরিনের মায়ায় আপনি পরে গেছেন… মেরিনের ঘৃণার জালে জরিয়ে গেছেন। আপনার থেকে দূরে থেকে যতোটা আমার কষ্ট হবে তার কিছুটা আপনারও হবে।
আপনি কি ভেবেছেন আপনার দেয়া শাস্তির জন্য আমি দূরে… না নীড়… আমি চাইলে আপনাকে বাধ্য করতে পারি শাস্তি বাতিল করাতে… কিন্তু করবোনা। একটু আপনিও দেখুন যে আপনি আমার ঘৃণার জালে আটকে গেছেন।
সারারাত নীড়-মেরিন না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিলো।
.
সকাল ৭টা….
একটু আগে নীড়ের চোখ লাগলো। মেরিন নীড়ের রুমে ঢুকলো। ইচ্ছা মতো নীড়ের চোখে মুখে কিস করলো। এরপর নীড়ের হাতে সবসময় থাকা ব্রেসলেট টায় ১টা tracker লাগিয় বেরিয়ে গেলো।
.
বেলা ১০টা…
নীড় office গেলো। বুক ভরা আশা নিয়ে। মেরিনকে দেখার…. কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারলো মেরিন খান office …. সারাটা দিন নীড়ের just জঘন্য গেলো।
.
১৫দিনপর…
নীড় পুরাই দেবদাস হয়ে গেছে। মেরিনেরও হাল নাজেহাল। কিন্তু ও তো তবু নীড়কে altime দেখেছে। গেস্টরুমে গিয়ে যে দেখবে তারও উপায় নেই। কারন মেরিন জানালা দরজা সব বন্ধ তো করে রাখেই সেই সাথে পর্দাও দিয়ে রাখে। নীড় আজকে office যাওয়ার সময় হাতের ব্রেসলট টা খুলে পরে যায়। office থেকে ফেরার পথে নীরার সাথে দেখা হয়। নীড় ignore করে চলে আসতে নেয় নীরা পথ আটকায়।
নীরা : কোথায় যাচ্ছো নীড়?
নীড় : দেখছোনা বাসায় যাচ্ছি?
নীরা : হামম। যাও। বলো তো পরশু কি?
নীড় : কি?
নীরা : এটা ভুলে গেলে? আমাদের relationship এর anniversary ৩বছর পূরন হলো। ভোর ৪টা বাজে এসে আমাকে propose করেছিলে…
নীড় : …
নীরা : এরপর থেকে তো গত ৩বছর ধরেই ৪টা বাজে আমাকে নানা ভাবে i love you বলে আসছো… আর এবার নাকি ভুলেই গেছে…
নীড় : …
নীরা : আচ্ছা এবার আমি তোমাকে surprise দিবো… আর promise … এবার কোনো দুষ্টুমি করবো না… আর করতেও বলবেনা। চলে এসো। কেমন ?
নীড়: দেখো নীরা গত ৩বছর আর এবার না। এখন আমি married … তাই তোমার সাথে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে পারবোনা…
নীরা : অভিনয় করতে করতে কি সত্যি তুমি মেরিনের প্রেমে পরে গেলে…
নীড় : যেটা ভাবো…
নীরা : নাকি মেরিন কিছু করেছে?
নীড় : কেউ কিছু করেনি…
নীরা চোখে পানি বের করে
বলল : বেশ… যদি তুমি মেরিনের সাথে সুখী হও তবে সেটাই হোক। তোমার সুখের থেকে বড় আমার কাছে কিছুই নেই। তবে ৩বছরের সম্পর্কের বদৌলতে ছোট্ট ১টা আবদার করতে পারি?
নীড় : করো…
নীরা : এবার ভোর ৪টায় শেষ বারের মতো একটু আসবে? কসম আল্লাহর ভালোবাসার দাবি করবোনা… আর না কখনো তোমার কাছে কোনো কিছু চাইবো… আর না কোনো সম্পর্ক রাখবো…
আসবে?
নীড় : …
নীরা : আল্লাহর কসম খেয়ে বললাম… তাও বিশ্বাস হলো না?
নীড় : …
নীরা : ১বার এসো… না হলে এই নীরা… চিরনিদ্রায় চলে যাবে…
বলেই নীরা যেতে নেয়
নীড় : দারাও নীরা…
নীরা দারালো।
নীড় : আসবো।
নীরা হাসি দিয়ে চলে গেলো।
.
পরদিন….
রাত ১২টা…
নীড় জেগে আছে। কিন্তু কেন যেন মেরিনের ভীষন খুব ঘুম পাচ্ছিলো। তাই ঘুমিয়ে পরেছে। বাকী সবাইও ঘুম। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি পরছে। আর বাজ পরছো। হঠাৎ ই মেরিন নীড়কে নিয়ে খুবই বাজে ১টা স্বপ্ন দেখলো। আর নীড় বলে চিল্লানি দিয়ে উঠলো। নীড় শুয়ে শুয়ে মেরিনের পাগলামো গুলো কল্পনা করছিলো। মেরিনের চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে মেরিনের রুমে গেলো। দরজায় নক করতে লাগলো।
নীড় : মেরিন… মেরিন…
মেরিন : no response ….
নীড় দরজা ভেঙে ফেলল। ঢুকে দেখে যে মেরিন চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ছুটে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড় মেরিনের কাধে হাত রাখলো।
নীড় :কি হয়েছে?
মেরিন চোখ মেলল। নীড়কে দেখে জরিয়ে ধরতে গিয়েও থেমে গেলো। নীড় বিষয়টা বুঝতে পেরে নিজেই মেরিনকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো….
চলবে…………….
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৪
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় মেরিনকে বুকের সাথে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : কি হয়েছে কি? বলো তো…
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরে করে কাদতে লাগলো। থামার নামই নিচ্ছেনা।
নীড় : কি হয়েছে কি বলো?
মেরিন কেদেই যাচ্ছে।
মেরিন : আপনি কোথাও যাবেন না আমাকে ছেরে please ….
নীড় : ঠিকাছে। যাবোনা। কিন্তু কি হয়েছে কি বলো তো…
মেরিন : না আপনি কোথাও যাবেন না।
নীড় মেরিনকে কোলে করে ওদের রুমে নিয়ে গেলো।
.
কান্না করতে করতে মেরিনের হিচকি উঠে গেছে।
নীড় : দেখি একটু পানি খেয়ে নাও।
মেরিন: না আমি আপনাকে ছারবো না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাচ্ছিনা॥ আর তোমাকেও ছারতে বলছিনা… but পানি তো খাও।
মেরিন : উহু….
নীড় : আচ্ছা তুমি শুয়ে পরো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন : না… আপনি চলে যাবেন…
নীড় : আরে আমি কোথাও যাবোনা….
এদিকে বৃষ্টি আরো বেরে গেলো। ভেতরে পানি ছিটে আসতে লাগলো।
নীড় : একটু নামো… আমি বারান্দার দরজা জানালা লাগিয়ে আসি…
মেরিন : উহু… আপনি নীরার কাছে চলে যাবেন ।
নীড় : না আমি কোথাও যাবোনা।
মেরিন : নীরার কাছে যাবেন…
নীড় : এবার কিন্তু রাগ ওঠাচ্ছো।
বললাম তো আমি কোথাও যাবোনা। নামো।
মেরিন : না আপনি নীরার কাছে যাবেন… নীরা আপনাকে কিছু করে ফেলবে…
নীড়: কি শুরু করেছো বলো তো রাত দুপুরে? ইচ্ছা করে এমন করতেছো তাইনা?
মেরিন : …
নীড় : নামো জানালা লাগাতে দাও।
মেরিন কিছু না বলে নিজের বুকে পাথর কোল রেখে নেমে গেলো। এরপর রুম থেকে বের হতে নিলো। দেখে নীড়ের রাগ উঠে গেলো। দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
.
নীড় : এতো জেদ থাকা ভালোনা। মেরিন নীড়ের দিকে তাকালোও না।
নীড় : আমার বউটা বুঝি রাগ করলো?
মেরিন:…
নীড় মেরিনকে বসিয়ে মেরিনের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
নীড় : কোথাও যাবোনা তোমাকে ছেরে। আর না তোমাকে যেতে দিবোনা।
মেরিন কান্নাভরা চোখে নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিলো। মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কোথাও যাবেন না বলুন….
নীড় :যাবোনা… তাহলে তোমাতে হারাতে দাও…
.
৩:৪০টা….
মেরিন নিশ্চিন্তে নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তখন নীড়ের ফোন বাজলো। নীড়ের দেখার সময় নেই। বারবার বাজতেই আছে। বিরক্তি নিয়ে নীড় ফোন হাতে নিলো। দেখলো নীরা। ধরলোনা। বেজেই যাচ্ছে। নীড় ভাবলো ফোন বন্ধ করবে। তখন ১টা voice message এলো। নীড় প্লে করলো।
নীরা: তুমি আসবে না… এটাই তো শেষ…. please এসো।
নীড়: কিভাবে যাই? মেরিন… কিন্তু যদি না যাই হয়তো নীরা নামটা কখনো আমাদের জীবন থেকে যাবেনা…. আজকে আমাকে যেতে হবে মেরিন… তোমার সাথে নতুন করে জীবন সাজানোর জন্য।
তুমি ঘুম থেকে ওঠার আগে আবার চলে আসবো।
নীড় মেরিনের চোখে মুখে অসংখ্য ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলো। মেরিন শক্ত করে নীড়কে জরিয়ে ধরে রেখেছে। নীড় কোনো রকমে নিজেকে ছারিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
নীড় গিয়ে দেখে চারদিকে খুব সুন্দর করে সাজানো। আর ৫ লোক। মুখ ঢাকা।
নীরা : hello baby… welcome …
নীড় : দেখো আসলে আমার তারাতারি যেতে হবে।
নীরা : হামম যাবেই তো। ওপরে…
নীড় : মানে?
নীরা: জানবে জানবে এতো তারাতারি কেন। boys …
সাথে সাথে লোক গুলো নীড়কে আটকে ফেলল। নীড় তো অবাক।
নীরা : অবাক হলে বেবি? আজকে কতো কতো অবাক হওয়ার আছে তোমার? তারিখ মনে আছে ? ২৩শে জুন। আজকের দিনেই ৩বছর আগে এই জায়গায় এ সময় তুমি আমাকে propose করেছিলে । আর আজকে আমি তোমাকে জানে মারবো… বুঝেছো… জানে মারবো।
নীড় : what?
নীরা : অবাক হলে বেবি… মনে আছে ৩বছর আগে আলমগীর হোসেন নামে কেউ ১জন তার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলো তোমার আর তোমার বাবার কাছে? কিন্তু তোমরা accept তো করোই নি উল্টা দালাল বলে অপমান বের করে দিয়েছিলে… শুধু তাই নয়,,, তার ব্যাবসাটাও expose করেছিলে । যার জন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছিলো। ৬মাস জেল খেটেছিলো।
নীড় : ৬মাস জেল কমই ছিলো। ওই লোকটার হওয়ার দরকার ছিলো। মেয়ে বিক্রির দালালী করে।
নীরা : shut up… just shut up… business is business বুঝেছো।
নীড় : তুমি ওই বাজে লোকটার হয়ে কথা বলছো কেন?
নীরা : খবরদার বাজে বলবেনা। কারন সে আমার বাবা। তোমার আর তোমার বাবা specially তোমার জন্য আমার বাবা জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে ভীষন বাজে ভাবে সব জায়গায় অপমানিত হতে হয়। বাবার মুখে কালি পর্যন্ত দেয়া হয়। যেদিন বাবা arrest হয় সেদিনই আমি তোমাকে আমার প্রেমের জালে ফেলার plan করি আমি আর ভাইয়া। কিন্তু জেল থেকে বের হওয়া পর এতো এতো অপমান বাবা আর মেনে নিতে না পেরে আমার বাবা suicide করে। সময় থাকতে hospitalএ নিয়ে গেলেও বাবা বেচে গেলেও কোমায় চলে যায়। গত বছর ৫ই জুন মারা যায়।
নীড় অনেকটা অবাক হলো।
নীড় : ৫ই জুন…
নীরা : হ্যা হ্যা ৫ই জুন…. মেরিন ভেবেছিলো ৫ই জুন আমি তোমাকে জানে মেরে দিবো। কিন্তু ও তো জানতো না যে আমি আগে থেকেই তোমাকে মারার জন্য এই ২৩শে জুন তারিখটা ঠিক করে নিয়েছি। মেরিন
বড় বড় shooter, killer , gangstar সবাইকে hire করে রেখেছে। যেন আমি ওদেরকে তোমাকে মারার জন্য ওদেরকে ফোন করলেই যেন মেরিন খবর পেয়ে যায়। but… আমি কেন লোক ভারা করবো? তোমার ভালোমানুষির জন্য তোমার কি শত্রুর অভাব আছে?
guys put off your mask….
.
নীড় তাকালো ওদের দিকে। কাউকেই ও চেনেনা।
নীরা: কাউকেই তুমি চেনোনা। এরা নিরব ঘাতক। তোমার সকল শত্রুদের মেরিম আয়ত্তে আনলেও এদের হদিস জানেই না…. জানবে কি করে,,, ৩বছরের সম্পর্ক তো আমার সাথে তোমার । জানো আজকে তোমাকে শেষ করবো। তাহলে তো মেরিন এমনিতেই শেষ…
কারন মেরিন হলো রুপকথার রাজ্যের সেই রাক্ষসী যার প্রাণ পাখিতে থাকে। তুমি হলো সেই পাখি… এখন এরা তোমাকে মেরে দুর্বল বানাবে… আর আমি আরামসে তোমাকে shoot করবো। start boys ….
ওরা নীড়কে মারতে লাগলো। নীড় কোনো রকমে ছুটে ওদের ৫জনের সাথে মারামারি করতে লাগলো। মেরে মেরে একেকটার হাল
নাজেহাল করে দিলো নীড়। একেকটা নিচে পরে রইলো।
তখন নীরা নীড়ের মাথায় বারি মারলো।
.
নীড় মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো। নীরা দুরে পরে থাকা গান টার কাছে গেলো। হাতে নিলো।
নীরা : আহারে আমার আশিক….
এখন কি করবা? good bye my জান…
নীড় দারানোর চেষ্টা করলো। দারিয়েও গেলো।
নীরা : আহা…. তোমার পায়ের বেগের থেকে আমার গুলির বেগ অনেক বেশি। স্থির হয়ে দারাও। তোমার heart বরাবর shoot করি…
নীড় বুঝতে পারলো যে এখন ওর মৃত্যু নিশ্চিত। যদি মেরিনের কথাটা শুনতো। মৃত্যুর আফসোস নেই। আফসোস ১টাই,,,, মেরিনকে ভালোবাসি বলা হলো না। নীড় চোখ বন্ধ করে নিলো।
নীড় : i love you মেরিন…
নীরা shoot করে দিলো। নীড় শুনতে পেলো।
.
কিন্তু কিছুই realize করলো না। সাথে সাথে চোখ মেলল। দেখলো ওর সামনে ওকে রক্ষা কবজের মতো মেরিন দারিয়ে আছে।
নীড় : মেরিন…
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে ছুটে গেলো।
তখনই নীরা আবার shoot করতে নিলে মেরিন ধা ধা করে নীরার গায়ে সবগুলো গুলি ঢুকিয়ে দিলো। এরপর ধপাস করে বসে পরলো।
afterall মেরিন গুলি চালানোতে expart..😎..
আর নীরা তো কিছুদিন ধরে শিখেছে।
নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব হয়ে গেলো। সবকিছু এতোটাই দ্রুত ঘটলো… ১টা মিনিটও মনে হয় সম্পুর্ন হয়নি….
নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
.
রক্তে গা ভিজে গেছে।
নীড় : মমমেরিন…
জন: ম্যাম…
নীড় নিজের শার্ট খুলে মেরিনের গুলির জায়গায় বেধে দিলো। আর দেরি না করে মেরিনকে কোলে তুলে দৌড়াতে লাগলো।
নীড় : কি করলে মেরিন…কি করলে… কেন করলে…. আমি তোমার কিছু হতে দিবোনা।
মেরিনের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তবুও জোর করে খুলে রেখেছে। নীড়কে দেখছে। দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে তবুও মুখে আজও হাসি।
নীড় মেরিনের দিকে তাকালো।
গাড়িতে তুলল।জন গাড়ি start দিলো।
.
নীড়: তোমার কিছু হবেনা। আমি হতে দিবোনা…
মেরিন : নীহড়… আআহমার ভভভভীষন ইচ্ছা ছিলো আআআপনার বববুহকে শেষ নননিঃশ্বাস নিবো। আআআহজকে সেটা পপপূরন হচ্ছে…. এর থেকে বববড় পপাওয়াহ আর নেই…
নীড় : চুপ, একদম চুপ।
মেরিন আর চোখ খুলে রাখতে পারছেনা।
মেরিন : এএএকবার শেষ ববাহরের মমমতো বববলুন না আআআপনি, আআআপনি আআমাকে ঘণা করেন… please ১বার…
নীড় : …
মেরিন : ভভভালোবাসি বলতে বববলিনি। ককিন্তু ১বার বলুন নাহ ঘৃণা করি… ১বার… এটা না শশুনে যে আমি মমরেও শান্তি পাবোনা…
নীড়: just stop it..
মেরিন : এতোটুকুও বববলতে পপপারবেন না…
নীড়: না পারবোনা। কারন আমি তোকে ঘৃণা করিনা । ভালোবাসি….
“ভালোবাসি” কথাটা মেরিন নিতে পারলোনা। জ্ঞান হারালো…
.
নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে দৌড়ে পাগলের মতো হসপিটালে ঢুকলো।
নীড় : ডক্টর… ডক্টর… আমার বউকে বাচান, আমার মেরিনকে বাচান…
আমার ভালোবাসার মেরিন কে বাচান।
ডক্টররা নীড়কে হাজার চেষ্টা করেও OT এর বাইরে রাখতে পারলো না। জেদ ধরে ও ভেতরে রইলো। ওর ১কথা যে ও বউকে ছেরে ১চুলও নরবেনা…
.
কিছুক্ষনপর…
গুলি বের করা তো শেষ।
ডক্টর : oh my god…
নীড় : কি হয়েছে ডক্টর?
ডক্টর : ওনার তো heart attackও হয়েছে। উনাকে বাচাবো কিভাবে…?
নীড়ের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেলো। ওর মনে পরলো মেরিনের বলা সেদিনের কথা। মেরিন বলেছিলো যে নীড়ের মুখে ভালোবাসি শুনলে খুশিতে heart attack করবো।
ডক্টর: এই মুহুর্তে ডক্টর তপুকে বাসা থেকে ফোন করে আনো….
তপু এলো। তপু তো মেরিনের medical history জানে। তপু তারাতারি action নিলো।
.
৩ঘন্টাপর…
অবগশেষে surgery শেষ হলো। তবে মেরিন বাচবে না মরবে সেটার গ্যারান্টি ডক্টররা দিতে পারলোনা। মেরিনকে icu তে shift করা হলো। নীড় তবুও মেরিনকে ছারেনি। নীড় মেরিনের হাত ধরে কাদছে।
নীড় : ১টা বার তোমায় ভালোবাসার সুযোগ দিবেনা? ১টা বার… এতোদিন তো কেবল তুমিই ভালোবাসলে…. আমাকে তো একটু সুযোগও দিলেনা… আমিও যে তোমার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
তোমার ভালোবাসার প্রেমে পরেছি…
ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। তুমি যে আমার ঘৃণার মেরিন নও…. আমার ভালোবাসার মেরিন….
ভালোবাসি তোমাকে। ভীষন ভালোবাসি…
.
জন : কেন আমি তোর কথার অবাধ্য হলাম না… এখন আমি তাকে কি জবাব দিবো? কিভাবে বলবো তাকে? আমি তার দেয়া দায়িত্ব যে পূরন করতে পারলাম না। আর নিজের সাথেই বা কি করে নজর মিলাবো….
oh no… দাদুভাই কে তো মনে হয় জানানোই হয়নি। এখনই ফোন করি…. না আমি নিজে গিয়ে নিয়ে আসি…..
চলবে………………
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৫
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
জন গেলো দাদুভাইকে আনতে গেলো।
.
খান বাড়িতে…
সেতু: আয় হায়রে আমার মেয়েটা আজও ফিরলোনা… নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই ওই মেয়েটাই না না মেয়ে না কালনাগিনী । ওই কালনাগিনীই কিছু করেছে… ও ভাইয়ারে…. আমার বাচ্চাটাকে এনে দেনা…
কবির: শান্ত হ… আমি মামনিকে খুজে নিয়ে আসবো।
দাদুভাই: ত…
.
তখনই জন এলো।
জন :দাদুভাই, দাদুভাই…
দাদুভাই: আরে জন…
জন: দাদুভাই.. একটু চলুন না…
দাদুভাই : কোথায়?
জন: ম্যামের একটু কাজ ছিলো…
সেতু: ওই তোরে না ওই কালনাগিনী…
জন: mind your language … আপনার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রনে রাখুন। না হলে ওটা কাটতে আমার ২সেকেন্ডও লাগবেনা। ভুলে যাবো যে আপনার মৃত্যু কার হাতে আছে…
কবির: এই জন। সাবধান বলে দিচ্ছি।
তুমি আমার সামনে দারিয়ে আমারই বোনের সাথে এভাবে কথা বলছো?
জন: আপনার বোনের কপাল ভালো যে এখনও সে কথা বলার মতো অবস্থায় আছে। তবে সেটা আপনার জন্য না। আপনি কেন আপনার মতো ১০জন এলেও i don’t care…
কবির: তুমি বোধহয় ভলে গেছো আমি কে? আমি কবির ফয়সাল খান। আর সিংহ সিংহই হয়। গর্জন না দিলেই সিংহ কুকুর হয়ে যায়না। রাজা রাজাই থাকে…
জন: রাজা.. হ্যা রাজা রাজাই থাকে। তো রাজা মশাই…. রাজার নীতি জানেন তো? ১টা রাজ্যে ১জনই রাজা থাকে। আর এই খান সম্রাজ্ঞে রাজা বলুন সম্রাট বলুন, সুলতান বলুন ,বাদশাহ বলুন , নবাব বলুন ওই ১জনই। সে হলো the মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী।
হ্যা আপনি সিংহ। তবে জঙ্গলের না সার্কাসের। যে কি না পোষা কুুকুরের চেয়ে নিম্নস্তরের।
কবির : জন…
জন: চিল্লাবেন না। এই জন কেবল ১জনেরই চোখ রাঙানো আর চিল্লানো সহ্য করে। অন্যকারোনা। বুঝেছেন?
আর এই যে আপনি… আমার ম্যামের কথা মাথায় আনলেও মাথাটা কেটে ফেলে দিবো।
সেতু: চোরের সাক্ষী দারোগা।
কবির: তোমার ওই ম্যাম ভিক্ষা রাজা। তাকে আমার বাবা এই সম্রাজ্ঞ দান করেছে ।
জন: মোটেও না। এটা আল্লাহর দান। আল্লাহই তাকে এই অধিকার দিয়েছেন। কারন সে এই খান বাড়ির।
কবির: কোনোদিনও না। ও কারো পাপের ফসল….
জন: এই এই কবির খান মুখ সামলে। আরেকবার এটা বলার আগে DNA test করিয়ে নিয়েন। আহা… ম্যামের না। আপনার … আপনি actually এই খান বাড়ির রক্ত কিনা… আর হ্যা যাকে পাপের ফসল বলছেন তার দেয়া ভীক্ষার জোরেই বেচে আছেন। যদি সে পাপের ফসল হয় , যদি তার রক্ত খারাপ হয়, যদি সে অপবিত্র হয় তবে আপনিও ।
কবির: মানে?
জন: মানে আপনি যার জন্য বেচে আছেন সে হলো মেরিন বন্যা। তার লিভারই আপনার শরীরে।
বলেই জন দাদুভাই কে নিয়ে চলে গেলে।
.
দাদুভাই গিয়ে মেরিনের এই অবস্থা দেখে পাগল হয়ে গেলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। নিহাল-নীলিমা-নীড় অনেক কষ্টে ওনাকে সামলালো।
দাদুভাই: আমি একটু ভেতরে যেতে চাই….
দাদুভাই ভেতরে গেলো। মেরিনের কপালো চুমু দিয়ে ধীরে ধীরে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই: দিদিভাই… আমি জানি আমার দিদিভাই ফাইটার…এতে সহজে কি হার মানবে? এবার তুমি ঠিক হও… সব বাদ দিয়ে সব ছেড়ে তুমি আর আমি অনেক দূরে চলে যাবো।
কথাটা শুনে নীড়ের বুকটা কেপে উঠলো…
দাদুভাই : আমি সত্যিই ব্যার্থ। না আমি তোমার দুঃখ দূর করতে পেরেছি আর না তোমাকে রক্ষা করতে পেরেছি। প্রতিনিয়ত তুমিই আমাকে রক্ষা করে এসেছো। তাই ভুলেই গিয়েছিলাম যে দিনশেষে তুমি কি…
ভুল ধারনায় বেচেছিলাম। হয়তো তুমি ছায়া পেয়েছো। শাহজাহান খান এতো বড় ভুল কখনোই করেনি। আর ভুল করবোনা। তোমার দাদুভাই হয়তো তোমার কষ্ট দূর করতে পারবেনা। কিন্তু সকল পরিচিত ছায়ার আড়ালে নিয়ে যাবো।
দাদুভাই বাইরে বের হলো।
.
দাদুভাই : জন…
জন: জী দাদুভাই… ডক্টরের কাছ থেকে সকল report নিয়ে আসো।
জন : জী দাদুভাই…
দাদুভাই : আর সব report এনে সিঙ্গাপুর যাওয়ার ব্যাবস্থা করো….
দিদিভাই কে নিয়ে সিঙ্গাপুর যাবো….
জন: ok… দাদুভাই…
জন চলে গেলো।
নীড় : দদাদুভাই.. মমমেরিনকে shift করা ঠিক হবেনা…
দাদুভাই : তোমাকে আমার নাতনিকে নিয়ে ভাবতে হবেনা। আমি জানি তোমার জন্যেই ওর এই অবস্থা।
নিহাল: দেখুন স্যার… মেরিনের condition আরো বিগরে যেতে পারে।
দাদুভাই: তোমাদের কারোই চিন্তা করতে হবেনা মেরিনকে নিয়ে। ও তো ঘৃণার মেরিন । ওকে নিয়ে এতো ভাবার কি আছে? আর তোমরা বাবা-ছেলে তো ওর কথা বলোইনা… তুমি ওকে প্রথম দিনেই ওকে কি বলেছো তা আমি জানি… কারো দরকার নেই আমার মেরিনের। আমি শাহজাহান খান মরে যাইনি… তোমাদের কারো ছায়া ওর ওপর পরতে দিবোনা….
বলেই দাদুভাই বেরিয়ে যেতে নিলো। সামনে পরলো কবির।
.
দাদুভাই : তুমি এখানে?
কবির মাথা নিচু করে আছে।
দাদুভাই : কি হলো বলো…
কবির : বাবা আমি একটু আমার মেয়েটাকে দেখতে চাই…
দাদুভাই ঠাস করে কবিরকে থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই: লিভার দিয়ে জীবন বাচিয়েছে বলে আজকে পাপের ফসল থেকে মেয়ে হয়ে গেলো…?
কবির মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে।
দাদুভাই: এতোদিন যখন পাপের ফসলটাকে টিকিয়ে রেখেছি তখন যতোদিন বেচে আছি ততোদিনও পারবো। পাপের ফসলকে মেয়ে বানানোর দরকার নেই…
বলেই দাদুভাই বেরিয়ে গেলো… জন সব ব্যাবস্থা করে ফেলল।
.
একটুপর…
তপু: আরে দাদুভাই কি করছো কি? মেরিনকে shift করা ঠিক হবেনা ।
দাদুভাই: তোমাদের কারো কথা আমি শুনবো না… কেউই মেরিনের ভালো চায়না…
তপু: দাদুভাই তুমি আমাকেও এই কথা বলছো? তুমি জানোনা মেরিন আমার জন্য কি?
কথাটা শুনে নীড়ের খটকা লাগলো।
তপু: আমি কিছুতেই মেরিনকে shift করতে দিবোনা ।
দাদুভাই: অধিকার দেখাচ্ছো কোন অধিকারে?
তপু: ভালোবাসার অধিকারে, মানবতার অধিকারে। আমি মেরিনকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিবোনা। কিছুতেই আমি permission দিবোনা।
দাদুভাই : এর পরিনতি কি হতে পারে জানো?
তপু: হ্যা। জানি। তবুও আমি দিবোনা….
বলেই তপু চলে গেলো। তপুর কথা নীড়ের মোটেও ভালো লাগলোনা।
.
জন: দাদুভাই এখন?
দাদুভাই: একটু wait করতে হবে। নীরা সুস্থ আছে তো?
জন: না দাদুভাই… অবস্থা ভালোনা।
দাদুভাই: তাহলে তো হবেনা… নীরাকে সুস্থ হতে হবে… বেচে ফিরতে হবে। এতো সহজ মৃত্যু তো ওর প্রাপ্য না… যে করেই হোক নীরাকে সুস্থ করার ব্যাবস্থা করো। দরকার হলে বিদেশে পাঠাও। তবুও ওকে বাচাও….
জন: দেখি দাদুভাই কি করা যায়…
.
রাতে…
নীড় : দাদুভাই… তততুমি এখন বববাসায় চলে যাও।
দাদুভাই : কেন?
নীড়: না মানে রাতে তো যে কোনো ১জন allow …
দাদুভাই: জানি। আমি থাকবো।
নীড়: দদদাদুভাই আআআমি থাকি?
দাদুভাই: তোমার কষ্ট করতে হবেনা। তুমি আসতে পারো।
নীড় : ….
নীড় ১পাও নরলো না।
দাদুভাই : কি হলো? তুমি দারিয়ে আছো যে?
নীড়: … তততুমি বাসায় যাও। আমি থাকবো।
দাদুভাই: দেখো তোমার সাথে বেশি কথা বলার ইচ্ছা আমার নেই। তুমি যাও। ও আমার দায়িত্ব। খামোখা নিজের বোঝা বারাতে হবেনা। তুমি আসতে পারো।
নীড়: না আমি যাবোনা। ও আমার বোঝা না। ও আমার বউ। আর আমার বউর কাছে আমিই থাকবো।
দাদুভাই: বউ? হায়রে আজব দুনিয়া। ওই লোকটাকে দেখো। যেই জানতে পারলো যে মেরিন ওকে লিভার দিয়েছে ওমনি তার কাছে মেরিন পাপের ফসল থেকে মেয়ে হয়ে গেলো। তোমার দিকে ছোরা গুলি নিজে খেলো বলে তোমার কাছেও ফালতু মেয়ে থেকে বউ ভয়ে গেলো। প্রমানে যদি ভালোবাসার খোজ পাওয়া যায় তবে সেটা আর যাই হোক ভালোবাসা হয়না।
যাই হোক… তুমি এখন আসতে পারো।
নীড় : আমি যখন বলেছি আমি যাবোনা তখন যাবোনা। আমার বউয়ের কাছে আমিই থাকবো। তুমি বাসায় চলে যাও।
দাদুভাই: জোর দেখাচ্ছো কোন জোরে…
নীড় : কবুলে জোরে… চলে যাও কালকে সকালে এসো… না হলে জোর করে পাঠাবো…
দাদুভাই : তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি কে?
নীড় : আমি কিছুই ভুলিনি… তুমি যাও।
নীড়ের জেদের কাছে দাদুভাইকে হার মানতেই হলো। দাদুূভাই চলে গেলো।
.
সকালে…
নীড় সারারাত মেরিনের হাত ধরে দেগে বসেছিলো। এখনও আছে। হঠাৎ মনে হলো মেরিনের হাত নরছে। নীড় তারাতারি তপুকে ডেকে আনলো।
তপু চেক করলো। দেখলো মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে।
তপু: out of danger …
নার্স ওকে injectionটা দিয়ে দাও।
নার্স: ok sir…
মেরিন ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় : ও আবার ঘুমিয়ে পরলো কেন?
তপু: ভয় নেই। তোমার মতো ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করবোনা।
তপু মেরিনকে ১পলক দেখে বেরিয়ে গেলো।
নীড় বুঝতে পারলো যে তপু মেরিনকে ভালোবাসে।
.
৪ঘন্টাপর…
মেরিন চোখ মেলে তাকালো। আধো আধো চোখে দেখলো দাদুভাই , নিহাল , নীলিমা , নীড় আর জন দারিয়ে আছে।
দাদুভাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নীড় ওর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বসে আছে। মেরিন নীড়ের দিকে ১বার তাকিয়ে দাদুভাইয়ের দিকে চোখ ঘোরালো। চোখ ঘোরানোর সময় দরজার বাইরে দারিয়ে থাকা কবিরকেও দেখলো।
দাদুভাই : দিদিভাই… কেমন লাগছে এখন?
মেরিন ভাঙা ভাঙা গলায়
বলল : ভভভালো। তততোমাকে এমন লললাগছে কককেন?
দাদুভাই : কিছুনা দিদিভাই…
মেরিন : কককষ্ট দদদিয়ে ফেললাম তোমাকে…
দাদুভাই মেরিনের কপালে চুুমু দিয়ে
বলল : আমার দিদিভাই কি কখনো আমায় কষ্ট দিতে পারে?
মেরিনের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো।
নীলিমা: এমন কাজ আরেকবার করলে মারবো ধরে..
তখন তপু ভেতরে ঢুকলো।
তপু: সবাই kindly একটু বাইরে যাবেন… একটু চেকাপ করতে হবে।
নীড় ছারা সবাই বেরিয়ে গেলো।
তপু : নীড় তোমাকে কি আলাদাভাবে বলতে হবে?
নীড় বেরিয়ে যেতে নিলে হাতে থাকা ব্রেসলেটে টান অনুভব করলো। দেখলো মেরিন ১আঙ্গুল দিয়ে সেটা ধরে রেখেছে। মনে করলো ভুল করে সেটা হয়েছে। তাই আঙ্গুল টা ছারিয়ে নিলো। কিন্তু পরক্ষনেই মেরিন আবার ধরে ফেলল। যা দেখে নীড় মুচকি হাসলো।
তপু: কি হলো যা…
তখন তপু দেখলো মেরিন ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
যার অর্থ এই
যে: তোমার সাহস কিভাবে হয় আমার নীড়কে বের হতে বলার।
তপু আর নীড়কে কিছু বলল না।
.
তপু সব চেক করতে লাগলো। মেরিন চোখ বন্ধ করে রাখলো।
তপু: তোমার কিছু হলে কারো কিছুই হবেনা। কিন্তু তাই বলে বারবার নিজেকে ঝুকিতে ফেলা ঠিকনা। নিজেকে বাচিয়ে রাখতে শেখো। নার্স ওকে মেডিসিনটা দিয়ে দিও।
তপু চলে গেলো। তপু চলে গেলে মেরিন চোখ মেলল।
নার্সও মেডিসিন দিয়ে চলে গেলো।
নীড় : মেরিন…
নীড় ডাকটা দিতেই মেরিন আবার চোখ বন্ধ করলো।
নীড় : তুম..
মেরিন : i want to sleep …
নীড় : ওহ। আচ্ছা তুমি ঘুমাও।
.
৩দিনপর…
মেরিনের অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো। কিন্তু নীড় অনেক অবাক। কারন ৩দিনে মেরিন নীড়ের সাথে কোনো কথাই বলেনি। আর না ওর দিকে তাকিয়েছে।
নীড় মনে মনে : হয়তো অনেক রেগে আছো।
নীড় ভাবছিলো তখন খেয়াল করলো বাইরে কেউ দারিয়ে আছে। কালো চাদর মুরি দিয়ে। নীড়ের খটকা লাগলো। এটা কনিকা না তো… দৌড়ে বের হলো। কিন্তু খুজে পেলোনা। হতাশ হয়ে ফিরে এলো। এসে দেখে মেরিন বসার চেষ্টা করছে। ছুটে ওর কাছে গেলো। ওকে সাহায্য করতে চাইলে মেরিন হাত দিয়ে ইশারা করে বাধা দিলো। তবুও নীড় ধরে বসিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি আমাকে ig…
তখন জন বলল: আসতে পারি?
নীড় : come …
জন: ম্যাম ডেকেছিলেন?
মেরিন : হামম।
নীড় অবাক হলো।
জন: কোনো কাজ ছিলো?
মেরিন : হ্যা… এই মুহুর্তে অফিস যাও। ওখানে ১টা blue file আছে।ওটাতে সব মিটিং এর details আছে। এখনি গিয়ে ওটা নিয়ে আসবে।
জন: জী ম্যাম…
মেরিন : আর শোনো।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : যাওয়ার সময় জেনে যেও যে আমাকে রিলিজ কবে দেয়া হবে?
জন : কিন্তু ম্যাম…
মেরিন: প্রশ্ন আমার ভালো লাগেনা। go…
জন চলে গেলো।
.
নীড় : রিলিজ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা।
মেরিন: আর আমাকে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা।
নীড়: সব কিছুতে তোমার জোর চলবে না। সবকিছু তোমার under এ চললেও তুমি আমার under এ চলবে… বুঝেছো?
জবাবে মেরিন রহস্যময়ী হাসি দিলো। একটুপর জন file নিয়ে এলো।
.
৪দিনপর…
মেরিনের জন্য আজই ওকে রিলিজ দেয়া হলো।
তপু: তোমাকে রিলিজ দেয়া হলো কেবল তোমার জেদের কারনে। কিন্তু এর মানে এটা না তুমি যা ইচ্ছা তাই করবে… একদম bed rest এ থাকবে।
মেরিন: জ্ঞান শোনার সময় এবং ইচ্ছা কোনোটাই আমার নেই। do it fast ….
তপু: তুমি কি কোনো কথাই শুনবে না…
মেরিন : …
তপু: নিজের খেয়াল রেখো।
.
২দিনপর…
নীড় নিচে বসে নিহালের সাথে কথা বলছে। তখন দেখলো যে মেরিন রেডি হয়ে নিচে নামছে। মেরিন যতোই নরমাল ভাবে হাটার চেষ্টা করুক ওর যে হাটতে কষ্ট হচ্ছে সেটা দেখেই নীড় বুঝতে পারলো।
নীলিমা:একি কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন: অফিসে…
নিহাল: what? পাগল নাকি তুমি?
মেরিন: পাগলের কি আছে?
নিহাল: সবটাই। এই শরীর নিয়ে …
মেরিন: কেন আমার কি হয়েছে?
নিহাল: বেশি কথা আমার ভালো লাগেনা। তুমি অফিস যাবেনা তো যাবেনা।
মেরিন মুচকি হেসে
বলল : my dear শশুড় বাবা… আমার কি বসে খাওয়ার ভাগ্য আছে? এমনিতেই চোখের বালি । তারমধ্যে যদি বসে বসে অন্ন ধংব্স করি তবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে।
কথাটা শুনে নীড় হাতে থাকা পানির glassটা ধিরিম করে রাখলো।
মেরিন care না করে বের হতে নিলো। নীড় এসে দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।
চলবে…………………..
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৬
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় দুম করে মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো। নিয়ে বেডে বসালো ।
নীড় : ১পা এখান থেকে নামলে পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো বলে দিলাম। বসো আমি তোমার খাবার নিয়ে আসছি।
.
নীড়ের কোনো কথাই যেন মেরিন শুনতে পায়নি। মেরিন বেড থেকে নেমে চুপচাপ যেতে নিলে নীড় হাত টেনে মেরিনকে কাছে এনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
নীড়: সমস্যাটা কি তোমার? কথা কানে যায়না? বললাম না বসে থাকতে।
মেরিন: বসে থাকলে আমার কাজগুলো কে করবে?
নীড় : জাহান্নামে যাক কাজ।
মেরিন: কাজ জাহান্নামে গেলে টাকা পাবো কোথায়? বাচবো কিভাবে?
নীড় : টাকায় মানুষ বাচে?
মেরিন নীড়ের গলায় হাত রেখে
বলল: হামম। আমি তো বাচি। টাকার জোরে টাকার নেশাতেই তো মেরিন বেচে আছে।
নীড় : তাহলে কি নীড়কে ভালোবেসে মেরিন বেচে নেই? টাকা কি নীড়ের চেয়েও বড়?
মেরিন: হয়তো… কারন টাকা না থাকলে মেরিন নীড় পেতোনা। যাই হোক ছারুন। আমাকে যেতে দিন।
নীড়: যদি না ছারি…
মেরিন: ধরে রাখার কোনো কারন নেই।
নীড় : আমিও দেখি তুমি আজ কিভাবে যাও…
মেরিন : সমস্যাটা কোথায় আপনার ? বাচতেও দেননা মরতেও দেননা। atleast আমাকে আমার মতো থাকতে দিন। ছারুন।
নীড় : না।
.
মেরিন: আপনার কি মনে হয় আপনি আমাকে আটকে রাখতে পারবেন….
নীড় : হামম।
মেরিন: এর আগেও তো চেষ্টা করেছিলেন…. পেরেছিলেন?
নীড়: …. তখন পারিনি। তবে জানি এখন পারবো।
মেরিন : এখন কি কোনো দৈব্যেশক্তি পেয়েছেন আমাকে আটকানোর…. নাকি অসুস্থ বলে?
নীড় : ….
মেরিন: তো কিভাবে আটকাবেন আমাকে?
নীড়: স্বামী হয়ে আটকাবো… ভালোবেসে আটকাবো….
মেরিন: স্বামী হয়ে? ভালোবেসে? 🤣। হ্যা স্বামী আপনি আমার… but ভালোবাসা কোথায় থেকে এলো?
নীড় : দেখো মেরিন…
মেরিন: দেখছিই তো আপনাকে…. আমার তো আর অন্য কিছু দেখার নেই। হার না মানা মেরিন যে নীড়ে হেরে গেছে , আটকে গেছে। কিন্তু নীড়তো নীরাতে আটকে আছে।
নীড় : যদি বলি বর্ষন বন্যায় পতিত হয়েছে। মিশে গেছে বন্যায়…. তবে?
যদি বলি মেরিনকে ভালোবেসে ফেলেছে। তবে?
.
মেরিন: ভালোবাসা? ছোট্ট ১টা গুলির এতো শক্তি? গুলির যে মানুষ মারার ক্ষমতা আছে সেটা জানতাম কিন্তু ভালোবাসানোর ক্ষমতা আছে সেটা জানতাম না।
যদি জানতাম তবে অনেক আগেই খেয়ে নিতাম।
নীড় : গুলি খাওয়াতে ভালোবাসা হয়না।
মেরিন: একদম ঠিক। গুলি খাওয়াতে ভালোবাসা হয়না। কৃতজ্ঞতা হয়। এখন সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে আসা দয়া-মায়াকে ভালোবাসা ভাবছেন। ভিক্ষা দিচ্ছেন।
আর মেরিন বন্যা ভিক্ষা নেয়না।
নীড় : আর যদি বলি গুলির জন্য না। দয়া-মায়াও না। এটা ভালোবাসা… অনেক আগের।
যদি বলি তোমার জীবনের সব ঘৃনা আমার আর আমার জীবনের সব ভালোবাসা তোমার।
কথাটা শুনে মেরিন হা হা করে হাসতে লাগলো । পাগলের মতো।
মেরিন: না মেরিনের জন্য ভালোবাসা জায়েজ আর না নীড়ের জন্য ঘৃণা জায়েজ…
আর আপনার ভালোবাসা ? আমার প্রতি? তাও আগে থেকে….?
হ্যাহ…
যদি ভালোবাসতেন তবে বিশ্বাস করতেন। সেদিন ওই ৫ই জুন অমন অপমান করতেন না… অবিশ্বাস করতেন না…
অতো বড় শাস্তিও দিতেননা। আপনাকে না ছোয়ার , আপনার সামনে না আসার।
যদি ভালোবাসতেন তবে ভালোবাসার জ্বালে ফেলে ধোকা দিতে পারতেন না ।
যদি ভালোবাসতেন তবে আমার ১টা কথা অন্তত রাখতেন। কোথাও বের হতেন না।
যদি ভালোবাসতেন তবে আমাকে ফেলে ভোর ৪টায় অন্য মেয়ের কাছে যেতেন না।
নীড়: তুমি আমার কথাটা তো শোনো…
মেরিন: আমি তো আপনার কথা শোনার জন্যেই চাতক পাখির মতো আশায় থাকি। আপনাকে ভীষন ভালোবাসি। তাই আপনাকে শাস্তি দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
আপনার তো ৭খুন মাফ…..
.
নীড় : তুমি ভুল ভাবছো…
মেরিন: ভুল ঠিক জানিনা নীড়। আপনার ওপর আমার কোনো আক্ষেপ নেই। আর না কোনো অভিযোগ… শুনেছি স্ত্রীরা দাবি না ছারলে, অভিযোগ করলে স্বামীরা নাকি জান্নাতে যেতে পারবেনা। যদি সেটা সত্যি হয় তবে আমি মেরিন আজকে আপনার ওপর থেকে সকল প্রকারের সব দাবি ছেরে দিলাম।
নীড় : এই মেয়ে এই ১টা থাপ্পর দিবো। ফালতু কথা একদম বন্ধ। বুঝিস না তোকে আমি ভালোবাসি….
মেরিন: হামম। ভালোবাসেন। অস্বীকার করিনি। তবে সেটা কৃতজ্ঞতার। আপনার কোন দোষ নেই। যে আমার জন্ম দাতা তাকে লিভার দিয়েছি বলে তার কাছে আমি পাপের ফসল থেকে মেয়ে হয়ে গেলাম। আজব না? আর আপনি তো পরের ছেলে । না রক্তের সম্পর্ক ,না মনের, না শরীরের, না আত্মার ,না ভালোবাসার…. uffs… শরীরের সম্পর্ক তো হয়েছে। ২ ২ বার। আচ্ছা তখন কি আমার জায়গায় নীরা কে দেখেছিলেন?
নীড় : ….
মেরিন : whatever … কারো দয়া-ভিক্ষা নিতে পারবেনা । ঘৃণার মেরিনকে ঘৃণারই থাকতে দিন। তাকে ভালোবাসার ভুল করবেন না। ভালোবাসলে পরে আফসোস করবেন। আর হ্যা মেরিনের চিন্তা করবেন না। মেরিন ননীর পুতুল না.. মেরিন iron lady …। এখন আমার পথ ছারুন।
নীড়: ….
মেরিন: কি হলো?
নীড়: তোমার বলা শেষ?
মেরিন: yes my dear জান।
নীড় : good ….
বলেই মেরিনকে কোলে তুলে বেডে নিয়ে গেলো। বসালো। এরপর হাত বেধে দিলো।
.
নীড়: বন্যার তেজ সবাই জানে। কিন্তু বর্ষনের তেজও কারো কাছে অজানা নয়। আমি ১দিন তোমাকে বলেছিলাম যে আমি তোমার থেকেও dangerous …. সেটা এমনি এমনি বলিনি। তুমি তো আমার নারী নক্ষত্র সবই জানো। তো আমার রাগ সম্পর্কেও জানো। আমি তোমার থেকে অনেক জেদী। তুমি তো কেবল নরম ভূমি ধংব্স করো। আর আমার বিদ্যুতের আঘাতে সুবিশাল পাহাড়ও ধংব্স স্তুপে পরিনত হয়। আজকে থেকে আমার কথার বাইরে কোনো কাজ করবেনা। না হলে আমি যে কি করবো তা নিজেই জানিনা। বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
বলেই নীড় খাবাার আনতে গেলো।
খাবার নিয়ে এসে নীড় মেরিনকে জোর করে খাইয়ে দিলো।
.
পরদিন…
মেরিন : আজও কি আমার হাত বেধে রাখবেন?
নীড় : হ্যা। কারন হাত খুলে দিলেই তুমি যেভাবেই হোক পালাবে।
মেরিন : ফোনটা তো দিবেন… কালকে থেকে বেজেই যাচ্ছে।
নীড় : হাত তো বন্ধ। কথা বলবে কি করে?
মেরিন : ….
নীড় : দেখি হা করো…
মেরিন : পারবোনা।
নীড় : মেজাজ খারাপ না করে খাও তো।
তখন মেরিনের ফোন বাজতে লাগলো।
মেরিন : ফোনটা আনুন…
নীড় : no…
মেরিন : না আনলে খাবোনা।
নীড় নিয়ে এলো। জনের call।
মেরিন : হাত খুলে দিন।
নীড় : not at all…. loud এ দিচ্ছি।
নীড় loud এ দিলো।
মেরিন : hello …
জন : hello mam..
মেরিন : কি হয়েছে?
জন : ম্যাম নীরাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। admit করা হয়েছে। কিন্তু…
মেরিন : কিন্তু কি?
জন: ম্যাম নীরার condition ভীষন খারাপ।
মেরিন : ১কাজ করো। তা হলে তো চলবেনা। নীরাকে সুস্থ করতে হবে। যতো টাকা লাগে খরচ করো। i want নীরা alive … নীরাকে বাচাতেই হবে। নীরা হলো রূপ কথার সেই তোতাপাখি যার মধ্যে কারো জীবন বন্দী থাকে। তোতাপাখি মারা গেলে সেও মরে যাবে।
এই কথাটুকু মেরিন নীড়ের দিকে তাকিয়ে বলল। নীড় মনে করলো মেরিন ওকে উদ্দেশ্য করে বলেছে।
জন : ok mam…
মেরিন : দরকার হলে তুমিও সিঙ্গাপুর চলে যাও।
জন: না ম্যাম তার দরকার হবেনা।
মেরিন : ok… bye….
.
নীড় : নীরা আমার জীবন না।
মেরিন : ….
মেরিন মনের সুখে খাবার খাচ্ছে। আর বাইরের আকাশ দেখছে। যেন এটাই সবথেকে দরকারী কাজ।
নীড় : কিছু বলেছি….
মেরিন : শুনেছি….
নীড় : নীরার বাঁচা মরা আমাকে effect করেনা ।
মেরিন ১টা ছোট্ট হাসি দিলো। নীড়ের পক্ষে হয়তো কোনোদিনও সেই হাসির মানে বুঝবেনা।
মেরিন : effect করেনা বলে নীরাকে বাচাতে চাইছেন?
নীড় : কি বলো এগুলা?
মেরিন : যা করার করুন। but নীরাকে মরতেই হবে। আমি ওর হৃদয়টা বের করে আমার পোষা কুুকুরদের খাওয়াবো। তবে তার আগে ওর সুন্দর চেহারাটা কুৎসিত করে দিবো।
নীড় : ধংব্সের খেলা বন্ধ করে সুন্দর করে বাঁচা যায়না?
মেরিন আবারো হাসি দিলো।
.
৫দিনপর….
নীড়ের শ্বাসন-বারনে অতীষ্ট মেরিন। আবার কেন যেন খুশিও।
নীড় : ওই… কালকে সকালে বাবা আসবে।
মেরিন : বাবা?
নীড় : কবির বাবা…
মেরিন : তো আমি কি করতে পারি?
নীড় : কিছু করতে হবেনা। বাজে ব্যাবহার করবেনা।
মেরিন: …
নীড়: কিছু বলেছি…
মেরিন: আপনি বলেছেন আমি শুনেছি এর বেশি কিছু আশা করবেন না ॥ আর ওই stupid ভালোগিরির expect আমার কাছে করবেন না। ৫দিন ধরে আটকে রেখে যদি মনে করেন আপনি যা ইচ্ছা তাই করবেন তাহলে ভুল ভাবছেন। আ…
তখনই মেরিনের ১টা ফোন এলো।
মেরিন : hello. …
মেরিন: ok. …
নীড় : কার ফোন ছিলো। মেরিন বাকা হাসি দিয়ে বলল কারোনা।
বলেই কাবার্ড থেকে কিছু ১টা নিয়ে washroom এ গেলো।
নীড়: এমন হাসি মানেই কোনো কাহিনী আছে।
মেরিন বেরিয়ে এলো।
নীড় : change করলা কেন?
মেরিন: আপনিও করে আসুন। আপনাকে নিয়ে কোথাও যাবো।
নীড়:কোথায়?
মেরিন: গেলেই বুঝতে পারবেন।
নীড় : তুমি কিন্তু drive করবেনা।
মেরিন: ok…
.
২জন ১টা জায়গায় গেলো। নীড় ভেতরে ঢুকে বুঝতে পারলো যে এটা মেরিনের সেই জায়গা। যেখানে সবাইকে শাস্তি দেয়।
নীড় : এখানে?
মেরিন: ভেতরে চলুন।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে ভেতরে ঢুকলো। ভেতরে ঢুকে দেখে সেদিনের ওই ৫জন হাত-পা বাধা রক্তাত্ব অবস্থায়।
নীড় : এরা?
জন: ম্যাম এরা দেশ ছেরে পালাচ্ছিলো ।
মেরিন: হামম। নীড় আমাকে নামাবেন please ?
নীড় নামালো। মেরিন নীড়ের হাত টেনে ১টা টেবিলের সামনে নিয়ে দার করালো। নীড় তাকিয়ে দেখলো যে টেবিল টাতে অনেক ধরনের গান, ছুরি রাখা আছে। সেই সাথে আরো অন্যধরনের অস্ত্রও আছে। নীড় কাহিনী বুঝলোনা।
মেরিন: এখান থেকে যেটা নিতে মন চায় সেটা নিন। এরপর এদের সাথে যা মন চায় করেন।
নীড় : মানে?
মেরিন : খুব সহজ । কারো হাত কাটবেন কারো পা কাটবেন কারো গলা কাটবেন কারো কলিজা বের করবেন। যার সাথে যা ইচ্ছা করুন।
নীড় : পাগল নাকি? এগুলো করবো কেন? ওদেরকে তো পুলিশে দেবো। যা করার আইন করবে।
মেরিন : আবার ভালোমানুষই পেচাল। তোদের ১টা সুযোগ দিয়েছিলাম কম কষ্টদায়ত মৃত্যু ভোগ করার। but আমার জামাইটা ভালোমানুষ। ১কাজ করুন আপনি গাড়িতে গিয়ে বসুন। আমি এদের মুক্তির ব্যাবস্থা করে আসছি।
নীড় : আর কতো মারামারি করবে ?
.
মেরিন: মারামারি? কে বলল যে আমি এদের সাথে মারামারি করবো? its too cheap …. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী কি ১২-১৪ বছর কিশোর যে মারামারি করবে? আমি তো এদের রক্ত নিয়ে খেলবো। এদের কলিজা কতো বড় সেটা দেখবো। কোন কলিজায় আমার কলিজায় হাত দেয় সেটা দেখবো। আপনি তো ভালোমানুষ রক্ত দেখতে পারবেন না।
নীড়: যদি আমি পুলিশের কাছে যাই….
মেরিন: who care? আমার কাজ ততোক্ষনে হয়ে যাবে।
নীড়: তো তুমি মারবে ভালো কথা। আমাকে বাইরে যেতে বলছো কেন?
মেরিন: এখানে আপনাকে এনেছিলাম যেন আপনি এদেরকে শাস্তি দিতে পারেন। কিন্তু আপনি আইন আইন করছেন। ভেতরে থাকলে জ্ঞান দিবেন। কি করছো? পাগল নাকি? এমন করোনা। blah blah blah….
নীড় ১টা বাকা হাসি দিলো। মেরিন খানিকটা অবাক হলো।
.
নীড় : এখানে অস্ত্র দেখে মনে হচ্ছে যে তুমি অস্ত্রবিদ্যায় বেশ পারদর্শী। এখানে প্রায় সবই আছে কিন্তু তীর-ধনুক নেই।
মেরিন : বোরিং…
নীড় : কতোদূর থেকে shoot করতে পারো? বা ছুরি ছুরতে পারো?
মেরিন : মানে?
নীড়: ২হাত একসাথে use করতে পারো?
মেরিন : 🙄
নীড় ২হাতে ২টা ছুরি নিয়ে পিছে গেলো।
নীড় : কোথায় নিশানা লাগাতে হবে?
নীড়ের কর্মকান্ড দেখে মেরিন বুঝতে পারছেনা ।
নীড় : বলো।
মেরিন : হৃদপিন্ড বরাবর….
নীড় : ok…..
নীড় যথেষ্ট দূরে দারিয়ে ১বার ২জনের দিকে তাকিয়ে উল্টা ঘুরে গেলো। এরপর ওখান থেকে ২জনের বুক বরাবর ছুরি ছুরলো।
মেরিন : 😱।
.
নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে ওর বন্ধ করলো।
নীড় : বলেছিনা আমি তোমার থেকেও dangerous …. আমার রাগের কারনেই নীরা আমার শত্রু হয়েছিলো। আমার রাগের জন্যেই হাজারো দুশমন আছে। আমার রাগের জন্যেই আমাকে abroad পাঠানো হয়েছিলো। class 8 এ ১জনের হাত কেটে ফেলেছিলাম। আমার হাতের থাপ্পরে নিশ্চয়ই বুঝেছো যে মাইরের হাতটা কতো শক্ত। মারামারি , অস্ত্র চালানো ছেরে দিয়েছি মাত্র। ভুলে যাইনি। মামনি অনুরোধে বিরত আছি। হিংস্র আমিও। ছুরি দিয়ে তো যেমন তেমন… এই হাত দিয়ে বুকটা চিরে হৃৎপিন্ডটা বের করার ক্ষমতাও আছে। so baby… underestimate me…. actually i am your hubby….
মেরিন: ….
নীড় : কি হলো?
মেরিন: কিছুনা।
নীড়: এখন কি এদের বুক চিরতে হবে?
মেরিন: থাক আপনার হাত আর নতুন করে রক্তাত্ব করতে হবেনা।
নীড় : নাহ চলো আজকে ২জন মিলে একেকটাকে ফাটাই। ধংব্সের খেলা খেলি।
খেলবে?
নীড়কে বড্ড অচেনা লাগছে মেরিনের।
.
জন: আপনারা ২জনই এখন বাসায় চলে যান please ….
নীড় : না গো । তোমার ম্যামের কথা ফেলি কি করে?
জন : স্যার please …
নীড় : হামম। চলেন ম্যাডাম বাসায় চলেন।
মেরিন যাবে কি? ও তো নীড়কেই দেখে যাচ্ছে।
চলবে…………………
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৭
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
মেরিন তো নীড়কে দেখেই যাচ্ছে।
নীড় : জন।
জন: জী স্যার।
নীড়: cold drinks হবে?
জন: জী স্যার।
নীড় : দাও।
জন দিলো।
নীড় খেতে খেতে মেরিনক্ বলল: আমায় দেখা হয়ে গেলে বলে দিও। বাড়ি ফিরতে হবে।
.
কথাটা শুনে জন একটু শব্দ করে হেসে উঠলো। মেরিন প্রথমবার confused ….
ও জানতো যে নীড় রাগী। কিন্তু dangerous সেটা জানতোনা। মেরিন ধামধুম করে গিয়ে ১টা হুইসকির বোতল হাতে নিলো। কেবল ওটার মাথা খুলবে তখনই নীড় পেছন থেকে এসে ওটা নিয়ে নিলো। জায়গা মতো রাখলো। এরপর মেরিনের কানে ফিসফিস করে
বলল: এর থেকেও আমার ভালোবাসার নেশা বেশি।
বলেই চোখ মারলো। এরপর মেরিনকে কোলে করে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি start দিলো। কিছুক্ষন পর মেরিন খেয়াল করলো যে এটা অন্যরাস্তা।
নীড়: অবাক হওয়ার কিছু নেই । long drive এ যাচ্ছি ।
মেরিন: কিন্তু কেন? কয়টা বাজে দেখেছেন? আপনার শরীর খারাপ করবেনা। বাসায় চলুন।
নীড় fulll sound এ গান ছেরে
বলল: কিছু বললে?
মেরিন: 😒।
মেরিন বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীড় ১হাত দিয়ে মেরিনের হাত ধরলো। মেরিন অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো।
নীড় : এটা আমার বউর হাত।
মেরিন: আপনার কি মনে হয়না যে আপনি বারাবারি করছেন? যাকে বলে নেকামো…
drive এ concentrate করুন।
নীড়: না করলে কি হবে? accident ….? who cares?
মেরিন: i care… আমি মরে গেলেও আপনার কিছু না হলেও আপনি চুল পরিমান আঘাত পেলে আমার অনেক কিছু…
মেরিনের কথা শুনে নীড়ের রাগ উঠলো। ১দিকে ব্রেক মারলো অন্যদিকে ১টানে মেরিনকে কাছে এনে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। শেষে জোরে সোরে ১টা কামড় দিয়ে ছেরে দিলো।
নীড় : বেশি কথা বলবা আর কামড় খাবা।
বলেই আবার গাড়ি start দিলো।
.
একটুপর….
আবার ব্রেক মারলো । এরপর নামলো।
মেরিন: একি নামছেন কেন?
নীড় চুপচাপ ১টা দোকানের ভেতর ঢুকে কিছু নিয়ে আবার গাড়ি start দিলো।
.
৩০মিনিটপর….
নীড় আবার ব্রেক মারলো। নামলো। মেরিনকে কোলে করে মেরিনকেও নামিয়ে গাড়ির ওপরে বসালো। এরপর সেই ব্যাগটা নিয়ে এসে মেরিনের পাশে বসলো। এরপর ওটা untie করার পর মেরিন দেখলও যে এটা ১টা বড়সরো ice bag…
মেরিন: কি হয়েছে আপনার ? আপনি ঠিক আছেন তো?
নীড় কিছু না বলে ২টা কুলফি বের করলো।
নীড়: নাও ধরো। খাও।
মেরিন: what? এতো রাতে ice cream ? আপনার যে ঠান্ডা লেগে যাবে? জ্বর চলে আসবে যে।
নীড়: আসবেনা। আর এটাকে কুলফি বলে। আমার অভ্যাস আছে। আর আসলেও ২জনেরই আসবে।
মেরিন : আমার আসলে আসুক…. আপ.
নীড় মেরিনের মুখে কুলফি ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : কোনো কথানা। খাও।
মেরিন: আপনি always এই ice cream খান? এই down market? অসুস্থ হয়ে যাবেন তো…
নীড় কিছু না বলে গাড়ির ওপর শুয়ে পরলো। এরপর ১টানে মেরিনকে বুকে জরিয়ে নিলো।
নীড়:কোনো কথা না। চুপচাপ কুলফি খাও আর তারা দেখো।
মেরিন: ….
নীড় : আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো এভাবে কিছু মুহুর্ত পার করার । নীরাকে নিয়ে আসতে ভয় করতো। ওর সাথে একটু close হয়ে বসা মানেই ওর উটকো romance এর প্যারা উঠতো । মামনির করা নির্দেশ ছিলো যেন বিয়ের আগে লিমিটে থাকি। যদি এ সময়ে ওর সাথে time spend করতে আসতাম তাহলে হয়তো ও situationটা negative বানিয়ে দিতো।
মেরিন : অবাক হলোম… আপনার কাছেও তাহলে নীরা কখনো negative হয়? strange ….😱…
মেরিনের কথা শুনে নীড় মুচকি হাসি দিলো। মেরিন বুঝতে পারলো নীড় ওর কথায় একটু কষ্ট পেয়েছে…
মেরিন: নীড়…
নীড় : বলো…
মেরিন: কিছুনা।
বলেই নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: কি হলো?
মেরিন: ঘুম পাচ্ছে।
নীড়: তাহলে চলো বাসায়….
মেরিন: উহু… এখানেই এভাবে ঘুমাবো।
.
পরদিন…
নীড় মেরিনকে খাইয়ে
দিচ্ছে।
নীলিমা মনে মনে: যাক আমার ছেলেটার তবে আক্কেল হয়েছে।
নিহাল; ওই মহিলা আমার মামনি-বাবার দিকে নজর দিচ্ছো কেন?
নীলিমা: huh… তুমি জীবনে আমাকে খাইয়ে দিয়েছো?
নিহাল : তুমি কখনো আমাকে এতো ভালোবেসেছো?
নীলিমা: না। এতোদিন তো পর পুরুষের সাথে সংসার করলাম।
নিহাল: তাই ই মনে হয়…🙃😜😏
নীড়-মেরিন হেসে দিলো ।
দাদুভাই: আমরাও কি একটু join করতে পারি….
সবাই ঘুরে দেখলো দাদুভাই আর কবির দারিয়ে আছে। মেরিন দাদুভাই বলে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: দাদুভাই তুমি কেমন আছো?
দাদুভাই: ভালো। আমার দিদিভাইটা কেমন আছে?
মেরিন: ভালো। ☺️।
কবির:ভালো আছো মামনি?
মেরিন: excuse me… কে আপনার মামনি? আপনার মামনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরছে। no worry মরবে না। i guarantee ….
কবির: ….
নীড়: বাবা ভালো আছো?
কবির: হামম ।
মেরিন: দাদুভাই চলো ওপরে চলো।
নীলিমা: কেনরে?বোস এখানে…
মেরিন: না গো মামনি… পবিত্র যমযম পানির ধারে কাছে কি আর নর্দমার পানি থাকতে পারে? চলো দাদুভাই…
মেরিন দাদুভাইকে নিয়ে ওপরে গেলো।
.
নিজের রুমে নিয়ে দাদুভাইকে বসিয়ে তার কোলে মাথা রাখলো । আর দাদুভাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই: দিদিভাই….
মেরিন: হামম।
দাদুভাই: অনেক তো হলো বদলা বদলা খেলা…
মেরিন: তুমিও কি এখন বারন করবে?
দাদুভাই: না দিদিভাই। আমি তো বলছিলাম এই এদের জগত থেকে অনেক দূরে চলে যাই। যেখানে কেবল তুমি আর আমি থাকবো । আর বাকী সবাই হবে অচেনা।
মেরিন: যাবো দাদুভাই…. ১বার আম্মুকে আর দীদাকে খুজে পাই… এরপর যাবো । নীড়কে আরেকটু ভালোবেসে নেই। এরপর তুমি আমি দীদা আম্মু …. আমরা ৪জন অননননেক দূরে চলে যাবো। যাওয়ার আগে যে আমার মায়ের গায়ের দাগ মুছতে হবে। সেটাই তো প্রধান কাজ।
আরো ১টা আবদার আছে আমার, আমারই ভাগ্যের কাছে। যাওয়ার আগে নীড়ের নিশান নিয়ে যাওয়ার। যা নিয়ে আমি আমার বাকী জীবন পার করতে পারবো।।
দাদুভাই: ততোদিনে দেরি না হয়ে যায়।
.
নীড় ওদের সব কথা শুনে নিলো। আসলে ও ওদেরকে ডাকতে এসেছিলো। এসে এগুলো শুনে ফেলল।
নীড় মনে মনে: কোথাও যেতে দিবোনা তোমাকে…. আমার ভালোবাসার বাধনে বেধে রাখবো তোমায় আজীবন। আমি নিজেকে নিজে কথা দিলাম.. যতোদিন বেচে আছি ততোদিন তোমাকে নিজের থেকে দূরে করবো না । আর না তোমাকে দূরে যেতে দিবো কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। তোমার মাকে তো পাতাল থেকে হলেও আমি খুজে আনবো। তবে তার আগে আমার তোমার সত্য জানা জরূরী….
.
কিছুদিনপর…
নীড় : hello দাদুভাই…
দাদুভাই: বলো ।
নীড় : ভালো আছো?
দাদুভাই: হামম।
নীড়: তুমি কি এখনো আমার ওপর রেগে আছো?
দাদুভাই: রাগ না করার মতো মহান কোনো কাজ তো করোনি। করেছো?
নীড়: sorry দাদুভাই….. তবে এরপর থেকে চেষ্টা করবে যেন আমার জন্য তুমি আর hurt না হও…..
দাদুভাই: দেখা যাবে।
নীড় : দাদুভাই… আমি কি তোমার সাথে একটু দেখা করতে পারি?
দাদুভাই: কেন?
নীড়: please দাদুভাই….
দাদুভাই: হামম। কবে?
নীড় : কাল….?
দাদুভাই: হামম। কোথায়?
নীড় : আমি কালকে তোমাকে পিক করে নিবো।
দাদুভাই: হামম।
.
পরদিন…
নীড় দাদুভাইকে নিয়ে ১টা নিরিবিলি জায়গায় গেলো। যেখানে কেউ নেই।
দাদুভাই : এখানে আমাকে নিয়ে এলে যে… আমাকে আটকে রেখে মেরিনের কাছে divorce নেবে?
নীড়: ….
দাদুভাই: কি হলো? বলো…
নীড়: না।
দাদুভাই: তাহলে?
নীড়: জানতে চাই….
দাদুভাই : কি?
নীড়: মেরিনের অতীত….
দাদুভাই: কেন?
নীড় : বলোনা….
দাদুভাই : যেদিন জানার যোগ্যতা অর্জন করবে সেদিন বলবো।
নীড় : দাদুভাই please ….
দাদুভাই: বললাম তো.. যেদিন যোগ্যতা অর্জন করবে সেদিন বলবো ।
নীড় : যদি বলি আমি মেরিনকে ভালোবাসি তবুও বলবেনা…
দাদুভাই: ভালোবাসো? তুমি না নীরাকে ভালোবাসতে…. নীরা ধোকা দিয়েছে বলে মন মেরিনে এলো। যদি আবার নীরা ফিরে আসে ক্ষমা চায় তবে তো আবার মেরিনকে ফেলে নীরার কাছে চলে যাবে….
নীড় : যদি বলি সারাজীবন মেরিনকেই ভালোবাসবো….
দাদভাই : impossible ….
নীড় : তোমাকে যদি বলি সেদিন নীরার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করতে গিয়েছিলাম মানবে?
দাদুভাই : না…
নীড়: ভালো। যাই হোক । শেষবারের মতো ভালোভাবে জিজ্ঞেস করছি… মেরিনের অতীত বলবে কি বলবে না?
দাদুভাই: না….
নীড় : মেরিন ঠিকই বলে। ভালো ভাবে বলা কথা কারো মাথাতেই ঢোকেনা।
বলেই নীড় গান বের করে দাদুভাইয়ের মাথায় ঠেকালো। এরপর ১টা বাকা হাসি দিলো ।
.
দাদুভাই : তুমি যেটা করছো ভেবে করছো? মেরিন তোমাকে যতোটা ভালোইবাসুক না কেন তোমার এই কাজ কখনোই মেনে নেবেনা। তোমার কপালে কি আছে সেটা তুমি জানোনা…
নীড়: আমার কথা তোমার ভাবতে হবেনা। তুমি নিজের কথা ভাবো। যে তুমি মেরিনকে কি জবাব দিবে।
দাদুভাই: মানে?
নীড় : মানে…..
বলেই নীড় গানটা নিজের মাথায় ঠেকালো।
নীড় : কি ভেবেছিলে? তোমাকে shoot করবো? না…
নিজেকে করবো। মেরিন নিঃসন্দেহে তোমাকেই বেশি ভালোবাসে। কিন্তু ঘটনার জন্য তো জবাব তোমায় দিতেই হবে । good bye..
নীড় just trigger press করবে তখনই দাদুভাই
বলল: থামো… তোমার কিছু হলে মেরিন মরে যাবে। বলছি আমি….
নীড় : সত্যি?
দাদুভাই: হামম।
নীড় বাকা হাসি দিলো। আর দাদুভাইকে জরিয়ে ধরলো।
দাদুভাই : বসো….
নীড় বসলো।
.
দাদুভাই: আজকের মেরিন আর ১২ – ১৩
বছর আগের মেরিনের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য… সেই মেরিন যতোটা হাসতে পারতো ততোটা হয়তো আর কেউ পারতো না…. সেই সাথে ভীতুও ছিলো প্রচুর। সকলের আদরের সকলের ভালোবাসার মেরিন ছিলো। মা-বাবার ১টা ছোট্ট পরী ছিলো। বাবার princess মায়ের দুষ্টু পরী ছিলো।কবির তো মেয়ের মুখ দেখে সকালে চোখ মেলতো। আর কবির-কনিকার ভালোবাসা তো ছিলো উদাহরন দেয়ার মতো। কবিরের মা কনিকাকে ভীষন আদর করতো। আমিও। সেতু আর কনা মায়ের মধ্যে কখনো কোনো ভেদাভেদ করিনি। আর কনা? ও তো ছিলো মাটির মেয়ে। আল্লাহ হয়তো ওকে নিজের হাতে বানিয়ে ছিলো। মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর। আর আচার-ব্যাবহার… ওর মতো অমায়িক খুব কম মানুষই হয়ে থাকে। এমন কোনো ভালো গুন অবশিষ্ট নেই যা কনার মধ্যে ছিলোনা। আর অন্যদিকে সেতু। এমন কোনো খারাপ গুন নেই যা ওর মধ্যে ছিলো না। infact এখনো আছে। অথচ কনা-সেতু ২জনকে কিন্তু একই শিক্ষা দিয়েছি। কনা সেতুর থেকে ৫-৭ বছরের ছোট ছিলো। সেতু ছিলো চালাক আর কনা ছিলো বুদ্ধিমতী।
.
সেতু কনাকে বরাবরই হিংসা করতো। যেটা আমাদের অজানা ছিলো। ও লুকিয়ে কনাকে অনেক torture করতো। কিন্তু কনা আমাদের কাউকে কিছু না বলে সব মুখ বুঝে মেনে নিতো। ১দিন কবির দেখে ফেলে। কবির অন্যায় সহ্য করতে পারতোনা। তাই আদরের ছোটবোনকে শ্বাসন করে। এতে সেতুর রাগ আরো বেরে যায়। তবুও নিজের রাগটাকে চেপে রাখে। মেরিন হওয়ার আগে নীরা বাড়ির একমাত্র মেয়ে বাবু ছিলো। আমাদের খান বাড়িতে মেয়েদেরকে বেশি আদর করা হয়। নিলয়ও আদর পেয়েছে। কিন্তু নীরা বেশি। মেরিন হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা ভালোবাসা ওর ঝুলিতে যেতো । এমনটা নয়যে নীরাকে কম আদর করা হতো । কিন্তু ওদের এটা মনে হতো যে নীরাকে কম আর মেরিনকে বেশি ভালোবাসা হয়। ১দিন কিছু official কাজে আমি দেশের বাইরে যাই। ১টা বড় সরো project এর জন্য। আর এসে দেখি আমার সাজানো সংসার তছনছ।
.
শুনেছি কনা নাকি কোথাও লুকিয়ে যেতো। কবির জিজ্ঞেস করলে বলতো সময় এলে বলবো। একটুকু বিশ্বাস রাখো। কবির কনাকে অনেক ভালোবাসতো। তাই কিছু মনে করেনি। কিন্তু হঠাৎ ই ১দিন কনার সাথে রনক নামের ১জনের সাথে কিছু আপত্তিকর ছবি ভাইরাল হয়।
রনক এটাও দাবি করে যে মেরিন ওর সন্তান। রনক আরো বলেছে যে কনার সাথে আরো অনেকের অবৈধ সম্পর্ক আছে। এসব কথার সত্যমিথ্যা যাচাই কবির করেনি। যা নয় তাই বলে কনিকাকে । কনিকা বারবার কেবল এটাই বলেছিলো আমি নির্দোষ। বিশ্বাস করো আমি নির্দোষ। কিন্তু কবির এমন সব কথা বলে যে কনা বাধ্য হয় বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। যখন এসব ঘটছিলো তখন কবিরের মা নাসিম নাসিমা নাকি বাসায় ছিলোনা। মাজারে গিয়েছিলো।
.
আমি বাড়ি ফিরে কনাকে পাইনি। দেখি নাসিম কবিরকে অনেক বকছে। নাসিম বলছিলো যে
: আমি জানি কনামা কেমন … ওর সত্যতার প্রমান আমি দিবো। ও আমার শিক্ষায় শিক্ষিত। ওর ওপর আমি নিজের থেকে বেশি বিশ্বাস করি। ওর সত্যতার প্রমান আর ওকে না নিয়ে আমি নাসিমা খান এই খান বাড়িতে ফিরবোনা।
এই বলে সকল বাধা উপেক্ষা করে নাসিম বেরিয়ে যায়। আর ফেরেনি….. আর মেরিনের ওপর শুরু হয় সেতু-নিলয়-নীরা আর নীরার বাবার অমানবিক অত্যাচার। সেই সাথে কবিরের অবহেলা। বাবা বলে কবিরের কাছে যেতো। কবির মেরে ধরে সরিয়ে দিতো তবুও বাবা বলতে পাগল মেরিন বারবার কবিরের কাছে যেতো। কতো বলতাম যেওনা যেওনা তবুও যেতো।
.
দেখতে দেখতে মেরিন ১৩ বছরের হয়ে গেলো। নিলয় ছিলো তখন ২৩ বছরের। রোজ রাতেই মেরিন মা-বাবার ছবি বুকে জরিয়ে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পরতো। এমনই ১দিন মেরিন ঘুমিয়েছিলো । তখন নিলয় মেরিনের সাথে ….
ছোট্ট মেরিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিলয় বেশ এগিয়ে যায়। কোনো রকমে মেরিন ১টা চিৎকার দেয়। আমি পাশের রুমেই ছিলাম। ছুটে যাই। বাচাই মেরিনকে। এতো বড় অন্যায় করেছিলো নিলয়। তবুও দোষ হয়েছিলো ছোট্ট মেরিনের। ও নাকি উষ্কেছিলো নিলয়কে। ওরা কেউ নিলয়কে কিছুই বলেনি। কবিরও মেরিনকেই কথা শোনায়। আমি নিলয়কে পুলিশে দেই। কিন্তু কবির বের করিয়ে আনে। সেদিনের আগে তো মেরিন তবু ঘুমাতো। কিন্তু সেদিনের পর থেকে মেরিন রাতে ঘুমাতে ভুলে যায়।
ভয় পায় ঘুমাতে…
সারাক্ষন ভয়ে ভয়ে থাকতো। নিলয়কে তো দেখলে ভয় পেতোই। এমনকি ওর নাম শুনলে, ওর ছায়া দেখলেও ভয় পেতো। infact আজকের মেরিনও নিলয়ের উপস্থিতিতে ভয় পায়। কারন কাচা বয়সে যে ভয়টা ওর মধ্যে ঢুকেছিলো সেটা আজও রয়ে গেছে।
যাই হোক ওকে নিয়ে আমি নিউইয়র্ক চলে যাই। ভেঙে আবার নতুন করে গরে তুলি। ওর যখন ১৯বছর বয়স তখন আসি। কিন্তু সেই ১৩ বছসের মেরিন আর ১৯বছরের মেরিনের মধ্যে ছিলো আকাশ পাতাল পার্থক্য। নতুন মেরিন ভালোবাসার না ঘৃণার। যার কোনো ভয় নেই। যার অপর নাম ভয় আর ঘৃণা।
এতোকিছুর পরও আজকের মেরিন রাতে ঘুমাতে ভয় পায়। কারন নিলয় আর সেদিনের সেই রাত। যেদিন আমার কোলে মাথা রাখতো সেদিন হয়তো ২-১ ঘন্টার জন্য ঘুমাতো। তোমার সাথে বিয়ের পর হাজার অপমানিতো হলেও ১টা বিষয় ভালো হয়েছে। সেটা হলো ও রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে….
এই মেরিনের অতীত….
নীড় : দাদুভাই… তোমাকে আজকে কথা দিলাম যে ঘৃণার মেরিন কে আমি আবার ভালোবাসার মেরিন বানাবো….
চলবে…………………
ঘৃণার মেরিন
পর্ব ১৮
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় বাসায় এসে রুমে ঢুকে দেখে মেরিন নেই ।
নীড় : গেলো কোথায়? মেরিন… মেরিন…
নীড় খুজতে লাগলো মেরিনকে। দেখে রান্নাঘরে মেরিন রান্না করছে। নীড় গিয়ে দুম করে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
.
মেরিন : কি হলো? 😒।
নীড়: কতোক্ষন ধরে ডাকছি…. সারা তো দিবে….
মেরিন: কি লাগবে? বলুন দিচ্ছি…
নীড়: তোমাকে লাগবে…
মেরিন আর জবাব না দিয়ে চুপচাপ কাজ করতে লাগলো। নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করে লাভ হলোনা। তাই আর চেষ্টাও করলোনা।
নীড় : কি রান্না করছো?
মেরিন: আমার মাথা…. এখন ছারুন।
নীড়: ছারুন ছারুন করছো কেন? নিজে যখন জরিয়ে ধরো তখন….
মেরিন : আর ধরবোনা। হইছে? এখন তো ছারবেন?
নীড় : মানে কি হ্যা মানে কি? ধরবেনা কেন? ও হ্যা ঠিকই তো। ধরবে কেন? আমি তোমাকে জরিয়ে ধরবো।
বলেই নীড়ের মেরিনের ঘাড়ে কিস করলো।
মেরিন বেসামাল হয়ে গেলো। আর ক্যাচ করে হাত কেটে গেলো।
কিন্তু কোনো আওয়াজ করলোনা। কারন এতোটুকু কেটে যাওয়া ওর কাছে কিছুইনা এখন। পানি ভরতি পাত্রে হাত ডুবিয়ে রাখলো। আর অন্য হাত দিয়ে রান্না করতে লাগলো।
.
নীড় তো নিজের কাজেই ব্যাস্ত। মেরিনের ঘাড়ে মুখ গুজে আছে। মেরিন ১হাতেই কোনোরকমে কাজ করছে। ১টা servant হঠাৎ করে চলে এলো । তার হাতে চায়ের কাপ ছিলো। নীড়-মেরিনকে দেখে হাত থেকে পরে গেলো। আর নীড়ের হুশ ফিরলো। servant লজ্জা পেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।
নীড় : আজব পাবলিক…. romance কর…. একি তোমার হাত কাটলো কি করে?
মেরিন: এমনিতেই….
নীড়: দেখি আসো ব্যান্ডেজ করে দেই।
মেরিন: লাগবেনা। পরে করে নিবো। কাজটা শেষ করে নেই।
নীড় কোনো কথা না বলে কাধে তুলে মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো। হাতে ব্যান্ডেজ করতে লাগলো । আর বকতে লাগলো। নীড়কে দেখে যে কেউই বুঝবে যে মেরিনের কাটা হাত দেখে ওরই বেশি কষ্ট হচ্ছে। মেরিন নীড়কে দেখছে। মেরিন দুম করে নীড়ের ঠোটে কিস করে দিলো। এরপর অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো। নীড় মুচকি হাসি দিলো।
.
কিছুদিন পর….
নীরা সুস্থ হলো। ওকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো।
নীড় : আমরা airport কেন এলাম বলবা?
মেরিন: কাউকে welcome জানাতে….
নীড়: তোমার কাজ সত্যিই অদ্ভুদ।
মেরিন: আমি জানি।
নীড় : কাকে welcome জানাতে এসেছি সেটা তো বলবে…?
মেরিন: সামনে তাকান বুঝে যাবেন….
নীড় সামনে তাকালো। দেখলো নীরা হেটে আসছে । সাথে ৬-৭জন গার্ড।
নীড় : নীরা….
মেরিন: your love…
নীড় : তু….
মেরিন দৌড়ে গিয়ে নীরাকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: আপু….
নীরা তো অবাক সেই সাথে হয়ও পাচ্ছে প্রচুর । মেরিন এতো নরমাল ব্যাবহার করছে। এরমানেই ঝামেলা আছে।
মেরিন : thanks god… যে তুমি ঠিক আছো… সুস্থ আছো। তুমি না বাচলে যে আমার নীড় uffs…. তোমার নীড়ও…
তোমার বিরহে তো নীড় পাগল হয়ে গেছে… সত্যি একেই বলে ভালোবাসা। যে ভালোবাসা কখনো আমায় দিয়ে হবেনা। আমার তো বন্দুক ঠেকানো ভালোবাসা…
উনি তোমাকে মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছে। এমন ভালোবাসা আর কোথাও পাবেনা । যাও গিয়ে নতুন করে জীবন সাজাও।
মেরিনের কাহিনি নীড়ের মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। তবে মেরিন যে অভিমানে সব করছে সেটা বেশ বুঝতে পারছে। মেরিন নীরার হাত টেনে এনে নীড়ের হাতে দিলো। এরপর ওদের হাতে ১টা envelope দিলো।
মেরিন : এটাতে switzerland এর tickets আছে। এটা আপনাদের জন্য আমার gift… honeym…. uffs pre-honeymoon এর…. all the best… bye….
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলে নীড় ওকে টেনে নিজের কাছে আনলো।
নীড়: এসবের মানে ক….
আর বলতে পারলোনা। মেরিন নীড়ের ঘাড়ে ১টা injection মেরে দিলো। নীড় জ্ঞান হারালো।
.
৩ঘন্টাপর….
দেখলো ও ১টা রুমের মধ্যে আবদ্ধ। বেশ বড় রুমটা। সাথে attached kitchen & washroom ও আছে। পাশ ফিরে দেখে নীরা শুয়ে আছে । নীড় লাফ দিয়ে ওখান থেকে সরে এলো। তখন নীড় কারো হাসির শব্দ পেলো। কিন্তু কাউকে পেলোনা।
মেরিন : কি খুজছেন? আমাকে? পাবেন না… খু….ব শখ না আপনার আমাকে ফেলে নীরার কাছে যাওয়ার? ওর সাথে থাকার…
নিন থাকুন। যতোদিন ইচ্ছা থাকুন…
আপনার ইচ্ছা পূরন না করে পারি….
নীড় : ইচ্ছা পূরন? আমার আরো কতো ইচ্ছা ছিলো। পূরন করেছিলে…
মেরিন : আপনাকে মুক্তি দেয়ার তো… সেটা তো সম্ভব না। তবে ১টা offer কিন্তু দিয়েছিলাম… আমার আম্মুকে যদি খুজে বের করেন তবে আপনাকে মুক্তি দিবো।
নীড় : ….
মেরিন : whatever … আপনাকে ভালোবাসি। কিন্তু ভুলের শাস্তি দিবোনা এটা ভাবা ভুল।
enjoy your punishment …. মানে pre-honeymoon..
নীড়: ভুল করলে মেরিন… পস্তাতে হবে তোমায়… ভালোভাবে বলছি আমাকে এখান থেকে বের করো….
মেরিন :না করলে?
নীড় : তুমি কিন্তু ভালো মতোই আমকে চেনো।
মেরিন : শাস্তি দিবেন? মেরিনের জন্য আর নতুন কোনো শাস্তি নেই।
bye….
.
একটুপর…
মেরিন রুমটার camera on করলো। কিন্তু on হচ্ছেনা।
মেরিন: মানে কি?
মেরিন ফুটেজ দেখতে লাগলো। দেখলো নীড় ক্যামেরার সামনে এসে ঠাস করে ভেঙে দিলো। মানে ভাঙতে নিলো। ভাঙার পর তো আর দেখা যায়না। 😅।
মেরিন ছুটে গেলো। আসলে ও তো পাশের রুমেই ছিলো। দেখলো দরজা ভাঙা। আর নীরা হাত-পা-মুখ বাধা অবস্থায় আছে। সেই সাথে থাপ্পরের দাগ। আর মাথা ফেটে রক্তও বের হচ্ছে । দেয়ালে রক্ত দেখলো । যার মানে দেয়ালে নীড় নীরার মাথা ফাটিয়েছে। কিন্তু কোথাও নীড় নেই। মেরিন নীরার চুলের মুঠি ধরে
বলল: আমার নীড় কোথায়? বল আমার নীড় কোথায়?
নীরার এমনিতেই হাল খারাপ। তারওপর মুখ বন্ধ। উত্তর দিবে কি করে?
মেরিন : কথা বলছিস না কেন? জন….
জন… জন দৌড়ে এলো।
মেরিন: নীড় কোথায়?
জন: দেখিনি ম্যাম…
মেরিন: কেন চুরি করতে গিয়েছিলে…. stupid … এটাকে নজরে রেখো।
বলেই মেরিন নীড়কে খুজতে বেরিয়ে গেলো। পাগলের মতো খুজতে লাগলো নীড়কে। পেলোইনা । লোক লাগিয়ে দিলো চারিদিকে লোক লাগিয়ে দিলো নীড়কে খোজার। কিন্তু পেলোনা।
.
৩দিনপর….
নীড়ের কোনো খবর নেই। মেরিন তো পাগল প্রায়। খাওয়া-দাওয়া-ঘুম সব বন্ধ। অসুস্থ হয়ে পরেছে মেরিন।
মেরিন : কেন সেদিন এমন করলাম… কেন এমন শাস্তি দিলেন আমায়…. আমি….
তখন নীলিমা পাগলের মতো দৌড়ে এলো।
নীলিমা : নীড় ফিরেছে….
মেরিন কথাটা শুনে এই শরীর নিয়েই দৌড়ে নিচে নামলো। গিয়ে দেখে নীড় দারিয়ে আছে । ছুটে গিয়ে নীড়কে জরিয়ে ধরলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।
মেরিন: কেন আমাকে ছেরে গিয়েছিলেন? কেন কেন কেন? এতো বড় শাস্তি কেন দিলেন? 😭 । আর কখনো আমি এমন করবোনা। আপনি কেন বোঝেন না…. কেন চলে গেলেন… আমাকে মারতেন বকতেন.. কথা দিন আর কখনো আমাকে ছেরে যাবেন না please …
নীড় বুঝতে পারলো মেরিনের মনের হাল। তাই নীড়ও মেরিনকে শক্ত জরিয়ে ধরলো।
নীড় : যাবোনা….
মেরিন : promise ….
নীড় : promise …
নীড় মেরিনের মাথায় চুমু দিলো। মেরিন নীড়কে ছারলো। কিন্তু ছেরে যেই নীড়ের পিছে নজর গেলো মেরিনের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলো। কারন কনিকা-নাসিম দারিয়ে আছে। মেরিন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। ও ধীর পায়ে কনিকার দিকে এগিয়ে গেলো। কনিকার মুখে হাত বুলিয়ে দিলো। না মেরিন আর মেনে নিতে পারলোনা। অজ্ঞান হয়ে গেলো। কবির মেরিনকে ধরতে এলে নীড় বাধা দিলো। ধরতে দিলোনা। সবাই হাজার চেষ্টা করেও মেরিনের জ্ঞান ফেরাতে পারলোনা। শেষে ডক্টর তপুকে ডাকা হলো। নীড়ের তপুকে সহ্য হয়না। কিন্তু তপুই মেরিনের treatment এর জন্য better …. তাই ওকেই ডাকলো। তপু চেক করলো।।
তপু: কতোবার বলেছি ওকে tension free রাখতে…. ওকে চাপ না দিতে…. খেতে দেননা ওকে নাকি? এরপর ওর কিছু হলে আর আমাকে ডাকবেন না।
বলেই তপু চলে গেলো।
.
রাতে….
১টা বাজে….
নীড়ের চোখ লেগে এসেছিলো… তখন নীড় শুনতে
পেলো : আম্মু….
নীড় তারাতারি চোখ মেলল। দেখল মেরিন চোখ মিটমিট করছে। আর চোখ বেয়ে পানি পরছে…
নীড় : মেরিন….
মেরিন : আম্মু…
নীড় নিহালকে ফোন করলো।
ফিসফিস করে বলল : বাবা…. মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে। মামনিকে বলো যে আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসে।
নিহাল : হামম।
নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। কিছুক্ষন পর সবাই রুমে ঢুকলো।
.
কনিকা মেরিনের পাশে বসলো। এরপর নিজের কোলে মেরিনের মাথাটা নিলো। এরপর মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।
কনিকা : আম্মুই… ও আম্মুই…. আম্মুইরে…. দেখো সোনাবাচ্চা আম্মু এসেছি। দেখো ছোট পাখি। আম্মুই টা…. ও আম্মুইটা….
মেরিন কানে সব শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু চোখ মেলতে ইচ্ছা করছেনা। ভয় করছে। যদি চোখ মেলে আর কনিকাকে না পায়।
কনিকা : আম্মুই… দেখো না… ও মা টা…
মেরিন ধীরে ধীরে চোখ মেলল। উঠে বসলো। দুচোখ ভরে মাকে দেখতে লাগলো। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে। কনিকা মেয়ের চোখের পানি মুছে দিলো। মেরিন কনিকাকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো। আর কনিকাও কাদতে লাগলো।
মেরিন : কেন আমাকে একা ফেলে চলে গিয়েছিলে ? কেন এই নষ্ট পৃথিবীতে আমার থেকে আলাদা হলে… কেন আমায় সাথে করে নিয়ে গেলেনা… কেন নিয়ে গেলেনা…
কেউ আমাকে ভালোবাসেনা আম্মু…. আদর করেনা … সবাই ঘৃণা করে… আমিও আমাকে ঘৃণা করি… তুমিও কি আমায় ঘৃণা করবে আম্মু… আম্মু আমি পচা হয়ে গেছি…
তোমার আম্মুই পচা হয়ে গেছে… খারাপ হয়ে গেছে… তুমিও কি আমাকে ঘৃণা করবে? আমাকে আদর করবেনা? ও আম্মু… ও আম্মু… আম্মুরে…
জানো বাবাও না আমাকে ঘৃণা করে… আগের মতো আদর করেনা, কোলে নেয় না, খাইয়েও দেয় না…
জানো বাবা কি বলে… বাবা বলে আমি নাকি তার মেয়ে না… আম্মু তুমি না বলতে আমি নাকি বাবার মতো হয়েছি….
আমার চোখ নাক ঠোট পাপড়ি কপাল … সব বাবার মতো…
তুমি না বলতে রাগও করি বাবার মতো…
হাসিও বাবার মতো…
তাহলে বাবা কেন ওই কথা বলে…
জানো আরো কি বলে…
বলে আমি নাকি পাপের ফসল…
আরো কি বলে জানো… বলে আমি নাকি তোমার মতো। চরিত্রহীনা…
জানো আম্মু… এগুলো শুনলে আমার না ভীষন কষ্ট হয় এগুলো শুনলে…
মনে হয় কেউ বুকের ওপর ছুড়ি চালাচ্ছে।
ও আম্মু বাবাকে বলোনা যেন এমন কথা আর না বলে…
আমার ভীষন কষ্ট হয়…. বলবে বলো…
ও আম্মুরে… বলোনা বলবে…. বলোনা… বলবে…
কনিকা কাদতে কাদতে
বলল : হ্যা বলে দিবো… শান্ত হও মা। কান্না থামাও বাচ্চা… আর কেউ তোমাকে ঘৃণা করবেনা…. তোমার বাবাও আবার তোমাকে আদর করবে….
কাদতে কাদতে ১পর্যায়ে মায়ের বুকেই ঘুমিয়ে পরলো মেরিন।
কনিকাও সারারাত মেয়েকে বুকে নিয়েই পার করলো।
.
রাত পার করতে করতে অতীতের বাকী অংশ জেনে আসি।
{{{
কনিকা কোনোরকমে নিজের পরিবারের সূত্র জানতে পেরেছিলো। তাই তার গভীরে যাচ্ছিলো। যেটা শুনে সেতু যা তা বলছিলো। তাই নিজেই গোপনে সত্য খুজতে লাগলো। নাসিমকে ছারা কাউকে বলেনি… যদি বাকীরা মজা নেয়। যদি বলে এতিমের আবার নিজের পরিচয় জানার স্বাধ। সেই সত্যের সন্ধানে যেতো। অথচ যেই সেতুর ভয়ে কথাটা কনিকা গোপনে রেখেছিলো সেই সেতুই সুযোগ বুঝে কবিরের কান ভরেছিলো। মিথ্যা ছবি, মিথ্যা প্রমান সব বের করেছিলো। কবিরও বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলো। সেতু এটাও প্রমান করেছিলো যে মেরিন রনকের ছেলে। তবে মেরিনের নামে খান বাড়ির সব সম্পত্তি থাকায় মেরিনকে সাথে নিতে বাধা দিয়েছিলো কনিকাকে…
কবির কনিকাকে মেরিনের কসম দিয়েছিলো যেন কনিকা আর কখনো ওদের সামনে না আসে। আসলে মেরিনের মরা মুখ দেখবে। তাই কনিকা এতোদিন কারো সামনে আসেনি। নাসিম যখন মাজার থেকে এসে সব শুনলো তখন কনিকাকে খুজতে বেরিয়ে গেলো। কিন্তু নিলয় এসে তাকে আটক করে ফেলল। তাই সেও আর ফিরলোনা।
}}}
.
পরদিন…
মেরিনের ঘুম ভাঙলো । দেখলো ও মায়ের বুকে।
কনিকা : good morning বাচ্চা…
মেরিন : আম্মু…..
নীড় : বলি হলো মা-মেয়ের ঘুম হলো…?
কনিকা-মেরিন পিছে ঘুরলো।
নীড় : good morning…
কনিকা : good morning …
নীড় : তারাতারি fresh হয়ে নাও ২জন… আধাঘন্টার মধ্যে press conference আছে…
২জন অবাক হলো।
মেরিন : press conference ?
নীড় : হামম। hurry up…
একটুপর press conference হলো। সেখানে সবার সামনে কনিকার গায়ে মাখা কালির দাগ মুছে দিলো নীড় । সেই সাথে বেরিয়ে এলো কনিকার আসল পরিচয়। কনিকা হলো মাহমুদ বংশের মেয়ে।
.
কিছুক্ষনপর…
সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে। কিন্তু মেরিন নেই। নীড় মেরিনকে খুজছে। সিড়ির দিকে তাকালো। দেখলো off-white রঙের ১টা শিফনের শাড়ি পরে চুল গুলো ছেরে দিয়ে নামছে। শাড়িতে চিকন গোল্ডেন রঙের পার। কোনো সাজ নেই। কেবল নাকে নাকফুল কানে দুল, হাতে চুরি, গলায় ছোট্ট ১টা চেইন। হাতে ১টা envelopeও আছে। নীড় সেটা নিয়ে মাথা ঘামালোনা। কারন ও মেরিনকে দেখতে ব্যাস্ত। বউ বউ লাগছে। মেরিনের মুখে ১প্রশান্তির হাসি । মেরিন এসে নীড়ের সামনে দারালো। নীড় বসা থেকে উঠে দারালো।
মেরিন হাসি দিয়ে বলল : ধন্যবাদ…
নীড় : !!!
মেরিন : খামটা আপনার জন্য। ধরুন…
নীড় ধরলো।
মেরিন: খুলে দেখুন।
নীড় খুলল। ভেতরের কাগজটা পড়ে সাংঘাতিক ক্ষেপে গেলো। কারন এটা divorce paper ..
ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
চলবে………………….
ঘৃণার মেরিন
সমাপ্তি পর্ব ১৯
সিজন ২
Mohona Chowdhuri
নীড় ঠাস করে থাপ্পর মারলো। সবাই তো হা।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন: আপনার মুক্তি…
নীড় : মানে মেরিন কখনো কিছু ভোলেনা…. হতে পারি খারাপ কিন্তু আপনাকে ভীষন ভালোবাসি। আপনাকে মুখে বলা কথাই আমার জন্য অনেক। তারমধ্যে আপনাকে ছুয়ে কথা দিয়েছি। সেটার বরখেলাপ কি করে করি…. আপনি মুক্তি চেয়েছেন তাই আপনাকে মুক্তি দিবো…
.
নীড়ের মনে পরলো সেই রাতের কথা যেদিন মেরিন ওকে ছুয়ে কথা দিয়েছিলো যদি নীড় কনিকাকে খুজে আনে তবে মেরিন নীড়কে মুক্তি দেবে। মানে divorce … নীড় ভেবেছিলো ওটা কেবলই আবেগের প্রলাপ ছিলো। ভুলেই গিয়েছিলো কথাটা।
মেরিন : ক্ষমা চাইছি কালকেই কথাটা পূরন করতে পারিনি। আমি signature করে দিয়েছি… আপনার যোগ্য কাউকে খুজে নেবেন। যাকে আপনি ভালোবাসেন। আর যে আপনাকে ভালোবাসে…. মেরিন চোখ নামিয়ে কথা গুলো বলছে। তাই নীড়ের ভয়ংকর রাগী চোখ ২টা দেখেনি… কথাগুলো বলেই মেরিন যেই নীড়ের দিকে তাকালো। আর চমকে উঠলো।
নীড় : বলা শেষ?
মেরিন: হামম। আরেকটা কথা… ক্ষমা। জানি আমি ক্ষমার অযোগ্য। তবুও ক্ষমা চাইছি। আমাকে please ক্ষমা করে দেবেন।
নীড় আর কোনো কথা না বলে মেরিনকে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।
.
নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে আছে । আর মেরিন নিচে দিকে। কারন নীড়ের দিকে তাকানো এখন সম্ভব না।
নীড়: আমার দিকে তাকাও….
মেরিন: ….
নীড় : তাকাতে বলেছিনা….
নীড় মেরিনের গাল চেপে মাথা ওপরে তুলল।
নীড় : আমার মুখটা কি আর ভালো লাগছেনা… যে নিচের দিকে তাকিয়ে আছো….
মেরিন: ….
নীড় : কথা বলছো না কেন?
মেরিন: ভালো লাগলে কি হবে? আর তো দেখতে পারবোনা এই ভালোলাগার মুখ।
নীড় : কেন দেখতে পারবিনা কেন? বল দেখতে পারবিনা কেন?
মেরিন : কারন di….
আর বলতে পারলোনা নীড় মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো।
.
একটুপর….
নীড়: আরেকবার divorce এর d ও উচ্চারন করলে কি করবো নিজেও জানিনা।
বলেই divorce paper টা টুকরো টুকরো করে আগুনে পুরিয়ে দিলো।
নীড় দেখলো মেরিন চুপচাপ দারিয়ে আছে। আর স্থির চোখে পুরে যাওয়া দেখছে।
নীড় : কি হলো ? কথা বলছোনা কেন?
মেরিন : কখনো দেখেছেন বর্ষা শেষে বন্যার ধংব্সলীলা… আমি এখন বর্ষা শেষে সেই স্থির বন্যা, শান্ত বন্যা… যেমনটা আপনি বলেছিলেন সেদিন,,, যেমনটা চেয়েছিলেন…
নীড় : আমি বর্ষা শেষে শান্ত বন্যা চাইনা….
আমি গ্রীষ্মের শুরুতে আগমনী বন্যা কেই চাই।
যার কথা ভেবেই শুরু হয় আতংক। যার আরেক নাম ভয়…
মেরিন : ভুল করলেন না তো … সারাজীবন কিন্তু বোঝা নিয়ে বেরাতে হবে….
নীড় : কি বললা? তুমি আমার বোঝা?
মেরিন: হামম। বোঝা। এখন পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে
নীড় : 🤬।
নীড় কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন : যায় জ্যোতি যায় যাক না জীবন… ছারবো না তোরে…
কি ভেবেছিলেন মিস্টার চৌধুরী…. আপনাকে আমি মুক্তি দিবো। ঘৃণার মেরিন আমি… ঘৃণা থেকে কখনো মুক্তি পাওয়া যায়না। আমার দাদুভাইকে kidnap করে আমার অতীত জেনেছেন…
আমার আম্মুকে ফিরিয়ে এনেছেন…
কেন করেছেন জানিনা বুঝি?
ভালোবাসেন আমাকে…
কিন্তু বলছেন না… 😒..
ভালোবেসেছি আপনাকে…. কি করে আপনাকে ছারতে পারি…. নিঃশ্বাস আপনি আমার এই কথার তীর তো কেবল আপনার মুখে ভালোবাসি শোনার জন্য । আর ৩দিন দূরে থাকার শাস্তি।
হায় কি রাগ…. আজকে সাদা শাড়ি পরেছি আজকে কি রক্ত দিয়ে রং খেলা ঠিক হবে?
তখন জন ফোন করলো ।
মেরিন: hello …
জন: ম্যাম… সেতু-নীরাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা….
মেরিন : what?
জন: yes… mam…
মেরিন: যেভাবেই হোক ওদের খুজে বের করো…
.
বিকালে….
দাদুভাই : নিহাল…
নিহাল : জী স্যার…
দাদুভাই: কিসের স্যার? কাকা ডাকো….
নিহাল: ok… কাকা…
দাদুভাই : আমি আমার নাতনিকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি?
নিহাল : হ্যা কাকা… কিন্তু ১বার নীড় এসে নিক…
দাদুভাই : নীড় কখন আসবে জানিনা… এখন নিয়ে গেলাম। দাদুভাই আসলে বলো যে আমি নিয়ে গেলাম।
.
খান বাড়িতে…..
কনিকা মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে। কবির দূর থেকে দেখছে । খুব ইচ্ছা হচ্ছে স্ত্রী সন্তানের সাথে বসে কিছু মুহুর্ত পার করার। কিন্তু অপরাধবোধের জন্য ওদের সামনে যেতেই সাহস পাচ্ছেনা।
.
রাতে….
মেরিন মাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। কিন্তু ঘুম হচ্ছেনা। গতরাতে তো কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু আজকে কিছুতেই ঘুম আসছেনা। নীড়কে ছারা… অথচ কতো ইচ্ছা ছিলো মায়ের বুকে ঘুমাবে। খেয়াল করে দেখলো কনিকা কাদছে। কনিকা মনে করেছিলো মেরিন ঘুমিয়ে পরেছে। কান্নার আভাস পেয়ে মেরিন ধরফরিয়ে উঠলো।
মেরিন : আম্মু তুমি কাদছো কেন?
কনিকা: কই না তো…
মেরিন: বললেই হলো। বলো কাদছো কেন?
কনিকা: sorry রে মা…. তোমার জীবনটা নষ্ট করে ফেলেছি, সুন্দর করে সাজাতে পারিনি… কিছুই করতে পারিনি…. ক্ষম…
মেরিন: এই… পাগল নাকি? কি বলছো কি? তোমার কোন দোষ নেই আম্মু… দোষ ওই
সেতু, আর কবির খানের… ওদের ২জনের আমি এমন হাল করবো… ওই কবির খানকে তো আমি এমন মৃত…..
কনিকা : না মা অমন কথা বলেনা… সে তোমার বাবা…
মেরিন : বাবা my foot…
কনিকা : মামনি আমি জানি কবির তোমার অপরাধী । আমারও অপরাধী … কোনোদিনও ক্ষমা করতে পারবোনা…. কিন্তু তাই বলে…. মামনি খুন করা কি ঠিক ? কারো জীবন নেয়া যে হারাম…. তারওপর সে তোমার বাবা….
মেরিন : আম্মু বাদ দাও তো…
কনিকা : মামনি…. কবিরকে আমি ঘৃণা করি… কিন্তু ও তোমার বাবা… পিতার হত্যাকারী খেতাব পেতে দিতে পারিনা….
মেরিন : আম্মু তুম…
কনিকা : কথা দাও তুমি কবিরের কোনো ক্ষতি করবেনা…
মেরিন : আম্মু তুমি ওই লোকটাকে বাচাতে চাইছো…?
কনিকা: না মা… আমি তোমাকে ভালোবাসি…. জানি সে অনেক আঘাত দিয়েছে তোমাকে…..
মেরিন : আমার থেকে কয়েক গুন বেশি কষ্ট তোমাকে দিয়েছে। তবুও তুমি ওই লোকটাকে ক্ষমা করে দিলে…
কনিকা : কে বলেছে ক্ষমা করেছি…. যে লোকটা আমার জীবনের ১২টা বছর কেরে নিয়েছে। সেই লোকটাকে ক্ষমা… যে আমার বাচ্চাটার জীবনটা বিষিয়ে দিয়েছে তাকে ক্ষমা করবো? কোনোদিনও না…
কনিকা কান্না করতে লাগলো। মেরিন মাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে ঘুম পারালো । এরপর বারান্দায় গিয়ে দারালো।
.
মেরিন : তোমার চরম শাস্তির সময় ঘনিয়ে এসেছে মিস্টার কবির ফয়সাল খান… শুধু ১বার তুমি ক্ষমা চাও আমার মামনির কাছে… এরপর দেখো আমি তোমায় কেমন ক্ষমা দেই? সেই সময়টার অপেক্ষা যেদিন তুমি ক্ষমা চাইবে? কিন্তু সেতু আর নীরা কোথায় গেলো? ও…
তখন কেউ পেছন থেকে হঠাৎ ওর মুখে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলো । এরপর হাত বেধে কাধে তুলে নিয়ে কোথাও যেতে লাগলো।
.
গাড়িতে…
গাড়িতে বসিয়ে মেরিনের চোখের বাধন রাখা হলেও মুখের বাধন খুলে দেয়া হলো। মেরিন মোচরা মোচরি করছে।
মেরিন : নীড় ভালো হচ্ছেনা কিন্তু..
নীড় : …
মেরিন: চুপ থাকলে লাভ হবেনা কিন্তু। আমি জানি এটা আপনি…
নীড় মেরিনের চোখের বাধন খুলে দিলো। ২জনের চোখই রাগে লাল হয়ে আছে।
২জন একসাথে
বলল : এসবের মানে কি?
মেরিন : আপনার সাহস কিভাবে হয় আমাকে এভাবে তুলে আনার?
নীড় : তোমার সাহস কিভাবে হয় আমাকে না বলে এই বাসায় আশার?
মেরিন : মানে? মেরিন বন…
নীড় : জানি জানি ….
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কোনো কাজ কারো অনুমতি নিয়ে করেনা….
নীড় : wait wait… মেরিন বন্যা খান মানে?
মেরিন : মেরিন বন্যা খান মানে মেরিন বন্যা খান ।
নীড়: তোমার কি আমার থাপ্পর খেয়ে মন ভরে না? মেরিন বন্যা খান নামে এখন কেউ নেই। মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী আছে।
মেরিন : ….
নীড় : চুপ কেন?
মেরিন : বাসায় যাবো… আমার হাত খুলে দিন….
নীড়: 🙄।
মেরিন : কিছু বলেছি তো…
নীড় : শুনেছি তো… 😏।
মেরিন : ধ্যাত…
নীড় : আচ্ছা আমি তোমাকে বাসায় রেখে গেলাম শাড়ি পরা এখন আবার এই অবাঙালি পোশাক কেন?
মেরিন : mind your own business ..
নীড়: সেটাই করছি…
.
একটুপর…
নীড় গাড়ি থামালো। ১টা বাড়ির সামনে। এরপর কোলে করে মেরিনকে ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো।
মেরিন : এটা কার বাড়ি?
নীড়: তোমার জামাইর। মানে তোমার ।
মেরিন : 😒…
নীড় মেরিন ১টা রুমে নিয়ে নামালো। এরপর ১টা লাল টুকটুকে শাড়ি হাতে ধরিয়ে দিয়ে
বলল: যাও এটা পরে আসো।
মেরিন: এই রাত সারে ১২টা বাজে আপনি আজিরা পেচাল পারছেন?
নীড় : হ্যা। পরবে কি পরবেনা?
মেরিন: না।
নীড় : তুমি কি কোনো কথাই ১বারে শুনতে পারোনা?
মেরিন : না। আর এই শাড়ি আপনি গিয়ে নীরাকে দিন।
নীড় : আরেকবার নীরার নাম নিলে খবর আছে। শাড়িটা পরে নাও ।
মেরিন :না বলেছিনা।
নীড় বাধ্য হয়েই নিজেই মেরিনকে শাড়ি পরিয়ে দিলো। এরপর সাজিয়ে দিলো। ভীষন সুন্দর লাগছে মেরিনকে। এরপর আবার মেরিনকে কোলে তুলে গাড়িতে বসালো। কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে দিলো। মেরিনের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
.
কিছুক্ষন পর আবার গাড়ি থামলো । নীড় মেরিনকে গাড়ি থেকে নামালো। হাতের বাধন কিছুটা হালকা করলো।
নীড় : দারাও … আসছি….
বলেই নীড় চলে গেলো। মেরিন গুতাগুতি করতে করতে হাতের বাধন খুলে ফেলল।
মেরিন মনে মনে: হালকাই তো ছিলো। তাহলে এতোক্ষন খুলতে পারলাম না কেন?
এরপর চোখের বাধন
টা খুলবে আর ঠিক তখনই গিটারের আওয়াজ পেলো। ১টানে চোখের বাধন খুলল। আর দেখলো সামনে আলোর মেলা সেই সাথে গোলাপের পাপড়ির তেরি করা পথ। পথের কিনারা দিয়ে আছে প্রদীপ…. মাথার ওপর পূর্নিমার চাদের আলো। নদীর স্নিগ্ধ বাতাস। মাতাল করা গিটারের সুর…
🎶🎵🎶
সারারাত ভর…
চোখের ভেতর
স্বপ্নে তোমার আনা গোনা..
নেমে আসে ভোর
থাকে তবু ঘোর…
হাওয়ায় হাওয়ায় জানাশোনা
তুমি দেখা দিলে তাই মনে
জাগে প্রেম প্রেম কল্পনা…
আমি তোমার হতে চাই
এটা মিথ্যে কোনো গল্পনা…
🎶🎵🎶….
মেরিন একেবারে নীড়ের সামনে এসে পরেছে । চারিদিক সুন্দর করে সাজানো। সাদা গোলাপ দিয়ে। সামনে ১টা ভ্যানিলা কেক রাখা। নীড়কেও অনেক সুন্দর লাগছে। কালো shirt-pant… চুল স্পাইক করানা।। নরমাল। বাতাসে উরছে। গান শেষ করে নীড় মেরিনের সামনে এসে ১হাতে মেরিনের কোমর জরিয়ে সামনে এনে অন্যহাত দিয়ে ওর মুখের ওপর থেকে চুল সরিয়ে মেরিনের কপালে চুুমু দিয়ে
বলল: happy anniversary আমার বউটা….
.
মেরিন অবাক হলো এটা জেনে যে নীড়ের মনে ছিলো।
নীড় : অবাক হলে? কি ভেবেছো আমার মনে নেই?
মেরিন : ….
নীড় : চলো কেক কাটি।
২জন কেক কাটলো। ২জন ২জনকে wish করলো। আবার নীড় হাওয়া হয়ে গেলো। পরক্ষনেই আবার ঝরের বেগে এলো। ১গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে। হাটু গেরে বসলো…
নীড়: হয়তো তোমার মতো কখনো ভালোবাসতে পারবোনা। কারন মেরিনের মতো ভালোবাসার ক্ষমতা কারো নেই….
তবে আমি আমার সবটুকু দিয়ে তোমাকে ভালোবাসবো । কখনো কোনো অভিযোগের সুযোগ দিবোনা। যতোদিন বেচে আছি… পাশে থাকবো । ১টা কথাই বলতে চাই…
তুমি আমার
ঘৃণার মেরিন না ।
ভালোবাসার মেরিন….
১টা সুযোগ দিবে…. please ….
তোমাকে ভালোবাসার…
মেরিন নিজের চোখ আর কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা…. নীড়কে জরিয়ে ধরেকাদতে লাগলো।
নীড় : আরে পাগলি কাদছো কেন?
মেরিন : i love you.. love you… love you… love you a lot…
নীড় : & i love you too….
মেরিন : কখনো আমাকে ছেরে যাবেন না… please …
নীড় : মাথা খারাপ না পাগল … আমি তো আজীবন আমার বউটার সাথে থাকবো। কথা দিলাম….
.
কিছুদিনপর…
চৌধুরী বাড়িতে…
মেরিন: কাহিনি কি বলো তো? কি লুকাচ্ছো?
নীড় : কোথায় ? কিছু নাতো…
মেরিন: কিছু তো আছে ঘাপলা…
নীড় : জান তুমি কি আমার ওপর সন্দেহ করছো…
মেরিন : ধ্যাত কি যে বলো না। আচ্ছা শোনো… আজকে ওই বাসায় যাবো কিন্তু।
নীড় : আচ্ছা…
বলেই নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো।
নীড় মনে মনে : জান… ঘাপলা তো করছি… কিন্তু প্রমান না পেলে তো আর সম্ভব না। কালকেই সব clear হবে। ইনশাল্লাহ।
বিকালে ওরা খান বাড়িতে গেলো।
.
পরদিন….
কনিকা কাজ করছে….
নীড় office এ। মেরিন রুমে বসে অফিসের কাজ করছে। দাদুভাই-দীদা বসে চা খাচ্ছে। কবির অনেক সাহস জুগিয়ে কনিকাকে ডাক দিলো।
কবির : কনা…
কনিকার সময় ওখানেই থেমে গেলো। কতোদিন পর সেই ভালোবাসার ডাক…. কিন্তু কনিকা আবেগকে প্রশ্রয় দিলোনা।
কবির : একটু কথা বলতে চাই…
কনিকা যেন শুনতেই পায়নি।
কবির : শোনো না please …
মেরিন : কি শুনবে আপনার কথা? আরো কোনো অপবাদ-অপমান শোনা বাকি আছে কি?
কবির: …
মেরিন: কি হলো এখন চুপ কেন? ১২বছর ধরে যাকে দুনিয়ার সব বাজে বাজে কথা বলেছেন আজকে তার সাথে আরো কথা আছে? যার জীবন থেকে আপনি ১২টা বছর কেরে নিয়েছেন তার সাথে কথা বলতে চান? যাকে ঘৃণা করে এসেছেন , যার অস্তিত্বকে ঘৃণা করে এসেছেন তার সাথে কথা বলতে চান? যাকে কখনোই ভালোইবাসেন নি তার সাথে কথা বলতে চান? আসলে আপনি just আম্মুর রুপের মোহয় পরে বিয়ে করেছিলেন….
কবির : মেরিন….
কবির মেরিনকে থাপ্পর মারার জন্য হাত তুলেও নামিয়ে নিলো।
মেরিন: নামালেন কেন? মারুন আমাকে…. কসম আল্লাহর ওই হাত কেটে কুকুরদের খাওয়াবো….
তখন ওখানে নীড় এলো ।
কবির: হামম। খাওয়াবেই তো। আচ্ছা তুমি তো সবাইকে শাস্তি দাও… মেরেও ফেলো। আমাকে দিলেনা কেন? মারলেনা কেন?
মেরিন : দিবো তো শাস্তি… আগে সেতু আর নীরাকে খুজে বের করে নেই। ওদেরকে ওদের পাওনা বুঝিয়ে নেই… আপনার চোখের সামনে ওদেরকে নৃশংস্র ভাবে খুন করে নেই। এরপর..
নীড় : খুন হওয়াদের আর কি খুন করবে মেরিন….
মেরিন পিছে ঘুরলো।
.
মেরিন: একি তুমি? কখন এলে?
নীড় : মাত্র।
মেরিন : যাও fresh হয়ে নাও…
নীড় : হবো… তার আগে কিছু কাজ আছে। সেটা complete করতে হবে….
মেরিন: মানে?
নীড় : খুব সহজ… সেতু আর নীরা আর বেচে নেই। মরে গেছে। খুবই বাজে ভাবে মরেছে…
মেরিন: মরে গেছে? অসম্ভব… ওদের মৃত্যু এভাবে হতে পারেনা।
নীড় : কিন্তু হয়েছে। গতকালই । জানতে চাও ওদের মৃত্যু কিভাবে হয়েছে? ওদের হাত-পা প্রথমে আগুনে পুরে দেয়া হয়েছে। পরে সেগুলোতে আবার ঔষধ দেয়া হয়েছে। এরপর আবার পোরানো হয়েছে। এরপর একটু ঔষধ লাগিয়ে তাদেরকে কুমির ভরা পুকুরে ছেরে দেয়া হয়েছে। ক্ষনিকের মধ্যেই ২জনের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে।
মেরিন:কি? কে করলো এমন?
নীড়: তোমার সামনে দারিয়ে আছে।
মেরিন: মানে?
নীড় কবিরের সামনে গিয়ে কবিরের কাধে হাত রেখে বলল : বাবা….
দাদুভাই, দীদা ,কনিকা,মেরিন, জন তো অবাক।
মেরিন: কি বলছো কি? আজেবাজে কথা বন্ধ করো..
নীড় : আজেবাজে কথা বন্ধ না। সেতু-নীরা-নিলয়কে যতোটা তুমি ঘৃণা করো তার থেকে অনেক বেশি ঘৃণা বাবা করে।
মেরিন: stop nonsense….
নীড়: না… আমি একদম ঠিক বলছি… সব গল্পেরই এপিঠ ওপিঠি থাকে। বাবার সত্যটা কেউ জানোনা।
মেরিন: সত্য?
নীড়: হ্যা সত্য… আচ্ছা মেরিন তোমার মনে কি কখনো এই প্রশ্নটা আসেনি যে বাবা যদি আম্মুকে ভালোইনাবাসতো, যদি ঘৃণাই করতো তবে ২য় বিয়ে কেন করেনি? ১২ টা বছর কেন একাই কাটিয়ে দিলো।
বাকীরা সবাই ভাবলো : হ্যা তাই ই তো….
নীড় : কারন হলো বাবা কেবল আর কেবল আম্মুকেই ভালোবাসে।
মেরিন: নামের ভালোবাসা… দাদুভাইয়ের ভয়ে করেনি…
নীড় : seriously ? কবির ফয়সাল খানের মতো ১জন talented & educated business icon চাইলেই নিজে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন না? পারতেন। কিন্তু ইচ্ছা করেই কিছু করেননি?
মেরিন:…
নীড় : আমি জানি তুমি আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসো। কিন্তু হঠাৎ যদি আমি কিছুদিন ধরে তুমি আমাকে না জানিয়ে কোনো কাজ করো। like না বলে কোথাও যাওয়া, late করে ফেরা…. আমার কি খটকা লাগবেনা? বাবার তো তবুও কখনোই সন্দেহ হয়নি। কিন্তু যদি কোনো স্বামী কারো সাথে তার স্ত্রীর অমন ছবি দেখে এমনকি এটা জানতে পারে যে সন্তানটাও তার না…তখন সেই স্বামীর মনের অবস্থা কেমন হতে পারে? সব মিলিয়ে কি তার রাগ করাট জায়েজ নয়? তার মনের অবস্থা কি হতে পারে? অমন অবস্থা নিয়ে ঠিক ভুল বিবেচনা করা যায়?
সবাই:….
নীড়: তুমি যে আমায় এতো ভালোবাসো , তবুও যদি আমার এমন কিছু জানতে পাও তবে ওই মুহুর্তে তুমি কিভাবে react করবে?
মেরিন :….
.
নীড়: ১২ বছর আগে বাবা সেদিন আম্মুকে অনেক অপমান করেছিলো ঠিকই। কিন্তু যখন মাথাটা ঠান্ডা হলো তখন বিষয়ের গভীরে যায়। প্রমান পেয়েও যায় সত্য। কিন্তু সেই সাথে এটাও জানতে পারে যে দীদা ওদের কব্জায়। তাই ওদের কিছু বলতে পারেনা। ওদের সাথে মিলে থাকার নাটক করে। দীদাকে আমি পেলেও আম্মুর খোজ বাবার জন্যেই পেয়েছি।
মেরিন : মিথ্যা কথা…. সব মিথ্যা….
নীড় : না। সব সত্য। বাবা আজও আম্মুকে ভালোবাসে। আর তোমাকেও…
মেরিন: ক…
নীড় : কোনো কথা না। আগে আমার কথা শোনো….
জন…
জন: জ স্যার….
নীড় : ১টা কথা বলো তো মেরিনের under এ তো তুমি কাজ করো । but মেরিনের under এ কাজ করার জন্য তোমাকে কে কাজ করতে বলেছে? কে তোমাকে মেরিনের ছায়া হয়ে থাকতে বলেছে ? কে তোমাকে মেরিনের সাহায্য করতে বলেছে?
জন:…
নীড় : বলো…
জন: জানিনা স্যার.. তার সাথে কেবল আমার ফোনে কথা হয়। আর মাস শেষে salary দেয় …।সে বলেছে যে করেই হোক আমি যেন ম্যামকে একা না ছারি… আলাদা না ছারি…. যেন সবসময় রক্ষা করি…
নীড় : সে পুরুষ না মহিলা?
জন: পুরুষ….
নীড় : সবাই জানতে চাও সে কে? সে এই কবির ফয়সাল খান…. হ্যা মেরিনের সাথে সে খারাপ ব্যাবহার করেছে। আর সেসবের জন্যেই আজ মেরিন the মেরিন হতে পেরেছে। স্বর্নকে পুরিয়ে যেমন খাটি করা হয় তোমনি কষ্ট পেয়ে মেরিন… বন্যা হতে পেরেছে….. জানতো যে বাবা নিজে মেরিনকে save করতে পারবেনা। দাদুভাইয়েরও বয়স হয়েছে। তাই মেরিনের strong হওয়ার দরকার ছিলো। সে কারনেই….
মেরিন : …
নীড় : ৫বছর আগে তোমার car accident হয়েছিলো। তোমাকে রক্ত দিয়ে কে বাচিয়েছিলো জানো? বাবা….
মেরিন: …
নিহাল : আরো আছে…
সবাই পিছে তাকালো। দেখলো নিহাল-নীলিমা দারিয়ে আছে।
.
নিহাল মেরিনের সামনে গিয়ে ওর মাথায় হাত রাখলো।
বলল : ভাবির সত্যিটা কবির আমাকে আরো আগেই বলেছে। সব সত্যই বলেছে। কারন সেদিন আমি তোমাকে বাজে কথা বলেছিলাম…. আমাকে কবির বলেছিলো যেন আমি তোমাকে বাবার ভালোবাসা দেই। তুমি ভালোবাসা কাঙাল কিন্তু যেন পলকেই পরিবর্তন না হই তাহলে তুমি বুঝে যাবে…. তুমি কবিরের দুনিয়া… কবিরের হাতে দেখো । তোমার প্রতি জন্মদিনে ও নিজেকে আঘাত করেছে। যার চিহ্ন আজও রয়ে গেছে। তুমি তোমার বাবার ঘৃণার মেয়ে নও…. ভালোবাসার….
মেরিন: মিথ্যা… মিথ্যা …মিথ্যা। সব মিথ্যা। সবাই মিথ্যাবাদী। সবাই খারাপ….
বলেই মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। নীড়ও পিছে ছুটলো। গাড়ি নিয়ে মেরিনের পথ আটকালো। এরপর মেরিনের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন: আমার পথ ছেরে দাও নীড়…
নীড়:ছারবোনা…. গাড়ি থেকে নামো…
মেরিন : আপনি সরবেন কি না?
নীড় : না।
মেরিন : না সরলে কিন্তু….
নীড় : কিন্তু… আমার ওপর দিয়ে চালাবে?
মেরিন: ….
নীড়: আমার ওপর দিয়ে চালাবে? বলো….
মেরিন : ….
নীড় : চালাও…
মেরিন : …..
নীড় : কি হলো…. চালাও…
মেরিন মাথা নিচু করে বসে রইলো।
নীড় : নামো…
মেরিন: ….
নীড় : নামতে বলেছি কিন্তু…..
মেরিন নেমে এলো। নীড় মেরিনের কাধে হাত দিয়ে হাটতে লাগলো।
নীড় : সত্য থেকে না পালিয়ে সত্যে মোকাবেলা করতে কবে শিখবে? তোমার, আম্মুর জীবন থেকে যেমন ১২ বছর হারিয়ে গেছে তেমনি বাবার জীবন থেকেও। please accept this….
মেরিন : আমি যে বাবার সাথে অনেক খারাপ ব্য…
নীড় : সবটাই সময়ের দোষ ছিলো….. চলো আবার নতুন করে জীবনটা শুরু করি।
নীড় মেরিনকে নিয়ে বাসায় ফিরলো। বাবা-মেয়ের মিল হলো। মেরিন কবিরকে বুকে জরিয়ে কাদতে লাগলো। কবিরও এতো বছর পর মেয়েকে বুকে জরিয়ে কাদতে লাগলো। সব সমস্যা মিটে গেলো। মেরিনের জীবনও স্বাভাবিক হয়ে গেলো।
.
কিছুদিনপর….
নীড় office থেকে এসে দেখে মেরিন টেবিল calendar এর পাতা উল্টাচ্ছে।
নীড় : কি করছে আমার বউটা?
মেরিন: তোমার ভাগ্য গননা….
নীড় : ভাগ্য গননা?
মেরিন: হামম।
নীড় : মানে?
মেরিন: দেখি দেখি তোমার কপালে কি লেখা?
নীড়:😒।
মেরিন: উফফ…
চুলগুলো সরাও না…
নীড়:🙄🙄।
মেরিন: অলস কোথাকার? আমি সরিয়ে দিচ্ছি… মেরিন সরিয়ে দিলো।
মেরিন: 😱🤭।
নীড়: কি হলো?
মেরিন: তোমার কপালটা তো ভীষন ভালো গো।
নীড় মেরিনের কাধে হাত রেখে নাকে নাক ঘষে
বলল: তোমার মতো বউ পেলে তো সবারই কপাল ভালো হবে?
মেরিন: তাই বুঝি? তোমার কপাল আরো বেশি ভালো হতে চলেছে। আজ থেকে ঠিক ৯মাস পর ১টা ছোট্ট নীড় আসতে চলেছে…. যার নাম হবে নির্বন….
নীড়: মান…. সত্যি? 😍😍…
নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে ঘুরতে লাগলো।
নীড়: উহুহু… আমি বাবা হতে চলেছি..thank u আল্লাহ thank u জান… its the best gift in my life… i just love you…
খবরটা শুনে খান বাড়ি চৌধুরী বাড়িতে ধুম পরে গেলো। মেরিনের জীবন থেকে সকল ঘৃণার অবসান ঘটলো।
— সমাপ্ত —
সিজন ৩
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 1
writer : Mohona
.
মেরিন : আপনি তো সারাজীবন আমার কাছে ভালোবাসার নীড়ই থাকবেন… কিন্তু আমি কখনোই আপনার কাছে ভালোবাসার মেরিন হবোনা। চিরকাল ঘৃণার মেরিন ই থাকবো । আপনি চাইলেও আমাকে ভালোবাসতে পারবেন না। আপনি যতোবার আমাকে ভালোবাসতে চাইবেন ততোবারই আপনাকে ঘৃণার কারন দিবো…
আপনি আমাকে ভালোবাসতে চাইবেন পারবেন না।
৭বছর বিনা দোষে জেল খেটেছি। ছেলেবেলার ৭বছর নষ্ট হয়েছে… এখন আর হবেনা।
৭দিনপর আপনার আর আমার জন্মদিন… আর ঠিক ৭দিন পরই জেল থেকে বেরিয়ে এসে দারাবো আপনার সামনে । একসাথে কেক কাটবো।
বলেই চোখ মারলো। এরপর হাতকরা লাগানো হাতজোরা নীড়ের মাথা ওপর দিয়ে ঢুকিয়ে নীড় মাথা ধরে কাছে টেনে কিস করতে লাগলো । নীড় তো just shocked… পুলিশ , প্রেস , মিডিয়া বা অন্যকেউ ছারাতে আসবে কি এমন সিন দেখে সবাই বাকরুদ্ধ। লজ্জায় পরে গেলো । নীড় যে সরাবে তার উপায় নেই। কারন মেরিনকে ধাক্কা দিতে গেলে হাতকরার জন্য মেরিনের হাতের সাথে ধাক্কা লেগে ও মেরিনের আরো কাছে চলে যাচ্ছে। মেরিন নিজের মন মতো কিস করে নীড়কে ছারলো। হাত জোরা আবার নীড়ের মাথার ওপর দিয়ে তুলে নিলো। পুলিশ মেরিনকে নিয়ে গেল…
.
.
.
৭মাসআগে…
{{{
আলোয় আলোয় ঝলমল করছে চারদিক। the best advocate in the country , advocate নিহাল চৌধুরীর একমাত্র ছেলে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের বিয়ে আলোর মেলা না বসলে কি চলে? বড় বড় শিল্পপতি সহ রাজনৈতিক নেতারাও উপস্থিত । আর কনে? none other than the মেরিন বন্যা খান। uffs… the মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । বিয়ে তো সেই ছোটোবেলাতেই হয়েছিলো । কিন্তু ছোট সময়েরর বিয়েটা বৈধ হয়না। তাই আবার নতুন করে বিয়ে।
উপস্থিত সবার কাছে বিয়েটা বেশ উৎসবমুখর । নীড়-মেরিনের বিয়ে বলে কথা । কিন্তু পরিবারের কেউ খুশি না । ২জন ছারা । আর সেই ২জন হলো শমসের খান & নিহাল চৌধুরী । হ্যা আরো ১জন আছে যার আনন্দের কোনো কিনারা নেই। সে হলো মেরিন। আর নীড় …
.
নীড় মনে মনে : কেন এমন করলে মামীমনি… কেন? তুমি তো জানো আমি তোমার কথা আমি ফেলতে পারিনা… তবে কেন? তুমি তো জানো আমি নীরাকে ভালোবাসি । ভীষন ভালোবাসি… কিন্তু তার থেকেও বেশি ভালোবাসি তোমাকে । তুমি যে আমাকে অফুরন্ত ভালোবাসা দিয়েছো … সেই তুমি কেন এমনটা করলে… আমি জানি মামিমনি তুমি নিজের ইচ্ছায় এমন করোনি । যা করেছো ওই মেরিনের ইচ্ছাতেই করেছো … ওইই কিছু না কিছু করেছে… i just hate that girl…
নীড় এসব ভাবছিলো তখন মেরিনকে স্টেজে আনা হলো । কালো রঙের লেহেঙ্গা । কালো হিরার সকল গহনা । কালো টিপ। কেবল ঠোটের লিপস্টিক ছারা সবই কালো। লিপস্টিকটা কালো। যে কারোরই চোখ ঘুরে যাবে । নীড়ও কালো শেরওয়ানি পরা । ফর্সা রঙে একেবারে ফুটে আছে । অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে । মেরিন তো নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় ১বার তাকিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নিলো। ২জনকে পাশাপাশি দার করানো হলো । ছবি টবি তোলা হচ্ছে ।
মেরিন : ভয়ংকর সুন্দর লাগছে আপনাকে ।
নীড় : …
মেরিন : আমাকে কেমন লাগছে বলবেন না?
নীড় : একদম তোমার মনের মতো । you are looking like কালো পরী… & i think you know … কালোপরী কি?
মেরিন সেই চিরঅচেনা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে
বলল : yes i know ….
.
একটুপর….
কেউ দুম করে এলো । আর সে হলো নীরা।
নীরা : stop it all this…
নীড় : জান…
নীড় যেতে নিলে মেরিন হাত ধরে ফেলে । নীড় মেরিনের হাত ঝারা দিয়ে ফেলে স্টেজ থেকে নেমে দৌড়ে নীরা কাছে গেলো । নীরা কেবল নীড়কে জরিয়ে ধরবে তখন মেরিন নীরার চুলের মুঠি ধরে টেনে দূরে সরিয়ে দিলো …
কনিকা ছুটে এসে নীরাকে জরিয়ে ধরলো ।
কনিকা : মা তুই ঠিক আছিস তো…
নীরা : হ্যা খালামনি… 😢। খালামনি এসব কি হচ্ছে… জান.. এএএসব কি? এমন বিয়ের উৎসব কেন?
মেরিন : oh… আপু… বিয়েতে তো বিয়ের উৎসবই থাকবে। তাইনা? আর এতোক্ষনে তুমি নিশ্চয়ই বুঝে গেছো যে নীড়-মেরিনের বিয়ে আবার বিয়ে…
নীরা : কি ? কেন?
নীরা নীড়ের কলার ধরে বলতে
লাগলো : কেন নীড় কেন এমন করলে … কেন কেন কেন… 😭…
নীড় : জান … প্লিজ তুমি কান্না করোনা … i can’t bear…
নীরা : মোটেও না… তুমি আমাকে ভালোবাসোনা… মোটেও না।
নীড় : i love you … i just love you…
নীরা : তাহলে কেন কেন, ওই মেয়েকে বিয়ে করলে…. বলো, বলো বলো…
নীরা নীড়ের পা ধরে কাদতে লাগলো
কনিকা : ওঠ মা ওঠ… নীড় করতে চায়নিরে… ও তো কেবল ওর মামিমনির করেছে…
আমার জন্য করেছে… হ্যা হ্যা আমার জন্য করেছে…
নীরা : মমমানে?
মেরিন : মানে বলার অনেক সময় পাবে… একটু পরই তো আমার বিদায়…তাইনা … আমি চলে যাবার পর মনের সুখে শুনে নিও … চলুন নীড় …
নীড় : don’t y…
তখন নিহাল নীড়ের কাধে হাত রাখলো ।
নিহাল : already অনেক তামাশা হয়ে গেছে । প্লিজ for god sake … যা করার যা বলার পরে… প্লিজ।
.
মেরিন নীড়ের হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো। হঠাৎ টান অনুভব করলো । ঘুরে দেখলো নীরা নীড়ের অন্যহাতটা ধরে রেখেছে। বাকা হাসি দিলো ।
মেরিন : জন… throw it to me…
জন দেরি না করে গান ছুরে মারলো । মেরিন catch ধরলো। আর ১সেকেন্ডও দেরি না করে ঠিক নীরা হাত বরাবর shoot করলো।
নীরা : আহ…
নীড় : জান…
নীড় নীরার কাছে যেতে নিলে মেরিন টেনে নিজেকে কাছে নিলো।
মেরিন : যদি ওই দিকে আরেক পা বারান তবে next bullet নীরার ঠিক heart ও লাগবে । আর হাতেই গুলি লেগেছে। মরবে না।
নীড় : ত…
মেরিন : যা বলার ভেবে বলবেন… এটার effect আপনার জানের ওপর পরবে….
নীড় আর কিছু বলল না । মেরিন নীড়কে টেনে স্টেজে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : hello dear guests … & my beloved press & media ….
এখন যেটা বলবো সেটা খুব clear নোট করুন। যেটা কালকের সব খবরের কাগজে Front page এ থাকবে। আর প্রতিটা চ্যানেলে telecast হবে।
নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কেবল আর কেবল মেরিনের … যে বা যারা আমার নীড়ের দিকে চোখ তুলেও তাকাবে আমি তার চোখ তুলে ফেলবো ।
সবাই এটা মাথায় রাখবে যে নীড় মেরিনের ভালোবাসা… মেরিনের স্বামী…
মেরিনের জীবন…
মেরিনের কলিজা…
মেরিন সব…
যে আমার কলিজায় হাত দিবে তার কলিজা বের করে নিবো …
বিদায়ের সময় মেরিন দাদুভাইকে জরিয়ে ধরলো । এরপর চৌধুরী বাড়িতে চলে গেলো ।
.
চৌধুরী বাড়িতে…
সারা গাড়িতে মেরিন নীড়ের কোলে বসে এসেছে।
গাড়ি থামলো ।
নীড় : এখন তো নামবে?
মেরিন : কোলে করেই নামান… না হলে নামবোনা…
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নামলো। দরজার সামনে গিয়ে অবাক হলো। কারন নীলিমা বরনডালা নিয়ে দারিয়ে নেই। সোফায় বসে বসে টিভি দেখছে ।
নিহাল : নীড় একটু দারাও…
নিহাল ভেতরে ঢুকলো ।
নিহাল : নীলা যাও বরনডালা নিয়ে আসো। ওরা বাইরে দারিয়ে আছে ।
নীলিমা : তো?
নিহাল : যাও বরন করো।
নীলিমা : ওই মেয়েকে আমি বরন করতে পারবোনা।
নিহাল : কেন করবে না? ও তোমার ছেলের বউ…
নীলিমা : মোটেও না… ও হলো খুনী… আমার ভাইয়ের খুনী ।
নিহাল : নীলা পুরোনো কথা বাদ দাও । যাও গিয়ে বরন করো।
নীলিমা : অসম্ভব ।
নিহাল : already অনেক কিছু হয়ে গেছে । ও কিন্তু যা তা করতে পারে…. কাজ বারিও না। ওকে ক্ষেপিও না…
নীলিমা : এগুলো কি cover up করার জন্য বলছো?
নিহাল : মানে?
নীলিমা : মানে খুব সহজ । কারন বরাবরই মেরিন তোমার প্রিয়পাত্রী… so…
নিহাল : আচ্ছা যা বোঝার বোঝো… কিন্তু এখন বরন করো। টিভি তো দেখেছোই তাইনা? আর রক্ত ঝরানোর না চাইলে যাও গিয়ে বরন ডালা সাজাও । প্লিজ…
নীলিমা গিয়ে ২টা বরন ডালা নিয়ে এলো । ১টা তো স্বাভাবিক । আর আরেকটা অস্বাভাবিক । যেটার মধ্যে আছে কয়লা , শুকনা মরিচ আর সেই সাথে আছে মানুষ মরে গেলে যে সব জিনিস লাগে যেমন : আগর বাতি, বরই কাটা না পাতা etc নিয়ে এলো।
নিহাল: ওটার মধ্যে ওসব কি ?
নীলিমা : বরন ডালা … special বরনডালা for মেরিন বন্যা খান..
তখন মেরিন দরজার ওখান থেকে চিল্লিয়ে
বলল : শাশুড়িফুপ্পি…. ভুল বললে …. মেরিন বন্যা খান নয়। মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী…
নীলিমা : 😤।
নিহাল : নিজের ছেলেকে এগুলো দিয়ে বরন করবে?
নীলিমা : না… আমি তো আমার ছেলেকে স্বাভাবিকভাবেই বরন করবো… এগুলো তো ওই খুনীর জন্য…
নিহাল : ন…
মেরিন : বাবা… let her do that…
নীলিমা নিজের ইচ্ছাই বহাল রাখলো। নীড়-মেরিন ভেতরে ঢুকলো… নীড় হনহন করে রুমে চলে গেলো। মেরিন নিহালকে সালাম করলো ।
নীলিমা : আমাকে করতে আসবিনা।
মেরিন : বেশ॥
নীলিমা : আর হ্যা ভুলেও আমাকে মা বলে ডাকবিনা। তোর মতো মেয়ের মুখে আমি এতো পবিত্র ডাক শুনতে চাইনা…
মেরিন : ফুপু ডার্লিং… “মা” word টা আমিও মুখে নিতে চাইনা। so just chill… আমি তোমারে শাশুড়িফুপ্পি বলে ডাকবো…
নীলিমা রুমে চলে গেলো।
নিহাল : মামনি রুমে গিয়ে আরাম করো।
মেরিন : ok… বাবা….
.
মেরিন রুমে গেলো । রুমে গিয়ে দেখে রুমে ১টাও ফুল নেই। কাটা আর কাটা…. এমনকি বেডেও কাটা । কাটা দিয়েও যে ঘর সাজানো যায় সেটা মেরিনের অজানা ছিলো । নীড়ের instruction অনুযায়ীই সাজানো আছে ।
নীড় : welcome to hell মেরিন বন্যা welcome to hell …
মেরিন ওর রহস্যময়ী হাসি দিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকলো । দরজাটা লাগিয়ে দিলো ।
নীড় : আমার বউ হওয়ার খুব শখ না তোমার? এবার তুমি বুঝবে আমার বউ হওয়ার মজা…
মেরিন : নীড় … এমন তো নয় যে আমি আজকে আপনার বউ হলাম…. আজ থেকে ১৩বছর আগেই আমাদের বিয়ে হয়েছিলো…
নীড় : oh just shut up… তখন তুমি ছিলে ১১বছরের আর আমি ১৫বছরের। childhood marriage … বাল্যবিবাহ। যার কোনো মানে নেই।
মেরিন : বিয়ে তো বিয়েই হয়… বিয়ে মিথ্যা হতে পারেনা ।
নীড় : হ্যাহ… বিয়ে মিথ্যা হয় কি হয় না সেটা আমি জানিনা… তবে তোমার প্রতি আমার ঘৃণা চির সত্য…
মেরিন : আর তাই বুঝি এই কাটার বাসর সাজিয়েছেন…?
নীড় : of course….
নীড় বেডের সামনে গেলো ।
নীড় : খুব শখ আমার বউ হওয়ার… আমার সাথে বাসর করার … চলো কাটার বাসর করি…
মেরিন : আপনি বললে কাটা কেন কয়লার বাসরও করতে পারি ।
anyway …
বলেই মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো ।
মেরিন : এখন আমি আপনাকে সালাম করবো… and প্লিজ সিনেমার নায়কদের মতো পিছে সরে দারাবেন না… its old fashioned…
নীড় : 😒।
মেরিন নীড়কে সালাম করলো ।
নীড় washroom এ চলে গেলে । change করে এলো । মেরিন ততোক্ষনে বেডের সব কাটা ১পাশে করে নিলো।
.
নীড় সোফায় শুতে নিলো ।
মেরিন : কি করছেন?
নীড় : ঘুমাচ্ছি…
মেরিন : সেটা আমিও দেখছি। কিন্তু ওখানে কেন?
নীড় : তো কোথায় থাকবো? তোমার সাথে ওই বেডে ? বাসর করবো তোমার সাথে…?
মেরিন : না … ঘুমাবেন… আমি আপনার বুকে মাথা দিয়ে সুন্দর করে ঘুমাবো ।
নীড় : in your dream …
মেরিন : check your phone please …
নীড় : excuse me…
মেরিন : i said check your phone … না হলে দেরি হয়ে যাবে । পরে আফসোস করলেও লাভ হবেনা।
নীড় চেক করলো। দেখলো ১টা ভিডিও প্লে করলো। দেখে নীড় ভয় পেয়ে গেলো । কারন ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে যে …
কনিকা , সেতু আর নীরাকে উল্টা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিচে কয়লা ।
নীড় : মামিমনি…
মেরিন : nice video । তাইনা জান…?
নীড় : you…
মেরিন : 😎।
নীড় : নিজের মায়ের সাথে এমন করতে ১টা বারও বুক কাপলো না?
মেরিন : ন্যাহ…
নীড় : অবশ্য কাপবে কেন? যে নিজের বাবাকে খুন করতে পারে অতোটুকু বয়সে সে তো সবই করতে পারে।
কথাটা শুনতেই মেরিনের মুখের রং পাল্টে গেলো । চোখ লাল হয়ে গেলো । কিন্তু ও নীড়ের সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে চায়না। তাই চোখ বন্ধ করে
বলল : আমি খুন করিনি… আর না ওটা আমার বাবা ছিলো…
নীড় : oh really …
মেরিন : পুরোনো টপিক বাদ দিন… আপনার আদরের মামিমনি , না হওয়া শাশুড়ি মা আর ভালোবাসাকে বাচাতে চান?
নীড় মোবাইলটা আছার মারলো ।
নীড় : কি করতে হবে বলো… বলো কি করতে হবে…? স্ত্রীর অধিকার দিতে হবে… intimate হতে হবে…? বলো। just tell me…
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো । মেরিন নীড়ের মুখে আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে
বলল : না জান…. এতো কিছু চাইনা… কেবল আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে চাই… আজ এবং বাকী সব রাতে…
নীড় : অসম্ভব।
মেরিন : ok… আমি জনকে বলে দিচ্ছি ওদের জাহান্নামে পাঠাতে…
নীড় : ছিঃ… কেমন মেয়ে তুমি…?
মেরিন : এমনই।
নীড় : ok… ঘুমাও আমার বুকে। তবুও ওদের মুক্তি দাও ।
মেরিন : আপনার মায়ের কসম খেয়ে বলুন… যে সবসময় আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে দিবেন?
নীড় দাতে দাত চেপে
বলল : মামনির কসম খেয়ে বলছি রোজ তোমাকে বুকে নিয়েই ঘুমাবো…
মেরিন : thats like my জান…. hello john… release them….
.
মেরিন কাটা ওয়ালা অংশে শুয়ে পরলো । আর নীড়কে fresh অংশে শুতে দিলো। যেখানে ১টা কাটাও নেই। এরপর নীড়ের ঠোটে ১টা ডিপ কিস করে নীড়ের বুকে মাথায় রেখে নীড়কে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো। মেরিনের শরীরে কাটাগুলো নিজেদের চিহ্ন বসাতে লাগলো….
.
চলবে…???
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 2
writer : Mohona
.
সকালে…
মেরিনের ঘুম ভাঙলো ।
মেরিন : আহ…
আসলে কাটাগুলোর আঘাতে মেরিন জর্জরিত… কিন্তু মাথা তুলে নীড়ের মুখ দেখে ওগুলো ভুলে গেলো । নীড়ের চোখে-মুখে-ঠোটে কিস করে উঠে গেলো । এরপর কাটাগুলো সরিয়ে ফেলল । washroom এ গেলো fresh হতে । তখন আয়নায় নিজেকে দেখলো । কাটা গুলো হাতের কয়েকটা জায়গা লম্বা চড়া আচর কেটেছে । যেটা দেখে মেরিন বাকা হাসি দিলো ।
মেরিন : চলো…একটু শাশুড়ি ফুপ্পির মাথাটা নষ্ট করি… 😉।
মেরিন short sleeve এর ব্লাউজ দিয়ে শাড়ি পরলো । এরপর নিচে গেলো ।
.
নীলিমা রান্নাঘরে রান্না করছে । মেরিন ঢুকতে নিলে
নীলিমা বলল : ওখানেই দারা। ভেতরে ঢোকার সাহস করবিনা…
মেরিন বাকা হেসে ভেতরে ঢুকলো ।
মেরিন : খানেদের সাহস যে কতোটা বেশি সেটা তোমার থেকে ভালো অন্য কেউ জানেনা । তাইনা শাশুড়ি ফুপ্পি । আর তার মধ্যে আমি হলাম মেরিন বন্যা…
নীলিমা : খুনী মেরিন বন্যা। আমার ভাইয়ার খুনী…
মেরিন : এখন তোমার ধারনা তো আর পাল্টাতে পারবোনা… so nothing to do… কি রান্না করছো? help করি?
নীলিমা : huh…
নীলিমার চোখ গেলো মেরিনের হাতের দিকে।
নীলিমা : তোর হাতে শরীরে কিসের দাগ?
মেরিন : awwwe শাশুড়ি ফুপ্পি… কি প্রশ্ন করছো ? লজ্জা করবে উত্তর দিতে। আচ্ছা তুমি তো ফুপ্পিই লাগো। বলেই দেই তোমাকে। এগুলো…
নীলিমা : shut up… বেরিয়ে যা । কাজ করতে দে আমাকে।
মেরিন : তুমি তো breakfast রেডি করেই ফেলেছো। আমি তবে সবার জন্য চা আর নীড়ের জন্য কফিটা বানিয়ে ফেলি।
নীলিমা : একদম না। তুই কিছু করবিনা।
মেরিন : ভেবে বলছো?
নীলিমা : ভাবার কি আছে…
মেরিন : ok… এই কিচেনে যদি আমি কাজ না করতে পারি তবে তুমিও পারবেনা।
বলেই মেরিন ঘি এর বয়মটা চুলার চার দিকে আর কিছুটা মেঝেতে ছিটিয়ে দিয়ে দুম করে আগুন লাগিয়ে দিলো।
নীলিমা : এটা কি করলি? নিহাল… আগুন….
নীলিমা রান্নাঘর থেকে ছুটে বের হতে নিলো । মেরিন খপ করে হাত ধরে ফেলল।
মেরিন : কোথায় যাচ্ছো শাশুড়ি ফুপ্পি? দারাও।
নীলিমা : কি করছিস কি? হাত ছার ॥আর চল বাইরে।
মেরিন : না আমি যাবোনা …
নীলিমা : পুরে মর তুই… কিন্তু আমার হাত তো ছার।
মেরিন : না ছারবোনা…
নীলিমা : কেন? এখন এতোটুকুর জন্য আমাকেও মারবি?
তখন নিহাল আর নীড় ছুটে এলো ।
নীড় : একি আগুন… মামনি…
নিহাল : নীলা…মেরিন…
নীলিমা : দেখোনা ও আমাকে পুরিয়ে মারতে চায়…
নীড় দৌড়ে গিয়ে extinguish আনতে গেলো।
নিহাল : ২জনই বেরিয়ে এসো।
মেরিন : বাবা … শাশুড়ি ফুপ্পিকে বলো যেন আমার কিচেনে আসাতে ১৪৪ধারা জারি না করে…
নীলিমা : আচ্ছা আজকের পর থেকে তুই আসবি কিচেনে। আমি আসবোনা।
মেরিন : আহা… ২জন মিলে রান্না করবো… রাজী…
নীলিমা : হ্যা রাজি…
মেরিন : god promise …?
নীলিমা : god promise …
promise করতেই মেরিন নীলিমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। নীলিমা বেশ বুঝতে পারলো যে মেরিন নীলিমাকে safely বের করেছে আর নীলিমাকে safely বের করতে গিয়ে মেরিনের পিঠে, হাতে খানিকটা আগুনের ভাপ লেগেছে । কিছু বলবে ততোক্ষনে নীড় extinguish নিয়েও এলো । আগুন নেভালো।
.
নীড় : মামনি তুমি ঠিক আছো? কোথাও লাগেনি তো?
নীলিমা : উহু…
নিহাল : মামনি তোমার লাগেনি তো???
মেরিন : না বাবা…
নীড় : ওর কেন লাগবে? ও তো নিজেই কয়লা। লাভা… যেখানে যায় দাবানল শুরু করে…
নিহাল : নীড়…
নীড় : চুপ করাচ্ছো কেন? আমার তো মনে হয় ও ই আগুনটা লাগিয়েছে…
মেরিন : হামম আমিই তো লাগিয়েছি…
নীড় : what???
মেরিন : হামম।
নীলিমা : আমি বলছি….
নীলিমা সব বলল।
নীড় : তুমি কি মানুষ?
মেরিন : না। আমি মেরিন।
নীড় : তুমি কি ভেবেছো তোমার হাতেরটা আমি বা অন্যকেউ খাবো?
মেরিন : হামম। খাবেন।
নীড় : impossible … বিষ খেতে পারি তাও তোমার হাতের ১ফোটা পানিও না ।
মেরিন রহস্যময়ী সেই বাকা হাসি দিয়ে
বলল : আমি কখনোই কাউেকে 2nd chance দেইনা। একই কথা ২য় বার রিপিট করার জন্য । আর না warning দেই। আমি rapid action এ বিশ্বাস করি। রান্নাঘরে আগুন লেগেছে… সারাবাড়িতে লাগতে কতোক্ষন। 😎।
নীড় : ত…
নীলিমা : নীড়… প্লিজ। চুপ থাকা। আপাদত ওর পাল্লা ভারী…
মেরিন : intelligent শাশুড়িফুপ্পি। যাই সবার জন্য breakfast বানিয়ে ফেলি।
মেরিন যেতে নিলো।
নীলিমা : দারা…
নীলিমা নীড়ের হাত থেকে first aid box নিয়ে burn-cream বের করে মেরিনের পিঠে আর হাতে লাগিয়ে দিলো।
নীলিমা : অবাক বা খুশি হওয়ার কিছু নেই । খান বাড়ির মেয়ে আমি । রাস্তায় পরে থাকা পশু-পাখিকেও আঘাত পাওয়া অবস্থায় দেখতে পারিনা।
নিহাল : নীলা…
মেরিন : বাবা… খান বাড়ির মেয়ে আমরা। রক্তের এবং রক্তের গ্রুপের সম্পর্ক আমাদের। তাই তোমার কাজে মোটেও অবাক হইনি আমি… আর হ্যা নীড় আমি আগুন নয় যে দাবানল করবো। আমি বন্যা… পানি… আগুনে পুরলে তো তবুও ছাই অবশিষ্ট থাকে… কিন্তু পানির কবলে তো পায়ের নিচের মাটিও অবশিষ্ট থাকেনা। পুরো অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।।।
বলেই মেরিন রান্নাঘরে গেলো।
রাতে রিসিশনের program হলো। এরপর শমসের খান নীড়-মেরিনকে খান বাড়িতে নিয়ে গেলো।
.
মেরিন : আরে বাহ… সেতু , মনির , নিলয় , নীরা… কাঙালেরা একসাথেই আছো দেখছি? দাদুভাই কাঙাল ভোজনের সময় এদেরকে খাইয়ে বিদায় করোনি। মনে হয় টাকা কম পরেছিলো। আচ্ছা আরো ৫০০ করে দিয়ে বিদায় করো ওই রাস্তার কুকুরদের…
কনিকা : মেরিন…
কনিকা : ওরে কে আমার নাম ধরে ডাকলোরে বাবা…
দাদুভাই : দিদিভাই… তুমি আর নানাভাই রুমে গিয়ে আরাম করো ।
নীড় : না নানাভাই আমি রুমে না একটু গার্ডেনে বসতে চাই ।
দাদুভাই : ভালো কথা। change করে fresh হয়ে বসো ।
নীড় : হামম।
নীড়-মেরিন ওপরে গেলো ।
কনিকা : বাবা তোমার নাতনির সাহস কি করে হয় ওদেরকে কাঙাল আর রাস্তার কুকুর ডাকার?
দাদুভাই : কুকুর কে কুকুর না তো কি বলবে? সিংহ?
কনিকা : বাবা…
দাদুভাই : হামম। এই খান সম্রাজ্ঞের রানী যখন এদেরকে কাঙাল-কুকুর বলেছে তখন সেটাই।
কনিকা : আর আমি বুঝি কেউ নই…
দাদুভাই : রানীর মা তো রাজমাতাই হয়… কিন্তু তুমি তো মাই হতে পারলেনা রাজমাতা কি করে হবে। anyway … তুমি যদি কিছু না হতে তাহলে ওই এটো চাটা কুুকুর এই বাড়িতে ঠাই পেতোনা ।
বলেই দাদুভাই servantদের কাছে গেলো । নীড়-মেরিনের খাবার দাবারের ব্যাবস্থা করতে।
নিলয় : এই bloody বুড্ঢা…
কনিকা : নিলয়…😠… সাহস কি করে বাবাকে এভাবে বলার?
নিলয় : sorry খালামনি।
মনে মন : ইশ ভাব…
.
একটুপর…
নীড় বাগানে বসে আছে । বাগানটাতে ছোট বেলার অনেক স্মৃতি মিশে আছে ওর আর মেরিনের। কতো খেলতো ২জন। ও নীলিমার কাছে রোজ নানুবাসায় আসার বায়না ধরতো। উদ্দেশ্য কেবল মেরিনের সাথে খেলা করা। হঠাৎ চোখ গেলো আমগাছটার দিকে। ওই আমগাছটা নীড়-মেরিন ২জন মিলে লাগিয়েছিলো ।
নীড় মনে মনে : কেনরে বনপাখি… কেন তুই মামাকে খুন করতে গেলি? ঘৃণা করি তোকে। আমি নীরাকে অতোটা ভালোবাসিনা যতোটা তোকে ঘৃণা করি। অনেক ঘৃণা করি তোকে বনপাখি… অনেক…
তখন কনিকা এসে নীড়ের কাধে হাত রাখলো।
নীড় : আরে মামিমনি… বসো।
কনিকা বসলো।
কনিকা নীড়ের হাত ধরে
বলল : i am sorry বাবা। আমি তোমাকে বাধ্য করেছি ওই মেয়েটাকে বিয়ে করতে। বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে অমন করিনি। ও নীরা আর নিলয়কে kidnap করিয়েছিলো । নিলয়কে অনেক torture করছিলো। আর জানোই তো আমি ওদের আর ওরা আমার কলিজা। কিন্তু আমি আমার ওই বাচ্চার কথা ভাবতে গিয়ে আমার সবথেকে আদরের বাচ্চার সাথে অন্যায় করেছি । আমি জানতাম ও কখনো তোমার ক্ষতি করবে না। আর ওর কথা না মানলে ও দাবানল করবে তাই …
নীড় : মামিমনি… don’t be guilty … আমি জানি… আমার মামিমনি কখনো কোনো ভুল করতে পারেনা…
বলেই নীড় কনিকার হাতে চুমু দিলো ।
নীড় : একি কাদছো কেন?
কনিকা : আমার সন্তানের জন্য তোমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেলো…
নীড় : মামিমনি…তোমার চোখের পানি আমার সহ্য হয়না। ত…
তখন ২জন তালির শব্দ পেলো… ২জন ঘুরলো। দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে।
মেরিন : আপনাদের heart touching story দেখে তো আমার চোখে পানি চলে এলো… তো মিসেস খান আপনি ভেতরে যান… আমি উনার সাথে ব্যাক্তিগত সময় পার করতে চাই…
নীড় : অসভ্য।
কনিকা চলে গেলো । নীড়ও চলে যেতে নিলো । কিন্তু মেরিন হাত ধরে ফেলল । কাছে টেনে এনে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
নীড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে
বলল : ঘৃণা করি…
নীড় ভেতরে চলে গেলো । মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো ।
.
হাসতে হাসতে মেরিনের চোখের সামনে সেই আমগাছের দিকে চোখ গেলো। চোখে ছোটবেলা ভেসে উঠলো ।
.
.
.
মেরিন : আমাকে ধরতে পারেনা… আমাকে ধরতে পারেনা…
নীড় : বনপাখি দারা… দারা বলছি।।
মেরিন : না না দারাবোনা। দারালেই তুমি মারবে…
নীড় : হ্যা মারবোই তো… তুই শুভর সাথে খেলতে গেলি কেন?
মেরিন : আমার কি দষ ( দোষ ) … শুভ ভাইয়া তো খেলতে ডাক দিলো… শুভ ভাইয়ারই তো দষ…
নীড় : টেনে ১টা থাপ্পর দিবো…
থাপ্পরের কথা শুনেই মেরিন ভ্যা ভ্যা করে কাদতে লাগলো…
নীড় : একি…. তুই কাদছিস কেন বনপাখি… 😢..
মেরিন : তুমিই তো থাপ্পর দিতে চাইলে…
নীড় : আরে… sorry sorry… কান্না করিসনা।
মেরিন : করবো করবো করবো…
নীড় : তোর চোখের পানি যে আমার সহ্য হয়নারে…
মেরিন : কেন কেন!!!
নীড় : সেটানা আমি নিজেও বুঝিনারে… 😔. তুই কান্না করিসনা। আমি তোকে চকোলেট দিবো।
মেরিন : সত্যি?? 😃।
নীড় : হামমম। নে ধর।
.
.
.
.
এসব ভাবছিলো তখন দাদুভাই মেরিনের কাধে হাত রাখলো ।
দাদুভাই : দিদিভাই… চলো কিছু খাবে ।
মেরিন : ক্ষুধা লাগেনি দাদুভাই। thank you দাদুভাই…
দাদুভাই : কেন?
মেরিন : এমনি… আর তুমি ভেতরে যাও তো। ভীষন ঠান্ডা পরেছে…যাও যাও।
দাদুভাই : তুমিও চলো…
মেরিন : যাও আমি আসছি…
দাদুভাই ভেতরে গেলো । মেরিন আমগাছের কাছে গেলো । হাত দিলো।
নিলয় : গাছটা তোর ভীষন প্রিয় নারে…
মেরিন নিলয়কে ignore করে চলে যেতে নিলো।
নিলয় : ভালোবাসা আর জীবন ২টাই বড় অদ্ভুদ জিনিসরে… দেখ তুই নীড়কে সবটা উজার করে ভালোবাসিস… অথচ নীড় তোকে ঘৃণা করে।
অন্যদিকে আমি… যে তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে। কিন্তু তুই… আমাকে ঘৃণা করিস… ১টা বার ভালোবেসে বিশ্বাস করে দেখ । তোর হয়ে যাবো…. তোর থাকবো। তুই যা বলবি তাই করবো… ১টা সুযোগ দে…
মেরিন নিলয়ের দিকে ঘুরলো। এগিয়ে গেলো।
মেরিন : বলা শেষ ? না আরো কিছু বলা বাকি আছে?
নিলয় : বলার তো তোকে কতো কথাই আছে। যা শেষ হবার নয়। তোকে ভীষন ভাল…
আর বলতে পারলোনা। মেরিন নিজের কোমড়ে গুজে রাখা ছোট ছুরিটা দিয়ে ঠিক নিলয়ের স্বরযন্ত্রে আঘাত করলো । গলগল করে রক্ত ঝরতে লাগলো । স্বরযন্ত্র আঘাত লাগার কারনে স্বাভাবিকভাবেই নিলয়ের গলা দিয়ে আর আওয়াজ বের হচ্ছেনা।
মেরিন : অন্যকারো মুখে ভালোবাসির থেকে আমার নীড়ের মুখে ঘৃণা করি শোনা অনেক পছন্দের আর ভালোবাসার…
আপাদত কয়েক মাস তোমার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হওয়া বন্ধ করলাম। আর কখনো তোমার মুখে আমাকে ভালোবাসার কথা শুনলে শরীর থেকে মাথাটা নামিয়ে দিবো….
বলেই মেরিন ভেতরে চলে গেলো ।
.
বাড়ির ভেতরের ঢুকতেই মেজাজ আরো বিগরে গেলো। নীরা-নীড় পাশাপাশি বসে আছে । নীড় নীরার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আসলে নীরার চুল থেকে কিছু ১টা সরাচ্ছিলো। নীড় মেরিনকে দেখে ইচ্ছা করে
বলল : জান… তোমার চুল বরাবরই আমার crush… i just love your long & silky hair… 😍।
কথাটা বলে নীড় মেরিনের দিকে তাকালো । দেখলো বাকা হাসিটা দেয়া।
মেরিন আস্তে করে ১টা কাচি নিয়ে গিয়ে ধপ করে নীড়ের কোলে বসলো।
মেরিন নীরা চুল টেনে আরো কাছে আনলো।
নীরা : আহ…
নীড় : কি করছো কি? ছারো ওর চুল ।
মেরিন ছেরে দিলো ।
মেরিন : এই চুলগুলো আপনার খুব পছন্দের না?
নীড় : হ্যা তো?
মেরিন : হাত বুলাতে ভীষন ভালো লাগে। তাইনা?
নীড় : হ্যা । তো? এখন কি আমার হাত কেটে ফেলবে?
মেরিন : না… অন্যকিছু কাটবো।
বলেই মেরিন ১ঝটকায় নীরার চুল ধরে টান দিয়ে ক্যাচ করে কেটে দিলো।
নীড় : কি করলে এটা?
নীরা : you…
বলেই মেরিনকে থাপ্পর মারার জন্য হাত তুলল । মেরিন হাতটা ঘুরিয়ে মোচর দিলো।
নীরা : আহ… ছার মেরিন…
নীড় : ছারো ওর হাত ছারো…
মেরিন : ওর হাত অনেক লম্বা হয়ে গেছে জান… দেখি খাটো করা যায় কিনা…
নীড় : i said leave …
নীড় এতো জোরে বলল যে খান বাড়ি কেপে উঠলো। মেরিন নীরা হাত মোচর দিয়ে ধরে রেখেই নীড়ের দিকে ঘুরলো । ওর হাসিই দিলো।
মেরিন : বাহ… এই না হলে মেরিন বন্যার বর… amazing ….
.
মেরিন : আর কখনো এই হাত উঠবেনা… কেবল তোর গলায় ঝুলবে নীরা…
নীরা : ছেরে দে মেরিন… আমি আর কখনো অমন করবোনা…
মেরিন : মেরিন বন্যা কখনো কাউকে ২য় সুযোগ দেয়না…
নীড় কোনো উপায় না পেয়ে মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরলো। উদ্দেশ্য মেরিনকে সরানো। এদিকে নীড়ের হাত মেরিনের কোমড়ে তো লেগেছেই সেই সাথে শাড়ির ফাকে হালকা একটু উন্মুক্ত পেটেও নীড়ের হাত লাগলো। মোট কথা নীড়ের হাত লাগতেই মেরিন কেপে উঠলো। হাতের বাধন হালকা হলো । নীড় মেরিনকে টেনে কাছে টেনে নিলো… নীরা ছুটে গেলো ।
.
((( অনেকেই বলছো যে কেন মেরিনেরই এমন সাইকো ভালোবাসা হয়? যেহেতু গল্পের নাম ঘৃণার মেরিন তাই মেরিনেরই এমন হওয়াটা স্বাভাবিক । )))
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 3
writer : Mohona
.
নীড় মেরিনের কোমড় টেনে সামনে আনলো । আর মেরিনের 4step করা চুল গুলো গিয়ে নীড়ের মুখে বাড়ি খেলে । নীড় চোখ বন্ধ করে সেই চুলের সুবাসগুলো উপভোগ করছে । আর ওর নিশ্বাসগুলো মেরিনের ঘাড়ে পরছে। মেরিন যেন নরতে চরতে পারছে । মেরিন এমন situation এর সাথে অপরিচিত…২জনই অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে । ওরা কোথায় আছে সেই খেয়ালই নেই।
সেতু : দেখি মা দেখি… আহারে হাতটা লাল করে ফেলেছে গো আমার মেয়ের… দেখ কনা দেখ…
সেতুর চেচামেচিতে নীড়ের হুস ফিরলো। ও মেরিনকে ছেরে দিলো।
.
সেতু : তুই কি কোনোদিন মানুষ হবিনা?
নীরা : মাম্মি আমার চুল…
কনিকা : আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়…তুই আমার মেয়ে তো? নাকি হসপিটালে exchange হয়ে গিয়েছিলো…
মেরিন : exchange হয়ে গিয়েছিলাম…
নীড় : মেরিন নীরাকে sorry বলো…
মেরিন : sorry…? sorry ভুল করলে বলতে হয়।
নীড় : ভুল করোনি?
মেরিন : not at all… ভুল তখন হতো যখন ওর গলাটা কেটে ফেলতাম। ওটা sorry বলার কারন হতো।
নীড় : you r just impossible …
নীরা : ভাইয়া…
সবাই পিছে ঘুরলো। রক্তাত্ব নিলয়কে দেখলো।
নীরা : ভাইয়া তোর গলায় কি হয়েছে? এমন কি করে হলো?
মেরিন : আমি করেছি। বাগানে আমাকে ভালোবাসি বলেছে তাই।
নীড় : তুমি মানুষই না…
বলেই নীড় ওপরে চলে গেলো ।
.
একটুপর…
নীড় মনে মনে : তুই এমন হয়ে গেলি কেনরে বনপাখি… তুই তো এমন ছিলিনা… অবশ্য যে নিজের বাবাকে খুন করতে পারে সে সবই করতে পারে… তুই তোকে ঘৃণা করার নতুন নতুন কারন দিস…
তখন মেরিন এসে নীড়কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো। পিঠে কিস করলো।
নীড় : ছার ব… মেরিন ছারো মেরিন…
মেরিন : বনপাখি বললে কি হয়…?
নীড় মেরিনকে ছারিয়ে ওর দিকে ঘুরলো ।
নীড় : you are not my বনপাখি…
মেরিন : & i love you…
নীড় : যদি আমাকে ভালোইবাসতি তাহলে…
মেরিন : তাহলে…?
নীড় : কিছুন…
বলেই নীড় গিয়ে শুয়ে পরলো । পিছে পিছে মেরিনও গেলো । নীড়ের বুকে মাথা রেখে মেরিনও শুয়ে পরলো । নীড়ের heart beat শুনতে লাগলো। ১টা হাতও নীড়ের বুকের ওই বা পাশেই রাখলো ।
নীড় মনে মনে : oh no..
ও যে হাতটা মনে হয়ে ওখানেই রেখেছে। কিছু বুঝে না যায়…
মেরিনেরও মনে হলো যে হাতে কিছু বাজলো।
মেরিন মনে মনে : আরে এখানে কি??
নীড় : দেখি ঘুমাতে দাও । মাথা-হাত এখন পুরো body রাখবে নাকি? হাত সরাও । ।
বলেই নীড় মেরিনের হাত সরিয়ে দিলো।
মেরিন : পাগল। oh no… ভুলেই গিয়েছি…
নীড় : কি???
মেরিন মাথাটা তুলে নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। মনের মতো কিস করে
বলল : এটা। 😘।
নীড় : shameless….
পরদিন নীড়-মেরিন চৌধুরী বাড়িতে পৌছালো ।
.
৩দিনপর…
নীড় change করছে । তখন আয়নায় নিজেকে দেখলো। বুকের বা পাশে লেখাটায় চোখ পরলো। যেখানে লেখা “বনপাখি” । লেখার জায়গাটায় হাত বুলালো ।
নীড় : i hate you মেরিন… i just hate you… কিন্তু এই জায়গায় ওর চোখ পরার আগেই কিছু করতে হবে। … hello…
☆: hello নীড় স্যার ।
নীড় : হামম। i need a small duplicate skin… যেটাতে লেখা থাকবে বন… নীরা … আর হ্যা ওটা chest এ লাগানোর জন্য … কালকের মধ্যেই চাই…
☆ : ok sir… sir আপনি বললে রাতেই ডেলিভারি করে দিবো।
নীড় : না। ডেলিভারি করতে হবেনা। আমি নিজে এসে collect করে নিবো । bye… রাখছি…
নীড় : আমি এমন কেন? কেন তোকে ভালোবেসেছিলাম…? কেন তোকে বুকে জায়গা দিয়েছিলাম… কেন বনপাখি… নীরাকে এতো ভালোবাসি তবুও কেন ওকে সেই জায়গা দিতে পারিনা যে জায়গা তোকে দিয়েছিলাম… কেন কেন কেন…
তখন দরজার করা নরলো।
মেরিন : জান ঠিক আছেন আপনি ? আপনার তো কখনো এতো সময় লাগেনা…জান…. ঠিক আছেন তো?
নীড় বেরিয়ে এলো । আর নীড়কে দেখে মেরিন আরেক দফা crush খেলো। সব কালো পরেছে।
মেরিন : 😍😍😍।
নীড় : দেখি সরো…
মেরিন চোখের নিচ থেকে কাজল নিয়ে নীড়ের চুলের নিচে দিয়ে দিলো ।
নীড় : কালো টিকা দিয়ে কি হবে? কালো পরীর নজর তো পরেই গিয়েছে । গ্রহন তো শুরু হয়ে গেছে ।
নীড় অফিসে চলে গেলো।
.
অফিসে…
conference room…
মিস্টার সেন : আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই মিস্টার চৌধুরী। আপনার company তো লসে যাচ্ছে ।
মিস্টার রায়হান : আপনি তো অন্যের idea চুরি করে company চালাচ্ছেন ।
নীড় : shut up… নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কখনো কারো idea copy বা চুরি করেনা । got it? ওগুলো সব আমার idea… যেগুলো আমার অফিস থেকেই লিক হয়েছে।
মিস্টার মাহমুদ : oh really…? আমাদের বোকা পেয়েছেন। যে যা বোঝাবেন তাই বুঝবো।
মিস্টার ইমাম : অতো কিছু বুঝিনা।আমি আমার share ফেরত চাই।
মিস্টার গুপ্তা : আর আমি আমার invested টাকা গুলো ফেরত চাই ।
সবাই নিজেদের share আর টাকা চাইতে লাগলো। কেউ নীড়ের কথাই শুনছেনা । নীড় কোনো রকমে নিজের রাগটাকে control করে রেখেছে । ১টা সময় আর সম্ভব হলোনা।
নীড় : enough 📢📢📢…
সবাই চুপ হয়ে গেলো ।
নীড় : সুযোগ পেয়ে বসেছেন সবাই? হ্যা? আপনাদের টাকা মেরে খাবোনা আমি ।
মিস্টার সেন : দিবেন কোথায় থেকে? আপনার account তো খালি।
নীড় : এই মুহুর্তে আমি আমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আপনাদের মুখের ওপর উরিয়ে মারতে পারি । বুঝেছেন?
মিস্টার রায়হান : হামম। আর এখনতো আপনার বউই আছে। the মেরিন বন্যা । i think টাকা পেয়েই যাবো।
মিস্টার ইমাম : মিস্টার চৌধুরী আমার invest তো সবথেকে বেশি এনাদের মধ্যে । about 70% … i swear ১টা টাকাও নিবোনা। যদি ১টা বার আপনার মিসেসকে…।দেখুন business এ এটা common … তাই বলছিলাম কি মেরিনকে ১দিনের জন্য আ…
ইমাম ছিলো নীড় সামনেই বসা । নীড় আর ১সেকেন্ডও দেরি না করে মিস্টার ইমামকে দিলো ১টা ঘুষি ।
.
এরপর তার কলার ধরে দার করালো।
নীড় : আরেকবার বনপ… মেরিনকে নিয়ে কোনো কথা বললে জানে মেরে দিবো। কালই তুই তোর টাকা পেয়ে যাবি। এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে থেকে বের হ…
বলেই নীড় ইমামকে ছারলো ।
মিস্টার ইমাম : যাচ্ছি কিন্তু আমি কাল টাকা না পেলে কি করবো নিজেও জানিনা। আর বন্ধুরা আমি তো পাবোনা । তোমরাও মনে হয় পাবেনা।
তখন সবাই যেন আন্দোলন শুরু করলো নীড়ের বিরুদ্ধে । warning দিতে লাগলো নীড়কে । যে কালকের মধ্যেই টাকা না দিলে নীড়কে দেখে নিবে , জানে মেরে দিবে , পুলিশে ধরিয়ে দিবে । blah blah blah… তখন সবাই গুলির শব্দ পেলো। সবাই দরজার দিকে ঘুরলো । দেখলো revolver হাতে মেরিন দারিয়ে আছে । চোখে স্পষ্ট রাগ। মেরিন একেক জনের চেহারার দিকে তাকাচ্ছে । এরপর নীড়ের দিকে তাকালো। মুচকি হাসি দিয়ে নীড়ের দিকে গেলো। জান বলে নীড়কে জরিয়ে ধরলো। এরপর নীড়ের গালে কিস করলো। এরপর নীড়ের কাধে হাত রেখে
বলল : জন…
জন : yes mam…
বলেই জন তৌফিক নামের অন্য ১জন কর্মচারী দিয়ে সবার হাতে ১টা করে চেক & ১টা করে contract paper দেয়া হলো।
জন : যারা যারা টাকা invest করেছেন তাদের টাকা ফেরত দেয়া হলো । আর যারা share কিনেছিলেন তাদের সেই টাকা ফেরত দেয়া হলো। আর share বিক্রির জন্যেও টাকা দেয়া হলো। ৫ মিনিট সময় দেয়া হলো , contract paper পরে signature করুন ।
মিস্টার রায়হান : আর যদি share ফেরত চেয়েছি । বিক্রি করতে চাইনি।
জন : করতে চান নি এখন করবেন।
মিস্টার রায়হান : না করি ?
মেরিন বাকা হাসি দিয়ে মিস্টার রায়হানের পায়ের দিকে ফাকা গুলি করলো ।
মেরিন গানটা হাতে ঘোরাতে ঘোরাতে
বলল : আমি খুব সুন্দর করে gun দিয়ে music বাজাতে পারি । যেটা খুব সুন্দর করে কথা বলে…
কেউ আর দেরি না করে signature করে দিলো ।
নীড় : তু…
মেরিন নীড়ের কলার ঠিক করতে করতে ফিসফিস করে
বলল : যেটা হচ্ছে সেটা হতে দিন … আপনি কথা বলতে শুরু করলে আমার আপনার মুখ বন্ধ করতে হবে । by my lips… যেটা আমার ভালো লাগলেও আপনার হয়তো লাগবেনা । আর তাছারাও আমি আমার জন্য করছি । আপনার জন্য না ।
.
৫মিনিটপর…
সবার sign হয়ে গেছে।
মেরিন : ok.. কালকে বিকাল ৩টায় খান company তে চলে আসবেন। ছোট্ট ১টা মিটিং করতে চাই আপনাদের সাথে। কারোও যেন ১সেকেন্ডও লেট না হয়। ১সেকেন্ড লেট হলে আমি কিন্ত ১মিনিটও লেট করবোনা তাকে কবরে পাঠাতে । as everybody know মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী কাউকে ২য় সুযোগ দেয়না । এখন আপনারা আসতে পারেন।
সবাই চলে গেলো।
.
নীড় : আমি তোমার কোনো favor চাইনা
মেরিন : আমি তো আপনার ওপর কোনো favor করছিনা । আমি just khan emperor আরো broad করতে চাই nothing else…
নীড় : এই company আমি আমার নিজ যোগ্যতায় দার করিয়েছি । ভুলেও এর দিকে চোখ তুলে তাকিও না ।
মেরিন : কিন্তু আমার তো চোখ পরে গেছে। তাই তো জেনে গিয়েছি যে আপনার idea কে পাচার করছে।
নীড় : what?
মেরিন : হামম। বাহির থেকে কেউ এসে চুরি করে নিয়ে যায়না । ভেতর থেকেই বাইরে যাচ্ছে । আপনি আপনার সব employee দের ডাকুন। senior & close দের of course …
নীড় সবাইকে ডাকলো।
নীড় : আপনাদের মধ্যে কে তথ্য পাচার করছে ?
সবাই : ….
নীড় : আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি ।
সবাই বলতে লাগলো আমি করিনি আমি করিনি । আর নিজেদের emotional dialogue দিয়ে নীড়কে দুর্বল করতে লাগলো।
নীড় : এদের মধ্য কেউ করেনি মেরিন।
মেরিন ওর হাসি দিয়ে
বলল : আপনারা সবাই আমাকে i think ভালো করেই চিনেন। আমি জানি কে দোষী। যদি সেটা আমার মুখ দিয়ে বের করতে হয় তবে সেটা তার জন্য ভালো হবেনা । আমি কখনো কাউকে ২য় সুযোগ দেইনা। warning ও দেইনা। ১১সেকেন্ড সময় দিলাম বেরিয়ে আসতে। স্বীকার করতে । না হলে …
সবাই মনে করলে যে মেরিন হাওয়ায় তীর ছুরছে। তাই অপরাধী সামনে এলোনা ।
মেরিন হাসি দিয়ে গানটা হাতে নিয়ে সোজা নীড়ের P.A. রুপার কপালে shoot করলো।
নীড় : কি করলে?
মেরিন : shoot… ও আপনার rival comapany এর owner আলতাব ভুইয়ার ছোট মেয়ে রুপা ভুইয়া। যে আপনাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলো । আপনি নীরাকে ভালোবাসতেন । তাই রুপাকে না দেখেই ওকে reject করে দিয়েছিলেন। তাই বাবা-মেয়ে মিলে আগে আপনাকে দেউলিয়া বানানোর plan করলো। যেন সহযেই আপনাকে কাবু করে রুপার সাথে আপনার বিয়ে দিতে পারে। আর রুপা আপনার P.A. হওয়ার জন্য আপনার সব information easily নিতে পারতো।
নীড় : oh my god… but তুমি ওকে জানে মারলে কেন?
মেরিন : ওর কপাল ভালো যে ১টা গুলিতেই ওকে সহজ মৃত্যু দিয়েছি । ওকে ধীরে ধীরে মারিনি … ওর এতো সাহস আপনার দিকে কুনজর দেয় ।
নীড় : are you mad?
মেরিন : only for you…
নীড় : এখন যে police এসে তোমাকে arrest করে নিয়ে যাবে?
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী এখন কোনো ১১বছরের বাচ্চানা । যে তাকে কেউ জেলে আটকাতে পারবে। হাহাহাহাহা…
জন…
নীড় মনে মনে : unbelievable…
.
পরদিন…
খান office এ…
মিস্টার মাহমুদ : আমাদের এখানে ডেকে আনার কারন ?
মেরিন : কারন আমি আপনাদের প্রত্যেকের company কিনতে চাই ।
সবাই : what ? আমরা তো বিক্রি করতে চাইনা ।
মেরিন : আপনারা কি চান সেটা matter করেনা । আমি কি চাই সেটাই বড় কথা… আর আপনাদের ডাবল টাকা দেয়া হচ্ছে। তাই রাজী না হওয়ার কোনো কারন নেই ।
মিস্টার সেন : আপনি বললেই কি সব হবে নাকি ?
মেরিন : হ্যা হবে।
মিস্টার মাহমুদ : না। আমরা আপনার হাতের পুতুল নই। আর তাই আজকে আমরা সবাই preparation নিয়েই এসেছি।
বলেই সবাই ১টা করে গান বের করলো। যেটা দেখে মেরিন হাসতে লাগলো। এরপর চেয়ারে বসে টেবিলের ওপর ২পা রাখলো। এরপর ১টা ছোট্ট রিমোট হাতে নিয়ে সেটার লাল বোতাম press করলো। আর সাথে সাথে সকলের হাত থেকে গান গুলো ছুটে সিলিং এ গিয়ে লাগতে লাগলো। সবাই তো অবাক।
জন : সাহস দেখে অবাক হচ্ছি । মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর দিকে বন্দুক তাক করেন ।
মেরিন : আপনারা আমার নীড়কে উল্টা-পাল্টা কথা বলেছিলেন। তাই ভেবেছিলাম আপনাদের company ডাবল টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে আপনাদের সকলের জিভ কেটে দিবো। কিন্তু এখন যেটা করলেন সেটার জন্য ডাবল টাকা কেন actual টাকাই দিবো। বিনা পয়সায় আপনাদের company কিনে নিবো।
বলেই মেরিন তুরি বাজালো। আর সাথে সাথে টেবিলের নিচ থেকে একদল কালো পোশাকধারী লোক বেরিয়ে এসে সেই ১২জনের মাথায় বন্দুক ধরলো।
মেরিন : নিন সবাই sign করে দিন। না হলে মরতে হবে।
সবাই signature করে দিলো। এরপর সবাইকে মেরিনের শাস্তি খানায় নিয়ে জিভ কেটে দেয়া হলো।
.
রাতে…
মেরিন বাগানের আমগাছটাকে পানি দিচ্ছে। এই বাসার এই আমগাছটাও
নীড়-মেরিন মিলে লাগিয়েছিলো। মেরিন গাছে পানি দিচ্ছে। তখন হঠাৎ নীড় এসে ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো। মেরিন নিচে পরে গেলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
Part : 4
writer : Mohona
.
মেরিন নিচে পরে গেলো । মেরিন উঠে দারালো ।
মেরিন : its too hard … ব্যাথা পেয়েছি । 😒
নীড় ১টা file মেরিনের ওপর ছুরে মারলো ।
নীড় : কি মনে করো নিজেকে?
মেরিন : আপনার বউ…😎
নীড় : shut up… তুমি ওদের company আমার নামে কেন করেছো?
মেরিন : আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই।
নীড় : তোমার ইচ্ছাই কি সব?
মেরিন : হামমম ।
নীড় : ওই মানুষগুলোর কি হাল করেছো তুমি… ওদেরকে দেউলিয়া বানিয়ে পরিবারকে বরবাদ করেছো।
মেরিন : i swear আমি ওদের দেউলিয়া করতে চাইনি। আমি ওদের double payment করতে চেয়েছিলাম । কিন্তু গাধা গুলা আমার দিকে বন্দুক তাক করেছে… how dare.. আমার দিকে … বন্দুক তাক করে…
নীড় : ওওও.. বন্দুক তাক করেছে বলে ওদের এমন হাল করলে?
মেরিন : হামমম।
.
নীড় ওর গান বের করে মেরিনের মাথায় ঠেকালো।
নীড় : আমি তোমাকে থাপ্পর মারলাম… তোমার মাথায় গানও ঠেকালাম… তো এখন আমার সাথে কি করবে???
মেরিন হা হা করে হাসতে লাগলো । এরপর ২হাটু গেরে বসলো ।
মেরিন : আপনার দেয়া মৃত্যু আমি সাদরে গ্রহন করবো। তবে ১টা অনুরোধ…
মেরিন বুকের বা পাশে আঙুল রেখে
বলল : ঠিক এখানটাতে shoot করবেন প্লিজ…
নীড় গানটা ছুরে ফেলে চলে গেলো ।
মেরিন : আমাকে তুমি মারতে পারবেনা নীড়… আমি জানি তুমি আজও আমায় ভালোবাসো … শুধু আমায়… নীরাকে না…
.
একটুপর…
নীড় কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে।
নীড় মনে মনে : তুই অমানুষ হয়ে গিয়েছিস… একদম অমানুষ…
এসব ভাবছিলো তখন বুকের ওপর ভারী নরম কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করলো। আর খুব সুন্দর ঘ্রাণ পেলো। নীড় বুঝতে পারছে এটা মেরিন ।
মেরিন : উঠুন খেয়ে নিবেন…
নীড় : …
মেরিন : উঠুন না…
নীড় : …
মেরিন : আমার ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীড় : …
মেরিন : উঠুন…
নীড় : চুপ থাকবে? তোমার ক্ষুধা লেগেছে তুমি গিয়ে খাও। আমার পিছে পরেছো কেন?
মেরিন : আপনাকে ছারা কি আমি খাই?
নীড় : oh just shut up… আমি খাবোনা। got it…?
মেরিন : তাহলে কিন্তু আপনাকে খাবো…
নীড় : …
মেরিন : রাতে না খেয়ে ঘুমালে যে আপনার শরীর খারাপ করবে…
নীড় : করুক… মর…
আর বলতে পারলোনা। মেরিন ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো ।
মেরিন : আপনার সাহস দেখে তো আমি মহা অবাক হচ্ছি। আপনি কোন সাহসে ফালতু কথা বলতে নিয়েছিলেন শুনি? আর কখনো এমন কথা মাথায়ও আনবেন না । আমি আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসছি ।
বলেই মেরিন খাবার নিয়ে এলো ।
মেরিন : দেখি উঠে খেয়ে নিন…
নীড় :…
মেরিন নীড়কে টেনে ওঠালো ।
মেরিন : হা করুন…
নীড় : 😒😒😒।
মেরিন : হা করতে বলেছি না…
মেরিন নীড়কে জোর করে খাইয়ে দিলো ।
মেরিন : নিন এবার ঘুমান ।
.
সকালে…
আজকে নীড়ের ঘুম আগে ভাংলো । ওর মুখের ওপর মেরিনের চুল গুলো ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে । নীড়ের মনে হচ্ছে ও ওর চিরচেনা স্বপ্নকে দেখছে । নীড়ের অজান্তেই ওর ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো । মেরিনকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে মেরিনের মাথায় কিস করলো ।
নীড় মনে মনে : যদি তুই আমার সেই ছোট্ট বনপাখি হতি তবে তোকে বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখতাম। দেখতে ইচ্ছা হলে বুক থেকে বের করে মন ভরে দেখতাম । আবার বুকের মাঝে ঢুকিয়ে রাখতাম ।
মেরিনকে নরতে চরতে দেখে নীড় চোখ বন্ধ করে ফেলল । মেরিনের ঘুম ভাংলো ।
মেরিন নীড়কে good morning kiss করে উঠে বসলো।
মেরিন : oh no… কয়টা বেজে গেছে । কতো ঘুম ঘুমালাম আমি । important meeting আছে… business association এর ।
মেরিন তারাতারি fresh হতে গেলো । বেরিয়ে দেখে নীড় এখনো ঘুম ।
মেরিন : নীড়… নীড়… উঠুন। দেখুন ১০টা বেজে গেছে । সাড়ে ১১টায় মিটিং আছে । নীড়… নীড়…
নীড় : কি?
মেরিন : উঠুন ১০টা বাজে।
নীড় : বাজুক।
মেরিন : বাজুক মানে? উঠুন…
মেরিন নীড়কে টেনেটুনে ওঠালো।
.
একটুপর…
নীড় রেডি হচ্ছে। হঠাৎ shirt এর button টা ছুটে গেলো।
নীড় : damn it…
নীড় সুচ-সূতা খুজতে লাগলো ।
মেরিন : কি খুজছেন ?
নীড় : বাটনটা পরে গেলো।
মেরিন : হামম। দারান এখানে…
নীড় : কেন?
মেরিন : বাটন লাগিয়ে দিচ্ছি ।
নীড় : লাগবেনা । আমি change করে নিচ্ছি।
মেরিন : না। এটাই পরবেন। দারান সোজা হয়ে ।
মেরিন নীড়ের শার্টের বাটন লাগাচ্ছে ।
হঠাৎ নীড়ের বুকে বা পাশে চোখ পরলো। মেরিন ignore করে নিজের কাজে মন দিলো । বাটন লাগিয়ে মেরিন সেট করতে গেলো। খেয়াল করলো যে কিছু লেখা আছে । মেরিন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলোনা । শার্টটা একটু সরিয়ে মেরিন দেখতে পেলো নীরার নাম ।
নীড় মনে মনে : thanks god যে এই duplicate skin টা লাগিয়ে নিয়েছিলাম। ও যদি “বনপাখি” দেখে নিতো তাহলে…
নীরার নাম দেখে মেরিন কোনো react করলোনা।
নীড় মনে মনে : কি ব্যাপার কোনো react করলোনা কেন ?
মেরিন : চলুন … লেট হচ্ছে ।
নীড় : চলো।
২জন মিটিং রুমে গেলো।
নীড় মনে মনে : একে এতো শান্ত লাগছে কেন? ওর চুপ থাকা অনেক ভয়ংকর…
মিটিং শেষে মেরিন চুপচাপ বেরিয়ে গেলো।
.
রাত ১০টা…
নিহাল : ১০টা বেজে গেলো । মেয়েটা এখনো এলোনা।
নীলিমা : দেখো কারসাথে কোন ছেলের সাথে আছে ?
মনে মনে : কোথায় আছে বন্যা? কোনো বিপদে পরলো না তো…
নীড় : মামনি… ব… মেরিন অমনটা।
নিহাল : কেমন ঝড় তুফান হচ্ছে । নীড় একটু বাইরে বেরিয়ে দেখনা…
নীলিমা : কেন আমার ছেলে যাবে কেন?
নিহাল : ওর বউ বাইরে… ওর দায়িত্ব ।
নীলিমা : না। এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে আমার ছেলে যাবে কেন ?
নিহাল : ন… মামনি…
মেরিন ভেতরে ঢুকলো । মাথায় ব্যান্ডেজ করা । খুরিয়ে খুরিয়ে হেটে ভেতরে ঢুকছে।
নিহাল দৌড়ে গেলো।
নিহাল : কি হয়েছে তোমার মামনি?
মেরিন : কিছুনা।
নিহাল : কিছুনা মানে কি? মাথায় ব্যান্ডেজ… আবার খুরিয়ে খুরিয়ে হাটছো।
মেরিন : ওই ছোট ১টা accident । তেমন কিছুনা । চিন্তা করোনা বাবা… আমি ঠিক আছি ।
নিহাল : চলো আমি ওপরে দিয়ে আসছি…
মেরিন : না না বাবা… লাগবেনা। আমি পারবো।
বলেই মেরিন কষ্ট হলেও নিজেই ওপরে চলে গেলো।
.
একটুপর…
মেরিন চুপচাপ শুয়ে আছে । তখন মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেলো । চোখ মেলল।
মেরিন : আরে দাদুভাই… ?
মেরিন উঠে বসলো।
দাদুভাই : আরে উঠলে কেন দিদিভাই ? শুয়ে থাকো । ভালো লাগবে।
মেরিন : আর আমার ভালো… তুমি ঠিক আছো ?
দিদিভাই : হামম। কারা ছিলো ওরা?
মেরিন : জানিনা দাদুভাই । কিন্তু নারী আর শিশুপাচারকারীর অনেক বড় গ্যাং ছিলো। main leader কে ধরতে পারলে জানে মেরে দিতাম ।
দিদিভাই : একা অতো বড় risk নিলে কেন?
মেরিন : একা না জন ছিলো।
দিদিভাই : তবুও…
মেরিন : এতো time ছিলোনা।
দিদিভাই : gang leader তো এখন তোমার পিছে পরবে…
মেরিন : পরবেই তো… কতোগুলো মেয়ে , কতোগুলো বাচ্চা হাতছারা হয়ে গেলো…
“কতোগুলো মেয়ে , কতোগুলো বাচ্চা হাত ছারা হয়ে গেলো”- এই কথাটা নীড় শুনলো।
নীড় : কিসের বাচ্চা কিসের মেয়ে…? যাই হোক…
নীড় ভেতরে ঢুকলো ।
নীড় : নানাভাই… চলো… সবাই একসাথে খেয়েনেই।
দাদুভাই : খাবো অবশ্যই খাবো । সময় এলে।
নীড় : সময় এলে মানে ?
দিদিভাই : কিছুনা । দেখি দিদিভাই কিছু খেয়ে নিবে। তোমার প্রিয় খাবার রেধে এনেছি। তাও নিজের হাতে।
মেরিন : দাদুভাই তুমি কেন কষ্ট করতে গেলে দাদুভাই ?
দাদুভাই : কোনো কথা না… হা করো…
দাদুভাই মেরিনকে খাইয়ে দিতে লাগলো ।
নীড় : দাদুভাই আমাকেও একটু খাইয়ে দাওনা প্লিজ…
দাদুভাই মেরিনকে খাইয়ে দাইয়ে চলে গেলো ।
.
৩দিনপর…
office এ …
মেরিন : নীড়… নীড়…
নীড় : কি হয়েছে?
মেরিন : জানেন না?
নীড় : কি ?
মেরিন : t.v. on করুন…
নীড় টিভি অন করলো। আর করে অবাক হয়ে গেলো।
.
((( sorry part টা অনেক ছোটো হয়েছে। promise কালকে থেকে বড় করে part দিবো। যেমনটা দেই । )))
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 2
part : 5
writer : Mohona
.
নীড় টিভি অন করে অবাক হয়ে গেলো । টিভিতে দেখাচ্ছে যে খান & চৌধুপী groups এখন একসাথে কাজ করবে।
এই খবরটা আজকের breaking news… তবে এর সাথে আরো ১টা খবর আছে । সেটা হলো best business man award of the year নিয়ে । আর এবারের best business man of the year হয়েছে নীড়…
অথচ গত ১০বছর ধরে এটা মিস্টার ভুইয়া পেয়ে এসেছে । আর এবার পেলো নীড় ।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরে
বলল : congratulations জান…
নীড় ভালোমতোই জানে যে এর পিছে মেরিনের হাত আছে ।
নীড় : তু…
.
তখন ম্যানেজার হাসনাত এলো।
হাসনাত : স্যার…স্যার…স্যার…
নীড় : কি হয়েছে?
হাসনাত : স্যার নিচে press & media হাজির ।
নীড় : what ?
হাসনাত : জী স্যার…
মেরিন : oh great চলুন interview দিবেন।
নীড় : এসব কিছু কেন করেছো?
মেরিন : আমি তো কিছুই করিনি… এতোদিন অযোগ্য ব্যাক্তি পেতো এবার থেকে যোগ্য ব্যাক্তি পাবে। চলুন চলুন চলুন… interview দিবেন…
মেরিন নীড়কে টেনে নিয়ে গেলো । নীড় interview দিতে লাগলো । দিয়ে টিয়ে ওরা বাসায় গেলো । বাসায় গিয়ে দেখে বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ । বন্ধু-পরিবার অনেকে এসেছে । নীড়কে congrats জানাতে এসেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে নীরাও আছে । আর নীরাকে দেখে মেরিনের মেজাজ বিগরে গেলো। নীরা দৌড়ে এলো নীড়ের দিকে । এসে just নীড়কে জরিয়ে ধরবে তখন ওর চোখ মেরিনের দিকে গেলো। আর নীরা break মারলো।
হাত বারিয়ে
বলল : congratulations জান…
নীড় হাত মিলিয়ে
বলল : thank u জান…
নীরা : চলো কেক কাটবে… সবাই wait করছে ।
নীড় : চলো…
নীড় নীরার সাথে এগিয়ে গেলো । মেরিন গিয়ে চুপচাপ সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে বসলো। এরপর চারদিকের decorationএ চোখ বুলালো। এরপর ছোট round table টার দিকে তাকালো । তাকিয়ে ববাকা হাসি দিলো।
.
নীরা : আরে knife টা কোথায়? আমি তো এখানেই রেখেছিলাম… মামনি দেখেছো…?
নীলিমা : হ্যা তাই তো । দারাও মা দেখছি…
নীলিমা দেখতে লাগলো। নীরাও খুজতে লাগলো । নীরা যেই নীড়কে দার করিয়ে ২-৪কদম পা সরলো ওমনি টেবিলের চারদিকে round হয়েই আগুন জ্বলে উঠলো ।
নীলিমা : নীড় … 😥।
সবাই অবাক হলো। নীড় যেই ওই আগুনের boundary থেকে বের হতে নেয় তখনি আগুন ভয়ানকভাবে বেরে যায়। আর যখন নীড়কে rescue করতে যায় তখনও আগুন বেরে যায়। extinguish আনতে গেলো । সেটাও পেলোনা । সবাই নীড় নীড় করতে লাগলো । নীরা ভীরের আরালে আগুন থেকে সরে দরজার খানিকটা কাছে গিয়ে দারালো । যদি আগুন আরো বারতে দেখে তবে বেরিয়ে যাবে। মেরিন এতোক্ষন বসে বসে সব দেখছিলো। মেরিন এগিয়ে গেলো। সেই boundary এর চারদিকে হাটতে লাগলো। নীড়ের দিকে তাকিয়ে…
মেরিনের ঠোটের সেই হাসি আর চোখের চাহনী দেখে নীড় অবাক হচ্ছে । মেরিন আগুনের line cross করে ভেতরে ঢুকলো । আর মেরিন ঢোকার সময় আগুন বারলোও না । নিচু হয়েই ছিলো । ভেতরে ঢুকে মেরিন ওরনা দিয়ে নীড়ের কপালের ঘাম মুছে দিলো । সবাই অবাক চোখে দেখছে ।
নীড় : তুমি স…
মেরিন : সব করেছি…😘… চলুন কেকটা কেটে উৎসব সম্পূর্ন করি… &&& please don’t refuse … না হলে উপস্থিত বেগুনাহ রা আহত-নিহত হবে…
নীড় : 😒।
মেরিন : ভয়ের কিছুই নেই my dear guests … lets celebrate this time…
নীড়-মেরিন মিলে কেক কাটলো। মেরিন নীড়কে খাইয়ে দিলো ।
নীরা : তুই এমনটা কেন করলি ?
মেরিন : কি?
নীরা : আগুন কেন লাগিয়েছিস
মেরিন : ওওও… আগুন। ইশ ভুল হয়ে গেছে। ১কাজ কর… আমি আগুন জ্বালিয়েছি তুই নিভিয়ে দে… নিজের হাতে…
নীরা : মানে ?
মেরিন : খুব সহজ…
বলেই মেরিন নীরার হাত ধরে ১টান মেরে সামনে এনে নিচে ফেলল। নীরার হাত আগুনের ওপর পরলো। এরপর মেরিন নীরার হাতের ওপর দারালো। pencil heel এর আঘাতে নীরার হাত থেকে রক্ত বের হতে লাগলো । আগুন নিভে গেছে । তবে সবকিছু এতো দ্রুত ঘটলো যে কেউ কিছু করার বা বলারই সুযোগ পেলোনা ।
নীড় : কি করছো কি মেরিন… ছারো ওকে…
নীড়ে টেনেও মেরিনকে সরাতে পারছেনা। নীরার তো জান বেরিয়ে যাচ্ছে ।
মেরিন : তোর সাহস কি করে হয় আমার নীড়ের হাত ধরার? বল… বল…
নীড় : ছারো ওকে মেরিন… আর ও তো একানা… আমিও ওর হাত ধরেছিলাম… ওকে একা কেন শাস্তি দিবে ? আমাকেও দাও…
মেরিন : বল কোন সাহসে তুই নীড়ের দিকে হাত বারাস?
নীরা : ছেরেদে প্লিজ… আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে…
মেরিন : তোর কষ্টের জন্যেই তো এমন করছি…
নীলিমা : বন্যা ছার ওকে…
নীড় ১টা গ্লাস ভাঙলো । কাচ ভাঙা হাতে নিয়ে
বলল : মেরিন তুমি যদি ওকে না ছারো আমি কিন্তু আমার হাত ক্ষতবিক্ষত করবো…
মেরিন নীরার হাত ছেরে দিলো। এরপর ওর চুলের মুঠি ধরে টেনে দার করালো ।
মেরিন : বাচতে চাইলে আমার নীড়ের থেকে দূরে থাকবি…
বলেই মেরিন নীরাকে ছুরে ফেলল ।
মেরিন : আপনি কি এখনও ওটা হাতে নিয়ে দারিয়ে থাকবেন?
নীড় : …
মেরিন : ওই আবর্জনাকে আরো শাস্তি দেওয়াতে চান…? 😎..
এই কথা শুনে নীড় রেগে হাতের কাচটা আছার মারলো। যেটা গিয়ে লাগলো মেরিনের পায়ে। একে বারে গেথে গেলো।
নিহাল : মামনি…
নিহালের চিৎকার শুনে নীড়ও তাকালো।
নীড় : অন্যকে কষ্ট দিলে বিনিময়ে তুমিও কষ্টই পাবে…
বলেই নীড় রুমে চলে গেলো।
.
কিছুদিনপর…
নীড় : hello…
নীরা : জান…
নীড় : একি তুমি?
নীরা : তুমি আমার ফোনে বিরক্ত হচ্ছো ?
নীড় : কি যা তা বলছো ? আমি তোমার ফোনে বিরক্ত হবো? আমি তো তোমার জন্যেই বলছি ।
নীরা : মানে?
নীড় : মানে মেরিন যদি জানতে পারে যে তুমি আমাকে ফোন করেছো তাহলে অযথাই তুমি শাস্তি পাবে…
নীরা : পেলে পাবো … তোমার জন্য কোনো কষ্টই আমার কাছে কষ্ট না …
নীড় : …
নীরা : শোনো তোমাকে ১টা কথা বলার আছে মেরিনের বিষয়ে।
নীড় : কি কথা?
নীরা : ফোনে বলা যাবেনা। দেখা করতে পারবে???
নীড় : দেখা ?
নীরা : হামম। its really veru urgent …
নীড় : ok…
নীরা : তাহলে কালকে রোজ গার্ডেনে বিকাল ৫টায় চলে এসো….
নীড় : আচ্ছা।
নীরা : হামম। রাখছি …
নীরা ফোন রেখে দিলো…
নীড় : কি এমন বলবে নীরা? যাবো তো… কিন্তু মেরিন….
.
রাতে…
মেরিন :
don’t you give up…
nah nah nah…
i won’t give up…
nah nah nah
let me love you…
woh woh woh…
let me love you…
নীড় রুমে ঢুকে মেরিনর কন্ঠে গান শুনতে পেলো।
মেরিন : আরে আপনি? আজকে এতো লেট হলো যে!!!
নীড় কোনো কথা বলল না । washroom এ চলে গেলো । এটা মেরিনের জন্য অভ্যস্ত । নীড় বেরিয়ে খেতে বসলো । মেরিনও ওর কোলে এসে বসলো ।
নীড় : রোজ কি আমার কোলে বসে খাওয়াটা কি জরুরী?
মেরিন : হামম ।
নীড় : বিরক্ত লেগে যায় এতো নূনের বস্তা ওঠাতে …
মেরিন : তাই বুঝি?
নীড় : হামমম ।
মেরিন : তাহলে তো আরো ভালো …
.
পরদিন…
rose garden restaurant …
নীরা জান বলেই নীড়কে জরিয়ে ধরতে গেলো । কিন্তু নীড় কৌশলে বাধা দিলো ।
নীড় : চলো ভেতরে চলো ।
২জন গিয়ে বসলো ।
নীরা : কি ব্যাপার পুরো restaurant empty … আজ কি কেউ আসেনি???
নীড় : না actually আমি পুরোটা বুক করেছি ।আমি চাইনা আজকের মিটিং টা মেরিনের কানে যাক। আর অযথা কোনো ঝামেলা হোক…
নীরা : হামম।
নীড় : কি news ???
নীরা : মেরিন নারী ও শিশুপাচার কাজে জরিত…
নীড় : কি ?
নীরা : হ্যা। ও খান empire কে এভাবেই broad করছে… শুধু তাই না… ও তো কিডনির ব্যাবসাও করে।
নীড় : what ???
নীরা : হ্যা। আমারও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিলো … এই দেখো prove …
বলেই নীরা মোবাইলে কিছু আকডুম বাগডুম প্রমান দেখালো। আবার নীড়েরও মনে পরলো সেদিন দাদুভাইয়ের সাথে মেরিনের বলা কথা গুলো।
নীড় : i can’t believe this… ১টা মেয়ে হয়ে এমন জঘন্য কাজে জরিত… ছিঃ…
নীরা : হ্যা আ…
তখন সব light নিভে গেলো ।
¤ : এখন আপনাদের মনোরঞ্জন করতে আসছে… নাম বলবোনা। নিজেরাই দেখে নিন…
নীড় : আরে এসব কি ??? আমি তো … ম্যানেজার… ম্যা…
তখন music on হলো।।। আর item girl হিসেবে যখন ২জন মেরিনকে দেখলো তখন মহাঅবাক হলো। নীরার তো কলিজা শুকিয়ে গেল। মেরিন অনেকটা item song এর heroinদের মতোই dress পরেছে । আর dance ও করছে ওভাবেই…
মেরিনকে ওভাবে নাচতে দেখে নীড়ের ভীষন রাগ উঠছে… চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে নীড়ের ।
.
নাচ শেষে…
নাচ শেষ করে মেরিন নিজেই তালি দিতে লাগলো ।
মেরিন : wow… what a dancer am i!!!
নীরার মনে হচ্ছে যে ও এখন heart attack বা brain stroke করবে… মেরিন স্টেজ থেকে নেমে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে । নীরার মনে হচ্ছে স্বয়ং যমদূত আসছে । মেরিনের দৃষ্টি নীড়ের দিকে। নীড়ের চোখের দিকে তাকিয়ে নীড়ের রাগের কারন খুজছে । এগিয়ে আসতে আসতে মেরিন ১টা drill machine হাতে নিলো। যেটা দেখা নীরা ঘেমে নেয়ে অস্থির হয়ে যেতে লাগলো ।
আর নীড়…
নীড় তো কেবল মেরিনকেই দেখছে। আশেপাশের আর কিছুইনা। এমনকি মেরিনের হাতে কি আছে সেটাও নীড়ের দৃষ্টির অগোচরে। ও কেবল ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে মেরিনকেই দেখে যাচ্ছে। হঠাৎ নীড়ের মাথা আর সারা শরীর যেন কেমন লাগতে লাগলো। মনে হচ্ছে সারা শরীর কাপছে। শক্তি হারাচ্ছে.. বোধ পাচ্ছেনা। ও বসে পরলো । মাথাটাও সোজা করে রাখতে পারছেনা । তাই মাথাটা টেবিলের ওপর রাখলো ।
নীরা : নননীড়… নীড়… বববাচাও…
মেরিন : পারবেনা… নীড় সব দেখবে , শুনবে বুঝবে… কিন্তু কিছু করতে পারবেনা…
নীরা বাইরের দিকে দিলো দৌড়। কিন্তু সব দরজা বন্ধ। নীরাকে চেয়ার বসিয়ে হাত-পা বেধে দেয়া হলো।
মেরিন drill machine টা বারবার on-off করছে।
নীরা : শেষ বারের মতো বলছি ক্ষক্ষক্ষ….
মেরিন : ক্ষমা…? তুই আরো ১বার তোর পা আমার নীড়ের দিকে বারিয়েছিস। আজকে তোর ২পায়ের এমন হাল করবো যে যতোবার তুই পা ফেলবি ততোবার আজকের কথা মনে পরবে….
বলেই মেরিন drill machine দিয়ে নীরার পায়ে চিহ্ন বসিয়ে দিলো…
নীরা তো ব্যাথায় অজ্ঞান হয়ে গেলো ….
.
৩দিনপর…
নীড় মনে মনে : মেরিনের সব অন্যায় যেমন তেমন নারী ও শিশুপাচারের মতো জঘন্য কাজের জন্য শাস্তি ওকে পেতেই হবে? কিন্তু কিভাবে ? ও তো সব খবরই পেয়ে যায়। কারো সাথে যে discuss করবো সেই উপায়ও নেই… সব খবর ও পেয়ে যায়।
কি করবো …?
১মিনিট… আমি ওর দুর্বলতা… এই আমি দিয়েই ওকে ঘায়েল করবো…. ১টা পথ বের করতেই হবে….
মেরিন : নীড়… নীড় … নীড় …
নীড় : what???
মেরিন : হাত দিন…
নীড় : কেন?
মেরিন : দিননা…
নীড় : কেন বলবে তো ???
মেরিন নীড়ের হাত নিজেই নিলো। এরপর খুব সুন্দর ১টা bracelet পরিয়ে দিলো । যেটাতে “B” লেখা আছে।
মেরিন : বলুন তো b কেন লিখিয়েছি? কারন B দিয়ে আপনি আর আমি ২জনই … এটা কখনো খুলবেন না…
bracelet টা পরিয়ে মেরিন নীড়ের হাতে ১টা কিস করলো ।
মেরিন : i love you…. জান… আপনার হাতে পরানোতে এটার শোভা বৃদ্ধি পেয়েছে।
.
কিছুদিনপর…
রাতে…
মেরিন নীড়ের বুকে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ ওর মনে হলো যে নীড় যেন কিভাবে নিশ্বাস নিচ্ছে । ভীষন জোরে জোরে…
মেরিন উঠে বসলো।
মেরিন : নীড়… নীড়… কককি হয়েছে আপনার ? নীড়… ও নীড়… বাবা… বাবা… শাশুড়িফুপ্পি…
নীড় বুকের ওপর হাত দিয়ে মুখ যেন কেমন করতে লাগলো।
মেরিন : জান… নননীড়… বববাবাহ…
নিহাল-নীলিমা দৌড়ে এলো…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 6
writer : Mohona
.
নিহাল-নীলিমা দৌড়ে এলো ।
নিহাল : কি হয়েছে মামনি ?
মেরিন : বববাবা দেখো নননীড় যেন কেমন করছে…
নীলিমা : ও বাবা… বাবা… নীড়… কোথায় কষ্ট হচ্ছে ? বলনা… ও নীড়…
কিছুক্ষনপর নীড় নরমাল হলো । চোখ মেলল। উঠে বসলো।
যনীলিমা : সোনা কি হয়েছিলো তোর ? কোথায় কষ্ট হচ্ছিলো … এখন কেমন লাগছে? চল ডক্টরের কাছে চল…
নীড় ১বার মেরিনের দিকে তাকালো। তাকিয়ে বুকটা মোচর দিয়ে উঠলো ।
নিহাল : হ্যা চলো…
নীড় : no no… not needed …ঠিক আছি… just এমনি একটু … normally কোনো disorder হবে… তাছারা কিছুইনা… ঘুমালেই ঠিক হয়ে যাবে।
নীলিমা : হামম মামনি…
নিহাল : তবুও ডক্টরের কাছে চলো।
নীড় : বাবা।। i need rest… প্লিজ।
নিহাল : ok then ঘুমাও। নীলা চলো…
নীলিমা ছেলের কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো। ওরা যাওয়ার পর নীড় চুপচাপ শুয়ে পরলো…
.
মেরিন নীড়কে দেখতে লাগলো । কেন যেন ওর গলা দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছেনা । মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে নীরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো। নীড় বুঝতে পারছে যে মেরিন কাদছে ।
নীড় : তুমি কি একটু ঘুমাতেও দিবেনা? এমনিতেই দম ছারতে কষ্ট হচ্ছিলো … তারমধ্যে আমার ওপর শুয়ে ছিলে। আর এখন তো কেদে আমার t-shirt টাও ভেজাচ্ছো।
মেরিন নীড়ের বুকে ১টা কিস করে বুক থেকে নেমে গেলো। চোখের পানি মুছে নিলো।
মেরিন : sssorry বুঝতে পারিনি…
নীড় : তুমি তো নিজেরটা ছারা কারোটাই বোঝোনা…
মেরিন : আর disturb করবোনা। আপনি ঘুমান। আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি… 😊…
মেরিন নীড়ের মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো …. না চাইতেও নীড় ঘুমের সাগরে পারি দিলো । আর নীড়কে দেখতে দেখতে মেরিন সারাটা রাত কাটিয়ে দিলো ।
.
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো ।অবাক হয়ে গেলো । কারন ওর রুমে ১০-১২জন ডক্টর ।
নীড় : একি আপনারা? এখানে ? কেন ?
মেরিন : আপনার check up করার জন্য ।
নীড় : what?
মেরিন : হামমম।
নীড় : r you totally mad…
মেরিন : হামমমম। only for you…
নীড় : ১জন ডক্টর ১২জনের check up করে কিন্তু ১২জন ডক্টর ১জনের check up করেনা।
মেরিন : অন্য ১২জন আর নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন নয়… অন্য ১২ জম মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর জান নয়….
নীড় : আর এটা চৌধুরী প্যালেস । কোনো মেডিকেল বোর্ড মিটিং রুম নয়।
মেরিন : সেটা জায়গা বা সময় নয় আমি ডিসাইড করবো। আমি চাইলেই এটা চৌধুরী প্যালেস আর আমি চাইলেই এটা মেডিকেল বোর্ড মিটিং রুম। ডক্টরস start your duty …
ডক্টররা নীড়ের check up করতে লাগলো ।
ডক্টর হামিদ : ম্যাম কিছু টেস্ট করাতে হবে…
মেরিন : যদি টেস্ট ই করাতে হয় তবে আপনাদের এতোজনকে এখানে আনলাম কেন?হসপিটালেই নিতে পারতাম।
ডক্টর জালাল : ম্যাম আমাদের মনে হচ্ছে all is fine… তবুও… ১টা বার টেস্টগুলো করালে ভালো হতো।
মেরিন : get lost please …
সবাই বেরিয়ে গেলো ।
নীড় : always এমন rude behave করা কি জরুরী?
মেরিন : always careless হওয়াটা কি জরুরী??? এখন চুপচাপ রেডি হয়ে নিন। আমরা হসপিটালে যাচ্ছি ।
নীড় : why?
মেরিন : আপনার check up করাতে ।
নীড় : তাহলে একটু আগে কি ছিলো ?😱
মেরিন : উফফ। বেশি কথা কম বলুন। hurry up…
মেরিন নীড়কে টেনে হেচরে হসপিটালে নিয়ে গেলো । সব টেস্ট সেস্ট করালো । সব নরমাল এলো। মেরিন relax হলো।
মেরিনের love torture তো চলছেই নীড়ের ওপর। নীড়ের সকল ঘৃণাই মেরিনের ভালোবাসা। ভালোই কাটছে দিন। তবে ১২-১৫দিন আবার নীড়ের বুকে ব্যাথা হলো। দম নিতে কষ্ট হলো। সেই ১ম দিনের মতো । মেরিন আবার check up করালো … এবারও সব নরমাল এলো।
এরপর থেকে ২-৩দিন পরপরই নীড় same অবস্থা হতো। infact আগের থেকে খারাপ অবস্থা হতে লাগলো । মেরিন আগের ২টা হসপিটাল যেখানে নীড়ের টেস্ট করিয়েছিলো ওই ২টা হসপিটালের সিল মারার ব্যাবস্থা করালো।
মেরিন নীড়কে সিঙ্গাপুর নিয়ে গেলো । সাথে নিহাল-নীলিমাও গেলো।
.
in singapore …
মেরিন নীড়ের treatment এর জন্য singapore এর best হসপিটালে best cardiologist এর কাছে গেলো । নীড়ের নরমাল check up করে ডক্টর kane মুখটা কালো করে ফেলল। যেটা মেরিন ঠিকই খেয়াল করলো । kane CXR, HTN , CABG , CCF , CHD , COPD , LBBB, LVF এর মতো অনেক গুলো test করাতে দিলো।
মেরিন আলাদাভাবে ডক্টরকে জিজ্ঞেস করলো।
মেরিন : ডক্টর… নীড়ের কোনো বড় কিছু হয়নি তো?? আপনি clearly বলুন…
kane : রিপোর্ট হাতে পেয়ে নেই then বলবো।
মেরিন : but i want the answer right now damn it…
kane : lady lady lady… অপেক্ষা করুন ।না হলে অন্যকারো কাছে যান…
.
৩দিনপর…
রিপোর্টগুলো নিয়ে মেরিন একাই গেলো ডক্টরের কাছে । আর সব চেক করে kane যা বলল তা শুনে মেরিনের মরে যাওয়ার উপক্রম …
kane : i am sorry মিসেস চৌধুরী…
মেরিন : মমমমানে?
kane : মিস্টার চৌধুরীর heart condition ভীষন খারাপ । point … >//3…
এর কোনো treatment নেই…. accept heart tranplanting or heart donating …
মেরিন এসব শুনে blank হয়ে গেলো ।
Kane : মিসেস মেরিন… মিসেস মেরিন… আপনি কি বুঝেছেন আমি কি বলেছি ?
মেরিনের হুশ ফিরলো। তেরে গিয়ে kane এর গলা চেপে ধরলো ।।
মেরিন : তোর সাহস কিভাবে হয় কথা বলার? বল..
kane কোনো রকমে নিজেকে ছারালো । কাশি দিতে লাগলো।
kane : have you lost it? আমি আপনার মনের অবস্থা বুঝি। কিন্তু কিছু করার নেই ।
মেরিন : iii m sssorry ডক্টর । আপনি আমার নীড়কে বাচান। প্লিজ । যতোটাকা লাগে আমি ব্যায় করবো তবুও আমার নীড়কে বাচান।
মেরিন kane এর পা ধরে কাদতে লাগলো।
kane : hey মেরিন… প্লিজ স্টপ… প্লিজ। দেখুন এখানে টাকার বিষয়না । আর এটা চোখ , কিডনী বা লিভার না যে easily donor পাওয়া যাবে। এটা heart… আর heart donate করা মানে নিশ্চিত মৃত্যু…
মেরিন :আমি কিচ্ছু জানিনা । আমি কেবল জানি আমি আমার নীড়কে সুস্থ চাই… ব্যাস… আর কিছুনা। আপনি just donor খুজুন।
kane : of course….
.
বাসায়…
মেরিন যেতেই ওরা ৩জন জানতে চাইলো যে কি হয়েছে ।
মেরিন : ততেমন কিছুনা। ওই just ছোট্ট ১টা surgery করতে হবে তারপরেই সব okk…
নীলিমা : আলহামদুলিল্লাহ । আমার কলিজার টুকরার কিছু হয়নি…
মেরিন জোরাতালির হাসি দিলো । নিহালের কেমন ১টা সন্দেহ হলো। ওর মনে হলো মেরিন কিছু ১টা লুকাচ্ছে ।
একটুপর নিহাল মেরিনকে একা নিয়ে
জিজ্ঞেস করলো : সত্যি করে বলো নীড়ের কি হয়েছে ?
মেরিন : বলললাম তো তেমন কিছুনা।
নিহাল মেরিনের হাত নিজের মাথায় রেখে
বলল : বলো আমার ছেলের কি হয়েছে ?
মেরিন বাধ্য হলো সব বলতে …
নীলিমাও সব শুনতে পেলো আর সব শুনে ২জন নির্বাক হয়ে গেলো । কান্নায় ভেঙে পরলো । মেরিন ২জনকে কোনো রকমে সামাল দিলো ।
২দিনপর দাদুভাইও singapore চলে এলো ।
.
পরদিন…
মেরিন : ডক্টর আজকে কোন donor পাওয়া গিয়েছে?
kane : no…
মেরিন : no no no no… আর কতোদিন no শুনতে হবে? ৩দিন ধরে একই কথা বলছেন…
Kane : মেরিন আপনি অযথাই আমার সাথে এমন ব্যাবহার করছেন… এটা heart অন্য কোনো body part না যে easily donor পাওয়া যাবে…
মেরিন : কতোদিন wait করতে হবে… ১ ১টা দিন যাচ্ছে আর নীড়ের condition আরো…
kane : হ্যা … জানি যে নীড়ের condition অনেক খারাপ হচ্ছে… ধীরে ধীরে… হয়তো বেশি লেট হলে নীড়কে বাচানোও সম্ভব হবেনা । but we r helpless… কিছু করার নেই….
.
৭দিনপর…
রাতে…
নীড় ঘুমিয়ে আছে। মেরিনের চোখে তো রোজকার মতো। নীড় অসুস্থ হওয়ার পর থেকে ১টা রাতও মেরিনের তেমন ঘুম হয়নি। নীড়ের চিন্তায়।
মেরিন মনে মনে : যদি donar না পাওয়া যায়….? already কতো গুলো দিন শেষ । heart তো কেউ donate করবেও না । সেই সাথে blood group ও match ও করাতে হবে । ১টা উপায় আছে। আমার blood group ও তো O+… আমার heart টাই যদি আমি নীড়কে দেই…? but female & male দের তো খানিকটা difference থাকে। কালই ডক্টর kane কে জিজ্ঞেস করবো।
.
পরদিন…
kane : পাইনি donor মেরিন।
মেরিন : না আজকে কিছু জিজ্ঞেস করতে এসেছি।
Kane : কি?
মেরিন : opposite gender এর heart transplant করা টা কি risky?
kane : কেন ?
মেরিন : বলুন না…
kane : হামমম। enough risky…. 50-50 chance…
মনে মনে : কোথাও মেরিন নিজের heart donate করার কথা ভাবছে না তো… যাই হোক ওকে distract করা দিয়ে কথা…
মেরিন : ওহ…
kane : আর heart transplant তো এমনিতেই risky… opposite gender হলে ৮-১০% বেশি । এই আর কি। but আমার কিন্তু record আছে আমি opposite gender এর heart transplant করেছি। আর তারা ঈশ্বরের দয়ায় এখনও সুস্থ আছে।
মেরিন : ….
kane : এখন বলুন তো কাহিনী কি???
মেরিন : ডক্টর আমি আমার heart নীড়কে দিতে চাই…
kane : what ?
মেরিন : জী…
kane : have you lost it… heart donate করার মানে কি জানেন? মরে যাওয়া…
মেরিন : আর কিছু হলে সেটা আমার কাছে মরে যাওয়ার থেকেও ভয়ংকর ।
kane : i am sorry মেরিন কিন্তু আমি এটা পারবোনা।
মেরিন : তাহলে বাধ্য হয়ে আমাকে অন্য ডক্টরের কাছে যেতে হবে…
kane মনে মনে : oh no… অন্য ডক্টরের কাছে গেলে তো…
kane : মেরিন মেরিন… দেখুন… এটা অনেক বড় decision … ভালো করে ভেবে দেখুন । হয়তো change হবে।
মেরিন : ভেবেছি। অনেক ভেবেছি । আর মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর decision always unchanged …
kane : কিন্তু…
মেরিন : কোনো কিন্তু টিন্তু নয়। আমি আমার নীড়কে সহী-সলাামত চাই…
kane : ok… fine… চলুন… আগে আপনার কিছু check up করতে হবে।
মেরিন check up করালো।
মেরিন : যতো তারাতারি সম্ভব surgery এর ব্যাবস্থা করুন।
kane : ok then 15th july… মানে কালকে ।
মেরিন : no… 15th না 16th july…
kane : why ?
মেরিন : ডক্টর আসলে 15th july আমাদের 7month married anniversary … আর তো anniversary পালন করা সম্ভবনা… তাই এটাই…
kane : আপনি নীড়কে এতো ভালোবাসেন…?
মেরিন কিছু না বলে চলে গেলো…
.
নীড় সাগর পারে বসে আছে…
তখন ওর ফোনটা বেজে উঠলো…
নীড় : hello … my dear friend kane…
kane : নীড়…
নীড় : কি ব্যাপার দোস্ত… তোর কন্ঠ এমন লাগছে যে…
kane : তোর বউ তোকে খুব ভালোবাসেরে। খুব…
kane নীড়কে সব বলল। আর সব শুনে নীড়ের চোখ কোন দিয়ে টুপটুপ পানি গরিয়ে পরতে লাগলো…
kane : জানিনা এতো বড় মিথ্যা নাটকটা তুই কেন করছিস ? আর কেন 15th julyটাই climax এর ব্যাবস্থা করেছিস। কিন্তু মেয়েটাকে এতো বড় ধোকা না দিলেও পারতি…
kane রেখে দিলো।
হামম নীড় সবই নাটক করেছে। বাংলাদেশে হয়তো মেরিনকে জেলে ঢোকানো সম্ভব না। কিন্তু singapore বা যেকোনো foreign country তে মেরিন তেমন কিছুই করতে পারবেনা। আর interpole officer দের দিয়ে মেরিনকে শাস্তি দিবে। নারী ও শিশু পাচারের জন্য ।
.
রাত ১২টা….
নীড় বাসায় গেলো। রুমে ঢুকে অবাক হয়ে গেলো । কারন রুমটা নানাধরনের সুন্দর সুন্দর মোমবাতি দিয়ে সাজানো । যা দেখে নীড়ের কেন যেন চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা করছে । মেরিন এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : happy 7 month anniversary জান…
বলেই মেরিন নীড়ের পিঠে কিস করলো।
মেরিন : ৭ মাস হয়ে গেলো আমাদের বিয়ের। আর এই ৭মাস আমার এই ২৩বছরের জীবনে সব থেকে সেরা ৭মাস। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে এই ৭টা মাস উপহার দেয়ার জন্য।
নীড় ভেবে দেখলো যে এই ৭মাসে ও মেরিনকে ঘৃণা , অপমান , অবহেলা ছারা কিছুই দেয়নি । তবুও মেরিন ধন্যবাদ দিচ্ছে ওই ৭টা মাসের জন্য। নীড় আর পারলোনা নিজেকে ধরে রাখতে । নীড় মেরিনকে নিজের থেকে সরিয়ে ওর দিকে ঘুরে ওকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : কেন এতো ভালোবাসিস আমাকে বনপাখি… কেন… কেন এতো বেশি ভালোবাসিস আমাকে… এমন করে যে কখনো তোকে আমি ভালোবাসতে পারবোনা… কখনো না…
মেরিন নীড়ের কোনো কথাই শুনতে পায়নি। ও তো তখনই স্থির হয়ে গেছে যখন নীড় ওকে “বনপাখি” বলে ডেকেছে। চোখ দিয়ে আপনগতিতে পানি গরিয়ে পরছে। কতোবছর পর নীড়ের মুখে “বনপাখি” শুনলো।
নীড় মেরিনকে ছারলো। ওর চোখের দিকে তাকালো। মেরিনও নীড়ের চোখের দিকে তাকালো । মেরিনের মনে হচ্ছে আজকে ও নীড়ের চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা দেখছে ।
নীড় ঠোট দিয়ে মেরিনের চোখের পানি শুষে নিলো। এরপর কোলে তুলে নিলো। এরপর romance করলো…
😒😒😒
for the first time…
.
ভোর ৪টা…
মেরিন নীড়ের বুকে ঘুমিয়ে আছে । নীড় এখনও জেগে আছে।
নীড় মনে মনে : ভালোবাসি তোকে… হ্যা তোর মতো এতো বেশি ভালোবাসার ক্ষমতা আমার নেই । কিন্তু আর কোনো মাসুম বাচ্চাদের জীবন শেষ হতে দিতে পারিনা…
.
সকালে…
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। নীড় ঘুমিয়ে আছে। মেরিন নীড়ের চোখে মুখে অসংখ্য ভালোবাসার পরশ দিয়ে
বলল : মরেও শান্তি পাবো ।
মেরিন fresh হয়ে বাইরে গেলো।
মেরিন : দাদুভাই… দাদুভাই…
দাদুভাই : বলো দিদিভাই।
মেরিন দাদুভাইয়ের হাতে ৪-৫টা file দিলো। দাদুভাই সেগুলো দেখে অবাক। কারন সব property file..
দাদুভাই : এসব কি ? তুমি সব নীলিমার নামে transfer করেছো?
মেরিন : ফুপ্পিই তো খান বাড়ির উত্তরসুরী ।
দাদুভাই : হ্যা but ও তো তোর ওপর রাগ করে ১টা সুতাও নেয়নি…
মেরিন : এখন তো নিতেই হবে। এখন তো রাগের কারনই থাকবেনা।
দাদুভাই : মানে?
মেরিন : মানে কিছুনা। বলো কি খাবে?
দাদুভাই : কথা কাটাচ্ছো দিদিভাই…
মেরিন : ধ্যাত না।
দিদিভাই : আমার কসম দিদিভাই বলো …
মেরিন বাধ্য হলো সব বলতে।
দাদুভাই : কি বলছো দিদিভাই.. তুমি…
মেরিন : প্লিজ দাদুভাই… আমাকে বাধা দিওনা। নীড়কে ছারা আমার বেচে থাকা সম্ভব না। নীড়ের কিছু হলে আমিও মরে যাবো । এরথেকে ভালো আমিই চলে যাই । আমি থাকি না থাকি নীড়তো থাকবে…
নীলিমা : এতো ভালো কিভাবে বাসলিরে…
২জন ঘুরে দেখে নীলিমা দারিয়ে আছে। ও দাদুভাইকে মেডিসিন খাওয়াতে এসেছিলো। আর সব শুনে নিলো । ফুপু-ভাতিজীর মিল হলো। melodrama হলো।
🐸🐸🐸
.
দুপুরে খাওয়া-দাওয়ারপর…
বিকালে…
সবাই বসে কথা বলছে তখন ১দল interpol officers এসে হাজির।
office : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী you are under arrest …
সবাই : what???
officer : yes…
নিহাল : কেন? কি করেছে মামনি?
officer : তিনিই নারী ও শিশুপাচারে জরীত…. আমাদের কাছে সব প্রমান আছে।
দাদুভাই : অসম্ভব কোনোদিনও না ।
তখন নীড়
বলল : কোনোদিনও…
নীড় এগিয়ে এলো ।
নীড় : মেরিন জরীত। actually জরীত কি ও তো নিজেই এই business করে…
নিহাল : নীড়… তোমার সাহস কি করে হয় এতো বড় কথা বলার?
নীড় : ঠিক কাজ করার সাহস বরাবরই আমার অনেক বেশি। আর এই ২মাস ধরে অসুস্থতার acting করে আমি ওর বিরুদ্ধে প্রমান একজোট করেছি…
নীলিমা : মানে?
নীড় : মানে আমার কিছুই হয়নি। i am absolutely fine… এসব কিছু শুনে মেরিন ভেঙে পরবে । আর ওর পুরো focus আমার ওপর থাকবে। আর সেই সুযোগে আমি আমার উদ্দেশ্য হাসিল করবো। আর কারো ওপর ভরসা করাও সম্ভব ছিলোনা accent kane… he is my good friend …
মেরিনের দিন-দুনিয়া ঘুরতে লাগলো। ২চোখ থেকে ২ফোটা করে পানি গরিয়ে পরলো।
.
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো। সবাই হাসি দেখে অবাক হলো।
মেরিন : আপনি তো সারাজীবন আমার কাছে ভালোবাসার নীড়ই থাকবেন… কিন্তু আমি কখনোই আপনার কাছে ভালোবাসার মেরিন হবোনা। চিরকাল ঘৃণার মেরিন ই থাকবো । আপনি চাইলেও আমাকে ভালোবাসতে পারবেন না। আপনি যতোবার আমাকে ভালোবাসতে চাইবেন ততোবারই আপনাকে ঘৃণার কারন দিবো…
আপনি আমাকে ভালোবাসতে চাইবেন পারবেন না।
৭বছর বিনা দোষে জেল খেটেছি। ছেলেবেলার ৭বছর নষ্ট হয়েছে… এখন আর হবেনা।
৭দিনপর আপনার আর আমার জন্মদিন… আর ঠিক ৭দিন পরই জেল থেকে বেরিয়ে এসে দারাবো আপনার সামনে । একসাথে কেক কাটবো।
বলেই চোখ মারলো। এরপর হাতকরা লাগানো হাতজোরা নীড়ের মাথা ওপর দিয়ে ঢুকিয়ে নীড় মাথা ধরে কাছে টেনে কিস করতে লাগলো । নীড় তো just shocked… পুলিশ , প্রেস , মিডিয়া বা অন্যকেউ ছারাতে আসবে কি এমন সিন দেখে সবাই বাকরুদ্ধ। লজ্জায় পরে গেলো । নীড় যে সরাবে তার উপায় নেই। কারন মেরিনকে ধাক্কা দিতে গেলে হাতকরার জন্য মেরিনের হাতের সাথে ধাক্কা লেগে ও মেরিনের আরো কাছে চলে যাচ্ছে। মেরিন নিজের মন মতো কিস করে নীড়কে ছারলো। হাত জোরা আবার নীড়ের মাথার ওপর দিয়ে তুলে নিলো। পুলিশ মেরিনকে নিয়ে গেল…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 7
writer :
.
মেরিনকে তো নিয়ে গেলো। মেরিনকে নিয়ে যাওয়ার পর দাদুভাই নীড়কে ঠাস করে থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই : তুমি তো সব লিমিট ক্রস করে ফেলেছো নীড় সব…. ধিক্কার তোমার ওপর…
নীড় : নানাভাই… এবার তো মেরিনের support করা বন্ধ করো । এতো বড় ভুল কাজের পরও ওর support করছো…
দাদুভাই : হ্যা করছি … কারন দিদিভাই ভুল করেনি…
নীড় : নানাভাই তুমি তো support করবেই । কারন তুমি তো আগে থেকেই জানতে । তুমিও তো জরীত আছো।
নীলিমা : নীড়… মুখ সামলে কথা বলো। তুমি ভুলে কি যাচ্ছো যে তুমি কার সাথে বলছো ? কিসের ভিত্তিতে কোন সাহসে বলছো ?
নীড় : ঠিকই বলেছি । আমি নিজের কানে শুনেছি … মেরিন আর নানুভাই কে বলতে শুনেছি…
নিহাল : মানে?
নীড় সেদিনের কথা বলল। সব শুনে সবাই অবাক । দাদুভাই ৩টা তাচ্ছিল্যের হাত তালি দিলো …
.
দাদুভাই : বাহ… বাহ… তোমার তুলনা দেয়া অসম্ভব… তুমি তো অতুলনীয়… তোমার জন্য যতো প্রশংসা করবো ততোকম… সেদিন… সেদিন মেয়েটা নিজের জীবন বাজী রেখে কয়েক’শ শিশু আর মেয়েদের বাচিয়েছিলো… একটুর জন্য gang leader কে ধরতে পারেনি… এখন বলবে এগুলো কেউ জানলো না কেন? মিডিয়ায় এলোনা কেন? news এ তো দেখালো যে অন্যকেউ উদ্ধার করেছে।
হ্যাহ…
ও হলো মেরিন বন্যা…
যেখানে সবাই ভালো কাজ প্রকাশ্যে আর খারাপ কাজ লুকিয়ে করে সেখানে ও… বিপরীত…
খারাপ কাজ প্রকাশ্যে আর ভালো কাজ লুকিয়ে করে… কারন ও
ঘৃণার মেরিন …
ঘৃণার…
যার বাবা নেই তবুও সে মন করে যে তার বাবা বেচে আছে …
যার মা আছে কিন্তু মনে করে মা মরে গেছে…
যে ছোট বেলায় ২মায়ের ভালোবাসা পেয়েছে… নিজের মা আর ফুপ্পি মায়ের ভাসোবাসা পেয়েছে কালের পরিবর্তনে সে তার ২মায়েরই ঘৃণার ব্যাক্তিতে পরিনত হয়েছে ।
বাধিয়ে রাখার মতো ভাগ্য…
নীড় : মমমিথ্যা বলছো তততুমি… মেরিন দোষী…
নীলিমা : হামম। মেরিন দোষী। কারন ও তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে…
নিহাল… আমার মেয়েটাকে ছারিয়ে আনো। যে করেই হোক । কালকের মধ্যেই ।
নিহাল : সে আর বলতে… আমি এখনই দেখছি….
.
দাদুভাই : দারাও নিহাল…
নিহাল : বাবা…
দাদুভাই : ১পাও বারাবেনা…
নীলিমা : কিন্তু বাবা… মেয়েটা…
দাদুভাই : মেয়েটা? অবাক না আজকে তোর কাছে মেরিন মেয়ে হয়ে গেলো। কারন টা কি একটু বলবি? তোর ছেলেকে heart donate করতে চেয়েছিলো বলে? না কি খান empire তোর নামে করেছে বলে?
নীলিমা : বাবা…
দাদুভাই : হামম। ঠিকই তো বলেছি ।
নীলিমা : …
দাদুভাই : আমার নাম শমসের খান হলেও খান বাড়ির আসল সের খান তো মেরিন বন্যা…
বন্যাকে হয়তো কিছুদিনের জন্য বাধ দিয়ে আটকে রাখা যায় কিন্তু আজীবনের জন্য না…
যে মেরিন মানে জাহাজ… নিজের destination এর উদ্দেশ্যে ১বার পারি জমায় তখন যতোই বাধাবিপত্তি আসুকনা কেন সাগরে সেই মেরিন ফিরে আসেনা। নিজের পথে নিজের গতিতেই ধেইধেই করে চলতে থাকে। গভীর তলে তলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সে লরাই করতে থাকে ।
কোনো বন্দুকের গুলি যেমন ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব না তেমনি মেরিন বন্যার মুখের কথাও। ও কবির ফয়সাল খানের মেয়ে।
ও যখন বলেছে যে ৭দিনপর ও বের হবে তখন ঠিক ৭দিন পরই ও বের হবে। না ১দিন আগে আর না ১দিন পরে। 22nd july …
তারিখটা মনে রেখো মিস্টার নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ।
বলেই দাদুভাই চলে যেতে নিলো ।
নীলিমা : দারাও বাবা …
বলেই নীলিমা সব দলিলপত্র নিয়ে এলো । এরপর সেগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিলো ।
নীলিমা : খান empire সের খানেরই না হয় থাক বাবা …
.
in the jail…
মেরিন দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে। বার বার দেয়ালে মাথা বারি দিচ্ছে ।
মেরিন : কেন কেন কেন নীড়… এতোবড় ছলনা কেন করলেন ? কেন ? শুধু আপনাকে ভালোবাসি বলে এমন শাস্তি দিলেন তো … ঠিক করেন নি… ভুল করেছেন … এর শাস্তিও আপনাকে পেতে হবে। হবেই…
তবে ভুলটা আপনার নয় আমার । আমি আমার ভালোবাসাকে নিজের ওপর ভারী হতে দিয়েছি…
ভালোবাসার কালো কাপড়ে চোখ বেধে ফেলেছিলাম … এখন সেই কাপড় নিজেই খুলবো …
আপনাকে ভালোবেসে নরমালভাবে থাকতে চেয়েছিলাম … কিন্তু আপনি … ভালো হওয়া আমার নসীবে নেই । ঘৃণা যার অস্তিত্ব তার জীবনে ভালোবাসার ছিটেফোটা থাকাও বেমানান…
.
ওদিকে…
নীড় : আমি এতো বড় ভুল কি করে করতে পারি… ছিঃ ছিঃ নীরার কথার জালে পা দেয়া ঠিক হয়নি … কিন্তু ওই সব প্রমান… damn it…
আমি যখন ভুল করেছি তখন শুধরাবোও আমি …
কালই বনপাখিকে বের করিয়ে আনার ব্যাবস্থা করবো ।
এসব ভাবতে ভাবতে নীড় সাগর পার দিয়ে হাটছে । তখন কোথায় থেকে ১দল কালো পোশাক পরা মুখোশধারী লোক এলো। তাদের মধ্যে ১জন খুব সাবধানে নীড়ের ঘাড়ে ১টা injection push করলো । নীড় অজ্ঞান হয়ে গেলো ।
.
পরদিন…
জন মেরিনের সাথে দেখা করতে এলো ।
জন : ম্যাম কেন আপনি ৭দিন পরের bail এর কথা বললেন ? আপনি এতোগুলো দিন এখানে কি করে থাকবেন ?
মেরিন : ৭সংখ্যাটার সাথে আমার অনেক পুরোনো সম্পর্ক … সেই সাথে ভীষন পছন্দেরও… ১ম কাজ হয়েছে ???
জন : জী ম্যাম… নীড় স্যারকে আপনার কাল কোটরীতে পাঠানো হচ্ছে by water…
মেরিন : good… ambassador এর সাথে কথা বলো । আর… আমার ছোট্ট ১টা message নীড়ের কাছে পৌছাতে হবে …
জন : sure mam…
.
পরদিন …
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো । বেশ বড় অন্ধকারময় ১টা রুমে নিজেকে আবিষ্কার করলো । আর শুনতে পেলো কারো কন্ঠ । মেরিনের কন্ঠ….
মেরিন : hello জান… কেমন মেরিনের কাল কোটরী? king size presidential কাল কোটরী এটা …
অবাক হচ্ছেন যে আপনি এখানে কেন-কিভাবে এলেন …
আপনার প্রশ্ন যেখানেই শুরু হোক শেষ হবে আমাতেই। কারন আপনি বর্ষন আমি বন্যা …
আপনার অর্ধাঙ্গিনী আমি… তো আমি যদি জেলের চার দেয়ালে অন্ধকারে বন্দী থাকি তবে আপনি কিভাবে মুক্ত থাকতে পারেন …
আমি যদি ওই 3rd class খাবার খাই আপনি কিভাবে রাজকীয় খাবার খেতে পারেন?
এটা অন্যায় হবে। তাইনা?
so… যে কদিন আমি জেলহাজতে থাকবো সে কদিন আপনি এই কাল কোটরী তে থাকবেন …
জান…
কথা বন্ধ হয়ে গেলো ।
নীড় : মেরিন… মেরিন আমার কথাটা তো শোনো … তুমি কি শুনতে পাচ্ছো ? মেরিন … এই মেয়েটা just impossible … ধ্যাত … এই রুমে কিভাবে থাকবো … এই মেয়েটা আমাকে পাগল করে দিবে ।
.
21st july…
নীড় : yuck… কি খাবার ? এই কদিন ধরে এই ফালতু খাবার গুলো খেয়ে কি হাল হয়েছে… এতো শক্ত রুটি , ভাত , ঝাল কারি। ইউউউ… আর কতোদিন এখানে থাকতে হবে? আজকে কতো তারিখ? ২০ না ২১? may be ২১ ই হবে। তারমানে কালই বের হবে মেরিন… কালকে birthday wish করি না করি sorry বলে নিতে হবে । অনেক বারাবারি করে ফেলেছি… কিন্তু আমার আজকে এতো ঘুম পাচ্ছে কেন ? কখন দিন হয় কখন রাত হয় … বোঝাই যায়না …ধুর… ঘুমিয়েই পরি । কে জানে কালকে কি হবে ???
নীড় ঘুমিয়ে পরলো।
.
পরদিন…
নীড়ের ঘুম ভাংলো । কিন্তু নরমালভাবে না । গোলা-বারুদের আওয়াজে । নীড় চমকে উঠলো ।
নীড় : কি হয়েছে ? আরে এটাতো আমার রুম!!! এখানে কি করে এলাম !!! 😱। নিচে কিসের এতো হৈচৈ???
নীড় নিচে নামলো । নেমে দেখে যে ঢোল-নাগারা বাজছে । নিহাল-নীলিমা-দাদুভাই হাত তুলে তালে তালে নাচছে । সাথে মেরিনও নাচছে ধুমচে।
নীড় : মেরিন …
মেরিন নীড়কে দেখে ছুটে গেলো । গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : জান…. happy birthday জান… i missed you so mach… i love you…
নীড় : …
মেরিন : বলেছিলাম না আমাদের happy birthday এর দিন বেরিয়ে আসবো। hope you are not happy after seeing me…
নীড় : মে…
মেরিন : leave it… আপনার happy থাকা না থাকা matter করেনা । so lets dance জান…
মেরিন নীড়কে টেনে নিয়ে নাচতে লাগলো। কথা বলার সুযোগই দিলোনা ।
নীড় : এসব হচ্ছে টা কি??
মেরিন : আপাদত double celebration … তবে আজকের পার্টিতে তো triple celebration হবে ।
নীড় : মানে ?
মেরিন : মানেটাও জেনে যাবেন। এখন বর্তমান নিয়ে happy থাকুন। কে জানে ভবিষ্যত কেমন না কেমন হয়… এই পলকের আনন্দ পরের পলকে নাও থাকতে পারে … isn’t it… জা…ন ।
.
সন্ধ্যার পর…
grand party শুরু হলো। কেক কাটা মধ্যে দিয়ে program start হলো। ধুম-ধারাক্কা উৎসব চলছে। তখন মেরিন স্টেজে গেলো।
মেরিন : attention everybody… আজকে আমার birthday .. but i have something special to give you… as return gift… আমি damn sure যে এই hot hot gift সবার ভালো লাগবে … lights off.. please …
মেরিন স্টেজ থেকে নেমে গেলো। একটুপর স্টেজে spot light জ্বলে উঠলো ।
নীড় : নীরা…
মেরিন : yeah my jaan… its your জান… lets enjoy together … item girl লাগছে ? তাইনা…
নীড় : ও কেন নাচবে?
মেরিন : কষ্ট হচ্ছে ওর জন্য ? কিভাবে defective পা নিয়ে dance করবে? সবাইকে entertain করবে?
নীড় : তুমি …
মেরিন : আমি যা করি তা কেবল নিজেকে entertain করার জন্য । অন্যকে নয় জান … lets see the “মুঝরা” … hey u নী…রা … what are you waiting for ? কোনো শুভক্ষনের ? শুরু কর…
নীরা নাচতে শুরু করলো। তবে ১৫-২০সেকেন্ডের মাঝে ও বুঝতে পারলো যে floor টা গরম হতে হতে অনেক গরম হয়ে গিয়েছে । ১টা পর্যায়ে ওর আর দারিয়ে থাকতেই পারলো না।
আহ বলে বসে পরলো।
নীরা : আহ… its too hot মেরিন আমাকে ছেরে দে… আর পারছিনা…
মেরিন : পয়সা দিচ্ছিতো । hey gusy… ব…ব…বা… বায় whatever … নর্তকীরানীর মন ভরেনি পয়সায় আরো পয়সা লাগবে…
মেরিন টাকা ছিটাতে লাগলো নীরার ওপর।
মেরিন : আপনি কি উঠবেন নাকি নিজের চিতায় পুরবেন?
নীরা কোনো রকম উঠে দারিয়ে নরতে লাগলো।
মেরিন : আরেকটু twist দেই… জন…
জন স্টেজে কাচ ভাঙা বিছিয়ে দিলো । গরম আর কাচভাঙার আঘাতে নীরার বেচে থাকা দায়। অজ্ঞান হয়ে গেলো ।
মেরিন : awwwe … poor girl… জন আবর্জনাটাকে বাহিরে ফেলে আসো । right now….
.
রাতে…
নীড় : what is all this… তুমি আমার হাত-পা শেকল দিয়ে বাধলে কেন ?
মেরিন : এখনই বুঝে যাবেন … জান…
নীড় : তুমি ওই লোহার কাঠি আগুনে কেন গরম করছো?
মেরিন : নীড়… এটা নরমাল লোহার কাঠি নয়। ধারালো লোহার কাঠি…
নীড় : গরম কেন করছো ?
মেরিন : সেটাও এখন বুঝে যাবেন…
মেরিন সেই কাঠিটা গরম করে নীড়ের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
মেরিন : জানেন নীড় … আজ পর্যন্ত তো আমি মেরিন চাইনি আপনার গায়ে কোনো ফুলের আচর লাগুক… লাগতে দেইও নি… কিন্তু আজকে আপনার শরীরে সবথেকে ক্ষত আমি সৃষ্টি করবো… আর আপনি সেটা feel করবেন…
ভীষন ইচ্ছা হচ্ছে যন্ত্রনায় আপনার কাতর কন্ঠ…
আর্তনাদ…
নীড় : ….
মেরিন : আপনাকে birthday gift দিবো নীড়….
আজকে আপনার হাতে আমি আমার নাম লিখবো। ঘৃণার মেরিন লিখবো…
চাইলেও আপনার মাঝে থেকে আমাকে সরাতে পারবেন না…
মেরিন নীড়ের হাতে লিখতে লাগলো। নীড় ব্যাথা তো পাচ্ছে তবে তার থেকে বেশি অবাক হচ্ছে … কারন মেরিন ওকে এভাবে ব্যাথা দিচ্ছে।
মেরিন মনে মনে : i am sorry … আপনাকে কষ্ট আমি দিতে চাইনি । আপনি আমাকে বাধ্য করেছেন এমনটা করতে…
.
নীড়ের হাতে লেখা শেষে মেরিন পরম যত্নে নীড়ের হাতে মলম লাগিয়ে দিতে লাগলো। ওর reaction দেখে মন হচ্ছে যে ব্যাথা নীড় না ও ই পেয়েছে…
নীড় : আঘাত দিয়ে মলম লাগানোর মানে কি ?
মেরিন : নীড়… যখন আমরা জায়গা কিনি সেখানে খুব সুন্দর করে ঘড় তুলি… আবার মন চাইলে সেই ঘর ভেঙে নতুন করে তুলি… কেন জানেন ?
নীড় : …
মেরিন : কারন হলো ওই জমি আর ঘর ২টাই আমাদের নিজেদের হয়… যা ইচ্ছা করতেই পারি… ঠিক তেমনি আপনি পুরোটাই আমার….
আপনাকে ভালোওবাসবো আমি… কষ্টও দিবো আমি… আঘাতও করবো আমি… মলমও লাগাবো আমি…
যা মন চায় তাই করবো …
কারন আপনি বন্যারবর্ষন …
.
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 8
writer : Mohona
.
মেরিন : আপনি বন্যারবর্ষন …
বলেই মেরিন নীড়ের হাতের ব্যান্ডেজে কিস করলো ।
নীড় : হাতে ঘৃণার মেরিন লেখা টা জরুরী ছিলো?
মেরিন : of course … মানুষ ডানহাত বেশি use করে। accept lefty… আপনি যখন কাজ করবেন তখন আমার নামেটাকে দেখতে পাবেন…
এই লেখাটা এটা মনে করিয়ে দেবে যে বনে , জ্বলেজঙ্গলে যেখানেই যান না কেন আমাকে পাবেন ।
এই লেখাটা মনে করিয়ে দেবে যে আপনার জীবনেে এখন আমি আছি…. ঘৃণার ম়েরিন আছে ।
এই লেখা কখনোই আপনাকে ভুলতে দেবেনা যে ঘৃণার মেরিন আপনার জীবনের অংশ …
নীড় : …
মেরিন : নিন এখন ঘুমিয়ে পরুন… good night … & i love you… uffs…
মেরিন দৌড়ে ১টা injection নিয়ে এসে নীড়ের হাতে push করে দিলো ।
মেরিন : সকাল পর্যন্ত ব্যাথা ঠিক হয়ে যাবে। 😊।
.
সকালে…
নীড় রেডি হয়ে নিচে নামলো । দেখলো মেরিন already office এর জন্য রেডি হয়ে বসে আছে । ফুল হাতার dress পরা ।
নীড় মনে মনে : নির্ঘাত নিজের হাতেরও band বাজিয়েছে । সাইকো কোথাকার… 😒..
নীড় গিয়ে টেবিলে বসলো ।
নীড় : এসব কি!!! এই জঘন্য খাবার… yuck…
মেরিন : এগুলোকে healthy খাবার বলে।
নীড় : হোক… আমি এগুলো খাবোনা…
মেরিন : এগুলোই খেতে হবে।
নীড় : oh hello… তোমার কথা শুনবো কেন?
নিহাল : শুনতে হবে। কারন ও চৌধুরানী… চৌধুরী empire এর মালকীন…
নীড় : ও যদি মালকীন হয় আমি মালিক। 😎।
নিহাল : no my son… you r nothing … now she is everything …
নীড় : what???
মেরিন : হামমম। 😘
নিহাল : এখন থেকে তুমি মেরিনের servant …
নীড় : কি??? 😱।
মেরিন : হামম জান…
নীড় : এসবের মানে কি বাবা?
মেরিন : মানের আবার কি আছে? কিছুইনা। ভাবছি আমি আপনাকে বডিগার্ড বানাবো…
😎
নীড় : 😒।
মেরিন : কিন্তু না আপনাকে বডিগার্ড বানাবোনা … আপনাকে বডিগার্ড বানালে দেখা যাবে আমাকে রক্ষা করার জায়গায় আমার শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়ে আমাকেই মেরে দিবেন।শত্রুদের সাথে হাতও মিলাতে হবেনা। নিজের ইচ্ছাতেই মেরে দিবেন…😎।
নীড় : 😤।
.
office এ…
নীড় : একি আমার কেবিনে মেরিনের নাম কেন ? আমার নাম কোথায় গেলো?
মেরিন : দেখতে চান?
নীড় : হামম।
মেরিন : come with me…
নীড় মেরিন সাথে সাথে গেলো ।
নীড় : এটা আমার desk???
মেরিন : yeah…
নীড় : কিন্তু এটাতো আমার p.a. এর রুম ।
মেরিন : একটু ভুল । এটা আমার p.a. এর রুম। আপনার রুম। আজকে থেকে আপনি আমার p.a. ।
নীড় : কি ? 😱।
মেরিন : জী। so মিস্টার p.a. ৫মিনিটের মধ্যে আমার জন্য black coffee নিয়ে আসুন। এক মিনিটও যেন লেট না হয় ।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড় : এটা কোনো কথা না কবিতা ? নিজের বউর p.a. হবো? no never …
নীড় বসে বসে নিজের মতো কাজ করতে লাগলো ।
.
৬মিনিটপর…
মেরিন নীড়কে ফোন করলো ।
নীড় : hello…😒
মেরিন : আমার কফি কোথায় ?
নীড় : কিচেনে । বানিয়ে খেয়ে নাও । huh…
মেরিন : আরো ২মিনিট সময় দিলাম বানিয়ে নিয়ে আসুন । না হলে খবর আছে।
নীড় : হোক । huh…
নীড় ফোন রেখে দিলো ।
মেরিন : চৌধুরী বাবু… কফি তো আপনাকে বানাতেই হবে।
নীড় : জীবনেও বানাবোনা । আমি আমার project এ focus করি । আরে আমার project file টা কোথায় ?
নীড় খুজতে লাগলো । পাচ্ছেইনা ।
মেরিন : এটা খুজছেন বুঝি নীড়…
নীড় তাকিয়ে দেখে মেরিনের হাতে সেই file …
নীড় : তোমার হাতে এই file কিভাবে গেলো?
মেরিন : হেটেহেটে।
নীড় : দাও…
মেরিন : কেন দিবো… এটা আমার হাতে আমি যা ইচ্ছা করতে পারি।
বলেই মেরিন ম্যাচবক্স বের করলো। কাঠি জালিয়ে fileটার ৪দিকে ঘোরাতে লাগলো ।
নীড় : কি করছো কি?
মেরিন : যেটা দেখছেন…
নীড় : প্লিজ এমন কোরোনা।
মেরিন : আমি কেন আপনার কথা শুনবো ? আপনি কি আমার কথা শুনেছেন?
নীড় : কি কথা?
মেরিন : আমার p.a. হয়ে কাজ করার কথা…
নীড় : ok fine শুনবো…
মেরিন : god promise …
নীড় : god promise … এখন তো দাও।
মেরিন : হামম দিবো । তবে বিকালে।
নীড় : বিকালে কেন?
মেরিন : আপনি কেমন কাজ করবেন সেটার ওপর depend করেই file হাতে পাবেন।
নীড় : কিন্তু বিকালে file পেলে কি হবে? কাজ কিভাবে করবো?
মেরিন : IDK …
নীড় : মানে ?
মেরিন : i don’t know… ৫মিনিটের মধ্যে কফি বানিয়ে আনুন। bye…
বলেই মেরিন চলে গেলো ।
নীড় : বউ নাকি আজরাইল…
মেরিন সারাদিন নীড়কে অনেক জালালো। বিকালবেলা অবশেষে নীড় file হাতে পেলো । file খুলে নীড় অবাক হলো । মুচকি হাসলো । কারন file টা ও incomplete ই রেখেছিলো । আর এখন দেখছে complete … তাও একদম perfect … কোনো ভুল নেই । ও করলে এতো perfect হয়তো হতোনা ।
নীড় মনে মনে : মেয়েটা আসলেই কোনো ভুল করেনা।
.
রাতে…
মেরিন চুল বাধছে । চুল বেধে ১টা pillow & blanket নিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। নীড় খানিকটা অবাক হলো । গতরাতে তো ব্যাথা আর মেডিসিনের effect এ ঘুমিয়ে পরেছিলো । তাই দেখেনি যে মেরিন সোফায় ঘুমিয়েছিলো।
নীড় মনে মনে : একি দেখছি আমি ? স্বপ্ন ? নাকি সত্যি? ও আমার কলিজার ওপর থেকে সরে সোফায় ঘুমাচ্ছে !!! জ্বর টর এসেছে নাকি ভূতে ধরেছে ??? কিছু তো ঘাপলা আছে । কিন্তু কি?? অসুস্থই মনে হয়…
মেরিন : না ঘুমিয় তাকিয়ে আছেন কেন?
নীড় : আমার চোখ আমার ইচ্ছা। তাকিয়ে থাকবো না চোখ বন্ধ করে থাকবো সেটা আমার ব্যাপার। 😒।
মেরিন : সারাদিন অনেক কাজ করেছেন । এখন ঘুমান…
নীড় : না…
মেরিন : ok তাকিয়ে থাকুন…
বলেই মেরিন শুয়ে পরলো । শুয়ে শুয়ে mobile এ কিছু করছে ।
নীড় : তোমার কি জ্বর এসেছে ? 😕
মেরিন : কেন ? 😒।
নীড় : কিছুনা। তোমার মোবাইলের আলোতে আমার ঘুম আসছেনা । চোখে লাগছে ।
মেরিন কোনো কথা না বলে চুপচাপ বারান্দায় চলে গেলো ।
নীড় : এই মেয়েকে বোঝা বড় দায়। কি করে কেন করে…
নীড় সোজা হয়ে শুয়ে পরলো। তখন ওর মাথায় ঢুকলো যে কাহিনী কি? নীড় আর ১মিনিটও দেরি না করে বারান্দায় গেলো । গিয়ে মেরিনকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো । মেরিন অবাক react করলোনা ।
নীড় : i am sorry …
মেরিন : …
নীড় : অনেকবেশি বারাবারি করে ফেলেছি…
মেরিন : …
নীড় : আমি জানি যে আমি অনেক hurt করে ফেলেছি তোমাকে। ধোকা দিয়েছি… ছলনা করেছি … অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি …
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো ।
নীড় অবাক হলো । মেরিন নীড়কে ছারালো ।
মেরিন : কালকে আপনাকে ১টা জায়গায় নিয়ে যাবো ?
নীড় : কোথায় ?
মেরিন : গেলেই বুঝবেন। যান গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন জান …
নীড় : তুমি ঘুমাবেনা?
মেরিন : হামম। আপনি যান ।
।
সারারাত নীড়-মেরিনের ঘুম হলোনা।
.
পরদিন…
নীড় : ১ঘন্টা ধরে drive করেই যাচ্ছো । কোথায় যাচ্ছো কোথায় ?
মেরিন : এই তো ৫মিনিট… ওরা পৌছালো ।
নীড় : এটাতো কুমোড়পারা…
মেরিন : আমি কি বলেছি এটা কামারপারা??? নামুন…
২জন নামলো । ভেতরে ঢুকলো । নীড় মেরিনের পিছু পিছু গেলো। মেরিন ১টা কুমোড়কে সরিয়ে দিয়ে ১টা চাকার সামনে বসলো । একটু মাটি নিলো ।
মেরিন : এই একটু মাটি নিলাম । চলুন ১টা মুর্তি বানাই ।
নীড় : তুমি মুর্তিও বানাতে পারো ?
মেরিন মুচকি হাসি দিলো । মেরিনের হাসির রহস্য নীড় কখনোই বুঝবেনা ।
মেরিন ১টা মুর্তি বানালো ।
মেরিন : সুন্দরনা মুর্তিটা? দেখুন।
নীড় : হামম। 😒
মেরিন : 😊।
পলকেই মু্র্তিটা মেরিন নষ্ট করে ফেলল ।
নীড় : এটা কি করলে?
মেরিন : ভেঙে ফেললাম।
নীড় : বানালেই বা কেন আর ভাঙলেই বা কেন ?
মেরিন : কারন এই মাটিই বলুন আর মুর্তিই বলুন ২টার ১টারও কোনো feelings নেই । তবে এই মাটি সবথেকে ভয়ংকর… এরথেকে বড় শাস্তি প্রদানকারী আর কিছু নেই … মাটির কোনো feelings নেই । কিন্তু কখনোই সে কিছু ভুলেনা …
যেখানে মাটিই কিছু ভোলেনা সেখানে পানি… পানি কি করে আপোস মানবে ? পানির অপর নাম কেবল জীবন নয় কখনো পানির অপর নাম মরনও …
নীড় : তোমাকে চেনা বড় দায়।
মেরিন : হাহাহা…
মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে চেনার বা বোঝার ক্ষমতা তো স্বয়ং মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীরই নেই… বাকীরা কি বুঝবে?
নীড় : …
মেরিন : চলুন… back করা যাক…
নীড় : হাত ধুবেনা ?
মেরিন : হামম । ওই তো নদী ওখানেই ধুয়ে নিবো ।
নীড় তাকিয়ে দেখলো নদী ।
নীড় : wow…
মেরিন বাকা হাসি দিলো ।
মেরিন হাটু পর্যন্ত পানিতে নামলো । নীড়েরও নদী অনেক প্রিয়। তাই নীড়ও নামলো । নীড় পানি ধরে খেলতে লাগলো ।
নীড় : ইচ্ছা করছে গোসল করি। সাতার কেটে ওই পারে যাই… lovely…
নীড় ভবের দুনিয়ায় আছে। তখন হঠাৎ করে মেরিন দিরিম করে নীড়কে ধাক্কা মারলো। হঠাৎ করে ধাক্কা মারাতে নীড় balance রাখতে পারলোনা। পরে গেলো। হাবুডুবু খেতে লাগলো। মেরিন দারিয়ে দেখতে লাগলো। দেড় মিনিটপর মেরিন নীড়কে টেনে তুলল । নীড় কাশি দিতে দিতে
বলল : তুমি কি পাগল?
মেরিন : হামমম। only for you… সাতার কাটবেন ? ওইপার যাবেন ?
নীড় : অতো বড় নদী পারী দিবে ?
মেরিন : হামম।
নীড় : স্রোত যে বিপরীতমুখী…
মেরিন : তাই জন্যেই তো পারী দিতে চাইছি ।😎।
নীড় : alien …
মেরিন : ok । bye…
বলেই মেরিন দৌড়ে পানির গভারের দিকে গেলো।
নীড় : আরে দারাও…
নীড়ও পিছে পিছে গেলো। ২জন ১সাথেই অপর পাশে গেলো ।
.
কিছুদিনপর…
মেরিন office যাচ্ছে । তখন রাস্তায় ১টা আধা পাগল type দারিওয়ালা লোককে দেখলো ।
মেরিন : বাবা…
রাস্তায় জ্যাম লেগে আছে।
মেরিন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পার হতে লাগলো। গাড়ি টারি কিচ্ছু দেখছে না। পাগলের মতো দৌড়ে যেতে লাগলো। হঠাৎ ১টা গাড়ি এসে মেরিনকে ধাক্কা মারলো । মেরিনের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে । দেখছে দূর থেকে নীড় দৌড়ে আসছে ।
নীড় : বনপাখি…
মেরিন : বাবাহ…. আমার বাবাহ… ওওওহই যে আহমার বাবা …
নীড় মেরিনকে নিয়ে হসপিটালে গেলো ।
নীড় OTএর বাইরে দারিয়ে আছে । ডক্টর বেরিয়ে এলো ।
নীড় : ডক্টর আমার বন… wife?
ডক্টর : no worry … তেমন আঘাত পায়নি ।
নীড় : thanks god…
ডক্টর : তাকে কেবিনে shift করা হচ্ছে । ৩-৪ঘন্টা পর তাকে দেখতে পারবেন।
নীড় : thank u…
ডক্টর : its my duty… excuse me…
ডক্টর চলে গেলো ।
.
একটুপর…
নীড় : ও মামার কথা বাবা বাবা কি বলছিলো ? হাত দিয়ে কি ইশারা করছিলো ? কিছু তো ১টা দেখাচ্ছিলো । কিন্তু কি? কিছু তো আছে । ওর জ্ঞান ফেরার পর জানতে হবে।
একটুপর নীড় মেরিনকে দেখতে গেলো। মেরিনের মাথায় হাত রাখলো ।
নীড় : ভালোও তুই খারাপও তুই… সত্যিই কি তুই খারাপ ? তোর খারাপের আরালে হয়তো খুবই ভালো কিছু আছে আর না হলে জঘন্য কোনো খারাপ সত্তা…
তুই বরাবরই ১টা রহস্য… যার কোনো কুলকিনারা নেই… তুই সেই রহস্য যা কেউ ভেদ করতে পারবেনা… আর আমি তো অতিসাধারন…
thats why i hate you… তোকে আমার সহ্য হয়না। কিন্তু এখন তুই আমার খারাপ অভ্যাস হয়ে গিয়েছিস… তোকে আর কোনোদিন ছারতেও পারবোনা ।
.
সকালে…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো … তাকিয়ে দেখলো নীড় বসে আছে । মেরিন মুচকি হেসে উঠে বসলো । ফোন খুজতে লাগলো । তখন নীড়ের ঘুম ভাঙলো ।
নীড় : তুমি ঠিক আছো ?
মেরিন : হয়তো… আমার ফোনটা কোথায় ?
নীড় : ফোন দিয়ে কি হবে?
মেরিন :আমার শ্রাদ্ধ …
.
চলবে
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 9
writer : Mohona
.
মেরিন : আমার শ্রাদ্ধ …
কথাটা শুনে নীড়ের মেজাজ বিগরে গেলো ।
নীড় : তুই কি কোনোদিনই নরমালভাবে কথা বলতে পারিসনা ব…
মেরিন : 😒। অশিক্ষিত লোকেরা বউদেরকে তুই তুখারি করে…
নীড় : shut up…
মেরিন : আমার mobile কোথায় ?
নীড় : কি করবি… i mean কি করবে সেটা আগে বলো…
মেরিন : মোবাইল দিয়ে কেউ আচার বানায় না i think…
নীড় : ঠ্যাটা…
নীড় মেরিনকে মোবাইল দিলো ।
মেরিন : হ্যালো জন…
.
নীড় : আজই রিলিজ নেয়া টা কি জরুরী?
মেরিন : of course…
নীড় : impossible …
মেরিন : Ik।
নীড় : Ik!
মেরিন : i know …😒…
তখন মেরিনের breakfast নিয়ে নিহাল-নীলিমা এলো ।
নিহাল : কেমন আছো মামনি?
মেরিন : absolutely fine বাবা।
নীড় মনে মনে : অ্যাহ absolutely fine… huu… কথা বলার energy নেই । সে আবার absolutely fine…
নীলিমা : ভালো থাকলেই ভালো এখন খেয়ে নিবি ।।
মেরিন : একদমই ক্ষুধা লাগেনি শাশুড়ি ফুপ্পি ।
নীলিমা : কোনো কথানা । নে হা কর ।
মেরিন : আচ্ছা দাও আমি হাত দিয়ে খাচ্ছি ।
নীলিমা : ও তো আমার সাথে খেলতে ঘৃণা করছে। বেশ চামচ দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছি…
মেরিন : কি যে বলো না ? দাও খাইয়েই দাও ।
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিতে লাগলো ।
নীড় মনে মনে : এরা সাপে নেউলো থেকে আমদুধ কি করে হলো!!!
.
একটুপর …
মেরিন রেস্ট করছে । আসলে সেটাও করছেনা । শুয়ে শুয়ে আঙ্গুলের কর গুনতে গুনতে কিছু ভাবছে ।
নীড় :মেরিন… মেরিন …
মেরিন : বলুন… আমার চোখ বন্ধ ।কান নয় …
নীড় : তুমি কালকে কাকে দেখেছিলে? কি দেখেছিলে ?
মেরিন : তা জেনে আপনি কি করবেন ?
নীড় : আরে তুমি বারবার মামার কথা বলছিলে …
মেরিন : হামম। তো?
নীড় :বলোনা কি দেখেছিলে?
মেরিন : অস্তিত্ব ।
নীড় : অস্তিত্ব ?
মেরিন : হামমম ।
নীড় :কার ?
মেরিন : আমার।
নীড় : মানে ?
মেরিন :কিছুনা ।
নীড় : তুমি এমন কেন ?
মেরিন : কেমন ???
নীড় : ওঠো খেয়ে নিবে । ওঠো। এটা বলোনা যে ক্ষুধা লাগেনি ।
মেরিন উঠে বসলো । নিজের হাতে খেতে নিলো ।
নীড় : তুমি আমাকে কি মনে করো বলবা ?
মেরিন : নীড় …
নীড় আর কোনো জবাব না দিয়ে মেরিনকে খাইয়ে দিতে লাগলো । বিকালে মেরিনকে রিলিজ দেয়া হলো । মেরিন বাসায় গেলোনা ।
.
মেরিন : জন…
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : ঢাকা শহরে যতো পাগল আধা-পাগল লোক আছে সবাইকে আমি দেখতে চাই ।
জন : কিন্তু ম্যাম… ঢাকা শহরটা বিশাল বড় । কতোশত অমন মানুষ আছে । কোথায় … কিভাবে পাবো কবির স্যারকে ? quit impossible …
মেরিন : nothing is impossible … find …
জন : ok mam…
মেরিন : good …
জন : তাহলে ম্যাম এখন আপনি গিয়ে rest করুন ।
মেরিন : কেন আমার কি হয়েছে ?
জন : না মানে ম্যাম…
মেরিন : আচ্ছা শোনো কালকে পরশু তুমি আমার জার্মান যাওয়ার arrangement করো ।
জন : ম্যাম আপনি এই শরীর নিয়ে ?
মেরিন : হামমম। ১টা important meeting আছে ।
জন : ok mam…
মেরিন চলে গেলো ।
.
পরদিন …
নীড় : একি তুমি অফিসে ?
মেরিন : আমার অফিস আমার ইচ্ছা …
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো।
মেরিন : হ্যালো….
এ.কে. সৌরভ : আচ্ছা মিসেস মেরিন বন্যা আমরা কি মিটিংটা ৩০মিনিট delay করতে পারি প্লিজ ? ac…
মেরিন : ৩০মিনিট কেন ৩০বছর delay করুন।i don’t mind …
সৌরভ : thank you…
মেরিন : not yet… আমি মিটিং & ডিল ২টাই cancel করছি । i am here not to wait others …
সৌরভ : প্লিজ প্লিজ প্লিজ… don’t do this… delay করতে হবেনা । আমি সময় মতোই আসবো ১২টায়…
মেরিন : better for you…
মেরিন ফোন রেখে দিলো। আর তখনই নীড় রুমে ঢুকলো । খাবার নিয়ে।
মেরিন ল্যাপটপে মুখ গুজেই
বলল : নক করে রুমে ঢুকতে হয় …
নীড় : তাই জানতাম না তো … আসো খাবে আসো। ডক্টর বলেছে একটু পরপর খেতে।
মেরিন : 😒 । ১টা কথা বলবেন? এখন কোন অপরাধের সাজা দেয়ার ধান্দা করছেন ? কোন দেশের জেলে ঢোকানোর ইচ্ছা ?
নীড় : হা করো… 😒..
মেরিন চুপচাপ খেয়ে নিলো ।
.
একটুপর…
মেরিন মিটিংরুমে যাচ্ছে । নীড় কফি খেতে খেতে ফাইল দেখতে দেখতে হাটছে। কোটটা খুলে রেখেছে। কেবল শার্ট & টাই পরা… অন্যদিকে সৌরভও মিটিং ও লেট হওয়ার ভয়ে ছুটে আসছে । লাগলো ২জনের মধ্যে বড় সরো ধাক্কা । দোষ নীড়ের তাই নীড় sorry বলল। যদিও সৌরভের হাতে থাকা গাড়ির চাবিটা দিয়ে নীড় কনুই এ ব্যাথা পেয়েছে । হালকা রক্তও বের হচ্ছে । তবুও নীড়ই sorry বলেছে। কিন্তু ওই সৌরভ নীড়কে employee মনে করে নীড়কে বকতে লাগলো ।
সৌরভ : r u blind or what??? আমার এতো দামী ড্রেসটা নষ্ট করে দিলে? তোমার মতো ১টা idiot লোক মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর employee ? আমাকে ৫মিনিট লেট করিয়ে দিলে । stupid ।
বলেই সৌরভ মিটিংরুমের দিকে গেলো। দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে ।
নীড় : হাসনাত …
হাসনাত : জী স্যার …
নীড় : তুমি মিটিংরুমের দরজার সামনে কি দেখছো ?
হাসনাত : কেন স্যার মেরিন ম্যাম …
নীড় : আর আমি কি দেখছি জানো?
হাসনাত : কি স্যার ?
নীড় : সাক্ষাত যম…
হাসনাত : স্যার যে কি বলেন ? 😁
নীড় : ঠিকই বলেছি । দেখোনা কি হয়। 😁।
সৌরভ : হ্যালো ম্যাম…
মেরিন : হ্যালো …
সৌরভ : চলুন ম্যাম …
মেরিন : কোথায় আর কেন ?
সৌরভ : for the মিটিং?
মেরিন : the meeting … right ?
সৌরভ : right … 😅..
মেরিন : cancel …
সৌরভ : sorry…
মেরিন : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী কোনো কথা ২য় বার বলেনা ।
সৌরভ : আরে ম্যাম … কারনটা কি? সেটা বলবেন তো …
মেরিন কোনো কথা না বলে নীড়ের কাছে গেলো । নীড়ের হাত নিলো ।
মেরিন : জান… ইশ কতোখানি কেটে গিয়েছে ? দেখি … জন জন… icecube… & first aid box immediately …
জন দৌড়ে icecube নিয়ে এলো। মেরিন সৌরভের সামনে নীড়কে চেয়ারে বসিয়ে নীড়ের কোলে বসে ওর হাতে বরফ দিয়ে মেডিসিন দিয়ে দিলো । এরপর ব্যাথার মধ্যে কিস করলো।
সৌরভ হা করে দেখছে।
হাসনাত : সৌরভ স্যার মুখটা বন্ধ করুন।
সৌরভ : ওই লোকটা কে?
হাসনাত : the নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন । the king of চৌধুরী empire …
সৌরভ : oh my goodness… 😱…
সৌরভ দৌড়ে নীড়ের কাছে গেলো ।
সৌরভ : স্যার স্যার স্যার… নীড় স্যার… i extremely sorry… আমি জানতাম না যে আপনিই নীড় স্যার…
নীড় : its ok…
মেরিন : নীড় বাসায় চলুন… জান। you need rest…
নীড় : আরে অল্প একটুই তো ব্যাথা পেয়েছি… অফিসে কতো কাজ পরে আছে…
মেরিন : থাকুক…. চলুন…
মেরিন নীড়কে নিয়ে গাড়িতে বসালো।
নীড় : আরে অল্প কেটেছে। drive করতে পারবো…
মেরিন কোনো কথা না বলে drive করতে লাগলো….
নীড় : অাচ্ছা লোকটা খেয়াল করেনি । আর আমাকে চিনেও না। তাই … forgive him…
.
বিকালে…
সৌরভ : ধ্যাত কতো বড় ১টা ডিল হাত ছাড়া হয়ে গেলো। তাও ছোট্ট ১টা ভুলের জন্য। damn it…
সৌরভ গাড়িতে হেলান দিয়ে দারিয়ে কথাগুলো ভাবছিলো । তখন হঠাৎ কেউ কোথাও থেকে just সৌরভের গাড়িটাকে ধাক্কা মারলো … সৌরভ চমকে উঠলো । পেছনে ঘুরলো। ঘুরে দেখে কালো রঙের গাড়ি । যার ভেতরে কালো ড্রেস পরে মেরিন বসে আছে ।
সৌরভ : মমম্যাম…
মেরিন বাকা হাসি দিয়ে গাড়ি start দিলো । …
সৌরভ : ম্যাম আপনি কককি করছেন?
মেরিন কোনো কথা না বলে সৌরভের পিছে গাড়ি চালাতে লাগলো । আর সৌরভ দৌড়াতে লাগলো । ধীরে ধীরে মেরিন স্পিড বারাতে লাগলো । আর সৌরভ ওর দৌড়ের স্পিড… দৌড়াতে দৌড়াতে সৌরভ হাপিয়ে উঠলো ।
মেরিন : energy কি শেষ ?
সৌরভ : ম্যাম … sorry … ম্যাহম…
মেরিন : 😏।
মেরিন গাড়ি পিছে নিলো । সৌরভ হাফ ছেরে বাচলো । গাড়ির আওয়াজ পেয়ে সৌরভ সামনে তাকালো । দেখলো মেরিন প্রচুর স্পিডে গাড়ি চালিয়ে এলো। সৌরভকে উরিয়ে দিলো। মুখ থুবরে পরে রইলো সৌরভ ।
মেরিন : মেরিন কখনো কাউকে 2nd chance দেয়না । আমার নীড়কে অপমান করা … আমার নীড়ের হাত থেকে রক্ত বের করা…
এখন দেখ কেমন লাগে?
সৌরভকে ফেলে মেরিন গাড়ি চালিয়ে চলে গেলো । জন এসে সৌরভের গতি করলো। ওর পরিবারের কাছে পাঠালো ।
.
রাতে…
নীড় : কি দরকার ছিলো সৌরভকে মেরে ফেলার ?
মেরিন কোনো কথা না বলে bags pack করছে ।
নীড় : bags pack কেন করছো ?
মেরিন : কারন কালকে আমরা জার্মান যাচ্ছি ।
নীড় : মানে ?
মেরিন : মানের কি আছে ? জার্মান যাচ্ছি মানে যাচ্ছি । কালই।
নীড় : কিন্তু কেন ?
মেরিন : মরতে। চলুন বাবা আর শাশুড়িফুপ্পি বসে আছে। আর আমারও ক্ষুধা লেগেছে ।
মেরিন চলে গেলো।
নীড় : আজব… ধুর নিচে যাই। ক্ষুধাও লেগেছে ।
নীড় নিচে গেলো । খেতে বসলো ।
নিহাল : নীড়… কালকে তো জার্মান যাচ্ছো অ্যালিগনির problem টাও solve করে এসো।
নীড় : তুমিও জানো যে কালকে জার্মান যাচ্ছি ?
নিহাল : হ্যা। না জানার কি আছে ?
নীড় : 😒।
নীলিমা : বন্যা … আমার জন্য ১টা perfume আনবি কিন্তু ।
মেরিন : হামম।
নিহাল : ওহ হ্যা … নীড় নিজের problem solve করেই বসে থেকোনা। মামনির helpও করো ।
নীড় : আমার মনে হয়না যে ওর কারো helpএর কোনো প্রয়োজন আছে। 😒।
মেরিন : right… বাবা। i can handle myself … মেরিন বন্যা কোনো ননীর পুতুল নয়। মেরিন বন্যা আপসহীন iron lady… 😎…
নীড় : huh…
পরদিন ২জন জার্মান পৌছালো ।
.
পরদিন…
মেরিন : নীড় নীড় নীড়…
মেরিন কোথাও নীড়কে খুজে পাচ্ছেনা ।
মেরিন : নীড়… নীড়… কোথায় গেলো ? নীড়…
মেরিন সারা হোটেল খুজতে লাগলো। কোথাও পেলোনা । মেরিন চিন্তায় পরে গেলো। পরে তাকিয়ে দেখে দরজার বাইরে নীড় ১টা মেয়েকে জরিয়ে ধরে আছে। মুখে ear to ear হাসি দিয়ে আছে । মেরিন তো রেগে আগুনে বেগুনে হয়ে গেলো। হঠাৎ নীড়ের চোখ মেরিনের দিকে গেলো।
নীড় : oh no… এখন ?
সুচি : কি হলো mr. friend ?
নীড় : কিছু হয়নি তবে হবে ।
সুচি: কি হবে আর কার হবে ?
নীড় : কিছুনা…
সুচি : তাহ.. আরে মেরিন?
সুচি দৌড়ে গিয়ে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো ।
সুচি : ভালো আছো angry young lady…?
মেরিন মুচকি হেসে বলল : জী…
সুচি : good to see you… তোমাকে দেখে ভরসা পেলাম।
মেরিন : anything for you…
নীড় মনে মনে : সুচি রে সুচি তোর কপালে দুঃখ আছে … মরবি তুই অকালে ।
সুচি : মেরিন মিট…my friend নীড়…
মেরিন : হ্যালো মিস্টার নীড়…
নীড় : hi… 😅।
সুচি : নীড় ও…
নীড় : মেরিন….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 10
writer : Mohona
.
নীড় : মেরিন …
সুচি : তুমি ওকে চিনো mr. friend ?
নীড় : না মানে ইয়ে মানে … কি জানি বলে … ও আমার মামাতো বউ…
সুচি : মামাতো বউ? 😒।
নীড় : আসলে কি…
মেরিম : আমি উনার মামাতো বোন…
সুচি : ও… আমিও কানে বেশি শুনি। তাইতো বলি নীরা ছারা কি আর কেউ নীড়ের বউ হতে পারে?
নীড় মনে মনে : তুই জঘন্য মৃত্যু পাবিরে পাগলা…
মেরিন : ok then চলো।
সুচি : নীড় চল আমাদের সাথে ।
নীড় মনে মনে : দেখি তুই করে খুন হস।
সুচি : কি রে বল কিছু।
নীড় : চল…
মেরিন : তোমরা যাও আমি তোমাদেরকে follow করছি ।
সুচি : ok…
নীড় মনে মনে : মনেহয় আমাকেও মেরে দিবে।
.
গাড়িতে…
সুচি : কি রে তোর চেহারার রং উরে গেছে কেন ?
নীড় : …
সুচি : আতংকে পরে আছিস মনে হচ্ছে ।
নীড় : ….তুই ওকে কিভাবে চিনিস ?
সুচি : সে অনেক লম্বা কাহিনী। সময় নিয়ে বলবো।
নীড় : কোথায় যাচ্ছি আমরা ?
সুচি : হসপিটালে ।
নীড় : কিন্তু কেন ?
সুচি : আমার মেয়ের জন্য ।।
নীড় : তোর মেয়ে?
সুচি : হ্যা আমার মেয়ে।
নীড় : শালি ,, মিষ্টিও দিলিনা ।
সুচি : আর মিষ্টি …divorce হতে চলল। জানিনা কি হবে ?
নীড় : কি বলছিস কি ? কি হয়েছে ?
সুচি : রবি কারো সাথে relation এ আছে ।
নীড় : what? ভাইয়া তো অমন ছিলোনা । হঠাৎ এমন কি করে হলো? তুই কিছু বলিসনি?
সুচি : কি বলবো? ওকে বিশ্বাস করেছিলাম। তাই কখনোই কিছুতে বাধা দেইনি । dominate করিনি … ওর best friend এর সাথে যে ও এমন করে জরিয়ে যাবে বুঝতেই পারিনি ।
নীড় : রবিকে তো আমি জানে মেরে ফেলবো । আজই ওর জীবনের শেষ দিন হবে …
সুচি : এই না… তুই ওকে কিছু বলবিনা…
নীড় : কেন কিছু বলবোনা কেন ? ওই লোকের তো বেচে থাকারই কোনো অধিকার নেই…
সুচি : অমন করে বলিসনারে … ওর কিছু হলে আমি মরে যাবো ..
নীড় : তুই কি পাগল? যে লোকটা তোকে এতো বড় ধোকা দিলো তাও তুই ওকে এতো ভালোবাসছিস? তোর কি আত্মসম্মান নেই…
সুচি : আমার কোনো অভিযোগ নেইরে ওর প্রতি। কেবল মেয়েটা আমার কাছে থাকলেই চলে ।
নীড় : এই তোদের মতো মেয়েদের জন্যেই না রবিদের মতো মানুষ সুযোগ পায়…
সুচি : আচ্ছা তোর ভালোবাসা মানে নীরা যদি কখনো এমন ধোকা দেয় তখন তুই কি করবি বলতো???
নীড় : …
সুচি : মেরিনকে আসতে বলেছি যেন কোনো রকমে ও আমার মেয়েটাকে আমাকে পাইয়ে দেয়… আমার তো আর কেউ নেই যে আমার সাহায্য করবে… মেরিনের তো অনেক power …
নীড় : …
সুচি : নে চলে এসেছি….
.
মেরিন আগেই এসে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : চলো…
সুচি : হামম।
ওরা ওপরে গেলো। সুচির মেয়ের নাম রিচি । রিচি একটু অসুস্থ । তাই হসপিটালে admit । সুচির সামর্থ্য নেই রিচির চিকিৎসার ব্যায়-ভার নেয়ার । তাই রবি মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে গেছে । আর বলেছে যে রিচিকে আর সুচির কাছে দিবেনা । আর তাই সুচি চিন্তায় পরে গেছে ।
নীড় : no worry … all will be fine…
সুচি : হামম।
মেরিন রিচির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । সুচিকে রবি ঢুকতে দেয়নি ।
রবি : মেরিনকে আনার মানে কি ?
সুচি : আমার মেয়েকে ফিরে পাওয়া।
রবি : দেখো মেরিনের কাছে আমি ৠণী। কারন ও আমার মেয়ের জীবন বাচিয়েছিলো… কিন্তু তুমি আমার মেয়ের থেকে দূরে থাকবে…
নীড় : you…
সুচি নীড়কে বাধা দিলো ।
রবি : বাহ ভালোই তো… নতুন কাউকে পেয়েছো দেখি…
নীড় রবির মুখে নাক বরাবর ১টা ঘুষি মারলো। সুচি টানতে টানতে নীড়কে নিয়ে গেলো ।
.
রাতে…
নীড় আর সুচি বসে আছে । মেরিন এখনও আসেনি…
নীড় : মেয়েটা এতো দেরি করছে কেন?
সুচি : সেটাই তো… ওই তো চলে এসেছে ।
নীড় : এতো করলে যে? আর রিচি কোথায় ?
মেরিন : ওর বাবার কাছে ।
সুচি : বাবার কাছে মানে ?
মেরিন : বাবার কাছে মানে বাবার কাছে । ওর বাবা যতোদিন বেচে আছে ও ওর বাবার কাছেই থাকবে ।
সুচি : তুমি এমন করতে পারোনা মেরিন …
মেরিন : আমার যা ইচ্ছা আমি করতে পারি ।
সুচি : প্লিজ তুমি আমার মেয়েকে এনে দাও ।
মেরিন : sorry …
সুচি : দারাও মেরিন … আমি তোমাকে রক্ত দিয়ে বাচিয়েছিলাম… সেই রক্তের প্রতিদান স্বরুপ আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও…
মেরিন : তোমার মেয়েকে বাচিয়ে প্রতিদান দিয়েই দিয়েছালাম…
বলেই মেরিন চলে গেলো । সুচি তো পুরো ভেঙে পরলো । কান্না করতে লাগলো ।
নীড় : কান্না করিসনা… প্লিজ কান্না করিসনা ।
সুচি : ওর ওপর বিশ্বাস ছিলো বলেই আমি ওকে সব বলেছি… ভেবেছিলাম ও আমার help করবে…
নীড় : আমি আছি তো … তোর মেয়েকে তোর কাছেই ফিরিয়ে আনবো আমি । কথা দিলাম ….
.
একটুপর …
ঝড়ো বাতাস বইছে । মেরিন বারান্দায় দারিয়ে আছে ।
নীড় : তুমি আর কতো মানুষকে কাদাবে বলতে পারো ? আর কতো মানুষকে কষ্ট দিবে ? সুচি তোমাকে বিশ্বাস করেছে । আর তুমি? বিশ্বাসঘাতকতা ছারা কি আর কিছুই পারোনা?
মেরিন যেন কিছু শুনতেই পায়নি ।
নীড় : আমি তোমাকে কিছু বলছি মেরিন …
মেরিন : …
নীড় মেরিনের সামনে এসে মেরিনের বাহু টেনে নিজের দিকে ঘুরালো ।
নীড় : কি বলেছি শুনতে পাওনি?
মেরিন নীড়ের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে ।
নীড় : কি হলো কথা বলছোনা কেন? তুমি এতো খারাপ কেন ? নিজেকে ছারা অন্যকাউকে নিয়ে কেন ভাবতে পারোনা?
মেরিন : …
নীড় : তুমি রিচিকে কেন ফিরিয়ে আনলেনা ?
মেরিন : …
নীড় : ও… বুঝেছি… আমার বন্ধু বলে? আমাকে জরিয়ে ধরেছে বলে?
মেরিন : …
নীড় : কি হলো বলো?
মেরিন : …
নীড় : তোমার ভালোবাসাই ভালোবাসা আর অন্যদেরটা কিছুইনা। কেউ আমার দিকে তাকালে তার চোখ তুলে দাও, ভুল করে ধাক্কা মারলে বা কটু কথা বললে তাকে জানে মেরে দাও… এখন সুচি আমার বন্ধু বলে , বন্ধু হিসেবে জরিয়ে ধরেছে বলে ওকে এতো বড় শাস্তি দিবে ?
মেরিন : …
নীড় : তুমি যে দিনরাত আমাকে তিলে তিলে মারছো সেই শাস্তি তুমি কিভাবে দিবে ?
মেরিন : …
নীড় : আর এতোসব করে তুমি কি প্রমান করতে চাও ? হ্যা? আমাকে খুব ভালোবাসো ? আরে ভালোবাসা কি সেটা তো তুমি জানোই না। ওই সুচির কাছে থেকে ভালোবাসা শিখে আসো । রবি এতোবড় অন্যায় করলো তবুও রবির প্রতি কোনো অভিযোগ নেই সুচির মনে। সুচি আজও রবির জন্য শুভকামনা করে ।
অন্যদিকে তুমি… যদি রবির জায়গায় আমি হতাম তবে আগে তুমি ওই মেয়েকে নৃসংশভাবে মারতে । আর আমার জন্য ভয়ানক শাস্তি ঠিক করতে ।
মেরিন : …
নীড় : তুমি না তো ভালোবাসতে জানো আর না তুমি ভালোবাসার মানো বোঝো…
ভালোবাসার মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা নয়…
ভালোবাসা মানে খোলা আকাশে উরতে দেয়া …
যেটা তুমি কখনো বুঝবেনা… কারন তুমি আমাকে ভালোবাসোনা… infact তুমি কাউকেই ভালোবাসতে পারোনা নিজেকে ছারা ।
বলেই নীড় চলে গেলো। মেরিন ছাদেই দারিয়ে রইলো।
.
পরদিন…
নীড় রবিকে শাস্তি দিতে গিয়ে , রিচিকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে নীড় যা জানতে পারলো তা শুনে নীড় অবাক হয়ে গেলো। কারন রবির ব্লাড ক্যান্সার। last stage … খুব শীঘ্রই রবি মারা যাবে। আর মারা যাওয়ার আগে ও চায় যেন সুচি ওকে ঘৃণা করে। কারন সুচি রবিকে ভীষন ভালোবাসে । আর শেষ একটু সময় রবি মেয়েকে চায় । মেয়ের সাথে সময় কাটাতে চায় । মেরিন কথাটা জানতে পেরে চুপ হয়ে গেছে। সুচিকে কিছু বলেনি । কারন রবি বারবার না করেছে । নীড় বুঝতে পারছেনা যে ও কি করবে? ওর মাথা কাজ করছেনা ।
নীড় : এই কারনেই বোধহয় বনপাখি…
.
বিকালে…
সুচি : মেরিন… ও মেরিন… প্লিজ একটু help করোনা…
নীড় : সুচি…
সুচি আর মেরিন পিছে ঘুরলো। দেখলো নীড়-রবি দারিয়ে আছে। নীড়ের কোলে রিচি। মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় জেনে গেছে । সুচি দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে কোলে নিলো । অসংখ্য চুমু দিলো মেয়ের সারা মুখে ।
সুচি : thank u … thank u … thank u thank u thank u very much … তুই আমার জন্য যা করেছিস তা কেউ করেনা …
সুচি মন ভরে মেয়েকে ভালোবাসলো ।
নীড় : সুচি…
সুচি : হামমম ।
নীড় : আজকে তোকে আমি ১টা কথা বলবো… মনটাকে শক্ত করে শুনবি…
সুচি : কককি এমন বলবি?
নীড় সুচি কে সব বলল। সুচি তো স্তব্ধ হয়ে গেলো। দৌড়ে গিয়ে রবিকে জরিয়ে ধরলো রবিকে।
মেলোড্রামা হলো ।
.
কিছুক্ষনপর…
সুচি মেরিনের হাত ধরে
বলল : আমি তোমাকে ভুল ভেবেছিলাম… i am really very sorry … আসলে আমার কপালটাই খারাপ…
মেরিন : not at all… you are too much lucky … এমন ১জন স্বামী পেয়েছো যে তোমার ভালোর জন্য নিজের ভয়ংকর রোগটা তোমার কাছে আড়াল করেছে । কেবলমাত্র তোমার ভালোর জন্য…
তবে এমনও স্বামী আছে যারা নিজের ভালোরজন্য নিজের মিথ্যা অসুখের নাটক সাজায়… স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবেও পরিচয় দেয়না ।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো । মেরিন কথা বলল।
মেরিন : i have to go… important কাজ চলে এসেছে।
বলেই মেরিন চলে গেলো । মেরিনের কথার আগাগোরা সুচি-মেরিন না বুঝলেও নীড় ঠিকই বুঝেছে ।
সুচি : মেয়েটা কি বলে গেলো ?
.
রাত ১টা…
মেরিন এখনো ফিরেনি। নীড় জানেনা মেরিন কোথায় ? নীড় বারান্দায় দারিয়ে একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছে ।
নীড় মনে মনে : না জেনে কতোকিছ ভুলভাল বলে ফেলেছি… ভুলভালের কি আছে ? ওর স্বভাবের কথা তো ঠিকই বলেছি… ও তো এমনই…
নীড় আরো ১টা সিগারেট ধরালো তখন ১টা হাত এসে ওর সিগারেটটা ফেলে দিলো। এরপর সেই হাতের মালিক নীড়ের হাতের নিচে দিয়ে নীড়ের বাহুডোরে নিজেকে বন্দী করে নিলো । নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
নীড় : এতোরাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে?
মেরিন : রুমডেটে। 😊।
নীড় : 😒। দেখি ছারো। always এতো চিপকাও কেন ?
মেরিন : আমার জামাই আমার ইচ্ছা… শুনুন …
নীড় : কি?
মেরিন : আমাদের নতুন বিয়ের কতো বছর পুরন হলো?
নীড় : নতুন বিয়ে মানে? বিয়ে তো বিয়েই…
মেরিন : ১টা তো ছোটবেলার বিয়ে… আপনার ভাষায় নাজায়েজ বিয়ে । আরেকটাতো বড়সময়ের বিয়ে … জায়েজ বিয়ে। সেটাই নতুন বিয়ে।
নীড় : তো?
মেরিন : বলুন না কতো দিন হলো?
নীড় : জানিনা…
মনে মনে : ৯মাস ১৭দিন…
মেরিন : ৯মাস ১৭ দিন…
নীড় : তো?
মেরিন : আপনি তো কোথাও আমাকে হানিমুনেও নিলেন না…
নীড় :😒
মেরিন : এখন যখন আমরা abroad চলেই এলাম তখন চলুন আমরা হানিমুন পালন করি… 😍…
নীড় : do u really think i have any interest on you…
মেরিন : no… আপনার সব interest তো নীরার ওপর… তাইনা জান?
নীড় : i have nothing to say… ঘুম পাচ্ছে।
মেরিন : আমারও… চলুন… কালকে থেকে হানিমুন করবো…
নীড় খানিকটা অবাক হলো । কারন এই দুই আড়াইমাসে ১দিনও মেরিন নীড়ের বুকে মাথ রেখে ঘুমায়নি । কিন্তু আজকে ঘুমালো । নীড় কিছু বললনা ।
.
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাংলো । মহাঅবাক হলো । কারন মেরিন কালো রঙের ১টা জামদানী শাড়ী পরেছে । বাঙালীভাবে। সাথে গা ভরতি গহনা…
মেরিন : good morning জান… তারাতারি উঠে fresh হয়ে নিন… আমরা ঘুরতে বের হবো … 😊।
নীড় : তুমি জার্মানে এই dress up এ ঘুরতে বের হবে?
মেরিন : হামমম ।
নীড় কোনো কথা না বলে washroom এ চলে গেলো। এর dress নিতে এলে মেরিন ওকে ১টা কালো ধুতি আর কালো পাঞ্জাবি দিলো ।
নীড় : what is all this…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 11
writer : Mohona
.
নীড় : what is all this???
মেরিন : নীড় এখন প্লিজ 3rd class মানুষদের মতো cheap drama করবেন না ।
নীড় : ত…
মেরিন : আমি লেট হতে dislike করি। fast please …
নীড় ভালোমতোই জানে যে মেরিন বলেছে যখন তখন ওকে পরতে হবেই । দুনিয়া ঘুরে গেলেও এখন নীড়কে এই কালো ধুতি-পাঞ্জাবি পরতে হবে । তাই ভুরি ভুরি বিরক্তি নিয়ে নীড় washroomএ গেলো । পরে বেরিয়ে এলো । মেরিন নিজের চোখ থেকে কাজল নিয়ে নীড়ের চুলের পিছে দিয়ে দিলো ।
নীড় : আমি কোনো বাচ্চা নই…
মেরিন : তো??? 😒।
নীড় : কিছুনা।
২জন বের হলো। সারাদিন অনেক ঘুরলো। জার্মানে এমন dress upএ ২জনকে দেখে ভীষন অবাক হলো । কিন্তু ২জনকে ভীষন সুন্দর লেগে আছে ।
.
রাতে…
মাথার ওপর খোলা আকাশ … চারদিকে অথৈ সমুদ্র … নীড়ের বুকে হেলান দিয়ে বসে আছে মেরিন…
নীড় মনে মনে : ঠিক ধরেছি যে ঘাপলা আছে … আজই আমার জীবনের শেষ দিন …
মেরিন : নীড় …
নীড় : হামম…
মেরিন : আপনি সেদিন বলেছিলেন না যে
“ভালোবাসা মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা নয়…
ভালোবাসা মানে খোলা আকাশে উরতে দেয়া …”
নীড় : হামম । তো ?
মেরিন :আপনি আরো বলেছিলেন না যে আমি ভালোবাসতেই পারিনা… আমি আপনাকে ভালোবাসিনা … ভালোবাসা কি জানিনা…
নীড় : ….
মেরিন : ঠিকই বলেছেন। আমি জানিনা ভালোবাসতে। হয়তো আপনাকেও ভালোবাসিনা …
আমি জানিনা ভালোবাসা মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা না খোলা আকাশে উরতে দেয়া…
জানেন আমার কাছে ভালোবাসা মানে কি ?
নীড় : …
মেরিন : আমার কাছে ভালোবাসা মানে আপনি … হামম। শুধুই আপনি …
নীড় : ….
মেরিন : আমি কখনোই আপনাকে হাতের মুঠোয় বন্দি রাখতে চাইনি …. আমি কেবল আপনাকে চোখের আড়াল করতে চাইনি … হারাতে চাইনি …আপনার গায়ে ছোট্ট ১টা আঘাত যে আমার গায়ে বহুগুন এসে লাগে সেটা বোঝার ক্ষমতা আপনার নেই…
কারন আপনি আপনার জীবনে কাউকে এমন করে আপন করে নেননি…
নীরাকেও না…
নীড় : ….
মেরিন : নীরা কখনোই আপনার ভালোবাসা ছিলোনা … কেবলমাত্র ভালোলাগা ছিলো ।। যদি আপনি সত্যি নীরাকে ভালোবাসতেন আমি কখনোই আপনাদের মাঝে আসতামনা… আপনি নীরাকে ভালোইবাসেননি…
নীড় মেরিনকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো।
বলল : you r wrong … আমি নীরাকে ভালোবাসি… অনেকবেশিই ভালোবাসি…
মেরিন হাহাহা করে হাসতে লাগলো । হাসতে হাসতে নীড়ের দিকে ঘুরলো । নীড়ের বুকের বা পাশে হাত রাখলো । এরপর বাটন খুলে ১টানে সেই duplicate skinটা খুলে ফেলল। তবে হ্যা “বনপাখি” লেখাটা আজও দেখলোনা …
কিন্তু নীড় মনে করলো যে মেরিন বনপাখি লেখাটা দেখেছে ।
.
নীড় তো অবাক। কারন মেরিন জানতো এটা যে নকল। তাই সেদিন react করেনি…
মেরিন : আপনার প্রেমে অন্ধ হতে পারি…কিন্তু এতোটুকু বোঝার ক্ষমতা আমার আছে । জান…
নীড় : ….
মেরিন : আপনি নীরাকে ভালোবাসেননা… আর এটাই সত্যি…
নীড় : বাসি বাসি বাসি… আমি নীরাকে ভালোবাসি… কিন্তু আমি নীরকে ততোটা ভালোবাসিনা যতোটা তোমাকে ঘৃণা করি…
মেরিন : …
নীড় : তোমাকে ঘৃণা করি… তোমার নামটাকে ঘৃণা করি… তোমার চেহারাকে ঘৃণা করি…
মেরিন কোনো কথা না বলে ১টা গান বের করলো ।
মেরিন : take the gun & shoot me…
নীড় : ….
মেরিন : কি হলো ?
নীড় : …
মেরিন : shoot me or i will shoot …
নীড় : ….
নীড় মেরিনের হাত থেকে গানটা নিয়ে ফেলে দিলো সাগরে।
নীড় : captain … turn it…
মেরিন : …
নীড় : আমি তোমার মতো খুনী নই যে খুন করবো । নিজের বাবাকেও খুন করতে যে সন্তানের হাত কাপেনা … তার মতো হতে পারবোনা…
মেরিন নীড়ের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে … নীড়ের চোখে আজও ঘৃণা ছারা কিছুই খুজে পাচ্ছেনা …
মেরিন : thank u… আমাকে change না হতে দেয়ার জন্য …
.
৩দিনপর …
রাত ৯টা…
মেরিনের অত্যাচারে আরো ৩দিন কেটে গেছে । আজকে ২জন নীড়ের ১বন্ধুর party তে এসেছে । নীড় পরিচয় টরিচয় করাচ্ছে তখন মেরিনের ১টা ফোন এলো ।
জন : ম্যাম … কবির স্যারকে পেয়েছি ।
কথাটা শুনে মেরিনের সময় থমকে গেলো ।
রাতুল (নীড়ের বন্ধু) : ভাবি কোনো সমস্যা?
নীড় : কি হলো?
মেরিন : নননীড় ব… দেশে চলুন…
নীড় : দেশে মানে?
মেরিন : দেশে মানে বাংলাদেশে । এখনই চলুন …
নীড় : এখন কিভাবে সম্ভব?
মেরিন : জানিনা । এখন মানে এখনই … চলুন না প্লিজ…
নীড় : no… তোমার মন চাইলে তুমি যাও ।
মেরিন আর ১মিনিটও দেরি করলোনা বেরিয়ে এলো । কিছুক্ষনপর নীড়ও ফিরে এলো । হোটেলে এসে মেরিনকে না পেয়ে বুঝতে পারলো যে মেরিন সত্যিই দেশে ফিরে এসেছে ।
.
১৫ঘন্টাপর…
in Bangladesh…
মেরিন নিজের সেই নিজস্ব জায়গায় গেলো । দেখলো কবিরকে ঘুম পারিয়ে রাখানো। মেরিন চুপচাপ কবিরের বেডের সামনে বসে গিয়ে হাটু গেরে বসলো । কবিরের মুখে হাত বুলিয়ে দিলো । কবিরের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে কান্না করতে লাগলো । জন দারিয়ে দারিয়ে দেখছে ।
মেরিন : বাবাহ… আমার বাবা… ।
মেরিন উঠে দারালো ।
মেরিন : জন…
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : দাদুভাইকে আর বাবাকে … লন্ডন পাঠানোর ব্যাবস্থা করো… আর ১জন ভরসামান লোককে ২জনের সাথে পাঠাও । বাবার full treatment করানোর ব্যাবস্থা করাও । আমি আমার বাবাকে সুস্থ চাই । যেকোনো মূল্যে।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : তুমি সব ঠিকঠাক করো আমি দাদুভাইকে নিয়ে আসছি …
জন : sure mam…
.
খানবাড়িতে…
কনিকা বাসায় নেই । সেতু ওরা দাদুভাইকে torture করছে। মনির , নিলয় দাদুভাইকে ধরে রেখেছে । সেতু কেবলই দাদুভাইকে থাপ্পর মারবে ওই মুহুর্তে মেরিন হাজির । situation দেখে মেরিনের রক্তের বেগে কতো কিলোমিটার বেগে যে দৌড়াতে লাগলো তা কেউ জানেনা । মেরিনকে দেখে তো সেতুর আত্মা কেপে উঠলো । মেরিন এগিয়ে আসছে । আর মেরিনকে দেখে সেতু আর মনিরের যমদূত মনে হচ্ছে। চোখ অসম্ভব লাল হয়ে । ভয়নাক লাল হয়ে আছে । সিংহের মূর্তিটা থেকে মেরিন ওর চাবুকটা হাতে নিলো। যেটা খান বাড়ির বহু পুরানো চাবুক । চাবুক হাতে নিয়ে ৩জনকে দে দানা দান পিটাতে লাগলো। চাপকে আধমরা করে দিলো ।
মেরিন : এতোবড় সাহস তোদের… ? এতোবড় কলিজা … আজকে তোদের কলিজা আমি কুকুরদের খাওয়াবো। ভেবেছিলাম পরে মারবো। কিন্তু তোরা সেই উপায় রাখলিনা।
বলেই মেরিন সেতুর বুকে ছুরি চালাতে নিলো ।
দাদুভাই : থেমে যাও দিদিভাই…
মেরিন : না দাদুভাই আজকে এদের আমি শেষ করে দিবো । সব কাহিনীর অবসান ঘটাবো …
দিদিভাই : এদের কি এতো সহজ মৃত্যু দিবে…???
মেরিন : …
দাদুভাই : এদেরযে অনেক শাস্তি পাওনা আছে…
মেরিন : …
দিদিভাই : আমি কথা দিচ্ছি… আমি নিজে বলবো ওদেরকে মেরে ফেলতে । এখন মেরো না…
মেরিন বাকা হেসে
বলল : right you r দাদুভাই… কিন্তু এদেরকে শাস্তি তো পেতে হবে।
মেরিন ৩জনের ১টা করে আঙ্গুল কেটে দিলো । ৩জন ব্যাথায় কাতরাতে লাগলো ।
মেরিন : চলো দাদুভাই…
.
দাদুভাই : কোথায় নিয়ে এলে দিদিভাই আমাকে?
মেরিন : চোখ বন্ধ করো…
দাদুভাই : কেন ?
মেরিন : করোনা। & no cheating…
দাদুভাই : ok ok…
দাদুভাই চোখ বন্ধ করলো । মেরিন দাদুভাইকে ধরে নিয়ে আগে বারছে ।
মেরিন : চোখ খোলো …
দাদুভাই : কি এমন surprise দি… কককবির…
দাদুভাই দৌড়ে গিয়ে কবিরকে জরিয়ে ধরলো। কিন্তু কবিরতো কোনো react করলোনা । কারন কবিরের তো মস্তিষ্ক এখন ১টা ৫-৭বছরের বাচ্চার মস্তিষ্কের সমান। তাই ও কিছুই বুঝলোনা । দাদুভাই এতো বছরপর ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলো । আবার মেলোড্রামা হলো ।
দাদুভাই : কোথায় কিভাবে পেলে খোকাকে দিদিভাই? আর খোকার এই অবস্থা কেন ? কি হয়েছে ওর ? 😢
জন : কবির স্যারকে অনেক mental pressure আর ভুলভাল মেডিসিন দেয়া হয়েছে। যা স্যারের মস্তিষ্কের ওপর অনেক বাজে effect ফেলেছে । তাই জন্যে স্যারের এই অবস্থা…
মেরিন : হবে… হতেই হবে । আমার বাবাকে ঠিক হতেই হবে ।
দাদুভাই : কিভাবে?
মেরিন : proper treatment করিয়ে। ৩দিনপরই তোমাকে আর বাবাকে লন্ডন পাঠাবো। সবার নাগালের বাইরে । সেখানে বাবার treatment হবে ।
দাদুভাই : লন্ডন কেন?
মেরিন : দেশে আমার শত্রুর অভাব নেই । তাই লন্ডন পাঠাবো। আর সেখানে treatment better হবে। আর লন্ডন আমার কম যাওয়া হয়। তাই কেউ doubt ও করবেনা । তোমাদের ওপর যেকোনো দিন attack হতে পারে । কারন তোমরা ২জন আমার দুর্বলতা।
দাদুভাই : আর নীড় ? ও কি তোমার দুর্বলতা নয়…
মেরিন : …
দাদুভাই : আমি তোমাদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ চিন্তিত … এর ভবিষ্যত কি ?
মেরিন : ভবিষ্যত কি জানি না …তবে আপাদত আমি যেটা চাই সেটাই হবে … যেদিন নীড় আমাকে ভালোবাসবে সেদিন নীড়কে ছেরে অনেকদুরে চলে যাবো … সেটাই হবে নীড়ের শাস্তি …
জন : ম্যাম নীলিমা ম্যামকে জানাবেননা কবির স্যারের কথা ?
মেরিন : না। শাশুড়িফুপ্পিকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা ঠিক হবেনা। নীরার সাথে ওর অনেক খাতির। বেশ দুর্বল নীরার ওপর…
জন : হামম।
৩দিনপর দাদুভাইকে আর কবিরকে লন্ডন পাঠালো। রকি নামের ১জনের সাথে। মেরিন কিছুদিনের জন্য জনকে পাঠালো । যেন আড়াল থেকে রকির ওপর নজর রাখতে পারে । কয়েকদিন পরই আবার ফিরে আসবে ।
.
চৌধুরীবাড়িতে…
নীড় : তোমার আসকারা পেয়েই এমন হয়েছে বাবা। দেখো তোমার “মামনি” কে… আমার ১দিন আগে germany থেকে দেশে ফিরেছে । অথচ বাসায় আসেনি । ৩দিন হয়ে গেলো। জানিওনা কোথায় আছে ? কোন অবস্থায় আছে?
মেরিন : আমার জন্য এতো চিন্তা আপনার কবে থেকে হলো?
সবাই দরজার দিকে তাকালো । দেখলো মেরিন দারিয়ে ।
নীলিমা : বন্যা …. কোথায় ছিলি মা তুই ?
মেরিন : ছিলাম কোথাও না কোথাও … কারোনা কারো সাথে…
নীড় : তোমার লজ্জা করেনা এভাবে নিজের কুকৃতির কথা বলতে ?
মেরিন : না। মোটেও না … মেরিন বন্যা কোনো typical মেয়ে না যে কথা লুকিয়ে রাখবে। মুখের ওপর সত্যি কথা বলার সাহস আমার আছে । কারন আমি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী… শাশুড়িফুপ্পি fresh হয়ে এসে তোমার help করছি ।
নীলিমা : হামমম ।
.
পরদিন…
সকালে…
সবাই ঘুমিয়ে আছে । কনিকার চিল্লানোতে সবার ঘুম ভাঙলো ।
কনিকা : মেরিন… মেরিন… এই মেরিন…
নীলিমা নেমে এলো ।
নীলিমা : আরে ভাবি তুমি? এতো সকালে?
কনিকা : হ্যা… তোমার আদরের বউমা কোথায়? মেরিন… মেরিন…
মেরিন : ভিখিরিদের মতো চিল্লাচ্ছেন কেন? ভিক্ষা চাই বুঝি? security guard দের কাছে চাইতেন দিয়ে দিতো।
নীড় : মেরিন… এটা কেমন ব্যাবহার ? খবরদার আমার মামিমনির সাথে এমন ব্যাবহার করবেনা ।
নীড় কনিকার কাছে গেলো ।
নীড় : বসো মামিমনি…
কনিকা : বসতে আসিনি তোমাদের বাসায়। জানতে এসেছি। বাবা কোথায়?
মেরিন : শুনেছি আপনার বাবা অনেক বছর আগেই পরলোক গমন করেছেন? তার address আপনাদের পারিবারিক কবরস্থানেই হবে…
কনিকা : ভালোমতোই জানো আমি আমার ওই বাবা না শমসের বাবার কথা বলছি…..
মেরিন : ওওও… তাই বুঝি। sorry বুঝতে পারিনি…
কনিকা : এখন ভালোমতো বাবা কোথায়?
.
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 12
writer : Mohona
.
কনিকা : এখন ভালোমতো বলো বাবা কোথায় ?
মেরিন : আমার কাছে এই প্রশ্ন করার কারন জানতে পারি কি?
কনিকা : কারন তুমিই খান বাড়ি থেকে বাবাকে নিয়ে এসেছো । আপু বলেছে ।
মেরিন : সেতু বলেছে? সেতু যেটা বলে সেটা automatically চিরন্তন সত্য হয়ে যায় ।
কনিকা : বাবা কোথায়?
মেরিন : গুম করেছি…
কনিকা : লজ্জা করেনা এই কথা বলতে ? যেই দাদুভাই এতো ভালোবাসা দিলো সেই দাদুভাইয়ের সাথে এমন করতে ?
মেরিন : না। লজ্জা করবে কেন? আমি কি চুরি করেছি? আর মেরিন বন্যা কাউকে জবাব দেয়না… কারো যোগ্যতা নেই মেরিন বন্যার কাছে জবাব চাওয়ার…
কনিকা : নিজেকে নিয়ে অতো গর্ব করা ঠিক না। ঝড়ে পরে যাবে।
মেরিন : ঝড় বন্যাকে শক্তিশালী করে । এখন আপনি কি সম্মানে বের হবেন নাকি আপনাকে অসম্মানে বের করবো?
নীলিমা : বন্যা… ভুলে যাসনা এটা খান বাড়ি নয় চৌধুরী বাড়ি । এখানে তোর কথাই শেষ কথা নয়। বসো ভাবি…
কনিকা : না গো ননদিনী। এখন বসার সময় নেই । জানিনা আমার পেট থেকে এই কাল সাপ কিভাবে জন্মালো। বাবাকে খুজতে হবে।
কনিকা চলে গেলো।
.
মেরিন : such a irritating person … ঘুমটা ভাঙিয়ে দিলো ।
নীলিমা : বাবা কোথায় বন্যা?
মেরিন : oh come on শাশুড়িফুপ্পি don’t be silly … আমরা মাহমুদ বাড়ির মেয়ে না । খান বাড়ির মেয়ে। এমন typical 3rd class question আমাদের করা সাজেনা।
নিহাল : মামনি… বাবা কোথায়?
নীড় : নানাভাই কোথায় ?
মেরিন : আমি কাউকে জবাব দেইনা।
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো।
নিহাল : মামনি… মামনি… মা…
নীড় : চলে গেলো তো? শুনলো তোমার কথা? বাবা she is totally out of control …ও সবকিছু করতে পারে।
নীলিমা ধপ করে বসে পরলো।
নীলিমা : বাবাহ… নিহাল তুমি কিছু ১টা করো। বন্যার হাত থেকে বাচাও আমার বাবাকে। 😭।
নীড় : মামনি কান্না করোনা প্লিজ। আমি নানাভাইকে বের করবোই?
নিহাল : কিছুই করতে হবেনা । মেরিনই বলবে…
নীলিমা : মানে…?
.
বিকালে…
নিহাল : আসবো মামনি?
মেরিন : আরে বাবা আসো। বসো ।
নিহাল গিয়ে বসলো। মেরিনের ২হাত ধরলো ।
নিহাল : আমি তোমার বাবা হলেও আছি ফুপ্পা হলেও আছি… তোমার কাছে জবাব চাইতে আসিনি। শুধু এতোটুকু জানতে এসেছি বাবা যেখানেই আছে ঠিক আছে কিনা? বাবা হিসেবে এই ছোট্ট অধিকার তো আমার আছে? তাইনা? আমি জানি আমার মামনি কখনো দাদুভাইকে কোনো আঘাত দিবেনা । বলা যাবে?
মেরিন মুচকি হাসলো।
মেরিন : এই যে শাশুড়িফুপ্পি & my dear জান… ভেতরে আসেন আপনারা। জানি বাহিরেই দারিয়ে আছেন…
২জন ভেতরে ঢুকলো ।
নীলিমা :বলনা মা।
মেরিন : দাদুভাই বিন্দাস আছে। সুস্থ আছে । তোমাদের সামনে ১টা মহাচমক নিয়ে হাজির হবে… পছন্দ হবে তোমাদের surprise টা… i swear …
নীলিমা : বাবার সাথে একটু ভিডিও কলে কথা বলানারে মা…
মেরিন : ok…
মেরিন দাদুভাইকে নিজের mobile থেকেই call করলো। কথা বলল। সবাই চিন্তুমুক্ত হলো ।
.
৭দিনপর…
রাত ৩টা…
মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে । হঠাৎ ১টা দুঃস্বপ্ন দেখলো। জোরে “বাবা” বলে চিল্লিয়ে উঠলো …
মেরিন উঠে বসলো । নীড়েরও ঘুম ভেঙে গেলো উঠে বসলো । দেখে মেরিন জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে । আর ওর প্রচুর ঘাম ঝরছে । চোখ বন্ধ করে আছে ।
নীড় : ঠিক আছো তুমি?
মেরিন চোখ বন্ধ করে আরো বড় বড় ৩টা নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলো।
নীড় : r u ok?
মেরিন : হামম। আপনি ঘুমিয়ে পরুন…
বলেই মেরিন washroom এ গেলো। আয়নার সামনে দারিয়ে নিজেকে
বলল : মেরিন be strong …ভুলে যাসনা তুই মেরিন। বাবা আর দাদুভাই ঠিক আছে । ওদের কিছু হবেনা । নিজেকে শক্ত রাখতে হবে। ভুলে যাসনা জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তোকে ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। calm down…
মেরিন হাতে-মুখে-মাথায় পানি দিয়ে বেরিয়ে এলো ।দেখে নীড় বসে আছে ।
মেরিন : একি বসে আছেন যে না ঘুমিয়ে? ঘুমিয়ে পরুন…
নীড় : এখানে আসো ।
মেরিন : কেন ?
নীড় : আসোই না ।
মেরিন : পারবোনা ।
নীড় উঠে মেরিনকে কোলে তুলে এনে বেডে বসালো । মেরিনের bp মাপলো।
নীড় : তোমার bp তো দেখি অনেক high …এই pressure নিয়ে বসে আছো কিভাবে?
মেরিন : এই যে এভাবে ।
নীড় : 😒। মেডিসিন… বাবার কাছে তো থাকে । বসো আমি নিয়ে আসি …
মেরিন : আরে পাগল নাকি ? এতো রাতে কেন ওদের কষ্ট দিবেন?
নীড় : what a joke !!! যে সবাইকে কষ্ট ছারা আর কিছুই দেয়না তার মুখে এই কথ নিশ্চয়ই সাজেনা।
জবাবে মেরিন কেবল ১টা হাসি দিলো।
নীড় : বসো আমি নিয়ে আসি ।
মেরিন : আপনার কি মনে হয় যে আপনি আনলেই আমি খাবো?
নীড় : …
মেরিন : শুয়ে পরুন । no worry আমার জন্য আর রাত জাগতে হবেনা …
বলেই মেরিন বারান্দায় চলে গেলো। গিয়ে রকিং চেয়ারে বসলো । চোখ বন্ধ কিছু ভাবতে লাগলো ।
.
পরদিন…
আজকে শুক্রবার । সবাই বাসায় । মেরিন আর নীলিমা রান্না করছে । তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো ।
মেরিন : হ্যালো রকি…
রকি : জজজী ম্যাম।
মেরিন : সবাই ঠিক আছে ?
রকি : মমম্যাম কককবির স্যারকে পাওয়া যযযাচ্ছেনা ।
মেরিন : কি…
বলেই মেরিন অজ্ঞান হয়ে নিচে পরে গেলো।
নীলিমা : বন্যা …
নীড় দৌড়ে এলো ।
নীড় : মেরিন…মেরিন… বাবা ডক্টর ডাকো । তারাতারি …
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো । নীড় পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু কাজ হলোনা ।
নীড় : মেরিন …মেরিন…
তখন ডক্টর তপু এলো। তপু check up করতে লাগলো ।
তপু : oh no…
মেরিন : কি হয়েছে?
তপু : please quit … immediately hospitalized করতে হবে মেরিনকে । minor brain stroke করেছে ।
মেরিনকে hospital এ admit করা হলো।
নিহাল : এখন কেমন আছে ? ঠিক আছে তো ?
তপু : আমি জানিনা বারবার কেন আমি ওর treatment করি? প্রতিবার ঠিক করি যে আমি মেরিনের treatment করবোনা । কিন্তু… শুকরিয়া করুন যে brain stroke টা minor ছিলো mejor নয় । tension free রাখা যায়না ওকে ? কিন্তু অনেকের কাছে তো নিজেদের জেদটাই বড় হয়। সম্পর্কের থেকে …
নীড় ভালোমতোই বুঝতে পারলো যে তপু ওকেই বলেছে ।
তপু : excuse me …
.
পরদিন …
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । উঠে বসলো ।
নীড় : উঠলে কেন?
নীড়ের আওয়াজ পেয়ে মেরিন পাশ ফিরলো । দেখলো নীড় বসে আছে ।
মেরিন ভাঙা গলায় বলল : আমমমার ফোনটা…
নীড় : আছে । now forget mobile & keep rest…
মেরিন : দিন না । emergency …
নীড় : আপাদত তুমি emergency তে আছো। risk এ আছো ।
মেরিন : দদিন না প্লিজ…
নীড় মনে মনে : আপাদত একে stress দেয়া যাবেনা । দিয়েই দেই mobile …
নীড় : এই নাও ।
মেরিন : hello… রকি…
রকি : পেয়েছি ম্যাম স্যারকে। আপনাকে call করেছিলাম । স্যার receive করেছিলেন । কিছু বলিনি ।
মেরিন : good …
মেরিন relax হলো ।
নীড় : কার সাথে কথা বলছিলে ?
মেরিন : bf ..
বলেই মেরিন আবার শুয়ে পরলো। তখন তপু এলো।
তপু : নীড় বাইরে যাও ।
নীড় : কেন ?
তপু : আমি বলেছি তাই । go…
নীড় রাগে গজগজ করতে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : তোমার সাহস কি করে হয় নীড় বের করে দেয়ার ?
তপু : কেমন লাগছে এখন?
মেরিন : কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
তপু : কিছু personal কথা বলার আছে তোমার সাথে ।
মেরিন : মানে?
তপু : দেখো আমি জানি কাল পরশু থেকে তুমি আবার কাজ করতে শুরু করবে । তাও এই অসুস্থ শরীর নিয়ে । যেটা তোমার ক্ষতিকর। তোমার care তোমাকেই করতে হবে । তোমার কিছু হলে কারো কিছুই হবেনা । বরং অনেকের লাভ হবে । তোমার মৃত্যু অনেকের কাছে লটারির টিকিটের সমান । আর সেটা তুমি জানো। তাই যদি নিজে মরে অন্যের লাভ না করতে চাও তাহলে নিজের care করো। at least ১মাস bed restএ থাকো ।
মেরিন : আমি bed rest এ থাকলে আমার কাজ গুলো কে করবে?
তপু : জন করবে । আর আমার মনে হয় যে জন তোমাকে নিরাস করবে ।
মেরিন : কেউ কাউকে বিনামুল্যে কিছু দেয়না …তো আজকে বিনামূল্যে এমন জ্ঞান বিতরন করার কারন জানতে পারি ?
তপু :কারন তখনও যা ছিলো আজও তাই আছে । তোমাকে ভালোবাসি … please take bed rest… just for yourself …
বলেই তপু চলে গেলো । তপু বের হতেই নীড় ঢুকলো ।
নীড় :কি বলছিলো তপু?
মেরিন : married proposal দিয়ে গেলো ।
নীড় : 😤।
৩দিন পর মেরিনকে বাসায় নেয়া হলো । শরীরর কাছে হার মেনে মেরিন হসপিটাল থেকে বের হয়নি । নীড় মেরিনের গাড়ির চাবি , mobile সব বাজেয়াপ্ত করলো ।
.
নীড় : যতোদিন সুস্থ না হচ্ছো একদম rest এ থাকবে । তোমার জন্য অন্য মানুষের কাছে কথা শুনতে আমি পারবোনা ।
মেরিন মুচকি হেসে
বলল : মেরিনের জন্য কখনোই আপনাকে আর কথা শুনতে হবেনা । কিন্তু আমি বসে থাকতে পারবোনা । আমার পক্ষে অসম্ভব ।
নীড় : ১লাইন বেশি বোঝা কি তোমার রোগ?
মেরিন : য…
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : আরে জন? আসো । কবে ফিরলে ?
জন : ম্যাম আপনি ঠিক আছেন ? 😢😥।
মেরিন : হামম। তোমাকে তপুদা ফোন করেছে না ?
জন : হামম। ম্যাম আপনি একদম bed rest এ থাকবেন । আমি সব সামলে নিবো । আপনাকে অভিযোগ করার সুযোগ দিবোনা । যখন একদম আমার সাধ্যের বাইরে চলে যাবে আমি নিজে আসবো । আর যদি আপনি rest না করেন তবে কিন্তু আমি দাদুভাইকে বলে দিবো …
মেরিন : জন তুমি আমাকে হুমকি দিচ্ছো? সাহস দেখে অবাক হচ্ছি ।
জন : sorry mam.. but i m helpless… দাদুভাই আমাকে আপনার জন্য রেখেছে । তাই আপনার safety সবার আগে…
মেরিন : 😒।
জন : আসছি ম্যাম…
জন চলে গেলো ।
.
একটুপর…
মেরিন চোখ বন্ধ করে cubeটা ঘোরাচ্ছে ।
নীলিমা : কিরে কি ভাবছিস ?
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীলিমা খাবার নিয়ে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : আরে শাশুড়িফুপ্পি আসো আসো…
নীলিমা বসলো।
নীলিমা : উঠে বস। খেয়ে নে…
মেরিন : বাহ অসুস্থ হলে ভালোই শাশুড়ির আদর পাওয়া যায়।
নীলিমা: পাজি। নে হা কর।
মেরিন : শাশুড়িফুপ্পি… আমি ঠিক আছি । হাত দিয়ে খেতে পারবো।
নীলিমা : হামম। হাত নারাতে কষ্ট হচ্ছে , কথা কতো কষ্ট করে বলছে ।তিনি নাকি সুস্থ। হা কর।
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিতে লাগলো।
নীলিমা : কি এতো ভাবিস বলতো? এতো কিসের চিন্তা তোর … এই বয়স এতো চিন্তা করলে হয়… একটু normal ভাবে জীবন কাটা। সব চিন্তা বাদ দে এবার…
মেরিন : নরমাল life spend করার সৌভাগ্য আমার নেই… nothing is normal in my life … এখন আমার জীবন ১টা game হয়ে গেছে। যেখানে আমার প্রতিপক্ষ আমার ভাগ্য । প্রতিবার আমার লড়াই করতে হয় । ১টা বার লড়াই না করলে পরের পলকে আমি নিজে বেচেই থাকবোনা । আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি নষ্ট হয়ে গেছি । আমার নাম নষ্ট হয়ে গেছে।
নীলিমা : তোর ছোটবেলার অবুঝতাই তোর সব কেরে নিয়েছেরে… তবুও যদি বেরিয়ে নিজের ভুল বুঝে ক্ষমা চেয়ে নিতি… যাগগে… বাদদে… নতুন করে সব শুরু কর…
মেরিন : কোনো cricket match যখন বৃষ্টির কারনে ড্র করা হয় তখন সেটা আর নতুন করে শুরু হয়না। পরের ম্যাচ খেলা হয় । আমার life টাও game… কিন্ত আমি ড্র করতে রাজী নই । জিততে শিখেছি । জিতবোই । হ্যা কোনো game ই তো আর অনন্তকাল চলেনা । final তো আছেই । আমার life game এরও final time চলে এসেছে । এখন কেবল অপেক্ষা … আর বেশিদিন জ্বালাবোনা। কথা দিলাম…
নীলিমা : হয়েছে এবার মেডিসিন খেয়েনে আরাম কর…
নীলিমা চলে গেলো ।
.
মেরিন washroom এ যাচ্ছে। পরে যেতে নিলো । নীড় এসে ধরে ফেলল ।
নীড় : একটু ডাক দিলে কি হতো …?
মেরিন কোনো কথা বলল না। নীড় মেরিনকে ধরে ধরে washroom এ নিয়ে গেলো । এরপর দরজার বাইরে দারিয়ে রইলো । একটুপর মেরিন বেরিয়ে এলো । নীড় আবার মেরিনকে ধরে ধরে বেড এ বসালো।
নীড় : সবাইকেই সবার প্রয়োজন… মেরিন বন্যারও…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 13
writer : Mohona
.
নীড় : সবাইকেই সবার প্রয়োজন… মেরিন বন্যারও…
মেরিন : মেরিন বন্যার যাকে দরকার সে কখনোই তার কাজে আসবেনা… কেউ মেরিনের প্রয়োজনে এগিয়ে আসার মতো কেউ নেই । আকাশের ওই সূর্যের মতোই নিঃসঙ্গ আমি। যার কেউ নেই… মেরিন বন্যার থাকা না থাকা কোনো effect করেনা কাউকে… যাইহোক। আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেননি। এই কদিন খেয়ালও করিনি। নিশ্চয়ই ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেন নি… রাতে কিছু খেয়েছেন?
নীড় : হামমম।
মেরিন : মিথ্যা কথা …
নীড় : হ্যা তো? মন চায়নি তাই খাইনি । সমস্যা ….
মনে মনে : আমার বউর না শরীর ভালো আর আমি গপাগপ খাই।
.
নীড় মোবাইলের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবছিলো।ভেবেই পাশ ফিরলো । দেখলো মেরিন নেই ।
নীড় : মেরিন … মেরিন …
নীড় রুম থেকে বের হলো। দেখে মেরিন সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছে । নীড় দৌড়ে গেলো । অসুস্থ শরীর নিয়ে এতোগুলো সিড়ি ভেঙে নিচে নেমে মেরিন অনেক হাপিয়ে উঠেছে । অনেক কষ্ট করে নীড় প্লেট সাজাচ্ছে ।
নীড় : কি করছো কি এখানে ?
মেরিন : ঘোড়ার ঘাস কাটছি । এরপর ঘোড়াকে খাওয়াবো।
বলেই মেরিন প্লেট টা নিয়ে নীড়ের সামনে দারালো ।
মেরিন : নিন খেয়ে নিন।
নীড় প্লেটটা ছুরে ফেলেদিলো । সারা ফ্লোর খাবার আর কাচের টুকরোতে ভরে গেলো । শব্দ শুনে নিহাল-নীলিমা নিচে নেমে এলো ।
নীড় : এসব করে কি প্রমান করতে চাস তুই ? আমাকে অসম্ভব ভালোবাসিস ? হ্যা ? সবসময় আমার ভালো চাস? এগুলোই প্রমান করতে চাস তো … এতোই যদি আমাকে ভালোবাসিস তাহলে আমাকে ছেরে দিচ্ছিস না কেন…? জানিস না তুই আমার খারাপ থাকার একমাত্র কারন …
মেরিন ওর রহস্যময়ী হাসি দিয়ে একদম নীড়ের কাছে ঘেষে দারালো ।
নীড়ের চুল ঠিক করতে করতে
বলল : হামমম ছেরে দিবো তো । যেদিন আপনাকে নিয়ে খেলে মন ভরে যাবে সেদিন আপনাকে ছেরে দিবো ।
বলেই মেরিন আবার রান্নাঘরে গিয়ে খাবার এনে নীড়ের সামনে রাখলো । এরপর নীড়ের কলার ধরে টেনে বসিয়ে নীড়কে খাওয়াতে লাগলো । খাইয়ে হাত ধুয়ে ওপরের দিকে পা বারালো। যাওয়ার সময় ১টা কাচের টুকরো মেরিনের পায়ে বিধলো । মেরিন টু শব্দ না করে খুব সাবধানে ধীরে ধীরে ওপরে চলে গেলো ।
.
নীলিমা : নীড় … বিয়ে হয়েছে আর হবে ।
নিহাল : আর মনে রেখো চৌধুরী বাড়িতে তালাক বা ২য় বিয়ের কোনো নিয়ম নেই। যদি তালাক দিয়েও দাও তুমি মামনিকে ভেবোনা যে নীরা বা অন্যকাউকে বউ করে এ বাড়িতে ঢোকাতে পারবে। অন্তত আমি বেচে থাকতে পারবেনা ।
তখন নীড়ের চোখ পরলো মেঝের দিকে । ১জায়গায় রক্তের দাগ । সিড়ি সহ আরো ২-৩জায়গায়ও দেখতে পেলো । নীড়ের আর বুঝতে বাকী রইলো না। আরেকদফা দৌড় লাগালো । দৌড়ে রুমে গিয়ে দেখে মেরিন কাচভাঙাটাকে ১বার বের করছে আবার সেই একই জায়গায় ঢোকাচ্ছে । নীড় সাংঘাতিক রাগ হলো। মেরিনের সামনে গিয়ে ১টানে কাচের টুকরোটা বের করে ছুরে ফেলে দিলো । এরপর first aid box হাতে নিয়ে বসে মেরিনের পা ধরতে নিলে
মেরিন বলল : কি করছেন আপনি আমার পা ধরছেন কেন ?
নীড় রেগে মেরিনের দিকে তাকালো ।। নীড়ের চোখ দেখে এই প্রথমবার মেরিন ভয় পেলো ।
নীড় : আর ১টা কথা বললে জিভ আর পা ২টাই কেটে ঝুলিয়ে রাখবো।
নীড় মেরিনের পায়ে ব্যান্ডেজ করে বিছানা ঠিকঠাক করে শুয়ে পরলো। এরপর ১টানে মেরিনকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরলো ।
.
সকালে …
মেরিনের ঘুম ভাংলো । তবে চোখ মেলে চমকে উঠলো । কারন জায়গাটা ওর কাছে অচেনা। হুরমুরিয়ে উঠে বসলো ।
মেরিন : আমি এখানে? নীড় কোথায়? কেউ কিছু… না না … নীড় …. নীড় …
নীড়ের সারা না পেয়ে তারাহুরা করে বেড থেকে নেমে পা ফেলতেই ব্যাথায় আহ করে উঠলো ।
মেরিন : আহ…
নীড় : হায়রে …
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীড় দারিয়ে আছে । হাতে খাবারের ট্রে নিয়ে । এবার মেরিন সত্যিই ভীষন অবাক হলো ।
নীড় : you know what…. এই মুহুর্তটা আমার কাছে নোবেল পাওয়ার অনুভূতির মতো । কারন আমি the মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে অবাক করতে পেরেছি ।
বলেই ট্রে টা রেখে নীড় মেরিনকে নিচ থেকে তুলে বেডে বসালো ।
নীড় মেরিনের পায়ের ব্যান্ডেজটা change করতে করতে
বলল : তুমি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকবো । চৌধুরী বাড়িতে তোমার শশুড়-শাশুড়ির অত্যাচারে তোমাকে handle করা just & just impossible …
ব্যান্ডেজ পাল্টে নীড় মেরিনকে washroom এ নিয়ে গেলো । মেরিন fresh tresh হয়ে নিলো।
.
একটুপর…
নীড় মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে । ঠোটে মুচকি হাসি। মেরিন চুপচাপ খাচ্ছে । কোনো reaction নেই ।
মেরিন মনে মনে : ভালোবাসতে চাইছেন নীড় আমাক… হয়তো ভালোবাসতে শুরুও করেছেন। good really very good … but জান… আমি যে আপনাকে কথা দিয়েছিলাম যতোবার আমাকে ভালোবাসতে চাইবেন ততোবার আপনাকে আমি ঘৃণার কারন দিবো । কারন আমি ঘৃণার মেরিন ।
নীড় : কিছু তো ১টা ভাবছো সেটা বেশ বুঝতে পারছি ।
মেরিন মুচকি হেসে নীড়ের কলার ধরে টেনে কাছে এনে নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো । কিছুক্ষন পর ছেরে দিলো ।
নীড় : তোমার মাথায় কখন কি চলে সেটা নাসা ওয়ালারাও কখন বুঝতে পারবেনা। ডাকাতের মতো আমার ঠোটগুলোর ওপর হামলা করো। কেন সিনেমা দেখোনা ? গল্প পড়োনা ? দেখোনা সব জায়গায় হিরোরা জোর জবরদস্তি হিরোইনদের কিস করে । আর তুমি?
মেরিন : তো? আমি তো আর হিরোইন নই। আমি তো ভিলেন… isn’t it ?
নীড় : yes… idiot… rest করো।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলে মেরিন হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিলো। এরপর জরিয়ে ধরলো ।
মেরিন : ভালোবাসি ।
নীড় : বেশি ভালোবাসা ভালোনা। ভালোবাসতে বাসতে তুই… তুমি পাগল হয়ে যাবে । তবুও বিনিময়ে কি কখনো ভালোবাসা পাবে বলে তোমার মনে হয় ?
মেরিন : ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কে ভালোবেসেছে… আমি ঘৃণাতেই সন্তুষ্ট … তবে আপনার এই ঘৃণা ১দিন ঠিকই ভালোবাসায় পরিনত হবে… কিন্তু সেদিন…
নীড় : কিন্তু সেদিন?
মেরিন : কিছুনা…
.
৭দিনপর…
মেরিনের সাথে ৭দিন কাটিয়ে , ওর যত্ন করে নীড় মেরিনের মায়ায় জরিয়ে গেছে । ওর মন চায় সারাদিন মেরিনকেই দেখতে ।
নীড় মনে মনে : নীড়… দায়িত্ব পালন করতে করতে ভুলে যাস না ও মেরিন… কিন্তু ওকে ভালোবাসলে কি খুব বেশি অন্যায় হবে ? ও তো আমারই বউ… আমি চাই না চাই ও সারাজীবন আমার সাথেই থাকবে। মুখে যাই বলি না কেন … আমি নিজে তো জানি যে আমি ওকে ভালোবাসি … কিন্তু….
মেরিন : এই নিন কফি খেয়ে নিন…
নীড় দেখে মেরিন ২কাপ কফি নিয়ে দারিয়ে আছে।
নীড় : রান্নাঘরে কেন গিয়েছো ?
মেরিন : উফফ … নীড় … আপনার জন্য এতততো গুলো দিন ধরে কাজ না করে বসে আছি । না office যেতে পারছি আর না অন্য কোনো কাজ । এভাবে বসে থাকা যায় । কাল বাসায় চলুন না ।
নীড় : না । পুরো ১মাস পর ফিরবো। না হলে তোমার দিওয়ানা প্রেমিক ডক্টর তপু আবার আমাকে কথা শোনাবে …
মেরিন : কি? তপুদা আপনাকে কথা শুনিয়েছে ? আগে বললেন না কেন? এতো সাহস ওর । ওকে তো আমি …
নীড় : shut up… just shut up… মানুষের জীবন নিয়ে খেলা , মানুষের জীবন কেরে নেয়া তোমার নেশা হয়ে গেছে । পাগল হয়ে গেছো তুমি … যেই লোকটা তোমার জীবন বাচালো , যে তোমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে তাকে মেরে ফেলবে ? শাস্তি দিবে ? তাও আমার জন্য ? যে আমি কেবল আর কেবল তোমাকে ঘৃণা করি … তুমি বোঝোনা তোমার এসব কাজ তোমাকে ঘৃণা করার কারন দেয় ?
মেরিন : so what ? by the way কফিটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ।
.
রাত ১টা …
নীড় ঘুম। মেরিন বারান্দায় দারিয়ে আছে । বাইরে বৃষ্টি পরছে ।
মেরিন মনে মনে : ৭-৮দিন হয়ে গেলো বাবা আর দাদুভাইয়ের কোনো খোজ নিতে পারছিনা । কেমন আছে কে জানে? ধ্যাত …
নীড় : ভিজে যাচ্ছো যে সে খেয়াল কি আছে ?
মেরিন : আমি বুঝতে পারছিনা কদিন ধরে আপনি আমায় নিয়ে এতো কেন ভাবছেন ? কারনটা কি জানতে পারি ?
নীড় : because u r my responsibility … নানাভাই কোথায় আছে তা জানিনা । নানাভাই এসে আমার দিকেই আঙ্গুল তুলবে । অকারনে কথা শুনতে ভালো লাগেনা।
মেরিন : well then… not needed… আপনাকে কষ্ট করে দায়ে পরে দায়িত্ব পালন করতে হবেনা । আর হ্যা কেউ আপনাকে কথাও শোনাবে না।
বলেই মেরিন বারান্দা থেকে চলে গেলো।
নীড় : আচ্ছা মেরিনকে পাল্টানোর কি কোনো উপায় নেই ? ও কি এমনই থাকবে ?
ভেবে টেবে একটুপর নীড়ও রুমে গেলো । কিন্তু গিয়ে দেখে মেরিন নেই।
নীড় : কোথায় গেলো ? মেরিন… মেরিন …
নীড় রুম থেকে বের হতেই ঘুঙুরের শব্দ পেলো । ছাদ থেকে আসছে । নীড় ছাদে গেলো । গিয়ে দেখে বৃষ্টির তালে তালে মেরিন চোখ বন্ধ করে নাচছে । নীড়ের মনে হচ্ছে কোনো ময়ূরী নাচছে। ছোটো থেকেই মেরিন খুব সুন্দর করে নাচতে পারে। নীড় না চাইতেও মুগ্ধ হয়ে দেখছে । চোখ বন্ধ থাকায় মেরিন নীড়কে দেখেনি। আর অন্য ধ্যানে থাকায় নীড়ের উপস্থিতিও বুঝতে পারেনি । নাচতে নাচতে মেরিন ধপ করে বসে পরে চিৎকার করে কাদতে লাগলো । নীড় অবাক হয়ে গেলো। মেরিনের কান্না দেখে নীড়ের বুকে চিনচিন ব্যাথা শুরু হলো।
🐸🐸🐸।
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসে ওর কাধে হাত রাখলো । মেরিন ঘুরে নীড়কে জরিয়ে ধরলো । হাউমাউ করে কাদতে লাগলো ।
কিছুক্ষনপর যখন বুঝতে পারলোযে এটা নীড় তখন ছেরে দিয়ে উঠে দারালো ।
মেরিন : বৃষ্টির মধ্যে আপনি ছাদে কি করছেন ? যান ভেতরে যান ঠান্ডা লেগে যাবে ।
নীড় :…
মেরিন : কি হলো যাচ্ছেন না কেন ? জ্বর আসবে । অসময়ের বৃষ্টি … অসুস্থ হয়ে পরবেন।
মেরিন নীড়কে ধাক্কাতে লাগলো। নীড়ের বুকে কিল দিতে লাগলো ।
মেরিন : যান চলে যান… যাচ্ছেন কেন যান যান যান…
নীড় মেরিনের হাত টেনে সামনে আনলো । এরপর কোমড় জরিয়ে ধরে একেবারে নিজের সাথে মিশিয়ে মেরিনের ঠোট দখল করে নিলো । এরপর romance করলো।
😒😒😒।
.
৩দিনপর…
এই ৩দিনে নীড় মেরিনের সাথে যথেষ্ট romance করেছে ।
নীড় মনে মনে : মেরিনকে সামলানোর এটাই ১টা উপায় । ওকে হয়তো এভাবেই পরিবর্তন করতে হবে। ভালোবেসে …
মেরিন মনে মনে : ভালোবাসার ফাদে পা দিয়েছেন নীড়… এবার নতুন করে ঘৃণার কারন দিবো । 😏। মিস্টার জান । you have to hate me …
মেরিন : নীড়…
নীড় : বলো ।
মেরিন : আর কতোদিন এখানে থাকবো ? চলুন না।
নীড় : না । বাসায় গেলেই তুমি কাজে লেগে যাবে ।
মেরিন : দেখুন এমন বন্দী থাকা আর possible না । চলুন না ।
নীড় : না ।
মেরিন : দেখুন আমি একদম সুস্থ …
নীড় : বাংলা ভাষা বোঝোনা ?
মেরিন : শেষ বারের মতো বলছি যাবেন কি যাবেন না?
নীড় : না …
মেরিন আর কোনো কথা না বলে ওড়নার আড়াল থেকে injection টা বের করে নীড়ের ঘাড়ে লাগিয়ে দিলো। নীড় ভারসাম্য হারাতে লাগলো ।
মেরিন : ভালোমতো কোনো কথা কেন যে শুনতে চান না???
.
সকালে…
মেরিন : good morning জান…
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। উঠে বসলো। রেগে টম হয়ে আছে।
মেরিন : sorry জান…
নীড় : একদম আমাকে জান ডাকবেনা। কোনো মূল্যই নেই তোমার কাছে আমার। 😤।
মেরিন : ওরে বাবা আমার জামাইটা দেখি হেব্বি রাগ করেছে । এই দেখুন কানে ধরে sorry … 😊…
নীড় : একদম ঢং করবেনা।
মেরিন : ok… করলাম না । office এ দেখা হবে। bye…
বলেই মেরিন অফিসে চলে গেলো।
নীড় : আজব মেয়ে ধুর। কই বর রাগ করেছে মান ভাঙাবে। ১মিনিট… আমি ধীরে ধীরে মেরিনের permanent বর হয়ে যাচ্ছি … permanent বর? কি কি word use করছি আমি… না অফিস যাই । কাজও পরে আছে। আর সাইকো টাও গিয়েছে অফিসে। কি জানি কি করে ?
নীড় রেডে সেডি হয়ে অফিসে গেলো। গিয়ে বুঝতে পারলো অফিসে ছোটো খাটো কেয়ামত হয়ে গেছে। কারন প্রত্যেকের চেহেরার ১৩টা বেজে আছে ।
.
নীড় কেবিনে গেলো। দেখলো মেরিন ল্যাপটপে কাজ করছে । ভীষন রেগে আছে বুঝতেই পারছে । নীড় গিয়ে নিজের চেয়ারে বসলো। ২জনের চেয়ার পাশাপাশি ।
নিরবতা ভেঙে মেরিনই
বলল : দেখেছেন এতোদিন অফিসে না এসে কতো ঝামেলা হয়ে গিয়েছে। একেকজনের পাখা গজিয়েছে। কাজকর্ম সব গোল্লায় গিয়েছে । ৫কোটি টাকার ডিল ছুটে গিয়েছে।
নীড় : তো?
মেরিন : তো মানে কি ? হ্যা তো মানে কি ?
তখনই নিলয় ঢুকলো।
নিলয় : মেরিন…
২জন সামনে তাকালো। নিলয় ছুটে মেরিনের কাছে গেলো। মেরিনের ২গালে ২হাত রেখে
বলল : ঠিক আছো তুমি? আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছিলো … কেন নিজের খেয়াল রাখোনা?
মেরিন ঝাড়ি মারতে নিবে। তখন টেবিলের কাচে নীড়ের চেহারাটা দেখলো । বিরক্তি + jealousy স্পষ্ট নীড়ের চেহারায়। চোখ গুলো লাল হয়ে উঠলো । মেরিন বাকা হাসি দিলো ।
মেরিন মনে মনে : ঘৃণার কারন পেয়ে গিয়েছি…
মেরিন ওর ড্রয়ার থেকে ছোটো ছুড়িটা বের করে নিলয়ের হাতে সজোরে আঘাত করলো।
নিলয় : আহ…
.
চলবে..
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 14
writer : Mohona
.
নিলয় : আহ…
মেরিন দাতে দাত চেপে
বলল : মেরিন বন্যাকে টাচ করতে যোগ্যতা লাগে । যা কেবল আমার নীড়ের আছে । যদি বেচে থাকতে চাস তো দূর হ… জন… জন…
জন ছুটে এলো ।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : আবর্জনাকে ফেলে দিয়ে আসো ।
জন : sure mam…
জন নিলয়কে নিয়ে গেলো । আর ১মবার নীড় মেরিনের কাজে খুশি হলো ।
নীড় মনে মনে : দেখ শালা কেমন লাগে। আমার বউকে স্পর্শ করা … 😤…
মেরিন ল্যাপটপে মুখ গুজেই
বলল : এমন পৈশাচিক হাসি দেয়ার কোনো মানে নেই … আপনার উচিত হাতে চুরি আর শাড়ি পরে থাকা … যে লোকের সামনে তার স্ত্রীকে অন্য কেউ এসে টাচ করে , জরিয়ে ধরে বা ধরতে চায় তবুও সে চুপ থাকে তাকে আর যাই হোক মানুষ বলেনা । তাকে কোনো জড়পদার্থ বললে ভুল হবেনা ।
নীড় : তোমার মতো কথায় কথায় মারামারি আমি করতে পারবোনা । got it?
দুপুরের পর মেরিন অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো ।
.
রাতে…
মেরিন বসে বসে ফুল থেকে ১টা ১টা করে পাপড়ি ছিরছে । তখন নীড় এলো। অনেকগুলো ফুল আর চকোলেট বক্স নিয়ে । মেরিন ১পলক দেখে আবার নিজের কাজে মন দিলো। নীড় মুচকি হেসে ফুল আর চকোলেট গুলো মেরিনের দিকে এগিয়ে দিলো । আগে চকোলেট দিলো ।
মেরিন : আমি চকোলেট খাইনা । i just hate chocolates…
নীড় ফুলগুলো এগিয়ে দিলো।
নীড় : এগুলো হয়তো কাজে লাগবে।
মেরিন : thank u…
মেরিন ফুলগুলো নিলো।
নীড় : i am sorry …
মেরিন : what for?
নীড় : 😒।
মেরিন : কখনো সূর্যের কাছে শীতলতা , অথবা বর্ষার কাছে প্রখরতা পাওয়া সম্ভব ? নাকি আগুন দিয়ে তৃষ্ণা মেটানো সম্ভব ? কোনোটাই সম্ভব না । বর্ষনের কাজ বর্ষিত হওয়া । পরিবেশকে প্রানবন্ত করা। তুষ্ট করা । নয় কি? আপনার কাজ করেছেন । কেউ প্রকৃতির বাইরে নয়।
নীড় : তুমি হয়তো প্রকৃতির বাইরে।
মেরিন : not at all জান… আমি বন্যা। ধ্বংমসই আমার কর্ম । তান্ডবই আমার ধর্ম ।
নীড় : তুমি commerce নিয়ে কেন study করলে বুঝলাম না। তোমার তো science বা arts নিয়ে study করার দরকার ছিলো। কখনো তীরের আঘাত খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু আমি damn sure যে তোমার কথাগুলো তীরের থেকেও ধারালো।
মেরিন : i know … এখন গিয়ে fresh হয়ে নিন। বাথটবে গরম পানি রাখা আছে । আর ডিনারেও আপনার প্রিয় খাবার ।
নীড় fresh হতে গেলো । এরপর সবাই ডিনার করলো ।
.
নীড় : মেরিন …
মেরিন : হামমম।
নীড় : লং ড্রাইভে যাবে?
মেরিন : চলুন …
২জন লং ড্রাইভে গেলো । এভাবেই ধীরে ধীরে ওদের সম্পর্ক নরমাল হতে লাগলো। নীড় খুবই effort লাগাচ্ছে । আর মেরিন তো মেরিনই । ও তো ভালোইবাসে নীড়কে। আর নীড়ের উদ্দেশ্য মেরিনকে নরমাল করা। সাইকোগিরি থেকে বের করে আনা । কিন্তু ওর কোনো কাজই মেরিনকে effect করেনা । মেরিন ভীষনভাবে enjoy করে ঠিকই। কিন্তু ও ওর সিদ্ধান্তে অটল । মেরিন নীড়ের ভালোবাসা মাথায় করেই রাখতো । নীড়ের ঘৃণাও মেরিন সাদরে গ্রহন করেছিলো । কিন্তু নীড়ের ছলনাটা মেরিন কোনোদিনই ভুলবেনা । অমন কষ্ট মেরিন কখনোই পায়নি ।
.
কয়েকদিনপর…
রাত১০টা…
নিহাল : নীড় মামনি তো বলেইছে যে আজকে রাতে ফিরবেনা ।
নীড় : তোমাকে বলেছে । আমাকে তো না। আর ফিরবেনা কেন ? এখনো কি সম্পুর্ন সুস্থ হয়েছে? জানেনা রাতে ওর মেডিসিন আছে। কখনো তো মেডিসিন নিবেনা। চিনিনা ওকে আমি?
নিহাল : চেনো ওকে?
নীড় আর কোনো জবাব না দিয়ে রুমে চলে গেলে ।
নীড় : যা ইচ্ছা তাই করে। ১টা বার inform করলো না । stupid … শরীর না ভালো। আর ম্যাডাম না জানি কোথায় থাকবে ? ফোনটাও তুলছেনা। ননসেন্স। আবার বলে আমাকে নাকি ভালোবাসে । huh…
নীড়ের কিছুই ভালো লাগছেনা। সারারাত ঘুমও এলোনা । পরদিন বিকালে মেরিন এলো । মেরিন দেখে নীড় নিচে বসে আছে । খাটে হেলান দিয়ে । চোখ বন্ধ। কেন যেন মুখে বিরহ বিরহ ভাব ।
মেরিন : কি হয়েছে আপনার ?
নীড় চোখ মেলল। ১রাশ অভিমান নিয়ে মেরিনের দিকে তাকালো ।
মেরিন : বললেন না তো কি হয়েছে ? খারাপ লাগছে ?
নীড় : তোমাকে বলার প্রয়োজনবোধ করছিনা ।
মেরিন নীড়ের সামনে এগিয়ে গিয়ে নীড়ের কপালে গালে হাত দিয়ে চেক করলো যে ওর জ্বর এসেছে কিনা ।
নীড় : একদম টাচ করবেনা আমাকে ।
মেরিন : ok…
বলেই মেরিন fresh হতে গেলো ।
.
নীড় : কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন : একটু ঘুরতে ফিরতে… chill করতে… একে অতোদিন বন্দী থেকে আর কাজের ১ঘেয়েমিতা কাটাতে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম। mind fresh করতে।
নীড় : আমাকে বলতে আমি নিয়ে যেতাম…
মেরিন : আমার সব সময় আপনার ।। কিন্তু আপনার কি সময় আছে আমাকে সময় দেয়ার?
নীড় : তোমাকে বোঝায় কার সাদ্ধ ?
মেরিন : হামম।
নীড় : তুমি এমন কেন ? দেখো তুমি আমাকে ভালোবাসো। we r husband-wife… & i think এখন আমাদের relation টাও নরমাল । তাহলে আমরা ১টা normal life spend করতে পারিনা?
মেরিন : বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আমাদের relation টা নরমাল কিনা ? বুকে হাত দিয়ে বলুন তো যে এই কদিন ধরে আপনি যা যা করেছেন সেসবের কারন ছিলো আমাকে ভালোবেসে সারাজীবন সংসার করা … আর কোনো উদ্দেশ্য বা কারন ছিলোনা।
নীড় : ….
মেরিন : কি হলো রাখুন বুকে হাত… বলুন….
নীড় : ….
মেরিন নীড়ের হাত নীড়ের বুকের ওপর রাখলো।এরপর
বলল : বলুন এবার…
মেরিন মনে মনে : এটা আপনার শেষ সুযোগ নীড় । যদি সত্যিই আপনার উদ্দেশ্য কেবল আমাকে ভালোবেসে সারাজীবন আমার সাথে থাকা তাহলে নতুন করে আর ঘৃণার কাহিনী লিখবো না… কথা দিলাম… কিন্ত আজ যদি আবারও ছলনার আভাস পাই… তবে… যা আছে তাই চলবে…..
নীড় মনে মনে : আমার উদ্দেশ্য তো ছিলো তোর এই মানসিক রোগটা দূর করে নরমাল করা বনপাখি । কিন্তু আবার তোকে ভালোবেসে ফেলেছিরে বনপাখি… তবে আমি আজও চাই তোকে সুস্থ করতে ।
মেরিন : কি হলো বলুন…
নীড় : …
মেরিন : বুকে হাত দিয়ে মিথ্যা কথা বের হয়না নীড়… বুক কেপে ওঠে… আমার জবাব আমি পেয়ে গিয়েছি… whatever … আপনি কি চান না চান তাতে আমার কিছুই যায় আসেনা। আমার কাছে আমার চাওয়াটাই বড়…
বলেই মেরিন রান্নাঘরে চলে গেলো।
.
পরদিন …
বিকালে…
মেরিন আজকে অফিস যায়নি। নীড় বসে আছে।
নীড় : আমি কি ওকে বলে দিবো যে আমি ওকে ভালোবাসি? হামম বলেই দিবো ।
তখন নীড়ের নামে ১টা envelope এলো। নীড় সেটা খুলে কিছু ছবি পেলো। যা দেখে নীড় ৪৪০ভোল্টের ঝটকা খেলো। কারন ওগুলো মেরিন আর ডক্টর তপুর ছবি। যেখানে ওরা সাগর পারে ঘুরছে । হাত ধরে হাটছে। ভীষন close হয়েও কিছু ছবি তুলেছে। যা দেখে নীড়ের মেজাজ সাংঘাতিক বিগরে গেলো ।
নীড় : ও… তো ২দিন ধরে ওই তপুর সাথে ছিলো। 😤
নীড় আর ১মিনিটও দেরি না করে বাসায় ছুটলো।
মেরিন : রাগ মানুষের মানুষের বড় শত্রু… রাগ উঠলে নিজেকে শান্ত রাখাটা অনেক প্রয়োজন… তা না হলে ঠিক ভুল যাচাই করা যায় না। জান… যদি রাগটাকে নিয়ন্ত্রন করে ঠান্ডা মাথায় ছবি গুলো দেখতেন তাহলে আরামসে বুঝতে পারতেন যে ওগুলো আপনার আর আমারই ছবি…. just আপনার গলাটা সরিয়ে তপুদার গলাটা লাগানো। but… আপনি তো আপনি… মানুষ সেটাই দেখে বা বোঝে যেটা সে দেখতে বা বুঝতে চায় …
চলে আসুন তারাতারি জান…. i am waiting for the new hate story…
.
কিছুক্ষনপর…
নীড় রেগে আগুন হয়ে বাসায় এলো। এসে দেখে মেরিন নীড়ের shirt গায়ে দিয়ে নাচছে।
নীড় সামনে গিয়ে মেরিনের ওপর ছবিগুলো ছুরে মারলো। মেরিন ছবিগুলো হাতে নিলো ।
মেরিন : wow nice pictures … তাইনা?
নীড় থাপ্পর মারলো।
মেরিন : থাপ্পরে phd করেছেন নাকি হামম নীড়!!!
নীড় : খবরদার ওই নোংরা মুখে আমার নাম নিবেনা…
মেরিন : ok… জান বলে ডাকবো।
নীড় : লজ্জা করেনা পরপুরুষের সাথে ঘুরতে যেতে? রাত কাটাতে ?
মেরিন : না । মোটেও না । লজ্জা করবে কেন ? গর্ব হয়। আপনিই তো বলেছিলেন যে তপুদা আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে। তাই ভাবলাম যে তার সাথে একটু সময় কাটাই তাকে তো আর বিয়ে করবোনা। just তার ভালোবাসাটা accept করবো। কারন ভালোতো আর আপনি আমাকে বাসেন না। আর বাসবেনও না। তাই কারো ১টা কাধ তো চাই যার কাধে মাথা রেখে কিছু মুহুর্ত পার করতে পারবো। যার কাধ ভরসার হবে। ধোকার না । আর ধোকার হলেও কষ্ট হবেনা। কারন তাকে তো আর আমি ভালোবাসিনা।
নীড় : তাহলে আমার কাছে কেন? তার কাছে চলে যাও।
মেরিন : পারবোনা গো। কারন আমি যে আপনাকে ভালোবাসি…
নীড় : oh really …? তোমার মতো নোংরা মেয়েরা কাউকে ভালোইবাসতে পারেনা। ভেবেছিলাম যে… যেমনই হও হয়তো আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু… whatever …এতোদিন আমার কাছে থেকে যে ঘৃণা পেয়েছো তা কেবল ট্রেইলার ছিলো। এখন থেকে নতুন ঘৃণা দেখবে। মনে রেখো ।
বলেই নীড় চলে গেলো। চোখের কোনে পানি নিয়ে।
মেরিন : কেমন লাগলো নীড় ধোকাটা? ধোকা দিলে ধোকা নেয়ার সক্ষমতাও থাকা দরকার…
.
২দিন ধরে নীড় বাসায় ফিরেনা । নীলিমা তো চিন্তায় ঘাস।
নীলিমা : বলনারে বন্যা কি হয়েছিলো ? নীড় এতো রেগেছিলো কেন? কোথায় আছে ৩দিন ধরে?
মেরিন : শাশুড়িফুপ্পি ঠিক আছে নীড়। আর no worry চলে আসবে। হয়তো আজই…
নীলিমা : নীড়…
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীড়… নীড় সোজা ওপরে চলে গেলো । মেরিনও পিছে পিছে গেলো। নীড় হেব্বি রেগে আছে। মেরিনের সাথে রাগারাগি করলো। নীড়ের রাগারাগিতে দিন কাটতে লাগলো। ১২-১৫দিন কেটে গেলো নীড়ের ঘৃণায়। যেটা মেরিন ভীষনভাবে enjoy করছে। মজার মজার লাগে। তবে ২দিন ধরে মেরিন চিন্তিত। কারন কবিরের শরীরটা কদিন ধরে ভালো না। তাই কবিরকে নিয়ে ভাবছে। ১টা জরুরী কাজ থাকায় নীড় রাজশাহী গেলো।
.
রাজশাহীতে…
নীড় ১জন patient কে হসপিটালে নিয়ে গেলো। দেখতে পেলো তপুকে । আর তপুকে দেখে নীড় রেগে গেলো। আর তপু নীড়কে দেখে এগিয়ে এলো ।
তপু : আরে নীড়… ভালোআছো? সবাই ভালো আছে? মেরিন ভালো আছে? ঠিক মতো মেডিসিন নেয় তো?
নীড় কোনো জবাব না দিয়ে দুম করে তপুকে ঘুষি মারলো । তপু তো অবাক ।
তপু : r you mad?
নীড় : yes i am…
বলেই নীড় তপুকে আরো মারতে লাগলো। কোনো রকমে তপু নীড়কে থামালো। এরপর ওকে টেনে নিচে নিয়ে গেলো।
তপু : নীড়… হাত আমারও আছে… অকারনে এমন করার কারন জানতে পারি?
নীড় : একারন? আমার বউর সাথে তুমি…
তপু : মেরিনের সাথে আমি মানে?
নীড় ছবি গুলো তপুর ওপর ছুরে মারলো। সেদিন থেকে নীড় ছবি নিজের কাছেই রাখে । তপু তো ছবি দেখে অবাক ।
তপু : এসব কি?
নীড় : ঢং করোনা না জানার। মেরিন স্বীকার করেছে ।
তপু : কি ? মেরিন স্বীকার করেছে মানে ?
নীড় : মানে এই যে তোমরা vacation এ গিয়েছে হানিমুন করতে।
তপু : নীড়… mind your language … মেরিন বাসায় যাওয়ার পর আমি এই রাজশাহী মেডিকেলে ১টা research এর কাজে এসেছি । নরতেও পারিনি। আর তুমি বলছে vacation ? আর তার থেকেও বড় কথা । মেরিন কখনো তুমি ছারা অন্য কারো সাথে… মেরিনের দুনিয়া তুমি…. আর ছবি? এই ছবি দেখে যে কেউ বলবে যে edit করা… ত…
তখন তপুর ডাক পরলো। তপু চলে গেলো। আর নীড় অংক মিলাতে লাগলো। গবেষনা করতে লাগলো। বুঝতে পারলো যে ওটা তো ওর আর মেরিনেরই ছবি । আর বুঝতে পারলো এসব কিছু মেরিনই করেছে। নীড়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। সব কাজ ফেলে ছুটলো ঢাকায়।
.
পরদিন…
নীড় ছুটে রুমে গেলো। গিয়ে দেখে মেরিন প্যাকিং করছে।
নীড় : বনপাখিহ…
মেরিন ঝড়ের গতিতে পিছে ঘুরলো।
.
((( আচ্ছা সবাই বলছে যে মেরিন ঘৃণার খেলা কেন খেলছে ? ১ম পার্টে গিয়ে দেখো। যেখানে মেরিন জেলে যাওয়ার আগে মেরিন বলেছিলো যে নীড় যতোবার মেরিনকে ভালোবাসতে চাইবে ততোবার মেরিন ঘৃণার কারন দিবে। আর নীড় যে কাজটা করেছে সেটা কি ক্ষমার যোগ্য? )))
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 15
writer : Mohona
.
মেরিন ঝড়ের বেগে পিছে ঘুরলো। নীড়ের অগোছালো অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলো । ছুটে নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : নীড় … ককি হয়েছে আপনার ? এমন লাগছে কেন আপনাকে ? কি হলো কথা বলছেন না কেন ?
নীড় কোনো কথা না বলে শক্ত করে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো । মেরিন বেশ বুঝতে পারছে নীড় কাদছে। যেটা কোনোদিনও মেরিন সহ্য করতে পারেনা ।
মেরিন : বলছেন না কেন কি হয়েছে? এই নীড় …
নীড় চোখের পানির মুছে নিজেকে সামলে মেরিনকে ছারলো। দেখলো মেরিনেক চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে।
.
মেরিন নীড়ের ২গালে হাত রেখে
বলল : কককি হয়েছে ? কেউ কিছু বলেছে ? কথা বলছেন না কেন ? কে কি করেছে just ১টাবার বলুন … আমি তাকে… আপনি নাম বলুন…
নীড় : কেউ ধোকা দিয়েছে।
মেরিন : নাম বলুন…
নীড় : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী …
মেরিন : …
নীড় : হামম। তুমিই ধোকা দিয়েছো । অনেক বড় ধোকা….
মেরিন : আমি তো ধোকাবাজই। তাই ধোকা দিয়েছি। তবে সেটা তো ১৭দিন আগের কথা । তার শাস্তিও তো পাচ্ছি … না না আপনার উগ্র ব্যাবহারে নয়। আপনার থেকে দূরে থেকে । হ্যা যদি আরো বড় কোনো শাস্তি দিতে চান like… মেরে ফেলা পুরিয়ে ফেলা blah blah… i don’t mind … বলুন কি শাস্তি দিবেন ?
নীড় : কোন অপরাধের শাস্তি দিবো তোমাকে ? আমাকে ভালোবাসার না কি সাজানো ঘৃণার কারন দেয়ার…
মেরিনের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে নীড় সবটা জেনে গেছে …
মেরিন : যেটার ইচ্ছা ।
বলেই মেরিন কাবার্ড থেকে নীড় জামা-কাপড় বের করে নীড়কে দিলো ।
মেরিন : যান fresh হয়ে নিন । এরপর সবাই মিলে একসাথে lunch করবো। এরপর আমাকে আবার timely airport যেতে হবেযে । না হলে flight miss করবো যে …
নীড় না জিজ্ঞেস করে পারলোই না ।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো !!!
মেরিন : নতুন কারো সাথে ঘুরতে। আপনার ভাষায় হানিমুনে… যান গিয়ে fresh হয়ে নিন।
নীড় মেরিনের বাহু টেনে সামনে আনলো । মেরিনের চোখে চোখ রাখলো ।
নীড় : যখন ভালোবাসার কারন খুজে পাচ্ছিলাম তখন কেন নতুন করে ঘৃণার কারন দিলে …
মেরিন : কারন মেরিন বন্যা কখনো promise ভাঙেনা।
নীড় : মানে ?
মেরিন : মানে কিছুনা। রাত ৯টায় আমার flight আছে। ব্যাংকক যাবো। bangkok branch এ ঝামেলা হয়েছে । ৭-৮দিনে চলে আসবো।
নীড় : বেশ আমিও যাবো ।
মেরিন : no babes … আমার কাজ আমি একা করতেই ভালোবাসি ।
নীড় : মেরিন …
মেরিন : বলুন…
নীড় : sorry …
মেরিন : …
নীড় : জানিনা কেন আর কোথায় যাচ্ছো … বাধা দেয়ার ক্ষমতা বা যোগ্যতা তো আর আমার নেই।
মেরিন : হামম হয়তো।
নীড় : তবে… ১টা বার ক্ষমা করো প্লিজ…
মেরিন : নীড় আপনার ওপর না তো আমার কখনো কোনো অভিযোগ ছিলো না আছে আর না থাকবে …. এখন যান তো যান fresh হয়ে নিন । মনে হচ্ছে আপনার ভালোবাসার নীরা মরে টরে গেছে । যার শোক পালন করছেন। 😁।
নীড় : তোমাকে কোনো দিনও বুঝবোনা …
নীড় fresh হয়ে এলো । সবাই মিলে lunch করলো। আড্ডা সাড্ডা মারলো। এরপর মেরিন ব্যাংকক চলে গেলো। আসলে মেরিনের উদ্দেশ্য লন্ডন যাওয়া … তাই মেরিন ব্যাংকক থেকে লন্ডন গেলো ।
.
in london …
মেরিন : ডক্টর এতোগুলো দিন হয়ে গেলো আমার বাবা কেন সুস্থ হচ্ছেনা ? why why why…
ডক্টর : control yourself mam…প্লিজ। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি । কিন্তু উনার brain এমনভাবে damage করা যে কোন technicই কাজে লাগছেনা ।
মেরিন : তাহলে কি আমার বাবা ঠিক হবেনা?
ডক্টর : হবে।
মেরিন : কিভাবে? বাবার অবস্থা দেখি আরো খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছে…
ডক্টর : no… খারাপ না ভালো হয়েছে । কনিকা … মানে আপনার মায়ের কথা উনার মনে পরেছে…
মেরিন : oh…
ডক্টর : হামম। ১টা বার যদি আপনার মাকে উনার মুখোমুখি ক…
মেরিন : না। অসম্ভব।
ডক্টর : কেন ? তিনি কি মারা গিয়েছেন ?
মেরিন : হামমম।
ডক্টর : oh then sorry … আমরা তাহলে অন্যভাবে চেষ্টা করবো।
মেরিন : thank u…
মেরিন বাবা আর দাদুভাইয়ের সাথে সময় কাটাতে লাগলো।
.
in Bangladesh…
নীড় : এবার ফিরে তুমি তোমার মনের মতোই নীড় দেখতে পাবে বনপখি… yes… তোমার মন মতো। তোমাকে বুঝতে হলে আমাকে তোমার মতোই হতে হবে …তবেইতো তুমি আমি এক হতে পারবো । আমরা হবো সাইকো couple … যতোই তুমি আমাকে ঘৃণার কারন দাওনা কেন তোমাকে ভালোইবাসবো। মেরিন নামের রহস্যটাকে এবার আমি ভেদ করবোই। যেভাবেই হোক। যদি ঘৃণার নীড় হতে হয় তবে সেটাই হবো … তোমার মতো করেই ভাবতে হবে। কিন্তু তুমি কখন কি ভাবো সেটা কি বোঝা সম্ভব ? জানিনা কি হবে । তবে পারতে আমাকে হবেই…
.
৭দিনপর…
সকাল ৮টা…
মেরিন দেশে ফিরেছে ।
নীলিমা : আরে বন্যা …
নীলিমা দৌড়ে গিয়ে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো ।
নীলিমা : তুই না থাকলে এই বাড়ি এখন ১টা মরা বাড়ি মনে হয়।
মেরিন : তাই বুঝি?
নীলিমা : হামম।
মেরিন : বাবা কোথায় ?
নীলিমা : নিহাল তো গাজীপুর গিয়েছে। ১টা কেস solve করতে।
মেরিন : oh… তোমার মুখ এমন লাগছে কেন ?
নীলিমা : কককোথায় নননাতো…
মেরিন : না দেখে কেমন যেন লাগছে …
নীলিমা : না কিছুনা…
মনে মনে : বন্যা আজকে চলে এলো। নীরা যে ২দিন ধরে এ বাসায়। বন্যা জানলে যে কেয়ামত করবে । কেন যে নীরাকে থাকতে দিলাম!!! মেয়েটা এমন করে বলল যে না করতে পারলাম না … তারমধ্যে তো নীরা রোজ সকালে উঠে নীড়ের জন্য চা নিয়ে যায় … আজও গিয়েছে কিনা…?
মেরিন : কি এতো ভাবছো ?
নীলিমা : কককিছুনা।
মেরিন : তুমি কি অসুস্থ ?
কথা বলতে বলতে মেরিন চোখ ওপরে গেলো। মনে হলো কারো ছায়া দেখেছে।
নীলিমা : না তো… just একটু tired …
মেরিন : ওহ। নীড় ঘুম তো?
নীলিমা : হামমম।
মেরিন : ও। আচ্ছা fresh হয়ে আসছি।
নীলিমা : হামম। চল ২জন মিলে একসাথে যাই চল । ওর অবাক হওয়া চেহারাটা দেখতে হবেনা।
মেরিন : অবাক হবে কি না জানিনা। তবে অসহ্য হয়তো হবে। চলো।
২জন মিলে ওপরে গেলো।
.
নীড়ের রুমের বাইরে…
নীলিমা মনে মনে : যাক মনে হয় নীরা আসেনি চা নিয়ে । বাচা গেলো ।
মেরিন : দরজা ধপাস করে খুলি চলো ২জন মিলে।
নীলিমা : হামম।
২জন মিলে দরজা খুলল। আর যা দেখলো তা দেখে নীলিমারই হোস উরে গেলো আর মেরিন তো মেরিনই …
কারন নীড়ের shirt বেডের নিচে পরে আছে । নীড়ের উন্মুক্ত বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে নীরা …
নীলিমা : নীড়…
নীলিমা এমন করে রেগে ডাক দিলো যে নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো । আর চোখ মেলে নিজের বুকে নীরা আর দরজায় দারানো মেরিনকে দেখে নীড় মহাঅবাক হয়ে গেলো । নীরাকে নিজের কাছে থেকে সরালো। উঠে দারালো। নীরাও নিজেকে গুছিয়ে নিলো । নীড় shirt টা তুলে পরে নিলো । মেরিন সারারুমটাতে চোখ বুলিয়ে নিলো । ফুলের পাপড়ি… candles …দিয়ে রুম সাজানো। তবে এতো কিছুর মধ্যেও wine এর বোতল আর ছোট্ট ১টা পানি ভরা বাটি যেটাতে সাদা রুমাল আছে সেটা মেরিনের চোখ এরালো না । আর তারওপর কালোগোলাপ… গোলাপে নীরার allergy … যা বোঝার মেরিন বুঝে নিয়েছে ।
নীলিমা : নীরা ত…
মেরিন হাত দিয়ে ইশারা করে নীলিমাকে থামিয়ে দিলো । নীড়ের চোখের দিকে তাকালো । লাল হয়ে আছে চোখ ২টা। চোখে পানির দাগ পরে আছে । মেরিন এগিয়ে গেলো । আরেকটা wine এর বোতল হাতে নিলো। বেডের চারদিকে ঢেলে বাকীটা বেডের মধ্যে ঢালল। এরপর আগুন জালিয়ে দিলো। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো ।
নীড় : মে…
মেরিন রেগে নীড়ের দিকে তাকালো । নীড় চুপ হয়ে গেলো। মেরিন নীড়ের কপালে গালে হাত দিলো। এখনও হালকা জ্বর । এরপর সেই আড়াল করতে চাওয়া wine এর বোতল আর সেই বাটিটা বের করলো । ২টা ২হাতে নিয়ে
মেরিন বলল : you hurt me again…
বলেই ২টা জিনিষই আছার মারলো । নীরার সারা শরীর কাপতে লাগলো ভয়ে। মেরিন নীরার দিকে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : নীরা ডার্লিং… জানোই তো এখন তোমাকে মারতে চাইনা । তবে কেন বারবার ভয়ংকর শাস্তি পেতে চাও? আমিও বোর হয়ে গিয়েছি তোমাকে শাস্তি দিতে দিতে । পরে তোমাকে দেখছি । whatever now get out please …
নীরা দারিয়ে আছে ।
মেরিন : কি হলো ? যাও …
নীরা : …
মেরিন : কি হলো ? ১মিনিট ১মিনিট… তুমি কি মনে করেছো তুমি যাবে আর পুলিশের মতো আমি পেছন থেকে encounter করবো …. ন্যাহ… পেছন থেকে আঘাত আমার কাজ না … ভীতুদের কাজ। আমি যা করার সামনাসামনি করি… এখন যা… যা। … যা …
নীরা চলে গেলো।
মেরিন : হ্যালো … জন…
.
একটুপর…
ডক্টর নীড়ের check up করছে । থমথমে পরিবেশ। না নীড়ের গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে আর না নীলিমার… ডক্টর check up করে prescription দিয়ে চলে গেলো ।
মেরিন : জন … মেডিসিন গুলো নিয়ে আসো ।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন fresh হয়ে রান্নাঘরে গিয়ে নীড়ের জন্য soup বানাতে গেলো ।
নীড় : মামনি তোমার ঠিক হয়নি নীরাকে বাসায় থাকতে দেয়ার। ওর জন্য সব হলো। ও ইচ্ছা করে আমার রুমে এসে ঘুমিয়েছে ।
নীলিমা : নীড় এমনও তো হতে পারে যে রাত ভরে ও তোকে পানিপট্টি দিয়েছে … হয়তো চোখ লেগে গিয়েছে …
নীড় : তাহলে রুম সাজালো কেন ?
নীলিমা : নীড়… কালরাতে তুইই মাতাল হয়ে হাতে ওই কালো গোলাপ নিয়ে দরজা বন্ধ করে না নিজেই সাজালি…
নীড় : কি?
নীলিমা : হামম। খেতে বললাম খেলিও না…
নীড় : 😒।
তখন জন এলো।
জন : আসবো স্যার?
নীড় : এসো ।
জন : স্যার খাওয়ার আগের মেডিসিনটা খেয়ে নিন প্লিজ…
বলেই জন ১টা ঔষধ ছিরে নীড়ের হাতে দিলো । খাইয়ে জন চলে গেলো।
.
একটুপর…
মেরিন নীড়ের জন্য soup নিয়ে এলো ।
মেরিন : উঠে বসুন…
নীড় বসলো ।
মেরিন : মুখ খুলুন…
নীড় চুপচাপ খেতে লাগলো। মেরিনের নিরবতা নীড়কে আরো ঘামাচ্ছে ।
নীড় : sorry … আ…
মেরিন : চুপ থাকুন… আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।
নীড় : trust me… আমি…
মেরিন : বলেছিনা চুপ থাকুন… কোন কথা বলবেন না ।
নীড় : …
মেরিন : আপনি কোন সাহসে drinks করেছেন? wine এ হাত লাগান কোন সাহসে?
মেরিনের কথা শুনে নীড় যেন আকাশ থেকে পরলো।
নীড় : কি ?
মেরিন : কানে কি কম শোনেন নাকি ?
নীড় কিছুই বুঝতে পারছেনা । মেরিন রেগে আছে। । আর কারনটাও স্পষ্ট । তবে এই কথা কেন বলছে? নীড়ের মাথা ঘুরছে ।
মেরিন : বাচ্চাদের মতো মুখে নিয়ে বসে আছেন কেন ?
নীড় : দেখো রাগ করোনা। আসলে আম…
মেরিন : আমি রাগ করার কে বলুন তো …
মেরিন নীড়কে ঔষধ টষুধ খাইয়ে কাজে গেলো ।
.
রাতে …
মেরিন বাগানের আমগাছটার সামনে দারিয়ে আছে । তখন নীড় এসে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো ।
নীড় : ছোটোবেলার কতো স্মৃতি জরিয়ে আছে । তাইনা ?
মেরিন : হামম।
নীড় : আবার ছোট হতে পারতাম … তুমি হতে চাওনা ?
মেরিন : না… আমার ছোটোবেলা আপনার মতো মিষ্টি মধুরনা … পুরোটাই তেতো…
নীড় : সবটাই কি তেতো ছিলো ???
মেরিন : জানিনা …
নীড় : মেরিন… ১টা কথা বলি… সত্যি বলছি নী…
মেরিন : নীরার সাথে আপনি romance করেননি… তাইতো ?
নীড় : তুমি রাগ করে এ কথা বলছো… কিন্তু সত্যিই কিন্তু। আসলে কালকে আমি তোমাকে অনেক মিস করছিলাম। তাই তোমার পছন্দের কিছু করে নিজেকে মশগুল করতে চেয়েছিলাম। একটু drinks ও করেছিলাম। জ্ব…
মেরিন : আপনার কোনোকিছু explain করার দরকার নেই নীড়… i know …
নীড় : what ?
মেরিন : এটাই যে আমার নীড় কেমন ?
নীড় : …
মেরিন : নীড় মেরিনকে ঘৃণা করলেও অন্যকাউকে ভালোবাসেনা… তাকায়ওনা কারো দিকে… আর তাকাবে নাওও…
নীড় : এতো অঘাট বিশ্বাস?
মেরিন : হামম।
নীড় : তো বেড জালালে কেন?
মেরিন : কারন নীরা ছিলো তাই…
নীড় : তাহলে রেগে আছো কেন?
মেরিন : রাগবোনা? আপনি drinks করেছেন… নিজের খেয়ালও রাখেন নি। জ্বর বাধিয়েছেন …
নীড় মুচকি হেসে মেরিনের কাধে কিস করলো।
মেরিন : এটা কি ছিলো?
নীড় : beginning of romance … 😁😁😁…
মেরিন : 😒😒😒।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন : আরে পাগল হলেন নাকি? নামান। অসুস্থ হয়ে সিনেমার হিরো সাজার দরকার নেই।
নীড় : shut up….
.
কিছুদিনপর…
ভালোই কাটছে নীড় মেরিনের দিনকাল। ভালোবাসাময় । লন্ডন থেকে কবিরের ডক্টর মেরিনকে ফোন করলো।
মেরিন : yes doctor … বাবা ভালো আছে?
ডক্টর : হ্যা অনেকটা better … একেবারে সুস্থ হতে পারে। যদি….
মেরিন : যদি…?
.
চলবে …
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 16
writer : Mohona
.
মেরিন : যদি…?
ডক্টর : যদি কবির স্যার মিসেস কনিকার কিছু মুহুর্ত তার সামনে তুলে ধরা হয়।
মেরিন : যেমন?
ডক্টর : যেমন তাদের ছবি বা ভিডিও।like বিয়ের ছবি, ভিডিও । বা অন্যান্য ছবি … সেই সাথে তাদের ভালোবাসার কোনো স্মৃতি ।
মেরিন : ok… পেয়ে যাবেন। কিভাবে তা উপস্থাপন করবেন সেটা আপনার ব্যাপার।
ডক্টর : yes of course …
মেরিন : thank u…
ডক্টর ফোন রেখে দিলো ।
মেরিন জনকে ফোন করলো ।
মেরিন : জন..
জন : hello mam…
মেরিন : ২-১দিনের জন্য যে করেই হোক পুরো খান বাড়ি খালি করো। এরপর বাবা আর মিসেস খানের যতো ছবি যতো স্মৃতি আছে সব collect করো। then ওগুলো নিয়ে তুমি লন্ডন যাও । দাদুভাই বা ডক্টরের কাছে handover করো। যতো তারাতারি সম্ভব ।
জন : sure mam…
.
মেরিন জনের সাথে কথা বলে factory sight এ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। গত ৪-৫দিনের মতো আজও মাথাটা ঘুরছে। ৪-৫দিন ধরে শরীরটা মোটেও ভালো যাচ্ছেনা মেরিনের। নীড়কে বুঝতে দেয়না। infact কাউকেইনা । যাই হোক মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলো । নীড় এসে ধরে ফেলল।
নীড় : ঠিক আছো তো ?
মেরিন : হামম।
নীড় : চলো চলো বাসায় চলো।
মেরিন : বাসায় এখন ? পাগল নাকি? সব কাজ পরে আছে।
নীড় : থাকুক। চলো।
মেরিন : না না যেতে পারবোনা এখন। অঅনেক কাজ পরে আছে ।
নীড় কোনো কথা না বলে মেরিনকে কাধে তুলে নিয়ে হাটা ধরলো।
মেরিন : নীড় … নামান..
নীড় মেরিনের কথা কানেই তুলল না। বাসায় চলে গেলো ।
পরদিনই জন মেরিনের কথা মতো কাজ করলো। খান বাড়ি ২দিনের জন্য ছলে বলে কৌশলে খালি করিয়ে কবির-কনিকার সব ছবি সব স্মৃতি কালেক্ট করে লন্ডনে পারি জমালো ।
.
৩দিনপর…
মেরিনের শরীরটা আরো খারাপ লাগছে। চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে বসে আছে। নীড় মেরিনের মাথায় হাত রাখলো ।
মেরিন :চলে এসেছেন?
মেরিন চোখ মেলল।
মেরিন : যান গিয়ে fresh হয়ে নিন… আমি আপনার জন্য কফি নিয়ে আসছি…
নীড় মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : কি হয়েছে তোমার বলো তো? কেমন লাগে?
মেরিন : আমার কি হবে? ঠিক আছি আমি…
নীড় : হয়তো তোমার মতো জানার বা বোঝার ক্ষমতা আমার নেই । কিন্তু এতোটুকু বুঝি যে তোমার শরীরটা ভালো নেই … কেমন লাগছে সেটা বলবে? ডক্টরের কাছেও যাচ্ছোনা… বলোনা … কি হয়েছে? কেমন লাগছে…?
মেরিন : ম…
তখনই কনিকার কন্ঠ পাওয়া গেলো ।
কনিকা : মেরিন … মেরিন … মেরিন ….
মেরিন এলো ।
মেরিন : মিসেস খান… আমি বুঝিনা আপনি আজকাল এতো গলা ফাটান কেন ? ভোটে দারাবেন নাকি?
মেরিন সামনে আসতেই কনিকা ঠাস করে থাপ্পর মারলো । মেরিনও আর দেরি না করে কনিকার দিকে ঘুরে ওর গলা চেপে ধরে ১হাত উচু করে ফেলল।
মেরিন : আমার গায়ে হাত… এতো বড় সাহস… 😤
নীড় এসে কনিকাকে ছারালো।
নীড় : পাগল হলে তুমি মেরিন…
কনিকা : খুনীর কাজই তো খুন করা। তোর সাহস কিভাবে হয় আমার বাড়ি থেকে…
মেরিন : correction please … খান বাড়ি আমার বাড়ি…
কনিকা : হতে পারি বাড়িটা তোর…. কিন্তু যেই জিনিষগুলো গায়েব করেছিস সেগুলো একান্তই আমার…
মেরিন : not at all… ওগুলো আমার বাবার…
কনিকা : খবরদার… খবরদার কবির কে বাবা বলবিনা। কোন মুখে বাবা বলে ডাকিস? যে বাবা কে খুন করেছিস তাকে বাবা ডাকতে লজ্জা করেনা?
মেরিন : না… আমি আমার বাবাকে বাবা ডেকেছি। অন্যকারো বাবাকে না…
কনিকা : কবিরকে আরেকবার বাবা ডাকলে… আমি তোর জিভ কেটে কুকুরকে খাওয়াবো…
মেরিন : তাই বুঝি? বাবা বাবা কবির বাবা…
কনিকা রেগে গিয়ে পাশে থাকা flower vaseটা আছাড় মেরে ভেঙে ১টা টুকরা তুলে মেরিনের গলা বরাবর ছুরে মারলো। গলগল করে রক্ত ঝরতে লাগলো ।
নীড় : মেরিন…
নীলিমা : ভাবি তুমি কি মানুষ?
কনিকা : মানুষ বলেই আজও ওর মতো মেয়েকে বাচিয়ে রেখেছি…
মেরিন : কিন্তু তুমি আর বাচবেনা মিসেস খান… আজই তোমার শেষ দিন… এই টুকরা দিয়েই আমি তোমার জান কেরে নিবো…
বলেই মেরিন কনিকার দিকে তেরে যেতে নিলো। কিন্তু নীড় ধরে ফেলল।
নীড় : শান্ত হও মেরিন… প্লিজ…
মেরিন : না নীড় আজকে আমি একে মেরেই ফেলবো একেবারে…
বেশ অনেকদিনপর মেরিন আবার হিংস্র হয়ে উঠেছে। নীড়ের পক্ষেএ মেরিনকে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।
নীড় : মামিমনি প্লিজ তুমি যাও…
কনিকা : না… যাবোনা.. আজকে যা হবার হয়েই যাক… সকল ঘৃণার অবসান ঘটুক…
নীড় : মামিমনি প্লিজ।
কনিকা ১চুলও নরলো না।
নীড় : মামনি মামিমনিকে যে করেই হোক এখানে সরাও।
নীলিমা ঠেলে ঠেলে কনিকাকে বের করতে লাগলো ।
মেরিন : এই কনিকা খান এই… যাওয়ার আগে শুনে যা… তোর মৃত্যু আমার হাতেই হবে। জানে মেরে ফেলবো তোকে আমি… একেবারে জানে মেরে ফেলবো… দারা তুই…
কনিকা চলে গেলো।
মেরিন ছুটতে না পেরে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নীড়ের হাতে কামড় দিলো । নীড় কোনো শব্দ করলোনা। মেরিনকে ছারলোও না। মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো।
.
কিছুক্ষনপর…
মেরিন ঘুমিয়ে আছে। নীড় মেরিনের পাশে আধাশোয়া হয়ে বসে আছে কপালে হাত দিয়ে।
নিহাল : নীড়…
নীড় : আরে বাবা তুমি… কখন এলে?
নিহাল : এই তো একটু আগেই… মামনি এখন কেমন আছে?
নীড় : এখন তো ভালোই আছে। জানিনা জ্ঞান ফিরলে কেমন react করবে…
নিহাল : চিন্তা করোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে।
নীড় : ঠিক হয়ে যাবে? কতো কষ্টে একটু একটু করে ওকে নরমাল করছিলাম … আজকে মামিমনি এসে আবার সব spoil করে দিলো । মেরিন আবার হিংস্র রুপ নিলো…
নিহাল : ভালোবাসার থেকে বড় কিছু নেই নীড় …
বলেই নিহাল চলে গেলো ।
.
খান বাড়িতে …
কনিকার ঘুম আসছেনা । ১টা মা যতো খারাপই হোক , সন্তানকে মারুক কাটুক যাই করুকনা কেন সন্তানের জন্য তার হৃদয়ও কাদে । কিন্তু যখন ঘৃণাটা ভালোবাসার ওপর ভারি হয় তখন সত্যি কিছু করার থাকেনা । কনিকা দেখলো পানির জগটা খালি । তাই পানি ভরার জন্য কিচেনের দিকে পা বারালো । তখন শুনতে পেলো …
সেতু : কাহিনি কী বলো তো… মেরিন ১মে ওই খান হারামজাদাকে গায়েব করলো। আর এখন এগুলো? কারন কি ?
মনির : কারন তো আছে। গভীর কারন … কারন, কারন ছারা মেরিন কোনো কাজ করেনা …
সেতু : কবির ফিরে আসেনি তো?
মনির : আরে ধ্যাত…কবির কোথায় থেকে ফিরে আসবে? ও কি বেচে আছে নাকি?
সেতু : থাকবেনা কেন ? ও কে তো আর আমরা মারিনি…ও তো আমাদের হাত ছারা হয়ে গিয়েছিলো ।
মনির : হ্যা তো? ভুলে যেওনা কবির তখন বদ্ধ পাগল ছিলো … হয়তো পথে ঘাটে ঢিল খেয়ে মরেছে …
সেতু : হামম। তবে মানতে হবে নসীব মেরিনের… নিজের বাপকে খুন না করেও খুনী হলো … আর কিসমতও ওই লোকটার যাকে কবিরের চেহারা পাওয়ায় তোমার হাতে মরতে হলো।
মনির :আ আ sweetheart… কবিরের চেহারার জন্য না গাদ্দারির জন্য মরতে হয়েছে…
সেতু : কিন্তু এবার মেরিন কে মরতে হবে। কারন কোনোক্রমেই আর এই খান সম্রাজ্ঞ আমরা পাবোনা। না মেরিন বাচলে আর না মরলে… কিন্তু যদি ও বেচে থাকে তবে চৌধুরী সম্রাজ্ঞও হাত ছারা হয়ে যাবে ।
মনির :হ্যা ঠিক বলেছো … তবে নিলয়কে জানানো যাবেনা যে মেরিনকে এবার শেষ করতে হবে…
কনিকার হাত থেকে জগটা পরে গেলো….
সেতু-মনির জানালার দিকে তাকালো । দেখলো কনিকা দারিয়ে আছে ।
সেতু : সব শুনে ফেলেছে…
কনিকা কোনো কথা না বলে নিজের রুমে গিয়ে নিজের গান টা লোড করলো।
মনির : খুন করবে আমাদের শালিকা?
কনিকা : হ্যা… জানে মেরে দিবো তোদের ২জনকে। তোরা আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছিস … কবিরকেও কেরে নিয়েছিস… তোদেরকে…
বলেই কনিকা ওদের shoot করতে নিলো। তখন নিলয় বাইরে থেকে কনিকার গান বরাবর shoot করলো । এতে কনিকার হাত থেকে গান পরে গেলো । সেতুরা ৪জন মিলে কনিকাকে বন্দী করে ফেলল ।
সেতু : কালকে সকালে একে ডেরায় রেখে আসতে হবে…
.
সকালে…
নীড় ঘুমিয়ে আছে । মেরিন উঠে বসলো । নীড়কে ১টা বার দেখলো। নীড়ের হাতের দিকে তাকালো । কালকে ওই হাতটা তে কামড় দিয়েছিলো। দাগ পরে গেছে। মেরিন ওখানে অসংখ্য চুমু দিলো। এরপর হাতে মলম লাগিয়ে fresh হয় গান নিয়ে বের হলো। খান বাড়িতে পৌছালো । কনিকাকে মারতে। সেতু আবার দেখে নিলো মেরিন কে।
সেতু ছুটে ভেতরে গেলো ।
সেতু : মেরিন এসেছে মেরিন… হাতে বন্দুক… ও মনে হয় জেনে গেছে যে আমরা কনিকাকে বন্দী করেছি…
মনির : আরে ধুর ও কিভাবে জানবে ? যাই হোক আগে কনিকাকে লুকাতে হবে। মা-মেয়ের মিল হলে আমাদের বাচা মুশকিল ।
নিলয় : আমি খালামনিকে নিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে চলে যাচ্ছি …
মেরিন : মিসেস খান… মিসেস খান …. মিসেস খান … কোথায়… সামনে আসুন। নিজের পাওনা টা নিয়ে গ্রহন করুন । কোথায় আপনি?
সেতু : একি তুই এ বাড়িতে ?
মেরিন : আমার বাড়ি আমার ঘর আমি যখন ইচ্ছা আসতে পারি । তোর বাপের কি? এখন বল তোর বোন কনিকা কোথায় ?
সেতু : জানিনা …
মেরিন কোন কিছু না বলে খুজতে লাগলো কনিকাকে । কোথাও খুজে পেলোনা । না পেয়ে চলে গেলো ।
নীড় : কোথায় গিয়েছিলে তুমি?
মেরিন : যেখানে ইচ্ছা ।
নীড় : তুমি মামিমনির সাথে কিছু করোনি তো ?
মেরিন : জানিনা…
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো।
নীড় : কি করবো তোমাকে নিয়ে মেরিন আমি? কিছুই জানিনা…
.
নীড় মেরিনের জন্য খাবার নিয়ে গেলো।
নীড় : নাও খেয়ে নাও…
মেরিন : এগুলো কি?
নীড় : খাবার…
মেরিন : না না আমি খাবোনা। বিশ্রি গন্ধ আসতেছে…
নীড় : গন্ধ মানে? জন্ডিস হলো নাকি ? চলো ডক্টরের কাছে চলো ।
মেরিন : মোটেও না । আমার এমন কিছু হয়নি যে ডক্টরের কাছে যেতে হবে । দিন গিলছি …
বলেই মেরিন নীড়ের হাত থেকে খাবার নিয়ে নাক বন্ধ করে খেতে লাগলো … নীড় মেরিনের কাহিনি দেখছে । আর হাসছে।
মেরিন : হাসছেন কেন ?
নীড় : আগে তোমার ওপর রাগ হতো। এখন হাসি আসে…
মেরিন : huh… তারাতারি খেয়ে রেডি হয়ে নিন । then office যাবো ।
নীড় : তুমি কোথাও যাবেনা । বুঝেছো …?
মেরিন : যাবো …
.
বিকালে …
নীড় : ১টা বার মামিমনির সাথে দেখা করার দরকার… আজই ১বার গিয়ে মামিমনির সাথে দেখা করে আসতে হবে । মেরিনকে বাসায় পৌছে দিয়ে ১বার ওই বাসা থেকে ঘুরে আসবো …
নীড় মেরিনকে বাসায় পৌছে দিয়ে খান বাড়িতে গেলো ।
নীড় : মামিমনি… মামিমনি… ও মামিমনি কোথায় তুমি?
নীরা : নীড়… 😃…
নীরা দৌড়ে নীড়কে জরিয়ে ধরতে গেলো। নীড় বাধা দিলো ।
নীড় : don’t you dare to do this …
নীরা : কি হলো? তুমি আমার সাথে এমন ব্যাবহার করছো কেন ?
নীড় : তো কি করবো ? তুমি সেদিন যা করেছো …
নীরা : আমি করেছি ? আমি কি করেছি ? করলে তুমি আর দোষ দিলে আমার … তোমার জ্বর দেখে রাত ভর তোমার সেবা করলাম। জ্ঞান ফিরলো পরে নিজেই মাতাল অবস্থাতে আমাকে টেনে বুকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পরলে … সেটা কি আমার দোষ ? এটাইকি আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতিদান …
বলেই নীরা ন্যাকা কান্না কাদতে লাগলো।
সেতু : কাদিসনা রে মা … বড়লোকেরা এমনই হয়। তাই বলেছিলাম যে বড়লোকদের ভালোবাসিসনা ।
নীড় : আচ্ছা মামিমনি কোথায় ?
সেতু : বাসায় নেই।
নীড় : কোথায় গিয়েছে ?
সেতু : বলতে পারিনা …
নীড় : ওহ… মেরিন এসেছিলো …?
সেতু ভয় পাওয়ার অভিনয় করে
বলল : নননা …
নীরা : কিন্তু মামনি মেরিন না স..
সেতু মিথ্যা চোখ রাঙানি দিলো । নীরা থেমে গেলো ।
নীড় : কি বলছিলে নীরা ?
নীরা : কিছুনা…
নীড় : তুমি কিছু ১টা বলছিলে…
সেতু : যা বলছিলো বলছিলো … এখন কিছু বললে তোমার বউ আবার কিছু না কিছু করবে…
নীড় চলে গেলো।
.
২দিনপর…
২দিনধরে নীড় কনিকাকে খোজার চেষ্টা করলো। পেলোনা ।
নীড় : কোথায় গেলো মামিমনি? মেরিন …
মেরিন বসে আছে…
নীড় : মেরিন…
মেরিন : হামম।
নীড় মেরিনের পাশে বসলো। মেরিনের হাত ২টা নিজের হাতের মুঠোয় নিলো। কিস করলো হাতে।
নীড় : ১টা কথা জিজ্ঞেস করি?
মেরিন : এতো মিষ্টি ভাবে চাইলে তো জীবনটাও দিতে পারি… আর এটাতো স্বাভাবিক প্রশ্নের উত্তর। করুন…
নীড় : মামিমনি কোথায়?
মেরিন : সেটাই তো… কোথায় মিসেস খান? ৩দিন ধরে গান লোড করে রেখেছি… চালাতে পারছিনা। জনটাও ফিরছেনা। জন না থাকলে কোনো কাজই ওরা কেউ করতে পারেনা… সবগুলো অকর্মা…
নীড় : তাহলে তুমি জানোনা মামিমনি কোথায়?
মেরিন : না…
নীড় মেরিনের কপালে কিস করলো।
নীড় : take rest…
নীড় মনে মনে : মেরিনের চোখ সত্যি বলছে… মেরিন আমাকে মিথ্যা বলতে পারেনা। অন্তত ওর চোখ নয়… যে যাই বলুক মেরিন কিছু করেনি এবার। আমি জানি… কিন্তু মামিমনি গেলো কোথায়?
মেরিন মনে মনে : গেলো কোথায় মিসেস খান ? আহ মাথা… আচ্ছা আমার এমন লাগছে কেন ? ১বার ডক্টরকে দেখাই… কিন্তু কাউকে কিছু জানাবোনা…
.
পরদিন…
মেরিন ডক্টরের কাছে গেলো…
ডক্টর মিলা : আরে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী আমার কাছে। কি সৌভাগ্য আমার।
মেরিন : strange … যেখানে মেরিন বন্যার সাথে দেখা হওয়া সবাই দুর্ভাগ্য মনে করে সেখানে আপনি সৌভাগ্য বলছেন?
মিলা : কারন আমি আপনার fan…
মেরিন : হাহাহা…
মিলা : তো ম্যাম কি হয়েছে?
মেরিন সবটা বলল। মিলা check up করলো।
মেরিন : কি হয়েছে ডক্টর ? মরে টরে যাবো নাকি ?
মিলা : not at all.. মনে হচ্ছে খুশির খবর।
মেরিন : মানে? clearly বলুন…
মিলা : may be u r pregnant …
মেরিন : কি ?
মিলা : তবুও ১বার সব টেস্ট করিয়ে নিলে ভালো হবে। sure হওয়া যাবে… এই টেস্টগুলো করিয়ে নিবেন ।
মেরিন : ok…
মেরিন টেস্ট করালো ।
মেরিন : আমার মনে হয়না যে আমার ভাগ্য এতো ভালো… মনে হয়না যে আমি pregnant … মনে হয় আমার কোনো বড় সরো রোগ হয়েছে। খুব তারাতারিই মরে টরে যাবো… ভালোই হবে … কিন্তু তার আগে বাবাকে সুস্থ হতে দেখতে পারতাম… আর ওই ৪জনকে মেরে ফেলতে পারতাম…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 17
writer : Mohona
.
মেরিন : ৪জনকে মেরে ফেলতে পারতাম… ধ্যাত… যাই অফিসে যাই…
মেরিন অফিসে গেলো।
নীড় : কি হলো অফিসে কেন তুমি?
মেরিন : আমার অফিস আমার ইচ্ছা । huh…
নীড় : পাগলি… আসো বসো…
মেরিন : আপনি না বললেও বসবো । দেখি সরেন।
নীড় : always atom bomb হয়ে থাকাটা কি জরুরী?
মেরিন : হ্যা… 📢
নীড় : আমার কান…
জন : may i come in???
নীড় : come…
জন : হ্যালো স্যার … হ্যালো ম্যাম…
মেরিন : আপনি কেন এলেন স্যার ? আপনি ওখানেই settle হয়ে যেতেন…
জন : ম্যাম আপনিই তো…
মেরিন : কি আমিই তো…
নীড় ইশারা দিয়ে বলল চুপ থাকতে।
জন : sorry mam…
মেরিন : যাও গিয়ে কাজ করো। out…
জন : sure mam..
মেরিন : দারাও।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : তুমি এখন তোমার বাসায় যাও…
জন : কেন?
মেরিন : নিজের বাসায় মানুষ কেন যায়? relax করতে তো… তাইনা?
জন : জজজী ম্যাম…
মেরিন : তো যাও… আজকে আরাম করো।
জন : no mam… not needed…
মেরিন : আমি বলেছিনা…
জন : ok mam …
জন বাধ্য হয়ে চলে গেলো।
.
নীড় : ভালো কথাটাও কি খারাপভাবে বলা জরুরী?
মেরিন : 😒।
নীড় : অনেকক্ষন তো হলো। এখন বাসায় যাও। শরীরটা তো ভালোনা…
মেরিন : কেন আমার কি ক্যান্সার হয়েছে না এইডস হয়েছে ?
নীড় : ওরে বইন তুই থাক অফিসে। বাসায়ও যেতে হবেনা। 😤।
মেরিন মনে মনে : কে জানে আমার কি হয়েছে? আমি মরে গেলে নীড়কে কিভাবে ভালোবাসবো…
নীড় মনে মনে : সবই তো ঠিক আছে। কিন্তু মামিমনি চিন্তায় ফেলে দিলো । কি যে করি? বুঝতে পারছিনা… কোথায় গেলো মামিমনি??? কিছু বুঝতে পারছিনা… damn it…
কাজ করতে করতে tired হয়ে মেরিন ঘুমিয়ে পরেছে। নীড় তাকিয়ে দেখে মেরিন ঘুম । নীড় মুচকি হাসলো। নীড় কোলে করে গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে গেলো। মেরিনকে শুইয়ে দিলো। নিচে নামলো।
নীলিমা : নীড়…
নীড় : হ্যা মামনি…
নীলিমা : ভাবিকে নাকি পাওয়া যাচ্ছেনা ?
নীড় : হ্যা মামনি… মামিমনিকে কোথাও পাচ্ছিনা… কোথায় যে গেলো…
নীলিমা : বন্যা কিছু…
নীড় : না মামনি মেরিন কিছু করেনি। অযথা মেরিনের ঘাড়ে দোষ দিওনা …
নীলিমা : আরে আমি দোষ দিচ্ছিনা। বন্যার রাগ তো আমরা সবাই জানি।
নীড় : কাজ আছে অফিসে গেলাম।
.
গাড়িতে…
নীড়ের ফোন বাজলো। দেখলো সেতু করেছে। নীড় ধরলো না । সেতু লাগাদার দিতেই লাগলো। বাধ্য হয়েই নীড় ধরলো।
নীড় : হ্যালো আন্টি …
সেতু : দেখা করতে পারবে ?
নীড় : না আমি একটু busy আছি …
সেতু : তা তো থাকবেই… তোমার তো just মামিমনি… আমার তো বোন… খুব তো বলছিলে যে তোমার মেরিন কিছুই করেনি… দেখে যাও …
নীড় : আমার মেরিন কিছু করেনি তো করেনি… আর কোনো কথানা…
সেতু : যা দেখাতে চাইছি তা দেখে তো যাও…
নীড় : মেরিনের বিপক্ষে কোনো কিছুই দেখতে চাইনা…
সেতু : মেরিনের বিপক্ষে নাই বা দেখলে তোমার মামিমনির পক্ষে তো কিছু দেখবে? ১টা বার আসো প্লিজ…
নীড় : ok … আসছি।
নীড় গেলো।
.
নীড় : কি হয়েছে কি?
মনির : কিছুই বলবোনা just এই ভিডিওটা দেখো।
বলেই মনির ১টা ভিডিও প্লে করলো । যেখানে দেখা যাচ্ছে যে কনিকা হাত-পা বাধা আহত অবস্থায় বসে আছে ।
আর বলছে : ছেরে দে… মেরিন… ছেরে দে… মেরিন…
আসলে কনিকা বলছে : ছেরেদে… মেরিন তোদের কে ছারবেনা…
এটাকে edit করে ওরা এমন বানিয়েছে।
সেতু : দেখেছো তোমার “মেরিন” কি করেছে…?
নীড় : না মেরিন এসবের কিছুই জানেনা। আমাকে বলেছে…
সেতু : ও বলল আর তুমি বিশ্বাস করলে?
নীড় : হ্যা করলাম ।
মনির : ওকে কি বিশ্বাস করা যায় ?
নীড় : হ্যা যায়। কেন যাবেনা?
নীরা : ভালো লাগলো এটা দেখে যে তুমি মেরিনের সাথে সুখী আছো …
নীড় : হামম। অনেক সুখী আছি। কারন মেরিন আমাকে দুঃখের কোনো কারন দেয়নি…
সেতু : এতোদিন আমার মেয়ের সাথে প্রেম করে এখন হঠাৎ এতো ভালোবাসা?
নীড় : মেরিনের প্রতি নীড়ের ভালোবাসা হঠাৎ নয় অনেকদিনের। কেবল অভিমানের নিচে চাপা পরেছিলো। anyway আসছি।
সেতু : তুমি আরেকটাবার মেরিনকে জিজ্ঞেস করো।
নীড় : মেরিনের এক কথা ২বার বলার প্রয়োজন হয়না।
সেতু : তুমি ভালোবাসায় অন্ধ । কিন্তু আমরা না… কনা তো আমার বোন। তাই আমি বুঝি আমার মনটা কেমন ছটফট করছে। ১টাই তো কলিজার টুকরো বোন আমার। কষ্টই পেয়ে গেলো। যদি ১দিনের জন্যে মামিমনিকে ভালোবেসে থাকো তবে সেই ভালোবাসার দোহাই … তোমার মামিমনির স্নেহের দোহাই… তুমি কিছু করো…
নীড় : করছি… আমি লোক লাগিয়ে রেখেছি… ওরা যেখান থেকেই হোক মামিমনিকে খুজে বের করবে…
মনির : মেরিন বন্যা ওর নাম… ওর চাল বোঝা অসম্ভব… ও যদি লুকিয়ে রাখে তোমার কেন তোমার মতো ১০০জন হলেও খুজে পাবেনা।
নীড় : মেরিন আমাকে মিথ্যা বলতে পারেনা…
নীরা : যদি না পারে তবে ১টা বার narco test করাও…
নীড় : narco rest?
মনির : হ্যা narco test…
নীড় : কোনো দরকার নেই । মেরিনের মুখের কথাই আমার জন্য।
সেতু : কিন্তু আমার জন্য নয়। আমার বোনকে আমি চাই। যদি তুমি কিছু না করো তাহলে press conference করতে বাধ্য হবো। তখন বাচিও বউয়ের ইজ্জত…
নীড় : …
মনির : narco test করাও। সব সত্যি বলে দিবে ।
নীড় : ও কোন অপরাধী নয় যে হসপিটালে নিয়ে narco test করাবো।
মনির : হসপিটালে নেয়া সম্ভবও নয়। কারন ও মেরিন বন্যা । তাই বাসাতেই করতে হবে
। এই truth serum use করে।
নীড় : …
মনির bottle টা নীড়ের পকেটে ঢোকালো।
।
মনির : বউকে আবার দুনিয়ার সামনে মায়ের খুনী না বানাতে চাইলে করাও । যদি মেরিন না করে থাকে তাহলে তো আর কোনো ঝামেলাই নেই।
নীড় চলে গেলো ।
.
নীরা : কি মনে হয় নীড়কি ওই বিষটা মেরিনকে খাওয়াবে?
সেতু : খাওয়াবে খাওয়াবে… নীড় এখন মেরিনের প্রেমে পাগল… তাই খাওয়াবে ।
নীরা : আচ্ছা মেরিনের কিছু হয়ে গেলে আমরা ফাসবো না?
মনির : না… নীড় ফাসবে ।
নীরা : নীড় আমাদের কিছু করলে?
সেতু : আমরা কি আর প্রকাশ্য থাকবো? আড়ালে থাকবো ।
নীরা : নীড়ের কাছে কি আমাদের খুজে পাওয়া সম্ভব নয়?
মনির : তা হয় তো নয় । কিন্তু তখন মেরিনের চিন্তায় মগ্ন থাকবে। আর তাছারাও ও নীড় মেরিন না। যে বিষাদে থাকলেও প্রতিশোধ ভুলবে না …
সেতু : সবই ঠিক আছে । কিন্তু নিলয়… ও তো আবার মেরিনের পাগল প্রেমিক…
নীরা : না মামনি… নিলয় নীড়কেই দোষী মনে করবে…
.
ওদিকে…
অনেক ভাবনা চিন্তা করে নীড় বাসায় গেলো। কোনো decision নিতে পারেনি। রুমে ঢুকতেই মেরিন দৌড়ে এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো। এরপর মুখ তুলে নীড়ের সারামুখে ইচ্ছামতো ভালোবাসার পরশ দিয়ে আবার নীড়ের বুকে মুখ লুকালো।
মেরিন : i love u … love u love u love love u love love u…
নীড় মেরিনের মাথায় কিস করলো ।
মেরিন : যান fresh হয়ে নিন… আপনার জন্য ১টা surprise আছে।
নীড় মেরিনের কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে
বলল : কি?
মেরিন : উফফ surprise কি বলতে হয়? যান তো।
নীড় : যাচ্ছি বাবা যাচ্ছি…
নীড় fresh হয়ে এলো । এসে দেখে মেরিন খাবার নিয়ে বসে আছে।
মেরিন : আসুন আসুন আসুন…
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। এরপর মেরিনকে কোলে বসালো। প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখলো চিজি নান & ঝাল ফ্রাই । নীড় মুচকি হাসলো। কারন এটা নীড়ের favorite dish…
মেরিন : নিন হা করুন।
নীড় মুচকি হেসে নিজেও একটু নিয়ে মেরিনের মুখের সামনে তুলে ধরলো ।
নীড় : আগে তুমি…
গন্ধে মেরিনের গা গুলিয়ে আসছে। তাও মুখে নিলো ।
মেরিন : এখন আপনি খেয়ে নিন…
২জন মিলে মিশে খেতে লাগলো ।
মেরিন : জানেন আমার কি মনে হচ্ছে? আমার মনে হচ্ছে আমি মরে যাবো। আর তাই আপনার কাছ থেকে ভালোবাসা পাচ্ছি… শুনুন না… আমি মরে গেলে প্লিজ নীরাকে বিয়ে করবেন না । অন্য যাকে ইচ্ছা করবেন। তা না হলে আমি মরেও আত্মা হয়ে ঘুরে বেরাবো। যাই হোক আপনার ভালোবাসা সত্যি সুন্দর…
নীড় : আমার ভালোবাসা? আমি কবে ভালোবাসলাম? তোমার ভালোবাসা নেয়া থেকেই ফুরসত পাইনা… ভালোবাসার তো সুযোগই পাইনা…
মেরিন : কে বলেছে? এটাই আমার কাছে অনেক অনেক অনেক বেশি ।
নীড় : তাই ?
মেরিন : হামম। শুনুন…
নীড় : বলো…
মেরিন : আজকেও ভালোবাসবেন রোজকার মতো… actually রোজকার থেকে বেশি… 🙈🙊🙈🙊🙈🙊…
নীড় : আজকে আমার বউটার কি হয়েছে হামম?
মেরিন : কিছুনা। 😁।
মনে মনে : যদি কালকে রিপোর্টে উল্টা পাল্টা কিছু পাই । মরে যাওয়ার মতো… তাহলে তো আপনাকে মনের মতো ভালোবাসার সুযোগটাই পাবোনা। সেই শোকেই যদি heart attack করি। তারথেকে ভালো আপনার ভালোবাসা বুকে জরিয়ে মরবো…
.
পরদিন…
মেরিন রিপোর্ট আনতে গেলো । হাতে নিয়ে মেরিনের হাত কাপছে । না জানি কি দেখবে। সোজা মিলার কাছে নিয়ে গেলো ।
মেরিন : এই রিপোর্টগুলো দেখে বলো যে আমার কি বড় রোগ হয়েছে ? যতোবড় রোগই হোক আমাকেই বলো।
মিলা : কুল কুল।। let me see…
মিলা রিপোর্টগুলো দেখলো । দেখে মুচকি হাসলো ।
মেরিন : হাসছো কেন ?
মিলা : কারন মিষ্টি খাবো । তুমি মা হতে চলেছো।
মেরিন : ইশ মিথ্যা কথা …
মিলা : একদম সত্যি । এই দেখো। সবকটাতেই পজিটিভ । তুমি মা হতে চলেছো ।
মেরিন : সসসত্যি ?
মিলা : হামমম।
আনন্দে মেরিনের চোখে পানি চলে এলো । কোনোরকমে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে পাগলের মতে লাফাতে লাগলো খুশিতে …
মেরিন : yeah… আমি মা হতে চলেছি … thank u thank u আল্লাহ। আমি কথা দিলাম আমি অনেক ভালো আম্মু হবো। মিসেস খানের মতো বাজে আম্মু হবোনা … এখনই নীড়কে বলি … না না special ভাবে বলবো। আর বলবো যে আর নয় ঘৃণার খেলা । এখন থেকে ভালোবাসা আর ভালোবাসা।
.
ওদিকে…
নীড় : আমি মেরিনকে পুরো বিশ্বাস করি… ও যখন বলেছে ও জানেনা মামিমনি কোথায় তাহলে হয়তো সত্যিই বলছে। আজও তো মামিমনিকে খুজলাম পেলামনা…. আচ্ছা মেরিনতো নিজেই বলে যে ওকে ও নিজেই বোঝেনা … আমি তাহলে কিভাবে…
না নীড় যে তোকে এতো ভালোবাসে এতো বিশ্বাস করে তাকে আর ধোকা দিসনা।
নীড় সেই truth serum এর ছোট্ট বোতলটা পানিতে ছুরে ফেলতে নিলো । তখন কনিকার অবস্থাটা ওর মাথায় এলো । ছোটথেকে কনিকার সাথে কাটানো সেই স্নেহের মুহুর্ত গুলো কল্পনা করতে লাগলো । সেই সাথে মেরিনের অপমান হওয়ার কথা।
নীড় : মেরিনের রাগ উঠলে তো ও যাতা করতে পারে … আল্লাহ পথ দেখাও … ১দিকে ভালোবাসা আরেকদিকে স্নেহ…. কাকে বেছে নিবো … ১টা বার এই narco test করলে কেমন হয় ? আগে দেখি এর কোনো side effect আছে কিনা …
নীড় ইন্টারনেটে দেখতে লাগলো। দেখলো নেই …
নীড় : sorry বনপাখি … আমাকে করতে হবে এমন … তোর ওপর অবিশ্বাস করে নয় তোকে ভালোবেসে আমাকে এমনটা করতে হবেরে।
.
রাতে…
নীড় ice cream নিয়ে বাসায় ফিরলো।
মেরিন : নী…ড়… জান…
নীড় : কি ব্যাপার এতো happy যে?
মেরিন : হামম। শুনুন…
নীড় : শুনবো তবে fresh হয়ে এসে। ততোক্ষনে তুমি ice cream serve করোনা । i badly want to have this…
মেরিন : ok…
নীড় fresh হতে হতে মেরিন নিহাল-নীলিমাকে ice cream দিয়ে নিজেদের জন্যেও নিয়ে এলো। … নীড়ও বেরিয়ে এলো fresh হয়ে ।
মেরিন : জানেন আ…
নীড় : ১গ্লাস পানি দাওনা প্লিজ…
মেরিন : হামম।
মেরিন পানি ঢালতে ঢালতে নীড় মেরিনের ice cream এ poison টা মিশিয়ে দিলো।
মেরিন : এই নিন পানি। আচ্ছা আপনার চোখ এমন লাগছে কেন? মনে হচ্ছে কান্না করেছেন? কি হয়েছে?
নীড় : ইশ কান্না করবো কেন? আজকে তো আমি happy …
মেরিন : সত্যি? জানেন আজকে আমিও happy …
নীড় : এখন আসো ice cream খাবে… তোমার favorite flavor …
মেরিন : হামম। কিন্তু তার আগে…
নীড় :কোনো কথানা…
নীড় মেরিনকে বসিয়ে কাপা কাপা হাতে মেরিনকে ice cream খাওয়াতে লাগলো। পুরোটা শেষ করলো।
মেরিন : বাপরে আজকে এতো ভালোবাসা। যাই হো…
কথাটা complete করতে পারলোনা । মেরিনের গলা-বুক জ্বলতে লাগলো…
.
((( আচ্ছা আমার মনে হয় অনেকে মেরিনের মা হওয়া নিয়ে confusion … গল্পটা ভালোমতো পরলে বুঝে যাবেন… 😅😅😅…)))
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 18
writer : Mohona
.
মেরিনের গলা-বুক জ্বলতে লাগলো । নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে লাগলো।
মেরিন : নননীড় কককি খাওয়ালেন আমাকেহ… নননীড় আমার গলা বববুক জজজ্বলছে নীড়…
নীড় : কি?
মেরিন : আপনি আআআমাকে বববিষ খাওয়ালেন নীড়… নীড় আমি বাচতে চাই… নীড় আমাদের bbbabyকে বাচান…
নীড় : বেবি?
মেরিন : হ্যা বেবি… i am pregnant …
মেরিনের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো । আর নীড়ের সময় ওখানেই থেমে গেলো । ও স্থির হয়ে গেলো… ওর চোখ স্থির হয়ে গেলো। পাথর হয়ে গেলো নীড়…
মেরিন প্লিজ বাচান নীড়… কককথা দিচ্ছি… আহমি আহপনার জীবন থেকে অনেক দূরে চলে যাবোহ… ওহ নীড়…
নীড় : …
মেরিন : বাচাবেন না আমাদের…?
মেরিন কোনো রকমে … রুম থেকে বের হলো ।
মেরিন : বববাবাহ… বাবাহ
মেরিন নিচের দিকে যেতে লাগলো । সিরি দিয়ে পরে গেলো। শব্দ শুনে নিহাল-নীলিমা ছুটে এলো ।
.
নীলিমা : বন্যা …
নিহাল : মামনি…
মেরিন : আমি বাচতে চাই… আমার বাচ্চাটাকে বা…
আর বলতে পারলোনা । মেরিন জ্ঞান হারালো ।
নিহাল : মামনি… মামনি… নীড় কোথায়? নীড়… driver.. গাড়ি বের করো…
নিহাল দৌড় নীড়ের রুমে গেলো। দেখলো নীড় স্থির হয়ে দারিয়ে আছে । মুর্তির মতো ।
নিহাল : নীড় কি করেছো মামনির সাথে তুমি ?
নীড় : …
নিহাল : নীড়… কি বলছি তোমাকে… মামনিকে ডক্টরের কাছে নিতে হবে…
নীড় : …
নিহাল : নীড়…
নিহাল নীড়কে ঝাকাতে লাগলো। নীড়ের বোধ ফিরলো।
নীড় : হ্যা…
নিহাল : মামনিকে হসপিটালে নিতে হবে… ওর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পরছে…
নীড় : কককোথায় মেরিন…
নিহাল : নিচে…
নীড় দৌড়ে নিচে গেলো। দেখলো নীলিমাক কোলে পরে আছে মেরিন…
নীড় : মেরিন…
নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড় : মেরিন… এই মেরিন… ওঠো। মেরিন…
নীলিমা : হসপিটালে নিয়ে চল… already অনেক দেরি হয়ে গেছে… তারাতারি চল…
মেরিনকে হসপিটালে নেয়া হলো ।
.
হসপিটালে…
OT এর দরজায় হেলান দিয়ে বসে আছে । নিরবে চোখের পানি ফেলছে ।
নীড় মনে মনে : কি করে ফেললাম আবার আমি… কতোবড় পাপ করে ফেললাম… কি করে ফেললাম …
কিছুক্ষনপর তপু বের হলো।
নীড় : তততপু আমার মেরিন… আমার বাচ্চা …
তপু ঠাস করে নীড়কে থাপ্পর মারলো ।
তপু : তুমি ১টা অমানুষ… just অমানুষ। আবার এখন হায় মাতাম করছো … লজ্জা করছেনা…
জন : ডক্টর… ম্যাম কেমন আছে?
তপু : তোমার ম্যাম out of danger … but…
নিহাল : but ?
তপু : বাচ্চাটাকে বববাচাতে পারিনি… sorry …
নীলিমা : একি বলছো তপু??? বাচ্চাটা…
তপু : বাচাতে পারেনি …. & all credits goes to the নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ।
বলেই তপু চলে গেলো ।
জন : মিস্টার নীড়… hope যদি আপনাকে এই মুহুর্তে খুন করে ফেলতে পারতাম… ভালো লাগতো…
.
in london …
কবির এখন সম্পুর্ন সুস্থ । দাদুভাইকে চিনতে পেরেছে। বাবা ছেলের মধ্যে মেলোড্রামা হলো । দাদুভাই তো খুশিতে আটখানা হয়ে মেরিনকে ফোন করলো। কিন্তু মেরিন ধরবে কি করে? দাদুভাই জনকে ফোন করলো । জনও ধরলোনা । কারন মেরিনের খবর পেয়ে ও এমন হন্তদন্ত হয়ে হসপিটালে গিয়েছে যে মোবাইল নিতেই ভুলে গিয়েছে । পরে
কবির বলল : বাবা … চলো তবে গিয়ে surprise দেই …
দাদুভাই : কিন্তু দিদিভাইকে না জানিয়ে …
কবির : আমার মেয়েকে আমি চিনিতো। ও ঠিক খুশিই হবে…
দাদুভাই মনে মনে : তোমার মেয়ে আর সেই মেয়ে নেই কবির। পরিস্থিতি ওকে নষ্ট করে দিয়েছে ।
কবির : এই বাবা… কি হলো ?
দাদুভাই : বলছিলাম কি …
কবির : কোনো কিছুনা। আমি আমার মনি মা কে surprise দিবো..
london to Bangladesh flight ৭দিনের মধ্যে না থাকায় ওরা আসতে পারলোনা।
.
৩দিনপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলল। তাকিয়ে দেখে নিহাল-নীলিমা বসে আছে। নীড় নেই। নীড়ের মু়খ নেই মেরিনের সামনে আসার ।
তপু check up করছে ।
মেরিন চোখ বন্ধ করে
বলল : তপুদা…। আমার বেবিটা কি আছে ?
তপু :…
মেরিনের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো।
মেরিন : কিছু জিজ্ঞেস করেছি…
তপু কাপা কাপা কন্ঠে
বলল : নননা…
মেরিন : জন…
জন : জী ম্যাম …
মেরিন : সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে যাও… এখনই। আর সবাই মানে সবাই…
জন : জী ম্যাম…
জন সবাইকে নিয়ে বের হয়ে গেলো ।
মেরিন চোখ বন্ধ করে আছে ।
মেরিন মনে মনে : এখন না তো আছে কোনো পিছুটান আর না বেচে থাকার কারন … বাবাকে তো পেয়েই গিয়েছি .. কাউকে কিছু প্রমান দিবোনা … সবাইকে চেনা শেষ…
.
কিছুক্ষনপর…
মেরিনের চোখটা লেগে এসেছে । তখন বুঝতে পারলো যে কেউ পেছন থেকে এসে ওকে জরিয়ে ধরে ওর পাশে শুয়ে পরলো। শক্ত করে মেরিনকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। মেডিসিনের প্রভাব আর ঘুমের ঘোরের জন্য মেরিনের situation টা বুঝতে সময় লাগলো । আর যখন বুঝতে পারলো তখন যতো শক্তি আছে সবটা দিয়ে নীড়কে ়ধাক্কা মারলো। নীড় পরতে পরতে নিজেকে balance করে দারিয়ে গেলো। মাথা নিচু করে দারিয়ে রইলো।
মেরিন : এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে থেকে সরে যান …
নীড় : …
মেরিন : যান … যান … যান …
চিল্লাতে চিল্লাতে মেরিন ১টানে ক্যানোলা ট্যানোলা সব খুলে ফেলল।
নীড় : মের…
মেরিন : খবরদার… খবরদার আমার নাম নিবেন না … একদম না … চলে যান চোখের সামনে থেকে। just out…
নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে কান্নাই করে যাচ্ছে ।
মেরিন ট্রেটা হাতে নিয়ে
বলল : আপনি যাবেন না এটা ছুরে মারবো?
নীড় তবুও নরলোনা । মেরিন ওটা নীড়ের দিকে ছুরে মারলো। যেটা লেগে নীড়ের কপাল কেটে রক্ত বের হতে লাগলো । নীড় তাও বের হলোনা। দারিয়েই রইলো। শব্দ পেয়ে সবাই ভেতরে ছুটে এলো। নীড় দেখলো যে মেরিনের হাত থেকে রক্ত পরছে ।
নিহাল : কি হয়েছে?
নীড় মেরিনের দিকে এগোতে গেলে হাতের সামনে যা পেলো তা ছুরে মেরে হসপিটাল থেকেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলো । কেউই আটকাতে পারলোনা …
.
পরদিন…
সবাই সারাদিন মেরিনকে খুজেছে । কেউই পায়নি । জন সারাদিন মেরিনকে খুজে বাসায় গেলো ।
জন : কোথায় চলে গেলো ম্যাম …
মেরিন : i am here…
জন : ম্যাম আপনি?
মেরিন : কখন থেকে wait করছি জানো?
জন : ম্যাম আপনি ঠিক আছেন ?
মেরিন : কেন আমার কি হয়েছে ? whatever … শোনো … তোমার জন্য ১টা বড় সরো ধামাকাদার কাজ আছে।
জন : কি ম্যাম ?
মেরিন : মনির-সেতু-নীরা-নিলয়-কনিকা … এই ৫জনকে খুজে বের করতে হবে । পাতাল থেকে হলেও … ওদেরকে খুজতে হবে । at any cost …
জন : sure mam….
মেরিন : আগে ওদেরকে খুজে বের করো । তার পর আরেকটা কাজ। r u ready?
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : আমার ছারা কারো phone call নিবেনা … মনে থাকে যেন…
জন : yes mam…
মেরিন : bye…
.
৩দিনপর …
অন্ধকারে হাত-পা-মুখ বাধা অবস্থায় দারিয়ে আছে । নীড়-নিহাল-নীলিমা-কনিকা-নিলয়-নীরা-সেতু … চোখে কেবল অন্ধকার দেখছে সবাই । তখন সেই অন্ধকারে তেজী কন্ঠ ভেসে এলো ।
মেরিন : welcome my friends welcome …
তখন আলো জ্বলে উঠলো । ঝলমলে আলো … বিশাল ১ ঝারবাতি জ্বলে উঠলো । চারদিকে আলো আর আলো । খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো আলিসান হলরুম । কালো গোলাপ দিয়ে সাজানো । মেরিন নিজেও পরেছে কালো পোশাক। কালো eye shadow … dark red lipstick … কালো চুল গুলো খোলা । ভয়ংকর লাগছে । ওর চোখে হিংস্রতা । আজকে কেউ খুজেও মেরিনের চোখে ভালোবাসা পাবেনা । সবাই হিংস্রতা তো দেখছে কিন্তু নীড়… নীড় মেরিনের চোখে ধংব্স দেখতে পাচ্ছে ।
মেরিন : কেমন লাগলো এই আলোরমেলা ? সুন্দর না ? এমন আলোরমেলা আগে কখনো কেউ দেখোনি সেটা আমি জানি… মেরিনের এই কালকোটরি কতো আলোকিত… তাইনা? কারো চোখে ভয় কারো চোখে আতংক কারো চোখে ঘৃণা দেখে ভীষন ভালো লাগছে। i have a grand surprise gift for all of you…. সবাই জানতে চাওনা যে কি surprise gift ? surprise gift টা হলো মৃত্যু … দারুন gift … তাইনা ? …
.
ওদিকে…
দাদুভাই-কবির আর রকি দেশে ফিরলো। কবির তো মহাখুশী । কিন্তু দাদুভাইয়ের আত্মা তো কাপছে ।
কবির : বাবা আগে তাহলে নীলিমার বাসাতেই যাই তবে । নাকি আমাদের বাসায় যাবো? আমি কনাকে নিয়ে মেয়েকে দেখতে যাবো ।
দাদুভাই : তুমি যেটা বলো…
ওরা খান বাড়িতে গেলো । পুরো খান বাড়ি ফাকা ।
কবির : কাহিনি কি? এখানে দেখি কেউ নেই … সবাই কোথায় গেলো? সবাই ওই বাসায় যায় নিতো ?
দাদুভাইয়ের ধাক্কা লাগলো। পরে সবাই মিলে চৌধুরী বাড়িতে গেলো । সেখানেও কেউ নেই ।
কবির : সবাই পিকনিকে যায়নি তো?
দাদুভাই : আমার মনে হয় আমি জানি সবাই কোথায় ?
কবির : কোথায় ?
দাদুভাই : হয়তো সেখানে?
কবির : কোথায় সেটা বলবে তো?
দাদুভাই : চলো…
.
মেরিন : আজকে আমি আমার প্রিয় খেলা খেলবো … মৃত্যু খেলা… এতোদিন সবাইকে সহজ মৃত্যু দিয়েছি… আজকে দিবো আমার মনের মতো মৃত্যু… oh my dear dearling খালামনি… আমি জানি আমাকে বিষ খাওয়ানোর পেছনে তোর হাতটা বেশি। তুইই মিস্টার চৌধুরীর হাতে তুলে দিয়েছো । আর তোর জন্য আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি… এবার তোর পালা … তুই তোর ২সন্তানকে তরপে তরপে মরতে দেখবে । ওরা মৃত্যু চাইবে নিজেদের… আজকে তোর ছেলেমেয়ের রক্ত দিয়ে হোলী খেলবো । ওদের হৃদয় আজকে আমি ছিরে বের করবো। তবে তার আগে বলতে চাই যে আমার বাবা কবির ফয়সাল খান বেচে আছে। জন projector on করো।…
জন : yes mam…
জন অন করে দেখালো। সবাই তো মহাঅবাক।
মেরিন : বাবাকে তো দুরের কথা। সেদিন আমি কাউকেই খুন করিনি… করেছিলো মনির।।। আজকে মনিরকে পেলামনা। না জানি কোথায়… whatever … জন give me that…
বলেই জন ২টা electric stick নিয়ে এলো। মেরিন হাতে নিলো ।
মেরিন : এগুলো কতো ভোল্টের electric stick জানো? ২হাজার ভোল্টের… না না… shocked দিয়ে ওদের মারবোনা। just কয়েকসেকেন্ড সংস্পর্শে রাখবো …
বলেই মেরিন ২জনকে shock দিলো। ২-৩বার দিলো।
মেরিন : জন এগুলোর কাজ শেষ। নিয়ে যাও । আর ওইটা দাও।
জন : জী ম্যাম…
জন মেরিনকে লোহার গরম লাঠি মেরিনের হাতে দিলো। লোহার লাঠি ২টা লাল হয়ে আছে । মেরিন লোহার লাঠি দিয়ে নিলয়-নীরার ২হাতের তালু… আর ২পায়ের তালু ঝলসে দিলো । ২জন যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে জ্ঞান হারালো। সবাই সব দেখছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা। কারন সবার মুখে টেপ দেয়া।
মেরিন : জন… ওদের হাত-পা খুলে দাও… জ্ঞান ফিরাও… hurry up hurry up… কিয়ামত পর্যন্ত সময় নেই আমার কাছে…
জন : জী ম্যাম…
জন নিলয়-নীরার হাত-পায়ের বাধন খুলে দিলো। জ্ঞান ফিরানোর ব্যাবস্থা করালো । কিছুক্ষন পর ওদের জ্ঞান ফিরলো।
মেরিন : hi guys… কেমন ঘুম হলো? ভালো? সবাই কারবালা পরেছো ? শিমার ইমাম হোসেইন (র:)-এর বুকের ওপর বসে তাকে মেরেছিলো। তোরা ইমাম সাহেব না । আর না আমি শিমার । হয়তো আমি তার থেকেও নিষ্ঠুর… পাষাণ…
বলেই মেরিন নিলয় – নীরার বুকের ওপর ছুরি চালালো । এরপর ওই রক্ত ২হাতের মুঠোয় নিয়ে খেলতে লাগলো … আর হা হা করে হাসতে লাগলো । এরপর ২জনের heart বের করে ২হাতে নিয়ে সেতুর সামনে গেলো।
মেরিন : কেমন লাগছে বলোতো? দারুন না ?
সেতুর বুকটা ফেটে যাচ্ছে ।
মেরিন : খারাপ লাগছে বুঝি? আমারও লেগেছিলো । এতোবছরের জীবনে সেরা খুশী সেদিন পেয়েছিলাম… কিন্তু সেটাও তুই কেরে নিয়েছিস…
বলেই মেরিন ওগুলো ছুরে ফেলেদিলো ।
এরপর ছুরি নিয়ে লাগাতার সেতুর ওপর ছুরি চালাতে লাগলো । যতোক্ষন না সেতু মারা গেলো । সবাই মেরিনের হিংস্রতা ২চোখ ভরে দেখলো ।
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
.
মেরিন : ওরা তো গেলো। এখন আসল খুনীর পালা… সবথেকে নিকৃষ্ট খুনী … মিস্টার নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন … আপনাকে বলেছিলাম যে আপনার ৭খুন মাফ… আপনাকে বলেছিলাম আমাকে মেরে ফেলুন… trust me… সুখকর হতো। ভাগ্যবতী মনে করতাম নিজেকে… কিন্তু আপনি আমার …
সন্তানটা কি আমার একার ছিলো ? বলুন… বলেছিলাম যে আপনি সবসময় ভালোবাসার মেরিন থাকবেন… কিন্তু তা সম্ভব হলোনা… এতোদিন সবার জন্য ঘৃণা দেখেছেন। আজকে আপনার প্রতি ঘৃণা দেখবেন। নিজের হাতে আপনাকে খুন করবো। তবে তার আগে আপনি আপনার মা-বাবা আর অতিপ্রিয় মামিমনিকে আগে মরতে দেখবেন। সবার মৃত্যু দেখে নিজে মরবেন…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 19
writer : Mohona
.
মেরিন : সবার মৃত্যু দেখে মরবেন … আপনি ১বার নয় ২বার নয় বার বার আমার বিশ্বাস ভেঙেছেন । কককি দোষ করেছিলো আমার বাচ্চাটা … আমি তো বলেই ছিলাম যে চলে যাবো আপনাকে ছেরে … তবে কেন আবারও ছলনা করলেন? আমি এমনিতেও চলে যেতাম আমার বাচ্চাকে নিয়ে … অনেক দূরে … থাকতাম না আপনাদের ভীরে … বাবাকে পেয়েছি … বাবাকে এই কনিকা খানের কাছে ফেরত দিয়ে দাদুভাইকে আপনাদের সবার কাছে রেখে সত্যিই আমি বহুদূরে চলে যেতাম। সত্যি বলছি। কিন্তু সেটা করতে দিলেন না … ঘৃণার মেরিনের ঘৃণা এবার দেখবেন… ওদের থেকেও ভয়ংকরভাবে আপনাকে মারবো … just দেখতে থাকুন …
মেরিনকে বলার জন্য নীড়ের কাছে হাজারও কথা আছে । কিন্তু বলতে পারছেনা । কারন মুখ বন্ধ ।
মেরিন : জানেন নীড় সবার মতো আপনার মুখেও কেন টেপ দিয়েছি ? কারন আমি আর আপনার প্রতি দুর্বল হতে চাইনা আপনার ওপর … চোখ জোরাও বেধে দিতাম । কিন্তু চোখ বেধে দিলে এতো শত আয়োজন দেখবেন কি করে জা…ন । আপনি আমাকে অস্বীকার করেছেন মেনে নিয়েছি… আমাকে ঘৃণা করেছেন মেনে নিয়েছি … অন্যের হাত ধরেছেন মেনে নিয়েছি … অন্যের কথায় আমাকে সন্দেহ করেছেন মেনে নিয়েছি … নিজেকে ব্যাবহার করে আমার মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন সেটাও মেনে নিয়েছি… কিন্তু এবার সব লিমিট ক্রস করেছেন…
নীড় কেবল মেরিনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে । মেরিন ignore করে কনিকার দিকে গেলো ।
.
মেরিন : মিসেস খান …. “মা” … আপনাকে তো জাদুঘরে রাখা দরকার। মহান ন্যায়বিচারকারী মহিলা আপনি। salute to u… আপনি জজ কেন হলেন না বলুন তো ? পতিভক্তা স্ত্রী … স্বামিকে মেরে ফেলার জন্য নিজের ১১ বছরের সন্তানকে জেলে পাঠিয়ে দিলেন … কি ভালোবাসা … আরে এতোই যখন ভালোবাসা তখন নিজের স্বামি আর অন্য মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করতে পারেননি? ছিঃ… কেমন স্ত্রী আপনি? চেহারা দেখে ভালোবেসেছিলেন বাবাকে… আপনি কেবল মা নামের নয় … স্ত্রী নামেরও কলঙ্ক । আজকে যা যা হচ্ছে এই সব কিছুর জন্য আপনি আর আপনি দায়ী …
কনিকারও ক্ষমা চাওয়ার আছে। কিন্তু বলতে পারছেনা ।
মেরিন নীলিমার সামনে গেলো ।
মেরিন : বাংলায় প্রবাদ বলে ফুপু নাকি কুকুরের রুহু হয় … খালামনি নাকি মায়ের থেকে ভালো হয়…কিন্তু আমার বিপরীত … আমার ফুপু অনেক ভালো … ছোটবেলায় তোমার কাছে মায়ের থেকেও বেশি ভালোবাসা পেয়েছি । কিন্তু যখন… মায়ের স্নেহের হাত উঠে গেলো তুমিও মুখ ফিরিয়ে নিলে। যখন তোমার সবথেকে প্রয়োজন ছিলো তোমাকেও পাইনি। তবুও এই কদিন অনেক ভালোবাসা দিয়েছো।
নীলিমা : ….
মেরিন নিহালের সামনে গেলো ।
মেরিন : খুজেও তোমার কোন দোষ-ভুল পাইনি। নিজের মা কে মারতেও আমার হাত কাপবে না । কিন্তু তোমাকে মারতে আমার হাত কাপবে … তাই তোমাকে সবথেকে সহজ মৃত্যু দিবো । মারার ইচ্ছা নেই তোমায়। তবুও মারবো । কারন তুমি নীড়ের বাবা … আর আমি মেরিন বন্যা নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে ঘৃণা করি… i just & just hate নীড় … নীড় নামটাকে … নীড়ের চেহারাটাকে … নীড়ের পদবী টাকে… নীড়ের অস্তিত্বকে ঘৃণা করি…just ঘৃণা করি । যতোদিন বেচে থাকবো আপনাকে ঘৃণা করবো। আপনি আমার ভালোবাসার নীড় থেকে হলেন ঘৃণার নীড় …
জন… bring the guns….
.
জন ট্রলিতে করে গান নিয়ে এলো ।
মেরিন : these r my real dearling … কোনটা আগে use করা যায় ? লটারি করে নেই … কি দিয়ে লটারি করি? গান গেয়ে … জন … let me love you গানের let me hate version রিলিজ হয়েছে ? থাক এটাই নেই ।
মেরিন ১টা গান হাতে নিলো ।
মেরিন : গান তো হাতে নিলাম… কিন্তু কাকে আগে উরাবো মিস্টার চৌধুরী ? আপনার মা-বাবা না মামিমনি … কাকে ? বলুন না মিস্টার চৌধুরী …
জন : ম্যাম।let them go… ple…
মেরিন এমন ভাবে তাকালো যে জন চুপ হয়ে গেলো ।
মেরিন : জন … আপাদত তোমাকে মারার আমার নূন্যতম কোন ইচ্ছা নেই। so এখন এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে থেকে । right now… please …
জন : sorry mam…
মেরিন : get out please …
জন জানে কথা বারালে মেরিন ক্ষেপে যাবে। এর থেকে ভালো একটু আড়ালে দারিয়ে থাকুক। কারন জন জানে যে নীড়কে শেষ করে মেরিন নিজেকেও শেষ করে দিবে … আর জনের কাছে মেরিন ওর ছোটোবোন। তাই চায়না মেরিনের কোনো ক্ষতি হোক। জন কেবল মেরিনের চোখের আড়ালে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : জনটাও না পচা হয়ে গিয়েছে । whatever … let me finish … আগে মিসেস খান কেই মারি …
বলেই মেরিন কনিকার দিকে এগিয়ে গেলো ।
.
কবির আর দাদুভাই মেরিনের কাল-কোটরি তে এসে পৌছালো । ভেতরে ঢুকলো ।
কবির : বাবা… এখানে এতো অন্ধকার কেন ?
দাদুভাই : এখানে চোখ ঝলসানো আলো … আলো লাগলে কেবল দেয়ালে টাচ কর । তাহলেই দেখবে।
কবির দেয়ালে হাত রাখলো । আর আলো জ্বলে উঠলো। অনেক আলো । কিন্তু আলো দেখে কবিরের মনের ভয় যেন বেরে গেলো । কারন দেয়াল গুলো কালো । আর জায়গায় ঝুলে আছে গান …
কবির : এতো গান কেন ? এগুলোকি just decoration এর জন্য ?
দাদুভাই : না … জান নেয়ার জন্য …
কবির : মানে ?
দাদুভাই : চলতে থাকো । সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে …
২জন এগিয়ে যেতে লাগলো । দাদুভাই তো ধেই ধেই করে এগিয়ে যেতে লাগলো । কবির অবাক হয়ে দাদুভাইয়ের পিছু পিছু এগিয়ে যেতে লাগলো । যেতে যেতে বড় ধরনের জানালা পরলো । কবির কৌতহলের বশেই জানালার দিকে তাকালো । আর তাকিয়ে আতকে উঠলো । কারন কনিকা-নিহাল-নীলিমা-নীড় হাত পা মুখ বাধা অবস্থায় । নীড়কে চেনেনা। ৩জনের রক্তাত্ব লাশ পরে আছে । যা দেখে কবির আতকে উঠলো। তখন দেখলো ১টা মেয়ে গান নিয়ে কনিকার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । যার পেছন দিক দেখতে পেলো । আসলে ওটা মেরিন …
মেরিন গান লোড করতে নিলো … কবিরও আর দেরি না করে দেয়ালে ঝুলে থাকা গানগুলোর মধ্যে ১টা গান নিলো। দ্রুত লোড করলো । ওদিকে মেরিনও shoot করার জন্য হাত ওঠালো। কবির কনিকাকে বাচানোর জন্য মেরিনের হাত বরাবর নিশানা তাক করলো । কেবল ট্রিগার প্রেস করতে নিলো আর দাদুভাই এসে হাত ওপরে তুলে দিলো ।
দাদুভাই : কি করছিলি কি ? ও তোর মেয়ে মেরিন…
কবিরের হাত ওপরে তুলতে তুলতে কবিরের হাতে ট্রিগার চাপ লেগেও গেলো । আর
বুলেট গিয়ে লাগলো সেই বিশাল ঝুমুরের লোহার অংশে। যেটা সেখানে আঘাত খেয়ে গিয়ে পরলো মেরিনের মাথায়… মেরিনের আর shoot করা হলো না ।
জন : ম্যাম…
মেরিন পিছে ঘুরলো। মাথায় হাত দিয়ে ১৫-২০ ফুট দূরে থাকা জানালার দিকে তাকালো। দেখলো কবির আর দাদুভাই দারিয়ে আছে । কবিরের হাতে গান…
মেরিন যেন শত যন্ত্রনার মধ্যেও হাজার সুখ পেলো । মুখে হাসি নিয়ে
বলল : বাবাহ… আমার বাবাহ… বাবাহ …
মেরিন কবিরের দিকে হাত বারিয়ে কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে যেতে লাগলো ।
সবাই মেরিনের হাত বরাবর তাকালো । দেখলো কবির দারিয়ে আছে। মেরিন হাটতে হাটতে পরে গেলো …
কবির জানালার ভেতর দিয়েই ঢুকে দৌড়ে মেয়ের কাছে গেলো। দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে জরিয়ে ধরলো। নিজের কোলে মেরিনের মাথা নিলো।
কবির : বাবুই পাখিটা আমার …
কতোদিন পর বাবুইপাখিটা শুনলো মেরিন … চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। মুখে হাসি । বহু কষ্টে হাতটা তুলে কবিরের মুখ ছুয়ে দিলো ।
মেরিন : আমার বাবাহ .. বা..
আর বলতে পারলোনা … চোখ বন্ধ করে ফেলল ।
.
হসপিটালে …
দাদুভাই : জন …
জন : জী স্যার …
দাদুভাই : কি হয়েছিলো ?
জন : …
দাদুভাই : আমি জানতে চেয়েছি যে কি হয়েছিলো … 📢📢📢
জন সবটা বলল। সব শুনে দাদুভাই নীড়ের দিকে তাকালো ।
কবির : বাবা … এসব কি ?
তখন তপু বের হলো । তখন নীড় ছুটে ডক্টরের দিকে যেতে নিলে দাদুভাই নীড়ের সামনে লাঠি তুলে ধরে ওর পথ আটকে ধরলো ।
দাদুভাই : এই বাধা উপেক্ষা করে আগে বারার সাহস করোনা …. জানে মেরে দিবো …
নীড় : নানুভা…
দাদুভাই : খবরদার … খবরদার। আমাকে নানাভাই তুমি বলবেনা… জন… জন…
জন : জী স্যার…
দাদুভাই : এই আবর্জনাটাকে বাহিরে ফেলে আসো। এখনি…
জন : ….
দাদুভাই: কিছু বলেছি জন…
জন নীড়কে ধরতে গেলে নীড় ক্ষেপে গেলো।
নীড় : don’t u dare to… আমি এখানেই থাকবো। দেখি আমাকে কে সরায়…
জন : স্যার ভালোভাবে বলছি এখন থেকে চলুন… না হলে আমি জোর করতে বাধ্য হবো ।
নীড় : আমি যাবোনা।
জন টেনে হিচরে নীড়কে বের করে দিলো ।
জন : আপনার কপাল ভালো যে আপনাকে জানে মারিনি …
বলেই জন চলে গেলো ।
দাদুভাই : তপু … দিদিভাই কেমন আছে ?
তপু : খুব খারাপ… ৭২ঘন্টা observation এ রাখতে হবে ।দেখি কি হয়…
কবির : বুলেট তো directly ওর মাথায় লাগেনি। বেগ অনেক কমার পর ওর মাথায় লেগেছে …
তপু : সে কারনেই এখনও বেচে আছে । তা না হলে … brain stroke … বিষ প্রয়োগ বুলেট … এতোকিছুর পর ওকে আবার হসপিটালে আনার সময় হতো নাকি । spot এই মারা যেত ।
দাদুভাই : brain stroke মানে ?
তপু : brain stroke মানে brain stroke…
বলেই তপু চলে গেলো ।
দাদুভাই : জন …
জন : জী স্যার ম্যামের brain stroke ও হয়েছিলো …
কবির : কিছুই বুঝতে পারছিনা … আমার মেয়ের এই পরিনতি কেন ? … কনা … এসব কি?
দাদুভাই : তোর বউকে জিজ্ঞেস করছিস কেন ? আমাকে জিজ্ঞেস কর… মা তো মাই …. ও তো মানুষের কাতারেই পরেনা । আজকে তোকে সব বলবো আমি । শোন …
দাদুভাইও কবিরকে সব বলুক। ততোক্ষনে আমিও অতীতটা বলি।
.
[[[
অতীত …
১৩বছর আগে…
নীড়ের দাদুভাই মৃত্যু সয্যায়… মারা যাওয়ার আগে সে চায় নীড়-মেরিনের বি়য়ে দেখে যেতে । কারন নীড় তার একমাত্র নাতি। কিন্তু নীড় মেরিন ২জনই তো ছোট । মেরিনের ১১ আর নীড়ের ১৫ … তবুও শাহজাহান চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা পূরন করার জন্য নীড়-মেরিনের কাবিন পরানো হলো। তার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মারা গেলেন।
নীড়ের মনে বরাবরই মেরিনের জন্য ১টা soft corner আছে । teenage … ১ম ১ম ভালোবাসা । তার ওপর বিয়ে । নীড়ের মন উড়ুউড়ু… নীড় মেরিনকে ছোটবেলা থেকেই বনপাখি ডাকতো। মেরিনকে কারো সাথে খেলতে দিতোনা । আর নিজেও অন্যকারো সাথে খেলতোনা ।
মেরিনেরও ছেলেমানুষই মন। নীড়ের জন্য ও কোনো বন্ধু বানাতে পারেনা। কারো সাথে খেলতেও পারেনা। আরো ছোটোবেলা থেকেই নীড় মেরিনকে অন্যকারো সাথে খেলতে দেয়না । নীড়ই মেরিনের একমাত্র খেলার সাথী …
.
ওদিকে …
মনির কবিরদের অফিসেই চাকরী করে । ম্যানেজার । ১দিন কবির জানতে পারে যে মনির ১জন smuggler… মনির কবির factory তেই smuggling এর জিনিষপত্র লুকিয়ে রাখে । সেই সাথে মনিরে-সেতুর নজর খান সম্রাজ্ঞে । ওর খান সম্রাজ্ঞের মালিক হতে চায় । কবির এগুলো জেনেই অফিস থেকে সোজা চলে যায় সেতু-মনিরের বাসায় । যেটা ছিলো কবিরের সবথেকে বড় ভুল । সেখানে গিয়ে কবির আর মনিরের মাঝে অনেক তর্ক বিতর্ক হয় । কবির পুলিশকে ডাকতে চায় । তখন সেতু এসে কবিরের মাথায় বারি মারে । কবির অজ্ঞান হয়ে পরে যায় । কবিরকে বন্দী করে ফেলে । কবির না ফিরলে সবাই চিন্তা করবে ভেবে মনির কনিকাকে ফোন করে বলে যে কবির অফিসের কাজে দেশের বাইরে গিয়েছে । যে কারনে কেউ আর মাথা ঘামালোনা । সব সম্পত্তি দখল করা আর নিজের নামে করানোর জন্য মনির ১জন লোককে কবিরের চেহারা দিলো। তার নাম আরফান । আরফান ৭দিনপর কবির ফয়সাল খান সেজে খান বাড়িতে ঢুকলো।
.
৫-৭দিনপর …
নিলয়-নীরা-নীড়-মেরিন ৪জন মিলে লুকোচুরি খেলছে … মেরিন গিয়ে বাবার গাড়ির back sit এ গিয়ে লুকালো । মেরিন ঘুমিয়েই পরলো । আর যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন দেখলো যে গাড়িটা ১টা কেমন বদ্ধ factory type জায়গাতে …
মেরিন : এখানে কেন বাবার গাড়িটা … বাবা কোথাও এসেছে ?
তখন মেরিন হাসাহাসির শব্দ পেলো । মেরিন গাড়ির কাচ নামালো । ২টা কবির দেখতে পেলো । ১জন বাধা অবস্থায় ।
মেরিন : একি ২টা বাবা ??? মজার তো .. ছবির মতো । মনে হয় বাবা ম্যাজিক দেখানোর জন্যেই এখানে নিয়ে এসেছে । 😊😊😊
। দেখিতো কি হয়…
মেরিন বেশ interest নিয়ে দেখতে লাগলো । আর সেতু-মনির-আরফানের কথায় মেরিন বুঝতে পারলো যে বন্দী অবস্থায় আছে সেটাই ওর বাবা। আর যে মুক্ত সেটা ওর বাবা নয়। আর ওরা ৩জন মিলে ওর বাবাকে শেষ করে দিতে চায় …
.
((( মেরিন এখন মরবে না । আর সেতুর মৃত্যু আমার মনে হয়না সহজ হয়েছে । কারন মায়ের চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু হয়তো সবথেকে বড় কষ্টের । । )))
চলবে …
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 20
writer : Mohona
.
মেরিন ওদের কথাবার্তায় যেটা বুঝলো সেটা হলো এই যে ওরা ৩জন মিলে ওর বাবাকে মেরে ফেলতে চায় ।
মেরিন : ওরা আমার বাবাকে মেরে ফেলবে। আমি কি করবো ? আমি তো ছোটোমানুষ …
তখন দেখলো আরফান গাড়িতে উঠলো ।
মেরিন : নকল বাবা এখানে আসছে কেন ? আমি লুকিয়ে পরি …
মেরিন চুপ করে বসে রইলো যেন আরফান না দেখতে পারে । আরফান বাসায় গেলো । বাসায় পৌছাতেই মেরিন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে কনিকার কাছে গেলো । মেরিনকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে আরফান বেশ চমকে গেলো ।
.
মেরিন : আম্মু …. আম্মু …. ও আম্মু …
কনিকা : কি হয়েছে আমার ময়না বাচ্চাটার? আর কোথায় ছিলে ? নীড় ওরা কখন থেকে তোমায় খুজছিলো …
মেরিন : আম্মু জানো …
কনিকা : কি জানবো মামনপাখি ?
মেরিন : এই বাবাটা না আমার বাবানা। এটা নকল বাবা । আসল বাবাকে না এই নকল বাবা , খালামনি আর খালু আটকে রেখেছে ।
আরফান দরজার আড়াল থেকে সব শুনছে ।
আরফান : এই পিচ্চি তবে সব দেখে নিয়েছে? এখন কি হবে ?
কনিকা হাহা করে হাসতে লাগলো।
কনিকা : ওরে পাকুন্নি … এমন fantasy কিভাবে মাথায় এলো ? বুঝেছি বাবার সাথে দিনরাত cid দেখা হয় তো। তাই এগুলো মাথায় আসছে …. তাইনা ?
মেরিন : না না আম্মু … আমি সত্যি বলছি …
কনিকা : হামম বুঝলাম তো আপনি কেমন সত্যি বলছেন … হাহাহা…
আরফান হাফ ছেরে বাচলো ।
আরফান : কি হলো কনা ? এতো খুশি যে …?
কনিকা : দেখোনা কবির তোমার বাবুইপাখিকি বলছে ?
আরফান : কি বলছে ?
কনিকা : বলছে তুমি নাকি নকল বাবা । আর আসল বাবাকে নাকি তুমি আপু আর দুলাভাই মিলে আটকে রেখেছো। হাহাহা …
আরফান : হাহাহা … এখনও রাগ যায়নি ?
কনিকা : রাগ মানে?
আরফান : রাগ মানে সে আমার সাথে বাহিরে গিয়েছিলো । সেখানে দেখেছে কয়েকটা বাচ্চা কাদার মধ্যে লাফালাফি করছে । তো তিনিও করবে। করতে দেইনি বলে নকল বাবা নকল বাবার ধুম উঠেছে । হাহাহা … তাই না বাবুইপাখি…
মেরিন : তুমি আমার বাবা না …
বলেই মেরিন দৌড়ে চলে গেলো ।
আরফান : মামনি … মামনি… যাহ চলেই গেলো …
কনিকা : আসলে ১ম বার তোমার কাছ থেকে “না” কথাটা শুনলো তো তাই ক্ষেপে গিয়েছে।
আরফান : হামম সেটাই ।
কনিকা : এ কারনেই মাঝে মাঝে বাচ্চাদের শাসন করতে হয়।
আরফান : আমার মেয়ে কি বেয়াদব নাকি যে শাসন করতে হবে? 😏।
কনিকা ; হায়রে আমার মেয়ে ওয়ালারে ….
.
আরফান মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে মেরিনকে ভোলাতে চাইলো । কিন্তু পারলোনা । মনির-সেতু ওরাও চেষ্টা করলো । কিন্তু পারলো না। মেরিন ওদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে লাগলো । যে কারনে কনিকা বকতো মেরিনকে । ১দিন তো মেরিনকে থাপ্পরও দিলো। যার জন্য মেরিন মায়ের ওপরও রাগ করলো। ওর মনে হতে লাগলো আম্মুও নকল আম্মু … ও নিহাল-নীলিমাকেও নকল বাবা আর আম্মুর কথা বলল। প্রথমে নকল বাবা পরে নকল আম্মুর কথা শুনে কেউ ওর কথা বিশ্বাসই করলোনা । নিহাল যাও নকল বাবার কথায় গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলো পরে নকল আম্মু শুনে আর গুরুত্ব দিলোনা । মেরিনের কথা কেউ বিশ্বাস না করাতে মেরিন সবার সাথেই রাগারাগি করতে লাগলো । উগ্র হতে লাগলো ওর ব্যাবহার । তাই ঠিক করলো যে মেরিনের মনটা ভালো করার জন্য হাওয়াবদল করবে । সবাই মিলে কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার যাওয়ার plan করলো। ঠিক করলো যে ৭দিন পর সবাই মিলে কক্সবাজার যাবে । তবুও মেরিনের মুখে হাসি ফুটলোনা ।
এদিকে আরফান সব সম্পত্তি নিজের নামে নেয়ার will তৈরী করেছে। যারজন্য মনিরদের মাথা নষ্ট । ওদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়ে গেলো । ওরা জানেই না যে সবকিছু মেরিনের নামে।
.
the teenager নীড় : বনপাখি তো আমার বউই … আর ওকে আমি ভালোওবাসি । মুভিতে যে দেখায় যাকে ভালোবাসি তার নামের ট্যাটু করায় । বা তার নাম হাত-পা কেটে লিখে … আমিও লিখবো। কিন্তু আমি তো নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন … আমি একটু different … তাই আমি বুকে লিখবো … “বনপাখি” 😍।
যেই ভাবা সেই কাজ । নীড় ওর টুনি ট্যাক বন্ধুদের সাথে নিয়ে “বনপাখি” নাম বুকে লিখিয়ে এলো। ভালোবাসা আকাশে-বাতাসে ।
নীড় : কক্সবাজার গিয়ে বনপাখিকে surprise দিবো। 💖💖💖।
.
৭দিনপর…
সবাই কক্সবাজার পৌছালো। আনন্দ করতে লাগলো । কিন্তু ছোট মেরিনের মনে তো আতঙ্ক । এদিকে মনির জেনে গিয়েছে যে সব সম্পত্তি মেরিনের নামে।
মনির : আরফান… যতোই উরাউরি করো লাভ নেই । খান সম্রাজ্ঞ কখনোই তোমার হবেনা । কারন সব সম্পত্তি মেরিনের নামে। ওর ১৮ বছর হলেই সব power পেয়ে যাবে।
আরফান : তো? মেরিন তো আমারই মেয়ে । তাইনা । যা মেয়ের তাইই বাবার…
সেতু : ভুলে যেওনা যে তুমি duplicate ….
আরফান : সেটা তোমরা ২জন জানো দুনিয়া না ।
মনির : দেখো … বারাবারি করোনা । আমরা ২জন মিলেই সব ভোগ করতে পারি । না হলে কিন্তু…
আরফান : না হলে কিন্তু ?
মনির : আমরা তোমাকে expose করে দিবো ।
আরফান : really … আমাকে expose করলে আমি কি তোমাদের ছেরে দিবো । তোমরা যে কবিরকে বদ্ধ উন্মাদে পরিনত করেছো সেটা যে আমি ফাস করে দিবো।
মনির-সেতু : so… আমার সাথে কোনো চালাকি নয়…. যাই আমি আমার বউয়ের কাছে যাই। ও হ্যা আমি কনিকাকে বিয়ে করবো। খুব শীঘ্রই … 😏 …
বলেই আরফান চলে গেলো ।
সেতু :এর পাখা গজিয়ে গিয়েছে মনির …
মনির :সেটাই তো দেখছি । এর পাখাটা কেটে দিতে হবে।
সেতু : কিভাবে?
মনির : পৃথিবী থেকে বিদায় দিয়ে …
সেতু : আল্লাহ বলছো কি ? পুলিশ …
মনির : i have a plan dearling…
.
পরদিন…
বিকালে …
নীড় : বনপাখি… বনপাখি … মামিমনি বনপাখি কোথায়?
কনিকা : না বাবা ।
নিলয় : ওকে তো গার্ডেনের ওখানে যেতে দেখলাম ।
নীড় : হামম।
সেতু : এই মেরিন ..
মেরিন …
মেরিন : তুমি পচা…তুমি আমার বাবাকে আটকে রেখেছো ।
সেতু : বিশ্বাস করো খালামনি কিছু করিনি… আমি তো তোমাকে তোমার বাবাকে তোমার কাছে নিয়ে এসেছি ।
মেরিন : সত্যি?
সেতু : আস্তে… ওই নকল বাবা শুনে ফেলবে।
মেরিন : ok… কোথায় বাবা…?
সেতু : চোখ বন্ধ করো … surprise …
মেরিন : ok…
সেতু : খালামনি বলার আগে চোখে মেলবেনা । কেমন ?
মেরিন : হামমম।
সেতু মেরিনের চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে নিয়ে গেলো ।
সেতু : মামনি তোমার হাতটা দাও।
মেরিন দিলো ।
সেতু : নাও এটা ধরো …
মেরিন : এটা কি?
সেতু : যতো শক্তি আছে সব শক্তি দিয়ে এটা ধরে রাখো ।
মেরিন : কেন?
সেতু : কারন তা না হলে আসল বাবা আসবে না ।
মেরিন : ওহ…. ok…
সেতু : এখন 1 to 100 গুনতে থাকো। গুনে চোখ মেলবে আর বাবাকে পাবে। সত্যি বলছি ।
মেরিন : হামম।
মেরিন গুনতে লাগলো ।
আসলে মনির আরফানের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে । মেরে ফেলেছে । আর ছুরিটা শরীরেই রেখে দিয়েছে । আর মেরিনের সামনে ওই ডেড বডি বসানো অবস্থায় রেখেছ। আর পেটে লাগানো ছুরিটার হ্যান্ডেল মেরিনের হাতে রেখেছে । নিলয়ও কৌশল করে নীড়কে বাগানে পাঠিয়েছে । নীড় এসে দেখলো মেরিন কবিরের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে রেখেছে ।
নীড় : মামা…📢📢📢…
মেরিন চমকে উঠলো। চোখ মেলে ওই ছুড়ির হ্যান্ডেল ধরে রেখেই নীড়ের দিকে তাকালো । নীড়ের এমন চিৎকার শুনে সবাই ছুটে এলো । এসে দেখে এমন অবস্থা । সবার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো । মেরিন যখন নিজের সামনে তাকিয়ে অমন দৃশ্য দেখলো তখন “আ” বলে চিৎকার করে উঠলো। অজ্ঞান হয়ে গেলো ।
কনিকা অনেক কান্নাকাটি করে পরে নিজেকে শক্ত করে নিজেই পুলিশ ডেকে মেরিনকে arrest করিয়ে দিলো। মেরিন হাজারবার বলল যে ও আমার বাবানা.. আমি ওকে খুন করিনি । কিন্তু কেউ বিশ্বাস করেনি । পুলিশ মেরিনকে child counciling এ নিয়ে গেলো ।
নিহাল : ভাবি মেরিনকে …
কনিকা : জেলে পাঠানো হবে । তা না হলে ওর কলিজা বড় হয়ে যাবে । মনে করবে যে খুন করে বেচে গিয়েছি ।কেউ আমার কোনো কিছু করতে পারবেনা। সমাজের জন্য হানিকর হবে ।
নিহাল : কিন…
কনিকা : কোনো কিন্তুনা। শিশু শাস্তির মধ্যে সর্বোচ্চ যে শাস্তি, সবথেকে বড় যে শাস্তি সেটাই ওকে দেওয়াবো আমি ।
কনিকা নিজের সিদ্ধান্ত বহাল রাখলো । মেরিনকে ৭বছরের কারাদন্ড দেয়া হলো। শিশুজেলে পাঠানো হলো । নীড়ের মনে ১টা ঘৃণা জমে গেলো মেরিনের জন্য । ঘৃণার মেরিন হওয়ার ধাপ শুরু হলো । দাদুভাই হজ্জ করে এসে সব শুনে তো অবাক। ছুটে গেলো জেলে ।
মেরিন : দাদুভাই আমি কিছু করিনি দাদুভাই …. বিশ্বাস করো আমি কিছুই করিনি … আর ওটা আমার বাবাও ছিলোনা … ও দাদুভাই আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলোনা। আমার অনেক ভয় করে। ঘুম আসেনা । এখানে সব আপুরা না অনেক পচা । আমাকে মারে ভয় দেখায়। এখানে না অনেক পোকা মাকর আছে । ইদুর তেলাপোকাও আছে । চকোলেট ice cream দেয়না। পচা খাবার দেয়। বেড নেই । ও দাদুভাই আমাকে নিয়ে চলোনা ।
দাদুভাই : হামম দিদিভাই । তুমি চিন্তা কোরোনা ।
দাদুভাই অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু কনিকা আর নীলিমার জন্য মেরিনকে বের করতে পারলোনা । নীলিমা চৌধুরী পাওয়ার ব্যাবহার করলো ।
.
কিছুদিনপর …
দাদুভাই আবার জেলে গেলো ।
মেরিন : দাদুভাই তুমি আমাকে নিয়ে যেতে এসেছো … 😃…
দাদুভাই : না…
মেরিন : কেন? আমি যাবো দাদুভাই… ও দাদুভাই … আমি যাবো।
দাদুভাই : শোনো …
মেরিন : না আমি যাবো ।
দাদুভাই : দিদিভাই …
মেরিন : আমি যাবো।
দাদুভাই ধমক দিয়ে বলল : বলেছিনা শোনো …
মেরিন চমকে গেলো ।
দাদুভাই : আমি যা বলছি ভালোমতো শোনো ।
মেরিন : ….
দাদুভাই : এটা তোমার জন্য জেল না। এটা তোমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে তুমি বাকি বাচ্চাদের মতো study তো করবে । কিন্তু কেবল study করলেই হবেনা। টপার হতে হবে ।
মেরিন : ….
দাদুভাই : study এর বাইরে তুমি এখানে আরো অনেক কিছু শিখবে ।
মেরিন : …
দাদুভাই : তুমি এখানে ভয়কে জয় করতে শিখবে … নিজেকে শক্ত করতে শিখবে । মেরিন বন্যা খান থেকে সের খান হবে । সের কাকে বলে জানো? সিংহকে । সিংহ হলো বনের রাজা। হতে পারো তুমি মেয়ে । কিন্তু নিজেকে ছেলেদের মতো করে গরে তোলো । ছেলেদের থেকেও strong হিসেবে নিজেকে বানাও । কেউ তোমাকে ১টা কাটার আঘাত দিলেও তাকে তুমি ছুড়ির আঘাত দিবে । কেউ তোমাকে ১টা ঘুষি দিলে তুমি তাকে ১০টা ঘুষি দিবে। তোমার কাছে এখন সব মিথ্যা। কেবল ১টা বিষয়ই তোমার জন্য সত্য ।সেটা হলো তোমার নাম। তুমি মেরিন বন্যা খান । উফফস … মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । যেকে কেউ হারাতে পারবেনা সে নিজে ছারা… তুমিই খান সম্রাজ্ঞের সম্রাজ্ঞী নয়। তুমি খান সম্রাজ্ঞের সম্রাট …
মেরিন : …
দাদুভাই : কি বলেছি? মাথায় ঢুকেছে?
মেরিন : …
দাদুভাই : মাথায় ঢুকেছে ?
মেরিন : হামমম।
দাদুভাই : তুমি রানী নও রাজা …
মেরিন : হামমম ।
দাদুভাই : আমি আজকে চলে যাচ্ছি । ঠিক ১মাস পর আসবো । ১মাস পর আমি ভিন্ন strong মেরিন বন্যাকে দেখতে চাই । পারবো ?
মেরিন : ইনশাল্লাহ …
শুরুর দিকে মেরিনের কষ্ট হলেও নিজেকে পরিবর্তন করলো। শক্ত হলো । কেউ ১টা দিলো মেরিন তাকে ১০টা দিতো।
.
৭বছরপর …
মেরিন জেল থেকে বের হলো । ওকে নিতে এসেছে দাদুভাই আর নিহাল। সেই ছোট মেরিন ১৮বছরের হয়ে গিয়েছে ।
মেরিন : দাদুভাই… ফুপ্পা …
দাদুভাই : আমার দিদিভাই। আমার সের খান ।
নিহাল : আমার মামনিটা বাহিরে চলে এসেছে । ব্যাস all will be fine …
মেরিন : হামম। নীড় আসেনি …
নীড় নামটা শুনতেই ২জনের মুখ ভারী হয়ে গেলো ।
মেরিন : কি হলো ? বলো…
দাদুভাই : চলো বাসায় চলো দিদিভাই …
মেরিন : ও বুঝেছি । বাসায় ।
নিহাল : না বাসায় না । লন্ডন । higher study এর জন্য গিয়েছে ।
মেরিন : আচ্ছা ফুপ্পি কোন বাসায় ? আমাদের বাসায় নাকি ওই বাসায়?
দাদুভাই : ওই বাসায়।
মেরিন : তাহলে আগে ওই বাসাতেই চলো ।
দাদুভাই : না আগে আমাদের বাসায়ই চলো ।
মেরিন : না। ওই বাসায় মানে ওই বাসায় ।
মেরিনের জেদের জন্য চৌধুরী বাড়িতে গেলো ।
মেরিন : ফুপ্পি …
বলেই নীলিমাকে জরিয়ে ধরতে গেলো ।
নীলিমা : কে তুমি?
মেরিন : আমি বন্যা … ☺…
নীলিমা : বন্যা… তোর সাহস কি করে হয় আমার বাড়িতে ঢোকার ? বেরিয়ে যা খুনী ….
মেরিন : ফুপ…
নীলিমা : তুই আমার কিছুনা । তুই কেবল আমার ভাইয়ের খুনী …
নিহাল : নীলা … মামনি এ বাড়িতে থাকবে কি থাকবেনা… আসবে কি আসবেনা সেটা তুমি decide করবেনা ।
নীলিমা : তাহলে ওই থাকুক … আমিই চলে যাই ।
মেরিন : না ফুপ্পি । আমিই চলে যাচ্ছি । যেদিন তোমার ছেলে আমার হাত ধরে আনবে সেদিনই আসবো।
নীলিমা : হাহাহা… আমার ছেলে তোর হাত ধরে আনবে? তোর সেই স্বপ্ন কোনোদিনও পূরন হবেনা। আমার ছেলে তোকে ঘৃণা করে। ঘৃণা …
মেরিন : কোনোদিনও না। এটা তোমার ভুল ধারনা । নীড় তার বনপাখিকে কোনোদিনও ঘৃণা করতে পারেনা … চলো দাদুভাই …
মেরিন খান বাড়িতে গেলো । সেখানে মনির-সেতু-নিলয়কে দেখে মেরিনের মেজাজ বিগরে গেলো ।
মেরিন : দাদুভাই … এই পরগাছারা এখানে কেন ?
কনিকা : কারন এটা জেল নয়। যেখানে খুনীরা থাকে। এটা খান বাড়ি । ভালো মানুষ থাকে ।
মেরিন : যেহুতু খান বাড়িটা আমার সেহুতু আমিই ঠিক করবো এই বাড়িতে কে থাকবে আর কে থাকবেনা । এখনি বের করে দিবো।
দাদুভাই : দিদিভাই রুমে চলো।
মেরিন : হামম যাবো। তারআগে…
দাদুভাই : fresh হয়ে নাও দিদিভাই ।
দাদুভাই জোর করে মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো ।
দাদুভাই : দিদিভাই … কনিকা আমার কাছে ছোট ১টা আবদার করেছে । সেটা হলো ওদেরকে এ বাড়িতে থাকতে দেয়া । তা না হলে কনিকাও এ বাড়িতে থাকবেনা ।
মেরিন : না থাকুক । who cares…
দাদুভাই : দিদিভাই কনিকা এ বাড়ির বউ । তাই ওর ১টা দাবী আছে । যেহুতু আমার ছেলেটা নেই …
মেরিন : আমার বাবা আছে …
দাদুভাই : যাই হোক ওরা এ বাড়িতেই থাকবে।
নিলয় মেরিনকে দেখে crush খেয়েছে ।
।.
কিছুদিনপর…
এদিকে চারদিক থেকে ঘৃণা খুনী সব শুনে শুনে মেরিন অতীস্ট ।
মেরিন : দাদুভাই …. আমি লন্ডন যাবো । সেই শহরে যাবো যেখানে নীড় থাকে …সেই ভার্সিটিতেই পড়বো যেখানে নীড় পড়ে …
দাদুভাই : দিদিভাই abroad যাবে ভালো কথা । কিন্তু লন্ডনই কেন ? তুমি USA যাও ।
মেরিন : না আমি লন্ডনই যাবো। নীড়ের কাছে .. নীড়ই একমাত্র যে আমাকে কোনোদিন ঘৃণা করবেনা ।
দাদুভাই : কিন্তু দিদিভাই আমার কথাটা তো শোনো ।
মেরিন : কোনো কথানা । আমি যাবো। its final …
দাদুভাই : লন্ডন গেলে আরো আঘাত পাবে ।
মেরিন : never … যেখানে নীড় সেখানেই বনপাখির শান্তি ।
দাদুভাইয়ের সকল নিষেধ অমান্য করে লন্ডন গেলো ।
.
৩দিনপর…
মেরিন : ৩দিন হয়ে গেলো । কালই নীড়ের সাথে দেখা করবো । class তো start হবে আরো ৫-৭দিন পর থেকে। অতোদিন আমি wait করতে পারবোনা … কালই দেখা করবো । আগে ওর information নেই ।
জানতে পারলো যে নীড় সকালবেলা জগিং করতে বের হয় ।
মেরিন : নীড় জানু কাল সকালেই তোমার সাথে দেখা করবো ।
.
সকালে …
মেরিন নীড়ের পছন্দের কালো রঙের ড্রেস পরেছে । একটুপর নীড় জগিং স্যুট পরে হাজির । জগিং করতে করতে চোখ গেলো মেরিনের দিকে… ভোরের আলোতে কালো পোশাকে মেরিনকে ভীষন সুন্দর লাগছে। মায়াবী লাগছে ।
নীড় : মাশাল্লাহ… খুব সুন্দর । real beauty … মায়াভরা মুখটা। কে মেয়েটা? ১ম দেখলাম তবুও মনে হচ্ছে কতোদিনের চেনা।
নীড় দৌড়াতে দৌড়াতে যতোই মেরিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছো ততোই নীড়ের heartbeat fast হচ্ছে …
.
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 21
writer : Mohona
.
নীড় যতোই মেরিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততোই নীড়ের heartbeat fast হচ্ছে । নীড় এর কারন বুঝতে পারছেনা । মেরিন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে নীড়ের দিকে । ২চোখ ভরে নীড়কে দেখছে। নীড় যতোই চেষ্টা করছে যে মেরিনের দিকে না তাকানোর চেষ্টা করছে ততোই অবাধ্য চোখ ওর দিকে তাকাচ্ছে । মেরিনের ঠোটের কোনের হাসিটা সব গুলিয়ে দিচ্ছে। ভেবে পাচ্ছেনা চেহারাটা কার সাথে যেন মিলে ? অবশেষে নীড় মেরিনকে ক্রস করে just ২-৩কদম গেলো। তখন মেরিন ডাক দিলো ।
মেরিন : নীড়…
না চাইতেও থেমে গেলো। ঘুরলো ।
.
মেরিন এসে ঠিক নীড়ের সামনে এসে দারালো ।
নীড় : who r u? তুম… sorry আপনি আমার নাম কি করে জানলেন ?
মেরিন : তোমার নাম আমি না জানলে কে জানবে হামমম?
নীড় : sorry i have to…
নীড় চলে যেতে নিলো ।
মেরিন : যদি বলি আমি বনপাখি …
নীড় তৎক্ষনাক পিছে ঘুরলো ।
নীড় : বনপাখি …?
মেরিন : আমি মেরিন বন্যা । তোমার বনপাখি …
না চাইতেও নীড়ের মনটা খুশিতে ভরে উঠলো । আবার তখনই কবিরের মৃত দেহের কথাটা মনে পরলো।
মেরিন : কি এতো ভাবছো?
নীড় : ভাবছি খুনী মেরিন বন্যা আমার সামনে দারিয়ে আছে । কখন যেন আমার খুন করে ফেলে ।
বলেই নীড় চলে গেলো । মেরিন হা করে নীড়ের চলে যাওয়া দেখলো । মেরিন জেলে থেকে অন্যদের বিরুদ্ধে লড়তে শিখেছে ঠিকই । কিন্তু আপনজনদের বিরুদ্ধে তো লড়তে শিখেনি …
মেরিন : নীড়ও এগুলো বলল। নীড়কে তো বলতে হবে ।
.
নীড় : মেরিন কোথায় থেকে এলো ? জেল থেকে বের হয়েছে … জেল থেকে বের হয়ে এখানে এলো কেন ? যার স্মৃতি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশ থেকে ছুটে এখানে এলাম । ৬বছর ধরে এখানে পরে আছি । আজকে সেইই চোখের সামনে এলো । why ?
তখন নীরা জান বলে নীড়কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো ।
নীড় : কে …
নীরা : আমি ছারা কার সাহস আছে তোমাকে এভাবে জরিয়ে ধরার?
নীড় : নীরা…
নীরা : তো কে??
নীড় নীরাক ছারালো ।
নীড় : তুমি ভালোমতোই জানো আমার এগুলো ভালো লাগেনা …
নীরা : তোমাকে আমি ভালোবাসি … তুমি আমাকে ভালোবাসো … তো problem টা কোথায় ?
নীড় : problem টা জানোনা কি?
নীরা : don’t say যে সেই ছোট্টবেলার বিয়েটা problem … ওটা ভিত্তিহীন …
নীড় : বিয়ে বিয়েই হয়… আর যতোদিন সেই বিয়ের তালাক না হবে ততোদিন distance maintain করতে হবে ।
নীরা : 😒। whatever … সবাই যে wait করছে আমাদের জন্য সে খেয়াল কি আছে ?
নীড় : হামম। আছে । বসো রেডি হয়ে আসছি ।
নীরা : ok জান।
নীড় রেডি হয়ে এলো ।
নীড় : তুমি এতো short dress কেন পরো?
নীরা : its stylish babes… চলো।
এরপর ২জন bmw নিয়ে ড্যাং ড্যাং করতে করতে চলে গেলো ।
ওরাও বের হলো আর মেরিনও এলো। মেরিন পেছন থেকে দেখলো ।
মেরিন : যাহ… চলে গেলো । সাথে কে ছিলো মেয়েটা? মনে হয় কোনো friend । আরেকটু আগে এলে …
মেরিন wait করতে লাগলোম। নীড় সারা রাত বন্ধুদের সাথে পার্টি করলো । আর মেরিন wait করতে লাগলো । security guard দের চোখের আরাল হয়ে wait করলো । ১সময় ঘুমিয়ে গেলো । রাত ৩-৪টার দিকে নীড় এলো । নিজের ফ্ল্যাটে গেলো । মাথা মুছতে মুছতে বারান্দায় গেলো । মেরিনকে দেখতে পেলো । ঘুমিয়ে আছে …
নীড় অবাক হলো ।
নীড় : ঠান্ডার মধ্যে মেয়েটা ওখানে বসে আছে কেন? যা মন চায় করুক…
নীড় রুমে গেলো। কিন্তু কিছুতেই শান্তি পেলোনা । ৫মিনিটের মাথাতেই ১টা blanket এনে মেরিনের গায়ে জরিয়ে দিলো।
নীড় : তুই অমানুষ হলেও আমি তো মানুষ । huh…
নীড় রুমে গিয়ে light off করে শুয়ে পরলো ।
কিছুক্ষন পর থেকে বাইরে snowfall হতে লাগলো ।
.
সকালে …
১০টা..
নীড়ের ঘুম ভাঙলো । বাইরে তাকিয়ে দেখে snowfall হচ্ছে ।
নীড় : wow snow..
নীড় ছুটে নিচে গেলো নীড়ের snowfall ভীষন পছন্দ । চলতে চলতে কিছুর সা়থে বেজে ধিরিম করে হোচট খেয়ে পরে গেলো ।
নীড় : what the hell is this…
নীড় খেয়াল করে দেখে যেটার সাথে বেজে নীড় পরেছে সেটা হলো মেরিন …
নীড় : মেরিন …
নীড় মেরিনের কপালে-গালে হাত দিয়ে দেখলো সমানে ঠান্ডা হয়ে আছে ।
নীড় : oh no…. ও তো জমে বরফ হয়ে গিয়েছে । এখন ?
.
বেশকিছুক্ষনপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । চোখ মেলে দেখে ১জন মাঝবয়সী মহিলা বসে আছে । বাঙালিই মনে হচ্ছে মেরিনের ।
মেরিন : আমি এখানে? আপনি কে ?
মহিলা : আমার নাম মিমি। ছোটবড় সবাই আমাকে মিমি বলেই ডাকে ।
মেরিন : আমি এখানে ?
মিমি : বাহিরে পরেছিলে । বরফে ঢেকে গিয়েছিলে । দেখে নিয়ে এলাম ।
মেরিন : oh… thank u…
মিমি : এই শীতের মধ্যে ওখানে বসে ছিলে কেন ?
মেরিন : কারো জন্য অপেক্ষা করছিলাম । কখন চোখ লেগে গিয়েছি বুঝতেই পারিনি। আর যখন আবার চোখ মেললাম তখন ওঠার শক্তি ছিলোনা ।
মিমি : কার জন্য অপেক্ষা করছিলে ?
মেরিন : করছিলাম কারো জন্য । আসছি মিমি।
মিমি : এই শরীর নিয়ে কোথায় যাবে? চুপচাপ বসো ।
মেরিন : নানা মিমি বাসায় ফিরতে হবে । কাল-পরশু থেকে class start হবে। আসি ।
মিমি : আরে কিন্তু…
মেরিন বেরিয়ে গেলো । যাওয়ার সময় দেখলো নীড়ে ফ্ল্যাটে তালা দেয়া । নীড় হাফ ছেরে বাচলো ।
মিমি : ওর সেবাযত্ন করলে তুমি আর credit দেওয়ালে আমাকে … তুমি কি ওকে চিনো ?
নীড় : না …
মেরিন আরো ২দিন এসে নীড়ের ফ্ল্যাটে তালা দেখে ফেরত গেলো ।
.
আরো ২দিনপর …
আজকে ভার্সিটিতে মেরিনের ১ম class । মেরিন দারিয়ে আছে । কখন নীড় আসবে । অবশেষে নীড় এলো । bike এ.. কিন্তু পিছনে সেদিনের সেই মেয়েটা। ছোট পোশাক পরা ।
মেরিন : কি মেয়েরে বাবা । huh… আমার জামাইর সাথে ঘুরে বেরায় । আচ্ছা মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে । নীরা আপুর মতো। আচ্ছা এটা নীরা আপু নয়তো …
মেরিনকে দেখে আবারও নীড়ের চোখ আটকে গেলো । bike accident করতে করতে বেচে গেলো । কোনোরকমে break মারলো । মেরিন দৌড়ে গেলো । নীরা সামান্য একটু ব্যাথা পেলো । তাই নিয়ে ভ্যা ভ্যা করতে লাগলো ।
নীড় : r u ok জান?
নীরা : no i am not ok…
নীড় : ইশ রক্ত পরছে । দারাও …
নীড় তারাতারি রুমাল বের করলো। মেরিন দেখছে। নীড় মেরিনকে দেখানোর জন্য আরো বেশি caring দেখাচ্ছে । এখনকার মেরিন হলে হয়তো তুলকালাম বাধাতো । কিন্তু এই মেরিন ৭বছর জেলে থেকে অন্যদের সাথে লড়াই করতে শিখেছে ঠিকই। কিন্তু আপনজনদের সাথে লড়াই করতে শিখেনি । কিন্তু এই দৃশ্য কেন যেন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে । তারওপর আশেপাশের সবাই love birds love birds বলছে ।
নীরা : আমার ব্যাথা এখনই যেতে পারে … যদি?
নীড় : যদি?
নীরা : তুমি এই ব্যাথার মধ্যে ১টি sweet sweet kiss দাও। 😉।
নীরা জানে নীড় কখনোই দিবেনা । তাই মজা করেই বলেছে । কিন্তু মেরিন উপস্থিত বলে নীড় নীরার আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় কিস করলো । নীরা তো অবাক ।
নীড় : চলো। আজকে আর class করতে হবে না ।
মেরিন সব দেখছে ।
.
রাতে …
নীড় dinner বানাচ্ছে । তখন ডোরবেল বাজলো । নীড় গিয়ে দরজা খুলল। দেখলো মেরিন ।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হামম আমি । তোমার সামনে তো আমিই থাকবো ।
নীড় : কেন?
মেরিন : কারন আমি তোমার বউ লাগি । আর…
নীড় : আর?
মেরিন : আর তোমাকে ভালোবাসি।
নীড় : কিন্তু আমি তোমাকে ঘৃণা করি । get lost….
.
দেখতে ২৫দিন চলে গেলো । মেরিন নীড়ের পিছে লেগেই আছে। আর নীড়… ও মেরিনকে পাত্তাই দেয়না । তবুও মেরিন ওর পিছে লেগেই ছিলো ।অতীষ্ট হয়ে নীড় বলল যদি মেরিন ওকে সত্যিই ভালোবাসে তাহলে যেন ভার্সিটিতে সবার সামনে ওকে propose করে । মেরিন পরদিনই তাই করলো । কিন্তু নীড় মেরিনকে অপমান করলো সবার সামনে। এরপর নীরার হাত ধরে চলে গেলো ।
কনিকার শাস্তি মেরিনকে কঠোর বানিয়েছে। কিন্তু নীড়ের ঘৃণা-অবহেলা আর অপমান মেরিনকে বেলাগাম বানিয়ে দিয়েছে । রাগী-পাজি-হিংস্র করে তুলেছে । ঘৃণার মেরিন বানিয়েছে ।
সেদিনের অপমানের পর মেরিন শেষবার অসহায়ের মতো নিঃস্বঙ্গতায় কেদেছিলো । এরপর আর কাদেনি। বুঝতে পারে দাদুভাই কেন লন্ডন আসতে নিষেধ করেছিলো । সোজা দেশে ফিরে আসে । দাদুভাইকে সব বলে । দাদুভাই মেরিনকে নিয়ে usa চলে যায়। মেরিনের security এর জন্য জনকে রাখে ।
মেরিন প্রায় ৩বছরের মধ্যে কোর্স কমপ্লিট করে । দেশে ফিরে মাস্টার্স কমপ্লিট করে। কারন ও টাকার পেছনে ছুটতে চায়নি চেয়েছে টাকা যেন ওর পিছে ছুটে। আর তাইই হয়েছে।
]]]
.
বর্তমান …
সবশুনে কবিরের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। ধপ করে বসে পরলো ।
কবির : আহমার অতোটুকু মেয়ে কি কি সহ্য করেছে …ওর জীবনটা এতো কষ্টের…
দাদুভাই : হ্যা কবির। মেরিনকে সবাই কষ্ট দিয়েছে …
কবির : আজকে আমিও দিলাম …
দাদুভাই : কান্না করিসনা । তুই যা করেছিস তা না জেনে …
কবির : জেনে করি আর না জেনে কষ্ট তো আমার বাবুইপাখিটাই পেয়েছে ।এতো বড় পাপ কোথায় রাখবো ?
কনিকা : তুমি তো তোমারটা বলছো । আমারটা কি হবে? আমি আমার মে…
কবির : don’t…don’t you dare to call her your daughter … কোনো মা নেই যে তার সন্তানকে অবিশ্বাস করে। তাই কেবল নীড় কেন তুমিও ১টা আবর্জনা । জন …
জন : জী স্যার …
কবির : এই আবর্জনাটাকেও ফেলে দিও আসো…
কনিকা : কবির …
কবির : জন ১০সেকেন্ড সময় দিলাম। আমার সামনে থেকে এই আবর্জনাটাকে দূর করো…
.
৭২ ঘন্টা পর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । বাবা বলে চিৎকার করে উঠলো । নার্স তপুকে ডেকে আনলো। তপু দৌড়ে এলো । মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে বলে তপু অনেক খুশি হলো। মেরিনের চেক আপ করতে লাগলো। মেরিন অবাক চোখে তপুকে দেখছে। সেটা তপু লক্ষ করেছে।
তপু : কিছু বলবে?
মেরিন মাথা নেরে হ্যা বলল ।
তপু : বলো।
তপু মনে করলো মেরিন নীড়ের কথাই বলবে। কিন্তু তপুকে অবাক করে
মেরিন বলল : আমার বাবাটা কোথায় …?
তপু অবাক হলো।
তপু : বাবা ?
মেরিন : হামম বাবা । কককোথায় আমার বাবা?
তপু : ডেকে আনবো বাবাকে? দেখবে?
মেরিন : হামম।
তপু : ok…
তপু check up করে কবিরকে নিয়ে এলো । কিন্তু কবিরকে দেখে মেরিন কোনো react করলোনা ।
মেরিন : আআআমার বববাবা কোথায়? আপনি না বললেন যে আমার বাবাকে নিয়ে আসবেন ।
মেরিনের কথায় কবির আর তপু ২জনই অবাক হলো ।
তপু : এই তো তোমার বাবা।
মেরিন : এএএটাই আমার বববাবা।
তপু : হ্যা।
মেরিন :সত্যি ?
তপু : হামম।
তপু কবিরকে ইশার দিয়ে react করতে না করলো। কবির মেয়ের কাছে গিয়ে মেয়েকে বুকে জরিয়ে নিলো । কাদতে লাগলো।
মেরিন : আআপনি ককাদছেন কেন? আপনি কি সসত্যিই আহমার বাবা?
কবির : হ্যা গো বাবুই পাখি… আমিই তোমার বাবা ।
মেরিন : বববাবুই পাখি… বববাবুই পাখি… ববা… আহ…
বলেই বলেই মেরিন মাথায় হাত দিলো।
কবির : কি হলো মামনি?
মেরিন : মাথায় ভভীষন ব্যাথা করছে।
তপু : দেখি দেখি…. তুমি আরাম করো। uncle বাহিরে চলুন।
মেরিন : এই যে শশশুনুন.. আমার বাবা আহমার কাছে থথথাকুক প্লিজ…
তপু : হামম। কেন নয়… তাহলে তুমি শুয়ে পরো ।
মেরিন : হামম।
মেরিন শুয়ে পরলো। কবির মেরিনের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো । মেডিসিনের প্রভাবে মেরিন কিছুক্ষনের মধ্যেই আবার ঘুমিয়ে পরলো।
কবির বাইরে এলো ।
.
কবির : ডক্টর তপু… আমার মেয়ে আমাকে চিনতে পাচ্ছেনা কেন ?কি হয়েছে?
দাদুভাই : চিনতে পাচ্ছেনা মানে? কি হয়েছে আমার দিদিভাইয়ের?
তপু : আপনারা শান্ত হন প্লিজ । আসলে যেটার ভয় পেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে । মেরিনের স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গিয়েছে । তবে “বাবা” নামটা ওর মাথায় আটকে আছে । সে কারনে। এখন তোমাদের কে দেখার পর কিভাবে react করে সেটাই জানার বিষয়…. specially নীড়কে দেখে….
.
চলবে …
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 22
writer : Mohona
.
তপু : specially নীড়কে দেখে …
দাদুভাই : নীড়কে তো আমার দিদিভাইয়ের সামনেই আসতে দিবোনা …. জন…।
জন : জী স্যার। i will take care…
নীড় আড়াল থেকে সব দেখলো আর শুনলো ।
নীড় : পাখিকে কি নীড় থেকে বেশিক্ষন আলাদা করে রাখা যায় ? পরিযায়ী পাখিরাও শত শত পথ পারি দিয়ে ঠিকই নিজ নিজ নীড়ে ফিরে যায় । আর এটা তো মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী… বনপাখি… বনপাখি নীড় ছারা থাকতে পারবেনা । আমার ভুলে শাস্তি তো আমি পাবোই । তাও আমার বনপাখির হাতেই … বনপাখিকে কাছে রেখেই শাস্তি ভোগ উফফস উপভোগ করবো । নানাভাই যেখানে বন্যাকেই বাধ দিয়ে বেধে রাখা যায়। ভেঙে ফেলে। সেখানে তো আমি বর্ষন । আমাকে আটকায় কার সাধ্য? জন … হ্যাহ আল্লাহ ছারা কারো নেই। কারোই নেই … বনপাখি কি বলে? আমি ছলনা করি… হামম ছলনা …
.
কিছুক্ষনপর…
জন দারিয়ে পাহারা দিচ্ছে । নীড় নার্সদের পোশাক পরে মুখে মাস্ক পরে ভেতরে যাচ্ছে ।
জন : দারান।
নীড় দারিয়ে গেলো ।
জন : কে আপনি ?
নীড় : আপনার বউ…
জন : 😤।
নীড় : তো আর কি বলবো? দেখতে পাচ্ছোনা আমি নার্স। huh… side please ..
নীড় ভেতরে গেলো । দেখলো মেরিন ঘুমিয়ে আছে । মুখটা একদম ফ্যাকাশে লাগছে । মলিন হয়ে আছে। নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। এরপর মেরিনকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো। এরপর মেরিনের সারামুখে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো ।
নীড় : i am not sorry বনপাখি… i am not… wake up & remember everything … then punish me in your style …. আমি কখনো তোমার কোনো কাজে বাধা দিবোনা । কারন তুমিই সবসময় ঠিক। সবসময় ।
নীড়ের পাগলামিতে মেরিনের ঘুম ভেঙে গেলো । মেরিন ভয় পেয়ে গেলো ।
মেরিন : কককে আপনি? আপনি এখানে কককি করছেন ? আমার বববাবা কোথায়? নিশ্চয়ই আপনি আমার বাবার কিছু কককরেছেন ? খখখুন করেছেন …. বববাবা … বাবা..
নীড় : জান আমার ক..
মেরিন : বাবা … বাবা …
মেরিনের চিল্লানোতে সবাই ছুটে এলো । এসে নীড়কে দেখে তো অবাক।
নিহাল : তুমি এখানে …?
মেরিন কবিরকে দেখে স্যালাইন ট্যালাইন ১টা খুলে দৌড়ে গিয়ে কবিরকে বাবা বলে জরিয়ে ধরলো। মেরিনের হাত থেকে টুপটুপ রক্ত পরছে ।
মেরিন : বাবা তুমি কোথায় গগগিয়েছিলে … ওই ওই ওই লললোকটা কিছু করেছে? এএএই লোকটা না খখখুনি। ও মেরে ফেলেছে… ও মেরে ফেলেছে … কককাকে যেন মমমারলো ? কককাকে যেন মারলো আমার? কককাকে? কককাকে ? আমার আমমমার আমমমার…
মেরিন অজ্ঞান হয়ে পরে গেলো। নীড় যাবার আগেই কবির ধরে ফেলল।
কবির : out…
নীড় : আমার বউকে ফেলে আমি ১চুলও নরবোনা। দেখি আমাকে কে নরায়?
.
তপু : ভাগ্য। ভাগ্য তোমায় কেবল নরাবেনা সরাবেও। uncle মেরিনকে শুইয়ে দিন।
কবির মেরিনকে শুইয়ে দিলো ।
তপু : oh my god… ওর pressure তো অনেক বারতি। ১৯০/১৪০। আবার স্ট্রোক না করে ফেলে
সিস্টার injection hurry up…
মেরিনকে inject করা হলো । bp normal হলো। ঘুমিয়ে রইলো ।
তপু : প্লিজ সবাই বাহিরে যান। she needs rest & comfort …
সবাই বেরিয়ে গেলো । নীড়ও যেতে বাধ্য হলো।
দাদুভাই : তোমার সাহস কি করে হয় এখানে আসার।
নীড় : আমাক বউ আমি আসবোই…
তপু : তোমার আসার কারনে মেরিনের condition কেমন বিগরে গিয়েছিলো দেখেছো ? for god sake মেরিনের সামনে আসবেনা ।
নীড় : আমার মেরিনের সামনে আমি আসবো । আর ১টা কথা মনে রেখো আমার মেরিনকে আমি ছারা অন্য কেউ ঠিক করতে পারবেনা।
বলেই নীড় চলে গেলো ।
কবির : আমার মেয়েটা ঠিক কবে হবে ?
তপু : জানিনা uncle …
কবির : ওকে কি বাসায়ও নিতে পারবোনা?
তপু : পারবেন। তবে ৩-৪দিন পর ।
কবির : হামম।
তপু : তবে হ্যা নীড়কে মেরিনের সামনে আসতে দেয়া যাবেনা । হয়তো situation আরো বিগরে যেতে পারে ।
দাদুভাই : হামমম।
তপু : excuse me..
তপু চলে গেলো ।
দাদুভাই : জন… খান বাড়িতে যাও ।গিয়ে দিদিভাইয়ের রুম থেকে নীড়ের সমস্ত ছবি সমস্ত স্মৃতি সরিয়ে ফেলো আজই। কিছুই যেন অবশিষ্ট না থাকে ।
জন : জী স্যার ….
নীলিমা : বববলছিলাম কি বাবা … নীড় ছারা কি মেরিন ভালো থাকবে?
দাদুভাই : হামম। আমার আগেই উচিত ছিলো নীড়কে মেরিনের থেকে দূরে করা। তাহলে হয়তো পরিস্থিতি এই পর্যন্ত এগোতো না…
.
২দিনপর…
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে। মেরিন অবাক চোখে নীলিমাকে দেখছে ।
মেরিন : তুমি যেন আমার কি হও?
নীলিমা : মাত্রই না বললাম যে আমি তোর ফুপ্পি হই।
মেরিন : ও হ্যা … আচ্ছা আমার কি মা নেই…
কবির : না । নেই। মরে গিয়েছে …
মেরিন : মমমরে মমমরে … মমমেরে ফেলা …
মেরিন যেন কেমন করতে লাগলো। ঘেমে অস্থির হয়ে গেলো ।
মেরিন : মমমরে… মমমরে।
কবির পরিস্থিত সামাল দিতে
বলল : তুমি জানো কাল-পরশু তোমাকে বাসায় নিয়ে যাবো । আর এখানে কষ্ট হবেনা ।
মেরিন : তততাই?
নীলিমা : হামমম।
মেরিন : আচ্ছা আমার নাম কি?
নীড় : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী …
সবাই সামনে তাকালো । দেখলো নীড় মেরিনের গানটা হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে । কবির কিছু বলতে নিলো । তপু ইশারা দিয়ে না করলো ।
মেরিন : মমমেরিন বন্যা নননীড় খান চৌধুরী ? এএটা আআমার নাম ? নননীড় কে ?
নীড় : আমিই নীড়।
মেরিন গানটা আঙ্গুল দিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে সামনে এগিয়ে এলো।
মেরিন : আপনি কে?
নীড় : আমি নীড় …
মেরিন : নননীড়… নননীড় নননীড়।
নীড় : এটাকে চিনতে পাচ্ছো?
মেরিন : নননা । কি এটা ?
নীড় : এটা তোমার best friend … gun… মানুষ খুন করে….
মেরিন : খখখুন …. মানুষ খখখুন খখখুন ..
মেরিন আবার উত্তেজিত হয়ে উঠলো । আবার নীড়কে বের করা হলো । কিন্তু নীড় তো নাছোর বান্দা । যখন ইচ্ছা হাজির হয় ।
.
৩দিনপর…
মেরিনকে বাসায় নেয়া হলো। খান বাড়িতে of course । ভেতরে ঢোকার সময় আমগাছটার দিকে চোখ পরলো । বুকটা কেপে উঠলো ।
কবির : বাবু… বাবাই …
মেরিন : হামমম ।
মেরিন রুমে গেলো । রুমে কোথাও নীড়ের অস্তিত্ব নেই । অথচ এই রুমের সব গুলো দেয়ালের painting ঢাকা ছিলো নীড়ের ছবি দিয়ে । এমনকি সিলিং এও নীড়ের ছবি paint করা ছিলো ।
মেরিন : এএটা কি আমার ঘঘর?
নীলিমা : হামম তোর ঘর । কেন কি মনে হচ্ছে?
মেরিন : মনে হচ্ছে কিছু নেই … কিন্তু কি নননেই … ?
কবির : কি খুজছো বাবাই …?
মেরিন : জানিনা … আচ্ছা ওই লোকটা কককোথায় ?
কবির : কোন লোকটা?
মেরিন : ওওওইযে ওই লোকটা। যে হুট করে চচচলে আসে… সসসেই লোকটা ।
কবির : ওই লোকটা আর আসতে পারবেনা।
মেরিন : ওহ ।
কবির : আরাম করো বাবাই। কিছু লাগলে ডাক দিও কেমন ?
মেরিন : হামমম ।
কবির চলে গেলো। কবির চলে যেতেই মেরিন সারারুম ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো ।
মেরিন : রররুমটা বেশ বড় । কিন্তু কককিছু নেই নেই মনে হচ্ছে । কি যে নেই । ঘুম পাচ্ছে ভীষন । বারান্দাটা দেখা হলোনা । ঘুম থেকে উঠে দদদেখবো…
মেরিন বেডে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো । ওদিকে নীড় মনিরকে খুজে বের করলো ।
.
তপুর assistant রাজু : স্যার আর কতো মনমরা হয়ে থাকবেন ? আর কতো আফসোস করবেন ?
তপু : আমার এই আফসোস কোনোদিনও শেষ হবেনা ।
রাজু : স্যার আপনি যা করেছেন ভালোবেসেই করেছেন …
তপু : না … আমি যেটা করেছি সেটাকে ভালোবাসা বলেনা । স্বার্থপরতা বলে…
রাজু : না স্যার। ঠিকই করেছেন । নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন আসলেই মেরিন ম্যামের জন্য ভুল মানুষ। ক্ষতিকর । তাও মেরিন ম্যাম নীড় বলতেই অজ্ঞান । অন্যদিকে আপনি। আমি মেরিন ম্যামের প্রতি ভালোবাসা দেখেছি । ১টা মেয়ের আর কিছুই চাওয়ার থাকেনা যখন এমন ১জন ভালোবাসার মানুষকে পায় ।
তপু : ১টা মেয়ের কাছে সবথেকে বড় পাওয়া কি জানো ? “মা” হওয়া। অথচ আমি ওর বাচ্চাটাকে মেরে ফেললাম ।
রাজু :স্যার আপনার তো কিছু করার ছিলোনা ।
তপু : ছিলো । কিন্তু আমি যে চেষ্টাই করিনি ।
রাজু : আপনার কাছে ওই বাচ্চাটার থেকে মেরিন ম্যামের জীবন বাচানো জরুরী ছিলো। তাই তো আপনি …
তপু : না রাজু … সেদিন আমি selfish হয়ে গিয়েছিলাম ।নীড়ের ওপর রাগ করে, নীড়কে মেরিনের জীবন থেকে সরানোর জন্যেই আমি সেদিন বাচ্চাটাকে বাচানোর নূন্যতম চেষ্টাও করিনি। কিন্তু কি করতাম আমি ? নীড় মেরিনকে একেবারে ধংব্স করে দিচ্ছিলো । কষ্ট , লাঞ্চনা ছারা নীড় মেরিনকে কিছুই দেয়নি । আর সে জন্যেই আমি এমনটা করেছিলাম । যেন মেরিন নীড়কে ছেরে দেয়। কিন্তু এমনটা যে হবে সেটা বুঝিনি। জানিনা এই পাপ আমি কোথায় রাখবো ?
রাজু : স্যার শান্ত হন। প্লিজ …
.
সন্ধ্যায়…
মেরিনের মনে হলো যে ও শূন্যে ভাসছে । তারাতারি চোখ মেলল। দেখলো যে ও নীড়ের কোলে । ভয় পেয়ে গেলো ।
মেরিন : আআআপনি…
নীড় : হামমম আমি জান…
মেরিন খেয়াল করে দেখলো যে ও নীড়ের কোলে ।
মেরিন : আআআমাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন ? নামান…
নীড় : নামাবো? বলছো? কিন্তু আমার যে নামাতে ইচ্ছা করছেনা জান। sorry …
নীড় হাটতেই লাগলো । মেরিনযে বারবার নামাতে বলছে সেটা নীড়ের কানেই যাচ্ছেনা । একটুপর মেরিনকে ১টা চেয়ারে বসালো । এরপর হাত-পা সব বন্দী করলো ।
মেরিন : আআআপনি আমার হাত-পা আটকে দদদিলেন কেন?
নীড় : জা…ন … এতো ভয় পাচ্ছো কেন ? ভয় তোমাকে মানায় না। । যাই হোক তোমার জন্য ১টা বিন্দাস surprise আছে । ডন… জনের সাথে মিলিয়ে এর নাম ডন রেখেছি। 😎। ডন … ডন…
ডন : জী স্যার।
নীড় : এতোক্ষন লাগে আসতে ।
ডন : sorry sir…
নীড় : আনো ওকে।
ডন : জী স্যার ।
ডন আহত মনিরকে নিয়ে এলো ।
মেরিন : এএএই লললোকটা কে ?
নীড় : শয়তানের ভিন্নরূপ । ওর জন্যেই এতোসব। সকল ঘৃণার শুরু এর থেকেই …
মনির : নীড় প্লিজ আমাকে ছেরে দাও।
নীড় : ডন এর মুখ খুলে রেখেছো কেন ? কোনো সমস্যা নেই । আমি বন্ধ করে দিচ্ছি ।
নীড় প্রথমে মনির জিহ্বা কাটলো। এরপর হাত-পা । এরপর ২চোখ তুলে ফেলল। শেষে shoot করলো।
নীড় : দেখো জান দেখো … এই শয়তানকে আমি শেষ করে দিয়েছি । আমাদের জীবন থেকে কালো ছায়া দূর করেছি । দেখো দেখো দেখো …
নীড় ঘুরে মেরিনকে দেখে কেমন যেন অবাক হয়ে গেলো । আসলে খুন আর রক্ত মেরিনের brain এ pressure ফেলছে ।।ওর রক্তের বেগ বেরে গিয়েছে । ঘেমে অস্থির হয়ে গিয়েছে । জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ।
নীড় : ডক্টর …
নীড় ডক্টর কে এনে রেখেছিলো । by chance যদি কোনো সমস্যা হয় ? ডক্টর treatment শুরু করে দিলো। প্রয়োজনীয় মেডিসিন দিলো । মেডিসিনের প্রভাবে মেরিন ঘুমিয়ে পরলো।
.
কিছুক্ষনপর…
নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।
নীড় : আমাদের জীবন থেকে সব কাটা সরিয়ে দিয়েছি মেরিন। ়এখন আর কোনো অশুভ ছায়া রইলোনা। আর রইলো তোমার স্মৃতিশক্তি আর তোমার ঘৃণা… সেগুলো সব মেনে নিবো… নিজের ভুলের মাশুল দিবোনা । শুধু তোমাকে ভালোবাসবো।
একটুপর মেরিনের ঘুম ভাঙলো। দেখলো নীড় ওর দিকে তাকিয়ে আছে । হুরমুরিয়ে উঠে বসলো।
মেরিন : আআআপনিহ… আমাকে ছারুন । আমাকে মারবেন না প্লিজ। আপনি দূরে সরুন ।
নীড় : কুল কুল… ঠান্ডা হও। আমি তোমাকে কেন খুন করবো? তুমি তো আমার জান… কলিজা… relax …
মেরিন : নননাহ আপনি খুনি… সরুন…
নীড় : ওরে জান… ঠান্ডা হওনা।
মেরিন : আপনি খুনী হ্যা খুনী খুনী খ…
নীড় মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো । মেরিন ধাক্কা দিতে লাগলো। কিল ঘুষিও দিতে লাগলো । কিছুক্ষনপর নীড় ছারলো। মেরিন ঠোট মুছে নিলো ।
নীড় : বসো খাবার নিয়ে আসছি । rest করো ততোক্ষন। কেমন …
নীড় চলে গেলো।
মেরিন : ওওওই লোকটা খুনী। আমাকেও খুন করবে। আমি চলে যাবো।
মেরিন চুপিচুপি বেরিয়ে গেলো । নীড় খাবার নিয়ে এসে মেরিনকে পেলোনা ।
নীড় : ওহ my জান… জেদ কমেনি… দেখি কতোদূর গিয়েছো….
.
মেরিন রাস্তা দিয়ে হাটছে । তখন ওর সামনে ১টা গাড়ি এসে থামলো। মেরিন ভয় পেয়ে গেলো। চোখমুখ খিচে বন্ধ করে রাখলো ।
তপু : মেরিন…
মেরিন চোখ মেলল। তপুকে দেখলো। দেখে ভরসা পেলো।
মেরিন : ডক্টর তপু…😃…
তপু : তুমি কোথায় চলে গিয়েছিলে? সবাই তোমাকে খুজছে । তুমি ঠিক আছো ?
মেরিন : হামমম । ঠিক আছি । ডক্টর তপু ডক্টর তপু… শুনুন…
তপু : হ্যা বলো…
মেরিন : খুন…
তপু : খুন ?
মেরিন : হহহ্যা খুন। ১টা লোককে খুন করা হয়েছে । আমি দেখেছি। খুব বাজে ভাবে।
তপু : কে খুন হয়েছে?
মেরিন : নননাম জজজানিনা। কিন্তু খুন হয়েছে। আমি দেখেছি । পপপ্রথমে লোকটার জিহ্বা কেটেছে। এরপর হাত-পা। এরপর চোখ উপরে ফেলেছে । সসসবার শেষে shoot করেছে। চচচারিদিকে রররক্ত আর রক্ত…
তপু : কে খুন করেছে ? দেখেছো ?
মেরিন : হহহ্যা দেখেছি ।
তপু : নাম কি ?
মেরিন : নননাম …. নননাহম… ননাম তো জজজানিনা…. কককি নাম? নাম….
তপু : আচ্ছা থাক নাম বলতে হবেনা।
মেরিন : নননা আহমি বববলবো। নননাম।
তপু : কি নাম?
তখন নীড় পেছন থেকে
বলল : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন…
.
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 23
writer : Mohona
.
নীড় : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন …
তপু আর মেরিন পিছে ঘুরলো। দেখলো নীড় দারিয়ে আছে । নীড়কে দেখে মেরিন ভয় পেয়ে তপুর পেছনে গিয়ে লুকালো । তপু শার্ট খামছে ধরলো । তপু্র পেছন থেকে উকি দিয়ে নীড়ের দিকে তাকালো । নীড়ও ২পকেটে ২হাত দিয়ে ঘাড়টা কাত করে মেরিনের দিকে তাকালো । মেরিনের চোখে নিজের জন্য ভয় আর ঘৃণা দেখে নীড়ের বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলো ।
তপু : নীড় তুমি?
নীড় : হামম আমি।
মেরিন : শশশুনুন… ডক্টর তপু।
তপু : হামম বলো ।
মেরিন : ওইযে উউউনিই খখখুন করেছে।
তপু : কি ???
.
নীড়-মেরিন : হ্যা উনিই/আমিই খুন করেছে/করেছি।
তপু : তুমি খুন করেছো নীড়? এতোটা নিচে নেমেছো ?
নীড় : নিচে নেমেছি? what rubbish… আমি মানুষরূপী শয়তানকে মেরেছি। মনিরকে… একদম শেষ করে দিয়েছি । whatever … জান চলো ডিনার করবে। কাম .. কাম কাম কাম।
মেরিন : নননা আমি আপনার সাথে যযযাবোনা। আপনি খুনী। আমাকেও খুন করবেন… আমি যাবোনা । আমি আপনাকে ঘৃণা করি।
ঘৃণা করি কথাটা শুনে নীড় হাহা করে হাসতে লাগলো।
নীড় : আরেকবার বলবে প্লিজ … তোমার মুখে ভালোবাসির থেকে ঘৃণা শুনতে অন্যরকম ভালো লাগলো।।once more জান … আরেকবার ঘৃণা করি বলো।
নীড়-মেরিনের ভালোবাসা তো আমার মাথাতেই ঢোকেনা তো তপুর মাথায় কি করে ঢুকবে?
তপু : নীড় … বাসার সবাই মেরিনের চিন্তা করছে । ওকে নিয়ে যেতে দাও। আর তুমি বাসায় যাও।
নীড় : তপু… আমাদের মধ্যে তোমাকে আর তোমার কথা কি মানায় ? একদমনা। যেখানে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী কাউকে ২য় সুযোগ দেয়না সেখানে আমি কি করে দেই। তাই ১ম আর শেষ বারের মতো বলছি এখন চুপচাপ এখান থেকে প্রস্থান করো। না হলে আমার করাতে হবে।
তপু মেরিনের হাত ধরলো। নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
তপু : মেরিন বন্যা হতে চাইছো ? কোনোদিনও পারবেনা। চলো মেরিন।
নীড় বাকা হাসি দিয়ে পকেট থেকে injection বের করে দুম করে তপুর কাধে push করলো।
নীড় : এটা আমার মেরিনের হাত ধরার শাস্তি। ডন…
মেরিন : ডক্টর তপু।
নীড় মেরিনের অন্যহাতে টান দিয়ে নিজের কাছে নিলো।
ডন : জী স্যার…
নীড় : একে এর বাসায় পৌছে দাও । আমার জানের জান অনেকবার বাচিয়েছে। এর কষ্ট হলে আমারও কষ্ট হবে। চলো জান…
বলেই মেরিনকে কোলে তুলে হাটা ধরলো।
.
মেরিন : নামান আমাকে … নামান… আপনি খুনী আপনি পচা … আমি বাবার কাছে যাবো। দদদাদুভাইয়ের কাছে যযযাবো। ডডডক্টর তপুর কাছে যাবো ।
নীড় হাটা থামিয়ে দিলো।
নীড় : কার কাছে যাবে?
মেরিন : বববাবার কাছে দদদাদুভাইয়ের কাছে ডক্টর তততপুর কাছে ।
নীড় : ডক্টর তপুর কাছে? কেন কেন ?
মেরিন : কারন উনি ভালো। আপনি পচা। তাই। ছারুন আমাকে।
নীড় : ওহ। ভালো। thank u…. ডন…. খেয়াল রেখো যেন ও আমার জানের সামনে আর না আসে ।
বলেই নীড় আবার হাটা ধরলো।
মেরিন : আপনি কি মানুষ ?
নীড় : উহু… নীড়। বনপাখির নীড় ..
মেরিন : বববনপাখিহ … বনপাখিহ … বববনপাখিহ…
মেরিনের মাথা যেন কেমন করতে লাগলো। মেরিন মাথায় হাত দিলো।
মেরিন : আহ…
নীড় : আজকে তোমাকে বন্দী করবো। হা হা হা … আর খান বাড়িতে যেতে দিবোনা।
নীড় মেরিনের খেয়ালটা অন্যদিকে নেয়ার জন্য কথাটা বলল ।
মেরিন : নননা না আমি বাবার কাছে যাবো আমাকে যেতে দিন।
নীড় : তাহলে ভালোবাসি বা ঘৃণা করি বলো।
মেরিন : ঘৃণা করি । অনেক বেশি ঘৃণা করি ।
নীড় : হায়… আরেকবার।
মেরিন : আমি আপনাকে ঘৃণা করি।
নীড় : মন চায় বারবার শুনি ।
মেরিন : এবার আমাকে ছেরে দিন না…
নীড় : 😏। কেন?
মেরিন : আপনিই না বললেন যে ঘৃণা করি বললে ছেরে দিবেন ।
নীড় : কি বলেছিলাম মনে করে দেখো।
মেরিন: মানে?
নীড় : মানে গাড়ির কাছে চলে এসেছি ।
নীড় মেরিনকে গাড়িতে বসিয়ে drive করতে লাগলো।
মেরিন : কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? আহমি বববাবার কাছে যাবো। ছারুন আমাকে।
নীড় যেন কিছুই শুনতে পায়নি ।
.
বেশকিছুক্ষনপর…
গাড়ি থামলো।
নীড় নেমে মেরিনের জন্য দরজা খুলে দিলো ।
নীড় : নামো।
মেরিন : না আমি নামবো না। আমি বাবার কাছে যাবো ।
নীড় : নামতে বলেছি কিন্তু…
মেরিন : নননা না না আমি নামবোনা ।
নীড় : হায়রে।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে বের করে ভেতরের দিকে হাটা ধরলো। মেরিনতো লাফালাফি করতে লাগলো নামার জন্য । কিন্তু পারলোনা । নীড় তো পরম আনন্দে হাটতে লাগলো । একটুপরই মেরিন শুনতে
পেলো : বাবাই….
কবিরের কন্ঠ শুনে মেরিন সামনে তাকালো। দেখলো এটা খান বাড়ি ।
মেরিন : বাবা…. নামান আমাকে।
নীড় : ঘৃণা করি বলো ….
মেরিন : বাবা…
নীড় মেরিনকে নামালো। মেরিন দৌড়ে কবিরের কাছে গেলো ।
কবির : বাবাই তুমি ঠিক আছো … কতো চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম জানো … নিশ্চয়ই ও তোমাকে নিয়ে গিয়েছিলো ।
মেরিন : হ্যা বববাবা । ওই যে ওই লোকটা না খুনী। ১টা লোককে পশুর মতো করে মমমেরেছে । খুন ককরেছে । কককি যযযেন নননাম মমমমন মমমন…
নীড় : মনির…. মামা আমি মনিরকে জানে মেরেছি। যাই হোক পরে কথা বলছি। আগে মেরিনকে রাতের খাবার আর মেডিসিন খাইয়ে নেই।
কবির: দারাও ওখানে । নীলিমা মামনিকে রুমে নিয়ে যা ।
নীলিমা মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো।
দাদুভাই : এই খুনটুন করে কি প্রমান করতে চাইছো?
নীড় : এটাই যে আমি মেরিন বন্যার স্বামী… 😎
দাদুভাই : তু…
কবির : বাবা ওর সাথে কথা বলার কি দরকার ? জন…
জন এলো।
নীড় : wait guys…. my dear ডন….
তখন ডন সাথে ১টা lawyer ভেতরে ঢুকলো। lawyerটা মেরিনের।
দাদুভাই : মিস্টার রায় আপনি।
নীড় : yes নানাভাই।
দাদুভাই : আমাকে নানাভাই ডাকবেনা ।
নীড় : ok… সবাই শোনো তোমাদের ছোট্ট ১টা প্রশ্ন করি। ১ কথায় উত্তর দিবে। কেমন ? খান & চৌধুরী empire emperor কে? বলো বলো বলো…
সবাই : 😤😤😤।
নীড় : কি হলো বলো।
নিহাল : নীড় ন্যাকামো বন্ধ করে এখান থেকে চলে যাও।
নীড় : বাবা thats not done…. সম্রাটকে তার সম্রাজ্ঞ থেকে বের হতে বলছো? not done…
কবির : মানে?
নীড় : মানে খুব সহজ মা…..মাজান। মেরিন খান & চৌধুরী empire অনেক আগেই আমার নামে মানে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের নামে করে দিয়েছিলো। কারন আমি ছিলাম ওর জন্য সবথেকে মূল্যবান । আমার ভালোবাসা পেয়ে মানে আমি ওকে ভালোবাসলে সেই ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিয়ে আমাকে ফেলে দূরে চলে যাওয়ার plan ছিলো মেরিনের। এই শাস্তি মেরিন আমার জন্য নির্ধারন করেছিলো… আর তাই আগে ভাগেই সবকিছু ও আমার নামে করে দিয়েছিলো।এসব কিছুই নানা… i mean দাদুশশুড়ভাই জানতেন। তাইনা?
কবির : এগুলো কি সত্যি বাবা ?
দাদুভাই : ….
কবির : বলো বাবা…
দাদুভাই : হামম।
নীড় : মিথ্যা বলিনি আমি।
নিহাল :তুমি আর তোমার কথা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য না । ২মুখো বিষধর সাপকে তাও বিশ্বাস করা যায় তাও তোমাকে না ।
নীড় : thank you…. যাই হোক moral of the story হলো এই যে এখন আমি হলাম সম্রাট। আর সম্রাটকে তার সম্রাজ্ঞ থেকে বের করার ক্ষমতা কারো নেই ।তাইনা মিস্টার roy…?
রায় : হ্যা ।
নীড় : thank you… now get out please ….
রায় চলে গেলো।
নীড় : জন ডার্লিং এখন তো তুমি আমাকে বের করতে পারবেনা । infact কেউই পারবেনা । কিন্তু আমি ইচ্ছা করলে যে কাউকেই বের করতে পারি । but no worry… আমি কাউকেই বের করবোনা। ঢোকাবো ।
কবির : ঢোকাবে মানে ? কাকে ঢোকাবে ?
নীড় : এখনই দেখতে পাবে …. মামিমনি … 📢📢📢….
তখন কনিকা ভেতরে ঢুকলো।
.
কবির : তুমি ? তোমার সাহস কি করে হয় এ বাড়িতে ঢোকার ? বের হয়ে যাও এখনি। না হলে ঘাড় ধরে বের করবো ।
নীড় : আ আ আ … আগেই বলেছি আমার সম্রাজ্ঞে আমি যাকে ইচ্ছা ঢোকাতে পারি। তোমাদের কারো সমস্যা হলে তোমরা চলে যেতে পারো।
নিহাল : নীড়…
নীড় : yes daddy …
কবির : বেশি উরো না। ঝড়ে পরে যাবে।
নীড় : ok…
দাদুভাই-নিহাল-কবির যার যার রুমে চলে গেলো ।
কনিকা : এটা কি ঠিক করলে নীড় ?
নীড় : হয়তো হ্যা হয়তো না … মেরিনের কাছে ১টা জিনিষ শিখেছি মামিমনি… সেটা হলো যে শক্ত না হলে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করা যায়না । তাই এমনটা করা । আর তুমি আমি ২জনই ভুলের শিকার।
কনিকা : কোন মুখে মেয়েটার সামনে গিয়ে দারাবো বাবা …. অনেক বেশি অন্যায় করে ফেলেছি।
নীড় : অতীত ঘেটে লাভ নেই মামিমনি। তোমার চেয়ে আমার অপরাধটা অনেকগুন বেশি। তবুও তো আমি … যাই হোক । নিজর মমতা-ভালোবাসা-স্নেহ নিয়ে মেরিনের সামনে যাবে । আমাদের ভুলের মাশুল তো আমাদেরই দিতে হবে। তাইনা মামামনি…
কনিকা : হামমম।
.
সকালে…
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। মাথার মধ্যে কারো কোমল স্পর্শ অনুভব করলো। চোখ মেলে তাকিয়ে কনিকাকে দেখতে পেলো । হুরমুরিয়ে উঠে বসলো।
মেরিন : কককে আআআপনি? এখানে কি কককরছেন ? চচচলে যান…
নীড় : ইনি তোমার মা জান।
মেরিন : মমমা মমমাহ মমমা.. নননা। এটা আমার মা কককি করে হহহতে পারে ? বববাবাতো বলেছে যে আমার মা মরে গিয়েছে ।
নীড় : মিথ্যা কথা। মামা মিথ্যা কথা বলেছে।
মেরিন : নননা। আআমার বববাবা মমমিথ্যা কথা বলতে পারেনা । আপনি মিথ্যা কথা বলছেন।
নীড় : আমিই সত্যি বলছি । বিশ্বাস না হলে বাবাকে জিজ্ঞেস করে দেখো। যাও ।
মেরিন : বাবা বববাবা…
কবির ছুটে এলো ।
কবির : কি হয়েছে বাবাই? ঠিক আছো তুমি ?
মেরিন : হামমম আআআমি ঠিক আছি। বববাবা ওই মহিলাটা কে ? উউউনি বলছেন যে তিনি নাকি আআআমার মা। তুমি না বলেছো যে আআআমার মা মরে গিয়েছে। তাহলে? তাহলে ওই মহিলাটা কে?
কবির : কেউ না। ওই মহিলাটা কেউ না । ওই মহিলা ১টা ডাইনি। ডাইনি মহিলা …
কনিকা : কবির … 😢
কবির : খবরদার আমার নাম নিবেনা। বাবাই চলো fresh হয়ে নিয়ে breakfast করবে । চলো।
নীড় : দারাও মামা। আমার বউ আমাকে ওর কাজ করতে দাও । তুমি আসতে পারো।
কবির ; just shut up…
নীড় : মামা… রাগারাগি করতে চাইনি তবুও কেন রাগ ওঠাতে চাইছো ? যাওনা প্লিজ।
কবির : ঠিক করছোনা ।
নীড় : আমি জানি …
কবির চলে গেলো । নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো । মেরিন দূরে সরে গেলো । নীড় বাকা হাসি দিয়ে ১টানে মেরিনকে নিজের কোলে বসালো। এতে মেরিনের চুল গুলো মেরিনের মুখে এসে পরলো। নীড় মেরিনের চুল গুলো কানের পিছে গুজে দিলো।
নীড় : রাতে মামিমনি মানে শাশুড়িমা তোমার সাথে ছিলো। সকাল পর্যন্ত ছিলো। তাই good morning kiss টা করতে পারিনি … তাই এখন করে নিচ্ছি ।
বলেই ঝট করে মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো । মেরিন আরো ১বার নিজেকে ছারানোর বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু পারলোনা।
.
একটুপর …
নীড় মেরিনকে কোলে বসিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে । actually জোর করে খাইয়ে দিচ্ছে । আর না চাওয়া সত্বেও মেরিন সেগুলো খাচ্ছে । নীড় মেরিনকে ১টা ৫-৭বছরের বাচ্চার মতো ট্রিট করছে । মাত্রাতিরিক্ত care করছে ।
মেরিন : ডডডক্টর তপু কককোথায়?
তপুর নাম শুনে নীড়ের মেজাজ গরম হয়ে গেলো । তবুও মাথা ঠান্ডা রেখে
বলল : কেন তপুকে দিয়ে কি হবে ?
মেরিন : উউউনাকে মমমারবেন না পপপ্লিজ । উনি খখখুব ভভভালো ।
নীড় মেরিনের চুল বাধতে বাধতে
বলল : জান… 1st… তুমি এই “উনি” কথাটা কেবল আর কেবল আমার ক্ষেত্রে বলবে । আর 2nd তপুর কথা আর কখনো বলবেনা । তোমার মুখে কেবল আমার নাম। মানে নীড়ের নাম থাকবে। তুমি নীড়ের মেরিন…
মেরিন : কককেন ? আমি ডডডক্টর তপুর নাম নিবো । উনি ভালো। আপনি পচা। আপনি খুনি। ডক্টর তপু খখখুব ভালো polite…. আআআপনি রাগী …
নীড় :আমি রাগী?
মেরিন : হামম।
নীড় : right…. আমি রাগী। ভীষন রাগী।
.
রাতে…
নীড় : জান তুমি ২কিলোমিটার দূরে শুয়ে থাকার কারন জানতে পারি ?
মেরিন : 😒।
নীড় কিছু না বলে মেরিনকে টেনে বুকে জরিয়ে নিলো ।
মেরিন : ছারুন আমাকে।
নীড় :কেন কেন ? ছারবো কেন ?
মেরিন : আপনার স্পর্শ আমার ভালো লাগেনা । ভয় করে … ঘৃণা লাগে।
নীড় : তাই? ভালো খুবই ভালো। কিন্তু কিছু করার নেই জান…. you have to tolerate me…
দেখতে দেখতে ১মাস কেটে গেলো । এই ২মাসে নীড়ের পাগলামো শতগুন বেরে গিয়েছে । আর নীড়ের প্রতি মেরিনের ঘৃণা-অবহেলা বেরেছে হাজারগুন … যা পলকে পলকে নীড়কে আঘাত করে । পরমুহুর্তেই নীড় মেরিনকে দেয়া কষ্ট গুলো মনে করে নিজের কষ্টের কথা ভুলে যায়। আর মেরিন নীড়ের ভালোবাসা দেখে অবাক হয়।
.
মেরিন ছাদে দারিয়ে আছে । আকাশপানে মুখ করে।
মেরিন মনে মনে : লোকটাকে এতো অপমান করি তবুও সে আমার এতো যত্ন করে। সবার সাথে কতো পচা ব্যাবহার করে। কিন্তু আমার সাথে কতো ভালো ব্যাবহার করে। উনি এমন কেন? কেন কেন কেন ? ডডডক্টর তপু… তাকেও কি মেরে ফেলেছে ?
তখন নীড় এসে মেরিনকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো । মেরিন ভয় পেয়ে গেলো। নীড়ের চেহারা না দেখেই পেছনে ঘুরে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
মেরিন : সাহস কি ক…
দেখলো নীড় দারিয়ে আছে। মেরিন ভয় পেয়ে গেলো। নীড় চোখ বন্ধ করে আছে। মেরিন লম্বা লম্বা ঢোক গিলতে লাগলো।
নীড় মনে মনে : কতোদিন পর মেরিন রাগ করলো …
নীড় চোখ মেলে মেরিনের দিকে তাকালো । মেরিন ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো । নীড় মুচকি হেসে মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো… মেরিনের নাকে নাক ঘষে
বলল : থাপ্পরটা খুব রোমান্টিক ছিলো জান…
মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : বলো তো জান ৭দিন পরে কি ?
মেরিন : কককি?
নীড় : anniversary … 2nd anniversary আমাদের বিয়ের।
মেরিন : ববববিয়ে….? anniversary ….? বববিয়েহ anniversary …
মেরিনের আবার দুনিয়াদারি ঘুরতে লাগলো। মাথায় ব্যাথা করতে লাগলো। আজকে ২মাসপর মেরিনের এমন লাগতে লাগলো। মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো ।
.
নীড় : মেরিন…. মেরিন…. জান…
নীড় ডক্টর ডাকলো। কিন্তু ডক্টর মেরিনের জ্ঞান ফেরাতে পারলোনা। ডক্টর advice দিলো যে ডক্টর মেরিনের regular treatment করে মানে তপু তাকে ডাকতে। কারন তপু মেরিনের সকল মেডিকেল history জানে… আর কোনো উপায় না পেয়ে নীড় তপুকে বন্দী দশা থেকে মুক্তি দিয়ে মেরিনের সামনে আনলো। আর যেহেতু তপু মেরিনের সবটা জানে তাই মেরিনের জ্ঞান ফেরাতে সক্ষম হলো । মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলে তাকালো। উঠে বসলো। নীড় মেরিনকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো।
নীড় : আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম জান। i am sorry…
নীড় মেরিনকে ছেরে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মেরিনের মুখে হাসি দেখতে পেলো। মেরিনের মুখে হাসি দেখে নীড়ের মন আনন্দে ভরে উঠলো। কারন অনেকদিনপর মেরিন হাসছে।
নীড় : জান….
মেরিন : ডক্টর তপুহ….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 24
writer : Mohona
.
মেরিন : ডক্টর তপুহ…
মেরিন ছুটে তপুর কাছে গেলো ।
মেরিন : ডক্টর তপু আপনি ঠিক আছেন? ওই লোকটা আপনার কিছু করেনি তো?
তপু : না। আমি ঠিক আছি। এখন তোমার কেমন লাগছে ?
মেরিন : ভালো।😊।
নীড় দাত কটমট করতে লাগলো। ওদের দিকে এগিয়ে গেলো। মেরিনের কাধে হাত রাখলো । মেরিন চমকে উঠলো।
নীড় দাতে দাত চেপে বলল : ডক্টর তপু you may go now. its our bedroom …. public visitor place নয়। যে treatment করে দারিয়ে থাকবে। out please …
তপু নীড়ের কথা ignore করে
বলল : নিজের খেয়াল রেখো । কেমন?
মেরিন মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল : হামম।
তপু মেরিনের ঠোটের কোনে হাসি দেখে থেমে গেলো ।
নীড় ঝারি মেরে বলল : i said go…
বলেই পকেটে থাকা টুনি ট্যাক ছুরিটা দিয়ে তপুর হাতে আঘাত করলো ।
তপু চলে গেলো । নীড়ের ঝারিতে আর আঘাত করাতে মেরিন ভয়ে কাজুমাজু হয়ে গেলো।
.
নীড় : অনেক রাত হয়ে গিয়েছে জান। চলো ঘুমাবে । এমনিতেই আজকে তোমার শরীরটা ভালোনা ।
মেরিন : …
নীড় : কি হলো? এতো ভয় পাচ্ছো কেন?
মেরিন : আপনি পচা।
বলেই মেরিন দৌড়ে গিয়ে blanket মুরি দিয়ে শুয়ে পরলো। ১টুও ফাক রাখেনি। যদি নীড় পিটানি দেয় । নীড়ের ভীষন হাসি পেলো। নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে শুয়ে পরলো ।
নীড় : আহারে আজকে আমার কপালে blanket নেই।
মেরিন : 😶।
নীড় প্রথমে ১টা blanket সরালো।
মেরিন : আম্মু…
এরপর নীড় মেরিনকে কাছে টেনে বুকে জরিয়ে নিলো।
মেরিন : আপনি ডডডক্টর তপুকে মমমারলেন কেন?
নীড় : কারন ও তোমার check up করার পর ঠ্যাটার মতো এখানেই দারিয়ে ছিলো । তুমি ওকে দেখে হেসেছো । তাই …
মেরিন : আরে হেসেছি আমি আর মারলেন তাকে….? আমাকে মারা উচিত ছিলো।
নীড় : তোমাকে আর আঘাত করার সাহস আমার নেই। let me sleep …
.
ওদিকে…
কনিকা : কবির…
কবির : তুমি আমার রুমে পা রেখেছো কোন সাহসে?
কনিকা : আমাকে কি ১টা বার ক্ষমা করা যায়না?
কবির : ক্ষমা? ক্ষমা মানে কি জানো? জানো তুমি? নিজে ১টা নাবালিক বাচ্চাকে ক্ষমা করতে পারোনি আর নিজে ক্ষমা চাইছো কোন মুখে?
কনিকা : তততুমি তো জানো আমি অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দেইনা । আর আমি ভেবেছিলাম যে যদি এতোবড় ভুলের জন্য ওকে ক্ষমা করি তবে ওর সাহস বেরে যাবে । আর জেল থেকে বের হওয়ার পর ও এমন উগ্র হয়েছিলো যে কারো কথাই শুনতো না। হ্যা আমার দোষ ছিলো নিজের সন্তানের ওপর বিশ্বাস রাখা । কিন্তু আমি রাখিনি। আমার উচিত ছিলো মাথা ঠান্ডা রেখে ভালোভাবে মেরিনের সাথে কথা বলা। বলিনি… সত্যিটা বিবেচনা করে দেখার দরকার ছিলো। দেখিনি… নিজের মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছি… আমাকে শাস্তি দাও। কিন্তু আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিওনা।। আমি তোমাকে ভীষন ভালোবাসি ।
কবির হা হা করে হাসতে লাগলো।
কবির : আমার মেয়েটাও নীড়কে ভীষন ভালোবাসতো । কিন্তু শুধু তোমার জন্যেই আজকে আমার বাবুইপাখির এই করুন পরিনতি। ঘৃণা করি তোমাকে। ভীষন ঘৃণা । চলে যাও আমার চোখের সামনে থেকে।
.
অন্যদিকে…
তপু : মেরিন কি তবে আমাকে like করতে শুরু করেছে? নীড়কে ভুলে … না না এখন তো কেবল ওর স্মৃতিশক্তি নেই বলে । স্মৃতি ফিরে এলে তো নীড়কেই ভালোবাসবে । না না মেরিনের memory যাওয়ার আগে থেকেই তো মেরিন নীড়কে ঘৃণা করে।
রাজু : স্যার i have a plan….
তপু : plan ? কিসের plan?
রাজু : মেরিন ম্যামের মনে চিরকাল আপনার থাকার plan ?
তপু : মানে ?
রাজু : মানে খুব সহজ। আপনি মেরিন ম্যামের মেডিসিনটা পাল্টে দিন। যেন মেরিন ম্যামের memory না ফিরে আসে । মানে ম্যাম সুস্থ থাকবে কিন্তু memory থাকবেনা ।
তপু : রাজু… 😠…
রাজু : sssorry sir… আসলে আমি যা বলেছি আপনার জন্যেই বলেছি । কারন আমি জানি আপনি ম্যামকে কতোটা ভালোবাসেন ।
.
পরদিন …
মেরিন সিরি দিয়ে নামছে তখন দেখলো যে দাদুভাইয়ের হাত থেকে রক্ত পরছে। আর পাশেই নীড় পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে। অন্যদিকে মুখ করে। মেরিন মনে করলো নীড়ই দাদুভাইয়ের হাত কেটেছে । কিন্তু আসলে ফল কাটতে গিয়ে দাদুভাইয়ের হাত কেটেছে । নীড় ধরতে গেলে দাদুভাই খবরদার বলে দিয়েছে । দাদুভাইয়ে হাত কাটা দেখে নীড়ের ভীষন কষ্ট হচ্ছে । তাই অন্যদিকে মুখ করে রেখেছে ।
মেরিন : দাদুভাই…
দৌড়ে দাদুভাইয়ের কাছে গেলো। ব্যান্ডেজ করে দিলো ।
মেরিন : আপনি কি মানুষ ? এই বয়ষ্ক লোকটার হাত কেটে রক্ত বের করতে লজ্জা করেনা? ছিঃ…
নীড় যেন আকাশ থেকে পরলো। মেরিন বলছো কি এসব ?
দাদুভাই : দিদিভাই তুমি ভুল ভ…
মেরিন : ভুল করলে বেশ করেছি । এই ভুলের জন্য যদি উনি আমাকে মেরে ফেলে তো ফেলবে। এটা কোনো ভুল না প্রতিবাদ । উনির একের পর ভুল করেই যাবে আর কেউ কিছু বলবোনা? মুখ বুঝে সহ্য করবো? no never… অসভ্য বাজে লোক। পশুর থেকেও নিকৃষ্ট । আপনার জায়গায় আমি থাকলে না মরে যেতাম। কারো মন যে এতো কুৎসিত হতে পারে সেটা আপনাকে না দেখলে জানতাম না । বুক কাপলোনা এমনটা করতে। চলো তো দাদুভাই rest করবে ।
নীড়ের চোখের কোনে পানি চলে এলো । তখন শুনতে
পেলো : এতোটুকু ঘৃণা মেনে নিতে পারছোনা …
নীড় পিছে ঘুরলো । দেখলো নিহাল দারিয়ে আছে ।
নিহাল : এই ২-৩ মাসের ঘৃণা মেনে নিতে এতো কষ্ট হচ্ছে । অথচ মেয়েটা ১২-১৩ বছর এর থেকে হাজারগুন ঘৃণা-অপবাদ মেনে নিয়েছে… ভেবে দেখেছো?
নীড় কোনো জবাব না দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো । নীড় উন্মাদের মতো drive করছে । এতোটুকু কটু কথা ওর সহ্য হলোনা। আর মেরিন কতো কি সহ্য করেছে । নিজের নানাভাইকে ছোট্ট আঘাত করার অপবাদ মেনে নিতে ওর কতোটা কষ্ট হচ্ছে। আর মেরিন… মেরিন তো নিজেক বাবার খুনের অপবাদ নিয়ে এতোগুলো বছর কাটালো। জেল খাটলো। নিজের ছেলেবেলা হারিয়ে ফেলল।
দাদুভাই : দিদিভাই কি করলে এটা বলো তো?
মেরিন : ঠিকই করেছি॥ উনার সাহস কি করে হয় তোমাকে আঘাত করার। হাত কাটার?
দাদুভাই : নীড় কিছুই করেনি।
মেরিন : মানে?
দাদুভাই : মানে হলো এই যে ফল কাটতে গিয়ে আমার হাত কেটে গিয়েছে। ও আমার হাতে ব্যান্ডেজ করতে এসেছিলো। আর আমি যা তা বলেছি । তুমি অকারনে এমনটা বললে।
মেরিন : বেশ করেছি। উনি খুনী। তাই ওনাকে এমন করেই বলার দরকার । যাই হোক। তুমি কেন ফল কাটতে গেলে বলো তো… সসসবাই কি মরে গেছে নাকি?
.
সকাল গরিয়ে রাত হয়ে গেলো । নীড় এখনও ফিরলোনা ।
মেরিন : নীড় এখনও ফিরলো না কেন ? এই কদিনে তো উনি ১দিনও এমন করেনি। তাহলে ? এখনও আসছেন না কেন ?
মেরিন বারান্দায় দারিয়ে বাহিরের দিকে দেখছিলো । আর এগুলো ভাবছিলো । তখন ঝড়ের বেগে নীড় এসে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো । মেরিন নীড় স্পর্শ চিনে গেছে। তাই react করলোনা । কিন্তু মেরিন বেশ বুঝতে পারছে যে নীড় কান্না করছে । স্মৃতিশক্তি না থাকলেও নীড়ের কান্না মেরিনের সহ্যসীমার বাইরে ।
মেরিন : রাত দদদুপুরে কককি ঢঢঢং শুরু করেছেন। ছছারুন। ঘুমাবো।
নীড় কোনো রকমে নিজেকে সামলে নিয়ে চো়খের পানি মুছে মেরিনকে ছারলো।
নীড় : রাতে খেয়েছো? মেডিসিন নিয়েছো?
মেরিন : জানিনা। huh…
বলেই মেরিন গিয়ে শুয়ে পরলো। fresh হয়ে নীড়ও শুয়ে পরলো । তবে আজকে আর মেরিনকে বুকে জরিয়ে নিলোনা। মেরিন বেশ অবাক হলো।
মেরিন মনে মনে : ভালোই হয়েছে। আজকে একটু আরামসে ঘুমাতে পারবো।
কিন্তু দেড় ঘন্টার মধ্যেই মেরিনের ধারনা ভুল প্রমানিতো হলো । কারন আরামসে ঘুম তো দূরের কথা ঘুমই এলোনা মেরিনের।
মেরিন মনে মনে : এই খুনী লোকটা কি বিদঘুটে অভ্যাস করে দিয়েছে এই কদিনে আমার …
নীড়েরও ঘুম আসেনি। ও ঘুমানোর অভিনয় করে মেরিনের কান্ড কারখানা দেখছে। আর মনে মনে হাসছে । দেখে রাত ২টা বেজে গিয়েছে । মুচকি হেসে ১টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো । কপালে কিস করলো ।
মেরিন : 😒।
নীড় : জান… আমার বুকে মাথা না রাখলে আপনি ঘুমাতে পারবেননা । হ্যা ওই কয়দিন মেডিসিনের প্রভাবে ঘুমিয়ে পরতে । কিন্তু normally তুমি ঘুমাতে পারবেনা জান … আর না আমি পারবো । নাও এখন ঘুমিয়ে পরো … i love you….
.
২দিনপর …
তপু নিজের মন মস্তিষ্কের সাথে লড়াই করে রাজুর কথাই মেনে নিলো। ও ঠিক করলো সেই মেডিসিন prescribe করার যেগুলো নিলে কখনো মেরিনের memory ফিরবে না। ও নীড়কে ফোন করলো।
নীড় : হ্যালললো ডক্টর তপু…
তপু : হ্যালো । নীড় ১টা কথা ছিলো ।
নীড় : কোনো শুভক্ষনের অপেক্ষা না করে বলে ফেলো।
তপু : না মানে মেরিনের regular check up করানোর দরকার। কিছু test করাতে হবে। দেখতে হবে যে মেডিসিন গুলো effect করছে কিনা ? তুমি যদি চাও তো আমার কাছেও আনতে পারো। না হলে অন্য ডক্টরের কাছে নিতে পারো । আমার কাছে মেরিনের সুস্থ থাকাটা জরুরী ।
নীড় : you know what তপু… ? you are the necessary evil.. আজকে বিকালেই আসছি ।
তপু : ok…
বিকালে নীড় মেরিনকে নিয়ে হসপিটালে গেলো । রিপোর্ট টিপোর্ট করালো। তপু prescription দেয়ার সময় ওর হাত কাপতে লাগলো। নীড় বিষয়টা লক্ষ্য করলো ।
নীড় : তপু তোমার হাত কাপছে কেন?
তপু : কোথায় না তো?
নীড় : চলো জান ।
তপু : মেরিন ..
মেরিন : জী ডক্টর তপু…
তপু : take care…
মেরিন : হামম।।😊। আপনিও ভালো থাকবেন।
নীড় : চলো জান….
ওরা পৌছালো চৌধুরী বাড়িতে।
মেরিন : এএএটা কককোন জায়গা ?
নীড় কোনো কথা না বলে মেরিনকে কোলে তুলে ভেতরে নিয়ে গেলো। ভেতরে ঢুকে মেরিন দেখলো সবাইই আছে।
নীড় : আজকে থেক সবাই এখানেই থাকবে। শশুড়বাড়িতে থাকা কি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে মানায়?
.
রাতে…
কনিকা মেরিনকে খাবার খাইয়ে মেডিসিনি খাওয়াতে নিলো । কোথায় থেকে নীড় ঝড়ের বেগে ছুটে এসে কনিকার হাত থেকে ঔষধ ফেলে দিলো ।
কনিকা : কি করলে এটা নীড়? ফেললে কেন?
নীড় : মামিমনি এই মেডিসিন ভুল মেডিসিন।
কনিকা : মানে ?
নীড় : মানে ডক্টর তপু মেরিনকে ভুল মেডিসিন prescribe করেছে। যেন মেরিন কখনো ঠিক না হয়।
কনিকা : কি বলছো কি?
নীড় : হ্যা ।
মেরিন : stop it নীড়। খামোখা ডক্টর তপুর ওপর অপবাদ লাগানো বন্ধ করুন।
নীড় : আমি অপবাদ লাগাচ্ছি ?
দাদুভাই : অবশ্যই । অপবাদই তো লাগাচ্ছো । তপু কোনোদিনও দিদিভাইয়ের ক্ষতি চাইবেনা।
নীড় : তাহলে কি আমি ক্ষতি চাই মেরিনের…
নিহাল : i think সবাই জানে মামনির ক্ষতি কে চায়…
নীড় : তোমরা আজকে তপু তপু করছো । তপু বলতে তোমরা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছো। আমি এইমাত্র prescription টা অন্য ডক্টরকে দেখিয়ে এলাম। তিনিই সব বললেন। সেই ডক্টরকে জিজ্ঞেস করে দেখো ।
কবির : টাকা দিয়ে সব হয় ।
নীড় : ওওও…. right you are। আসলে ভুলটা আমারই। করতে থাকো তোমরা তপু তপু জপ…. আমি তো করবোনা । তবে হ্যা তপুর কাজের জন্য শাস্তিতো তপুকে পেতেই হবে। ডন… ডন…
ডন : yes sir…
নীড় : আধা ঘন্টা সময় দিলাম তপুকে এখানে নিয়ে এসো ।
ডন : sure sir…
ডন গেলো।
নীড় : তোমাদের সকলের ভালোবাসার তপুকে আমি তোমাদেরই সামনে শাস্তি দিবো।
মেরিন : কককি করবেন আপনি ডক্টর তপু সাথে?
নীড় : দেখতেই পাবে।
মেরিন : খখখুন?
নীড় : বললাম তো দেখতেই পাবে ।
মেরিন : ppplease ডক্টর তপুকে মারবেন না। please ….
নীড় : 😏
.
আধাঘন্টাপর…
সবার হাত-পা বাধা । সবাই দর্শকের আসনে বসে আছে । ডন তপুকে নিয়ে এলো । তপুর মুখে টেপ দেয়া । তপু বসে আছে। নীড় তপুর চারদিকে ১বার ঘুরলো। এরপর তপুর ডান হাতটা ধরলো।
নীড় : এই হাত দিয়ে তুই আমার জানকে ভুল ঔষধ prescribe করেছিস… এই হাত দিয়েই… তাইনা …?
বলেই তপুর হাত দিলো ১টা মোচর । খট করে শব্দ হলো। ব্যাথায় তপুর জান যায় যায়।
মেরিন : ডক্টর তপু…
নীড় : chill জান… হাত তো এখনও করলামই না। কেবল ১বার মোচর দিলাম। হাজারটা মোচর দিবো ।
নীড় ৪-৫বার তপুর হাত মোচর দিলো। এরপর হাতটা কেটেই ফেলল। আর রক্ত দেখে মেরিন আবার অস্থির হয়ে গেলো । অজ্ঞান হয়ে গেলো ।
.
একটুপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। পাশেই নীড়কে দেখে ভয় পেয়ে উঠে বসলো ।
নীড় : জান… তু…
মেরিন : আআগে বারবেন না …
নীড় জান বলে মেরিনের হাত ধরতে গেলে মেরিন
বলল : dddon’t touch … আপনিহ খুনী। আপনি বাজে লোক।
নীড় : আমি জানি।দেখি দেখি তোমার জ্বর কমেছে কিনা?
মেরিন : একদম ধরবেন না আমায়। আপনি বাজে লললোক।
নীড় : ডক্টর তপু বুঝি ভালো ??? 😏।
মেরিন : অবশ্যই ভালো আপনার মতো নয় । আপনার স্পর্শ আমার ঘৃণা করে । আপনাকেও ঘৃণা করে।
নীড় : আমাকে মানলাম ঘৃণা করে। ভালো কাকে লাগে? সেটাও তপুকে?
মেরিন : হ্যা । তপু খুবই ভালো মানুষ.. তাই তাকে ভালো লাগে।
ভালো লাগে কথাটা শুনে নীড়ের রাগ উঠে গেলো।
নীড় : অনেক বলেছো মেরিন এবার থামো।
মেরিন : না থামবোনা। কি করবেন কি আপনি ? হ্যা?
মেরিন যা তা বলতে লাগলো। নীড় বারবার মেরিনকে থামতে বলল। কিন্তু মেরিন থামলো। ১পর্যায়ে রাগের মাথায় মেরিন
বলে ফেলল : ভালোইবাসি ডক্টর তপুকে …
ব্যাস আর কি লাগে ।
নীড় : enough …
মেরিন কেপে উঠলো। তবুও বলতে
লাগলো : ডক্টর তপুকে ভালোবাসি ভালোবাসি ভা…
আর বলতে পারলোনা । নীড় মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো । এরপর romance করতে লাগলো।
🥱🥱🥱।
romance বলতে নীড় নিজের রাগ কমাতে লাগলো । কিন্তু নীড়ের এই আচরন মেরিনের মনে আরো ঘৃনা বারিয়ে দিলো।
.
৪দিনপর …
রাত ১২টা…
মেরিনের ঘৃণা সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে । নীড় হাজারবার sorry বলেছে । তবুও লাভ হয়নি । নদীর ওপর নীড়-মেরিন। মেরিন নীড়কে পেছন দিয়ে দারিয়ে আছে ।
নীড় : এখন ১৯শে নভেম্বরের ১ম প্রহর। happy married anniversary জান… অবাক লাগছে যে আমাদের বিয়ের ২বছর হয়ে গেলো । ২বছর ? না আসলে তো ১৩বছর। এই ১৩বছরের লম্বা সময়ে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে । তুমি অনেক কিছু সহ্য করেছো। হাজার অপবাদ , হাজার ঘৃণা , হাজার অপমান … অনেক কিছু সহ্য করেছো । কিভাবে করেছো জানিনা। আমি তো এই ২-৩মাসেই হাপিয়ে উঠেছি … যাই হোক ওই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে তোমাকে ১টা কথা বলতে চাই… যেটা কোনোদিনও তেমন করে তোমাকে বলা হয়নি … হয়তো তোমার মন শুনতে চাইতো …
মেরিন : …
নীড় : ভালোবাসি … অনেকবেশি ভালোবাসি তোমাকে।
নীড়ের মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনে । মেরিনের বুকটা ধুক করে উঠলো ।
নীড় : একটু এদিকে ঘুরবে প্লিজ…
মেরিন ়ঘুরলোনা । তাই নীড়ই মেরিনের মুখোমুখি গিয়ে দারালো ।
নীড় : তোমার মতো সহ্যসীমা আমার নেই। ঘৃণা সহ্য করার ক্ষমতাও আমার নেই। আমি কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিনা তুমি এতো কি করে সহ্য করেছো ।
নীড় গান বের করে মেরিনের হাতে দিলো।
নীড় : সময় আবার উল্টো ঘুরে গেলো ।তবে আজকে তোমার জায়গায় আমি আর আমার জায়গায় তুমি… এই গানটা লোড করাই আছে । shoot me… গুলি করো আমাকে। মেরে ফেলো। সব ঘৃণার অবসান করো।
কথাটা শুনে মেরিনের বুকটা কেপে উঠলো ।
নীড় : মারো আমাকে।
মেরিনের ক্ষমতা নেই নীড়কে shoot করার। মেরিন গানটা পানিতে ফেলে দিলো ।
মেরিন : আমি আপনার মতে খুনী নই যে খুন করবো…
নীড়ও এই কথাটাই ১দিন মেরিনকে বলেছিলো।
মেরিন : আপনি আমার হাতে মৃত্যুও পাবেন না।
নীড় : …
মেরিন : চলুন। বাসায় ফেরা যাক।
২জন মাঝ নদী থেকে তীরে এলো। নীড় car start দিলো। নীড় drive করতে লাগলো । চোখ দিয়ে পানি ঝরছে । হাজার চেষ্টা করেও থামাতে পারছেনা । নীড়ের চোখের পানি মেরিনের বুকে তুফান তুলেছে ।
.
কিছুক্ষনপর …
গাড়িটা থেমে গেলো। কারন tire puncture হয়ে গেলো। ২জন গাড়ি থেকে নামলো । নীড় change করতে লাগলো । মেরিন দেখলো জোনাকির মেলা । একে পূর্নিমার রাত । আরেকদিকে ঝাকে ঝাকে জোনাকির আলো। যে কারোই মন ভরে উঠবে । মেরিনের মনটা ভরে উঠলো। মেরিন জোনাকির পিছে ছুটতে লাগলো। নীড় নিজের কাজে ব্যাস্ত তারওপর মনটাও ভীষন খারাপ । গভীর রাত হলেও highway হওয়াতে গাড়ি টারির আনাগোনা আছে। সেই সাথে বড় বড় ট্রাক-লড়িরও আসা যাওয়া আছে । মেরিন খেয়ালই করেনি যে ১টা ট্রাক ওর সামনে চলে এসেছে । আর যখন দেখলো তখন ভয়ে জমে গেলো । চোখ বন্ধ করে নিলো । পরমুহুর্তেই ১টা ধাক্কা অনুভব করলো। ঠিক হয়ে দারিয়ে পিছে ঘুরতেই দেখলো নীড়ের রক্তাত্ব দেহটা রাস্তার মাঝখানে পরে আছে ।
মেরিন : নীড় …
মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিনের মুখ দিয়ে বেরিয়ে
এলো : জানহ্….
মেরিনের মুখে জান শুনে নীড় ১টা হাসি দিয়ে জ্ঞান হারালো। নীড়ের এমন অবস্থা দেখে মেরিনের কেন যেন সবটা মনে পরে গেলো ।
😒😒😒।
.
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 25
writer : Mohona
.
নীড়ের এমন অবস্থা দেখে মেরিনের সবটা মনে পরে গেলো । নীড়কে হসপিটালে নিয়ে গেলো ।
ডক্টর : its an accident case… আমরা patient কে admit করতে পারবোনা। আগে police station এ রিপোর্ট করে আসুন…
মেরিন : ডডডক্টর আমি সব করবো । আগে আপনি প্লিজ treatment start করুন…
ডক্টর : i am sorry mam… কিন্তু পারবোনা । patient ম…
মেরিন ডক্টরের কলার ধরলো।
মেরিন : এই ডক্টর এই…. আমার নীড়ের কিছু হতে পারেনা… যদি এখন এই মুহুর্তে তুই আমার নীড়ের treatment start না করিস তাহলে তোর treatment করেও কেউ বাচাতে পারবেনা।
ডক্টর : আজব তো। আআপনি এইসব হহুমকি দিতে পারেননা। আপনাকে পুলিশে দিতে বাধ্য হবো।
মেরিন : বাংলাদেশে এমন কোনো জেল নেই যেটা মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে বন্দী করে। যেটা বলছি সেটা কর। না হলে জানে মেরে ফেলবো ।
মেরিনের হুংকারে সবাই কেপে উঠলো।
ডক্টর : আপনিই মেরিন বন্যা …
মেরিন এমন করে তাকালো যে ডক্টর আর কোনো প্রশ্ন না করে treatment শুরু করলো । মেরিন OT এর বাইরে বসে রইলো ।
.
মেরিনের চোখের সামনে বারবার নীড়ের রক্তাত্ব অবস্থাটা ভেসে উঠছে ।
মেরিন : আপনার কিছু হতে পারেনা নীড়। আপনি কেবল আর কেবল আমার নীড় । আপনার ওপর কেবল আমার অধিকার । এমনকি আপনার মৃত্যুর উছিলা হওয়ার অধিকারও অন্যকারো নেই। সেটাও কেবল আমার আর আমার অধিকার । আপনাকে বাচতে হবে নীড়… প্লিজ … আমাকে ছেরে যাবেন না।
তখন নার্স এলো। ভয়ে ভয়ে কাপা কাপা কন্ঠে
বলল : মমম্যাম এখানে এই formটাতে sssignature কককরে দিন।
মেরিন : এটা কিসের form…
নার্স : মমম্যাম এএটা…
মেরিন : shut up… please … let me check …
মেরিন form টা পড়লো ।
মেরিন : আমার নীড়ের কিছু হতে পারেনা। got it…
বলেই মেরিন signature করে দিলো ।
.
একটুপর…
মেরিন দরজায় মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে। চোখ বন্ধ করে। তখন পরিবারের সবাই এলো।
কবির : বাবাই তুমি ঠিক আছো ?
কবিরকে দেখে মেরিনের মনটা আনন্দে ভরে উঠলো ।
মেরিন : বাব…
মনে মনে : না মেরিন… control your emotion … ১টা প্রশ্নের জবাব এখনও পাওয়া হয়নি…. বাবা কেন আমাকে shoot করেছিলো…
কবির : কি হলো বাবাই বলো। তুমি ঠিক আছো ?
মেরিন : হামম। আমি ঠিক আছি। কককিন্তু নীড়…
কবির : কি হয়েছে নীড়ের?
মেরিন : ভভভীষন critical situation বাবা… নীড়… 😥…
কবির : no worry মামনি … ঠিক হয়ে যাবে…
মেরিন : আমাকে বাঁচাতে গিয়ে উনিহ… 😭…
কবির : কান্না করেনা বাবুইপ… বাবাই… ডক্টর treatment করছে তো ।
একটুপর ডক্টর বেরিয়ে এলো ।
মেরিন : ডক্টর আ… নীড় কেমন আছে ?
ডক্টর : out of danger now… কিন্তু…
নিহাল : কিন্তু?
ডক্টর : উনাকে সকল mental pressure , stress দেয়া যাবেনা। অন্তত দুই এক মাসের মধ্যে তো একদমই না। সেটার খেয়াল রাখতে হবে।
কবির : হামম sure…
ডক্টর : excuse me …
.
১২ঘন্টাপর…
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। মেরিনের নাম নিলো। নার্স বেরিয়ে এলো ।
নার্স : নীড় স্যারের জ্ঞান ফিরেছে । মেরিন ম্যামকে দেখতে চাইছে ।
নীলিমা : আমার ছেলেকে দেখতে পারি ?
নার্স : নিশ্চয়ই।
মেরিন আগে ঢুকলো। নীড়ের মাথায়-হাতে-পায়ে ব্যান্ডেজ , মুখে oxygen mask দেখে মেরিনের মনটা কচকচ করছে । মেরিনের উপস্থিতি টের পেয়ে নীড় চোখ মেলল । হাসি দিলো । অনেক কষ্টে হাতটা বারিয়ে দিলো । বহু কষ্ট করে
বলল : মেহহরিহহন …
নীড়ের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো। মেরিন ধীর পায়ে নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো । বসলো । নিজের মাস্কটা খুলতে নিলো ।
মেরিন : কি করছেনটা কি? কষ্ট হবে তো নিঃশ্বাস নিতে ।
নীড় মেরিনের কথা উপেক্ষা করে মাস্কটা খুলল ।
মেরিন : পাগল হলেন নাকি ?
মেরিন মাস্কটা পরাতে নিলো । নীড় বাধা দিলো ।
নীড় : তুমিহ ঠঠঠিক আছোহ জান…
মেরিন : না মরে গিয়েছি… কি দরকার ছিলো এমন পাগলামো করার ? মরতে বসেছিলেন …
নীড় : ভভভালো হতো মমমরে গেলে । তততুমিহ ভভভালো থাকতো । i deserve a dangerous death … ভালো হতো ম …
মেরিন : চুপ করুন…
নীড় : এহকটু কককাছে আসো… মমমানে মমমুখটা কককাছে আনো।
মেরিন : মানে?
নীড় : আহনোনা …
মেরিন নিলো।
নীড় : আরো কাছে…
মেরিন নিলো। নীড় হাত ওঠাতে নিলো ।
মেরিন : কি হয়েছে?
নীড় : আহমার হহহাতটা তোমার মমাথায় রাখোনা …
মেরিন রাখলো।
নীড় : আরেকটু কককাছে আসো।
মেরিন গেলো। নীড় মুচকি হেসে মেরিনের চুলগুলো হালকা করে ধরে নিজের আরো কাছে নিয়ে মেরিনের ঠোটে হালকা করে ১টা কিস করলো । মেরিন অবাক হলো ।
নীড় : ভালোবাসি …
মেরিন : ….
নীড় : জজজানোহ.. তখন যখন তততুমি আমাকে জান বলে ডেকেছিলে আআহমি মমমনে কককরেছিলাম যে তোমার memory ফিরে এসেছে … কিন্তু এখন আমার ভালোবাসি কথাটা তোমার মুখে আনন্দ আনলোনা … পরিবর্তে ভালোবাসিও বললেনা… মমমনটা ভেঙে গেলো ।
মেরিন : …
কনিকা : নীড় বাবা… 😢।
নীড়-মেরিন দরজার দিকে তাকালো । কনিকাকে দেখে মেরিনের মাথায় রক্ত উঠে গেলো ।
মেরিন মনে মনে : control yourself মেরিন …
একটু মেলোড্রামা হলো।
.
রাতে …
নীড় ঘুমিয়ে আছে । মেরিন নীড়ের দিকে তাকিয়ে আছে । আর গত ২মাসের কথা কল্পনা করছে ।
মেরিন মনে মনে : আপনি অনেক খারাপ নীড়… বারবার আমাকে দুর্বল বানিয়ে দেন … আপনি প্রকৃতির নিয়মই পাল্টে দিয়েছেন। সাধারনত ছেলেরা পরে ধরে হেংলাদের মতো তাকিয়ে থাকে । আর আমার ক্ষেত্রে আমিই তাকিয়ে থাকি… কিন্তু আপনাকে কোনোদিনও আমি ক্ষমা করতে পারবোনা। আপনি আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছেন … আপনাকে ঘৃণা করাও আমার পক্ষে সম্ভবনা । এখন না কিছুদিন যাক … এখন আমি একটু memory না থাকার নাটকটা চালিয়ে যেতে হবে । কিন্তু মিসেস খান… তাকে কি করে সহ্য করবে …
.
৭দিনপর…
নীড় মনে মনে : কেন যেন মেরিনের আচরনে গত ২-৩মাসের মতো ঘৃণা দেখতে পাচ্ছিনা। অভিমান দেখতে পাচ্ছি … তোমার কি তবে স্মৃতি ফিরে এসেছে …?
মেরিন মনে মনে : নীড় কি বুঝে গিয়েছে যে আমার memory ফিরে এসেছে???
তখন নার্স এলো । নীড়ের ব্যান্ডেজ change করতে।
নার্স : ম্যাম আপনি তো স্যারের wife… kindly একটু help করবেন ?
মেরিন : sure…
বুকের দিকটার ওখানে ব্যান্ডেজ ঠিক করতে গিয়ে মেরিন কিছু লেখা দেখলো । মেরিন ঠিক মতো খেয়াল করে দেখলো যে “বনপাখি” লেখা । না লেখাটা মোটেও নতুন নয়। যথেষ্ট আগের । দেখেই বোঝা যাচ্ছে । নীড় বিষয়টা খেয়াল করলো ।
নীড় : কি দেখছো জান?
মেরিনের মাথাটা নরমালি চক্কর দিলো । নিজের চোখকে কেন যেন বিশ্বাস হলোনা । ধিরিম করে বসে পরলো ।
নীড় : ঠিক আছো মেরিন ?
নার্স : ম্যাম anything wrong?
মেরিন চোখ বন্ধ রেখেই
বলল: হামমম।
নীড় মনে করলো যে “বনপাখি” লেখাটা দেখে মেরিনের brain এ চাপ পরেছে তাই হয়তো এমনটা হয়েছে । কিন্তু মেরিনের brain এ না heart এ চাপ পরেছে তাই এমন হয়েছে । পরদিন নীড়কে রিলিজ দেয়া হলো ।
.
৩দিনপর…
রাতে…
নীড় : জান… একটু এখানে আসবে…
মেরিন গেলো ।
নীড় : বসো …
মেরিন বসলো ।
নীড় : ১টা কথা জানার ছিলো ।
মেরিন : বলুন ।
নীড় : তুমি আমার চোখের দিকে কেন তাকাচ্ছোনা কেন এই ৭-৮দিন ধরে …
মেরিন অবাক হলো ।
মেরিন : কিসের মধ্যে কি?
নীড় : তাহলে তাকাও ।
মেরিন তাকালো ।
মেরিন : হয়েছে?
নীড় : হামম । কেন যেন মনে হচ্ছে তোমার চোখে ঘৃণার আগুন নয় অভিমানের পাহাড় দেখা যাচ্ছে …
মেরিন : কককি যযযাতা বলছেন । আপনাকে আমি ঘৃণা করি ।
নীড় : সত্যি ?
মেরিন : হামমম ।
নীড় : একটু কাছে আসো তো … ১টা কাজ আছে ।
মেরিন : রাত হয়ে গিয়েছে ঘুমান… শুয়ে পরুন ।
নীড় : ok তাহলে একটু help করো ।
মেরিন নীড়কে help করতে গেলে নীড় মেরিনকে টেনে নিজের কাছে, খুব কাছে বসালো ।
মেরিন : কি করছেনটা কি?
নীড় মেরিনের কপালে কিস করলো।
নীড় : তোমার সবকিছু মনে গিয়েছে । তাইনা?
মেরিন : মনে পরেছে মানে? কি মনে পরবে?
নীড় : অতীত।
মেরিন : অতীত কিসের অতীত?
নীড় : অতীত মানে অতীত । স্মৃতিশক্তি ফিরে এসেছে । সব মনে পরেছে বলেই তুমি আমার খেয়াল রাখছো …
মেরিন : কি পাগলের প্রলাপ বকছেন। কিসের অতীত … কিসের স্মৃতি … পপপাগল হলেন?
নীড় : ঠিকই বলছি । যদি তেমনটা না হয় তবে তুমি আমার সেবা কেন করছো ? মেরিন বন্যা নীড়ের কষ্ট সহ্য করতে পারেনা ।
মেরিন : আপনি পুরোই পাগল হয়ে গিয়েছেন । যা করছি সেটা আমার কর্তব্য। thats all… আর তাছারাও আমি আপনার মতো খুনী নই যে পশুর মতো ব্যাবহার করবো। খুন করা আপনার ধর্ম আমার না। আর আমি যা করছি তা কেবল কৃতজ্ঞতার জন্য। তততাছারা আর কিছুই না ।
নীড় : আচ্ছা। ? 😏।
মেরিন : হামম।
নীড় : তাহলে আমার হাত রেখে বলো যে তোমার কিছু মনে পরেনি … তোমার স্মৃতির পাতায় আমি নীড় নেই…
মেরিন : ….
নীড় : কি হলো বলো …
মেরিন : …
নীড় : বলতে পারবেনা । কারন ত…
নীড়কে অবাক করে মেরিন নীড়ের মাথায় হাত রাখলো ।
মেরিন : এই আপনার মাথায় হাত রেখে বললাম যে আমার স্মৃতির পাতায় কোথাও “এই” নীড় নেই …
মেরিনের কথাটা শুনে নীড়ের মনটা ভেঙে গেলো ।
নীড় মনে মনে : ভেবেছিলাম তোমার সব মনে পরেছে । কিন্তু না … আবারও আমিই ভুল । আমার ভয়ংকর মেরিন কখনো আমার মাথায় হাত রেখে মিথ্যা বলতে পারেনা …
মেরিন মনে মনে : হামম ঠিক । আপনার মাথায় হাত দিয়ে মিথ্যা বলতে পারবোনা। বলিও নি । আমার স্মৃতির পাতায় যে নীড় আছে সেই নীড় আর এখন আমার সামনে যে নীড় বসে আছে তাদের ২জনের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য । ওই নীড়ের ফিদরত ছিলো আমাকে ধোকা দেয়ার। বুঝতে পারছিনা এই নীড় কেমন ? তবে আগের নীড়ের কাছে থেকে শেখা ছলনা নতুন নীড়ের ওপর প্রয়োগ করবো ।
মেরিন : বিশ্বাস হলো ?
নীড় : …
মেরিন : বিশ্বাস হলো ….
নীড় : আ… হামমম।
মেরিন : ঘুমিয়ে পরুন …
.
পরদিন…
কনিকা সিরি বেয়ে নিচে নামছে। পা পিছলে পরে গেলো ।
কনিকা : আহ…
নীলিমা : ভাবি …
নীলিমা ছুটে এলো ।
নীলিমা : ভাবি ঠিক আছো তুমি? পরলে কি করে?
কনিকা ব্যাথার চোটে কথা বলতে পারছেনা । চোখ দিয়ে কেবল পানি পরছে ।
নীলিমা : ভাবি অনেক কষ্ট হচ্ছে তোমার ?
কবির : সবকিছু ড্রামা নীলি … সব ড্রামা । sympathy পাওয়ার ধান্দা ।
বলেই কবির অফিসে চলে গেলো । কবিরের কথায় কনিকা অনেক কষ্ট পেলো ।
মেরিন : awwwe… so sad… মিসেস খানের কতো কষ্ট। আহারে আমারই চোখে পানি চলে এলো । শারীরিক-মানসিক সব কষ্ট আমি আপনাকে দিবো। মিসেস খান । আজকে কেবল শুরু । সিরিতে তেলটা তো আমিই ঢেলেছি । আপনাকে ফেলার জন্য । আহারে … my dear জান … আপনার কাছে থেকে শেখা ছলনা এখন আমার কাজে লাগবে । এরজন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। তিলে তিলে কষ্ট দিবো মিসেস খান আপনাকে । যাই স্বামী সেবা করি ।
মেরিন রুমে গিয়ে দেখে নীড় একাএকা washroom এ যাচ্ছে । মেরিন দৌড়ে গিয়ে ধরলো । মেরিন নীড়কে ধরে ধরে নিয়ে গেলো । এরপর নিয়ে এলো । মেরিন খেয়াল করলো নীড়ের চোখের কোনে পানি ।
মেরিন : আআআপনি বসুন আমি আপনার জন্য breakfast নিয়ে আসছি ।
.
একটুপর…
নীড় চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে ।
মেরিন : হ্যালো…
…
মেরিন : জী আমি মমমেরিন বলছিলাম।
…
মেরিন : হ্যা আমিই ফোন কককরেছিলাম। আপনিই কি ডডডক্টর তপুর assistant রররাজু?
…
মেরিন : ডক্টর তপু কককেমন আছে ? ভালো আছে ? না মানে “উনার” কি খবর…
কথাগুলো শুনে নীড়ের মেজাজ সাংঘাতিক বিগরে গেলো । হাতের সামনে থাকা মোবাইলটা আছার মারলো । মেরিন চমকে ওঠার ভান করলো । ছুটে গেলো ।
মেরিন : কককি হয়েছে ? ককিসের আওয়াজ ছিলো ? মমমোবাইল… মোবাইলটা ভাংলো কি করে। আপনি ঠিক আছেন ….
নীড় কিছুনা বলে মেরিনকে টেনে কাছে নিয়ে মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো । এরপর পাগলের মতো মেরিনের গলায় ঘাড়ে কিস করলো । কোনো রকমে মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো ।
মেরিন : আপনি…
নীড় : এখন থেকে রাগ উঠলে তোমাকে ভালোবেসে আদ….র করে রাগ কমাবো ।
মেরিন কোনো কথা না বলে চলে গেলো ।
মেরিন : আমার টেকনিক আমার ওপর চালাতে আসে । কিন্তু ভালোবাসা দেখেছেন । এবার ঘৃ… না ঘৃণা আপনাকে করতেই হবে … আপনাকে ভালোবাসা যায়না। একটু সুস্থ হন। এরপর … কিন্তু ১টা জিনিষ বুঝতে পারলাম না । উনার বুকে বনপাখি লেখা কেন… ?
.
রাতে…
মেরিন রুমে এসে শুনতে পেলো …
নীড় : ডন … তপুকে জা…
মেরিন ফোনটা নিয়ে নিলো ।
মেরিন : কি করছিলেন?
নীড় : তপুকে মেরে ফেলার order দিচ্ছিলাম ।
মেরিন : আপনি কি মেরে ফেলে ছারা কককিছুই পারেননা?
নীড় : না। 😎। তবে ১টা কথা বলো তো , তপুর ওপর তোমার এতো মায়া কেন ? ভালো তো তুমি আমাকে বাসো। তবে তপু তপু তপু… কেন?
মেরিন : ডক্টর তপু ১জন ভালো মানুষ। তাই । আর হ্যা আমি আপনাকে ভভভালোবাসিনা … ঘৃণা করি।
মনে মনে : ডক্টর তপুকে এখন মরতে দেই কি করে? জবা তো ওর কাছেও পাওনা আছে আমার। ভুল ঔষধ দিয়েছিলো কেন?
নীড় : তুমি আমাকে ভালোবাসো আর না বাসো সেটা matter করেনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটাই বড় কথা…
মেরিন : আপনি কাউকেই ভালোবাসতে পারেননা…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 26
writer : Mohona
.
মেরিন : আপনি কাউকেই ভালোবাসতে পারেননা …
নীড় : হামম হয়তো । আমি জানি। ভালোবাসা মানে বিশ্বাস… ভালোবাসা মানে নিঃশ্বার্থভাবে কাউকে আপন করে নেয়া … আমি জানি আমার ভালোবাসা’র , ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা অতি নগন্য …
মেরিন : কি? আপনার ভালোবাসা’র ভালোবাসা মানে?
নীড় : আমার ভালোবাসা মানে যাকে আমি ভালোবাসি । যার কাছে আমি ভালোবাসতে শিখেছি … যে ভালোবাসার আরেক নাম … আমার সকল ভালোবাসাও তার নখের যোগ্যনা। আমার ভালোবাসা যদি পাহাড়ি ঝর্না হয় তবে তার ভালোবাসা অতল সাগর …
মেরিন : কারো কাছে ভালোবাসতে শিখেছেন ?
নীড় : হামম কিছুটা … তার মতো করে ভালোবাসার সাধ্য আমার নেই।
মেরিন : আপনার ভালোবাসাই এতো ভয়ংকর …. তাহলে তার ভালোবাসা তো অতুলনীয় ভয়ংকর হবে । তাইনা ? 😏।
.
নীড় হা হা করে হাসতে লাগলো ।
নীড় : ভয়ংকর … ভালোবাসা । তার কার্যকলাপ ভয়ংকর না ভালোবাসা সেটা বুঝতে গিয়ে তাকেই হারিয়ে ফেলেছি … তোমাকে তপু ভুল মেডিসিন দিয়েছে … আর তাইজন্য আমি কেবল তার হাত কেটেছি … কিন্তু যদি “সে” হতো তবে কি করতো জানো ? সে কাউকে ২য় সুযোগ দেয়না। তপুকে জানেই মেরে দিতো । আমার দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাবে … সেই চোখ দিয়ে ২য় বার সে দুনিয়া দেখবে ? তখন রাগ হতো… ঘৃণা করতো তার কাজকর্মকে … কিন্তু এখন দেখি সেইই ঠিক। বাকী সবাই ভুল … ২য় সুযোগ দেয়া মানেই ভুলকে প্রশ্রয় দেয়া … পাগল ছিলো সে … পাগলের মতো ভালোবাসতে। তাকে ঘৃণা করার হাজার কারন থাকলেও ভালোবাসার জন্য ১টা মাত্রই কারন ছিলো । সেটা হলো আমার প্রতি তার ভালোবাসা । তার ভালোবাসা সকল ঘৃণাকে ছাপিয়ে গিয়েছে … যদি তার মতো একটুখানিও ভালোবাসতে পারতাম তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করতাম …
বলেই নীড় শুয়ে পরলো ।
মেরিন মনে মনে : এতো ছলনা করেছেন যে বুঝতে পারছিনা এটা ভালোবাসা নাকি ছলনা … আপনাকে ভালোবেসে নিজেকে আরো বেশি ঘৃণা করতে শিখেছি … নিজেকে অনেক ঘৃণা করতে শিখেছি কারন আপনাকে ভালোবেসেছি ।এটা আমার অপরাধ যে আমি আপনাকে ভালোবেসেছি …
নীড় : জান…
মেরিনের ধ্যান ভাংলো …
নীড় : ঘুম পাচ্ছে …
মেরিন : তো ঘুমান …
নীড় : 😒।
মেরিন : বেশি ভালোবাসা ভালো নয় নীড় … কারন বেশি ভালোবাসার বিনিময়ে কেবল আর কেবল ঘৃণাই পাওয়া যায়…
নীড় মুচকি হেসে
বলল : আমি ঘৃণায় তুষ্ট … কারন ঘৃণার আনন্দ আমি পেয়ে গিয়েছি … বুঝতে পেরেছি ঘৃণার সত্যি … ভালোবাসাকে ইচ্ছা করলেই ভুলে থাকা যায়… কিন্তু ঘৃণাকে ইচ্ছা করলেই ভুলে থাকা যায়না …
ভালোবাসার থেকে ঘৃণা অনেক বড়। কারন ভালোবাসা থাকে হৃদয় আর ঘৃণা থাকে হৃদয়ের গভীরে …
মেরিন : ….
নীড় : now come please …
মেরিন গিয়ে চুপচাপ নীড় বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো ।
মেরিন : আমি আপনাকে ঘৃণা করি …
নীড় : আর আমি তোমাকে ভালোবাসি …
.
পরদিন…
অফিসে কাজ টাজ করে জন বাসায় পৌছালো। আজকাল জনের life টা কেমন যেন হয়ে গিয়েছে । কেবল অফিস যাওয়া আর আসা ছারা । বাসায় পৌছে অবাক হয়ে গেলো। কারন মেরিন দারিয়ে আছে।
জন : মমম্যাম… আপনি ?
মেরিন : any doubt …?
খুশীতে জনের চোখে পানি চলে এলো ।
জন : mam you are back???
মেরিন : কি মনে হয়?
জন : ম্যাম আমি অনেক বেশি happy …
মেরিন : চোখের পানি মানুষকে দুর্বল করে। মুছে ফেলো ।
জন : বসুন বসুন… কোথায় যে বসতে দেই আপনাকে? আপনি আমার বাসায় এসেছেন… আমার বিশ্বাসই হচ্ছেনা।
মেরিন : relax জন…তোমার বাসাটা enough বড় ।
জন : ম্যাম আপনার তুলনায় অনেক ছোট।
মেরিন : shut up…
বলেই মেরিন বসলো।
জন : ম্যাম আপনি বসুন আমি এখনি আসছি।
মেরিন : আরে কো…
জন : ম্যাম ৫মিনিট।
জন নানারকমের খাবার মেরিনের সামনে রাখলো । মেরিন একটু মুখে দিলো।
মেরিন : নীড়ের accident এর আগ পর্যন্ত আমার আগে পিছে ঘটা ঘটনার summery বলো।
জন সবটা বলল।
জন : ম্যান ডক্টর তপু মনে হয়না এমন কিছু করেছে। ওই bloody নী…
আর বলতে পারলোনা। মেরিন এমন ভাবে তাকালো যে জন চুপ হয়ে গেলো।
মেরিন : bloody নীড়? সাহস খুব বেরে গিয়েছে দেখছি… call him sir…
জন : sorry mam… কিন্তু নীড় স্যার খুব বাজে। আপনার memory যেতেই সে নিজের রাজত্ব শুরু করেছন। সব কোম্পানি তার কথা মতো চলে। এমনকি family ও। আর সবথেকে বড় কথা ।তিনি বিশ্বাসঘাতক। আপনার সাথে যা করেছে সেটা…
মেরিন : আমি বুঝবো।
জন : sorry to say mam.। কিন্তু নীড় স্যার লোভী… আপনার property নিজের নামে করিয়েছে। ডক্টর তপুকে বিনা অপরাধে শাস্তি দিলো ।
মেরিন : তোমার বলা শেষ?
জন : sorry mam…
মেরিন : first … নীড় লোভী নয়। কারন উনি লোভী হলে আগেই ভালোবাসার নাটক করতো। উনি বিশ্বাসঘাতক নয়। ছলনাবাজ। বিশ্বাসঘাতক তখন হতো যখন আমাকে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে ধোকা দিতো । উনি বরাবরই আমাকে ঘৃণা করি বলেছেন । উনি জঘন্য মানুষ কারন নিজের বাচ্চাকে খুন করেছেন …. যাই হোক… secondly… নীড় তপুদাকে কোনো কারন ছারা প্রহার করেনি… নীড় যেমনই হোক আমি ছারা কারো সাথে অন্যায় করেনা। নিঃসন্দেহে তপুদার দোষ আছে ।
জন : …
মেরিন : এখন তোমার জন্য অনেকগুলো কাজ আছে ।
জন : order করুন ম্যাম।
মেরিন :1st… খোজ লাগাও যে তপুদা সত্যিই কি ভুল মেডিসিন prescribe করেছিলো কিনা? যদি না করে তো নেই। আর যদি করে থাকে তবে কারন খুজে বের করো। যে কেন এমনটা করলো। এবং… এবং এবং এবং… তপুদার সব ভুল-ত্রুটিও খুজে বের করবে। দেখতে চাই কতো ভুলের অপরাধী সে। কারন যে ১টা ভুল করেছে তবে আরও করেছে । আর কতো রোগীকে ভুল মেডিসিন দিয়েছে সেটাও জানতে চাই।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : 2nd… তপুদা ভুল মেডিসিন দিক আর না দিক সেটার অপরাধী মিসেস খান কে বানাতে হবে।
জন : মানে ম্যাম?
মেরিন : মানে খুব সহজ। মিসেস খানকে সবার সামনে আরো ঘৃণার করে তুলতে হবে। বাবা তো ঘৃণা করেই… নীড়ও ঘৃণা করবে। তাই খুব সাবধানে তপুদার কাজের পিছনে মূল মানুষ যে মিসেস খান সেটা প্রমান করতে হবে। বাবার কাছে । তারপর যা করার বাবাই করবে। নীড়ও ঘৃণা করবে। তার মামিমনিকে…
জন অবাক চোখে দেখছে মেরিনকে । এমন করে অপরাধী মেরিন কখনো কাউকে বানায়নি । যা করার সামনাসামনি করেছে ।
মেরিন : এমন করে কি দেখছো ?
জন : কককিছুনা ম্যাম…
মেরিন : মেরিন বন্যাও ছলনার আশ্রয় নিচ্ছে সেটাই ভাবছো তো?
জন : …
মেরিন : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন যদি আমার সাথে থেকে ভয়ংকর থেকে আরো ভয়ংকর হতে পারে তবে আমি তার সাথে থেকে ছলনা শিখবোনা?
জন : …
মেরিন : যাই হোক… মিসেস খানের যে ড্রামাটা আছে । সেটা ২-৩দিন পর করবে …. is everything clear?
জন : জী ম্যাম…
মেরিন চলে গেলো ।
জন : হয়তো নতুন ঘৃণার খেলা শুরু…
.
নীড় : কোথায় গিয়েছিলে? 😤।
মেরিন : …
নীড় : বলছোনা কেন কোথায় গিয়েছিলে? তপুর কাছে ?
মেরিন : গগগিয়েছিলাম তো ডডডক্টর তপুর কাছেই। পরে ভভভাবলাম যে আমি যদি “উনার” সাথে দেখা করতে যাই তাহলে “উনি” আরো বিপদে পরবেন….
তপুর জন্য “উনি-উনার” শব্দটা শুনে নীড়ের মেজাজ বিগড়ে গেলো । ১টানে মেরিনকে বেডে ফেলে চেপে ধরে
বলল : বলেছিনা তুমি উনি কথাটা কেবল আমার জন্য বলবে আর কারো জন্য না। এই শব্দটা আমার নেশা হয়ে গিয়েছে…
মেরিনের হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে। হাতে কাচের চুপি ছিলো। সেটা ভেঙে গি়য়েছে। আর সেটা লেগেই রক্ত পরছে। মেরিন কোনো react করলোনা । ও নীড়ের চোখের ভয়ংকর রাগের পরিমাপ করতে ব্যাস্ত । নীড়ের চোখ বরাবরই ওর দুর্বলতা । এই ১টা জায়গাতেই ও ধরা খেয়ে যায় । নিজের আবেগ-অনুভূতি লুকাতে পারেনা… নীড় হাতে ভেজা কিছু অনুভব করে দেখলো মেরিনের হাত থেকে রক্ত পরছে । তারাতারি উঠে বসলো । মেরিনের হাতে রক্ত দেখে নীড় অস্থির হয়ে উঠলো । first aid boxএনে। ব্যান্ডেজ করে দিলো । মেরিন অবাক চোখে নীড়ের পাগলামো দেখছে ।
নীড় : i am sorry জান… i am really very sorry… বি…
মেরিন : i hate you… ঘৃণা করি আপনাকে …
বলেই মেরিন নিচে চলে গেলো । ২-১ঘন্টা পর মেরিন আবার রুমে এলো । এসে তো চোখ চরকগাছ । কারন নীড় হাত কেটে বসে আছে। মেরিনের তো সামান্য একটু কেটেছে । আর নীড়… নীড় অনেকটা হাত কেটেছে । ১হাত থেকে রক্ত ঝড়ছে আর অন্য হাতে ছুড়ি ঘোরাচ্ছে …
মেরিন : নীড়…
মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো ।
মেরিন : এএএকি আআআপনার হাত কাটলো কি করে ?
মেরিন নীড়ের হাতে ব্যান্ডেজ করতে লাগলো । সেই সাথে নীড়কে বকতে লাগলো । মেরিনকে অবাক চোখে দেখছে নীড়।
নীড় মনে মনে : কেন যেন কিছুদিন ধরে তোমার আচরনে আমি আমার ঘৃণার মেরিন কে দেখতে পাচ্ছি … কিন্তু আমার বনপাখি কোনোদিনও যে আমার মাথায় হাত দিয়ে মিথ্যা বলবেনা ….
মেরিন : এসব করে কি প্রমান করতে চাইছেন? হ্যা ? বলুন … বলুন কি প্রমান করতে চাইছেন ? এটাই যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন? আপনি যা করছেন তা আর যাই হোকনা কেন ভালোবাসানা… আমি জানিনা এর মানে কি ? কিন্তু এটা জানি যে এগুলো ভালোবাসানা । ফালতু ফুলতু … নিন খেয়ে নিন…
নীড় : আমি হাত দিয়ে খেতে পারবো …
মেরিন : খান … আমি গেলাম ….
মেরিন সত্যিই চলে গেলো ।
নীড় : যা সত্যিই চলে গেলো ।ধ্যাত…
.
৩দিনপর…
সবাই নিচে একসাথে বসে খাবার খাচ্ছে । তখন কবির রেগে আগুন হয়ে বাড়িতে ঢুকলো ।
কবির : কনিকা …
কবিরের ডাক শুনে সারা বাড়ি কেপে উঠলো ।
কনিকা : কককি হয়েছে ?
কবির ঠাস করে কনিকাকে থাপ্পর মারলো ।
দাদুভাই : কবির … কনিকার ওপর রাগ করা জায়েজ আছে তাই বলে ওর গায়ে হাত তুলবে সেটা আমি মেনে নিবোনা …
কবির : খামোখা ওকে থাপ্পর মারিনি বাবা । ও তো বিষধর সাপের থেকেও জঘন্য । ও কি করেছে জানো ?
নীড় :কি করেছে মামিমনি ? যে তুমি মামিমনিকে এমন করে মারলে … 😤।
কবির : মামিমনিকে থাপ্পর মারলাম বলে কষ্ট লাগলো নীড়? আর যখন আমার মেয়েকে তুমি থাপ্পর মারতে তখন?
নীড় : …
কবির : anyway …. ওগুলো ঘাটতে চাইনা । তুমি আমার মেয়ের জীবন বাচিয়েছো সেটাই অনেক। আর হ্যা … সেদিন তুমিই ঠিক ছিলে যে তপু বাবুইপাখিকে ভুল মেডিসিন prescribe করেছিলো । আর কেন করেছিলো জানো ?
নীড় : কেন ?
কবির : তপু সব করেছিলো ওই মহিলার কথায়… কনিকার কথায় …
নিহাল : কি ???
কবির : হ্যা ।
নীড় : মামা তুমি মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছো ।
কবির : না আমি কনিকা খান , না আমি নীলিমা চৌধুরী আর না আমি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন যে কারো ওপর মিথ্যা অপবাদ দিবো । যা বলছি প্রমান পেয়েই বলছি ।
নীড় : কে প্রমান দিলো ? ওই ডক্টর তপু ?
কবির : না … আর তুমি যেই মামিমনির support করছো জানো সে এসব কেন করেছে ? করেছে কারন তোমাকেই সে বাবুইপাখির জীবন থেকে সরাতে চাইছে । কারন এখন মেরিন তপুর ভালোগিরির জন্য ওর প্রতি দুর্বল ।
কনিকা : কি যা তা বলছো?
কবির : ঠিকই বলছি।
বলেই কিছু প্রমান ছুরে মারলো । যেগুলো ছিলো মেরিনের সাজানো প্রমান। যেগুলো দেখে নীড়ও কনিকাকে ঘৃণা করতে শুরু করলো । মেরিন গুটিগুটি পায়ে কনিকার কাছে এগিয়ে গেলো ।
মেরিন : ততুমি না আআআমার আম্মু লাগো …. তততাহলে কেন আমার সাথে এএএমন করলে ?
মনে মনে : what an actor am i?
কনিকা : বিশ্বাস কর মা… আমি …
নীড় : জান… আমি রুমে যেতে চাই … please help me …
মেরিন নীড়কে ধরে ওপরে নিয়ে যেতে লাগলো ।
কনিকা : নীড় বাবা বিশ্বাস করো আ…
নীড় হাত দিয়ে ইশারা করে থামিয়ে দিলো ।
নীড় : not a single word… মিসেস খান। আপনি আমাকে ছোটবেলা থেকে অনেক স্নেহ-ভালোবাসা দিয়েছেন । তাই নিজের হাতে আপনাকে খুন করতে হাত কাপবে। তাই খুন করতে চাইনা আপনাকে । তাই যদি মরতে না চান তবে চুপ থাকুন।কারন এখন যাই বলবেন মিথ্যা কথাই বলবেন।so shut up please … চলো মেরিন …
নীড়ের কথায় কনিকা যথেষ্ট কষ্ট পেলো । মিথ্যা অপবাদ যে কতো ভয়ংকর সেটার কিছুটা কনিকা আজকে বুঝতে পারলো … আর মেরিনের মনে পৈশাচিক আনন্দ ।
মেরিন : poor মিসেস খান …কান্না করো… আরো কান্না করো… তোমার কান্না দেখে আমি স্বর্গীয় সুখ পাচ্ছি …
.
রাতে…
নীড় বারান্দায় বসে কান্না করছে ।
নীড় মনে মনে : মামিমনি এটা কি করলে? আমি তোমাকে কোনোদিনও ক্ষমা করতে পারবোনা । তুম… ১মিনিট … এখানে মেরিনের হাত নেই তো … ওর মুখের reaction গুলো … আর সেদিন ও রক্ত দেখেও তেমন react করলোনা । কিছুই বুঝতে পারছিনা…
মেরিন : ঘঘঘুমাবেন না ?
নীড় পিছে ঘুরলো । মেরিনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করতে লাগলো । আধোও কি কখনো এই মেরিন বন্যা নামের রহস্যকে ও বুঝতে পারবে।
মেরিন : অনেক রাত হয়ে গিয়েছে ।
নীড় : তোমার মনটা অনেক খারাপ তাইনা ?
মেরিন : কককেন মন খারাপ হবে কেন ?
নীড় সন্দেহর দৃষ্টিতে তাকালো ।
মেরিন : অতীত আমি জানিনা। বর্তমানে আপনি ওই মহিলাটাকে এনে বলেছেন যে তিনি নাকি আমার মা । অথচ আমার মা মরে গেছে … তাই জানিনা আমার কষ্ট পাওয়া উচিত নাকি না পাওয়া উচিত….
নীড় কিছু বললনা ।
মেরিন মনে মনে : আপনাকেও শাস্তি পেতে হবে নীড়… আরেকটু সুস্থ হন। এরপর বুঝবেন…
.
চলবে….
ঘৃণার মেরিন
season : 3
part : 27 (last)
writer : Mohona
.
৫দিনপর…
মেরিন : আসবো ডক্টর তপু…
তপু : আরে মেরিন এসো এসো। বসো।
মেরিন বসলো।
মেরিন : ভালো আছেন আপনি?
তপু : হামমম।
মেরিন : মিথ্যা বলছেন। ১হাত কাটা নিয়ে কেউ ভালো থাকতে পারে?
তপু : …
মেরিন : আসলে কি বলবো? নীড়ের তরফ থেকে sorry বলতে এসেছি… উনি ভুল করেছে…
তপু : হয়তো ঠিক করেছে… নীড়ের জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো এটাই করতাম …
মেরিন : মমমানে ?
তপু : আমি আসলেই ভুল মেডিসিন prescribe করেছিলাম। তবে বিশ্বাস করো … সেগুলো তোমার ক্ষতি করতো না … তোমার condition same ই থাকতো। মানে memory ফিরবেনা । যেমন আছে তেমনই থাকবে…
মেরিন :…
তপু : আমি অপরাধী … কারন আমি তোমার…
মেরিন : আমার …?
তপু : কককি ককিছুনা…
মনে মনে : তোমাকে সত্যি বলার সাহস আমার নেই … নীড় তো কেবল আমার হাত কেটেছে… জানিনা তুমি কি করবে? যদি কেবল আমাকে মেরে ফেলতে তাহলে ভয় করতো না সত্যি বলতে… কারন মরতে আমি ভয় পাইনা । আমি তো তোমাকে চিনি… তুমি আগে আমার চোখের সামনে আমার পরিবারকে চরম শাস্তি দিবে। পরে আমাকে মারবে…
মেরিন মনে মনে : তোমার “আমি তোমার” কথাটার মধ্যে কিছু ১টা আছে তপুদা…
মেরিন : আসছি ডক্টর তপু…ভালো থাকবেন…
মেরিন বেরিয়ে গেলো ।
মেরিন : হ্যালো জন…
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : তপুদার full protection এর ব্যাবস্থা করো… তপুদার সুস্থ-জীবিত থাকা জরুরী… তার ভেতর অনেক কথা লুকিয়ে আছে। যেগুলো জানা জরুরী। &&& সে confess করেছে যে সে ভুল মেডিসিন prescribe করেছে। but reason টা বলেনি… find the reason & others thing …
জন : sure mam…
.
মেরিন : হা করুন…
নীড় : …
মেরিন : কি হলো খাচ্ছেন না কেন? খখখেয়ে নিন…
নীড় : আমাকে একটু একা থাকতে দিবে প্লিজ…
মেরিন : দদদিবো … খেয়ে নননিন… এরপর চলে যাচ্ছি আমি…
নীড় : তুমি কি ভীতু ভীতু খেলা খেলছো আমার সাথে ? নাটক করছো…?
মেরিন : নননাটক… ? কিসের নাটক?
নীড় : বোঝোনা … নাকি এটাও নাটক ? যদি সত্যি এতো ভয় পেয়ে থাকো তবে কোন সাহসে তপুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে ?
মেরিন মনে মনে : উনি কি করে জানলো ?
নীড় : বলো…
মেরিন : আপনি কি করে জানলেন?
নীড় : তুমি বন্যা হলে আমিও বর্ষন মেরিন… আর আমি এও বুঝে গিয়েছি যে তুমি ফিরে এসেছো… ভয়ংকর মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী ফিরে এসেছে …
মেরিন : কককি যাতা বববলছেন ?
নীড় : ঠিকই বলছি । আর তাই এতো সাহস দেখাচ্ছো । আর তাই তোমার চোখে আমার জন্য ঘৃণা না অভিমান দেখতে পাচ্ছি …
মেরিন : আপনার যেটা ভাবার আপনি ভাবুন । তবে মনে রাখবেন আমি আপনাকে কেবল আর কেবল ঘৃণা করি … আর আপনি যদি মনে করেন যে আপনি ভালোবাসেন তবে সেটা ভুল । কারন আপনি আমাকে ভালোবাসেননা । যা করছেন তা পুরোটাই নাটক । নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য আছে । আর সেই উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্যেই এই পাগলামো ভালোবাসার নাটক করছেন … তাও আমার মতো ১টা মেয়ের জন্য যার memoryই নেই … কোনো স্বার্থের জন্যেই আপনি এমন করছেন …
নীড় : তুমিহ এ কককথা বলতে পারলে …
মেরিন : হ্যা পারলাম ।
নীড় : তোমাকে আমি ভালোবাসি … এটাই সত্যি । তোমার memory থাকুক আর না থাকুক তুমি আমার স্ত্রী … তোমাকে ভালোবাসার অধিকার আছে আমার …
মেরিন :oh really ??? আমি আপনার স্ত্রী ? আমার তো বিশ্বাস হয়না । যদি আপনি সত্যিই আমার স্বামী হতেন তবে আমার মনের কোথাও না কোথাও আপনি থাকতেন। স্মৃতি হারানোর পরও আপনার জন্য মায়া থাকতো । কিন্তু নেই । আমার তো কারো কথা মনে ছিলোনা । তবুও সবার প্রতি মায়া জমেছিলো । কিন্তু আপনার জন্য শুধুই ঘৃণা … তাছারা আর কিছুইনা । আমার মনে হয়না আদোও আপনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক আছে …
নীড় : …
মেরিন : আপনার হিংস্র রূপের জন্য হয়তো আপনাকে কেউ কিছু বলেনা । ভয় পায়। কিন্তু আমি পাইনা। কারন আমার হারানোর কিছু নেই । আপনার আর আমার মধ্যে শুধু ১টাই সম্পর্ক আছে । সেটা হলো ঘৃণার। আমার জীবন বাচিয়েছেন তাই কৃতজ্ঞ আর সেজন্যেই দায়ে পরে আপনার সেবা করছি । যতোদিন সম্পুর্ন সুস্থ না হন ততোদিন সেবা করবো । এর বেশি কিছু আশা করবেন না … কারন আপনি ভালোবাসার অযোগ্য । কুৎসিত মনের অধিকারী। আমি আপনাকে ঘৃণা করি … আপনি বাচুন মরুন আমার কিছু যায় আসেনা …
বলেই মেরিন washroomএ চলে গেলো ।
.
মেরিন : অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছেন … আপনার ছলনার সামনে আজকে আপনার ভালোবাসা অসহায় নীড় … হয়তো আজকে আপনার ভালোবাসাও ছলনা … ছলনার মুখোশে আপনার অসহায় চেহারা ঢেকে গিয়েছে …
মেরিন নিজের চোখের পানি বিসর্জন দিয়ে হাতমুখে পানি দিয়ে বের হলো । বেরিয়ে দেখে নীড় নেই ।
মেরিন : নীড় কোথায় গেলো?
নীড় বারান্দায় গেলো । দেখলো নীড় নেই । দৌড়ে নিচে নামলো।
মেরিন : নীড় …নীড়…
নীলিমা : মেরিনরে … ছেলেটা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো । কোনো কথা শুনলোনা … এই শরীর নিয়ে …
মেরিন : …
মেরিন রুমে গেলো ।
মেরিন : হ্যালো জন … follow নীড় …. & protect him…
জন : of course mam…
কিছুক্ষন পর জন ফোন করলো । মেরিন অস্থির হয়ে
বলল : নীড় ঠিক আছে …
জন : জী ম্যাম। স্যার ঠিক আছেন। কিন্তু ১টা বাড়িতে ঢুকে নিজেকে বন্দী করলো।
মেরিন : নজর রাখো। যেন কিছু উল্টা পাল্টা না করে …
জন : of course mam…
.
একটুপর…
মেরিন কোনোকিছু করেই শান্তি পাচ্ছেনা ।
মেরিন : নীড় কিছু করবেনা তো…
মেরিন কাবার্ড গোছাতে লাগলো । তখন সামনে ১টা ডাইরী পরলো । ডাইরীটা বেশ পুরোনো। মেরিন যখন ছোট ছিলো তখন ও ১টা classmate এর birthday partyএর invitation ছিলো । তাই কবির ১টা cartoon ওয়ালা ডাইরি এনে দিয়েছিলো । gift করার জন্য । কিন্তু নীড় মেরিনকে সেই program এ তো যেতে দেইনি সেই সাথে ডাইরিটাও নিয়ে নিয়েছিলো। এটাই সেই ডাইরি …
মেরিন : এই ডাইরি? এখনও আছে? অবাক তো …
মেরিন ওটা খুলতে গেলো কিন্তু পারলোনা। password দেয়া । মেরিন নানাধরনের password দিলো। নীরা , নীড়-নীরা… নীরা-নীড় … পরে কিছু ১টা ভেবে “বনপাখি” দিলো। তখন খুলে গেলো। যেখানে front pageএই নীড়-মেরিনের ছবি দেয়া । মেরিন পাতা উল্টাতে লাগলো ।
আজকে বনপাখির নাম আমার বুকে লিখলাম। ছোট হলেও তো আমরা স্বামী-স্ত্রী তো …
বনপাখি খুনী… ওর সামনে আর যাবোনা । যদি আমাকে মেরে ফেলে…
মামিমনি বনপাখিকে জেলে পাঠিয়ে দিলো। অনেক মিস করছি । কার সাথে খেলবো। কিন্তু বাইরে থাকলে যদি আমাকেও মারে!!😥। এখনও রাতে ভয় করে… ইশ কতো রক্ত। আমার মামা…
আজকে দেশ ছেরে কতো দূরে চলে এলাম । কারন বনপাখির ভয়ে রাতে ঘুম আসেনা।… সেই রক্তাত্ব দৃশ্য চোখে ভাসে।
আজকে ১৮তে পা দিলাম … বনপাখি ১৫ তে… ওকে কি বনপাখি ডাকা ঠিক হবে?
আজকে নীলা আমাকে propose করলো। নীলা তো জানে যে ও আমার স্ত্রী তবুও কেন propose করলো?
ওর ওপর রাগ করেই আজকে নীলাকে accept করলাম। ছিঃ কি করলাম ? এটা যে না জায়েজ। আমি যে married …
নীলা এমন কেন? ও জানে যে বিয়ের আগে intimacy আমার ভালো লাগেনা… তবুও…
আমি কি সত্যিই নীলাকে ভালোবাসি… তবে কেন ও effect করেনা … চোখ বন্ধ করলে যে আজও ওকে দেখি… পর মুহুর্তেই যে সেই ভয়ানক স্মৃতি মাথা চরা দেয় ।
৭টা বছর পর ওকে দেখলাম… সময় থেমে গিয়েছিলো ওকে দেখে। পুরোনো ভালোবাসা আজ আবার নরে উঠলো … অস্বাভাবিক সুন্দর ও … চোখ ফেরানো দায় …
না না ওকে মনে জায়গা দিয়ে যাবেনা । ও খুনী… কিন্তু ও যে আবার নতুন করে আমার চোখের ঘুম কেরে নিয়েছে।
ওকে অপমান করে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। ওর মলিন মুখ…
আজকে ৩-৪বছর পর আবার ও কে দেখলাম। কি রাগী? কি তেজ? সূর্যের মতো ওর তেজ। attitude প্রেমে পরার মতো ।
ওর সাথে বিয়ে হয়ে গেলো । আবার… হয়তো এটাই ভাগ্য …
পাগলের মতো ভালোবাসে ও আমাকে… কেন এতো ভালোবাসে ?
সত্যিই কি ও নারী-শিশু পাচারে জরিত? সেদিন তো নানুভাইয়ের সাথে বলতে শুনলাম।
ছিঃ… নিজের ওপর ঘৃণা চলে এলো । আজকে ওর ভালোবাসার সুযোগ নিলাম… যে আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসলো তাকে এমন ধোকা দিলাম ? বাসায় গিয়ে কি করে face করবো … কিন্তু ওর অপরাধ যে বড় …
ভালোবাসি মেরিনকে … অনেক বেশি ভালোবাসি … নিজের থেকেও বেশি। ওকে ছারা নিজেকে ভাবতেই পারিনা …
মেরিন তপুর সাথে … শুনে বুকটা কেপে উঠলো । নিজেকে শেষ করে দিতে মন চাইছে ।
মেরিনকে সন্দেহ করলাম ? ছিঃ …
মেরিন আসলে মানসিক রোগী । তাই এমন করে । ওকে ভালোবেসে সুস্থ করতে হবে । নরমাল করতে হবে …
বনপাখি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছিলো । মামিমনি এসে ঝামেলা পাকিয়ে গেলো । damn it…
মামিমনিকে পাওয়া যাচ্ছেনা … মনে করেছিলাম যে মেরিন কিছু করেছে । কিন্তু না। বনপাখি আমাকে বলেছে যে ও জানেনা ।
কি করবো বুঝতে পারছিনা … মেরিনকে অবিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছেনা। narco test করা কি ঠিক হবে ? কিন্তু আমি চাইনা বনপাখি আর কোনো অপরাধ করুক…
হয়তো আজই শেষ ডাইরি লিখবো ।১বার মেরিনকে sorry বলে নিজেকে শেষ করে দিবো । কারন আমি যে পশুর চেয়েও খারাপ। নিজের সন্তানকে মেরে ফেললাম। আমার বাচার অধিকার নেই …
নিজের ভালোবাসাকে নিজে কবর দিয়েছি। বিনা অপরাধে আমার বনপাখি কতো কষ্ট সহ্য করেছে । কেউ বিশ্বাস করিনি যে মামা বেচে আছে । ওটা মামা না… ও খুন করেনি ….
এতোটুকু ঘৃণাই সহ্য হচ্ছেনা … বনপাখি এতো কিভাবে সহ্য করলো …
বনপাখির মনে তপু … শুধু ওর মুখে তপুর নাম শুনেই সহ্য হচ্ছেনা । তাহলে ও নীলার সাথে কিভাবে সহ্য করতো ?
ডাইরিটা পরে মেরিনের চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি পরছে । ডাইরি টা রেখে দিলো ।
.
বারান্দায় বসে মেরিন কান্না করছে । নীড় সত্যিই ওকে ভালোবাসে । ও নীড়কে দোষ দিয়েছে । কিন্তু কখনো নীড়ের দিকতো ভেবেই দেখেনি … যখন এসব হয়েছিলো তখন নীড়ের বয়সই বা কতো ছিলো ? মাত্র ১৫… ১টা ১৫বছরের বাচ্চার সামনে যদি অমন ভয়ানক রক্তাত্ব দৃশ্য দেখে তবে আতঙ্কে তো পরবেই … আর ছোটবেলায় ১বার যে ভয়টা মনে ঢুকে যায় সেটা সহজে বের হয়না …
মেরিন অনেক কান্না করছে। তখন নীড় এসে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো । মেরিনের ঘাড়ে মুখ গুজলো । মেরিন বুঝতে পারলো যে এটা নীড় । আর এটাও বুঝতে পারলো যে নীড় কান্না করছে। ১৫-২০সেকেন্ডের মাথায় নীড়ও বুঝতে পারলো যে মেরিনও কাদছে । নীড় নিজের কান্নাটা কোনো রকমে থামালো ।
নীড় : ককি হয়েছে বনপাখিহ…
বনপাখি বলতেই মেরিন নীড়কে ছারিয়ে ওরদিকে ঘুরে ওকে জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো। নীড় কিছুই বুঝতে পারলোনা । অবাক হলো। কিন্তু মেরিনের কান্না নীড়ের বুকে ছুরির মতো আঘাত দিচ্ছে।
নীড় : কককাদছো কেন ? আমি ঠিক আছি তো … i am sorry… আসলে রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকেনা । তাই উল্টা পাল্টা ক…
নীড় আর বলতে পারলোনা । মেরিন ঠাস ঠাস ঠাস করে নীড়ের ২গালে থাপ্পর দিতে লাগলো।
মেরিন : আপনি খারাপ…. আপনাকে ঘৃণা করি ঘৃণা করি ঘৃণা করি ….
নীড় মেরিনের ২গালে ২হাত রাখলো। মেরিন ধাক্কা দিয়ে নীড়কে সরিয়ে দিলো ।
মেরিন : don’t touch me… you are a liar… big liar… i hate you…
নীড় যতোবার মেরিনকে ধরতে যাচ্ছে মেরিন ততোবার সরিয়ে দিচ্ছে । শেষ নীড় কঠোরভাবে মেরিনকে ধরলো। কপালে কপাল ঠেকালো ।
নীড় : তোকে ভালোবাসিরে বনপাখি … খুব বেশি ভালোবাসি … বাচতে পারবোনা তোকে ছারা। খুব দরকার তোকে আমার … ঘৃণা কর আমাকে অসুবিধা নেই … কিন্তু আমার কাছে থাক… ভালোবাসতে দে তোকে … মরে যাবো তোকে ছারা …
😭😭😭…
(((এরা emotional হয়ে romance করুক… আমার জামাইর কি…. পরের ঘটনাতে যাই… 😒😒😒)))
.
কিছুদিনপর…
জন ফোন করলো ।
মেরিন : হ্যালো জন…
….
মেরিন : কি???😤😤😤। ৪ঘন্টা সময় দিলাম। সবাইকে আমি আমার কালকোটরিতে চাই ….
.
৪ঘন্টাপর…
আরো ১বার সবার হাত-পা মুখ বাধা । কেবল চোখ জোরা খোলা । তবে আজকে ওদের সাথে তপু , রাজু আর কবিরও আছে ।
মেরিন : welcome once again my friends …. আমার এই অন্ধকার জগতে সবাইকে স্বাগতম । সেদিন আমার পরম স্নেহের বাবা আমাকে shoot করেছিলো । কি নিদারুন ভাগ্য আমার। মা-বাবা-স্বামি সবাই পেছন থেকে প্রহার করে। uffs… একটু ভুল । মা সামনে থেকেই প্রহার করতো। এর জন্য respect নিবেন মিসেস খান … যাই হোক । আজকে আমি সেদিনের অপূর্ন কাজ সম্পুর্ন করবো । আমার সন্তানের খুনীকে খুন করবো। তার আগে ডক্টর তপু i have a surprise for you… জন…
জন তপুর মা-বাবাকে নিয়ে এলো। ওদেরও হাত-পা বাধা । ওদেরকে দেখে তপু সবটা বুঝতে পারলো ।
মেরিন : ডক্টর তপু কেমন লাগলো surprise ??? ও হ্যা এতোক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন যে মেরিন বন্যা ন… চলে এসেছে । memory ফিরে এসেছে । আগেই ফিরেছে। যেদিন নীড়ের accident হয়েছিলো । যাই হোক। আসল কথায় আসি ।
সবাই : …
মেরিন : তপুদা… মেরিনের স্মৃতি থাকুক আর নাই থাকুক। মেরিনের মনে ২য় কোনো পুরুষের স্থান নেই। নীড়ের জন্য যদি ঘৃণাও থাকে অন্যকারো জন্য ভালোবাসা কোনোদিনও থাকবেনা। হ্যা ওই কদিন just নীড়ের হিংস্রতা দেখে উনাকে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর ভয়ের সামনে তোমাকে পেয়েছিলাম … যে জন্য একটু ভরসা type কিছু ছিলো । ভালোবাসানা। তুমি আমাকে ভুল ঔষধ দাও না বিষ দাও তাতে আমার কিছুই হতোনা । তবে তুমি এই ভুল করেছো যে নিজেকে আমার সাথে জুরে দিতে চেয়েছো । যেটা তোমার ভুল … পাবে পাবে শাস্তি পাবে। আগে এই রাজুকে শেষ করবো ।
বলেই রাজুকে shoot করে দিলো।….
মেরিন নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : জা…ন … ঠিকই ধরেছিলেন সেদিনই আমার memory back করেছিলো। তবে হ্যা আপনার মাথায় হাত দিয়ে আমি মিথ্যা বলিনি। কারন এই নীড় আমার স্মৃতির পাতায় ছিলোনা। যাই হোক সন্তানরা বড় হলে মা-বাবাই তাদের কাছে সন্তান হয়ে যায়। তাইনা নীড়…
আমার সন্তানের খুনির মা-বাবাকে আগে খুন করবো । তারপর তাকে …
মেরিন গান হাতে নিলো । ২হাতে ২টা….১টা নিহালের দিকে তাক করলো আরেকটা নীলিমার দিকে।
মেরিন : জন… ৫থেকে countdown করো।
জন : জী ম্যাম … 5…4…3…2…1
নীড় চোখ বন্ধ করে ফেলল।
মেরিন বিপরীত দিকে ঠাস ঠাস করে তপুর মা-বাবারে shoot করে দিলো। নীড় চোখ মেলল। আর কাহিনী দেখে অবাক।
মেরিন : আমার সন্তানের খুনী নীড় না। ডক্টর তপু… নীড় যেটা করেছে সেটার তো ক্ষমা নেইই। কিন্তু আমার বাচ্চাটাকে এই তপুই মেরেছে। am i right or am i right তপুদা ….
তপু কেবল কান্না করছে ।
মেরিন : তোমার জন্য আমি নীড়কে ঘৃণা করেছি… তোমার জন্য আমি নীড়কে জানে মারতে চেয়েছিলাম… কি ভেবেছিলে আমি কিছু জানবো না? thanks to আল্লাহ যে সেদিন বাবা আমাকে shoot করেছিলো। তা না হলে সত্যিটা জানতে পারতামনা । your time is over তপু…দা…
মেরিন তপুর হাতে shoot করলো, ২পায়ে shoot করলো। এরপর ঠিক heart বরাবর shoot করলো। করে গান হাত থেকে ফেলে দিলো। এরপর ওর সব গান , ছুরি আর অন্যান্য অশ্র destroy করে দিলো ।
.
মেরিন হাটু গেরে বসে পরলো।
মেরিন : আর খেলবোনা ঘৃণার খেলা… আজকে এখানেই সব ঘৃণা শেষ করলাম …
মেরিন উঠে গিয়ে কবিরকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : বাবা… আমি জানতাম আমার বাবা বেচে আছে। মিসেস খানকে ক্ষমা করে দাও । প্লিজ… ইনি যা করেছে তা কেবল আর কেবল তোমাকে ভালোবেসে… বিশ্বাস করেই করেছে। আর আমাকে ভুল মেডিসিন দেয়ার পেছনে মিসেস খানের কোনো হাত নেই । ওটা আমার সাজানো নাটক ছিলো। তুমি মিসেস খান কে আর ঘৃণা কোরোনা। যাকে ভালোবাসি তাকে ঘৃণা করার থেকে কষ্টের আর কিছুই নেই… আর তুমি তো মিসেস খানকে অনেক ভালোবাসো। মিসেস খানের সাথে তোমার স্মৃতিগুলোই তোমাকে সুস্থ করেছে । কথা দাও ক্ষমা করে দিবে… আর ঘৃণা করবেনা… ঘৃণা জীবনে শান্ত আনতে পারেনা। কেবল ধংব্স করে।
মেরিন কবিরের মুখের বাধন খুলে দিলো ।
মেরিন : কথা দাও যে মিসেস খানকে ক্ষমা করে দিবে… আর ঘৃণা করবেনা… promise me…
কবির : মারে…
মেরিন : কথা দাও … বলো আমার কসম খেয়ে বলো… বলো…
মেরিনের অনেক জোরাজোরিতে কবির বলল। বলার পর মেরিন আবার কবিরের মুখ বেধে দিলো ।
মেরিন : এখন আমি তোমাদের সবাইকে ১টা কথা বলতে চাই । তোমরা কেউ আর নীড়ের ওপর অভিমান করে থেকোনা…. নীড় যা করেছে সেটা ঠিকই করেছে। আমি … আমাকে ভালোবাসার কোনো কারনই দেইনি… আর তাছারাও এটা psychologically proved যে ছোট বয়সে brain এর মধ্যে কিছু ১টা ঢুকে গেলে সেটা ১টা লম্বা সময়ের জন্য প্রভাব ফেলে যায়… নীড়েপ মস্তিষ্কেও খুনী বনপাখি ঢুকে গিয়েছিলো। ভয়-আতঙ্ক ঢুকে গিয়েছিলো … আর তাই ঘৃণা বুকে বাসা বেধেছিলো …. আমার উনার ওপর কোনো অভিযোগ নেই । তোমরাও ক্ষমা করে দিও । যদি আমাকে একটুও ভালোবাসো তবে নীড়ের ওপর অভিমান করে থাকবেনা …
মেরিন নীড়ের কাছে গেলো । ওর কপালে কিস করলো ।
মেরিন : sorry… আপনার অজান্তে আপনার ডাইরীটা পড়ে ফেলেছি …
নীড় বেশ বুঝতে পারছে যে মেরিন হয়তো অনেক দূরে চলে যাবে … তাই মাথা নেরে না করছে। মুখ বাধা কিছুই বলতে পারছেনা …
মেরিন : যখন জানলাম যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন তখন আমার সব কষ্ট নিমিষেই চলে গিয়েছিলো … ভালোবাসি … অনেক বেশি ভালোবাসি। ভালো থাকবেন । দাদুভাইয়ের খেয়াল রাখবেন …
নীড় : ….
মেরিন : আর কিছু বলার ক্ষমতা এখন নেই … আজকে সব ঘৃণার অবসান করে চলে যাচ্ছে ঘৃণার মেরিন …
তখন আলো নিভে গেলো । আর যখন ফিরে এলো তখন …. মেরিন নেই। সবার হাতে বাধন খোলা । নীড় হাটু গেড়ে বসে পরলো।
নীড়: মেরিনহ…
.
১মাসপর…
মেরিনকে ভোলা নীড়ের পক্ষে সম্ভব না। মেরিনকে ছারা বেচে থাকাও দায় … নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় নীড়ের। মেরিনকে খুজে পায়নি । বুঝে গিয়েছে যে মেরিন ধরা না
দিলে কারো সাধ্য নেই ওকে খুজে পাওয়ার । তাই নীড় ঠিক করেছে যে নিজেকেই শেষ করে দিবে। suicide করবে। তাই বেডের ওপর চেয়ার তুলে সিলিং ফ্যানের সাথে দড়ি বেধে ঝুলে পরার কথা ঠিক করলো। চেয়ারের ওপর দারালো । গলার সাথে পেচালো । চেয়ারটা ফেলে দিলো । তখন গুলি চলার আওয়াজ হলো। নীড় ধপাস করে পরে গেলো নিচে।
নীড় : আহ…
যথেষ্ট ব্যাথা পেলো। নীড় মাথা তুলে দেখে মেরিন। হাতে গান। মানে ওই দরিতে shoot করেছে। আর দরি ছিরে গিয়েছে ।
নীড় : জজজান…
মেরিন : ভেবেছিলাম না কখনো আর গান হাতে নিবো আর না কখনো ফিরে আসবো । কিন্তু আবার আপনার জন্য সবকিছু ভেস্তে গেলো। huh…
নীড় অনেক কষ্টে উঠে বসলো ।
নীড় : ওঠাতেও তো পারতে।
মেরিন : 😒।
নীড় মেরিনের কাছে গেলো । ওর ২কাধে হাত রাখলো ।
নীড় : suicide attempt করার আরো ১টা কারন ছিলো। experimentও বলতে পারো।
মেরিন : experiment ???
নীড় : হামম। experiment … আমাকে বাচাতে আসো কিনা … 😎…
মেরিন : আপনি খুব খারাপ …
নীড় : মিষ্টি নিয়ে আসা উচিত ছিলো তোমার…
মেরিন : কেন ??
নীড় মুচকি হেসে মেরিনের পেটে হাত রাখলো ।
নীড় : এরজন্য …
মেরিন : how could you know ??
নীড় : তোমার মুখের চমক বলে দিচ্ছে ।
মেরিন নীড়ের বুকে মুখ লুকালো।
নীড় : ভালোবাসি…
মেরিন : অনেক বেশি ভালোবাসি …
৮-৯মাস পর নির্বন হলো । মেরিনের জীবনও নরমাল হলো।
.
❤❤❤সমাপ্ত❤❤❤
সিজন ৪
ঘৃণার মেরিন 4
ট্রেইলার : 1
.
মেরিন : সবার ভালোবাসার পাত্র সবাই হতে পারে… না তো এতে গর্বের কিছু আছে আর না তো প্রশংসা পাওয়ার মতো কিছু আছে। কারন… কারো ভালোবাসার পাত্র ২ভাবে হওয়া যায়। ন্যাচারালি ভালো হয়ে এন্ড এন্ড এন্ড ভালোগিরি দেখিয়ে ভালো হয়ে… তাই সবাই ভালোবাসার পাত্র হতে পারে। ইটস নট অ্যা বিড ডিল… বাট বাট বাট … ঘৃণার পাত্র হতে গেলে কলিজা লাগে কলিজা … চাইলেই ভালোবাসার পাত্র হওয়া যায়। কিন্তু চাইলেই ঘৃণার পাত্র হওয়া যায়না। বিকজ…. কেউ ঘৃণার পাত্র হতেই চায়না … কারো সেই কলিজাই নাই…. বাট ওয়ান এন্ড অনলি মেরিন বন্যা খ …. উপস… মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর সেই কলিজা আছে … আম হ্যাপী টু বি অ্যা হেটেড পার্সন। আমি ঘৃণার মেরিন … তবে এটা আমার লজ্জা নয়… এটা আমার গর্ব … এটা আমার পরিচয় … 😎😎😎
ঘৃণা আর ভালোবাসার নতুন সফর । দাবার কোর্টের ১দিকে ভালোবাসা আর অন্যদিকে ঘৃণা । কার প্রতিপক্ষ কে? মেরিন বন্যার প্রতিপক্ষ হয় কার সাধ্য ? ভালোবাসাও মেরিনের… আর ঘৃণা… এটাতে তো মেরিন বন্যারই অধিকার … তাই নিজের সাথে নিজেই খেলছে মেরিন বন্যা …
মা-বাবা-ভাই-বোন … সবাই আছে। পারফেক্ট ফ্যামিলি মেরিনের। তবে সে কেন ঘৃণার ? না… এবার তো মামা-বাবা-মা কারো খুনীই সে নয়… অবৈধ সন্তানও সে নয়… ছোটবেলায় কোনো ভুল বোঝাবোঝির শিকার সে হয়নি….
তবে কেন সে ঘৃণার মেরিন …..
……. ……. ……. …….. …….
( medicine এর effect এ সারাদিনই প্রায় ঘুমিয়েছি। তাই এখন ঘুম আসছিলোনা তাই লিখে ফেললাম প্রথম ট্রেইলার টা। এই first ট্রেইলার লিখলাম। জানিনা কেমন হয়েছে। )
ঘৃণার মেরিন 4
ট্রেইলার : 2
.
বিভিন্ন দেশে বিভিন্নধরনের চুরির জন্য ভিন্ন ভিন্ন শাস্তি আছে … কোথাও হয়তো হাত কাটে , কোথাও হয়তো মাথা…
কোথাও চুল কেটে ফেলে দেয় … কোথাও ঢিল মারে , কোথাও জেলে দেয়…
অনেকগুলোই আছে।
বাংলাদেশেও চুরির শাস্তি আছে । টাকা-পয়সা চুরি করলে খুবই কম শাস্তি… অল্প কিছুদিনের জেল। ব্যাংক চুরি করলে… যাকে বলে ব্যাংক ডাকাতি বা ব্যাংক লুট… এই চুরির শাস্তি একটু বেশি…
আবার চুরির সাথে খুন করলে ফাসি পর্যন্ত হতে পারে…
আবার চোর প্রভাবশালী হলে শাস্তি নয় মুক্তি পেয়ে যায়।
চুরি অনুযায়ী শাস্তি…
কিন্তু… নাম চুরির কি শাস্তি ? অস্তিত্ব চুরির কি শাস্তি ? ভালোবাসা চুরির কি শাস্তি ?
ফাসি-যাবজ্জীবন-হাত কাটা- চুল কাটা…!!!
ভাবতে হবে…
ঘৃণার মেরিন কেও ভাবতে হবে…
আর এবার ঘৃণার মেরিনের জীবনে যে সাইকো টাইপ নীড় টা আছে তাকেও ভাবতে হবে…
১জন ঘৃণা-ভালোবাসা-ঘৃণা নিয়ে সাইকো আর অন্যজন ভালোবাসা-ঘৃণা-ভালোবাসা নিয়ে সাইকো …
দুজনের ভাবনা কি এক না আলাদা? এক হলে দুজন কি করবে?
আর আলাদা হলে কার দেয়া শাস্তিই শাস্তি হবে…
২জনের খেলাই কি ঘৃণার হবে না কি কারো খেলা ভালোবাসারও হবে???
কে আর কিভাবে জিতবে? নীড় না মেরিন?
….,….,….,….,….,….,….,…..,….,….,….,….,….,….,….
ঘৃণার মেরিন 4
ট্রেইলার : 3
.
নীড় : ভালো লাগলো যে মেরিন বন্যা আজকাল কেবল ঘৃণার আশ্রয় না ছলনার আশ্রয়ও নেয় …
মেরিন : সকল প্রেমিকের কাছে প্রেয়সী ভালোবাসতে শিখে , বাঁচতে শিখে …. আর আমি আপনার কাছ থেকে ছলনা শিখেছি…
নীড় : প্রথমত ছলনা কারো কাছে শিখতে হয়না … আর দ্বিতীয়ত আমি কি তোমার প্রেমিক ছিলাম আর তুমি কি আমার প্রেয়সী ছিলে ….
মেরিন : আপনি আমার কি ছিলেন , কি আছেন আর কি থাকবেন সেটা কেবল আমিই জানি…. এখন সিগনেচার প্লিজ ।
নীড় : যদি না করি …
মেরিন : আপনার গলা থেকে মাথাটা কাটতে আমার একটু কষ্ট হবে …
নীড় : কাটতে পারবে…ট্রাস্ট মি… আম্র গলায় ছুরি ধরেছো আমার একটুও ভয় করছেনা। বাট আই নো ভয় তুমি পাচ্ছে….
মেরিন : দুর্বলতা তো ১টাই আমার… নাই বা মারতে পারলাম আপনাকে… বাট বাট বাট … আপনার সাধের ব…..নপাখিকে তো মারতে পারবো…. তাইনা।
বলেই মেরিন নীড় থেকে সরে গিয়ে ছুরিটা ঘোরাতে ঘোরাতে পিছাতে লাগলো।
নীড় : আই ডোন্ট কেয়ার… ডু হুয়াট ইউ ওয়ান্ট … বাট তুমি যেটা চাও সেটা হবেনা। আজকে তোমার জোর-জবরদস্তি তে কোনো লাভ হবেনা। আমি এই পেপারে সিগনেচার করবোনা। ছারতে পারবোনা…
কে বনপাখি ? মেরিন ? না কি অন্যকেউ …
কিসের পেপার??? বিয়ের না কি ডিভোর্সের???
.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.,.
ঘৃণার মেরিন 4
part : 1
Writer : Mohona
.
ডক্টর : দেখুন আমরা তো আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি…
মেরিন : ওহ রিয়েলি…. এটাকে সাধ্যমতো চেষ্টা বলে…? আপনারা এমন চেষ্টাই করছেন যে ১৫বছর ধরে ফলাফল শূন্য… কি দারুন চেষ্টা আপনাদের…. গ্রেট। তাইনা…
ডক্টর : দেখুন মানসিক রোগীকে সুস্থ করার জন্য মেডিকেল ট্রিটমেন্টই প্রধান হয়না… নিয়ম করে মেডিসিন খেলেই কেউ সুস্থ হয়ে ওঠেনা…. এটা আগে এতোদিন আপনার দাদুভাইকে বলেছি… আর এখন আপনাকেও বলছি…
মেরিন : তো কি করবো আমি? মিস্টার খানকে আমার আম্মুর এখানে আসতে বলবো?
ডক্টর : ভালো হয় তিনি এলে…
মেরিন : না তো সে আসবে আর না তো আমি তাকে আসতে বলবো…
ডক্টর : তাহলে হয়তে আপনার অপেক্ষার পাল্লা ভালো হবে…
মেরিন : আমি আমার আম্মুকে বিদেশ নিয়ে যাবো।
ডক্টর : পৃথিবীর সেরা হসপিটালে নিয়ে যান। লাভ হবেনা। আপনার দাদুভাই তো তাকে লন্ডন নিয়ে গিয়েছিলো। এতে ফলাফল আরো খারাপই হয়েছে ভালোনা। আর তাকে এখান থেকে কোথাও শিফ্ট করা হলে সে অসুস্থ হয়ে পরে। এন্ড ইউ নো দ্যাট…
মেরিন : আমার মনে হচ্ছে আমি কিছুই জানিনা… আপনারা আপনাদের ডাক্তারি পেশা বাদ দিয়ে কোনো হোম টোম চালান… যেটা আপনাদের দ্বারা হয়ই না… হচ্ছেই না… সেটা করছেন কেন বলুন তো… ডক্টরস আর জাস্ট ইউজলেস…
ডক্টর : দেখুন মিস খান… কাইন্ডলি আমার পেশা কে অপমান করবেননা…
মেরিন : করলে কি করবেন???
ডক্টর : আমি তো কিছু করার কথা বলিনি… আমি জাস্ট অনুরোধ করছি… যাইহোক… ১জন নতুন সাইকিয়াট্রিস্ট এর সম্পর্কে জেনেছি… তাকে এখন আমাদের জগতে ইয়ং স্টার বলে… সে অল্প সময়ে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছে। ভীষন মেধাবী…
মেরিন : আপনি এমনভাবে তার প্রশংসা কেন করছেন? আমি তাকে বিয়ে করবো?
ডক্টর : না না সেটা বলিনি… আসলে সেই ডক্টরটা মিসেস খানের মতো ৩টা কেইস সল্ভ করেছে। হয়তো তিনি চেষ্টা করলে মিসেস খানকে সুস্থ করতে পারবেন…
মেরিন : তো কোনো শুভলগ্নের অপেক্ষায় না থেকে তার সাথে যোগাযোগ করুন…
ডক্টর : সেটারই চেষ্টা করছি…
মেরিন : এখানেও চেষ্টা … দ্যাট মিনস আরো ১৫ বছর।
ডক্টর : নো নো… আসলে ডক্টরটা অনেক মুডি…. সেটাই করে যেটা করতে তার মনে চায়…
মেরিন : আমি আর কিছু শুনবো না… আই হেইটা দ্যা ওয়ার্ড ‘নো’ … সো আগামী ৩দিনের মধ্যে যেন তাকে এখানে আনা হয়… যতোটাকা লাগে। আর যদি না আনতে পারেন তাহলে তার নাম ধাম ঠিকানা দিন… কালকেই হাজির করবো…
ডক্টর : নো নো… আমরাই আনিয়ে নিবো…
মনে মনে : ডক্টরটা যে সাইকো .. যদি এই মেরিন বন্যা খান তাকে তুলে আনে এখানে… তবে সে চিকিৎসা করা তো দূর… উল্টা বাই চান্স যদি জানে আমি তার নাম বলেছি… তো তো আমি শেষ। আর ওই ডক্টর যদি মিসেস খানকে সুস্থ না করে তবে এই মেরিন বন্যা খান তো আমাকে ওপরে পাঠিয়ে দিবে…
মেরিন : ওকে…
ডক্টর আবুলের মতো ১টা হাসি দিলো।
মেরিন : বাই দ্যা ওয়ে… তার নাম কি?
ডক্টর : সামথিং আহমেদ চৌধুরী…
মেরিন : ওকে… ৩দিন পর দেখা হচ্ছে…
ডক্টর : 😅।
( মেরিন… নাম তো শুনেছেনই… মেরিন বন্যা খান… নায়িকা। )
.
মেরিন ডক্টরের রুম থেকে বেরিয়ে এলো… তখন দেখলো ওর মা কনিকাকে দেখতে পেলো। কোলে ১টা পুতুল নিয়ে এদিক সেদিক ছুটছে আর খিলখিল করে হাসছে। এই মেন্টাল অ্যাসাইলাম থেকে অন্যকোথাও নিলে ও মায়ের মুখে এই হাসিটা দেখতে পায়না। তাই তো এখান থেকে শিফ্ট করেনা। এই জায়গাটার সাথে ওর মা কনিকার বেশ স্মৃতি জরিয়ে আছে। কারন কনিকা ইন্টার্নির পর এখানে জয়েন করেছিল…
মেরিন এগিয়ে যেতে নিয়েও আবার ফিরে আসে। কারন ওকে দেখেই হয়তো কনিকা পালাবে…
কিছু না ভেবে মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
হাই ভলিউমে গান বাজিয়ে প্রচন্ড স্পিডে ড্রাইভ করছে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন … 😴
গানের সাথে নীড়ও তাল মিলিয়ে গাইছে…
নীড় :
I’m at a party I don’t wanna be at
And I don’t ever wear
a suit or tie , yeah…
wnderin if I…..
……..
cause i don’t care when
i’m with my baby…
ওদিকে মেরিনও ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে। সেই সাথে ওয়াইনও খাচ্ছে মাঝে মাঝে। গ্রামের পথ। তাই তেমন চওড়া নয়। সরু… তবে ২টা গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে। মেরিনের গাড়ির স্পিড নীড়ের গাড়ির স্পিডের থেকেও বেশি। তাই অল্প সময়ে নীড়ের গাড়ির নাগাল পেলো । মেরিন হর্ন বাজালো… নীড় শুনলো না। মেরিন ননস্টপ হর্ন দিতেই লাগলো। নীড়ের কানে পৌছালো।
নীড় : হর্ন…
নীড় লুকিং মিররে দেখলো মেরিনের গাড়ি।
নীড় : আমাকে হর্ন দিচ্ছে। আবার আমার গান শোনার মধ্যেও ব্যাঘাত ঘটালো। তবে তারথেকেও বড় কথা … আমার নাগালের মধ্যে এলো কিভাবে। বাহ অনেক স্পিড তো? কে এই গাড়ির মালিক? দেখতে হয় তো….
তবে নীড় দেখতে পেলোনা মেরিনকে। ওদিকে মেরিনতো হর্ন বাজিয়েই যাচ্ছে।
নীড় : আচ্ছা স্টুপিড তো। হর্ন দিয়ে দিয়ে কানের মাথা খেয়ে ফেললল… নো নো নো… এর শাস্তি তো তােমাকে পেতেই হবে… চলো রেস করি….
নীড় অল্প একটু সাইড দিলো। মেরিন যেতে নিলে নীড় আবার মেরিনের গাড়ির সামনে চলে এলো।
মেরিন বামে গেলে নীড়ও বামে যায়। আর মেরিন ডানে গেলে নীড়ও ডানে যায়।
নীড় : ওয়াও নাইস গেইম। ঢারা পর্যন্ত এভাবেই যাবো। হাউ গ্রেট আই অ্যাম …
কিন্তু মেরিনের মেজাজ তো মহা খারাপ হয়ে গেলো।
মেরিন : এর কি মরার ভয় নেই যে এ মেরিন বন্যা খানের সামনে আসছে…. জানেনা যে আমি এর সাথে কি করতে পারি… আমার সাথে কোন সাহসে গেই খেলছে… হাও ডেয়ার হিম…
মেরিন আরো বাজালো। বাট জনাব নীড় তো নীড়ই…
মেরিন : ওকে… খেলেটা শুরু করেছো তুমি মিস্টার অর মিসেস হুয়াটএভার…
মেরিন গাড়ির স্পিড কিছুটা কমিয়ে ব্যাকে নিলো ।
নীড় : হেই ভয় পেয়েছে… মনে ঘুরে যাবে…. মজা পেলাম খেলাটায়।।। টু মাচ ভীতু…
তবে নীড়ের ধারনা ভুল প্রমান করে মেরিন ২গুন স্পিডে এগিয়ে এসে নীড়ের গাড়ির পিছনে লাগালো ধাক্কা…
নীড় : ওহ শীট…
প্রচন্ড বেগ নিয়ে এসে আঘাত করায় নীড়ের গাড়ি ওর নিয়ন্ত্রনের কিছুটা বাহিরে চলে গেলো আর অনেকটাই মেরিনের নিয়ন্ত্রনে চলে গেলো। এরপর মেরিন নীড়সহ ওর গাড়িটাকে অগভীর ফাদে ফেলে দিলো…
ফেলে মেরিন গাড়ি থেকে নামলো।
মেরিন : আই ডোন্ট নো হু আর ইউ…. বাট মেরিন বন্যা খানের পথের সামনে এলে এমনটাই হয়…সো ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু প্লে গেইম উইথ মেরিন বন্যা খান…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
.
নীড় কোনোরকমে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে এলো। একে রাত তারওপর অমাবস্যা… চারদিক অন্ধকার। তারওপর নীড়ের গা ভরতি কাদা। নীড়ের রাগ সাংঘাতিক বারছে…
নীড় : মেরিন বন্যা খান …আই উইল সি ইউ…
তখনই দেখলো কেউ ১জন বাইক নিয়ে আসছে… সেটা দেখে নীড় বাকা হাসি দিলো। জোর-জুলুম করে বাইকটা নিয়ে নিলো। আর যেতে যেতে
বলল : এখানেই দারিয়ে থেকো না হয় গুটি গুটি পায়ে সোজা এগিয়ে এসো । কাজটা হলে বাইক দিয়ে দিবো।
নীড় সর্বোচ্চ গতিতে বাইক চালাচ্ছে….
নীড় : মিস হুয়াটএভার খান…. কোথায় আপনি….
নীড় দেখতে পেলো মেরিনের গাড়ি ।
নীড় : হেয়ার ইউ আর…
নীড় বাইক নিয়ে যেয়ে একেবারে মেরিনের গাড়ির সামনে থামালো। মেরিন কোনোরকমে ব্রেক চাপলো। সংঘর্ষত হতে হতে বেচে গেলো। নীড় আশেপাশে দেখে নিলো কোনো কাদা টাদা আছে কিনা। না নেই….
মেরিন ক্ষেপে গাড়ি থেকে নামলো। আর নীড় স্টাইল মেরে বাইক থেকে নামলো…
মেরিন : ইউ….
মেরিন নীড়ের সামনে যেতেই নীড় মেরিনকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। উদ্দেশ্য মেরিনের গায়ে কাদা ভরিয়ে দেয়া…. মেরিন নীড়ের হাটু বরাবর দিলো একটা লাথে …
নীড় খানিকটা পিছে সরে গেলো…. এরপর মেরিন ঠাস করে নীড়কে ১টা থাপ্পর মারলো…
এরপর নিজের গানটা নীড়ের কপালে ঠেকাল।
মেরিন : হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মি।। নীড় মেরিনের চোখে চোখ রেখে বলতে লাগলো…
নীড় : কেন আপনি কোহিনুর … যে আপনাকে টাচ করা যাবেনা… দেখে তো মনে লেডি মাফিয়া… ভয় পাইনা আপনার খেলনা পিস্তলে… আর তাছারাও খেলাটা আপনি শুরু করেছেন তাই শেষ আমি করলাম। যদিও আপনার মতো মেয়ে জরিয়ে ধরা তো দূরের কথা টাচ করার ইচ্ছাও আমার নেই… বাট দুর্ভাগ্যবশত এখানে কাদা টাদা নেই যে আপনাকে কাদায় ডুবাবো। তাই যেই কাদায় একটু আগে আমাকে ডুবিয়েছিলেন সেই কাদাই আপনার শরীরে ভরিয়ে দিলাম । সিম্পল। নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের পেছনে লাগা আর বিদ্যুৎ কে হাতে ধরা একই…
‘নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন’ …. ‘আহমেদ চৌধুরী’ …
নীড় নিজের ডায়লগ মেরে চলে গেলো। লোকটাকে বাইক ফেরত দিতে।
মেরিন গানটা নীড়ের পেছনে তাক করলো…
মেরিন : নো নো নো… তারাতারির কাজ বোকার… হ্যালো জন…
জন : হ্যা ম্যাম বলুন…
মেরিন : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন …
জন : কি করতে হবে ওর…
মেরিন : সাইকিয়াট্রিস্ট অর নট….? ইয়েস হোক অর নট হোক… ব্রিং হিম টু মি… ইউ হ্যাভ ২৫আওয়ার্স…
জন : ওকে ম্যাম…
.
পরদিন…
দুপুর ১টা …
নীড়ের ঘুম ভাঙলো।
নীলিমা : নীড়… এই নীড়। আর কতো ঘুমাবি…
নীড় : উঠে পরেছি মামনি….
নীলিমা : খুব তারাতারি উঠেছিস… বলি এমন ঘুমন্ত ডক্টরের কাছে কোন রোগী আসবে শুনি?
নীড় : না আসলে নেই। মন চেয়েছে ডক্টর হয়েছি … এরমানে তো আর এটা না যে দিনে হাজারটা রোগী দেখতে হবে… যে আসবে সে মোস্ট ওয়েলকাম…
নীলিমা : এখন দয়া করে কিছু খেয়ে উদ্ধার করো…. তোমার বনপাখির সাথে কথা বলো…
বলেই নীলিমা নিচে নেমে এলো।
নীলিমা : সারারাত জেগে ওই শাকচুন্নির সাথে ফোনে প্রেম করবে আর দিনেরবেলা চোরের মতো ঘুমাবে।
.
একটুপর…
নীড় নিচে নেমে এলো। ব্রেকফাস্ট করছে। তখন কোথায় থেকে ১দল কালো পোশাকধারী লোক এসে হাজির হলো। নীলিমা তো দেখেই ভয় পেয়ে গেলো…
নীড় : আপনারা কারা? কি চান এখানে….?
জন : আপাদত আপনাকে চাই… চলুন…
বলেই জন দহনের মুখের সামনে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করলো। কারন জন ভালোমতোই জানে যে বেহুশ না করলে নীড়কে নেয়া সম্ভব না। আর নীড়কে না নিলে মেরিন ওকে শেষ করে দিবে…
নীলিমা : আরে এই… তোমরা আমার ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো … এই … দারাও… এই শোনো…
ওরা নীড়কে নিয়ে চলে গেলো। নীলিমা চিন্তায় দিশেহারা হয়ে গেলো। নীলিমা নীড়ের বাবা নিহালকে ফোন করলো…
.
২ঘন্টাপর …
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো…
মেরিন : অনেক সময় নিলেন মিস্টার আহমেদ চৌধুরী হোশে আসতে…
নীড় চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। সবুজ আকাশী রঙের লেডিস শার্ট আর সাদা রঙের লেডিস জিন্স পরা। উচু করে ঝুটি করা… হাতে গান…
নীড় : ইউ…
বলেই নীড় উঠতে নিলো। কিন্তু উঠতে পারলোনা। কারন হাত-পা বাধা… তাও অদ্ভুদভাবে। অথচ এতোক্ষন তো ছিলোনা। যেই উঠতে গেলো অমনি এগুলো কোথায় থেকে এলো।
মেরিন : এটা মেরিনের অন্ধকার রাজ্য । মেরিনের শাস্তিপুরী… এখানে আমার ইচ্ছাই শেষ ইচ্ছা।
নীড় : আমাকে এখানে ধরে আনার কারন কি? কালকে জরিয়ে ধরার শাস্তি…?
মেরিন : মেরিন বন্যা খানকে জরিয়ে ধরার শাস্তি মৃত্যুদন্ডও হতে পারতো। বাট বাট বাট…
নীড় : বাট হুয়াট…
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কখনো কাউকে জবাব দেয়না…
বলেই কিছু কাগজ নীড়ের দিকে এগিয়ে দিলো।
মেরিন : সিগনেচার প্লিজ…
নীড় : সিগনেচার?
মেরিন : ইয়েস সিগনেচার… আপনি এখন থেকে আমার আম্মুর পারসোনাল ডক্টর হবেন… যতোদিন না আমার আম্মু সুস্থ হবে ততোদিন আপনি কেবল আর কেবল আমার আম্মুরই চিকিৎসা করবেন…সেটার অ্যাগ্রিমেন্ট।
নীড় : হুয়াট ? আমি এটাতে সিগনেচার করবো…. এটা আপনি ভাবলেন কােন সাহসে….
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো..
মেরিন : সাহস…. সাহস …. সাহসের সাথে মেরিন বন্যা খানের সম্পর্কটা বেশ নিবিড় … ইটস মাই বেস্টফ্রেন্ড…. সিগনেচার করুন…
.
চলবে….???
ঘৃণার মেরিন 4
part : 2
writer : Mohona
.
মেরিন : সিগনেচার করুন …
নীড় : নো… নেভার।
মেরিন : দেখুন নো শুনতে আমি শিখিনি … আর পছন্দও করিনি। আসলে ঘৃণা করি…
নীড় : আর আমি যদি নো বলি তবে সেটা ‘নো’ ই হয়…
মেরিন : ওহ গুড … ভেরি ভেরি গুড …
বলেই মেরিন ১টা চেয়ার টেনে নীড়ের বরাবর বসলো। পায়ের ওপর পা তুলে নীড়ের দিকে তাকিয়ে হাতে গানটা ঘুরাতে লাগলো…
নীড় : যদি আপনি এটা মনে করেন যে ওই বস্তুটার ভয় দেখিয়ে আপন আপনার কাজ করিয়ে নিবেন … তাহলে আপনি ভুল…
মেরিন : আপনার এটা কেন মনে হলো যে এটা আমি আপনার ওপর প্রয়োগ করবো…. আপনি আমার তুরুপের টেক্কা … সেই সাথে আমি… যাই হোক… জন…. জন…
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : মিস্টার নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের জান যেন যেন এখন কোথায়?
জন : ম্যাম… স্যারের জান এখন ইতালিতে আছে…
মেরিন : ওখান থেকে তাকে গুম করতে কতোক্ষন লাগবে…
জন : সর্বোচ্চ ১০মিনিট ম্যাম । আপনি বললে তাকে জানেও মেরে ফেলে যায়। তাও কেবল ৩মিনিটে… শুধু আপনার ইয়েস বলার অপেক্ষা…
মেরিন : বলুন তো ডক্টর সাহেব কি করা যায়?
নীড় : মিথ্যা ভয় দেখিয়ে লাভ নেই…
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কখনো মিথ্যা ভয় দেখায়না… জন…
জন নীড়কে ১টা ভিডিও দেখালো…
নীড় : জান… ছারো ওকে…
মেরিন : ছারবো তো… সিগনেচার করো।
নীড় : অনেক দাম দিতে হবে এই কাজের জন্য …
মেরিন : ওকে। সস্তা জিনিস পছন্দও না… তো এখন বলুন করবেন কি করবেন না?
নীড় : আমার হাত আটকানো…
মেরিন : সো স্যাড…
তখনই নীড়ের এক হাত মুক্ত হয়ে গেলো। নীড় সিগনেচার করলো। মেরিন কাগজগুলো হাতে নিলো।
মেরিন : যেকো পেপারসই পড়ে সিগনেচার করা উচিত নীড়…
কথাটা শুনে নীড় ঘাবরে গেলো। আসলেই তো পড়ে দেখা দরকার ছিলো। নীড়ের কাজুমাজু মুখ দেখে মেরিন হা হা করে হেসে উঠলো…
মেরিন : ভয় নেই … মেরিন বন্যা খান ছলনায় বিশ্বাসী নয়…. তাই এই পেপালস গুলোতে তেমন কিছুই নেই। চাইলে পড়ে দেখতে পারেন…
নীড় : নট নিডেড …. আমাকে কি অনন্তকাল এখানেই বন্দী করে রাখা হবে?
মেরিন : নট অ্যাট অল … জন … এই কাগজগুলো জায়গা মতো রেখে গাড়ির কাছে যাও। এরপর মিস্টার খানকে স্বসম্মানে বাসায় পৌছে দিয়ে এসো…
জন : জী ম্যাম ….
জন চলে গেলো।
.
নীড় মুক্ত হলো।
নীড় : আমা …
মেরিন : আপনার জানও মুক্ত হয়ে গিয়েছে…
নীড় : কাজটা ঠিক করোনি … আমি তোমাকে দেখে নিবো…
মেরিন : রোজই দেখতে পাবেন…
নীড় : বের হবো কোন দিক দিয়ে… সব তো একই লাগছে …
মেরিন : একটু খেয়াল করে দেখেন পেয়ে যাবেন…
নীড়ের ইচ্ছা করছে মেরিনের ঘাড় মটকে দিতে। কিন্তু এই স্টুপিড মার্কা মেয়েটাক টাচ করাও বিপজ্জনক… নীড় খেয়াল করলো যে ১দিকে সূর্যের আলো বেশি অদ্ভুদ আকৃতিতে পরেছে…
নীড় মনে মনে : এমন কেন আলোটা..
মেরিনের চোখ নীড়ের দিকে…
নীড় বাকা হাসি দিয়ে
বলল : গট ইট … আসছি …
নীড় কয়েক কদম আগে বারলো….
মেরিন : নীড় …
‘নীড়’ … ভীষন অদ্ভুদ লাগলো নীড়ের কাছে এই ডাকটা। মনে হচ্ছে খুব ভালোবেসে ডাকা হয়েছে। নীড় দারিয়ে গেলো।
মেরিন : একটু শুনুন …
নীড় ঘুরলো।
নীড় : নাউ হুয়াট …?
মেরিন ওর চিরচেনা সেই রহস্যময়ী হাসি দিয়ে নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো। খুব কাছাকাছি দারালো । নীড়ের চোখে চোখ রাখলো। এরপর হুট করে নীড়ের ঠোটে ১টা কিস করে নীড়ের ২কাধে ২হাত রেখে
বলল : আই লাভ ইউ …
নীড় তো জাস্ট অবাক … কয়েক সেকেন্ডের জন্য ওর মস্তিষ্কই কাজ করা বন্ধ করে দিলো। ও বুঝতেই পারলো না যে ঘটনাটা কি ঘটলো …
কিন্তু সেই কয়েকসেকেন্ড পর নীড় ঝড়ের গতিতে মেরিনের কাছ থেকে সরে এলো। ঠাস করে মেরিনকে ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় : আমার থেকে দূরে থাকো … ভুলেও যেন তোমাকে আমার সামনে না পাই…
বলেই নীড় হনহন করে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : ভুলের তো কোনো প্রশ্নই আসেনা।। আমি তো ইচ্ছা করেই আপনার সামনে আসবো… তবে থাপ্পরটা তেমন ভালো লাগলোনা আমার…
তখন জন হাজির হলো।
জন : ম্যাম …
মেরিন : কি ব্যাপার? তুমি উনাকে পৌছে দিতে যাওনি?
জন : কিভাবে যাবো ম্যাম ? স্যার তো রেগে আগুন হয়ে হনহন করে একাই বের হয়ে গেলো। ডাক দিলাম পরে এমন ভাবে তাকালো যে আমি প্রায় চমকেই উঠেছিলাম…
মেরিন : ওহ ওয়াও… দ্যাটস লাইক কিং… ইমপ্রেসিভ।
জন : ম্যাম ১টা কথা…
মেরিন : আবার কি ???
জন : ম্যাম কবির স্যার যদি জানতে পারেন যে আপনি নীরাকে বন্দী করেছিলেন তাহলে অনেক ইস্যু হবে…
মেরিন : ওয়েট ওয়েট ওয়েট … আমি নীরাকে কখন বন্দী করালাম…?
জন : ম্যাম … নীড় স্যারের গার্লফ্রেন্ড নিরা।।
মেরিন : হয়াট ….
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : আর এটা তুমি আমারে এখন বলছো?
জন : ম্যাম আমি মনে করেছি আপনি জানেন…
মেরিন : স্টুপিড … বাট বাট বাট … এই খেলা দারুনভাবে জমবে… খেলেটা যে আমার অতীব প্রিয় খেলা। ছিনিয়ে নেয়ার খেলা …
বলেই আবারও মেরিন উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো।
.
নীড় হন্তদন্ত হয়ে বাসায় ঢুকলো। ঢুকে দেখে নীলিমা এমনভাবে কান্না করছে যেন কেউ মরে টরে গেছে। নিহাল ১বার নীলিমাকে শ্বান্তনা দিচ্ছে আবার ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে ।
নীড় : আবার এখানে কি হয়েছে? 😡।
নিহাল : নীড়…
নীলিমা ছুটে নীড়ের কাছে গেলো। জরিয়ে ধরলো। এরপর নীড়ের সারামুখে চুুমু একে দিলো।
নীলিমা : বাবা তুই ঠিক আছিস? তোর কিছু হয়নি তো?
নীড় : আমার কিছু হয়নি। বাট তুমি এভাবে কাদছিলে কেন?
নিহাল : তোমার জন্য। তোমাকে নাকি কালো পোশাকধারী কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো।।
নীলিমা : ওরা তোকে মারে টারেনিতো…
নীড় : নো… আই নিড আইস ব্যাগ রাইট নাউ…
নীলিমা : কেন কোথায় ব্যাথা পেয়েছিস…?
নীড় : কোথাও ব্যাথা পাইনি । মাথায় ধরবো।
নীলিমা : মাথায় ব্যাথা পেয়েছিস…?
নীড় : আরে পাইনি বললাম তো। আই নিড আইসব্যাগ…
নীড় মাথায় আইসব্যাগ ধরে রেখেছে… রাগে কুমাচ্ছে।
নিহাল : এই কিডন্যাপিং এর মূলে কে বা কারা আছে তুমি কি জানতে টানতে পেরেছো? জানলে বলো আমি তা…
নীড় : মেরিন বন্যা খান…
নিহাল : হুয়াট?
নীড় : মেরিন বন্যা খান ই আমার কিডন্যাপ করিয়েছিলো।
নিহাল : মেরিন বন্যা খান?
নীড় : হ্যা মেরিন বন্যা খান। সে চায় আমি তার মায়ের ট্রিটমেন্ট করি… এই সময়ের মধ্যেই সে নিরাকে ইতালিতেই বন্দী করিয়ে… সেটা নিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে অ্যাগরিমেন্ট পেপারে সিগনেচার করিয়েছে…
নীলিমা : কি বলছিস কি? এগুলো ১টা মেয়ে করিয়েছে?
নীড় : ইয়েস।
নীলিমা : কি ভয়ংকর রে…
নিহাল : ভয়ংকরের আর শুনেছো কি? এই মেয়ে মেয়ে না। প্রলয়… ও …
নীড় : ও কি ও কে আমি জানিনা আর জানতেও চাইনা… আমার জন্য ও জাস্ট ১টা মাথাব্যাথা। ও কি ভেবেছে … সিগনেচার করিয়েছে বলেই কি আমি ওর মা কনিকা খানের ট্রিটমেন্ট করবো? নো নেভার। আমাকে চেনেনা… আমি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ।
নীলিমা : কি নাম বললে তুমি মায়ের…?
নীড় : কনিকা খান…
নীলিমা মনে মনে : ওর নামও তো কনিকা খান ছিলো। আর ওও নাকি মানসিক ভাবে অসুস্থ… তাহলে কি ওই সেই…
নীড় : কোনোদিনও করবোনা ওই মহিলার ট্রিটমেন্ট।
নীলিমা : করবে।
নীড় : মানে?
নীলিমা : মানে তুমি কনিকা খানের চিকিৎসা করবে।
নীড় : নো….
নীলিমা : ইয়েস … তোমার মা আজকে বেচে আছে তা কেবল ওই কনিকা খানের জন্য।
নীড় : বাট মামনি…
নীলিমা : দেখো তোমাকে কখনো কিছু বলিনি। কোনো রিকুয়েস্টও করিনি আর আদেশও দেইনি… তাই প্লিজ ডু দ্যাট।
নীড় : মামনি তুমি আমাকে এভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারলে?
নীলিমা : হ্যা করলাম।
নীড় : ওকে ফাইন করবো…
বলেই নীড় ওপরে চলে গেলো।
.
নিহাল : তুমি তো আমাকে কখনো একথা বলোনি…
নীলিমা : প্রসঙ্গ ওঠেনি তাই বলিনি…
মনে মনে : কি আর বলবো… এমন তো কিছু ঘটেইনি… আমি তো এটা একারনে বললাম যেন নীড় চিকিৎসাটা করে। আসল ঘটনা তো এই যে ব্লাড ডোনেট করতে গিয়ে ওর সাথে আলাপ হয়েছিলো। সেই থেকে মোটামোটি বন্ধুত্ব … হুট করে কি যে হয়ে গেলো…
নিহাল : এই নীলিমা… কি ভাবছো…
নীলিমা : কিছুনা…
নীড় : উফফ।। এই মামনির জন্য আটকে গেলাম । কিন্তু ছারবোনা আমি ওই মেরিনকে।। বনপাখির সাথে একটু কথা বলে নেই…
.
রাতে …
মেরিন বাসায় ঢুকলো। ওপরে উঠবে তখন ওর বাবা কবির ডাক দিলো।
কবির : দারাও…
মেরিন : আপনি কি আমাকে দারাও বললেন…? ভাবা যায়….
কবির : তুমি নিরাকে বন্দী করেছিলে কেন?
মেরিন : দরকার পরেছে করেছি… ছেরেও দিয়েছি।
কবির : কি এমন দরকার ছিলো শুনি…?
মেরিন : অ অ… মিস্টার খান ভুলে যাবেন না যে মেরিন বন্যা খান কাউকে জবাব দেয় না। আর তাছারাও আপনার মেয়েকে মেরে তো ফেলেনি…
বলেই মেরিন ওপরে চলে গেলো।
কবির : এই মেয়ে দারাও… এই…
মেরিন কি আর দারায়।।। মেরিন সোজা গেলো ওর দাদুভাই শমসের খানের রুমে।
মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : এসে পরেছে আমার দিদিভাইটা…
মেরিন : হামমম।
দাদুভাই : কবির কিছু বলেনি…
মেরিন : বলেছিলো… ১কান দিয়ে ঢুকিয়েছি আর অন্য কান দিয়ে বের করেছি। কিছু খেয়েছো রাতে…
দাদুভাই : আমার দিদিভাইটাকে ছারা কি আমি রাতে কখনো খাই…
মেরিন : আমি এখনই ফ্রেশ হয়ে আসছি।
মেরিন ফ্রেশ হয়ে এলো। এরপর ২জন খেতে গেলো। মেরিনকে দেখে সেতু মানে মেরিনের সৎমা উঠে চলে গেলো। মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : একেই বলে দাপট। তাইনা দাদুভাই… সিংহকে দেখলে হায়নারা এভাবে পালিয়ে যায়।।। ফিলিং গ্রেট।।
সেতু রেগে মেরিনের দিকে তাকালো… মেরিন টেবিল থেকে ২টা কাটা চামচ সেতুর চোখ বরাবর ছুরে মারলো। সেতু ভয় চোখ বন্ধ করে ফেলল।
মেরিন : আমি চাইনি তাই এরা আপনার চোখের ভেতর যায়নি।।। নেক্সট টাইম আমার দিকে ওভাবে তাকালে চোখ তুলে ফেলবো।
সেতু চলে গেলো ওখান থেকে।
দাদুভাই : দিদিভাই… নিরাকে নিয়ে কি হয়েছে?
মেরিন সব বলল। সবটা শুনে দাদুভাই অবাক হলো । নীড়কে ভালোবাসার কথাটা শুনে… দাদুভাই নীড়কে মোটামোটিভাবে চেনে। নিরার জন্য। বেশ কয়েকবছর ধরেই ওরা রিলেশনশীপে আছে।
.
পরদিন ….
দুপুর ১২টা …
নীলিমা : নীড় … এই নীড়… নীড়… ওঠ আর কতো ঘুমাবি…. কোনো ছেলে মানুষ যে এতো ঘুমাতে পারে তা আমার জানা ছিলোনা। ওঠ…
নীড় : মামনি … আরেকটু…
নীলিমা : ওঠ জলদি। ভুলে গিয়েছিস নতুন রোগী পেয়েছিস… মেরিন বন্যা খানের মা।
কথাটা শুনে নীড়ের ঘুমের রেশ কেটে গেলো। ১বোঝা বিরক্তি মাথায় ভর করলো। উঠে বসলো।
নীলিমা : বাবা… তুই উঠে পরলি…
নীড় : সকালবেলা আর কারো নাম পেলেনা ? ওই স্টুপিড মেয়েটার নাম নিতে হলো ….
নীলিমা : মেরিনের নাম নেয়াতেই তোর ঘুমের রেশ কেটে গেলো… ওহ গ্রেট.. এখন থেকে তোর ঘুম ভাঙানোর জন্য এই আইডিয়াটাই অ্যাপ্লাই করবো।
নীড় : নো ওয়ে। খবরদার ওই মেয়েটার নাম আমার সামনে নিবেনা বলেদিলাম।
নীলিমা : হয়েছে এখন ওঠ। যাবিনা সেই অ্যাসাইলামে? লেইট হলে ওই মেয়ে কি না করে আবার..
নীড় : কিছুই করবেনা। ওই মেয়েটা কেবল বেয়াদবি করে। আর চাপা ছারতে পারে। তাছারা কিছুই না….
মেরিন : ওহ রিয়েলি…
নীড় : ইয়েস…
নীড়-নীলিমা ঘুরে দেখে মেরিন দারিয়ে আছে।
নীড় : ইউ… 😡…
মেরিন : হ্যা আমি।
নীড় : তুমি আমার বেডরুমে ঢুকেছো কোন সাহসে? আমার বাসাতেই ঢুকেছো কোন সাহসে?
মেরিন : কালই এই সাহস নিয়ে আলোচনা করেছি। তাই আর মুড নেই। সরি প্লিজ … যাই হোক ১০মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিচে আসুন। সময়ের কাজ অসময়ে করতে আমার ভালো লাগে… কাম ফাস্ট।
নীড় : সরি…?
মেরিন : বললাম রেডি হয়ে নিচে আসুন। আমাদের পৌছাতেও হবে।
নীড় : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন অর্ডার নেয় না। অর্ডার দেয়। যা করে নিজের ইচ্ছামতো করে। ভাবলে কি করে যে তোমার অর্ডার ফলো করবো?
কথাটা শুনে মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : মেরিনের সাথে যারা জরিয়ে পরে তাদের ভাবনা চিন্তা মেরিনই নিয়ন্ত্রন করে। কারন মেরিনের ইচ্ছা এবং ভাবনার কাছে বাকীদেরটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পরে। তাই কারো আলাদা করে ভাবনা চিন্তার প্রয়োজন হয়না…
.
.
.ঘৃণার মেরিন 4
part : 3
writer : Mohona
.
মেরিন : তাই কারো আলাদা করে ভাবনা চিন্তার প্রয়োদন হয়না… ১০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিন।
নীড় : হবোনা।
মেরিন : দেখুন এখানে উপস্থিত আছি । তাই কি ঘটতে পারে তা আল্লাহ ছারা কেউ জানেনা।
নীড় : কি করবে কি তুমি হ্যা ?
মেরিন : আপনার সম্মানিত বাবার সম্মান কিছুটা হানী হবে। পুলিশ আসবে। কারন আপনি কন্ট্র্যাক্টের নিয়ম ঠিক মতো ফলো করেননি…
নীড় : যা মন চায় করো। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি এখন ঘুমাবো। গুড বাই…
নীলিমা : বাট আই কেয়ার … চৌধুরী বাড়িতে কখনো পুলিশ প্রবেশ করেনি নীড়।
নীলিমার কথা শুনে মেরিন নীলিমার দিকে তাকালো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। এরপর বাকা হাসি দিলো।
নীড় : তো? আমি কি এই মেয়েটার হাতের পুতুল হয়ে যাবো নাকি?
নীলিমা : দেখো ভুলে যেওনা যে তুমি ডক্টর। আর তাছারাও কালকে তোমার সাথে এ নিয়ে কথা হলো বলো…
নীড় : সো হুয়াট?
মেরিন : আমার আম্মুকে যদি সুস্থ না করেন আমি আপনার মামনিকে অসুস্থ করে দিবো…
নীলিমা : 😱।
নীড় : কি বললা তুমি? শুনেছো মামনি মেয়েটা কি বলছে? কি খারাপ …
মেরিন : দেখেন আমি হাওয়ায় গুলি চালাইনা। যেটা বলি সেটা করেই ছারি। এখন আপনি ঘুমাবেন নাকি তাকিয়ে থাকবেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমি নিচে অপেক্ষা করছি…
মেরিন রুম থেকে বের হলো।
নীলিমা : বাবারে… যে মেয়ে তোর মতো ১টা ছেলেকে বাসা থেকে তুলে নিতে পারে সে মেয়ে সবই পারে। রেডি হয়ে নিচে আয়…
বলেই নীলিমাও বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন নিচে নামছে আর তখন নিহাল ভেতরে ঢুকলো।
নিহাল : নীলা … এই নীলা… আমি ব্লু ফাইলটা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। দাও তো একটুখানি। ওটা নিয়ে ফ্যা…. মেরিন বন্যা খান?!!!
মেরিন : হ্যালো মিস্টার চৌধুরী।
নিহাল : তুমি এখানে?
মেরিন : হামমম।
নিহাল : কেন?
মেরিন : আপনার ছেলেকে হাইজ্যাক করতে।
নিহাল : দেখো বিজনেস ওয়ার্ল্ডে নিহাল চৌধুরী তোমার আর তোমার কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল। বাট। বাবা নিহাল চৌধুরী তোমার ওপর কিন্তু কোনোক্রমেই নির্ভরশীল নয়… তাই যদি আমার ছেলের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করো। তাহলে…
মেরিন নিহালের সামনে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : তাহলে?
নিহাল : আমি তোমাকে ছেরে দিবোনা…
কথাটা শুনে মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো … এ যেন এক অদ্ভুদ হাসি। নীলিমা নিচে এলো। মেরিন গিয়ে বড় ১টা রাজকীয় চেয়ারে বসলো। আসলে ওটা নীড়ের চেয়ার।
নিহাল : এই মেয়ে ওঠো ওই চেয়ার থেকে… নাহলে…
মেরিন : নাহলে….? তাহলে নাহলে আপনি কাকে বলছেন? মেরিন বন্যা খানকে ? দেখুন আজও আমার ক্ষোভটা আপনার ওপর গিয়ে পরেনি। কারন আপনি ১জন ভালো বিজনেসম্যান। তাই এমন কিছু বলবেন না বা করবেন না যারজন্য আমি আপনাকে বরবাদ করতে বাধ্য হই। পুলিশও আপনার কথা শুনবেনা। পুলিশ মন্ত্রীও আপনার কথা শুনবেনা। এন্ড এন্ড এন্ড … শহরের যে বড় মাফিয়া বা গুন্ডা সেও আপনার কথা শুনবেনা। তার আমার কথাই শুনবে। কারন মানি ইজ মানি। অযথা শত্রুতা করতে আসবেননা। শত্রু শত্রু খেলা আমার ১টা অন্যতম প্রিয় খেলা। দীর্ঘ ৭বছর ধরে খেলে আসছি। চ্যাম্পিয়ন আমি এটাতে … বন্যার সাথে লরতে এলে বন্যায় তলিয়ে যাবেন। টোপাপানার মতো ভাসবেন… আই মিন ইট…
তখন নীড় নেমে এলো। এসে নিজের চেয়ারে মেরিনকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন এই চেয়ারে কেউ বসেনা। নীড় পছন্দ করেনা। নীরাও সাহস পায়নি বসতে।
নীড় : তুমি আমার চেয়ারে বসেছো কেন ?
মেরিন : চেয়ারটা সুন্দর। রাজকীয় রাজকীয় ভাব আছে। ভালো লেগেছে আমার …তাই বসলাম…
নীড়ের রাগ আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেছে। মেরিন দারালো।
মেরিন : চলুন যাওয়া যাক।
নীড় : গিভ মি টু মিনিটস …
বলেই নীড় কিচেনে গিয়ে কেরোসিন আর দিয়াশলাই নিয়ে এলো। এরপর চেয়ারটা জ্বালিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি জানোনা আমি তোমার থেকেও ডেন্জারাস।
মেরিন বাকা হাসি হেসে হাতে তালি দিলো।
মেরিন : হুয়াট অ্যান অ্যাটিটিউড। ইমপ্রেসিভ … আপনার মতো কাউকেই খুজছিলাম। ইট উইল বি গ্রেট ফান মিস্টার চৌধুরী। লেটস গো…
.
ওরা মেন্টাল অ্যাসাইলামে পৌছালো । নিজ নিজ গাড়িতে।
নীড় : কোথায় তোমার আম্মু …?
মেরিন : আগে আম্মুর মেডিকেল হিস্ট্রি তো দেখুন।
নীড় : নট নিডেড। আমি তোমার আম্মুর প্রেজেন্ট এন্ড ফিউচার দেখবো। তোমার আম্মু কোথায়…?
মেরিন : আসুন আমার সাথে।
ওরা ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন : ওই যে আমার আম্মু … পুতুল হাতে।
নীড় কনিকার পেছনটা দেখলো।
নীড় : হাম চলো।
মেরিন : আপনি যান আমি যাবোনা।
নীড় : হুয়াই…?
মেরিন : আমার আমাকে দেখলে পালিয়ে যায়।
নীড় : গ্রেট ডটার ইউ আর। তোমার মাও তোমাকে দেখলে ভয় পায়।
মেরিন : আম্মু ‘আমাকে’ দেখলে ভয় পায়না।
নীড় : তো? 😒
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কাউকে জবাব দেয়না।
নীড় : জবাব থাকলে তো দিবে…
মেরিন : …
নীড় কনিকার দিকে এগিয়ে গেলো। কনিকা ওর দিকে ঘুরলো। আর কনিকাকে দেখে নীড় অবাক হয়ে গেলো।
নীড় : বনপাখির ছোটআম্মু …
নীড়ের মুখে হাসি ফুটলো। ও ওর মোবাইল খুজতে লাগলো। দেখলো কোনো পকেটেই নেই। তখন মনে পরলো যে গাড়িতে। ছুটে গাড়ির কাছে যেতে নিলো।
মেরিন : একি আপনি চলে যাচ্ছেন কেন?
নীড় : আসছি দারাও …
নীড় নিরাকে ফোন করলো।
নিরা : হ্যালো বাবু…
নীড় : হ্যালো বনপাখি… শোনো আমি তোমার ছোটআম্মুকে দেখেছি…
নিরা : আমার আবার ছোটআম্মু ক… ওহ ছোটআম্মুকে দেখেছো? সত্যি বলছো?
নীড় : হ্যা সত্যি বলছি।
নিরা : কোথায় দেখেছো?
নীড় : মেন্টাল অ্যাসাইলামে…
নিরা : মেন্টাল অ্যাসাইলামে? ছোটআম্মু ওখানে কি করছে?
নীড় : মানসিকভাবে অসুস্থ।
নিরা : কি ?কি বললে তুমি? এটা তুমি কি বলছো?
নীড় : হ্যা সত্যি বলছি।
নিরা : না এটা হতে পারেনা। আমার ছোটআম্মু… আমি দেখি ইতালির কাজ কিভাবে তারাতারি শেষ করা যায়… শেষ করেই আমি ফিরবো ছোটআম্মুর কাছে।
বলেই নিরা ঝটপট ফোন কেটে দিলো।
নিরা : উফফ ওই কনিকার চেহারা ছেলেটা আজও ভোলেনি কেন?
টনি : কার ফোন ছিলো বেবি…
নিরা : নীড়ের বেবি…
টনি : তো কি বলল তোমার নীড় জানু…
নিরা : কনিকার কথা বলল। আর কোন কুক্ষনে যে ওর সামনে ভালো সাজতে গিয়ে কনিকাকে ছোটআম্মু ডাকার কথাটা বলেছিলাম। ড্যাম ইট।
টনি : কিছুই বুঝলাম না।
নিরা : সে এক লম্বা কাহিনি। আগে মাম্মির সাথে কথা বলা প্রয়োজন….
.
মেরিন : আপনি ওভাবে বেরিয়ে গেলেন কেন?
নীড় : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন জবাব দিতে বাধ্য নয়…
বলে়ই নীড় কনিকার কাছে।
নীড় : হ্যালো ভালো আন্টি …
ডাকটা শুনে কনিকা নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : ভালো আছো ভালো আন্টি ..
ভালো আন্টি ডাকটা কনিকার স্মৃতির পাতায় করা নারালো। কিন্তু কিছুই মনে করতে পারলোনা। ছুটে পালিয়ে যেতে নিলে নীড় হাত ধরে ফেলল।
নীড় : সেকি কোথায় যাচ্ছো?
কনিকা : আমি যাবো… তততুমি আমার মেয়ের ক্ষতি করবে।
নীড় : আল্লাহ বলে কি।। আমি তোমার মেয়ের ক্ষতি করবো? আমি তোমার মেয়ের ক্ষতি করতে পারি? আমি তো তোমার মেয়েকে আদর করবো। খুব খুব আদর করবো। হামম।
মনে মনে : ওহ গড। কি বলে ফেললাম? ভালো আন্টির মেয়ে তো পচা মেরিন …
কনিকা : তুমি সত্যি আদর করবে?
নীড় : হ্যা হ্যা সত্যিই আদর করবো। খুব আদর করবো…😅…
কনিকা ছুটে পালিয়ে গেলো।
নীড় : ওয়েল ট্রাই নীড়…
বলেই নীড় পিছে ঘুরলো। আর দেখে ওর ঠিক পিছেই মেরিন দারিয়ে আছে। কিছুটা চমকে গেলো ।
নীড় : তুমি এখানে কি করছো?
মেরিন : আমি সবখানেই থাকতে পারি।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার …
মেরিন নীড়ের ঘাড়ে হাত রাখলো।
মেরিন : আপনি আম্মুকে কি বলছিলেন আমার কথা?
নীড় : কি বল….
মেরিন : কি হলো? চুপ হয়ে গেলেন কেন ?
নীড় : স্টুপিড কোথাকার…
বলেই নীড় মেরিনের হাত ছারিয়ে নিয়ে চলে গেলো।
মেরিন : পৃথিবীতে ২টা জিনিস কখনো ফেরত নেয়া যায়না। ১টা বন্দুকের গুলি আর অন্যটা মুখের কথা । তাই আপনিও ফেরত নিতে পারবেননা মাই জান …
.
নীড় আবার কনিকার কাছে গেলো। তবে কনিকা আর নীড়ের সাথে কথা বললনা। নীড় অন্য ডক্টরদের সাথে কথা বলছে। আর মেরিন নীড়কে দেখছে। তখন এই অ্যাসাইলামের মেইন ডক্টর রাজীব ওখানে এলো। সে মেরিনকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।
রাজীব : ওহ নো এই ভয়ংকরী আবার এসে হাজির …
রাজীবের নজর গেলো নীড়ের দিকে।
রাজীব : ডক্টর আহমেদ চৌধুরী?? 😱। এই মুসিব্বত এখানে কি করছে? মেরিন ওকে আনেনি তো… কি করি কি করি… তপুকে ফোন করি… হ্যালো তপু…
তপু : হ্যা চাচ্চু…
রাজীব : এখনি এখানে চলে আয় …
তপু : কিন্তু কেন?
রাজীব : মনে কর এখানে আমেরিকা আর রাশিয়া ২দেশের প্রেসিডেন্ট হাজির। যেকোনো মুহুর্তে হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে। আর ভু্ক্তভোগী হবে বাংলাদ… মানে আমি…
তপু : কি পাগলের মতো কথা বলছো চাচ্চু….
রাজীব সবটা বলল।
তপু : ডক্টর নীড়… সেই সাইকো ডক্টরটা না?
রাজীব : হ্যা হ্যা ওই সাইকো..
তপু : যতো বড়ই সাইকো হোক। মেরিনের সাইকোগিরির সামনে নীড়ের সাইকোগিরি কিছুইনা।
রাজীব : তুই আয়…
তপু : চাচ্চু আমি যদি এখনো রওনা দেই তবুও ২-৩ঘন্টা লাগবে । যদি জ্যাম না থাকে। কালকে আসবো।
রাজীব : ততোক্ষনে আমি নীড় বা মেরিন কারো হাতে খুন হয়ে গেলে…
তপু : চাচ্চু ১কাজ করো। তুমি কেটে পরো।
রাজীব : গুড আইডিয়া। রাখি… তপু কারেক্ট আইডিয়াটাই দিয়েছে। কেটে পরি।
তখনই ১জন এসে হাজির হলো।
¤: স্যার স্যার …
রাজীব : কি?
¤: ডক্টর নীড় আপনাকে ডাকছে।
রাজীব : শেষ রক্ষা হলোনা।
¤: মানে?
রাজীব : কিছুনা। শোনো তুমি গ…
নীড় : হাই ডক্টর শিকদার …
রাজীব : হ্যালো ডক্টর নীড়…
মনে মনে : বিপদ…
নীড় : আমার নামটা মেরিন বন্যা খান কিভাবে জানলো? আই মিন আমি যে ১জন সাইকিয়াট্রিস্ট সেটা ও কিভাবে জানলো?
রাজীব : আমি কিভাবে জানবো? 😅।
নীড় : আপনি আমার সিনিয়র … তাই যদি আপনি নিজে থেকে আমাকে বিষয়টা বলেন তো শাস্তি পাবেননা। বাট যদি আমি জানতে পারি তাহলে…
রাজীব : আমি জানিনা মিস খান কিভাবে জানলো? এক্সকিউজ মি।।।
বলেই রাজীব কেটে পরলো।
নীড় খেয়াল করে দেখলো মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই দৃষ্টির মানে ও বোঝে…
.
রাত ১২টা …
নীড় বাসায় ফিরলো। ১ম দিন ছিলো তাই এতো দেরি হলো ফিরতে। নীড় ভেতরে ঢুকলো। তখন পেছন থেকে মেরিনের ডাক শুনলো।
মেরিন : নীড় …
নীড় পেছন ফিরলো।
নীড় : একি তুমি আবারও?
মেরিন নীড়ের সামনে এসে দারালো।
মেরিন : হ্যা আমি। অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। যদি কোনো বিপদ আপদ হতো…. তখন কি হতো? তাই আপনার ছায়া হয়ে এসেছি…
কথাটা শুনে নীড় তো জাস্ট শকড। ১টা মেয়ে ওকে প্রোটেকশন দিয়েছে সারা রাস্তা।
নীড় এই ঘটনা থেকে বের হওয়ার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : আপনার চেয়ারে বসেছিলাম বলে চেয়ারটাকে জ্বালিয়েছিলেন… এখন নিজেকে জ্বালানোর চেষ্টা ভুলেও করবেন না। গুড নাইট।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড় : এই মেয়েটা কি?
.
পরদিন …
সকাল ৯টা…
নীড় অ্যাসাইলামে পৌছে গিয়েছে।
নীড় : উফফ। ভাগ্যিস পৌছে গিয়েছি। ওই মেয়েটা নিশ্চয়ই ১১টা ১২টার দিকে আমাদের বাসায় যাবে। দেখবে আমি নেই। তারপর এখানের জন্য রওনা দেবে। আসতে আসতে ২-৩ ঘন্টা । আর ৫টার দিকে কল টাইম শেষ। ব্যাক করার সময় হবে। যারমানে মানে ওই অতৃপ্ত আত্মাকে বেশিক্ষন ফেইস করতে হবেনা।
মেরিন : ইউ আর মিসটেকেন …
নীড় সামনে তাকিয়ে দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। ডাবের পানি খাচ্ছে ।
নীড় : এই মেয়ে তো আসলেই অতৃপ্ত আত্মা…
মেরিন : ইয়েস অফকোর্স ।
নীড় : তুমি কি ব্ল্যাক ম্যাজিক জানো?
মেরিন : প্রয়োজনই নেই জানার। কারন আই ক্যান রিড আদারস মাইন্ড … এন্ড হার্ট অলসো। এ্যাজ ইউ সি ….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 4
writer : Mohona
.
মেরিন : এ্যাজ ইউ সি…
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার…
মেরিন : নামটা আমার ভীষন পছন্দ হয়েছে। আই লাইক ইট… চলুন যা…
তপু : গুড মর্নিং মেরিন…
মেরিন : মর্নিং তপুদা… তুমি এখানে?
তপু : এমনিতেই চলে এলাম। তুমি তো জানোই এই জায়গাটা আমার ভীষন প্রিয় । ১মিনিট… তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে তোমার ঘুম কমপ্লিট হয়নি…
মেরিন : নান অফ ইউর বিজনেস…
তপু : আরে তুমি কেন নিজের খেয়া…
মেরিন হাত দিয়ে ইশারা করলো।
মেরিন : শাট আপ … প্লিজ…
নীড় : ধমক মেরে প্লিজ বলতে কাউকে দেখিনি…
মেরিন : এখন তো দেখলেন। লেটস গো…
৩জন ভেতরে ঢুকলো।
.
নীড় : এই যে শোনো।
মেরিন : হামমম।
নীড় : কিছু নিয়ে আলোচনা করার ছিলো। আসলে কিছু জানার ছিলো।
মেরিন : হুয়াট?
নীড় : অ্যাকচ্যুয়ালি আই নিড টু নো দ্যাট…
মেরিন : হুয়াট?
নীড় : ভালো আ… মানে তোমার আম্মুর সাথে এমন কি হয়েছিলো যে তিনি এমন হয়ে গেলো…
মেরিন : …
নীড় : বলো …
মেরিন : …
নীড় : এই যে মিস অতৃপ্ত আত্মা হুট করে ফুলস্টপ হয়ে গেলে কেন?
মেরিন : আমার ইচ্ছা।
নীড় : এখন বলো কি হয়েছিলো?
মেরিন : এ্যাজ ফার এ্যাজ আই রিমেমবার যে কেউ ১জন বলেছিলো … যে সে আমার আম্মুর অতীত না বর্তমান আর ভবিষ্যৎ জানতে চায় …
নীড় : 😒।
মেরিন : স্টিক টু ইউর ওয়ার্ড নীড়…
নীড় : রাবিশ…
মেরিন : আই লাভ ইউ।
নীড় রেগে ওখান থেকে চলে গেলো।
তপু : মেরিন … মেরিন।।
মেরিন : ইয়াহ তপুদা…
তপু : ব্রেকফাস্ট । ফর ইউ…
মেরিন : হুয়াট এন্ড হুয়াই ?
তপু : আমার মনে হচ্ছে তুমি কিছু খেয়ে আসোনি … খেয়ে নাও।
মেরিন : তপু দা… আমার এগুলো ভালো লাগেনা ।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
.
রাতে…
মেরিন বাসায় ফিরলো।
কবির : দারাও…
মেরিন : ৩০ সেকেন্ড আছে আপনার কাছে যা বলার বলুন…
কবির : তুমি নীড়কে কনার ট্রিট…
মেরিন : ইটস কনিকা ফর ইউ। আপনার অধিকার নেই আমার আম্মুর নামটা এভাবে নেয়ার।
কবির : এখন তুমি আমাকে আমাক অধিকার বলবে?
মেরিন : হ্যা অবশ্যই।
কবির : তুম…
মেরিন : আপনার নির্ধারিত ৩০সেকেন্ড শেষ। বেটার লাক নেক্সট টাইম…
বলেই মেরিন ওপরে উঠতে লাগলো।
কবির : শোনো এই মেয়ে… দারাও। মেরিন… দারাও… দারাও বলছি… মেরিন…
মেরিন কি আর দারায়…
সেতু : শুনলো তোমার মেয়ে তোমার কথা? আগেই বলেছিলাম যে কনিকার অ্যাবর্শনটা করাও। করালে আজকে এই মেরিন বন্যা খান নামক কালসাপটা আমাদের জীবনের কাটা হতে পারতো না। খুব তো বলেছিলে এই অন্যায় করা তোমার পক্ষে সম্ভবনা। এখন দেখো তার ফল। যদি ওই মেয়ের জন্য আমার মেয়ের জীবনে তুফান আসে তবে কিন্তু আমি কুরুক্ষেত্র করবো।
কবির : আমার মেয়ের জীবনে কোনো তুফান আসবেনা। আমি আসতে দিবোনা।
সেতু : কোন মেয়ের কথা বললে শুনি?
কবির : কেন জানোনা আমার মেয়ে ১টাই । নিরা…
.
নীড় : হ্যালো মাই বনপাখি…
নিরা : হ্যালো বেবি…
নীড় : ভালো আছো তুমি? খাওয়া দাওয়া করেছো?
নিরা : হামম। তুমি করেছো?
নীড় : হ্যা। আচ্ছা ১টা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো।
নিরা : হ্যা করোনা।
নীড় : ভালো আন্টি … মানে তোমার ছোটআম্মুর সাথে এমন কি হয়েছিলো যে তার আজকে এই অবস্থা ?
নিরা : …
নীড় : বলো…
নিরা : …
নীড় : আশ্চর্য তো … এই বিষয় নিয়ে মেরিনকে জিজ্ঞেস করলাম ওও চুপ মেরে গেলো। আবার তুমিও। কাহিনি কি বলো তো…
নিরা : মেরিন তো চুপ থাকবেই। কারন ওই তো ধাক্কা দিয়েছিলো ওর মাকে। পরে মাথায় আঘাত পেয়েছে।
নীড় : কি বলছো কি?
নিরা : হামমম।
নীড় : অতোটুকু ১টা বাচ্চা নিজের মাকে ধাক্কা মেরেছিলো? অবিশ্বাস্য।
নিরা : তুমি আমার কথা বিশ্বাস করোনা…
নীড় : আরে আমি কি সেটা বলেছি নাকি? আসলে বাচ্চাদের মাইন্ড এমন হয়…?
নিরা : মেরিন ছোট থেকেই ওয়াইল্ড ।
নীড় : বোঝাই যায়। ওকে বাই বনপাখি ।
নিরা : বাই…
নীড় রেখে দিলো।
টনি : মেরিনই ওর মাকে ধাক্কা মেরেছিলো?
নিরা : আহা। মেরিন তো ছোট থেকেই ওর মার চরম ভক্ত ।
টনি : তবে নীড়ের কাছে মিথ্যা বললে কেন ওর নামে?
নিরা : ভালো লাগে আমার সকলের কাছে ওকে আরো খারাপ করতে। আর তার থেকেও বড় কথা… নীড়কে যদি আসল ঘটনাটা বলি তবে তো কনিকার ট্রিটমেন্ট করতে সুবিধা হবে। কনিকা সুস্থ হয়ে যাবে। যেটা আমিও চাইনা। মাম্মিও চায়না। আর সবথেকে বড় কথা হলো… কনিকা যদি সুস্থ হয়ে যায় তবে নীড় জেনে যাবে যে ওর বনপাখি আমি না … মেরিন …
টনি : যদি তোমার দাদুভাই নীড়কে সত্যি বলে দেয়।
নিরা : ওই বুড়োটা তো তখন বলবে যখন নীড় জিজ্ঞেস করবে। আর নীড়কে ১বার যখন আমি বলেছি তখন ও আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করবেনা।
টনি : আর যদি মেরিন বলে দেয়।
নিরা : নীড় মেরিনের কথা বিশ্বাস করবেনা। জানো মেরিন ১টা কথা বলে…
টনি : কি কথা?
নিরা : মেরিন নিজেই বলে যে …. মেরিনকে কেউ বিশ্বাস করেনা। এমনকি মেরিন নিজেওনা। সেখানে নীড় কেন ওকে বিশ্বাস করবে?
নীড় : মেয়েটা আসলেই ভয়ানক। না হলে অতো ছোটবয়সেই কেউ অমন রাগী হয় … ? কিন্তু ভালো আন্টিকে তো আমার ভালো করতেই হবে। ভালো আন্টি কতততো ভালো… বনপাখিকেও কতো আদর করতো। আর বনপাখিও তো কতো ভালোবাসে …
.
পরদিন …
মেরিন অফিসে বসে কাজ করছে। তখন নীলিমা অফিসে এলো। মেরিনের পিএ মেরিনকে ফোন করলো। মেরিন পাঠিয়ে দিতে বলল।
নীলিমা : আসবো।
মেরিন : আসুন। অনেক লে়ইট করলেন আসতে।
নীলিমা : মানে?
মেরিন : মানে টা খুব সহজ। আপনি আমার কাছে আসতে প্রায় ৪৮ঘন্টা লেইট করলেন। আমি ভেবেছিলাম আপনি আগেই আসবেন।
নীলিমা : তুমি জানতে আমি আসবো?
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : কিভাবে?
মেরিন : কেউ বলেছে…
নীলিমা : আমি তো কাউকে বলিইনি যে আমি আসবো। তবে তোমাকে কে বলল?
মেরিন : আপনি।
নীলিমা : আমি?
মেরিন : হামম আপনি বলেছেন। আপনার চেহারা বলেছে। আপনার চোখ বলেছে। আপনার মুখ বলেছে…
নীলিমা : মানে?
মেরিন : কিছুনা। কি খাবেন ? গরম পরেছে। আপনার প্রিয় লাচ্ছি খাবেন নাকি কোল্ড কফি…
নীলিমা : তুমি এটাও জানো …
মেরিন : 😎।
নীলিমা : ইমপ্রেসিভ। দেখো আমি আমার ছেলেকে আমি ভীষন ভালোবাসি। কিন্তু ছেলেটা নিরাকে ভালোবাসে। আমি জানি নিরা আমার ছেলের জন্য পারফেক্ট কেউনা। আমার কেন যেন মনে হয় যে ও ভেতর থেকে ১রকম আর বাইরে থেকে অন্যরকম।
মেরিন জবাবে কেবল ১টা বাকা হাসি দিলো।
নীলিমা : কনিকার সাথে আমার মোটামোটি ভালোই বন্ধুত্ব ছিলো। অল্প কয়েকদিনেই ওর সাথে ১টা অন্যরকম বন্ডিং হয়ে গিয়েছিলো। ও খুব ভালো। জানিনা কি হয়েছিলো। সেটা তোমাদের পারিবারিক ব্যাপার। বাট দ্যা ফ্যাক্ট ইজ … তোমার চোখে আমি নীড়ের জন্য ভালোবাসা দেখেছি … আমার মনে হয় তুমি আমার ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছো ..
মেরিন : আপনার মনে হয় নাকি আপনি সিওর …
নীলিমা : সেটা তো তোমার ওপর নির্ভর করে।
মেরিন : যদি বলি ভালোবাসিনা তাহলে….
নীলিমা : কিছু বলার নেই ।
মেরিন : আর যদি বলি ভালোবাসি …
নীলিমা কিছুনা বলে গলার চেইনটা খুলে মেরিনের গলায় পরিয়ে দিলো।
নীলিমা : তুমি আমার ছেলেকে ভালোবাসো । আমি জানি ।
মেরিন : কিন্তু আপনার ছেলে তো আমাকে ভালোবাসেনা । আর আপনার বরও আমাকে অপছন্দ করে।
নীলিমা : আমার মনে হয়না এতে মেরিন বন্যা খানের কিছু যায় আসে?
মেরিন : আমাকে মনে ধরার কারন ?
নীলিমা : জানিনা। হয়তো আমার ছেলের প্রতি ভালোবাসা। আসলে আমার ছেলে আমার দুর্বলতা। একটু সাইকো। যাকে ভালোবাসে মনের গভীর থেকে ভালোবাসে। আর যাকে ঘৃণা করে তাকে বুকের গভীর থেকেই ঘৃণা করে। আমি জানিনা নিরা কেন বা কোন কারনে আমার ছেলের সাথে ভালোবাসা ভালোবাসা খেলছে… আমার ছেলের মন যদি ১বার ভাঙে ও তান্ডব করবে। আমি জানি যে হয়তো নীড় তোমারও দুর্বলতা ।
মেরিন : …
নীলিমা : আজকে আমি তোমার কাছে থেকে ১টা ওয়াদা চাই…
মেরিন : কি?
নীলিমা : আমার ছেলের বউ হয়ে দেখাতে হবে ।
মেরিন : আমি অলরেডি ওয়াদাবদ্ধ হয়ে গিয়েছি । নিজের কাছে।
.
সন্ধ্যারপর…
নীড় বাসায় ফিরছে। ফুরফুরে মেজাজে ড্রাইভ করছে । কারন আজকে মেরিনের সাথে দেখা হয়নি ।
নীড় : উফফ শান্তি । আজকে ওই অতৃপ্ত আত্মাটার সাথে দেখা হয়নি। আজকে দিনটা ভালোই গেলো। মেরিন বন্যা খানের সাথে দেখা হলোনা …
তখন পেছন থেকে মেরিন বলে
উঠলো : দেখা তো হয়ে গেলো…
নীড় মেরিনকে দেখে চমকে উঠলো। গাড়ি কিছুটা বেসামাল হয়ে গেলো। কোনোরকমে ব্রেক মারলো। মেরিন নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো ।
মেরিন : এরপর থেকে আপনি ড্রাইভ করবেননা। ড্রাইভার নিয়ে বের হবেন।
বলেই নীড়ের গালে কিস করলো । নীড় নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নীড় : এই মেয়ে … তুমি আমার গাড়ির ভেতরে কিভাবে ঢুকলে শুনি…
মেরিন : দেখুন আপনি কি আমার নামটা বারবার ভুলে যান? নাকি আমার নামটা শুনতে ভালো লাগে?
নীড় : নামো আমার গাড়ি থেকে। নামো এখনি…
মেরিন : ইশ নামবো কেন? আজকে তো আপনার সাথে আমি ঢাকা যাবো। অনেক গল্প করবো।
নীড় : শখ বা ইচ্ছা সীমার মধ্যেই থাকা বা রাখা ভালো।
মেরিন : মেরিন বন্যা খানের কোনো সীমা নেই … সীমাহীন ।
নীড় : 😒।
মেরিন : কি হলো?
নীড় মনে মনে : খুব শখ না আমার সাথে গাড়ি করে ঢাকা যাবার? এমনভাবে ড্রাইভ করবো যে জনমেও আর আমার সাথে গাড়িতেই বসতে চাইবেনা মিস অতৃপ্ত আত্মা।
মেরিন : কি হলো? কি ভাবছেন ?
নীড় : তুমি কি সত্যি আমার সাথে ফিরতে চাও?
মেরিন : ইয়েস অফকোর্স ।
নীড় : ওকে দেন… তুমিও কি মনে রাখবে …
বলেই নীড় গাড়ি স্টার্ট দিলো। প্রচন্ড স্পিডে গাড়ি চালাতে লাগলো। এমন স্পিডে যে কারোই হাল খারাপ হবে…
নীড় মেরিনের ভীতু মুখ দেখার জন্য পাশ ফিরলো। কিন্তু মেরিনকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। বেশ আরামসে বসে আছে। তারওপর ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেরিন চোখ মারলো। নীড়ের রাগ উঠে গেলো। নীড় ব্রেক চাপলো। গাড়ি থামিয়ে নীড় বেরিয়ে এলো।
নীড় মনে মনে : অদ্ভুদ মেয়ে তো … এমন স্পিডে তো যেকোনো মেয়ের অবস্থা খারাপ হবে… বাট এর তো কোনো ফিলিংসই নেই…
মেরিন নীড়ের পাশে এসে দারালো।
মেরিন : আপনি খুব সুন্দর ড্রাইভ করেন। আপনি টায়ার্ড । এখন আপনি বসুন আমি ড্রাইভ করছি ।
নীড় : 😒।
মেরিন : বসুন না।
মেরিন টেনে নিয়ে নীড়কে গাড়িতে বসালো। এরপর গাড়ি স্টার্ট দিলো। সর্বোচ্চ স্পিড নিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। নীড় তো জাস্ট অবাক। ও ভেবেছিলো যে জোরে গাড়ি চালিয়ে ও মেরিনকে ভয় পাইয়ে দিবে। কিন্তু পুরাই উল্টা হয়ে গেলো। মেরিনের ড্রাইভে ওরই আত্মা যায়যায়।
নীড়দের বাসার গেইটের সামনে মেরিন গাড়ি থামালো।
মেরিন : নীড়… ভয় জিনিসটাকে অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছি।
বলেই মেরিন গাড়ি থেকে নেমে গেলো।
মেরিন : গুড নাইট নীড়।
নীড় : এইযে মিস অতৃপ্ত আত্মা । সাথে তো কার নেই। ফিরবে কিভাবে?
মেরিন : ভালো লাগলো আমার কথা ভাবলেন বলে…
নীড় : ওহ হ্যালো… আ…
মেরিন : থাক আর ব্যাখ্যা দিতে হবেনা। আমি ঠিক ফিরে যাবো…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
.
মেরিন বাসায় ফিরলো। আর বাসায় ফিরতেই ও সবথেকে কর্কশ কন্ঠে শুনতে পায়…
নিলয় : হ্যালললো মাই জান…
কন্ঠটা শুনে মেরিনের পা থেমে গেলো। বুকটা কাপতে লাগলো।
নিলয় : তুমি দেখি আরো সুন্দর হয়ে গিয়েছো জানেমান…
মেরিন নিজেকে সামলে ১টা বাকা হাসি দিয়ে নিলয়ের দিকে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : হামমম আর সেই সাথে আরো ভয়ংকরও হয়ে গিয়েছি…
নিলয় : হামমম । ভয়ংকর সুন্দরী… তু…
মেরিন নিলয়কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওপরে চলে গেলো।
মেরিন : দাদুভাই… দাদুভাই… দা…
দাদুভাই : হ্যা দিদিভাই…
মেরিন : নিলয় এ বাসায় কেন ঢুকেছে?
দাদুভাই : নিলয় এসেছে…?
মেরিন : হ্যা ।
নিলয় : এমনভাবে বলছো কেন গো… আমি কি অ বাড়িতে আসতে পারিনা?
মেরিন : না… তুই এখনই আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যাবি…
কবির : এই বাসাটা তোমার একার না….
দাদুভাই : আহা কবির… তুমিই ভুলে যাচ্ছো যে… এই পুরো খান সম্রাজ্যের একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী মেরিন বন্যা খান…
সেতু : আর আমার মেয়ে কি বানের জলে ভেসে এসেছে? যে ও কিছুই না?
দাদুভাই : সম্রাজ্য আমার … তাই এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করার অধিকার তোমার নেই সেতু…
মেরিন : দাদুভাই… এই নিলয়কে এখনই বের হয়ে যেতে বলো। যদি আমার ওকে বের করতে হয়… তাহলে…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 5
writer : Mohona
.
মেরিন : তাহলে…
কবির : তাহলে তুমি কি করবে শুনি?
মেরিন : আমি কি কি করতে পারি তার কিছুটা আপনি ভালোমতোই জানেন মিস্টার খান। যদি ওই ছেলেটা ২মিনিটের মধ্যে এই বাসা থেকে বের না হয় তবে… ওই ছেলেটার সাথে আপনাকে আর আপনার মিসেসকেও ছুরে বাহিরে ফেলে দিবো । এন্ড ইউ নো দ্যাট আই ক্যান ডু দ্যাট…
কবির : দেখলে বাবা … কাকে পাওয়ার দিয়েছে?
দাদুভাই : হ্যা দেখেছি। দিদিভাই যেটা বলেছে সেটাই করা হোক।
সেতু মনে মনে : এই মেয়ের ভরসা নেই। সত্যি সত্যি বের করে দিলে… না এখন নিলয়কে বের করে দেয়াটাই বেটার ।
সেতু : নিলয়… তুই এখন যা।
নিলয় : কিন্তু খালামনি…
সেতু : যা বলছি।
নিলয় : আচ্ছা খালামনি।
নিলয় চলে গেলো ।
মেরিন : বুঝলে দাদুভাই… তোমার বউমা এই খান বাড়ি থেকে বের হতে চায়না। ভিখিরি বাড়ির মেয়ে তো…
কবির : এই মেয়ে…
মেরিন : গলা নামিয়ে কথা বলুন মিস্টার খান। আমি আপনার প্রজা নই আপনি আমার প্রজা। আর প্রজারা রাজাদের সাথে উচু গলায় কথা বলেনা। নেভার… নাউ আউট প্লিজ …
.
৫দিনপর …
নিহাল : নীড় আসবো বাবা?
নীড় : হ্যা বাবা আসো।
নিহাল : নীড় কালকে ১টা বোর্ড কনফারেন্স আছে।
নীড় : বাবা আই হেইট বিজনেস । কোনো ইন্টারেস্ট নেই আমার।
নিহাল : বাট কালকে যে তোমাকে মিটিং টা এ্যাটন্ড করতেই হবে। আফটার অল ইটস ইউর কোম্পানি।
নীড় : কেন যে আমাকে জরিয়েছো বাবা …
নিহাল : জরাবোনা? আমার কি আর কোনো সন্তান আছে? প্লিজ বাবা…
নীড় : ওকে ফাইন। যাবো। হ্যাপী?
নিহাল : থ্যাংক ইউ বাবাটা।
নিহাল বেরিয়ে গেলো।
নীড় : আমি সবার কথা শুনছি? ওহ গড … সব হয়েছে ওই অতৃপ্ত আত্মাটার জন্য ।
.
পরদিন…
মিটিংরুমে সবাই বসে আছে। তবে এখনো মিটিং শুরু হয়নি।
নীড় : বাবা… শুরু হচ্ছেনা কেন?
নিহাল : কারন অ্যাসোসিয়েশন হেড এখনো আসেনি।
নীড় : অ্যাসোসিয়েশন হেড নিজেই লেইট।
নিহাল : সে কখনোই লেইট হয়না। এখনো ৩০সেকেন্ড বাকি। সে ১সেকেন্ডও আগে পরে আসবেনা।
নীড় : অদ্ভুদপ্রানী।
নিহাল : হামমম।
তখন মেরিন মিটিংরুমে ঢুকলো।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা এখানেও…
নিহাল : শি ইজ অ্যাসোসিয়েশন হেড।
নীড় : হুয়াট?
নিহাল : হামমম।
মেরিন কালো রঙের ১টা শাড়ি পরেছে। চুলগুলো খোলা । ব্রাউন কালার চুলগুলোতে অন্যরকম সুন্দর লাগছে মেরিনকে। গলায় ব্ল্যাক ডায়মন্ডের ছোট্ট লকেট। আর কানে ছোট্ট কানের দুল। কালো স্টোনের টিপ। লাল লিপস্টিক । হাতে ১টা ঘড়ি। স্টাইল মেরে চেয়ারে বসলো। খুবই সুন্দর করে লাগছে। নীড় ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আসলে মেরিনের দিকে তেমন করে তাকায়নি।
নীড় মনে মনে : মেয়েটাতো আসলেই সুন্দর । শাড়িতে তো চমৎকার লাগছে। তবে ছেলেদের মতো সবসময় প্যান্ট শার্ট পরে থাকে। ক্রাশ খাওয়ার মতোই তো। এমা ছিঃ ছিঃ … এসব কি ভাবছি আমি …
মেরিন : আমাকে দেখা হয়ে গেলে মিটিংটা শুরু করি ।
নীড় কিছুটা লজ্জা পেলো ।
মিটিং শেষ হলো। মিটিং শেষে সবাই বের হচ্ছে ।
মেরিন : স্টে মিস্টার নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ।
নীড় : হুয়াই …?
মেরিন : আমি বলেছি সেটাই কি যথেষ্ট নয় …?
নীড় দারালো। সবাই বেরিয়ে গেলো।
নীড় : নাউ হুয়াট?
মেরিন : বসুন।
নীড় বসলো।
নীড় : এখন?
মেরিন উঠে গিয়ে নীড়ের কোলে বসলো।
নীড় : আরে আরে আরে … কি করছো কি? নামো।
মেরিন : আজকে আমাকে বুঝি ভীষনেরও বেশি সুন্দর লাগছে। হামমম হামমম?
নীড় : যার মন সুন্দরনা তার কিছুই সুন্দরনা। এখন নামো ।
মেরিন : না নামবোনা। আগে বলুন আমাকে কেমন লাগছে?
নীড় মেরিনকে জোর করে নামিয়ে দিলো।
নীড় : লিসেন শেষবারের মতো বলে দিচ্ছি আমার সাথে একদম অসভ্যতামী করতে আসবেনা। বুঝেছো…
নীড় বেরিয়ে গেলো।
.
৩দিনপর…
অফিসে…
জন : ম্যাম।
মেরিন : হ্যা বলো ।
জন : নিরা ইতালিতে টনির সাথে আছে।
মেরিন : গ্রেট …
জন : এটা কি নীড় স্যারের জানা উচিত না?
মেরিন : না…
জন : কেন ম্যাম ?
মেরিন : কারন নীড় নিরাকে পাগলের মতো ভালোবাসে । যদি শোনে যে নিরা টনিকে ভালোবাসে তবে নীড় নিরাকে ছারবেনা। জোর করে বিয়ে করবে। তবুও নিরাকে ছারবেনা…
জন : কি বলছেন ম্যাম ?
মেরিন : হামম ঠিকই বলছি।
জন : কিন্তু ম্যাম কথা হলো এই যে নিরার নীড়কে কি প্রয়োজন? টনি তো নীড়দের থেকেও বেশি ধনী।। তবে নিরা কেন নীড়ের সাথে ভালোবাসার নাটক করার কারনটা কি?
মেরিন : সেটাই তো বুঝতে পারছিনা … কি এ…
তখন নীড় হনহন করে কেবিনে ঢুকে গেলো।
মেরিনের পিএ পেছন থেকে চিল্লাচ্ছে…
পিএ : আরে আপনি ভেতরে ঢুকছেন কোন সাহসে? দারান দারান … সরি ম্যাম আসলে আমি উনাকে বাধা দিয়েছিলাম। বাট ইনি…
নীড় : বাধা মানিনি। নীড়কে বাধা দেয়া যায়না।
মেরিন : তুমি নীড়কে বাধা দিয়েছিলে?
পিএ : জী ম্যাম…
মেরিন : হামমম। লিসেন … ইউ আর ফায়ার্ড …
জন : ম্যাম বলল তুমি বরখাস্ত ।
পিএ : কিন্তু কেন ম্যাম … আমি কি করেছি? আমি তো …
মেরিন : জন … চলতি মাস আর আগামী মাসের স্যালারি দিয়ে একে বিদায় করো।
জন : জী ম্যাম। কাম উইথ মি…
জন বেরিয়ে গেলো।
নীড় : মেয়েটাকে বের করার কারনটা কি জানতে পারি?
মেরিন : আপনার সাথে মিসবিহেভ করেছে… ঢুকতে দিয়েছে। দ্যাটস মোর দ্যান এনাফ।
নীড় মনে মনে : এই মেয়ের সাথে বেশি কথা বলতে গেলে আমিই না গুলিয়ে যাই।
মেরিন : বাই দ্যা ওয়ে… আপনি আমার অফিসে … হঠাৎ … নিশ্চয়ই কোনো কাজে…
নীড় : হ্যা অবশ্যই ।আচ্ছা শোনো আমি চাই ভালো আন্টিকে ওখান থেকে বের করিয়ে নিয়ে আসতে চাই।
মেরিন : ভালোআন্টি কে?
নীড় : তোমার আম্মু।
মেরিন : আমার আম্মু আপনার ভালো আন্টি কিভাবে?
নীড় : সেটা তোমাকে বলতে বাধ্য নই ।
মেরিন : 😒। আম্মুকে ওখান থেকে অন্য কোথাও শিফ্ট করলে আরো অসুস্থ হয়ে পরে।
নীড় : মানে ?
মেরিন : মানের কি আছে? অসুস্থ হয়ে পরে মানে অসুস্থ হয়ে পরে।
নীড় : অদ্ভুদ তো। বাট এবার আর পরবেনা। কারন এবার তিনি আমার দায়িত্ব ।
মেরিন : ওকে… আমি আজই ১টা ফ্ল্যাটের ব্যাবস্থা করছি …
নীড় : ফ্ল্যাট কেন? তোমাদের তো অতোবড় বাড়ি…
মেরিন : বাড়ি বড় হলেই যে তাতে আমার আম্মুর ঠায় হবে এমন তো কোনো কথা নেই …
নীড় : মানে?
মেরিন : সব কথার মানে খুজতে নেই… তবে হ্যা আম্মু যদি আরো অসুস্থ হয় তাহলে কিন্তু আপনাকে মাশুল দিতে হবে …
নীড় : ভালো আন্টির দায়িত্ব আমার ওপর ছেরে দাও… আর শোনো আমি ৩দিনের জন্য আমি ঢাকার বাহিরে যাচ্ছি।
মেরিন : হামমম।
নীড় মনে মনে : এতো সহজে হামমম…?
মেরিন : হামমম। কারন আমি জানি ২-১মাস পরপর আপনার নিজের হাওয়াবদলের দরকার হয়। তাই এদিক ওদিক বেরিয়ে পরেন ।
নীড় : তুমি এটাও জানো…
মেরিন : 😎।
নীড় : মুড ফ্রেশ করে এসে আবার কাজে লেগে যাবো।
মেরিন : আই ট্রাস্ট ইউ …
নীড় : 😒। বাই …
মেরিন : আই লাভ ইউ…
নীড় বেরিয়ে গেলো।
.
রাতে …
দাদুভাই : সে কি দিদিভাই … কি বলছো কি … কনা মাকে বাসায় না এনে ফ্ল্যাটে কেন তুলবে…
সেতু : কারন এ বাড়িতে ওর কোনো জায়গা নেই। আর না অধিকার আছে।
মেরিন : আপনি বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন যে এই বাড়িতে আপনার যতোটা অধিকার আমার আম্মুরও ঠিক ততোটাই অধিকার। আম্মুকে এবাড়িতে ঢোকাবোনা কারন আম্মুকে এ বাড়িতে ঢুকতে চায়না। এই খানবাড়ি থেকে শেষবারের মতো আম্মু যেদিন বেরিয়েছিলো প্রতিজ্ঞা করেছিলো যে আম্মু এ বাড়িতে সেদিনই ঢুকবে… যেদিন…
সেতু : যেদিন? যেদিন কি?
মেরিন : আপনাকে কেন বলবো মিসেস খান… যাই হোক দাদুভাই আমি ভাবছি ফ্ল্যাটে আম্মুকে তুললে বন্দী বন্দী ফিল করবে । তাই আমি ভেবেছি যে মিরপুরে ১টা ডুপ্লেক্স বাড়ি কিনবো । উত্তরা থেকে নীড়ের যেতেও সুবিধা হবে ।
সেতু : এখন কনিকার জন্য এতোগুলো টাকা নষ্ট করা হবে খান বাড়ির..। আমাদের…
মেরিন : আপনি বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন যে এসব কিছুর একমাত্র মালকিন আমি… যা মন চায় করতে পারি। তবে হ্যা এটা সত্য যে আমার আম্মুর পিছে আমি যে টাকাগুলো উড়াই সেগুলো খান বাড়ির নয়। মাহমুদ বাড়ি টাকা। মানে আমার নানার টাকা। আপনি নিশ্চয়ই ভুলে যাননি যে আমার আম্মু এককালীন সেরা শিল্পপতি আলতাব মাহমুদের মেয়ে। আপনার মতো কোনো ভিখিরির মেয়ে নয়…
বলেই মেরিন উঠে গেলো।
সেতু : দেখলেন বাবা আপনার নাতনি আমার সাথে কেমন আচরন করলো।
দাদুভাই : সেতু… মৌমাছির চাকে ঢিল মারলে কামড় তো খেতেই হবে। ও তোমার মেয়ের মতো ধোরা সাপ নয়। ও হলো রাজসর্প । আর এই খান সম্রা… সরি … খান এন্ড চৌধুরী সম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী। তোমার কপাল ভালো যে আজও ওর কবল আর ছোবল ২টা থেকেই বেচে আছো …
বলেই দাদুভাইও চলে গেলো।
সেতু : ১টা সুযোগের অপেক্ষা মিস্টার শশুড় ।
.
২দিনপর…
নীড় কোরিয়া পৌছালো।
নীড় : ফ্রিডম … ১বার ইচ্ছা হয়েছিলো ইতালি যাই। বাট ওখানে গেলে মেরিন নির্ঘাত ওখানে চলে যেতো। কারন ও বুঝতো যে আমি বনপাখির কাছেই গিয়েছি … বনপাখিকে এখানে আসতে বলে দেই। এখানে ৩টা দিন চিল করবো। কারন মেরিন বন্যা খান এখানে আসবেনা।
মেরিন : আপনি আরো ১বার ভুল… ইতালি গেলে আমি ভুলেও যেতামনা। আই জাস্ট হেইট ইটলি…
নীড় : ওহ নো…
নীড় ১বোঝা বিরক্ত নিয়ে পিছে ঘুরলো।
মেরিন : এখানেও আমি…
নীড় : আমি একটু একা থাকতে এসেছিলাম। বাট…
মেরিন : ভয়ে পাবার কিছু নেই। আমি আপনার পিছুপিছু কোরিয়া আসিনি। আমি ১টা কনফারেন্সের জন্য এসেছি।।।
নীড় : বাহানা দেয়ার কি আছে?
মেরিন : মেরিন বন্যা খানের বাহানার প্রয়োজন হয়না… ওকে বাই। না হলে লেইট হয়ে যাবো।
মেরিন চলে গেলো।
নীড় : কনফারেন্সে এসেছি.. 😒… বললেই হবে। আমি লাগে বুঝিনা। যে হোটেল বুক করেছি সেই হোটেলে উঠবোনা… অন্যকোথাও উঠবো। কোনো হোটেলেই উঠবোনা। কোনো হিল স্টেশনে গিয়ে টেন্ট করে থাকবো। গুড আইডিয়া। নো নো ব্যাড আইডিয়া। অন্যকোথাও থাকবো। খ্রিস্টানদের গ্রেভইয়ার্ডে গিয়ে থাকবো। হামমম এটাই বেস্ট আইডিয়া। কে জানে হয়তো সেখানেও অতৃপ্ত আত্মা পৌছে না যায়।
.
কনফারেন্স শেষে মেরিন হোটেলে পৌছালো । বসে বসে কফি খাচ্ছে।
মেরিন : আমার জান চৌধুরী কোথায় থাকতে পারে এখন? পাহাড় না সাগর … পাহাড় … হামমম হয়তো পাহাড়েই গিয়েছে। কে জানে… না হয়তো… যেখানেই যাক ভালো থাকুক। হয়তো একটু একা থাকতে চায় … হাজির হলে দেখা যাবে সাইকো নীড় ক্ষেপে যাবে । কিন্তু বড় কথা হলো এই যে … নীড় যেখানেই থাকুক ভালোভাবে থাকুক… আমার ভয়ে না আবার কবরস্থানে গিয়ে না লুকায় …. পাগল চৌধুরী ….
নীড় : মাগো… মশা। কোরিয়া তেও মশা … উফফ ভালো লাগেনা… ওই অতৃপ্ত আত্মার হাত থেকে বাচতে আত্মাদের ভিরে চলে এসেছি… ভিউটা ভালোই। মশাটা না থাকলে সবকিছু জাস্ট পারফেক্ট হতো ….
.
পরদিন…
মেরিন ড্রাইভ করে ওই কবরস্থানের বাইরে দিয়েই যাচ্ছে তখন দেখলো নীড় ভেতর থেকে বের হচ্ছে।
মেরিন : নীড় এখানে? খ্রিস্টানদের কবরস্থানে… ১মিনিট ১মিনিট ১মিনিট … নীড় সারারাত এখানে কাটায়নিতো… হায়রে পাগল জান চৌধুরী…
নীড় সামনে তাকিয়ে দেখে মেরিন।
নীড় : ওহ নো এখানেও…
মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : আমার জন্য আপনি সারারাত এখানে ছিলেন… কষ্টকরে আর এখানে থাকতে হবেনা । কোনো হোটেলে গিয়ে উঠুন। আপনি যেখানে উঠবেন সেখানে আমি যাবোনা। সত্যি বলছি…
নীড় : 😒
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 6
writer : Mohona
.
নীড় : 😒।
মেরিন : কি হলো? এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? ব্যাগ নিন আমি আপনাকে ড্রপ করে দিচ্ছি।
নীড় : আমি কোথাও যাবোনা। এখানেই থাকবো।
মেরিন : এখানে এতো কষ্ট করে কেন থাকবেন?
নীড় : আমি মোটেও এখানে কষ্ট করিনি।। মহা আরামে ছিলাম নতুন এক্সপেরিয়েন্স …
মেরিন : মহা আরাম না? তবে সারা মুখ হাত জুরে মশার কামড় কেন হামমম?
নীড় : জাস্ট ওই ১টাই সমস্যা । আর সেটারই সমাধান করতে যাচ্ছি ।
মেরিন : আর কোনো সমাধানের প্রয়োজন নেই এখনই গিয়ে কোনো হোটেলে উঠবেন।
নীড় : আরে আমি বললাম তো যে আমি এখানেই থাকবো।
মেরিন : আমি বললাম তো যে আমি আপনাকে ডিস্টার্ব করবোনা।
নীড় : আরে আমি এমনিতেই যাবোনা । কারন আমার জায়গাটা ভীষন ভালো লেগেছে।
মেরিন : হুয়াট?
নীড় : হামমম।
মেরিন : আপনি কি পাগল?
নীড় : হ্যা। তোমার সমস্যা ?
মেরিন : হ্যা। আপনি এখানে থাকলে আপনার কষ্ট হবে। যেটা দেখে আমার কষ্ট হবে।
নীড় : তাহলে তো আরো বেশি করে এখানে থাকবো।
মেরিন : এর ফল কিন্তু ভালো হবেনা।
নীড় : কি খারাপ হবে শুনি?
মেরিন : 😏।
নীড় মনে মনে : এই মেয়েটা যখনই এই হাসি দেয় তখনই কিছুনা কিছু ঝামেলা করে।
.
রাতে…
নীড় মনে মনে : এই ছিলো তোর পেটে… আমার পাশেই তাবু টানানোর ইঙ্গিত ছিলো… উফফ উফফ এন্ড উফফ । হোটেলে উঠলেই ভালো হতো।অন্তত আমার রুমে তো থাকতে আসতো না। এর জন্য এতো সুন্দর পরিবেশটা ইনজয় করতে পারছিনা…
মেরিন : বলছি এখনো সময় আছে … চাইলে গিয়ে হোটেলে ফিরতে পারেন…
নীড় রাগ দেখিয়ে টেন্টের ভেতরে চলে গেলো। নীড় ভেতরে ঢোকার পর মেরিন গান নিয়ে নীড়ের টেন্টের বাহিরে দারিয়ে রইলো। মূল কথা নীড়কে পাহারা দিতে লাগলো। আর ভেতরে নীড় মেরিনকে বকতে লাগলো।
.
বেশকিছুক্ষনপর…
নীড় : অতৃপ্ত আত্মাটা মনে হয় ঘুমিয়ে পরেছে। যাই গিয়ে ফ্রেশ বাতাসে গিয়ে বসি।
নীড় বেরিয়ে দেখে যে মেরিন বসে আছে । আর গানটা ঘোরাচ্ছে। সেই চারদিকটা দেখছে।
নীড় মনে মনে : আসলেই তো এটা অতৃপ্ত আত্মা। ঘুমায়না নাকি রাতে?
মেরিন ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো নীড় দারিয়ে আছে।
মেরিন : একি আপনি ঘুমাননি?
নীড় : তুমি এখানে বসে আছো কেন শুনি? তাও হাতে গান নিয়ে… অথোরিটি দেখলে হাজতে ঢুকতে হবে। আর এটা বাংলাদেশ না কোরিয়া। ফরেইন কান্ট্রি ।
মেরিন : তো?
নীড় : কিছুনা। আর শোনো আমি কোনো শিশুবাচ্চা নই যে আমাকে এভাবে প্রোটেকশন দিতে হবে…
মেরিন : আমি কি কিছু বলেছি…
নীড় : গড।
মনে মনে : এখানে থাকলে মেয়েটাকে সারারাত সহ্য করতে হবে। এরথেকে কোনো হোটেলে গিয়ে উঠি। ভালো হবে।
নীড় : এই যে অতৃপ্ত আত্মা আমি এখন কোনো হোটেলে গিয়ে উঠবো।
মেরিন : চলুন আপনাকে পৌছে দিচ্ছি ।
নীড় : আমি নিজেই যেতে পারবো।
মেরিন : রাত ভালোই হয়েছে। আমি আপনাকে ড্রপ করে দিচ্ছি। আমি আপনার জন্য এখানকার বেস্ট হোটেলে রুম বুক করেছি। ওখানেই ড্রপ করে দিচ্ছি। ভয় নেই ডিস্টার্ব করবোনা।
নীড় : আমি যাবোনা।
মেরিন : দেখেন এখন ত্যারামি করলে কিন্তু সারারাত আমার সাথে কাটাতে হবে।
নীড় : সময় ১দিন আমারও আসবে।
নীড় গিয়ে গাড়িতে বসলো। মেরিন ড্রাইভ শুরু করলো। হঠাৎ আকাশ মেঘলা হয়ে গেলো। মেরিন গাড়ি ব্রেক মারলো। মেরিনের কপলে ঘাম জমে গেলো।
নীড় : কি হলো?
মেরিন : ববববৃষ্টি পপপরবে …
নীড় : হ্যা বৃষ্টি পরবে। চরম ওয়েদার।
মেরিনের হাতপা কাপছে।
নীড় : কি হলো… তোমাকে এমন লাগছে কেন? তুমি কি মেঘের শব্দে ভয় পাও?
মেরিন : না…
বলেই মেরিন ড্রাইভিং শুরু করলো। স্পিড সর্বোচ্চ করলো।
নীড় : আরে কি করছে কি… স্পিড কমাও। আবহাওয়া ভালোনা। অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে। কমাও।
মেরিন : কমানো যাবেনা। ববববৃষ্টির আগে আমাদের পপপৌছাতে হবে…
নীড় : হ্যা পৌছাবো। বাট কমাও তো।
মেরিন মোটেও কমাচ্ছেনা।
নীড় : দেখো তুমি মরতে চাইলে মরো আমাকে টানছো কেন শুনি… থামাও গাড়ি…
কথাটা শুনে মেরিন স্পিড কমিয়ে দিলো। এরই মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।
মেরিন : ববববৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে।
নীড় : ওহ ওয়াও…
নীড় কাচ নামালো।
মেরিন : গ্লাগ্লাগ্লাগ্লাস নামাবেন না। পপপপ্লিজ গ্লাস নামাবেননা। তুলে ফেলুন… গ্লাস তুলে ফেলুন…
নীড় : কি পাগলের মতো কথা বলছো ? দেখো কি সুন্দর বৃষ্টি …
মেরিন : বৃষ্টি বন্ধ করুন…. বৃষ্টি বন্ধ করুন …
নীড় : হাহাহাহাহা… এমনভাবে বলছো যেন বৃষ্টি আমার কথা শুনবে …
নীড় বৃষ্টিতে হাত ভেজাত ব্যাস্ত । তখন মেরিনের চিৎকার শুনতে পেলো।
মেরিন : বন্ধ করো… বৃষ্টি বন্ধ করো… 📢📢📢… কেউ বৃষ্টি বন্ধ করো…
নীড় মেরিনের দিকে ঘুরলো। দেখে মেরিন হাত দিয়ে কান ঢেকে চোখমুখ খিচে বন্ধ করে মেরিন চেচিয়ে বৃষ্টি বন্ধ করছে ।
মেরিনের অবস্থা দেখে নীড় যথেষ্ট অবাক হলো।
নীড় : মেরিন আর ইউ ওকে… মেরিন… মেরিন…
মেরিন : বৃষ্টি বন্ধ করো … বৃষ্টি বন্ধহ করোহ… বৃ…
মেরিন জ্ঞান হারালো।
নীড় : মেরিন… মেরিন… ।
নীড় মেরিনকে নিয়ে হসপিটালে গেলো।
.
সকালে…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। নিজেকে হসপিটালে পেয়ে অবাক হলো।
মেরিন : আমি হসপিটালে কিভাবে?
নীড় : আমিই এনেছি…
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীড় দরজার সামনে দারিয়ে আছে।
নীড় ঢুকতে ঢুকতে
বলল : কেউ ১জন বলেছিলো যে ভয় জিনিসটাকে ৭বছর আগে ত্যাগ না কি যেন করেছি… বাট সে নাকি প্রকৃতির সেরা উপহার বৃষ্টিকে ভয় পায়।
মেরিন : ভয় পাইনা। এটা আমার দুর্বলতা। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি তো আজকেও থাকবেন কোরিয়া তাইনা?
নীড় : হামমম।
মেরিন : দেন পরশু দেখা হচ্ছে আপনার সাথে। নাউ বাই।
নীড় : বাই? বাট…
মেরিন : ডক্টরদের সাথে রিলিজের জন্য আমি কথা বলে নিচ্ছি …
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
নীড় : বড়ই অদ্ভুদ মেয়েটা ।
২দিনপর আবার নীড়-মেরিন মুখোমুখি হলো।
.
পরদিন…
মেরিন : আম্মুকে কি আজই নিয়ে যাবেন?
নীড় : না। আর ২দিনপর। ভালো আন্টির সাথে কথা বলেই নিবো।
মেরিন : কথা বলেই নিবেন মানে ?
নীড় : হামমম।। কথা বলে বুঝিয়ে সুজিয়ে নিয়ে যাবো।
মেরিন : বুঝিয়ে সুজিয়ে নিবেন মানে?
নীড় : বুঝিয়ে সুজিয়ে মানে বুঝিয়ে সুজিয়ে ।
মেরিন : আমি যতোদূর জানি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন বুঝিয়ে সুজিয়ে কাজ করানোতে বিশ্বাসী নয়।
নীড় : না নয়। বাট কারো ট্রিটমেন্টের বেলায় নয়। আর ভালো আন্টির ব্যাপারে তো নাইই…
বলেই নীড় কনিকার কাছে গেলো। কনিকার পাশে বসলো।
কনিকা : তুমি অনেকদিনপর এলে যে…
নীড় : হামমম। আসলে আমি একটু বাহিরে দূরে কোথাও বেরাতে গিয়েছিলাম।
কনিকা : বেরাতে গিয়েছিলে ?
নীড় : হামমম। বেরাতে আমার খুব ভালো লাগে। তোমার ভালো লাগেনা?
কনিকা : হ্যা আমারও খুব ভালো লাগে।
নীড় : তাহলে যাবে তুমি বেরাতে ?
কনিকা : হ্যা … না না। যাবোনা।
নীড় : কেন যাবেনা কেন?
কনিকা এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে নিলো।
কনিকা : শোনো শোনো …
নীড় : বলো…
কনিকা : তোমাকে ১টা কথা বলি। কাউকে বলবেনা কিন্তু …
নীড় : আচ্ছা বলবোনা। বলো।
কনিকা : আমার বনপাখি আছেনা বনপাখি…
নীড় : বনপাখি…
কনিকা : হামমম বনপাখি। ও না হারিয়ে গিয়েছে। পাচ্ছিই না ওকে। এই যে দেখো এটা ওর সবথেকে প্রিয় পুতুল। এটা ছারা ও ঘুমাতেই পারেনা। কিন্তু সেই যে আমার হাতে পুতুলটা দিয়ে কোথায় ছুটে গিয়ে লুকালো । আসছেই না সামনে। ভীষন দুষ্টু হয়েছে মেয়েটা। এসে যদি দেখে আমি নেই আর এই পুতুলটা নেই তবে খুব কান্নাকাটি করবে। খালি কান্না করে মেয়েটা । আমি এখান থেকে যেতে পারবোনা ।
নীড় মনে মনে : ভালো আন্টি বনপাখি কে কতো ভালোবাসে …
মেরিন : সেই কখন থেকে আম্মু কি বলে যাচ্ছে নীড়কে… বলুক যতো খুশি কথা বলুক। অন্তত নীড়ের সাথে তো কথা বলছে …
নীড় : তুমি এখানে বনপাখিরা ওয়েট করছো?
কনিকা : হামমম।
নীড় : তোমার বনপাখি তো এখানে নেই।
কনিকা : কোথায় আছে?
নীড় : অন্যকোথাও আছে।
কনিকা : কিন্তু কোথায়। ওকে আমার কাছে এনে দাওনা।
নীড় : ওকে তো এখানে আনা যাবেনা। তোমাকে একটু কষ্ট করে ওর কাছে যেতে হবে।
কনিকা : যাবো যাবো যাবো আমি। তবুও আমি ওরে দেখবো।
নীড় : ওকে দেখবে । কাল পরশুই তোমাকে নিয়ে যাবো।
কনিকা : আমি আজই যাবো।
নীড় : না গো ।।। আজকে তো হবেনা। আজকে গেলেতো বনপাখি বুঝে যাবে। লুকিয়ে পরবে। আর যদি পরশু যাই তবে বনপাখিকে সারপ্রাইজ দেয়া যাবে…
কনিকা : ও হামমম।
নীড় : তবে আমরা পরশুদিন যাবো। ডান?
কনিকা : ডান … তুমি খুব ভালো।
নীড় : তুমিও …
কনিকা ছুটে ভেতরে গেলো।
মেরিন : কি এতো কথা হচ্ছিলো শুনি?
নীড় : তোমাকে বলবো কেন হামমম? হুহ…
.
পরদিন …
নিরা : হ্যালো বেবি …
নীড় : বনপাখি…
নিরা : হ্যা বলো।
নীড় : তুমি কি কাল পরশুর মধ্যে দেশে ফিরতে পারবে ?
নিরা : আমি তো ভীষনভাবে চাই ফিরতে। কিন্তু হুট করে কাজটা পরে যাওয়ায় আসতে পারছিনা। তাহলে আমি কবববে চলে আসতাম। আমার ছোটআম্মুর কথা শুনে … আমি কবে চলে আসতাম।
নীড় : সবকাজ বাদ। চলে আসো।
নিরা : আমি তো চেষ্টাই করছি ।
নীড় : আর চেষ্টা করতে হবেনা। দরজা খোলো …
নিরা : দরজা খুলবো মানে?
নীড় : দরজা খুলবে মানে দরজা খুলবে।
নিরা : কিন্তু কেন?
নীড় : কারন আমি দরজার এপারে দারিয়ে আছি।
নিরা : হুয়াট ?
নীড় : এতো জোরে হুয়াট? এতো ভয় পাওয়ার কি আছে… আমিই তো এসেছি। মেরিন তো ়আর না।
নিরা : ভয় পাবো কেন? আমি তো খুশি তে চিল্লানি মারলাম। দারাও আসছি…
বলেই নিরা ফোনটা রেখে দিলো।
নিরা : টনি … টনি টনি …
টনি : কি হয়েছে?
নিরা : নীড় …
টনি : নীড় ?
নিরা : হ্যা নীড়। বাসার বাহিরে। দরজা খুলতে যাচ্ছি।
টনি : কি বলছো কি ?
নিরা : হ্যা এখন কি হবে?
টনি : নাথিং। আমি এখনই সার্ভেন্টের ড্রেস পরে নিচ্ছি।
নিরা : গুড আইডিয়া। আমি দরজা খুলছি।
নিরা গিয়ে দরজা খুলল।
নীড় : এই এতোক্ষন লাগে…
নিরা : সরি আসলে…
নীড় : আচ্ছা যেতে যেতে এক্সকিউজ শুনবো চলো।
নিরা : আরে দারাও দারাও … ১টা কথা বলো তো আমি যে এখানে … এই ফ্ল্যাটটাতে আছি সেটা কি করে জানলে…
নীড় : ইটস নট অ্যা বিগ ডিল ফর মি। এখন চলো চলো চলো।
নিরা : আচ্ছা তুমি নিচে যাও আমি আসছি।
নীড় : কোনো প্যাকিং ট্যাকিং এর দরকার নেই আমি সব …
নিরা : আরে লক তো করতে দিবে।
নীড় : ওহ । ওকে। আসো। ১০মিনিটে। পাসপোর্ট টাসপোর্ট নিয়ে এসো কিন্তু।
নিরা : ওকে।
নীড় নিচে গেলো।
টনি : কাহিনি কি?
নিরা : জানিনা।
টনি : ও কিছু বুঝতে পারেনিতো?
নিরা : জানিনা।
টনি : বুঝলে তো আমাদের শ্যুট করার আগে ২বার ভাববে না।
নিরা : কি করবো?
টনি : আচ্ছা এখন যাও। না হলে আবার কি হয় কে জানে…
নিরা : কিন্তু …
টনি : কোনো কিন্তু না। যাও।
নিরা চলে গেলো।
টনি : মরলে তুমি মরবে নিরা। আমি মরতে প্রস্তুত নই। তোমার সাথে মেলামেশার কারন মেরিন বন্যা খান। আমার একমাত্র নেশা মেরিন বন্যা খান। আমার একমাত্র ভালোবাসা মেরিন বন্যা খান। রোজ তুমি যেটাকে রোম্যান্স ভাবো সেটা জাস্ট ড্রাগসের ইফেক্ট । না হলে তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেয়েকে টনি টাচও করেনা। তোমাকে তো জাস্ট ইউজ করছি মেরিনের কাছে যাওয়ার জন্য। মেরিনকে পাওয়ার জন্য । আই জাস্ট লাভ মেরিন … মাই ওয়াল্ড লাভ …
.
মেরিন : হুয়াট? নীড় ইতালি গিয়েছে?
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : কেন?
জন : জানিনা ম্যাম। তবে রিটার্ন টিকিটস ও কেটে ফেলেছে।
মেরিন : বাবা … এতো ভালোবাসা …
জন : বুঝলাম না ম্যাম।
মেরিন : না বোঝার কিছু নেই জন। নীড় রাতারাতি ইতালি গেলো। আবার রিটার্ন টিকিট ও কাটা শেষ। এর মানে এটা স্পষ্ট যে নীড় নিরা নিয়ে আসতে গিয়েছে। তবে প্রশ্ন ১টাই… কেন? নীড় … অ্যা কমপ্লিকেটেড পারসোন … ভেবেছিলাম পাগল চৌধুরীটাকে বুঝতে পারি … বাট না। অতোটাও না। কিছুটা আমার আয়ত্তের বাহিরে। কিছু ১টা আছে তার ভেতর যেটা আমি জানিনা। কিছু ১টা লুকাচ্ছেন। কিন্তু সেটা কি?
জন : ম্যাম …. টনির কথা জানতে পেরে নীড় স্যার যদি নিরাকে বিয়ে করার জন্য তুলে নিয়ে যেয়ে থাকে…
মেরিন : নীড়ের বউ নিরা হবেনা। কোনোদিনও না। আর যদি ভুলবশতভাবে হয়েও যায় তবে সময়ের আগেই নিরাকে মরতে হবে। যেটা আমি চাইনা এখন। মরবেই তো নিরা … নিরার মা … আর নিলয় … কিন্তু আম্মু সুস্থ হবার পর। কিন্তু নীড়ের ভালোবাসার পাগলামোতে দিনটা এগিয়ে না আসুক ….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 7
writer : Mohona
.
মেরিন : দিনটা এগিয়ে না আসুক…
জন : ম্যাম আমি টনির বিষয়ে ১টা কথা জানতে পেরেছি…
মেরিন : কি?
জন : টনিও নিরার সাথে নাটক করছে। ওর উদ্দেশ্য অন্যকিছু।
মেরিন : টনির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ২টাই আমি তাই তো?
জন : আপনি জানতেন ম্যাম?
মেরিন : না জানতাম না। জেনেছি । কোরিয়া গিয়ে জানতে পেরেছি।
জন : কিভাবে?
মেরিন : থ্যাংকস টু হিজ মাদার… আসলে মানুষ ঠিকই বলে মেয়েদের পেটে কথা হজম হয়না। কথাটা ৯৫% মেয়ের সাথে অদ্ভুদভাবেই মিলে যায়। যাই হোক নিরা আসছে।
জন : ম্যাম ও তো চাল চালতে দক্ষ।
মেরিন : আর আমি চাল কাটতে… জন জন জন… কোমড় বেধে নাও। খেলাটা নেক্সট স্টেজে এসে পরেছে।
.
২দিনপর …
কনিকা নীড়ের সাথে নীড়ের গাড়িতে যাচ্ছে । তার পিছের গাড়িতেই মেরিন। ওরা মিরপুর পৌছালো। বাসায় ঢুকলো। মেরিনও ওদের পিছে পিছে ঢুকলো।
কনিকা : কোথায় আমার বনপাখি … ?
মেরিন মনে মনে : বনপাখি… আম্মুর মুখে কতোদিন পর এই ডাকটা শুনলাম। তোমার বনপাখি তো তোমার সামনেই । কিন্তু আফসোস তুমি আমায় চিনবেনা ।
নীড় : চলে আসবে । ওয়েট।
মেরিন মনে মনে : এমন কেন মনে হচ্ছে যে এখানে ভিন্ন কারোর নিঃশ্বাস আছে। যে আমার পারমিশন ছারা এন্ট্রি নিয়েছে।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : হুয়াট ?
নীড় : ভালো আন্টি এখন তোমাকে দেখলে শুরুতেই ভুল হয়ে যাবে। তাই ভালো হয় যদি তুমি…
মেরিন : যদি আমি চোখের আড়াল হই… তাইতো? এমনিতেও আমি এখন বের হতাম। আসছি …
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
নীড় : এতো সহজেই চলে গেলো? ঘাপলা আছে…
কনিকা : এই যে ভালো ডাক্তার শুনছো..
নীড় কনিকার কাছে গেলো।
নীড় : হামম ভালো আন্টি।
কনিকা : আমার বনপাখি কোথায় গো …
নীড় : ১মিনিট…. চোখ বন্ধ করো।
কনিকা চোখ বন্ধ করলো। নীড় নিরাকে কনিকার সামনে দার করালো।
নিরা মনে মনে : একে দেখে তো আমার মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে। এখন যদি কনিকা চোখ মেলে আমাকে দেখে ভুলভাল কিছু বলে? ওহ গড সেভ মি প্লিজ… না না কনিকা তো আমাকে কি করে চিনবে? ১৫বছর ধরে তো পাগলই হয়ে আছে ।
নীড় : ভালো আন্টি… চোখ মেলে দেখো তো …
কনিকা চোখ মেলল।
কনিকা : কোথায় আমার বনপাখি?
নীড় নিরার কাধে হাত রাখলো।
নীড় : এই যে তোমার বনপাখি…
নিরা : ছো…
কনিকা : এটা তো আমার বনপাখি না…
নিরা মনে মনে : ওহ নো…
নীড় : এটাই তোমার বনপাখি। দেখো ওর গলার লকেট টা দেখো।
কনিকা : না এটা আমার বনপাখি না। আমার বনপাখি তো ছোট্ট । আমার বনপাখি তো এতো বড়না। ছোট্টপাখি বনপাখি …
নীড় : আই থিংক ভালো আন্টি আজও তোমায় ছোট ভাবে ।
নিরা : হামমম । 😅।
মনে মনে : থ্যাংকস গড…
মেরিন : অনেকক্ষন তো হলো… এতোক্ষনে তো নাটকের পর্দা উঠে গেছে। যাই ভেতরে গিয়ে ক্লাইম্যাক্সটা ঘটাই …
মেরিন ভেতরে গেলো।
নীড় : ভালো আন্টি তুমি এখানে রেস্ট করো।
কনিকা ঘুমিয়ে পরলো।
.
নিরা : শোনো মেরিনের সামনে আবার বনপাখি টপিক তুলোনা।
নীড় : না না মাথা খারাপ নাকি। আমি তো …
মেরিন : কট ইউ …
২জন পিছে ঘুরলো । দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে।
নীড় মনে মনে : ড্যাম ইট। ঠিক ধরেছিলাম যে ঘাপলা আছে …
মেরিন : সিংহের গুহায় বাঘ ঢুকুক হায়না ঢুকুক আর পিগি ঢুকুক … সিংহর কাছে গোপন থাকেনা। কারন সিংহ বনের রাজা … আমার সম্রাজ্যে আমার ইচ্ছা ছারা কিছু হয়না। সেটা নীড় না জানলেও তোর তো জানার কথা ।
নিরা : তোর সম্রাজ্যে পা রাখার কোনো শখও আমার নেই। নীড় এনেছে।
মেরিন : কি যেন ১টা প্রবাদ আছে … তরমুজ ছুরির ওপর পরুক আর ছুরি তরমুজের ওপর কাটা তো যায় তরমুজই … ঠিক তেমনি … এখানে তুই নিজের ইচ্ছায় ঢোক বা নীড়ের। আমার আদালতে দোষী তো তুইই।
নীড় : ইনাফ। দেখো আমি নিরাকে এনেছি। তাই যদি এটা নিয়ে নিরাকে শাস্তি দাও তবে কিন্তু মেনে নিবোনা।।
মেরিন : আমি তো বলিনি যে আমি নিরাকে শাস্তি দিবো। আমি নিরা আর আপনাকে… ২জনকেই শাস্তি দিবো। বাট এখন শাস্তি শাস্তি খেলার মুড নেই। ঠিক আধ ঘন্টা পর আমার ১টা মিটিং আছে। শাস্তি দেয়ার সময় ও স্থান আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে। বাই।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নিরা : আমি একারনেই আসতে চাইনি।
নীড় : ভয় নেই। আমি আছি তো। আমি তোমার ছায়া হয়ে থাকবো। আর নীড় সব মেনে নিলেও নিজের বনপাখির ওপর কোনো বিপদ মেনে নিতে পারেনা। চিন্তা কোরোনা।
.
পরদিন…
রাতে…
নীড়-নিরা লং ড্রাইভে বেরিয়েছে। তখন নীড়ের ফোনটা বেজে উঠলো।
নিরা : এই অতৃপ্ত আত্মা কে? সে ফোন করেছে। ধরবো?
নীড় : একদম না । এটা মেরিন…
নিরা : মেরিনকে অতৃপ্ত আত্মা ডাকো… 😂..
নীড় : হামমম। তা নয়তো আর কি ডাকবো ? অতৃপ্ত আত্মার মতো যেকোনো জায়গায় পৌছে যায়। এখন ফোন রিসিভ করলে দেখবে এখানেও পৌছে যাবে।
নিরা : 😂।
নীড় : তুমি হাসছো?
নিরা : কি করবো বলো নামটা অনেক ফানি…
তখন মেরিন ১টা ভয়েস ম্যাসাজ পাঠালো। নীড় প্লে করলো।
মেরিন : আর মাত্র ১৩মিনিটের মধ্য আপনাদের শাস্তি শুরু হবে… আশা করি সিটবেল্ট বাধা আছে…
কথাটা শুনে নীড় ব্রেক চাপলো। দেখলো পিছে কোনো ট্রাক বা অন্যকোনো গাড়ি আছে কিনা… না নেই।
নিরা : আরে বাদ দাও তো। ও তো জানবেই না যে আমরা কোথায় ? ১কাজ করি আমরা অন্য কোনো রোড দিয়ে যাই।
নীড় : বনপাখি… ওর নাম তো আর এমনি এমনি অতৃপ্ত আত্মা দেইনি… যতোদূর ওকে চিনেছি… ভালোমতোই জানি যে ও হাজির হবে…
নিরা : বাহ… আমার অনুপস্থিতিতো মেরিনকে বেশ ভালোই চিনে গিয়েছো…
কথাটা শুনতেই নীড়ের চোখের রং পাল্টে গেলো। রেগে নিরার দিকে তাকালো। নিরা ভয় পেয়ে ঢোক গিলল। নীড় সন্দেহ জিনিসটা একদম মেনে নিতে পারেনা।
নীড় দাঁতে দাঁত চেপে
বলল : কি বললে আরেকবার বলো…
নিরা : সরি… আসলে আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম…
নীড় : জাস্ট শাট আপ। মজা? ইউ নো আই জাস্ট হেইট দিস। সন্দেহ জিনিসটা আমার মোটেও ভালো লাগেনা। দেখেছো কখনো তোমাকে কোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ করেছি…
নিরা নীড়ের ঠোটে হুট করে কিস করে
বলল : সরি মাই লাভ…
নিরার কিস করাতে নীড়ের মেরিনের কথা মনে পরলো। আরো রাগ উঠলো।
নীড় : হুয়াট ওয়াস দ্যাট মে… নিরা… 😡।
নিরা : তুমি এতো রাগ করছো কেন?
নীড় মনে মনে : নীড়… নিজের রাগকে কন্ট্রোল কর… বনপাখির ওপর কেন রাগ করছি? ও কিস করেছে… মেরিন তো না…
নীড় : আম সরি। আসলে ওই মেয়েটা আমার মাথা হ্যাং করে দিয়েছে। আম সরি বনপাখিটা…
তখন বুঝতে পারলো যে ওরা ধীরে ধীরে উচুতে উঠছে… গাড়ির পেছন দিকটা বেশি উচু…
নীড় ঘুরে দেখে ক্রেন দিয়ে ওদের গাড়িটা ওপরে উঠছে।
নিরা : আমরা ওপরে উঠছি কেন… কিছু করো নীড় …
নীড় : নিশ্চয়ই এটা মেরিনের কাজ। কিচ্ছু করার নেই এখন… ১কাজ করো । সিটটা শক্ত করে ধরে রাখো।
নিরা : আরে আমরা তো উচুতে উঠছি। তুমি তো জানোই আমার অ্যাক্রোফোবিয়া আছে…
নীড় : ও হ্যা তাইতো। বনপাখি তুমি চোখটা বন্ধ করে রাখো…
নিরা : আআমার ভয় করছে নীড়… কিছু করো…
ওরা যথেষ্ট উচুতে। নিরা তো ভয়ে হাউমাউ করে কাদছে। তখন মেরিন ওদের গাড়ির নিচে দারালো।
মেরিন : হ্যালো গাইস। হুয়াটস আপ ।
নীড় : মেরিন… নিচে নামাও আমাদের। নিরার অসুস্থ হয়ে পরছে কিন্তু। ওর অ্যাক্রোফোবিয়া আছে।
মেরিন : জানি তো। আর তাইজন্য তো ওপরে তুলেছি… ওর তো ভয়ে হাল কেরোসিন.. ওর কষ্টে আপনার বুক চিনচিন করছে। পারফেক্ট শাস্তি।
নীড় : কাজটা কিন্তু ভালো করছোনা… নিরা বেশি অসুস্থ হয়ে পরলে আমি কি করবো তা আমি নিজেও জানিনা …
মেরিন : ওহ রিয়েলি… বাট আমি কি কি করতে পারি তাতো নিরা জানে। তবে কোন অনুমতিতে ও একান্ত আমার প্রোপার্টিতে ঢুকলো। শাস্তি তো পেতেই হবে।
নীড় : মেরিন … ও আরো অসু্স্থ হয়ে পরছে তো… নামাও আমাদের।
মেরিন : নামাবো তো। কফিটা শেষ করে নেই।
নীড় : তুমি কি মানুষ?
মেরিন : আমি মেরিন। মেরিন বন্যা খান।
কফি শেষ হলে নীড়-নিরাকে নিচে নামানো হলো। আর নিচে নামতেই নীড় মেরিনের কাছে গিয়ে ঠাস করে থাপ্পর মারলো।
নীড় : আই জাস্ট হেইট ইউ।
মেরিন : বাট আই লাভ ইউ ।
নীড় নিরাকে হসপিটালে নিয়ে গেলো।
.
২দিনপর…
জন : ম্যাম… কোথায় যাচ্ছেন?
মেরিন : আম্মু অস্বাভাবিক আচরন করছে…
বলেই মেরিন গাড়ি নিয়ে ছুটে গেলো কনিকার কাছে। গিয়ে দেখে কনিকা পাগলামো করছে। জিনিসপত্র ছুরে মারছে। নিজেকেও আঘাত করছে। আর এই কারনেই কনিকাকে শিফ্ট করা হয়না। মেরিন কনিকার দিকে এগিয়ে যেতে নিলে কনিকা ল্যাম্প মেরিনের দিকে ছুরে মারলো। সেটা লেগে মেরিনের খানিকটা কপাল কেটে গেলো। নার্সরা কনিকাকে ইনজেকশন পুস করলো। কনিকা ঘুমিয়ে পরলো। মেরিন মায়ের কপালে চুমু দিলো।
মেরিন : আম্মু হুট করে এমন আচরন করছিলো কেন?
নার্স : আসলে…
মেরিন : আসল নকল বুঝিনা… টেল মি দ্যা ফ্যাক্ট ।
নার্স : আসলে আজকে এখনো নীড় স্যার আসেনি তো। তাই…
কথাটা শুনে নীড় আর ১পলকও দারালোনা। গাড়ি নিয়ে ছুটলো হসপিটালে। কারন নীড় নিরার কাছে হসপিটালে। আসলে কনিকার কথা নীড়ের মনেই নেই। মেরিনের কপালের কোনা দিয়ে রক্ত পরছে।
মেরিন হসপিটালে পৌছালো। নীড় নিরাকে স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে।
ঠিক তখনই মেরিন ভেতরে ঢুকে নীড়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। নীড় হাত ছারিয়ে নিলো।
নীড় : কি করছো কি তুমি…. এভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছো কেন…?
মেরিন : কারন ওদিকে আমার আম্মু অস্বাভাবিক আচরন করছে।
নীড় : তো …?
মনে মনে : ওহ নো। মনেই ছিলো না ভালো আন্টির কথা। ড্যাম ইট।
মেরিন : তো মানে? আম্মুকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারানো হয়েছে। আম্মু আপনার পেসেন্ট। আর আপনি নিজ দায়িত্বে আম্মুকে শিফ্ট করেছেন। আর এখন বলছেন তো….
নীড় : হ্যা বলছি। তুমি আমার নিরার সাথে যা করেছো তারপরও তুমি আমার কাছে মানবিকতা কিভাবে আশা করো?
মনে মনে : থ্যাংকস গড ভালো আন্টি ঘুম। কিন্তু মেরিনের সামনে নিজের অপরাধবোধটা প্রকাশ করা যাবেনা।
মেরিন : কারন আপনি ডক্টর। যাই হোক। চলুন।
নীড় : আমি তোমার সাথে যাবোনা।
মেরিন : আপনি যাবেন না?
নীড় : না…
মেরিন : দোষটা আপনার।
বলেই মেরিন পকেট থেকে ১টা ইনজেকশন বের করে নীড় ঘাড়ে পুস করে দিলো। আর ঘটনাটা ঘটলো বড়জোর ১০সেকেন্ডের মধ্যে । কিছু বুঝতে বুঝতে নীড় জ্ঞান হারালো।
মেরিন : বলেছিলাম আম্মুর অবস্থার অবনতি হলে মাশুল দিতে হবে। ৭দিন ধরে বুঝবেন মজা…
.
২ঘন্টাপর…
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। জ্ঞান ফিরতেই দেখে ১জন ওর জন্য জুস নিয়ে দারিয়ে আছে।
¤: স্যার জুস…
নীড় : জুস মাই ফুট। এটা কোথায়।
মেরিন : চারদিকে তাকিয়ে দেখুন আশা করি চিনতে পারবেন।
নীড় মেরিনকে দেখে ক্ষেপে গেলো। মেরিনের দিকে তেরে যেত নিলে বুঝতে পারলো যে ওটা মেরিননা। প্রোজেক্টরে ওর প্রতিবিম্ব। নীড় দেখলো এটা মিরপুরের বাসাটা।
নীড় : আরে এটা তো ওই বাসাটা। আহ মাথাটাও ব্যাথা করছে।
¤ : স্যার জুসটা খেয়ে নিন আগে।
নীড় জুসটা খেয়ে নিলো।
¤ : স্যার লেটার ফর ইউ।
নীড় চিঠিটা নিলো।
মেরিন : হ্যালো মাই জান চৌধুরী। আগামী ৭দিনের জন্য আপনি গৃহবন্দী। এই ৭দিন আপনি ভেতরে থেকে আম্মুর ট্রিটমেন্ট করবেন। আপনার খাওয়া দাওয়ার জন্য ১জন শেফ আছে। সেই সাথে ৭-৮জন সার্ভেন্ট আছে। ৫-৬জন নার্স আছে। জানালা-দরজা ভেঙে বের হবার চেস্টা করবেননা। ইলেকট্রিক শক খাবেন । যদি বিশ্বাস না হয় তবে ট্রাই করে দেখতে পারেন। তবে নিজের হাত-পা দিয়ে ট্রাই করবেননা প্লিজ। কোনো বস্তু দিয়ে ট্রাই করবেন। বাই মাই লাভ। আমি যেকোনো মুহুর্তে হাজির হতে পারি। অতৃপ্ত আত্মা বলে কথা….
নীড় চিঠিটা দুমরে মুচরে নিচে ফেলে দিলো।
নীড় : আই জাস্ট হেইট ইউ….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 8
writer : Mohona
.
নীড় : আই জাস্ট হেইট ইউ…
জন : ম্যান… নীড় স্যার এখন পুরো জব্দ ।
মেরিন : আমার কাছে ভুল করলে শাস্তি পেতেই হবে। নীড়কে তো আর বাকিদের মতো করে শাস্তি দেয়া সম্ভব না। তাই এভাবেই দিতে হচ্ছে। হ্যা যদি নীড় ভালোমতো যেতে রাজী হতো তবে এ পথ বেছে নিতে হতো না।
তখন নিহীল রেগে রুগে ভেতরে ঢুকলো।
নিহাল : আমার ছেলের সাথে কি করেছো?
মেরিন : আপনি আমার অফিসে? স্ট্রেইঞ্জ।
নিহাল : আমার কথার জবাব দাও । আমার ছেলে কোথায় ?
মেরিন : ছেলের শোকে ভুলে গিয়েছেন নাকি কার সামনে দারিয়ে আছেন ? আর কাকে প্রশ্ন করছেন?
নাহিল : ভুলিনি। আমি মেরিন বন্যা খান নামের একজন হার্টলেস মানুষের সাথে কথা বলছি । আমার ছেলে কোথায়?
মেরিন : আমি কাউকে জবাব দেইনা সেটা নিশ্চয়ই জানেন…
নিহাল : আমি তোমাকে পুলিশে দিবো।
মেরিন : ওকে নাম্বারটা কি আমিই ডায়াল করে দিবো?
নিহাল রেগে বের হয়ে গেলো।
মেরিন : জন… তোমার কি মনে হয় না যে বাবা ছেলে ২জনেরই রাগটা একটু বেশি..।
জন : জী ম্যাম।
.
নীড় : শীট শীট শীট।।। এই মেয়ে টাতো …
তখন ১জন ওর খাবার নিয়ে এলো।
নীড় : এই যে শোনো তোমার কাছে মোবাইল আছে?
¤ : জী স্যার।
নীড় : দাও…
¤ : সরি স্যার পারমিশন নেই।
নীড় : দিতে বলেছি দাও।
নীড় এমনভাবে বলল যে ভয়ে কেপে উঠে বেচারা দিয়ে দিলো। সে চলে গেলো।
নীড় : মোবাইল নিয়ে তো নিলাম। বাট কারো নাম্বার তো মনেই পরছে না। উফফ। পুলিশের নাম্বারও জানিনা। বাট গুগলে তো দেখে নেয়া যাবে।
নীড় পুলিশকে ফোন করলো।
নীড় : হ্যালো মিরপুর পুলিশ স্টেশন ।
পুলিশ : জী।
নীড় : দেখুন আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে।
পুলিশ : কে করেছে? কোথায় আছেন আপনি?
নীড় : কিডন্যাপারের নাম মেরিন বন্যা খান । সে আমাকে …
পুলিশ : সে আপনাকে সাড়ে এগারোর ডুপ্লেক্স বাড়িটাতে গৃহবন্দী করে রেখেছে। তাই তো।
নীড় : জী জী। কিছু করুন। মেরিন বন্যা খানকে অ্যারেস্ট করুন।
পুলিশ : কাকে অ্যারেস্ট করবো?
নীড় : মেরিন বন্যা খানকে।
পুলিশ : বলি আমাদের ঘাড়ে কটা করে মাথা আছে শুনি যে মেরিন বন্যা খান কে গ্রেফতার করতে যাবো?
নীড় : আরে আজব তো। আপনারা আমাকে চেনেন না। আমি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন । আমি কিন্তু চাকরি খেয়ে নিবো । দরকার হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে যাবো।
পুলিশ : হাহাহা। যান যান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে যান। সেও আপনাকে খুব সুন্দর ১টা জবাব দিবে । বাই।
পুলিশ ফোন রেখে দিলো।
নীড় : হ্যালো হ্যালো হ্যালো।।. ড্যাম ইট।
নীড় ফোনটা ছুরে মারলো।
নীড় : মেয়েটা কি মাফিয়া টাফিয়া নাকি? যে পুলিশর পর্যন্ত ওর কথা শোনে।
¤ : স্যার ।।
নীড় : আবার কি?
¤ : কনিকা ম্যাম উঠে গিয়েছে।
নীড় : ওকে আমি আসছি।
.
রাতে…
মেরিন বাসায় ঢুকলো। দেখে কবির-সেতু-নিরা সামনে দারিয়ে আছে।
মেরিন : আপনারা কি বিয়ের গেইট ধরেছেন ? না নিশ্চয়ই। তাহলে দরজা থেকে সরে দারান।
সেতু : নীড় কোথায়?
মেরিন : মেরিন বন্যা খান কাউকে জবাব দেয়না।
কবির : জবাব না দিলে আজকে তোমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হবেনা।
কথাটা শুনে মেরিন অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।
মেরিন : গুড জোক মিস্টার খান।
বলেই গান বের করে জনের পা বরাবর ফাকা গুলি করতে লাগলো। ৩জন সরে গেলো।
মেরিন : আমার নিশানা সবসময় ভুল হবেনা। আমি দেয়াল ভাঙায় না … উরানো তে বিশ্বাসী।
বলেই মেরিন ভেতরে ঢুকলো।
নিরা : কি করেছিস তুই আমার নীড়ের সাথে?
‘আমার নীড়’ … নিরার মুখে কথাটা শুনে মেরিনের মেজাজ আরও গরম হয়ে গেলো । ১টা গ্লাস আছার দিয়ে ভেঙে ১টা টুকরা নিরার গলার দিকে ছুরে মারলো।
নিরার গলার কিছুটা কেটে রক্ত পরতে লাগলো।
কবির : মেরিন….😡
মেরিন : চুপ।।। 📢। আমাকে একদম চোখ রাঙানি দিবেননা মিস্টার খান। চোখ উপরে ফেলবো । আর তুই… ভুলেও কোনোদিন যেন আর তোর মুখ দিয়ে না বের হয় ‘আমার নীড়’ … মনে রাখিস… নীড় কেবল আমার। শুধু আমার।
.
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে। হাতে খাবার নিয়ে।
নীড় : তুমি ?
মেরিন : হ্যা আমি। যান ফ্রেশ হয়ে নিয়ে ব্রেকফাস্ট করুন ।
নীড় : তোমার হাতেরটা আমি খাবো সেটা ভাবলে কি করে শুনি?
মেরিন : আমার হাতেরটাই তো সারাজীবন খেতে হবে।
নীড় : নেভার।
বলেই নীড় ওয়াশরুমে চলে গেলো।
মেরিন : পাগল চৌধুরী।
মেরিন বেরিয়ে কনিকার রুমে গেলো। গিয়ে দেখে কনিকা পরে যেতে নিচ্ছে মেরিন ধরে ফেলল। কনিকা মেরিনকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।
মেরিন : ভয় পেওনা। আমি তোমাকে পরে যেতে দিবোনা …
মেরিন কনিকাকে দার করালো। এরপর ধরে ধরে বসিয়ে দিলো।
কনিকা ভয়ে ভয়ে
বলল : থ্যাংক ইউ ।
মেরিন কনিকার কপালে চুমু একে দিলো ।
মেরিন : এতো ভয় পাচ্ছো কেন?
কনিকা : জানিনা…
মেরিন : ভয়ের কি আছে আমি তো তোমার মেয়েরই মতো …
কনিকা : এমা বলেকি…. তুমি আমার বনপাখির মতো কেন হবে শুনি? আমার বনপাখি তো ছোটপাখি।
মেরিন : ….
কনিকা : আমার তোমাদের মতো কাউকে দেখলেই ভয় করে। যদি তোমরা আমার বনপাখিকে ধরে নিয়ে যাও।
মেরিন : একদম নিবোনা।
কনিকা : সত্যি ?
মেরিন : হ্যা সত্যি।
কনিকা : তাহলে তুমিও ভালো।
বলেই কনিকা মেরিনের গালে চুমু দিলো। মেরিনের চোখের কোনে পানি চলে এলো।
বেরিয়ে এলো কনিকার রুম থেকে। বাসার এক কোনে হাটুতে মুখ গুজে কাদতে লাগলো।
নীড় কফি হাতে নিয়ে হাটছে আর বেরোনোর পথ খুজছে । তখন ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার শব্দ পেলো।
নীড় : কে কান্না করছে …
নীড় শব্দ ধরে এগিয়ে গেলো। পেলো মেরিনকে।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা … কাদছে। অবাক তো।
নীড় মেরিনের আরেকটু কাছে গেলো।
নীড় মনে মনে : সত্যি কাদছে নাকি আত্মাগিরি করছে…? লেট মি চেক।
নীড় মেরিনের মাথায় কফি ঢেলে দিলো। কোল্ড কফিই ছিলো।
মেরিন চোখের পানি মুছে দারালো।
মেরিন : হুয়াট দ্যা হে… আপনি …?
নীড় : কাদছিলে কিনা পরীক্ষা করে দেখছিলাম।
মেরিন : …
নীড় : তুমি কি বাই অ্যাট এনি চান্স কাদছিলে?
মেরিন : নান অফ ইউ বিজনেস …
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড় : নান অফ মাই বিজনেস। হুহ। যাই হোক অতৃপ্ত আত্মাটার মাথা কফিতো ঢেলেছি। ইশ হাতে যদি কোল্ড কফি না থাকতো । যাই ভালো আন্টির কাছে যাই …
.
২দিনপর …
মেরিন অফিসে বসে বসে কিছু ভাবছে। তখন নীলিমা এলো।
মেরিন : আরে আন্টি আসো।
মেরিন : নীড়ের কথা জানতে এসেছো?
নীলিমা : না। আমি জানি ও তোর কাছে থাকলে সুস্থই আছে ।তুই জানিস কি হতে চলেছে?
মেরিন : কি ?
নীলিমা : নীড়-নিরার বিয়ে।
মেরিন : বিয়ে?
নীলিমা : হ্যা বিয়ে।
মেরিন : কিন্তু নীড়ই তো নেই।
নীলিমা : নীড়ের সন্ধান পেলেই বিয়ে। দেরি করবেনা।
মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : ওহ রিয়েলি ?
নীলিমা : হ্যা । কি হবে?
মেরিন : আমার ওপর ছেরে দাও।
নীলিমা : আচ্ছা দিলাম। এই পেপারসগুলো ধর। পড়ে সাইন করে দে।
মেরিন : কিসের পেপারস?
নীলিমা : পড়ে দেখ…
মেরিন : চৌধুরী এম্পায়ারের ৬০% আমার নামে ট্রান্সফার করা হয়েছে…?
নীলিমা : হামমম। চৌধুরী এম্পায়ারের ৬০% শেয়ার আমার নামে নিহাল করেছিলো। সেটা আমি তোমার নামে করে দিলাম।
মেরিন : কিন্তু কেন?
নীলিমা : তোমাকে ত্রিমুখী শক্তির মালকিন করতে। মাহমুদ আর খান সম্রাজ্য তো তোমার ছিলোই। এখন থেকে চৌধুরী সম্রাজ্যও তোমার আন্ডারে।
মেরিন : কিন্তু মিস্টার চৌধুরী ?
নীলিমা : এটা আমার ডিসিশন।
মেরিন : আমাকে তো আমি নিজেই বিশ্বাস করিনা। তুমি বিশ্বাস করে এগুলো দিয়ে দিলে …
নীলিমা : আমি আমার ছেলেকে ভালোবাসি। আর তুমিও আমার ছেলেকে ভালোবাসো। সিগনেচার করে নিজের কাছেই রেখে দিও …
বলেই নীলিমা বেরিয়ে গেলো।
.
পরদিন …
নীড় কনিকার গলায় ছুরি ধরে রেখেছে। কনিকার ভীতু ভীতু মুখ।
সার্ভেন্টসরা সবাই আতঙ্কিত। কনিকাকে ছারতে বলছে।
নীড় : তোমরা তোমাদের ম্যামকে ডাকো। মেরিন বন্যা খানকে ডাকো …
খবর পেয়ে মেরিন ছুটে এলো।
নীড় : এসে পরেছো মিস অতৃপ্ত আত্মা …
মেরিন : কি হচ্ছে কি নীড় …. লেগে যাবে আম্মুর।
নীড় : লাগুক। আই ডোন্ট কেয়ার।
মেরিন : নীড় যদি আম্মু ব্যাথা পায় আমি কিন্তু আপনার নিরার গলা থেকে মাথাই নামিয়ে দিবো।
নীড় : ওকে।
মেরিন : ছারুন নীড়।
নীড় : নীড়ে সবাই বন্দী হয়। বাট নীড়কে বন্দী করা সম্ভবনা। এটাও তুমি করেছো। বাট আর না। আমা পক্ষে আর বন্দী হয়ে থাকা সম্ভব না। সো… লেট মি গো …
মেরিন : আগে আম্মুকে ছারুন।
নীড় : হ্যা ছারবো তো। আগে আমাকে যেতে দাও।
মেরিন : বললাম তো যেতে দিবো। ছারুন আম্মুকে। প্রমিস যেতে দিবো।
নীড় : প্রমিস ?
মেরিন : প্রমিস…
মেরিন প্রমিস করতেই নীড় আর কনিকা হাহা করে হেসে উঠলো। ২জন হাত মিলালো।
নীড় : চলো বন্ধু আজকে ২জন মিলে খুব ঘুরবো।
বলেই কনিকাকে নিয়ে বাইরের দিকে যেতে লাগলো। মেরিনকে ক্রস করে আবার ফিরে এলো।
নীড় : তোমাকে হ্যান্ডেল করা আমার বা হাতের খেল। শুধুমাত্র মেয়ে বলে ছার দেই। কারন আমি মেয়েদের সম্মান করি। আমি কতোটা রাগি তা তুমি জানো। তাই নিজের সাইকোগিরি আমার সাথে দেখাতে এসোনা। হেরে যাবে।
মেরিন মোবাইলটা আছার মারলো। যা যা পেলো চোখের সামনে সব ভেঙে ফেলল। সবাই ভয়ে কেপে উঠলো ।
.
রাতে…
নীড় কনিকাকে নিয়ে বাসায় ফিরে এলো। কনিকার হাতে চকোলেটস , পুতুল…
নীড় তাকিয়ে দেখলো সারা বাড়ি লন্ডভন্ড। মেরিন কপালে হাত দিয়ে বসে আছে। অন্য হাতটা খানিকটা কাটা। কনিকা ভয় পেয়ে গেলো। নীড় নার্সকে বলল কনিকাকে রুমে নিয়ে যেতে। নার্স নিয়ে গেলো।
নীড় ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। মেরিনের হাতটা ধরলো। মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : আমি তোমার মতো অমানুষ নই।
নীড় মেরিনের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে।
মেরিন : ইউ হ্যাভ টু পে ফর দ্যাট। ভেরি ব্যাডলি।
নীড় : তোমার কাছে ব্যাড ছারা গুড কিছুই আশা করা যায়। সকালে যা করেছি সেটা কেবল ট্রেইলার ছিলো। সেই সাথে ওয়ার্নিং ও। এরপর থেকে আর কখনো আমাকে বন্দী করার কথা মাথাতেও এনো না। না হলে ভালো আন্টি যতোই ভালোবাসিনা কেন… তোমার জন্য কষ্ট দিতে বাধ্য হবো। কাল সকালে আসবো। ভয় নেই ভালো আন্টিকে সুস্থ না করা পর্যন্ত আমি তাকে ছারছিনা।
বলেই নীড় চলে গেলো।
.
২দিনপর…
মেরিন চুপচাপ বসে আছে। তখন হন্তদন্ত হয়ে জন ওর কেবিনে ঢুকলো।
জন : ম্যাম ম্যাম ১টা দুঃসংবাদ আছে…
মেরিন : নীড়-নিরার বিয়েটা কবে?
জন : পরশু।
মেরিন : হামমম। গোপনে না প্রকাশ্যে?
জন : গোপনে।
মেরিন : হামমম। তোমার কাছে কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় আছে জন খান বাড়িকে বউয়ের মতো সাজানোর জন্য । মনে রেখো কালকে মেরিন বন্যা খান আর নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের গায়ে হলুদ।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : নিশ্চয়ই জানো চৌধুরী দের কোথায় আনতে হবে। আর কারা কারা ইনভাইটেড?
জন : অফকোর্স ম্যাম।
.
পরদিন…
খান বাড়িকে খুব সুন্দর করে সাজানো হলো। কেউ কিছু বুঝতেই পার়ছেনা দাদুভাই ছারা। বিকালে দিকে নিহাল-নীলিমা-নীড়কে তুলে আনা হলো।
নিহাল : এসবের মানে কি? আমাদের এখানে তুলে আনা হয়েছে কেন?
কবির : আমরাই তো অবাক আপনাদেরকে এখানে দেখে।
নিহাল : মিস্টার খান বাড়িটা এভাবে সাজিয়েছেন কেন? বলেছিলাম না বিয়েটা গোপনে হবে। মেরিনের আড়ালে।
কবির : বাড়ি তো আমরা সাজাইনি। মেরিন সাজিয়েছে।
নিহাল : ও জেনে গিয়েছে যে নীড়-নিরার বিয়ে?
কবির : না।
নিহাল : তাহলে কেন সাজিয়েছে?
কবির : সেটা তো আমরাও জানিনা।
মেরিন : আজকে আমার গায়ে হলুদ তাই সাজিয়েছি….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 9
writer : Mohona
.
মেরিন : আজকে আমার গায়ে হলুদ তাই সাজিয়েছি…
সবাই সিড়ির দিকে তাকালো। দেখলো সেজে গুজে মেরিন দারিয়ে আছে। সাদা আর সোনালী রঙের মিশ্রনের ১টা কাপর। লাল রঙের ব্লাউজ। কালো গোলাপের গহনা। অদ্ভুদ সুন্দর লাগছে । নীড় ১বার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে আবার তাকালো।
নীড় : ওয়াও…
কথাটা নীড় আস্তে করেই বলল। তবে নিরা কাছেই ছিলো । তাই শুনতে পেলো।
মেরিন সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো।
মেরিন : আজকে দি গ্রেট মেরিন বন্যা খানের গায়ে হলুদ।
সেতু : গায়ে হলুদ মানে?
মেরিন : ও মিসেস খান… কি খেয়ে বড় হয়েছন বলুন তো… গোবর খেয়ে… বিয়ের আগে মানলাম ভিখিরি বাড়ির মেয়ে ছিলেন। বাট বিয়ের পর তো এই খান বাড়ির বউ হয়ে ভালোই ভালো মন্দ খেয়েছেন।
সেতু : মেরিন…
মেরিন : ভুল কিছু বললাম? এখানে আপনি ছারা সবারই ব্লু ব্লাড। নীল রক্ত সকলের। আমি তো রাজ রক্ত। একমাত্র আপনিই ভিখিরি বাড়ির মেয়ে।
কবির : তুমি আমার স্ত্রীকে অপমান করছো।
মেরিন : অপমান তাকে করা হয় যার মান থাকে। যাই হোক আজকে আমি ঝগড়া করতে চাইনা। কারন আজকে আমার জীবনের ১টা শুভদিন। আজকে গায়ে হলুদ। কালকে আমার বিয়ে।
কবির : বিয়ে? কারসাথে?
মেরিন : সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
কবির : কি করবো মানে? আমি কি জানতে পারিনা … ভুলে যেওনা তুমি আমার মেয়ে।
মেরিন : কি বললেন? ঠিক শুনতে পাইনি… দাদুভাই তুমি শুনেছো?
দাদুভাই : না দিদিভাই আমি কিছু শুনিনি। আমি তো ওর কথা শুনিইনা।
মেরিন : জন তুমি শুনেছো?
জন : মে বি তিনি বললেন আপনি তার মেয়ে …
মেরিন : মেয়ে…?
মেরিন হাসতে লাগলো। মেরিনের অট্টহাসিতে সারা খানবাড়ি গুমগুম করেছে।
মেরিন : যে মেয়ে বাচলো না মরলো… খেলো নাকি খেলোনা সেই খবর কখনো কোনোদিনও নেননি … সেই মেয়ের বিয়ের কথা শুনে পাত্রর নাম জানতে চাওয়ার আগ্রহ দেখে আমি সত্যিই শিহরিত।
মেরিনের কথা আর হাসিতে নীড় ১টা কষ্ট অনুভব করলো।
মেরিন : যাই হোক… কালকে সবাই আমার জামাইটার দেখা পাবেন। তাকে দেখে সবার তাক লেগে যাবে। এখন হলুদ সন্ধ্যা শুরু করা যাক।
বলেই মেরিন গানটা ওপরে তুলে শূন্যে ফাকা গুলি করলো। আর সাথে সাথে ফুলের বৃষ্টি শুরু হলো। ঢোল-নাগারা বাজা শুরু হলো।
.
মেরিন হলুদের বাটি নিয়ে নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : আমি চাই সবার আগে আপনি আমাকে হলুদ দিন…
নীড় ওকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
মেরিন : অল টাইম ড্রামা … নীড় আপনাদের ৩জনকে যদি এখানে তুলে নিয়ে আসতে পারলে আরো অনেক কিছু করতে পারি । আমি কোনো ঝামেলা করতে চাইছিনা। প্লিজ একটাবার হলুদ লাগিয়ে দিন। অল্প একটু …
নীড় : লিসেন তুমি আমাকে কোনো কাজ করতে বাধ্য করতে পারবেনা। বুঝেছো।
মেরিন : জেলাস হচ্ছেন বুঝি আমার গায়ে হলুদ দেখে।
নীড় : জাস্ট শাট আপ। তুমি যাকে খুশি বিয়ে করো। তাতে আমার কি? তবে হ্যা তোমার মতো মেয়েরা যে কাউকে ভালোনাসতে পারেনা সেটা আরো ১বার প্রমান হলো…
মেরিন : হাও গ্রেট অ্যাম আই। যাই হোক হলুদটা লাগিয়ে দিন। প্রোগ্রাম শুরু হতে দেরি হচ্ছে। সো ফাস্ট।
নীড় : নো…
মেরিন : আপনিই আমাকে হলুদ লাগাবেন প্রথম।
বলেই মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : যখন ভালোভাবে লাগালেন না তখন আমি আমার স্টাইলেই লাগাবো।
বলেই মেরিন খুব দ্রুত নীড়ের গালে হলুদ লাগিয়ে ওর গালের সাথে নিজের গাল মিশিয়ে নিজের গালেও হলুদ লাগিয়ে নিলো। বিনিময়ে নীড়ের থাপ্পর খেলো।
থাপ্পর মেরে নীড় বেরিয়ে যেতে নিলে পারলোনা। কারন মেরিনের লোকজন ।
ধুমধামের সাথে হলুদ সন্ধ্যা পালন হলো।
.
নীড় বসে বসে ভাবছে।
নীড় : কাকে বিয়ে করছে মেরিন ? কে সে? ও না বলে যে ও আমাকে ভালোবাসে …? তাহলে কিভাবে অন্যকাউকে বিয়ে করতে পারে? ওর মতো মেয়েরা সব করতে পারে। ওদের ভালোবাসাও মিথ্যাই হয়। বুঝতে পারছিনা আমার এতো রাগ উঠছে কেন?
মেরিন : আমি কতো ভাগ্যবতী… নীড় আমার কথা ভাবছে।
নীড় : তুমি ? তুমি আমার রুমে কি করছো?
মেরিন : এই বাড়ি আমার , রুম আমার , আপনি আমার … কাছে এই প্রশ্ন করছেন? নট ডান…
মেরিন সাদা রঙের ১টা থ্রিপীছ পরা। এই প্রথম মেরিনকে এভাবে দেখলো । চুল থেকে টুপটুপ করে পানি ঝরছে। তবে নীড়ের চোথ আটকে গেলো মেরিনের গলার লকেটটাতে। আগে কখনো দেখেনি লকেটটা। চেইনটা দেখেছে বাট লকেটটা আজকে দেখলো। ও মনে করলো মেরিন নিরার গলার লকেটটা কেরে নিয়েছে।
নীড় : তুমি নিরার লকেট কেন পরেছো? নিশ্চয়ই কেরে নিয়ে জোর করে পরেছো?
মেরিন : আপনি এই লকেটটার কথা বলছেন?
নীড় : হ্যা।
মেরিন : ফর ইউ কাইন্ড ইনফরমেশন এই লকেটটা জন্মের পর থেকে আমার গলায় আছে। ১দিনের জন্যও খোলা হয়নি। আপনার নিরার গলায় এটা কিভাবে যাবে শুনি? আমার জানামতে ওর গলায় এই ডায়মন্ড লকেট থাকতে পারেনা…
নীড় মনে মনে : কি বলছে কি মেয়েটা? গত ৩বছর ধরে বনপাখির গলায় আমি লকেটটা দেখছি… আর ও বলে এটা ওর… দেখা দরকার ১বার …
নীড় রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
মেরিন : এই যে কোথায় যাচ্ছেন? নিরার গলায় এমন লকেট? কিন্তু কিভাবে? গট ইট… এটার দিকে নজর পরেছে। ভালো লেগেছে। তাই হয়তো তার বাবা বানিয়ে দিয়েছে। মিস্টার খান তো আবার মেয়ের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ন রাখেননা।
নিরা : কি চলছে মেরিনের মাথায়? কি হবে কালকে? ও কি ন…
নীড় : বনপাখি…
নিরা : বেবি তুমি?
নীড় : হামম আমি।
নীড় নিরার সামনে এসে দারালো। ওর গলার চেইনটা ধরলো। লকেট আছে।
নিরা : কি ব্যাপার আমার লকেটে কি দেখছো?
নীড় : মেরিনের গলায়ও সেইম লকেট দেখলাম। তাই মনে করলাম হয়তো ও তোমারটা ছিনিয়ে নিয়েছে।
কথাটা শুনে। নিরার মুখের রং উরে গেলো।
নিরা মনে মনে : এখন যদি নীড় বুঝে যায় যে বনপাখি আমি না … মেরিন… তাহলে?
নীড় : কি হলো তোমাকে এমন লাগছে কেন?
নিরা : আসলে কালকে কি হবে ভেবে ভয় লাগছে… ও যদি কাল তোমাকে আমার কাছ থেকে কেরে নেয়?
নীড় নিরাকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : নীড় কেবল নিরার। আমি আছি তো।
নিরা : লাভ ইউ।
নীড় : লাভ ইউ টু। আচ্ছা লকেটের কাহিনি কি? ওর গলায় তোমার মতো লকেট কি করে?
নিরা : লললকেট … আসলে বাবা আমাকে আর ওকে একইরকম লকেট দিয়েছিলো । ছোটবেলায়।
নীড় : ওহ….
.
সেতু : ভীষন চিন্তা হচ্ছে। মেরিন নিশ্চয়ই জেনে গিয়েছে কালকে নীড়-নিরার বিয়ে হবে সেটা। আর তাই এসব করছে।
কবির : কিন্তু এই কথা তো আমরা ৪জন আর নীড়-নিরা ছারা কেউ জানেনা। আমি তো বাবাকেও বলিনি একারনে।
নীলিমা : আপনারা শুধুশুধুই ভয় পাচ্ছেন। এমন কিছুই হয়তো হবেনা। ও হয়তো অন্যকাউকেও বিয়ে করতে পারে। আর মেরিনের যদি নীড়কেই বিয়ে করার হতো তাহলে তো ও নীড়কে তুলে নিয়ে গিয়েই বিয়ে করতে পারতো… 😅…
কবির : মেরিন চুপিসারে কোনো কাজ করেনা।
নিহাল : এখন কালকে সকাল পর্যন্ত তো ওয়েট করতেই হবে… আর কোনো অপশন নেই।
সবাই : হামমম।
.
পরদিন…
দুপুরে খাওয়ার পরই সবার কেমন ঘুমঘুম পাচ্ছে। সবাই ঘুমিয়ে পরলো। আর যখন সবার ঘুম ভাঙলো তখন সবার চোখ রসগোল্লার মতো বড় হয়ে গেলো।
বউ সেজে গান হাতে বসে আছে মেরিন। সব কালো। লেহেঙ্গা কালো , গহনা কালো। পাশে নীড়। ঘুমের রেশ এখনো সম্পুর্ন কাটেনি। নীড়ের গায়ে কালো রঙের শেরওয়ানি। মাথায় কালো রঙের পাগরি।
নিহাল-নীলিমা-নিরা … ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। আর ৩জনের নিচে বড় সাইজের পাত্র রাখা। সেই পাত্রগুলোতে তরল কেমিক্যাল রাখা। আর তার চারদিকে মেরিনের লোকেরা ঘেরাও করে রেখেছে। যেন কেউ কাছে না ভিরতে পারে।
কবির : মামনি।।।
সেতু : মাই বেবি…
নীড় : মামনি বাবা… বনপাখি…
‘বনপাখি’ … ডাকটা শুনে মেরিন অবাক হলো।
নীড় : ওদেরকে এভাবে ঝুলিয়ে রেখেছো কেন?
মেরিন : বনপাখি কে? আপনি নিরাকে বনপাখি ডাকলেন কেন?
নীড় : এটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়। বলো আমার মা-বাবা আর ভালোবাসাকে ওখানে ঝুলিয়ে রেখেছো কেন? বলো… উত্তর দাও…
মেরিন : আগে আমার উত্তর দিন। আপনি ওকে বনপাখি ডাকলেন কেন?
নীড় : আমি ওকে ভালোবেসে ডাকি। পেয়েছো উত্তর…
মেরিন : …
নীড় : নামাও ওদের …
মেরিন : হ্যা নামাবো তো …
বলেই মেরিন ওর সিংহাসন চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে বসলো।
মেরিন : তবে নামানোর আগে… ছোট্ট একটু কাজ আছে।
নীড় : কি কাজ?
মেরিন : আপনাকে আমায় বিয়ে করতে হবে…
নীড় : অসম্ভব কোনোদিনও না।
কবির : তুমি কি মানুষ মেরিন ?
মেরিন : না। আমি মেরিন।
কবির : ১টা থাপ্পর দিবো মেয়ে তোমাকে।
মেরিন : পারলে দিয়ে দেখান। আমি অমন মেয়ে নই যে জন্মদাতা থাপ্পর দেবে আর আমি হজম করবো। থাপ্পর দিতে এলে হাতটা কেটে ফেলে দিবো।
কবির : তোমার সব মনমানি মেনে নিলেও এটা আমি মেনে নিবোনা । কারন এটা আমার মেয়ের জীবনের ব্যাপার ।
মেরিন : সো হুয়াট । যদি কোনো কথা বলতে আসেন তবে এই কেমিক্যালের মধ্যে আপনার মেয়েকে চুবানো হবে। এর ভেতর ঢুকবে আপনার মেয়ে। আর বের হবে আপনার মেয়ের কঙ্কাল।
সেতু : তোকে আজকে আমি…
বলেই সেতু মেরিনের দিকে তেরে এলে মেরিন ওর গলা চেপে ধরলো।
নীড় : আন্টি…
কবির : সেতু…
মেরিন : তোর সাহস দেখে অবাক হলাম।
বলেই সেতুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : তো নীড় আপনাকে ভাবার জন্য সাড়ে সাত মিনিট সময় দিলাম। আপনি আমাকে বিয়ে করবেন কি করবেন না সেটা ভাবুন… আপনি সময় নিয়ে ভাবুন…
তখন নীড় মেরিনের হাত থেকে ওর গানটা নিয়ে নিলো।
মেরিনের লোকেরা গান উঠাতে নিলে মেরিন ইশারা দিয়ে না করলো।
নীড় : এতো খুশি হয়ো না। না তো ভালোবেসে তোমাকে বিয়ে করবো। আর না তো ঘৃণা করে তোমার জান নিবো। আমাকে নিয়ে কাহিনি তো … আমি এখন তোমার সামনে নিজেকেই শেষ করে দিবো। গুড বাই…
বলেই নীড় নিজেকে শ্যুট করলো।
.
কিন্তু গুলি চললো না।
মেরিন : আমি ভিন্ন অন্যকারো হাতে গেলেনা … আমার গান কাজ করেনা। দিন দেখাচ্ছি কিভাবে কাজ করে…
মেরিন নীড়ের হাত থেকে গান নিলো। এরপর গুলি ভরলো। এরপর ওপরে ফাকা গুলি করলো।
মেরিন : আমি জানতাম আপনি এমনটাই করবেন। তাই গানটা ফাকা করে রেখেছিলাম। এখন বলুন বিয়ে করবেন কি করবেন না?
নীড় : নো…
মেরিন : ওকে… নিরাকে নিচে নামাও…
নিরাকে ধীরে ধীরে নিচে নামানো হচ্ছে।
সেতু-কবির : নিরা ….
কবির : নীড় নীড় … তুমি রাজি হয়ে যাও। নিরাকে বাচাও …
নীড় : ….
মেরিন : মিস্টার এন্ড মিসেস চৌধুরীকে নিচে নামাও।
নিহাল-নীলিমাকে কিছুটা নামাতেই
নীড় বলল : বিয়ে করবো।
মেরিন : ঠিক শুনতে পেলামনা।
নীড় : বললাম যে তোমাকে বিয়ে করবো। তোমাকে বউ বানাবো ।ছেরে দাও সবাইকে।
মেরিন : ওকে । জন… পেপারস।
জন পেপারস নিয়ে এলো।
মেরিন : সিগনেচার প্লিজ।
নীড় : আগে সবাইকে নামাও
মেরিন : আগে সিগনেচার। মেরিন কথার খেলাপ করেনা।
নীড় সিগনেচার করলো। মেরিনও করলো। সাক্ষীরাও করলো। প্রথম সাক্ষী দাদুভাই। কিন্তু নীড় জানেনা ওখানে ১টা কনট্র্যাক্ট পেপারও ছিলো।
মেরিন : সবাইকে নামানো হোক।
সবাইকে নামানো হলো। কেমিক্যাল গুলো সরানো হলো।
নিহাল : কাজটা ঠিক করলেনা মেরিন বন্যা খান।
মেরিন : আহা… মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী। জন… আমার শাশুড়িমাকে দীপের সাথে চৌধুরী বাড়িতে পাঠাও। সেখানে গিয়ে সে বরনডালা সাজিয়ে বসে থাকবেন। আমাকে আর নীড়কে বরন করার জন্য।
নীড় : জন… মামনি একা না। আমি আর বাবাও যাবো।
মেরিন : নো না… এখনও বিয়েতে কোনো গেস্ট এলোনা , অনুষ্ঠান হলোনা । আর সবথেকে বড় কথা কবুল বলে আমাদের বিয়ে হলোনা। কি করে শশুড়বাড়ি যাই বলুন তো ….? আর কোনো ড্রামা ক্রিয়েট করবেন না প্লিজ… জন…
নীলিমা চৌধুরী বাড়িতে পৌছালো। এদিকে ধুমধামের সাথে বিয়ে হলো। প্রেস-মিডিয়া-পলিটিশিয়ানস সবাই উপস্থিত ।
না চাইতেও নীড়কে বসে থাকতে হলো। না হলে হয়তো ওর মাকে খেসারত দিতে হবে । নীড় তো আর এটা জানেনা যে এই প্ল্যানের ৫০% পার্টনার নীলিমা।
শেষে দাদুভাই বিদায় দিলো ।
মেরিনের হাত নীড়ের হাতে দিলো।
দাদুভাই : তোমার কাছে হয়তো হাস্যকর লাগবে। তবুও বলছি… আমার দিদিভাই কে তোমার হাতে তুলে দিলাম। ওর দায়িত্ব আজ থেকে তোমার। ১টা কথা মাথায় রেখো … তুমি ছারা ওর কেউ নেই….
.
নীলিমা বরনডালা নিয়ে দারিয়ে আছে। গাড়িবহর এসে থামলো। নিহাল হনহন করে নেমে ভেতরে ঢুকলো।
নিহাল : একি… তুমি দেখি সত্যিই বরনডালা সাজিয়ে দারিয়ে আছো…
নীলিমা : তো কি করবো? ঝাড়ু নিয়ে দারিয়ে থাকবো? যাও ভেতরে যাও। বোকা কোথাকার ।
নীড়ও হনহন করে ভেতরে চলে গেলো। নীলিমা স্বাদরে মেরিনকে বরন করে নিলো।
নীলিমা : ওয়েলকাম নতুন চৌধুরানী …
মেরিন : ধন্যবাদ শাশুড়িমামনি …
নীলিমা : শুধু মামনি ডাক…
মেরিন : মামনি …
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 10
writer : Mohona
.
মেরিন : মামনি…
নীলিমা : আমার সোনামনি … আফসোস.. তোদের ২জনকে একসাথে বরন করতে পারলামনা। ও এই আফসোস? শোনো কেবল খুব জোরে ১টা চিল্লানি মারবে।
নীলিমা : ওকে। বাট কেন?
জবাবে মেরিন বাকা হাসি দিলো।
হঠাৎ করে নীলিমার চিৎকারে নিহাল আর নীড় হয় পেয়ে ছুটে এলো । এসে দেখে মেরিন নীলিমার গলায় ছুরি ধরে রেখেছে।
নীড় : মামনি …. এখন তো সব তোমার ইচ্ছামতোই হয়েছে। তাহলে এখন কেন আমার মামনির জানের পিছে পরেছো ?
মেরিন : একটুখানি ইচ্ছা বাকি আছে। আপনি আবার একটু কষ্ট করে বাহিরে আসুন । মামনি… আমাদের ২জনক একসাথে বরন করবে। আর শশুড়বাবা হেসে হেসে তালি বাজাবে।
নীড় : জাস্ট এতোটুকুর জন্য তুমি এমনটা করলে?
মেরিন : হ্যা। করলাম। যদি ভালোমতো বলতাম আপনি কি রাজি হতেন? হতেন না?
নিহাল : কাকে বরন করার জন্য দারিয়ে ছিলে দেখো। যে এতোটুকু বিষয় নিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলে।
মেরিন : থ্যাংকস ফর দ্যা কমপ্লিমেন্ট। নীড় … কাম প্লিজ।
নীড় এসে মেরিনের পাশে দারালো। নীলিমা ২জনকে বরন করে নিলো।
২জন একসাথে ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : আরো কিছু?
মেরিন : এবার আমরা ২জন মিলে বাবা-মামনিকে সালাম করবো। তারা আমাদের দোয়া করবেন।
তাই হলো।
নীড় : এখন?
মেরিন : এবার আপনি সসম্মানে যেতে পারেন।
নিহাল : আর আমি?
মেরিন : আপনিও … 😃
নীড়-নিহাল চলে গেলো।
নীলিমা : এখন থেকে বউ-শাশুড়ি মিলে বড় বড় ধামাকা করবো।
মেরিন : তুমি না হলে হয়তো সবটা এতো সহজে হতোনা।
নীলিমা : আমি আগেই বলেছি যে আমার ছেলে আমার দুর্বলতা । আমার ছেলের ভালোর জন্য আমি সব করতে পারি। তবে শোন … চৌধুরীদের মাথার তার ছিরা। তাই বাবা-ছেলেও বড় বড় বোম্ব ফাটাতে পারে…
মেরিন : তারাও ২জন আর আমরাও … যখন আমি তুমি একসাথে তখন … 😏
.
নীড় : কি থেকে কি হয়ে গেলো? ওই অতৃপ্ত আত্মাটা আমার বউ? আই জাস্ট কান্ট ইমেজিন । ওহ গড। আমার বনপাখি… ছোটথেকে যাকে ভালোবেসে এলাম আজকে তাকে পেলামনা। আমার বউ অন্যকেউ? আল্লাহ তুমি নাকি যা করো তা নাকি মঙ্গলের জন্যই করো। কিন্তু মেরিন বন্যাকে দিয়েকি আদৌ কারো মঙ্গল কিছু হওয়া সম্ভব ? নাহ আজকে আর ভাবা সম্ভবনা। আই নিড রেস্ট । কিন্তু রুম তো নিশ্তয়ই অতৃপ্ত আত্মাটা দখল করেছে। এদিকে আমার রুম আমার বেড আমার পিলো ছারা আমার ঘুমও আসবেনা? হুয়াট টু ডু? অতপ্ত আত্মাটা তো জীবনেও ঘুমায়নি? আজকে আর কিছু নিতে পারছিনা। কি করি? আইডিয়া। ক্লোরোফর্ম। ক্লোরোফর্ম দিয়ে ওটারে অজ্ঞান করে রুমে ঢুকে ঘুম দিবো।
নীড় ক্লোরোফর্ম দরজার নিচ দিয়ে রুমে স্প্রে করে দিলো।
নীড় : ২-৩মিনিট পর রুমে ঢুকবো। ভীষন ঘুম পাচ্ছে। ঘুম পেলে আমার মাথা কেন যে কাজ করেনা?
নীড় রুমে ঢুকলো। রুমের লাইট নেভানো। প্রায় অন্ধকার। মোমবাতির মৃদু আলোতে চারদিকের ফুলগুলো দেখা যাচ্ছে।
নীড় : আমার রুম কে সাজালো?
মেরিন : আমি…
মেরিনের কন্ঠ শুনে নীড় চমকে উঠলো।
নীড় : এই অতৃপ্ত আত্মাটা কি ক্লোরোফর্মেও অজ্ঞান হয়না?
মেরিন : মানে?
নীড় পাশ ফিরলো। দেখলো মেরিন ব্যালকনিতে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : আপনার ব্যালকনিটা খুব সুন্দর।
নীড় : কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি?
মেরিন এসে নীড়ের সামনে এসে দারালো।
মেরিন : কপাল খারাপ হলে ব্যালকনি সুন্দর হয় বুঝি?
নীড় মনে মনে : যখন স্প্রে করেছিলাম তখন অতৃপ্ত আত্মাটা ব্যালকনিতে ছিলো।
মেরিন : কি ভাবছেন?
নীড় : এটাই যে অভিশাপ আমার সাথে জুরে গিয়েছে।
মেরিন : আর এই অভিশাপটাই আপনার সারাজীবনের সঙ্গী।
নীড় : না গো অভিশাপকে সারাজীবন সাথে বয়ে নিয়ে বেরানোর মতো বোকা আমি নই। ছুরে ফেলে দিবো।
মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : মেরিনের লাইফে কি হয় সেটা মেরিন ডিসাইড করে। তাই ছুরে ফেলা তো দূরের কথা … এই কথা আর কখনো মাথাতেও আনবেননা। ভুলে যান। কেবল এটা মনে রাখবেন আমি আপনার বউ… নীড়ের মেরিন।
নীড় : ঘৃণার মেরিন … আমি কোনোদিনও ভুলবোনা তোমাকে। তোমার অস্তিত্বকে। আজকে কথা দিলাম… সারাজীবন ঘৃণা করবো।
মেরিন : থ্যাংক ইউ। কারো ভালোবাসার মানুষ হওয়ার থেকে ঘৃণার মানুষ হওয়া ভালো। কারন একমাত্র ঘৃণাই আমার জন্য সত্য। ঘৃণাই শেষ পর্যন্ত সাথে থাকে । তবে হ্যা … ভালো আপনি আমাকে বাসবেন।
নীড় : কখনো না… কোনোদিনও না ।
মেরিন : সেটা দেখা যাবে। আমি আপনার ঘৃণার থেকে ভালোবাসার মেরিন হবো। ততোদিন আপনি মন দিয়ে আমাকে ঘৃণা করুন। আর আমি মন দিয়ে আপনাকে ভালোবাসবো। আমার ভালোবাসায় আপনি হয়তো আমাকে ঘৃণা করতে ভুলে যাবেন।
বলেই মেরিন নীড়কে সালাম করলো।
মেরিন : এখন আমার মাথায় হাত রেখে দোয়া করুন। যতোক্ষন দোয়া না করবেন তখন আমি এভাবেই এখানে বসে থাকবো।
অনেকক্ষন হয়ে গেলো। মেরিন একই ভাবে জেদ ধরে বসে রইল।। আর নীড় একইভাবে দারিয়ে রইলো। মেরিন মাথা তুলল।
মেরিন : কি ব্যাপার আর ক… নীড়…
দেখলো নীড়ের হাত থেকে রকতো পরছে। মেরিন তারাতারি লাইট জ্বালিয়ে দিলো।
দেখলো নীড়ের হাত কাটা। লেখা ‘ঘৃণার মেরিন’ ।
মেরিন : নীড় …. আপনার হাত…
নীড় : যতোদিন আমার হাতে এই ঘৃণার মেরিন থাকবে ততোদিন আমার মনে তোমার জন্য ঘৃণা থাকবে। যখন এই নিশান মিটে যাবার অবস্থা হবে আমি আবার নতুন করে নিশান বানাবো। সারাজীবন তোমাকে ঘৃণা করবো।
মেরিনের চোখের কোনে পানি চলে এলো। নীড়ের কথায় না। নীড়ের হাতের রক্ত দেখে।
.
মেরিন নীড়কে বসিয়ে দিলো। এরপর ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ করতে বসলো। চোখ দিয়ে পানি পরছে।
মেরিন : আপনি আমাকে যতোখুশি ঘৃণা করেন। স্বাদরে গ্রহন করবো। কিন্তু আজকের পর থেকে ভুলেও কোনোদিন নিজেকে আঘাত করার কথা মাথাতেও আনবেননা। ভুলেও নিজের ১ফোটা রক্ত ঝরাবেননা। যদি এমনটা করেন তবে এর মাশুল আপনার প্রিয়দের দিতে হবে। কারন আপনার জীবন এখন আপনার না। আমার। আপনিই আমার ।
মেরিন জনকে ফোন করলো।
মেরিন : হ্যালো জন… আমি তোমাকে কতোগুলো মেডিসিনের নাম এসএমএস করছি। আধাঘন্টার মধ্যে আমি ওগুলো হাতে চাই।
জন : ওকে ম্যাম।
মেরিন রেখে দিলো।
নীড় : এতোরাতে অর্ডার তো দিলা ছেলেটাকে। ও পাবে কোথায়?
মেরিন : ও জন। আমি যখন বলেছি দরকার হলে ও দোকান লুট করাবে। কতোটা কষ্ট হচ্ছে আপনার… যতোফোটা রক্ত আপনি নিজের ঝরিয়েছেন তার দিগুন আমি নিরার ঝরাবো। আই প্রমিস।
নীড় : তুমি কি মানুষ? আমি রক্ত ঝরিয়েছি এর শাস্তি নিরাকে কেন দিবে? যদি আমাকে ভালোবেসে থাকো তবে আমার যতোটুকু রক্ত ঝরেছে ততোটুকু নিজের রক্ত ঝরাও। স্বার্থপর কোথাকার।
বলেই নীড় ওয়াশরুমে চলে গেলো।
.
নীড় ওয়াশরুম থেকে বের হতেই মেরিন ওকে ইনজেক্ট করে দিলো।
নীড় : আহ… হুয়াট ওয়াস দ্যাট…
মেরিন : আপনার ব্যাথা কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে যাবে। এক বিন্দুও থাকবেনা।
নীড় : এই ব্যাথা নাইবা থাকলো। বাট মেরিন বন্যা নামক ব্যাথাটা তো আর সহজে দূর হবেনা।
বলেই নীড় শুয়ে পরলো।
মেরিন : থ্যাংক ইউ নীড়… নিজের মন-মস্তিষ্কে আমাকে জায়গা দেয়ার জন্য। ঘৃণার ছলেই হোক…
দিওয়ানা আশিকদের মতো আমার নাম নিজের হাতে নিজেই খোদাই তো করলেন …
নীড় : জাস্ট কিপ ইউর মাউথ শাট ।
ইনজেকশনের প্রভাবে নীড় ঘুমি়য়েও পরলো। মেরিন ১টা চেয়ার টেনে নীড়ের সামনে বসলো। এরপর ১টা হাসি দিলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ নীড়। আমার জন্য আপনি নিজের রক্ত ঝরিয়েছেন। খুব খারাপ লেগেছে আমার। আপনি ঘৃণা করে ১হাতে আমার নাম লিখেছেন। আর আমি ভালোবেসে ২হাতেই লিখবো। আম্মু আমাকে বনপাখি ডাকতো। এখনো ডাকে। হ্যা আমাকে চেনেনা। তবুও এই নাম তার মনে … মুখে। আর আমার আম্মুর বনপাখি আপনাতে আটকে গিয়েছে। আপনি বনপাখির নীড়…
মেরিন নিজের ২হাতেই। লিখলো। মেরিন ২হাতই সমানভাবে ব্যাবহার করতে পারে।
বেশ কিছুক্ষন পর মেরিন নীড়ের ওপর শুয়ে ওরই বুকের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরলো।
.
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। দেখলো মেরিন কফি নিয়ে দারিয়ে আছে।
মেরিন : গুড মর্নিং জান।
নীড় : হুয়াট সো গুড ইন দিস মর্নিং?
বলেই নীড় ব্ল্যাংকেট মুরি দিয়ে আবার শুয়ে পরলো।
মেরিন : কফি রেখে গেলাম খেয়ে নিয়েন।
নীড় : আমি ঘুম…
মেরিন : ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিয়েন…
নীড় : তোমার হাতেরটা খাবোনা।
মেরিন : এখন থেকে রোজ আমার হাতেরটাই খেতে হবে।
বলেই মেরিন নিচে গেলো। নিহাল জগিং করে এসে বসলো।
নিহাল : নীলা জু…
মেরিন : এই নাও জুস ।
নিহাল : একি তুমি?
মেরিন : তা নয়তো কি খান বাড়ি থেকে এসে নিরা দিবে ?
নিহাল : নীলা …. নীলা … এই নীলা।
নীলিমা ছুটে এলো।
নীলিমা : কি হয়েছে?
নিহাল : তুমি জানো যে জগিং থেকে ফেরার পর জুস খাই। তো এই মেয়েটা কেন জুস নিয়ে দারিয়ে আছে?
মেরিন : এই যে বাবা … আমার নাম এই মেয়ে না। আমার নাম মেরিন। যদি নাম না নিতে পারো তবে বউমা বলে ডাকো।
নিহাল : মোটেও না। আর তুমি খবরদার আমাকে বাবা ডাকবেনা।
মেরিন : ডাকলে কি করবে শুনি?
নিহাল : সারা দিবোনা।
মেরিন : দেখো … আমি জ্ঞান হবার পর থেকে কবির ফয়সাল খানকে কখনো বাবা বলে ডাকিনি। তোমাকে ডেকেছি। আর ১বার যখন ডেকেছি তখন ডেকেছি। এই ডাক কেরে নেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। বুঝেছো? আর শোনো… তোমাকেও আমার মতে মতে চলতে হবে। কারন চৌধুরী এম্পায়ারের ৮০% মালকিন আমি।
নিহাল : হুয়াট ?
মেরিন : হামম। মামনির ৬০%ও আমার নামে। আর নীড়ের ২০%ও আমার নামে। তো আমার সাথে ত্যারামি করলে বুম … চেঞ্জ করে এসে ব্রেকফাস্ট করলে খুশি হবো।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নিহাল : কি বলে গেলো? তোমাদের শেয়ার ওর নামে কিভাবে হলো?
নীলিমা : নীড়েরটা জানিনা। আমারটা আমিই দিয়েছি।
নিহাল : মানে…
নীলিমা : মানেটা বলবো। তবে এখননা। তবে ১টা কথা বলবো … মেরিন অতোটা খারাপ নয় যতোটা খারাপ আমরা মনে করি…
নিহাল : দারাও নীলা …
নীলিমা দারালো।
নিহাল : কাজটা ঠিক করোনি। চৌধুরী এম্পায়ার ওর হাতে তুলে দিয়ে ঠিক করোনি। তুমি চিনোনা ওকে। ওর কাছে পাওয়ারই সব।
নীলিমা : হয়তো ওকে আমি তোমাদের মতো করে চিনিনা। নিজের মতো করেই চিনি…
.
একটুপর…
নীড় নিচে নামলো । দেখলো নিহাল-নীলিমা খাচ্ছে আর মেরিন সার্ভ করছে।
মেরিন : আসুন খেয়ে নিন।
নীড় : জাস্ট শাট আপ।
বলেই নীড় বেরিয়ে যেতে নিলো।
মেরিন : এখন যদি না খেয়ে বাসার বাহিরে পা রাখা হয় ফলটা কিন্তু খুব খারাপ হবে।
নীড় : আমার সাথে যা খারাপ হবার তা তো হয়েই গিয়েছে। এর চেয়ে বেশি আর কি খারাপ হবে?
মেরিন : এই লোকটা কেন যে আমার কথা একবারে শোনেনা। খামোখা আমাকে বাধ্য করে কিছুনা কিছু করতে।
নিহাল : তুমি আমার ছেলেকে চিনোনা মেরিন বন্যা। আমি চিনি । জোর করে ওর বউতো হয়েছো … এখন তোমার সাথে কি কি হতে পারে সেটা এখন ১জানে আল্লাহ আর জানে আমার ছেলে।
মেরিন : আপনার ছেলেকে আপনি চিনেন। বাট আমাকে তো আমি নিজেও চিনিনা। আমি কখন কি করি তা নিজেও জানিনা , বুঝিনা। করার দরকার তাই করি ।
ওদের খাওয়া শেষ হবার পর মেরিন বের হলো।
.
নীড় ড্রাইভ করছে। আর মেরিনের ১৪গুষ্ঠি উদ্ধার করছে।
নীড় : ছারবোনা তোমাকে মেরিন আমি। কিছুতেই ছারবোনা। তুমি আমার কাছ থেকে আমার ভালোবাসা কেরে নিয়েছো। তুমি নিজেই আমাকে ছেরে দিবে। আমার নাম নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। তুমি এখনও আমার রং রূপ দেখোনি। আই উইল শো ইউ…
তখন ওর সামনে ১টা গাড়ি এসে থামলো। অ্যাক্সিডেন্ট ঠেকানোর জন্য নীড় খুব জোরে ব্রেক চাপলো। রেগে গিয়ে গাড়িটার সামনে দারালো।
নীড় : আর ইউ কমপ্লিটলি স্টুপিড…
কাচ নামলো। দেখলো মেরিন।
মেরিন : হামম হয়তো।
.
চলবে…শ
ঘৃণার মেরিন 4
part : 11
writer : Mohona
.
মেরিন : হামম হয়তো।
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা …
মেরিন : তাছারা আর কার ক্ষমতা আছে যে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের পথ আটকায় হামমম ?
নীড় : অসহ্যকর। গাড়ি সরাও । যেতে দাও আমাকে।
মেরিন : যাবো যাবো। ব্রেকফাস্ট এনেছি। খেয়ে নিন। এরপর আমি নিজেই সরে যাবো।
নীড় : তোমাকে সরতে হবেনা। আমিই গাড়ি ঘুরিয়ে নিচ্ছি ।
মেরিন : দেখেন ঘুরাতে পারেন কিনা…
নীড় লুরিং মিররে দেখলো বড় বড় ২টা ট্রাক পেছনের দিকটা ব্লক করে রেখেছে।
নীড় : ওহ গড। আবার ঝামেলা।
মেরিন : আমি কিন্তু সকাল সকাল ঝামেলা করতে চাইনি । আবারও আপনিই বাধ্য করলেন। আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই।
নীড় : তোমার তো কোনো দোষই নেই। দোষ তো আমার। কোন কুক্ষনে যে তোমার গাড়ির সামনে এসেছিলাম।
মেরিন গাড়ি থেকে নেমে এসে নীড়ের গাড়িতে বসলো। হাতে ১টা ঝুড়ি।
নীড় : একি তুমি আমার গাড়িতে আসলে কেন?
মেরিন : আপনাকে ব্রেকফাস্ট করিয়ে মেডিসিন খাওয়াতে।
নীড় : মেডিসিন? কিসের মেডিসিন?
মেরিন : কালকে যে ঢং দেখিয়ে হাত কেটে আমার নামটা যে লিখে ক্ষত করলেন… সেটা ঠিক করতে হবেনা? দেখি মুখ খুলুন…
নীড় : আম…
মেরিন মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : তুমি আজকে ফুল স্লিভের ড্রেস পরেছো?
মেরিন : খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই। নিন আবারও মুখ খুলুন।
নীড় : তুমি এমন কেন?
মেরিন : কেমন?
নীড় : নাথিং…
মেরিন নীড়কে খাইয়ে মেডিসিনও খাইয়ে দিলো।
মেরিন : নিন… এখন মনের সুখে ঘুরুন। ঠিক ৩টা বাজলে প্লিজ আবাক কিছু খেয়ে মেডিসিন গুলো খেয়ে নিবেন। তা না হলে ৩টা বেজে ১৫মিনিটে আমি আবার প্রকট হবো। এই আপনি এই শরীর নিয়ে ড্রাইভ করতে পারবেন তো?
নীড় : প্লিজ লিভ।
মেরিন : নিজের খেয়াল রাখবেন।
বলেই মেরিন নেমে গেলো । নীড়ের পথও ছেরে দিলো।
.
সেতু : কি লাভ হলো ৩টা বছর ধরে বনপাখির অভিনয় করে?
নিরা : লাভ ১টাই। নীড় মেরিনকে ঘৃনা করে। এরথেকে ভালো আর কি হতে পারে মাম্মি?
সেতু : তুমি এখনও এই কথা বলবে? মেরিন নীড়ের বউ। আজ হোক কাল হোক নীড় জেনেই যাবে যে মেরিনই ওর বনপাখি। আর ১বার যদি এই বিষয়টা নীড়-মেরিনের সামনে উন্মোচন হয়ে যায় তবে তোমাকে নীড়-মেরিনের হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবেনা। কেউনা । আগেই বলেছিলাম যে এমন খেলা খেলোনা খেলোনা খেলোনা ।
নিরা : আহ মাম্মি… তখন কি জানতাম নাকি যে ওই মেরিন নীড়ে আটকে যাবে? আমি তো জাস্ট ওর ভাগের ভালোবাসাটাও কেরে নিতে চেয়েছি। দ্যাটস ইট।
সেতু : কিন্তু ভেবে দেখেছো ওদের সামনে সত্যটা আসলে কি হবে?
নিরা : আসবেনা মাম্মি। আমি নীড়ের কাছে মেরিনকে আরো বিষিয়ে দিবো।
সেতু : তুমি বোধ হয় ভুলে যাচ্ছো ও মেরিন বন্যা। আর মেরিন নীড়কে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। মেরিন যদি জানে যে তুমি ওর নীড়ের নামটাও নিয়েছো … ও কিন্তু যা তা করবে…
.
নীড় : কোথায় ফেসে গেলাম? না জানি নিরার কি অবস্থা? নিশ্চয়ই কান্নাকাটি করে অবস্থা খারাপ। ওদের বাসাতেই যাই…
নীড় খান বাড়িতে গেলো। দেখলো মেরিনের গাড়ি।
নীড় : নাও হয়ে গেলো। এখানেও এসে হাজির । এখন যদি আমাকে ভেতরে দেখে না জানি আমার বনপাখিটার সাথে কি করে? আমার সাথে যা না হয় তা করতো তাতে কিছুই হতোনা। বাট আমার পরিবার নিয়ে টানাটানি ভালো লাগেনা। বাসায় চলে যাই।
মেরিন : কেন বাসায় যাবেন কেন শুনি? বিয়ের পরদিন যে শশুড়বাড়ি আসতে হয় … সেটা বুঝি জানেন না? কখন থেকে আপনার জন্য ওয়েট করছি…
নীড় : ওয়েট করছো মানে?
মেরিন : ওয়েট করছি মানে ওয়েট করছি… আমি জানতাম আপনি আপনার সো কলড ভালোবাসার সাথে দেখা করতে আসবেন। আর তাই আমি বসে বসে ওয়েট করছি। ভেতরেও ঢুকিনি। একসাথে ঢুকবো বলে।
নীড় : ১মিনিট ১মিনিট … সো কলড ভালোবাসা মানে?
মেরিন : সো কলড মানে সো কলড। এখন চলুন ভেতরে।
বলেই মেরিন নীড়ের হাত ধরে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলো।
মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : দিদিভাই….
মেরিন দাদুভাইকে জরিয়ে ধরলো ।
মেরিন : ভালো আছো তুমি ?।
দাদুভাই : হামমম । নীড় দাদু… কেমন আছো?
নীড় : ভালো দাদুভাই।
নিরা : বেবি…
নিরা নীড়ের দিকে দৌড়ে আসতে নিলো। মেরিন ওর পা বরাবর গুলি করলো।
নিরা : আহ…
নীড় : নিরা…
নীড় নিরার কাছে যেতে নিলে মেরিন নীড়ের হাত ধরে ফেলল ।
মেরিন : জান… গুলি জাস্ট টাচ করে চলে গিয়েছে। ওকে মারার উদ্দেশ্য আপাদত আমার নেই। বাট যদি … আপনি এখন ওর কাছে যান… ওকে টাচ করেন… তাহলে ওর শরীরের যেই যেই জায়গায় টাচ করবেন সেই সেই জায়গা ওর শরীর থেকে আলাদা করে দিবো।
সেতু : হ্যালো কবির…. এখনই বাসায় আসো। ওই ডাকাতটা আমার মেয়েটাকে এসেই গুলি করে দিয়েছে।
কবির : কি বলছো কি? আমি এখনই আসছি।
সেতু : তুমি হসপিটালে পৌছাও। আমি বেবিকে নিয়ে ওখানেই যাচ্ছি।
কবির : হামমন।
সেতু নিরাকে নিয়ে হসপিটালে গেলো।
.
নীড় : দেখেছো দাদুভাই।। দেখেছো তুমি ওকে? মানুষের রক্ত ঝরানো ওর কাছে কোনো ব্যাপারই না। ওর মধ্যে মানবিকতার ছিটেফোটাও নেই । তুমি তবুও চুপ থাকবে?
দাদুভাই : ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন … আজকে তোমার সামনে যে মেরিন বন্যা দারিয়ে আছে সে আমার গড়া। ও যেমন ছিলো তেমন নেই । ওকে ভেঙেচুরে এমনভাবে নতুন করে গরেছি । এখন কেন গরেছি? এর পেছনে কি কারন সেটা জানার অধিকার তোমার আছে । কিন্তু এখন এই মুহুর্তে আমি তোমাকে কারন জানাবোনা। কারন এখন তুমি সবটা জানতে ইন্টারেস্ট মাত্র। জাস্ট কৌতুহলের জন্য । তুমি ভালোবেসে জানতে চাইছোনা। যেদিন তুমি ভালোবেসে সবটা জানতে চাইবে সেদিন মেরিন না বললেও আমি তোমাকে সব বলবো। এখন বসো খাওয়া দাওয়া করো। প্লিজ না কোরোনা।
৩জন বসে খাওয়া দাওয়া করলো।
.
রাতে…
নীড় বেডের মাঝে বালিশগুলো রাখছে।
মেরিন : আমি কি জানতে পারি আপনি কি করছেন?
নীড় : দেয়াল বানাচ্ছি। ওপাশে তুমি এপাশে আমি…
মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : ওহ রিয়েলি?
নীড় : হামম।
মেরিন আবার ১টা বাকা হাসি দিয়ে নীড়ের ওপরই শুয়ে পরলো। এরপর নীড়ের বুকের ওপর মাথা রাখলো।
মেরিন : আইডিয়াটা ভালোই ছিলো?
নীড় : হুয়াট ওয়াস দ্যাট? নামো নামো বলছি।
মেরিন : নামবোনা।
নীড় মেরিনকে ঘুরিয়ে বেডে ফেলল। এরপর দারিয়ে গেলো।
নীড় : আমি গেস্টরুমে গিয়ে ঘুমাবো।
মেরিন : আমি কি ওখানে যেতে পারবোনা?
নীড় : এই দেখো আমি তোমাকে বউ হিসেবে মানিনা।
মেরিন : এটা অনেক পুরানো ডায়লগ জান। অনেক বোরিং হয়ে গিয়েছে। কেউ শুনতে চায়না।
নীড় : আমি সিরিয়াস। আমার থেকে দূরে থাকবে। আমার বুকে মাথা রাখার অধিকার শুধু আমার ব… নি…
মেরিন সামনে থাকা চেয়ারটাতে লাথি মারলো।
মেরিন : কাইন্ডলি নামটা কমপ্লিট করে আমার মেজাজ আরো গরম করবেননা । না হলে আপনার আহত নিরা নিহত নিরা হয়ে যাবে।
নীড় : দেখো আমি তোমাকে লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি। প্লিজ আমার নিরার থেকে দূরে থাকবে।
মেরিন : এই যে আপনি ‘আমার নিরা’ বললেন… এটার শাস্তিও নিরাকে পেতে হবে। আর সেটা এখনই।
নীড় : তুমি কি?
মেরিন : আমি মেরিন। যে আপনার জন্য সবকিছু করতে পারে।
বলেই মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ অ্যা লট।
নীড় মেরিনকে সরিয়ে দিলো।
নীড় : আই হেইট ইউ অ্যা লট। আমার থেকে দূরত্ব রেখে চলবে। বুঝেছো… ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু টাচ মি। আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর অধিকার আমার ভালোবাসার আছে। আর কারো না।
মেরিন : একটু দারান নীড়…. নীড়…. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে অধিকার দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। আপনারও নেই। তেমনি স্ত্রী হিসেবে আপনি আমাকে অধিকার দিলেন কি দিলেন না সেটা নিয়েও আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বাট আমি যখন বলেছি যে আমি আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো তখন ঘুমাবো। রোজ রাতেই ঘুমাবো। যদি ভালোভাবে রাজী না হন তবে আবার আমাকে কিছু করতে হবে?
নীড় : কি করবে তুমি? আবার আমার মা-বাবার জীবন নিয়ে খেলবে?
মেরিন : না। আপনাদের ওয়ার্কারস দের লাইফ নিয়ে খেলবো।
নীড় : মানে?
মেরিন : নীড় … আপনাদের সবগুলো ফ্যাক্টরিতে সর্বমোট কতোজন শ্রমিক রাতে থাকে? আপনার কোনো হিসাব আছে? নেই। আমি জানি। বাট আমার আছে। আপনাদের ৯টা ফ্যাক্টরিতে রাতে যে শ্রমিকগুলো রাত কাটায় তাদের সংখ্যা প্রায় সব মিলিয়ে আড়াইশ। এই আড়াইশ মানুষই এখন পরম সুখে ঘুম যাচ্ছে। ফ্যাক্টরির সাথে ওই নিরীহ মানুষগুলোকেও পুরিয়ে মারতে আমার নিজেরও অনেক কষ্ট হবে।
নীড় : মেরিন… তুমি এতো খারাপ? ওই সাধারন মানুষদের কেন টানছো? ওদের কি দোষ?
মেরিন : ওদের দোষ নেই। ওদের পরমভাগ্য যে ওরা চৌধুরীদের সাথে যুক্ত।
নীড় : আরও বেশি ঘৃণা হচ্ছে তোমায়।
মেরিন : থ্যাংক ইউ। এখন বলুন আমার আবদার রাখবেন কি রাখবেন না? সেই বুঝে আমার জনকে ফোন করতে হবে।
নীড় : …
মেরিন : ওকে। আমার মোবাইলটা কোথায় যেন র…
নীড় মেরিনের মোবাইলটা নিয়ে আছার মারলো।
নীড় : এখন তোমার সময় মেরিন। তাই মাথা নত করতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু সময় কিন্তু পাল্টাবেই । এন্ড কাইন্ডলি কোনো নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে খেলোনা।
মেরিন নীড় গাল ২টা টেনে দিলো।
মেরিন : গুড ছেলে। তবে মাঝে মধ্যে অবাধ্য ছেলেদের মতো বায়না কেন করেন সেটাই বুঝিনা… ভীষন ঘুম পাচ্ছে । লেটস স্লিপ ।
মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। ঘুমানোর আগে গুড নাইট কিস করতে ভুললো না। আবার সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে গুড মর্নিং কিস করতে ভুললো না। পরদিন থেকে নীড় আবার কনিকার ট্রিটমেন্ট শুরু করলো।
.
২দিনপর…
সবাই বসে রাতের খাবার খাচ্ছে তখন নিলয় হনহন করে ভেতরে ঢুকলো। মেরিন সাথে সাথে গানটা হাতে নিলো।
মেরিন : তু…
নিলয় মেরিনকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মেরিনের মুখের সামনে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করলো। মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো।
নিলয় : তুই শুধু আমার …
বলেই নিলয় মেরিনকে কাধে তুলে নিলো।
নীলিমা : এই ছেলে তুমি মেরিনকে কাধে তুললে কেন?
নিহাল : নামাও ওকে। তোমার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। তুমি মেরিন বন্যাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছো? চৌধুরী বাড়ির বউকে তুলে নিয়ে যাচ্ছো।
নীড় চুপচাপ খাচ্ছে আর দেখছে।
নীড় মনে মনে : এর তো সাহস আছে। পুরো মেরিনের মুখোমুখি হয়ে স্প্রে করে দিলো? এরমতো সাহস আমার কেন হলোনা। ছিঃ …. আমি কি তবে ভীতু?
নীলিমা : এই নীড়… তোমার বউকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তুমি কিছু বলছোনা কেন? কিছু করছোনা কেন?
নীড় : কি বলবো কি করবো…
নিহাল : ও তোমার বউ …
নীড় : আমি ওকে বউ বলে মানিনা।
নিহাল : তাই বলে ১টা মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে আর তুমি দেখবে?
নীড় : দেখছি কোথায় খাচ্ছি তো। তোমরা বললে চোখ বন্ধ করেও থাকতে পারি। ১কাজ করি। আমি রুমে গিয়ে খাওয়া শেষ করি।
নীড় নিজের খাবারের প্লেট নিয়ে ওপরে যাচ্ছে। তখন নিহাল-নীলিমা নিলয়কে বাধা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করলো। তখন নিলয় ওদের পায়ের দিকে ফাকা গুলি করলো।
নীড় : এ আমার মামনি-বাবার পায়ের নিচে ফাকা গুলি করলো? আসলেই তো এর অনেক সাহস। মামনি-বাবা ভয় পেয়েছে মনে হচ্ছে। বেশ হয়েছে।এই বয়সে অতৃপ্ত আত্মাটাকে বাচাতে যাচ্ছিলো কেন? আমি রুমে যাই।
নীড় রুমে চলে গেলো। নিলয় মেরিনকে নিয়ে চলে গেলো।
নীলিমা : এখন কি হবে? তুমি কিছু করোনা।
নিহাল : কি করবো আমি? জন। হ্যা জন। তোমার কাছে জনের নাম্বার আছে?
নীলিমা : না।
নিহাল : তাহলে তুমি কেমন তরো সাপোর্ট করছো ওকে?
নীলিমা : …
নিহাল : ওর মোবাইলটা মনে হয় টেবিলেই পরে আছে । জনের নাম্বার পাওয়া যাবে।
নিহাল মেরিনের মোবাইলটা নিলো । তবে ওয়ালপেপারটা দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন ওয়ালপেপারে দাদুভাই-নিহাল-নীলিমা-নীড়-মেরিনের ছবি। যেটা বিয়ের দিন মেরিন জোর করে তুলেছিলো।
নিহাল আর কিছু না ভেবে জনকে ফোন করলো।
.
নিলয় মেরিনকে ওর বাড়িতে নিয়ে এলো। ওর বেডরুমে নিয়ে গেলো। মেরিনকে ওর বেডে শুইয়ে দিলো।
নিলয় : তুই অন্যকারোনা মেরিন। তুই শুধু আমার। গত ৭-৮বছর ধরে তোর আশায় বসে আছি। আজকে সেই তুই অন্য কারো বউ। তোকে অন্যকেউ টাচ করবে। না। তুই শুধুই আমার । যদি তুই আমাকে মেরেও ফেলিস কাল সকালে তবুও আমার কোনো দুঃখ থাকবেনা।
নিলয় নিজের শার্টটা ছুরে ফেলে দিলো। মেরিনের শাড়ির আচলে হাত দিতে নিলো কেউ ওর হাতটা ধরে ফেলল। নিলয় পাশ ফিরে দেখে নীড়…
১হাত দিয়ে আপেল খাচ্ছে। আর অন্যহাত দিয়ে ওর হাতটা ধরে রেখেছে।
নীড় : হাই… হুয়াটস আপ?
নিলয় : তুমি? এখানে?
নীড় : হামমম আমি। অবাক হলে আমাকে দেখে? আমি নিজেও অবাক হয়েছি। নিজেকেও অতৃপ্ত আত্মা লাগছে। কিভাবে এখানে পৌছালাম বলো। ওয়াও ।
নিলয় : তুমি এখানে কেন?
নীড় : দুর্ভাগ্যবশত ও আমার বংশের সম্পত্তি এখন। ‘চৌধুরী’ টাইটেলটা ওর নামের সাথে জুরে গিয়েছে। ওর কিছু হলে সবাই বলবে যে দেখো ‘মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী’ এর কি হলো? এখন আমি মানি না মানি যে ও আমার বউ… পাবলিক তো মানে। তাই আমার এখানে আসা। আমার না তোর ওপরে ভীষন রাগ হচ্ছে। আরে ভাই… তোর যখন এতোই সাহস তুই বিয়ের আগে সাহসটা দেখাতি। আমার চোখের আড়ালে হতো। বিয়ের ৩দিনপর সাহস দেখাতে কে বলেছে তোকে? এতো মজার ডিনারটা অর্ধেক রেখে আসতে হলো। আমার খাওয়া আর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটালে না আমার জাস্ট সহ্য হয়না। এখন ফল ভোগ করো…
বলেই নীড় নিলয়কে ১টা ঘুষি মারলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 12
writer : Mohona
.
নীড় নিলয়কে ১টা ঘুষি মারলো।
নীড় : এই ঘুষিটা ছিলো আমার খাওয়ায় ডিস্টার্ব করার জন্য ।খাওয়ার পর গেলে এই ঘুষিটা মারতাম না।
নিলয় ওর সাঙ্গুমাঙ্গুদের ডাকতে লাগলো।
নীড় : আহা … কেউ আসবেনা। সবগুলোকে মেরে তক্তাতা কাঠি বানিয়ে দিয়েছি। তুই একাই আয়।
নিলয় নীড়কে ঘুষি মারতে এলে নীড় ওর হাত এমনভাবে মুচরে দিলো যে নিলয় ওর হাত আর নারাতেই পারলোনা।
নীড় : এটা কেন করলাম জানিস? এটা আমার মামনি আর বাবাকে ভয় দেখানোর জন্য। ওদের পায়ের নিচে ফাকা গুলি করার জন্য ।
এরপর নীড় দামদুম কতোগুলো মাইর দিলো।
নীড় : এগুলো কেন ছিলো জানিস? এগুলো ছিলো বিয়ের আগে মেরিনকে তুলে এনে উল্টা পাল্টা কিছু না করার জন্য ।
নিলয় : …
নীড় : এখন দিবো তোকে সেমি ফাইনাল মাইর। ডু ইউ নো হুয়াই? তুই কিভাবে জানবি? আমিই বলছি । আমি মানি না মানি এই মেয়েটা আমার কবুল বলা বউ। চৌধুরী বাড়ির বউ। এর গায়ে দাগ লাগা মানে আমার পরিবারের নামে দাগ লাগা। তাই তুই যেটা করতে যাচ্ছিলি সেটার জন্য তোর মাইর খাওয়া জায়েজ।
নীড় নিলয়কে আরো ১দফা মাইর দিলো।
নীড় : দেখ আমি খুব টায়ার্ড। তাই ফাইনাল মাইর দিবো। শোন এই মেয়েটা না ভীষন খারাপ। মানবিকতার ছিটে ফোটাও নেই। ভীষন ঘৃণা করি। সহ্যই হয়না এর নাম , এর অস্তিত্ব , এর উপস্থিতি , এর কাজ , এর চেহারা । বাট আমার মামনি-বাবানা দুর্ভাগ্যবশত মেয়েদের সম্মান করতে শিখিয়েছে । আর তুই ১টা মেয়ের সম্মানে হাত দিয়েছিস। তোর এমন হাল করবো যে আর কোনোদিন এমন কথা চিন্তাও করবিনা…
এরপর নীড় নিলয়কে ফাইনাল মাইর দিলো।
.
নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে দারালো।
নীড় : আই জাস্ট হেইট ইউ। আমি তোমাকে কতোটা ঘৃণা করি তা নিজেও জানিনা। বাট আমি তোমার মতো হৃদয়হীনা নই।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলতে গেলো। তখন গুলি চলার শব্দ পেলো । নীড় পেছনে ঘুরলো।
দেখলো জন গুলি নিয়ে দারিয়ে আছে ।নিলয়ে আঙুল দিয়ে রক্ত পরছে। ওর হাত থেকে পিস্তলটা পরে গেলো। নীড় বুঝতে পারলো যে নিলয় ওকে পেছন থেকে গুলি করতে চেয়েছিলো জন এসে ওকে বাচিয়েছে।
নীড় : এটা আমাকে গুলি করতে চেয়েছিলো?
জন : জী স্যার।
নীড় : এতো মাইর খেয়েও এর মন ভরেনি। দারা দেখাচ্ছি।
নীড় নিলয়ের কাছে গিয়ে নিলয়ের কাধ , ঘাড় সহ আরো কয়েকটা জায়গায় কিছু ১টা করলো। জন বুঝলো যে মার্শাল আর্টের কোনো ফর্মুলা অ্যাপ্লাই করলো। কিন্তু কি করলো সেটা বুঝলো না।
জন : স্যার ও মরে যায়নি তো?
নীড় : না। কয়েক মাসের জন্য এর হাড়গোর জ্যাম হয়ে থাকবে। অসার হয়ে থাকবে। প্যারালাইজড হয়ে থাকবে…
জন : থ্যাংকস গড যে ও মরেনি।
নীড় : থ্যাংকস গড বললে যে?
জন : কারন ও ম্যামের শিকার। ওর সাথে কি হবে সেটা ম্যাম ভেবে নিবে।
নীড় : 😒। শোনো। এই আবর্জনাটাকে হসপিটালে পাঠাও ।
জন : জী স্যার। এই তোরা ওকে দফা কর।
কয়েকজন এসে নিলয়কে নিয়ে গেলো।
জন : চলুন স্যার।
নীড় : জন জন জন… শোনো।
জন : জী স্যার।
নীড় : তোমাকে আমার ১টা কাজ করে দিতে হবে ।
জন : কি কাজ স্যার?
নীড় : সবাইসহ মেরিনকে জানাতে হবে যে মেরিনকে আমি না তুমি বাচিয়েছো…
জন : সরি স্যার…
নীড় : না বোঝার কি আছে? আমি স্পষ্ট বাংলায় কথাটা বললাম ।
জন : সরি স্যার । আমি এটা পারবোনা। আমি মেরিন ম্যামকে মিথ্যা বলতে পারবোনা।
নীড় : ভেবে বলছো?
জন : জী স্যার।
নীড় নিচে পরে থাকা গানটা হাতে নিয়ে নিজের মাথায় ঠেকালো।
জন : স্যার কি করছেন কি?
নীড় : ঠিকই করছি। তুমি যখন আমার কথা শুনবেইনা তখন আমি নিজেকেই শেষ করে দিবো।
জন : স্যার এতোটুকুর জন্য নিজেকেই শেষ করে দিবেন।
নীড় : হ্যা দিবো। তোমার সমস্যা ?
মনে মনে : এটা মোটেও এতোটুকু সমস্যা নয়। ইটস অ্যাবাউট মাই ইগো।
জন : স্যার নামান। পিস্তলটা লোড করা। লেগে যাবে।
নীড় : লাগুক। মরে যাবো আমি । তখন তুমি তোমার ম্যামকে জবাব দিও। গুলি খেয়ো।
জনের প্রচুর হাসি পাচ্ছে ।
নীড় : কি হলো বলো কিছু। তুমি যদি প্রমিস না করো তবে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।
জন নিজের হাসিটাকে চেপে
বলল : ওকে স্যার। আমি বলবোনা মেরিন ম্যামকে যে আপনিই ম্যামকে বাচিয়েছেন।
নীড় : প্রমিস?
জন : প্রমিস।
নীড় : গুড।
জন : স্যার এবার তো ওটা সরান।
নীড় পিস্তলটা ফেলে দিলো।
নীড় : তুমি ভালোমতো জানো যে যদি তোমার জন্য আমার কিছু হয় তাহলে তোমার ম্যাম তোমাকে দুনিয়া ছারা করবে। আর তাই তুমি রাজি হলে। আই নো।
জন : নো স্যার। আমি জানি আপনার কিছু হলে ম্যাম পাগল হয়ে যাবে । মরে যাবে। আগুন জ্বলবে শহরের বুকে তাই রাজী হলাম।
নীড় : 😒। হয়েছে। ডায়লগ বন্ধ করো। এখন ওকে তোলো।
জন : স্যার আমি ?
নীড় : তা নয়তো কি আমি?
জন মেরিনকে কোলে তুলতে গেলে কি ১টা ভেবে নীড় জনকে বাধা দিলো।
নীড় : দারাও।
জন : জী স্যার।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
নীড় : তোমার ম্যামের গ্যাং এ কোনো মেয়ে সদস্য নেই।
এবার জন ফিক করে হেসেই দিলো।
নীড় : হুয়াট সো ফানি? 😤।
জন : সরি স্যার। জী স্যার মেয়েরাও আছে।
নীড় : দেন ওদেরকে আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে দারাতে বলো। আমি মেরিনকে ওদের হাতে মেরিনকে তুলে দিয়ে বাসায় যাবো। গাড়ি নিয়ে ফলো করো।
বলেই নীড় চলে গেলো।
জন : মেরিন ঠিকই বলে। আসলেই তুমি পাগল চৌধুরী।
.
নীড় ড্রাইভ করছে। আর মেরিনের মাথাটা একটু পরপর ওর ঘাড়ের ওপর পরছে আর সরিয়ে দিচ্ছে।
নীড় : উফফ এই অতৃপ্ত আত্মাটাকে ব্যাকসিটে রাখলেই ভালো হতো। জেগে থাকুক আর ঘুমিয়ে … আমাকে জ্বালাতেই হবে। অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার। দেখো দেখি… এর মাথা আবারও কাধে পরে। কাধের মধ্যে এর মাথা থাকলে তো আমার হার্টবিট ধীরে ধীরে আরো বারবে। ড্রাইভ কিভাবে করবো? আমি বুঝিনা আমি একে এতো হেইট করি… তবুও এ আশেপাশে থাকলে আমার হার্টবিট এতো ফাস্ট হয় কেন? মেডিকেল সাইন্স তো একে ভালোবাসা বলবে… 😒😒.. মেডিকেল সাইন্স যে সবসময় ঠিক হবে তা তো কোনো কথা না। মনে হয় একে মারাত্মক ঘৃণা করি বলেই এমন হয়…
বাসা থেকে কিছুটা দুরে নীড় মেরিনকে হ্যান্ডওভার করে পেছনের দরজা দিয়ে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলো।
.
নীলিমা : এখনও আসছেনা কেন?
নিহাল : আহ জন তো বলল যে মেরিন ঠিক আছে। আসছে।
নীলিমা : আসছেনা কেন এখনো?
নিহাল : ওই তো চলে এসেছে।
২টা মেয়ে ধরে মেরিনকে নিয়ে এসেছে। জন সাথে সাথে আছে।
জন : ম্যামকে কি এখানেই রাখবে নাকি রুমে দিয়ে আসবো?
নীলিমা : একটু কষ্ট করে রুমে নিয়ে যেতে বলো না।
জন : জী ম্যাম। এই তোমরা ম্যামকে রুমে নিয়ে চলো।
মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো। সবাই ঢুকে দেখে নীড় খাচ্ছে। নীড়কে দেখে জনের ভীষন হাসি পাচ্ছে। আর নীলিমার রাগ উঠছে। সেই সাথে নিহালেরও।
নীলিমা : এই দেখি সাইড যাও। মেরিনকে শুইয়ে দিতে দাও।
নীড় : ওকে।
নীড় প্লেট নিয়ে সোফায় বসলো
নীলিমা : এই নুপুর… পানি নিয়ে আসো তো। দেখি যদি জ্ঞান ফিরে।
জন : কিছুক্ষনের মধ্যে ফিরে যাবে জ্ঞান। ৩ঘন্টার বেশি হয়ে গিয়েছে। তবে সম্ভবত একটু উইকনেস থাকবে।
নীলিমা : পানির ছিটা দিবো?
জন : জী দিতে পারেন…
নুপুর পানি নিয়ে এলো। নীলিমা পানি ছিটিয়ে দিলো। কিছু হলোনা। আবার ছিটিয়ে দিলো। এবার মেরিন চোখ মিটমিট করলো। নীলিমার মুখে হাসি ফুটলো।
নীলিমা : মেরিন…
মেরিন : আআআমি…
নীলিমা : বাসায়…. আমাদের কাছে।
মেরিন ধীরে ধীরে উঠে বসলো।
নিহাল : আর ইউ ওকে? 😒।
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে
বলল : হামমম।
মেরিনের চোখ গেলো নীড়ের দিকে। অবাক হলো। তখন ওর নিলয়ের কথা মনে পরলো।
মেরিন : নিলয়… জন নিলয়?
জন : হসপিটালে অ্যাডমিট ম্যাম।
মেরিন : মরে নিতো?
জন নীড়ের দিকে তাকিয়ে
বলল : সম্ভবত না ম্যাম।
নীড় মনে মনে : ওই জন আবার আমার দিকে তাকায় কেন… 😢…
মেরিন : গুড। ওকে আমি মারবো।
নীলিমা : জনই তোকে বাচিয়েছেরে।
মেরিন : ইটস নট নিউ মামনি। জন বহুবার আমাকে বাচিয়েছে । ও তো আমার ভা…
ভাইয়ের মতো বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
মেরিন : ও তো আমার ভালোই চায় সবসময়।
জন : আসছি ম্যাম।
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : তুই রেস্ট কর।
মেরিন : আচ্ছা মামনি।
নীলিমা : তোর গিলা হলে একটু নিচে আসিস। কথা আছে।
নীড় : ওকে….
নিহাল-নীলিমা চলে গেলো। একটুপর নীড়ও গেলো।
মেরিন : মামনি নীড়ের সাথে রেগে কথা বলল কেন? জন আমাকে বাচিয়েছে। মনে হয় মামনি নীড়ের ওপর রেগে আছে কারন নীড় কোনো স্ট্যান্ড নেয়নি…
এসব ভেবে মেরিন একটু কষ্ট পেলো।
.
নীলিমা : জানিস আজকে আমার ভাবতেও অবাক লাগছে যে তুই আমার ছেলে। আমি তোকে কোনো শিক্ষাই দিতে পারিনি। তুই সবসময় মেরিনের কথা বলিস যে ও খারাপ। আজকে তুই যা করেছিস তা কি ঠিক ছিলো?
নিহাল : নীড়…. যেভাবেই হোক বিয়েটা হয়েছে। তুমি ওকে বউ অস্বীকার করলেও এটা মিথ্যা হবেনা যে মেরিন তোমার বউ। আর যতোদূর আমি মেরিনকে চিনি ও কোনোদিনও তোমাকে ছারবেনা।
নীড় : বাবা…. মামনি মানলাম একটু সেন্টি। বাট তুমিও… নট ডান।মেরিনতো তোমার আমার দুশমন পার্টি…
নিহাল : জাস্ট শাট আপ।
নীড় : ওকে । গুড নাইট। কালকে ভাষন শুনবো। আম টায়ার্ড।
নীলিমা : কি এমন কাজ করলি যে টায়ার্ড ?
নীড় : ধোলাই।
নিহাল : ধোলাই? কিসের ধোলাই?
নীড় : ঘুমের।
নিহাল : ঘুমের ধোলাই মানে?
নীড় : আরে জানোই তো ঘুম পেলে আমার কোনো হুশ থাকেনা। ঘুম আমাকে ধোলাই করে। ওকে বাই গুড নাইট।
বলেই নীড় কেটে বলল।
নিহাল : এই তোমার ছেলে কি বলে গেলো?
নীলিমা : তুমিই জিজ্ঞেস করো।
.
নীড় রুমে গেলো। দেখে মেরিন বসে আছে।
নীড় মনে মনে : ভুলেই গিয়েছিলাম যে অতৃপ্ত আত্মাটা রুমে।
মেরিন নীড়কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলো।
নীড় : এমনভাবে কি দেখছো? প্রথম দেখলে নাকি আমায়?
মেরিন ১টা বাকা হাসি দিলো।
নীড় : একদম এই হাসি দিবেনা। সাইড যাও ঘুমাবো।
মেরিন : ফার্স্ট এইড বক্সটা একটু আনুন প্লিজ।
নীড় : পারবোনা।
বলেই নীড় শুয়ে পরলো । মেরিন ঢুলু ঢুলু পায়ে ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে এলো। এরপর নীড়ের হাতটা নিজের হাতে নিলো। এরপর ব্যাথার স্প্রে করে দিলো।
নীড় : একি… কি স্প্রে করলে…
মেরিন : হাতের ব্যাথা কমে যাবে।
নীড় : ব্যাথা ? কিসের ব্যাথা?
মেরিন : একটু আগে নিলয়ের কন্ডিশন জানলাম ।
নীড় : তো?
মেরিন : জন মার্শাল আর্ট সম্পুর্নটা জানেনা। শিখছে। খাবার খেতে ৩ঘন্টা লাগনা। আমার নীড় বা হাত দিয়ে চামচ তুলে খায়না…
নীড় : ওয়… আমি ২হাতই ইউজ করতে পারি।
মেরিন : আই নো। বাট খাওয়ার সময় ২হাত ব্যাবহার করেনা।
নীড় নিজের হাত ছারিয়ে নিলো।
নীড় : তোমার ছোয়াতে আমার শরীর ঘিনঘিন করে।
মেরিন : তবে আমাকে বাচালেন কেন?
নীড় : ওয় স্বপ্নকুমারি… আমি তোমাকে বাচাই টাচাইনি।
মেরিন : তাই বুঝি? 😏।
নীড় : হামম। তোমাকে বাচানোর কি আদৌ কোনো কারন আছে?
মেরিন : হামম। আছে। আমি আপনার বউ…
নীড় হাহা করে হেসে উঠলো।
নীড় : বউ মাই ফুট। আমি পারলে তোমাকে কোনো পতিতালয়ে বিক্রি করে আসতাম। কারন তোমার মতো বাজে মেয়েকে ওখানেই মানায়।
বলেই নীড় চোখ বন্ধ করে নিলো। মেরিনের চোখের কোনে পানি এসে পরলো। ফার্স্ট এইড বক্সটা রেখে। গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে পরলো। কনিকার কাছে গেলো। কনিকার পায়ের কাছে মাথা রেখে কাদতে লাগলো। কাদতে কাদতে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পরলো।
.
সকালে…
নীড় অবাক হলো। কারন মেরিন ওকে গুড মর্নিং কিস করেনি। কফিও নেই। অনেকবেলা হয়েছে। তাই ফ্রেশ হয়ে একবারে নিচে নামলো। টেবিলে বসলো।
নীড় : ব্রেকফাস্ট কি পাবো?
তখন নীলিমা এসে খাবার দিলো। নিহাল-নীড় অবাক হলো মেরিনকে না দেখে।
নীলিমা : মেরিনকি অসুস্থ হয়ে পরেছে ? এখনও যে ঘুম?
নীড় : ঘুম? ও তো রুমে নেই।
নীলিমা : রুমে নেই? তাহলে কোথায়?
নীড় : আই ডোন্ট নো।
নীলিমা : তুই আসলেই ১টা অপদার্থ।
নীড় : আজব তো। আমি কি করলাম।
নীড় ১টা স্যান্ডুইচ হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
নীড় মিরপুর পৌছালো। কনিকার কাছে।
কনিকার রুমের বাহিরে নার্স দারিয়ে আছে।
নীড় : ভালো আন্টির ঘুম ভেঙেছে?
নার্স : না।
নীড় : ওহ। মেরিন এসেছিলো?
নার্স : জী। ম্যাম এখনো ভেতরে।
নীড় : ভেতরে?
নার্স : হামমম।
নীড় ভেতরে ঢুকলো। দেখলো মেরিন নিচে বসে কনিকার পায়ের সামনে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 13
writer : Mohona
.
মেরিন কনিকার পায়ের সামনে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
নীড় মনে মনে : জাতিসংঘ থেকে প্রতিবছর কেন যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অদ্ভুদ প্রানীদের পুরষ্কার দেয়া হয় না? দেয়া হলে নির্ঘাত এই অতৃপ্ত আত্মাটা প্রতি বছরই অ্যাওয়ার্ড পেতো। প্রতিবছর না প্রতিমাসেই পেতো। এ এদিকে আর ওদিকে মামনি বাবা অদ্ভুদভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কি আরামে ঘুমিয়ে আছে। দিবোনা ঘুমাতে।
নীড় মেরিনের কাধে হাত রেখে জোরে জোরে ধাক্কা দিলো। মেরিন হুরমুরিয়ে উঠলো। গান হাতে নিয়ে। দেখে নীড় দারিয়ে।
মেরিন : ওহ আপনি?
নীড় : তুমি কি মশা কামড় দিলেও গান হাতে নাও?
মেরিন কিছু না বলে নীড়ের ঠোটে কিস করে
বলল : আই লাভ ইউ…
নীড় : 😒।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আপনি আমাকে যতো খারাপ বলবেন আমি আপনাকে ততো ভালোবাসবো। আমাকে কষ্ট দেয়ার অধিকার আছে আপনার । আমার জান নেয়ার অধিকারও আছে আপনার । ব্রেকফাস্ট করেছেন?
নীড় : জানিনা।
মেরিন : আমি এখনই বানিয়ে নিচ্ছি।
নীড় : ওই… খেয়েছি।
মেরিন : ওহ । মামনি বাবা খেয়েছে?
নীড় : দেখেছি খাচ্ছে।
মেরিন : ওহ। ভালো। আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে অফিস যাচ্ছি।
নীড় : আমাকে বলছো কেন?
মেরিন : কারন আপনি আমার জান তাই। রাতে দেখা হচ্ছে ।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলো।
নীড় : মেরিন ….
মেরিন দারিয়ে গেলো। নীড়ের দিকে ঘুরলো।
মেরিন : কি ব্যাপার জান… আজকে এমন করে ডাক দিলেন যে?
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নীড় : কিছু বলার ছিলো।
মেরিন : বলুন…
নীড় : আমার ওইটা বলার ছিলো।
মেরিন : কোনটা বলার ছিলো?
নীড় : ওই যে ইংরেজী ‘এস’ অক্ষর দিয়ে শুরু হয় …
মেরিন : স্টুপিড ?? 😏।
নীড় : না।
মেরিন : সামার।
নীড় : নো।
মেরিন : দেন সাফার…
নীড় : আরে না। আই ওয়ান্ট টু সে সরি।
মেরিন : সরি? ফর হুয়াট?
নীড় : আই ডোন্ট নো …
মেরিন : কালকে রাতের কথাটার জন্য ?
নীড় : ….
মেরিন : নট নিডেড নীড়। আমি কিছু মনে করিনি। আসলে আমি সবার কাছে নিজের জন্য এই কথাগুলোই আশা করি । হয়তো এর থেকেও জঘন্য কথা ডিজার্ভ করি । বাট জানেন নীড় … মেরিন রাগী হতে পারে , পাজী হতে পারে , খারাপ হতে পারে কিন্তু চর… লিভ ইট। তবে ১টা কথা কি নীড় … পতিতালয়ে যারা থাকে দোষ কিন্তু কেবল তাদের একার হয়না। রাতে দেখা হচ্ছে।
মেরিন চলে গেলো।
নীড় : সাইকো মার্কা অতৃপ্ত আত্মা। হুহ।
.
রাতে…
নীলিমা : শোন … মার কাছে যাবি ভালো কথা। কাউকে জবাবদিহি করিসনা সেটাও ভালো কথা । তবে ওই মায়ের কাছে যাওয়ার আগে এই স্টুপিডটার কাছে না বললেও এই মায়ের কাছে বলে গেলে কি খুব দোষের হবে?
নিহাল : নীলা কাকে কি বলছো? এটা মেরিন বন্যা খা… মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । সে কাউকে কোনোকিছুর জন্য জবাব দেয়না। আর তোমাকে মামনি ডেকেছে বলেই তো আর তোমাকে মামনি বানিয়ে ফেলেনি । জাস্ট বলার জন্য বলে। দ্যাটস ইট।
মেরিন : আচ্ছা মামনি… তোমার বরটা এমন কেন গো? আমার সাথে কথা বললে সরাসরিই তো বলতে পারে। এমন করে বলার কি আছে?
নিহাল : শোনো মেয়ে তোমার সাথে না কথা বলতে ভালো লাগেনা।
মেরিন : তো এর জন্য কি তোমাকে নোবেল ছুরে মারবো?
নিহাল : এই মেয়ে তুমি কি ভালোভাবে কথা বলতে পারোনা?
মেরিন : না। যাই হোক মনে আছে কালকে টেন্ডার নিতে যেতে হবে তোমাকে?
নিহাল : কিসের টেন্ডার?
মেরিন : জানোনা কিসের টেন্ডার?
নিহাল : ওই টেন্ডার কি গত ৪-৫বছর ধরে নিতে পেরেছি তোমার জন্য। হাটুর বয়সী মেয়ে হয়ে … স্টুডেন্ট লাইফে বিজনেসে জয়েন করে খান এম্পায়ারকে ৫ থেকে ১ এ নিয়ে গিয়েছো। এখন এমন টাইপের টেন্ডারের কথা আর কেউ কল্পনাই করতে পারেনা। নট ইভেন মি।
মেরিন : এখন থেকে কল্পনা করবেনা। টেন্ডার নিবে।
নিহাল : দয়া দেখাচ্ছো?
মেরিন : মেরিন কখনো কাউকে দয়া দেখায়না। খান & মাহমুদের সাথে চৌধুরী এম্পায়ারও আমার। তাই এটাকেও টপে রাখা আমার দায়িত্ব । মেরিন পিছিয়ে থাকতে পছন্দ করেনা।
নীড় মনে মনে : ডাইনিং টেবিলটাকে মিটিংরুম বানিয়ে দিলো। মানুষ যে কি করে বিজনেস করে আল্লাহ মালুম। সুস্থ শরীরকে ব্যাস্ত করা। 😒।
নীড় : গুড নাইট সবাই..
নিহাল কিছু বললনা। ইগনোর করলো। মেরিন বিষয়টা লক্ষ্য করলো। নীড় চলে গেলো। নিহালও ঘুমাতে চলে গেলো।
মেরিন : মামনি… এই বাবা ছেলের জুটিতে ফাটল ধরলো কি করে?
নীলিমা : তোর জন্য ।
মেরিন : আমার জন্য ?
নীলিমা : হামমম। নীড় কালকে তোকে বাচাতে যায়নি । তাই বাবা ছেলের ওপর রেগে আছে।
মেরিন : এতো সহজে আমাকে মেনে নিলো? আজব তো।
নীলিমা : কি করবে বল তো। তাদের আন বান শান চৌধুরী টাইটেল যে তোর নামের সাথে লেগে গিয়েছে। তাইজন্য ।
মেরিন : তুমিও না মামনি….
ওরা ২জনও নিজ নিজ রুমে চলে গেলো।
.
নীড় ঘুমের ভান ধরে পাশ ফিরে শুয়ে আছে । মেরিন বিষয়টা বুঝলো।
মেরিন : পাগল চৌধুরী…
মেরিন লাইটটা নিভিয়ে বিড়াল ছানার মতো নীড়ের বাহুর ভেতর ঢুকে গেলো।
নীড় মনে মনে : ঘুমের ভান ধরেও শেষরক্ষা হলোনা। অতৃপ্ত আত্মাটা কলিজার ভেতর ঢুকেই গেলো।
মেরিন নীড় শার্টের ওপরের ২টা বাটন খুলল।
নীড় মনে মনে : এই মেয়ে করছে কি? মান ইজ্জতে হাত দেয় কেন?
মেরিন নীড়ের বুকে চুমু দিলো। এরপর মাথাটা একটু তুলে নীড়ের ঠোটে কিস করলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
বলেই নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় মনে মনে : বাহ… আমার কলিজার ওপর চরে কি আরামে ঘুমিয়ে পরলো। এর চুলের ঘ্রাণটা তো সেই। কোন শ্যাম্পু লাগায় ? হা…চি… চুলের ঘ্রাণ সুন্দর হলেও এর চুল এর মতোই অসভ্য নাকের ভেতর গিয়ে জ্বালাচ্ছে… আমারও ঘুম পাচ্ছে।
নীড়ও ঘুমিয়ে পরলো।
.
৭দিনপর…
মেরিন নীড়কে নিয়ে জোক করে লং ড্রাইভে বের হয়েছে। আসলে নীড় একাই যাচ্ছিলো। মেরিন যেতে চাইলো ক্যানসিল করে দেয়। তাই মেরিন জোর করে নিয়ে যায়। মেরিনই ড্রাইভ করছে ।
নীড় : ওয়… আমার খোমার দিকে না তাকিয়ে রোডের দিকে তাকাও। না হলে অ্যাক্সিডেন্ট হবে।
মেরিন : হোক… আপনাকে দেখতে দেখতে মরে যাবো। বিগ ডিল।
নীড় : তুমি তো আর একা মরবানা… মরবো তো আমিও।
মেরিন : আমি মরে গেলে আপনি বেচে থেকে কি করবেন?
নীড় : মসজিদে শিন্নি দিবো ।
মেরিন : সত্যি?
নীড় : হ্যা। মসজিদে শিন্নি দিবো । ২রাকাআত নফল নামায পরবো। ২দিনপরই নিরাকে বিয়ে করবো।
মেরিন : …
কথা গুলো বলে নীড়ের নিজেরই খারাপ লাগছে । কথাগুলো শুনে মেরিন চুপচাপ ড্রাইভ করতে লাগলো।
বেশকিছুক্ষন পর নীড় চেচিয়ে উঠলো ।
নীড় : এই থামো থামো আইসক্রীম।
মেরিন : আইসক্রীম খাবেন?
নীড় : হামমম ।
মেরিন : ওকে…
নীড় : একি আবার গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছো কেন?
মেরিন : আইসক্রীম না খাবেন বললেন।
নীড় : এ পার থেকে ও পার। হেটেই যাওয়া যাবে। গাড়ি দিয়ে এতো লম্বা লেন ঘুরতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই ।
বলেই নীড় গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : তুমি দারাও আমি নিয়ে আসছি ।
মেরিন : না না আপনার যেতে হবেনা। আপনি দারান আমি নিয়ে আসছি।
নীড় : কেন তুমি যাবে কেন?
মেরিন : এমনিতেই। আপ…
নীড় : দেখো আমি কোনো বাচ্চা না যে রোড ক্রস করতে পারবোনা। এটলিস্ট এতোটুকু কাজেও বাধা দিওনা।
মেরিন : …
নীড় আইসক্রীম কিনতে গেলো। কিনে নিয়ে মেরিনেরটা হাতে নিয়ে … আর নিজেরটা খেতে খেতে রাস্তা পার হচ্ছে মিস্টার খাদক চৌধুরী।
পার হতে হতে নীড়ের কানে মেরিনের ডাক ঢুকলো।
মেরিন : নীড়…
ডাকটা শুনেই তৎক্ষনাৎ ১টা ধাক্কা অনুভব করলো।
পিছন ফিরতে সাহস হচ্ছেনা নীড়ের। কেন যেন খুব ভয় হচ্ছে। বুকটা কাপছে। আইসক্রীম ওয়ালা ছুটে গেলো । নীড় ১টা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করে পিছনে ঘুরলো। ভয়ে ভয়ে চোখ মেলল।
দেখলো মেরিনের রক্তাত্ব দেহটা পরে আছে। নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে আছে । নীড় হাতের আইসক্রীম গুলো ছুরে ফেলে ছুটে মেরিনের কাছে গেলো ।
নীড় : মমমেরিন…
মেরিন : মমমসজিদে শিন্নিও দিয়েন…. নননফল ননামাযও পরে নিয়েন। ককককিন্তু নননিরা ভিন্ন অন্য ককককাউকে বববিয়ে করবেন। ও ভভভালোনা… আআআই লললাভ ইউ…
মেরিন জ্ঞান হারালো।
.
নীড় দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে ।
মনে পরছে গাড়িতে বলা নিজের কথাগুলো। আর চোখের সামনে থেকে ভেসে উঠছে মেরিনের রক্তাত্ব শরীর। কানে বারি খাচ্ছে মেরিনের বলা শেষ কথা গুলো।
তখন ডক্টর বেরিয়ে এলো।
ডক্টর : পেশেন্টের সাথে কে আছে? পেশেন্টের সাথে কে আছে? আম আসকিং পেশেন্টের সাথে কে আছে?
নীড়ের ধ্যান ভাংলো।
নীড় : ইইইটস মি।
নীড় ডক্টরের সামনে গিয়ে দারালো।
নীড় : আই অ্যাম উইথ হার।
ডক্টর : কি হন আপনি পেশেন্টের?
নীড় : …
ডক্টর : আপনি পেশেন্টের কি হন?
নীড় : হ্যা? হাজবেন্ড ।
ডক্টর : নাম কি পেশেন্টের?
নীড় : মমমেরিন।
ডক্টর : বয়স কতো?
নীড় : …
ডক্টর : বয়স কতো?
নীড় : ২৪-২৫…বছর । ২৬ও হতে পারে… আই ডোন্ট নো।
ডক্টর : আর ইউ ব্লাডি ড্রাগ অ্যাডিক্টেড …? কিছুই জানেননা। আম ড্যাম শিওর যে আপনি পেশেন্টের মেডিকেল হিস্ট্রিও জানেন না। কি যে করি।।।
তখন জন হাজির হলো।
জন : এই যে পেশেন্টের মেডিকেল হিস্ট্রি ।
জন ডক্টরের হাতে রিপোর্টগুলো দিলো।
ডক্টর : আপনি কি হন?
দাদুভাই : ভাই… ও পেশেন্টের ভাই । পেশেন্ট ২৫এ পা রাখবে জুলাই এ।
ডক্টর : রিপোর্ট তো বলছে যে পেশেন্টের মাথায় ১টা আঘাত আছে। তাও ছোটবেলার ।
দাদুভাই : জী…
ডক্টর : এখনো মাথায় আঘাত পেয়েছে। এই মুহুর্তে সার্জারি করা প্রয়োজন।
দাদুভাই : তো করুন।
ডক্টর : সরি। উই কান্ট । অনেক রিস্কি। কিছু হয়ে গেলে আমার আর আমার হসপিটালের দোষ হবে।
দাদুভাই : আরে আপনি কি বলছেন এসব? প্লিজ আমার নাতনিকে বাচান ।
ডক্টর : সরি স্যার । এতো বড় রিস্ক আমরা নিতে পারবোনা।
জন : ডক্টর যদি আপনি এখন এই মুহুর্তে গুলি খেয়ে না মরতে চান তবে সার্জারি শুরু করুন।
ডক্টর : সরি উই কান্ট। আর আমার পক্ষে এটা সম্ভবও না। প্ল…
তখন তপু হাজির হলো।
তপু : সার্জারিটা আমিই করবো। আপনাকে করতে হবে। আই জাস্ট নিড ইউর ওটি …
ডক্টর : আপনি?
তপু : আমি তপু। ডক্টর তপু। ব্রেইন স্পেশালাইজড । দেয়ার মাই পেপার।
ডক্টরটা দেখে নিলো।
তপু : ক্যান ইউ প্লিজ অ্যাসিস্ট মি?
ডক্টর : কিছু খারাপ হয়ে গেলে কিন্তু…
তপু : আমার দোষ।
ডক্টর : মুখে বললে তো হবেনা। আপনার সিগনেচার লাগবে।
তপু : যা করার তারাতারি করবেন…
ডক্টর : হামমম।
ডক্টর চলে গেলো। তপু নীড়কে ১টা লুক দিলো। নিহাল-নীলিমা এসে হাজির হলো।
নীলিমা : কি অবস্থা মেরিনের?
জন : ভালোনা। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরছে। অনেকেই চায় যেন ম্যাম মারা যায়। কিন্তু আমি আর শমসের স্যার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেন তেমনটা না হয়।
কথা গুলো জন নীড়ের দিকে তাকিয়ে বলল।
কিছুক্ষন পর নার্স কিছু পেপার নিয়ে নীড়ের সামনে দারালো।
নার্স : স্যার আপনাকে এখানটায় সিগনেচার করতে হবে…
নীড় : আআমাকে?
নার্স : জী আপনাকে…
নীড় কাপা কাপা হাতে কলমটা নিয়ে আবার রেখে দিলো।
নীড় : নননো । আই কান্ট। আই কান্ট …
নিহাল : নীড় সিগনেচার করো।
নীড় মূর্তির মতো দারিয়ে রইলো।
দাদুভাই : নীড়… দুর্ভাগ্যক্রমে তুমি মেরিনের স্বামী তাই ওখানে সিগনেচার করার দায়িত্বও তোমার। অন্তত ১টা দায়িত্ব পালন করো। ট্রাস্ট মি… তোমাকে দোষ দিবোনা।
ডক্টর : এমন স্বামী আমি জীবনেও দেখিনি । আমার মনে হয় অ্যাক্সিডেন্ট টা ওনারই প্ল্যান …
কথাটা শুনে সবাই নীড়ের দিকে পুলিশের নজরে তাকালো।
সবার তাকানোর থেকেও নীলিমার তাকানোতে নীড় কষ্ট পেলো। নীড় নিজেকে শক্ত করে সিগনেচার করে দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।
.
৩ঘন্টাপর…
ওটির লাইট নিভে গেলো। সবাই এগিয়ে গেলো । একা নীড় দূরে দারিয়ে আছে ।
তপু বেরিয়ে এলো।
দাদুভাই : আমার দিদিভাই…
তপু : আউট অফ ডেঞ্জার … বাট
জন : বাট?
তপু : ৭২ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে মেরিন ডিপ কোমায় চলে যেতে পারে।
কথাটা শুনে দাদুভাই পরে যেতে নিলো। তখন কবির কোথায় থেকে হাজির হয়ে তাকে ধরে ফেলল।
দাদুভাই কবিরকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো ।
দাদুভাই : তোর কাছে গত ২৫বছর ধরে কিছু চাইনি। আজকে চাইছি… আমার নাতনিকে ফিরিয়ে দে।। প্লিজ ফিরিয়ে দে…
কবির : বাবা … ঠান্ডা হও। বাচানোর মালিক আল্লাহ। তুমি আমি কি করতে পারি?
দাদুভাই কবিরের থেকে সরে এলো।
জন : আপনি এখানে কেন এসেছেন? ম্যামকে মেরে ফেলতে?
তপু : জন… থামো।
জন : হঠাৎ করে এলো তো তাই অবাক হলাম।
কবির : লিসেন আমি আমার বাবার জন্য এসেছি। বাবাকে সামলাতে এসেছি । দ্যাটস ইট ।
.
৫৫ঘন্টাপর…
নীড় দরজার বাহিরে থেকে মেরিনকে দেখছে। এই ২দিনে নীড় পানি ছারা কিছুই মুখে দেয়নি। আর কেউ ওর কথা ভাবেওনি। ও ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে ও একটু অসুস্থ হলে নীলিমা না খেয়ে থাকে। আর ওর সুস্থ হওয়ার জন্য দোয়া করে। নীড়ও তাই করেছে। মাথা ঘুরে পরে যাচ্ছিলো তাই একটু পানি মুখে দিয়েছে ।
নীড় : তুমি এভাবে যেতে পারোনা। আমাকে ঝণী করে যেতে পারোনা। নীড় আহমেদ চৌধুরী কারো কাছে ঋণ থাকেনা। তোমার কাছে কিভাবে ঝন থাকতে পারি? যে সবার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে সে আমার জীবন বাচিয়ে কি করে যেতে পারে। নো নো নো… এটা হতে পারেনা। অনেক হিসাব নিকাশ বাকি।। উঠে বসো । তো…
তখন নীড় দেখলো মেরিনের হাতের আঙ্গুল নরছে। নীড়ের মুখে হাসি ফুটলো । ছুটে গিয়ে ডক্টর ডেকে আনলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 14
writer : Mohona
.
নীড় ছুটে গিয়ে ডক্টরকে ডেকে আনলো। সাথে তপুও এলো। ডক্টর চেক আপ করতে গেলে তপু বাধা দিলো।
তপু : লেট মি চেক প্লিজ…
তপু চেক আপ করতে লাগলো। জন , দাদুভাই , নিহাল , নীলিমা এসে হাজির হলো। নীড় এক সাইডে দারিয়ে রইলো । ধীরে ধীরে মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলে তাকালো। আর তাকিয়েই দাদুভাইকে দেখলো।
মেরিন : দদদাদুভাই…
দাদুভাই ছুটে মেরিনের পাশে বসলো। কপালে চুমু দিলো। এরপর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কাদতে লাগলো ।
মেরিন : হেই দদদদাদুভাই… ডোন্ট ক্রাই…
তপু : দাদুভাই… প্লিজ …
দাদুভাই নিজের কান্না থামালো।
দাদুভাই : তুমি ছারা কি আমার কেউ আছে?হামমম।
মেরিন : সরি… দদদাদুভাই… নননীড় ককোথায়? উউউনি সসসুস্থ আছে তো?
কথাটা নীড় স্পষ্ট শুনলো। এমন অবস্থাতেও মেয়েটা ওর কথা ভাবছে।
মেরিন : বববলোনা দাদুভাই… উউউনি ঠিক আছে তো?
তপু : ওর কি হবে? ও একদম ঠিক আছে।
কথাটা বেশ কঠোরভাবেই তপু বলল।
কথাটা শুনে এই অবস্থাতেও মেরিন রাগ লাগলো। ও ধীরে ধীরে ঘাড়টা তপুর দিকে ঘুরালো। চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও তপুকে রাগী লুক দিলো।
নীড় তপুর পিছেই দারিয়ে ছিলো। তাই বিষয়টা লক্ষ্য করলো।
মেরিন চোখ ফিরানোর সময় মেরিনের দৃষ্টি নীড়ের দিকে পরলো । মেরিনের ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো।
মেরিন : নীহর…
মেরিন আবার জ্ঞান হারালো।
দাদুভাই : দিদিভাই… তপু… কি হলো ওর…
তপু : কিছুনা দাদুভাই। মেডিসিনের ইফেক্টের জন্য ঘুমিয়ে পরেছে। ২-৩ঘন্টা পর কিছুটা নরমাল হবে। জেগে যাবে। এখন সবাই বের হলে ভালো হবে।
সবাই বের হলো। কেবল তপু রয়ে গেলো। নীড় বেরিয়ে আবার ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : সবাইকে বের হতে বলে তুমি ভেতরে রয়ে গেলে। নট ডান ।
তপু : সবাই আর আমি না।
নীড় : এই কথাটা আমি বলতে পারি… যে সবাই আর আমি না।
তপু : দেখো তুমি আমাকে এগুলো বলার কেউ নও। গট ইট?
নীড় : আমি কেউ নাকি কেউ নই… সেটার জবাব কিছু না বলেও মেরিন দিয়েছে। ডক্টরদের শর্ট টাইম মেমোরি হলে চলেনা…
তপু : যত্তোসব।
বলেই তপু বেরিয়ে গেলো।
নীড় : হুহ।
বলেই নীড় চেয়ার টেনে মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : নাউ কালকে থেকে আবার তোমার সাইকোগিরি শুরু হবে।
বলেই নীড় অজু করে এসে নামায পরে নিলো।
.
৩ঘন্টাপর…
মেরিনের ঘুম ভাংলো।
নীড় : অবশেষে ঘুম ভাংলো?
মেরিন পাশ ফিরে দেখে নীড় বসে আছে। হাতে ম্যাগাজিন । দৃষ্টিও ম্যাগাজিনে।
মেরিন : আপনি…
নীড় : হামমম।
মেরিন : আপনি ঠিক আছেন তো?
নীড় : আমি? আমি ঠিক কি করে থাকতে পারি? আমাকে এসে ট্রাক ধাক্কা মেরেছে … আমার সার্জারি হয়েছে … ৫৫ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরেছে । আমি কিভাবে ঠিক থাকতে পারি? 😒।
নীড়ের কথায় মেরিন মুচকি হাসি দিলো ।
নীড় : আচ্ছা আমাকে এতো ভালোবেসে কি কোনো লাভ আছে তোমার? ঘৃণা ছারা কি কখনো কিছু পাবে? তবে কিসের আশায় এতো ভালোবাসো?
মেরিন : সত্যি বলবো না মিথ্যা?
নীড় : সত্যিই বলো।
মেরিন : ছোট্ট ১টা নীড় চাই। যাকে নিয়ে বাকীটা জীবন পার করতে পারবো । ভুলে থাকতে পারবো আপনাকে…
নীড় : এতো আশা কোরোনা। পূরন হবেনা।
মেরিন : না হলে নেই। আপনি তো আছেন…
নীড় : বসো আমি দাদুভাইকে ডেকে নিয়ে আসছি।
মেরিন : শুনুন … নিজের জন্য খাবারও নিয়ে আসবেন।
নীড় : খাবার?
মেরিন : হামমম খাবার।
নীড় : কেন?
মেরিন : কারন প্রায় ৬০ঘন্টা ধরে আমার খাদক জামাইটা না খেয়ে আছে।
নীড় : মোটেও না।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
.
দাদুভাই : দিদিভাই …
মেরিন : দাদুভাই …
দাদুভাই : কেমন লাগছে এখন ?
মেরিন : ভালো। বাট পিঠ ব্যাথা করছে শুয়ে থাকতে থাকতে।
তপু : ১মাস যে তোমাকে বেড রেস্টে থাকতে হবে ।
মেরিন : ইম্পসিবল। পারবোনা আমি।
তপু ১টা ইনজেকশন দিতে দিতে
বলল : পারতে তো হবেই। সুস্থ হতে হবেনা।
মেরিন : যখন মরিনি তখন সুস্থও হয়ে যাবো।
তখন নিহাল-নীলিমা-নীড় ঢুকলো।
নীলিমা : এটা আবার কেমন কথা শুনি?
নীড় মনে মনে : ত্যারামি কথা। আবার মামনি বাবার কাছে আমাকে বকা খাওয়াবে। হুহ।
নীলিমা : আমরা যে আমাদের সন্তানদের সম্পূর্ন রেখে যেতে পারি…
কিছুক্ষন কথা বলেই মেরিন হাপিয়ে উঠলো । তাই সবাই বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : হ্যা দিদিভাই।
মেরিন : একটু শোনো।
দাদুভাই বসলো।
মেরিন : তুমি কিছু খেয়েছো? মেডিসিন নিয়েছো?
দাদুভাই : হামমম। তোমার পাগল চৌধুরী খাইয়েছে ।
মেরিন : কিন্তু আমার পাগল চৌধুরীর মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে না খেয়ে আছে। কিছু খাইয়ে দিও প্লিজ।
দাদুভাই : হামমম। আসছি। তুমি আরাম করো।
দাদভাই চলে গেলো । মেরিনও ঘুমিয়ে পরলো।
.
নীড় : ওহ মাই গুডনেস… এমন করে মাথা ঘুরছে কেন? ওহ গড …
নীড় পরে যেতে নিলো । জন ধরে ফেলল। এরপর নীড়কে বসিয়ে দিলো।
নীড় : থ্যাংকস জন।
জন : নট নিডেড। এটা আমার ডিউটি।
বলেই জন নীড়ের সামনে খাবারের প্লেট তুলে ধরলো।
নীড় : এগুলো?
দাদুভাই : নিশ্চয়ই মাথায় দেয়ার জন্য নয় খাওয়ার জন্য ।
নীড় : দাদুভাই আমি ..
দাদুভাই : জন ওকে বলে দাও যে ও আমার নাতনির বয়ষটা না জানলেও আমার নাতনি ওর নারী নক্ষত্র সব জানে। তাই ওকে দেখেই বুঝে গিয়েছে যে ও কিছু খায়নি ২দিন ধরে।
বলেই দাদুভাই চলে যাচ্ছিলো।
নীড় : দারাও দাদুভাই।
দাদুভাই দারালো। নীড় খুব কষ্ট করে গিয়ে দাদুভাইয়ের সামনে দারালো ।
নীড় : সামনে জুলাইয়ের ২২ তারিখ মেরিন ২৫এ পা দিবে । মেরিন আর আমার জন্মদিন একই দিনে। মেরিনের উচ্চতা ৫ফুট ৩ইঞ্চি । ওজন ৫১কেজি । জন্মলগ্ন ভোর ৫টা ১৫। রোজ বুধবার । সিংহ রাশি। প্রিয় রং কালো। প্রিয় ব্যাক্তি তুমি । সবকাজে সবধরনের খেলাধুলায় পারদর্শী । রান্নাতেও এক্সপার্ট । ছোটবেলায় মাথায় আঘাত পেয়ে ব্রেইন এ একটু প্রবলেম হয়। তবে আঘাতের কারন জানিনা। রাগটা অনেক বেশি। যাকে ঘৃণা করে সবটা দিয়ে ঘৃণা করে। যাকে ভালোবাসে তাকে সবটা উজার করে ভালোবাসে । ঘৃণার তালিকায় হাজারজন থাকলেও ভালোবাসার তালিকায় ৬জন। তুমি , ভালো আন্টি , জন , মামনি , বাবা এন্ড অফকোর্স আমি। মেরিন কখনো হারতে শিখেনি। না কথাটা ওর ভালো লাগেনা। যেটা চায় সেটা হাসিল করেই ছারে। তুমি ওর একমাত্র দুর্বলতা । বৃষ্টি দেখলেই কেবল ভয় পায়। ফোবিয়া আছে। জনকে ভাই মনে করে। বাট প্রকাশ করেনা। সকলে প্রতি ঘৃনা , আমার-তোমার প্রতি ভালোবাসা , সকলের সাথে রাগ ছারা নিজের কোনো ফিলিংস ই কারো সামনে প্রকাশ করেনা। শেয়ারও করেনা । টাকার পিছে ছুটতে ভালোবাসে । আবার পানির মতো টাকা উরাতেও ভালোবাসে । রাগ-জেদ প্রচন্ড বেশি তাই এই বয়সেই বিপি প্রচুর হাই। তবে রক্তশূন্যতা। কারন নিজের যত্ন নেয় না। আর নিজের যত্ন না নেয়ার কারন হলো মেরিনকে সবাই ঘৃণা করে তবে মেরিনকে সবথেকে বেশি ঘৃণা করে মেরিন নিজেই …
সবশুনে দাদুভাই আর জন অবাক।।
নীড় : নারী নক্ষত্র জানি না। কারন আমি ওকে ভালোবাসিনা। তবে সব জানলেও অনেকটাই জানি মেরিন সম্পর্কে। কিন্তু তখন যখন ডক্টর জিজ্ঞেস করেছিলো তখন আমি ঘাবরে ছিলাম। নিজের মধ্যে ছিলামনা। অ্যাক্সিডেন্টের দৃশ্যটা চোখে ভাসছিলো। হয়তো তখন মেরিনের ফুল নেইমটাও বলতে পারতাম না… আর হ্যা সবথেকে বড় কথা। আমি মেরিনের অ্যাক্সিডেন্ট করাইনি। আমাকে বাচাতে গিয়ে ওর এই অবস্থা ।
সবাই অবাক। ও এতোকিছু জানে?
নীলিমা : হ্যা আমরা জানি তুইও কম সাইকো না। খেয়ে নে।
নীড় : আমার ক্ষুধা নেই।
নীলিমা : দেখ ড্রামা শুরু করিসনা।
দাদুভাই : দেখো তুমি যদি না খাও তবে দিদিভাই এই শরীর নিয়ে কিন্তু কাহিনি করবে। সো প্লিজ । ড্রামা কোরোনা।
নীড় : আমি ড্রামা করি ?
নীলিমা : নাহ। আমরা করি…
.
৫দিনপর…
আজকে মেরিনকে রিলিজ দেয়া হলো। এই ৫দিন মেরিনের সাথে নীড়়ই ছিলো হসপিটালে।
নীড় : তোমার কি কিছু লাগবে?
মেরিন : না । নীড়…
নীড় : হামমম।
মেরিন : আপনি তো ৭দিন ধরে হসপিটালেই ছিলেন। তাই তো আম্মুর কাছে যাওয়া হয়নি।
নীড় : না আসলে। তোমাকে এভাবে রেখে কিভাবে যেতাম ?
মেরিন : নীড় ১টা কথা বলি?
নীড় : হ্যা বলো।
মেরিন : নীড়… আমি আপনাকে বাচিয়েছি সেটা আপনার জন্য নয় নিজের জন্য করেছি। নিজের স্বার্থের জন্য করেছি। আপনার জন্য কিছুই করিনি । আর আপনাকে বাচানোর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বরূপ প্লিজ আমার সাথে ভালো ব্যাবহার করবেন না। করুনা করবেননা। যেটা গত ৫দিন ধরে করেছেন…
নীড় : আরে আমি তো …
মেরিন : আমার কথা শেষ হয়নি … নীড় আপনি ৫দিন ধরে হসপিটালে থেকে অনেক টায়ার্ড । অনেক করেছেন আমার জন্য । ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবোনা। ২-৩দিন রেস্ট করুন। দেন আবার আম্মুর ট্রিটমেন্ট স্টার্ট করুন। আর এরপর থেকে আমি অসুস্থ হই যাই হই … আমার কথা ভেবে আম্মুর ট্রিটমেন্ট বন্ধ করবেন না। আমার নিজের থেকে আমার কাছে আমার আম্মু দামী। ইভেন আমি যদি মরেও যাই তবে সেটা নিয়েও মাথা না ঘামিয়ে আপনি আমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যাবেন। যদিও আমার মৃত্যুতে আপনার মাথা ব্যাথা নেই। কিন্তু প্লিজ আমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট অফ করবেন না। আই থিংক এতোটুকু ট্রাস্ট আমি করতে পারি আপনাকে তাইনা?
নীড় কিছু না বলে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
ভীষন স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে ।
নীড় : সবসময় নিজেই ঠিক… নিজে যা বলবে তাই ঠিক। সামনের ব্যাক্তির কথাটা শোনারও প্রয়োজনবোধ করেনা। স্টুপিড ।
তখন নীড়ের সামনে কারো গাড়ি এসে পরলো ।
নীড় : হু দ্যা হেল ইজ দিস…
নীড় মাথাটা বের করে
বলল : হেই ইউ ব্লাইন্ড … ডোন্ট ইউ স…
তখন গাড়ি থেকে নিরা নামলো ।
নীড় : ইটস ইউ…
নিরা : হ্যা আমি। তবে অবাক হলাম… নীড় তার বনপাখির গাড়িটাও চিনতে পারলোনা ।
নীড় গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : সরি । আসলে মাথাটা একটু গরম ।
নিরা : মাথা গরম থাকবেই । বউ অসুস্থ হলে তো জামাইর মাথা গরম হবেই। ভালোবেসে ফেলেছো নাকি?
নীড় : আরে মেয়েটা আমাকে বাচাতে গিয়ে মরতে বসেছিলো …
নিরা : আই নো। বাট কে বলতে পারে যে অ্যাক্সিডেন্টটা ওর প্ল্যান নয় । তোমার কাছে নিজেকে ভালো প্রমান করতে।
নীড় : মেরিন কখনো নিজেকে কারো কাছে ভালো প্রমান করেনা। আর ১টা কথা… মেরিন কখনোই আমার লাইফ রিস্কে ফেলতে পারেনা । কারন ও আমাকে… ভালোবাসে …।
নিরা : হামমম। বাই ।
নীড় নিরার হাত ধরলো ।
নীড় : ও আমাকে ভালোবাসে…. আর আমি আমার বনপাখিকে…
নিরা : এখন কি এসব কথার কোনো মানে আছে? নাকি এই ভালোবাসার কোনো ভবিষ্যৎ আছে ?
নীড় : সেটা জানিনা। দেখি কি হয় … লেটস হ্যাভ অ্যান কফি ।
নিরা : ওকে…
জন : ১মিনিট নীড় স্যার।
নীড় : জন তুমি ?
জন : জী । স্যার ম্যাম অসুস্থ তাই আমি চাইনা ম্যাম উত্তেজিত হোক। ডক্টর তপু বারবার বলেছে যেন মিনিমাম ১মাস ম্যামকে যেন উত্তেজিত না করা হয়। অলরেডি ওর হাত ধরে ম্যামকে উত্তেজিত করার মতো কাজ করেছেন। তবুও ম্যামের ভালোর জন্য কথাটা আমি ম্যামকে বলবোনা। বাট প্লিজ আর বেশি কিছু করবেননা।
নীড় : তুমি কি আমার ওপর নজরদারী করছো?
জন : না স্যার। ম্যাম বলল যে আপনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন। তাই যেন আপনার খেয়াল রাখি। যেন কোনো বিপদ না হয় ।
নিরা : চলো তো বেবি… মেরিন তো এখন ঘরে পরে আছে। কি করতে পারে আমি দেখে নিবো ।
জন : সিংহী কিছুক্ষনের জন্য গুহায় অবস্থান করার মানে এটা নয় যে সে শিকার করতে ভুলে গিয়েছে বা শিকার করা ছেরে দিয়েছে ।
নীড় : জন … আমি কফি খেতে যাবো … নিরার সাথেই যাবো।
জন : আপনাকে কিছু বলার বা হুমকি দেয়ার পারমিশন আমার নেই । বাট নিরা… তুমি যদি এখন ১পাও বারাও নীড় স্যারের সাথে। তবে তোমার মায়ের সাথে কি হতে পারে আমি জানিনা। লাশও পরতে পারে।
নিরা : জন…
জন : শাট আপ। আমি জন … মেরিন ম্যাম ছারা কারো চোখ রাঙানি মেনে নেই না। চোখ তুলে ফেলে দিবো।
নীড় : নিরা বাসায় যাও।
নিরা : হামমম।
নিরা চলে গেলো।
নীড় : কাজটা ঠিক করোনি।
.
রাতে…
নীড় বাসায় পৌছালো । রুমে গেলো । দেখলো দাদুভাই মেরিনকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নীড় : হ্যালো দাদুভাই ।
দাদুভাই : হামমম।
নীড় মনে মনে : শান্তই আছে । তাহলে বোধহয় সত্যিই জন কিছু বলেনি। না বলাই ভালো। খামোখা মাথায় প্রেসার পরতো।
নীলিমা : এভাবে দারিয়ে আছিস যে? যা ফ্রেশ হয়ে নিয়ে খাবার খা। তুলে রেখেছি তোর জন্য টেবিলে।
নীড় : হামমম।
নীড় ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে গেলো। খাওয়া শেষ করলো। তখন দেখলো যে দাদুভাই সিড়ি দিয়ে নামছে।
নীলিমা : আংকেল থেকে যান রাতটা নাতনির কাছে।
দাদুভাই : না অন্যদিন এসে থাকবো।
নীড় : দাদুভাই তুমি কোথাও যাচ্ছোনা। চুপচাপ রুমে যাও।
দাদুভাই : আমি আজকে যাবো। এ বাড়িতে রাত কাটানোর সময় আসেনি। যখন সময় আসবে সেদিন ঠিকই থাকবো। আজকে না। নীলিমা… ৩-৪দিন গেলেই ও অফিস যাবার ধুম উঠাবে। সো এটা তোমার দায়িত্ব যে কোনোভাবেই ও না যায়। যদি একেবারে না শোনে তবে আমাকে ফোন করে দিবে।
নীলিমা : জী আংকেল। আসছে। গুড নাইট। নীড় দাদুভাই যাও রেস্ট করো।
নীড় : চলো আমি তোমাকে পৌছে দেই। অনেক রাত হয়েছে।
দাদুভাই : শমসের খান এখনো সম্পুর্ন অকেজো হয়ে যায়নি। আমি যেতে পারবো। ড্রাইভার আছে। দিদিভাইয়ের দেয়া বডিগার্ড আছে। আমি যেতে পারবো। তাই ১ঢিলে ২পাখি মারতে চাওয়ার দরকার নেই।
বলেই দাদুভাই চলে গেলো। কয়েকমিনিট পর নীড় বুঝলো যে দাদুভাই নিরার সাথে দেখা করার কথা বলেছে।
নীড় : এরা দাদু-নাতনি ১ লাইন নো নো… ১০লাইন বেশি বোঝে কেন?
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 15
writer : Mohona
.
নীড় : ১০লাইন বেশি বোঝে ।
নীড় রুমে গেলো। দেখলো মেরিন বসে বসে কিছু ভাবছে ।
নীড় : ঘড়ি দেখেছো? কয়টা বাজে…
মেরিন : হামমম… কটা বা… ১১টা। খুব বেশি বাজেনা ।
নীড় : তোমার জন্য বেশিই বাজে । ঘুমিয়ে পরো।
মেরিন : …
নীড় : কিছু বললাম তো নাকি?
মেরিন : হামম।
নীড় : জাস্ট হামম?!?!
মেরিন : মানে?
নীড় : নাথিং।
বলেই নীড় মেরিনের পাশে শুয়ে পরলো। মেরিন হাতের ওপর মাথা রেখে নীড়কে দেখতে লাগলো।
নীড় মনে মনে : অতৃপ্ত আত্মাটা এতো সহজে ঘুমিয়ে পরলো ? হসপিটালেও তো ৫দিন ধরে ড্রামা করেছে । আজকে নো ড্রামা। ১টা বার দেখা দরকার…
নীড় ১চোখ খুলল। দেখলো মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় চমকে গেলো।
নীড় : ঘঘঘুমাও নি কেন?
মেরিন : গত কয়েকটা দিন ধরে আপনাকে মন ভরে দেখতে পারিনি। তাই আপনাকে দেখছি। ২চোখ ভরে দেখছি…
নীড় : আমি ঘুমাবো ।
মেরিন : তো ঘুমান । আপনাকে তো জেগে থাকতে বলিনি।
নীড় : এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে কি ঘুমানো যায় ? চুপচাপ ঘুমাও।
মেরিন : এমন করেন কেন ? আমি ডিস্টার্ব করবোনা আপনাকে । আপনি ঘুমান।
নীড় : জাস্ট শাট আপ। ঘুমাও।
মেরিন : আপনি আমাকে চোখ রাঙাচ্ছেন ?
নীড় : হ্যা। তো?
মেরিন : ভালো লাগলো।
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
বলেই নীড়কে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো। নীড়ও ১হাত আগলে নিলো । জানেনা কেন এমনটা করলো শুধু জানলো করলো।
.
২দিনপর…
নীলিমা : কিছু বলবে?
নিহাল : তোমার এমন কেন মনে হচ্ছে যে আমি তোমাকে কিছু বলবো ?
নীলিমা : ৩০বছর ধরে সংসার করছি। এতোটুকু বুঝবোনা?
নিহাল : তুমি ভুল বুঝছো। আমার কিছু বলার টলার নেই ।
নীলিমা : ওকে। বিশ্বাস করলাম ।
মনে মনে : কিছুতো ওর মাথায় চলছে। কিন্তু কি? বেরিয়ে যাবে পেট থেকে। খাবার পেটে পরলেই সব বের করবে পেট থেকে। খাদক কোথাকার।
নিহাল : এই কি এতো ভাবছো? কয়টা খেতে দাও ।
নীলিমা : বসো দিচ্ছি।
নিহাল খাবার খাচ্ছে। সাথে নীলিমাও । নীড়ও নিচে নেমে এলো ।
নীলিমা : আয় বোস। খেয়েনে ।
নীড় : হামম।
৩জন বসে খাচ্ছে।
নিহাল : নীড় …
নীড় : বলো।
নিহাল একদমে বলে
দিলো : তোমার বউ এখন কেমন আছে ?
নীড়ও একদমে বলে
দিলো : ভালোই আছে। একটু উইকনেস আছে।
নীলিমা ফিক করে হেসে দিলো।
নিহাল-নীড় : হুয়াট সো ফানি ? 😡।
নীলিমা : কিছুনা।
নীলিমা মুখ টিপে হাসছে ।
.
৫দিনপর…
নীড়ের ঘুম ভাংলো। দেখে মেরিন অফিসের পোশাকে। নীড় তারাতারি উঠে বসলো।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হ্যা আমি ।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো ।
মেরিন : অফিস।
নীড় : অফিস ?
মেরিন : এমন করে রিঅ্যাক্ট করছেন যেন এই ওয়ার্ডটা আর কখনো শুনেননি।
নীড় বেড থেকে নেমে মেরিনকে টেনে এনে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : ১টা থাপ্পর মারবো তোমাকে যদি এখান থেকে ১পাও নামো । স্টুপিড।
মেরিন : দেখুন অনেক বড় ১টা কনট্র্যাক্ট নিয়েছি ১মাস হয়ে গেলো। ফিল করার কথা নেক্সট উইক । আই নিড টু নো যে কাজের প্রগ্রেস কতোদূর । জন একা সামলাতে পারবেনা। আর এমনিতেও এতোদিন শুয়ে বসে থেকে পিঠ আর সারা শরীর ব্যাথা হয়ে গিয়েছে ।
নীড় : আমি কিছু শুনতে চাইনা। আমি যখন বলেছি তখন তুমি নামবেনা।
মেরিন : কিন্তু আমি আপনার কথা শুনবো কেন ?
নীড় : মানে কি এর?
মেরিন : মানেটা খুব সহজ। আপনি আমাকে বাধা কেন দিচ্ছেন জানতে পারি?
নীড় : কারন তুমি অসুস্থ।
মেরিন : সো হুয়াট ? তাতে আপনার কি ? আমার কিছু হয়ে গেলে তো আপনার পথের কাটা সরে যাবে।
নীড় : দেখো তোমার কিছু হলে তোমার দাদুভাই আমাকে ছেরে কথা বলবেনা ।
মেরিন : আমার দাদুভাই আমি বুঝবো । দাদুভাইকে আমি সামলে নিবো। আসছি।
মেরিন বের হতে নিলো আর তখন নীলিমা রুমে ঢুকলো।
নীলিমা : একি কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : অফিসে মামনি।
নীলিমা : মার খাবি । কোথাও যেতে হবেনা।
মেরিন : মামনি অনেক কাজ পরে আছে। আম…
নীলিমা : থাকুক কাজ। তুই কোথাও যাবিনা। না মানে না। চুপচাপ বোস এখানে।
মেরিন : মামনি আমি তারাতারি চলে আসবো। যাবো আর আসবো। আর আসার সময় আম্মুকে দেখে আসবো। আম্মুকে দেখিনা কতোদিন হয়ে গেলো।
নীলিমা : কোথাও যাবিনা তুই।।। যদি মাকে দেখতে মন চায় তবে নীড় গিয়ে তোর মা কে নিয়ে আসবে । এখানে সবার সাথে থাকবে।
মেরিন : না মামনি। আসলে আম্মু এখানে এলে অবাক হবে। ভয়ও পাবে। তাহলে দেখা যাবে নীড় এতোদিন ধরে যা করেছে সব পানিতে যাবে।
নীলিমা : যতোযাই বলিস আমি যেতে দিবোনা। তপু তোকে বেডরেস্টে থাকতে বলেছে । তুই কোথাও যাবিনা। অফিসে লস হলে হোক।
মেরিন : মামনি মামনি আমার লক্ষি মামনি। আমার যেতে হবে। আম…
নিহাল : কাকে কি বলছো নীলা? ওর কাছে কি কারো কোনো কথার মূল্য আছে? নাকি কারো স্নেহের মূল্য আছে? লেট হার গো। যে নিজের ভালো বোঝেনা তাকে কিছুই বলাই বেকার। ভাব খানা এমন যে সে অফিস না গেলে তাকে কেউ খেতে দিবেনা।
মেরিন নিহালের সামনে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : তুমি খাওয়াবে আমাকে?
নিহাল : কেন অতোটুকু সামর্থ্য কি আমার নেই?
মেরিন : সেই কথা তো আমি মিন করিনি। আমি যাবোনা অফিসে যদি… আজকে ৩বেলা তুমি আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দাও…
নিহাল : 😒।
মেরিন : আচ্ছা ৩বেলা না হোক। অন্তত দুপুরেও যদি খাইয়ে দাও। তবুও আমি যাবোনা।
নিহাল : 😒
নীলিমা : ঠিক হয়েছে।
নিহাল : হুহ…
বলেই নিহাল রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : আসছি মামনি…
তখন আবার নিহাল রুমে ঢুকলো।
নিহাল : এই মেয়ে আমি কি তোমাকে না করেছি যে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবোনা? যত্তোসব।
বলেই নিহাল আবার চলে গেলো। নীলিমা হা হা করে হেসে উঠলো।
নীলিমা : লোকটা না একে বারেই পাগল। এখন কোথাও যাবিনা তো?
মেরিন : কি আর করার। ভার্চুয়ালি কাজটা করতে হবে। মামনি … আজকে আমার খাবার আর ওপরে পাঠিও না কেমন? নিচে সবার সাথে বসে খাবো।
নীলিমা : আচ্ছা
নীলিমা চলে গেলো।
মেরিন ঘুরে দেখে নীড় ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।
মেরিন : কি হলো?
নীড় : তোমাকে বলবো কেন? অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার।
একটুপর ৪জন একসাথে ব্রেকফাস্ট করলো।
.
কিছুক্ষনপর …
নিহাল বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছে।
নীলিমা : নিহাল আহমেদ চৌধুরী তবে মেরিনকে ছেলের বউ হিসেবে মেনেই নিলো।
নিহাল : মেরিন কে মেনে নেয়ার বা না নেয়ার অধিকার কারো আছে কি নেই সেটা আমি জানিনা। তবে আমি তোমাকে চিনি। তুমি অন্তত সন্দেহ প্রবন । কখনোই কাউকে বিশ্বাস করোনা। সেই তুমি মেরিনকে আপন করে নিয়েছো। এমনি এমনি নাউনি । মোক্ষম কারন আছে। কি সেটা জানিনা। তবে আছে। দেখি কি সেই কারন। তবে এর থেকেও বড় ১টা কারন আছে। মেয়েটা সত্যিই আমার ছেলেটাকে ভালোবাসে। হয়তো নিরার থেকেও বেশি। তবে আমার ১টাই ভয়। আমার ছেলে তার বনপাখিকে ভীষন ভালোবাসে। জানিনা নীড়-মেরিনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি? ঘৃণার সম্পর্ক কি সারাজীবন বয়ে চলা সম্ভব ?
.
দুপুরে…
নীলিমা টেবিল সাজাচ্ছে আর হাসছে।
নুপুর : খালাম্মা তুমি আজকে এতো খুশি?
নীলিমা : এখন যে ঘটনাটা ঘটবে তা ইতিহাসে বিরল। নিহাল আহমেদ চৌধুরী মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে খাইয়ে দিবে।
নুপুর : কি বলছো কি খালাম্মা?
নীলিমা : হামমম। যাও সবাইকে ডাক দাও।
নীড় মেরিন নিচে নামছে । নীড় ধরতে চাইলে মেরিন ধরতে দিলোনা। নিজেই নামলো। মেরিন না করাতে ক্ষেপে গিয়ে আর হেল্পই করতে যায়নি।
নীড় মনে মনে : এই অতৃপ্ত আত্মাটা সিড়ি থেকে ধপাস করে পরে যেতো। ভালো হতো। খুশি হতাম। একদম ধরবো না।
ঠিক তখনই মেরিন পরে যেতে নিলো। আর নীড় খপ করে ধরে নিলো।
নীড় : 😒।
মেরিন : এভাবে দেখছেন কেন? ছারুন আমি নামতে পারবো।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে বাকি সিড়ি গুলো নামলো। মেরিনকে চেয়ারে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : মামনি। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা : সে আর নতুন কি বাবা? তোমার তো পারলে ২৪ঘন্টায় ৪৮ঘন্টাই ক্ষুধা লাগে।
নীড় : তুমি কি আমাকে ইনডিরেক্টলি খোটা দিচ্ছো?
নীলিমা : নট অ্যাট অল।
মেরিন : মামনি… বাবা কোথায়? আমাকে খাইয়ে দেবার ভয়ে কি লুকিয়ে পরেছে নাকি? বলো যে খাইয়ে দিতে হবেনা। সবাই একসাথে বসে খাই। তাহলেই হবে।
নিহাল : চৌধুরীরা ভীতু নয়। আর কথা দিয়ে কথা ভাঙেও না।
বলেই নিহাল চেয়ার টেনে মেরিনের বা দিকে বসলো। কারন ডান দিকে নীড় ।
নিহাল খাবারের প্লেট টা হাতে নিয়ে ১টা লোকমা মেরিনের দিকে এগিয়ে দিলো ।
মেরিন ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে কবির প্রায়ই নিরাকে খাইয়ে দেয়। এখনো দেয়। অথচ মেরিনকে ছোটোবেলাতেও খাইয়ে দেয়নি ।
নিহাল : কি হলো? হা করো।
মেরিন : …
নিহাল মুচকি ১টা হাসি দিয়ে
বলল : মুখ খোলো। খেয়ে নাও।
মেরিনের পক্ষে চোখের পানিগুলোকে আর ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। কিন্তু চোখের পানিগুলো কাউকে দেখানোও সম্ভব না।
আর কিছু না ভেবে। ছুটে ওপরে নিজের রুমে চলে গেলো।
নিহাল : কি হলো? ওভাবে চলে গেলো কেন?
নীড় : কারন ও বোকা। বোকা না হলে কি মুখের সামনে খাবার ফেলে কেউ চলে যায়?
নিহাল : নীড়… গিয়ে দেখো তো নীলা কি হলো…
নীলিমা : হামম দেখছি।
নীলিমা যেতে নিলো। তখন দেখলো মেরিন নিচে নামছে । শার্ট-প্যান্ট আর চোখে কালো চশমা পরে। হাতে গাড়ির চাবি।
নীলিমা : একি তুই কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : দরকারী কাজ পরে গিয়েছে ।
বলেই মেরিন দেরি না করে বেরিয়ে গেলো ।
নিহাল-নীলিমা বেশ অবাক হলো।
নিহাল : কি হলো কি?
নীলিমা : মেয়েটা এভাবে চলে কেন গেলো?
নীড় : কারন মেয়েটা ভীতু। নিজের দুর্বলতা কাউকে দেখাতে চায়না। 😴।
নিহাল : মানে?
নীড় : কিছুনা।
বলেই নীড়ও বেরিয়ে গেলো। গাড়ি নিয়ে ।
নীড় : আই থিংক আমি জানি তুমি কোথায়?
.
নীড় মিরপুর পৌছালো। দেখলো মেরিনের গাড়িটা আছে।
নীড় : আই জাস্ট নিউ ইট …
নীড় ভেতরে ঢুকলো।
নার্স : স্যার ভালোই হয়েছে আপনি এসেছেন।
নীড় : কেন কি হয়েছে?
নার্স : স্যার…. মেরিন ম্যাম কনিকা ম্যামকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করিয়েছে। বাট সেটার কোনো প্রয়োজন ছিলোনা ।
নীড় : আমি দেখছি…
নীড় কনিকার রুমে গেলো। দেখলো কনিকা ঘুমিয়ে আছে। আর মেরিন নিচে বসে কনিকার হাতের ওপর নিজের মাথা কাত করে রেখেছে।
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। মেরিন নীড়ের উপস্থিতি বুঝতে পারলো । নিজের চোখের পানি মুছে নিলো । নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথা তুলল।
মেরিন : আপনি … আজকে তো আপনার অফ ডে …
নীড় মেরিনের ২গালে হাত রাখলো। মেরিনের চোখের দিকে তাকালো। মেরিন চোখটা নামিয়ে নিলো।
নীড় : জানিনা কেন আর কিভাবে তোমাকে একটুখানি বুঝতে শিখে গিয়েছে । নিজের অনুভূতি এভাবে আটকে রাখতে নেই। দম আটকে মারা যাবে। মরে গেলে আমাকে ভালোবাসবে কিভাবে ? হামমম।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।
নীড় কিছুনা বলে ধীরে ধীরে মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো । কিছুক্ষনপর মেরিন শান্ত হলো ।
নীড় : ব্যাস কান্না শেষ? আমি তো ভাবলাম আরো অনেকক্ষন কাদবে। নট ডান ইয়ার। এটা তো ধোকা। তোমাকে আরেকটু কান্না করতেই হবে। তোমার জন্য জাস্ট ২বার মুখে দিয়ে চলে আসতে হয়েছে। আরেকটু কান্না করো তারপর বাসায় চলো।
মেরিন নীড়ের বুক থেকে মাথা তুলে নীড়ের সারামুখে কিস করে দিলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ…
নীড় : 😭। হইসে বইন এবার বাসায় চল । আর … থাক বললাম না …
.
নীড়-মেরিন বাসায় পৌছালো। ২জনকে ঢুকতে দেখে নিহাল
বলল : দেখো আমার ছেলেটা ঠিকই মেরিনকে নিয়ে এসেছে।
নীলিমা : আনতেই পারে। ওর বউ। হুহ । দেখি সরো।
নীলিমা মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নীড় : ওহ মাই ফুডস।। আম কামিং…
বলেই নীড় ছুটে খাবার টেবিলের কাছে গেলো।
নীলিমা : কাজ শেষ ময়নাপাখি?
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : এখন চল খাবি চল। সবাই একসাথে খাবো ।
মেরিন : তোমরা খাওনি ?
নিহাল : এটা খান বাড়িনা। চৌধুরী বাড়ি। এখানে সবাই বাসায় থাকলে একসাথে খাবার খায়। নাউ কাম ফাস্ট।
নীলিমা : চল।
সবাই বসলো। নিহাল বসলো মেরিনের পাশে। আবার খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে এক লোকমা মেরিনের মুখের সামনে তুলে ধরলো।
নিহাল : হা করো… 😊…
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে একই প্লেট থেকে একটু খাবার নিয়ে নিহালের মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
মেরিন : নাও এবার খাওয়াও।
নিহাল মেরিনকে খাইয়ে দিলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 15
writer : Mohona
.
নীড় : ১০লাইন বেশি বোঝে ।
নীড় রুমে গেলো। দেখলো মেরিন বসে বসে কিছু ভাবছে ।
নীড় : ঘড়ি দেখেছো? কয়টা বাজে…
মেরিন : হামমম… কটা বা… ১১টা। খুব বেশি বাজেনা ।
নীড় : তোমার জন্য বেশিই বাজে । ঘুমিয়ে পরো।
মেরিন : …
নীড় : কিছু বললাম তো নাকি?
মেরিন : হামম।
নীড় : জাস্ট হামম?!?!
মেরিন : মানে?
নীড় : নাথিং।
বলেই নীড় মেরিনের পাশে শুয়ে পরলো। মেরিন হাতের ওপর মাথা রেখে নীড়কে দেখতে লাগলো।
নীড় মনে মনে : অতৃপ্ত আত্মাটা এতো সহজে ঘুমিয়ে পরলো ? হসপিটালেও তো ৫দিন ধরে ড্রামা করেছে । আজকে নো ড্রামা। ১টা বার দেখা দরকার…
নীড় ১চোখ খুলল। দেখলো মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নীড় চমকে গেলো।
নীড় : ঘঘঘুমাও নি কেন?
মেরিন : গত কয়েকটা দিন ধরে আপনাকে মন ভরে দেখতে পারিনি। তাই আপনাকে দেখছি। ২চোখ ভরে দেখছি…
নীড় : আমি ঘুমাবো ।
মেরিন : তো ঘুমান । আপনাকে তো জেগে থাকতে বলিনি।
নীড় : এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকলে কি ঘুমানো যায় ? চুপচাপ ঘুমাও।
মেরিন : এমন করেন কেন ? আমি ডিস্টার্ব করবোনা আপনাকে । আপনি ঘুমান।
নীড় : জাস্ট শাট আপ। ঘুমাও।
মেরিন : আপনি আমাকে চোখ রাঙাচ্ছেন ?
নীড় : হ্যা। তো?
মেরিন : ভালো লাগলো।
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
বলেই নীড়কে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো। নীড়ও ১হাত আগলে নিলো । জানেনা কেন এমনটা করলো শুধু জানলো করলো।
.
২দিনপর…
নীলিমা : কিছু বলবে?
নিহাল : তোমার এমন কেন মনে হচ্ছে যে আমি তোমাকে কিছু বলবো ?
নীলিমা : ৩০বছর ধরে সংসার করছি। এতোটুকু বুঝবোনা?
নিহাল : তুমি ভুল বুঝছো। আমার কিছু বলার টলার নেই ।
নীলিমা : ওকে। বিশ্বাস করলাম ।
মনে মনে : কিছুতো ওর মাথায় চলছে। কিন্তু কি? বেরিয়ে যাবে পেট থেকে। খাবার পেটে পরলেই সব বের করবে পেট থেকে। খাদক কোথাকার।
নিহাল : এই কি এতো ভাবছো? কয়টা খেতে দাও ।
নীলিমা : বসো দিচ্ছি।
নিহাল খাবার খাচ্ছে। সাথে নীলিমাও । নীড়ও নিচে নেমে এলো ।
নীলিমা : আয় বোস। খেয়েনে ।
নীড় : হামম।
৩জন বসে খাচ্ছে।
নিহাল : নীড় …
নীড় : বলো।
নিহাল একদমে বলে
দিলো : তোমার বউ এখন কেমন আছে ?
নীড়ও একদমে বলে
দিলো : ভালোই আছে। একটু উইকনেস আছে।
নীলিমা ফিক করে হেসে দিলো।
নিহাল-নীড় : হুয়াট সো ফানি ? 😡।
নীলিমা : কিছুনা।
নীলিমা মুখ টিপে হাসছে ।
.
৫দিনপর…
নীড়ের ঘুম ভাংলো। দেখে মেরিন অফিসের পোশাকে। নীড় তারাতারি উঠে বসলো।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হ্যা আমি ।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো ।
মেরিন : অফিস।
নীড় : অফিস ?
মেরিন : এমন করে রিঅ্যাক্ট করছেন যেন এই ওয়ার্ডটা আর কখনো শুনেননি।
নীড় বেড থেকে নেমে মেরিনকে টেনে এনে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : ১টা থাপ্পর মারবো তোমাকে যদি এখান থেকে ১পাও নামো । স্টুপিড।
মেরিন : দেখুন অনেক বড় ১টা কনট্র্যাক্ট নিয়েছি ১মাস হয়ে গেলো। ফিল করার কথা নেক্সট উইক । আই নিড টু নো যে কাজের প্রগ্রেস কতোদূর । জন একা সামলাতে পারবেনা। আর এমনিতেও এতোদিন শুয়ে বসে থেকে পিঠ আর সারা শরীর ব্যাথা হয়ে গিয়েছে ।
নীড় : আমি কিছু শুনতে চাইনা। আমি যখন বলেছি তখন তুমি নামবেনা।
মেরিন : কিন্তু আমি আপনার কথা শুনবো কেন ?
নীড় : মানে কি এর?
মেরিন : মানেটা খুব সহজ। আপনি আমাকে বাধা কেন দিচ্ছেন জানতে পারি?
নীড় : কারন তুমি অসুস্থ।
মেরিন : সো হুয়াট ? তাতে আপনার কি ? আমার কিছু হয়ে গেলে তো আপনার পথের কাটা সরে যাবে।
নীড় : দেখো তোমার কিছু হলে তোমার দাদুভাই আমাকে ছেরে কথা বলবেনা ।
মেরিন : আমার দাদুভাই আমি বুঝবো । দাদুভাইকে আমি সামলে নিবো। আসছি।
মেরিন বের হতে নিলো আর তখন নীলিমা রুমে ঢুকলো।
নীলিমা : একি কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : অফিসে মামনি।
নীলিমা : মার খাবি । কোথাও যেতে হবেনা।
মেরিন : মামনি অনেক কাজ পরে আছে। আম…
নীলিমা : থাকুক কাজ। তুই কোথাও যাবিনা। না মানে না। চুপচাপ বোস এখানে।
মেরিন : মামনি আমি তারাতারি চলে আসবো। যাবো আর আসবো। আর আসার সময় আম্মুকে দেখে আসবো। আম্মুকে দেখিনা কতোদিন হয়ে গেলো।
নীলিমা : কোথাও যাবিনা তুই।।। যদি মাকে দেখতে মন চায় তবে নীড় গিয়ে তোর মা কে নিয়ে আসবে । এখানে সবার সাথে থাকবে।
মেরিন : না মামনি। আসলে আম্মু এখানে এলে অবাক হবে। ভয়ও পাবে। তাহলে দেখা যাবে নীড় এতোদিন ধরে যা করেছে সব পানিতে যাবে।
নীলিমা : যতোযাই বলিস আমি যেতে দিবোনা। তপু তোকে বেডরেস্টে থাকতে বলেছে । তুই কোথাও যাবিনা। অফিসে লস হলে হোক।
মেরিন : মামনি মামনি আমার লক্ষি মামনি। আমার যেতে হবে। আম…
নিহাল : কাকে কি বলছো নীলা? ওর কাছে কি কারো কোনো কথার মূল্য আছে? নাকি কারো স্নেহের মূল্য আছে? লেট হার গো। যে নিজের ভালো বোঝেনা তাকে কিছুই বলাই বেকার। ভাব খানা এমন যে সে অফিস না গেলে তাকে কেউ খেতে দিবেনা।
মেরিন নিহালের সামনে গিয়ে দারালো ।
মেরিন : তুমি খাওয়াবে আমাকে?
নিহাল : কেন অতোটুকু সামর্থ্য কি আমার নেই?
মেরিন : সেই কথা তো আমি মিন করিনি। আমি যাবোনা অফিসে যদি… আজকে ৩বেলা তুমি আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দাও…
নিহাল : 😒।
মেরিন : আচ্ছা ৩বেলা না হোক। অন্তত দুপুরেও যদি খাইয়ে দাও। তবুও আমি যাবোনা।
নিহাল : 😒
নীলিমা : ঠিক হয়েছে।
নিহাল : হুহ…
বলেই নিহাল রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : আসছি মামনি…
তখন আবার নিহাল রুমে ঢুকলো।
নিহাল : এই মেয়ে আমি কি তোমাকে না করেছি যে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবোনা? যত্তোসব।
বলেই নিহাল আবার চলে গেলো। নীলিমা হা হা করে হেসে উঠলো।
নীলিমা : লোকটা না একে বারেই পাগল। এখন কোথাও যাবিনা তো?
মেরিন : কি আর করার। ভার্চুয়ালি কাজটা করতে হবে। মামনি … আজকে আমার খাবার আর ওপরে পাঠিও না কেমন? নিচে সবার সাথে বসে খাবো।
নীলিমা : আচ্ছা
নীলিমা চলে গেলো।
মেরিন ঘুরে দেখে নীড় ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।
মেরিন : কি হলো?
নীড় : তোমাকে বলবো কেন? অতৃপ্ত আত্মা কোথাকার।
একটুপর ৪জন একসাথে ব্রেকফাস্ট করলো।
.
কিছুক্ষনপর …
নিহাল বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছে।
নীলিমা : নিহাল আহমেদ চৌধুরী তবে মেরিনকে ছেলের বউ হিসেবে মেনেই নিলো।
নিহাল : মেরিন কে মেনে নেয়ার বা না নেয়ার অধিকার কারো আছে কি নেই সেটা আমি জানিনা। তবে আমি তোমাকে চিনি। তুমি অন্তত সন্দেহ প্রবন । কখনোই কাউকে বিশ্বাস করোনা। সেই তুমি মেরিনকে আপন করে নিয়েছো। এমনি এমনি নাউনি । মোক্ষম কারন আছে। কি সেটা জানিনা। তবে আছে। দেখি কি সেই কারন। তবে এর থেকেও বড় ১টা কারন আছে। মেয়েটা সত্যিই আমার ছেলেটাকে ভালোবাসে। হয়তো নিরার থেকেও বেশি। তবে আমার ১টাই ভয়। আমার ছেলে তার বনপাখিকে ভীষন ভালোবাসে। জানিনা নীড়-মেরিনের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি? ঘৃণার সম্পর্ক কি সারাজীবন বয়ে চলা সম্ভব ?
.
দুপুরে…
নীলিমা টেবিল সাজাচ্ছে আর হাসছে।
নুপুর : খালাম্মা তুমি আজকে এতো খুশি?
নীলিমা : এখন যে ঘটনাটা ঘটবে তা ইতিহাসে বিরল। নিহাল আহমেদ চৌধুরী মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীকে খাইয়ে দিবে।
নুপুর : কি বলছো কি খালাম্মা?
নীলিমা : হামমম। যাও সবাইকে ডাক দাও।
নীড় মেরিন নিচে নামছে । নীড় ধরতে চাইলে মেরিন ধরতে দিলোনা। নিজেই নামলো। মেরিন না করাতে ক্ষেপে গিয়ে আর হেল্পই করতে যায়নি।
নীড় মনে মনে : এই অতৃপ্ত আত্মাটা সিড়ি থেকে ধপাস করে পরে যেতো। ভালো হতো। খুশি হতাম। একদম ধরবো না।
ঠিক তখনই মেরিন পরে যেতে নিলো। আর নীড় খপ করে ধরে নিলো।
নীড় : 😒।
মেরিন : এভাবে দেখছেন কেন? ছারুন আমি নামতে পারবো।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে বাকি সিড়ি গুলো নামলো। মেরিনকে চেয়ারে বসিয়ে দিলো ।
নীড় : মামনি। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা : সে আর নতুন কি বাবা? তোমার তো পারলে ২৪ঘন্টায় ৪৮ঘন্টাই ক্ষুধা লাগে।
নীড় : তুমি কি আমাকে ইনডিরেক্টলি খোটা দিচ্ছো?
নীলিমা : নট অ্যাট অল।
মেরিন : মামনি… বাবা কোথায়? আমাকে খাইয়ে দেবার ভয়ে কি লুকিয়ে পরেছে নাকি? বলো যে খাইয়ে দিতে হবেনা। সবাই একসাথে বসে খাই। তাহলেই হবে।
নিহাল : চৌধুরীরা ভীতু নয়। আর কথা দিয়ে কথা ভাঙেও না।
বলেই নিহাল চেয়ার টেনে মেরিনের বা দিকে বসলো। কারন ডান দিকে নীড় ।
নিহাল খাবারের প্লেট টা হাতে নিয়ে ১টা লোকমা মেরিনের দিকে এগিয়ে দিলো ।
মেরিন ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে কবির প্রায়ই নিরাকে খাইয়ে দেয়। এখনো দেয়। অথচ মেরিনকে ছোটোবেলাতেও খাইয়ে দেয়নি ।
নিহাল : কি হলো? হা করো।
মেরিন : …
নিহাল মুচকি ১টা হাসি দিয়ে
বলল : মুখ খোলো। খেয়ে নাও।
মেরিনের পক্ষে চোখের পানিগুলোকে আর ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। কিন্তু চোখের পানিগুলো কাউকে দেখানোও সম্ভব না।
আর কিছু না ভেবে। ছুটে ওপরে নিজের রুমে চলে গেলো।
নিহাল : কি হলো? ওভাবে চলে গেলো কেন?
নীড় : কারন ও বোকা। বোকা না হলে কি মুখের সামনে খাবার ফেলে কেউ চলে যায়?
নিহাল : নীড়… গিয়ে দেখো তো নীলা কি হলো…
নীলিমা : হামম দেখছি।
নীলিমা যেতে নিলো। তখন দেখলো মেরিন নিচে নামছে । শার্ট-প্যান্ট আর চোখে কালো চশমা পরে। হাতে গাড়ির চাবি।
নীলিমা : একি তুই কোথায় যাচ্ছিস?
মেরিন : দরকারী কাজ পরে গিয়েছে ।
বলেই মেরিন দেরি না করে বেরিয়ে গেলো ।
নিহাল-নীলিমা বেশ অবাক হলো।
নিহাল : কি হলো কি?
নীলিমা : মেয়েটা এভাবে চলে কেন গেলো?
নীড় : কারন মেয়েটা ভীতু। নিজের দুর্বলতা কাউকে দেখাতে চায়না। 😴।
নিহাল : মানে?
নীড় : কিছুনা।
বলেই নীড়ও বেরিয়ে গেলো। গাড়ি নিয়ে ।
নীড় : আই থিংক আমি জানি তুমি কোথায়?
.
নীড় মিরপুর পৌছালো। দেখলো মেরিনের গাড়িটা আছে।
নীড় : আই জাস্ট নিউ ইট …
নীড় ভেতরে ঢুকলো।
নার্স : স্যার ভালোই হয়েছে আপনি এসেছেন।
নীড় : কেন কি হয়েছে?
নার্স : স্যার…. মেরিন ম্যাম কনিকা ম্যামকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করিয়েছে। বাট সেটার কোনো প্রয়োজন ছিলোনা ।
নীড় : আমি দেখছি…
নীড় কনিকার রুমে গেলো। দেখলো কনিকা ঘুমিয়ে আছে। আর মেরিন নিচে বসে কনিকার হাতের ওপর নিজের মাথা কাত করে রেখেছে।
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। মেরিন নীড়ের উপস্থিতি বুঝতে পারলো । নিজের চোখের পানি মুছে নিলো । নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথা তুলল।
মেরিন : আপনি … আজকে তো আপনার অফ ডে …
নীড় মেরিনের ২গালে হাত রাখলো। মেরিনের চোখের দিকে তাকালো। মেরিন চোখটা নামিয়ে নিলো।
নীড় : জানিনা কেন আর কিভাবে তোমাকে একটুখানি বুঝতে শিখে গিয়েছে । নিজের অনুভূতি এভাবে আটকে রাখতে নেই। দম আটকে মারা যাবে। মরে গেলে আমাকে ভালোবাসবে কিভাবে ? হামমম।
মেরিন নীড়কে জরিয়ে ধরলো। হাউমাউ করে কাদতে লাগলো।
নীড় কিছুনা বলে ধীরে ধীরে মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো । কিছুক্ষনপর মেরিন শান্ত হলো ।
নীড় : ব্যাস কান্না শেষ? আমি তো ভাবলাম আরো অনেকক্ষন কাদবে। নট ডান ইয়ার। এটা তো ধোকা। তোমাকে আরেকটু কান্না করতেই হবে। তোমার জন্য জাস্ট ২বার মুখে দিয়ে চলে আসতে হয়েছে। আরেকটু কান্না করো তারপর বাসায় চলো।
মেরিন নীড়ের বুক থেকে মাথা তুলে নীড়ের সারামুখে কিস করে দিলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ আই লাভ ইউ…
নীড় : 😭। হইসে বইন এবার বাসায় চল । আর … থাক বললাম না …
.
নীড়-মেরিন বাসায় পৌছালো। ২জনকে ঢুকতে দেখে নিহাল
বলল : দেখো আমার ছেলেটা ঠিকই মেরিনকে নিয়ে এসেছে।
নীলিমা : আনতেই পারে। ওর বউ। হুহ । দেখি সরো।
নীলিমা মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নীড় : ওহ মাই ফুডস।। আম কামিং…
বলেই নীড় ছুটে খাবার টেবিলের কাছে গেলো।
নীলিমা : কাজ শেষ ময়নাপাখি?
মেরিন : হামমম।
নীলিমা : এখন চল খাবি চল। সবাই একসাথে খাবো ।
মেরিন : তোমরা খাওনি ?
নিহাল : এটা খান বাড়িনা। চৌধুরী বাড়ি। এখানে সবাই বাসায় থাকলে একসাথে খাবার খায়। নাউ কাম ফাস্ট।
নীলিমা : চল।
সবাই বসলো। নিহাল বসলো মেরিনের পাশে। আবার খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে এক লোকমা মেরিনের মুখের সামনে তুলে ধরলো।
নিহাল : হা করো… 😊…
মেরিন মুচকি হাসি দিয়ে একই প্লেট থেকে একটু খাবার নিয়ে নিহালের মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
মেরিন : নাও এবার খাওয়াও।
নিহাল মেরিনকে খাইয়ে দিলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 16
writer : Mohona
.
নিহাল মেরিনকে খাইয়ে দিলো । খাওয়া দাওয়ার পর নীড় মেরিনকে রুমে নিয়ে গেলো।
নীড় : ধরো মেডিসিনগুলো খেয়ে নাও।
মেরিন চুপটি করে খেয়ে নিলো। নীড় অবাক হলো।
নীড় মনে মনে : একবারেই আমার কথা শুনলো। স্বপ্ন দেখছি না তো…. দিবাস্বপ্ন । এখন তো সন্ধ্যা। সন্ধ্যাস্বপ্ন হয়তো ।
মেরিন : নীড়… একটু এখানে আসুন না।
নীড় গেলো।
মেরিন : বসুন।
নীড় : 😒…
মেরিন নীড় হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিলো। এরপর নীড়ের কোলে মাথা রা়খলো ।
নীড় : ঘুম এলে ঠিক মতো ঘুমাও। আমার কোলে মাথা রাখার কি প্রয়োজন?
মেরিন কিছু বললনা। চুপ করে রইলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : হামমম।
নীড় : তুমি কবির আংকেলকে খুব ভালোবাসো তাইনা…
কথাটা শুনে মেরিন উঠে বসলো ।
মেরিন : কি বললেন আপনি? রিপিট প্লিজ।
নীড় মেরিনের গালে হাত রাখলো।
নীড় : এতে লুকোচুরির কিছু নেই । পৃথিবীতে এমন কোনো সন্তান নেই যে বাবাকে ভালোবাসেনা। বিশেষ করে মেয়েরা তো নয়ই। তুমি তোমার বাবাকে খুব ভালোওবাসো । আর তার স্নেহ-ভালোবাসাকে মিসও করো ।
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো ।
মেরিন : নীড়… মিস হয়তো করতাম কবির ফয়সাল খানের স্নেহ-আদর-ভালোবাসাকে । কিন্তু… যেই স্নেহ-আদর-ভালোবাসা আমি কখনো পাইনি সেই স্নেহ-আদর-ভালোবাসা কে মিস করার কোনো কারন নেই । আর রইলো কথা মিস্টার খানকে ভালোবাসার কথা… আপনি আমাকে আর কতোটা ঘৃণা করেন… তারথেকে হাজারগুন বেশি আমি মিস্টার খানকে করি। শুধু ১টা অপেক্ষা। আর সেটা হলো আম্মুর সুস্থ হওয়ার। একপর মিস্টার এন্ড মিসেস খান , নিরা , নিলয় , নিলয়ের বাবা মনির …এদের সাথে কি হবে তা ভেবে রেখেছি…
বলেই মেরিন বেলকনিতে চলে গেলো।
.
৩দিনপর …
নীলিমা ঘুম থেকে উঠে দেখে মেরিন ব্রেকফাস্ট বানিয়ে ফেলেছে ।
মেরিন : গুড মর্নিং মামনি …
নীলিমা : তুই কিচেনে পা রেখেছিস কেন বলতো?
মেরিন : আর সম্ভবনা আমার পক্ষে ওভাবে রোগী হয়ে বসে থাকা। বসে থাকতে থাকতে আমি অসুস্থ হয়ে যাবো । কাজ না করলে আমি অসুস্থ হয়ে পরি । তাই আজকে থেকে আমার কাজ শুরু ।
নীলিমা : কিন্তু …
মেরিন : কোনোকিন্তু না।
নীলিমা : তুই অসুস্থ হয়ে পরবি ।
মেরিন : একদম না । তুমি যাও গিয়ে বাবা-ছেলের ঘুম ভাঙাও।
নীলিমা : নিহাল তো মর্নিং ওয়াকে চলে গিয়েছে ।
মেরিন : ওহ । আজকে এতে দেরিতে …
নীলিমা : এমনিতেই।
মেরিন : তাহলে নীড়রে তুলে ফেলো।
নীলিমা : মাফ কর আমাকে। তোর বরকে আমি তুলতে পারবোনা। ওকে ঘুম থেকে তোলা আর … থাক বললামনা। তুই তোল ওকে।
মেরিন : হামমম।
মেরিন হাতের কাজ শেষ করে রুমে গেলো। দেখে নীড় ঘুমিয়ে আছে ।
মেরিন : মেয়েদের মতো বেশি ঘুমায় । দেখাচ্ছি ।
বলেই মেরিন নীড়ের কানে ইয়ারফোন ঢুকিয়ে দিয়ে গান প্লে করলো। নীড় ভয় পেয়ে উঠে বসলো। ঘুমের মধ্যে যে কারো সাথে এমন হলে ভয় পাবেই।
নীড় : ওহ মাই গুডনেস।
মেরিন : ভয় পেলেন বুঝি জান?
নীড় কান থেকে ইয়ারফোন খুলে ছুরে ফেলল।
নীড় : ডু ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া … যে ঘুমের মধ্যে এমন করলে ভয়ে অনেকের হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে?
মেরিন : নো। আই হ্যাভ নো আইডিয়া। কারন আমার হার্ট এতো দুর্বল নয়।
নীড় : স্টুপিড গার্ল।
বলেই নীড় রেগেরুগে ওয়াশরুমে চলে গেলো। মেরিনও অফিস যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে নামলো।
.
২০মিনিট পর …
বাবা-ছেলে রেডি হয়ে নামলো। গিয়ে খেতে বসলো।
নীড় : একি আজকেও কি আবার ড্রামা করার ইচ্ছা আছে নাকি? আবারও অফিস যাবার ভুত উঠেছে নাকি ?
মেরিন : নীড় সিরিয়াসলি অফিসে অনেক কাজ পরে আছে।
নীড় : থাকুক। তুমি যাবেনা । নো মিনস নো।
মেরিন : নীড় আপনি আমাকে বাধা দিচ্ছেন?
নীড় : হ্যা দিচ্ছি ।
মেরিন : বাট আমি শুনবোনা ।
নীড় : তুমি আমার কথাও শুনবেনা ?
মেরিন কঠোরভাবে
বলল : না …
নীড় আর কিছু বললনা । নিহাল কিছু বলতে নিলে নীলিমা বাধা দিলো। ব্রেকফাস্ট করে মেরিন বেরিয়ে গেলো। আর কেবল কফি খেয়ে নীড়ও বেরিয়ে গেলো ।
নিহাল : তুমি আমাকে কিছু বলতে দিলেনা কেন ?
নীলিমা : নিহাল … ব্যাপারটা ওদের।
নিহাল : মেয়েটা তো বাড়ির বউ নাকি?
নীলিমা : তোমার ছেলে অধিকার নিয়ে আটকালো না কেন? কিসের এতো রাগ ? কিসের এতো ইগো? যেভাবেই হোক বিয়েটা তো হয়েছে। আর এটা তুমিও জানো আমিও জানি যে বিয়ে যখন হয়েছে তখন নীড় আর কখনো ২য় বিয়ে করবেনা। মুখে যাই বলুক । বিয়ের পর কি ভালোবাসা যায়না? তাও এমন ১টা মেয়েকে যে ওকে পাগলের মতো ভালোবাসে …
.
বিকালে…
মেরিন মিরপুর পৌছালো। আম্মুকে দেখে নীড়কে পিক করে বাসায় ফিরবে।
নার্স : হ্যালো ম্যাম।
মেরিন : হ্যালো। আম্মু কেমন আছে?
নার্স : ভালো আছে।
মেরিন : আম্মু আর নীড় কোথায় ?
নার্স : নীড় স্যার তো আজকে আসেনি ম্যাম।
মেরিন : কি ?
নার্স : জী ম্যাম।
মেরিন : আম্মু কোথায়?
নার্স : খাবার খাচ্ছে ডলির হাতে । ছাদে।
মেরিন ছাদে গেলো। তবে মায়ের সামনে গেলোনা। যদি রিঅ্যাক্ট করে । বেশ কিছুক্ষন মাকে দেখে মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
নীড় : তুমি খুব সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলেছো। থ্যাংক ইউ ।
নার্স : স্যার… মেরিন ম্যামকে মিথ্যা বলেছি। অসময়ে আমার প্রানটা না যায়।
নীড় : আরে কিচ্ছু হবেনা। ও জানবেই না । আর তুমিও ভয় পেয়োনা। বুঝিয়াছো।
নার্স : স্যার তবুও।
নীড় : মেরিন যদি জানেও তবে আমি আছি তো। তোমার কিছু হবেনা। আই প্রমিস । নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কখনো নিজের প্রমিস ব্রেক করেনা । ওকে নাউ বাই । ভালো আন্টির খেয়াল রেখো । কালকে আবার আসবো।
নীড় বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন ড্রাইভ করছে।
মেরিন : নীড় এখানে আসেনি? তবে গেলো কোথায়? নিরার কাছে? কিন্তু নিরার কাছে গেলে তো খবর পেতাম। না নীড় অনেক চালাক। হয়তো লুকিয়ে দেখা করতে পারে।
মেরিন খান বাড়িতে পৌছালো। দেখলো নিরা বসে বসে সালাদ খাচ্ছে।
নিরা : একি তুই এখানে?
মেরিন : আমার বাড়ি আমার ঘর… আমি যখন ইচ্ছা আসতে পারি। তোর বাপের কি? দাদুভাই… দাদুভাই…
মেরিন দাদুভাইয়ের রুমে গেলো।
দাদুভাই : দিদিভাই… তুমি?
মেরিন : হামম আমি।
দাদুভাই : তোমার না বেডরেস্টে থাকার কথা।
মেরিন : দাদুভাই… বাসায় শুয়ে বসে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পরেছি। আর তুমি এই শরীর নিয়ে এতোকিছু কি করে সামলাবে বলো তো… আমি থাকতে তুমি কেন কষ্ট করবে? কাজ করবে? হামমম?
দাদুভাই : গত ৪বছর ধরে তো আমার সব কাজ তুমি নিজের কাধে নিয়ে নিয়েছো। তুমি ছারা কিছুই পসিবল হতোনা।
কবির : হোতো কি হোতোনা সেটা কিভাবে বলতে পারো বাবা… এই মেয়েটা কে ছারা তো কখনো কারো হাতে কোনো দায়িত্ব দাওনি । নিজের ছেলেকেও দাওনি। যাই হোক সেটা তোমার ব্যাপার। তোমার প্রোপার্টি… তুমি যা খুশি করতে পারো। এই ধরো তোমার স্ন্যাকস ।
কবির চলে যেতে নিলো।
মেরিন : ওয়েট মিস্টার খান।
কবির দারালো।
মেরিন : দায়িত্ব তাকেই দেয়া হয় যে দায়িত্ব পালন করতে পারে। যে গুনটা সবার মধ্যে থাকেনা । আপনার মধ্যে তো ছিটা ফোটাও নেই।
কবির : হুয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট?
মেরিন : ভেরি সিম্পল । দায়িত্ব পালন আপনার দারা জাস্ট হয়না। সেটা প্রমানিত হয়েছে। ১বার নয় ২বার।
কবির চোখ গরম করে মেরিনের দিকে তাকালো। মেরিন খাবারের প্লেটটা কবিরের মুখ মূলত চোখের দিকে ছুরে মারলো।
কবির : আহ…
মেরিন : চোখ রাঙানো আমাকে দিতে আসবেননা। আর লজ্জা করেনা ঘুমের ঔষধ খাবারে মিলিয়ে আনতে?
দাদুভাই : ঘুমের ঔষধ ?
মেরিন : হ্যা দাদুভাই ঘুমের ঔষধ ।
দাদুভাই : ঘুমের ঔষধ কে মিশাবে আমার খাবারে?
মেরিন : যে এনেছে আর যার মুখের ওপর ছুরে মারলাম সেই।
কবির : একদম মিথ্যা কথা বলবে না বলে দিচ্ছি। আমি এমন কেন করবো? খাবারে কোনো ঘুমের ঔষধ ছিলোনা।
মেরিন : রিয়েলি?
কবির : হামমম।
মেরিন ১টা বাকা হাসি দিয়ে নিচে থেকে কিছুটা খাবার তুলল।
দাদুভাই : পরে যাওয়া খাবার গুলো তুললে কেন?
মেরিন : প্রমান করতে।
বলেই মেরিন আবার গুলো নিয়ে নিচে নামলো।
মেরিন : মিসেস খান… মিসেস খান।
সেতু ছুটে এলো।
সেতু : এভাবে ডাকছিস কেন?
মেরিন : আমার দাদুভাইয়ের খাবারে ঘুমের ঔষধ মিশাবে আর চুপ থাকবো?
সেতু : কি যা তা বলছিস…
মেরিন : এখনই বলছি।
বলেই মেরিন জোর করে খাবারগুলো সেতুর মুখে ঢুকিয়ে দিলো। জোর করে সবটা খাওয়ালো
মেরিন : ওয়াটার প্লিজ।
সেতুকে পানিও খাওয়ালো। এরপর চেয়ার টেনে সেতুর সামনে বসলো। সেতু চলে যেতে নিলে মেরিন পায়ের কাছে গুলি করলো।
মেরিন : ১চুলও নরলে একটু আগে মুখে যেভাবে খাবার গুজেছি ঠিক তেমনি গান গুজবো। দারিয়ে থাক।
কবির : বাবা তোমার নাতনি সবসময়ই …
দাদুভাই : ঠিক করে… চুপচাপ দারিয়ে থাকো। সেতু… সময় আছে । বলো সত্যিটা।
সেতু জানে না বললে নিস্তার নেই।
সেতু : হ্যা আমি ঘুমের ঔষধ মিশিয়েছিলাম। বাট কবির জানতো না।
কবির : সেতু… কেন এমন করলে?
সেতু : যেন বাবার টিপসই নিতে পারি। আর সম্পত্তির কিছু অংশ নিরার নামে করতে পারি।।
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো। আর এলোমেলো ভাবে গুলি করতে লাগলো।
মেরিন : কেউ এতোটা বোকা কি করে হতে পারে?
মেরিন সেতুর সামনে গিয়ে দারালো। গানের মাথাটা দিয়ে সেতুর মাথায় হালকা হালকা করে বারি দিতে দিতে
বলল : ১টা কথা মাথায় রাখিস। দাদুভাই চাইলেও খান বাড়ির মাটিও তো মেয়ের নামে দিতে পারবেনা। কারন সবটাই আমার নামে।
সেতু ঔষধের প্রভাবে ধিরিম করে পরে গেলো। তাও মেরিনের কাধের ওপর। মেরিন ১ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।
মেরিন : আসছি দাদুভাই।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন : হ্যালো জন…
জন : হ্যা ম্যাম।
মেরিন : নীড়কে পাচ্ছিনা। নীড় কোথায় খুজে বের করো।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন ফোন কেটে দিলো। ১০মিনিটপর জন ফোন করলো।
মেরিন : নীড় কোথায়?
জন : ম্যাম নীড় স্যার তো আরো ২ঘন্টা আগে বাসায় পৌছে গিয়েছে।
মেরিন : হুয়াট?
জন : জী ম্যাম।
মেরিন বাসায় পৌছালো। পৌছে দেখে নীড় রুমে বসে মনের সুখে পাস্তা খাচ্ছে আর টিভি দেখছে।
মেরিন : আপনি সারাদিন কোথায় ছিলেন?
নীড় যেন শুনতেই পায়নি । মেরিন টিভি বন্ধ করে দিলো।
নীড় : এটা কি হলো?
মেরিন : সারাদিন কোথায় ছিলেন? মিরপুরও যাননি… নিরার কাছেও যাননি। আপনি ছিলেনটা কোথায়?
নীড় : তোমাকে বলবো কেন?
মেরিন : আমাকে বলবেন কেন মানে? আপনি জানেননা আমাকে বলবেন কেন?
নীড় : না।
মেরিন : আপনাকে এই কাজের জন্য আফ…
নীড় মেরিনের কোমড় টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। মেরিন যথেষ্ট অবাক হলো।
নীড় : তুমি সাইকো আমি সাইকো। আমরা সাইকো জুটি। ছোটোবেলায় আমার জীবনে আসতে ভালোবাসতাম ট্রাস্ট মি । কিন্তু তুমি আমার জীবনে আসার আগে অন্য কেউ চলে এসেছে। সেটা আমার না তোমার দোষ। যাই হোক মিসেস সাইকো… তুমি আমার কথার অবাধ্য হবে তার বিনিময়ে আমি তোমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট অফ রাখবো। বিগ ডিল।
মেরিনের মন-মস্তিষ্ক কিছুই কাজ করছেনা ২টা কারনে।
প্রথম কারন নীড়ের বলা কথাগুলো। আর দ্বিতীয় কারন হলো নীড়ের এমন ব্যাবহার।
নীড় : এভাবে কি দেখছো?
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিতে চাইলো। নীড় অবাক হলো।
মেরিন : ছারুন আমি ফ্রেশ হতে যাবো?
নীড় : হামমম নিশ্চয়ই যাবে । কিন্তু আমি কি বলেছি মাথায় ঢুকেছে?
মেরিন : ….
নীড় : কি হলো ? বলো…
মেরিন : জানিনা।
বলেই মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
মেরিন : আমাকে কনট্রোল করার চেষ্টা করবেননা নীড়। আর না ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করবেন। ফলাফল ভা…
নীড় : ভালো হবেনা। তাইতো? দেখো তুমি যদি আরও ১৫দিন বেডরেস্টে না থাকো বাসা থেকে বের হও তবে আমি তোমার আম্মুর ট্রিটমেন্ট অফ রাখবো।
মেরিন : নীড় আমার জন্য আমার আম্মুকে কেন জরাচ্ছেন…?
নীড় : আমার জন্য আমার মামনি-বাবা কেন জরায়? এখন বলো রাজি কি রাজিনা ? রেস্টে থাকবে কি থাকবেনা?
মেরিন : থাকবো।
নীড় : প্রমিস?
মেরিন : আপনাকে কিছু বলা কসমের থেকেও বেশি।
বলেই মেরিন ওয়াশরুমে চলে গেলো।
নীড় : আমার ইগো স্যাটিসফাইড। আই জাস্ট প্রাউড অফ মি…
.
সকালে…
কেন যেন নীড়ের ঘুম ভোরের দিকেই ভেঙে গেলো। চোখ মেলে দেখে মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।
নীড় : আচ্ছা তুমি আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে থেকে কি পাও?
মেরিন : সেটা বলা যাবেনা। আর বললেও আপনি বুঝবেননা।
বলেই মেরিন নীড়ের সারামুখে চুমু দিলো।
মেরিন : যেদিন আমাকে ভালোবাসবেন সেদিন বুঝবেন।
বলেই মেরিন নীড়ের গলায় ১টা লকেট পরিয়ে দিলো।
নীড় : এটা কি?
মেরিন : দেখতেই তো পেলেন। এন্ড প্লিজ এটা গলা থেকে খুলবেন না। এটা আমার অনুরোধ ।
নীড় : আর যদি খুলে ফেলি তাহলে?
মেরিন : বেশি কিছুনা। আপনার নিরার মাথা থেকে মাথাটা খুলে ফেলবো।
বলেই মেরিন উঠে গেলো।
.
বিকালে…
মেরিন আর বাসা থেকে বের হয়নি। নীড় কনিকার কাছে গিয়েছে। চারদিক কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে । যা দেখে নীড়ের ভীষন আনন্দ হচ্ছে।
নীড় : ওহ ওয়াও বৃষ্টি পরবো। শুরুও হয়ে গেলো। এক কাজ করি ভালো আন্টিকে নিয়ে আসি। বৃষ্টি দেখলে হয়তো ভালো আন্টিরও ভালো লাগবে।
নীড় কনিকাকে নিয়ে এলো। বৃষ্টি দেখাতে।
নীড় : দেখো ভালো আন্টি কি দারুন ব….
বলতে বলতে নীড় থেমে গেলো কনিকার দিকে তাকিয়ে। কারন কনিকার চোখে মুখে থাকা আতঙ্ক আর ভয়।
নীড় : ভালো আন্টি। কি হয়েছে ? তোমাকে এমন লাগছে কেন? ভালো আন্টি …
কনিকা চিৎকার করে বলে
উঠলো : বন্ধ করো …. কেউ বৃষ্টি বন্ধ করো…
চিৎকার করতে করতে কনিকা রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।
নীড় অবাক হয়ে গেলো….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 17
writer : Mohona
.
নীড় অবাক হয়ে গেলো ।
নীড় : এটা কি হলো? ভালো আন্টি বৃষ্টি দেখে এভাবে রিঅ্যাক্ট করলো কেন? এতো আতঙ্কে পরে গেলো কেন? এতো ভয় পাচ্ছে কেন? মেরিনও তো এমন করে ভয় পায় …
নীড় ছুটে কনিকার রুমের বাহিরে গেলো।
নীড় : ভালো আন্টি .. ভালো আন্টি …
কনিকা দরজা খুললনা। নীড় চাবি দিয়ে লক খুলল। ভেতরে ঢুকলো । দেখে কনিকা হাটুতে মুখ গুজে বিরবির করে কি যেন বলছে। নীড় কিছুটা সামনে গেলো ।
শুনতে পেলো : আআআমার মেয়েকে ছেরে দাও… আমি তোমার কথা শুনবো। নিজেকে সপে দদদিবো … তবুও আমার মেয়েকে ছেরে দাও… ছেরে দাও। আমার মেয়েকে ছেরে দাও…
কথাগুলো শুনে নীড় বেশ অবাক হলো ।
নীড় : ভালো আন্টি …
নীড়ের কন্ঠ শুনে কনিকার ভয় আরো বেরে গেলো। অস্বাভাবিক আচরন করতে লাগলো। বাধ্য হয়ে নীড় ইনজেকশন দিলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই কনিকা ঘুমিয়ে পরলো । নীড় কনিকাকে শুইয়ে দিলো ।
নীড় : বৃষ্টিতে মা-মেয়ে ২জনেরই কেন ভয়? মেয়ে… মেরিন। ওহ নো ওদিকে তো মেরিনেরও তো মনে হয়.. আমার মোবাইলটা কোথায় গেলো ?
নীড় নিজের মোবাইলটা পাগলের মতো খুজতে লাগলো। অবশেষে পেলো। মেরিনকে ফোন করলো তবে মেরিন ধরলোনা । তখন নীড় আরো ভয় পেয়ে গেলো। নীলিমাকে ফোন করলো।
নীলিমা : হ্যা বল।
নীড় : মেরিন কোথায় ?।
নীলিমা : বাসায়ই । কিন্তু তোর কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
নীড় : আমার কন্ঠ নিয়ে পরে গবেষনা কোরো । এখন রুমে যাও। দেখো মেরিন কি করছে? আর গিয়ে আমাকে ফোন করো। এখনই যাও।
নীলিমা : হামমম।
নীড় ফোন রেখে দিলো ।
নীলিমা : বাহ… বউর জন্য এতো চিন্তা…
নীড় : ডলি … ডলি…
ডলি : ইয়েস স্যার।
নীড় : আমি বের হচ্ছি। ভালো আন্টির জ্ঞান ফেরার পর যদি অস্বাভাবিক আচরন করে তবে আমাকে ফোন করবে কেমন?
ডলি : স্যার এমন ঝড়-তুফানের মধ্যে কি করে যাবেন। অনেক রিস্কি। বৃষ্টিটা একটু কমে নিক। তারপরে যাবেন।
নীড় : তোমার কাছে সাজেশন চেয়েছি ? স্টুপিড …
নীড় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরলো।
.
নীলিমা রুমে গেলো। গিয়ে দেখে মেরিন কেমন যেন আচরন করছে। ব্ল্যাংকেট দিয়ে নিজেকে কভার করে কি যেন বিরবির করে বলছে।
নীলিমা : মেরিন … এই মেরিন… কি হয়েছে তোর? মেরিন…
নীলিমা মেরিনের কাছে গেলো। মেরিনকে ধাক্কাতে লাগলো। না মেরিন কোনো জবাব দিচ্ছেনা। নীলিমা ভয় পেয়ে গেলো।
নীলিমা : কি হলো মেয়েটার? নীড়কে ফোন করি …
নীলিমা নীড়কে ফোন করলো। ১বার রিং হতেই নীড় রিসিভ করলো।
নীড় : মামনি মেরিন?
নীলিমা সবটা বলল।
নীড় : ড্যাম ইট। এই ভয়টাই পাচ্ছিলাম। আসছি মামনি… ১০মিনিটের মধ্যে আসছি।
নীলিমা : এই বৃষ্টির মধ্যে বের হোসনা। যেখানে আছিস সেখানেই থাক।
নীড় : আম অন দ্যা ওয়ে মামনি… বাই।
নীড় রেখে দিলো।
নীলিমা : হ্যালো নীড় … নীড় … আল্লাহ ছেলেটা যেন ভালোয় ভালোয় ফিরে …
.
১০মিনিটপর …
নীড় পৌছালো। ছুটে রুমে গেলো মেরিনের কাছে । নীলিমা ওর কাছেই বসে আছে ।
নীলিমা : নীড় দে…
নীড় ছুটে মেরিনের কাছে গিয়ে বসে ওকে বুকে জরিয়ে নিলো।
নীলিমা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো ।
নীড় মেরিনের মাথায় ধীরে ধীরে হাত বুলাতে লাগলো ।
নীড় : কিচ্ছু হবেনা। আমি আছিতো … মেরিন … শান্ত হও। কিছু হবেনা । বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে । এখনই বন্ধ হয়ে যাবে। ভয় পায়না। আমি আছি তো … একদম চিন্তা কোরোনা … আম দেয়ার ফর ইউ …
ধীরে ধীরে মেরিন শান্ত হতে লাগলো। যতোক্ষন বৃষ্টি পরলো নীড় ততোক্ষন এভাবেই মেরিনকে বুকের মধ্যে জরিয়ে রাখলো। রাত হয়ে গেলো। মেরিনও চুপটি করে ঘাপটি মেরে রইলো ।
মেরিনের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। না আজকে কষ্ট পেয়ে কাদেনি মেরিন। আনন্দে কেদে দিয়েছে। তবে নীড় দেখার আগেই মুছে নিলো।
নীড় : ফিলিং বেটার ?
মেরিন মাথা নারিয়ে হ্যা বলল।
নীড় : পানি খেয়ে চুপটা করে শুয়ে থাকো …
মেরিন মাথা নারিয়ে না করলো ।
নীড় : একটু ঘুমালে ভালো লাগবো তোমার।
মেরিন : আমার এভাবেই ভালো লাগছে ।
নীড় : আমারও…
মেরিন : কিছু বললেন?
নীড় : না তো।
মনে মনে : আমার মাথা কি খারাপ হয়ে গিয়েছে নাকি? কি সব ভুলভাল বলছি?
মেরিন : নীড় …
নীড় : বলো …
মেরিন : আপনি কি একটুখানি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছেন?
নীড় একদম চুপ হয়ে গেলো। কি বলবে? সরাসরি না বলবে? কিন্তু আজকে না বলাটা এতো কষ্টকর মনে হচ্ছে কেন নীড় সেটাই বুঝতে পারছেনা।
নীড় মনে মনে : কিভাবে না টা বলি? যেভাবে আগে বলেছি সেভাবেই বলে দেই…
নীড় : ১জবাব কতোবার শুনতে চাও?
মেরিন : এটা আমার প্রশ্নের উত্তরনা। বলুন না … ভালোবেসে ফেলেছেন আমাকে?
নীড় : …
মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো।
মেরিন : জানি আমাকে ভালোবাসা যায়না । আসলে কি ১টা কুকুরও যদি কিছুদিন আমাদের সাথে থাকে তারপ্রতিও মায়া পরে যায়। আর আমি তো মানুষ। কবুল বলা বউ আপনার । জানেন আপনি না মিস্টার খানের থেকে অনেক ভালো স্বামী।
নীড় : ….
মেরিন : নীড়… আমাকে ১টা ছোট নীড় দিবেন? আমি তার নাম রাখবো নির্বন …
নীড় : …
মেরিন : আপনি আমাকে নির্বন দিন আমি আপনার জীবন থেকে চলে যাবো । যেদিনের নির্বনের অস্তিত্বের সন্ধান পাবো সেদিনই চলে যাবো। কথা দিলাম।
নীড় : …
মেরিন : ভালোবেসে সারাজীবন পাশে থাকার জন্য নাই বা কাছে টেনে নিলেন। কিন্তু ঘৃণা করে আমার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাকে কাছে টেনে নিন না … প্লিজ …
নীড় মেরিনকে ছেরে দিয়ে দারিয়ে গেলো ।
নীড় : আমি তোমাকে …. ঘৃণা করি।
বলেই নীড় ওয়াশরুমে চলে গেলো।
মেরিন : আপনি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছেন নীড় … আমি জানি ….
.
পরদিন …
নীড় : বৃষ্টি … কি রহস্য আছে এই বৃষ্টিতে? যে মা-মেয়ে ২জনই ভয় পায়? আমাকে জানতেই হবে…
ভাবতে ভাবতে ড্রাইভ করছে নীড়। মিরপুর পৌছালো। বাসার ভেতরে ঢুকে অবাক। কারন ঢুকে দেখে ডলি উল্টা ঝুলে আছে।
নীড় : ডলি… তোমার এই অবস্থা কে করলো?
মেরিন : আমি।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হামমম আমি।
নীড় : কিন্তু কেন?
মেরিন : কারন ও সেদিন আমাকে মিথ্যা কথা বলেছিলো যে আপনি এখানে আসেননি ।
নীড় : আরে আমিই ওকে বলেছিলাম যেন ও তোমাকে এই মিথ্য কথাটা বলে।
মেরিন : বলবে কেন…
নীড় : ওকে নিচে নামাও। আমি ওকে প্রমিষ করেছিলাম যে ওর কিছু হবেনা। আমি ওকে বাচিয়ে নিবো।
মেরিন : আপনি প্রমিস করেছিলেন। আমি তো না।
নীড় : মেরিন ওকে নামাও প্লিজ।
মেরিন : না।
নীড় : হাত জোর করে বলছি।
মেরিন : …
নীড় : এখন কি তোমার পাও ধরতে হবে?
মেরিন : …
নীড় মেরিনের পা ধরতে গেলো । মেরিন সরে গেলো।
নীড় : এখন সরে গেলে কেন?
মেরিন : আপনি আমার পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার আগে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো। তবে হ্যা আমাকে আর কখনো কোনো কিছুতে কনট্রোল করার চেষ্টা করবেননা।
নীড় : ভুল হয়ে গিয়েছে আমার। তোমার ভালোর কথা ভেবে। ভুলেই গিয়েছিলাম যে তোমার ওপর কারো কোনো অধিকার নেই। এমন কি আমারও নেই।
মেরিন : হামম। নেই ।
নীড় : থ্যাংক ইউ । আমাকে আমার জায়গাটা দেখানোর জন্য । আর ধারনাা ভুল প্রমান করার জন্য। আমি মনে করেছিলাম যে তুমি হয়তো সত্যিই আমাকে ভালোবাসো … বাট … আই ওয়াস রং । আসলে আমি তোমার জেদ। কেবল জেদ। তাছারা আর কিছুইনা ।
বলেই নীড় ওপরে চলে গেলো।
মেরিন বাকা হাসি দিয়ে ডলি নামালো ।
মেরিন : যাও রেস্ট করো।
ডলি নিজেয় রুমে গেলো ।
মেরিন : আপনাকে এমনই মানায় নীড়। অন্যভাবে না। আমার নীড়ের মুখে আমার জন্য ঘৃনাটাই মানায়। আমার প্রতি আপনার ঘৃণা আপনার সৌন্দর্য আরো বারিয়ে দেয়। আমাকে আনন্দ দেয় । বাট আপনার চেহারায় আমার জন্য কেবল কর্তব্য , দায়িত্ববোধ , কৃতজ্ঞতাবোধ , করুনা … এগুলো আমার দেখতে ভালো লাগেনা । আপনার ঘৃণাকেই আমি ভালোবাসি ।
.
এভাবেই দিন চলতে লাগলো। মেরিনের পাগলামো ভালোবাসায় নীড় প্রায় অতীষ্ট । তবে কনিকার ট্রিটমেন্ট ও ঠিকই ভালোভাবে করছে । কনিকার অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো ।
বৃষ্টির আভাস পেলে নীড় কনিকাকে ভেতরের রুমটাতে রাখে । সেখান থেকে বৃষ্টির শব্দ তেমন পাওয়া যায়না ।
আর রাতে যদি বৃষ্টি পরে তখন মেরিন নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে থাকে। খুব শক্ত কর আকরে ধরে।
কিন্তু নীড় কোনো প্রতিক্রিয়া করেনা। সেদিনের জন্য একরাশ অভিমান জমে আছে । কখনো কখনো মেরিনের করুন অবস্থা দেখে নীড়ের খুব করে ইচ্ছা হয় মেরিনকে আগলে নিতে। যেমনটা সেদিন নিয়েছিলো। কেন যেন খুব কষ্ট হয় মেরিনের এই অবস্থা দেখলে। কিন্তু নিজের অসম্ভব রাগের জন্য ঘুমের ভান ধরে থাকে। মাঝে মাঝে নিজের রাগের ওপরই রাগ ওঠে নিজের।
.
দাদুভাই তার পাখিগুলোকে খাবার দিচ্ছে।
তখন নীড় এসে পিছে দারালো।
নীড় : দাদুভাই…
দাদুভাই পিছে ঘুরলো।
দাদুভাই : আরে নীড় দাদুভাই যে… তুমি? দিদিভাই ঠিক আছে তো?
নীড় : হামমম।
দাদুভাই : নিরা তো আজকে বাসায় নেই ৩দিন ধরে ।
নীড় : জানি। আর একারনেই এসেছি।
দাদুভাই : নিরা নেই বলেই এসেছো?
নীড় : হামমম।
দাদুভাই : অবাক হলাম। এই কে আছো নীড় দাদুভাইয়ের জন্য চা-নাস্তার ব্যাবস্থা করো ।
নীড় : না নান দাদুভাই লাগবেনা।
দাদুভাই : আরে লাগবেনা কেন? তুমি এ বাড়ির জামাই বলে কথা …
নীড় : আচ্ছা বসো তুমি এখানে।
দাদুভাই বসলো।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই… কিছু কি বলবে?
নীড় : হামমম।
দাদুভাই : বলো।
নীড় : দাদুভাই … মেরিন আমার বউ…
দাদুভাই : সেটা কি তুমি মানো?
নীড় : মানি বলেই বলছি। দাদুভাই ভালো আন্টি… মানে মেরিনের আম্মু…
দাদুভাই : সে তোমাক শ্বাশুড়িমা হয়। মা , আম্মা , আম্মু বলাটাই ভালো।
নীড় : ওকে আম্মু।
দাদুভাই : কি হয়েছে কনা মায়ের ?
নীড় : না কিছু হয়নি। বরং আগের থেকে অবস্থা ভালো ।
দাদুভাই : হামমম।
নীড় : দাদুভাই… আম্মু আর মেরিনের সাথে বৃষ্টিকে কেন ভয় পায় ? কে কারনে ওরা বৃষ্টিকে ভয় পায়? বলোনা প্লিজ…
দাদুভাই : …
নীড় : দাদুভাই তুমি চুপ করে থেকোনা। বলো ।
দাদুভাই : তুমি মেরিনকে ভালোবাসো?
নীড় : ….
দাদুভাই : কি হলো? বলো…. তুমি মেরিন বন্যাকে ভালোবাসো?
নীড় : ….
দাদুভাই : যেদিন নির্দ্বিধায় এর জবাব হ্যা বলতে পারবে সেদিন তোমার প্রশ্নের জবাব আমি দিবো। দিদিভাই না দিলেও আমি তোমাকে জবাব দিবো। তার আগেনা….
নীড় : আসছি দাদুভাই…
দাদুভাই : খেয়ে যাও…
নীড় : আমিও এ বাড়িতে সেদিনই খাবো যেদিন আমার উত্তর পাবো।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
.
রাত ১২টা…
নীড় এখনও বাসায় ফিরেনি। এদিকে বৃষ্টিও সেজেছে। ঝড়ো হাওয়া বইছে। মেরিন বের হতেও সাহস পাচ্ছেনা। মেরিন জনকে পাঠিয়েছিলো। বাট নীড় জনকে ফিরিয়ে দিয়ে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে।
মেরিন বেশ বুঝতে পারছে যে ওকেই যেতে হবে। কিন্তু ভয়ও হচ্ছে প্রচুর। বৃষ্টির জন্য । কি করবে কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।
মেরিন : আমার থেকে নীড় দামী। বৃষ্টিতে নীড়ের কোনো বিপদ হলে?
মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল।
নীড় নদীর পারে দারিয়ে সিগারেট খাচ্ছে । আর নদীর পানি দেখছে। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
নীড় ভাবছে আজকেও মেরিন অমন অস্বাভাবিক আচরন করবে।
তখনই ওর ঠিক পেছনে ১টা গাড়ি থামলো। গাড়িটা মেরিনের। মেরিন গাড়ি থেকে নামলো। নীড় মনে করলো জন।
নীড় : জন… প্লিজ চলে যাও। প্লিজ।
মেরিন : জন না। আমি…
নীড় অবাক হলো। এমন আবহাওয়ার মধ্যে মেরিন বেরিয়েছে ? নীড় মেরিনের দিকে ঘুরলো।
নীড় : তুমি?
মেরিন : বাসায় চলুন। যেকোনো সময় বৃষ্টি শুরু হবে। চলুন…
নীড় : যদি না যাই ?
মেরিন : নীড়… আমি যখন এসেছি… তখন আপনাকে নিয়েই যাবো। চলুন।
নীড় : যাবো। তার আগে বলো তুমি আর আম্মু বৃষ্টি দেখে কেন ভয় পাও।
মেরিন : নীড় বৃষ্টি শুরু হবে… এর আগে আমি দিশেহারা হয়ে যাই প্লিজ চলুন।
নীড় : প্লিজ বলোনা মেরিন। চলো। তুমি জানোনা আমার মনের ভেতর কেমন লাগছে। আমি জানিনা কেন এমন লাগছে? বলোনা।
মেরিন : নীড় দদদেখুন বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। আপনি জানেন আমি বৃষ্টি সহ্য করতে পারিনা। প্লিজ …
নীড় আর কিছু বললনা।
মেরিন বেশ বুঝতে পারলো যে নীড় যাবেনা। তাই ও ইনজেকশন নিয়েই এসেছে। মেরিন কিছু না ভেবে ইনজেকশন বের করে নীড়ের ঘাড়ে দিতে নিলো তখন বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।
মেরিনের হাত থেকে সিরিঞ্জটা পরে গেলো। নীড় তৎক্ষাৎ মেরিনের দিকে ঘুরলো।
মেরিনের চোখের সামনে সেই ভয়ানক রাতটা ভেসে উঠলো। এই ১৫বছরে প্রথমবার বৃষ্টির সংস্পর্শে এলো মেরিন…
স্থির হয়ে দারিয়ে রইলো।
মেরিনকে এভাবে দেখে নীড়ের ভয়টা ২গুন হয়ে গেলো।
নীড় : মমমেরিন….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 18
writer : Mohona
.
নীড় : মমমেরিন…
মেরিনের কোনো সারা নেই …
নীড় আর ১বার ডাক দিলো। তবুও মেরিনের কোনো সারা নেই। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে দুজন। নীড় মেরিনের কাধে হাত রেখে হালকা ঝাকি দিলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন নীড়ের বুকের ওপর ঢলে পরলো।
নীড় : মেরিন… ওহ নো …জ্ঞান হারিয়েছে ।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে গাড়িত বসিয়ে বাসায় নিয়ে গেলো। মেরিনকে দেখে নিহাল-নীলিমা চিন্তিত হয়ে গেলো।
নীলিমা : কি হয়েছে মেরিনের? কি হয়েছে?
নীড় : জ্ঞান হারিয়েছে।
নীড় মেরিনকে রুমে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিলো ।
নীলিমা : হয়েছেটা কি? বলনা। জ্ঞান হারালো কেন?
মা কি বলেছে নীড়ের কানে কিছুই ঢোকেনি।
নীড় : এভাবে ভেজা কাপড়ে থাকলে যে ঠান্ডা লললেগে যাবে। মমমামনি… মামনি… ওর ড্রেসটা পাল্টে দাওনা …
নীলিমা : হামমম।
নীলিমা কাবার্ড থেকে ১টা জামা বের করলো। দেখলো নিহাল বেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু নীড় মেরিনের হাত ধরে বসেই আছে।
নীলিমা : বাহিরে যা…
নীড় : কেন?
নীলিমা : ওর চেঞ্জ করাবো…
নীড় : হামমম।
নীড় বেরিয়ে গেলো ।
.
একটুপর…
নীড় মেরিনের চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে দিলো।
মেরিন চোখ পিটপিট করলো। মেরিন শক্ত করে বেডশীট আকরে ধরলো । চোখ খিচে বন্ধ করে আছে । আর কি যেন বিরবির করছে।
নীড় : মেরিন… মেরিন…
মেরিন কিছুই শুনতে পায়নি। মেরিন কি বিরবির করছে শুনতে নীড় কানটা মেরিনের মুখের কাছে নিলো।
শুনতে পেলো : ছেরে দাও আমার আম্মুকে … ছেরে দাও…. ছেরে দাও আমার আম্মুকে। ছেরে দাও। আম্মু … আম্মু…. ও আম্মু…
নীড় সোজা হয়ে বসলো।
নীড় : মেরিন … মেরিন … চোখ খোলো । মেরিন … মেরিন …
মেরিন ওর মতো বিরবির করেই যাচ্ছে।
নীড় : মেরিন … মেরিন চোখ খোলো। দেখো আমি বসে আছি । তোমার নীড় … চোখ খোলো ।
মেরিন : আম্মু … আমার আম্মু …
নীড় : ঠিক আছে আম্মু …
মেরিন : না আমার আম্মু ঠিক নেই। ওওও আমার আম্মুকে… ও আমার আম্মুকে …
নীড় : কি করবে তোমার আম্মুকে ? বলো … বলো …
মেরিন : আম্মু …
নীড় : বলো মেরিন … বলো…
মেরিন উঠে বসলো। ঘেমে একাকার। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। সােজা সামনের দিকে তাকিয়ে আছে ।
নীড় : মেরিন … এই মেরিন …
নীড় মেরিনকে ঝাকাচ্ছে। মেরিনের কোনো হেলদোল নেই। নীড়ের খুব খারাপ লাগছে। ভীষন কান্না পাচ্ছে। বারবার মনে হচ্ছে এমনটা না করলেই পারতো।
নীড় মেরিনকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। খুব। তবুও মেরিন সেই একভাবেই বসে আছে। একটু নরাচরাও করেনি । নীড় মেরিনের মাথায় চুমু দিলো।
নীড় : আম সরি আম রিয়েলি ভেরি ভেরি সরি। কেন যে তখন জেদ করে দারিয়ে রইলাম…
মেরিন :
নীড় : মেরিন … মেরিন… কথা বলো … মেরিন … বলো ভালোবাসো আমাকে বলো … কথা বলো …
মেরিন : …
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো। বেড থেকে নামলো।
নীড় : মেরিন …
.
মেরিন গুটি গুটি পায়ে বারান্দায় গেলো । এরপর বারান্দা থেকে মিনি ট্যারেসটাতে গেলো । নীড় অবাক হলো। মেরিন বৃষ্টির কাছে গেলো । নীড়ও মেরিনের সাথে সাথে গেলো। ছাদটাতে গিয়ে মেরিন হাটু গেরে বসে পরলো। ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কাদতে। কিন্তু মেরিন পারছেনা। বুকটা ফেটে যাচ্ছে ।।
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো।
নীড় : মেরিন …
মেরিন আর পারলোনা নিজেকে ধরে রাখতে নীড়কে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো । চিৎকার করে কাদতে লাগলো। নীড় বাধা দিলোনা। কখনো কখনো কান্না করা ভালো। কষ্ট কমে। নীড় চুপ রইলো। নিজেও মেরিনকে জরিয়ে ধরলো। আর চুপচাপ মেরিনের কান্না শুনতে লাগলো।
নিহাল-নীলিমা ছুটে এলো।
নীলিমা যেতে নিলে নিহাল বাধা দিলো ।
নিহাল : থাকতে দাও ওদেরকে ওদের মতো। নীড় ঠিক সামলে নিবে… মেরিনের এখন নীড় আছে।
নীলিমা চোখের কোনের পানিটা মুছে নিয়ে চলে গেলো।
বেশকিছুক্ষন পর মেরিন থামলো। নীড় ভাবলো মেরিন অজ্ঞান টজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।
নীড় : মেরিন …
মেরিন : ….
মেরিনের বোধ হলো যে ও কি অবস্থায় আছে। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে আছে। সেই সাথে নীড়ের সাথে লেপ্টে আছে। বেশ ইতস্ততবোধ করলো।
নীড় : মে…
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিয়ে উঠে দারালো। নীড়ও দারালো। মেরিন চলে যেতে নিলে মাথাটা চক্কর দিলো। পরে যেতে নিলে নীড় হাত ধরে ফেলল।
মেরিন : আম অলরাইট … আম অলরাইট …
মেরিন নিজের হাত কঠোর ভাবেই ছারিয়ে নিলো… এতে নীড় ক্ষেপে গেলো। হাত ধরে টেনে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। যেটা আগে কখনো হয়নি সেটা আজকে মেরিনের সাথে হচ্ছে। ভীষন লজ্জা লাগছে। কেন তা নিজেও জানেনা।
নীড় : এই মেয়ে কাকে অ্যাটিটিউড দেখাচ্ছো ? হ্যা কাকে? যখনই আমি টাচ করি তখন কেন ছোটাছুটি করো? আর যখন নিজের মন চায় তখন তো নিজে আমার সাথে জরিয়ে থাকো… উন্মাদের মতো কিস করো সারা মুখে। তখন ?
মেরিন : ছারুন …
নীড় : না ছারবোনা ।ছারুন… বললেই হলো।
মেরিন : ছারুন। আমি আম্মুর কাছে যাবো…
নীড় : বেশ যাবে। সকাল হোক। এমনিতেও ভোর হতে বেশি দেরি নেই।
মেরিন : আমি এখনই যাবো। ছারুন। আর ভেতরে চলুন ঠান্ডা লেগে যাবে আপনার।
নীড় : না ছারবোনা। আর এখন যেতেও দিবোনা।
মেরিন : যেতে না দিলে ভালোবাসতে হবে…
নীড় : এই মেয়ে তুমি…
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিয়ে রুমে গেলো। ১টা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। নীড়ও ভেতরে গেলো।
নীড় : নাহ এখন ওকে একা বের হতে দেয়া যাবেনা…
নীড়ও পাশের রুমের ওয়াশরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নিলো।
.
নীড় এসে দেখে মেরিন বেরিয়ে গিয়েছে। সব কালো পরা। এমনিতেই মেরিন খুব ফর্সা। তারওপর এতোক্ষন বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডায় মনে হয় আরো সাদা হয়ে গিয়েছে। আবার পরেছে কালো । নীড়ের মনে হচ্ছে চোখ ঝলসে যাবে।
মেরিন নীড়ের চাহনিকে ইগনোর করে গাড়ির চাবি নিলো সেই সাথেও গানও নিলো ।
নীড় : আম্মুর কাছে যাবে গান নিচ্ছো কেন?
মেরিন : কাজ আছে । আপনি ঘুমান। আমার জন্য সারারাত জাগতে হয়েছে। এতোক্ষন ভেজায় ঠান্ডাও নিশ্চয়ই লাগছে। আমি আপনাকে কফি বা স্যুপ করে দিয়ে যাই …
নীড় কথাটা শুনে মেরিনকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
নীড় : এই মেয়ে কি মনে করো তুমি নিজেকে? হ্যা কি মনে করো? ভালো কি তুমি একাই বাসতে পারো? আর কেউ পারেনা ? আমিও তো ভালোবেসেছি । তু…
মেরিন হুট করে নীড়ের ঠোটে কিস করে বসলো।
মেরিন : আই লাভ ইউ … আমর বৃষ্টির ভয়কে দূর করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ … এখন আমাকে যেতে দিন। এই মুহুর্তে আমার আম্মুর কাছে যাওয়া খুব প্রয়োজন।
নীড় মেরিনের চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। মেরিনের চোখ ২টা খুব বেশি বড়না। তবে বেশ সুন্দর । কাজল কালো। তবে চোখে চাঞ্চল্য নেই। স্থির। একটু লক্ষ্য করে দেখলে ওর কষ্ট গুলো অনুভব করা যায় । না নীড় আরকিছু না ভেবে মেরিনের হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে গেলো।
মেরিন : এভাবে টে…
নীড় : আম্মুর কাছে যাবে তো নাকি? বসো গাড়িতে।
মেরিন : আমিই যেতে পার…
নীড় মেরিনকে কোলে করে গাড়িতে বসালো। নিজে বসলো। এরপর ড্রাইভ করতে লাগলো।
নীড় ড্রাইভ করছে আর মেরিন নীড়কে দেখছে ।
নীড় : অন্যদিকে তাকাও। অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যাবে ।
মেরিন বাকা হাসি দিয়ে
বলল : আপনি বড়ই অদ্ভুদ নীড় । আমি ড্রাইভ করলেও আপনার থেকে চোখ ফেরাতে বলেন আর আপনি ড্রাইভ করলেও। আপনি সত্যিই অদ্ভুদ।
নীড় : লুক হুজ টকিং…
.
ওরা মিরপুর পৌছালো…
মেরিন ছুটে মায়ের রুমে গেলো। কনিকা ঘুমিয়ে আছে। মেরিন গিয়ে কনিকার পাশে বসলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কপালে চুমু একে দিলো। এরপর মায়ের বুকে মাথা রাখলো।
মেরিন : তুমি পৃথিবীর সবথেকে ভালো আম্মু। তুমি কবে সম্পুর্ন সুস্থ হবে বলো তো? তুমি যেদিন সুস্থ হবে সেদিন ওই মনিরের সময় শেষ হবে। ওর শরীর থেকে ১টা ১টা অংশ বিচ্ছিন্ন করে দিবো । সবার আগে কেটে নিবো ওর হাতটা। যেটা ও তোমার দিকে বারিয়ে ছিলো ।
মেরিন দেখলো কনিকা নরাচরা দিচ্ছে । তাই মেরিন বেরিয়ে এলো।
নীড় : এখন আবার কোথায় চললে?
মেরিন : মনটাকে শান্ত করতে ।
নীড় : আই থিংক ইউ নিড রেস্ট।
মেরিন : রেস্ট করার জন্য তো কবর পরে আছে। অনন্তকাল রেস্ট করবো। আসছি ।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : হামম ।
নীড় : মনির কে?
মেরিন : …
নীড় : তুমি যখন আম্মুর সাথে কথা বলছিলে তখন আমি শুনে ফেলেছি … কে মনির ?
মেরিন : ১টা অমানুষ ।
বলেই মেরিন চলে গেলো ।
নীড় : মনেহয় আমি কিছু আন্দাজ করতে পেরেছি। তবে কিছু জানলে হবেনা । সবটা জানতে হবে। মনেহয় মনির নামের লোকটা আম্মুর সম্মানে হাত দিতে চেয়েছিলো। আর মেরিন সেটা দেখেছিলো । সেটা বৃষ্টির রাত ছিলো। তাই হয়তো ২জন ভয় পায়। এমন তো নয় যে সেই রাতের পর থেকেই আম্মু এমন। কিন্তু নিরা যে বলেছিলো মেরিন আম্মুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলো। তাহলে কি সেই রাতের পর মাকে ভুল বুঝে মেরিন মাকে ধাক্কা দিয়েছিলো? ওহ গড। এই পাগলের সাথে থাকতে থাকতে আমিই পাগল হয়ে যাবো। নাহ… আরেকটা রিস্ক আমায় নিতেই হবে। নিরার সাথে আমায় দেখা করতেই হবে। কথা বলতেই হবে। কারন কেবল ওই আমায় সবটা বলতে পারবে …
.
মেরিন জিপে বসে আছে বিশাল এক শূন্য মাঠে। তখন জন মনিরকে নিয়ে এলো । কোনো সিংহ যখন কোনো হরিণকে নাগালে পায় তখন তার যে আনন্দ হয় ঠিক তেমনই আনন্দ হচ্ছে মেরিনের।
জন : ম্যাম … ওকে কি আজকেই শেষ করে দিবেন?
মেরিন : না। ওকে জিপের পিছে বেধে দাও। মানে ওর হাত বা পা বেধে দাও। আজকে ওরে ভ্রমন করাবো।
জন : জী ম্যাম। এই চল।
মনির : মের…
মেরিন : আমার নাম নিলে জিভটা কেটে ফেলে দিবো।
জন মনিরের পা জোরা দরি দিয়ে জিপের পেছনে বেধে দিলো। আর মেরিন স্টার্ট দিলো। ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে। আর শুনতে পাচ্ছে মনিরের চিৎকার। মনিরের আর্তনাদ। যেগুলো মেরিনকে আনন্দ দিচ্ছে প্রচুর আনন্দ দিচ্ছে । ঘন্টা খানেক পর যন্ত্রনায় মনির অজ্ঞান হয়ে গেলো। মেরিন ওর জ্ঞান ফেরালো। আবার একই কাজ করলো। এরপর নিজের রাগ যখন একটু কমলো তখন মনিরকে ছেরে দিলো ।
.
রাতে …
মেরিন বাসায় পৌছালো।
নীলিমা : শরীর ভালোনা … এতো কাজ করার কি দরকার ছিলো। মুখটা কেমন জ্বরা জ্বরা লাগছে।
মেরিন : ও কিছুনা । আমার শরীর ভালো আর খারাপ। কখনো শুনেছো সাপদের জ্বর আসে। শরীর খারাপ হয়? আমি তো সাপ। মিস্টার খানের কাছে কালসাপ। আর দাদুভাই বলে কোবরা। কিং কোবরা। নীড় ফিরেছে?
নীলিমা : হ্যা। রুমে। ঘুমিয়ে আছে। কিছু খায়নি এসে।
মেরিন : হামমম।
মেরিন রুমে গেলো । গিয়ে দেখে নীড় উপুর হয়ে শুয়ে আছে। গায়ে শার্ট নেই। মেরিন নীড়ের ওপর শুয়ে নীড়ের সারা পিঠে চুমু দিলো। নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো। আর ঘুম ভাঙার কারন হলো মেরিনের শরীরের অত্যাধিক তাপমাত্রা। মেরিনের ধুম জ্বর ।
নীড় ঘুরে গেলো। মেরিন নীড়ের বুকের ওপর পরলো। নীড় মেরিনের কপালে , গালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বরে গা পুরে যাচ্ছে।
নীড় : তোমার দেখি ধুম জ্বর ।
মেরিন : হামমম হয়তো।
বলেই মেরিন ওয়াশরুমে চলে গেলো।
নীড় উঠে নিচে গেলো।
নীড় : মামনি… মামনি…
নীলিমা : হ্যা বল…
নীড় : কিছু খাবার দাও তো।
নীলিমা : নিয়ে নে।
নীড় : উফফ মামনি… আমি…
নীলিমা : বিয়ে করেছিস। ২দিন পর বাবা হবি এখনো নিজের খাবার বেরে নিতে পারিস না। ছাগল।
নীলিমা খাবার বেরে দিলো। নীড় ওপরের দিকে গেলো।
নীলিমা : এই ওপরে যাচ্ছিস কেন? কিছু লাগলে তো চিল্লাবি। বারবার ওঠা নামা করতে পারবোনা আমি…
নীড় : এগুলো আমার না মেরিনের জন্য।
নীলিমা : যাক বাবা আমার ছেলের সুমতি হয়েছে তাহলে….
নীড় রুমে গিয়ে দেখে মেরিন সিরিঞ্জে মেডিসিন ইন করছো।
নীড় : কি করছো কি? কিসের ইনজেকশন এটা?
মেরিন : জ্বরের।
নীড় : জ্বরের? কিন্তু কেন?
মেরিন : রোগ হলে মানুষ কেন ঔষধ খায়? সারার জন্য তো নাকি? আমিও জ্বরটাকে ভাগানোর জন্যই নিচ্ছি।
নীড় : ইনজেকশন নিতে হবেনা। তোমার জন্য খাবার নিয়ে এসেছি। আর এই যে মেডিসিন। খেয়ে এগুলো নিয়ে ঘুমিয়ে থাকো।
মেরিন : ওগুলো তে আমার পোষাবে না। কচ্ছপের মতো ধীর গতিত জ্বর যাবে। নিজের জন্য সময় নষ্ট করার মতো এতো সময় আমার নেই…
বলেই মেরিন ইনজেকশন পুশ করতে নিলো। তখন নীড় এসে ওটা নিয়ে নিলো।
নীড় : এতো ইনজেকশন নেয়া শরীরের জন্য ভালোনা।
মেরিন : তাতে কি? ইনজেকশন টা দিন।
নীড় : খাবার খেয়ে ট্যাবলেটস গুলো নাও।
মেরিন : নীড় শরীরটা আরো ছেরে দিবে। তার আগে ইনজেকশন টা নিতে দিন।
নীড় ইনজেকশন টা ছুরে ফেলে দিলো । এরপর মেরিনকে বসিয়ে দিলো। এরপর মুখের সামনে খাবার তুলে ধরলো।
নীড় : হা করো…
মেরিন অবাক হয়ে নীড়কে দেখছে ।
নীড় : আমাকে না দেখে হা করো…
তখনই মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো। মেরিন ধরলো।
জন : ম্যাম… কনিকা ম্যাম…
মেরিন : কি হয়েছে আম্মুর?
জন : ম্যাম… কনিকা ম্যামকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
মেরিন : হুয়াট? কখন থেকে ?
জন : ম্যাম ১ঘন্টা ধরে।
মেরিন : আর তুমি এখন আমাকে বলছো?
জন : সরি ম্যাম।
মেরিন : গো টু হেল উইথ ইউর সরি।
নীড় : কি হয়েছে মেরিন?
মেরিন : আম্মুকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
বলেই চাবি নিয়ে বেরিয়ে পরলো।
নীড় : দারাও মেরিন তুমি একা যেওনা মে…
নীড় যেতে যেতে মেরিন বেরিয়েও গেলো। নীড়ও গাড়ি নিয়ে ছুটলো ।
.
সবাই কনিকাকে খুজছে। ৩-৪ঘন্টা হয়ে গেলো। মেরিনের খুব কষ্ট হচ্ছে। তবুও মাকে খুজে যাচ্ছে।
নীড় : কোথায় গেলো আম্মু? ১মিনিট… সেদিন তো আম্মু খেলার ছলে তার কলেজ লাইফের কথা বলছিলো। বলছিলো তার জীবনের সেরাদিন গুলো হলো তার কলেজ লাইফ। সেখানে যায়নি তো? কিন্তু আম্মু কোন কলেজে পরতো?
মেরিন : কোথায় যেতে পারে আম্মু… ওহ শীট… আম্মু তো এর আগে ১বার অ্যাসাইলাম থেকেও পালিয়েছিলো। সে যেই কলেজে পরতো সেখানে যাবার জন্য। আজকেও সেখানে যায়নি তো?
মেরিন গাড়ি ঘুরালো ।
নীড়-মেরিন একসাথে কনিকার কলেজের মেইন গেইটের সামনে গিয়ে গাড়ি থামালো।
গাড়ি থেকে নামলো। ২জন ২জনকে দেখে অবাক হলো। পরে পাশ ফিরে দেখে কনিকা দারিয়ে আছে। ২জনই ছুটে কনিকার কাছে গেলো।
মেরিন কনিকাকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : আম… তুমি এখানে কি করছো?
কনিকা মেরিন থেকে সরে এলো। মেরিন আবার ছুতে গিয়েও ছুলো না ।
নীড় : ভালো আন্টি… তুমি এখানে কি করছো?
কনিকা : কবিরের জন্য ওয়েট।
নীড় : কবিরের জন্য ওয়েট?
কনিকা : হ্যা কবিরের জন্য ওয়েট। ও না এলে তো আমি ভেতরে ঢুকবোনা। আমরা প্রতিদিন একসাথে ভেতরে ঢুকি। কবির তো কখনো এতো দেরি করেনা। আজকে এতো দেরি কেন করছে বলো তো….
মেরিন : ….
নীড় : ভালো আন্টি … আজকে তো রাত হয়ে গিয়েছে। তাই আজকে আসবেনা। কালকে আসবে।
কনিকা : রাত ? এখন রাত?
নীড় : হামমম।
কনিকা : তবুও কবির আসবে । কারন আমি এসেছি। আমি এলে কবিরও আসবে।
মেরিন : কবির ফয়সাল খান আসবেনা আম… আসবেনা কবির ফয়সাল খান …
কনিকা : এই মেয়ে… তুমি কে বলো তো? আমি জানি কবির আসবে।
মেরিন : আজকে বাসায় চলো। কালকে এসো…
কনিকা : চুপ থাকো। কবির আসবে। আমি অপেক্ষা করবো।
মেরিন : বলছিনা কবির ফয়সাল খান আসবেনা। আসবেনা আসবেনা আসবেনা…
মেরিন বেশ কঠোর কন্ঠেই বলে দিলো।
কনিকা ভয় পেয়ে গেলো। কনিকা মেরিন থেকে সরে দারালো । নীড়ের পিছে গিয়ে দারালো…
কনিকা নীড়ের কানের সামনে ফিসফিস করে
বলল : এই মেয়েটা এতো রাগী কেন?
নীড় : এই মেয়েটার মাথা খারাপ… পাগল বুঝেছো? পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছে।
কনিকা : কি বলছো কি ?
নীড় : হ্যা ।
কনিকা : এখন কি হবে?
নীড় : এখন এখান থেকে পালিয়ে গেলে ভালো হবে। চলো পালাই। কালকে আসা যাবে। আমার গাড়িতে বসো ।
কনিকা : হামমম। চলো চলো…
কনিকা গিয়ে নীড়ের গাড়িতে বসলো। মেরিন আকাশপানে তাকিয়ে আছে ।
নীড় মেরিনের পাশে গিয়ে দারালো।
নীড় : আর কষ্ট পেতে হবেনা। বাসায় যাও। আমি আম্মুকে পৌছে দিয়ে আসছি ।
বলেই নীড় চলে গেলো। মেরিনও ওদের পিছু পিছু গেলো । যখন নীড় কনিকাকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো তখন মেরিন চলে গেলো।
.
১ঘন্টাপর…
অন্ধকার রাতে অন্ধকার পথে গাড়ির ওপরে উঠে বসে বসে মেরিন বিয়ার খাচ্ছে। চোখের সামনে ভেসে উঠলো ভয়ংকর সেই রাত….
[
১৫বছর আগে…
বাহিরে ভীষন ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে । কনিকা মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি মানে মাহমুদ বাড়িতে একা। খান বাড়ি থেকে সে বেরিয়ে এসেছে। প্রতিজ্ঞা করে এসেছে যে খান বাড়িতে সেদিনই ঢুকবে যেদিন কবির নিজে এসে নিয়ে যাবে। কনিকা জানেনা কবির আসবে কি আসবেনা? বেস্টফ্রেন্ড হিসেবে ফিরিয়ে নিতে আসবে নাকি অভিমানের কারনে দূরেই রয়ে যাবে ।
এসব ভেবেই ১টা লম্বা নিঃশ্বাস ছারলো কনিকা।
মেরিন : আম্মু আম্মু…
কনিকা : হ্যা বনপাখি বলো…
মেরিন : এতোবড় বাসাটাতে আমরা একা কেন? দাদুভাই , বাবা , বড়আম্মু , নিরাপু … ওরা সবাই তো এলে এ বাসাটায় আর একা একা লাগবেনা।
কনিকা : বনপাখি… তুমি কি সবাইকে খুব মিস করছো?
মেরিন : হামমম। খুব করে।
কনিকা : দাদুভাইয়ের সাথে কথা বলবে চলো …
মেরিন : কি মজা কি মজা …
কনিকা শমসেরকে ফোন করে দিলো। দাদু-নাতি কথা বলছে। তখন ডোরবেল বেজে উঠলো।
কনিকা গিয়ে দরজা খুলল। দেখলো সেতুর দুলাভাই মনির। আর মনিরের এক বন্ধু দারিয়ে আছে।
কনিকা : আপনারা???
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 19
writer : Mohona
.
কনিকা : আপনারা ?
মনির : হ্যা আমরা। ভেতরে ঢুকতে বলবেনা?
কনিকা : না। এখন রাত। দরকার হলে কালকে আসবেন। এখন চলে যান। প্লিজ।
মনির : এমন ঝড়-বৃষ্টির রাতে চলে যেতে বলছো?
কনিকা : হ্যা বলছি ।
মনির : কিন্তু কি করে যাই বলো তো সুন্দরী? এমন রোমান্টিক ১টা ওয়েদার। তোমাকে ছেরে যাই কি করে?
কনিকা : যত্তোসব…
বলেই কনিকা দরজা লাগিয়ে দিতে নিলো । প্রায় লাগিয়েই দিয়েছিলো। কিন্তু মনির আর মনির বন্ধু ২জন মিলে বাধা দিলো। আর ২জন ছেলের সাথে একা মেরিনের পেরে ওঠা সম্ভবনা ।
২জন ভেতরে ঢুকলো।
কনিকা : দেখুন যদি আপনারা এখনই বের না হন তবে আমি পুলিশ ডাকতে বাধ্য হবো।
কনিকার কথা শুনে মনির হাহা করে হেসে উঠলো ।
দাদুভাই ফোনের ওপাশ থেকে ওদের হাসির শব্দ পেলো।
দাদুভাই : দিদিভাই… কে হাসে?
মেরিন : ওইযে নিরাপুর আংকেল আছেনা সে এসেছে। সাথে আরো ১টা আংকেল।
দাদুভাই : কি?
মেরিন : হ্যা। দেখোনা… আম্মু ওদের চলে যেতে বলছে অথচ ওরা যাচ্ছেইনা… কি পচা ওরা…
দাদুভাই : আম্মুকে একটু দাও তো।
মেরিন : হামমম। আম্মু তোমাকে চাইছে দাদুভাই।
কনিকা কথা বলতে গেলে মনিরের বন্ধু টেলিফোন লাইনের তার কেটে দিলো। আর পৈশাচিক হাসি দিলো।
দাদুভাই : হ্যালো… হ্যালো… দিদিভাই… হঠাৎ লাইনটা কেটে গেলো?
দাদুভাই আবার ফোন করলো । কিন্তু ঢুকলোনা ।
দাদুভাই : নিশ্চয়ই গন্ডগোল আছে। কবির… কবির… এই কবির…
কবির ছুটে এলো।
কবির : হ্যা বাবা।
দাদুভাই : শোনো আমার মনে হচ্ছে কনা মায়ের…
কবির : বাবা… ওই মেয়েটার নাম আমার সামনে নিবেনা । প্লিজ।
দাদুভাই : মেয়েটার বি…
কবির : বললাম তো মেয়েটার নাম নিবেনা। প্লিজ।
বলেই কবির বেরিয়ে গেলো।
দাদুভাই : কবির দারাও কবির…
কবির বেরিয়ে গেলো।
দাদুভাই : না কিছু ১টা বিপদ হয়ে গেলে…
দাদুভাই নিজের বন্দুক নিয়ে বের হলো।
.
ওদিকে …
মনির আর ওর বন্ধু পৈশাচিক হাসি দিচ্ছে। মনির কনিকার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
কনিকা : ভালো হচ্ছেনা কিন্তু … তোমাদের সাথে কি হবে তোমরা ভাবতেও পারছোনা। যদি কবির জানতে পারে তবে কিন্তু তোমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে ।
মনির হাহা করে হেসে উঠলো।
মনির : এখনো? এখনো নিজের স্বামীর ওপর এতো বিশ্বাস ? এতো? যে স্বামী তোমাকে সহ্যই করতে পারেনা ?
কনিকা : বিশ্বাস আমার স্বামী কবির ফয়সাল খানের ওপর না। বিশ্বাস আছে আমার বেস্টফ্রেন্ড কবিরের ওপর। সে স্বামী হিসেবে না আসলেও বন্ধু হিসেবে আসবে।
মনির : সে এলে না হয় মিলে ঝিলে তোমাকে ভোগ করবো।
বলেই মনির আবার হাসতে লাগলো। মনিরের এমন হাসিতে ছোট মেরিন ভয় পেয়ে গেলো। গিয়ে লুকালো মায়ের পিছে।
মনির কনিকার কাছে গেলে কনিকা মনিরের নাক বরাবর মারলো ১টা ঘুষি।
কনিকা মনির আর মনিরের বন্ধুকে একাই জবাব দিচ্ছে। আসলে কনিকার বাবা তপন মাহমুদ মেয়েকে সব দিক দিয়েই পারদর্শী করেছিলেন। নিজের স্ত্রী আর ছেলেকে হারিয়ে তপন মাহমুদ মেয়েকে নিয়েই বেচে ছিলেন। তাই মেয়েকে সবই শিখিয়েছিলেন। আত্মরক্ষাও।
কনিকা একাই দিব্যি ২জনের সাথে লরে যাচ্ছে। নিজেও আঘাত পাচ্ছে। তবে হার মানছেনা । কনিকা বেশ বুঝতে পারছে যে যদি ১বার ও নিজের ভয় আর দুর্বলতাটা প্রকাশ করে তবে আজকে ওর সবশেষ । ওর গায়ে ধর্ষিতার ট্যাগ লেগে যাবে। ওর মেয়ে ধর্ষিতার মেয়ে বলে পরিচিত হবে । নিজের জীবন দিয়ে দেয়া হয়তো সহজ হবে কিন্তু ওর মেয়ের জীবন চিরতরে শেষ হয়ে যাবে । হয়তো শিয়াল-কুকুরে চিরে খাবে । কে বলতে পারে,,, হয়তো ওর মেয়ের গায়েও ধর্ষিতার ট্যাগ লেগে যাবে। তাই নিজের কাছেই নিজে হার মানছেনা।
১টা সময় মনির ওর বন্ধুকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
কনিকা হাটু গেরে বসে মেয়েকে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগলো।
ঠিক তখন মনির পেছন থেকে এসে কনিকার মাথায় মারলো বারি । এতে কনিকা অনেকটাই কাবু হয়ে গেলো ।
মনির টেনে কনিকাকে নিয়ে যেতে লাগলো। বহু কষ্ট কনিকা মনিরের পায় আঘাত করলো ।মনির পরে গেলো। নিজের হাত ছারিয়ে ছুটে মেয়ের কাছে যেতে নিলো । তখন মনিরের বন্ধু মেরিনের গলায় ছুরি ধরলো ।
মনিরের বন্ধু : যদি আর ১পাও আগে বারো তবে তোমার মেয়ের গলাটা কেটে ফেলে দিবো।
কনিকা : নাহ। আমার মেয়েটাকে ছেরে দাও প্লিজ।
মনির উঠে দারালো। হাত তালি দিলো।
মনির : ধন্যবাদ আমার বন্ধু। ধন্যবাদ ।
কনিকা : আমার মেয়েকে ছেরে দিতে বলুননা । আমি হাত জোর করে বলছি…
মনির : ছেরে দিবো সুন্দরি… তোমার মেয়েকে ছেরে দিবো। তুমি নিজেকে আমার হাতে ছেরে দাও…
কনিকা : ….
মনিরের বন্ধু মেরিনের গলায় হালকা আচর দিলো। মেরিনের গলা থেকে কিছুটা রক্ত গরিয়ে পরলো।
মেরিন : আহ… আম্মু ব্যাথা।
কনিকা : পাখি… বনপাখি…
মনির : এই মেয়ের গলাটা নামিয়ে দে।
কনিকা : নাহ… আমার মেয়েকে ছেরে দাও । ওকে কিছু কোরোনা।
মনির : নিজেকে ়আমার কাছে সপে দাও…
কনিকা : আমার মেয়েকে ছেরে দাও। আমি নিজেকে সপে দিবো।
মনির : গুড গার্ল ….
বলেই মনির কনিকাকে রুমে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো । ছোট মেরিনের মাথায় ঢুকলো যে মনির ওর মাকে মারবে টারবে।
মেরিন : আম্মু… আম্মু… আম্মু…. আমার আম্মুকে ছেরে দাও…. আম্মু ….
মনির কনিকা কে রুমে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।
মেরিন মনিরের বন্ধুর হাতে কামড় দিয়ে ছুটে গিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
কনিকা মেয়ের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছে ।
.
মনিরের বন্ধু মেরিনকে টেনে নিয়ে এলো । ঠিক তখনই মেরিন গুলির শব্দ পেলো। মনিরের বন্ধু পরে গেলো। মেরিন ঘুরে দেখে দাদুভাই বন্দুক হাতে দারিয়ে আছে।।
মেরিন দাদুভাই বলে ছুটে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরলো।
দাদুভাই : দিদিভাই… তু্মি ঠিক আছো?
মেরিন : কিন্তু আম্মুকে ওই রুমে নিয়ে মারছে।
দাদুভাই : ওই রুমে ?
মেরিন : হামমম।
দাদুভাই দরজার লক বরাবর গুলি করলো। এরপর লাথি মেরে দরজা খুলল।
শব্দ পেয়ে মনির তারাতারি উঠে দারালো । দাদুভাই দেখলো কনিকার শাড়িটা নিচে পরে আছে।
কনিকা চাদর দিয়ে নিজেকে ঢেকে নিলো। শশুড়ের সামনে এমন অবস্থায় থাকার থেকে হয়তো মরে যাওয়া ভালো ।
মনির বুঝতে পারলো যে ওর মৃত্যু ওর সামনে দারিয়ে।
দাদুভাই গুলি করতে নিলো । কিন্তু গুলি বের হলোনা। বন্দুকের গুলি শেষ। গুলি ভরতে ভরতে মনির পালিয়ে গেলো।
কনিকা মেয়েকে জরিয়ে ধরে কাদতে কাদতে অজ্ঞান হয়ে গেলো। আর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন থেকে অস্বাভাবিক আচরন করলো।
আসলে অত্যন্ত কষ্ট , মানসিক কষ্ট , মনিরের দেয়া মাথায় আঘাত , মেয়ের আর্তনাদ , নিজের সম্মান হারানোর ভয় , শশুড়ের সামনে এমন অবস্থায় দারানো …. এই সবকিছু মিলিয়ে কনিকার মস্তিষ্কে প্রচুর চাপ পরায় ও নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে…
নিরা সেদিন নীড়কে মিথ্যা বলেছিলো যে মেরিন কনিকাকে ধাক্কা দিয়েছে।
]
.
বর্তমান…
পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে মেরিন রাতটা পার করে দিলো। ওদিকে নীড়-নীলিমা-নিহাল চিন্তায় শেষ ।
নীড় নিজে মেরিনকে খুজে হয়রান হয়ে জনকে বলেছে। জন পায়নি। নীড় পুলিশের কাছে যেতে চাইলে জন বাধা দেয়।
জন বলে যে ম্যামের মন ভালো হলে ম্যাম ঠিকই ফিরে আসবে। তাছারা ম্যাম কোথায় আছে কিভাবে আছে জানা সম্ভব না।
নীড় : কেন এমন তুমি? তুমি আমার সবটা জানো। আর আমি তোমার কিছুই জানিনা।
মেরিন : আপনি ধীরে ধীরে আমার ভালোবাসা থেকে দুর্বলতা হয়ে যাচ্ছেন নীড়। যেটা আমি চাইনা। আপনার প্রতি দুর্বলতা আমাকে দুর্বল করে দিবে। কিন্তু কিছু কাজ সম্পুর্ন না করে আমি দুর্বল হতে পারবোনা। আই হ্যাভ টু বি স্ট্রং …
.
সকাল ৭টা…
মেরিন বাসায় ঢুকলো। দেখলো ৩জনই বসে আছে। মেরিন ওদেরকে ইগনোর করে ওপরে উঠতে নিলো।
নীড় : দারাও।
মেরিন দারিয়ে গেলো। নীড় মেরিনের সামনে গেলো।
নীড় : তুমি কি আমাদের মানুষ বলে মনে করো নাকি করোনা? যদি মানুষ মনে করতে তবে এমন করতে পারতেনা। জানো সারারাত আমরা ৩জন চোখের পাতা এক করতে পারিনি। রাতটা যে কি গিয়েছে তা আমরা জানি। একটু বলে গেলে কি হতো।
মেরিন : প্রয়োজনবোধ করিনি।
নীড় : কোথায় ছিলে?
মেরিন : …
নীড় : বলো কোথায় ছিলে?
মেরিন : হয়তো কোনো হোটেলে কোনো ছেলের সাথে।
কথাটা শুনে নীড়ের রাগ উঠলো। নীড় জানে মেরিন কখনো এমন কিছু করতে পারেনা।
নীড় দাঁতে দাঁত চেপে
বলল : টেল মি দ্যা ট্রুথ।
মেরিন : আমি সত্যিই বলেছি।
নীড় ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো মেরিনকে।
নিহাল : নীড়…
নীড় : বাবা… আজকে না। আজকে আমাদের মধ্যে কথা বলবেনা। প্লিজ…
নীড় : বলো কোথায় ছিলে?
মেরিন : যা বলার বলে দিয়েছি…
নীড়ের ইচ্ছা করছে মেরিনকে পিটাতে। নীড় মেরিনের মাথার পেছনের দিকে হাত দিয়ে চুলের গুছি ধরে মেরিনকে কিছুটা সামনে আনলো।
নীড় : তুমি এমন কেন? কেন কেন কেন?
নীড় বুঝতে পারলো মেরিন ড্রিংকস করেছে।
নীড় : ইউ আর ড্রাংক…
মেরিন : …
নীড় : এটাই বাকি ছিলো দেখার?
মেরিন : আরো অনেক কিছুই বাকি আছে দেখার। কিছুই দেখেননি… কিছুই জাননেনা…
নীড় : তোমার সম্পর্কে আর কিছু জানতে চাইও না… ইউ হার্ট মি টুডে ভেরি ব্যাডলি। তোমাকে ভালোবাসা যায়না।
বলেই নীড় মেরিনকে ছেরে দিলো। মেরিনের হাত থেকেই গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
মেরিনও রুমে চলে গেলো।
.
৩ঘন্টাপর…
মেরিনের ফোনটা বাজছে । মেরিন দেখলো জন।
মেরিন : হ্যা জন…
জন : ম্যাম…
মেরিন : তোমার কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
জন : ম্যাম… নীড় স্যার…
মেরিন : কি হয়েছে?
জন : ম্যাম স্যার অ্যাক্সিডেন্ট করেছে… গাড়ি ব্রেকফেইল ছিলো।
মেরিনের হাত থেকে মোবাইলটা পরে গেলো। পাগলের মতো বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো।
হসপিটালে পৌছালো। নিহাল-নীলিমাও পৌছালো। ওদিক থেকে দাদুভাইও এলো । জন নীড়কে হসপিটালে অ্যাডমিট করিয়ে ট্রিটমেন্ট স্টার্ট করিয়ে মেরিনকে জানিয়েছে। কারন জন ভালোমতোই জানে যে নীড়কে অমন রক্তাত্ব অবস্থায় মেরিন সহ্য করতে পারবেনা।
মেরিন : ডক্টর… নীড়…
ডক্টর : এ যাত্রায় বেচে গিয়েছে… তবে পিঠে আর পায়ে ব্যাথা পেয়েছে যথেষ্ট। হতে পারে পায়ের ক্ষতটার জন্য তার পা টা অকেজো হয়ে যেতে পারে।
মেরিন : আমি ১বার দেখা করতে পারি?
ডক্টর : কিছুক্ষন প…
নীলিমা : না তুমি ওর সাথে দেখা করবেনা ।
মেরিন অবাক হয়ে নীলিমার দিকে তাকালো ।
মেরিন : কি যা তা বলছো?
নীলিমা : ঠিকই বলছি। তুমি ওর সাথে দেখা করবেনা ।
মেরিন : মামনি …
নীলিমা : একদম আমাকে মামনি বলে ডাকবেনা ।
মেরিন : …
নিহাল : কি যা তা বলছো?
নীলিমা : ঠিকই বলেছি। ওকে আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম যে আমার ছেলে আমার দুর্বলতা । আমার ছেলে আমার সব … আর ও আমার ছেলেকে অত্যন্ত ভালোবাসে বলেই ওকে এতো বিশ্বাস করেছি । কিন্তু আজকে ওরজন্য আমার ছেলের এই অবস্থা। ও যদি রাত ভর বাহিরে না থাকতো … আমার ছেলেকে না রাগাতো তবে ও গাড়ি নি়য়ে তখন বেরও হতোনা। আর অ্যাক্সিডেন্টও হতোনা।
নিহাল : কেউ গাড়ির ব্রেকফেইল করে রেখেছিলো বলেই না এমনটা হলো। জাস্ট দুর্ঘটনা…
নীলিমা : জাস্ট দুর্ঘটনা ? নিহাল ও মেরিনের গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলো।আর কেউ মেরিনের ক্ষতি করতে চেয়েছিলো। আর যেহেতু নীড় গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে তাই ওর সাথে এমনটা হয়েছে। যার মানে ২দিক দিয়ে ওর দোষ।
নিহাল : আর যখন তোমার ছেলেকে মরতে বসেছে তারবেলা?
নীলিমা : তখন কিন্তু আমি নিজের ছেলেকেও ছারিনি নিহাল। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে এভাবে দেখতে পারছিনী নিহাল। মেরিন কেন এমনটা করলো। কেন কেন কেন? ছেলেটার সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। ছেলেটা হয়তো আর হাটতে পারবেনা।
নীলিমা ছেলের এমন অবস্থা মেনে নিতে পারেনি।
মেরিন একটুও কষ্ট পায়নি। আর কোনো রিঅ্যাক্টও করলোনা। ওর কাছে এসব বিষয়ে রিঅ্যাক্ট করা নিছক বাচ্চামো। কেবল ১টা বাকা হাসি দিলো। আসলেই মানুষ বড় স্বার্থপর।
দাদুভাই কিছু বলতে নিলে মেরিন ইশারায় না করে দিলো।
মেরিন : জন…
জন : হামমন।
মেরিন : কাম হেয়ার।
জন এগিয়ে গেলো।
মেরিন : নীড়ের জ্ঞান ফেরার আগে আমি তার কাটা হাত ২টা দেখতে চাই যে কাজটা করেছে। আর এই কাজটা শেষ করে সিঙ্গাপুর থেকে ডক্টর আনার ব্যাবস্থা করো নীড়ের ট্রিটমেন্টের জন্য।
বলেই মেরিন নীড়কে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে ঢুকতে নিলো।
নীলিমা : বলেছিনা আমার ছেলের কাছে যাবেনা।
মেরিন নীলিমার দিকে ঘাড় ঘুরালো।
মেরিন : গেলে কি করবেন মিসেস চৌধুরী?
নীলিমা : মিসেস চৌধুরী?
মেরিন : অফকোর্স। মিসেস চৌধুরী… যেহেতু মামনি না সেহেতু ইটস পারফেক্ট। আর সবথেকে বড় ফ্যাক্ট মেরিন বন্যার মামনি হওয়া আপনি ডিজার্ভ ও করেননা।
বলেই মেরিন ভেতরে ঢুকলো।
নীলিমা : দেখলে তুমি মেয়েটা কি বলল? আমি মামনি হওয়া ডিজার্ভ করিনা ওর… এ কথা বলতে পারলো ? আমি কি ওকে একটুও ভালোবাসিনি?
নিহাল : তুমিও বা কেন মেয়েটাকে বকতে গেলে? ওগুলো বলতে গেলে? মামনি ডাকতে না করলে…
নীলিমা : আরে মায়েরা তো কতো কি রাগ করে বলে… না হয় বলেছি। আর ভুল করেছে বলেই তো বলেছি নাকি। তাই বলে মিসেস চৌধুরী ডাকবে।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই সুস্থ হবে ইনশাল্লাহ । নীলিমা চৌধুরী তুমি খামোখা নিজেকে ব্যাডলিস্টে নিয়ে নিলে।
বলেই দাদুভাই চলে গেলো।
.
মেরিন চুপচাপ বসে আছে নীড়ের পাশে। তাকিয়ে আছে নীড়ের দিকে।
মেরিন : আমি ব্যার্থ হয়েছি নীড়… আপনাকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারিনি। উল্টা আমার বিপদ আপনার ঘাড়ে পরলো। জীবনে এই প্রথমবার নিজের সব পাওয়ারকে তুচ্ছ মনে হচ্ছে। আচ্ছা সৃষ্টিকর্তা আমার সাথেই কেন এমন করে বলতে পারবেন? সবার সাথে লড়াই করতে পারি। নিজের ভাগ্যের সাথে পারিনা । আর আল্লাহর সাথে তো যুদ্ধ করার কি… করতে চাওয়ারও কোনো ভিত্তি নেই। কারন আল্লাহ তো আল্লাহই । তাঁর তুলনা শুধুই সেঁ । আই অ্যাম সরি নীড়। আমার জন্যই আপনার সাথে এসব হয়েছে। আপনি ঠিকই বলতেন যে আমার দ্বারা কিছুই শুভ হতে পারেনা । কি নামে যেন ডাকেন আমাকে? অতৃপ্ত আত্মা। আমি আসলেই ১টা আত্মা।
.
পরদিন…
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। দেখলো সবাই দারিয়ে আছে । তবে অবাক হলো মেরিনকে দেখে। ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছে যেন কিছু হয়ইনি।
নীলিমা নীড়ের কাছে গেলো।
নীলিমা : বাবা… রাগ একটু কমালে কি হয় ? তুমি ছারা কে আছে আমাদের ? তুমি ছারা কে আছে আমার বলো তো ? তুমি যে আমার কলিজার টুকরা । তোমার কিছু হলে বাচবো কি নিয়ে আমি?
বলেই নীড়ের কপালে চুমু একে দিলো । নীড় ফিরে ফিরে মেরিনের দিকে তাকাচ্ছে । নিহাল বিষয়টা খেয়াল করলো ।
নিহাল : আই থিংক নীড়ের এখন রেস্ট প্রয়োজন। নীলিমা চলো বাহিরে চলো।
নীলিমা : না আমি এখন আমার ছেলের কাছে থাকবো।
নিহাল : বলছিনা চলো।
বলেই নিহাল নীলিমাকে টেনে নিয়ে গেলো । নিহালের ভাবনা অনুযায়ী মেরিন রয়ে গেলো ।
ওরা বের হতেই মেরিন নীড়ের মাথার পাশে বসলো।
নীড় মনে মনে : তুফান আজকে এতো ঠান্ডা কেন? আমি তো ভেবেছিলাম মামনি বাবা বের হলে আমার বুকের ওপর হামলা করবে । কিন্তু এতো দেখি নির্বাক চলচিত্র ।
মেরিন : আপনি জানেন ডক্টর কি বলেছে? বলেছে আপনার ডান পা টা অকেজো হয়ে যেতে পারে। মানে হয়তো আপনি আর হাটতে পারবেননা । দ্যাটস মিন আপনি চিইলেও আমার থেকে পালাতে পারবেননা।
নীড় বিস্ফোরিত চোখে মেরিনের দিকে তাকালো … বলে কি মেয়েটা?
মেরিন : জানেন এই ব্যান্ডেজগুলোতে না আপনাকে ভীষন কিউট লাগছে।
নীড় : 😱।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 20
writer : Mohona
নীড় : 😱।
মেরিন : নিন … এখন চুপটি করে ঘুমান ।
নীড় ড্যাপড্যাপ করে তাকিয়ে রইলো।
মেরিন : এভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। আমার প্রেমে আপনি পরবেননা। ঘুমান। চোখ বন্ধ।
নীড় মনে মনে : মেয়েটা কখনো স্বাভাবিক কথা বলতে পারেনা।
মেরিন ধীরে ধীরে মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। নীড় চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ মনে হলো হাতে ১ফোটা গরম তরল পরলো।
নীড় মনে মনে : মেরিন কাদছে …
নীড় তারাতারি চোখ মেলল। নাহ… মেরিনতো স্বাভাবিকই আছে।
মেরিন : কি হলো?
নীড় কিছু না বলে কয়েক সেকেন্ড মেরিনের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ বন্ধ করে ফেলল।
নীড় মনে মনে : যতোই লুকাও… আমি জানি তুমি কাদছো মেরিন। আমি জানি তুমি কাদছো। আমার পা অকেজো হয়ে যেতে পারে… আমি চাইলেও তোমার থেকে পালাতে পারবোনা… এই কথাটার মধ্যে তোমার আনন্দ না। তোমার ব্যার্থতা … তোমার আক্ষেপ মিশে আছে । যন্ত্রনা মিশে আছে । যে আমার এই অবস্থা। আর আমার ব্যান্ডেজ করা চেহারাটা তোমার কাছে কিউট লাগছেনা… তোমাকে অসহনীয় কষ্ট দিচ্ছে। তোমার সহ্যসীমা বাহিরে… সেটা আমি বেশ বুঝে গিয়েছি। তবে অবাক হলাম… তোমার বাকীসব ফিলিংসের মতো আমার প্রতি ভালোবাসাটাও … চিন্তাটা আড়াল করলে । যেটা তুমি কখনো করোনা। তারজন্য ভীষন ভয় হচ্ছে … তুমি নিজের কোন ক্ষতি না করে ফেলো…
এসব ভাবতে ভাবতে নীড়ের অজান্তেই ওর চোখের কোনে পানি চলে এলো। সেগুলো নিচে পরার আগেই মেরিন ঠোট দিয়ে শুষে নিলো।
এরপর বেশ ঠান্ডা গলায়
বলল : আপনার কি কষ্ট হচ্ছে নীড়?
নীড় চুপ।
মেরিন : দারান আমি ডক্টরকে ডেকে নিয়ে আসি ।
মেরিন উঠতে নিলে নীড় কেবল ওর হাতে টাচ করলো। মেরিনের হাত ধরে আটকানোর মতো অবস্থায় ও নেই। আর মেরিনের সাথে কথা বলতে চাইছেনা ।
মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় ওকে যেতে না করলো। তাই ও আর গেলো। বসে রইলো । নীড়ের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। কিছুক্ষনপর নীড় ঘুমিয়ে পরলো ।।
.
একটুুপর …
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : হামম ।
জন ঢুকলো ।
জন : স্যার এখন কেমন আছে ?
মেরিন : ভালো।
জন : ম্যাম… ওর হাত ২টা তো কাটা শেষ এখন ?
মেরিন : যন্ত্রনাটা একটু কমুক। এরপর নতুন ক্ষত দিবো আজকে ওর জন্য…
তখন নীলিমার বলা কথাগুলো কানে বারি খেলো। ‘তোমার জন্য আমার ছেলের এই অবস্থা ।’
মেরিন মনে মনে : ঠিকই বলেছে মামনি। আমার জন্যই তো….
জন : ম্যাম… কি হয়েছে ?
মেরিন : কিছুনা । ডক্টর দের কি খবর ?
জন : ম্যাম নেক্সট উইকের শুরুর দিকেই তারা চলে আসবেন।
মেরিন : হামমম।
জন : আসছি ম্যাম।
মেরিন : জন শোনো…
জন : জী ম্যাম।।
মেরিন : তুমি কিছু খেয়েছো ? নাকি কাজই করে যাচ্ছো?
জন : না ম্যাম খেয়েছি।
মেরিন : ভালো। শোনো মামনি-বাবা কালকে রাত থেকে কিছুই খায়নি। ওদেরকে খাওয়াও।
জন : জী ম্যাম। ম্যাম আপনিও তো কিছু খাননি কাল থেকে। আপনিও ষদি কিছু খেয়ে নিতেন।
মেরিন : যেটা বলেছি সেটা করো।
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : আর শোনো আমার ১টা তারকাটার চাবুক লাগবে।
জন : কিন্তু কেন?
মেরিন : আজকাল বড্ড প্রশ্ন করো।
জন : সরি ম্যাম…
জন বেরিয়ে গেলো।
.
পরদিন…
নিরা এলো নীড়কে দেখতে। হাতে ফুলের তোরা নিয়ে । ওকে দেখে নিহাল-নীলিমা-নীড় অবাক হলো। মেয়েটার সাহস কিভাবে হলো যে নীড়ের সাথে দেখা করতে এলো।
নিরা নীড়ের সামনে গিয়ে বসলো । নীড় ১বার নিরার দিকে তাকাচ্ছে আর ১বার মেরিনের দিকে তাকাচ্ছে । আর মেরিনকে যতোবার দেখছে অবাক হচ্ছে। কোনো হেলদোল নেই। কেবল শীতল নজরে দেখছে।
মেরিনের এমন আচরন নীড়কে বড্ড ভাবাচ্ছে।
নিরা : কেমন আছো নীড় বেবি ?
নীড় : ভালো ।
মেরিন : মিথ্যা কেন বলছেন ? শোন নিরা আমি তোকে বলছি। আসলে উনার ডান পায়ে অনেক যখম। হয়তো আর চলতে ফিরতে পারবেননা ।
কথাটা শুনে নিরা অবাক হলো। নীলিমার বড্ড রাগ উঠলো।
নীলিমা : তুমি কি যা তা বলছো বলো তো ? এমন করে কেউ বলে? তাও …
মেরিন : তাও নীড়ের সামনে তাইতো … কেউ বলেনা তাই আমি বলি…
নিরা মনে মনে : নীড় আর হাটতে পারবেনা । ওহ থ্যাংকস গড যে ওর সাথে আমার বিয়ে হয়নি। তাহলে এমন মানুষকে নিয়ে সংসার করতে হতো । আহারে মেরিন … তোর কপালে আসলেই সুখ নেই। এখন একটু ভালোগিরি করি…
নিরা লোক দেখানো কান্না করতে লাগলো। তবে নীড় সেটা খেয়ালই করেনি। ও মেরিনের দিকে তাকিয়ে আছে । হয়তো ওর পক্ষে কোনোদিনই মেরিনকে বোঝা সম্ভবনা।
নিরা : কেন তোমার সাথে এমন হলো? হলে আমার সাথে হতো … আমি কষ্ট পেতাম… কেন আমার সাথে হলোনা… কেন কেন কেন ?
মেরিন : তোর খুব শখ বুঝি অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার তাইনা? ওকে তোর এই ইচ্ছা আমি পূরন করে দিবো। নো ওয়ারি… এটা এখন আমার দায়িত্ব …
নীড় একটা মুচকি হাসি দিলো। ওর অজান্তেই হাসিটা চলে এলো মেরিনের এমন আচরন দেখে। পরক্ষনেই ভাবলো মেরিনকে আর অন্যায় করতে দেয়া যাবেনা । ১টা বার সুস্থ হলে মেরিনকে সব অন্যায় থেকে দূরে রাখার চেড় চেষ্টা করবো। ওর ট্রিটমেন্টও করবে।
মেরিনের কথা শুনে নিরার তো ভয় শুরু হয়ে গেলো ।
মেরিন : ভয় পাচ্ছিস কেন বলতো ? আমি তো জাস্ট তোর মনের আশাটাই পূরন করছি…
নীড় বেশ কঠোর কন্ঠে বলে দিলো : মামনি ওকে বলো যে যদি ও নিরার সাথে এমন কিছু করে তবে কসম আল্লাহর তবে নিজেকে শেষ করে দিবো …
কথাটা শুনে মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো । বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : ওকে ফাইন আমি নিরার সাথে ‘এমন কিছু করবোনা’ ।
নীড় বুঝলো না মেরিন ‘এমন কিছু করবোনা’ কথাটা এভাবে কেন বলল ? কেন যেন সন্দেহ লাগছে ।
আসলে মেরিন ঠিক করেছে নিরার সাথে অন্যকিছু করবে। একটুপর নিরা চলে গেলো। আর যাওয়ার পথেই নিরার হাতে আর পায়ে ব্যাপকভাবে পিটানো হলো। মিনিমাম ৬মাস খুরিয়ে খুরিয়ে হাটবে ।
.
পরদিন …
কবির রেগে মেগে এলো কথা শুনাতে ।
মেরিন নীড়ের কেবিনের বাহিরে বসে আছে। ভেতরে নীলিমা নীড়কে খাইয়ে দিচ্ছে । আসলে মেরিন ইচ্ছা করেই বেরিয়ে এসেছে। হুট করে বুকের বা পাশটাতে অসম্ভব ব্যাথা অনুভব করছে । নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে । বুকের ওপর হাত দিয়ে বসে আছে। একটু একটু হাত বুলিয়েও দিচ্ছে।
মুখ দেখেও যে কেউ বুঝতে পারবে যে ওর ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
কবির যতো খারাপই হোক মেয়েকে যতোই অপছন্দ করুক। মেয়ে তো মেয়েই। বাবা তো বাবাই … খারাপ লাগলো। তাই আর কথা শোনানোর ইচ্ছা হলোনা। ইচ্ছা করছে জিজ্ঞেস করতে যে কি হয়েছে। কিন্তু কবির ভালো মতোই জানে এই কথাটা জিজ্ঞেস করলে মেরিন বলবেনা। ওকেই উল্টা কথা শোনাবে। কবির ভাবলো হয়তো এসব কিছুর জন্য নিজেই দায়ী … ১টা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে কবির চলে গেলো।
.
পরের সপ্তাহ…
সিঙ্গাপুর থেকে ৫জন ডক্টর এসেছে। মেরিন আনিয়েছে । ২মাসের জন্য । তারা বসে আছে মেরিনের মুখোমুখি ।
মেরিন : এখানকার ডক্টররা বলেছে যে নীড়ের পা অকেজো হয়ে যেতে পারে। হয়তো নীড় আর কখনো হাটতে পারবেনা। তবে এসব কিছুর জন্য ১মাস অপেক্ষা করতে হবে। আর আমি চাই ১মাসের মধ্যে নীড়ের পা ভালো হয়ে যাক ।এই ১মাসের মধ্যেই দৌড়াতে না পারলেও অন্তত হাটতে যেন পারে। আপনাদের সময়সীমা ১মাস। কি করবেন কিভাবে করবেন আমি জানিনা। সেটা আপনাদের ব্যাপার। আমি জানিনা আর জানতেও চাইনা। তবে আমাকে কি করতে হবে সেটা আপনারা নির্দ্বিধায় জানাবেন … আশা করি আমার কথা বুঝেছেন। জন ..
জন তাদের সবাইকে ১টা করে ব্যাগ দিলো। সেগুলো ভরা টাকা।
মেরিন : বাংলাদেশে আসার আগেও ১টা ব্যাগ পেয়েছে টাকা ভরা । এখনও ১টা পেলেন । নীড়কে সুস্থ করে যাবার সময়ও পাবেন। দরকার হলে নীড়কে হসপিটালেই রাখবো। তবুও ওকে সুস্থ চাই। অল দ্যা বেস্ট।
বলেই মেরিন উঠে গেলো ।
পরদিন থেকে ডক্টররা নিজেদের কাজ শুরু করলো। নীড়ের কিছু টেস্ট করালো ।
.
৩দিনপর …
আজকে নীড়ের মুখের আর বুকের ব্যান্ডেজ খোলা হলো । নীলিমা নীড়ের মুখে চুমু একে দিলো।
নীলিমা : আমার সোনা বাচ্চাটা।
এই কদিনে নীড় মেরিনের সাথে ১টা কথাও বলেনি । দুপুরের দিকে খাবার চলে এলে মেরিন নীড়কে খাইয়ে দিতে লাগলো। নীড় দেখলো যে মেরিন আজও ফুল স্লিভের জামা পরেছে। নীড় অবাক হচ্ছে । ওর জ্ঞান ফেরার পরদিন থেকেই মেরিনকে এভাবে দেখছে । কোনো কারন তো নিশ্চয়ই আছে ।
আসলে মেরিন রোজ রোজ নিজের শরীরকে যখম করে। নিজেকে শাস্তি দেয় ।
নীড়কে খাওয়ানোর সময় আবার হঠাৎ করে মেরিনের বুকের বা পাশে ব্যাথাটা উঠলো । খুব কষ্ট হচ্ছে মেরিনের। তবুও নীড়কে খাইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। বুকটা চেপে ধরলো ।
নীড় : কি হলো? হঠাৎ করে ওর মুখটা এমন দেখাচ্ছে কেন ? কি হয়েছে ?
তখন মেরিন বেরিয়ে এলো । নীড় মেরিনের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে যে কাহিনি কি। কিন্তু বুঝতে পারলোনা।
তখন দাদুভাই এলো নীড়কে দেখতে। কথা টথা বলতে লাগলো।
নীড় : দাদুভাই… আম্মুর শরীরটা কেমন আছে? অসুস্থ হয়ে পরেনিতো?
দাদুভাই : না । স্থিতিশীল আছে। যেন অস্বাভাবিক হয়ে না পরে তাই অ্যাসাইলামে নেয়া হয়েছে।
নীড় : থ্যাংকস গড …
.
১মাসপর …
আজকে অবশেষে নীড় হসপিটাল থেকে বাসায় যাবে । নীড়ের পা অনেকটাই ভালো। লাঠি ভর করে হাটতে পারে । সকাল সকালই নীড় বাসায় ফেরার জন্য অস্থির হয়ে গেলো। তাই মেরিনও আর নীড়কে অপেক্ষা করালোনা। দ্রুত সবটা গুছিয়ে নিয়ে বাসায় ফিরলো। বাসায় ফিরে নীড় ১টা স্বস্তি নিঃশ্বাস নিলো।
বিকালে নীড় বসে বসে ভাবছে । যে এই ৪০দিনে ও নীলিমা আর মেরিনকে ১টা বারও সবসময়ের মতো কথা হয়নি। খুব প্রয়োজন ছারা কেউ কারও সা়থে কথা বলেনা। যদিও নীড়ও তেমন করে কথা বলেনি। তবে এই ১টা মাস মেরিন নীড়ের সাথে নীড়ে বেডেই ঘুমিয়েছে। তবে ও অসুস্থ বলে ওর বুকের ওপর মাথাটা রাখেনি। হাত রেখেছে । ভেবেই
নীড় বলল : পাগলি…
তখন নিহাল রুমে ঢুকলো ২কাপ চা নিয়ে।
নিহাল : আসবো নাকি?
নীড় : আসো বাবা।
নিহাল ঢুকলে।
নীড় : তুমি চা নিয়ে এলে যে ?
নিহাল : কেন আনতে পারিনা বুঝি? আমি কিন্তু চা অতোটাও খারাপ বানাইনা।
নীড় : এমনভাবে বলছো যেন চা তুমিও বানিয়েছো । মামনির হাতের চা এটা ।
নিহাল : কি করে বুঝলে?
নীড় : ২টা কারনে। এক মেরিনের চা… একটু আলাদা। তাই এটা মামনির। আর তুমি চা বানাতে পারো না। চৌধুরী বাড়ির ছেলেরা এই দিকে জিরো।
বলেই বাবা-ছেলে হাসতে লাগলো।
নীড় : বাবা …
নিহাল : হ্যা বলো।
নীড় : শাশুড়িবউমার মধ্যে কি হয়েছে ?
নিহাল সবটা বলল।
নীড় : হায়রে মামনি। আসলে এটা মামনির দোষনা। এটা প্রতিটা বাঙালি মায়ের ব্যাধি । সন্তানের কিছু হলে মাথা খারাপ হয়ে যায়। মামনি না হয় রাগের মাথায় বলেছে। সব ভুলে যাবে। কিন্তু মেরিন… সে তো কিছু ভোলেনা । কে জানে আবার কি পাগলামি করবে…
.
মেরিন রাতের খাবার রান্না করছে। নীলিমা চা খাচ্ছে আর মেরিনকে দেখছে।
নীলিমা মনে মনে : আমি না হয় রাগেক মাথায় ১টা কথা বলেই দিয়েছি। তাই বলে এখনও অভিমান করেই থাকবে? ভালো লাগেনা। হুহ। বলি তোর আম্মুকি কখনো তোকে বকতো না ? ধমক দিতো না? নাকি আমি শাশড়ি বলে বকেছি বলে এতোবড় কথাটা বললি? হুহ।
মেরিন কাজ করছে আর নীলিমার কর্মকান্ড দেখছে। মেরিন এখন বেশ বুঝে গিয়েছে যে নীড় এমন কেন? নীড় মা-বাবা মিলিয়েই হয়েছে। নিহাল আধা পাগল । নীলিমা আধা পাগল। আর ২জন মিলিয়ে নীড় পুরা পাগল।
কাজ শেষ করে মেরিন বের হলো। ফ্যাক্টরি সাইটে ১টা সমস্যা দেখা দিয়েছে তাই।
নিহাল : মেরিন কোথায়?
নীলিমা : জানিনা ওর খবর আমি হুহ। সকাল থেকে দৌড়াদৌড়ি। রাতের রান্না করে এখন এই সন্ধ্যাবেলা অফিসের কি যেন কাজে বেরিয়েছে । ঢং…
২ঘন্টার মধ্যেই মেরিন ফিরে এলো।
.
রাতে…
মেরিন ঘুমিয়ে আছে। নীড়ের ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো। দেখে মেরিন হাতের ওপর মাথা কাত করে ঘুমাচ্ছে। নীড় বেশ বুঝতে পারছে যে হাতের ওপর মাথা রেখে ও নীড়কে দেখছিলো। দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরেছে ।
নীড় : আমার ভালোবাসা তো নিরার প্রতি। তবে তি তোমার প্রতি কি কেবল আকর্ষণ ? কেবল মোহ ? নাকি মানবকুলের সেই চিরচায়িত চাহিদা? আমি জানিনা কি? তবে ভালোবাসা না। কারন ভালো কি ২বার বাসা যায়? প্রেম কি দ্বিতীয়বার হয়? নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কখনো কোনো কিছুতে কনফিউজ হয়নি। কিন্তু তোমার উন্মাদনা আমাকে আজ মহা তনফিউজড করে দিয়েছে। হয়তো কবুলের জোরে এমনটা হচ্ছে । আবার হয়তো এতোদিন ধরে একসাথে থাকার জন্য । নাকি … নাকি ভালোবাসার জন্য । জানিনা… নিজেকে পাগল পাগল লাগছে মিস অতৃ… থুরি মিসেস অতৃপ্ত আত্মা। মাথা কাজ করছেনা। তবে উপসংহারে যে পৌছাতেই হবে। কিন্তু কিভাবে?
নীড় দেখলো মেরিন ঠান্ডায় কাজুমাজু হয়ে আছে। মেরিনকে নিজের ব্ল্যাংকেট ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো। এরপর কিছু ১টা ভেবে মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে বুকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 21
writer : Mohona
.
সকালে…
মেরিনের ঘুম ভাংলো। অবাক হলো। মনে করলো যে হয়তো নিজেই এমনটা করেছে। কিন্তু নিজের এমন বেসামাল ঘুমের কারন খুজে পায়না। মেরিনের এমন রিঅ্যাকশন দেখে নীড়ের প্রচন্ড হাসি পাচ্ছে। এমন করে কখনো ও মেরিনকে দেখেনি । আজকেই দেখলো ।
মেরিন : নীড়ের কতো কষ্ট হয়েছে। আমি এতোটা বেসামাল কি করে হলাম? ওহ গড। আল্লাহ ৮টা বাজে। ৯টায় মিটিং …
মেরিন তারাতারি উঠে গেলো।
নীড় মনে মনে : তোমার ভেতরে অন্য ১টা তুমি আছো। সেই তুমিটাকে বের করতে হবে।
.
মেরিন অফিস পৌছালো।
মেরিন : জন মিটিং রুম রেডি?
জন : জী ম্যাম। কিন্তু।
মেরিন : কিন্তু কি?
জন : ম্যাম আজকে আমাদের যাদের সাথে মিটিং হওয়ার কথা তাদের হেড আর কেউ না ট…
মেরিন : টনি। তাইতো?
জন : ম্যাম আপনি জানতেন যে টনির সাথে মিটিং?
মেরিন : হামম।
জন : ম্যাম তবুও আপনি রাজি হয়েছেন ?
মেরিন : হ্যা হয়েছি। কারন রাজী না হওয়ার কোনো কারন নেই।
জন : ম্যাম টনি …
মেরিন : টনি আমাকে ভালোবাসে। তাইতো? দেখো না তো টনি টিনেজার আর না আমি। উই আর অ্যাডাল্ট । আর আমি জানি টনিকে। বিজনেস স্কুলে ও আমার ক্লাসমেট ছিলো । আমি জানি ওকে । না তো ও নীড়ের মতো জেদী। না তো ও নিলয়ের মতো জঘন্য । আর না তো তপুদার মতো আবেগ প্রবন। ও ১জন সফল বিজনেসম্যান । আমি কেবল এটা জানি আর বুঝি যে টনির সাথে মিটিংটা সফল হলে ওর কাছ থেকে কনট্র্যাক্টটা পাবো। আর তাতে আমার কোম্পানির লাভ হবে। দ্যাটস ইট।
টনির : তোমার ভাবনা চিন্তার জন্যই আজ তুমি সফল মেরিন…
মেরিন ঘুরে দেখে টনি । কালো পোশাক পরে দারিয়ে । মেরিনের কালো রং প্রিয় বলে টনি সবসময় কালো রং ই পরে।
টনি : গুড মর্নিং।
বলেই টনি হাত বারিয়ে দিলো। মেরিন হাত মিলালো।
মেরিন : গুড কি ব্যাড মর্নিং সেটা মিটিং এর পর বোঝা যাবে । হ্যাভ সিট।
২জন খুব সুন্দরভাবে মিটিংটা সম্পুর্ন করলো। এরপর ২জনই কনট্র্যাক্ট পেপারে সিগনেচার করলো।
মেরিন : গুড মর্নিং এন্ড কংগ্রেচ্যুলেশনস।
টনি : সেইম টু ইউ। মেরিন কিছু মনে না করো তবে ১টা কথা জিজ্ঞেস করি?
মেরিন : হামম।
টনি : তুমি কি অসুস্থ ?
মেরিন : নো । কালকে দেখা হচ্ছে।
টনি : হামমম বাই।
মেরিন :বাই।
টনি বেরিয়ে এলো।
টনি : তুমি অসুস্থ মেরিন … তুমি অসুস্থ । আমি জানি তুমি অসুস্থ …
.
মেরিন বাসায় পৌছালো।
নীড় : বাবা… অতৃপ্ত আত্মাটা বাসায় ফিরেছে। অ্যাকশন।
নিহাল : নীড় …তুমি আবারও ভেবে দেখো। একটু ১৯-২০ হলে তোমার মামনি কিন্তু সাংঘাতিক ব্যাথা পাবে ।
নীড় : বাবা তুমি অতৃপ্ত আত্মাটাকে চিনোনা। ও এমন ১টা আত্মা যে কিনা যেকোনো জায়গাতেই প্রকট হতে পারে। তাইতো ও অতৃপ্ত আত্মা।
নিহাল : কিন্তু মেরিন যদি নিচে না নামে?
নীড় : আরে আমি কিছু খেতে চাইবো আর মেরিন সেটা করে খাওয়াবেনা? সূর্য দক্ষিন দিকে উঠতে পারে তবুও এটা হতে পারেনা।
নিহাল : তোমার মামনি?
নীড় : উফফ আমার বউকে আমি পাঠাবো আর তোমার বউকে তুমি।
নিহাল : আমার বউ শুনবেনা আমার কথা।
নীড় : বলো আমি কিছু খেতে চাই। তাহলে ঠিক যাবে। মেরিন ঢুকতেই সিড়িতে তেল ফেলে দিবে। আর মামনিকে নিচে পাঠানোর ব্যাবস্থা করবে… ওভার এন্ড আউট …
নিহাল : ওকে ওভার এন্ড আউট …
মেরিন রুমে ঢুকতে নিহাল সিড়িতে তেল ফেলে রুমে গেলো।
নিহাল : নীলা … নীলা…
নীলিমা : চেচাচ্ছো কেন?
নিহাল : নীড়ের নাকি ক্ষুধা লেগেছে। তাই ওকে কিছু খেতে দিতে বলছে তোমাকে ।
নীলিমা : গাড়ির আওয়াজ পেলাম। ওর বউ এসেছে মনে হলো। ওর বউকে দিতে বলো।
নিহাল : মেয়েটা কেবল এলো। দাওনা গিয়ে।
নীলিমা : দিচ্ছি..
ওদিকে মেরিন ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হতেই নীড় নিজেকেই বলতে
লাগলো : ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। সেই সকাল থেকে কিছু না খাওয়ায় মাথা ঘুরাচ্ছে ।
মেরিন : আপনি সকাল থেকে কিছু খাননি?
নীড় : তোমাকে বলবো না যে আমি খাইনি ।
মেরিন : নীড় আপনি না… দারান আমি এখনই খাবার নিয়ে আসছি…
.
নীলিমা মেরিনের গুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে সিড়ি দিয়ে নামছে। তাই খেয়ালও করেনি যে তেল ফেলা। পা পিছলে পরে যেতে নিলে দিলো ১ চিৎকার । তখন মেরিন এসে ওর হাত ধরলো। নীলিমা চোখ মেলে দেখে মেরিন ওর হাত ধরে রেখেছে ।
নীলিমা : তুই কেন আমার হাত ধরলি?
মেরিন : ছেরে দিবো?
নীলিমা : হামমম।
মেরিন : বেশ।
বলেই মেরিন নীলিমার হাত ছেরে দেয়ার ভান করলো।
নীলিমা : আআ… ছারিস না।
মেরিন নীলিমাকে সোজা করে দার করালো।
নীলিমা : এভাবেই দারিয়ে থাকবি নাকি আমাকে জ…
মেরিন নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো।
নীলিমা : না হয় একটু বকেছিলাম। তাই বলে এতোগুলো দিন কথা না বলে থাকবি?
মেরিন : তোমার বকার জন্য কথা বন্ধ করিনি। নিজের ওপর রাগ করে করেছিলাম। একে তো আমার জন্য নীড়ের ওই অবস্থা। তারওপর তোমাকে যাতা বলে দিয়েছিলাম।
নীলিমা : আমিও তো কমকিছু বলিনি।
নিহাল-নীড় লুকিয়ে সবটা দেখলো।
মেরিন : কিন্তু এখানে এতো তেল…
নীলিমা : হ্যা তাইতো…
নীড় : বাবা… ইটস টাইম টু পালাও…
নিহাল : হ্যা।
নীলিমা-মেরিন : নিহাল/নীড় …
.
১৫দিনপর…
নীড় এখন সম্পুর্ন সুস্থ । মেরিন নীড়ের কফি নিয়ে এসে দেখে নীড় রেডি হচ্ছে ।
মেরিন : কোথায় যাচ্ছে?
নীড় : আমি কোথায় যাই? না কোরোনা। আমি সুস্থ । আর আম্মুর শরীরনা বেশি খারাপ হয়ে যায় ।
মেরিন : আপনি যাবেন তবে কালকে থেকে ।
নীড় : কেন কালকে থেকে কেন?
মেরিন : কারন আম্মু এখন অ্যাসাইলামে আছে । আজকে আম্মুকে মিরপুর শিফ্ট করা হবে। কালকে থেকে যাবেন।
নীড় : আমি অ্যাসাইলামে যাচ্ছি।
মেরিন : অতো জার্নি করতে হবেনা। কখনো তো ১টা কথা একবারে শুনুন।
নীড় : 😒।
.
পরদিন…
নীড় : হুয়াট ইজ অল দিস…?
মেরিন : নীড়… এতো রিয়্যাক্ট করার কি আছে ?
নীড় : রিয়্যাক্ট করবোনা ?
মেরিন : না। রিয়্যাক্ট করার কিছুই নেই। এখন থেকে আপনি ড্রাইভ করবেননা। সবসময় ড্রাইভার থাকবে। আর একা কোথাও বের হবেন না। সাথে বডিগার্ড থাকবে। যেমনটা দাদুভাইয়ের সাথে থাকে ।
নীড় : আমি দাদুভাই নই । আমি নিজেকে সামলাতে পারি। আই ডোন্ট নিড দেম।
মেরিন : বাট আই নিড। আমি বলেছি তো বলেছি ।
নীলিমা : মেরিন ঠিকই বলছে। তুই একা কোথাও বের হবিনা।
নীড় : কিন্তু…
নিহাল : কিসের কিন্তু? একদম জেদ করবেনা।
নীড় : নিজের বাড়িতেই নির্যাতিত আমি… আজকে থেকে ২টা লেজ নিয়ে ঘুরতে হবে। থ্যাংকস টু অতৃপ্ত আত্মা…
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো।
.
মেরিন প্রজেক্ট সাইটে এসেছে। কাজ কেমন হচ্ছে তা দেখতে । সেই সাথে কিছু কাজও আছে। সেগুলোও করছে। জন আসেনি। জন ঢাকার বাহিরে গিয়েছে। টনিও এসেছে এখানে একই কাজে। টনি টনির মতো কাজ করছে আর মেরিন মেরিনের মতো। ২জনই যথেষ্ট প্রফেশনাল। মেরিন তো বরাবরই এমন । টনিও । তবুও যদি ভালোবাসার কথা মাথা ঘুরে তখন ও নিজেকে সামলে নেয় এটা ভেবে যে ১৯ থেকে ২০ হলে মেরিন কনট্র্যাক্ট বাতিল করে দিবে। আর এতে ২কোম্পানিরই ক্ষতি হবে।
মেরিনের হুট করে আবার বুকের ব্যাথা শুরু হলো। কাজ বাদ দিয়ে মেরিন বুকের ওপর হাত দিয়ে বসে পরলো। বিষয়টা টনি লক্ষ্য করলো। টনি উঠে গেলো।
টনি : মেরিন তুমি ঠিক আছো ?
মেরিন : হ্যা।
টনি : মেরিন … চলো ডক্টরের কাছে চলো।
মেরিন : তুমি তোমার লিমিটের মধ্যে থাকো।
টনি : মেরিন । সরি।
টনি চলে যেতে নিলো। তখন কিছু ১টা পরে যাবার শব্দ পেয়ে ঘুরে দেখে মেরিনের মোবাইলটা নিচে পরে আছে। মেরিনে দিকে তাকিয়ে দেখে মেরিন জ্ঞান হারিয়েছে।
টনি : মেরিন… মেরিন…
টনি মেরিনের মুখে পানি ছিটিয়ে দিলো। তবুও জ্ঞান ফিরলোনা। টনি চিন্তায় পরে গেলো। জনও নেই । টনি ভাবলো যদি মেরিন রাগও করে তবে করবে।
টনি মেরিনকে গাড়িতে করে নিয়ে হসপিটালে গেলো।
নীড় শপিং করতে যাচ্ছে। আসলে কনিকা আজকে মর্জি করছিলো । তাই নীড় আর কনিকাকে ডিস্টার্ব করেনি।
টনি হসপিটালে পৌছালো । মেরিনকে কোলে তুলে ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো । নীড়ের গাড়িও হসপিটালের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো।
ঘটনাটা দেখলো।
নীড় : স্টপ দ্যা কার স্টপ দ্যা কার।
ড্রাইভ : কেন স্যার?
নীড় : বলেছি তাই থামাও।
ড্রাইভার থামলো।
বডিগার্ড : স্যার হসপিটালের সামনে রাখতে বললেন যে ?
নীড় : শাট আপ।
নীড় ছুটে ভেতরে ঢুকলো। খুজতে লাগলো। কিন্তু পেলোনা।
.
নীড় : মনে হয় ভুল দেখেছি। আমিও না। মেরিন আমার কল্পনাতেও রাজত্য করছে? ইন্টারেস্টিং…
নীড় নিজের মাথায় হালকা করে বারি মারলো। বেরিয়ে এলো । তখন দেখে কবির-সেতু নিরাকে ধরে ধরে গাড়িতে তুলছে। নিরার হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ।
নীড় এগিয়ে গেলো।
নীড় : হাই গাইস। নিরা তোমার এই অবস্থা কেন? কি করে হলো?
নিরা : তোমাকে ভালোবাসার শাস্তি পেয়েছি।
নীড় : মানে?
নিরা : মানে বলে দিতে হবে নীড়? তোমার বউ করেছে এমন।
নীড়ের হসপিটালের কথা মনে করলো।
নীড় : নো। নট অ্যাট অল। মেরিন তোমাক অ্যাক্সিডেন্ট করাতে পারেনা। কারন আমি না করেছিলাম।
নিরা : ভালো লাগলো যে তুমি তোমার বউকে ভালোবাসো। বর তার বউকে ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কেন আমাকে আশা দিয়ে রাখছো?
নীড় : হুয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট? আমি তোমাকে কিসের আশা দিয়ে রাখছি…?
নিরা : ওহ গুড। তারমানে তুমি বলোনি যে তুমি আমায় ভালোবাসো ?
নীড় : সেটা কখন বললাম। তোমায় আমি… তোমায় আমি…
নিরা : ভালোবাসি বলতে পারছোনা তো… আসলে তোমরা সব ছেলেরাই এক। কি চাও তোমরা নিজেরাও জানোনা। তোমরা ভালোবাসতেই জানোনা। ছিঃ…
বলেই নিরা কাচ তুলে দিলো।
গাড়ি চলে গেলো।
.
নিরার বলা কথাগুলো নীড় ভাবতে লাগলো। সত্যিই কি বাজে ছেলে ? এতোটাই বাজে ছেলে? ও কি ধোকাবাজ? কাকে ধোকা দিচ্ছে? নিরাকে নাকি মেরিনকে? নাকি নিজেকে? ভীষন রাগ উঠছে নিজের ওপর ।
নীড় : আই হ্যাভ ডিসাইডেড… আমার সিদ্ধান্ত মেরিন।
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। নিজেকে হসপিটালে পেয়ে অবাক হলো।
টনি : থ্যাংকস গড তোমার জ্ঞান ফিরেছে…
মেরিন বুঝতে পারলো যে টনি এনেছে । মেরিন নেমে গেলো।
টনি : তুমি নামছো কেন?
মেরিন : তুমি আমাকে এখানে কেন এনেছো? বলো…
টনি : তুমি জ্ঞান হারিয়েছিলে…
মেরিন : সো হুয়াট? তুমি নীড় কে ফোন করতে পারতে…
টনি : আসলে আমি টেনশনে… আচ্ছা চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিচ্ছি ।
মেরিন : বাসায় ড্রপ করবে কেন? অনেকটা কাজ বাকি।
টনি : কিন্তু তুমি তো অসুস্থ…
মেরিন : মাইন্ড ইউর অন বিজনেস…
টনি জানে এখন আর কিছু বলা ঠিক হবেনা। মেরিন আরো ক্ষেপে যাবে।
টনি : মেরিন … মানে তোমাকে তো আমি আমার গাড়িতে করে নিয়ে এসেছি। আর আমরা যাবোও আমরা একই জায়গায়। তো তুমি কি আমার গাড়িতে যাবে?
মেরিন : যাবোনা কেন ? লেটস গো। উই আর গেটিং লেইট।
২জন বের হলো। গিয়ে গাড়িতে বসলো। এটাও নীড় দেখলো।
নীড় : মেরিন… তারমানে আমি গাড়ি থেকে সত্যিই দেখেছিলাম।
না নীড় সন্দেহ করেনি মেরিনকে।
.
টনি গাড়ি স্টার্ট দিলো।
টনি : ওহ মেরিন… তোমার মোবাইল…
মেরিন : তোমার কাছে ?
টনি : তোমাকে নিয়ে আসার সময় এটাও সাথে এনেছি।
মেরিন : থ্যাংকস।
গাড়ি চলছে।
মেরিনের খুব খারাপ লাগছে। শরীর ভালো না লাগলে কোনোকিছুই ভালো লাগেনা।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো। মেরিন দেখলো নীড় কল করেছে। মেরিন অবাক হলো। নীড় তো কখনো ওকে কল করেনা। কোনো বিপদ হলো না তো? তারাতারি ধরলো।
মেরিন : আপনি ঠিক আছেন তো? আপনার কিছু হয়নি তো? কোনো সমস্যা ? আম্মু ঠিক আছে তো? কি হলো কিছু বলছেননা কেন?
নীড় : আমিও ঠিক আছি। আম্মুও ঠিক আছে। কিছু বলার ছিলো।
মেরিন : হ্যা বলুন।
নীড় : তুমি কোথায় ?
মেরিন : মানে?
নীড় : তুমি কোথায় মানে তুমি কোথায় ?
মেরিন : কোনো কাজ ছিলো?
নীড় : যে জিজ্ঞেস করছি সেটার জবাব দাও।
মেরিন : কি হয়েছে বলুন তো আপনার কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
নীড় : যেটাক জবাব চেয়েছি সেটার জবাব দাও ড্যাম ইট।
মেরিন : নীড়… আচ্ছা এক কাজ করুন আপনিও বাসায় পৌছান আর আমিও আসছি। আমার মনে হয় আপনার শরীর ঠিক নেই ।
নীড় : আচ্ছা আমি কি এটাও জানতে পারিনা তুমি কোথায়?
মেরিন : …
নীড় : বলো।
মেরিন : আমি প্রজেক্ট সাইটে এসেছিলাম ।
নীড় : হামমম। বাই।
মেরিন : বাই…
নীড় ফোনটা রেখে দিলো।
মেরিন মনে মনে : নীড়ের কন্ঠ এমন লাগছিলো কেন?
মেরিনের সাথে কথা বলার পর নীড় মোবাইলটা আছার মেরে ভেঙে ফেলল।
.
(আরো ১টা পার্ট দিবো। )
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 22
writer : Mohona
.
বিকালে…
মেরিন বাসায় পৌছালো। ফ্রেশ হয়ে বেডে একটু হেলান দিয়ে বসতেই ঘুমিয়ে পরলো। আজকে কেন যেন শরীরের সাথে পেরে উঠছেনা মেরিন। ডক্টর দেখানো উচিত হয়তো। কিন্তু নিজের নষ্ট জীবনের জন্য ১টাকা নষ্ট করতে ইচ্ছা করেনা মেরিনের। নিজেকে একদমই সহ্য হয়না। মেরিন মনে করে হয়তো ওর জন্যই ওর আম্মুর আরো বেশি কষ্ট। হয়তো ও দুনিয়াতে না এলে ওর আম্মুর এতো কষ্ট হতোনা। হয়তো কবির ফয়সাল খান কে ছেরে ছুরে চলে যেতে পারতো ।
নীড় বডিগার্ড আর ড্রাইভারকে সরিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো । একদম ওদের ধরা ছোয়ার বাহিরে চলে গেলো। ওরা চিন্তায় পরে গেলো । ওরা মেরিনকে ফোন করলো। কিন্তু মেরিন তো ঘুম ।
নীড়ের পক্ষে এটা মেনে নেয়া সম্ভব না যে ও ছারা মেরিনকে কেউ টাচ করবে। তারওপর মেরিনকে কোলে তুলে হসপিটালে ঢুকেছিলো টনি। নিশ্চয়ই মেরিন অসুস্থ । সব মিলিয়ে নীড়ের মাথা প্রচুর খারাপ ।
.
রাত ১১:৩০…
মেরিনের ঘুম ভাংলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মেরিন অবাক হয়ে গেলো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।
মেরিন : এতোক্ষন ঘুমালাম ? কয়টা বেজে গিয়েছে? ঘুম দিয়ে একটু ভালোই লাগছে । বাহিরে তো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পরছে। নীড় … নীড় তো চলে এসেছে । নীড়.. নীড় … নীড় …
মেরিন ওয়াশরুমে দেখলো নীড় নেই । নীড়কে ডাকতে ডাকতে নিচে নামলো। নিচেও নীড় নেই। নীলিমা বসে আছে ।
মেরিন : মামনি নীড় কোথায় ?
নীলিমা : এখনও ফিরেনিরে। ফোন করছি বারবার কেটে দিচ্ছে।
মেরিন : এতো রাত হয়ে গিয়েছে এখনও ফিরলোনা। আচ্ছা মামনি… তুমি আমাকে ডাক দাওনি কেন?
নীলিমা : ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর ডাক দেইনি ।
মেরিন : ডাক দেয়ার দরকার ছিলো । আচ্ছা এক কাজ করো তুমি ঘুমিয়ে পরো। চিন্তা কোরোনা। আমি দেখছি ।
নীলিমা : কিন্তু …
মেরিন : কোনো কিন্তু না।
মেরিন নীলিমাকে রুমে পাঠিয়ে দিলো। কিন্তু মেরিন নিজেই চিন্তায় পরে গেলো । দৌড়ে রুমে গেলো। মোবাইল হাতে নিলো। দেখলো নীড়ের ড্রাইভার আর বডিগার্ডের অনেকগুলো মিসড কল। বডিগার্ডকে কল করলো।
বডিগার্ডের কাছে জানতে পারলো নীড় সেই যে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছে ওরা আর খুজে পায়নি ওরা। ওরা এখনও খুজেই যাচ্ছে ।
মেরিন আর কিছু না ভেবে গাড়ির চাবি নিয়ে নিচে নামলো। দরজা খুলতেই দেখতে পেলো যে নীড়ের গাড়ি এসে থামলো। মেরিন নীড়ের দিকে এগিয়ে গেলো।
গাড়ির শব্দ পেয়ে নীলিমা রুম থেকে বেরিয়ে এলো।
নীড় গাড়ির দরজা লাগিয়ে । সামনে বারতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পরে যেতে নিলো। মেরিন এসে ধরে ফেলল। নীড় ১টা বার মেরিনকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। কালো রঙের ১টা শাড়ি পরে আছে। এতোক্ষন ঘুম দেয়ায় মেরিনের মুখটা একটু ফুলে আছে। চুল গুলো খোলা …
নীড় মেরিনকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই হাটতে লাগলো।
নীড়ের টলমল পা আর ওর থেকে আসা বিশ্রী গন্ধে মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় নেশা করে এসেছে। আর নেশার পরিমান যে অনেকবেশি সেটাও মেরিন বুঝতে পারলো।
মেরিন নীড়কে ধরতে গেলে নীড় ধরতে দিলো না । মেরিন আবারও ধরতে গেলে নীড় একই কাজ করলো। এদিকে বৃষ্টিতে ২জন হালকা ভিজেও গেলো।
নীড় : ডোন্ট টাচ মি। আমার তোমাকে সহ্য হয়না । রাগ ওঠে। খুব রাগ ওঠে। নিজের ওপর রাগ ওঠে। কারন আমি…
মেরিন এবার শক্ত করে ধরে ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : এই মেয়ে ছারো আমাকে… ছারো।
মেরিন এবার ছারলোনা। শক্ত করে ধরে রাখলো। নীড়ের ধাক্কাও তেমন জোরে ছিলোনা।
ছেলেকে এমনভাবে বাসায় ঢুকতে দেখে নীলিমা লম্বা ১টা নিঃশ্বাস ফেলল।
নীড়ের মন খারাপ হলেই একমাত্র ড্রিংকস করে। আর মন খারাপ হলেও নীড় মারাত্মক রেগে যায়।
ভাবলো মেরিন সামলে নিবে তাই রুমে চলে গেলো …
.
মেরিন নীড়কে রুমে নিয়ে গেলো ।
নীড় : আমি কি কোরবানির গরু নাকি.. ? আমাকে এভাবে টানছো কেন?
মেরিন : চুপ একদম চুপ। চুপচাপ ওয়াশরুমে চলুন। শাওয়ার নিবেন। ততোক্ষনে আমি তেঁতুল গুলে আনছি।
নীড় : না না আমি টক খাবোনা। বাজে লাগে।
মেরিন : চুপ …
নীড় : অ্যা … আমার বউ আমাকে বকেছে।
মেরিন : নীড় …
নীড় কিছুনা বলে ঠাস করে বসে পরলো।
মেরিন : একি বসে পরলেন কেন?
নীড় : আমি রাগ করেছি আমার বউয়ের ওপর। হুহ…
মেরিন বেশ বুঝতে পারছে নীড় এখন ফুল মাতাল। তাই ভুলভাল বকছে। নিজের মধ্যে নেই। আগেই তেতুল খাওয়াতে হবে…
যেতে নিলে নীড় হাত ধরে চেনে বসিয়ে দিলো।
নীড় : বউ তুমি কোথায় যাও?
মেরিন : 😒।
নীড় : তুমি এভাবে তাকাও কেন? একটু মিষ্টি করে তাকাও না। মিষ্টি করে ১টা হাসি দাওনা… তোমাকে মিষ্টি হাসিতে কেমন লাগে ভীষন করে দেখতে মনে চায়।
মেরিন উঠে গেলো। এবার নীড় মেরিনকে কোলেই বসিয়ে দিলো। এরপর কোমড় জরিয়ে ধরে রাখলো…
নীড় : এবার যাবে কি করে শুনি?
মেরিন : …
নীড় : তুমি এমন কেন? আমার সাথে কিছু শেয়ার করলে কি হয়? এতো ভালোবাসো… তবে নিজের দুঃখ টাকে কেন শেয়ার করোনা? বলোনা…
মেরিন দেখলো নীড় ১টা আঙ্গুল কিছুটা কাটা…
মেরিন : একি আপনার হাত কাটলো কি করে?
নীড় : মনে নেই…
মেরিন : মলম লাগাতে হবে। দেখি ছারুন…
নীড় : ছারলেই তুমি পালাবে।
মেরিন : না আমি পালাবোনা…
নীড় : তোমার কি বিশ্বাস?
বলেই নীড় মেরিনের আচলটা নিজের হাতে বেধে নিলো।
নীড় : এখন পালাতে পারবেনা… আচ্ছা তুমি সবসময় শাড়ি কেন পরোনা? শাড়িতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে। যখনই তোমাকে শাড়িতে দেখি তখনই মনে হয় জরিয়ে ধরে আদর করি…
মেরিন উঠে ফার্স্ট এইড বক্স আনতে গেলে আচলে টান লাগলো।
মেরিন : নীড়… বক্সটা নিবো তো…
নীড়ও মেরিনের পিছে পিছে গেলো।
মেরিন ফু দিয়ে দিয়ে নীড়ের হাতে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে। বৃষ্টি পরছে। তাই শীতল বাতাস। আর বাতাসগুলো মেরিনের চুল নিয়ে খেলছে। নীড় মেরিনকে দেখছে।
নীড় টুপ করে মেরিনের নাকে কিস করলো। মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : এভাবে তাকিয়ো না… তুমি যতোবার এভাবে তাকাও আমার মাথা কাজ করেনা।
নেশায় মানুষ কি কি করে ভেবে মেরিন নিজের কাজে মন দিলো।।
নীড় : মেরিন…
এমন করে কখনো নীড় ডাকেনি…
নীড় : তোমাকে ভালোবাসবো…
মেরিন কিছু বলল না। নীড় মেরিনের গাল ২টা চেপে ধরে মেরিনকে কিস করে বসলো।
নীড় : বলো …
মেরিন কিছু না বলে নীড়ের হাত থেকে আচলের বাধনটা খুলতে লাগলো। নীড় নেশা নামাতেই হবে।
নীড় মেরিনের নাক টেনে দিলো।
নীড় : বাধন খুললেও কি আজকে তুমি পালাতে পারবে? বলো?
বলেই নীড় মেরিনের চোখে গালে কিস করলো।
মেরিন : নীড়… আপনি এখন নিজের মধ্যে নেই। মাতাল। আমরা কালকে কথা বলবো।
নীড় : মাতালরা কি বউকে ভালোবাসে না… আমি তো তোমার নেশায় আসক্ত হয়ে পরেছি … তোমার এই শাড়িতে আসক্ত হয়ে পরেছি।
বলেই মেরিনের নাকে নাক ঘষে দিলো ।
মেরিন যতোই নীড়ের থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিতে চাইলো নীড় ততোটাই আকরে ধরলো।
😒😒😒
.
সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাংলো । চোখ মেলতেও কষ্ট হচ্ছে অস্বাভাবিক মাথাব্যাথা।
নীড় : ওহ গড… মাথা যে ব্যাথায় ছিরে পরে যাচ্ছে। উফফ।
নীড় উঠে বসলো। মাথা চেপে ধরলো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে লেবুর শরবত রাখা। নীড় ১বার নিজের দিকে তাকালো। গায়ে শার্টটা নেই… মেজাজটা বিগরে যাবো বিগরে যাবো করছে ।
হুট করে গতকালের দুপুরের হসপিটালের ঘটনাটা মনে পরে গেলো। রাগ উঠে গিয়েছে।
নীড় : আমি বারে গেলাম। ওখান থেকে বাসায় …
নীড় সবটা মনে করতে লাগলো।
.
একটুপর …
মেরিন রুমে এলো। এসে দেখে সারা রুম তছনছ করে দিয়েছে নীড়। ২হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে বসে আছে। মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারাল। নীড়ের কাধে হাত রাখলো।
মেরিন : নীড় … আর ইউ ওকে?
নীড় সোজা হয়ে দারিয়ে ঠাস করে মেরিনকে থাপ্পর মারলো।
নীড় : আই অ্যাম নট ওকে… বুঝেছো?
মেরিন : …
নীড় : খুব খুশি আজকে তুমি তাইনা ? কারন নিজের উদ্দেশ্য যে হাসিল হলো।
মেরিন : আমার উদ্দেশ্য?
নীড় : ন্যাকামো কোরোনা। তোমার সাথে ন্যাকামোটা যায়না। বোঝোনা তুমি কিসের উদ্দেশ্য । তুমি খারাপ জানতাম কিন্তু এতোটা খারাপ তা জানতাম না।
মেরিন : …
নীড় : আমি নেশায় ছিলাম । তুমি তো ছিলেনা। তবে কেন আটকালে না আমায় ? অবশ্য আটকালে তো নিজের উদ্দেশ্য পূরন হতো না। তাইনা।
মেরিন নিজের আচলের মাথাটা শক্ত করে ধরলো। দোষটা হয়তো ওরই। সত্যিটা জেনেও আবেগে ভেসেছিলো। স্থির চোখে নীড়কে দেখছে। আর অপবাদগুলো শুনছে । নীড় মেরিনের আচলের এক কোনা ধরলো।
নীড় : তোমার রূপ দিয়েও কাবু করতে পারোনি তখন তুমি আমার নেশার সুযোগ নিলে? শাড়িতে নারীদের সৌন্দর্যবৃদ্ধি হয়। বাট তুমি … যে কাজটা করেছো সেটার জন্য তোমাকে কি উপাধি দেয়া যায় জানো? প… মুখেও আনতে লজ্জা করছে।
বলেই নীড় টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। মেরিন নিজের দিকে তাকালো।
মেরিন : নুপুর নুপুর…
নুপুর : জী ভাবি…
মেরিন : রুমটা ক্লিন করো।
নুপুর : জী ভাবি।
৩-৪জন মিলে রুমটা পরিষ্কার করলো।
নীড় ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখে রুমের একপাশে আগুন জ্বলছে। নীড় দেখলো মেরিন ওর শাড়িগুলো পুরাচ্ছে । ওর পরনের শাড়িটাও নেই। নীড় কিছুনা বলে বেরিয়ে গেলো।
.
অফিসে…
মেরিন বসে আছে।
মেরিন : আবেগ… বড্ড বাজে জিনিস…
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : হামমম।
জন ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন : কাজটা হলো ?
জন : জী ম্যাম।
মেরিন : গুড। তোমার জন্য আরো ১টা কাজ আছে।
জন : কি কাজ ম্যাম?
মেরিন : নতুন ১জন সাইকিয়াট্রিস্টের সন্ধান করো। সময় ৪৮ঘন্টা।
জন : জী ম্যাম। হয়ে যাবে । ম্যাম কার জন্য ?
মেরিন : আম্মুর জন্য ।
জন : কনিকা ম্যামের জন্য ?
মেরিন : হামমম।
জন : কিন্তু কনিকা ম্যামের ট্রিটমেন্ট তো নীড় স্যার করছে ।
মেরিন : মুক্তি দিয়ে দিবো। আম্মুর চিকিৎসার কাজ থেকে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে মুক্তি দিয়ে দিবো।
জন : ম্যাম এ…
মেরিন : আর কোনো প্রশ্ন নয় জন…
জন হতাশা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
রাতে মেরিন খেয়ে বাসায় ফিরলো। ফিরে দেখে নীড় রুমে বসে টিভি দেখছে। মেরিন নীড়কে কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে ১টা ব্ল্যাংকেট নিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। নীড় খানিকটা অবাক হলো। তবে রিয়্যাক্ট করলোনা।
টানা ২দিন মেরিন নীড়ের সাথে কোনো কথাই বললনা। এমন কি নীড়ের দিকে তাকায়ও নি। প্রথম ২দিন রেগে থাকলেও এখন নীড়ের আফসোস হচ্ছে। বেশ অনুতপ্ত ও। অনেক বেশি বাজে আচরন করে ফেলেছিলো। সেটার জন্য তো কষ্ট হচ্ছেই। তবে বেশি কষ্ট হচ্ছে মেরিনের এমন অবহেলায়।
.
পরদিন…
পরদিন নীড় গিয়ে জানতে পারলো যে কনিকা সেখানে নেই। ওকে অন্য কোথাও শিফ্ট করা হয়েছে। সেখানে জনকে পেলো। জন কনট্র্যাক্ট পেপারটা নীড়ের হাতে ফেরত দিয়ে দিলো। সেই সাথে ১কোটি টাকার ১টা চেক।
নীড় : এসব কি জন?
জন : এতোদিন কনিকা ম্যামের চিকিৎসা করার জন্য ধন্যবাদ। তবে এখন আপনি এই দায়িত্ব থেকে মুক্ত। আর এটা আপনার পেমেন্ট। আসছি…
নীড় ওগুলো ছুরে ফেলে দিলো।
নীড় : এসবের মানে কি জন?
জন : এই প্রথম আমি নিজেও জানিনা।
নীড় : আম্মু কি অ্যাসাইলামে?
জন : না।
নীড় : তবে কোথায় ?
জন : সরি স্যার বলতে পারবোনা।
নীড় : তোমার ম্যামকে কোথায় পাবো?
জন : ম্যাম নিজেই জানে …
বলেই জন চলে গেলো। সারাদিন নীড় মেরিনের খোজ করলো। কিন্তু পেলোনা।
.
রাতে…
মেরিন বাসায় ফিরলো। বুঝতে পারলো নীড় বসে আছে। না তাকিয়েই ফ্রেশ হতে যেতে নিলো ।
নীড় : এসবের মানে কি ?
মেরিন যেন শুনতেই পায়নি। ওয়াশরুমে চলে গেলো। বের হতেই নীড় আবার
বলল : এসবের মানে কি?
মেরিন : …
নীড় : কিছু বললাম তো নাকি?
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালোও না। নীড় মেরিনের সামনে গিয়ে বাহু ধরে নিজের দিকে ফিরালো।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন নীড়ের দিকে না তাকিয়ে নিজেকে ছারাতে ব্যাস্ত।
নীড় : মেরিন… রাগ তুলোনা।
মেরিন নিজেকে ছারিয়ে নিলো। এবার নীড় মেরিনের ২বাহ শক্ত করে ধরলো ।
নীড় : অনেক রাগ দেখিয়েছো এতোদিন। এখন না। একদম না। যা জানতে চেয়েছি তা বলো…
মেরিন সরে যেতে নিলে নীড়ের দৃষ্টি পরলো মেরিনের হাতে
লেখা বনপাখির নীড়ে…
নীড় অবাক হয়ে গেলো। দেখলো অন্যহাতেও বনপাখির নীড় লেখা।
নীড় : বনপাখির নীড়… তোমার হাতে এটা কেন লেখা?
মেরিন কিছু না বলে গিয়ে শুয়ে পরলো।
নীড় পায়চারি করতে লাগলো। ‘বনপাখি’ … বিষয়টা নীড়ের মাথাটা ঘুরিয়ে দিলো। নামটা ওর দুর্বলতা।
নীড় মনে মনে : বনপাখি… বনপাখি… বনপাখি…. মেরিনের হাতে এটা কেন লেখা? কে বলতে পারবে? দাদুভাই… হ্যা দাদুভাই । আজকে দাদুভাইকে জবাব দিতেই হবে? না হলে আজকে আমি দাদুভাইয়ের সামনে….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 23
writer : Mohona
.
নীড় : না হলে আজকে আমি দাদুভাইয়ের সামনে নিজেকে শাস্তি দিবো। যা তা করবো নিজের সাথে। তাহলে নিশ্চয়ই দাদুভাই বলবে… আজকে যতোক্ষন দাদুভাই না বলবে ততোক্ষন আমি হাল ছারবোনা।
নীড় বেরিয়ে গেলো। মেরিন বুঝলো যে নীড় বের হলো। মেরিন উঠে বসলো । গত ৩দিন ধরে মেরিন একটুও ঘুমাতে পারেনি। নতুন করে গরা এতোদিনের অভ্যাসটা এতো সহজে ছারা যায়না। স্লিপিং পিল ছারা ঘুমানোর অভ্যাসটা তো নীড়ের জন্যই হয়েছিলো। অন্যরকম প্রশান্তি আছে নীড়ের বুকে মাথা রাখার মধ্যে।
মেরিন : জীবনটা এমন না হলেও পারতো… নীড় এতোদিন আপনি আমার ভালোবাসা দেখেছেন… এখন থেকে আপনি আমার ঘৃ… অবহেলা দেখবেন। ঘৃণা হয়তো আপনাকে করতে পারবোনা। তবে আমি চেষ্টা করবো আপনাকে ঘৃণা করার। ভেবেছিলাম আপনার দেয়া ভালোবাসার উপহার নিয়ে আমি আপনার থেকে চলে যাবো। কিন্তু আপনি সেই অপশনটা রাখেননি। আপনি আমার থেকে মুক্তি পাওয়া ডিজার্ভ করেননা। এখন জুনিয়র নীড় পাওয়া তো আর সম্ভবনা। আপনাকে টাচ করতেও এখন আমার বিবেকে বাধবে। বিবেক… হাহাহা… বিবেক? আমার মধ্যে কি বিবেক নামের বস্তুটা আছে? হয়তো নেই। তবে নীড় আপনাকে স্পর্শ করার ইচ্ছাটাও আমার মরে গিয়েছে। এতোদিন ভালোবেসে বন্দী করে রেখেছিলাম… এখন কি ঘৃণা করে বন্দী করবো। তবে আগে আমার আপনাকে ঘৃণা করা শিখতে হবে।
.
নীড় খান বাড়িতে পৌছালো । সোজা গেলো দাদুভাইয়ের রুমে। দেখে দাদুভাই এখনো ঘুমায়নি । বসে বসে অ্যালবাম দেখছে।
নীড় : দাদুভাই…
দাদুভাই দরজার দিকে তাকালো । দেখলো নীড় দারিয়ে আছে । খানিকটা অবাক হলো।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই তুমি…?
নীড় গুটিগুটি পায়ে দাদুভাইয়ের সামনে এসে। দাদুভাইয়ের পায়ের সামনে বসে পরলো।
দাদুভাই : নীড় দাদুভাই… কি হয়েছে? আমার দিদিভাই ঠিক আছে তো?
নীড় : হামমম।
দাদুভাই : তুমি এতো রাতে এখানে ? কি হয়েছে বলো তো …
নীড় : দাদুভাই … তোমার কাছে যখনই আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি তখনই তুমি বলেছো যেদিন মেরিনকে ভালোবাসবো সেদিন উত্তর দিবে… কিন্তু আজকে তোমাকে আমার ১টা প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে। আর যদি না দাও তবে তোমার সামনে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করবো। আর তখন তুমি তোমার দিদিভাইকে জবাব দিও। বলো বলবে…?
দাদুভাই : কি জানতে চাও বলো।
নীড় : মেরিনের ২হাতে বনপাখির নীড় কেন লেখা?
দাদুভাই অবাক হলো। কারন এটা মেরিনের অতীতের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ন কথানা। আর এই প্রশ্নের জবাব দিবেইবা না কেন?
নীড় : বলোনা দাদুভাই …
দাদুভাই নীড়ের হাত নিলো। এরপর ওর শার্টের হাতা ফোল্ড করলো। নীড়ের হাতে লেখা ঘৃণার মেরিন টা বের করলো।
দাদুভাই : তোমার হাতে তুমি ঘৃণার মেরিন কেন লিখেছো?
নীড় অবাক হলো। এটা কেমন প্রশ্ন ?
দাদুভাই : তুমি তোমার হাতে ঘৃণার মেরিন লিখেছো তুমি দিদিভাইকে ঘৃণা করো বলে । তুমি যদি ঘৃণা করে দিদিভাইয়ের নাম নিজের হাতে লিখতে পারো তবে দিদিভাই ভালোবেসে নিজের ২হাতে তোমার নাম লিখতে পারবেনা? তাই দিদিভাই নিজের ২হাতে লিখেছে তোমার নাম।
নীড় : নীড় লিখেছে ভালো কথা। বনপাখির নীড় কেন লিখেছে?
দাদুভাই : তুমি তো বনপাখির নীড়ই। একমাত্র তোমাতেই তো বনপাখি আটকে গিয়েছে। তুমিই সে যাকে দিদিভাই ভালোবেসেছে।
নীড় : বনপাখি মানে? বববনপাখি কে?
দাদুভাই : কেন দিদিভাই…
নীড় : মেরিন?
দাদুভাই : হামমম।
নীড় : ওর নাম তো মেরিন বন্যা। তাহলে বনপাখি কি করে ?
দাদুভাই : হ্যা মেরিন বন্যা ওর নাম। কিন্তু বনপাখি তো কনা মায়ের দেয়া নাম।
নীড় : আম্মুর ?
দাদুভাই : হামমম। মেরিনের দীদা মানে আমার প্রিয়তমা দিদিভাইয়ের নাম রেখেছিলো বন্যা। বন্যার মধ্যে হয়েছিলো তো। কবির রেখেছিলো মেরিন । আসলে ও নিরার নাম রাখতে চেয়েছিলো মেরিন। কিন্তু সেতু রাখলো নিরা। কবির যে নিজের মেয়ের নাম মেরিন রাখতে চায় সেটা কনামা আগে থেকেই জানতো। ২জন বেস্টফ্রেন্ড ছিলো তো। তাই কনামা মেয়ের নাম রাখলো মেরিন বন্যা। মেরিন বন্যা খান । কিন্তু দিদিভাই দুনিয়াতে আসার পর কি থেকে যে কি হয়ে গেলো। কবির রেগে গেলো মেরিন নাম রাখাতে। বারবার পাল্টাতে বলল। আমিও জেদ ধরেছিলাম যে পাল্টাবোনা। কবির কনামাকে অনেক কথা শোনায় । সেইদিন থেকেই কনামা দিদিভাইকে আর কখনো মেরিন বলে ডাকেনি। মেরিনের দীদা বন বলে ডাকতো। আর কনামা ডাকতো বনপাখি। সেই ২মাসের বয়স থেকেই দিদিভাইকে বনপাখি বলে ডাকতো কনামা। আসলে আমার দিদিভাই যেদিন জন্মনিয়েছিলো সেদিন হয়তো ওর ভাগ্যে দেয়ার মতো কোনো সুখ ছিলোনা। হয়েছিলো সাত মাসে। তখনই কোনো রকমে বেচেছে। এই দেখো দিদিভাইয়ের ছোটবেলার ছবি । ওর দীদাবেচে থাকতে। তখন ওর বয়স ছিলো ৫বছর। আমি , রাবেয়া , কনামা আর দিদিভাই… এটাই আমাদের ১মাত্র ফ্যামিলি ফটো
নীড় ১বার তাকালো। মেরিন যখন অতোটুকু ছিলো তখনই ওর সাথে দেখা হয়েছিলো।
দাদুভাই : যেই সময় কতো কিছু বলে ফেললাম। পেয়েছো তোমার জবাব…
নীড় সোজা হয়ে বসে আছে । চোখ ২টা স্থির । ও মিলাতে লাগলো সবটা। মেরিনের গলার লকেট , কনিকার ডাক , মেরিনের প্রিয় কালো রং … সবটা। হয়তো সেই ছোট্ট বনপাখির সাথে বড় বনপাখির কোনো মিল নেই কিন্তু … মেরিনই ওর বনপাখি… আর ৩টা বছর ধরে নিরা ওকে মিথ্যা বলে এসেছে। সেই ভালোবাসা ভোগ করেছে যেই ভালোবাসা ওর না… মেরিনের।
নিরার ওপর রাগ হচ্ছেনা। নীড়ের রাগ হচ্ছে নিজের ওপর। ও কি সত্যিই ওর বনপাখি ভালোবেসেছে ? যদি বেসেই থাকে তবে কি করে নিরার কথা মেনে নিলো… আর মেরিনের সাথে কতো বাজে ব্যাবহার করেছে। ছিঃ …
নীড়কে এভাবে দেখে দাদুভাই বেশ চিন্তায় পরে গেলো। নীড়ের কাধে হাত রেখে হালকা ঝাকি মেরে
বলল : নীড় দাদুভাই …
নীড়ের হুশ ফিরলো।
নীড় : হ্যা …
দাদুভাই : কি হয়েছে ?
নীড় : কিছুনা। নিরা কোথায়?
দাদুভাই ১টা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল।
দাদুভাই : আজও তুমি নিরার খোজই করছো… তোমাকে আর কি বলবো? তোমার ওপর রাগ করতেও রুচিতে বাধছে । ও ওর বেডরুমেই আছে। যাও। ভয় নেই আমি দিদিভাইকে বলবোনা। কারন তোমার মতো বাজে মানুষের জন্য আমি দিদিভাইকে আর উত্তেজিত করবোনা….
.
নীড় উঠে গেলো। নিরার রুমে গেলো। দেখে নিরা বসে বসে কারসাথে যেন মোবাইলে কথা বলছে ।
নিরা : বেবি তু…
নীড় নিরাকে কথা বলতে না দিয়ো ১টা থাপ্পর মারলো। নিরা বুঝতেই পারলোনা হলোটা কি। কিছু বলতে নিলে নীড় আরো ১টা থাপ্পর মারলো।
নীড় নিরার গলায় হায় হাত দিয়ে ১টানে চেইনটা খুলে ফেলল । নিরা যথেষ্ট ব্যাথা পেলো।
নিরা : আহ… মাম্মি … মাম্মি…
নিরা জোরে জোরে সেতুকে ডাকতে লাগলো।
নীড় : ডাক তোর মাকে ডাক… কাকে ডাকবি ডাক … আজকে আমার হাত থেকে তোকে কেউ বাচাতে পারবেনা ….
নিরার শব্দ পেয়ে সেতু আর কবির ছুটে এলো।
নীড় আরো ১টা থাপ্পর মারতে নিলে কবির ওর হাতটা ধরে ফেলল।
কবির : তুমি আমার মেয়েকে থাপ্পর মারছো কেন? হাউ ডেয়ার ইউ?
নীড় : এখন তো কেবল থাপ্পর মেরেছি … আমি ওকে জানে মেরে ফেলবো। একেবারে জানে মেরে ফেলবো।
কবির : নীড়…
নীড় : এই চুপ… আমাকে একদম চোখ রাঙাবেনা । চোখ তুলে নিবো।
হৈচৈ শুনে দাদুভাইও এলো রুমে।
নীড় নিরার চুলের গুছি ধরলো।…
নীড় : তোকে এমনভাবে মারবো যে কেউ আর কোনোদিন এমন ধোকা দিতে পারবেনা…
দাদুভাই : কি হচ্ছেটা কি নীড়…? ছারো ওকে। ছারো।
নীড় : না দাদুভাই… ওকে আমি মেরেই ফেলবো। বলেই আবার নিরাকে আঘাত করতে নিলে কবির-সেতু সাথে আরো কিছু সার্ভেন্টস নীড়কে এসে ধরে ফেলল। ওকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে।
দাদুভাই কিছুই বুঝতে পারছেনা। নিরা নীড়ের হাতে মরতে পারেনা… দাদুভাই মেরিনকে ফোন করলো।
এতোরাতে দাদুভাইয়ের ফোন পেয়ে মেরিন ভয় পেয়ে গেলো।
মেরিন : হ্যালো দাদুভাই.. তুমি ঠিক আছো ?
দাদুভাই : আমি ঠিক আছি। কিন্তু নীড় …
মেরিন : নীড় …?
দাদুভাই সবটা বলল। মেরিনও যথেষ্ট অবাক হলো।
মেরিন : আমি আসছি…
.
নীড়কে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। ও নিরার দিকে তেরেই যাচ্ছে। উন্মাদের মতো আচরন করছে। আসলে নিরার দেয়া ধোকার থেকে নীড় নিজের ব্যাবহারের জন্য রেগে আছে। বিশষত ৩দিন আগে মেরিনের সাথে যে আচরনটা করেছে তারজন্য। অনেকবেশি অনুতপ্ত নীড়। আর এসবকিছু রাগ হয়ে বের হচ্ছে । বারবার নিজের আচরনের কথা মনে পরছে। আর মনে পরছে আজ পর্যন্ত যতো অপবাদ দিয়েছে সবকয়বার মেরিনের রিয়্যাকশন । সবথেকে বেশি মাথায় আসছে সেদিন সকালেরটা। সেদিন মেরিন স্থির চোখে চেয়ে কেবল ওর দেয়া অপবাদগুলো শুনছিলো। কিচ্ছু বলেনি। সেদিন মেরিনের চোখে চিরচেনা রাগটাও দেখতে পারেনি। খুব কষ্ট হচ্ছে এগুলো ভেবে। আর ওর কষ্ট হলে ও আরো রেগে যায়। ভয়ংকর রাগ ।
সেতু মনে করলো এখন নিরাকে নীড়ের চোখের সামনে থেক সরানোর দরকার । তাই ধরে ধরে নিরা হলরুমে নিয়ে গেলো।
নীড় : ছারতে বলেছি কিন্তু…
কেউ ওকে ছারছেনা ও নিজেকে ছারিয়ে যেতে নিলে দাদুভাই ওর সামনে দারালো ।
নীড় : দাদুভাই সরো… আমার মাথা প্রচন্ড গরম… সরো…
দাদুভাই : আর যদি না সরি? কি এমন হলো যে তুমি তোমার ভালোবাসার জীবন পর্যন্ত নিতে চাইছো? এই কয়েকমিনিটের মধ্যে সব ভালোবাসা শেষ ?
নীড় : দাদুভাই নিরা আমার ভালোবাসা ছিলোনা… আমার ভালোবাসা ছিলো বনপাখি… যা ছিলো আছে আর থাকবে …
দাদুভাই আবারও অবাক হলো। আজকে দাদুভাইয়ের অবাক হওয়ার শেষ নেই…
সেতু : কি হয়েছে মাই বেবি…
নিরা : জানিনা মাম্মি…
সেতু : আমার মনে হয় এখন তোমাকে নিয়ে বাসা থেকে বেরোতে পারলে ভালো হয়।
নিরা : মাম্মি… নীড় বনপাখির কাহিনি জেনে যায়নি তো ?
নীড় : সরো দাদুভাই…
বলেই আসতে করে দাদুভাইকে সরিয়ে বের হয়ে এলো। নীড়কে দেখে তো নিরার জান যায়যায়।
নীড় দেখলো মেরিনের চাবুকটা ঝুলানো। নীড় সেটা হাতে নিয়ে নিরার দিকে এগোতে লাগলো।
সেতু : তুমি আমার মেয়েকে কিছু করবেনা। একদম না।
বাকিরাও বাধা দিতে আসলো। নীড় সবাইকে উপেক্ষা করে সেতুকে ১টানে সরিয়ে নিরাকে চাবুক দিয়ে বারি দিলো। পরপর ৩টা বারি দিলো। ৪বারের বেলায় চাবুকটা নামানোর সময় মনে হলো কেউ চাবুকের মাথাটা ধরে রেখেছে…
নীড় ঘুরলো। দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। আর ওই ধরে রেখেছে।
.
মেরিন চাবুকটা ধরে রেখেছে ঠিকই কিন্তু দৃষ্টি অন্য জায়গায় । মেরিন নীড়ের দিকে না তাকালেও ও বেশ বুঝতে পারছে যে নীড় ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেরিন ১টানে চাবুকটা নিয়ে নিলো।
মেরিন : আমার জিনিসে কেউ হাত দিলে আমার সেটা ভালো লাগেনা। আর আমার পারমিশন ছারা আমার জিনিসে হাত দেয়া যায়না… আর আমি কাউকে পারমিশন দেইও না । আর নিয়মটা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ইনক্লুডিং মিস্টার চৌধুরী …
‘মিস্টার চৌধুরী’ … এই ডাকটা নীড়কে বড্ড পীরা দিলো। মেরিন নিরার দিকে তাকালো ।
মেরিন : অ… আমাদের ননীর পুতুলের ননীর শরীরটার কি অবস্থা করেছে মিস্টার চৌধুরী। সো স্যাড। এসব ঘটলো তাও মিস্টার খানের সামনে ? ভাবা যায়? আর মিস্টার খান এগুলো দেখে এখনো হার্ট অ্যাটাক করে মরে না গিয়ে দিব্যি দারিয়ে আছে… টু মাচ শকিং… জন কল ডক্টর নিরার ট্রিটমেন্ট করতে হবে
নীড় মেরিনকে দেখছে।
মেরিন : এই টিয়া… টিয়া…
টিয়া : জী ম্যাডাম…
মেরিন : কিচেন থেকে হলুদ , মরিচ গুরোর বক্সটা নিয়ে আয় …
টিয়া : জী ম্যাম…
সেতু : এএএই … তুই ওগুলো দিয়ে কি করবি? এই …
মেরিন : এখনই দেখতে পারবেন ।
টিয়া বক্সগুলো আনলো। মেরিন ওগুলো নিলো।
মেরিন : এগুলো দিয়ে হোলি খেলবো…
নিরা : নননা মেরিন… না… না…
মেরিন সবকিছু উপেক্ষা করে নিরার ক্ষত গুলোর মধ্যে ওগুলো দিয়ে দিলো। আর নিরা ছটফট করতে লাগলো। ততোক্ষনে ডক্টর চলে এলো।
মেরিন হাত ধুয়ে এলো। ডক্টর নিরাকে দেখতে লাগলো ।
.
মেরিন : দাদুভাই… ঘুমিয়ে পরো…
দাদুভাই : হামম।
মেরিন : হামমম বললে হবেনা… চলো ঘুমাবে চলো। আসো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি … এসো…
মেরিন দাদুভাইকে রুমে নিয়ে গেলো। শুইয়ে দিলো। এরপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই : দিদিভাই … নীড় দাদুভাইয়ের সাথে কি হয়েছে?
মেরিন : কি হবে?
দাদুভাই : জানিনা… তবে কিছু হয়েছে।
মেরিন : …
দাদুভাই : দিদিভাই… জীবনটাকে শেষ সুযোগ দাও । আর কিছু হারাতে পারবেনা… আমি জানি…
মেরিন : ঘুমাও ।
দাদুভাই ঘুমানোর পর মেরিন নেমে এলো। নীড় এখনও ঠায় দারিয়ে আছে।
মেরিন : জন… কালকে দেখা হচ্ছে। মিস্টার চৌধুরীকে বলে দাও বাড়ি ফিরতে।
বলেই মেরিন গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 24
writer : Mohona
.
মেরিন গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। সেদিন এমন আচরন না করলে হয়তো আজকে মেরিন ওকে পাগলামো করে নিয়ে যেতো ।
জন : স্যার … বা…
নীড় বেরিয়ে এলো। ড্রাইভ করতে লাগলো। দেখতে পেলো যে জন ওর পিছে পিছে আসছে। মানে ওকে বাসায় ঠিকভাবে পৌছাতে জন ওর পিছু নিয়েছে । নীড় গাড়িটা থামালো। গাড়ি থেকে নামলো। ওকে দেখে জনও নামলো।
জন : স্যার কোনো সমস্যা ?
নীড় : নাহ… জন… আমি একটু নিজের সাথে সময় কাটাতে চাই প্লিজ…
কথা গুলো খুব কষ্টে বলল। গলাটা ধরে আসছে। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। জন স্পষ্ট দেখলো।
জন : কিন্তু স্যার…
নীড় : প্লিজ …
জন : হামমম।
জন চলে গেলো। নীড় গাড়ি নিয়ে ১টা নিরব জায়গায় গেলো। গাড়ি থেকে নেমে আকাশের দিকে মুখ করে চোখের পানি ফেলল। সারারাত নীড় বাসায় ফিরলোনা।
যতোই অভিমান করে থাকুকনা কেন… নীড়কে মেরিন ভীষন ভালোবাসে । নীড় না ফেরাতে সারাটা রাত মেরিন চিন্তায় ছটফট করেছে।
.
সকালে…
নীড় এখনও বাসায় ফিরেনি… নাহ মেরিনের মন আর মানছেনা। আর টেনশন করতে পারছেনা এখন মনে হচ্ছে যে নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। জনকে কল করার জন্য মোবাইল হাতে নিলো… আর তখনই নীড় রুমে ঢুকলো। মেরিনের জানে জান এলো।
নীড় ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে । মেরিন ১টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। তবে আজকে শুক্রবার… কি করবে মেরিন ভেবে পাচ্ছেনা। আজকে তো অফিস বন্ধ । নীলিমাকে কি জবাব দিবে…
এসব ভাবতে ভাবতেই নীড় বেরিয়ে এলো । মেরিন ১টা ফ্রেশ হতে গেলো ।
.
খাবার টেবিলে …
নিহাল : আজও খেয়ে মনে হচ্ছে তোমার হাতের রান্না…
নীলিমা : তো রান্নাটা যখন আমিই করেছি তখন আমার হাতেরই তো মনে হবে তাইনা?
নিহাল : তোমার সাধের বউমা যে ৪দিন ধরে রান্না করা একেবারেই ছেরে দিয়েছে এর কাহিনি কি?
নীলিমা : তুমিই জিজ্ঞেস করো।
নীড়-মেরিন কিছুই বলছেনা । চুপচাপ কেবল খাচ্ছে।
নিহাল : বলছিলাম কি… রান্নাটা একটু ভালো হয় বলে বেশি খেয়ে ফেলি । তাই বলে কি শাস্তিস্বরূপ রান্নাই বন্ধ করে দিয়েছো নাকি? না মানে তুমি তো আবার শাস্তি দিতে ভালোবাসো তাই বললাম…
মেরিন : …
নিহাল-নীলিমা বুঝলো যে ২জনের মধ্যে কিছু হয়েছে।
নিহাল : আরো ১টা কথা… তোমাকে ৪দিন ধরে দেখাই যাচ্ছেনা কেন? সকাল-দুপুর-রাত … নীড় ঠিকই বলে যে তুমি অতৃপ্ত আত্মা …
মেরিন : …
নিহাল : আজকে তো শুক্রবার । বিয়ের পর থেকে তো বাসায় থাকলে শাড়িই পরো… তবে আজকে এসব পরে আছো কেন? ব্রেকফাস্ট করে গিয়ে চেঞ্জ করে দুপুরের রান্না করবে। বুঝেছো? শাড়িতে আমার ছেলের বউটাকে মা মা মনে হয় । আমার সুন্দরি মা।
নীলিমা : বললেই চলে যে ওকে শাড়িতে সুন্দর লাগে।
নিহাল : হ্যা সুন্দর লাগে বলেই তো বললাম…
এই ‘শাড়ি’ টপিকটাই নীড়-মেরিনকে নারিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে মেরিনকে…
মেরিন : আমার কিছু বলার ছিলো…
নীলিমা : কি?
মেরিন ১টা ফাইল নিহালের হাতে দিলো।
নিহাল : কি আছে এতে?
মেরিন : চৌধুরী সম্রারাজ্যের যে ৮০% আমার নামে ছিলো তা আমি তোমাকে ফিরিয়ে দিলাম।
নিহাল-নীলিমা : হুয়াট ?
নিহাল পড়ে দেখলো মেরিন সত্যিই বলেছে।
নিহাল : এসব কেন?
মেরিন : সহজ জবাব…আমার ইচ্ছা। ওকে গাইস প্রজেক্ট ভিজিটে যেতে হবে। বাই।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীলিমা : নীড় তুই কি বলেছিস মেরিনকে?
নীড়ও জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেলো ।
নীলিমা : সেদিন নীড়ের ড্রিংকস করে বাসায় ফেরাতেই বুঝেছিলাম যে বড় কোনো ঝড় আসতে চলেছে। এসেও পরেছে…
নিহাল : নীলা.. চিন্তা কোরোনা… বর্ষনের মুখোমুখি এবার বন্যা । বর্ষন যতোই গর্জন করুক না কেন তাতে বন্যার কোনো ক্ষতি নেই । বরং লাভ আছে। বর্ষন যতো কঠিন রূপ নিবে বন্যা ততো প্রলয়ংকারি হবে…
নীলিমা : কিন্তু যদি ২জনের মধ্যে বারাবারি কিছু হয়ে যায়?
নিহাল : হতেই পারে। তবে কি জানো? মেয়েটা নীড়কে ভালোবাসে… এর থেকে সত্য আপাদত কিছু নেই….
.
মেরিন খোলা আকাশের নিচে বসে আছে। তখন খেয়াল করলো যে টনিও এখানে। স্মোক করছে।
টনি : আরে মেরিন তুমি এখানে?
মেরিন : হামমম।
টনি : উফফস সরি।
বলেই টনি সিগারেটটা ফেলে দিলো।
টনি : আসলে এই জায়গাটা আমার খুব প্রিয়। মন খারাপ হলে চলে আসি।
মেরিন : …
টনি বুঝলো যে মেরিনেরও মন খারাপ। তাই ভাবলো হয়তো এখন এখানে থাকা ঠিক হবেনা।
টনি : মেরিন আমি আস…
মেরিন : আসছি।। বাই বলেই মেরিন চলে গেলো। টনি মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
টনি : যদি আগেই সাহস করে তোমার সামনে ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার সামনে দারাতাম তবে হয়তো তুমি আমার হতে… হয়তো তোমার জীবনটা সুন্দর করতে পারতাম…
টনির চোখের কোনে পানি চলে এলো।
.
রাতে…
মেরিন বাসায় ফিরলো । দেখে নীড় মনের সু়খে টিভি দেখছে। কোনো হেলদোল নেই। মেরিন চেঞ্জ করার জন্য কাবার্ডটা খুলল। আ়র খুলে অবাক হয়ে গেলো। কারন সারা কাবার্ড জুরে সব শাড়ি আর শাড়ি … আর কোনো ড্রেস নেই।
নীড় :
🎤🎵🎶
যদি বউ সাজোগো
আরো সুন্দর লাগবে গো …
যদি বউ সাজোগো …
আরো সুন্দর লাগবে গো …
🎤🎵🎶
মেরিন সবগুলো শাড়ি বের করে ওগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিলো। নীড় দেখছেওনা…
নীড় : আহারে… এতোগুলো টাকার শাড়ি… যদি নিরাকে দিতাম তবে মাথায় তুলে রাখতো ।
মেরিন কিছু না বলে মোবাইল হাতে নিলো।
মেরিন : হ্যালো … লিলি…
লিলি : ইয়েস ম্যাম…
মেরিন : কালকে সকাল ৯টার মধ্যে কয়েকটা ড্রেস কিনে চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে আসবে। আর ৯টা মানে ৯টাই…
লিলি : জী ম্যাম।
মেরিন কল কেটে ফ্রেশ হতে গেলো । ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় শুয়ে পরলো ।
একটুপর মেরিন বুঝতে পারলো যে রুমের লাইটটা নিভে গেলো । কয়েক সেকেন্ডে পর ও বুঝতে পারলো যে ও নীড়ের কোলের মধ্যে। লাফিয়ে নামতে গেলে নামতে পারলোনা। মেরিন তো ছুটাছুটি শুরু করে দিয়েছে । কিন্তু কোনো লাভই হচ্ছেনা।
নীড় মনে মনে : দেখাচ্ছি মজা … খুব লাফালাফি করার শখ না…
নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে ঘুরতে লাগলো। ঘুরে থেমে গেলো । মেরিনের মাথা ঘুরতে লাগলো । এরপর নীড় মেরিনকে বুকে নিয়ে শুয়ে পরলো। মেরিন ছুটতে চাইছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। মেরিন ঠিক করলো যে নীড় ঘুমিয়ে পরলে উঠে যাবে…
কিন্তু নীড় ঘুমানোর আগে মেরিনই ঘুমিয়ে পরলো। মেরিন ঘুমানোর পর নীড় ওর সারা মুখে কিস করে দিলো।
নীড় : ভালোবাসি…
.
পরদিন…
মেরিন নিচে দারিয়ে লিলির অপেক্ষা করছে । ৯টা বাজতে এখনো ৫মিনিট বাকি। তখন লিলি চলে এলো। মেরিন ব্যাগটা নিলো। নীড় ওপর থেকে সবটা দেখলো।
নীড় : তোমার ১০টায় মিটিং… আজকে তো শাড়ি পরেই তোমাকে বাসা থেকে বের হতে হবে…
মেরিন যাচ্ছে । হুট করে নীড় ধাক্কা দিলো। মেরিনের হাতের ব্যাগ পরে গেলো। মেরিনও পরে যেতে নিলো। কিন্তু নীড় ধরে ফেলল। নীড়ের দিকে চোখ পরতেই চোখ সরিয়ে নিলো। নীড় ব্যাগটা পাল্টে দিলো ।
মেরিন সোজা হয়ে উঠে দারালো। মেরিন যেতে নিলে নীড় পথ আটকে দারালো। মেরিন যেদিকে যাচ্ছে নীড়ও সেইদিকে যাচ্ছে । আসলে নীড় মেরিনের সময় নষ্ট করছে । নীলিমা কিচেন থেকে সবটা দেখছে । রান্না বাদ দিয়ে খেতে খেতে ২জনের কাহিনি দেখছে । মেরিনের ইচ্ছা করছে নীড়কে ১টা ঘুষি মারতো …
আর নীড়ের ভাব যেন কিছু হয়ইনি… মেরিন বাধ্য হয়ে নীড়ের পায়ে পারা দিয়ে ধরলো। কিন্তু তাতেও নীড়ের মাথাব্যাথা নেই।
৪-৫মিনিট পরও যখন নীড় রিয়্যাক্ট করলোনা তখন মেরিন বিরক্ত হয়ে রুমে চলে গেলো। ব্যাগটা নিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকলো । তবে শাওয়ার নিয়ে ব্যাগটা খুলে দেখে তাতেও শাড়ি। মেরিন ঠিক বুঝে গেলো যে কাজটা নীড়ের। রাগে মেরিনের গা টা জ্বলে যাচ্ছে। বাথরোবটা পরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো। দেখলো নীড় খবরের কাগজ পড়ছে। ১বার মেরিনের দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মন দিলো।
মেরিন নিজের মোবাইল খুজতে লাগলো। কিন্তু পাবে কি করে? ওটাতো নীড়ের পকেটে…
মেরিন সোজা হয়ে দারালো । পা দিয়ে মেঝেতে ধীরে ধীরে বারি দিতে লাগলো। নীড় আড়চোখে মেরিনকে দেখছে।
নীড় মনে মনে : এখন তো শাড়ি পরতেই হবে । মিটিং এ তো তুমি লেইট হবেনা । হতে চাওনা।
মেরিন ওয়াশরুম থেকে নিজের ভেজা কাপড় নিয়ে এলো। এরপর ড্রায়ার দিয়ে শুকাতে লাগলো।
নীড় : 😒।
পোশাকটা কোনোরকমে অল্প একটু শুকালে মেরিন ওয়াশরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে অফিসে চলে গেলো। নীড় খবরের কাগজটা ছিরে ফেলল।
.
মেরিন : জন… জন… জন…
জন : জী ম্যাম …
মেরিন : নী… মিস্টার চৌধুরী ধীরে ধীরে মাথা ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে। ওর কিছু করো…
জন : সরি ম্যাম ববববুঝলাম না।
মেরিন : না বোঝার কি আছে? যা করার করো বাট ওই মাথাব্যাথাটার কিছু করো।
জন পরে গেলো মহাবিপদে … কি করবে ? কিছু করলেও মেরিনের ধোলাই খাবে আর কিছু না করলেও ধোলাই খাবে।
মেরিন : দারিয়ে আছো কেন? গো ফাস্ট।
জন : ম্যাম নীড় স্যারের সাথে কি করবো?
মেরিন : জানে মেরে দাও।
জন : 😱।
মেরিন : দারিয়ে আছো কেন?
জন : ম্যাম সত্যি মারবো?
মেরিন : সত্যি মারবে মানে?
জন জানে এখানে থাকা মানে এখন বিপদ না মহাবিপদ … জন বেরিয়ে গেলো।
জন : কি করি? শমসের স্যার । হ্যা শমসের স্যারের কাছে যাই…
জন ছুটে দাদুভাইয়ের কাছে গেলো । সবটা বলল।
জন : ও স্যার কিছু বলুন…
দাদুভাই : আমি কি বলবো বলো তো? মানে কি যে হচ্ছে এসব? পরশুরাতে নীড় দাদুভাই এসে কাহিনি করলো। পাগলামো করলো। এখন দিদিভাই … আমি পাগল হয়ে যাবো।
জন : আমি কি করবো ?
দাদুভাই : কিচ্ছু করতে হবেনা … এখানে বসে থাকো।
জন : কিন্তু স্যার ম্যামতো সিওর না হয়ে কোনো কাজ করতে বলেনা। কোনো সিদ্ধান্ত নেয়না…
দাদুভাই : তো এখন কি নীড় দাদুভাইকে জানে মেরে ফেলবে?
জন : স্যার আমি বুঝতে পারিনি বলেই তো আপনার কাছে এলাম…
দাদুভাই : বসে থাকো চুপচাপ…
.
মেরিনও আর জনের কোনো খোজ নেয়নি…. কাজ শেষ করে গাড়িতে বসলো। দেখে পাশে নীড় বসা। বসে বসে আপেল খাচ্ছে ।
মেরিন গাড়ি থেকে নেমে গেলো। খুব কষ্ট হচ্ছে মেরিনের খুব। কেমন যে লাগছে নিজেই বুঝতে পারছেনা। কি করবে আর কি করবেনা কিছুই বুঝতে পারছেনা।
এতো কষ্ট পেয়েছে ছোটোথেকে এতোকিছুর মুখোমুখি হয়েছে এই পর্যন্ত তবুও কখনো এমন লাগেনি। আজকে লাগছে। আর এসবের মূল নীড় … এই ১টা নাম সব তোলপার করে রেখে দিয়েছে…
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসালো । এর ড্রাইভ করে পৌছালো নদীর পারে…
গাড়ি থামলো। নিজে নামলো। মেরিনকেও টেনে নামালো…
নীড় : দেখো আমি সরি টরি বলতে পারিনা । আর আমি সরি বলবোও না। আর কেনই বা সরি বলবো? সরির তো কিছু নেই। তুমি আমাকে ভালোবাসো আর আমি তোমাকে ঘৃণা করি। তাই আমি তোমাকে কষ্ট দিবো আর তুমি কষ্ট পাবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
মেরিন : …
নীড় : বাট কথা হচ্ছে এটা যে মেরিন বন্যার কষ্ট পাওয়াটা প্রকৃতি বিরোধী… মেরিন বন্যার সাথে কষ্ট দেয়াটাই সাজে…
মেরিন : …
নীড় : আমার মনে হয় … মেরিন বন্যার হিংস্রতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে । ভাবা যায় ? দ্যা মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী এতো নিরব হয়ে আছে… এতো গম্ভীর… তাহলে আমি জিতে গিয়েছি… মেরিন বন্যাকে আমি হারিয়ে দিয়েছি। ইয়েস… আই হ্যাভ… ভালোবাসার খেলায় হারিয়ে দিয়েছি… ইয়েস ইয়েস & ইয়েস…
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
মেরিন : মিস্টার চৌধুরী আমি মেরিন বন্যা… আমাকে চাবি দিয়ে ঘুরানো যায়না। কি মনে করেছেন? আপনি আমার ইগো হার্ট করবেন আর আমিও আবার আপনাকে ভালোবাসবো? নো … নো মিস্টার চৌধুরী নো… আমি আমার মন-মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রন করতে জানি। আবেগ-অনুভূতি অনেক আগেই হারিয়ে গিয়েছে। যেটুকুও বাকি ছিলো সেটুকুও শেষ । এন্ড থ্যাংকস টু ইউ। আপনি জানেন আমি আপনার চেহারাটা কেন এরিয়ে চলেছি? কারন এই চেহারাটায় লেখা আছে মেরিন প্রস্টিটিউট … ইয়েস… ইটস ট্রু… এতোদিন আপনাকে ইগনোর করেছি কারন আপনাকে ঘৃণা করতে শিখছি … হামমম ঘৃণা করতে শিখছি। এসব স্টুপিড ড্রামা করে নিরাকে মেরে যতোই ভালোগিরি করেন না কেন লাভ হবেনা। আপনাকে আমার বন্দী হয়েই থাকতে হবে। তবে পার্থক্য কি জানেন? আমি আপনাকে ভালোবাসার চাদরে মুরিয়ে নিতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আপনি ঘৃণার শেকল বেছে নিলেন … এতে আমার দোষনা …
নীড় : তুমি যদি সত্যিই আমাকে ঘৃণা করতে শিখে যাও তবে তবে তবে আমি তোমার সামনে দারিয়ে ছাই হয়ে যাবো …
কথাটা শুনে মেরিনের বুকটা কেপে উঠলো।
নীড় : না না ভয় পাওয়ার কিছু নেই… আমার কিছু হবেনা। রিল্যাক্স । কারন দুনিয়া ঘুরে গেলেও তুমি আমাকে ঘৃণা করতে পারবেনা। আই বেট…
মেরিন : মেরিন হারতে শিখেনি…
নীড় : কারন এর আগে আমার মুখোমুখি হওনি…
মেরিন ১টা বাকা হাসি দিলো ..তখন মেরিনের মোবাইল বেজে উঠলো । ফোন ধরে জানতে পারলো নিলয়ের জ্ঞান ফিরেছে।
মেরিন : আমি আসছি। সরি মিস্টার চৌধুরী। এখন আপনার সাথে ঝগড়া ঝগড়া খেলার ইচ্ছা আমার নেই…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
.
কিছুক্ষন আগেই নিলয়ের জ্ঞান ফিরলো। আর শুনতে
পেলো : হ্যালো মিস্টার পাগল প্রেমিক…
নিলয় তাকিয়ে দেখে মেরিন দারিয়ে আছে ।
মেরিন : খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে তোর নিজেকে তাইনা? কারন এতোদিন পর জ্ঞান ফিরেছে। আর আমাকে দেখতে পেলি।। হাউ লাকি…
নিলয় : আআমি কিন্তু সততত্যিই তোমাকে ভালোবাসি…
মেরিন : হ্যা আমি জানিতো। খুব ভালোবাসিস।। তবে কি জানিস আমি তোর ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারছিনা… যেটার জন্য আমার বড্ড আফসোস হচ্ছে। খুব । তোকে প্রতিদান দিতে পারছিনা বলে। তবে ধৈর্য্যের ফল মিষ্টি হয়। তাই এতো অপেক্ষা। তবে মনে হয় অপেক্ষার পালা প্রায় শেষ। আমি তোকে প্রতিদান দিবো তোর ভালোবাসার… তোকে এই দুনিয়ার মোহমায়া থেকে মুক্তি দিবো… একটুখানি অপেক্ষা কর।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 25
writer : Mohona
.
মেরিন : একটুখানি অপেক্ষা কর । আসছি।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
মেরিন জনকে ফোন করলো।
জন : স্যার মেরিন ম্যাম কল করেছে … কি করবো?
দাদুভাই : ধরো…
জন : ধরবো?
দাদুভাই : ধরো।
জন : হ্যালো ম্যাম…
মেরিন : ২১মিনিট সময় দিলাম নিরাকে নিয়ে শাস্তিমহলে পৌছাও। কোনো প্রশ্ন নয় …
জন : না ম্যাম প্রশ্ন করবো কেন। আমি আসছি…
মেরিন রেখে দিলো।
দাদুভাই : কি বলল?
জন : নিরাকে শাস্তিমহলে নিয়ে যেতে বলল ।
দাদুভাই : তাহলে আর দেরি কোরোনা… তারাতারি যাও।
.
নিরা বসে আছে। মুখোমুখি মেরিন পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে। হাতে করাত ।
সেই তখন থেকে নিরা পানিই খেয়ে যাচ্ছে ।
মেরিন : ২লিটার পানি খেয়ে নিয়েছিস। এবার কিছু বের করার পালা।
নিরা তো মনে করছে যে আজকে ও মরে যাবে।
মেরিন : পানি খাওয়া হয়েছে না আরো খাবি?
নিরা : …
মেরিন : কিছু জিজ্ঞেস করলাম তো.. বল আরো পানি লাগবে?
নিরা : না ।
মেরিন : গুড… এখন আমি তোকে কিছু প্রশ্ন করবো। তার ঠিকঠিক উত্তর দিবি। যদি একটুখানিও ভুল হয় তবে একেকদিন তোর শরীরের একেক অংশ কাটবো। কি যে ভয়ানক মৃত্যু দেবো তা আমি নিজেও জানিনা।
নিরা ১টা লম্বা ঢোক গিলল ।
মেরিন : সো যা বলার তা ভেবে বলবি…
নিরা : …
মেরিন : সেদিন তোর প্রেমিক তোর ওপর ক্ষেপলো কেন? তোকে মারলো কেন? কি হয়েছে…?
নিরা : …
মেরিন : যা বলবি ভেবে বলবি। সত্যি বলবি। ১পার্সেন্টও যদি মিথ্যা হয়… তাহলে… 😏…
নিরা : ….
মেরিন : বল…
নিরা : …
মেরিন ঝাড়ি মেরে
বলল : বল…
নিরা : নীড় জেনে গিয়েছে যে বনপাখি আমি না তুই…
মেরিন : হুয়াট?
নিরা : হামমম।
মেরিন : বনপাখি…? বনপাখির সাথে তোকে মারার কি সম্পর্ক ?
নিরা : …
মেরিন : এই জন… ঘটনা কি বলো তো? ভালোভাবে কেউ কোনো কথাই কেন শোনেনা বলো তো…
বলেই মেরিন নিরার ভাঙা হাত মুচরে ধরলো। নিরার জান তো যায়যায়…
নিরা : বলছি… বলছি..
মেরিন : দেখেছো জন… কি বললাম… বাট নিরা… ইউ নো হুয়াট? লেইট করার জন্য তোকে এভাবেই জবাব দিতে হবে… শুরু কর শুরু কর… আরো দেরি হলে কিন্তু ঝামেলা বারবে… বল বল বল…
নিরা : নীড় কখনোই আমাকে ভালোবাসেনি ।
মেরিন : তবে কাকে ভালোবেসেছে?
নিরা : তোকে। মানে ওর বনপাখিকে…
মেরিন নিরাকে ছেরে দিলো । চেয়ার নিয়ে পিছে চলে এলো।
মেরিন : মিস্টার চৌধুরী তোকে না বনপাখিকে ভালোবাসতে ইউ মিন বাসে … কুয়াইট ইন্টারেস্টিং। তোর স্টোরিটা ভালো লাগলো … যাহ নরমালি বল…
নিরা : নীড়ের বয়স যখন ৯কি ১০ বছর তখন ওর তোল সাথে দেখা হয়। আমাদের বাসার পাশের প্লে গ্রাউন্ডে …
মেরিন অনেকটা অবাক হলো।
নিরা : হয়তো তোর মনে নেই। কারন তুই তখন যথেষ্ট ছোট। ৪-৫বছর বয়স । তুই তোর মার সাথে যেতি রোজ বিকালে । তখন নীড়দের বাসা এখানেই ছিলো। তাই নীড় খেলতে আসতো। কোনো ভাবে তোর সাথে নীড়ের ফ্রেন্ডশীপ হয়। তখন ফ্রেন্ডশীপ এর কিছুই তুই না বুঝলেও নীড়ের কাছে ফ্রেন্ডশীপের মূল্য অনেক ছিলো। প্রায় বছর খানেকে মতো এমন ছিলো। তোর মা তোকে বনপাখি বলে ডাকতো। দীদা তোকে বন বন বলে ডাকতে। আর দাদুভাই তোকে দিদিভাই বলে ডাকতো। বাবা তো তোকে ডাকতোই না… তাই তুই মনে করতি তোর নাম বনপাখিই… আর তোর গলার লকেটটাতেও লেখা ছিলো বনপাখি। তাই নীড়ও ভাবে তোর নাম বনপাখি … তবে ১দিন নীড় জানতে পারে তোর অন্য ১টা নাম আছে। সেদিন তোর নাম জানার জন্য তোর আর তোর মার অপেক্ষা করে… কিন্তু সেদিনই দীদা মারা যায় তোর মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য । তাই ২-৩মাসের মতো তোর আর ওই প্লে গ্রাউন্ডে যাওয়া হয়নি। তবে প্রতিদিন নীড় প্লে গ্রাউন্ডে যেতো । এরপর নীড়রা উত্তরা শিফ্ট করে। কিন্তু ওর মনে আক্ষেপ যে বনপাখিকে দেখতে পারেনা । ধীরে ধীরে ও কৈশোর জীবনে পা রাখে। বনপাখি ওর বন্ধু থেকে ওর ভালোবাসা হয়ে যায়। ওর পাগলামো হয়ে যায় । ওর বয়স বারার সাথে সাথে ওর পাগলামো বেরে যায় । সাইকো হয়ে যায় ও। বড় প্রায়ই ওই প্লে গ্রাউন্ডে যেতো। বনপাখির আশায় । ইভেন এখনও যায়। তবে এখন যায় মন খারাপ থাকলে …
এটা মেরিন জানে যে নীড় মন খারাপ থাকলে ওখানে যায়। তবে কারনটা আজকে জানলো।
মেরিন : কিরে তোতাপাখি চুপ হয়ে গেলি কেন? বলতে থাক…
নিরা : বেশির ভাগ মেয়ের সাথে নীড় সোজা মুখে কথা বলতোনা । রুড বিহেভ করতো। নীড় তখন লন্ডনে হাইয়ার ডিগ্রি নিতে গিয়েছে। আর আমিও লন্ডন যায় পড়তে। ইষ্ট লন্ডনে যে বাংলাদেশি সোসাইটি আছে সেখানে নীড় থাকতো। আমিও থাকতাম। আমার বন্ধুরাও থাকতো। ওর- ওর পার্সোনালিটির প্রেমে পরে যাই। তবে বন্ধুরা বলে যে নীড় নাকি মেয়েদের ধারে কাছেও ঘেষতে দেয়না । আমি ওদের সাথে বাজি লাগি…
মেরিন : তুই মানতে পারিস নি না … যে তুই কোনো ছেলেকে পটাতে পারবিনা…
নিরা : …
মেরিন : ওকে বাকীটা বল…
নিরা : কি করবো কি করবো ভেবেই পাচ্ছিলামনা। ১দিন দেখলাম ১টা মেয়ে নীড়কে প্রপোজ করতেই নীড় ঠাস করে থাপ্পর মারলো। ভয়টা বেরে গেলো । গভীর রাতে বেলকনিতে দারিয়ে ছিলাম । তখন দেখলাম নীড়ের গাড়ি থামলো। ওর টলমল চলন দেখে বুঝে গেলাম যে ও ড্রিংকস করেছে। প্রচুর ড্রিংকস করেছে । গাড়ি থেকে বাসার দরজা পর্যন্ত যেতেই ২-৩বার পরে গিয়েছে। আমি ভাবলাম হয়তো মাতাল নীড়কে ফাসাতে পারবো। আমি ওর পিছে পিছে ওর বাসায় ঢুকে যাই । নীড় বাসায় একাই থাকতো। সার্ভেন্ট কেবল সকালো রান্না করে দিয়ে যেতো । তাই আমার ঢুকতে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে মাতাল নীড়ের কাছে আমি বনপাখির কাহিনি জানতে পারি। কিছুটা ওর মুখে কিছুটা ওর ডায়রীতে। ব্যাস এরপর আমি ওরকাছে বনপাখি সেজে যাই। তোর লকেট । তোর মায়ের সাথে তোর ছবি নিজের কাছে আনিয়ে … মূল কথা আমি তুই হয়ে যাই । নীড়কে বোঝাই যে তোর মা আমার ছোটআম্মু … আম্মু না… তখন ছোট ছিলাম। তাই আম্মু আর ছোট আম্মুর মধ্যে পার্থক্য বুঝতামনা । ওকে এটাও বলি যে ছোটআম্মু কোথাও হারিয়ে গিয়েছে। কারন জানি তোর আম্মুকে তুই খান বাড়িতে ঢুকাবিনা। তোর আর আমার বয়সের পার্থক্য খুব বেশি না হওয়ায় আমার তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু তখন বুঝিনি যে তুই নীড়ে আটকে যাবি…. সেদিন জানিনা কিভাবে নীড় সব সত্যটা জেনে যায়। আর …
.
সবশুনে মেরিন ৩বার তালি দিলো।
মেরিন : হুয়াট অ্যা স্টোরি …হুয়াট অ্যা স্টোরি… ফাটাফাটি…
নিরা : আমি সব সত্যি সত্যিই বলেছিরে।
মেরিন : তুই সত্যি বলেছিস না কি মিথ্যা সেটা তো আমি জেনেই যাবো। জন ওকে কাউকে দিয়ে বাসায় পাঠানোর ব্যাবস্থা করো। উইথ ডিউ রেসপেক্ট ।
জন : জী ম্যাম …
নিরা : নননা আমি যাবেনা । আমি ক্ষমা করে দে। দেখ আমি তো সব সত্যি সত্যি বলেছি… আমি জানি তুই গাড়িসহ আমাকে উরিয়ে দিবি।
মেরিন : আরে না নাহ… অমন করে আমি মারিনা…
মেরিন গানটা নীড়ের বুকে ঠেকিয়ে
বলল : মারতে হলে আমি এখানে গুলি করে মারি… জন…
জন নিরাকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।
মেরিন : খেলাটা… ঘুরে গেলো।
জন : ম্যাম নিরাকে কি এখনই মেরে ফেলবেন?
মেরিন : আহা। এখনই মারবোনা। এতো তারাহুরা কিসের। আগে তো ওকে নীড়ের বউ বানাবো… ও নীড়ের সাথে সংসার করবে। তারপর মারবো।
জন : মানে ম্যাম?
মেরিন : খুব সহজ… আমি নীড়-নিরার বিয়ে দিবো। নিরার খুব শখ নীড়ের বউ হওয়ার… আর নীড়েরও শখ বনপাখিকে বিয়ে করার। আমি ২জন প্রেমীকে মিলাতে তাই… নীড়কে বনপাখির সাথে মিলাতে চাই…
জন : ম্যাম বনপাখি তো আপনি…
মেরিন : নাহ… নীড়ের জন্য নিরাই বনপাখি…
জন : স্যার তো সবটা জেনে গিয়েছে ।
মেরিন : হামমম। তাইতো নীড়কে বনপাখি দিবো।
.
মেরিন বাসায় পৌছালো। রুমে ঢুকে অবাক হয়ে গেলো। কারন সারারুম ফুল দিয়ে সাজানো …
নীড় : কেমন লাগলো আমার সারপ্রাইজ মিসেস অতৃপ্ত আত্মা? আজকে ইচ্ছা হলো তোমার সাথে বাসর করবো। অপূর্ন রয়ে গিয়েছিলোনা আমাদের বাসরটা… তাই আজকে নিজের হাতে সাজালাম।
মেরিন : …
নীড় ১টা লালশাড়ি নিয়ে মেরিনের মুখোমুখি দারালো।
নীড় : শাড়ি তো তুমি পরবেনা। তাই আমিই তোমাকে পরিয়ে দিবো…
মেরিন : আজকে আমি অনেক খুশি… তাই শাড়িটা আমি নিজেই পরবো… আর আগুন জ্বালিয়ে দিবো…
নীড় : আগুন?
মেরিন : হামমম। আপনার মনে… বাই দ্যা ওয়ে শুধু কি শাড়িই এনেছেন? আর কোনো অর্নামেন্টস নেই ?
নীড় খানিকটা অবাক হলো…
মেরিন : কি হলো? কিছু বলছেন না যে?
নীড় কিছুনা বলে আরো ১টা ব্যাগ দিলো। মেরিন দেখলো তাতে হালকা পাতলা জুয়েলারি আর টুকটাক কসমেটিকস আছে … মেরিন বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : আমি ওয়াশরুম থেকে রেডি হয়ে আসছি।
নীড় : ওকে… বাট পালানোর চেষ্টা কোরোনা…
মেরিন : মেরিন পালায়না। তবে হ্যা ১টা ফেভার করতে হবে আমাকে….
নীড় : কি?
মেরিন : যখন বলবো তখন থেকে ৫মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখতে হবে। অবশ্য আপনি বুঝেই যাবেন কখন চোখ খুলতে হবে।
নীড় : 😒।
মেরিন : কি হলো? এতোটুকু করবেননা।
নীড় : ভরসা হচ্ছেনা। কিছু ১টা করবে জানি।।
মেরিন : পালাবোনা বললাম তো। আজকে আপনি আমাকে চান তো ? বেশ আমি রাজি। তবে তারজন্য এতোটুকু তো করতেই হবে । বলুন…
নীড় : ওকে…
মেরিন : প্রমিস?
নীড় : প্রমিস…
মেরিন : গুডবয়….
.
একটুপর…
মেরিন ওয়াশরুম থেকে
বলল : শুনছেন?
নীড় : হ্যা বলো।
মেরিন : চোখ বন্ধ করুন।
নীড় : এখন?
মেরিন : হামম।
নীড় : ওকে।
নীড় চোখ বন্ধ করলো। মেরিন খুব নিরবে বেরিয়ে এলো। এরপর ওয়াইনের বোতলটা নিয়ে বেডের চারদিকে ছরিয়ে দিয়ে কিছুটা বেডের ওপরও ছরিয়ে দিলো। এরপর দিয়াশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিলো।
নীড় চোখ মেলল। দেখলো আগুন জ্বলছে।
মেরিন : সি… আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছি…
দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে । তবে আগুনের এই লাল আভায় লাল রঙের শাড়িতে মেরিনকে অপরূপ সুন্দর লাগছে। অগ্নিকন্যা লাগছে।
নীড় ১বার ঘড়ির দিকে তাকালো। দেখলো ১২টা বাজে। ও মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো। মেরিনের কোমড় জরিয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
নীড় : তুমি যদি চাও তবে আজকে না হয় আগুনের বাসরই করবো… হ্যাপী বার্থডে ইউ এন্ড মি…
বলেই মেরিনের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। মেরিন অবাক হলো। আজকে তো ওর মনেই ছিলোনা জন্মদিনের কথা…
নীড়ের ভালোবাসায় হুট করে ওর সেদিনের কথা মনে পরে গেলো। ধাক্কা দিয়ে নীড়কে সরিয়ে দিলো।
মেরিন : নিজের লিমিটে থাকবেন।
নীড় : তুমিই আমার লিমিট… তুমি বন্যা হলে বর্ষন.. আমি যখন বলেছি যে আজকে বাসর করবো তখন তো করবোই…
মেরিন : যেন সকাল হতেই ট্যাগ লাগিয়ে দিতে পারেন যে আমি প্র…
নীড় মেরিনের ঠোটজোরা দখল করে নিলো…
.
সকালে…
নীড় সোফায় ঘুমিয়ে আছে… মেরিন নীড়ের বুক থেকে উঠে এসে ছাইগুলো বার বার হাতে নিচ্ছে আর হাত খানিকটা ওপরে তুলে ছেরে দিচ্ছে। বেশ ভালো লাগছে এই খেলাটা খেলতে…
মেরিন : ভুল করতে মেরিন পছন্দ করেনা… তবুও দুর্ভাগ্যবশত রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ তো… তাই ভুল হয়েই যায়। কিন্তু মেরিন ১ভুল ২বার করেনা। আর যদি একই ভুল দ্বিতীয়বার করে… তবে তার পিছে কোনো না কোনো কারন থাকে। গতরাতে যা হয়েছে না তো সেটা ভুল… আর না তো সেটা আবেগ.. আপনি মনে করেছেন আপনি জোর খাটিয়েছেন… নো মিস্টার চৌধুরী নো… জোর খাটানোরে সুযোগ পেয়েছেন কারন আমি আপনাকে সুযোগটা দিয়েছি … মেরিন কারো কাছে ঋণ থাকেনা। আপনার কাছে কি করে থাকবে? কিছু অপবাদ ফেরত দেয়ার আছে যে… হামমম… অপবাদ… ধর্ষক অপবাদ…
একটুপর নীড়ের ঘুম ভাংলো। দেখে মেরিন ড্রেসি টেবিলের সামনে বসে রেডি হচ্ছে। অবাক হলো। কারন মেরিন শাড়ি পরা। সাদা রঙের।
নীড় : গুড মর্নিং আত্মা বউ…
মেরিন সারা দিলোনা।
নীড় : ওহ সরি ‘অতৃপ্ত’ ওয়ার্ডটা মিসিং গিয়েছে । গুড মর্নিং অতৃপ্ত আত্মা বউ। এন্ড হ্যাপী বার্থডে অলসো।
মেরিন : …
নীড় উঠে গিয়ে মেরিনকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : হ্যাপী বার্থডে…
মেরিন যেন এতোটুকুরই অপেক্ষায় ছিলো। মেরিন দুম করে উঠে দারিয়ে নীড়কে ঠাস করে থাপ্পর মারলো। নীড় অবাক হয়ে মেরিনের দিকে তাকালো।
নীড় : তু…
মেরিন : আরো ১টা থাপ্পর মারলো ।
নীড় : …
মেরিন : আর কি চান আপনি? উদ্দেশ্য তো হাসিল করেছেনই আপনি। আর কি চান ? বলুন … আর কি চান ? আপনি যে কাজটা গতরাতে করেছেন সেটাকে কি বলে জানেন? রেপ… হামম সেটাকে রেপ বলে। ইউ আর অ্যা রেপিস্ট …
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো । আর থাকা সম্ভবনা। বহুকষ্টে কথাগুলো বলেছে। হয়তো আরো একটু থাকলে কেদেই দিবে…
এতোদিন নীড় অনুতপ্ত ছিলো। কিন্তু আজকে নীড় বুঝতে পারছে যে সেদিন মেরিনের কেমন লেগেছিলো। ও যে ছেলে মানুষ তবুও মেরিনের কথাগুলো শুনে ওর চোখের কোনে পানি চলে এলো।
.
বিকালে…
মেরিন ওর নানুবাড়ি গেলো। যেখানে ওর মা আছে। মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আর কল্পনা করছে নীড়ের সেই করুন-অসহায় দৃষ্টি…
যেই নীড়কে এতো ভালোবেসেছে সেই নীড়কে ও কি করে আঘাত করলো? কি করে থাপ্পর মারলো? কি করে? নীড় অনেক ভুল করেছে। অনেক… কিন্তু তবুও… আজকে তো নীড়ের জন্মদিন… আর জন্মদিনের দিন ও নীড়ের সাথে এমনটা করলো?
নীড় : থাপ্পর মেরে যখন কষ্টই পাবে তখন থাপ্পর মারলে কেন?
মেরিন মাথা তুলে দেখে নীড় দারিয়ে দারিয়ে কফি খাচ্ছে।
মেরিন : আপনি? আপনি এখানে কি করে এলেন?
নীড় : অতৃপ্ত আত্মার পাগল চৌধুরী আমি… একটু তো আত্মাগিরি করতেই হবে…
মেরিন : …
নীড় : বাই দ্যা ওয়ে… এটা কিন্তু আমার বেস্ট বার্থডে গিফ্ট এভার…
মেরিন : …
নীড় : ভাবা যায়… বউয়ের কাছে রেপিস্ট ট্যাগ পেলাম। ফিলিং প্রাউড ইউ নো…
মেরিন : 😒
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 26
writer : Mohona
.
মেরিন : 😒…
নীড় মেরিনের দিকে এগিয়ে এলো। মেরিনের গালে হাত রাখলো।
নীড় : খুব কষ্ট দিয়ে ফেলেছিনা তোমাকে…. তুমি আমাকে বিশ্বাস করে নিজের জীবনটা আমার হাতে তুলে দিয়েছিলে। কিন্তু আমি তার মর্যাদা দিতে পারিনি… আম সরি…. কি ভেবেছিলে এমন কিছু বলবো? মোটেও না। সরি বলবোনা। কারন সরি বলার অপশন নেই । আমি রাখিনি… আচ্ছা বিধবাদের মতো সাদা শাড়ি কেন পরেছো কেন? আমি কি মরে গিয়েছি নাকি হামমম? আর কখনো সাদা শাড়ি পরবেনা…
মেরিন : সাদা বৈধব্যের রং কিনা আমি জানিনা। তবে ৭রঙের মিশ্রনে সৃষ্ট এই সাদা রং টা আমার কাছে সব থেকে গাঢ় রং… ঘৃণার মতো এই রংটাও ১টা সত্য। মৃত্যুর সাথে কেবল এই রংটাই সাথে যায়…
নীড় : তোমার কথার জবাবনা অনেক সময় দেয়া সম্ভব হয়না… তবে বুকে গিয়ে বিধে তীরের মতো… না ভেতরে নেয়া যায় আর না বাহিরে বের করা যায়… যাই হোক আমি জানি জন্মদিনে তুমি আম্মুর আরালে তবে আম্মুর সাথে থাকো । আজকে আমরা ২জন আম্মুর সাথে জন্মদিন পালন করবো…
মেরিন : ….
নীড় :কি হলো ? চুপ হয়ে গেলে যে?
মেরিন : কারন এতোদিনের অভ্যাসটা পাল্টাতে হবে।
নীড় : মানে… ?
মেরিন : মানে আম্মুর সাথে আজকে আর দিনটা কাটানো যাবেনা …
নীড় বুঝতে পারলো মেরিনের কথার মানে।
নীড় : তুমিই থাকো। আমি চলে যাচ্ছি…
বলেই নীড় চলে গেলো। ১রাশ হতাশা নিয়ে । সারাদিনে আর ১ফোটা পানিও মুখে দিলোনা।
নীড় : ভুলের পরিমানটা যখন খুব বেশি বেরে যায় তখন ভালোবাসাটা চাপা পরে যায়… গভীর খাদে পরে যায় …. তার ওপর উরে এসে বসে পরে ধুলাবালি… অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায় ভালোবাসার… তাই চাপা পরার আগেই কিছু করতে হবে…
.
একটু রাত করেই মেরিন ফিরলো । দেখে নীড় রুমে নেই… তখন মিনি ট্যারেস থেকে গিটারের শব্দ আসছে । মেরিন গেলো। দেখলো নীড় গান গাইছে।
নীড় :
🎤🎵🎶
সে মানুষ চেয়ে চেয়ে
ফিরেতেছি পাগল হয়ে
মরমে জ্বলছে আগুন
আর নেভেনা…
আমায় বলে বলুক
লোকে মন্দ
বিরহে তার প্রান বাচেনা
দেখেছি…
দেখেছি রুপসাগরে
মনের মানুষ কাঞ্চা সোনা ….
পথিক কয় ভেবোনারে
ডুবে যাও রূপসাগরে
বিরলে বসে করো
যোগ সাধনা…
একবার ধরতে পেলে
মনের মানুষ ছেরে যেতে আর দিওনা
দেখেছি…
দেখেছি রুপ সাগরে
মনের মানুষ কাঞ্চা সোনা
ও তারে ধরি ধরি মনে করি
ধরতে গেলেই আর পেলেমনা
দেখেছি রুপসাগরে
মনের মানুষ কাঞ্চা সোনা…
🎤🎵🎶
নীড়ের কন্ঠে কষ্ট শুনে মেরিন পৈশাচিক হাসি দেয়ার কথা। কিন্তু দিতে পারছেনা … কিছু না বলো ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরলো। তাও ২টা। হয়তো ১টাতো কাজ হবেনা। তাই ২টা খেলো । এদিকে বুকেও আজকে ব্যাথাটা উঠেছে। আর আজকে দিনটা বরাবরই খুব ভারী ছিলো। তাই আজকে ঘুমানোটা একটু বেশিই প্রয়োজন ।
.
২দিনপর…
দাদুভাই : তুমি আমাকে এখানে নিয়ে এলে যে নীড় দাদুভাই…?
নীড় : তুমি আমাকে বলেছিলে যেদিন আমি মেরিনকে ভালোবাসবো সেদিন তুমি আমাকে মেরিন আর আম্মু বৃষ্টিকে কেন ভয় পায় সেটা বলবে… আজকে আমি বলছি… আমি মেরিনকে ভালোবাসি… ভীষন ভালোবাসি… আমাকে কেবল বৃষ্টির রহস্য না… মেরিনের পুরো অতীত জানতে চাই। প্লিজ বলো… মেরিনকে স্বাভাবিক করতে আমার ওর অতীত জানাটা খুব প্রয়োজন । বলোনা প্লিজ…
দাদুভাই : হামম বলবো। তবে ১টা প্রশ্নের উত্তর দাও। ভয় নেই উত্তর না দিলেও আজকে সবটা বলবো ।
নীড় : বলো কি প্রশ্ন ?
দাদুভাই : তুমি কাকে ভালোবাসো? বনপাখিকে না ঘৃণার মেরিন কে?
নীড় : দুজন একই দাদুভাই…
দাদুভাই : এক হলেও আকাশ – পাতাল পার্থক্য আছে… তোমার সেই ভালোবাসার বনপাখি আজকে সবার ঘৃণার মেরিন… তাই আমার এটা জানা প্রয়োজন যে তুমি কাকে ভালোবাসো?
নীড় : ২জনকেই। তবে ঘৃণার মেরিনকে বেশি… আর এই ঘৃণার মেরিনকে আমি স্নেহের বনপাখি বানাবো। আবার…
দাদুভাই : দেখা যাবে…
দাদুভাই বলতে শুরু করলো…
.
[
অতীত…
২৯বছর আগে। শমসের খান আর কনিকার বাবা তপন মাহমুদ ছিলো বেস্টফ্রেন্ড । কবির আর কনিকাও ছিলো বেস্টফ্রেন্ড। কয়েকবছর আগে কনিকার মা আর ভাই গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায় … এরপর কনিকাই তপনের সব। কবির কনিকা কলেজ লাইফ পর্যন্ত একসাথেই ছিলো। কনিকা মেডিকেলের স্টুডেন্ট হয়ে যায় । কবির-কনিকা যে কলেজে পড়তো তপন সেই কলেজেরই ১জন প্রভাষক ছিলেন ।
কবির বাবার অনেক বাধ্য ছেলে ছিলো। কখনই বাবার কথার অবাধ্য হয়নি…
তপন আর শমসেরের অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো যে কবির-কনিকার বিয়ে দেবে।
আর কবির-কনিকা ২জন ভালো বন্ধু হওয়াতে ২বাবা মনে করেছে যে হয়তো তারা সফল হবে।
কনিকা কবিরকে ভালোবাসে। তপন জানে যে কনিকা কবিরকে ভালোবাসে ।
কবির কনিকাকে বন্ধুই ভাবে। তবে কবিরের জীবনে অন্য কোনো মেয়েও নেই ।
.
রাবেয়া : বলছি শোনো না… ছেলে তো নিজের পায়ে দারিয়ে গিয়েছে। এখন কনামাকে বাড়ির বউ করে আনার সঠিক সময়। আর কতোদিন অপেক্ষ করবো বলো তো?
শমসের : ঠিকই বলেছো। আজই কবিরের সাথে কথা বলবো।
রাবেয়া : হামম।।
সন্ধ্যায় কবির অফিস থেকে ফিরলে শমসের ডাক দেয়।
কবির : হ্যা বাবা…
শমসের : ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো। কথা ছিলো…
কবির : হামমম।
কবির নিচে এলো।
কবির : বলো বাবা…
শমসের : আমার তোমার বিয়ে করাতে চাই… কন…
কবির : বিয়ে?
শমসের : হ্যা বিয়ে।
কবির : বাবা এখনই বিয়েনা। আরো কয়েকটা বছর যাক।
রাবেয়া : আর কতো… আমার বুঝি মন চায়না ছেলের বউয়ের মুখ দেখতে?
কবির : মা… বিয়ে করবোনা সেটা তো বলিনি… বলেছি পরে…
শমসের : পরে মানে কি?
কবির : বাবা আনি প্রিপেয়ার নই।
শমসের : তো আমি তো কালই তোমাকে বিয়ে করতে বলছিনা। সব ঠিকঠাক হতেও তো সময় লাগবে। ২-৩মাসতো এমনিতেই চলে যাবে।
কবির : কিন্তু বাবা…
শমসের : আমার ওপর কথা বলবে তুমি?
কবির : বাবা আমাকে ভাবার জন্য একটু সময় দাও।
শমসের : ওকে। ৩দিন দিলাম । তবে ৩দিন পর জবাব যেন হ্যা ই হয়…
কবির রুমে চলে গেলো।
কবির : এখনই বিয়ে? তারওপর বাবা না জানি কারসাথে কার সাথে বিয়ে ঠিক করেছে …
.
পরদিন…
কবির অফিসে বসে কাজ করছে। তখন সেতু রুমে ঢুকলো। সেতু এই অফিসে কাজ করে। প্রায় ৬মাস ধরে।
সেতু : স্যার আসবো?
কবির : হামমম ।
সেতু ঢুকলো।
কবির : ফাইলের কাজগুলো শেষ?
সেতু : জী স্যার। এইযে।
কবির : হামমম।
সেতু : স্যার আপনাকে এমন লাগছে কেন? অসুস্থ ?
কবির : না।
সেতু : তবে কি কিছু ভাবছিলেন? না মানে রুমে ঢোকার সময় দেখলাম এক ধ্যানে কি যেন ভাবছেন। তাই বললাম আর কি… সরি…
কবির : না আসলে আপনাদের বড় স্যার মানে বাবা… বিয়ের কথা বলছে। যদি ভুল কেউ পরিবারে চলে আসে তবে জানিনা কি হবে?
কথাটা শুনে সেতুর মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো ।
সেতু : না স্যার… শমসের স্যার ঠিক মেয়েকেই আনবে।
বলেই সেতু বেরিয়ে গেলো।
সোজা গেলো ওর বাবার কাছে। ওর বাবার নাম জুলহাস। তিনিও এই অফিসেই কাজ করতো। সিকিউরিটি গার্ডের। তবে ৩বছর আগে চুরির দায়ে তাকে বেক করে দেয়া হয়। কবির বা শমসের কেউই জানেনা যে সেতুর বাবা সেই চোর জুলহাস।
জুলহাস নিজের সুন্দরি মেয়েকে অফিসে ঢুকানোর ব্যাবস্থা করে। মেয়ে চাকরি পেয়েও যায়। উদ্দেশ্য ছিলো যে সেতুকে দিয়ে কবিরকে ফাসাবে। আর সেতুকে খান বাড়ির বউ বানাবে। সবকিছু হাতিয়ে নিবে। শমসের কে উচিত শিক্ষা দিবে। কিন্তু কবিরকে ফাসাতে পারেনি…
সেতু : এখন কি হবে?
জুলহাস : যখন সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠেনি। তখন আঙ্গুল বাকাতে হবে। কবির যখন পটেনি তখন ওকে ফাসাতে হবে…
সেতু : কিভাবে বাবা?
জুলহাস ১টা ভিডিও দেখালো। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে শমসের ১জনকে গুলি করে মারছে।
সেতু : সেকি বাবা… শমসের খান খুনি?
জুলহাস : না… সে তো তার বন্দুক দিয়ে ফাকা গুলি করেছিলো। পেছন থেকে গুলিটা করেছি আমি।
সেতু : এটা দিয়ে শমসের খানকে ব্ল্যাকমেইল করবো?
জুলহাস : না… কবিরকে…
সেতু : মানে?
জুলহাস : খুব সহজ… শমসের খানকে ব্ল্যাকমেইল করা যাবেনা। কারন সে জান সত্যটা । কিন্তু কবির জানেনা। আর কবির নিজের বাবাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। সেই সাথে নিজেদের ‘খান’ পদবীকেও। ও নিজের বাবার গায়ে কোনো দাগ লাগতে দিবেনা। যাই হয়ে যাকনা কেন।
সেতু : হামমম।
জুলহাস : ১বার কবিরের বউ হয়ে সবকিছু হাতিয়ে নে… এরপর কবিরকে ডিভোর্স দিয়ে তুই তোর সোহেলকে আবার বিয়ে করে নিবি…
.
পরদিন…
কবির : কি ব্যাপার সেতু…? আপনি আমাকে এখানে ডাকলেন যে?
সেতু : এখনই বুঝতে পারবেন…
বলেই সেতু কবিরকে ভিডিওটা দেখালো। আর ভিডিওটা দেখে কবিরের পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো।
কবির : এটা হতে পারেনা। আমার বাবা কারো খুন করতে পারেনা। এটা মিথ্যা।
সেতু : না মিস্টার কবির। এটা শতভাগ সত্য ।
কবির : এই ভিডিও তুমি কোথায় পেলে?
সেতু : পেয়েছি কোথাও।
কবির : তোমাকে আমি ২০লাখ টাকা দিবো। এই ভিডিওর বদলে।
সেতু : আপনি খুব ভালো বিজনেসম্যান। তাই সওদা খুব ভালোই করতে পারেন। তবে ২০লাখ টাকাতে যে আমার হবেনা ।
কবির : কতো লাগবে বলো?
সেতু : কোনো টাকা লাগবেনা…
কবির অবাক হলো।
সেতু : অবাক হওয়ার কিছু নেই… আসলেই আমার কোনো টাকা লাগবেনা। আমি আপনার বউ হতে চাই…
কবির : সেতু…
কবির সেতুকে থাপ্পর মারলো।
কবির : ছোটলোক… ভাবলেন কি করে যে আমি আপনার মতো ১টা মেয়েকে বিয়ে করবো? যার না আছে বংশপরিচয় আর না আছে খান বাড়ির বউ হবার কোনো গুন…
সেতু : না নেই। তবুও আমি হতে চাই। যদি আপনি আমাকে বিয়ে না করেন তবে এই ভিডিওটা খবরের দেখাবে। বুঝেছেন ?
কবির সিডি প্লেয়ারটা ভেঙে ফেলল। ক্যাসেট টাও ভেঙে ফেলল।
সেতু : আপনি কি ভেবেছেন? ওটা ভেঙে ফেললেই আমি হেরে যাবো? আমার কাছে আরো ১টা আছে। ভাবুন… আপনাকে সময় দিলাম ভাবার… যদি আপনি আমাকে মেরে ফেলেন তবুও আপনার লাভ হবেনা। আমাকে মেরে ফেললে এই ভিডিও টেলিকাস্ট ঠিকই হবে…
কবির চলে গেলো। কোনো পথ খুজে পেলোনা। কতো উপায় খুজলো। কিন্তু ব্যার্থ হলো…ও কিছুতেই নিজের বাবার ওপর আচ আসতে দিবেনা। ও জানে যদি ওর বাবা খুনও করে থাকে তবে হয়তো সেটাও ঠিক। কিন্তু আদালত তো সেটা বুঝবেনা।
.
২দিনপর…
শমসের : গত কালকে তো ৩দিন শেষ হলো। আজকে তোমার ছেলে সিদ্ধান্ত শোনাবে।
রাবেয়া : হামমম। আর শোনো ছেলেটাকে বেশি বকাবকি কোরোনা। ছেলে বড় হয়েছে তো…
শমসের : যতোই বড় হোক… আমাদের কাছে তো সেই ছোট্টটিই আছে। কি বলো?
রাবেয়া : তা ঠিক…
শমসের : কবির এখনও অফিস থেকে ফিরছেনা কেন বলো তো ? জবাব দিতে হবে বলে নিরুদ্দ্যেশ হয়ে গেলো না তো…
রাবেয়া : কি যে বলো। চলে আ…
তখন রাবেয়ার নজর গেলো দরজার দিকে। যা দেখলো তাতে যেন ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।
শমসের : কি হলো তুম…
শমসেরও দরজার দিকে তাকালো। দেখলো। কবির দারিয়ে আছে। পাশে বধুবেশে ১টা মেয়ে …
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 27
writer : Mohona
.
কবিরের পাশে বধুবেশে ১টা মেয়ে দারিয়ে আছে …
শমসের কবিরের দিকে এগিয়ে গেলো ।
শমসের : সেতু এভাবে তোমার সাথে কেন? হামম?
কবির : …
শমসের : কিছু বলছি তো নাকি…
কবির : সেতু এখন আমার সসসস্ত্রী বববাবা …
শমসের : কি বললে তুমি? আরেকবার বলো..
কবির : …
শমসের : বলো
কবির : আমি কবিরকে বিয়ে করেছি…
শমসের : বেরিয়ে যাও আমার বাসা থেকে। আজকে থেকে তোমার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই…
কথাটা শুনেই সেতুর মাথায় যেন বাজ পরলো ।
তখন ওখানে তপন আর কনিকা উপস্থিত হলো । দেখে অবাক হলো।
তপন : কি হচ্ছে এখানে?
শমসের : দেখ… তোর আদরের প্রিয় ছাত্র বিয়ে করে এসে দারিয়েছে। তাও বংশপরিচয়হীন অফিসের ১জন স্টাফকে।
কথাটা শুনে যেন কনিকার দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেলো।
শমসের : বেরিয়ে যেতে বল ওকে এ বাড়ি থেকে…
তপন : আহ খান… থাম।
তপন কবিরের সামনে গিয়ে দারালো।
তপন : কবির… তোমার মতো ছেলের কাছে কিন্তু আমরা এটা আশা করিনি… তুমি যদি এই মেয়েটাকে ভালোবেসে থাকো তবে বলতে…
কবির : সসসরি স্যার । আসলে বাবা কোনোদিনও রাজি হবেনা। এটা ভেবেই আমি …
তপন : বাবাকে না বলতে বাট আমাকে তো বলতে পারতে…
কবির : সরি স্যার…
তপন : নাম কি আমাদের বউমার?
কবির : সেতু…
তপন : বউকে নিয়ে ভেতরে ঢোকো।
শমসের : তপন ও এ বাড়িতে ঢুকবেনা । ওর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
তপন : আহ খান… সবসময় মাথা খারাপ করতে নেই… আসো কবির। আসো বউমা…
২জন ঢুকলো। তপন বলল মা-বাবাকে সালাম করতে। কবির-সেতু শমসের-রাবেয়া-তপন কে সালাম করলো।
শমসের : তপন তুই…
তপন : খান। বাচ্চারা যখন বড় হয়ে যায় তখন বাবাদের এতো রাগ করতে হয়না। কবির… সেতুকে নিয়ে ওপরে যাও। আমি খানের সাথে কথা বলছি…
কবির সেতুকে নিয়ে ওপরে গেলো।
.
শমসের : তপন … আম চেয়েছিলাম যে কনামা আমার বাড়ির বউ হোক… আর ছেলেটা…
তপন : আমার মেয়েকে আমি ছিনিয়ে নেয়ার শিক্ষা দেইনি খান । বাবা-ছেলের সম্পর্ক ভেঙে … কারো ভালোবাসার সম্পর্ক ভেঙে কখনো আমার মেয়ে কখনো সুখী হবেনা।
শনসের : কনামার কথাটা ভেবেছিস?
কনিকা : আংকেল… কবির আমার বেস্টফ্রেন্ড ছিলো আছে আর থাকবে। আর তাছারাও কবির তো আমাকে কখনো কোনো কমিটমেন্ট দেয়নি… আর আমি কি তোমাদেরও মেয়ে নই…
তপন : বিয়ে যখন হয়েই গিয়েছে তখন আর কিছু করার নেই রে… মেনে নে… কনার ভাগ্যে কবির নেই। তাই ওদের বিয়ে হলোনা। আসলে ভাগ্যের ওপর কিছুই নেই…
কবির সিড়ির ওখান থেকে সবটা শুনলো।
কবির : কনার সাথে আমার বিয়ের কথা বলছিলো বাবা?
.
সেতু : কবির…
কবির : নাম নেবেনা তুমি আমার। ব্ল্যাকমেইল করে বউ হয়ে তো এসেছো … তবে মনে রাখবে এই দরজার বাহিরে তুমি আমার বউ। ভেতরে না…
সেতু : তুমি আমার ব্ল্যাকমেইলটাই দেখলে… আমার ভালোবাসাটা দেখলেনা…
কবির : ভালোবাসা ? হ্যাহ ভালোবাসানা। আমি বেশ বুঝতে পেরেছি… তুমি কেবল আমাদের সম্পত্তির জন্য ।
সেতু : না। তোমাকে ভালোবেসে করেছি…
কবির : ভালোবাসলে বলতে তুমি…
সেতু : কি বলতাম?? বললে কি তুমি আমাকে বিয়ে করতে? তোমার বাবা রাজী হতো? গরীবের ভালোবাসা পূর্নতা পায়না। আর তোমাক আমি খুব খুব খুব ভালোবাসি…
কবির : জাস্ট শাট আপ ।
বলেই কবির বেরিয়ে গেলো।
.
কনিকা একদম ভেঙে পরেছে। বাবার কাছে
লুকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বাবারা সবটা বোঝে।
কনিকা হসপিটাল থেকে বাসায় পৌছে ফ্রেশ হয়ে ছাদে বসে আছে। তখন তপন পেছন থেকে এসে মেয়ের কাধে হাত রাখলো।
কনিকা ঘুরে দেখে যে বাবা দারিয়ে আছে । হাতে ২কাপ কফি ।
কনিকা : আরে বাবা তুমি? বসো..
তপন বসলো। এরপর কফি বারিয়ে দিলো। কনিকা নিলো।
কনিকা : তুমি আবার কষ্ট করতে গেলে কেন?
তপন : মামনি…
কনিকা : হামমম।
তপন : আমি তোমার বাবা হলেও আছি মা হলেও আছি আর বন্ধু হলেও আছি… আমি আমার মনের কথা কাকে বলবো? তোমাকে। তুমি তোমার মনের কথা কাকে বলবে ? আমাকে তো … তাইনা? আমাদের সমস্যা তো আমাদেরকেই সল্ভ করতে হবে। তাইনা ?
কনিকা বাবার বুকে মাথা রাখলো । কান্নায় ভেঙে পরলো।
তপন : মামনি …
কনিকা : বাবা কবিরকে ভালোবাসি বাবা।। হয়তো আমারই ভুল ছিলো। কখনোই বলিনি… কখনো না.. এই টপিক নিয়েই কখনো কোনো কথা বলিনি… হয়তো তাহলে আজকে এতো কষ্ট হতোনা …
তপন : হামম। তবে মামনি… তুমি তো আমার স্ট্রং মামনি … তাইনা?
দিন কাটতে লাগলো । কনিকাও নিজেকে সামলে নিয়েছে। তবে বিয়ে করতে কিছুতেই রাজী হচ্ছেনা …
.
বেশকিছুদিনপর…
তপন অনেক অসুস্থ। হার্ট অ্যাটাক করেছে । হসপিটালে অ্যাডমিট। যথেষ্ট অসুস্থ । ডক্টররা কিছুই বলতে পারছেনা।
কনিকা বাহিরে দারিয়ে কাদছে । তপন শমসেরের সাথে কথা বলতে চায়। তাই শমসের ভেতরে ঢুকে কথা বলছে।
কবির : কান্না কোরোনা। স্যার ঠিক হয়ে যাবে। আর তুমি এমন করে ভেঙে পরলে স্যারকে কে সামলাবে?
কনিকা : …
কবির : তুমি না স্ট্রং গার্ল …
কনিকা : বাবা ঠিক হয়ে যাবে তো কবির ?
কবির : হামমম। তুমি একটু বসো। আমি আসছি .. স্যারের সাথে দেখা করে…
কনিকা : হামম।
তপন : খান… আমি জানি তুই আমার মেয়েটাকে খুব আদর করিস… কিন্তু তবুও…. বাবার মন তো…
শমসের : তুই ঠিক হয়ে যাবি। এতোটা ভেঙে পরলে কি হবে?
তপন : সময় বেশি নেইরে আমার হাতে। তবে আফসোস ১টাই যে… একমাত্র মেয়েটারও বিয়ে যেতে পারলাম না… কি জবাব দিবো স্রষ্টাকে ? মেয়েটা রাজিও হলোনা…
শমসের : সব দোষ আমার ছেলেটাররে… ওর জন্য সব…
তপন : নারে। সবটাই ভাগ্য। এখন কনা কবিরকে ভালোবেসে ফেললে কি হবে? কবির তো বাসেনি… কোনো প্রতিশ্রুতিও তো দেয়নি… আসলে মেয়ে মানুষ তো তাই যাকে ১বার মনে জায়গা দেয় তাকে ভুলতে পারেনা।
শমসের : তুই যতোই কবিরের সাপোর্ট করিসনা কেন… আমি জানি কবিরের জন্যই সবটা হয়েছে। মেয়ের চিন্তায় চিন্তায়ই… তোর এই দশা …
২বন্ধুর সব কথা কবির শুনে ফেলল । ও তপনকে ভীষন ভালোবাসে। শ্রদ্ধা করে। আর কনিকাকেও। হয়তো প্রেমিক হিসাবে না। বন্ধু হিসাবে… নিজের ওপর রাগ উঠলো
অনেক ভেবে ও কনিকার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো কাজী অফিসে।।
কনিকা : তুমি এখানে কেন নিয়ে এলে?
কবির : বিয়ে করতে…
কনিকা : তুমি কি পাগল হয়েছো?
কবির : কনা… স্যারের জন্য। প্লিজ।
কনিকা : কোনোদিনও সম্ভব না। কোনোদিনও না… তুমি বিবাহিত…
কবির : আমি কিছু জানিনা । আমি কেবল জানি স্যারকে আমি এভাবে দেখতে পারবোনা… এই অপরাধবোধ আমাকে মেরে ফেলবে…
কবির জোর করেই কনিকাকে বিয়ে করলো। অনেক ড্রামা হলো। সেতু তুলকালাম শুরু করলো।
কবিরের সামনে পুরোপুরি নিজের খারাপ রূপ প্রকাশ করলো।
.
৬মাসপর…
তপন মারা গেলো। কনিকা একেবারে ভেঙে পরলো। সেতু মা হতে চলেছে। কনিকার অবস্থা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। ডক্টর বলেছে যে হাওয়াবদল করতে। তাই এক প্রকার সেতুর লাথে যুদ্ধ করেই কবির কনিকাকে নিয়ে হাওয়াবদল করতে গেলো। মোটামোটি সুস্থ হলো। ২০-২৫দিন পর ফিরে এলো …
কবির কনিকাকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু সেতুর জন্য কিছু করতে পারেনা।
নিরার জন্ম হলো। কবির জানে এটা ওর মেয়ে না… সোহেলের মেয়ে। কিন্তু কিছু করার নেই। নিরার নাম রাখতে চেয়েছিলো মেরিন সেতু রাজী হয়নি… ও রাখলো নিরা।
এরই মধ্যে সবাই জানতে পারলো যে কনিকা মা হতে চলেছে।
সেতু : বাচ্চা নষ্ট করাে কবির…
কবির : না।
সেতু : তোমাকে করাতে হবেই ।
কবির : না বলেছি না। ও আমার সন্তান ।
সেতু : তাহলে তুমি করবেনা তো?
কবির : না।
সেতু : তাহলে আমি এই ভিডিও নিয়ে পুলিশের কাছে যাবো ।
কবির : যাও। আমি আমার বাবার জন্য আমার সন্তানের জীবন কেরে নিতে পারবোনা।
সেতু ভাবলো যে এই অস্র এখন কাজে লাগবেনা।
সেতু : বেশ সন্তানকে আনতে চাইছো আনো। তবে।। তবে তুমি কনিকা আর তোমার ওই সন্তানের থেকে দূরে থাকবে।
কবির : ওরা আমার দায়িত্ব।
সেতু : দেখো কনিকাকে তুমি আমার অনুমতি নিয়ে বিয়ে করোনি। তোমাদের বিয়ে কিন্তু বৈধ নয়। যদি আমি আদালতে যাই… তখন কি কি হতে পারে তা তুমি ভালোমতোই জানো …
কবির : তুমি এতো খারাপ?
সেতু : হামমম। আমার কথা না মানলে তোমার বাবা , তোমার বেস্টফ্রেন্ড আর তোমার অনাগত সন্তান … শেষ।
কবির : বেশ যাবোনা
সেতু : এভাবে বললে হবেনা । গ্যারান্টি লাগবে।
কবির : মানে?
সেতু : কনট্র্যাক্ট পেপার বানাবো। আর সেটাতে তুমি সিগনেচার করবে।
কবির : বেশ করবো…
মেরিন পৃথিবীতে এলো। কনিকা মেরিন নাম রাখলো।
.
৫বছরপর…
শমসের আর কবির অফিসের কাজে ঢাকার বাহিরে গিয়েছে। বাসায় রাবেয়া-সেতু-কনিকা-নিরা-মেরিন…
এরমধ্যেই রাবেয়ার শরীরটা খারাপ করলো। দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। এই রাতের বেলা কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা কনিকা । সেতুও বসে আছে রাবেয়ার পাশে। সেতু অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন করেছে। তবে জ্যামে নাকি আটকে আছে। তাই কনিকা ভাবলো যে অ্যাম্বুলেন্সের আশায় না থেকে গাড়িতে করেই রাবেয়াকে নিয়ে যাওয়ার।
কনিকা কবিরকে ফোন করলো। সবটা বলল।
কনিকা : আমি মাকে গাড়িতে করেই হসপিটালে নিয়ে যাই?
কবির : না না।। এটা অনেক রিস্কি । অ্যাম্বুলেন্সের অপেক্ষা করো।
কনিকা : কিন্তু…
কবির : কোনো কিন্তু না। আমি আর বাবাও আসছি।
কবির রেখে দিলো। কনিকারও কিছু করার নেই।
অ্যাম্বুলেন্স এখনো এসে পৌছায়নি। আরো নাকি সময় লাগবে। এদিকে রাবেয়ার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই রিস্ক নিয়েই কনিকা ঠিক করলো গাড়িতে করে রাবেয়াকে হসপিটালে নেয়ার। তবে দুর্ভাগ্যবশত রাবেয়ে পথেই মারা গেলো।
কবির খুব অভিমান করলো। এতোদিন সেতুর চাপে পরেই বাজে ব্যাবহার করেছে।
তবে ইদানীং অভিমানের জন্য ।
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো।
৪-৫বছর কেটে গেলো । ১দিন কবির জানতে পারলো যে সেতু কনিকা-মেরিনের বিরুদ্ধে কোনো প্ল্যান করছে । কিন্তু কি সেটা জানেনা। তবে এটা জানে যে কনিকা আর মেরিনের জানের ঝুকি আছে ।। তাই কবির উপায় না পেয়ে কনিকার সাথে এমন ব্যাবহার করলো যে কনিকা রাগ করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বাবার বাড়ি চলে যায় । আর যাওয়ার আগে বলে যায় যে ও এ বাড়িতে সেদিনই ঢুকবে যেদিন কবির নিয়ে আসবে ।
সেদিন বৃষ্টির রাতে শমসেরের কথা কবির পুরোটা শুনেইনি। যাও শুনতো দেখে সেতু দারিয়ে। তাই না শুনেই বেরিয়ে যায়।
যখন সেতুর আড়াল হলো। তখন কি হয়েছে জানার জন্য কবির ছুটে যায়। গিয়ে দেখে শমসের ওখানে । কবির কিছুই বুঝতে পারেনা ঘটনা কি ঘটেছিলো। আজও জানেনা। কেবল জানে যে কোনো ১টা বিপদ এসেছিলো।
মেরিনের বয়স যখন ১৭ তখন নিলয় মেরিনের সাথে অসভ্যতামী করে। মেরিন ওর মাথায় ১টা বারি মেরেছিলো। সেদিন থেকে ভয়ংকরী মেরিনের পথ চলা শুরু হয়।
শমসের নীড়কে সেই বৃষ্টির রহস্যের কথাও বলল।
]
.
সবটা শুনে নীড়ের চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। আজকে নীড়ের মনে হচ্ছে যে মেরিন কোনো ভুলই করেনি। ও যা করেছে সবই ঠিক করেছে।
দাদুভাই : ছেলেদের কাদলে মানায় না দাদুভাই…
নীড় : না দাদুভাই কাদছিনা… ভাবছি। কখনো কখনো কাউকে চিনতে আমরা কতো ভুল করে ফেলি … সবকিছুরই যে ২টা দিক থাকে সেটা ভুলে যাই…
দাদুভাই : হামমম। আর তাই অপরাধ প্রমানিত না হলে কাউকে অপরাধী ঘোষনা নেয়া ঠিক নয়।
নীড় : আচ্ছা দাদুভাই মেরিন তো ভুলের শাস্তি দেয়। তাহলে এদের মতো অমানুষদের কেন বাচিয়ে রেখেছে?
দাদুভাই : দিদিভাই মনে করে যে … ওরা যতোটা না দিদিভাইয়ের অপরাধী তারথেকে অধিক গুন বেশি কনামায়ের অপরাধী … তাই এতোদিন ধরে মায়ের সুস্থ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
নীড় : কিন্তু আমার কেন যেন মনে হচ্ছে যে আম্মু ঠিক হলে ওই নরপশুগুলো মুক্তি পেয়ে যাবে।
দাদুভাই : কেন? এমন কেন লাগছে?
নীড় : আমার মনে হয় আম্মুর মনটা খুবই নরম। তাই সে তাদেরকে ক্ষমা করে দিবে। আর মেরিনকে ওদেরকে শাস্তি দিতে দিবেনা। হয়তো আইনী কোনো ব্যাবস্থা নিবে। আর মেরিনের পক্ষে কোনোদিনও আম্মুর কথার অবাধ্য হওয়া সম্ভব নয়। এতোদিনে এটা বুঝে গিয়েছি।
দাদুভাই : হামমম হয়তো।
.
রাতে…
মেরিন ঘুমের ভান ধরে আছে। আর নীড় মেরিনকে দেখছে।
নীড় মনে মনে : কালকে অনেক বড় ১টা দিন জান… হয়তো একটু রাগ করবে কিন্তু অনেকটা প্রশান্তি পাবে। আমি জানি… তোমার প্রতিশোধ কেবল তোমার নয় আমারও… হামম আমারও…
.
পরদিন…
মেরিন : হ্যালো…
জন : ম্যাম।
মেরিন : হামমম।
জন : ম্যাম বন্দীমহল থেকে মনির আর হসপিটাল থেকে নিলয় উধাও।
মেরিন : হুয়াট?
জন : জী ম্যাম। ওরা কিভাবে বেরিয়েছে? কোথায় দিয়ে পালিয়েছে কোনো ভাবেই জানতে পারছিনা। আর কোথাও ওদের সন্ধানও পাচ্ছিনা।
মেরিন : ফাইন্ড দেম জন। ফাইন্ড দেম। আমি জীবীত মনির-নিলয় চাই। যেভাবেই হোক…
জন : সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ম্যাম….
মেরিন বন্দীমহলে গেলো। ওখানটা দেখতে লাগলো। ওখানে আপেলের বারতি অংশ দেখতে পেলো । যার মানে এখানে কেউ খেয়েছে। মনির এমন অবস্থায় ছিলোনা যে পালাবে। ওকে কেউ তুলে নিয়ে গিয়েছে। মেরিন হসপিটালে গেলো। সেখানে ১টা জুতোর ছাপ দেখতে পেলো।
কিছু ১টা ভেবে মেরিন মোবাইলে চেক করে দেখলো নীড় কোথায় ? নীড়ের গলায় যে লকেটটা পরিয়েছিলো তাতে ট্র্যাকার লাগানো ছিলো।
মেরিন নীড়ের কাছে পৌছালো। দেখলো ওর সন্দেহই ঠিক। ওই মনির-নিলয়কে নিয়ে গিয়েছে। তবে একটু অবাক হলো ওদের অবস্থা দেখে। ও ভেবেছিলো যে নীড় ২জনকে ওর হাত থেকে বাচাতে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখানে এসে দেখতে পেলোযে ওদের শরীরের অর্ধেকটা মাটির নিতে আর বাকীটা ওপরে…
নীড় : আমি জানতাম যে তুমি ঠিকই পৌছে যাবে আমার কাছে। যেভাবেই হোক…
মেরিন পাশ ফিরলো। দেখলো নীড় দারিয়ে আছে। কালো পোশাক পরে…
.
চলবে…
ঘৃনার মেরিন 4
part : 28
writer : Mohona
.
নীড় কালো পোশাক পরে দারিয়ে আছে।
মেরিন : ওদেরকে এখানে কেন ধরে এনেছেন?
নীড় : অনাহারীকে আহার করাতে।
মেরিন : মানে?
নীড় : এখনই জেনে যাবে।
মেরিন : আমি কিছু জানতে চাইনা। আপনি ওদেরকে ছেরে দিন।
নীড় : পারবোনা গো। ওদের ২জনকে ছেরে দিলে ওদের কি হবে গো?
মেরিন : কাদের?
নীড় : আমার হাতের দিকে লক্ষ্য রাখো… ওই যে ওদের…
মেরিন তাকালো। দেখলো ৭টা কুকুর। দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে যথেষ্ট হিংস্র। সেই সাথে ক্ষুধার্তও ।
মেরিন : এসবের মানে কি?
নীড় মেরিনের কাধে হাত রাখলো । মেরিন সরিয়ে দিতে চাইলে নীড় শক্ত করে ধরে রাখলো ।
নীড় : রিল্যাক্স মাই জানপাখি বনপাখি… রিল্যাক্স।
মেরিন : ডোন্ট কল মি বনপাখি।
নীড় : আমি তো ডাকবোই। ব…ন…পা…খি… 📣… যাইহোক কোথায় ছিলাম যেন? ও হ্যা মনে পরেছে। আসলেকি এই কুকুর ৭টা না ভীষন হিংস্র। এরা মানুষের মাংস খেতে খুব ভালোবাসে। ১বার ভেবেছিলাম এদেরকে বাঘের পেটে ঢোকাবো। পরে ভাবলাম যে এদের এতো যোগ্যতা নেই যে এরা বাঘের পেটে যাবে। তাই আমি এই ৭জনের ব্যাবস্থা করেছি। তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। জাস্ট কয়েক মিনিটের মধ্যে এদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে ।
মেরিন : ছারুন এদের নীড়।
নীড়: কিন্তু কেন? ছারবো কেন? ওদেরকে আমি এভাবেই ধ্বংস করতে চাই। এই ছেরে দাও ওদের…
মেরিন : না… না । আপনি মনির আর নিলয়কে ছেরে দিন…
নীড় : ছেরেই তো দিয়েছি।
মেরিন : নীড় আপনি ওদের কোনো ক্ষতি করবেন না… ওরা এখন মরতে পারেনা। এভাবে মরতে পারেনা। ওদেরকে আমি মারবো।
নীড় : নো। হাত-পা কাটা… গুলি করা কমন। বাট দ্যাট ইজ আনকমন … এর খেকে যন্ত্রনার হয়তো আর কিছুই নেই । দে ডিজার্ভ দ্যাট…
মেরিন : ছারুন আমাকে…
নীড় : না…
নীড় মেরিনের ১হাত ধরেই রাখলো।
.
মেরিন চাইছেনা ওই বোবা প্রানীগুলোর ওপর গুলি ছুরতে। ঠিক করলো ওখানে ১টা ফাকা গুলি করবে। এতে হয়তো কুকুরগুলো পালিয়ে যাবে।
মেরিন গানটা বের করে ট্রিগার প্রেস করে অবাক হয়ে গেলো । বুঝতে পারলো বুলেট নেই।
নীড় : চলছেনা বুঝি? চলবে কি করে? বুলেটস গুলো যে আমার হাতে…
মেরিনের ভীষন রাগ হচ্ছে। হয়তো ১জনের শীকার অন্যকেউ কেরে নিলে এমনই লাগে। দেখতে দেখতে বাবা-ছেলে বিলীন হয়ে গেলো। হয়তো এমন নৃশংস মৃত্যু কারোই হয়না।।।
নীড় মেরিনের হাতটা ছেরে দিলো। মেরিন রাগের চোটে ফেটে যাচ্ছে।
নীড় : কেমন লাগলো সারপ্রাইজ গিফ্টটা?
মেরিন নীড়কে থাপ্পর মারলো। এরপর নীড়ের কলার ধরলো।
মেরিন : কেন ? কেন করলেন আপনি এমন? কেন আমার শীকার আপনি করলেন ? কেন কেন কেন…
নীড় : কারন তুমি আমি যে অভিন্ন। যা তোমার তা আমার। যা আমার তা তোমার।
মেরিন : না মোটেও না। আমার প্রতিশোধ কখনো আপনার হতে পারেনা । এটা কেবল আমার আমার আমার। কোন অধিকারে আপনি এমনটা করলেন? আপনার কোনো অধিকার নেই ।
নীড় কিছু না বলে মেরিনকে কিস করে বসলো।
নীড় : এই অধিকারে আমি এমনটা করেছি…. বুঝেছো?
মেরিন : ইউ হ্যাভ টু পে ফর দিস…
মেরিন নীড়কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
ফুল স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে। তখন পাশ থেকে পেলো
নীড় : বললে না তো সারপ্রাইজটা কেমন লাগলো?
মেরিন পাশ ফিরে দেখে ওর গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে নীড়ের গাড়ি চলছে। মেরিন রেগে ওর দিকে তাকালো।
নীড় : ওভাবে তাকিও না গো ।মরে যাবো…
মেরিন হুট করেই ব্রেক মারলো। নীড় বুঝতে পারেনি মেরিন এমনটা করবে। মেরিন ব্রেক মেরেই গাড়িটা ঘুরিয়ে নিলো। স্পিডটা আরো বারিয়ে দিলো।
নীড় গাড়ি ঘুরাতে ঘুরাতে খানিকটা পিছে পরে গেলো। আর পেলোনা।
নীড় : কতোদূর পালাবে তুমি বনপাখি? ফিরবে তো তুমি তোমার নীড়েই…
মেরিন ওর শাস্তি মহলের সবকিছু ভেঙে ফেলল।
.
বিকালে ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরলো। বাসায় ফিরে আরেকদফা অবাক হলো। সারাবাড়ি সাজানো। যেন কোনো উৎসব ।
নীড়-নীলিমা-নিহাল হাত ধরে নাচছে। আর গাইছে।
‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে’…
মেরিন কিছুই বুঝতে পারলোনা যে ঘটনাটা কি?
নীলিমা : হেই মেরিন… চলে আয় চলে আয়… আজকে এই সেলিব্রেশনে তুই বাদ যাবি কেন? আর সেলিব্রেশনটা তো তোরই…
মেরিন : মানে?
নিহাল : মানে আজকে তোমার জীবনের কালো অধ্যায় থেকে ২টি কলঙ্ক বিতারিত হয়ে গিয়েছে …
মেরিন কিছু না বলে ওপরে চলে গেলো।
আসলে ওরা ৩জন মিলে মেরিনকে সেই সময় সেই হাসি খুশি পরিবার ফেরত দিতে চাইছে যেটা ও হারিয়ে ফেলেছে…
আইডিয়াটা নীড়েরই… ও ওর মা-বাবাকে সবটা বলে দিয়েছে। সবটা জেনে নিহালেরও আফসোস হলো… আজকে বুঝতে পারলো মেরিনের প্রতিটা আচরনের কারন। সবাইকে অবিশ্বাস করার কারন। সবাইকে ঘৃণা করার কারন। হয়তো অন্যকেউ হলে জীবনের সাথে হার মেনে নিজের জীবনটাই দিয়ে দিতো….
.
৩দিনপর…
মেরিন : দাদুভাই…
দাদুভাই : আরে দিদিভাইযে… আসো।
মেরিন : না…
দাদুভাই : না? তোমাকে এমন লাগছে কেন বলেছো।
মেরিন : বিকজ ইউ হার্ট মি ফর দ্যা ফার্স্ট টাইম…
দাদুভাই : দিদিভাই… নীড়ের জানার অধিকার আছে।
মেরিন : না উনার কোনো অধিকার নেই…
দাদুভাই : অমন করে বলতে নেই। ও তোমার স্বামী … ওর জানার অধিকার আছে। ও তোমাকে ভালোবাসে…
মেরিন : লাগবেনা আমার কারো ভালোবাসা। আমি ঘৃণাতেই সন্তুষ্টু । তুমি ঠিক করোনি দাদুভাই… একদম ঠিক করোনি…
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : প্রতিশোধের খেলা যখন শুরু হয়েই গিয়েছে তখন তখন তখন।।। জুলহাসকেও বা বাচিয়ে রেখে লাভ কি… সোহেলকেও বা বাচিয়ে রেখে লাভ কি? এই ২জন মানুষ সেতুর খুব পছন্দের । প্রানভ্রমর যাকে বলে। তাইনা মিস্টার খান…
কবির : ইয়েস মাই চাইল্ড।ইয়েস…
মেরিন : সবসময় দাদুভাইয়ের ফাসির ভয় দেখিয়েছেনা আপনাকে? এবার ওর চোখের সামনে ওর বৃদ্ধ বাবা ফাসিতে ঝুলবে। জুলহাস দ্যা মাস্টার মাইন্ড…
কবির : ওকে কি তুমি তোমার শাস্তি মহলে শাস্তি দিবে?
মেরিন : দেখি মৃত্যু কোথায় আছে ওর… তবে ঠিক ২৫ঘন্টা পরই হবে। সেতুর চোখের সামনেই হবে। ঠিকানা আপনাকে জানিয়ে দিবো। আসছি।
কবির : মামনি…
মেরিন : ডোন্ট কল মি দ্যাট মিস্টার খান।
কবির : সরি… এখনও কি ১টা বার আমাকে বাবা বলে ডাকা যায়না?
মেরিন কবিরের দিকে ঘাড় কাত করে
বলল : বাবার দায়িত্ব ১৮বছর বয়স থেকে শুরু হয়না… বাবার দায়িত্ব শুরু হয় ভ্রুনকাল থেকে। যেই ১৮টা বছর কেরে নিয়েছেন আমার সেই ১৮বছর ফেরাতে পারবেননা। যতোই বাধ্যতা থাকুক তবুও আপনি আমার আম্মুর মনে যে দাগ কেটেছেন সেটা ক্ষমার অযোগ্য । যদি আমার আম্মু সুস্থ হওয়ার পর আপনাকে ক্ষমা করে তখন ভেবে দেখবো আপনাকে বাবা বলে ডাকা যায় কি না…
বলেই মেরিন চলে নিলো।
কবির : আচ্ছা বাবা বলে নাই ডাকলে… এটাতো বলো তোমার কি হয়েছে? ২দিন দেখলাম তুমি বুকে হাত দিয়ে বসে ছিলে। ধীরে ধীরে হাত বুলাচ্ছিলে। কি হয়েছে তোমার? তুমি ঠিক আছো তো?
মেরিন : মেরিন বন্যা কখনো কাউকে জবাব দেয়না মিস্টার খান… আপনাকে তো একদমই না। নিজের লিমিটে থাকুন।
মেরিন চলে গেলো। কবিরের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো।
( কাহিনিটা কি বলো তো সবাই? কবির-মেরিন একসাথে? ভুল লিখলাম? না ঠিকই লিখেছি। )
.
{{{
নিলয়ের অসভ্যতামীর কারনে যখন মেরিন নিলয়ের মাথায় আঘাত করে তখন নিলয়ের মাথা থেকে গলগল করে রক্ত পরতে থাকে। নিলয়ের চিৎকারে সবাই ছুটে আসে । দেখে মেরিনের হাতে ফ্লাওয়ার ভাস… নিলয়ের মাথা থেকে রক্ত পরছে। দাদুভাই মেরিনের কাছে ছুটে গেলো।
দাদুভাই : কি হয়েছে দিদিভাই?
মেরিন : ও আমার সাথে অসভ্যতামী করতে চাইছিলো। আর তাই আমি ওকে শিক্ষা দিয়েছি।
সেতু : কি করে ফেলেছে আমার নিলয়টার মাথা ফাটিয়ে। তোর সাহস তো কম না। তোকে আমি…
মেরিন ফ্লাওয়ার ভাসটা সেতুর পা বরাবর ছুরে মারলো।
মেরিন : যা করেছেন এতো তা ভুলে যান… এখন থেকে নতুন আমিকে দেখবেন…
সেতু : তু…
দাদুভাই : সেতু ওকে এখনই এখান থেকে বের করে দাও। এ বাড়ির ত্রিসীমানায় যেন আর না দেখি…
সেতু : কিন্তু বা…
দাদুভাই : এ বাড়িতে আমার কথাই শেষ কথা…
সেতু নিলয়কে ধরে ধরে বের করলো । কবির মেয়ের চোখের তেজ দেখছে। ও চাইতো মেরিন এমন হোক। ও চাইতো সেতুর অত্যাচারের প্রতিবাদ করুক। তাই এতোদিন ধরে আড়ালে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে সেতুকে দিয়ে অনেক বাজে ব্যাবহার করিয়েছে। যেন মেরিন কিছু বলে বা করে। কিন্তু মেরিন করেনি। নিজেই কষ্ট পেয়েছে। কবির নিজেও অনেক কথা শুনিয়েছে । তবুও মেরিন কিছু বলেনি।
কবির ভাবতো মেরিন ওকে ঘৃণা করুক তাতে ওর দুঃখ নেই। কিন্তু নিজে শক্ত হোক। যেন এই সেতু মেরিনের সামনে মাথা তুলে দারাতে না পারে… তবে মেরিন নিজেই কষ্ট পেতো। আর তাই মেয়ের এই রূপে কবিরের আনন্দ হচ্ছে ।
দাদুভাই : কবির… এখান থেকে যাও।
কবির বেরিয়ে গেলো। তবে আড়ালে দারিয়ে রইলো ।
.
দিদিভাই : নিজের মধ্যে যে আগুনটা সৃষ্টি করেছো সেই আগুনটা নিভতে দিওনা। প্রয়োজন হলে নিজেকে আগুন বানিয়ে ফেলবে। তবুও এই আগুন নিভতে দিবেনা। এরা সবাই তোমাকে ঘৃণা করে তাইনা? এখন তুমি এদের দেখিয়ে দিবে ঘৃণা কি? ঘৃণার মেরিন হতে হবে তোমাকে। যার কোনো উইকনেস নেই…. বুঝেছো?
মেরিন : হামমম দাদুভাই…
দাদুভাই : কাল-পরশুই আমি তোমাকে ক্যারাটে স্কুলে অ্যাডমিট করাবো।
.
৫দিনপর…
মেরিন নিশানা লাগানোর অনুশীলন করছে। কিন্তু পারছেই না… বারবার ব্যার্থ হচ্ছে। তাই সবকিছু ছুরে ফেলে হাটুতে মুখ গুজে বসে রইলো। তখন শুনতে
পেলো : এখন তোমার নিশানা ঠিক জায়গায় লাগবে…
মেরিন মাথা তুলে কবিরকে দেখলো। দেখে কবির নিজের কপালে লাল রং দিয়ে গোল করে মার্ক করে ওর মুখোমুখি দারিয়ে আছে ।
মেরিন : আপনি? আপনি এখানে কি করে এলেন? বেরিয়ে যান।
কবির : বেরিয়ে তো যাবোই। তার আগে দেখবোনা তোমার নিশানা কতোটা কাচা…
মেরিন : মোটেও কাচা নয়…
কবির : দেন প্রুভ ইট… আমার কপালের এই জায়গাটাতে লাগাও… পরপর ৩টা… তাহলে বুঝবো…
মেরিন রেগে গিয়ে লাগালো । আর ঠিকঠিক লাগলো।
মেরিন : প্রুভ পেয়েছেন?
কবির : হামমম পেয়েছি। এর বিনিময়ে আমি তোমাকে কিছু দিতে চাই …
মেরিন : আমি আপনার থেকে কিছুই চাইনা…
কবির : নিজের দাদুভাইয়ের জন্য দেখো।
মেরিন : মানে?
কবির : ১মিনিট…
কবির ল্যাপটপে দাদুভাইয়ের সেই ভিডিওটা প্লে করলো। মেরিন দেখে অবাক হলো ।
মেরিন : এটা দিয়ে নিশ্চয়ই আপনি দাদুভাইকে ব্ল্যাকমেইল করবেন ?
কবির : না। এটা দিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে।
মেরিন : মানে?
কবির সবটা বলল।
মেরিন : বাহ বেশ মজাদার কাহিনিতো।
কবির : বিশ্বাস করাটা তোমার ব্যাপার। তবে আমি আমার মৃত মায়ের নামে শপথ করে বলছি যে আমি ১বিন্দুও মিথ্যা বলিনি…
মেরিন : আমার আম্মুকে নাইবা করতেন বিয়ে। নানাভাইকে বাচাতে গিয়ে তো আমার আম্মুকে হাজার মৃত্যু দিলেন। আর আজকে কেন এমন কিছু করছেন? বুঝেছি। যেন আপনি গুডলিস্টে থাকতে পারেন…
কবির : না। যেন তোমাকে ঘৃণার মেরিন হতে সাহায্য করতে পারি। মনে রাখবে ঘৃণাই সব থেকে বড় সত্য। ঘৃণাকে যদি নিজের মধ্যে ধারন করতে পারো তবেই তুমি সফল হবে। পরাজয়ের সাথে অপরিচিত থাকবে…
মেরিন : ঘৃণার পথ পারি দিতে আমার আপনাকে প্রয়োজন নেই।
কবির : কিন্তু আমার তোমাকে প্রয়োজন আছে। শিক্ষকের সম্মান পিতা-মাতার পরই। কিন্তু মনে রেখো পিতার কাছে যে শিক্ষা পাওয়া যায় সে শিক্ষা ১০জনের কাছেও তুমি পাবেনা। আমি কেবল ঘৃণার পথে তোমার পথ নির্দেশক হতে চাই। সেতু কেমন তা আমি জানি। বাবা নয়। তাই তোমার আমাকে আপাদত প্রয়োজন। নিজেকে শক্ত বানাতে। যখন ঘৃণাকে ধারন করবে তখন না হয় আমাকে শাস্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় রেখো। তবে বাবাকে এসব বলোনা প্লিজ…
মেরিন : …
কবির : শোনো তুমি বন্যা। নিজেকে আগুন বানাবেনা । কারন আগুনে পুরলে ছাই অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু পানি গ্রাস করলে ছাইও অবশিষ্ট থাকেনা। ১৬ আনাই বিলীন হয়ে যায় ।
মেরিনকে সকল কিছুতে পারদর্শী করে তোলাতে ৬০% অবদান কবিরের। তবে তা কেউ জানেনা। আজও মেরিন কবিরকে বাবা বলে ডাকেনি। কবির আজও ওর অপরাধী ।
নিরার যেদিন হাত-পা ভাঙা হয় সেদিন কবির হসপিটালে রেগেরুগে যায় মেরিনকে এটা বলতে যে নিরার হাত-পা কেন ভাঙা হলো? হাত অথবা পা কেটে দিলে সেতুর বেশি কষ্ট হতো।
আর নীলিমা… নীলিমা মেরিনের ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলো। তবে কবির ওর সত্যটা নীলিমাকে জানায়। আর নীলিমা মেরিনকে আপন করে নেয় । এই বিষয়টা মেরিন জানেনা।
}}}
.
নীড় মেরিনকে দেখছে । কিছু ১টা চলছে মেরিনের মাথায় । কিন্তু কি তা ধরতে পারছেনা।
নীড় : এইযে অতৃপ্ত আত্মা…
.
চলবে…
ঘৃনার মেরিন 4
part : 29
writer : Mohona
.
নীড় : এইযে অতৃপ্ত আত্মা …
মেরিন : …
নীড় : তুমি কি চুপ থাকার প্রতিজ্ঞা করেছো?
মেরিন : আমার সবকাজেই আপনার সমস্যা ?
নীড় : না সমস্যা না। বাট আমার মনে হচ্ছে তােমার ওই ভয়ানক মাথায় ভয়ংকর কিছু চলছে তাই ভাবছি…
মেরিন : আমাকে নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আপনি আপনার বনপাখিকে নিয়ে ভাবুন…
নীড় : তাইতো ভাবছি।
মেরিন : আমি আপনার বনপাখি নই। তাই আমাকে নিয়ে ভাবারও প্রয়োজন নেই। আপনি আপনার বনপাখির কথা ভাবুন… খুব শীঘ্রই সে পিতৃহারা হতে চলেছে …
কথাটা শুনে নীড় বেশি অবাক হয়ে গেলো। নিরা পিতৃহারা হবে… এরমানে মেরিন কবিরকে মেরে ফেলবে…
নীড় : মেরিন…
মেরিন : এমন ডাকের মানে কি?
নীড় : কবির বাবা তো কেবল নিরার বাবা নয়। তোমারও । হ্যা তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছে ঠিকই । কিন্তু পিতৃহত্যার মতো অসহনীয় পাপটা তুমি কোরোনা…
মেরিন বাকা হাসি দিলো নীড়ের না বোঝাতে …
নীড় : তুমি একদম এভাবে হাসি দিবেনা… এটা বড়ই বিপদজনক।
মেরিন : আমি যখন বলেছি যে নিরার বাবাকে মারবো। তখন মারবো… আপনারও ক্ষমতা নেই ়আমাকে আটকানোর …
বলেই মেরিন শুয়ে পরলো।
নীড় মনে মনে : এমনভাবে নিরার বাবা নিরার বাবা বলছে যেন নিরার বাবা আর ওর বাবা আলাদা… সত্যিই এমনটা নয়তো? বাবাকে তো মেরিন মিস্টার খান ডাকে… তাহলে কি? ছিঃছিঃ… এগুলো ভাবাও পাপ। সেতু আন্টি তো বাবাকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলো… তবে কাল সকালেই আমি কবির বাবাকে এমন সুরক্ষিত জায়গায় রাখবো যে কেউ জানতে পারবেনা যে বাবা কোথায় আছে?
.
সকাল হতেই নীড় খান বাড়িতে যেয়ে কবিরকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো। গোপনা ১টা জায়গায় নিয়ে গেলো ।
কবির : তুমি আমাকে এখানে কেন নিয়ে এলে?
নীড় : মেরিনের হাত থেকে বাচাতে…
কবির : মেরিনের হাত থেকে বাচাতে???
নীড় : এতো অবাক হওয়ার কিছুই নেই… কারন আপনি কোনো মহান বাবা নন যে মেরিন আপনাকে মারতে চাইবেনা। জায়েজ আছে আপনাকে মারতে চাওয়া। আপনাকে নিজের বাবা বলেই ডাকেনা। ও ঠিক করেছে যে নিরার বাবাকে মারবে। সো আপনার জীবন আজকে বিপদে। নিজের ওপরই রাগ লাগছে যে কেন আপনাকে রক্ষা করছি। কিন্তু আপনি তো মেরিনের বাবা… তাই এতো বড় কলঙ্কটা আমি ওর ওপর লাগতে দিতে পারিনা… আর তাই বাধ্য হয়ে আপনাকে রক্ষা করছি…
কবির : যদি ভাগ্যে মৃত্যু থাকে তবে হবে। কিন্তু আজকে আমার ১টা জায়গায় যাওয়া ভীষনভাবে প্রয়োজন… তাই আমাকে যেতে দাও…
নীড় : নো মিনস নো…
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো। কবিরকে বন্ধ করে…
কবির : ধ্যাত। এখন আমি বের কি করে হবো? মেরিন তো আজকে জুলহাস আর সোহেলকে শেষ করবেই করবে… মোবাইলটাও তো নীড়ের কাছে… ওই ২জন অপরাধীর শাস্তি আর সেতুর আহাজারী দেখার জন্য যে কবে থেকে অপেক্ষা করে আছি… আমাকে পালাতেই হবে…
তখন কবির ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখে বেশ খানিকটা ফাকা জায়গা । ওখান দিয়ে আরামসে পালানো যাবে। কিন্তু অতো উচুতে উঠবে কি করে… কিন্তু উঠতেই হবে।
কবির অসাধ্য সাধন করলো… বের হলো…
.
নীড় আবার খান বাড়িতে গেলো। জানে মেরিন ওখানে যাবে। আর যদি কবিরকে না পায় তবে নির্ঘাত ও তান্ডব করবে। তাই নীড় ওখানে গেলো। গিয়ে দেখে যে সেতু-নিরা নেই…
নীড় : দাদুভাই… ওরা কোথায় ?
দাদুভাই : জন এসে ওদের নিয়ে গেলো।
নীড় : তাহলে কি বাবাকে না পেয়ে ওদেরকে।।
দাদুভাই : কি ওদেরকে?
নীড় : দাদুভাই ও কি ওর শাস্তি মহলেই আছে?
দাদুভাই : সেটা তো বলতে পারছি না?
নীড় : কেন যেন মনে হচ্ছে ও ওর শাস্তিমহলে নেই… আসছি দাদুভাই…
দাদুভাই : কোনো সমস্যা দাদুভাই?
নীড় : না। দেখি মেরিনকে কোথায় পাওয়া যায় ?
.
সেতু : আমাদের এখানে কেন নিয়ে এসেছিস ? মেরে ফেলতে ?
নিরা : ও মারকাট ছারা আর জানে কি ?
মেরিন : তোদের এতোকিছু কে বা কারা ভাবতে বলেছে বলতো? যেখানে আমি আছি তখন তোরা কেন ভাবছিস বলতো ? আমি তোদেরকে মঞ্চ নাটক দেখাতে এনেছি…
নিরা : মঞ্চ নাটক…?
মেরিন : হামমন মঞ্চনাটক। পর্দাটা ওঠানো হোক…
তখন ওদের সামনে থাকা কালো পর্দাটা উঠে গেলো । আর দেখতে পেলো যে জুলহাস আর সোহেল ঝুলে আছে। তাও ভীষন অদ্ভুদ ভাবে। নিচে ফুটন্ত গরম পানি। তার কেবল ২-৩হাত ওপরে ২টা ভিন্ন ভিন্ন তক্তা বা বোর্ড টাইপ কিছুতে জুলহাস আর সোহেলকে দার করানো। সেই বোর্ডটাও ঝুলেই আছে। ওদের পাও বাধা। আর হাতও বাধা। এমনকি ওদের গলতেও দরি। ওদের দারিয়ে থতে অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে। পা পুরে যাচ্ছে… মাথার ওপরও রোদ আছে। ওরা ছারা সবাই ছায়ায় বসে আছে।
নিরা : নানু…
সেতু : বাবা…. সোহেল…
মেরিন : নিরা ডার্লিং… আজকে আমি তোকে তোর বাবার সাথে পরিচয় করাবো।
নিরা : বাবার সাথে পরিচয় মানে?
মেরিন : বাবার সাথে পরিচয় মানে আসল বাবার সাথে পরিচয়। কবির ফয়সাল খান তোর আসল বাবা না। ওই যে ঝুলে আছে। ওইটাই তোর আসল বাবা। সোহেল।
নিরা : কি যাতা বলছিস ? মাম্মি ও কি বলছে এসব?
সেতু : ….
মেরিন : আরে বললাম তো। ওই সোহেল তোর বাবা। মিস্টার খান নয় । তোর শরীরে খান বাড়ির রাজকীয় রক্ত নই। তোর মার মতো তোর শরীরেও ছোটলোক ভিখিরি গুষ্ঠির রক্ত।
নিরা : মাম্মি কি বলছে ও? আমি খান বাড়ির মেয়ে নই? বাবা আমার আসল বাবা নয়?
মেরিন : নো নো & নো…
সেতু : ওদেরকে ছেরে দে । মুক্ত করে দে।
মেরিন : হ্যা মুক্ত করে দিবো। তার আগে তোর মেয়েে ওর বাবার সত্যিটা বল … বল ওর বাবা কে ?
নিরা : বলো মাম্মি… কে আমার বাবা?
সেতু : সোহেল তোর বাবা …
নিরা : কি বলছো কি মাম্মি… ওই লোকটা আমার বাবা?
সেতু : হামমম।
মেরিন : অ… কংগ্রেচ্যুলেশন নিরা।।। তুই আজকো তোর বাবার পরিচয় জানতে পারলি। বাট।।। তোর দুর্ভাগ্যবশত আজই তো বাবা পরকালে চলে যাবে। সো স্যাড… সেই সাথে তোর মায়ের বাবাও…
সেতু : না তুই এমন করবি না মেরিন… প্লিজ এমন করিস না। আমি তোর কাছে হাত জোর করছি…
মেরিন : তুই হাত কেন? শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জোর করলেও আমি শুনবোনা।
সেতু : তুই যে বললি যে তুই মুক্ত করে দিবি।
মেরিন : হামমম। মুক্ত করে দিবো। এই পৃথিবীর মোহোমায়া থেকে মুক্ত করে দিবো। আর মিসেস খান তুই আমাকে এতোটুকু চিনিস না? আমার মুক্ত করা মানে কি সেটা তোর বোঝা উচিত ছিলো …
সেতু : আমার অসহায় বয়ষ্ক বাবাটাকে ছেরে দে। তার এই বয়স দেখেও কি তোর মায়া হচ্ছেনা…
মেরিন : মেরিন হার্টলেস। আর কি বলল অসহায় বাবা? হাহাহা।।। অনেকদিন পর দারুন কৌতুক শুনলাম । টু মাচ ফানি … অসহায়… তাও তোর বাবা? নো নো নো। হি ইজ অ্যা বর্ন ক্রিমিনাল…
সেতু : ছেরে দে… প্লিজ ছেরে দে …
মেরিন : ছেরেই দিবো… তোর শখ ছিলো যে তুই আমার দাদুভাইকে ফাসিতে ঝোলানোর স্বপ্ন দেখতি না তুই… এখন তোর চোখের সামনে তোর বাবা ফাসিতে ঝুলবে। সব বুদ্ধি তো ওই মাস্টার মাইন্ডেরই ছিলো। তাই তো … জন ওদের হাত পায়ের রগ কেটে দাও…
জন : ম্যাম বোর্ডটা…
মেরিন :ওটা আমি গুলি করে সরিয়ে দিবো…
সেতু : না মেরিন না।
নিরা : মেরিন এমন করিসনা…
জন ২জনের হাত-পায়ের রগ কেটে দিলো …
রক্ত ঝরতে লাগলো। ছটফট করতে লাগলো ২জন। সেতু-নিরা ওদের যন্ত্রনায় আহাজারি করতে লাগলো। কবির ছদ্মবেশে দারিয়ে সবটা দেখছে।
সেতুর কান্না ওকে পৈশাচিক আনন্দ দিচ্ছে…
মেরিন দুই হাতে ২টা গান নিলো। এরপর ২জনের বোর্ডের সাথে জোরা লাগানো দরি গুলো বরাবর একের পর এক গুলি করতে লাগলো। ২হাত দিয়ে ২জনের টা একসাথে সরালো। বোর্ডটা গরম পানিতে পরলো। আর ওরা ফাসির দড়িতে ঝুলতে লাগলো।
সেতু আর নিরার সে কি কান্না … আর ওদের কান্না দেখে বাবা-মেয়ের আনন্দ হচ্ছে… অনেকবেশি আনন্দ ।
.
সারাদিন মেরিনকে খুজে ব্যার্থ হয়ে নীড় বাসায় ফিরলো। দেখে মেরিন বসে বসে কি যেন করছে। আবার ফোনেও কথা বলছে ।
নীড় : তুমি এখানে?
মেরিন : হ্যা আমি। যদিও এখানে অন্যকারো থাকার কথা তবুও আমি …
নীড় খেয়াল করে দেখলো মেরিন কালো রঙের শাড়ি পরে আছে । কয়েকটাদিন ধরে মেরিন সাদা শাড়িই পরে আসছে। তবে আজকে হুট করে আবার কালো? মেরিনকে রিল্যাক্সড লাগছে। এতোদিন পর মেরিনকে আবার অজানা লাগছে ।
মেরিন : যাই হোক আমি আছি আমি নেই… এসব নিয়ে ভাবার অনেক সময় আছে। এখন বলুন কালকে আপনি কোন রঙের স্যুট পরবেন? ব্ল্যাক অর হুয়াইট …
নীড় : কালকে পরবো মানে?
মেরিন : কালকে পরবেন মানে কালকের পার্টিতে …
নীড় : পার্টি ? কিসের পার্টি ?
মেরিন : আমার পার্টি। গ্র্যান্ড পার্টি। আফটার অল মেরিন বন্যার পার্টি। জমকালো না হলে কি হয় ?
মেরিন এতো ঠান্ডা মাথায় কথা বলছে… সেতু আর নিরাকে কি মেরে দিয়েছে কবিরকে না পেয়ে? নাকি কবিরের সন্ধান পেয়ে ওকে মেরেও ফেলেছে … নীড়ের মাথা ভনভন করে ঘুরছে । তারওপর সকাল থেকে কিছু খায়নি… পরে যেতে নিলো… মেরিন খপ করে ধরে ফেলল।
মেরিন : আপনার জন্য প্রকৃতির নিয়মটাই বদলে যাচ্ছে। আসলে গিয়েছেও। স্বামীরা স্ত্রীদেরকে সামলায়… আর আমার বেলায় উল্টা । আপনাকে আমার সামলাতে হয় ।
মেরিন নীড়কে বসিয়ে দিলো।
মেরিন : খাবার নিয়ে আসছি …
নীড় মেরিনকে কোলে বসিয়ে দিলো।
নীড় : ওরে আমার বনপাখিরে … তোমার আর আমার জন্য না পুরো প্রকৃতিই উল্টা । না তোমার মতো কেউ আছে আর না আমার মতো … সকলের থেকে ভিন্ন বলেই আমরা এক। নীড়-মেরিন। বর্ষন-বন্যা …
মেরিন : আপনি আমি আলাদা।
নীড় : সে কি কেন ?
মেরিন : আপনি আমি কখনো এক হতেই পারিনা। আমি সকলের ঘৃণার আর আপনি সকলের ভালোবাসার। না তো আমাকে ভালোবাসা যায় আর না আপনাকে ঘৃণা করা যায়না…
নীড় : আর তাই বুঝি আমাকে এতো ভালোবাসো…
মেরিন : ভালোবাসা মরে গিয়েছে নীড়।। মরে গিয়েছে।।।
নীড় : তাই ? তবে এখন কি আছে শুনি? ঘৃণা…
মেরিন : আমি তো আপনাকে ঘৃণা করার যোগ্যও নই…
বলেই মেরিন উঠে চলে গেলো।
নীড় : বউ পেয়েছি কপাল গুনে… কথা কম রহস্য বেশি বলে।।।
.
পরদিন …
জমকালো অনুষ্ঠান শুরু হলো। গ্র্যান্ড পার্টি যাকে বলে… কবিরকে সুস্থ স্বাভাবিক দেখে নীড় আরও একটু অবাক হলো। পার্টির থিম কালো। সবার কালো পোশাক। সবকিছু কালো । ডেকোরেশনও হয়েছে কালো গোলাপের। এ যেন কালো অন্ধকারের মেলা।
নীড় : বলছিলাম কি মিসেস অতৃপ্ত আত্মা … আজকের খাবারও কি সব কালো ?
মেরিন : অনেকটাই…
নীড় : খাবো কি করে তাহলে আজকে…
মেরিন : অন্যদিন যেভাবে মুখ দিয়ে খাবার খান আজকেও সেভাবেই খাবেন। সিম্পল।
নীড় : কাউল্লা খাবার ক্যামনে খাবো???
মেরিন : ভাষার কি অবস্থা।
নীড় : হুহ… তুমি কি বুঝবে খাওয়ার সুখ? খাবার মানে সুখ-শান্তি-জীবন… আহা …
মেরিন : 😒
.
৩দিনপর…
মেরিন অফিসে বসে কাজ করছে । হুট করে ঘাড়ের মধ্যে কারো স্পর্শ অনুভব করলো। পিছে ঘুরলো। দেখলো নীড়।
মেরিন : আ…
নীড় : টুকি…
মেরিন : আপনি আমার অফিসে কি করছেন ?
নীড় : তোমাকে বড্ড বেশি মিস করছিলাম। এমনিতেও বসে বসে কোনো কাজ নেই…
মেরিন : আপনি পৃথিবীর প্রথম ডক্টর যে এতো ফ্রি থাকেন।
নীড় : কি করবো বলো দিনে হাজারটা রোগী দেখতে আমার ভালো লাগেনা। স্পেশালদের ভালো লাগে।
মেরিন : এখন আপনি এখান থেকে যান… কাজ না থাকলে বসে বসে মাছি তারান।
নীড় : তুমি ধীরে ধীরে আনরোমান্টিক হয়ে যাচ্ছো । খালি আমার থেকে দূরে দূরে থাকো। কেন বলো তো?
মেরিন : আপনার স্পর্শ আর আপনার উপস্থিতি এখন আমার সহ্য হয়না … তাই। ভেরি সিম্পল …
নীড় : 😂।
মেরিন : হাসছেন কেন?
নীড় : সেইম সেইম … ভাবনা আমারও ছিলো আগে। আর এটা ভেবেই আমার ভীষন করে হাসি পাচ্ছে।
মেরিন : আপনি এখন যান ।। যান এখান থেকে।
নীড় : না আমি যাবোনা। আজকে তোমার সাথেই থাকবো।
মেরিন : জন… জন…
জন এলো।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : থ্রো হিম আউট…
জন তাকিয়ে দেখে নীড় দারিয়ে আছে।
নীড় : হাই মিস্টার শালা…
মেরিন : আপনি কি পাগল হয়ে গিয়েছেন?
নীড় : পাগলের কি আছে? বউয়ের ভাই তো শালাই হয় বলো…
মেরিন : জন … কি বলেছি শুনতে পাওনি? উনাকে বের করে দাও।
জন আরো ১বার ফেসে গেলো।
নীড় : জন এখন তুমি এখান থেকে যাও। নাহলে এমন কিছু দৃশ্য দেখতে হতে পারে যা তুমি দেখতে চাওনা…
জন : 😓।
মেরিন : নীড়কে বের করে দাও।
নীড় : জন চলে যাও…
মেরিন : নীড়কে বের কর।
নীড় : এক্সকিউজ আস…
.
ঘৃণার মেরিন 4
part : 30
writer : Mohona
.
নীড় : এক্সকিউজ আস…
জন : …
মেরিন : জন… কিছু বলেছি তোমাকে…
জন বাধ্য হয়ে নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
নীড় : তুমি কি আমাকে বের করতে চাইছো?
জন : স্যার প্লিজ… আপনি বোঝার চেষ্টা করুন। আসলে …
নীড় : অতৃপ্ত আত্মা তু… একি… কোথায় গেলো?
জনও পাশ ফিরে দেখে মেরিন নেই।
জন : ম্যাম কোথায় গেলো?
নীড় : ধ্যাত … কোথায় ভাবলাম বউটার সাথে সারাদিন থাকবো… হুহ। মেরিনের কোথায় যাওয়ার কথা ছিলো তা কি তুমি জানো?
জন মনে মনে : জানি। বাট বলাটা কি ঠিক হবে?
নীড় : এই জন… কিছু জিজ্ঞেস করলাম তো ।
জন : না মানে স্যার আমি জানিনা।
নীড় : বিশ্বাস হলোনা। । দেখি সরো… আচ্ছা শোনো… নতুন প্রজেক্টটা যেন কোথায়?
.
টনি : ইনোগ্রেশন প্রোগ্র্যামটা কবে করলে ভালো হবে?
মেরিন : কাজ এখন ১০০% ফিনিশ হয়নি। আর তাই সেলিব্রেশন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা বেকার…
টনি : বাট কাজ তো প্রায় শেষ ।
মেরিন : প্রায় শেষ আর শেষের মধ্যে অনেক পার্থক্য …
টনি : সরি…
মেরিন : সরি বলার মতো এমন স্টুপিড রিজন আর আবিষ্কার না করলে খুশি হবো।
টনি : হামমম। মেরিন…
মেরিন : ইয়েস…
টনি : লেটস হ্যাভ অ্যান কফি?
মেরিন : মাত্রই বললাম যেন সরি বলার আর কোনো কারন যেন না সামনে আসে। আর এখনই?
টনি : আসলে…
মেরিন : স্টপ… তু…
নীড় : হ্যালো জানু।।।
মেরিন টনির পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখে নীড় এগিয়ে আসছে।
নীড় : দেখলে ঠিক চ…
নীড়ের চোখ গেলো টনির দিকে। টনিকে দেখেই ও চিনতে পারলো। মেজাজ বিগরে গেলো।
মেরিন : আপনি এখানে?
নীড় টনির গলা চেপে ধরলো। মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
মেরিন : নীড়… ছারুন ওকে। ছারুন…
নীড় : তোর জন্যই সব হয়েছে। তোর জন্যই… না তো তুই সেদিন মেরিনকে কোলে নিয়ে হসপিটালে যেতি… না তো আমার মাথা খারাপ হতো… আর না আমি ড্রিংকস করতাম আর না এতো কাহিনি হতো। আজকে তোকে আমি মেরেই ফেলবো…
মেরিন নীড়কে টেনে সরিয়ে আনলো…
মেরিন : পাগল হয়েছেন আপনি? কি করছেন টা কি?
নীড় : ছারো আমাকে… আমি মেরেই ফেলবো…
মেরিন : স্টপ ইট নীড়… অনেক হয়েছে ।
টনি অবাক হয়ে ২জনকে দেখছে।
মেরিন : কি বলে যাচ্ছেন পাগলের মতো?
নীড় : বোঝোনা তুমি কি বলছি? জানোনা লাগে কিছু?
মেরিন : আপনার কথার কোনো ভিত্তি নেই। বাসায় যান বা যেখানে খুশি যান। বাট এখন থেকে চলে যান। প্লিজ।
নীড় : নো। তুমি যাবে আমার সাথে। আমি কিছুতেই এই লোকটার সাথে তোমাকে রেখে যাবোনা।
মেরিন : আমার কাজে ডিস্টার্বনেস আমার মোটেও পছন্দনা । সো প্লিজ লিভ। চলো টনি…
মেরিন যেতে নিলে নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন : পাগল হয়ে গিয়েছেন নীড় ? নামান আমাকে।
নীড় : চুপ। ফালতু কথা বললে কিস করতে করতে নিয়ে যাবো …
মেরিন : নীড় নামাতে বলেছি কিন্তু …
নীড় কোনো কথা না শুনে মেরিনকে গাড়িতে বসিয়ে বাসায় নিয়ে গেলো।
.
মেরিন : এসবের মানে কি ?
নীড় : এসবের মানে এটাই যে তুমি ওই ছেলেটার সাথে কোনো কাজ করবেনা। কোনো প্রজেক্ট করবেনা। দ্যাটস ফাইনাল…
মেরিন : আপনি কে বলুন তো আমাকে না করার? কেউনা।।।
নীড় : আমি তোমার স্বামী…
মেরিন : স্বামী? দেখেছেন… আপনি না বললে না আমার মনেই পরতোনা যে আপনার আর আমার মাঝে সম্পর্কটা ঠিক কি? থ্যাংকস ফর দ্যাট । আসলে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। তো মিস্টার স্বামী … আপনার কি সেবা করতে পারি? পা টিপে দিতে পারি নাকি গলা? দেখুন … কাঠের পুতুল চিনেন? নট জাস্ট কাঠের… মাটির পুতুল বা যেকোনো পুতুল… চিনেন তো নাকি? ১টা মাটির পুতুলের সাথে মানুষের কিন্তু সবটাই মিলানো যায়… চোখ-নাক-কান-হাত-পা … সব। কিন্তু সেটাতে প্রাণ থাকেনা। প্রাণহীন হয়। অার এটাই পার্থক্য। ঠিক তেমনি স্বামী আর নামমাত্র স্বামীর মধ্যেও ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান… নামমাত্র স্বামীদের না স্ত্রীদের ওপর কোনো অধিকার থাকেনা … তাই আপনার আমার ওপর কোনো অধিকার নেই … আমি আবার অবিচার করিনা… আপনার ওপরও আমার কোনো অধিকার নেই ।
নীড় কিছু না বলে মেরিনকে বসালো… ওর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
নীড় : আমি তোমাকে ভালোবাসি …
মেরিন : আমি তো বাসিনা।আর তাছারাও ভিক্ষা আর ভালোবাসা পাবার স্ট্যাটাস আমার না…
নীড় : মেরিন তুমিই আমার ভালোবাসা ছিলে… নিজের একটুখানি ভুলের জন্য নিজের আসল ভালোবাসাকে চিনতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা … আমি জানি সেদিনের জন্য তুমি রেগে আছো। ফেয়ার এনাফ… বাট… সেদিন টনি কো…
মেরিন : টনি কোলে করে আমাকে হসপিটালে নেয়া দেখে জেলাস হয় আপনার স্বামী স্বামী মনোভাব জেগে ওঠে । তাইতো?
নীড় : না। হয়তো এই প্রথম তোমার ধারনা ভুল … শোনো…
মেরিন : আমি কিছু শুনতে চাইনা। আমি এটা ভালোভাবেই জানিযে সমগ্র পুরুষজাতিই এক। নিজেরা চাইবে পিওর গার্ল। বাট নিজেরা … নিজেরা যা করবে তাই জায়েজ… তারা মনে করে ধর্ষন করাও তাদের জন্য ফরজ …
নীড় : তুমি আমাকেও এমন করো ?
মেরিন : না মনে করিনা। কারন মনে করার কোনো কারন নেই । ইটস ট্রু এন্ড প্রুভড অলসো…
নীড় : …
মেরিন : আপনাকে আমি ভালোবাসতাম জেনেও , আপনি আমার সাথে বিয়ে হওয়া সত্ত্বেও আপনি নিরার সাথে মেলামেশা করেছেন… ইন্টিমেট হয়েছেন… আর সেটা আপনার কাছে সঠিক বলেই মনে হয়েছে। অথচ অথচ অথচ … আপনি আমাকে ভালোবাসেননা। ঘৃণা করেন। তবুও কেউ ১জন আমি একটু অসুস্থ হওয়ায় আমাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া আপনার রাগার কারন ছিলো। কারন আমি আপনার স্ত্রী। অথচ আমাকে স্ত্রী হিসেবে তখন মানতেনও না। চমৎকার …
নীড় : মেরিন সবার ভালোবাসার ধরন এক নয় ।
মেরিন : আপনি আমাকে ওখান থেকে এনে এই স্টুপিড টপিক তুলে আমার পাক্কা ১টা ঘন্টা নষ্ট করলেন। সো আই হ্যাভ টু গো…
বলেই মেরিন চলে গেলো। নীড়ের মনে হলো এই কথাগুলোর মাধ্যমে মেরিন নিজের কষ্টগুলো ঝেরে গেলো। প্রকাশ করে গেলো। তাই আর কিছু বললনা।
.
টনি : নীড় তোমাকে খুব ভালোবাসে তাইনা?
মেরিন : নন অফ ইউর বিজনেস… লেটস ব্যাক টু ওয়ার্কস ।
বলেই মেরিন এগিয়ে গেলো।
টনি : হয়তো নীড়ের এমন আচরনের জন্যই ও তোমার জীবনে। ও হয়তো তোমার মতোই । ভালো থাকো এভাবে ।
নীড় : ধুর ভালো লাগেনা। কোনো দুঃখে যে … আজকে এই রুমটা আমাদের ছবি দিয়ে সাজাই… হয়তো ভালো লাগতেও পারে … আমি জানি ভালো লাগে। কিন্তু প্রকাশ করেনা । তবে আম্মুর চিকিৎসাটা আবার নিজের হাতে নিতে হবে…
রাতেরবেলা মেরিন এসে দেখলো। সব ওদের কিছু মুহুর্ত। যেগুলোর বেশিরভাগ মেরিন বন্দী করেছিলো। পরেরগুলো নীড় বন্দী করেছে। মেরিন ওগুলো সরিয়ে ফেলতে নিলে
নীড় বলল : যদি আজকে এগুলোর সাথে কিছু করো তো কসম আল্লাহর আজকে এখন জানটা দিয়ে দিবো …
মেরিন : …
মেরিন থেমে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরলো।
.
কিছুদিনপর…
মেরিন : আপনি আমার হাত ধরে টেনে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
নীড় : লং ড্রাইভে…
মেরিন : আমি কোথাও যাবোনা। ছারুন হাত।
নীড় : এতো ছারুন ছারুন কোরোনা তো… ভালো লাগেনা… একটু চুপ থাকতে পারোনা?
মেরিন : আপনি আমার থেকে দূরে থাকতে পারেননা ?
নীড় : না। তুমি আয়রন আমি ম্যাগনেট তাই আকর্ষনটা বেশি । কোনো কথানা…
নীড় ড্রাইভ করছে। মেরিন চুপচাপ বসে আছে। চোখ বন্ধ করে। ভালো লাগছেনা কিছুই। মাঝেমাঝে ইচ্ছা হয় সবকিছু ছেরেছুরে দুরে কোথাও পালিয়ে যেতে। কিন্তু পারেনা ।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : …
নীড় : মেরিন…
মেরিন : …
নীড় : মেরিন …
মেরিন : শুনছি…
নীড় : আম্মুর চিকিৎসার দায়িত্ব দাওনা আবার… প্লিজ…
মেরিন : আম্মু কেবল আমার আম্মু। আর কারোনা…
নীড় : দেখো… আমি ভালোভাবেই কথা বলছি…
মেরিন : আমিও ভালোভাবেই বললাম…
নীড় : এখন তোমার ভাষাতেই কথা বলতে হবে।
মেরিন : মানে?
নীড় : তুমি তোমার মামাবাসার গার্ডসদেরকে ফোন করে জিজ্ঞেস করো তো… দেখো তো আম্মু ওখানে আছে কিনা …
মেরিন : মানে?
নীড় : আহা করোইনা…
মেরিন ফোন করলো। জানতে পারলো যে কনিকা ওখানে নেই… রেগে নীড়ের দিকে তাকালো ।
নীড় : রাগের ভয়ে কিছুই নেই। আম্মু যেখানেই আছে সুরক্ষিত আছে। এখন যদি রেগে গিয়ে আমাকে মেরে ফেলো তবে কিন্তু ৭জনমেও আম্মুর খবর পাবেনা।
মেরিন : আম্মু কোথায় নীড়?
নীড় : বললাম তো সেফ আছে।
মেরিন : নীড় শেষবারের মতো জানতে চাইছি বলুন যে আম্মু কোথায়? না হলে কিন্তু আমি …
নীড় : শহরের বুকে আগুন জ্বালাবে। তাইতো? বাট তবুও লাভ হবেনা। সো… রাগ দেখিয়ে লাভ নেই।
মেরিন : ….
নীড় : ওখানে ১টা ফাইল আছে দেখো…
মেরিন : …
নীড় : আহ দেখোইনা…
মেরিন হাতে নিলো।
নীড় : ঠান্ডা মাথায় আম্মুর চিকিৎসার ভার আমার হাতে তুলে দেয়ার কনট্র্যাক্ট পেপারটা পড়ে সিগনেচার করে দাও। প্লিজ।
মেরিন : অসম্ভব। কোনোদিনও না।
নীড় : ভাবো ভাবো… ভালোমতো ভাবো… বাট ইউ হ্যাভ নো আদার অপশন।
মেরিন : মেরিন বন্যার লিমিট এই সাধারন কাগজ ডিসাইড করতে পারেনা। আমি সিগনেচার করলেও কি আবদ্ধ করতে পারবেন আমাকে?
নীড় : পরেরটা পরে ভেবে নিবো..
মেরিন ১টা বাকা হাস দিলো ।
মেরিন : এখানেই তো মাত খেয়ে গিয়েছেন… মেরিন প্ল্যানিং ছারা কোনো কাজ করেনা।
নীড় : সিগনেচার প্লিজ মাই বনপাখি…
মেরিন সিগনেচার করে দিলো ।
.
২দিনপর…
মেরিন কলমটা হাতে নিয়ে ঘুরাচ্ছে ।
জন : ম্যাম আপনিকি কনিকা ম্যামকে নীড় স্যারের থেকে ছারিয়ে আনার কথা ভাবছেন?
মেরিন : ওটা নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। যখন ইচ্ছা তখন কাজটা করতে পারি। মিস্টার চৌধুরী জিতে গিয়েছে ভেবে হ্যাপী থাকুক ।
জন : তাহলে কি এমন ভাবছেন?
মেরিন : বেশ জটিল কিছু…
জন : মানে?
মেরিন : বলা যাবেনা। কারন এতোগুলো বছরে এই প্রথম তোমাকে আর দাদুভাইকে বিশ্বাস করতে পাচ্ছিনা…
জন : ম্যাম আমি…
মেরিন : আমার সাথে গাদ্দারি করোনি। আই নো। বাট … তোমার সমস্যা কি জানো? তুমি আমার কথা বড্ড বেশি ভাবো।
জন : …
মেরিন : যাই হোক… নেক্সট উইক ইনোগ্রেশন … দায়িত্ব তোমার …
জন : জী ম্যাম…
জন বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : আমার প্রতি তোমার স্নেহটা বড্ড বেশি…
.
৩দিনপর…
মেরিন রিপোর্ট হাতে নিয়ে বসে আছে । হয়তো ওর জীবনের মূলত যে কারো জীবনের সেরা রিপোর্ট এটা। ও মা হতে চলেছে। কিন্তু ও বুঝতে পারছেনা যে ও কিভাবে রিয়্যাক্ট করবে… বেশ কিছুক্ষন ঝিম ধরে বসে থেকে মেরিন হাহা করে হেসে উঠলো।
মেরিন : কংগ্র্যাচ্যুলেশন মিস্টার চৌধুরী … আপনি আমার থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন … হ্যালো… আই নিড অ্যা ডিভোর্স পেপার। আর আপনার কাছে ৩ঘন্টা আছে। কি করবেন কতো টাকা খরচ করবেন কাকে ঘুষ দিবেন সেটা আপনার মাথা ব্যাথা।
.
নীড় বাসায় ফিরলো। ফিরে দেখে মেরিন কিচেনে। নীড় অবাকের সাথে খুশিও হলো। তবে কেন যেন ১টা অদ্ভুদ ভয় হচ্ছে ।
নীলিমা-নিহাল পপকর্ন খেতে খেতে মেরিনকে রান্না করছে। আর মেরিনের কাজকর্মের কারন ভাবছে।
নীড় : গাইস… তোমরা এভাবে বসে আছো যে ?
নীলিমা : আবার কি হয়েছে রে?
নীড় : কি হবে?
নীলিমা : তুই কিছু করেছিস ?
নীড় : আরে সবকিছুতে আমাকে আসামী বানাও কেন বলোতো ? ও তো আর নতুন কিচেনে ঢোকেনি …
নিহাল : আরে দের ২মাস ধরে তো কিচেনে ঢোকেনা। তাই …
নীড় : সবকিছুতে আমার বউটাকে এতো সন্দেহ কোরো না তো …
নিহাল-নীলিমা : 😒
নীড় মনে মনে : ভয় তো আমারও হচ্ছে। কিছু তো ১টা হয়েছে…
মেরিন পানির গ্লাস নিয়ে এগিয়ে এলো। মুখে মিষ্টি ১টা হাসি । নীড় আরো বড় ঝটকা খেলো।
মেরিন : এই নিন…
নীড় : …
মেরিন : কি হলো? নিন।
নীড় নিলো।
মেরিন : পানি খেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন। আজকে সবার পছন্দের খাবার রান্না হয়েছে। আমি দাদুভাইকেও আসতে বলেছি। আজকে সবাই একসাথে খাবো…
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 31
writer : Mohona
.
মেরিন : আজকে সবাই একসাথে খাবো …
নীড় : মেরিন …
মেরিন : হামম।
নীড় : আর ইউ ওকে?
মেরিন : কেন আমার কি হবে?
নীড় : না হওয়াই ভালো ।
নীড় ফ্রেশ হতে গেলো। একটুপর দাদুভাই এলো । সবাই মিলে একসাথে ডিনার করলো।
খাওয়াদাওয়ার পর সবাই হলরুমে গিয়ে বসলো।
দাদুভাই : দিদিভাই …এবার তো বলো … এতো খুশি কেন?
মেরিন : দাদুভাই … ১টা তোতাপাখিকে খাঁচায় বন্দী করে রাখলে তাতে পাখির মালিকটা বেশ কিছুদিন আনন্দিত থাকে। তবে পাখিটা না … তবে ১টা সময় মালিক বোর হয়ে যায় খেলায় … সে বুঝে যায় যে পাখিটাকে মুক্ত করার মধ্যে পাখিটার যেমন সুখ তেমন তার নিজেরও সুখ। কারন পাখিটার মধ্যে আর ভালো লাগার কিছু থাকেনা। থাকে বিরক্তি। খাচায় থেকে থেকে পাখি বিরক্ত হয়ে যায়। আর বিরক্ত পাখিকে দেখে পাখির মালিক। তাই সে পাখিকে মুক্তই করে দেয়। মন উঠে যায় পাখিটা থেকে। আর মুক্তিতে দুজনই ভালো থাকে…
নীড় কিছুটা আন্দাজ করলো।
দাদুভাই : দিদিভাই … কিছুই বুঝতে পারলামনা …
মেরিন : বুঝে যাবে… কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করো
.
সকালে…
নানাধরনের বাদ্যযন্ত্রে আর গুলির শব্দে বাসার সবার ঘুম ভাংলো। ছুটে নিচে গেলো। দেখলো নানাধরনের মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট বাজছে। আর তারসাথে তাল মিলিয়ে মেরিন ফাকা গুলি করছে। প্রেস-মিডিয়াও আছে। মেরিনের পরনে সেই বিয়ের পোশাক। সাজটাও তেমন….
নীড় : এসব কি?
দাদুভাই : এসব কেন দিদিভাই ?
নীলিমা : কি হয়েছেরে তোর?
মেরিন : সব বলবো… তবে তারআগে আমি আমার প্রা…..নের স্বামীটাকে এই পোশাকটা পরে আসতে বলো। প্লিজ…
সবাই মেরিনের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো এটা সেই পোশাক যেটা ওদের বিয়েতে নীড় পরতে বাধ্য হয়েছিলো।
নীলিমা : তোরা কি আবার বিয়ে করবি?😃।
মেরিন : বলবো তো। মিস্টার চৌধুরী চেঞ্জ করে আসুক দেন বলবো।
নীড় : ওই পোশাকটা কেন পরবো?
মেরিন : সেটাও পরার পর জানতে পারবেন …
মেরিনের জোরাজোরিতে নীড় পরে এলো। মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : বিফোর উই স্টার্ট … আমি আপমাকে ছোট্ট ১টা গিফ্ট দিতে চাই। মে আই মিস্টার স্বামী?
নীড় : …
মেরিন : নিরবতা সম্মতির লক্ষন। তাই দিয়েই দেই…
.
বলেই মেরিন ১টা গিফ্ট বক্স নীড়ের হাতে ধরিয়ে দিলো।
মেরিন : ইটস ফর ইউ…
নীড় : কি আছে এতে ?
মেরিন : মুক্তির সনদ …
নীড় : মানে?
মেরিন : খুলে দেখুন…
নীড় খুলে দেখে ডিভোর্স পেপার। যেটাতে মেরিন অলরেডি সিগনেচার করে দিয়েছে …
দেখে নীড়ের রক্তের বেগ কয়েকগুন বেরে গেলো। চোখ ২টা আগুনের গোলার মতো হয়ে গেলো। মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন বেশ স্বাভাবিকভাবেই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মেরিন : কেমন লাগলো সারপ্রাইজ গিফ্ট?
নীড় দাতে দাত চেপে
বলল : এসবের মানে কি?
মেরিন : কোন সব? এই ব্যান্ড পার্টি এন্ড প্রেস-মিডিয়া ? মেরিন বন্যার বিয়ে হয়েছিলো যেমন করে তেমন করে এটাও হবে। উৎসব মুখর পরিবেশে। পেয়েছেন উত্তর ?
নীড় : আমি এই পেপারসের কথা বলছি… এর মানে কি ?
মেরিন : অ … ১জন অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ হয়ে এই কথা বলছেন? সে স্যাড … এই পেপারসের মানে হলো এটা যে এটা আমাদের ভিভোর্স পেপার। আজকে আমাদের ডিভোর্স। হ্যাপি ডিভোর্স ডে। এন্ড হ্যাপি ইনডিপেনডেন্স ডে টু ইউ…
দাদুভাই : কি বলছো কি দিদিভাই?
মেরিন : হামম দাদুভাই…
শুরু হয়ে গেলো প্রেস-মিডিয়া ওয়ালাদের হৈচৈ।
নীড় মেরিনের হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।
.
নীড় : বারাবারিটা বেশি হয়ে গেলোনা?
মেরিন : আমার লাগলো কম হয়েছে…
নীড় : এতোদিন যেটা বলিনি আজকে সেটা বলছি… আই অ্যাম সরি… যা করেছি ভুল করেছি… আমি মনে করেছিলাম আমার না বলা সরিটা তুমি বুঝে নিবে… কিন্তু বোঝোনি . প্লিজ সরি…
মেরিন : সরি ? সরি ফর হুয়াট ?
নীড় : সরি ফর এভরিথিং… এই ঘৃণার খেলা বন্ধ করো প্লিজ…
মেরিন : পারবোনা গো মিস্টার চৌধুরী। ঘৃণার খেলা যে আমার বড্ড শখের খেলা। আপনাকে বোঝাতে পারবোনা যে এটা আমার কতোটা প্রিয় খেলা…
নীড় : ডিভোর্স এক তরফা হয়না মেরিন। জাস্ট তোমার একার সিগনেচার করাতে কিন্তু আমাদের ডিভোর্স হবেনা… আমারটাও লাগবে। আর আমি মরে গেলেও সিগনেচার করবোনা।
বলেই নীড় কাগজটা ছিরে ফেলল।
মেরিন : মিস্টার চৌধুরী… আমার কাছে আমার কথাই শেষ কথা। আপনি সিগনেচার করবেন কি করবেননা সেটা সম্পুর্নই আপনার ব্যাপার। বাট… আমি তো করে দিয়েছি। তাই আমার কাছে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। এন্ড সো… আপনি আমার কেউনা… রইলো আপনাক বাড়ি… রইলো আপনার ঘর… রইলো আপনার বিছানা , রইলো আপনা সবকিছু… আপনার সবটা আজকে ফিরিয়ে দিয়ে গেলাম। যেমন ঘটা করে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আপনার বউ হয়েছিলাম। আপনাকে বন্দি করেছিলাম। ঠিক তেমনি ঘটা করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আপনাকে মুক্ত করে দিয়ে গেলাম। খান বাড়ির মেয়ে খান বাড়িতে ফিরবে । যেভাবে যে সাজে বেরিয়ে ছিলো আপনার সাথে সেভাবেই ঢুকবে… গুডবাই মিস্টার চৌধুরী…
নীড় : বাসা থেকে তো দূরের কথা…পারলে এই রুম থেকে এক পা বের হয়ে দেখাও …
মেরিন : আপনার কি মনে হয় আমি বের হতে পারবোনা?
নীড় : পারলে বেরিয়ে দেখাও। আমিও দেখি তুমি আজকে কিভাবে রুমটা থেকে বের হও…
মেরিন : আপনি আমাকে আটকাবেন???
নীড় : বললাম তো পারলে আজকে বের হয়ে দেখাও…
মেরিন : আর যদি বের হই।
নীড় : প্রশ্নই ওঠেনা।
মেরিন : যদি বের হই । তাহলে?
নীড় : বললাম তো প্রশ্নই ওঠেনা।
মেরিন : তবুও ধরুন আমি যদি বের হতে পারি তবে?
নীড় : তবে হার মেনে নিবো…
মেরিন ১টা বাকা হাসি দিলো।
মেরিন : আপনার মনে আছে আমি আপনাকে ১টা কথা বলেছিলাম যে… আপনি ভবিষ্যতের কথা ভেবে কাজ করেননা তাই হেরে যান… মনে আছে?
নীড় : হামমম।
মেরিন : আমি কখনো কোনো কাজই কারন ছারা করিনা…
নীড় : …
মেরিন : কালকে রাতে খাবার টেস্টি ছিলো তো?
নীড় বুঝতে পারছে ও ওর শরীরের বল হারাচ্ছে …
নীড় : তততুমি আআআমার খখখা…
বলতে বলতে নীড় পরে যেতে নিলো। ওর শরীর একদম বলশূন্য হয়ে পরলো…
নিচে পরার আগে মেরিন ওকে ধরে ফেলল। বেডে শুইয়ে দিলো। নীড় সব দেখতে পাচ্ছে শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু পলক ফেলা ছারা আর কোনো কাজই করতে পারছেনা…
মেরিন : কালকে আপনার খাবারে আমি ১টা ড্রাগস মিশিয়ে ছিলাম। যেটা ১০-১১ ঘন্টার মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখায় … সো… দেখিয়ে দিলো। ৩ঘন্টার জন্য আপনার সমগ্র শরীর অসার হয়ে থাকবে … আর আমি আপনার চোখের সামনে দিয়ে এই রুম থেকে বেরিয়ে যাবো। দেন এই বাসা থেকে…
নীড়ের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো।
মেরিন : আমি জানতাম আপনার সাথে বলে আমি পারবোনা… তাই। আমার কথাই শেষ কথা। কোন কাজ করলে তার ফলাফল কি হতে পারে সেটা আন্দাজ করে সেটার টোটকাও আমি ভেবে রাখি… বললাম না ঘৃণার খেলাটা আমার শখের খেলা। এটা না তো বন্ধ করবো … আর নাতো হারবো। মৃত্যু পর্যন্ত চালিয়ে যাবো… গুড বাই মিস্টার চৌধুরী… গুড বাই…
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো। নীড় কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলো …
.
দাদুভাই : দিদিভাই… আসবো?
মেরিন : আসো দাদুভাই …
দাদুভাই : কাদছিলে বুঝি ?
মেরিন : না।।।
দাদুভাই : আমার কাছেও কি আড়াল করবে ?
মেরিন : কি করবো বলো? আড়াল করার কারন যে দিয়ে দিয়েছো…
দাদুভাই : তোমার কি সত্যি এটা মনে হয়?
মেরিন : দাদুভাই… প্রকৃতির বাহিরে কিছুই নেই। তুমি আমিও এই প্রকৃতির অংশ । আর প্রকৃতি নিয়মের একটু ব্যাতিক্রম কিছু ঘটলেই প্রকৃতি তার ধ্বংসাত্মক রূপ ধারন করে। তুমি প্রকৃতিবিরোধী কাজ করেছো। মেরিন ঘৃণার। অথচ তুমি সেই মেরিনকে অস্বাভাবিক হারে ভালোবাসো …
দাদুভাই : আমি কোনোদিনই তোমার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করিনি… কারন তোমার কোনো সিদ্ধান্তই কখনো ভুল ছিলোনা। কিন্তু… এবার তোমার সিদ্ধান্ত তোমার জন্য ভুল। নীড়কে শাস্তি দিতে যেয়ে তুমি নিজেকে শেষ করে দিচ্ছো। নিজেকে কষ্ট দিচ্ছো…
মেরিন : নিজেকে ভালোবাসা আর ঘৃণা করার মধ্যে ১টা অন্যরকম সুখ আছে দাদুভাই …
দাদুভাই : দিদিভাই… দেরিতে হলেও তুমি হারবে… রেস্ট করো…
বলেই দাদুভাই বেরিয়ে গেলো…
.
নীড় বসে বসে সিগারেট খাচ্ছে আর ভাবছে… এই ঘটনা ঘটানোর কারন কি? ডিভোর্স …? কেন এই ডিভোর্সের খেলা…? মেরিন তো সেদিনও বলল যে ও নীড়কে ছারবেনা। আগে চেয়েছিলো নীড়কে ভালোবেসে বন্দী করে রাখতে… আর এখন চায় ঘৃণা করে… তাহলে?
নীড় : তাহলে… তাহলে … তাহলে… মেরিন … মেরিন মা হতে চলেছে… আর আমি বাবা… হ্যা … হ্যা সেটাই। ও বলেছিলো যদি আমি ওকে ছোট নীড় দেই তবে ও আমাকে মুক্ত করে দিবে… আমি বাবা হতে চলেছি… আমি বাবা হতে চলেছি… ইয়াহু… আমি বাবা হতে চলেছি…
নীড় আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলো…
নীড় : তোমার সারপ্রাইজ গিফ্ট তবে ডিভোর্স পেপার নয়… তোমার বার বার বলা গুড বাই গুড বাই ছিলোনা… তোমার কোনো কাজই কারন ছারা হয়না… এসবের মধ্যে দিয়ে তুমি আমাকে “গুড নিউজ” দিতে চেয়েছিলে… “গুড নিউজ” … অন্যসব স্ত্রীরা স্বামীকে এই খবরটা দেয় লজ্জা লজ্জা মুখ করে… বলে ওগো শুনছো… তুমি বাবা হতে চলেছো… আর আমার বউ কি করলো??? ধ্যাত… তোমাকে তোমার মতো করেই জব্দ করতে হবে । যতোদূর আমি তোমাকে চিনি তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছো… যাবো যাবো… তোমার কাছে যাবো। একটু হোমওয়ার্ক করে নেই। তুমি ভবিষ্যতের জন্য ২ধাপ এগিয়ে আছো। আমার পরিকল্পনা এখনও শূন্য … দেখি তোমার মতো করে ভাবতে পারি কিনা…
.
২দিনপর…
নীড় খানবাড়ি পৌছালো। দেখে সারাবাড়ি সাজানো …
নীড় : আমার আগমনের জন্য তো এই সজ্জা হতে পারেনা। কেইস টা কি? দেখি ভেতরে যাই…
ভেতরে গিয়ে নীড় দেখে বধুবেশে নিরা বসে আছে।
নীড় মনে মনে : এই ফ্রডটা বউ সেজে বসে আছে??? ওহ গড… বাই অ্যাট এনি চান্স আমার সাইকো বউ এর সাথে আমার বিয়ের বন্দোবস্ত করেনি তো? করতেই পারে। আফটার অল মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী… বাট মাই মিসেস… এবার যে একটু হলেও ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে এসেছি … 😏।
নীড় মেরিনের রুমে গেলো। দেখলো মেরিনের রুমটা মোমবাতি দিয়ে সাজানো। মেরিন রকিং চেয়ার টাতে বসে আছে সেটার চারদিকেও মোমবাতি। মেরিন লাল রঙের ১টা শাড়ি পরে বসে আছে । চোখ জোরা বন্ধ ।
নীড় রুমে ঢুকলো।
মেরিন : বড্ড দেরি করে ফেলেছেন… আপনার বউটা কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করে আছে আপনার অফিশিয়াল বউ হবে বলে…
নীড় : অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়। লেট হার ওয়েট …
মেরিন দারালো।
নীড় : জানো না হওয়া এক্স বউ… আমি ভাবছিলাম যে তোমার জন্য কি মিষ্টি নিয়ে আসবো? কারন মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে তোমাকে দেখিনি… কি আনা যায় কি আনা যায় ভেবে অবশেষে পেলাম তোমার জন্য উপহার…
নীড় মেরিনের মুখোমুখি দারালো…
নীড় : ভেবে পেলাম তোমার উপহার তো আমি… আমার থেকে ভালো উপহার তোমার জন্য আর কিছু হতে পারোনা ।
মেরিন : …
নীড় : থ্যাংকস ফর দ্যাট সারপ্রাইজ গিফ্ট এন্ড দ্যা গুড বাই …
.
মেরিন : মোস্ট ওয়েলকাম।
নীড় : নেক্সট প্ল্যানিং কি?
মেরিন : ডিভোর্স কমপ্লিট করা।
নীড় : নো সেটাতো হয়না। ল’ জানোনা।
মেরিন : জানি… বাট বেবিটা তো আপনার নয় …
নীড় একটু ধাক্কা খেলো। মেরিন বোমা ফাটাবে বুঝতে পেরেছিলো। তবে এভাবে তা বোঝেনি।
নীড় : তাই ? তো কার ?
মেরিন : টনির…
‘টনি’ নামটা নীড়েক মেজাজ বিগরানোর কারন হয়ে উঠলো ।
মেরিন : জানেন আমি বিয়েটাতে বিশ্বাস করতামনা … তাই টনির সাথে সম্পর্কে থাকলেও বিয়ে করিনি। আপনি আমার পথের সামনে এসে অনেক বড় ভুল করেছেন… তাই জেদের বসেই বিয়েটা করতে হয়েছে। ঠিকই বলেছিলেন আপনি আমার সম্পর্কে…
নীড় : বাচ্চাটা যে আমার না তার প্রমান কি?
মেরিন : আমার মুখের কথা কি যথেষ্ট নয়। আর এমন মিথ্যা আমি কেন বলবো?
নীড় : মেরিন বন্যা সব করতে পারে। গিভ মি দ্যা প্রুভ…
মেরিন ; ওয়েট অ্যা মিনিট…
বলেই মেরিন ১টা ফাইল আনতে গেলো। কিন্তু পেলোনা । খুজতে লাগলো।
নীড় : তুমি কি এটা খুজছো ?
মেরিন নীড়ের দিকে তাকিয়ে দেখে সেই ফাইলটা।
নীড় : বাচ্চাটার ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট আমার কাছে হেটে হেটে চলে এসেছে। যেটা হসপিটালের মালিকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তুমি বানিয়েছো।
মেরিন অবাক হলো।
নীড় : তোমাকে আমি এখন ১টা থাপ্পর মারবো। ভয় নেই আসতে করেই মারবো যেন বেবি আঘাত না পায় … থাপ্পরের কারনটা ৩-৪ঘন্টা পর বলবো…
মেরিন : আপনার সাহ…
নীড় মেরিনকে থাপ্পর মেরে দিলো …
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 32
writer : Mohona
.
নীড় মেরিনকে থাপ্পর মেরে দিলো।
মেরিন : আপনি আমাকে …
নীড় : থাপ্পর মারলাম … এতো জটিলতার কারন কি … আমার মনে হয় যে তুমি নিউ ডিভোর্স পেপার রেডি করিয়ে রেখেছো।
মেরিন : …
নীড় : তো কোথায় তোমার ডিভোর্স পেপার? দাও সিগনেচার করে দিচ্ছি।
মেরিন বের করে দিলো। তবে ২টা কাগজ।।
মেরিন : ১টা ডিভোর্স পেপার অন্যটা বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার। আপনার আক আপনার বনপাখি নিরার… ২টাতেই সিগনেচার করুন।
নীড় : করবো… তবে আমার ছোট্ট ১টা প্রশ্ন। তার জবাব দিলেই সুন্দর করে সিগনেচার করে দিবো।
মেরিন : প্রশ্ন ? কিসের প্রশ্ন? আমি কোনো জবাব দিতে বাধ্য নই ।
নীড় : তাহলে আমিও সিগনেচার করতে বাধ্য নই… যদি ঝামেলা না চাও তবে জবাব দাও।
মেরিন : কি প্রশ্ন বলুন।
নীড় : ঘৃণার মেরিন হিসেবে থেকে কি লাভ পাও। ভালোবাসার মেরিন হতে কি ক্ষতি বলো তো?
মেরিন : সবার ভালোবাসার পাত্র সবাই হতে পারে… না তো এতে গর্বের কিছু আছে আর না তো প্রশংসা পাওয়ার মতো কিছু আছে। কারন… কারো ভালোবাসার পাত্র ২ভাবে হওয়া যায়। ন্যাচারালি ভালো হয়ে এন্ড এন্ড এন্ড ভালোগিরি দেখিয়ে ভালো হয়ে… তাই সবাই ভালোবাসার পাত্র হতে পারে। ইটস নট অ্যা বিগ ডিল… বাট বাট বাট … ঘৃণার পাত্র হতে গেলে কলিজা লাগে কলিজা … চাইলেই ভালোবাসার পাত্র হওয়া যায়। কিন্তু চাইলেই ঘৃণার পাত্র হওয়া যায়না। বিকজ…. কেউ ঘৃণার পাত্র হতেই চায়না … কারো সেই কলিজাই নাই…. বাট ওয়ান এন্ড অনলি মেরিন বন্যা খ …. উপস… মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর সেই কলিজা আছে … আম হ্যাপী টু বি অ্যা হেটেড পার্সন। আমি ঘৃণার মেরিন … তবে এটা আমার লজ্জা নয়… এটা আমার গর্ব … এটা আমার পরিচয় … পেয়ছেন জবাব? এখন সিগনেচার করুন …
.
নীড় : ওকে…
বলেই নীড় কলম নিয়ে আকিবুকি করে ২টা কাগজই ছিরে ফেলল।
মেরিন : কাজটা ঠিক করলেননা…
নীড় : ঠিক কাজ করতে বোরিং লাগে যে … ওকে আসছি…
মেরিন : সিগনেচার না করে আপনি কোথাও যাবেননা।
নীড় : যাবো…
বলেই নীড় বের হতে নিলো। মেরিন পেছন থেকে নীড় ঘাড়ের দিকে ইনজেকশন পুশ করে দিলো।
মেরিন : এভাবে তো যেতে দিবোনা ….
.
২ঘন্টাপর…
নীড় চোখ মেলল। দেখলো ওকে চেয়ারের সাথে আটকে রাখা হয়েছে। তবে এতে নীড় একটুও অবাক হলোনা…
মেরিন : মু্ক্ত হয়েও কয়েদি আপনি … ইন্টারেস্টিং…
নীড় : পেছন থেকে আঘাত করলে যে?
মেরিন : উপায় ছিলোনা…
নীড় : ভালো লাগলো যে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী আজকাল কেবল ঘৃণার আশ্রয় না ছলনার আশ্রয়ও নেয় …
মেরিন : সকল প্রেমিকের কাছে প্রেয়সী ভালোবাসতে শিখে , বাঁচতে শিখে …. আর আমি আপনার কাছ থেকে ছলনা শিখেছি…
নীড় : প্রথমত ছলনা কারো কাছে শিখতে হয়না … আর দ্বিতীয়ত আমি কি তোমার প্রেমিক ছিলাম আর তুমি কি আমার প্রেয়সী ছিলে …? হ্যা ছিলে। আর আমিও তোমারই প্রেমিক ছিলাম। ইভেন আছিও। তবে ভুল ধারমার শিকার আমি… আমরা । নয় কি?
মেরিন : আপনি আমার কি ছিলেন , কি আছেন আর কি থাকবেন সেটা কেবল আমিই জানি…. এখন সিগনেচার প্লিজ ।
নীড় : যদি না করি …
মেরিন : আপনার গলা থেকে মাথাটা কাটতে আমার একটু কষ্ট হবে …
নীড় : কাটতে পারবে…ট্রাস্ট মি… আমার গলায় ছুরি ধরেছো আমার একটুও ভয় করছেনা। বাট আই নো ভয় তুমি পাচ্ছে….
মেরিন : দুর্বলতা তো ১টাই আমার… আপনাকে ঘৃণা করার ক্ষমতা তো অর্জন করেছি। জানে মারার না। তবে তবে তবে … নাই বা মারতে পারলাম আপনাকে… বাট বাট বাট … আপনার সাধের ব…..নপাখি নিরাকে তো মারতে পারবো…. তাইনা?
বলেই মেরিন নীড় থেকে সরে গিয়ে ছুরিটা ঘোরাতে ঘোরাতে পিছাতে লাগলো।
নীড় : আই ডোন্ট কেয়ার… ডু হুয়াট ইউ ওয়ান্ট … বাট তুমি যেটা চাও সেটা হবেনা। আজকে তোমার জোর-জবরদস্তি তে কোনো লাভ হবেনা। আমি এই পেপারে সিগনেচার করবোনা। ছারতে পারবোনা আমি তোমাকে… কারন তুমিই আমার বনপাখি…
মেরিন : বাচাতে চাইছেন নিজের প্রথম ভালোবাসাকে?
নীড় : আমার প্রথম ভালোবাসাও তুমি…
মেরিন : ভালো লাগলো। তবে হাসি পেলোনা।
নীড় : হাসতে ভুলে গিয়েছো তুমি। তাই… বাই দ্যা ওয়ে… নিরার কাম তামাম হলে একটু দেখা দিও প্লিজ… কথা আছে। জরুরি।
মেরিন : কি কথা?
নীড় : বলবো তো। না তো তুমি হারাচ্ছো আর না তো আমি পালাচ্ছি । তাই শুভ কাজটা সেরে আসো । কারন শুভ কাজে দেরি করতে নেই মেরি মায়না …
.
একটুপর মেরিন ফিরে এলো।
নীড় : মরেছে নিরা? মরলে ভালো। আর না মরলে আরো ভালো। কারন ও মরে গেলে আজীবন ওকে নিজের হাতে শেষ না করার আফসোস থাকবে। বলোনা মরেছে?
মেরিন : কথা কমপ্লিট করুন … কি বলার ছিলো।
নীড় : হ্যা বলবো তো। তবে কিছু খেতে দাওনা। খেতে খেতে বলি। ভীষন ক্ষুধা লেগেছে ।
মেরিন : 😒।
নীড় : দাওনা গো… দেখো জাস্ট ডান হাতট ফ্রি করো… বাকি হাত পা আর করতে হবেনা। আর তুমি তো আর আমার হাত-পা দরি দিয়ে বাধোনি। সো জাস্ট চিল। ভয়ের কোনো কারন নেই। দাও না গো কিছু খেতে… পানি দিতেও ভুলোনা…
মেরিন খাবারের ব্যাবস্থা করলো । নীড় ডান হাত মুক্ত করলো। নীড় খাওয়া শুরু করলো।
নীড় : আচ্ছা অতৃপ্ত আত্মা বলো তো আম্মু কো…থায়?
মেরিন : মিরপুর ।
নীড় : হয়নি। আমি ওখানে রাখিনি।
মেরিন : দেন অ্যাসাইলাম ।
নীড় : না না হয়নি।
মেরিন : আপনাদের বাগান বাড়ি।
নীড় : এবারও ভুল।
মেরিন : কোথায় আম্মু …
নীড় : আন্ডারগ্রাউন্ড করে দিয়েছি।
মেরিন : হুয়াট ?
নীড় : ইয়াহ।
মেরিন কয়েকটা জায়গায় ফোন করলো। কনিকা নিখোজ। নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : হিলু… ওহ হ্যা আম্মুর সাথে তোমার বাবা মানে আমার কবির বাবাও আছে। গ্রেট । এই সুযোগে তাদের হানিমুনটাও হয়ে যাবে। ওয়াও আমি তো মহাপুরুষ…
মেরিন : প্রথম কথা আম্মু কোথায়? দ্বিতীয় মিস্টার খানকে আমি বাবা বলে মানিনা।
নীড় : কিন্ত কথা বলো তার স্টাইলে… পছন্দ অপছন্দ সব তার মতো। জেদ তার মতো। এমনকি প্রিয় রং ও তার মতো। তুমি কথা বললে মনে হয় কবির ফয়সাল খান কথা বলছে। তার শিক্ষায় শিক্ষিত … সব বাবা মেয়েদেরকে ভালোবাসার বানায়। যা বোকামো হয় । বাস্তবতা থেকে দূরে রাখে। বাট তোমার বাবা তোমাকে ঘৃণার বানিয়েছে। দ্যা পারফেক্ট লেডি…
মেরিন : আপনার এই স্টুপিড কাহিনি শোনার কোনো ইচ্ছা নেই আমার । আম্মু কোথায়?
নীড় : খালি আম্মুর কথাই বলবে? বাবার কথা বলবে না?
মেরিন : সে আমার বাবা না।
নীড় : তো কি নিরার বাবা?
মেরিন : হামম।
নীড় : ইউ নো হুয়াট মেরিন … তোমার সেদিনের কথাটা আমার স্পষ্ট মনে আছে… ‘সে খুব শীঘ্রই পিতৃহারা হতে চলেছে।’ আমি কবির বাবাকে নিয়ে মহা চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম। তাই তাকে সুরক্ষিত জায়গায় রাখি। কিন্তু সে পালিয়ে যায়। এবং আজও জীবীত … সেই সাথে তোমার খোশ মেজাজ। অনেক সময় লেগেছে আমার মিস্ট্রিটা সল্ভ করতে। দাদুভাইয়ের কাছে যেদিন পাস্ট শুনলাম তখন থেকেই ভাবছিলাম যে যদি সেতুকে বাবা সত্যিই ভালোবাসে তবে কেনই বা আম্মুকে বিয়ে করবে? তখন অংকটা মিলাতে পারিনি। ইচ্ছাও ছিলোনা … বাট বাট বাট থ্যাংকস টু ইউ… মাই ডিয়ার বউটা …
মেরিন : আপনি কোন অসাধ্য সাধন করেছেন সেটাতে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমি আম্মুকে চাই …
নীড় : পেয়ে যাবে পেয়ে যাবে। তবে আই হ্যাভ অ্যা কন্ডিশন । ডিলও বলতে পারো।
মেরিন : আপনি কোন ডিল করার অবস্থায় নেই।
নীড় : সেটাতো তুমিও নেই … দেখো ডিলটা তোমার পছন্দ হবে। শুনেই দেখোনা।
মেরিন : নো। আমি আমার আম্মুকে ঠিকই খুজে নিবো।
নীড় : ওকে ট্রাই। বাট যাবার আগে তোমাকে থাপ্পর মারার কারন টা শুনে যাও। তোমাকে তখন থাপ্পর মারলাম কারন তখন তোমার বাহানাটা আমার বড্ড কাচা মনে হয়েছে তাই…
মেরিন নীড়কে ১টা লুক দিয়ে চলে গেলো।
নীড় : বেশি ছোটাছোটি কোরোনা । আমার বাচ্চাটার কষ্ট হবে।
.
পরদিন…
নীড় : কালকে থেকে এই বন্ধ রুমটাতে আছি । ভালো লাগেনা।
মেরিন ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : এলে… কেমন লাগলো দৌড়ভাগ করে? পেলে ২জনকে?
মেরিন নীড়ের গলা চেপে ধরলো।
মেরিন : আমার আম্মু কোথায় ? 😡।।
নীড়ের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম … তবে মেরিনকে কোনো বাধা দিচ্ছেনা। হয়তো এটা ওর প্রাপ্য ।
মেরিন : বলুন আমার আম্মু কোথায়? বলুন…
নীড়ের দশা দেখে মেরিন ওকে ছেরে দিলো। নীড় কাশি দিতে লাগলো।
মেরিন : আমার আম্মু কোথায়? বলুন… বলুন … বলুন।
নীড় : উফফ বলছিতো … নিঃশ্বাসটা নিতে দাও। আম্মু কোথায় আছে সেটা বলবো। ইভেন হাজির করবো । তবে আমাদের বিয়ের দিন।
মেরিন : বিয়ের দিন? আমি আপনাকে বিয়ে করবোনা ।
নীড় : আমি কি বলেছি তোমার আমার বিয়ে? শখ কতো? আমি তো বলেছি আমার আর আমার বনপাখি মানে নি…রার বিয়ে।
মেরিন : আপনি নিরাকে বিয়ে করবেন?
নীড় : হামমম। করবো। প্রথম ভালোবাসাকেই আবার বিয়ে করবো। আর বিয়ের দিনই ডিভোর্স পেপারে সিগনেচার করবো। আগে ডিভোর্স পরে বিয়ে।
কথাটা শুনে মেরিনের রাগ উঠলো।
মেরিন : যখন এই ২টা কাজ করবেনই তবে এতো ড্রামা করলেন কেন?
নীড় : কারন আছে তো। আর শোনোনা । কথা তো শেষই হলোনা। ডিভোর্সও হবে বিয়েও হবে। ডিভোর্স হবে ১টা বাট বিয়ে হবে ২টা।
মেরিন : মানে?
নীড় : আবার কথা বলে। শোনো। আমার আর নিরার বিয়ে তো হবেই । সেই সাথে তোমার আর তপুদা… সরি তোমার আর টনিরও বিয়ে হবে।
মেরিন : হুয়াট? নো নেভার ।
নীড় : আমি তোমার ওপর কোনো জোর করবোনা। তবে … আম্মুর খোজটা পাবেনা।
মেরিন : আম্মুর খোজ তো আমি পেয়েই যাবো… আপনি বলুন আর নাই বলুন।
নীড় : পাবার হলে অলরেডি পেয়েই যেতে। আফটার অল মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী বলে কথা। বাট যেহেতু পাওনি সেহেতু পাবেও না। কারন আফটার অল মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর হাজবেন্ড নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন বলে কথা। 😘।
মেরিন : 😒।
নীড় : চাপ নেয়ার কোনো কারন নেই । ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নাও। আই ডোন্ট মাইন্ড। সমস্যা নেই কোনো। সমস্যা এই বদ্ধ রুম। তুমি তো জানোই ভালো লাগেনা এটা আমার। তাই। বাসায় যেতে পারি…
মেরিন : জন… জন…
জন হাজির হলো।
মেরিন : ভিডিও ক্লিপটা উনাকে দেখাও…
জন : জী ম্যাম…
জন ১টা ভিডিও প্লে করলো। নীড় দেখতে পেলো যে ওর মা-বাবা বন্দী অবস্থায় আছে।
নীড় : ওয়াও… আমার বাবাকে কতো কিউট আর মামনিকে কতো হ্যান্ডসাম ধুর… বাবাকে হ্যান্ডসাম আর মামনিকে কিউট লাগছে। ভালোই হলো কয়েকটা দিন ২জনের ঘ্যানঘ্যানানি শুনতে হবেনা। গ্রেট…
মেরিন চেয়ারে ১টা লাথি মেরে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন যেতেই নীড় হাহা করে হাসতে লাগলো।
জন : স্যার আপনি কি ঠিক আছেন?
নীড় : আই ডোন্ট নো। বাই…
.
৩দিন হয়ে গেলো। মেরিন কনিকা-কবিরের খোজ কোথাও পায়নি । কি করবে ভেবেই পাচ্ছেনা।
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 33
writer : Mohona
.
মেরিন ভেবেই পাচ্ছেনা কি করবে? ওর মা ওর দুর্বলতা। নীড় এতোকিছু কি করে জানলো? এসব বিষয় তো দাদুভাইও জানেনা। জানলে হয়তো নিজেকেই অপরাধী মনে করবে।
মেরিন : নীড় নীড় নীড়… এই ১টা নাম আমার সবকিছু এলোমেলো করে দিলো । সবকিছু… ড্যাম ইট । কোথায় রাখতে পারে উনি আম্মুকে? উনার রাখার মতো সব জায়গাতেই তো খোজ করলাম। কোথাও নেই… নীড়ের কাছে হার মানতে হবে ? কেন আল্লাহ কেন? কেন ওই লোকটার কাছে হারতে হবে আমায় ? কতোবার হারবো আমি নীড়ের কাছে? আমি জানি নীড় আম্মুর কোনো ক্ষতি করবেনা । কিন্তু আম্মুকে দেখা ছারা যে আমি ১দিনও থাকতে পারবোনা। আর না অন্যকারো বউ হতে পারবো… আমি যে আজও… আহ…
মেরিনের বুকের ব্যাথাটা আবার উঠলো। বেশ কিছুক্ষনপর একটু কমলো।
মেরিন : এই অসহনীয় ব্যাথাটা কিসের? কেন আজকে এই ব্যাথা মৃত্যুর ভয় জাগিয়ে তুলল মনে? আগে তো কখনো মৃত্যুকে ভয় হয়নি। নীড়কে ভালোবেসেও তো মৃত্যু ভয় হয়নি। তবে আজ কেন হচ্ছে? শুধু কি এই কারনে যে আমার মধ্যে ১টা নতুন প্রাণ আছে?
.
৭দিনপর…
মেরিন নীড়ের সাথে দেখা করতে নীড়ের বলা রেস্টুরেন্টে পৌছালো। আর গিয়ে নীড়কে খেতেই দেখলো।
মেরিন : আপনার খাওয়া হয়ে গেলে আমরা কি কথা বলতে পারি?
নীড় : কথা বলার জন্য খাওয়া কমপ্লিট করার কি প্রয়োজন? আমিও খাবো । তুমিও খাবে।
মেরিন : আমি কিছু খাবোনা।।
নীড় : খেতেই হবে। মনে করো এটাও আমার শর্ত ।
মেরিন : আপনি কি আমাকে পাগল পেয়েছেন?
নীড় : না। পাগলি। যাই হোক তুমি খাওয়া শুরু করলে আমরা কথা শুরু করতে পারি।
তুরুপের তাস এখন নীড়ের হাতে। তাই আপাদত নীড়ের কথা শোনা ছারা কোনো উপায় নেই। এটা মেরিন ভালোভাবেই জানে। কাউকে এ কারনেই নিজের দুর্বলতা দেখাতে নেই। তাই বাধ্য হয়েই মেরিন কিছুটা মুখে দিলো ।
মেরিন : এখন তো বলুন।
নীড় : হামম। দেখো তুমি মা হতে চলেছো। এই টাইমে ডিভোর্স হয়না। কিন্তু বিষয়টা যখন নীড়-মেরিন … তখন সবই সম্ভব । আর তুমি অলরেডি সম্ভব করিয়েও দেখিয়েছো।তুমি সত্যি গ্রেট।
মেরিন : আসল কথায় আসুন।
নীড় : যাচ্ছিতো। দেখো সাধারনত অন্যস ডিভোর্সের ক্ষেত্রে অ্যাপ্লাই করতে হয় । হেয়ারিং হয়। ৬মাস একসাথে থাকতে বলে। অ্যাট লাস্ট ডিভোর্স হয় । আমাদের সেটা হয়নি। আর হবেওনা । তবে তবে তবে… ৬মাসর বদলে ১মাস তোমাকে আমার বউ হয়ে আমার বাড়িতেই থাকতে হবে… আর ১মাস পর আমাদের বাসাতেই জোরা বিয়ের উৎসব হবে। আমাদের বাসা থেকেই তুমি টনির ঘরে যাবে। আর এই ১মাসে ৭-৮বার তুমি তোমার আম্মুকে দেখতে পারবে।
নীড়কে খুন করার ক্ষমতা না থাকায় আজকে জীবনে প্রথম মেরিনের আফসোস হচ্ছে।
নীড় : কি হলো ঝিম ধরে বসে রইলে যে? রাজী না থাকলে বলো…
মেরিন : আপনি এসব কিছুর ফল কি হতে পারে?
নীড় : আমার মামনি-বাবার জীবনও চলে যেতে পারে। আমি সবটার জন্যই প্রস্তুত । আমার দিক তোমাকে ভাবতে হবেনা…
মেরিন : …
নীড় : সিদ্ধান্ত নাও।
মেরিন : আমি রাজি…
নীড় : গুড বউ। ডিল পেপারটা যে কোথায় রাখলাম? কোথায় কোথায় কোথায় … গট ইট…
বলেই মেরিনের হাত নিজের মাথায় রাখলো।
নীড় : নাউ রিপিট মি… আপনার কথায় আমি রাজি।
মেরিন : এটাকি বাংলা সিনেমা চলছে?
নীড় : হ্যা … আসলে কি…তুমি ১টা জিনিস ভুল করেছো। আর সেটা হলো আমাকে নিজের দুর্বলতা দেখিয়ে। আমি জানি তোমার দুর্বলতা ৩
জন। আম্মু , দাদুভাই আর আমি…
মেরিন : নিজেকে লিস্টে রেখেছেন অকারনে।
নীড় : ভেবে নাওনা… তুমি যেমন কারন ছারা কাজ করোনা তেমনি আমি ‘অকারন’ ছারা কাজ করিনা। নাও রিপিট দ্যাট।
মেরিন : আপনার কথায় আমি রাজি। হয়েছে?
নীড় : ইয়েস…
মেরিন হাত নামিয়ে নিলো।
মেরিন : ডিভোর্স আর নিরার সাথে বিয়ে তো আমিই দিচ্ছিলাম। তাহলে এমন ড্রামা কেন?
নীড় : আমি বিয়ে করলে কি হতো ? তুমি তো আর করতেনা।
মেরিন কিছুনা বলে উঠে গেলো। চলে যেতে নিলো। নীড় চিল্লিয়ে
বলল : আজ রাতেই কিন্তু নিতে আসবো…
মেরিন চলে গেলো।
.
কবির : রাজি হয়েছে মেরিন?
নীড় : উল্টা দিকে যখন নীড় ছিলো তখন রাজি হওয়ারই ছিলো ।
কবির : আমার মেয়েটা যদি নিজের ক্ষতি করে ফেলে?
নীড় : করবেনা। কারন ও আরো ১টা ঘৃণার মেরিনের জন্ম দিতে চায়না।
কবির : মানে?
নীড় : জেনে যাবে। আম্মু কোথায়?
কবির : ছাদে। গাছে পানি দিচ্ছে…
নীড় ওপরে গেলো।
নীড় : হ্যালো বন্ধু…
কনিকা : তুমি এসেছো?
নীড় : হামম। সেই সাথে অনেক গুলো চকোলেটস ও এনেছি।
কনিকা : থ্যাংক ইউ। আচ্ছা আমি আর কতোদিন এখানে থাকবো গো? বোর হচ্ছি বসে থেকে থেকে। অ্যাসাইলামে জয়েন কবে করবো?
নীড় : রোগীদের মাঝে থাকতে বুঝি ভালো লাগে?
কনিকা : এত্তোগুলা …
নীড় : যাবে কিছুদিন পরই যাবে। তুমি গাছে পানি দাও আমি আসছি….
কবির : কি মনে হলো?
নীড় : যথেষ্ট ভালোর দিকে। এন্ড থ্যাংকস টু ইউ … আমি জানতাম যে তুমি আম্মুর সামনে এলে… আম্মুর আশেপাশে থাকলে আম্মুর জন্য ভালো হবে। রেজাল্ট আমাদের সামনে ।
কবির : এখন কি কনা পুরোপুরি সুস্থ ?
নীড় : না। ১০০% নয়। তবে প্রায় সুস্থ। তবে ১টা বার আম্মুকে হিপনোটাইজড করে দেখতে হবে।
কবির : তো দেখো…
নীড় : আজকে নয়। ২দিনপর। মেরিনকে দেখে কিভাবে রিয়্যাক্ট করে সেটা জানার পর। এই এতো বড় গেইম প্ল্যান করার কারন ২টা। মা-মেয়ে ২জন কেই সুস্থ করা। মেরিনেরও মানসিক রোগ আছে। হয়তো এই ১মাসে ওকে সুস্থ করা সম্ভব হবেনা। তবে ১টা উদ্দেশ্য হাসিল হবে। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই আম্মু সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যাবে।
কবির : ১মিনিট… তুমি কি বললে? মেরিনের মানসিক রোগ আছে মানে? আমার মেয়ে একদম সুস্থ । বুঝেছো?
নীড় : না বাবা। ও সুস্থ নয়। ওর এই অদ্ভুদ আচরন ওর মাবসিক রোগের জন্য। তবে বুঝতে পারছিনা ওর প্রবলেমটা কি? বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার নাকি বাইপোলার অ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার।যদিও ২টা একই…
কবির : এগুলো তোমার ভুল ধারনা।
নীড় : না বাবা। ঠিক বলছি। ও যে এমন রাগী সেটা কেন? ডিপ্রেশন , একাকিত্বতা , ভয় , অনাদর সবকিছুতে ও এমন হয়ে গিয়েছে।
কবির : আমার মেয়েটা কি সুস্থ হবেনা?
নীড় : আমি আছি তো …
কবির : বলোনা তু…
মেরিন : কি বলবেন উনি?
২জন সামনের দিকে তাকালো দেখলো মেরিন দারিয়ে আছে।
.
নীড় মনে মনে : ড্যাম ইট … মেরিন কি করে পৌছে গেলো।
মেরিন তো পৌছে গিয়েছে। তবে নীড়ের কথা কিছুই শুনতে পায়নি ।
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন নীড়ের গলায় থাকা লকেটটা ধরলো।
মেরিন : এই কদিন আপনার ওপর নজর রাখতে পারি বলে এখানে আসেননি। আজকে যখন দেখলেন আমি রাজি হয়ে গিয়েছি তখন এখানে চলে এলেন। প্ল্যানিংটা কিন্তু চমৎকার ছিলো। ইমপ্রেসিভ। তবে দোষটা আপনার না। আমার। যখন ১বার এসে দেখলাম যে এই মাহমুদ ভিলায় আম্মু নেই তখন এসে দ্বিতীয়বার আর চেক করিনি। আর সেই ভুলের জন্যই গত কয়েকদিন ধরে এতো টেনশন করতে হয়েছে। কিন্তু ভুলে গিয়েছিলেন যে হারাতে চাওয়া বা হারানোর মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য ।
নীড় : হার জিতের খেলা তুমি খেলো। আমি না। আমি চেয়েছিলাম …
মেরিন : আপনি চেয়েছিলেন যে টনি আর আমার মিথ্যা বিয়ের নাটক করতে। তাইতো? আপনার ভাবনাটাকে সত্যি করে দেই । আপনার দেয়া সেই ১মাস পর আমি সত্যি সত্যিই টনিকে বিয়ে করবো… আপনি নিরাকে বিয়ে করুন আর না করুন সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু আমি টনিকেই বিয়ে করবো। এন্ড ইউ মিস্টার খান … মিস্টার চৌধুরী আমাকে না চিনলেও আপনি তো আমাকে চিনেন?
কবির : আমি…
মেরিন : কিছু শুনতে চাইনা ।
বলেই মেরিন ওপরে গেলো।
.
গিয়ে দেখে কনিকা গুনগুন করে গান গাইছে আর গাছে পানি দিচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে যে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। গাব গাইতে গাইতে কনিকা লাইনটা ভুলে গেলো । মেরিন গানটা ধরলো। গাইলো।
কনিকা মেরিনের সামনে গিয়ে দারালো।
কনিকা : ভারী মিষ্টি গলা তো তোমার।
মেরিন : থ্যাংক ইউ। তোমার কন্ঠও খুব সুন্দর। আর গানটাও।
কনিকা : এটা আমার খুব পছন্দের গান। হুট করে ভুলে গেলাম।
মেরিন : হতেই পারে।
কনিকা : তোমার নাম কি?
মেরিন : মে… মেহরিন …
কনিকা : খুব সুন্দর নাম। জানো কবিরের খুব ইচ্ছা যে ওর মেয়ে বাবু হলে নাম রাখবে মেরিন।
মেরিন : …
কনিকা : কতোদিন পর কবির ভিন্ন কারো সাথে কথা বললাম। ও হ্যা ওই নার্স ও ছিলো। নীড় তো আজকে এলো। আচ্ছা তুমিই বলো আমাকে দেখে কি অসুস্থ মনে হয়?
মেরিন : একদম না।।
কনিকা : সেটাই তো। কয়েকটাদিন ধরে বন্দী থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। আজকে বুঝলাম মানুষ কিভাবে মানুসিক রোগী হয়… ডক্টর হয়ে আজ বুঝলাম …
মেরিন : আপনি ডক্টর ?
কনিকা : হামমম । সাইকিয়াট্রিস্ট ।
মেরিন : ওহ গুড।
কনিকা : তুমি কিন্তু আজকে খাওয়া দাওয়া করে যাবে।
মেরিন : হামমম।
কনিকার কথায় মেরিন বুঝতে পারলো যে কনিকা অনেকটাই সুস্থ। ভালো লাগলো মেরিনের ।
মেরিন মনে মনে : এখন কি আম্মুকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে? আর কি বলেই বা নিয়ে যাবো।
কনিকা : কি ভাবছো?
মেরিন : কিছুনা…
.
রাতে…
নীড় : মাঝেমাঝে নিজের ওপরই রাগ ওঠে ।
নীলিমা : নীড়… নীড়… এই নীড়। নিচে আয়।
নীড় নিচে নেমে গেলো।
নীড় : কি হয়েছে?
মেরিন : ওয়েলকাম করবেননা আমার?
নীড় ঘুরে দেখে যে দরজায় মেরিন দারিয়ে আছে। নীড় অবাক হলো।
মেরিন : আমাকে দেখা হয়ে গেলে এসে বরন করলে খুশি হবো মিস্টার চৌধুরী। প্লিজ …
নীড় : আমি বরন করবো ?
মেরিন : হামম। আপনি।
নীড় : মামনি বরনডালা সাজাও।
মেরিন : সাজাতে হবেনা। আমিই নিয়ে এসেছি। এই দেখুন।
নীড় দেখলো ।
মেরিন : আবার স্ট্যাচু হয়ে গেলেন যে?
নীড় গিয়ে মেরিনকে বরন করে নিলো। আজকে মেরিনের চোখে অন্যকিছু দেখতে পাচ্ছে।
মেরিন ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : ওয়েলকাম ।
মেরিন : থ্যাংক ইউ…
নীড় : চলো ফ্রেশ হয়ে রেস্ট করবে চলো।
মেরিন : হ্যা অফকোর্স ।
.
একটুপর…
ডক্টর রুমে ঢুকলো।
নীড় : শী ইজ বেস্ট গাইকোনোলজিস্ট। মিসেস পপি। আজকে থেকে পার্মানেন্টলি এ বাসাতেই থাকবে ।
মেরিন : গুড ।
নীড় : ডক্টর …
ডক্টর চেকআপ করলো।
পপি : সবই তো ঠিক আছে। বিপি একটু বেশিই হাই । টেনশন ফ্রি থাকতে হবে। ওকে?
মেরিন ১টা হাসি দিলো। পপি চলে গেলো।
মেরিন : আমার ভীষন ক্ষুধা লেগেছে।
নীলিমা : এই যে হাজির …
নীলিমা এতো খাবার নিয়ে দারিয়ে আছে….
.
চলবে…
ঘৃণার মেরিন 4
part : 34 (last)
writer : Mohona
.
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিলো। মেরিন কোনো রিয়্যাক্টই করলোনা। নীলিমা নানা ধরনের কথা বলল। এরপর চলে গেলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : কথা দিয়ে কথা ভাঙতে মেরিন শিখেনি ন… মিস্টার চৌধুরী।
নীড় : ডাকোনা একটাবার নীড় বলে।
মেরিন কিছু না বলে শুয়ে পরলো। নীড় মেরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
মেরিন : আমি কোনো ছোটবাচ্চা নই।
নীড় : তোমার প্রমিসের মধ্যে এটাও মানে আমার বউ হয়ে থাকাও কিন্তু একটা।
মেরিন : গুড। কন্টিনিউ…
মেরিন ঘুমিয়ে পরলো।
নীড় মনে মনে : তোমার ভেতরে ১টা অন্য তুমি আছো। ভয় হচ্ছে তোমার ইনার কন্ডিশন নিয়ে। তোমার কন্ডিশন জানতে হলে তোমার কিছু টেস্ট করানো প্রয়োজন যেটা তুমি কোনোদিনও করাবেনা। হিপনোটাইজ করাতে হলেও তোমার সম্মতি লাগবে। কি যে করি…
.
৩দিনপর…
নীড় মেরিনের অনেক কেয়ার করছে। মেরিন তবুও কোনো রিয়্যাক্ট করছেনা ।
নীড় : এই গান শুনবে। গান শুনলে বেবি আর তোমার … ২জনেরই ভালো লাগবে।
মেরিন : …
নীড় : বলোনা শুনবে?
মেরিন : …
নীড়ের মন খারাপ হলো । তবুও হতাশ না হয়ে গিটার এনে গান গাইতে লাগলো।
মেরিনের ভালো লাগলেও প্রকাশ করলোনা।
গান শেষ করে নীড় মেরিনের জন্য ফল কেটে নিয়ে এলো। এরপর খাইয়েও দিলো। খাওয়ানোর পর মেরিন হাত ২টা ধরলো।
নীড় : তোমাকে ভীসন ভাবে মিস করছি। তুমি আমার সাথেই আছো মনে হচ্ছো তুমি আমার সাথে নেই। সত্যিই নিজেকে ব্যার্থ মনে হচ্ছে। হাজার চেষ্টা করলেও কিছু ভুল শুধরানো যায়না। বড্ড বেশি অপরাধী মনে হচ্ছে নিজেকে। নিজের জীবন দিলেও হয়তে প্রমান করতে পারবোনা যে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি । তোমাকেই ভালোবাসি … আসছি। আম্মুর কাছে যেতে হবে।
মেরিন : কিছু তো বলিনি … তবুও কেন কষ্ট পাচ্ছেন ?
নীড় : কষ্ট পাচ্ছি… তুমি কিছু বলছোনা কেন … যখন শুনতে চাইতাম না তখন বলতে। আর এখন…
নীড় চলে গেলো।
.
নীড় কনিকাকে হিপনোটাইজ করেছে।
নীড় : তোমার নাম?
কনিকা : কনিকা।
নীড় : তোমা পুরো নাম…?
কনিকা : আমার পুরো নাম… আমার পুরো নাম … আমার পুরো নাম কনিকা কবির মাহমুদ খান।
নীড় : গুড। তোমার বাবার নাম?
কনিকা : তপন মাহমুদ।
নীড় : তোমার স্বামীর নাম কি?
কনিকা : ককবির ফয়সাল খান।
নীড় : তোমার মেয়ের নাম?
কনিকা : আমার মেয়ে… আমার মেয়ে…
নীড় : হ্যা তোমার মেয়ে। তোমার মেয়ের নাম কি? বলো।
কনিকা : আমার মেয়ের নাম মে… মে… বনপাখি…
নীড় : মে দিয়ে কি ? বলো বলো… তোমার মেয়ের নাম বলো।
কনিকা : মেরিন বন্যা খান…
কনিকা ঘেমে অস্থির… নীড় আর না ঘেটে কনিকাকে নরমাল করলো। এরপর ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখলো ।
কবির : কি অবস্থা?
নীড় : খুবই ভালো। কেবল সময়ের অপেক্ষা । ৩টা ইনজেকশন আছে। ৩দিন পরপর দিতে হবে। আশা করি সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যাবে।
কবির : আলহামদুলিল্লাহ। আচ্ছা তোমার মুখ এমন লাগছে কেন?
নীড় : কিছুনা বাবা।
.
বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। মেরিন বৃষ্টি দেখছে বসে বসে। কিছু ১টা ভাবছে। অসময়ের বৃষ্টি… বৃষ্টি দেখার সৌভাগ্য কখনো কোনোদিনও হয়নি । সাহস হয়নি। আর যখন ভয়টা ভাঙলো তখন দেখার সময়-সুযোগ হয়নি । বৃষ্টিতে প্রকৃতি স্থির হয়ে যায়।
নীড় পেছন থেকে ওর গায়ে চাদর দিয়ে দিলো ।
নীড় : বৃষ্টি দেখছো?
মেরিন : না বৃষ্টির শক্তি …
নীড় : শক্তির সাথে কিন্তু বৃষ্টির সজীবতাও আছে ।
মেরিন : হামমম হয়তো ।
নীড় : কিছু খেয়েছো?
মেরিন : হ্যা …
দিন কাটতে লাগলো। আর প্রতিনিয়ত নীড়ের মনে হচ্ছে যে ও হেরে যাচ্ছে ।
.
২০দিনপর…
মেরিনের কোনো হেলদোল নেই। নীড় অনুশোচনায় পুরে মরছে । রাতে মেরিন ঘুমিয়ে আছে।
নীড় : হ্যালো সোনামনি। ইটস মি… তোমার বাবা। আর হয়তো বেশিদিন তোমার সাথে এভাবে কথা বলতে পারবোনা । তোমার আম্মুর মান আমি ভাঙাতে পারিনি। কারন অপরাধটাও বড়। আমার ধারনার ১মাস শেষ। জানিনা তোমার আম্মু কি করবে? কি বলবে… বাবা তোমাকে আর তোমার আম্মুকে ভীষন ভালোবাসে…
মেরিন রোজই ঘুমের ভান ধরে থেকে নীড়ের কথা গুলো শুনতে পায়। আর মনে মনে হাসে ।
.
পরদিন…
নীড় : মেরিন।
মেরিন : বলুন।
নীড় : তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে তুমি আমাকে ক্ষমা করোনি। সত্যিই কি তাই?
মেরিন : হ্যা হয়তো।
নীড় : তুমি কি ১টা বার আমাদের বেবির কথা ভেবেছো? তুমি কি চাও আরো ১টা ঘৃণার মেরিন সৃষ্টি হোক? তুমি কি চাও ওর ভবিষ্যৎ টাও নষ্ট হয়ে যাক… ওও সবার ঘৃণা পাক?
মেরিন : আমার বাচ্চাটাকে কেউ ঘৃণা করবেনা। সবাই ভালোবাসবে।
নীড় : মেরিন প্লিজ … ক্ষমা করে দাও। প্লিজ…
মেরিন : চেয়েছিলাম। কিন্তু …
নীড় : তুমি কি আমার দিকটা ভেবে দেখবেনা? তখন তো আমি নিরাকেই বনপাখি ভেবে ভালোবেসেছিলাম। তখন কি আমার পক্ষে পসিবল ছিলো তোমাকে সহজে মেনে নেয়ার? তুমিই বলো। ১টা কি সুযোগ দেয়া যায়না?
মেরিন : যেই স্বামী তার স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি করতে চায়… প্রস্টিটিউট বলে… তার কি সুযোগ চাওয়া চলে? বলুন তো…?
নীড় : ছোট থেকে তোমাকেই তো অন্ধের মতো ভালোবেসেছি। তাই যখন বনপাখির খোজ পেলাম তখন নিরাকেই উন্মাদের মতো ভালোবেসেছি। তুমি আমাকে ভালোবাসো। আর শাস্তিও আমাকেই দিচ্ছো। নিরাকে শাস্তিও দিচ্ছোনা। আবার লুকিয়েও রেখেছো যেন আমি ওর কিছু না করতে পারি… দাও কষ্ট। তবে তুমি যেমন আমার কাছে আঘাত পেয়ে আমার থেকে দূরে সরে গেলে… ঘৃণা শুরু করলে … আমি তেমন কখনোই করবোনা। যতোদিন বেচে থাকবো ততোদিন তোমাকে ভালোবেসেই যাবো।
মেরিন : গুড।
নীড় : তবে আমার তরফ থেকে তোমার জন্য ১টা উপহার আছে।
মেরিন : কি?
নীড় : নিচে চলো।
নীড় মেরিনের হাত ধরে নিচে নিয়ে গেলো।
মেরিন নিচে গিয়ে দেখে কবির-কনিকা দারিয়ে আছে। দাদুভাই আর জনও আছে।
মেরিন : আম্মুকে এখানে কেন এনেছেন?
নীড় : তোমার আম্মুই আসতে চেয়েছে।
মেরিন : মানে?
নীড় : মানের জবাব পেয়ে যাবে। যদি আম্মুর মুখোমুখি হয়ে আম্মুকে এই প্রশ্নটা করতে পারো।
মেরিন : আম্মুকে নিয়ে খেলা আমার পছন্দনা।
নীড় : আমি এবার কোনো খেলা খেলছিনা …
দাদুভাই : দিদিভাই… এখানে এসো।
মেরিন দাদুভাইয়ের কাছে গেলো।
দাদুভাই : কনামা… এটাই তোমার…
কনিকা : বনপাখি… আমার বনপাখি…
মেরিন অবাক হয়ে নীড়ের দিকে তাকালো। নীড় ১টা মিষ্টি হাসি দিয়ে মাথা হালকা নারিয়ে হ্যা বলল।
কনিকা : আমার বাচ্চাটা কতো বড় হয়ে দিয়েছে কবির… এখন সেও নাকি মা হতে চলেছে ।
বলেই কনিকা মেরিনের কপালে চুমু একে দিলো। মেরিনের চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো। মাকে জরিয়ে ধরে নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।
কনিকা : কাদেনা বনপাখি… আম্মু এসে গিয়েছিনা.. আর কাদতে হবেনা । তুমি যে আমার সব। তোমার জন্যই তো জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আজও বেচে আছি।
অনেক মেলোড্রামা হলো। সব সত্য সামনে এলো। দাদুভাইয়ের খানিকটা অনুশোচনা হলো। সে মনে করলো সবকিছুর জন্য নিজেকেই দায়ী মনে করলো। পরে সবাই মিলে দাদুভাইকে সামলে নিলো। নীড় কনিকাকে সবটাই বলেছে কবিরের দুর্বলতাটা। কনিকা ১জন ভালো মনের মানুষ হওয়াতে কবিরকে ক্ষমা করে দিয়েছে।
.
পরদিন…
কনিকা : কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে?
মেরিন : এখনই দেখতে পারবে।
কনিকা কিছুটা সামনে এগিয়ে দেখে সেতু আর নিরা ১টা কাচের বদ্ধ জায়গায় বন্দী অবস্থায় আছে। আসলে ওরা প্রায় ১টা মাস ধরে এখানে বন্দী । ওদের রোজ জাস্ট বেচে থাকার জন্য একটু খাবার আর পানি দেয়া হয়েছে। বিষাক্ত গ্যাস দেয়া হয়েছে কাচের ভেতরে। এসিডও ফেলা হয়েছে ওদের ওপর। আবার কখনো গরম পানি। আবার কখনো হাত-পা ক্ষত বিক্ষত করা হয়েছে । ওদের শরীরে চামড়া গুলোর করুন অবস্থা । ওরা এখন প্রতি পলকে পলকে কেবল নিজেদের মৃত্যুই কামনা করছে।
কনিকা : সেতুর সাথে ও নিশ্চয়ই নিরা।
মেরিন : হামমম।
কনিকা : ওদেরকে এভাবে?
মেরিন : আম্মু তোমার সকল অপরাধীদের আমি শাস্তি দিয়েছি। শুধু এই সেতু বাদ। নিরা আমার অপরাধী । গত প্রায় ১টা মাস ধরে ওরা এখানে বন্দী । ওদের চুরান্ত শাস্তিটা তোমাকে নিজের চোখে দেখাবো বলেই ওদের এতোদিন বাচিয়ে রেখেছি…
কনিকা : বনপাখি… আমি তোমাকে এই শিক্ষা দিয়েছি ? আমি তো তোমাকে সবাইকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলাম। হ্যা আমি জানি… যে গত ১৫-১৬টা বছর ধরে তুমি অনেক কিছু সহ্য করেছো। কিন্তু মা… মানুষের জীবন নেয়া কি ঠিক ?
মেরিন : আজকে আমি যেখানে দারিয়ে আছি আম্মু … সেখানে দারিয়ে ঠিক-ভুল বলতে কিছুই আমি বুঝিনা। আমি যে আজও নিজেকে শেষ করে দেইনি তার ২টা কারন… এক তোমাকে সুস্থ করা। আর দুই … ওদেরকে শেষ করা … তুমি সুস্থ হয়েছো… যদি ওদের আমি শেষ করতে না পারি… তবে যে মরেও শান্তি পাবোনা আম্মু।
কনিকা : বনপাখিই।।
মেরিন : আম্মু… আমি কখনো তোমার অবাধ্য হইনি। কিছু চাইওনি। আজকে চাইছি… ওদের শেষ করতে অনুমতি দাও প্লিজ… কথা দিচ্ছি আর কখনো কোনো অন্যায় কাজ করবেনা মেরিন… অন্যকারো জীবন নিয়ে খেলবে না মেরিন … প্লিজ আম্মু … প্লিজ।
মেয়ের করুন মুখটাই বলে দিচ্ছে যে কতোটা কষ্টে ও বড় হয়েছে। কতো কি সহ্য করেছে।
কনিকা : বেশ অনুমতি দিবো। তবে আমারও ১টা কথা আছে। রাখবে।
মেরিন : হ্যা আম্মু। তুমি যা বলবে আমি তাই শুনবো। শুধু এই অনুমতিটা দাও…
কনিকা : বললাম তো দিবো। তবে কবির আর নীড়কে ক্ষমা করে দিতে হবে… কবিরকে বাবা বলে ডাকবে…
মেরিন : বেশ ডাকবো।
কনিকা : নীড়কে ক্ষমা…?
মেরিন : আম্মু নীড়কে বহু আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি… তোমারই তো মেয়ে আমি বলো… যাকে ভালোবাসি তাকে ক্ষমা না করে পারি কি করে? অনেক অনেক ধন্যবাদ আম্মু। পারমিশন দেয়ার জন্য ।
মেরিন ২জনকে গুলি করে মেরে ফেলল।
.
নীড়ের দেয়া ১মাস আজ শেষ হলো। নীড় বুঝতে পেরেছে যে ও হেরে গিয়েছে। মেরিনকে আটকে রাখার কোনো হাতিয়ারই ওর এখন নেই । কিন্তু মেরিনকে অন্যকারো হতে দেখা যে ওর পক্ষে সম্ভবনা। সবাই নিচে বসে আছে। অপেক্ষায় আছে কখন মেরিন নিচে নামবে? কি বলবে?
সকলের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মেরিন নিচে নেমে এলো। সবাই দারিয়ে গেলো।
মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : আমার হাজার হিংস্রতার মধ্যে আপনার প্রতি আমার হিংস্র ভালোবাসা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার অহংকার থাকবে। যে নামের সাথে আপনার নাম জরিয়ে আছে তার সাথে অন্যকারে নাম আর কখনো জরানো সম্ভব না। হৃদয়ে জায়গা দেয়াও সম্ভবনা। আর কারো বউ হয়ে বেচে থাকাও সম্ভব না। তাই টনি-তপু… কাউকেই আর বিয়ে করা সম্ভবনা। কিন্ত কিছু কিছু জিনিস আমাদের হাতে থাকেনা। আমরা চাইলেও সেগুলো নিয়ন্ত্রন করতে পারিনা। চাইলেও আমার থাকা সম্ভব না। তবে আমার শেষ বিদায় এখান থেকেই হবে। আর আমাদের সন্তান আপনার পরিচয়েই পরিচিত হবে। এ বাড়িতে আমি ফিরে আসবো। নতুন সদস্য কে নিয়ে… কিন্তু এখন আমায় যেতে হবে। প্লিজ যাওয়ার অনুমতি দিন নীড়…
আজ অনেকদিন পর ভালোবেসে মেরিন নীড় বলে ডাকলো। নীড়ের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো। মেরিন নিহাল-নীলিমার সামনে গিয়ে দারালো।
মেরিন : তোমাদের জন্যই আমি মা-বাবার ভালোবাসা উপলব্ধি করেছি। তোমরা অসাধারন। তোমাদের মতো কেউ নেই। অনেক অন্যায় তোমাদের সাথেও করেছি… ক্ষমা করে দিও।
নীলিমা মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
নীলিমা : থেকে যা না মায়ের কাছে।…
মেরিন : …
নিহাল-নীলিমা-নীড় কে কাদিয়ে মেরিন খান বাড়িতে চলে গেলো। খান সম্রাজ্ঞ মেরিন কবিরের নামে করে দিয়েছে।
.
৭মাসপর…
সবাই অপারেশন থিয়েটারের বাহিরে দারিয়ে আছে। অপেক্ষা করছে কখন খুশির সংবাদটা পাবে…
নীড়ের যেন দেরি সইছেই না। অবশেষে ডক্টর বেরিয়ে এলো।
ডক্টর : ছেলে হয়েছে…
সবাই তো আনন্দে আত্মহারা… তবে নীড়ের দৃষ্টি ডক্টরের মলিন মুখে।
নীড় : ডক্টর … আমার মেরিন কেমন আছে?
ডক্টর : …
নীড় : বলছেননা কেন?
ডক্টর : ওর হাতে বেশি সময় নেই…
কথাটা শুনে সবার পায়ের নিচেরই মাটি সরে গেলো।
নীড় : মমমানে?
ডক্টর : মেরিনের হার্ট ব্লক … ওর প্রেগনেন্সিতেও অনেক ইস্যু ছিলো। ও জানতো যে বেবি জন্মানোর প্রায় ৭২ঘন্টার মধ্যেই ও মারা যাবে। প্রায় শুরুর দিকেই ওকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু যখন ওকে এটা জানাই তখন ও হাহা করে হেসে ওঠে। আর আমাকে হুমকি দেয় যেন বেবি পৃথিবীতে আসার আগ পর্যন্ত আমি কাউকে কিছু না বলি। যখন না করি তখন ও বলে ও নিজেকে শেষ করে দিবে। সেই সাথে আমার মেয়েকেও আটক করে । তাই আই ওয়াস হেল্পলেস…
নীড় বুঝতে পারলো যে কেন সেদিন মেরিন ওদের বাসায় ১মাসের জন্য গিয়েছিলো? আর কেনই বা চলে যাওয়ার সময় কথাগুলো বলেছিলো।
.
কয়েকঘন্টাপর…
নীড় মেরিনের সাথে দেখা করতে গেলো।
মেরিন : রেগে আছেন বুঝি?
নীড় : না রেগে থাকবো কেন? আমি তো মহাখুশি। তাকধিনাধিন নাচতে ইচ্ছা করছে।
মেরিন মুচকি হাসি দিলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
নীড় : ঘৃণা করি…
মেরিন : আমার মৃতদেহ কিন্তু চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে যাবেন। ওখান থেকেই শেষ বিদায় দিবেন।
নীড় : …
মেরিন : নীড়… মিস করবেন আমাকে?
নীড় : না। মিস করার কোনো কারন নেই।
মেরিন : গুড।
নীড় : কি ভেবেছো? জিতে গিয়েছো? নো নেভার… । বলেছিলামনা কখনো হারোনি কারন তোমার সামনে নীড় আসেনি।। তাই হারোনি। আজকে হারবে । আর তোমাকে মিস তো তখন করবো যখন তুমি আমাকে ছেরে যাবে… তুমি কোথাও যাচ্ছোনা। আমি আমার প্রাইভেট জেট দিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ১ডজন বেস্ট ডক্টর আনিয়েছি… তারা যদি তোমাকে সুস্থ করতে না পারে তবে জীবন নিয়ে আর দেশে ফিরতে পারবেনা।
মেরিন : কি বলছেন কি?
নীড় : যেটা শুনলে… তোমারই তো বর আমি… আফটার অল সাইকো বউয়ের সাইকো জামাই। সাইকো কাপল আমরা … 😎।
মেরিন : …
একটুপর মেরিনকে আবার ওটি তে নেয়া হলো….
.
৩দিনপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। আউট অফ ডেঞ্জার ।
নীড় : হারিয়ে দিলাম তো?
মেরিন মুচকি হাসি দিলো।
নীড় : ভালোবাসি.. ভীষন ভালোবাসি। আই জাস্ট লাভ ইউ ।
মেরিন : আই লাভ ইউ টু …
নীড় : তুমি ঘৃণার নও । ভালোবাসার মেরিন। নীড়ের মেরিন।
ওদের ছেলের নাম রাখা হলো নির্বন ।
ফাইনালি ঘৃণা শেষ হলো।
.
💖💖💖সমাপ্ত💖💖💖