জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড

জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড

পরিচিতি

ভূমিকা
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসূলিহিল কারিম। আম্মাবাদ:
কওমি মাদরাসা আমাদের চেতনার বাতিঘর। কওমি মাদরাসাই হলো আদর্শিক জাতিগঠন ও মুসলিম উম্মাহর সঠিক রাহবারির আলোর মিনার। কওমি মাদরাসা আমাদের প্রাণের ঠিকানা। প্রেমের আশ্রয়স্থল। শিকড়ের গভীরতা। রক্তের সংমিশ্রণ। আত্মার স্পন্দন বলা চলে।
কওমি মাদরাসা হলো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হেরার জ্যোতির আলোকিত ভূবন। সাহাবাদের স্বর্ণালী চেতনার নববী ইলম চর্চার এক বাগিচা। দারুল উলূম দেওবন্দের চেতনা ফেরি হয় যেখানে। এখনো এদেশের কোটি কোটি মানুষের দ্বীনী পথচলার আলোকবর্তিকা। আমাদের স্বপ্নের এই কওমি স্রোতধারায় আমল-আখলাক, সুন্নাহ প্রতিপালন ও তাকওয়া আজ কতটুকু বাকি আছে তা সবার চোখের সামনে। তাই বলে হতাশ হলে চলবে না। এই জাহেলি সমাজে আবার আকাবির-আসলাফের আমানত নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। প্রয়োজন আরেকটি কওমি বিপ্লবের। আবার ঢেলে সাজাতে হবে কওমি শিক্ষা, চেতনা আর তাহযীব- তমদ্দুনকে।


আকাবিরে দেওবন্দ যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তার অনুসরণে আমাদের চেতনাকে শাণিত করতে হবে। তা’লীম-তারবিয়ত ও তাযকিয়ার মেহনতকে আমাদের আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি। নবীওয়ালা ফিকির, সাহাবাওয়ালা দরদ ও আকাবের-আসলাফের হুসনে আখলাকের মাধ্যমে দাওয়াত ও তা’লীমের বুনিয়াদী ধারায় কওমি মাদরাসাগুলোকে ঢেলে সাজাতেই ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর পথচলা। সীরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ, সাহাবা আদর্শ ও আকাবেরে দেওবন্দের আদর্শ ও উদ্দেশ্য ও মিশনকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। আমাদের সন্তানকে রক্ষা করা আমাদের জিম্মাদরী। একসময় কওমি ও আলিয়া নামে মাদরাসা শিক্ষার দুটি ধারা উপমহাদেশে তৈরি হয়েছিল। দুটি ধারার মাঝে মৌলিক পার্থক্য ছিল নিজস্ব স্বকীয়তার প্রশ্নে। আজ খোদ কওমি মাদরাসার সাথে যারা নিবিড়ভাবে জড়িত, কওমি মাদরাসা কমিটির সদস্য, দাতা, শুভাকাঙ্ক্ষী ও অভিভাববৃন্দ ইদানিং উদ্বিগ্ন হয়ে বলছেন, স্বকীয়তার প্রশ্নে যে প্রতিষ্ঠান আপোষহীন ছিল তারা আজ চরমভাবে স্বকীয়তা হারাতে বসেছেন নানান কারণেই। এছাড়া অনেক পরহেজগার খোদাভীরু তাকওয়াবান আলেম ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা রক্ষার স্বার্থে বিকল্প কিছু কওমি মাদরাসা নানান স্থানে ইতোমধ্যে খেলা শুরু করেছেন। তবে আজো যে কিছু কওমি মাদরাসা তার বুনিয়াদী ঐতিহ্য আর সত্যিকারের স্বকীয়তার উপর নেই তা কিন্তু নয়। সংখ্যায় হয়তো কম; তবে যারা আঁকড়ে আছেন কওমির মূল চেতনা ও বুনিয়াদী ঐতিহ্যের ধারা। এই স্রোতকে আরো বেগবান করা উম্মাহর প্রাণের দাবি। মুফাক্কিরে ইসলাম আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী [রহ.] এর ভাষায়-
দেওবন্দী আদর্শের বৈশিষ্ট্য হলো চারটি:
এক. এ দরসগাহের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এ দরসগাহ মতনৈক্যকে পেছনে ফেলে তাওহীদ, সুন্নত ও সীরাতের উপর নিজের দৃষ্টি রাখবে। আর এটা এমন ওয়ারাছাত এবং আমানত, যা মুজাদ্দেদে আলফে সানী, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী, শাহ ইসমাঈল শহীদ এবং সায়্যিদ আহমদ শহীদ, হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী, [রহ.]-এর ওসীলায় এ ধারা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এবং এখন পর্যন্ত শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে আছে। দুই. সুন্নাতের অনুসরণের জযবা এবং ফিকির থাকতে হবে।
তিন. আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি করার ফিকির, যিকির এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার জযবা থাকতে হবে।

চার. আল্লাহর কালেমা বুলন্দীর জযবা থাকতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে। এ চারটি শিরোনাম যার মধ্যে থাকবে, সে দেওবন্দী। যদি এর মধ্যে কোন একটি কমে যায়, তাহলে সে পূর্ণ দেওবন্দী নয়’। (কারওয়ানে জিন্দেগী, ৩/৩১০-৩১১)
এ প্রসঙ্গে কারী তায়্যিব সাহবে [রহ.] এর বক্তব্য অবশ্যই বেশ চমৎকার। তিনি বলেন, উলামায়ে দেওবন্দের গুণ হলো, দিলে দরদমন্দ, ফিকরে আরজুমন্দ, যবানে হুশমন্দ’ অর্থাৎ তারা হবেন দরদী হৃদয়, সমুন্নত চিন্তা এবং সুপ্রাজ্ঞ ভাষার অধিকারী।’


হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানি [রহ.] মোগল হুকুমতে একা এক ইনকিলাব এনেছিলেন। তারই নীরব প্রচেষ্টার বরকতে আকবরের সিংহাসনে আমরা দেখি আওরঙ্গজেবের মতো আলেম, ফকীহ ও দ্বীনদার বাদশাহকে। শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলবী [রহ.] বিশাল বিস্তৃত এই হিন্দুস্তানের গতিধারা বদলে দিয়েছিলেন এবং সমগ্র চিন্তাব্যবস্থা ও শিক্ষাব্যবস্থার ওপর সুগভীর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। মাওলানা মুহাম্মদ কাসেম নানুতবী [রহ.] এক সর্বগ্রাসী আশা ও নৈরাশ্যের মাঝে এবং ‘পিছুহটা’ এক নাজুক সময়ে এত বড় ইসলামী দুর্গ তৈরি করেছেন এবং দ্বীন ও শরীয়তের কঙ্কাল দেহে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছেন। হযরত মাওলানা ইলিয়াস [রহ.] ঈমানের মেহনত এবং দ্বীনি দাওয়াতের যে জাযবা ও হিম্মত এবং উদ্যম ও মনোবল মানুষের মাঝে সঞ্চার করেছেন তা এক কথায় বিস্ময়কর। একজন ইলিয়াস [রহ.] বদলে দিলেন গোটা পৃথিবীকে। এখন মাদরাসা থেকে বের হয়ে আসা আমাদের ওলামা-ফোযালা এই প্রাণ ও প্রেরণা থেকে, এই জাযবা ও চেতনা থেকে এবং এই রূহ ও রূহানিয়াত থেকে প্রায় শূন্যের পর্যায়ে চলে যাচ্ছেন।
শুনলে অবাক হবেন, আজ আমাদের পাঠ্যক্রমের সাথে না দেওবন্দের মিল আছে, না আছে নদওয়াতুল উলামার, না আছে মাদরাসায়ে কাশিফুল উলুমের, না আছে দরসে নেজামীর সাথে কোন সামাঞ্জস্য আর না আছে
আরব বিশ্বের সাথে কোন যোগসূত্র। আবার নেই কোন গবেষণামূলক কার্যক্রমও। আমরা আবার দরসে নিজামীর সমন্বয়ে আকাবের- আসলাফদের চিন্তা ও চেতনার আলোকে যুগ উপযোগী পাঠ্যক্রম ও সিলেবাস তৈরি করছি। যা শাইখুল ইসলাম মাওলানা সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানী ‘নেসাবে তা’লীম’ হিসেবে পেশ করেছিলেন, যে পাঠ্যসূচির কথা আলোচনা করেছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা কাসেম নানুতবী [রহ.]।                                                আল্লামা আলী মিয়া নদভী রহ. এর ভাষায়-

‘তিক্ত সত্য এই যে, এখন
মাদরাসা ও তার বাসিন্দাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তি যেমন স্থবির, তেমনি তাদের হৃদয়বৃত্তিও অবনতিশীল। যেমন আধুনিক যুগ জিজ্ঞাসার সমাধান থেকে বঞ্চিত, তেমনি সীরাতে সাহাবা থেকেও বিমুখ।’

আমরা এই জায়গাটিকে আবার উন্নত করতে চাই। তার মূল রূহানীয়তে জানদার করে সাজাতে চাই ইলমে ওহির এই বাগানকে। তাই ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ আকাবির- আসলাফের আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ এবং লালন করে এদেশে ইলমে ওহির খেদমতে আবার প্রাণ ফিরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চায়। এজন্য এটিকে জিম্মাদারী মনে করে যার যার জায়গা থেকে দ্বীনের অনেক বড় খেদমত ও আমানত মনে করে বোর্ডের পাশে দাঁড়ানো সকলের উচিত। এই মুহূর্তে এ দায়িত্বে আর অবহেলা করার সুযোগ নেই। আমরা যেন আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অবহেলা না করি। ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ আপনার সেই ফিকিরের অংশিদার। সন্তানদের মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সন্তানের তরবিয়তের ব্যাপারে শৈশব থেকে ফিকির করতে হবে। শিশুদের তরবিয়ত এটি আমাদের কাছে অনেক বড় আমানত। শিশুর প্রতিভার সহীহ বিকাশ করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্ম আফসোসের কারণ হবে। আর এই ব্যাপারে সচেতনতা দুনিয়া ও আখেরাতের সৌভাগ্যের কারণ হবে।

আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন সত্যিকারের নায়েবে নবী হয়, ওরাসাতুল আম্বিয়া হয়, আলেম ও দাঈ ইলাল্লাহ হয়। একজন দাঈ ও দেশপ্রেমিক আদর্শ মানুষ ও উম্মাহর রাহবার হয়, একজন অভিভাবকের জন্য, একজন মায়ের জন্য, একজন বাবার জন্য এর চেয়ে বড় চাওয়া আর পাওয়া কী হতে পারে? এর চেয়ে বড় সফলতা ও কামিয়াবী আর কী হতে পারে? এজন্য সন্তানকে শৈশব থেকে তরবিয়ত করতে হবে। তার চিন্তা-চেতনা ও বেড়ে ওঠাকে সহীহ তরবিয়তে গড়ে তুলতে হবে। তার মনোযোগকে সঠিক চিন্তা, সঠিক আদর্শ, সঠিক আদব-আখলাক আর মেজাজে তৈরি করতে হবে। এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। আমাদের সন্তানকে আকাবির-আসলাফ ও সাহাবা আদর্শে গড়ে তুলতে হবে।
আপনার এই স্বপ্নের সারথি ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’। এসব বিষয়কে সামনে রেখেই মূলত একটি আমানত জিম্মাদারী ও জবাবদিহিতা থেকে ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর পথচলা। গতানুগতিক রুসুম-রেওয়াজের বাইরে স্রোতের সাথে ভেসে না গিয়ে উম্মাহর জন্য সীরাত ও তাকওয়াভিত্তিক আদর্শিক পথ চলাই আমাদের লক্ষ্য। আল্লাহ আমাদের সকল মেহনত, ফিকির ও প্রচেষ্টাকে কবুল করুন। আমীন।


লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
ইলমে ওহীর সংরক্ষণ, লালন, বিকাশ, প্রচার ও বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম [রাযি.)-এর সীরাতের আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ অনুসরণ এবং বাস্তবায়ন করা।

 

বোর্ডের কার্যক্রম
১. কওমি মাদরাসার আদর্শ, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে আঁকড়ে ধরে পথচলার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, কওমি শিক্ষা সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা।
২. সারাদেশের বোর্ডের আওতাধীন মাদরাসাগুলোর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা গ্রহণ।
৩. কওমি মাদরাসা পরিচালনার পাশাপাশি দেশের সকল মসজিদে বয়স্ক দ্বীনী শিক্ষা ও শিশুদের জন্য মক্তব শিক্ষার প্রাক-প্রাথমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা। বয়স্ক দ্বীনী শিক্ষা ও শিশুদের মক্তব শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সিলেবাস ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যাতে করে সীরাতভিত্তিক সাহাবায়ে কেরামের নকশায় ইলমকে মসজিদ ভিত্তিক সর্বসাধারণের জন্য ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর করা যায়।
৪. নারীদের জন্য নির্দিষ্ট দ্বীনী সিলেবাস প্রণয়ন করা। যাতে বিশুদ্ধ কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল ও ঘরে তা’লীম- তরবিয়ত আঞ্জাম দিতে পারেন।
৫. কওমি মাদরাসার ছাত্রদের মানোন্নয়নে শিক্ষা, গবেষণা নির্ভর ও বুদ্ধিভিত্তিক সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৬. শিক্ষার মানোন্নয়নে সচেতনতা তৈরি, সভা-সেমিনার, সম্মেলন, মেধা ও প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম-এর মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষককে যোগ্য করে গড়ে তোলা।
৭. মাদরাসা পরিচালনায় যে কোন সংকট সমাধানে সচেষ্ট হওয়া।
৮. ছাত্র-শিক্ষদের যেকোন সংকট ও সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হওয়া। তাদের পাশে দাঁড়াতে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
৯. শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা।
১০. দরসে নেযামীর পাশাপাশি সাধারাণ শিক্ষা, আইটি ও কারিগরীসহ কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা।

 

বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ
১. ইলমে ওহীর চর্চায় সীরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম (রাযি.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে পথচলা।
২. কওমি মাদরাসার আদর্শ-উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে আঁকড়ে ধরে পথচলার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. আকাবির-আসলাফের পদ্ধতিতে মাদরাসা পরিচালনা, ইলমী, আমলী চিন্তা-দর্শন ও আদর্শ অনুসরণ করা।
৪. শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা।
৫. দরসে নেযামীর আলোকে যুগোপযোগী সিলেবাস প্রনয়ণ, কওমি শিক্ষা সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা।
৬. ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে বাস্তবমুখী দাওয়াতী মেজাজ ও উম্মাহর ফিকির তৈরি করে ইলমওয়ালা দাঈ হিসেবে গড়ে তোলা।
৭. ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে বাস্তবমুখী আমলী জিন্দেগী, সুন্নাতের পাবন্দী, আখলাকের উন্নতি, মু’আমালাতের পবিত্রতা, মু’আশারাতের সৌন্দর্য সৃষ্টি করে একজন তাকওয়াবান আলেম হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চালানো।
৮. মসজিদভিত্তিক পাঠদানের মাধ্যমে সাহাবাদের নকশায় ব্যাপক ইলম চর্চার পরিবেশ তৈরি করা।
৯. ছাত্রদের সীরাত ও সুন্নাহ ভিত্তিক সহীহ তা’লীম ও তরবিয়ত করা।
১০. দক্ষ, প্রশিক্ষিত, আমলওয়ালা ও চরিত্রবান শিক্ষক তৈরি করা।
১১. ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে নববী ফিকির ও মেজাজ তৈরি করা।
১২. তা’লীম ও দাওয়াতের সমন্বয়ে মাদরাসা পরিচালনা করা এবং আল্লাহর রাস্তায় নিয়মিত ছাত্র-শিক্ষকদের খুরুজের ধারাবাহিকতা চালু রাখা।
১৩. ছোটকাল থেকেই তা’লীম-তরবিয়তের সাথে বিশ্বমানের দাঈ হিসেবে
গড়ে তোলার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং আমানতের সাথে ছাত্র ও
শিক্ষকের জান, মাল ও সময়ের সহীহ ব্যবহার শিক্ষা দেওয়া।
১৪. ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ ও তৎসংশ্লিষ্ট এবং নিয়ন্ত্রিত সকল মাদরাসা সম্পূর্ণ রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে। ১৫. আদর্শ নাগরিক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা। দেশের সকল আইনের প্রতি যত্নবান ও শ্রদ্ধাশীল থাকা।
১৬. দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ ও মাতৃভূমির অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে ছাত্রদের গড়ে তোলা।
১৭. ছোটকাল থেকেই ছাত্রদেরকে আল্লাহমুখী হয়ে পথচলার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া। মাখলুকের দ্বারস্থ হওয়া ও চাঁদা সংগ্রহের মনোভাব থেকে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করা।
১৮. মিছিল-মিটিং সহ কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছাত্র-শিক্ষকদের ব্যবহার না করা। শিক্ষা, গবেষণা, দাওয়াহ ও ঈমানী কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ
থাকা।
১৯. ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর সকল পরিষদের
দায়িত্বশীলগণ সম্পূর্ণ অবৈতনিক খেদমত হিসেবে কাজ করবেন। ২০. দেওবন্দিয়তের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে দারুল উলূম দেওবন্দের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তথা সাহাবা-আদর্শের দিকে ফিরে যাওয়া।
২১. দেশের সকল কওমী শিক্ষাবোর্ড ও অন্যান্য সকল শিক্ষাবোর্ড-এর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। প্রয়োজনে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান ও গ্রহণ করা।


অনলাইনে সেবা কার্যাক্রম
অনলাইনে সেবা কার্যক্রমের জন্য একটি আধুনিক ওয়েবসাইট রয়েছে। ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ কওমি অঙ্গনে বৈপ্লবিক

সংস্কারের মাধ্যমে পথচলা শুরু করেছে। এক্ষেত্রে আমরা আইটি বিভাগকে বোর্ডের যাবতীয় কার্যক্রমে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরাই বাংলাদেশে প্রথম কওমি মাদরাসা ভিত্তিক সবোর্চ্চ শক্তিশালী সার্ভার নেটওয়ার্কে একটি বৃহৎ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বোর্ডকে পরিচালনা করছি। দ্রুতসময়ে ঘরে বসে অনলাইন নিবন্ধন, পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, অনলাইনে এডমিট কার্ড সংগ্রহ, টাকা লেনদেন, দ্রুত প্রশ্ন দেখা ও ফলাফল প্রদান সহ সবোর্চ্চ ও আধুনিক এই প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদাহীতা, আমনতদারিতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ। যাবতীয় হিসাব চাইলেই যেকোন মুহূর্তে আপনি ঘরে বসে দেখে নিতে পারবেন।


আইটি ফিচার
১. নিজস্ব ওয়েবসাইট।
২. অনলাইনে নোটিশ প্রদান।
৩. অনলাইনে মাদরাসা নিবন্ধন।
৪. অনলাইনে ছাত্রদের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড প্রদান।
৫. অনলাইনে ছাত্রদের ফরম ফিলাপ।
৬. অনলাইনে ছাত্রদের এডমিট কার্ড, পরীক্ষার হাজিরা শিট, রোল বিবরণ
শিট প্রদান।
৭. অনলাইনে রেজাল্ট প্রদান।
৮. অনলাইনে ছাত্রদের ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের ব্যবস্থা।
৯. অনলাইনে ছাত্রদের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশপত্র সংশোধনের আবেদন
গ্রহণ।
১০. অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের ফরম প্রদান ও ব্যাংকিং লেনদেন করা যাবে।


সিলেবাস ও কারিকুলাম
সীরাত ও সুন্নাতের আলোকে যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে যোগ্য, মুত্তাকী, চিন্তাশীল, দাঈ, মুজাহিদ, আলেমে দ্বীন ও দেশপ্রেমিক আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।


সিলেবাস বৈশিষ্ট্য
১. দরসে নেযামীর পাশাপাশি মক্তব থেকে দাওরা পর্যন্ত তাবলীগী নেসাব। যেমন, নবী-সাহাবাদের ঘটনা, দাওয়াতের মূলনীতি, দাওয়াতের অপরিহার্যতা, হায়াতুস সাহাবাহ, মুন্তাখাব হাদীস নেসাবভুক্ত করণ। ২. প্রত্যেক জামাতে ইলমুল আক্বায়েদ শেখানো। যেমন, এসো ঈমান শিখি থেকে শারহুল আক্বায়েদ পর্যন্ত পাঠদান।
৩. কুরআন পাকের তাফসীর। ধারাবাহিক তাফসীর অধ্যয়ন শ্রেণীভুক্ত করণ।
৪. আরবী ভাষায় পাণ্ডিত্য অর্জনের জন্য প্রথমে ভাষা ও পরবর্তীতে
ব্যকরণ শিক্ষাদান। যেমন, মক্তব থেকে ছোট ছোট আরবী বাক্য শিক্ষাদান করা এবং পর্যায়ক্রমে আরবী কথোপকথন ও লিখন (মুহাওয়ারা ও তাহরীর)।
৫. আরবী অলঙ্করশাস্ত্র সহজ ও যুগোপযোগী করে পেশ করা।
. ফিকাহশাস্ত্রে ক্লাসভিন্নতায় বিষয়বস্তুর তাক্বরীর ও তাশরীহ নেসাবভুক্ত
৬ করা। আরবী মতনের সাথে আরবী শরাহ মুতালা’আর অনুশীলন।
৭. বিষয়ভিত্তিক আয়াতসহ হিফযুল হাদীস চালু করা।
৮. প্রত্যেক জামাতে সীরাত ও ইতিহাস অন্তর্ভুক্তিকরণ।
৯ . তা’লীম ও দাওয়াতের সমন্বয়ে শিক্ষাদান। যেমন, ফাযায়েলে ইলমকে
রোজানা দরসের অন্তর্ভুক্তকরণ ও পাঠদানের অন্তর্বর্তীকালীন উস্তাদের
নেগরানে খুরুজ, ছুটিতে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে খুরুজ।

১০. অবশাসনমুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রণয়ন করা। যেমন, কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে জেলা ও থানাভিত্তিক ধারাবাহিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা।
১১. এইচএসসি সমমান সাধারণ শিক্ষা চালু করা। কোরআন, হাদীস, সীরাত, ইতিহাস, ফিকহসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৪ বছরে অনার্স (স্নাতক) কোর্স চালু।
১২. গণহারে সবাইকে আলেমের সার্টিফিকেট না দিয়ে তুলনামূলক দুর্বল ছাত্রদেরকে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে সম্মানজনক সার্টিফিকেট দিয়ে কর্ম ও দাওয়াতমুখী করা। দরসে নেজামীর সঙ্গে কারিগরী শিক্ষার সমন্বয়।


শিক্ষাকাল
প্রথম শ্রেণী থেকে স্নাতক পর্যন্ত ছয়টি স্তরে শ্রেণী বিন্যাস হবে। প্রথম শ্রেণী থেকে স্নাতক (দাওরা হাদীস) পর্যন্ত আঠারোটি শ্রেণী সেমিস্টার পদ্ধতিতে হবে।
শিক্ষাকাল সর্বমোট আঠারোটি সেমিস্টারে ১৪ বছরে সম্পন্ন হবে। ৬ স্তরে। যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে দেওয়া হলো:
(১) আল-মারহালাতুল ইবতিদাইয়াহ (প্রাথমিক স্তর): শিশু শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী।
(২) আল-মারহালাতুল মুতাওয়াসসিতাহ (নিম্ন মাধ্যমিক স্তর) ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী।
(৩) আল-মারহালাতুল সানাবিয়্যাহ আল-আম্মাহ (মাধ্যমিক স্তর): ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণী।
(৪) আল-মারহালাতুল সানাবিয়্যাহ আল-উলিয়া/খাসসাহ (উচ্চ মাধ্যমিক স্তর): একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী।
(৫) আল-মারহালাতুল ফাজিলাহ বা স্নাতক স্তর (অনার্স), ৪ সেমিস্টার। (৬) মারহালাতুত তাকমীল (স্নাতকোত্তর/মাস্টার্স/দাওরায়ে হাদীস)
দরসে নেজামীর এ আঠার বছর শিক্ষাকাল শেষ করার পর তাখাসসুস (বিষয়ভিত্তিক উচ্চতর পড়াশোনা)-এর জন্য তিনটি শাখা চালু রয়েছে:
ক. ২ বছর মেয়াদি তাখাসসুস ফিল ফিকহি ওয়াল ইফতা। খ. ২ বছর মেয়াদি তাখাসসুস ফিদ দাওয়া ওয়াল ইরশাদ।
গ. ২ বছর মেয়াদি তাখাসসুস ফিল কিরাত।
ঘ. ২ বছর মেয়াদী তাখাসসুস ফিত তাফসীর।
৬. ২ বছর মেয়াদী তাখাসসুস ফিল হাদীস।
চ. ২ বছর মেয়াদী তাখাসসুস ফিল ইকৃতিসাদ (ইসলামী অর্থনীতি ও শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা)


বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম
১. মুসলমানদের সমস্ত কার্যক্রম ইলমে ওহী মুতাবেক পরিচালনার লক্ষ্যে রোজানা ১ঘণ্টা মসজিদভিত্তিক মাদরাসা কায়েম করা।
২. যুগোপযোগী সিলেবাসের মাধ্যমে ফরজে আইন পরিমাণ ইলম শিক্ষা দিয়ে হালাল-হারামের তারতম্য মেনে জীবন-যাপন ও প্রয়োজনে ইমামতির যোগ্য করে গড়ে তোলা।
৩. প্রথমিক পর্যায়ের উর্দু ও আরবী ভাষা শিক্ষা প্রদান করা, যাতে দাওয়াতের ময়দানে যেকোন তাকাযা ও জামাত নিয়ে চলার উপযুক্ত করে দেওয়া যায়।


সুবহী মক্তবের সিলেবাস
১. মুসলমানের শতভাগ সন্তানকে এই সিলেবাসের মাধ্যমে ফরজে আইন পরিমাণ ইলমে দ্বীন শেখানো।
২. প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রদের জন্য ১০ বছর মেয়াদী ১ ঘণ্টার মসজিদভিত্তিক মাদরাসা তরতীব করা ও তাদের জন্য উপযুক্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা।                                                                                                        ৩. আমাদের সমমনা শিক্ষকগণ কেন্দ্র থেকে ট্রেনিং নিয়ে দৈনিক ১ঘণ্টার জন্য এ সকল সুবহী মক্তবের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা।


নারীদের দ্বীনী সিলেবাস
প্রত্যেক মুসলিম নারীর জন্য যুগোপযুগী দ্বীনী সিলেবাস প্রদান করা, যাতে করে একজন নারী দ্বীনের যাবতীয় ফরজ ইলম শিক্ষা লাভ করতে পারে এবং নিজ ঘরে প্রয়োজনীয় তা’লীম-তরবিয়তের পরিবেশ কায়েম করতে পারে।

দাওয়াহ বিভাগ
জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর অধীনে সকল মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাই দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথে জড়িত থাকবেন। তা’লীম ও তরবিয়তের পাশাপাশি মাদরাসা-মসজিদ ও আশপাশ মহল্লায় মসজিদ আবাদীর মেহনত করে দ্বীনী পরিবেশ তৈরি করবেন। বিশেষ করে প্রতিমাসে দরস বন্ধ রেখে ৩ দিনের জন্য সকল প্রাপ্তবয়স্ক ছাত্র ও শিক্ষক আল্লাহর রাস্তায় বের হবেন। প্রয়োজনীয় তা’লীম উস্তাদগণ মসজিদের পরিবেশেই সংক্ষিপ্তভাবে পাঠদান করবেন। যাতে করে মসজিদভিত্তিক তা’লীমের সাহাবাওয়ালা পরিবেশ তৈরি হয় এবং তাকাযার ভিত্তিতে মাশওয়ারার সাথে মুনাসিব শিক্ষকগণ বহির্বিশ্বেও সফর করবেন। এছাড়াও রোজানা ঈমানী মজলিস কায়েম এবং দাওয়াতের ব্যাপারে উস্তাদগণ ছাত্রদেরকে আমলীভাবে মশক করাবেন। দাঈর ভাষা, আখলাক, আচরণ, মেজায, ভারসাম্যতা, মধ্যপন্থা অবলম্বন ও উম্মাহর ভ্রাতৃত্ব শিক্ষা লাভ করবে। নেতৃত্ব, আনুগত্য ও শৃঙ্খলায় অভ্যস্ত হবে।

কারিগরি ও অনন্য বিভাগ
স্বল্পমেয়াদী কারিগরি প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থাকবে বোর্ডের তত্ত্বাবধানে। বিজ্ঞান শাখা ও গবেষণাগার থাকবে। থাকবে বিশ্বমানের লাইব্রেরী ও ফতোয়া বোর্ড। বাংলাভাষা, সাহিত্য ও সাংবাদিকতার উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থাকবে। আরবী ভাষা সাহিত্যের উপর ১ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা। এছাড়াও দক্ষ কারিগরি অনুষদ। কওমির আলেমগণ যাতে দ্বীনী খেদমতের বিনিময় না নিয়ে বিকল্প করসংস্থানে জীবিকার জন্য কাজ করবেন ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ থেকে দাওরায়ে হাদীস ফারেগ হওয়া আলেমগণ। দাওয়াত, তা’লীম ও তিজারা (ব্যবসা) কে সাথে নিয়ে চলবেন। হালাল রিজিক তালাশে ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’ কারিগরি শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলবে আলেমদেরকে। প্রতিটি মাদরাসায় ১ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স থাকবে। কোর্স শেষে কারিগরি বিষয়ে ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। ১ বছর মেয়াদী কোর্সসমূহ (পার্টটহাম দিনে ১ঘণ্টা)। যেসব বিষয়ে একজন মাদরাসার ছাত্র আলেম হওয়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। যারা দাওরা পর্যন্ত যেতে পারবে না, তারা উপরোক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দ্বীনী খেদমত ও দাওয়াতের মেহনত করবে।


জাতীয় ফতোয়া বোর্ড
দেশ ও বিদেশের শীর্ষ মুফতীয়ানে কেরামদের নিয়ে বিশ্বমানের একটি ‘জাতীয় ফতোয়া বোর্ড’-এর মাধ্যমে মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনব্যবস্থার সহীহ দিক-নির্দশনা প্রদান করা হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফকীহদের সমন্বয় সাধন, মতামত গ্রহণ, জটিল সমস্যা ও ফকীহ মাসআলা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুফতীয়ানে কেরাম ও ফেকাহবিদদের নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আন্তর্জাতীক ফিকাহ সেমিনার, সেম্পোজিয়াম ও সম্মেলন করা। এছাড়া মুসলমানদের দৈনন্দিন যাবতীয় মাসআলা-মাসায়েল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনলাইনে প্রেরিত সমস্যার সমাধান দেওয়া হবে। এজন্য অভিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরামের এক জামাত সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন।

কওমি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউট
এটি ‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর একটি পরিকল্পিত প্রশিক্ষণ বিভাগ। বোর্ডের আওতাধীন সকল কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের নিয়মিত স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হবে। বোর্ডের ঢাকার নিজস্ব ভবনে ‘জাতীয় কওমি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’-এর স্থায়ী প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সেন্টার থাকবে।


কওমি শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট
‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর পরিকল্পনাধীন এটি একটি মেগা প্রকল্প। এই শিক্ষক কল্যাণ ট্যাস্ট-এর আওতায় সারা দেশের সকল কওমি মাদরাসায় শিক্ষকদের বেতনস্কেল নির্ধারণ, মূল্যায়ণ, প্রদায়ন, বেতনস্কেল জাতীয় স্কেলে বৃদ্ধিকরণ ও বদলী কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের পেনশন ভাতা ও পরিবার-পরিজনকে স্থায়ী নিয়মিত নির্ধারিত নিয়মে সহযোগিতা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
কর্মসংস্থান প্রকল্প
‘জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ’-এর আওতায় সারাদেশের সকল কওমি মাদরাসা, বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র, মক্তব, নূরানী মাদরাসা, হিফজ বিভাগ, নৈশ মাদরাসায় শিক্ষক, মসজিদের ইমাম-মুআজ্জিন নিয়োগ- বিয়োগ করা হবে। অনলাইনে যে কেউ সহজে তার মনমতো কর্মসংস্থানের
সন্ধান লাভ করতে পারবেন।


জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড পরিচালনা পরিষদ
জাতীয় কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড পরিচালনার জন্য চারটি পরিষদ কাজ করবে:
১. দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে ‘জাতীয় অভিভাবক পরিষদ’।
২. বোর্ডের মূল কাজ পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ফোরাম
‘জাতীয় নির্বাহী পরিষদ’।
৩. সারাদেশের উলামা-মাশায়েখদের নিয়ে ‘জাতীয় সাধারণ পরিষদ’।
৪. দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে ‘জাতীয় সহযোগী নির্বাহী পরিষদ’।


জাতীয় নির্বাহী পরিষদ (সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম)

চেয়ারম্যান   মাওলানা জিয়া বিন কাসেম

মহাপরিচালক  মুফতী সৈয়দ উসামা ইসলাম
শিক্ষা, সিলেবাস ও গবেষণা পরিচালক  মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ
অর্থ ও পরিকল্পনা বিভাগ পরিচালক  মুফতী আজীমুদ্দীন
তথ্য, প্রচার, প্রকাশনা ও মিডিয়া পরিচালক  মুফতী মুআজ বিন নূর
প্রশিক্ষণ পরিচালক মাওলানা সাইফুল্লাহ বিননূরী
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ পরিচালক মুফতী শফীউল্লাহ